সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

হাতেভাজা মুড়িতে জীবিকা

মুড়ি তৈরির কাজ করছেন কারিগররা। ছবি: দৈনিক বাংলা
ফরমান শেখ, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)
প্রকাশিত
ফরমান শেখ, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)
প্রকাশিত : ২৯ মার্চ, ২০২৪ ১৬:৩৪

পবিত্র মাসে রমজান মাস এলে বেড়ে যায় মুড়ির কদর। ফলে মুড়ি কারিগর ও ব্যবসায়ীরা বছরজুড়ে অপেক্ষায় থাকেন রমজান মাসের জন্য। আবার অনেকে মৌসুমি ব্যবসা হিসেবে এ মাসে মুড়ি উৎপাদন ও বিক্রি করে থাকেন।

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া, মাইস্তা, নগরবাড়ী, দৌলতপুর, লুহুরিয়া, সিংহটিয়া ও মাছুয়াহাটিসহ প্রায় ১৫টি গ্রামে তাই মুড়ি তৈরির ধুম পড়েছে। এসব গ্রামের প্রায় কয়েকশ পরিবার হাতেভাজা মুড়ি বিক্রি করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এই মুড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ দেশের প্রায় ৮-১০টি জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে।

একজন মুড়ি কারিগর এক দিনে ১ থেকে দেড় মণ চালের মুড়ি ভাজতে পারেন। প্রতি মণ চালে ২২ থেকে ২৩ কেজি মুড়ি হয়। প্রতি কেজি মুড়ি পাইকারি ৯০-১০০ টাকা এবং খুচরা ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। মূলত গ্রামের নারীরাই হাতে ভেজে গুণগত মানসম্মত মুড়ি তৈরি করেন।

মুড়ির কারিগরদের তথ্যমতে, প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ টাকার হাতেভাজা মুড়ি উৎপাদন এবং কেনাবেচা হয়। তবে পরিশ্রমের লাভ বেশির ভাগই চলে যায় মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে।

দৌলতপুর গ্রামের রাধা রানী মোদক বলেন, ‘আমি ৩৫ বছর ধরে মুড়ি ভাজি। ধান সেদ্ধ করে রোদে শুকানোর পর আবার সেই ধান মেশিনে মাড়াই করে মুড়ি ভাজার জন্যে চাল তৈরি করা হয়। পরে সেই চাল দিয়ে লবণ জলের মিশ্রণে আগুনে তাপ সহ্য করে মুড়ি ভাজতে অনেক পরিশ্রম হয়। সবকিছুর দাম বেশি। পরিশ্রমের তুলনায় লাভ তেমনটা হয় না।’

অধীর মোদক বলেন, ‘মুড়ি ভাজার প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৩০০ টাকা। এক মণ ধানের মুড়ি ভাজতে খড়ি, লবণ, যাতায়াত ও ধান ভাঙানোর খরচ আরও ১৫০ টাকা। সব খরচ বাদে বেশি লাভ হয় না। এক মণ ধানের মুড়ি ভাজলে ৪০০-৫০০ টাকা লাভ হয়, তা দিয়ে চলে না। আমরা সরকারি সহযোগিতা চাই। প্রতিবছরই চিৎকার করে বলি। কিন্তু কোনো কাজ হয় না।’

তবে প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছেন না হাতেভাজা মুড়ি উৎপাদনকারীরা। মেশিনে মুড়ি ভাজতে সময় কম লাগে কিন্তু তুলনামূলক লাভ বেশি। ফলে হাতেভাজা মুড়ি উৎপাদনকারীরা দিন দিন এ কাজ ছেড়ে অন্য পেশায় ধাবিত হচ্ছেন।

সততা মুড়ির মিলের স্বত্বাধিকারী শংকর চন্দ্র মোদক বলেন, ‘রমজানে আমরা অনেক সময় মোবাইলেও মুড়ির অর্ডার নিয়ে সরবারহ করে থাকি। তা ছাড়া নির্দিষ্ট বাজারে স্থায়ী গ্রাহকরা মুড়ি কিনে থাকেন। রমজান ছাড়া বছরের অন্য সময়ে অর্ধেকে নেমে আসে বেচাবিক্রি।’

শংকর মোদক আরও বলেন, ‘আমরা প্রতি কেজি মুড়ি ৭০ টাকায় বিত্রি করি। খুচরা ৮০-৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। ৫০ কেজি চালের বস্তায় ৪৩-৪৪ কেজি মুড়ি হয়। রমজান মাসে আমাদের মিলে গড়ে ১ লাখ টাকার কেনাবেচা হয়ে থাকে।’

