কানাডার মন্ট্রিয়লে বাংলাভাষীদের শুদ্ধ সঙ্গীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরগম মিউজিক একাডেমি তাদের ১২ বছরপূর্তির পাশাপাশি বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে। গত রোববার মন্ট্রিয়লের পার্ক ভিউ রিসেপশন হলে এই অনুষ্ঠানে প্রধান আকর্ষণ ছিল দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর উপস্থিতি।
কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ও অ্যান্ড্রু কিশোরের হাত ধরে যাত্রা শুরু এই একাডেমির। প্রিন্সিপাল ডরিন মলি গোমেজ আর পরিচালক রনজিত মজুমদারের হাত ধরে ১২ বছর ধরে এগিয়ে চলছে সরগম।
রোববার একাডেমির ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশনায় কানাডার জাতীয় সঙ্গীতের তালে তালে আরসিএমপির নিরাপত্তা বলয়ে হলে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনজন উপস্থাপিকার বাংলা, ইংরেজি ও ফরাসি ভাষার উপস্থাপনায় এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রনজিত মজুমদার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে একাডেমির ছাত্রছাত্রীরা বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তারপর সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন কানাডা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মহিবুর রহমান, মন্ট্রিয়লে আসন্ন ফোবানার আহ্বায়ক দেওয়ান মনিরুজ্জামান, অণুজীব বিজ্ঞানী ড. শোয়েব সাঈদ ও আওয়ামী লীগ নেতা মুন্সী বশীরসহ অন্যরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাস্টিন ট্রুডো প্রথমেই অভিনন্দন জানান একাডেমির কর্মকর্তা, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের। তিনি বহু সংস্কৃতির দেশটিতে কানাডা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিকাশে একাডেমির অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। ট্রুডো এ সময় কানাডার অর্থনীতি, সংস্কৃতি আর ব্যবসা-বাণিজ্যে কানাডিয়ান বাংলাদেশিদের বিশেষ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো তার বক্তব্যে বাংলাদেশের ৫২তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান এবং শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন ১৯৭২ সালের ভ্যালেন্টাইন ডেতে পিয়েরে ট্রুডোর বাংলাদেশকে প্রথম পশ্চিমা দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি।
বক্তব্য শেষে জাস্টিন ট্রুডো একাডেমির যুগপূর্তিতে কেক কাটেন এবং ঘুরে ঘুরে অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
শোকাবহ পরিবেশে ও যথাযোগ্য মর্যাদায় একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে অষ্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার ডেজনারটাসে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার বিকেলে (স্থানীয় সময়) এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অষ্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন, সংগঠনের সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম ও পরিচালনা করেন, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম কবির।
সভায় প্রধান অথিতি ছিলেন, সর্বইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি, অস্ট্রিয়া প্রবাসী লেখক, মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক এম. নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন, সর্ব ইউরোপিয়ান মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বায়জীদ মীর।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অষ্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুহী দাস সাহা, মিজানুর রহমান শ্যামল, অষ্ট্রিয়া আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুর রহমান বাবুল, মনোয়ার পারভেজ, ইমরুল কায়েস, মাহাবুব খান শামীম, জহিরুল ইসলাম তুহিন, কবিরুজামান নোমানসহ অন্যরা।
অনুষ্ঠানে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘একুশে আগস্ট হত্যাযজ্ঞের পেছনে উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যা ও আওয়ামী লীগকে সমূলে উৎখাত। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ২০০৪ সালের হত্যাচেষ্টার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। পার্থক্য একটাই, ১৯৭৫ সালে এই উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। ২০০৪ সালে তা ব্যর্থ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় নেতাদের হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য নায়কদের একজন ছিলেন, জেনারেল জিয়াউর রহমান। ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার নেপথ্য নায়কদের প্রধান জেনারেল জিয়াপুত্র তারেক রহমান।’
