বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ফেদেরাররা জানেন, কীভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হয়

'বিগ থ্রি'-র আধিপত্য তো রজার ফেদেরারের হাত ধরেই শুরু হয়েছে। ছবি : টুইটার
নিশাত আহমেদ
প্রকাশিত
নিশাত আহমেদ
প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২৩:২৩

“দেখো, ঠিক এই শটটা মেরেই আমি উইম্বলডন জিতব!”

অনুশীলন করতে থাকা গ্রুপের সবচেয়ে ছোট্ট ছেলেটা খিলখিলিয়ে হেসে বলে উঠল। কথাটা দূর থেকেই শুনলেন ম্যাডালেন বেয়ারলকার। বাসেল ওল্ড বয়েজ ফুটবল ক্লাবের কো-অর্ডিনেটর ছেলেটার আত্মবিশ্বাস দেখে মনে মনে খুশি হলেন, একটা অজানা আতঙ্কও গ্রাস করল তাঁকে। ছেলেটা যে নিজের সামর্থ্য নিয়ে অনেক বেশিই আত্মবিশ্বাসী!

এতটাই যে, কখনও হেরে গেলে, বা বাজেভাবে পয়েন্ট হারালে ছেলেটা প্রায়ই মেজাজ হারায়। র‍্যাকেট ছুঁড়ে ফেলা, চিৎকার করা, ঝগড়াঝাঁটি, হাউমাউ করে কান্নাকাটি - এগুলো তো নিত্যদিনের অভ্যাস। আবেগ নিয়ন্ত্রণ? সেটা যেন জানেই না এই ছেলে। মেজাজী ছেলেকে সামলাতে বেয়ারলকার থেকে শুরু করে কোচ পিটার কার্টার - সবাইকে নিয়মিত বেগ পেতে হয়। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য যে শুধু জয়ই নয়, হারের সঙ্গেও পরিচিত হতে হয়, ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে সফল হওয়ার যে যাত্রাপথ, সে পথকে চিনে রাখতে হয় - সেটা কে বোঝাবে একে?

বেয়ারলকার-কার্টাররা কম চেষ্টা করেননি। কোর্টে যখনই ছেলেটা এমন কোনো কাণ্ড ঘটাত, কার্টার একপাশে টেনে নিয়ে যেতেন তাঁকে। বোঝাতেন, প্রকৃত চ্যাম্পিয়নদের এমন করতে নেই। নিজ লক্ষ্যে স্থির থাকতে হয় চ্যাম্পিয়নদের। আবেগ যেন মন-মননে বাসা না বাঁধে, পেশাদারত্বের বাতাবরণে সেটা নিশ্চিত করতে হয়। আবেগ যে বড্ড বেয়াড়া, প্রশ্রয় দিলে মানুষকে লক্ষ্যচ্যুত করবেই!

কার্টারদের সে চেষ্টায় লাভ হতো সামান্যই। কখনও কখনও সাহায্য করতে এগিয়ে আসতেন ছেলেটার বাবা রবার্ট ও মা লিনেট। রবার্ট আর দশজন সুইসের মতো বেশ ঠাণ্ডা মাথার মানুষ। রাগারাগি তাঁর ধাতেই নেই, সেই রবার্টও কখনও কখনও বিদ্রোহী ছেলের কার্যক্রম দেখলে বিরক্ত হতেন। একবার এক টুর্নামেন্টে বাজে খেলে ছেলেটা বাদ পড়ল। ক্ষোভে ফোঁস ফোঁস করতে থাকা ছেলেকে নিয়ে বাবা রবার্ট গাড়িতে করে ফিরছিলেন। পুরো রাস্তায় ছেলে এত বেশি চিৎকার-চেঁচামেচি করছিল, শেষমেশ গাড়ি থামিয়ে ঘাড় ধরে ছেলেকে বের করে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা বরফের চাঁইয়ের মধ্যে মাথাটা ঘষে দিলেন কিছুক্ষণ। অন্তত বরফের স্পর্শ পেয়ে যেন ছেলের ভেতরের আগুন একটু নেভে!

মা লিনেটও একদিন ছেলেকে ধরে-বেঁধে কাছে বসালেন। ভালোমন্দ দুটো কথা বলে যদি লাইনে আনা যায় আর কি! “দেখো বাবা, তুমি যখনই রেগে যাবে, এর অর্থ হলো তুমি তোমার প্রতিপক্ষকে বার্তা দিচ্ছ, সে তোমাকে হারানোর জন্য যা যা করছে - ঠিক করছে। তোমার আবেগের বহিঃপ্রকাশ তাকে জয়ের জন্য আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। তুমি কি সেটা চাও?”, সোজাসাপ্টাই বলেছিলেন লিনেট।

এত আবেগ, এত বদরাগ - সব যে আসলে অদম্য জিগীষারই বহিঃপ্রকাশ - সেটা বুঝতে কারওর বাকি থাকার কথা না এতক্ষণে। কিন্তু ওই যে, অনিয়ন্ত্রিত আবেগ যে চ্যাম্পিয়নদের লাভের চেয়ে ক্ষতিই করেছে যুগ যুগ ধরে। খেয়ালি ম্যারাডোনা তা না হলে মেরেকেটে দুবার লিগ জেতেন না, ছিয়াশিতে একবার বিশ্বজয় করে চুরানব্বইয়ের বিশ্বকাপে ভক্তদের মনে অনন্ত আক্ষেপ জাগিয়ে থেমে যান না। লাগামহীন চিত্তচাঞ্চল্যর পায়ে বেড়ি পরালে হয়তো জন ম্যাকেনরোর ঘরেও সাতটার বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শোভা পায়।

বেয়ারলকার-কার্টাররা সে ভয়ই পেতেন - হয়তো ছেলেটা নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করতে পারবে না বদরাগের কারণে। এমনিতেই সুইজারল্যান্ডের ছেলেমেয়েরা টেনিস খেলাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে চায় না। বাসেল ওল্ড বয়েজ ক্লাবে যে দুই-একজন প্রতিভাবান শিশু-কিশোর টেনিসের জন্য এসেছে, প্রত্যেকেই কোনো না কোনো পর্যায়ে গিয়ে ঝরে পড়েছে। বেয়ারলকার চান না, এই ছেলেরও সেই নিয়তি হোক। এই ছেলে যে লাখে একটা!

জীবনের প্রথম জুনিয়র উইম্বলডন খেলতে গিয়ে শিরোপার নেশায় বিভোর ছেলেটা দুম করে হেরে বসল সেমিফাইনালে। ততদিনে এই ছেলেকে সুইসরা নিজেদের টেনিস-ভবিষ্যৎ হিসেবে ভাবা শুরু করেছে, ভাবা শুরু করেছে মার্টিনা হিঙ্গিস আর প্যাটি স্নাইডারদের যোগ্য উত্তরসূরি। হারের রেশ কাটতে না কাটতেই রেডিও সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য হাজিরা দিতে চলে যায় সেই ছেলে। উপস্থাপক মার্কো মোর্দাসিনি ব্যস্ত ছিলেন একটু, ছেলেটাকে বললেন, খানিক অপেক্ষা করতে। কাজ করতে করতেই মোর্দাসিনির কানে এলো, ছেলেটা পাশের ঘরে বসে কাঁদছে। সে কান্নায় ম্যাচ হারের যন্ত্রণা যতটা না ছিল, তার চেয়ে বেশি ছিল এত বড় একটা সুযোগ হারানোর বেদনা। এমন সুযোগ হারানোর দোষটা তো নিজেরই। এভাবে চলতে থাকলে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের সেই প্রতিশ্রুতি জীবনেও পূরণ করা যাবে না!