এদিকে মেশিনের সাহায্যে বিপুল পরিমাণ মুড়ি উৎপাদিত হলেও হাতেভাজা মুড়ির চাহিদা এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। মেশিনে ভাজা মুড়ি সাদা ও লম্বা করতে ক্ষতিকর রাসায়নিক ইউরিয়া কিংবা সোডা ব্যবহারের অভিযোগ থাকায় একশ্রেণির মানুষ সব সময় বিষমুক্ত হাতেভাজা মুড়ি খুঁজে থাকেন।

দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান মজনু বলেন, নারান্দিয়ায় মুড়ি কেনাবেচার একটি নির্দিষ্ট বাজার দরকার। সরকার থেকে হাতেভাজা মুড়ি উৎপাদনকারী ব্যক্তি এবং পরিবারগুলোকে বিশেষ ঋণ সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন।

উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার বলেন, টাঙ্গাইল তথা বাংলাদেশের মধ্যে মুড়ি উৎপাদনের অন্যতম স্থান কালিহাতীর নারান্দিয়া। এখানকার উৎপাদিত লাখ লাখ টাকার মুড়ি সারা দেশে সরবরাহ হচ্ছে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের যথাযথ উদ্যোগ প্রয়োজন।

টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম বলেন, ‘কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়ার হাতেভাজা মুড়ির চাহিদা ও সুনাম রয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত প্রান্তিক মানুষদের অবশ্যই সরকারি সাহায্য করার সুযোগ আছে। তাদের তালিকা করে কম সুদে ঋণ স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে সাহায্য করার উদ্যোগ নেব। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানকার হাতেভাজা মুড়ির ব্র্যান্ডিং ও আরও প্রচার প্রসারের জন্য জিআই অবেদন করা হবে।’


গোয়ালন্দে বেপরোয়া মাটি বালু ব্যবসায়ী চক্র

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০৪:০৩
মইনুল হক মৃধা, (গোয়ালন্দ) রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাটি ব্যবসায়ী চক্র। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হলেও আবার সবকিছু ম্যানেজ করে মাটি কাটা শুরু করে মাটি খেকোর দল। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন, সামান্য জরিমানা করে চক্রকে আটকে রাখা সম্ভব নয়। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

গত শনিবার সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের নতুন সেতুর ডানপাশে এক কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী হতে বালু তোলা হচ্ছে। নদীতে ড্রেজার বসিয়ে দিনরাত দেদারছে মাটি তুলছেন মাটি খেকোরা। এ নিয়ে জমির মালিকরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাতে তোয়াক্কা করছেন না। তাদের নানাভাবে ভয়ভীতিও দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ আছে।

উজানচর ইউনিয়নের স্থানীয় লিপু মেম্বারের তত্ত্বাবধানে কাবিখা প্রকল্পের একটি সরকারি রাস্তা নির্মাণের জন্য মাটি তুলছেন। এতে প্রশাসনের অনুমতি আছে।

মরা পদ্মায় ইসমাইল হোসেন ও মনোয়ার হোসেন মনা দাবি করেন, তারা জমির মালিকদের সঙ্গে সমন্বয় করেই মাটি তুলছেন। তবে প্রশাসনের কোন অনুমতি নেই।

একইভাবে দেবগ্রাম পিয়ার আলীর মোড়ে লাল্টু, দৌলতদিয়া ক্যানালঘাটে কাদের ফকির, জিয়া, শহীদসহ বিভিন্ন স্থানে নদী ও পুকুর থেকে মাটি ব্যবসায়ীরা ড্রেজার ও ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি-বালি তুলছেন। উত্তোলিত বালি-মাটি বিভিন্ন ইটভাটা ও ব্যাক্তি-প্রতিষ্টানে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।

তাছাড়া গ্রামীণ সড়কে এসব মাটি-বালি বহনকারী ট্রাক বেপরোয়া গতিতে চলায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে প্রায়ই।

জানা গেছে, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ধারা ৫ এর ১ উপধারা অনুযায়ী পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ধারা-৪ এর (খ) অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্য সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা হলে অথবা আবাসিক এলাকা থেকে কমপক্ষে ১ কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘সরকারি বা বেসরকারি কোন কাজের জন্যই কাউকে নদী হতে মাটি-বালি উত্তোলনের অনুমতি দেয়া হয়নি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ইতিপূর্বে এ ধরনের দুটি ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করা হয়েছে। ভেকু্ ও ড্রাম ট্রাকের চালককে জরিমানা করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’


চট্টগ্রামে দিনভর ভোগান্তির পর পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়।

একই সভায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী নিহত ও এক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় তিনটি বাস পুড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষতিপূরণ দাবি করেন শ্রমিক নেতারা। চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের অনুরোধে এবং জনস্বার্থে আমাদের ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন।’

জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকে সংগঠনের পক্ষ থেকে কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে গাড়ি চলাচলে নিরাপত্তা প্রদান, গাড়ি পোড়ানোর বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ, অবৈধ গাড়ির বিষয়ে ব্যবস্থা, শ্রমিকের ওপর অকারণে মামলা না করার দাবি উপস্থাপন করা হয়।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীদের দেওয়া আগুনে পুড়ে যাওয়া বাসের ক্ষতিপূরণ এবং বাসে অগ্নিসংযোগকারীদের গ্রেপ্তারসহ চার দফা দাবিতে আজ রোববার সকাল থেকে বৃহত্তর চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধি অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের প্রতিনিধি, বিআরটিসির সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার উর্থি প্রমুখ।

দিনভর জনভোগান্তি

চার দফা দাবিতে রোববার ভোর ৬টা থেকে শুরু হয় পরিবহন ধর্মঘট। শনিবার বিকেলে ঘোষণা দেওয়া এই ধর্মঘটে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। তীব্র গরমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও গণপরিবহন পায়নি লোকজন।

চট্টগ্রাম নগরীর রাস্তায় বাসসহ কোনো ধরনের গণপরিবহন ছিল না। এ ছাড়া তিন পার্বত্য জেলা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলাগামী রুটেও বাস চলাচল বন্ধ ছিল। মোড়ে মোড়ে বিভিন্ন গন্তব্যমুখী মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা।

অক্সিজেন মোড়ে অপেক্ষারত তরুণ সাদিক খান জানান, এই গরমের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা সড়কে দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো যানবাহন পাননি। সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ভেঙে ভেঙে গেছেন অনেকে। এতে সময় দুই থেকে তিন ঘণ্টা বেশি লাগে।

চট্টগ্রাম নগর থেকে দিনভর বিভিন্ন উপজেলা, কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলার উদ্দেশে কোনো বাস ছাড়েনি। ওইসব এলাকা থেকে কোনো বাসও চট্টগ্রাম নগরীতে আসেনি। জেলাগুলোর শহর এলাকায়ও চলেনি কোনো গণপরিবহন।

সকালে অক্সিজেন এলাকায় গিয়ে কয়েকশ যাত্রীকে গণপরিবহন ও দূরপাল্লার বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। অক্সিজেন এলাকা থেকে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার উদ্দেশে বাস ছাড়ে।

পার্বত্য জেলা ছাড়াও চট্টগ্রামের কোনো উপজেলায় চলেনি যানবাহন। সিএনজিচালিত অটোরিকশা চললেও ভাড়া হাঁকা হয় তিন থেকে চার গুণ বেশি। অনেকে বাড়তি ভাড়া দিয়েই রওনা হয়েছেন গন্তব্যে।

নগরীর মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট, বহদ্দারহাট, আগ্রাবাদ, জিইসি এলাকায় শত শত মানুষ যানবাহনের জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন সকালের দিকে। এই জনদুর্ভোগকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে রিকশা, যাত্রী টানা মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা বাড়তি ভাড়া দাবি করে বসেন।

গণপরিবহন না থাকায় যাত্রীদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়েছে। নগরের চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে সাধারণত কক্সবাজারগামী বাস ছেড়ে যায়। তবে সকালে কাউন্টারগুলোর সামনে কোনো বাস ছিল না। অধিকাংশ কাউন্টার ছিল বন্ধ। সকালের দিকে বহদ্দারহাট এলাকায় কয়েকটি বাস আটকে দেন পরিবহন শ্রমিকরা।

চান্দগাঁও থানার ওসি জাহিদুল কবীর বলেন, ‘কর্মবিরতির সমর্থকরা নগরে চলাচলকারী বাস আটকে রেখেছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’


সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ২০:০৪
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ায় কালবৈশাখী ঝড়ে রেললাইনের ওপর গাছ পড়ায় সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। আজ রোববার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যার দিকে সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কমলগঞ্জের ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কী ঘটেছিল

স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে হঠাৎ করেই মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে হয় কালবৈশাখী ঝড়। এতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে যাওয়া আখাউড়া-সিলেট রেলপথের একাধিক স্থানে গাছ ভেঙে পড়ে। ফলে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন এই রুটের ট্রেনের যাত্রীরা।

কমলগঞ্জের ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার বলেন, ঝড়ে সিলেট-শ্রীমঙ্গলের মাঝে রেললাইনের ওপর কয়েকটি গাছ ভেঙে পড়ে। এতে বিকেল থেকে সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়।

কবির আহমেদ আরও বলেন, শ্রীমঙ্গল স্টেশনে জয়ন্তীকা এক্সপ্রেস ট্রেন ৫টা ২০ মিনিটে আটকা পড়ে। এ ছাড়া ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেস ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশনে ৫টা ৩৭ মিনিটে আটকা পড়ে।

বিষয়:

দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:১৬
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি ও বাসস