২১ আগস্ট হামলায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি তুলে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস ও লুটপাটের রাজপুত্র তারেক জিয়াকে অভিলম্বে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, ‘তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল, যা বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেই তদন্তে উদঘাটিত হয়েছে। একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক
শাস্তি দিতে হবে।’
সভায় একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ নিহতদের রুহের মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনা করে দোয়া করা হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও শোক সভা করেছে অস্ট্রিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ। গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় দেশটির রাজধানী ভিয়েনার পারফেক্টিটাসে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি রবিন মোহাম্মদ আলী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক বিকাশ ঘোষ।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, সর্বইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি, অস্ট্রিয়া প্রবাসী লেখক, মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক এম. নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সর্ব ইউরোপিয়ান মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বায়জীদ মীর, অষ্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম কবির, বাংলাদেশ দূতাবাস ভিয়েনার অনারারি কাউন্সেলর মি. কমার এরনস্ট গ্রাফট। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অস্ট্রিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি রতন সাহা, সাংস্কৃতিক সম্পাদক কাজী ইকবাল খালেদ, অষ্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল জলিল, রুহী দাস সাহা, মিজানুর রহমান শ্যামল প্রমুখ।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
সভায় প্রধান অতিথি এম. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জিয়া সরকার, এরশাদ সরকার, খালেদা সরকার, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের যাবতীয় ইতিবাচক মূল্যবোধ খণ্ডিত করেছে, বিকৃত করেছে, কয়েকটি ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে। বঙ্গবন্ধু আজ সশরীরে আমাদের মধ্যে নেই কিন্তু তার জীবন ও কর্মের স্মৃতি জ্যোতির্ময় শিখার মতো অন্তহীন প্রেরণার উৎস হয়ে আমাদের মধ্যে বেঁচে আছেন। প্রতিক্রিয়ার শক্তি বিএনপি-জামায়াত বহু চেষ্টা করেছে বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় থেকে মুছে ফেলতে কিন্তু পারেনি। কেউ কখনো পারবে না।’
খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানেই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজ তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।
রবিন মোহাম্মদ আলী তার বক্তব্যে জাতীয় শোক দিবসের এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করায় সমবেত সুধীজনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সভার শেষে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ নিহত সকল শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে মোবাইল ফোনে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু।
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছে অস্ট্রিয়া আওয়ামী লীগ।