সমাধান একটাই, বদলাতে হবে নিজেকে। মানুষ হিসেবে, প্রতিযোগী হিসেবে।

সময় যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কতকিছুই তো বদলায়। ছেলেটাও শিখে যায় আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে। এতটাই যে, একটা সময় কোর্টে ছেলেটার খেলা, চলন-বলন দেখলে ধ্যানমগ্ন ঋষি ছাড়া কিছুই মনে হতো না। জঘন্য এক শট খেলে পয়েন্ট হারালো, বা বিখ্যাত ওয়ান হ্যান্ডেড ব্যাকহ্যান্ড শটটা ঠিক যুতসই হলো না - চুপচাপ বেসলাইনে চলে যেত, পরের পয়েন্টের জন্য লড়াই করতে।

যে আগে নিজেকেই সামলাতে পারত না, এক সময় পুরো খেলারই সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হয়ে উঠল। হয়ে উঠল অদ্বিতীয় শুভেচ্ছাদূত। বিশ্বব্রহ্মান্ডে এমন মানুষ খুঁজলে অনেক পাওয়া যাবে, যারা টেনিস খেলার নিয়ম-কানুন অতটা না জানলেও, ছেলেটাকে এক লহমায় চিনতে পারে। সংবাদ সম্মেলন থেকে শুরু করে সব জায়গায় ছেলেটার সঙ্গী হলো মুচকি একটা হাসি, যে হাসিতে মিশে নেই কোনো প্রতিহিংসা, দ্বেষ বা প্রতিপক্ষের প্রতি অসম্মান। টেনিসে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের মাপকাঠি ছেলেটা এত উঁচুতে নিয়ে গেল, যা অতিক্রম করার জন্য রাফায়েল নাদাল-নোভাক জোকোভিচদের অতিমানব হওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায়ও ছিল না।

ছেলেটার নাম রজার ফেদেরার।

বলা বাহুল্য, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফেদেরার শিখে গিয়েছিলেন প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেও। বাসেল ওল্ড বয়েজ ক্লাবের এক অনুশীলনে একদিন উইম্বলডন জেতার ঘোষণা দেওয়া সেই ফেদেরার অল ইংল্যান্ড ক্লাবে রাজত্ব করেছেন একবার নয়, আট-আটবার। সব মিলিয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন বিশবার। এর চেয়ে ভালোভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা কী আসলেও যেত? সত্যিকারের চ্যাম্পিয়নরাই তো এভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে জানেন!

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদালের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গত রাতে জীবনের শেষ ম্যাচটা খেলতে নেমেছিলেন। শেষ ম্যাচে ফেদেরার জিতবেন, তাতে ভাগ্য বিধাতার সায় ছিল না হয়তো। কিংবা কে জানে, বিশ্বজয়ী অ্যাথলেটদের আখ্যানের শেষ পর্বে একটু অপ্রাপ্তির ছোঁয়া থাকবে, সেটাই হয়তো নিয়তি। যে কারণে উসাইন বোল্ট জীবনের শেষ রেসে দৌড়াতে নেমে হ্যামস্ট্রিংয়ের কাছে হেরে যান, আর্জেন্টিনা বা ফ্রান্সের হয়ে ম্যারাডোনা আর জিদানের শেষ ম্যাচটা মোড়ানো থাকে অপ্রাপ্তিতে। মোহাম্মদ আলীকেও রিং থেকে নেমে যেতে হয় অধোবদনে। রজার ফেদেরারই -বা সে ধারার ব্যতিক্রম হবেন কেন!

জ্যাক সক-ফ্রান্সিস তিয়াফোর জুটির বিপক্ষে নিজের শেষ ম্যাচটায় জয়ের মুখ দেখা হয়নি ফেদেরারের। তবে এমন দিনে ম্যাচের ফলাফল কি আসলেই কোনো অর্থ বহন করে? বেদনার চাদরে মোড়া লন্ডনের ওটু অ্যারেনায় দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নাদাল আর জোকোভিচের বাঁধনহারা কান্নাই বুঝিয়েছে, গত দেড় দশকে একজন ফেদেরার না থাকলে তাঁদের মনে জয়ের নেশাটা হয়তো এভাবে জেগে উঠত না। হয়তো অবিশ্বাস্য সাফল্যে মোড়া ক্যারিয়ারও পেতেন না দুজন।

বিশ গ্র্যান্ড স্ল্যামের পাশাপাশি তাই রজার ফেদেরারের সবচেয়ে বড় অর্জন টেনিসকে রাফায়েল নাদাল আর নোভাক জোকোভিচের মতো দুজন হার-না-মানা মানসিকতার অ্যাথলেটকে শ্রেষ্ঠত্বের ওই রাস্তাটা দেখিয়ে দেওয়া, তাদের আজকের পর্যায়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করা। টেনিসকে আজকের এই পর্যায়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করা।

সকল প্রতিদ্বন্দ্বিতা, রেষারেষি ছাপিয়ে যেকোনো খেলার সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য তো ওখানেই!


সময় নিয়েই মাঠে ফিরতে চান ইবাদত হোসেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

পেসারদের পথ চলতে হয় ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করেই। যখনই নিজের সেরা ছন্দে থাকেন, তখনই হুট করে কালো মেঘের মতো আকাশটা অন্ধকার করে আসে ইনজুরি। তেমনটাই হয়েছিল বাংলাদেশের ডানহাতি পেসার ইবাদত হোসেনের সঙ্গে। ইবাদতকে নিয়ে যখন দেশের মানুষের এক আকাশ স্বপ্ন তখনই ইনজুরির করাল থাবায় লম্বা সময়ের জন্য ছিটকে গেলেন মাঠের বাইরে। যেতে হলো ডাক্তারের ছুরি-কাঁচির নিচে। সেটাও প্রায় বছর খানেক হয়ে গেল। ইবাদত এখন চালাচ্ছেন ফেরার লড়াই।

হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে পূরণ করছেন নিজের ছোট ছোট লক্ষ্যগুলো। এতেই তার মুখে বিশ্বজয়ের আনন্দের হাসি। দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকায় স্বাভাবিকভাবে কিছুটা বিষণ্ণ ইবাদত। তার ওপর বাবার গলার ক্যানসার ইবাদতকে ফেলেছে আরেক দুশ্চিন্তায়, ‘আমি নিজেই একটা ট্রমার মধ্যে আছি। এত বড় একটা সার্জারি, সাত-আট মাস ধরে খেলতে পারছি না। এর মধ্যে বাবা অসুস্থ। খারাপ সময় যাচ্ছে। তবে চেষ্টা করছি মানসিকভাবে নিজেকে চাঙা রাখতে।’

দীর্ঘদিন ধরে ফেরার লড়াইয়ে ইবাদত হোসেন। ফেরার প্রক্রিয়ার কথা জানাতে গিয়ে এ পেসার জানালেন, লন্ডনের লম্বা সেই সার্জারির কথা, ‘অনেক বড় সার্জারি যেহেতু, ডাক্তার বলেছিলেন আমার পাঁচটা জায়গা ঠিক করতে হয়েছে। এ রকম সার্জারি তিনি খুব কমই করেছেন। হাঁটু খোলার পর নাকি ডাক্তার দেখেছেন, আমার এসিএল, লিগামেন্ট, সবই খোলা। তখনই তিনি বলেছিলেন, আমার ফিরতে একটু সময় লাগবে। আমি যদি রিহ্যাবে একটু বেশি সময় দিই, তাহলে ক্যারিয়ারটা একটু লম্বা হবে।’