অতি তীব্র দাবদাহে চুয়াডাঙ্গায় মানুষের জনজীবন ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিন ধরে মাঝারি, তীব্র ও অতি তীব্র দাবদাহ চলছে চুয়াডাঙ্গায়। এর মধ্যে ৭ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়।

আজ রোববার বিকেল ৩ টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। এরপর সন্ধ্যা ছয়টায় জেলার তাপমাত্রা একই থাকে। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪১ শতাংশ। গতকাল সন্ধ্যা ৬ টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র দাবদাহের কারনে প্রশাসনের তরফ থেকে জনসাধারণকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। হাসপাতালে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগীর চাপ অস্বাভাবিকহারে বেড়ে গেছে।

প্রচণ্ড তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সেই সঙ্গে বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকায় অনুভূত হচ্ছে ভ্যাপসা গরম। তাপদাহে খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সর্বত্র লু হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। জেলায় দুপুরের পর ঘরে থাকা দুরূহ হয়ে পড়েছে। তাপদাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া সিনিয়র পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান জানায়, আগামী ৫-৬ দিনের মধ্যে তাপমাত্রা কমার লক্ষণ নেই। আরো বাড়তে পারে। এদিকে আবহাওয়া অফিস থেকে সিলেট অঞ্চল বাদে সারা দেশে নতুন করে চতুর্থ দফায় ৭২ ঘন্টার হিট এলার্ট জারি করেছে।


বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে ২ কেএনএফ সদস্য নিহত

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১৭:৫৬
থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি

বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। এ অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও ওয়াকিটকিসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদিও জব্দ করা হয়।

আজ রোববার সকালে রুমা ও থানচি উপজেলার সীমান্তের দুর্গম বাকলাই পাড়া এলাকায় অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। তবে নিহতদের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপি আর) সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

তিনি বলেন, ‘বান্দরবানের জেলার রুমা ও থানচি দুই সীমান্তে উপজেলার দুর্গম বাকলাই পাড়া এলাকায় সেনাবাহিনী অভিযানের কুকি-চিনের দুইজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমান গোলাবারুদ, ওয়াকিটকিসহ অনান্য সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়েছে।’

স্থানীয়রা জানায়, রোববার সকালে রুমা ও থানচির দুই উপজেলা সীমান্তের বাকলাই পাড়া এলাকায় দুটি মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। তবে তারা কে বা কারা সে বিষয়ে কেউ না জানলেও তাদের গায়ে কেএনএফের পোশাক দেখা যায়।

থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয়রা বাকলাই এলাকায় দুটি মরদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার পুলিশ। মরদেহ দুটি থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয়েছে।

বিষয়:

মুন্সীগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে বৃদ্ধার মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

মুন্সীগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে রোকেয়া বেগম (৬০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। জানা যায়, মাদ্রাসা পড়ুয়া নাতিকে মাদ্রাসায় দিয়ে ফিরে আসার পথে তিনি সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ট্রেনে কাটা পড়েন।

আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে জেলার শ্রীনগর উপজেলার পাটাভোগ ইউনিয়নের কামারখোলা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নিহত রোকেয়া একই উপজেলার পূর্ব কামারখোলা গ্রামের প্রয়াত ইয়াকুব শিকদারের স্ত্রী।

স্থানীয়দের ভাষ্য, রোকেয়া আজ সকালে তার নাতিকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পৌঁছে দেয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। সকালে তাকে মাদ্রাসায় পৌঁছে দিয়ে ফেরার পথে অসতর্ক অবস্থায় ট্রেন লাইনে অবস্থান করলে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসে নিচে কাটা পড়েন তিনি।

মাওয়া রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার সাইফুল ইসলাম জানান, সকালে সুন্দরবন এক্সপ্রেস নামে ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে খুলনা যাচ্ছিল। ট্রেনটি জেলার শ্রীনগর উপজেলার কামারখোলা অতিক্রম করছিল। এ সময় কামারখোলা দারুস সুন্নাহ জিনিয়া সালেহিয়া মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের পূর্বপাশে বৃদ্ধা রোকেয়া অসাবধানতাবশত রেললাইন পারাপার হতে গেলে ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন।

শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, নিহতের বাড়ি দুর্ঘটনাস্থলের কাছে হওয়ায় ঘটনার পরপরই স্বজনরা মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে শ্রীনগর থানা ও রেল পুলিশ আইনি পদক্ষেপ নেবে।


উখিয়ায় অস্ত্র ও গুলিসহ ৫ রোহিঙ্গা আটক

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১৪:৫৯
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবির থেকে দেশি-বিদেশি অস্ত্র ও গুলিসহ পাঁচজন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। রোববার ভোর রাতের দিকে উপজেলার কুতুপালং ২-ওয়েস্ট নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৯ ব্লকে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন এপিবিএনের অধিনায়ক অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (এডিআইজি) মোহাম্মদ ইকবাল।