শনিবার দেশটির রাজধানী ভিয়েনার ডেজনারটাসে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম এবং সঞ্চালন করেন সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান শ্যামল।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং অষ্ট্রিয়া প্রবাসী মানবাধিকার কর্মী, লেখক ও সাংবাদিক এম. নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সর্ব ইউরোপিয়ান মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বায়জিদ মীর।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অষ্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান বাবুল, অস্ট্রিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি রবিন মোহাম্মদ আলী ও অস্ট্রিয়া আওয়ামী লীগ নেতা আওলাদ হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে এম. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘শেখ কামাল ছিলেন আমাদের কমান্ডার। এই নামে আমরা ডাকতাম তাকে। অসামান্য সাংগঠনিক দক্ষতার অধিকারী শেখ কামাল যেকোনো মানুষকে অনায়াসে কাছে টানার শক্তি রাখতেন। জানতেন কী করে সংগঠনকে প্রাণবন্ত রাখতে হয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্যরকম একটা জোয়ার আনার চেষ্টা করেছিলেন শেখ কামাল। বিশেষ করে ছাত্র রাজনীতির গুণগত মানের পরিবর্তনের চেষ্টা ছিল তার।’
খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম বলন, ‘শেখ কামাল ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর এডিসি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।’
অনুষ্ঠানে শেখ কামালের কর্মজীবন, ত্যাগ ও সংগ্রামের উপর তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসী ধরতে অভিযান চালিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এসময় ৪২৫ অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২৫২ জন বাংলাদেশিও রয়েছেন।
শুক্রবার দিনগত রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এই বৈধ নথিপত্রহীন বিদেশিদের আটক করা হয়েছে।শনিবার মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘সিনার ডেইলি’ ও ‘বার্নামা’র খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ কুয়ালালামপুরের তামান বুকিত চেরাসের অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে অভিযান চালায়। কুয়ালালামপুরের ইমিগ্রেশন ডিরেক্টর সামসুল বদরিন মহসিন বলেছেন, ওই অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের তিনটি ব্লকে অভিযানে দেখা যায়, ৪২৫ জনের কাছেই বৈধ ভ্রমণ নথি নেই। সেজন্য তাদের আটক করা হয়।
সামসুল বদরিন মহসিনের তথ্য মতে, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৭১ জন পুরুষ, ৫৩ জন নারী এবং একজন শিশু রয়েছে। এদের মধ্যে ২৫২ বাংলাদেশি ছাড়াও রয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার ৩০ জন, মিয়ানমারের ১০৮ জন, ফিলিপাইনের দুইজন, পাকিস্তানের সাতজন, কম্বোডিয়ার ছয়জন এবং নেপালের ২০ জন নাগরিক।
সিনার ডেইলির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতেই সেখানে অভিযান চালানো হয়। তারা বলছিলেন, এলাকায় অনেক বেশি অবৈধ অভিবাসী রয়েছেন।
আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ও ইমিগ্রেশন রেগুলেশনের অধীনে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের অবস্থানরত শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে প্রথমবারের মত জাতীয় পরিচয়পত্র স্মার্টকার্ড বিতরণ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী সোমবার দুবাই ও আবুধাবী শহরের প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রথমবারের মত বিদেশে বসে ভোটার হওয়ার পাশপাশি নিজেদের পরিচয়পত্র হাতে পাবেন।
শনিবার নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান দৈনিক বাংলাকে এসব কথা বলেন।
প্রবাসীদের স্মার্টকার্ড তুলে দিতে আগামী রোববার নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খানের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করবেন। পরের দিন সোমবার রাষ্ট্রদূত ও কনসাল জেনারেল এবং নির্বাচন কমিশনারের উপস্থিতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়ত্র প্রদান কাযক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
এর আগে চলতি বছরের মে মাসের শেষের দিকে ইসির দুবাই ও আবুধাবী শহরে যান ইসির দুই টেকনিক্যাল টিম। সেখানে যন্ত্রপাতি স্থাপন, তথ্য সংগ্রহ এবং দায়িত্ব পালনকারীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসে ইসির টিম।
২০১৯ সালের ৫ নভেম্বরে কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন কমিশন মালয়েশিয়ায় অনলাইন নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু এরপর করোনা মহামারির কারণে সেই উদ্যোগ খুব বেশি দূর এগুতে পারেনি। পরে বর্তমান কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন প্রথমবারের মতন প্রবাসে বসেই প্রবাসীদের ভোটার হওয়ার সুযোগ করে দেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের হাতে এনআইডি তুলে দেয়া নির্বাচন কমিশনের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘সে উদ্যোগ সফল হতে যাচ্ছে। এতে প্রবাসীদের নানা প্রকার নাগরিক সেবা নেয়া ও রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ হবে, দেশও আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ হবে।’
