রোববার, ১২ মে ২০২৪

শ্রমিকরা জাতীয় অর্থনীতির চাকা সচল রাখে: স্পিকার

রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কর্তৃক ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ২২:০০

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোনত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে। শ্রমিকরাই জাতীয় অর্থনীতির চাকা সচল রাখে। তাই শ্রমিকদের জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।

আজ রোববার রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কর্তৃক ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শ্রমিকদের কল্যাণে কলকারখানা জাতীয়করণ করেন। কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশ আজ স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে চলেছে। দেশে ব্যাপক শিল্পায়ন হচ্ছে, রপ্তানি বাণিজ্য বিকাশ লাভ করছে এবং তৈরি পোশাক শিল্প, ওষুধ শিল্প ও আইসিটি খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ শ্রম আইন ও শ্রম আইন বিধিমালায় শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ গুরুত্বপূর্ণ শ্রমিক অধিকার। উন্নত কর্মপরিবেশ শ্রমিকের কর্মদক্ষতা ও প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। তাই শোভন কর্মপরিবেশ তৈরিতে বিনিয়োগ করতে হবে।

শ্রমিকরা দীর্ঘ সময় কর্মস্থলে অতিবাহিত করেন উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, শ্রমিকদের কর্মস্থলে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস, সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও আরামদায়ক পোশাকের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ অনুকূল রাখতে সকলকে সচেতন হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ল্যাকটেটিং মায়েদের জন্য ভাতা চালু করেছেন। প্রত্যেক দপ্তরে শিশুদের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নারী শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ উন্নত করার দিকে সবাইকে দৃষ্টি দিতে হবে।

‘সুস্থ শ্রমিক, শোভন কর্মপরিবেশ, গড়ে তুলবে স্মার্ট বাংলাদেশ’- জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবসের প্রতিপাদ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাইকে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

ওই সময় ২৯টি ফ্যাক্টরিকে গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড ২০২৩ দেওয়া হয়। স্পিকার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. আব্দুর রহিম খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশে আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পোটিআইনেন, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি আরদাশীর কবির, বিজেএমইএ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. তরিকুল আলম, বিকেএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি মানসুর আহমেদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচ এম ইব্রাহীম এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বক্তব্য দেন।


বিএনপি যে কখন তাবিজ-দোয়ার ওপর ভর করে সেটিই প্রশ্ন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি গত নির্বাচন বর্জনের পর তাদের হতাশা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তারা কখন তাবিজ-দোয়ার ওপর ভর করে এখন সেটিই প্রশ্ন।

আজ রোববার বিকালে কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকে যোগদানের পূর্বে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘অদৃশ্য শক্তি দেশ চালাচ্ছে’ মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার পরপর চারবার জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত হয়েছে এবং জননেত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত দক্ষতা ও সফলতার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করছেন। বিএনপি এখন হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।’

গত নির্বাচন বর্জনের পর তাদের হতাশা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তারা অদৃশ্য শক্তির ওপর বিশ্বাস করা শুরু করেছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা জানেন, তারা ক্ষণে ক্ষণে বিদেশিদের দুয়ারে যায়, এখন তারা যে কখন তাবিজ-দোয়ার ওপর ভর করে সেটিই আমার প্রশ্ন।’

রাখাইনে সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দেরি হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন ‘উই এনগেইজ উইথ দ্য গভর্নমেন্ট’, আমরা মিয়ানমারের সরকারের সঙ্গেই আলাপ-আলোচনা করছি। সেখানে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দেরি হচ্ছে সেটিও সঠিক। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে মিয়ানমারে সবসময়েই গোলযোগ ছিলো।’

‘গত ৭০-৮০ বছরের ইতিহাস দেখুন, মিয়ানমার কখনোই গণ্ডগোলমুক্ত ছিলো না, কিন্তু সেই কারণে মিয়ানমার থেকে যে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করা হয়েছে, যারা মিয়ানমারের নাগরিক, শত শত বছর ধরে সেখানে আছে, তাদের ফেরত নিয়ে না যাওয়ার কোনো অজুহাত হতে পারে না’ যুক্তি তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের এখানে আশ্রয় দেওয়ার প্রেক্ষিতে নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে। যেমন রোহিঙ্গাদের কারণে পরিবেশগত সমস্যা, আইন-শৃঙ্খলাগত সমস্যা, একই সঙ্গে অনেক রোহিঙ্গা ইয়াবা ও অন্যান্য মাদক পাচার এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছে।’

হাছান মাহমুদ জানান, ‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গেও নিয়মিতভাবে আমরা আলাপ-আলোচনা করে যাচ্ছি, যাতে করে নিজেদের নাগরিকদের পূর্ণ অধিকারসহ ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর কার্যত চাপ প্রয়োগ করা হয়।’

পরিতাপের সুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, মিয়ানমার সবসময় বলে তারা ফেরত নেবে, কিন্তু গত সাত বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও তারা ফেরত নেয়নি। উপরন্তু আমাদের ওপর নতুন সমস্যা তৈরি হয়েছে যে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে ইতিমধ্যে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) প্রায় পাঁচশত সদস্য ও তাদের সেনাবাহিনীর সদস্য পালিয়ে আমাদের দেশে এসেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তাদের ফেরত পাঠিয়েছি কিন্তু নতুনভাবে আরও ১৩৮ জন এখন বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে, তার মধ্যে সেনাবাহিনীর একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও দু'জন মেজরও আছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে আসার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে চৎমকার। গত নির্বাচনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা পত্রে সে কথাই বলেছেন। এই সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে বাংলাদেশে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। আমাদের চেষ্টা থাকবে এ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার।’


গণমাধ্যমকর্মী আইন নিয়ে মতামত নেওয়া শুরু

 ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন, ২০২১-এর খসড়ার ওপর পুনরায় বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও অংশীজনদের মতামত নেওয়া শুরু করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। আজ রোববার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও সংশ্লিষ্ট অন্য অংশীজনদের নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভায় মতামত নেওয়া শুরু করে মন্ত্রণালয়।