আটকরা হলেন- ক্যাম্পের ডি-৯ ব্লকের মোহাম্মদ জোবায়ের (২২)। একই ক্যাম্পের সি-২ ব্লকের দিল মোহাম্মদ (৩৫)। সি-৭ ব্লকের মোহাম্মদ খলিল (৩৪)। সি-২ ব্লকের মোহাম্মদ ইদ্রিছ (২৮) ও এ-৬ ব্লকের মোহাম্মদুল্লাহ (২৫)।

আটকরা সকলে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে এপিবিএন পুলিশ।

এডিআইজি ইকবাল বলেন, ‘রোববার ভোর রাতে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং ২-ওয়েস্ট নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৯ ব্লকের একটি ঘরে কতিপয় লোকজন অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশে সশস্ত্র অবস্থায় অবস্থান করছিল। খবরে এপিবিএন পুলিশের একটি দল অভিযানে নামে। পরে ঘরটি ঘিরে ফেললে ১০ থেকে ১২ জন লোক পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় তাদের পিছেু নিয়ে ৫ জনকে আটক করা সম্ভব হলেও অন্যরা পালায়। পরে আটকদের দেহ এবং ওই ঘরটি তল্লাশি করে পাওয়া যায় বিদেশি ৫টি পিস্তল, দেশিয় তৈরি ২টি বন্দুক ও ১৮টি গুলি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আটকরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।’

আটকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে উখিয়া থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

বিষয়:

বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

তীব্র গরম থেকে বাঁচতে ও বৃষ্টির আশায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় নেচে- গেয়ে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করেছে স্থানীয় লোকজন। গতকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ব্যাঙের বিয়ের অনুষ্ঠান চলে উপজেলার চন্দ্রখানা বালাটারি গ্রামে।

ওই এলাকার বাসিন্দা সাহাপুর আলীর স্ত্রী মল্লিকা বেগমের আয়োজনে বিয়েতে অসংখ্য নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। নাচ-গানের মধ্যদিয়ে ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া শেষে বরণ ডালায় ব্যাঙ দুটিকে নিয়ে পুরো গ্রাম ঘুরে বেড়ান তারা। এ সময় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে চাল-ডাল সংগ্রহ করে ব্যাঙের বিয়েতে অংশগ্রহণকারীদের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়।

ব্যাঙের বিয়ের আয়োজনকারী মল্লিকা বেগম জানান, কিছুদিন ধরে তীব্র গরম। তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে আমরা কষ্টে রয়েছি। গ্রামের মানুষজন অস্বস্তিতে আছেন। কোনো কাজ-কামাই করতে পারছেন না। তারা বিশ্বাস করেন ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হয়। সেই বিশ্বাস থেকেই আজ তারা ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করেন।

ব্যাঙের বিয়ে দেখতে আসা জাহিদ নামে একজন বলেন, ‘আমার জীবনে প্রথম ব্যাঙের বিয়ে দেখলাম। খুবই ভালো লেগেছে।’

এলাকার বৃদ্ধ আজিজুল হক বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আবাদে ক্ষতি হচ্ছে। তাই বৃষ্টির আসায় ব্যাঙের বিয়েতে অংশগ্রহণ করেছি।’

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, কুড়িগ্রামে বেশকিছু দিন ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠা-নামা করছে। গতকাল জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেননি নাথান বমের স্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০৬:২১
মো. শাফায়েত হোসেন, বান্দরবান

বান্দরবানের রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) প্রধান নাথান বমের স্ত্রী লাল সমকিম বমকে গত ৮ এপ্রিল লালমনিরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বদলির নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি এখনো চাকরিতে যোগদান করেননি। এদিকে রুমা সদরের ২নং ওয়ার্ডে তার নিজ বাসাতেও তিনি অবস্থান করছেন না। তাহলে তিনি কোথায় রয়েছেন তা নিয়ে এমন প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয়দের মাঝেও। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়া প্রশাসনের কাছেও কোনো তথ্য নেই বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে কেএনএফের নেতৃত্বে ব্যাংক ডাকাতি ও সন্ত্রাসী হামলার পর ওই গোষ্ঠীর প্রধান নাথান বমসহ বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে পাহাড়ে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বধীন যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৩ জন নারী সদস্য রয়েছে।