এশিয়া কাপ, ওয়ানডে বিশ্বকাপের পরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও খেলা হচ্ছে না বাংলাদেশের এ গতি তারকার। তাই ফেরা নিয়ে খুব বেশি তাড়াহুড়া করছেন না তিনি। এ বছরের সেপ্টেম্বরে ভারত সফর দিয়ে খেলায় ফেরার লক্ষ্য ইবাদতের, ‘ওয়ানডে বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপের পর এখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও খেলতে পারব না। সবই যখন মিস হয়েছে, তখন সময় নিয়ে ভালোভাবে ফেরা ভালো। দেখি ভারত সিরিজ দিয়ে ফেরা যায় কি না।’

ইনজুরির থেকে ফেরার পর পেসারদের পুরোনো ফর্ম ফিরে পাওয়া নিয়ে একটা শঙ্কা থেকেই যায়। ইবাদতের গতির বাউন্স আর আগ্রাসন কি থাকবে? সেটা পেতে খুব একটা সময় লাগবে না তার, ‘একবার ফিটনেস ফিরে পেলে ছন্দে ফিরতে বেশি দিন লাগবে না। আমার অ্যাকশন খুবই সাদামাটা, আমার জন্য এটা কঠিন কিছু নয়। আমাকে সবাই চেনে গতির কারণে। গতিই যদি না থাকে, তাহলে তো হবে না।’


ভারতের বোলিংরাজ্যের অকুতোভয় সৈনিক চেতন শর্মা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

১৯৬৬ সালে লুধিয়ানায় জন্ম ভারতের সাবেক পেসার চেতন শর্মার। ক্রিকেটের প্রতি প্রেম জেগে উঠেছিল অনেক অল্প বয়সেই। সেই প্রেমকে প্রণয়ে রূপ দিতে পেয়েছিলেন দক্ষ গুরুও। দেশপ্রেম আজাদ; যার হাতে ক্রিকেটের দীক্ষা নিয়েছিলেন স্বয়ং কপিল দেব।

গুরুর সঠিক নির্দেশনা, নিজের ভালোবাসা আর কঠোর পরিশ্রম নষ্টের পথে নয়- সেটা প্রমাণ হয় মাত্র ১৫ বছর বয়সেই। ১৯৮০ সালে নর্থ জোনের অনূর্ধ্ব-১৫ দলে ডাক পেয়ে তিনি রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিলেন।

হরিয়ানার হয়ে ১৯৮২ সালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় চেতনের। রঞ্জি ট্রফির সেই মৌসুমটাতে ছয় ম্যাচ খেলেই চেতন নিয়েছিলেন ২৭ উইকেট। প্রথম মৌসুমের এই পারফরম্যান্সের পর তিনি ডাক পেয়েছিলেন দ্বিতীয় মৌসুমেও, সেখানেও উজ্জ্বল চেতন শর্মা। মাত্র নয় ম্যাচ খেলেই নিয়েছিলেন ৫১ উইকেট।

ভারতের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এ আসরে এমন উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের পুরস্কার পেতে দেরি হয়নি এ পেসারের। পরের বছরই (১৯৮৩) জামশেদপুরে চেতন শর্মার মাথায় উঠে ভারতীয় ওয়ানডে অভিষেকের টুপি। ওয়ানডেতে সেই ম্যাচে ৬০ রানে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে হয়তো নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি।

তবে পরের সিরিজে পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট ম্যাচে ডাক পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৮৪ সালে লাহোরে সেই টেস্ট থেকেই যে শুরু, ধীরে ধীরে চেতন শর্মা হয়ে উঠলেন ভারতীয় দলের নিয়মিত সদস্য।

হঠাৎ করেই ওয়ানডে দলের বাইরে চলে যান চেতন শর্মা। সেই যে বাদ পড়লেন, আর সহজে দলে ফিরতে পারছিলেন না চেতন। বেলায় বেলায় মেঘ গড়াচ্ছিল, একে একে গড়িয়ে যাচ্ছিল অনেক অনেক বসন্ত, কিন্তু চেতনের আর দলে ফেরা হচ্ছিল না। তবে সেই সুযোগ চেতনের সামনে আসে ১৯৯২ সালে। দারুণ একটা ঘরোয়া মৌসুম কাটানোর পর তিনি দলে ফিরেছিলেন অনেক দিন পর; দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে।

তবে, এরপরও টিকে থাকতে পারেননি তিনি। আস্তে আস্তে তিনি চলে গেলেন পর্দার আড়ালে। কিন্তু ক্রিকেটকে তিনি একেবারেই কখনও ছেড়ে যাননি। অবসরের পর দায়িত্ব পালন করেছেন বিসিসিআইয়ের প্রধান নির্বাচকেরও। ক্রিকেট নিয়ে কাজ করেছেন বিভিন্ন টেলিভিশন, পত্রিকা, এমনকি সিনেমাতেও।

পুরো নাম : চেতন শর্মা

জন্ম : ৩ জানুয়ারি, ১৯৬৬ সাল

জন্মস্থানম: লুধিয়ানা, পাঞ্জাব, ভারত

রাশি: মকর

প্রিয় খেলা: ক্রিকেট

প্রিয় খাবার: চিকেন তান্দুরি

প্রিয় পানীয়: সফল ড্রিংকস (লিমকা)

প্রিয় রং: সাদা, নীল

প্রিয় ক্রিকেটার: ভিভ রিচার্ডস, সুনিল গাভাস্কার

প্রিয় ক্রিকেট দল: ভারত

প্রিয় সতীর্থ: মাইকেল হোল্ডিং

প্রিয় গাড়ি: অডি

প্রিয় শখ: সিনেমা দেখা, গান শোনা

প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: অ্যাডিডাডস


নগর প্রতিদ্বন্দ্বিদের হারিয়ে শিরোপা উৎসব ইন্টার মিলানে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

এসি মিলান আর ইন্টার মিলানের ম্যাচ মানেই যেনো এক অন্যরকম উত্তেজনা কাজ করে ইতালির মিলান শহরে। পুরো শহর ভাগ হয়ে যায় দুই ভাগে; উদ্বেলিত হয় ফুটবল প্রেমে। দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বিকে সমর্থন জোগাতে থাকে হাউজফুল গ্যালারি। এটা অবশ্য মর্যাদার লড়াইও বটে। এক সময় এ লড়াইয়ে আধিপত্য থাকতো এসি মিলানেরেই। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধার কমেছে তাদের। ২০২২ সালের পরে আর ইন্টার মিলানকে হারাতেই পারেনি তারা।

গতকাল রাতে আবারও সেই মর্যাদার লড়াইয়ে মাঠে নেমেছিল দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বি। এ ম্যাচে ছিলো আরেকটি বিশেষত্ব; জিতলেই সিরি-আ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইন্টার মিলান, সেটাও পাঁচ ম্যাচ হাতে রেখেই। সে রকম প্রস্তুতিও নিয়েই এসেছিল নেরাজ্জুরিদের খেলোয়াড়, টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে দর্শকেরাও। ৩ লালকার্ড, ৫ হলুদকার্ড আর ২৯ ফাউলের টানটান উত্তেজনার ম্যাচে হলোও সেটাই। ২-১ গোলের জয়ে নিজেদের ইতিহাসের ২০তম লিগ শিরোপা নিশ্চিত করেছে সিমোনে ইনজাগির শিষ্যরা।