এর ফলে দেশের বাইরে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে মনে করেন কমিশনার আহসান হাবিব খান। তিনি বলেন,‘ভবিষ্যতে এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এ কাজের বিস্তৃতি ঘটবে।’
প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে চান উল্লেখ করে এই কমিশনার বলেন, ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে এনআইডি না থাকায় অনেকে হুন্ডির মাধ্যমে দেশে অবৈধ উপায়ে অর্থ পাঠাতেন। এখন এনআইডি পেলে হুন্ডির পথ রোধ হবে, বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসবে। এতে দেশের রিজার্ভ বাড়াতেও ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি এ সেবা মোবাইল ব্যাংকিসহ নাগরিকদের নানা কাজেও লাগবে।’
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন স্কুল পরিচালিত বহিঃবাংলাদেশ নিশ-২ এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাতার ও সৌদি আরবে অবস্থানরত বাঙালিরা বাউবির এ প্রোগামের শিক্ষার্থী। গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টা দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এবং বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা দেড় ঘণ্টা ধরে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ নেন ২৪৫ জন পরীক্ষার্থী।
বাউবি গাজীপুর ক্যাম্পাসের আইসিটি ইউনিট থেকে পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করেন সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষকেরা।
এ প্রসঙ্গে এসএসসি নিশ-২ পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ড. মো. শহীদুর রহমান বলেন, বিশ্বজুড়ে স্টাডি সেন্টার খোলার পরিকল্পনা আমাদের। আপাতত সৌদি, কাতার, দ. কোরিয়া, ইতালিতে কার্যক্রম চলমান। এখানে অবস্থানরত বাঙালি রেমিটেন্স যোদ্ধারা বাউবি নিশ-২ এর শিক্ষার্থী। তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি, আত্মমযার্দা সম্পন্ন মানুষ ও অসম্পূর্ণ শিক্ষাকে চলমান রাখতে বাউবি কাজ করে যাচ্ছে। পরীক্ষার্থীরা সার্বক্ষণিক ক্যামেরা আওতাধীন, জুমের মাধ্যমে অনলাইনে পরীক্ষা মনিটরিং করছি আমরা। ফলে অসাধুপন্থা অবলম্বনের সুযোগ থাকে না।
এইচএসসি পরীক্ষা কমিটির সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার বলেন, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৪৬ বছরে বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য গেছেন মোট ১ কোটি ৪৭ লাখ ৭০ হাজার ৩৪ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) বাংলাদেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৯৪১ কোটি ১৭ লাখ ডলার।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তুলনামূলক সস্তা শ্রম বিক্রি হয় আমাদের রেমিটেন্স যোদ্ধাদের। তাদের ভাষা দুর্বলতা, অসম্পূর্ণ শিক্ষা, বাস্তব কর্ম জ্ঞান ও অনভিজ্ঞতা এ জন্য দায়ী। বাউবির উদ্যোগ এবং ওডিএল সিস্টেম দক্ষতা, শ্রম মূল্য বাড়িয়ে আরেকধাপ এগিয়ে যাবে, তারা চৌকষ, দক্ষ মানবসম্পদ এ পরিণত হবে। ফলে বাড়বে আমাদের রেমিটেন্স।
সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, ‘হুন্ডি পরিহার করে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো হলে তা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘চলতি অর্থ বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সৌদি প্রবাসীরা দেশে প্রায় ৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন। তবে সৌদি আরবে বসবাসরত ২৮ লাখ সৌদি প্রবাসী বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে তা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।’
মঙ্গলবার রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে ‘রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও হুন্ডি প্রতিরোধে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী।