কেএনএফের এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ফলে আলোচনায় আসে নাথান বমের স্ত্রী লাল সমকিম বমের নাম। জানা যায়, রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নাথান বমের স্ত্রী লাল সমকিম বম নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তবে নাথান বমের স্ত্রী হিসেবে লাল সমকিম বম আলোচনায় এলে সেখান থেকে তাকে গেল ৮ এপ্রিল লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে তিনি এখনো (২৭ মার্চ পর্যন্ত) সেখানে যোগদান করেননি। এবং নিজ বাড়িতেও তার সন্ধান মিলছে না। সর্বশেষ ৮ এপ্রিল লাল সমকিম বম রুমা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওইদিন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের উপসচিব (পরিচালক প্রশাসন) মো. নাসির উদ্দিন স্বাক্ষরিত স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, নার্সিং সেবা ১ শাখার এক স্মারকের আলোকে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লাল সমকিমকে লালমনিরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বদলি করা হয়। তবে বদলি আদেশের পর লাল সমকিম বম বদলিকৃত কর্মস্থলে উপস্থিত হননি বলে জানা গেছে। বদলির পরিপত্রে ৯ এপ্রিলের মধ্যে কর্মস্থলে আবশ্যিকভাবে যোগদানের কথা বলা হয়। অন্যথায় ৯ এপ্রিল তারিখের অপরাহ্ণে স্ট্যান্ড রিলিজ বলে গণ্য করা হবে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এদিকে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বামংপ্রু মারমা বলেন, ‘নার্স লাল সমকিম বমকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে তিনি আর হাসপাতালে আসেননি। তিনি কোথায় আছেন সেই তথ্যও তাদের কাছে নেই বলেও জানান ডা. বামংপ্রু মারমা। বদলির বিষয়ে লালমনিরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. রমজান আলী বলেন, নার্স লাল সমকিম বম এখনো যোগদান করেননি। তবে তার এখানে যোগদান করার কথা ছিল। কবে যোগদান করতে পারে সেই বিষয়ে তার কাছে আর কোনো তথ্য নেই বলেও যোগ করেন ডা. রমজান আলী।

এ বিষয়ে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বশীল এক অফিসার বলেন, লাল সমকিম বমকে বদলির পর তার আর কোনো সন্ধান মিলছে না। বদলি কার্যকর হওয়ার পর বদলির কাগজ নিয়ে তার বাড়িতে গিয়েও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তারা তাকে পায়নি বলেও জানান তিনি।

এ ছাড়া মোবাইলেও নার্স লাল সমকিম বমকে পাওয়া যায়নি বলেও যোগ করেন তিনি। রুমা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য (সংরক্ষিত) কল্যানি চৌধুরী জানান, দীর্ঘদিন ধরে নাথান বমের স্ত্রী লাল সমকিম বমকে নিজ বাড়িতে দেখা যাচ্ছে না। তিনি কোথায় আছেন সঠিক তথ্যও জানা নেই বলেও জানান তিনি।

এদিকে লাল সমকিম বমের বাড়িতে নাথান বমের যাতায়াত ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কল্যানি চৌধুরী জানান, ‘প্রায় দুই বছরেও নাথান বম এই বাড়িতে আসার কোনো খবর কেউ পাননি। রুমা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ মাহবুবুল হক বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি এই উপজেলায়। তবে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জেনেছি তিনি (লাল সমকিম বম) এলাকাতে নেই। তিনি আরও বলেন, তাকে (লাল সমকিম বম) যদি প্রশাসন গ্রেপ্তার করত তাহলেও সবাই বিষয়টা জানত। তবে এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি। রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান বলেন, ‘আমাদের কাছে নাথান বমের স্ত্রীর কোনো তথ্য নেই। তিনি এলাকায় আছেন কি নেই তাও পুলিশের জানা নেই।’

রিমান্ড শেষে কেএনএফের ১০ আসামিকে কারাগারে প্রেরণ

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় নতুন গজিয়ে ওঠা সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) আটককৃত ৭৮ জন আসামির মধ্যে আরও ১০ জনকে রিমান্ড শেষে কারাগারে প্রেরণ করেছে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গতকাল শনিবার আসামিদের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজির হলে শুনানি শেষে আসামিদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক নুরুল হক।

আসামিরা হলেন, ভানলাল কিম বম, সাইরাজ বম, রুয়াল কমলিয়ান বম, গিলবার্ট বম, তিয়াম বম, লিয়ান নোয়াই থাং বম, নল থন বম, পেনাল বম, লাল মুন লিয়ান বম ও জাসোয়া বম। তারা সবাই রুমার বেথেল পাড়ার বাসিন্দা। আদালত সূত্র জানা যায়, রুমা ও থানচি দুই উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংক ডাকাতির এবং অস্ত্র লুটপাটের ঘটনায় ৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী। গ্রেপ্তারের পর তাদের আদালতের হাজির করা হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দুই দিনের জন্য রিমান্ড আবেদন করলে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। দুই দিন রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হলে কেএনএফের সদস্য ১০ জনকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন আদালত।

উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল বান্দরবানের রুমা সোনালী ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণ, মসজিদে হামলা, পুলিশের অস্ত্র লুটের ঘটনায় রুমা থানায় ৫টি মামলা দায়ের করা হয় এবং পরে ৩ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে আর এই ঘটনায় ৪টি মামলা দায়ের হওয়ার পর পুলিশ অভিযান শুরু করে এই পর্যন্ত মোট ৯টি মামলায় ২২ জন নারীসহ ৭৮ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী।


