আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জর্জরিত দেশের ৬টি ব্যাংকের সম্পদের গুনমান মূল্যায়নে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং (ইওয়াই) ও কেপিএমজিকে নিয়োগ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে দেশের ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এ নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
নিরীক্ষার জন্য বাছাই ব্যাংকগুলো হলো-
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ইওয়াই গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক এবং কেপিএমজি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংকের নীরিক্ষা করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হোসনে আরা শিখা বলেন, ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি) পদে ফিরতে পারবেন কিনা, তা নিরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে।
নিরীক্ষায় যদি প্রমাণিত হয় এমডিরা আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নন, তাহলে তারা আবার তাদের ভূমিকায় ফিরে যেতে পারেন। অন্যথায় তাদের স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা হবে বলে জানান শিখা।
উল্লেখ্য, ৬টি ব্যাংকের মধ্যে চারটিই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত। গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সংস্কার প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে সহায়তাকারী এডিবি সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রতিনিধি পাঠিয়েছে। তারা ব্যাংকগুলোর সম্পদের গুণগত মান পর্যালোচনার সুপারিশ করায় এই উচ্চ পর্যায়ের নিরীক্ষা করা হয়।
এরই মধ্যে ৬টি ব্যাংকের কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নিরীক্ষা দলকে সার্বিক সহযোগিতা দিতে চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শীর্ষ কর্মকর্তা এবং এডিবির প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে বৈঠকে স্বচ্ছতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক পরিদর্শনে বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ উত্তোলনের আশঙ্কাজনক নমুনা পাওয়া গেছে।
অবশেষে নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে তারেক রহমানের নেতৃত্বাধীন ‘আমজনতার দল’। এছাড়া আরও নিবন্ধন পাচ্ছে ‘জনতার দল’ নামের আরও রাজনৈতিক দল।
বৃহস্পতিবার (০৪ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এ তথ্য জানান।
নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্টরা জানান, নিবন্ধন না পাওয়ায় আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান নির্বাচন ভবন সংলগ্ন এলাকায় যে আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন, তা শেষ পর্যন্ত ইসির ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আলোর মুখ দেখছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বেশ কয়েকটি নতুন দল নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছিল। তবে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই ও মাঠের তথ্যের ভিত্তিতে ইসি মাত্র কয়েকটি দলকে নিবন্ধনের জন্য চূড়ান্ত করে। এই তালিকায় ‘আমজনতার দল’ ও ‘জনতার দল’এর নাম ছিল না।
দলটির সদস্য সচিব তারেক রহমান অভিযোগ করেন, তাদের দলের সব শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও রাজনৈতিক বিবেচনায় নিবন্ধন দেওয়া হয়নি।
ইসির এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত ৪ নভেম্বর থেকে তিনি নির্বাচন ভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সামনে টানা ১২৫ ঘণ্টা অনশন চালিয়ে যান।
একই সময়ে ‘জনতার দল’ও নিবন্ধনের দাবিতে ইসির কাছে তাদের চূড়ান্ত আবেদন পুনর্বিবেচনার দাবি জানায়।
অনশন চলাকালীন তারেক রহমানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে ইসিকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
ব্যাপক চাপের মুখে ইসি তারেক রহমানকে অনশন ভেঙে আপিলের পরামর্শ দেয়। তবে পরে ইসি এক জরুরি বৈঠকে কয়েকটি দলের আবেদন পুনর্বিবেচনা করা হয়। পুনর্বিবেচনার পরিপ্রেক্ষিতেই এই দুটি দল নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে ইসির।
উত্তরা ব্যাংক পিএলসি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো: আবুল হাশেম, ৪ ডিসেম্বর (বুধবার) কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে উত্তরা ব্যাংক পিএলসির ২৫০তম (লাকসাম শাখা) এর শুভ উদ্বোধন করেন।
এসময় ব্যাংকটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো: রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো: জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকার কেরানীগঞ্জে সাউথইস্ট ব্যাংকের আটিবাজার শাখা থেকে কয়েক কোটি টাকা নিয়ে সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা উধাও হয়েছেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ব্যাংকের গ্রাহকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে।