সেমিনারে দূতাবাসের বিভিন্ন কর্মকর্তা, রিয়াদের কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রিয়াদের বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ ও বিওডি সদস্যসহ অন্যান্যরা যোগ দেন।
রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী এসময় দেশের প্রয়োজনে সৌদি প্রবাসীদের হুন্ডি প্রতিরোধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি কমিউনিটির সবাইকে হুন্ডি প্রতিরোধে সাধারণ প্রবাসীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরির আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বিদেশে আসার আগে দক্ষতা অর্জন করে আসলে ভালো বেতনের চাকরি পাওয়া সম্ভব। দক্ষ কর্মী পাঠানো হলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে যাবে।’
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মীদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর পাশাপাশি শ্রমবাজার সম্প্রসারণে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। সৌদির সরকারি প্রতিষ্ঠান তাকামলের মাধ্যমে দক্ষতা যাচাই করার সুযোগ তৈরি হয়েছে সৌদি গমনে ইচ্ছুক বাংলাদেশি কর্মীদের। সৌদির সরকারি প্রতিষ্ঠান তাকামল হোল্ডিং বাংলাদেশ বসেই দক্ষ বা আধা দক্ষ কর্মীদের দক্ষতা যাচাইয়ের কাজ করবে এবং সনদ দেবে।’
তিনি জানান, প্লাম্বিং, ইলেকট্রিশিয়ান, মেকানিক, ওয়েল্ডিং, কার্পেন্টার পেইন্টার, প্লাস্টারার, বিল্ডারসহ ২৩টি বিষয়ে দক্ষতা যাচাই এবং সনদ দেয়া হবে। এছাড়া সৌদি প্রবাসীদের জন্য বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় বিভিন্ন প্রোগ্রাম চালু আছে বলে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন।
ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘সৌদি আরবে আসার ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে ভিসা ট্রেডিং বন্ধে দূতাবাস কাজ করছে এবং প্রত্যেকটি ভিসা যাচাই করার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’ তিনি ভিসা ট্রেডিং বন্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রবাসী কর্মীদের মাইগ্রেশন কস্ট না কমানো হলে তাদের আয়ের সুফল পাওয়া যায় না। কারণ একজন প্রবাসী কর্মীর কয়েক বছর লেগে যায় তার বিদেশে আসার ব্যয় তুলতে।’
রাষ্ট্রদূত বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণ করে সরকারি আড়াই শতাংশ প্রণোদনা গ্রহণ করার পাশাপাশি দেশের রিজার্ভ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখার জন্য প্রবাসীদের আহ্বান জানান। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাপস ব্যবহার করে নিজের অ্যাকাউন্ট সৌদি আরবে বসেই পরিচালনা করার কথা তিনি উল্লেখ করেন। সৌদি আরবে বসেই সোনালী ব্যাংকের ই-ওয়ালেট ব্যবহারের বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত যে সকল বাংলাদেশী প্রবাসীরা সৌদি আরবে ব্যবসা করছেন তাদের ব্যবসা নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করে বৈধভাবে ব্যবসা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এতে সৌদি আরবে বৈধ ব্যবসার সুযোগের পাশাপাশি দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণেও সুবিধা পাওয়া যায়।’ তিনি বিভিন্ন শ্রমিক ক্যাম্পে দূতাবাসের সোনালী ব্যাংকের সেবা প্রদানের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইং এর কাউন্সেলর রেজা-ই রাব্বী। তিনি সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও বিভিন্ন দেশের শ্রমবাজার নিয়ে পর্যালোচনামূলক গবেষণা তুলে ধরেন। এছাড়া রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে সুপারিশমালা ও সুবিধা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন।
সেমিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে দূতাবাসের মিশন উপ-প্রধান মো. আবুল হাসান মৃধা, ইকোনমিক মিনিস্টার মুর্তুজা জুলকার নাঈন নোমান, সোনালী ব্যাংকের এ জি এম মো. তৌফিকুর রহমান, প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেন, রিয়াদ আওয়ামী পরিষদের সভাপতি এম আর মাহাবুব বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে আসা প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠানোয় বিভিন্ন সমস্যা, সৌদি আরবের শ্রম বাজার, দূতাবাসের বিভিন্ন সেবা নিয়ে তাদের পরামর্শ তুলে ধরেন। প্রবাসীরা রেমিট্যান্স প্রণোদনা বৃদ্ধি, রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যয় ফেরত দেয়া, রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য ভালো ব্যাংক রেট দেয়ার কথা উল্লেখ করেন। এছাড়া বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্স ডেলিভারির জন্য উন্নত সেবা দেয়ার দাবি জানান। দূতাবাসের প্রেস উইং এর উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারের সঞ্চালনা করেন প্রথম সচিব মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম।