বরিশালে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই শিশুসন্তানসহ মায়ের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরিশাল প্রতিনিধি

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের ঢালমাড়া গ্রামে পল্লি বিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই শিশুসন্তানসহ মায়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত ব্যক্তিরা হলেন- ওই গ্রামের বাসিন্দা মো. রিয়াজ মোল্লার স্ত্রী সোনিয়া বেগম (৩০), মেয়ে রেজবি আক্তার (৯) ও ছেলে সালমান মোল্লা (৫)।

স্থানীয়রা জানান, বসতঘরের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে বিদ্যুৎ লাইনের তার ছিঁড়ে গেলে প্রথমে শিশু সালমান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তাকে বাঁচাতে গিয়ে প্রথমে সোনিয়া ও পরে রেজবি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। আশপাশের লোকজন বাকেরগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসে খবর দিলে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা হলেও, তার আগেই মৃত্যু হয় ৩ জনের।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মো. আফজাল হোসেন বলেন, ছিঁড়ে পড়া তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা ও তার দুই শিশুসন্তানের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এর সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পানির মধ্যে পড়ে রয়েছে। পাশে লেবুগাছ রয়েছে। প্রথমে শিশু ছেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তাকে রক্ষা করতে মা ও বোন গিয়ে তারাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। দায়িত্বে অবহেলায় এ ঘটনা ঘটলে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা জানান, বিদ্যুতের লোকদের বলা হয়েছিল লেবু বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া তার যেকোনো সময় ছিঁড়ে পড়তে পারে; কিন্তু তারা গুরুত্ব দেয়নি।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ বাকেরগঞ্জ জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সুবাস চন্দ্র দাস বলেন, ঘটনা তদন্তে আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের আজ রোববারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সখীপুর শাল-গজারি বনে এক মাসে ২৫ স্থানে আগুন! 

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

শাল-গজারির বনে ঘেরা অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি টাঙ্গাইলের সখীপুরের বনাঞ্চলে এক মাসে অন্তত ২৫/৩০ টি জায়গায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গজারিয়া বিটে সখীপুর-সিডস্টোর সড়কের কীর্ত্তনখোলা এলাকায় দেখা যায়, সেখানে একটি বনে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, গত এক সপ্তাহে অন্তত চারটি শাল-গজারির বনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

এর আগে গত বুধবার বিকেলে উপজেলার বহেড়াতৈল বিটের আওতায় ছাতিয়াচালা সাইনবোর্ড এলাকায় একটি গজারির বনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় পাঁচ একর গজারির বন আগুনে পুড়ে যায়। এছাড়া কৈয়ামধু বিটের বেতুয়াতেও গজারি বনে কয়েক দফায় আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।

বনবিভাগের অনুমতি ছাড়া যেখানে প্রবেশ নিষেধ, সেখানে ঘটছে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা। প্রতিবছর এ মৌসুমে বনে আগুন দেওয়ার কারণে পুড়ে যায় ছোট ছোট গজারি গাছ, ঝোপঝাড়, পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ। বিনষ্ট হয় বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। বন পোড়ানোর কারণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। বাসা হারাচ্ছে পাখিরা। ফলে প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য নিদারুণভাবে নষ্ট হচ্ছে।

গত এক মাসে সখীপুরের বনাঞ্চলের ২৫টি জায়গায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের মধ্যেও সর্বশেষ গত সপ্তাহে উপজেলার বহেড়াতৈল বিটের আওতায় ছাতিয়াচালা সাইনবোর্ড এলাকায় একটি গজারি বনে আগুন দেয়। এতে প্রায় পাঁচ একর গজারির বন আগুনে পুড়ে গেছে।

ডিবি গজারিয়া বিট কার্যালয়ের আওতাধীন অন্তত চারটি স্থানে শাল-গজারির বনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কালিয়ানপাড়া, গজারিয়া, কীর্ত্তনখোলা, বংকী এলাকায় শাল-গজারির এসব বনে আগুন দেওয়া হয়। এতে প্রায় ৮ থেকে ১০ একর বন পুড়ে যায়।

স্থানীয় বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সখীপুরে ৪টি রেঞ্জের আওতায় ১৩টি বিট কার্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার একর জমিতে শাল-গজারির বন রয়েছে। বসন্তকালে শাল-গজারির পাতা ঝরে পড়ে। বনাঞ্চলের আশপাশের বাসিন্দারা জমি দখল ও লাকড়ি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে রাতের আঁধারে বা কখনো দিনের বেলাতেও বনে আগুন দেন। ঝরা পাতাগুলো শুকনা থাকার কারণে মুহূর্তেই বনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