গতকাল বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে গ্রাহকদের হিসাব থেকে টাকা সরানোর খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে বহু গ্রাহক ব্যাংকের ওই শাখায় ছুটে আসেন। তাঁরা নিজেদের হিসাবের তথ্য জানতে চেয়ে ভিড় করেন।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক নজরুল ইসলাম জানান, তাঁর হিসাবে ৭ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ছিল। তিনি টাকা উত্তোলনের এসএমএস পেয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, অনেকের মতো তাঁর টাকাও উধাও হয়ে গেছে।
আখি আক্তার নামের আরেক গ্রাহক উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘যদিও আমার হিসাব থেকে টাকা যায়নি, তবে অন্য গ্রাহকদের টাকা উধাও হওয়ায় আমরাও বেশ চিন্তায় আছি। কখন যেন আমাদের টাকাও গায়েব হয়ে যায়।’
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম আত্মগোপনে রয়েছেন।
এ বিষয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তা এজাজ হোসেন বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং বর্তমানে একটি অডিট টিম তদন্তের কাজ করছে।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল হক ডাবলু জানিয়েছেন, এ বিষয়ে থানায় কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
বাংলা কিউআর কোড ব্যবহার করে পেমেন্ট করলে মার্চেন্টের অ্যাকাউন্টে সঙ্গে সঙ্গে অর্থ প্রেরণের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে বাংলা কিউআর কোড ব্যবহার করে পেমেন্ট করলে একদিন পর মার্চেন্টের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর হয়।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগ এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব তফসিলি ব্যাংক, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের কাছে নির্দেশনা পাঠিয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়, আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই নতুন নির্দেশনা কার্যকর হবে। দেশে নগদ অর্থ লেনদেন কমানো ও ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলা কিউআর কোড ব্যবহারের জন্য তাগিদ করছে। বাংলা কিউআর সেবা প্রদানকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের জন্য তাৎক্ষণিক অর্থ জমার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
তবে অন্যান্য বড় মার্চেন্টদের ক্ষেত্রে, ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহক সম্পর্ক ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ভিত্তিতে অর্থ স্থানান্তরের সময়সীমা নিজেরা নির্ধারণ করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, মূলত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সুবিধার কথা বিবেচনে করে তাৎক্ষণিকভাবে টাকা ট্রান্সফার করার সুবিধা চালু করা হচ্ছে। ১০ লাখ টাকার নিচে পেমেন্ট করলে তাৎক্ষণিকভাবে অর্থ স্থানান্তর করা যাবে। আর যাদের লেনদেন ১০ লাখ টাকার ওপর, তাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। আগ্রহী ব্যবসায়ীরা দ্রুততর ব্যবস্থা থেকে উপকৃত হতে পারবেন।
আরও জানা যায়, এখন পেমেন্ট করলে তা একদিন পর জমা হয়। অথবা কেউ বৃহস্পতিবার পেমেন্ট করলে মার্চেন্ট রোববারে সেই টাকা গ্রহণ করবেন। তবে এ নির্দেশনা মোতাবেক ১৫ ডিসেম্বর থেকে মার্চেন্ট সঙ্গে সঙ্গে তার অ্যাকাউন্টে অর্থ পাবেন।
বাংলা কিউআর হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের চালু করা একটি সর্বজনীন ও আন্তঃলেনদেন যোগ্য (ইন্টারঅপারেবল) পেমেন্ট ব্যবস্থা। এর বিশেষত্ব হলো, একটি মাত্র কিউআর কোড ব্যবহার করে গ্রাহকরা যেকোনো ব্যাংক, এমএফএস বা পেমেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করতে পারেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড বিক্রিসহ পাঁচ ধরনের সেবা বন্ধ করে দিচ্ছে। এসব সেবার মধ্যে রয়েছে— গ্রাহক পর্যায়ে ছেঁড়া-ফাটা নোট বদল, সরকারি চালান সেবা এবং চালান সংক্রান্ত ভাংতি টাকা দেওয়া।
আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস এসব সেবা বন্ধ করে দেবে। পর্যায়ক্রমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগীয় অফিসেও এসব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেবা বন্ধ করলেও বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা গুলোতে এসব সেবা পাবেন গ্রাহক।
এদিকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেন নির্বিঘ্নে এসব সেবা দেয় তা নিশ্চিত করতে তদারকি বাড়াবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গ্রাহকদের এসব বিষয়ে অবহিত করতে শিগগিরই প্রচারণা চালানো হবে। এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়কে এসব সিদ্ধান্তের বিষয় জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর গত ২২ জুন মতিঝিল অফিসের ক্যাশ বিভাগ সরেজমিন পরিদর্শন করেন। ক্যাশ বিভাগ আধুনিকায়নে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন। এরপর একটি কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কমিটির সুপারিশে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এর আগে গত ১৮ আগস্ট ও ২২ সেপ্টেম্বর করণীয় নির্ধারণে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা। সেখানে আলোচনা হয়, এর আগে দুইজন গভর্নর গ্রাহক সংশ্লিষ্ট সব ধরনের সেবা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে ওই সময়ের প্রেক্ষাপটে শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা যায়নি।
যেসব সেবা বন্ধ হচ্ছে
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়সহ বিভিন্ন শাখা কার্যালয় থেকে সঞ্চয়পত্র, প্রাইজবন্ড এবং কেনাবেচাসহ ১০ ধারার সেবা দেওয়া হয়। সরকারের ও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসব সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। বর্তমান মতিঝিল কার্যালয়ের ২৮টি কাউন্টারের মাধ্যমে এসব সেবা দেয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যালয় আধুনিকায়ন, উন্নত নিরাপত্তাব্যবস্থা-স্বয়ংক্রিয় ভল্ট স্থাপন এবং মূল ভবনের নিরাপত্তাব্যবস্থা উন্নতির জন্য সম্প্রতি কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশের ব্যাংক পাঁচ সেবা দেওয়া ১২ কাউন্টারের ৩০ নভেম্বরের পর বন্ধ হয়ে যাবে।
এছাড়া আগামী ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশের ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় থেকে নগদ টাকা সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড কেনাবেচা হবে না। সরকারের পক্ষ থেকে ট্রেজারি চালানও জমা নেওয়া হবে না। পাশাপাশি ভাংতি টাকা এবং ছেঁড়াফাটা নোট পরিবর্তনের সেবাও বন্ধ হয়ে যাবে।
তবে ১৬টি কাউন্টারে কিছু সেবা মিলবে এগুলো হলো-ধাতব মুদ্রা বিনিময়, স্মারক মুদ্রা বিক্রি, অপ্রচলিত নোটের বিরোধ নিষ্পত্তি ও ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন ইত্যাদি। এইসব সেবাও ভবিষ্যতে কীভাবে বন্ধ হবে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছে গভর্নর। আগামীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য বিভাগে নিয়োগ কার্যালয় এই সেবা ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব বাণিজ্যিক ব্যাংক, সঞ্চয় অধিদপ্তর ও পোস্ট অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। আর সব ব্যাংক শাখায় প্রাইজবন্ড পাওয়া যায়। ব্যাংকগুলো ছেঁড়াফাটা নোট বদল ও অটোমেটেড চালান সেবাও দেয়। তবে ভোগান্তিমুক্ত সেবা ও আস্থার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকেই বেশি ভিড় করেন গ্রাহক। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী গ্রাহকদের তিন লাখ ৪০ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশের বেশি রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে।
এদিকে গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসের সার্ভার জালিয়াতি করে ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়ে। আরও দুইজনের ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা শেষ সময়ে ধরা পড়ে। এ ঘটনায় মতিঝিল থানায় চারজনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। এরপর থেকে মতিঝিল অফিসের সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সঞ্চয়পত্রের সার্ভার জালিয়াতিকে কেন্দ্র করে গ্রাহকদের বিভিন্ন সেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে, তেমন নয়।
গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সংক্রান্ত কেপিআই নিরাপত্তা নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক উচ্চ নিরাপত্তা স্তরভুক্ত। তাই বিশেষ নিরাপত্তার অংশ হিসেবে সাধারণ মানুষের যাতায়াত নিয়ন্ত্রিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে লুটপাট হওয়ার কারণে কিছু ব্যাংক আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। এসব ব্যাংক টিকিয়ে রাখতে জামানতহীন তারল্য সহায়তা বা ঋণ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তাই এ ধরনের ঋণ দেওয়া বন্ধ করার শর্ত জুড়ে দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আইএমএফের প্রতিনিধি দলের বৈঠকে তাদের পক্ষ থেকে এমনটা জানানো হয়েছে। চলমান ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির ষষ্ঠ কিস্তির অর্থ ছাড়ের আগে দেশের আর্থিক খাতসহ বিভিন্ন সূচকের অগ্রগতি জানতে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসেছে। পাপাজর্জিওর নেতৃত্বে আসা আইএমএফের এ দল গতকাল থেকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার। এ সময় অন্যান্য ডেপুটি গভর্নর ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধি দল ১৩ নভেম্বর বৈঠক শেষ করবে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, গত সরকারের আমলে যেসব ব্যাংক লুটপাটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ওই সময় থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় ধার