পুরো ম্যাচে বল দখলে সামান্য এগিয়ে থাকা এসি মিলান গোলের জন্য কিংবা লক্ষ্যে শট রাখায়ও আধিপত্য করে। মোট ১৫টি শট নিয়ে ছয়টি লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা, যেখানে ইন্টারের ১১ শটের তিনটি থাকে লক্ষ্যে। তবে, ওই তিন শটের দুটিই জালে পাঠিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসে ইনজাগির দল।

ম্যাচের শুরুতেই কিছুটা আধিপত্য দেখায় ইন্টার মিলান। সেটার ফল পেতেও খুব একটা সময় লাগেনি তাদের। ম্যাচের ১৮তম মিনিটে কর্নারের ফলশ্রুতিতে বাঁজামাঁ পাভার্দের হেড পাস পেয়ে কাছ থেকে হেডেই ইন্টারকে এগিয়ে নেন ইতালিয়ান ডিফেন্ডার ফ্রান্সেসকো আচের্বি। দ্বিতীয়ার্ধের চতুর্থ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দর্শনীয় এক গোল করেন মার্কাস থুরাম। সান সিরোতে তখন নেরাজ্জুরি সমর্থকরা মেতে উঠেছেন শিরোপার উৎসবে।

এরপর এসি মিলান একাধিক সুযোগ তৈরি করেও গোলের খাতা খুলতে পারেনি। অবশেষে ৮০ মিনিটে এসি মিলানকে গোলের স্বাদ এনে দেন ডিফেন্ডার ফিকায়ো তোমোরি। গোল পেয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে এসি মিলান। ম্যাচে তৈরী হয় নতুন উত্তেজনা।

পরে অবশ্য সেই উত্তেজনা রূপ নিলো বাগ-বিতণ্ডতায়। লাল কার্ড দেখেন এসি মিলানের ডিফেন্ডার থিও এরনঁদেজ ও ইন্টারের ডিফেন্ডার ডেনজেল ডামফ্রিস। খানিক বাদে প্রতিপক্ষের একজনকে কনুই মেরে ডিফেন্ডার দাভিদে কালাব্রিয়াও বহিষ্কার হলে ৯ জনে পরিণত হয় এসি মিলান।

শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের জয়েই শিরোপা উল্লাস করে ইন্টার। ৩৩ ম্যাচে ইন্টারের পয়েন্ট ৮৬। সমান ম্যাচে দুইয়ে থাকা এসি মিলানের পয়েন্ট ৬৯।


বেলজিয়ামের গোল্ডেনবয় এডেন হ্যাজার্ড

আপডেটেড ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ১৫:২৯
নাজমুল সাগর

বেলজিয়ামের লা-লুভিয়ের শহরে জন্ম। ফুটলের হাতেখরিটা পরিবার থেকেই। বাবা ছিলেন বেলজিয়ামের পেশাদার ফুটবলার। ছেলেও অনুসরণ করলেন বাবার পদাঙ্কই। ভালোবেসে ফেললেন ফুটবলকে। অল্প বয়সেই জানান দিতে শুরু করেন নিজের প্রতিভার। বলছি সাবেক বেলজিয়াম ফুটবলার এডেন হ্যাজার্ডের কথা।

১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে বেলজিয়ামের ক্লাব ব্রেনোয়ার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন হ্যাজার্ড। এরপর ফরাসি ক্লাব লিলের যুবদলের খেলার পর সুযোগ পান মুলদলে। সেখানে ৫ মৌসুমে ১৪৭ ম্যাচ খেলে গোল করেন ৩৬টি।এরপর ২০১২-২৩ মৌসুমে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ইউরোতে পাড়ি জমান ইংলিশ ক্লাব চেলসিতে। এখানে কাটানো সময়কেই বলা হয় হ্যাজার্ডের ক্যারিয়ারের প্রাইম টাইম।

লন্ডনের ক্লাবটির হয়ে অর্জনের খাতায় যোগ করেন ২টি লিগ শিরোপা আর ২টি উয়েফা ইউরোপা লিগ। এরপর ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বদলি হিসেবে ২০১৯-২০ মৌসুমে নাম লেখান স্পেন জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদে। সেখানেও জিতেছেন একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ, ক্লাব শিরোপা।

বেলজিয়ামের গোল্ডেন জেনারেশনের অন্যতম তারকা ছিলেন তিনি। হ্যাজার্ডের জাতীয় দলে এসেছিল সময় নিয়ে লম্বা রেসের ঘোড়া হতে। খেলেছেন অনূর্ধ্ব-১৫, ১৬, ১৭, ১৯ দলে। বয়সভিত্তিক দলে চার বছর অতিবাহিত হওয়ার পরে ডাক আসে জাতীয় দলে। সতেরো বছর বয়সেই অভিষেক হয় লুক্সেমবার্গের বিপক্ষে।

এরপর বেলজিয়ামের হয়ে খেলেছেন ৩টি বিশ্বকাপ। ২০১৮ সালে তার দল বিশ্বকাপ শেষ করেছিল তৃতীয় দল হিসেবে। সেবার সেমিফাইনালে স্বপ্ন ভেঙেছিল ব্রাজিলের। ইনজুরির থাবায় ৩১ বছর বয়সে ২০২৩ সালে বিদায় বলেন জাতীয় দলকে।

পুরো নাম- ইডেন মাইকেল ওয়াল্টার হ্যাজার্ড।

জন্ম- ৭ জানুয়ারি, ১৯৯১ সাল।

জন্মস্থান- লা লুভিয়ের, বেলজিয়াম।

রাশি: মকর রাশি।

প্রিয় খেলা: ফুটবল।

প্রিয় খাবার: বার্গার ।

প্রিয় পানীয়: বিয়ার।

প্রিয় রং: নীল।

প্রিয় ফুটবলার: জিনেদিন জিদান।

প্রিয় ফুটবল দল: বেলজিয়াম, চেলসি।

প্রিয় সতীর্থ: কেভিন ডি ব্রুইনা, লুকা মদ্রিচ, ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড।

প্রিয় গাড়ি: অডি।

প্রিয় শখ: ভ্রমণ, গান শোনা।

প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: নাইকি।


প্রোটিয়াদের স্বল্প সময়ের তারকা রিচার্ড স্নেল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ছোট কিন্তু কার্যকরী এক ক্যারিয়ার ছিল রিচার্ড স্নেলের। দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সিতে খুব বেশি ম্যাচ খেলা হয়নি তার; কিন্তু যখনই মাঠে নামার সুযোগ হয়েছে, তখনই তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে জন্ম রিচার্ড পিটার স্নেলের। প্রেটিয়াদের হয়ে মাঠে নেমেছেন ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ চার বছর। মূলত একজন অলরাউন্ডার ছিলেন তিনি। প্রেটিয়াদের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনের কাজ করতেন তিনি, পাশাপাশি ডানহাতি মিডিয়াম পেস বলার ছিলেন।

স্নেল নিজের প্রতিভার জানান দিয়েছিলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেই। দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেটের দল ট্রান্সভালের হয়ে খেলতেন তিনি। ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে স্টিভেন জ্যাকের সঙ্গে অবিস্মরণীয় উদ্বোধনী জুটি গড়ে স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন।

স্নেলের টেস্ট অভিষেকটা ছিল অবিস্মরণীয়। দীর্ঘদিনের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শেষে যখন দক্ষিণ আফ্রিকা দল আবার ক্রিকেটে ফেরে তিনি ছিলেন সেই দলের সদস্য। এবং ফেরার পরে প্রোটিয়াদের হয়ে প্রথম টেস্ট উইকেট নেন তিনি। সেটা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তার এক বছর আগে অর্থাৎ ১৯৯১ সালে তার রঙিন পোশাকের জার্সি ওয়ানেডেতে অভিষেক হয়।