সভায় তথ্যপ্রতিমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইনে শ্রম আইনের অধীনে সাংবাদিকদের প্রাপ্য সব ধরনের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে। সংবাদমাধ্যমকর্মীরা শ্রম আইনের আওতায় যে সুবিধাগুলো পান, সে সুবিধাগুলোর শতভাগ সুরক্ষা প্রস্তাবিত আইনে আছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা হবে। যদি কোথাও ব্যত্যয় থাকে, সে জায়গা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শ্রম আইনের অধীনে সংবাদমাধ্যমকর্মীরা যে সুরক্ষা পান, তার কোনো ব্যত্যয় বা ঘাটতি প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইনে থাকবে না।

তিনি বলেন, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের জন্য একটি সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের কল্যাণ নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। এ জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গণমাধ্যমকর্মী আইন পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

সব অংশীজনের সহযোগিতা ও মতামতের ভিত্তিতে গণমাধ্যমকর্মী আইন সুন্দর পরিসমাপ্তির দিকে যাবে বলেও এ সময় আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী। সাংবাদিক সংগঠন ও সংশ্লিষ্ট অন্য অংশীজনদের গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়ার ওপর লিখিত মতামত দেওয়ার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।

সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আলতাফ উল আলম, যুগ্ম সচিব মো. আসাদুজ্জামান, বেসরকারি টেলিভিশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এটকো) সহসভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু, জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য ফরিদ হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, অনলাইন নিউজ পোর্টাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ওনাব) সভাপতি মোল্লাহ আমজাদ হোসেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ প্রমুখ।


মাকে স্মরণ করে কাঁদলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাল্যকালেই হারিয়েছেন মাকে। ছবি না থাকায় মায়ের চেহারাও স্মৃতিতে নেই। বিশ্ব মা দিবসে মায়ের কথা স্মরণ করে তাই অঝোরে কাঁদলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। আজ রোববার রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএসের রাওয়া কনভেনশন সেন্টারে বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। এ দিন ১১ জন গর্ভধারিণী মাকে ‘গরবিনী মা-২০২৪’ সম্মাননা প্রদান করে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গরবিনী মায়েদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন মন্ত্রী।

প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে বারবার থেমে যাচ্ছিলেন আ ক ম মোজাম্মেল হক। গলা থেকে স্বর যেন বের হতে চাইছিল না। চোখ মুছতে মুছতেই বক্তব্য শেষ করেন মন্ত্রী। মাকে স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আমার দুর্ভাগ্য আমি আজ থেকে ৭৫ বছর আগে মাকে হারিয়েছি। তখন আমি শিশু ছিলাম। মায়ের কোনো স্মৃতি আমার মনে নেই। ওই সময় ছবি তুলে রাখার মতো প্রযুক্তি সহজলভ্য ছিল না। আমি ছবিতেও দেখিনি আমার মা কেমন ছিলেন। আমি আমার মায়ের চেহারা মনে করতে পারি না।’

অশ্রুসিক্ত নয়নে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মায়েদের প্রতি সন্তানের ভালোবাসা, সন্তানদের গড়ে তোলের জন্য মায়ের যে প্রচেষ্টা সেটা আমি ব্যক্তিগতভাবে না দেখলেও আমার বাবা প্রতিবছর আমার মায়ের মৃত্যু দিবস পালন করতেন এবং বলতেন, তুমি জীবনে কখনো কষ্ট পাবা না। তোমার মায়ের দোয়া আছে। হয়তো এ জন্যই আমার এই দীর্ঘ জীবনে আমি ভালো থেকেছি। আমার প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমি আমার মায়ের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি। বিনা পয়সায় চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য মায়ের নামে হাসপাতাল করেছি। মায়ের কবরের পাশে মায়েরই জমিতে এই হাসপাতাল। ভবিষ্যতে এটার পরিসর আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। আমি মনে করি, আমার প্রতিটি কাজে মায়ের দোয়া আছে।’

বর্তমান প্রজন্মের বাবা-মা ও সন্তানদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয় বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে মায়ের প্রতি ভালোবাসা কমে যাচ্ছে। মোবাইল আসক্তির কারণে শ্রদ্ধাবোধ কমে যাচ্ছে। আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। মা ও দেশকে যেন সন্তানরা ভালোবাসে। আমি শঙ্কাবোধ করি, পারিবারিক সৌজন্যবোধ কমে যাচ্ছে। একসঙ্গে সবাই বসে খাওয়ার সময় পায় না। মোবাইল দেখা, টিভি দেখা, পড়াশোনা করা সবকিছুই এখনকার সন্তানরা নিজের রুমেই থাকতে বেশি পছন্দ করে। আমাদের উচিত, চেষ্টা যেন থাকে একসঙ্গে কিছুটা হলেও সময় কাটানো।’

মায়ের ঋণ কখনও শোধ হয় না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বাবা সাপোর্ট দেয়। কিন্তু দেখাশোনা করে মা। তাই মায়ের প্রতি ভক্তি, সম্মানবোধ, দায়িত্ববোধ যেন থাকে। আমরা যেন সেটা করি এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকেও যেন সেটা শিখিয়ে যাই।’


এপ্রিলে ৬৭২ সড়ক দুর্ঘটনায় ঝরেছে ৬৭৯ প্রাণ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত এপ্রিল মাসে সারা দেশে ৬৭২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৭৯ জন নিহত এবং ৯৩৪ জন আহত হয়েছেন। নিহতের মধ্যে নারী ৯৩ ও শিশু ১০৮ জন।

আজ রোববার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। সংগঠনটি নয়টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, এপ্রিলে ৬৭২টি দুর্ঘটনার মধ্যে ৩১৬টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ২৫৯ জন মারা যান, যা মোট নিহতের ৩৮ দশমিক ১৪ শতাংশ। আর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৭ শতাংশ।

এপ্রিলে দুর্ঘটনায় মোট নিহতদের মধ্যে ১১৩ জন পথচারী, যা মোট নিহতের ১৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৯৬ জন, অর্থাৎ ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। এ সময়ে সাতটি নৌ-দুর্ঘটনায় নয়জন নিহত, ৬৮ জন আহত হয়েছেন। ৩৮টি রেল-ট্রাক দুর্ঘটনায় ৪৫ জন নিহত এবং ২৪ জন আহত হয়েছেন।

যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্র

এপ্রিলে দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়- মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী মারা গেছেন ২৫৯ জন (৩৮ দশমিক ১৪ শতাংশ), বাসের যাত্রী ৩৪ জন (৫ শতাংশ), ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-ট্রাক্টর-ট্রলি-ড্রাম ট্রাক আরোহী ৬৫ জন (৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-জিপ আরোহী ৪৫ জন (৬ দশমিক ৬২ শতাংশ), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান) ১৩১ জন (১৯ দশমিক ২৯ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্রা-পাওয়ারটিলার) ২২ জন (৩ দশমিক ২৪ শতাংশ) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা আরোহী ১০ জন (১ দশমিক ৪৭ শতাংশ) নিহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২৩৫টি (৩৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ২৬৬টি (৩৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৮৭টি (১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে, ৭৯টি (১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং ৫টি (দশমিক ৭৪ শতাংশ) অন্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২৩৫টি (৩৪.৯৭ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ২৬৬টি (৩৯.৫৮ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৮৭টি (১২.৯৪ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে, ৭৯টি (১১.৭৫ শতাংশ) শহরের সড়কে ও ৫টি (০.৭৪ শতাংশ) অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনাসমূহের ১৭৪টি (২৫.৮৯ শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৬২টি (৩৯ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১২০টি (১৭.৮৫ শতাংশ) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৯৭টি (১৪.৪৩ শতাংশ) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা ও ১৯টি (২.৮২ শতাংশ) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।


চাকরির প্রলোভনে ভারতে নিয়ে কেটে নেওয়া হচ্ছে কিডনি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দরিদ্র মানুষকে চাকরির প্রলোভনে ভারতে নিয়ে যায় একটি চক্র। চাকরিপ্রত্যাশীদের দিল্লিতে জিম্মি করে পরে বিভিন্ন কৌশলে কিডনি বের করে নেয় চক্রটি। এখন পর্যন্ত দেশ থেকে ১০ জন ব্যক্তিকে ভারতে নিয়ে তাদের কিডনি কেটে নিয়েছে চক্রটি।

সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি মডেল থানায় চক্রটির বিরুদ্ধে রবিন নামের একজন ভুক্তভোগী মামলা করেন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ধানমন্ডি থানা পুলিশ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। গত ১১ মে ধানমন্ডি ও বাগেরহাটে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন, মো. রাজু হাওলাদার (৩২), শাহেদ উদ্দীন (২২) ও মো. আতাহার হোসেন বাপ্পী (২৮)। এ ঘটনায় পলাতক রয়েছেন মো. মাছুম (২৭), শাহীন (৩৫) ও সাগর ওরফে মোস্তফা (৩৭)-সহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জন।

ধানমন্ডি মডেল থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চক্রটি দেশের দরিদ্র মানুষকে ভালো চাকরি দেওয়ার আশা দিয়ে ভারতে নিয়ে নানা কৌশলে তাদের কিডনি হাতিয়ে নেয়। ভুক্তভোগী রবিনকে ভারতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রথমে দিল্লির ফরিদাবাদে নেওয়া হয়। পরে তাকে নানা কৌশলে কিডনি বিক্রির জন্য রাজি করানো হয়। প্রথমে চক্রটি তাকে ৬ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বললেও তাকে দেয় ৩ লাখ টাকা।

আজ রোববার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ২০২৩ সালের এপ্রিলের কোনো এক তারিখে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর শাহ আলী মার্কেটের পেছনে চায়ের দোকানে রবিন তার এক বন্ধুর সঙ্গে চা খাচ্ছিলেন এবং সংসারের অভাব-অনটন নিয়ে কথা বলছিলেন। কথাবার্তার এক পর্যায়ে পাশে বসা অভিযুক্ত পলাতক আসামি মাছুম নিজ থেকেই রবিনকে বলেন, ভারতে তার ব্যবসা আছে। ওই প্রতিষ্ঠানে তিনি রবিনকে চাকরি দিতে পারবেন।

এক পর্যায়ে মাছুমের সঙ্গে মোবাইল নম্বর আদান-প্রদান করেন রবিন। এরপর মাছুমের সঙ্গে নিয়মিত কথা হতো। এক পর্যায়ে ভারতে গিয়ে চাকরির বিষয়ে রাজি হন রবিন।

ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, পরবর্তী সময়ে মাছুম ভুক্তভোগী রবিনকে বলেন, ভারতে তার প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য যেতে হলে ডাক্তারি কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালে রবিনকে নিয়ে যান মাছুম। সেখানে তার সঙ্গে গ্রেপ্তার আসামি মো. রাজু হাওলাদারের পরিচয় হয়। পরে আসামিরা রবিনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তার পাসপোর্ট নিয়ে নেন ভারতের ভিসার জন্য।

ভিসা পাওয়ার পর ভুক্তভোগী রবিনকে ভারতের দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার পাসপোর্ট নিয়ে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে আসামিরা রবিনের আর্থিক অনটন, সাংসারিক অর্থনৈতিক দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে একটি কিডনি দেওয়ার জন্য প্ররোচিত করেন। তারা ভয়ভীতি দেখান এবং পাসপোর্ট ছাড়া দেশে ফিরে আসতে পারবেন না বলে জানান। পরে তিনি রাজি হলে দিল্লিতে এশিয়ান হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গুজরাটে নিয়ে একটি বাসায় রাখা হয়।

ডিএমপির এই পুলিশের কর্মকর্তা বলেন, দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে কাউকে কিছু না বলার শর্তে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে গত ৪ মার্চ ভারতের গুজরাটে কিডনি অ্যান্ড স্পেশালাইজড হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রবিনের একটি কিডনি নেওয়া হয়।

অপারেশন শেষে হাসপাতাল থেকে ৪ দিন পরে ছাড়া পান রবিন। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আসামিরা ভারতের অজ্ঞাত স্থানে প্রায় ১০-১১ দিন রবিনকে আটক রাখেন। একপর্যায়ে দালালচক্র রবিনকে কিছু টাকা দেওয়ার কথা বলেন। বাংলাদেশে অবস্থান করা চক্রের অন্য সদস্যরা রবিনের স্ত্রী ইশরাত জাহানের বিকাশ নম্বরে ৩ লাখ টাকা দেন।