দেওয়া শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেটাকে বলা হয় ‘লেন্ডার অব দ্য লাস্ট রিসোর্ট’। এখন পর্যন্ত দুর্বল ব্যাংকগুলোকে বিশেষ ব্যবস্থায় জামানত ছাড়া প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা ধার দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এভাবে সুবিধা দেওয়ার ঘটনা বিরল। কারণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার নিতে হলে তাদের কাছে ব্যাংকগুলোকে বিল বা বন্ড জমা রাখতে হয়। তা না হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ধার দিতে পারে না। কিন্তু এসব ব্যাংকের কাছে টাকা ধার নেওয়ার জন্য ব্যবহারযোগ্য বিল-বন্ড ছিল না। সে জন্য তারা প্রতিশ্রুতিপত্র (ডিমান্ড প্রমিজরি নোট) প্রদান করে টাকা ধার নিয়েছে। এই প্রতিশ্রুতিপত্রের মাধ্যমে যে কোনো উপায়ে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ব্যাংকগুলো। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যাংক মেয়াদ শেষ হলেও টাকা ফেরত দিতে পারেনি।
এমন পরিস্থিতিতে আইএমএফ বলেছে, আনসিকিউড বা জামানতহীন ধার বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে দিতে পারবে না। এ প্রথা এখনই বন্ধ করতে হবে। কারণ এটা একটা ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো উত্তর দেয়নি।
গতকাল দুপুর ১২টায় ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহারের নেতৃত্বে ওপেনিং মিটিং শুরু হয়। এ সভায় গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ও নীতিগত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর দুপুর ২টায় গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালকের নেতৃত্বে রিস্ক বেইজ সুপারভিশন, দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা, আমানত উত্তোলনে সীমা এবং পূর্বে আমানত উত্তোলন সীমা আরোপ ও প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া দুপুর ৩টায় তিন ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে বৈঠকে তারল্য সংকটের প্রধান উৎস, আমানত ঘনত্ব, ঝুঁকি প্রশাসনমূলক পদক্ষেপ, ব্যাংক রেজুলেশন অডিন্যান্স, পাঁচ ব্যাংক একীভূত প্রক্রিয়ার অগ্রগতি ও ঝুঁকি পর্যালোচনা করা হয়।
আর্থিক সংকট সামাল দিতে ২০২২ সাল থেকে কয়েক দফা আলোচনা শেষে পরের বছরের প্রথম দিকে আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি করে বাংলাদেশ। সবশেষ গত জুনে অর্থ ছাড়ের সময়ে ঋণের আকার বাড়িয়ে করা হয় ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। সে বছর ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে পাওয়া যায় দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার। তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার আসে ২০২৪ সালের জুনে। আর চলতি বছরের জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে মিলিয়ে ১৩৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার হাতে পায় বাংলাদেশ।
এদিকে ষষ্ঠ কিস্তি পাওয়া নিয়ে শঙ্ক তৈরি হয়েছে। ঋণের ষষ্ঠ কিস্তি ছাড়ের নির্ধারিত সময় আগামী ডিসেম্বর। কিন্তু সামনে জাতীয় নির্বাচন থাকায় এই সময়ের মধ্যে ষষ্ঠ কিস্তি ছাড় নাও হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ঋণের শর্ত হিসেবে যেসব সংস্কার কর্মসূচি রয়েছে, সেগুলো নির্বাচিত সরকারের সময়ও অব্যাহত থাকবে কিনা, তা নিশ্চিত হতে চাইছে সংস্থাটি। ডিসেম্বরের বদলে আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে পরের কিস্তি ছাড় হতে পারে বলে সংবাদমাধ্যমে আভাস দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। সে ক্ষেত্রে ডিসেম্বরে ষষ্ঠ কিস্তি ছাড় না হলে পরে সপ্তমসহ দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড় হওয়ার আলোচনাও আছে। এর আগে বিনিময় হার ইস্যুতে সমঝোতায় দেরি হওয়ায় চতুর্থ কিস্তির অর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসঙ্গে পায় বাংলাদেশ।
রাষ্ট্রমালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক পিএলসি’র সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের আওতাধীন শাখা ব্যবস্থাপকদের অংশগ্রহণে আগস্ট ২০২৫ ভিত্তিক ব্যবসায়িক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) সিলেটের ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত এ ব্যবসায়িক পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম। এ সময় ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্রেণীকৃত ও অবলোপনকৃত ঋণ হতে আদায়, লো কস্ট, নো কস্ট আমানত সংগ্রহ, নতুন হিসাব খোলা, সিএমএসএমই ঋণ বিতরণ, গ্রাহকদের নিকট প্রযুক্তি নির্ভর ব্যাংকিং সেবা পৌছে দেয়া এবং মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান তানভীর এবং আদায় বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক মো. মাহমুদুল ইসলাম।
এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও মহাব্যবস্থাপক কমল ভট্টাচার্য্য।