শুরুর কয়েক ম্যাচে খুব একটা নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছিলেন না। তবে সবাইকে চমকে দেন ১৯৯৩ সালে হিরো কাপে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শিকার করেন ৭ ওভার ১ বলে মাত্র ২৪ রান দিয়ে শিকার করেন চার উইকেট। এরপর ১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে বেনসন অ্যান্ড হেজেস বিশ্ব সিরিজে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪০ রান দিয়ে শিকার করেন ৫ উইকেট। আর এটাই ছিল তার ক্যারিয়ারে সেরা বোলিং ফিগার।

প্রোটিয়াদের হয়ে ৫টি টেস্ট ও ৪২টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছিল তার। ১৯৯৮ সালে বিদায় জানান সব ধরনের ক্রিকেটকে। এরপর কাজ শুরু করেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ফিজিওথেরাপিস্ট হিসেবে। এর আগে বল হাতে ৫ টেস্টে ম্যাচে শিকার করেছেন ১৯ উইকেট। আর ব্যাট হাতে করেছেন ৯৫ রান। ৪২ ওয়ানডেতে শিকার ৪৪ উইকেট। আর রান করেছেন ৩২২।

পুরো নাম: রিচার্ড পিটার স্নেল।

জন্ম: ১২ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৮ সাল।

জন্মস্থান: ডারবান, দক্ষিণ আফ্রিকা।

রাশি: মেষ।

প্রিয় খেলা: ক্রিকেট।

প্রিয় খাবার: ছাকালাকা।

প্রিয় পানীয়: বিয়ার।

প্রিয় রং: সাদা।

প্রিয় ক্রিকেটার: চার্লস ভিন্টসেন্ট।

প্রিয় ক্রিকেট দল: দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল।

প্রিয় সতীর্থ: অ্যান্ড্রু হাডসন।

প্রিয় গাড়ি: মার্সিডিজ বেঞ্জ।

প্রিয় স্টেডিয়াম: ডারবান, দক্ষিণ আফ্রিকা।

প্রিয় শখ: গলফ খেলা।

প্রিয় জুতার ব্র্যান্ড: অ্যাডিডাস।


গোল করাই ছিল নেশা জার্মান তারকা মিরোস্লাভ ক্লোসার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

সিলিসিরা অঞ্চল, পোল্যান্ডের এক ছোট্ট গ্রাম। ১৯৪৪ সালে আবার পোল্যান্ড দখল করে নেয় সোভিয়েত সেনারা। এরপর আর সেখানে মন টেকেনি জোসেফ আর বারবারা দম্পতির। ফ্রান্স ঘুরে আবারও পাড়ি জমান নৃতাত্ত্বিক জার্মানিতে। তাদের সঙ্গে ছিল আট বছরের একটি ছেলে। ফুটবলকে সিরিয়াস প্রফেশন হিসেবে নেওয়ার কোনো লক্ষ্য তার মধ্যে ছিল না। আসলে সে ছিল দ্বিধাগ্রস্ত, যদি ফুটবল নিয়ে বেশিদূর এগোতে না পারে তাহলে তো একূল-ওকূল দুকূলই যাবে। কাজেই ফুটবলের পাশাপাশি সে শিখছিল কারপেন্টারের কাজ। সে একাধারে ফুটবলার একাধারে কারপেন্টার; কিন্তু এভাবে আর কতদিন। দুই নৌকায় পা দিয়ে তো আর বেশিদিন চলা যায় না।

ততদিনে তার স্কোরিং অ্যাবিলিটি সারা ফেলে দিয়েছে জার্মানিতে। অবশেষে দ্বিধাবিভক্ত হওয়া ভাগ্যের রাস্তা থেকে একটা রাস্তা ক্রমেই অদৃশ্য হয়ে গেল। আর সুস্পষ্ট উজ্জ্বল হয়ে রইল ফুটবলার হবার রাস্তাটা। তখন সে বুঝে গিয়েছে, কারপেন্টার নয়, ফুটবলটাই লেখা আছে তার ভাগ্যে। ছেড়ে দিল কারপেন্টারের কাজ। আর একমাত্র পেশা হিসেবে বেছে নিল সকার জগতের চর্মগোলককে। কে জানত, সেদিনের তার এই সিদ্ধান্তটা কালো-লাল-হলুদ পতাকাটাকে করবে উজ্জ্বলতম।

পরে তার পারফরম্যান্সে জার্মানিতে একটা প্রবাদ তৈরি হয়ে গিয়েছিল, ‘ক্লোসা গোল করলে জার্মানি হারে না।’ ২০০২ বিশ্বকাপের আগে ক্লোসার ডাক এসেছিল পোল্যান্ড দলে খেলার। কিন্তু তিনি বলেন, ‘আমি জার্মান পাসপোর্টের মালিক। খেলতে হলে তাই রুডি ফোলারের দলেই খেলব।’ জন্মসূত্র নয়, নৃতাত্ত্বিক পরিচয়কেই সেদিন বেছে নিয়েছিলেন তিনি। আর জার্মানি পেয়ে গিয়েছিল তাদের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ স্কোরারকে- ‘দ্য সাল্টা ক্লজ’ মিরোস্লাভ ক্লোসা।

একবছর পরেই আলবেনিয়ার বিপক্ষে জার্মানির হয়ে অভিষেক হল তার। গোল করে জেতালেন দলকে। সুযোগ পেয়ে গেলেন ২০০২-এর বিশ্বকাপ দলেও। বিশ্বকাপের পাঁচটা গোলই এসেছিল তার হেড থেকে।

২০১৪ বিশ্বকাপে ঘানার বিপক্ষে গোল করে ছুঁয়ে ফেলেন ব্রাজিলের রোনালদো ‘দ্য ফেনোমেনন’-এর বিশ্বকাপের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ড। এরপর সেমিফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষেই গোল করে ভেঙে ফেলেন সেই রেকর্ড। ১৬ গোল করে হন উতিহাসে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলের মালিক।

১৯৯৪ এর সেই ১৬ বছর বয়সি কারপেন্টার আর ২০১৪ এর সেই বিশ্বজয়ী সাল্টাক্লজের মাঝে রয়ে গিয়েছে কুড়িটা বছর। রয়ে গিয়েছে কত কত স্মৃতি। হামবুর্গ থেকে কাইজারস্লাটার্ন কিংবা ব্রেমেন থেকে বায়ার্ন– তার মাথা কথা বলেছে বারবার।


হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া তারকা অস্কার দোস সান্তোস

আপডেটেড ২১ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:১০
নাজমুল সাগর

২০১৪ সালের বিশ্বকাপটা হয়তো ভুলেই যেতে চাইবেন ব্রাজিল সমর্থকরা। তবে একটা জিনিস হয়তো তারা কখনোই ভুলতে পারবেন না; সেটা হলো অস্কার দোস সান্তোসকে। সে সময় বিশ্ব ফুটবলে রাজত্ব করার আভাস দিয়েছিলেন যে তরুণ ফুটবলাররা; তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন এ ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার। নেইমারের পরেই যাকে নিয়ে আশায় বুক বাঁধত হলুদ জার্সিপ্রেমীরা। মাঝমাঠে নিজের পায়ের কারুকাজ দিয়ে মন কেড়েছিলেন দর্শকদের। কিন্তু আশা জাগিয়ে হঠাৎ করেই হারিয়ে গেলেন কোনো এক অজানায়। এরপর আর তাকে আলোতে খুঁজে পাওয়া গেল না। অস্কারের এক সিদ্ধান্তে চারপাশ আলোকিত করার আগেই নিভে গেল একটি নক্ষত্র।