এক প্রশ্নের জবাবে ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, চক্রের টার্গেট হলো যাদের আর্থিক চাহিদা আছে, রবিনের ক্ষেত্রে যেটি ঘটেছে। তাকে কিন্তু খুব সামান্য অর্থ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চক্রটি এসব কিডনি আরও চড়া দামে বিক্রি করে আসছে। চক্রটি বাংলাদেশ থেকে শুরু করে কলকাতা ও গুজরাটেও কাজ করে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত চক্রটি ভারতে নিয়ে ১০ জন ব্যক্তির কিডনি হাতিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়া তাদের পাইপলাইনে আরও পাঁচ থেকে ছয়জন ছিল। অপর এক প্রশ্নের তিনি বলেন, চক্রটি রবিনকে ৬ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেছিল কিডনির বিনিময়ে। কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত তিন লাখ টাকা দেয়। বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাদের কিডনি নেওয়া হচ্ছে এসব কিডনির গ্রহীতাও বাংলাদেশিরা।


‘৬৯ হাজার রোহিঙ্গার পাসপোর্ট নবায়নে তাগিদ দিয়েছে সৌদি সরকার’

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে যাওয়া ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা নাগরিকের পাসপোর্ট নবায়নের বিষয়ে সৌদি সরকার তাগিদ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

আজ রোববার রাজধানীর নিকুঞ্জে হোটেল লা মেরিডিয়ানে সৌদি আরবের উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাসের বিন আবদুল আজিজ আল-দাউদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের পর বাংলাদেশ থেকে কিছু রোহিঙ্গা সৌদি আরবে গিয়েছিল। এর সংখ্যা কত আমাদের জানা নেই। তারা আমাদের জানিয়েছেন ৬৯ হাজার। সৌদি আরবের নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট না থাকলে তাদের ফেরত পাঠায়। সে ক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গে সৌদি আরবের একটি চুক্তি হয়েছিল- তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাবে না, তাদের কাগজ রিনিউ করে দেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা স্লো যাচ্ছি কেন? কিংবা আমাদের কোনো অসুবিধা আছে কি না সেটা দেখার জন্য তারা এসেছিলেন। এ ছাড়া সৌদি আরবের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আমাদের উভয় দেশের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলাপ হয়েছে। আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, কোস্ট গার্ড ও পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে সৌদি আরবে যেসব প্রশিক্ষণকেন্দ্র রয়েছে আমরা বলেছি, তারা যে আমাদের দেশেও এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পাঠায়, এতে উভয় দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব আরও শক্ত হবে।’

‘সৌদি আরব প্রতিনিধিদল উভয় দেশের বন্দিবিনিময় চুক্তির বিষয়ে প্রস্তাব করেছে। বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দিবিনিময় চুক্তি রয়েছে। যদি সৌদি আরব এই চুক্তি করে, তবে ভালো হবে। বাংলাদেশ থেকে তাদের সিকিউরিটি গার্ডের জন্য আনসার প্রেরণের কথা বলেছি। এ বিষয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন। আপনারা জানেন যে, ভিআইপি নিরাপত্তার জন্য আনসারদের আমরা গার্ড রেজিমেন্ট হিসেবে তৈরি করেছি’- যোগ করে বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের নিয়ে কথা বলেছি। এই বিষয়টি তারাও গুরুত্বের সঙ্গে ভাবছেন। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে যত তাড়াতাড়ি ফেরত পাঠানো যায়, সেটি নিয়ে তারা কাজ করছেন। মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ভিসা ওয়েভার রয়েছে। ইউএইর সঙ্গে আমাদের কথা চলছে, ভবিষ্যতে ইউএইর সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হবে। সৌদি আরব আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে সম্মত হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি আবর কিন্তু ফেরত পাঠাবে না কাউকে। আবার সৌদি সরকার রোহিঙ্গাদের ওই দেশের নাগরিকত্ব দেবে না। তবে কীভাবে থাকবে। সে জন্য তাদের কিছু ডকুমেন্ট প্রয়োজন, সে জন্য তারা আমাদের অনুরোধ করেছিল। আমরা গত বছর সেটি স্বাক্ষর করেছিলাম। সেখানে আমাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না বা কোনো লু-ফলস রয়েছে কি না সে বিষয়ে সরাসরি কথা বলতেই তারা এসেছেন।’

সৌদিতে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা কি বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা তো বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে গিয়েছিল। সুতরা আমরা শুধু তাদের পাসপোর্ট রিনিউ করে দেব। তাদের নাম-ঠিকানা পাসপোর্টে যেমন আছে তেমনই থাকবে।’ আলোচনায় সৌদি আরবের উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সৌদিতে প্রায় ৩০ লাখ বাংলাদেশি কাজ করছেন। ভবিষ্যতে এ সুযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।


‘এমন বাংলাদেশ চাই যেন দেশকে নিয়ে বিশ্ব গর্ববোধ করে’

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১২ মে, ২০২৪ ১৯:৪১
নিজস্ব প্রতিবেদক

আমরা সে ধরনের উন্নত বাংলাদেশ চাই, যেখানে সমগ্র পৃথিবী এ দেশকে নিয়ে গর্ববোধ ও অহংকার করবে বলে উল্লেখ করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

