দেশের মেগা প্রকল্পের অর্থায়নে এগিয়ে আসতে বিশ্বব্যাংককে অনুরোধ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
ঢাকা সফররত বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশনস) অ্যাক্সেল ভান ট্রটসেনবার্গ সৌজন্য সাক্ষাত করতে আসলে মন্ত্রী এ অনুরোধ জানান।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অর্থমন্ত্রী বিশ্বব্যাংককে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে অভিহিত করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, দুর্যোগ মোকাবেলা খাতসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে, বিশেষতঃ করোনাকালীন সময়ে বাজেট সহায়তা, কোভিড মোকাবেলা এবং কোভিড ভ্যাকসিন ক্রয়ে অর্থায়নের জন্য ধন্যবাদ জানান।
অর্থমন্ত্রী দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন উদ্যোগে বিশ্বব্যাংকের আরও জোরদার ও ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ঢাকাকে আরও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে বিশ্বব্যাংক এবং ৫০ বছরের অংশীদারিত্বকে মনে রাখতে মেগা প্রকল্পে অর্থায়নে এগিয়ে আসতে অনুরোধ জানান। এছাড়াও, এলডিসি উত্তরণে বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারে বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সভায় বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তিনি দারিদ্র দূরীকরণে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ফন ট্রটসেনবার্গ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়োচিত পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশের অভীষ্ঠে পৌছাতে বিশ্বব্যাংকের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বিশ্বব্যাংকের খসড়া ‘কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক (সিপিএফ) নিয়েও আলোচনা করেন। তিনি জানান, সিপিএফে বাংলাদেশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
দ্বিপক্ষীয় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ন আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুলায়ে সেক।
শনিবার দুপুরে বিশ্ব আর্থিক খাতের মোড়ল সংস্থা বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভান ট্রটসেনবার্গ ঢাকায় পৌঁছান। বাংলাদেশে এটিই তার প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর। তিন দিনের এই সফরে তিনি বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাংকের মধ্যে অংশীদারত্ব সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি এবং বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন অর্জন উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
বিশ্বব্যাংকের এই কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়া তিনি বিশ্বব্যাংকের সহায়তাপুষ্ট বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করবেন। তার সঙ্গে থাকবেন দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার।
বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের জ্যেষ্ঠ এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার মেহরিন আহমেদ মাহবুব দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে অবস্থানকালে অ্যাক্সেল ভান ট্রটসেনবার্গ ঢাকা ও কক্সবাজারে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়িত কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করবেন। বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে সুন্দর সম্পর্কের ৫০ বছর উদ্যাপন করতেই মূলত তিনি ঢাকায় আসছেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সরেজমিন পরিদর্শন করবেন।’
২৪ জানুয়ারি রাতে তিনি ঢাকা ছাড়বেন বলে জানান মেহরিন।
৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান রোববার
বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের কর্মকর্তা মেহরিন আহমেদ মাহবুব বলেন, রোববার বেলা ৩টায় বিশ্বব্যাংক এমডি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাংকের মধ্যে অংশীদারত্ব সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিশ্বব্যাংক যৌথভাবে এই উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
রোববার বিকেল ৫টায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভান ট্রটসেনবার্গ। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মিডিয়া বাজারে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম কেজিতে ৪ টাকা ১ পয়সা কমিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে বিইআরসি।
কেজিপ্রতি নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৬ টাকা ৮ পয়সা। আগেই এর দাম ছিল ১২০ টাকা ১৮ পয়সা। ১২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডারের দাম আগের ১ হাজার ৪৪২ টাকা থেকে ৪৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৩৯৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের আকারের ভিত্তিতে সাড়ে ৫ কেজি থেকে ৪৫ কেজি পর্যন্ত এই মূল্যহারের ভোক্তা পর্যায়ে মূল্য সংশোধন করবে।
এ ছাড়া মোটরযানে ব্যবহৃত এলপিজি ভ্যারিয়েন্টে অটো গ্যাস-এর দাম আগের লিটারপ্রতি ৬৬ টাকা ২১ পয়সার পরিবর্তে ৬৩ টাকা ৯২ পয়সা করা হয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত এলপি গ্যাস কোম্পানির বাজারজাত করা এলপিজির দাম অপরিবর্তিত থাকবে। কারণ এটি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এই গ্যাসের বাজার শেয়ার ৫ শতাংশের কম।
আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজির দাম ক্রমহ্রাস হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে দাম সমন্বয় করার সিদ্ধান্তটি এসেছে। বিশেষত যা সৌদি সিপি (চুক্তি মূল্য) বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত। এটি প্রাথমিকভাবে মধ্য প্রাচ্য থেকে এলপিজি আমদানিকারী স্থানীয় অপারেটরদের জন্য একটি মানদণ্ড হিসাবে কাজ করে।
