![]()
রাজধানীতে পরিত্যক্ত জায়গায় প্রায়ই মিলছে নবজাতক
নিজস্ব প্রতিবেদক :
|
![]() রাজধানীতে পরিত্যক্ত জায়গায় প্রায়ই মিলছে নবজাতক অল্প ক’দিন আগের কথা। হেমন্তের শেষ বিকেল পেরিয়ে হিমেল সন্ধ্যার আগে আগে রাজধানীর কুড়িল সড়কে নেমে আসে বর্বরতার রাত। কে বা কারা কাপড়ের ব্যাগের ভেতর রেখে যায় ফুটফুটে এক ছেলে সন্তান। সেদিন ওই সড়কে দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট সমরেশ মণ্ডল। তিনি বলেন, আমি যখন দেখছি ব্যাগের ভেতরে, তখন আমার পুরা শরীর একটা ঝাঁকি মেরে উঠেছে। ভালো-মন্দ বিচার করার আর চিন্তা হয়নি। তখন আমার একটাই চিন্তা হচ্ছিল ওই শিশু কতক্ষণ না খেয়ে আছে। হাসপাতাল নিতে হবে আগে। তারপর বাঁচাতে হবে। ব্যাগ খুলতেই কেঁদে ওঠে নবজাতক। একইভাবে শাহবাগ ফুটপাতে বাস কাউন্টারের বক্সের ভেতর থেকে পাওয়া যায় নবজাতক। ঢাকা মেডিকেলে ক'মাস আগে কুকুরের মুখে দেখা যায় আরও একটি নবজাতক। তার ক্ষীণ কান্নার আওয়াজে ছুটে আসেন ক্যান্টিনের কর্মচারীরা। এক কর্মচারী বলেন, কুকুর ওইদিক থেকে ওই শিশুকে নিয়ে আসে। এভাবে কেবল অক্টোবরেই রাজধানীতেই উদ্ধার করা হয় ৪ নবজাতক। এর মধ্যে দুটি জীবিত আর দুটি ছিল মৃত। গোয়েন্দা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, যদি দেশের সব নাগরিকের ডিএনএ ব্যাংক তৈরি করা সম্ভব হয়, তা হলে ফেলে যাওয়া শিশু কার- তা সহজেই জানা সম্ভব। ডিএমপি গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, এখন যে কেউ একটা অপরাধ করে যাচ্ছে, আমি তো কিছু রেখে গেলাম না। কিন্তু তখন তো তার এই জিনিস মনে পড়বে আমার তো এই জিনিস ওখানে রাখা আছে। চাইলে আজ হোক বা ১০ বছর পরে হোক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ কারণে আমাকে ধরতে পারে। নারী ও শিশুদের নিয়ে কাজ করা আইনজীবী বলছেন, কথিত এসব বাবা মা রাস্তায় ফেলে না দিয়ে শিশুকে সঠিক উপায়ে দত্তকও দিতে পারেন। বাংলাদেশ আইনজীবী সমিতির সভাপতি সালমা আলী বলেন, যেসব সংগঠন কাজ করে. তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে এবং সেখানে শিশুদের জন্ম হওয়া ও ভলান্টিয়ারি দিয়ে দিতে পারে। সাধারণত অনৈতিক সম্পর্কের ফসল এসব শিশু। কিন্তু উচ্চবিত্তের ক্ষেত্রে গর্ভপাতের উদাহরণ থাকলেও নিম্নবিত্ত এবং ভবঘুরে মানুষের সেই সতর্কতা নেই। সাধারণত কোনো অপরাধের ক্ষেত্রে পরিবার অভিযোগ নিয়ে হাজির হয় পুলিশের কাছে। কিন্তু যখন পরিবারই নিজ সন্তানকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়, তখন অভিযোগ করার কেউ থাকে না। কিন্তু বাস্তব হলেও সত্যি যে, এসব নবজাতকের কোনো দোষ নেই। জন্মই যেন তার একমাত্র দোষ। আর জন্মের পরই চলে মৃত্যুর আয়োজন। |