আজ রোববার হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইউএন গ্লোবাল কমপ্যাক্ট নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ আয়োজিত ‘মেরিটাইম অ্যান্টি-করাপশন নেটওয়ার্ক (এমএসিএন) বাংলাদেশ রিপোর্ট লঞ্চ ইভেন্ট এবং মেরিটাইম ব্যবসা-বাণিজ্যে জালিয়াতি প্রতিরোধ’ শীর্ষক যৌথ সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় আমাদের গৌরব ও অহংকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যার মধ্য দিয়ে সবকিছু ম্লান হয়ে গিয়েছিল। এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করার মধ্য দিয়ে মূলত দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে এ হত্যাকাণ্ডকে এবং হত্যাকারীদের যেভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে, এর মাধ্যমে দুর্নীতি সমাজ ও রাষ্ট্র সব জায়গায় ছড়িয়ে গেছে। সে জায়গা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল যারা ৩০ লাখ মানুষ হত্যা করেছে, লাখ লাখ মা-বোনকে নির্যাতন করেছে, সেসব অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা‌। আমরা গর্ব করে বলতে পারি, বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে, বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে, বিচারের রায় কার্যকর করেছে ও বিচার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চা শুরু হয়েছে।’

‘গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালনার ক্ষেত্রে পেশাদারত্বকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্র তৈরি করার যে মহাপরিকল্পনা ছিল, সে জায়গা থেকে রক্ষা করতে পেরেছি। এ ধরনের পদক্ষেপ, এ ধরনের উদ্যোগ ও এ ধরনের সমাজ গঠনের পদক্ষেপ আমাদের আরও বেশি উৎসাহিত করবে’- বলেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করবে। আমরা চাই ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ। উন্নত বাংলাদেশ মানে শুধু অর্থবিত্তের মধ্য দিয়ে উন্নত হওয়া নয়, উন্নত বাংলাদেশ হচ্ছে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা। উন্নত বাংলাদেশ হচ্ছে একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্বের সুখ-সুবিধা আমাদের মধ্যে থাকবে। সে ধরনের উন্নত বাংলাদেশ চাই, যেখানে সমগ্র পৃথিবী এ বাংলাদেশকে নিয়ে গর্ববোধ ও অহংকার করবে।’


এআইয়ের অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১২ মে, ২০২৪ ১৮:৪০
বাসস

বাংলাদেশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) স্বাগত জানায়, তবে এর অপব্যবহার রোধে কিছু সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা এআইকে স্বাগত জানাই, তবে এর অপব্যবহার রোধ করার জন্য আইন প্রণয়নের মাধ্যমে আমাদের কিছু সুরক্ষা ব্যবস্থা নিতে হবে।’

গণভবনে আজ রোববার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশে অ্যাপোস্টোলিক নুনসিও অব দ্য হোলি সি-এর আর্চবিশপ কেভিন এস র‌্যান্ডালের সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। এখানে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। আমরা সবাই মিলে আমাদের উৎসব উদযাপন করি।’

শেখ হাসিনা আর্চবিশপ কেভিন এস র‌্যান্ডালের মাধ্যমে পোপকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। আর্চবিশপ র‌্যান্ডাল জলবায়ু পরিবর্তন ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান ও পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বেঠকে উপস্থিত ছিলেন।


‘মুখস্ত শিক্ষার ওপর নির্ভরতা কমাতে পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনা হচ্ছে’

গণভবনে রোববার ডিজিটালভাবে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা-২০২৪ এর ফলাফল প্রকাশকালে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার শিক্ষার্থীদের মেধা ও সৃজনশীলতার বিকাশে, বিশেষ করে মুখস্ত শিক্ষার ওপর নির্ভরতা কমাতে পাঠ্যক্রমে এবং শিক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনছে।

আজ রোববার সকালে গণভবনে ডিজিটালভাবে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা-২০২৪ এর ফলাফল প্রকাশকালে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

এ বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ায় আনন্দ অনুভূতি ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি শিক্ষাক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে অভিভাবকদেরও একটা আগ্রহ থাকবে যে তাদের ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করে মানুষের মতো মানুষ হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শুধুমাত্র মুখস্তবিদ্যা শিখবে না। একটা শিশুর ভেতর যে মেধা ও মনন থাকে তাকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া। তার ঐ মেধা দিয়েই যেন সে এগিয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের শিক্ষা কারিকুলাম এবং শিক্ষা দেওয়ার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।’

প্রি-প্রাইমারি (প্রাক-প্রাথমিক) শিক্ষাও আওয়ামী লীগ সরকারই শুরু করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ সময় বাচ্চাদের হাতে খেলনার মাধ্যমেই অনেক কিছু তৈরি করা বা অনেক কিছু শেখার সুযোগ রয়েছে। তাদের জন্য ঐ সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। তাদের কেবল বই দিয়ে বসিয়ে না রেখে খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া যেমন- ফ্লোরে যদি একটি মানচিত্র থাকে যেখানে মহাদেশ ও মহাসগর থাকল, সেখানে বাচ্চাদের শেখানো যে একটা জায়গা থেকে আর একটা জায়গায় তোমরা লাফ দিয়ে যাও। তাহলে খেলতে খেলতেই সে ঐ নামগুলোও জেনে যাবে। কাজেই খেলার মাধ্যমে তাদের শিক্ষা যেন প্রাথমিক পর্যায়ে আসে সেটা করে দেওয়া যায়। তা করলে আমার মনে হয় তাদের কতগুলো মহাদেশ আর মহাসাগর তা মুখস্ত করতে হবেনা।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ৫ হাজার ৯৭টি প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্ত করা হয়েছে এবং ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রুপরেখা-২০২১’ আমরা প্রণয়ন করেছি। সেই সঙ্গে শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। শিক্ষকদের মর্যাদা ও বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ সবধরণের সুযোগ-সুবিধা আমরা সরকারে আসার পর দিয়েছি।’

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে সবসময় প্রচেষ্টা ছিল মানুষের মাঝে এই সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং শিক্ষার্থীদেরকে উৎসাহিত করা যেন তারা লেখাপড়ার দিকে মনোযোগ দেয়। ফলশ্রুতিতে আমরা দেখতে পাচ্ছি স্বাক্ষরতার হার যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি পাঠ্যক্রমে অংশ নেওয়া ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও আমি বলবো যদি কেউ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্ব তাদের স্কুলে পাঠানো এবং পড়াশোনা করানো।

এর আগে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সম্মিলিত ফলাফলের পরিসংখ্যান প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। এরপর নয়টি সাধারণ, একটি মাদ্রাসা বোর্ডসহ দশটি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং কারিগরি বোর্ডের মহাপরিচালক প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজ নিজ বোর্ডের ফলাফলের পরিসংখ্যান হস্তান্তর করেন।