২০১২ সালে লন্ডনের ক্লাব চেলসির জার্সি দিয়ে শুরু হয় অস্কারের প্রফেশনাল ক্যারিয়ার। সেখানটায় সাফল্য এসেও ধরা দিচ্ছিল তার হাতে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা, লিগ কাপ, ইউরোপা লিগ শিরোপাসহ বেশ কিছু অর্জন রয়েছে তার চেলসি ক্যারিয়ারে। তা ছাড়া চেলসির মতো ঐতিহ্যবাহী এক ক্লাবের সদস্য তিনি ছিলেন। ক্রমশ তিনি বনে যাচ্ছিলেন ক্লাবে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

চেলসিতে অস্কারের পারফরম্যান্স কিংবা তার গুরুত্ব বোঝা যায় একটি পরিসংখ্যান দেখলেই। যখন তিনি চেলসি ছেড়ে চীনে পাড়ি জমান ততদিন নীল জার্সিতে খেলে ফেলেছেন ২০০ ম্যাচ। এরপর হঠাৎ করেই একটি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন অস্কার। তবে সেটাকে নির্দিষ্ট করে ‘ভুল’ বলাটা বেশ কঠিন।

ব্রাজিলের এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম অস্কারের। হয়তো তার চাওয়া ছিল দ্রুতই একটু বেশি উপার্জন পরিবারকে সুখে রাখা। সে সময়ে চীনেও খেলার অবস্থা কিংবা বিশ্ব মিডিয়ার আলোচনায় না থাকলেও; চলছিল কাঁড়িকাঁড়ি টাকার প্রলোভন। এমনটা চাওয়া নিশ্চয়ই ভুল কিছু নয়। তবে তিনি হয়তো সেটা ইউরোপে থেকেই পারতেন। তবে তাতে হয়তো খানিক কালক্ষেপণ হতো। অথবা তিনি হয়তো নিজের সামর্থ্যের ওপর ভরসা করতে পারেননি।

মাত্র ২৫ বছর বয়সেই চাইনিজ সুপার লিগ দল সাংঘাইয়ের জার্সি গায়ে জড়ান তিনি ৬৭ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে। তার সাপ্তাহিক বেতন ছিল আরও চমকে দেওয়ার মতো। প্রায় পাঁচ লাখ ডলার। যা কি না তাকে বানিয়েছিল সে সময়ের পঞ্চম সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার।

এর পরে চেলসিতে ফিরতে চাইলেও সেটা আর সম্ভব হয়নি। বিশ্ব মিডিয়ার কাভারেজ না থাকায় আর আলোতেও আসেননি অস্কার। প্রস্ফুটিত হওয়ার আগেই ব্রাজিলের ফুটবল বাগান থেকে ঝড়ে যায় আরেকটি ফুল।


ইতালির ডিফেন্স সম্রাট পাওলো মালদিনি

পাওলো মালদিনি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ইতালির মিলান শহরের একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম মালদিনির। আরেকটু স্পষ্ট করে বললে, ফুটবল পরিবারেই জন্ম। বাবা ছিলেন এসি মিলানের একজন লিজেন্ডারি ফুটবলার। দলটির মাঠ নেমেছেন ৪১২ ম্যাচে; জয় করেছেন ৪টি সিরি-আ এবং একটি ইউরোপিয়া কাপ।

তবে তরুণ মালদিনির ভালোবাসা ছিল প্রতিপক্ষ ক্লাব জুভেন্তাসের প্রতি; কিন্তু বয়সেরসঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন আসে মালদিনির ভালোবাসায়, প্রেমে পড়তে শুরু করেন নিজ জন্মভূমির ক্লাব এসি মিলানের। এরপর তার বাবা একদিন জানতে চান কোন ক্লাবের হয়ে ট্রায়াল দিতে চান তিনি। পাওলো সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিল মিলান, অবশ্যই আমি আমার নিজের জন্মভূমির হয়ে খেলতে চাই।

ট্রায়ালের দিন ঠিক হয়ে গেল, পাওলো খুব সকালে তাঁর বুট নিয়ে মাঠে পৌছে গেল। কোচরা তাঁর পজিশন সম্পর্কে জানতে চাইল। কিন্তু মালদিনির কোনো সঠিক পজিশন ছিল না সে উত্তর দিল ‘আমার পছন্দের তেমন কোনো পজিশন নেই।’ ক্লাবে তখন রাইট উইং এর অভাব ছিল কোচরা পাওলো কে ঐ পজিশনে খেলাল এবং মুগ্ধ হয়ে ঐ দিনই তাকে সাইন করিয়ে নিল।

১৯৮৫ সালের ২০ জানুয়ারি মাত্র ১৬ বছর বয়সে উদিনেসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে সিরি-আ তে অভিষেক হয় তার। মৌসুমে ওই এক ম্যাচেই সুযোগ হয়েছিল তার। অবশ্য পরের সিজন থেকেই নিয়মিত মাঠে নামেন এসি মিলানের হয়ে। ৩ নম্বর জার্সিতে পাকাপোক্ত করেন লেফট ব্যাক।

১৯৮৮ সালে আসে পাওলো মালদিনির জীবনের অন্যতম মাহেন্দ্রক্ষণ। মিলানের হয়ে দুর্দান্ত খেলার পুরস্কার হিসেবে যাক আসে ইতালির জাতীয় দল থেকে। যুগোস্লাভয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ইতালির জার্সিতে মাঠে নামেন তিনি।

১৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষে ২০০২ সালে জাতীয় দলকে বিদায় জানায় পাওলো মালদিনি। ২০০৮-৯ মৌসুম শেষে বিদায় জানান সব ধরনের ফুটবল থেকে।

পাওলো মালদিনি ছিলেন ডিফেন্স সম্রাট। মুভমেন্ট, পজিশনিং, মার্কিং, ক্রস, অ্যাটাকারদেরসঙ্গে ট্রান্জিশনাল প্লের কাজ করা, গতি দিয়ে লেফট ফ্ল্যাংকে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের জন্যও হুমকি ছিলো মালদিনি।

পুরো নাম- পাওলো সিজার মালদিনি।

জন্ম- ২৬ জুন ১৯৬৮ সাল।

জন্মস্থান- মিলান, ইতালি।

রাশি: কর্কটরাশি।

প্রিয় খেলা: ফুটবল।

প্রিয় খাবার: তিরামিসু, প্যানেটোন।

প্রিয় পানীয়: বিয়ার।

প্রিয় রং: কালো, সাদা।

প্রিয় ফুটবলার: সিজার মালদিনি।

প্রিয় ফুটবল দল: ইতালি, এসি মিলান।

প্রিয় সতীর্থ: ফ্রাংকো বারেসি।

প্রিয় গাড়ি: রোলস রয়েস।

প্রিয় শখ: ভ্রমণ, গান শোনা।

প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: অ্যাডিডাস।


১১ ম্যাচ নিষিদ্ধ আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

ইনজুরির কারণে নিজ ক্লাব টাইগ্রেস ইউএএনএলের হয়ে মাঠে নামা হয়নি আর্জেন্টাইন গোল রক্ষক নাহুয়েল গুসমানের। কিন্তু আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তিনিই। তবে সেটা সুখকর নয়, শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্যই আলোচনায় এসেছেন তিনি। পেয়েছেন বড় শাস্তিও।