তুহিন আহমেদ নামের স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বনের কাছাকাছি নিম্নআয়ের মানুষের বসবাস বেশি। তারা লাকড়ি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে অনেক সময় গজারি বনে আগুন দিয়ে থাকেন। আবার কেউ বনের জমি দখলের উদ্দেশ্যে বন পোড়ানোর সঙ্গে জড়িত থাকেন। বনের ভেতরের সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরাও অনেক সময় বনে আগুন দেন। মূলত জমি দখল আর লাকড়ি সংগ্রহ করতেই আগুন দিয়ে থাকে দুর্বৃত্তরা।

স্থানীয় বাসিন্দা জুলহাস আহমেদ বলেন, গজারির বনে মাদক সেবীদের আনগোনা থাকে, মাদক সেবনের পর তারা অনেক সময় গাছের পাতায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া কিছু অসচেতন বাসিন্দারাও পাতা পুড়ে সার হবে বলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ প্রসঙ্গে নলুয়া বিট কর্মকর্তা সাফেরুজ্জামান বলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েকটি গজারির বনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আমরা খুবই সতর্ক অবস্থায় আছি। জনবল কম থাকায় দেখভাল করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা টাঙ্গাই‌ল শাখার সভাপতি ও মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এএসএম সাইফুল্লাহ বলেন, এক শ্রেণীর অসাধু লোকজন অযথা শাল-গজারি বনে আগুন দিয়ে বন ধ্বংস করছে। এর ফলে পশু-পাখি বিলুপ্ত হতে চলছে। হুমকির মুখে পড়েছে এ অঞ্চলটির বন্যপ্রাণী।

উপজেলা বনায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হোসেন পাটওয়ারী বলেন, এ জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে সচেতনতামূলক সভা করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান বলেন, সখীপুর উপজেলায় বন বিভাগের জনবল কম। তবে স্বল্প জনবল দিয়েই গণসচেতনতা বাড়ানোর কাজ করা হচ্ছে, যাতে লোকজন শাল-গজারি বনে আগুন না দেয়।


ভারতীয় চিনি ফ্রেশ ব্র্যান্ডের লগো দিয়ে বাজারজাতের চেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১৯:৩৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট এলাকার একটি কাঠের কারখানা থেকে অবৈধভাবে মজুদ করা ৬০০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই চিনি মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ ব্র্যান্ডের লগোর বস্তায় মজুদ করা হয়। এ ব্যাপারে কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

শনিবার দুপুরে বহদ্দারহাট এলাকায় জেলা প্রশাসনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত সিদ্দিকী এই অভিযান চালান।

তিনি জানান, ৩০ টন ভারতীয় চিনি ফ্রেশ কোম্পানির নামে প্যাকেট করে এখানে মজুদ করা হয়। যা কয়েকদিনের মধ্যে বাজারে ছাড়া হতো। চিনিগুলো কোথা থেকে কীভাবে ভারত থেকে এসেছে তার কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি গুদাম মালিক।

গুদাম মালিক আব্দুর রব্বানীর দাবি, কাঠ ব্যবসায়ী সমিতি সাবেক নেতা জাহিদ বিন জয়নাল গুদামটি ভাড়া নেন। তিনি গত বৃহস্পতিবার এসব চিনি মজুদ করেন। তবে এগুলোর কোনো আমদানীর কাগজ নেই।

ভ্রাম্যমান আদালতের ধারণা চিনি গুলো চোরাই পথে অবৈধভাবে দেশে আনা হয। পুরো চক্রটিকে গ্রেপ্তার করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ বিষয়ে নিয়মিত মামলা রুজুর সিদ্ধান্ত হয়েছে চাঁন্দগাঁও থানায়।


চট্টগ্রামে কাল থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘট

চুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া একটি বাস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১৭:১৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামে আগামীকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদে এ ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

গণপরিবহন মালিক শ্রমিক-ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে আমাদের তিনটি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গাড়ি পোড়ানো ও সড়কে নৈরাজ্যের প্রতিবাদসহ চার দফা দাবি আদায়ে আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাকা হয়েছে। এই ধর্মঘট পালিত হবে চট্টগ্রাম মহানগর, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এবং কক্সবাজার জেলায়।’

গত সোমবার চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ঘটনার পর থেকেই ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বাসে আগুন দেওয়া হয়।

গত বুধবার বাসচালককে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে শিক্ষার্থীরা কিছুটা শান্ত হয়। পরের দিন বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তিন ঘণ্টা বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে আলোচনার প্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনের সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আগামী ১১ মে পর্যন্ত চুয়েট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে চুয়েট সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই সময়ে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে অবস্থান করতে পারবেন। যদিও জরুরি সিন্ডিকেট সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে দাবি আদায়ে আবারও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

বিষয়:

banner close