জাল নথি ও কাগজ তৈরি করে ২৭ মাসেই ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ দুই কর্মকর্তার

বাঁ থেকে অভিযুক্ত রবিউল করিম ও শান্তনু সরকার। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

স্বাস্থ্যসেবামূলক যন্ত্রপাতি আমদানিকারক ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেডে পুকুরচুরির ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখানে কর্মরত অবস্থায় দুই উপ মহা-ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) রবিউল করিম (৪৫) ও শান্তনু কুমার দাশ (৪৬) প্রতিষ্ঠানটির ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রতিষ্ঠানটির অন্য কর্মকর্তারা জানান, মাত্র ২৭ মাস ৮ দিন চাকরিকালে ওই দুই উপ মহা-ব্যবস্থাপক কোম্পানির প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের পাশাপাশি পরস্পরের যোগসাজশে আরও প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি সাধন করেছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কোম্পানির সুনাম ও আর্থিক ক্ষতি করে এই দুই কর্মকর্তা নিজেদের নামে ও বেনামে কিনেছেন একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, গাড়ি, প্লট ও জমি-জমা। তাদের ব্যাংক হিসাবেও মোটা অঙ্কের টাকার খোঁজ মিলেছে।

সম্প্রতি দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। এরপর তাদের এক দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠিয়েছে।

মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেডের একাধিক কর্মকর্তা দৈনিক বাংলাকে জানান, প্রতিষ্ঠানটিতে রবিউল করিম ডিজিএম পদে যোগদান করেন ২০১৮ সালের পহেলা অক্টোবর ও শান্তনু কুমার যোগ দেন ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল। ২০২১ সালে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী হাসান মাহমুদের মৃত্যু হয়। তার শূন্যতায় প্রতিষ্ঠানের প্রধান অভিভাবক হয়ে যান এই দুই কর্মকর্তা। কোম্পানির উত্তরাধিকারীরা সরল বিশ্বাসে এই দুই কর্মকর্তার ওপর সরকারি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবামূলক যন্ত্রপাতি সরবরাহের কাজ দেখাশোনার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, সেই সরলতার সুযোগ নিয়ে ও বিশ্বাস ভঙ্গ করে রবিউল করিম ও শান্তনু কুমার দাশসহ তাদের সহযোগীরা অনিয়ম ও দুর্নীতির সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এ সময় চাকরিদাতা কোম্পানিকে না জানিয়ে তারা নিজেরাই একাধিক প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন। মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেডে চাকরিরত অবস্থাতেই পদ-পদবি ব্যবহার করে ও প্রতিষ্ঠানটির ভুয়া প্যাড, সিল-স্বাক্ষর ব্যবহার করে তারা নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি শুরু করেন, যার প্রমাণ পরবর্তীতে পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানের নাম, সুনাম, যোগাযোগের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে এবং ভুয়া প্যাড, ভুয়া নথি-দলিল বানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অগোচরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন এই দুই পদধারী কর্মকর্তা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রবিউল করিম ও শান্তনু কুমার দাশ দুইজনই নির্ধারিত বেতনে চাকরি করতেন মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেডে। তবে ২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মারা যাওয়ার পর থেকে ২০২৪ সালের পহেলা এপ্রিল পর্যন্ত ২৭ মাস ৮ দিন চাকরিকালে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। বিষয়টি ধরা পড়ে চলতি বছরের পহেলা এপ্রিল। ওই দিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তরের একটি কারণ দর্শানো নোটিশ কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পর।

ওই নোটিশ পাওয়ার পর মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, তাদের প্রতিষ্ঠানের দুই ডিজিএম রবিউল ও শান্তনু কর্মরত থাকা অবস্থায় সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ও সরকারি সংস্থার কাছে তথ্য গোপন করে প্রতারণা ও টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে দ্য ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল নামে পৃথক টেন্ডারে অংশগ্রহণ করেন। একই সঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানটির সিইও ও ব্যবস্থাপনার অংশীদার হিসাবে স্বাক্ষর করেন রবিউল। এ ছাড়া তিনি প্রযুক্তি ইন্টারন্যাশনাল নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। ডিজিডিপির নোটিশ আসার পর মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড কর্তৃপক্ষ আরও জানতে পারে, রবিউলের সঙ্গে একই কোম্পানির শান্তনু কুমার দাশও পৃথক টেন্ডার জমাদান প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত রয়েছেন। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে খোঁজ করে এই দুই কর্মকর্তার আরও বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ পায় কর্তৃপক্ষ।

মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেডের কর্মকর্তারা জানান, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রথমেই অনিয়মের বিষয়টি ধরে ফেলে। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের জবাব চেয়ে পরপর তিনবার চিঠি পাঠানো হয়। তবে প্রত্যেকবারই এমডির স্বাক্ষর জাল করে সেই চিঠির উত্তর দেন রবিউল ও শান্তনু কুমার দাশ। দ্বিতীয় চিঠিটি প্রতিষ্ঠানের ১৪ পুরানা পল্টন রেজিস্টার অফিসে এলে রবিউল করিম কৌশলে অফিস কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেনের কাছ থেকে অফিসে পৌঁছে দেবেন বলে জোর করে কেড়ে নেন । গত ঈদুল ফিতরের সময় এই দুই ডিজিএম ছুটি নিয়ে বাড়িতে গেলে তৃতীয় চিঠিটি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। সে সময়েই দুই ডিজিএমের প্রতারণার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের কাছে ধরা পড়ে। এ সময় মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো চিঠিপত্র ইস্যু হলে ওই দুই কর্মকর্তা নিজেরাই যোগাযোগ করে কৌশলে তা গ্রহণ করতেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতির অসৎ উদ্দেশ্যে দুই অভিযুক্ত ডিজিএম পরস্পরের যোগসাজশে কোম্পানির লেটার হেড জাল করে, জাল স্বাক্ষর দিয়ে গত ১৩ এপ্রিল প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তরে চিঠিও ইস্যু করেন। সেখানে রবিউল উল্লেখ করেন, তিনি কোম্পানির প্রতিনিধি হিসাবে আছেন।