স্ট্যান্ড থেকে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকসহ খেলোয়াড়দের দিকে লেজার লাইট মারার অপরাধে আর্জেন্টাইন এ গোলরক্ষককে ১১ ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছে মেক্সিকান ফুটবল ফেডারেশন (এফএমএফ)।

মেক্সিকোর শীর্ষ প্রতিযোগিতা লিগা এমএক্সে টাইগ্রেস ইউএএনএল ক্লাবের হয়ে খেলেন নাহুয়েল গুসমান। চোটের জন্য গত রোববার মনটেরির বিপক্ষে ছিলেন না তিনি। কিন্তু নিজ দলের খেলা দেখেছেন গ্যালারিতে বসে।

স্ট্যান্ড থেকে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক এস্তেবান আন্দ্রাদাসহ অন্য খেলোয়াড়দের দিকে লেজার মারতে দেখা যায় তাকে। তার এই কাণ্ড দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সমালোচনার মুখে পড়েন নেটিজেনদের। পরে অবশ্য এমন কাণ্ডের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন ৩৮ বছর বয়সি এই গোলরক্ষক। কিন্তু শাস্তির মুখে তাকে পড়তেই হলো।

নিজেদের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে ফেডারেশন থেকে দেওয়া গুসমানের শাস্তি মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছে তার ক্লাব টাইগ্রেস। একই সঙ্গে এই ফুটবলারকে আরও সুশৃঙ্খল করার কথাও বলেছে তারা।

শুধু গুসমানই নয়, শাস্তি পেয়েছেন আন্দ্রাদাও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুসমানকে সমকামী বলে মন্তব্য করায় তাকে জরিমানা করেছে মেক্সিকান ফুটবল ফেডারেশন।


বিশেষ লক্ষ্যে ‘নিয়তি’ টানছে মার্টিনেজকে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক:

২০১০ সালে আর্সেনালের বয়সভিত্তিক দলে যোগ দেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। দুই বছর পর সুযোগ পান মূল দলে। কিন্তু ২০২০ সালে অ্যাস্টন ভিলায় যোগ দেওয়ার আগে ৮ বছরে গানারদের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ১৫ ম্যাচ। এমনকি সে সময় গোলকিপার-সংকট থাকতেও তাকে বিবেচনা করা হয়নি।

তবে মার্টিনেজের ভাগ্যটা পাল্টাতে শুরু করে ভিলায় যোগ দেওয়ার পর। আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে সুযোগ পান ও কোপা আমেরিকা জয়ে রাখেন বড় ভূমিকা। ভালো খেলেন লা ফিনালিসিমাতেও। আর ২০২২ বিশ্বকাপটা হয়ে আসে রূপকথার মতো করেই!

ফাইনালে ১২৩ মিনিটে কোলোমুয়ানির শট ঠেকিয়ে দেন অবিশ্বাস্যভাবে, টাইব্রেকার পেরিয়ে অবশেষে আরেকটি বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা। আর মার্টিনেজের হাতে ওঠে সেরা গোলকিপারের পুরস্কার। বড় দলে যোগ দিয়ে ক্যারিয়ারটা আরও বড় করতে আর কী চাই!

তবে মার্টিনেজ ভুলে যাননি ভিলার কথা। বড় ক্লাব থেকে প্রস্তাব ছুড়ে ফেলে থেকে যান ভিলা পার্কেই। সাফ জানিয়ে দেন, ‘এই ক্লাবে যোগ দেওয়ার পর আমার ক্যারিয়ার চূড়া ছুঁয়েছে। আমি সব সময়ই বলে এসেছি, এই ক্লাবের কাছে আমি কৃতজ্ঞ এবং এখানে থাকতে ভালোবাসি।’

বিশ্বকাপজয়ী গোল রক্ষকের কথায় স্পষ্ট; পছন্দের এ ক্লাবকে কিছু ফিরিয়েও দিতে চান। সেই পথে গতকাল রাতে ভিলাকে বড় একটা ধাপ পার করাতে দারুণ সহায়তা করলেন মার্টিনেজ। ফরাসি ক্লাব লিলের বিপক্ষে ইউরোপা কনফারেন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে দুটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে দলকে তুললেন সেমিফাইনালে।

প্রথম লেগ ২-১ গোলে জিতেছিল অ্যাস্টন ভিলা। ফিরতি লেগ লিল ২-১ গোলে জেতায় দুই লেগ মিলিয়ে দুই দল ৩-৩ গোলে সমতায় থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকারে লিলের নাবিল বেনতালেব ও বেনঞ্জামিন আন্দ্রের শট রুখে দেন মার্টিনেজ। টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলের জয়ে ১৯৮২ সালের পর এবার প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান কোনো বড় টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে উঠল অ্যাস্টন ভিলা।

ম্যাচ শেষে মার্টিনেজ বলেছেন, ‘অনেক উত্থান-পতন নিয়েই দুর্দান্ত একটা ক্যারিয়ার কাটছে আমার। আমি বিশ্বাসী মানুষ এবং কঠোর পরিশ্রমী। আর আজ এটাই ছিল আমার নিয়তি। মনে হচ্ছে, এবার আমরা বিশেষ কিছুই করব। সেটা চ্যাম্পিয়নস লিগ না কনফারেন্স লিগ- তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। আমরা ক্লাবকে আরেকটু এগিয়ে নিতে সবটুকুই উজাড় করে দিচ্ছি।’


ফুটবলার থেকে বাইশ গজের নায়ক মাইক গ্যাটিং

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

হেঁটেছিলেন ছোট ভাইয়ের মতো একই পথে। খেলার প্রতি ভালোবাসাটা জন্মেছিল ফুটবল দিয়ে। কিন্তু বাদ সাধে শারীরিক গঠন। উচ্চতা কম থাকায় বাদ পড়েন ফুটবলের এক ট্রায়াল থেকে। অবশ্য সেটাই ক্রিকেটকে দিয়েছিল এক কিংবদন্তির জন্ম। ফুটবল ছেড়ে নাম লেখালেন ক্রিকেটে। হয়ে গেলেন কাউন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ব্যাটার; রচনা করলেন এক নতুন ইতিহাস। তিনি সাবেক ইংলিশ তারকা ক্রিকেটার মাইক গ্যাটিং।

পুরো ক্যারিয়ারজুড়ে ঘরোয়া ক্রিকেটের হয়ে ২২ গজ শাসন করেছেন মিডলসেক্সের হয়ে। প্রায় ১৫ বছর সামলেছেন অধিনায়কের দায়িত্বও। ইংল্যান্ডের এই কিংবদন্তি আবার স্বীকার হয়েছিলেন শেন ওয়ার্নের বল অব দ্য সেঞ্চুরির। সবমিলিয়ে মাইক গ্যাটিং ছিলেন ইংল্যান্ড ক্রিকেটের এক বর্ণাঢ্য চরিত্র।

কাউন্টি দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে ১৯৭৮ সালে ক্রিকেটের অভিজাত ফরম্যাট টেস্টে অভিষেক হয় এ ডানহাতি ব্যাটারের। কিন্তু কাউন্টির সেই ফর্ম তিনি হারিয়ে খুঁজছিলেন। কোনোভাবেই পাচ্ছিলেন না বড় ইনিংসের দেখা। টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি আসে ৫৪তম ইনিংসে।

তার ক্যারিয়ারটাকে স্পষ্ট তিন ভাগে ভাগ করা যায়- প্রথম যুগের সেঞ্চুরিহীন সাত বছরের ৫৩ ইনিংস, পরের ২৮ টেস্টে ৬৩ গড়ে করা তিনটি সেঞ্চুরি, শেষ ধাপে ৫১টি টেস্টে এক সেঞ্চুরি। ধারাবাহিকভাবে ব্যাটিং করতে পারলে হয়তো তিনি ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন হিসেবে বিবেচিত হতেন।