এ সময় ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক মো. ফজলুল হক, জয়া চৌধুরী, বিপ্লব কুমার তালুকদার, মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন, মাসুক-ই-এলাহী ও সিলেট বিভাগের আওতাধীন কর্পোরেট শাখার নির্বাহীগণসহ সকল শাখা ব্যবস্থাপক উপস্থিত ছিলেন।
চাকরি বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আরও ২০০ জন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে ইসলামী ব্যাংক। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে ব্যাংকটিতে ৪০০ জনের চাকরি গেল। এদিকে মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেওয়াদের মধ্যে ৩৬৪ জন বা ৮৮ শতাংশ উত্তীর্ণ হয়েছে। বাকিদের সক্ষমতা বাড়ানোর প্রশিক্ষণ দিয়ে পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। আর গত শনিবার পরীক্ষায় অংশ নিতে ব্যর্থদের মধ্যে যারা আবেদন করেছেন, তাদের জন্য ফের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
ইসলামী ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, অযোগ্যতা বা অন্য কোনো বিবেচনায় কাউকে ছাঁটাই করা হয়নি। বরং যারা মূল্যায়ন পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার ছড়াচ্ছে, পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে উল্টো অন্যদের বাধা দিয়েছে কিংবা ব্যাংকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সমাবেশ করেছে– এ রকম ব্যক্তিরা তালিকায় রয়েছেন। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকটিতে প্রায় ১১ হাজার লোক নিয়োগ হয়। এর মধ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগ হয় ৮ হাজার ৩৪০ জন। সেখান থেকে ৫ হাজার ৩৮৫ জনের যোগ্যতা মূল্যায়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর মাধ্যমে গত শনিবার পরীক্ষা নেয় ব্যাংক। এতে অংশ নেন মাত্র ৪১৪ জন। বাকি ৪ হাজার ৯৫৩ জন পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ায় তাদের ওএসডি করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
ইসলামী ব্যাংকের এই বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষার উদ্যোগ বাতিল চেয়ে গত ২১ আগস্ট হাইকোর্টে একটি রিট করেন ব্যাংকটির চট্টগ্রামের চাক্তাই শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. জিয়া উদ্দিন নোমান। বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে নিষ্পত্তির জন্য গত ২৭ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেন আদালত। এর পর গত ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিটকারীকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া এবং চাকরিতে কাউকে রাখা বা না রাখার বিষয়টি ব্যাংকের নিজস্ব এখতিয়ারভুক্ত।
ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্বে থাকা ড. কামাল উদ্দীন জসীম বলেন, যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নানা অপপ্রচার ছড়ানো হয়েছে। কাউকে চাকরিচ্যুত করা তাদের উদ্দেশ্য নয়। বরং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে বৈধতা দেওয়া তাদের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, আইবিএর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়াদের ৮৮ শতাংশই উত্তীর্ণ হয়েছেন। বাকি যারা উত্তীর্ণ হননি, তাদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া গত ২৭ সেপ্টেম্বরের বাধার কারণে অনেকেই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। তাদের মধ্য থেকে যারা আবেদন করেছেন, তাদের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষার পাশাপাশি এসব কর্মীকে একাডেমিক সনদ যাচাই করছে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। প্রথম ধাপে বেসরকারি ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২ হাজার ২১৪ জনের সনদ যাচাইয়ের জন্য ৬টি টিম গঠন করে দেওয়া হয়েছে। এসব টিম বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে সনদ যাচাই করছে। এরই মধ্যে ৩০ জনের জাল সনদ চিহ্নিত করেছে ব্যাংক।
সমস্যাগ্রস্ত শরিয়াভিত্তিক বেসরকারি পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বিশেষ বোর্ড সভা শেষে এ তথ্য জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মো. আরিফ হোসেন খান। সভায় গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ড সদস্যরা।
সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, সমস্যাগ্রস্ত শরিয়াভিত্তিক বেসরকারি পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ’ অনুযায়ী পরিচালিত এই মার্জার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে দুই বছর। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে শিগগিরই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, এই একীভূতকরণ প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি প্রশাসক টিম গঠন করা হবে। তবে ব্যাংকের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বর্তমান ব্যবস্থাপনা টিম। প্রতিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাদের পদে বহাল থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ব্যাংকগুলোর পর্ষদ (বোর্ড) বাতিল করা হবে না। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। প্রশাসক টিম নিয়মিত তাদের কার্যক্রমের অগ্রগতি ও আপডেট বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত টিমকে জানাবে।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংককে একীভূত করে গঠন করা হবে একটি নতুন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক, যার সম্ভাব্য নাম হবে ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’। নতুন এ ব্যাংকটির জন্য লাইসেন্স ইস্যু করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি গভীর শোকের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, ব্যাংকের সম্মানিত স্পনসর পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান জনাব আজিম উদ্দিন আহমেদ ০১ আগস্ট ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুতে সাউথইস্ট ব্যাংক পরিবার গভীরভাবে শোকাহত।
জনাব আজিম উদ্দিন আহমেদ ১৯৪০ সালের ৩০ জুন এক সম্মানিত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের একজন সম্মানিত সদস্য এবং পর্ষদের রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান।
তিনি বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য জগতে একজন খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি মিউচুয়াল গ্রুপ এবং এডি হোল্ডিংস লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, তিনি আর্লা ফুডস বাংলাদেশ লিমিটেড-এর পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর একজন প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্য ছিলেন। তিনি এই বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ফাউন্ডেশনেরও একজন প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্য ছিলেন।
শিক্ষা ও সমাজসেবায়ও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি নিজ জিলা ফেনীতে প্রতিষ্ঠা করেছেন মসজিদ,মাদ্রাসা | এছাড়াও বিভিন্ন সমাজ হিতৈষী কাজে জড়িত ছিলেন তার উদার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে |
সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. পরিবার জনাব আজিম উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছে এবং তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, জুলাই মাসের প্রথম ২৭ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৩৩ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২ হাজার ৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
গত বছরের একই সময়ে, দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ১ হাজার ৫৭২ মিলিয়ন ডলার।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ পরিমাণ।
আগের অর্থবছরে (অর্থবছর ২০২৩-২৪) প্রাপ্ত ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় রেমিট্যান্স ২৬ দশমিক ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে অর্থবছরের শেষ দিন আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের সব ব্যাংকের শাখাগুলোতে ব্যাংকিং লেনদেন চলবে।
সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৩০ জুন সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯২২ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান। তিনি বলেন, গত অর্থবছরের চেয়ে এবার বেশি রাজস্ব আদায় হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড এর ২৯ তম বার্ষিক সাধারন সভা ২৪ জুন ২০২৫ইং তারিখে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ২০২৪ইং সালের নিরীক্ষিত বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়। পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জনাব মোস্তফা কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীর পরিচালক মিসেস বিউটি আক্তার, ব্যারিষ্টার হাসান রাজিব প্রধান, জনাব মনজুর মো: সাইফুল আজম এফসিএমএ, মিসেস তাহমিনা বিনতে মোস্তফা, জনাব তায়েফ বিন ইউসুফ, মিসেস তানজিমা বিনতে মোস্তফা, জনাব ওয়াশিকুর রহমান, জনাব তানভীর আহমেদ মোস্তফা , মিসেস সামিরা রহমান, মিসেস তাসনিম বিনতে মোস্তফা, জনাব মোঃ বেলায়েত হোসেন ভূইয়া, জনাব মোহাম্মদ সাইদ আহমেদ রাজা এবং মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সানা উল্লাহ, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা শেখ বিল্লাল হোসেন এফসিএ, কোম্পানীর অডিটর এ.কে.এম. আমিনুল হক এফসিএ, সিনিয়র পার্টনার মেসার্স এ.হক এন্ড কোং চাটার্ড একাউন্টেন্টস এবং আবদুর রহিম মিয়া, এফসিএ, পার্টনার মেসার্স ইসলাম জাহিদ এন্ড কোং, চাটার্ড একাউন্টেন্টস, মোঃ ফিরোজুল ইসলাম সিনিয়র এক্সিঃ ভাইস প্রেসিডেন্ট (অর্থ ও হিসাব) ও কোম্পানী সচিব মো: মাসুদ রানা এবং কোম্পানীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ারহোল্ডার সভায় সংযুক্ত ছিলেন।