সৌদি আরবের আল হাসা শহরের স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে কনস্যুলার সেবা দিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। রিয়াদ থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই শহরে শুক্রবার শতাধিক বাংলাদেশি অভিবাসীকে সেবা দেয়া হয়।
দূর-দূরান্ত থেকে এই সেন্টারে উপস্থিত হয়ে অভিবাসীরা দূতাবাসের সেবা নেন। শনিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই কনস্যুলার সেবা দেয়া হবে।
শুক্রবার আল হাসায় অভিবাসীদের ইকামার মেয়াদ বাড়াতে পাসপোর্ট নবায়ন ও পাসপোর্ট রি-ইস্যু ছাড়াও পাসপোর্টসংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা দেয় দূতাবাস। শ্রম উইংয়ের পক্ষ থেকে দেয়া হয় স্পেশাল এক্সিট প্রোগ্রামের আওতায় হূরুবপ্রাপ্ত, ইকামা বিহীন, ইকামার মেয়াদোত্তীর্ণ ও এক্সিট ভিসায় মেয়াদোত্তীর্ণ অভিবাসীদের আইনি সহায়তা। এ ছাড়া অভিবাসীদের প্রবাসীকল্যাণ কার্ডের জন্য নিবন্ধন করা হয় এবং তাদের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ কার্ড বিতরণও করা হয়।
দূতাবাসের সোনালী ব্যাংকের পক্ষ থেকে অ্যাকাউন্ট খোলা ও ওয়েজ আর্নার্স বন্ড করার সেবাও শুক্রবার দিয়েছে দূতাবাস। এ সময় সোনালী ব্যাংকের প্রতিনিধি প্রবাসীদের বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। এর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সরকারি আড়াই শতাংশ প্রণোদনা পাওয়ার বিষয়টিও তিনি সেবাপ্রার্থীদের বুঝিয়ে বলেন।
সেবা নিতে যাওয়া স্থানীয় প্রবাসীদের সৌদি আরবের আইন-কানুন মেনে চলার পরামর্শ দেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা। বিভিন্ন বিষয়ে সমস্যায় থাকা অভিবাসীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শও দেয়া হয়। একই সঙ্গে প্রবাসীদের জন্য সরকারের বিভিন্ন সুবিধার কথা প্রচার করা হয় অভিবাসীদের কাছে।
আল হাসা সৌদি আরবের একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন নগর। বেশকিছু বাংলাদেশি অভিবাসী সেখানে বসবাস করেন। তারা মূলত কৃষিকাজ, বিভিন্ন খেজুরের বাগানের কাজ ও ব্যবসায় যুক্ত। এ ছাড়া আল হাসার স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১৫ জন বাংলাদেশি শিক্ষক কর্মরত। এখানে প্রবাসীদের সবসময় সেবা দিতে দূতাবাসের অধীনে একটি প্রবাসী সেবা কেন্দ্র কাজ করে।
সৌদি আরবের হাফার আল বাতেন শহরে কুমিল্লা জেলা প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের নতুন কমিটি গঠন হয়েছে।
এ উপলক্ষে সম্প্রতি হাফার আল বাতেনের কাসর আল সালাম কমিটি সেন্টার রাবুয়ায় আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
কুমিল্লা জেলা প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আব্দুল মোতালেব মজুমদারের সভাপতিত্বে আলমগীর পাশা ও আবুল বাশারের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মুন্সি আরিফুল ইসলাম ইয়াকুব নবীসহ অনেকে।
অনুষ্ঠানে হাফার আল বাতেনের রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা, ব্যবসায়ী ও বিপুল সংখ্যক প্রবাসী উপস্থিত ছিলেন।
পরিষদের নেতারা অনুষ্ঠানে বলেন, দেশের দুর্যোগ মোকাবিলায়, প্রবাসীদের মরদেহ দেশে প্রেরণ, রোগাক্রান্ত অসহায় প্রবাসীদের সহায়তা করাসহ বিভিন্ন মানবিক কাজে পাশে থাকাই এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য।
এরপর কুমিল্লা জেলা প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের ৩০ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এতে আব্দুল মোতালেব মজুমদারকে সভাপতি, আবুল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক ও আলমগীর ভাষাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। কমিটির প্রধান উপদেষ্টা, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ কার্যকরী পরিষদের সবাইকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।
এরপর নৈশভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