তবে আস্তে আস্তে ইংল্যান্ডে ব্যাটিং লাইন আপের ভরসা হয় উঠেছিলেন তিনি। সবমিলিয়ে ৭৯ টেস্টে ৩৫.৫৫ গড়ে করেছেন ৪ হাজার ৪০৯ রান। নামের পাশে ১০টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি লেখা আছে একটি ডাবল সেঞ্চুরিও। রঙিন পোশাকের ক্রিকেট ৯২ ওয়ানেডেতে করেছেন ২ হাজার ৯৫ রান। এক সেঞ্চুরির পাশাপাশি করেছেন ৯টি হাফসেঞ্চুরি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রায় ৫০ গড়ে করেছেন ৩৬ হাজারের বেশি রান। লিস্ট এ ক্রিকেটেও ১৪ হাজার রানের মালিক তিনি।

পুরো নাম : মাইকেল মাইক উইলিয়াম গ্যাটিং

জন্ম : ৬ জুন, ১৯৫৭ সাল

জন্মস্থানম : কিংসবারি, লন্ডন, ইংল্যান্ড

রাশি: মিথুন

প্রিয় খেলা: ক্রিকেট, ফুটবল

প্রিয় খাবার: গুজবেরি, চেরি পাই, চাইনিজ।

প্রিয় পানীয়: বিয়ার।

প্রিয় রং: সাদা, লাল।

প্রিয় ক্রিকেটার: রিচার্ড হ্যাডলি।

প্রিয় ক্রিকেট দল: ইংল্যান্ড

প্রিয় সতীর্থ: ব্রায়ান রোজ

প্রিয় গাড়ি: টয়োটা

প্রিয় শখ: ফুটবল খেলা, গান শোনা।

প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: অ্যাডিডাস।


আইপিএলের সমালোচনায় রহিত শর্মা  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

আইপিএল ‘ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দিচ্ছে’ কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের এমন মন্তব্য বেশ পুরোনো। অনেকবারই তারা সরব হয়েছেন এসব নিয়ে। আইপিএলে এমন কিছু নিয়ম বাস্তবায়ন করা হয়, যেটাতে ক্রিকেটারদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়ে। এবার আইপিএলের নতুন নিয়ম নিয়ে সমালোচনা করলেন স্বয়ং ভারত ক্রিকেট দলের অধিনায়ক রহিম শর্মা। এর আগে অজি তারকা রিকি পন্টিংও সমালোচনা করেছিলেন এটি নিয়ে।

চলমান আইপিএলে চলছে রান রান উৎসব। ভাঙছে একের পর এক রেকর্ড। আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তিনটি দলীয় স্কোর এসেছে এ বছর। আবার সর্বোচ্চ পাঁচটির মধ্যে চারটিই এ বছর এসেছে। এবারই প্রথম আইপিএলে রান উঠেছে ওভারপ্রতি ৯–এর বেশি।

কেন এমন রান উঠছে, সেই প্রশ্নে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইপিএলের ইমপ্যাক্ট-সাব বা ইমপ্যাক্ট-বদলির নিয়ম ভালোভাবে কাজে লাগানোর ফলেই এমন রানপ্রসবা মৌসুম দেখা যাচ্ছে। এই নিয়ম নিয়ে বিতর্ক আছে। ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাই এই নিয়মের পক্ষে নন।

‘ক্লাব প্রেইরি ফায়ার’ পডকাস্টে রহিত শর্মার কাছে অ্যাডাস গিলক্রিস্ট ‘ইমপ্যাক্ট’ নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইমপ্যাক্ট–সাব নিয়মের আমি ভক্ত নই। এটা অলরাউন্ডারদের পেছনে টেনে ধরবে, আর দিন শেষে ক্রিকেট ১১ জনের খেলা, ১২ জনের নয়। আশপাশের মানুষের জন্য বিনোদনমূলক করার জন্য আপনি খেলা থেকে অনেক কিছু নিয়ে নিচ্ছেন।’

ইমপ্যাক্ট-সাব নিয়মের কারণে অলরাউন্ডারদের ওপর এর প্রভাব বেশ ভয়ঙ্কর হতে পারে সেটাই জানালেন রহিত। তিনি বলেন, ‘শিবম দুবে, ওয়াশিংটন সুন্দররা বল করছে না, যেটা আমাদের জন্য ভালো নয়। সত্যি বলতে আমি এর ভক্ত নই। তবে এটা বিনোদনমূলক।’

এরপর গিলক্রিস্টও বলেন, ‘এটা মূলত দর্শকদের জন্যই। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট সফল কারণ, এটা ক্রিকেটের মূল বিষয়ের সঙ্গে আপস করেনি। এটা ১১ বনাম ১১ জনের খেলা, একই মাঠ, ফিল্ড রেস্ট্রিকশনও সমান, অর্থাৎ কোনো চমকের প্রয়োজন হয়নি। সম্ভবত এটা (ইমপ্যাক্ট নিয়ম) ভবিষ্যতের জন্য নয়।’

এর আগে ইমপ্যাক্ট–সাব নিয়ে সমালোচনা করেছেন দিল্লি ক্যাপিটালসের কোচ রিকি পন্টিংও। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় দলগুলো যেভাবে ব্যাটিং করছে, এর পেছনে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নিয়মের বড় প্রভাব আছে। গত (১৫ এপ্রিল) দেখেছেন কীভাবে ট্রাভিস হেড ব্যাটিং করেছে। পরের ব্যাটসম্যানদের ওপর আত্মবিশ্বাস না থাকলে এভাবে ব্যাটিং করা যায় না।’

বিষয়:

বাংলাদেশ দলে ১৫ বছরের হাবিবা

হাবিবা ইসলাম
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। আগামী ২৮ এপ্রিল প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে দুই দল। এবারের সিরিজের সবগুলো ম্যাচই হবে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। এই সিরিজে বাংলাদেশ স্কোয়াডে রয়েছে এক নতুন মুখ। অফস্পিনার সুমাইয়া আক্তারের বদলে বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন ১৫ বছর বয়সী তরুণী হাবিবা ইসলাম।

এ ছাড়া এই সিরিজে দলে ফিরেছেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার রুবাইয়া হায়দার। তাকে ফারজানা আক্তারের বদলে স্কোয়াডে আনা হয়েছে। বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক সাজ্জাদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা দলে তেমন পরিবর্তন আনিনি। যেহেতু আমরা সিলেটে স্পোর্টিং উইকেটে খেলছি, তাই আমরা একজন অতিরিক্ত পেস বোলার নিয়েছি। আমাদের ওপেনিং ব্যাটার ও উইকেটরক্ষক রুবিয়া হায়দারও আছে, চোট কাটিয়ে ফিরেছেন। এটা একটা ভালো খবর।’

তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, ‘ভারতের বিপক্ষে এই সিরিজ থেকেই আমাদের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরু হবে। আমাদের দল গঠন, পরিকল্পনা এবং কৌশল বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত। আমরা এখন থেকে অন্য কোনো ফরম্যাটে খেলছি না। আমরা এখনো বলতে পারি না যে, এটাই বিশ্বকাপের জন্য আমাদের চূড়ান্ত স্কোয়াড। আমাদের সামনে এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপের আগে আমরা আরেকটি হোম সিরিজ খেলার পরিকল্পনা করছি।


banner close