শুধু তাই নয়, তথ্য গোপন করে রবিউল তার ব্যক্তিগত ও কোম্পানির অ্যাকাউন্ট নম্বর ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে। এ ছাড়া রবিউল ও শান্তনু দুজনে নিয়মিত গ্রাহকদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণ করতেন এমন অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। কোম্পানির অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে তারা বেনামে কোম্পানির নামে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করলেও তা বাকির খাতায় দেখাতেন। কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের দুর্নীতি ধরা পড়লে এর হিসাব তারা দিতে পারেননি।

কোম্পানির পক্ষ থেকে অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, এই দুজন কর্মকর্তা নির্ধারিত বেতনে চাকরি করলেও সবার অগোচরে অবৈধ উপায়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শান্তনু এই ২৭ মাস সময়ের মধ্যেই দুটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও গাড়ি কিনে ফেলেছেন। এ ছাড়াও প্লটসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে-বেনামে আরও জমি কিনেছেন।

আরও অবাক করা বিষয় হচ্ছে, এই দুই কর্মকর্তা ‘দ্য ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল’-এর নামে টেন্ডারে অংশ নিতেন, যার সব খরচ বহন করতে হতো মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেডকে।

এসব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজার মো. মিজানুর রহমান বলেন, অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা অনেক দিন ধরেই আমাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে জানতে পেরেছি, তারা নিজেদের নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ও তথ্য গোপন করে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কে জড়িয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া পরোক্ষভাবে আরও ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি সাধন করেছেন। জাল-জালিয়াতি ধরা পড়ার পরপরই মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শেখ জাকির হোসেন গত ২৪ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন। সেই দিনই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। ওই মামলায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।

গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, প্রতারণার মাধ্যমে কোম্পানির টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় রবিউল ও শান্তনুকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে।

গুলশান থানা পুলিশ জানায়, রবিউল করিম মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেডে চাকরিকালীন তথ্য গোপন করে ‘দ্য ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল’, বাংলাদেশ সাইন্স হাউজ ও প্রযুক্তি ইন্টারন্যশনাল নামে তিনটি এবং শান্তনু কুমার দাশ নোরামেড লাইফ সাইন্স নামে কোম্পানি খোলেন। এরপর মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেডের নামে আসা সব কাজ তারা কৌশলে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়ে যেতেন এবং সেখান থেকে কাজগুলো করতেন। এভাবে অল্পদিনেই প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত টাকায় রবিউল করিম রাজধানীতে বিলাসবহুল ৪টি ফ্ল্যাট, রংপুরে বাগানবাড়ি, নাটোরে ৫০ বিঘা জমি কেনেন। শান্তনু কুমার দাশও রাজধানীতে কেনেন ২টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, ২টি প্লট, গাড়ি। এ ছাড়া তাদের অ্যাকাউন্টে মোটা অঙ্কের টাকাও পাওয়া গেছে।

এত অল্প সময়ে এত অর্থ-সম্পত্তির মালিক কীভাবে হলেন তদন্তকারী কর্মকর্তাদের এমন প্রশ্নের মুখে তারা কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেননি বলে জানান তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড জানায়, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান মাহমুদ চৌধুরী জীবিত থাকাকালেও চেক জালিয়াতির কারণে অভিযুক্ত উভয় কর্মকর্তাকে শাস্তি দেওয়া হয়। এ ছাড়া গ্রেপ্তার হওয়ার এক সপ্তাহ আগেও কোম্পানির একটি চেক জালিয়াতি করতে গিয়ে তারা ধরা পড়েন।

এ কারণে মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড-এর মালামালসহ যে কোনো ধরনের কাজে এই দুই অসৎ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ বা লেনদেন না করার জন্য গ্রাহকদের সতর্ক করা হয়েছে।


কাল দেশে পৌঁছাবে এমভি আবদুল্লাহ

আপডেটেড ১২ মে, ২০২৪ ০০:০৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

সোমালিয়ার জলদস্যুর কবল থেকে মুক্ত হওয়া বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ বঙ্গোপসাগরে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। দীর্ঘ এক মাস পর মুক্তিপণের বিনিময়ে জাহাজটি উদ্ধার করা হয়। এরপর দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেয় জাহাজটি। সেখানে পণ্য খালাসের পর গত ৩০ এপ্রিল জাহাজটি দেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। আগামীকাল সোমবার দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে এমভি আবদুল্লাহর। জাহাজটি প্রথমে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় ভিড়বে। সেখানে দুদিন পণ্য খালাসের পর চট্টগ্রামের বহির্নোঙরে ভেড়ার কথা রয়েছে। বাকি মালামাল সেখানে খালাস করা হবে।

এদিকে শনিবার দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএমের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ৫৬ হাজার টন চুনাপাথর বোঝাই করে গত ২৯ এপ্রিল জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিনা সাকার বন্দর ত্যাগ করে। গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) এটি বঙ্গোপসাগরের জলসীমায় পৌঁছে।

কার্গো নিয়ে আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ দুপুরে এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। অস্ত্রের মুখে দস্যুরা সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখে। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জিম্মিকালীন মালিকপক্ষের তৎপরতায় সমঝোতা হয় জলদস্যুদের সঙ্গে।

১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ৩টা ৮ মিনিটের দিকে এমভি আবদুল্লাহ থেকে দস্যুরা নেমে যায়। এর আগে একই দিন বিকেলে দস্যুরা তাদের দাবি অনুযায়ী মুক্তিপণ বুঝে নেয়। একটি বিশেষ উড়োজাহাজে মুক্তিপণ বাবদ ৩ ব্যাগ ডলার এমভি আবদুল্লাহর পাশে সাগরে ছুড়ে ফেলা হয়। স্পিড বোট দিয়ে দস্যুরা ব্যাগ ৩টি কুড়িয়ে নেয়। দস্যুমুক্ত হয়ে ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে সোমালিয়ার উপকূল থেকে আরব আমিরাতের পথে রওনা দেয় এমভি আবদুল্লাহ।