সৌদি আরবে চলছে আসন্ন পবিত্র হজের শেষ প্রস্তুতি। বাংলাদেশ থেকে হজের প্রথম ফ্লাইটও রোববার জেদ্দায় এসে পৌঁছেছে। মিনা, মুজদালিফা, আরাফাতের ময়দান ও জামারার পবিত্র জায়গাগুলোতে দিনরাত চলছে শেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। এসব কাজে নিয়োজিত রয়েছেন অনেক বাংলাদেশি কর্মীও।
হজযাত্রীদের আবাসস্থল ভাড়া করতে এখন মক্কা-মদিনায় অবস্থান করছেন বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের এজেন্সিগুলোর প্রতিনিধিরা। এরই মধ্যে জানা গেছে, মক্কা ও মদিনায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশি হজযাত্রীদের জন্য বাড়ি ভাড়া সম্পন্নও হয়েছে।
ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে পবিত্র হজ হচ্ছে অন্যতম। সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য জীবনে একবার হজ ফরজ। এই ফরজ ইবাদত করতে হিজরি জিলহজ মাসের নয় তারিখে মক্কায় সমবেত হন লক্ষ লক্ষ ধর্ম প্রাণ মুসলমান। এ বছর বাংলাদেশ থেকে হজ করতে আসবেন এক লাখ ২২ হাজার ২২১ জন।
আল্লাহ তায়ালার মেহমানদের আবাসন ও পরিবহন ব্যবস্থাপনাসহ হজ কার্যক্রম নির্বিঘ্ন করতে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে মক্কা ও মদিনাসহ দেশটির কর্তৃপক্ষ।
হজযাত্রীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে স্থানীয় ও অননুমোদিত নাগরিক ছাড়া সোমবার থেকে অন্য কারও মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সৌদি সরকার। দেশটির জননিরাপত্তা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় জানানো হয়েছে, মক্কায় প্রবেশে দেশটির অন্যান্য অঞ্চলের নাগরিকদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। যেসব নাগরিক অনুমতিবিহীন মক্কায় প্রবেশের চেষ্টা করবেন, তাদের ফিরিয়ে দেয়া। এমনকি জেল-জরিমানাও হতে পারে।
মক্কায় বাংলাদেশ হজ মিশনের হজ কাউন্সিলর জহিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনেচ্ছুদের জন্য বাড়ি ভাড়া সম্পন্ন এবং হাজীদের সেবায় হজকর্মী নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ হজ মিশন।
অবশ্য সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, হজের খরচ আরেকটু কম হলে আরও অনেক বাংলাদেশি এবার হজ পালনে অংশ নিতে পারতেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুটি ফ্লাইটে জেদ্দা বাদশাহ আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন ৮২৯ জন হজযাত্রী। রোববার সকাল সাড়ে ৭ টায় প্রথম ফ্লাইটে ৪১৪ জন ও দ্বিতীয় ফ্লাইটে বেলা সাড়ে ১১ টায় ৪১৫ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী জেদ্দায় পৌঁছান।
জেদ্দা বিমানবন্দরে হজ প্রত্যাশীদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, সৌদি হজ ও ওমরা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ড. আবদুল ফাত্তাহ বিন সুলাইমান মাশাত। এ সময় জেদ্দা বিমানবন্দরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও অন্যান্য কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হক ও হজ মিশনের কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলাম বিমানবন্দরে হজযাত্রীদের স্বাগত জানান।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘আপনাদের যেকোনো প্রয়োজনে দূতাবাস, কনস্যুলেট ও বাংলাদেশ হজ মিশন পাশে রয়েছে। হজযাত্রীদের সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে হজ পালনের জন্য সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।’
রোড টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের আওতায় এ বছর বাংলাদেশি হাজযাত্রীরাই প্রথম এলেন জেদ্দায়।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ২২ হাজার ২২১ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালন করবেন। কোভিড-১৯ বিধিনিষেধের কারণে গত বছর বাংলাদেশ থেকে হজে গিয়েছিলেন ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন। মহামারির আগে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করেছিলেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
যথাযোগ্য মর্যাদায় স্কটিস পার্লামেন্টে বাংলাদেশের ৫২তম মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের কনসুলার জেনারেলরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। স্কটিশ পার্লামেন্টের সংসদ সদস্যরাসহ দেশি-বিদেশি অতিথিরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচির প্রথম পর্বে অনুষ্ঠানের স্পন্সর বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত প্রথম স্কটিশ পার্লামেন্টের সদস্য ফয়ছল চৌধুরী এমবিই শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ম্যানচেস্টারের নিযুক্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট হাই কমিশনার কাজী জিয়াউল হাসান, উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক গোলাম আনিস চৌধুরী, ড. সন্দেশ গুলহানি এমএসপি, ইভান ম্যাকি এমএসপি, ড. ওয়ালী তছর উদ্দীন এমবিই।
এ সময় বক্তারা স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস ও তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার ইতিহাস তুলে ধরার অনুরোধ করেন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সৈয়দ শামসুল ইসলাম সায়েমের সঞ্চালনায় লন্ডন থেকে আগত শিল্পী শেবুল, রুজী সরকার, হাবীব বাপ্পুসহ স্থানীয় শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান, লোকজ সংগীত এবং নৃত্য পরিবেশন করেন। স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ, গ্লাসগো ও ডান্ডিসহ বিভিন্ন শহর থেকে আগত অতিথিদের উপস্থিতিতে লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে স্কটল্যান্ড পার্লামেন্ট।
জার্মানির বনে ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বন শহরে ডয়চে ভেলের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে জার্মানি শাখা আওয়ামী লীগ। সমাবেশে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, নেদারল্যান্ড আওয়ামী লীগ ও জার্মানির বিভিন্ন শহর থেকে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাঙালি অংশ নেন।
সমাবেশে জার্মানি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোবারক আলী ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ সময় থেকে জার্মানিতে বসবাসকারী, বাংলাদেশিরা আগে কখনোই ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের বাংলাদেশবিরোধী চক্রান্ত দেখতে পাইনি। অবিলম্বে বাংলাদেশবিরোধী মিথ্যা প্রচারণা বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।’
প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন অনারারি কনসাল ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া, মাবু জাফর স্বপন, শবনম মিয়া কেয়া, কামাল ভূইয়া , ফিরোজ আহমেদ, আলমগীর আলী আলম, এনাম চৌধুরী, আবদুল সালাম খোকন, সগির খান, মঈন খান, আবদুল মালেক, শাহরিয়ার রাজু, জার্মানি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি খান সাবরা, নেদারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ খানসহ অন্যরা।
পরে জার্মানি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ডয়চে ভেলে বরাবর দেয়া প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিককালে ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। জার্মানির জনগণের করের অর্থায়নে পরিচালিত এই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কিছু ব্যক্তি তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ ও মতামত ডয়চে ভেলের মাধ্যমে প্রচার করছে। ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগ ক্রমাগতভাবে অনেকগুলি নেতিবাচক প্রতিবেদন তৈরি করছে। যা বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবার অপপ্রয়াস বলে আমরা মনে করি। ডয়চে ভেলের অনুষ্ঠান বিষয়ক কার্যপ্রণালী বিধিতে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, তাদের অনুষ্ঠানগুলি অবশ্যই জনগণের স্বাধীন মতামত তৈরিতে সহয়তা করবে এবং একতরফা কোনো দল বা রাজনৈতিক, ধর্মীয় সম্প্রদায়, পেশাজীবী বা বিশেষ কোন সম্প্রদায়কে সমর্থন করবে না বা উস্কে দেবে না। প্রতিবেদনগুলি যথেষ্ট স্বচ্ছ, বাস্তবসম্মত ও সত্য হতে হবে। এছাড়া ডয়চে ভেলে এমন কোন অনুষ্ঠান করবে না, যাতে করে জার্মানির সঙ্গে অন্যান্য দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলে।
প্রকিবাদ লিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি কুচক্রীমহলের ইন্ধনে ও অর্থায়নে সুপরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্রমূলক ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করে মিথ্যা অপপ্রচার করছে যা অনৈতিক। বাংলাদেশ ও র্যাবের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে যা নিঃসন্দেহে নিন্দনীয়। আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।