২১ এপ্রিল এমভি আবদুল্লাহ সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়াহ পৌঁছে। সেখানে কার্গো খালাস করে জাহাজটি একই দেশের মিনা সাকার থেকে কার্গো লোড করে দেশের উদ্দেশে রওনা দেয়।

কবির গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন ‘এমভি আবদুল্লাহ’ আগে ‘গোল্ডেন হক’ নামে পরিচিত ছিল। ২০১৬ সালে তৈরি বাল্ক কেরিয়ারটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। গত বছর জাহাজটি এসআর শিপিং কিনে নেয়। বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী এ রকম মোট ২৩টি জাহাজ আছে কবির গ্রুপের বহরে।


আজ এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ, যেভাবে জানা যাবে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১২ মে, ২০২৪ ০০:০৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ রোববার (১২ মে) চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হবে। মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সংবাদ সম্মেলন করে ফলের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবেন বলে জানা গেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এদিন সকাল ১০টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলের সারসংক্ষেপ ও পরিসংখ্যান তুলে দেবেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এরপর বেলা ১১টায় নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অনলাইনে একযোগে ফল প্রকাশিত হবে।

পরীক্ষার ফল জানতে সব শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইটে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, পরীক্ষার নাম, বছর ও শিক্ষা বোর্ড সিলেক্ট করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে ফল জানা যাবে। পরীক্ষার ফলাফল ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট wwwdhakaeducationboard.gov.bd-G Result-এ ক্লিক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের EIIN এন্ট্রি করে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করা যাবে। এ ছাড়া www.education boardresults.gov.bdbd ওয়েবসাইটে ক্লিক করে, রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বরের মাধ্যমে রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করা যাবে। অন্যদিকে, পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানা যাবে।

এ ছাড়া মোবাইলফোনে এসএমএসের মাধ্যমেও ফল জানা যাবে। এ জন্য ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখতে হবে SSC <স্পেস> বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর <স্পেস> রোল নম্বর <স্পেস> পাসের বছর লিখে পাঠাতে হবে 16222 নম্বরে। উদাহরণ: SSC Dha 123456 2024, লিখে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে জানা যাবে ফল।

এ বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ১২ মার্চ শেষ হয়। ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ হয় ২০ মার্চ। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন দাখিলের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১৪ মার্চ এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২১ মার্চ শেষ হয়। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি ও ভোকেশনালের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১২ এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২১ মার্চ শেষ হয়। এ বছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন। সারা দেশে পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল ৩ হাজার ৭০০টি।


এপ্রিলে সড়কে ঝরেছে ৬৩২ প্রাণ: বিআরটিএ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদুল ফিতর উদযাপনের জন্য গ্রামে যাওয়া ও ফিরে আসার মধ্যে গত এপ্রিলে সারা দেশে ৬৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৬৩২ জন মানুষ মারা গেছেন। একই সঙ্গে আহত হয়েছেন ৮৬৬ জন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদারের সই করা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) প্রতিবেদনটি তৈরি হলেও আজ শনিবার এর তথ্য বিজ্ঞপ্তি আকারে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিআরটিএর বিভাগীয় অফিসের মাধ্যমে সারা দেশের সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান সংগ্রহ করা হয়েছে।

বিআরটিএর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম বিভাগে। এ বিভাগে ১৩৫টি দুর্ঘটনায় ১২৩ জন নিহত এবং ২২৭ জন আহত হয়েছেন। এর পরের অবস্থানে ঢাকা বিভাগ। এ বিভাগে ১০৮টি দুর্ঘটনায় নিহত ১১৫ এবং আহত হয়েছেন ১৫৭ জন।

এ ছাড়া রাজশাহী বিভাগে ১০০টি দুর্ঘটনায় ৯৩ জন নিহত এবং ১১২ জন আহত হয়েছেন। খুলনা বিভাগে ৯৮টি দুর্ঘটনায় নিহত ৮৭ এবং আহত ৯৫ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে ৭০টি দুর্ঘটনায় ৬২ জন নিহত এবং ৮৩ জন আহত হয়েছেন। রংপুর বিভাগে ৬৮টি দুর্ঘটনায় নিহত ৬৫ এবং আহত হয়েছেন ৬৪ জন। বরিশাল বিভাগে ৪৫টি দুর্ঘটনায় ৪৯ জন নিহত এবং ৬৪ জন আহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে ৩৪টি দুর্ঘটনায় নিহত ৩৮ এবং আহত হয়েছেন ৬৪ জন।

এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে। ২৫২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৯১ নিহত হয়েছেন। এরপরের অবস্থানে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান। এতে ১৭০টি দুর্ঘটনায় ৬২ জন নিহত হন।

এ ছাড়া ৪১টি প্রাইভেটকার, ১৫৭টি বাস ও মিনিবাস, ৫০টি পিকআপ, ২৮টি মাইক্রোবাস, ১২টি অ্যাম্বুলেন্স, ২১টি ভ্যান, ১৭টি ট্রাক্টর, ৩৪টি ইজিবাইক, ৩১টি ব্যাটারিচালিত রিকশা, ৬৮টি অটোরিকশা এবং ১৭৫টি অন্যান্য যানসহ ১ হাজার ৫৬টি যানবাহন এপ্রিল মাসে দুর্ঘটনার শিকার হয়।

এদিকে, সড়ক দুর্ঘটনার তথ্যগুলোতে সরকারি পরিসংখ্যানের সঙ্গে বেসরকারি পরিসংখ্যানগুলোর প্রায়ই অমিল লক্ষ্য করা যায়। গত ২০ এপ্রিল ওই ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনা নিয়ে তথ্য প্রকাশ করে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সে দিনের সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার সংগঠনের পক্ষে সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য প্রকাশ করেন। যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, এবারের ঈদুল ফিতরের আগে-পরে ১৫ দিনে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৪০৭ জন নিহত হয়েছেন। এ সময়ে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১ হাজার ৩৯৮ জন। এ ছাড়া গত বছরের তুলনায় এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ।

এ ছাড়াও আরও কয়েকটি সংগঠন ঈদযাত্রায় সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য প্রকাশ করলেও সেগুলো আমলে নিতে রাজি হয়নি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ।


banner close