প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে আবারও রেকর্ড গড়েছেন। একক মাস হিসেবে সদ্য সমাপ্ত এপ্রিলে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১ শতাংশের বেশি। এ ছাড়া গত দুই বছরের তুলনায় এবার প্রবাসী আয় অন্তত ২ বিলিয়ন ডলার বেশি পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) প্রথম ১০ মাসে (জুলাই -এপ্রিল) প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৯ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে তারা পাঠিয়েছিলেন ১৭ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া গত ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে পাঠিয়েছিলেন ১৭ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে ১০ মাসে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। একক মাস হিসাবে এপ্রিলে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১ শতাংশের বেশি।
গত বছরের এপ্রিল মাসের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিলে প্রবাসীরা ২১ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহের এই ধারা সামনের দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে। আগামী কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে প্রবাসীরা আরও বেশি করে রেমিট্যান্স পাঠাবেন বলে আশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
সদ্য বিদায়ী এপ্রিল মাসে ২০৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২২ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার সমান ১১০ টাকা ধরে)। এপ্রিল মাসে দৈনিক গড়ে এসেছে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ৭৪৮ কোটি টাকা।
এর আগের মাস মার্চে প্রায় দুই বিলিয়ন (১.৯৯ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। এর আগে চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ২১১ কোটি বা ২ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। ২০২৩ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা গেছে, অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১৯৭ কোটি ডলার, আগস্টে ১৫৯ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরে ১৩৩ কোটি, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি, নভেম্বরে ১৯৩ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স।
অবশ্য এর আগে ২০২০ সালে হুন্ডি বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। ওই অর্থবছরে অর্থাৎ ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন ২৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। ২০২১-২২ অর্থবছরেও প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
মে মাসের জন্য ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের খুচরা মূল্য বাড়িয়েছে সরকার। পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের খুচরা গ্যাসের দামও বাড়ানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে নতুন এই দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। আজ ১ মে থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে।
প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রোলিয়ামের দামের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্থানীয় মূল্য বাড়বে-কমবে এবং প্রতি মাসে সরকার এক মাস মেয়াদে এ ধরনের দাম ঘোষণা করবে।
নতুন দামে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০৭ টাকা করা হয়েছে, পেট্রোল প্রতি লিটার আড়াই টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২৪ টাকা ৫০ পয়সা এবং অকটেন ১২৬ টাকা থেকে আড়াই টাকা বাড়িয়ে ১২৮ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে পৃথক আরেকটি প্রজ্ঞাপনে বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের দামও বাড়িয়েছে সরকার।
এ বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে প্রতি ঘনমিটারে ১৫ টাকা ৫০ পয়সা এবং ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে প্রতি ঘনমিটারে ৩১ টাকা ৫০ পয়সা দিতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ১ মে অর্থাৎ আজ বুধবার থেকে এ দাম কার্যকর হবে।
এর আগে গত ১ মার্চ দেশব্যাপী জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে 'জ্বালানি মূল্য নির্দেশিকা' জারি করে সরকার।
বাংলাদেশকে ২৮ দশমিক ৯ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ দেবে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১১০ টাকা অনুযায়ী)।
আজ মঙ্গলবার সৌদি আরবের রিয়াদে আইডিবির পরিচালনা পর্ষদের বার্ষিক সভা চলাকালে বাংলাদেশ সরকার ও আইডিবির মধ্যে ঋণ চুক্তি সই হয়। ‘রুরাল অ্যান্ড প্রি-আরবান হাউজিং ফাইন্যান্স প্রজেক্ট-সেকেন্ড ফেইজ’ শীর্ষক প্রকল্পে এ ঋণ দিচ্ছে আইডিবি। প্রকল্পটি ৫ বছর মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
ঋণ চুক্তিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং আইডিবির পক্ষে ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. মনসুর মুহতার সই করেন। ওই সময় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং আইডিবি গ্রুপের চেয়ারম্যান ডা. মুহাম্মদ আল জাসের উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্পটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে। প্রকল্পটির মাধ্যমে দেশের পল্লী ও শহরতলি এলাকায় বসবাসরত নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য পরিকল্পিত, টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব আবাসন নিশ্চিতকল্পে সাশ্রয়ী গৃহনির্মাণ ঋণ প্রদান করা হবে। এতে গৃহনির্মাণ ঋণ দিতে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে জমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে চাষযোগ্য জমি সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।
হুর হুর করে বেড়ে যাওয়া স্বর্ণের দাম আবার নিম্নমুখী হওয়া শুরু করেছে। এতে করে সাধারণ ক্রেতারা বেশ লাভবান হচ্ছেন বলে জানা যায়। গত কয়েকদিন ধরে সোনার দাম ক্রমান্বয়ে কমতে থাকায় ক্রেতারা স্বর্ণ কেনায় আগ্রহ বাড়ার কথা জানান বিক্রেতারা। জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এক দিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম আবারও কমানো হয়েছে। এ নিয়ে টানা সাত দফায় কমে স্বর্ণের দাম।
সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ৪২০ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ৪১ টাকা। আজ বিকেল ৪টা থেকে এ দাম কার্যকর করা হয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
মঙ্গলবার বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম কমেছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল ৪টা থেকে এ দাম কার্যকর হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৪২০ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ৪১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৩৯৭ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬ হাজার ২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৩৩৮ টাকা কমিয়ে ৯০ হাজার ৮৬৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ২৮০ টাকা কমিয়ে ৭৫ হাজার ৫৫৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার (২৯ এপ্রিল) ৬ষ্ঠ দফায় দাম কমিয়ে সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ১৫৫ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১১ হাজার ৪৬১ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৯৬ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৯৪৪ টাকা কমিয়ে ৯১ হাজার ২০১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৭৯৩ টাকা কমিয়ে ৭৫ হাজার ৮৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
টেকসই উন্নয়নে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অগ্রগতিতে সহায়তার জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ২০২৩ সালে নিজস্ব সম্পদ থেকে ২৩.৬ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৩৬০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এর মধ্যে জলবায়ু মোকাবিলায় রেকর্ড পরিমাণ ৯.৮ বিলিয়ন বা ৯৮০ কোটি ডলার রয়েছে।
এডিবির ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে তাদের আর্থিক ও পরিচালন খাতের তথ্যে এই পরিসংখ্যান তথ্য রয়েছে। প্রতিবেদনটি গত রোববার প্রকাশিত হয়েছে। জলবায়ু সংকটের অবনতির পাশাপাশি সংঘাত, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও ঋণের বোঝা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এডিবি কীভাবে উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোকে (ডিএমসি) সহায়তা করেছে, তার সারসংক্ষেপ প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, এডিবি জলবায়ু সমস্যা মোকাবিলায় এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বার্ষিক সর্বোচ্চ অর্থায়ন করে, এ অঞ্চলের জলবায়ু ব্যাংক হিসেবে তার পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, ‘অভিযোজন ও প্রশমনে আমাদের বিনিয়োগের ওপর জলবায়ু-সহিষ্ণু কৃষি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং কার্বন অপসারণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
২৩.৬ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে রয়েছে- সরকারি ও বেসরকারি খাতকে দেওয়া ঋণ, অনুদান, ইক্যুইটি বিনিয়োগ, গ্যারান্টি এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা। নিজস্ব সম্পদের সম্পূরক হিসেবে এডিবি শক্তিশালী অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সহ-অর্থায়ন হিসেবে অতিরিক্ত ১৬.৪ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চমানের জ্বালানি, পরিবহন এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে এডিবি প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। এটি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের জন্য বর্ধিত সহায়তার মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানব মূলধন আরও বাড়িয়েছে। লিঙ্গ বৈষম্য মোকাবিলা করা ব্যাংকের কাজের মূল ভিত্তি হিসেবে অব্যাহত রয়েছে, ২০২৩ সালে এর প্রায় সব কার্যক্রম জলবায়ু পরিবর্তনের অসামঞ্জস্যপূর্ণ লিঙ্গ প্রভাবগুলো প্রশমিত করতে সহায়তাসহ অবশিষ্ট ভারসাম্যহীনতা কমাতে অবদান রেখেছে। প্রতিবেদনে ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, কীভাবে এডিবি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) দিকে অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করার সহায়তাকে বিকশিত করতে সাহায্য করতে পারে। ২০২৩ সালে চালু করা গুরুত্বপূর্ণ মূলধন ব্যবস্থাপনা সংস্কারগুলো পরবর্তী দশকে নতুন ঋণ দেওয়ার ক্ষমতায় ১০০ বিলিয়ন ডলার উন্মুক্ত করে ব্যাংকের ভবিষ্যতের ঋণ কার্যক্রমকে শক্তিশালী করবে। এডিবি ২০২৩ সালে নতুন যে কার্যক্রম পদ্ধতি চালু করতে শুরু করে, তা তাদের গ্রাহকসেবা উন্নত করার লক্ষ্যে ব্যাংকটির একটি প্রজন্মগত রূপান্তর।
আসাকাওয়া বলেন, ‘আমাদের নতুন কার্যক্রম ধারণাটি এডিবি’কে আমাদের ডিএমসিগুলোকে আরও ভালো, দ্রুত এবং আরও উপযোগী সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় মূল পরিবর্তনগুলো করতে সক্ষম করেছে।’
এডিবি চরম দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি একটি সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিশীল এবং টেকসই এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এডিবির ৬৮ সদস্যের মধ্যে ৪৯টিই এ অঞ্চলের।
টানা ছয় দফা সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। সবশেষ আজ সোমবার ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ১৫৫ টাকা কমানো হয়েছে। এতে ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ৪৬১ টাকা। এর আগে দাম ছিল ১ লাখ ১২ হাজার ৬১৬ টাকা।
স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এ দাম কমানো হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল ৪টা থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
এর আগে গত ২৮ এপ্রিল এবং ২৭ এপ্রিল, ২৫ এপ্রিল, ২৪ এপ্রিল ও ২৩ এপ্রিল পাঁচ দফা সোনার দাম কমানো হয়। ২৮ এপ্রিল ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম ৩১৫ টাকা কমানো হয়। ২৭ এপ্রিল ৬৩০ টাকা, ২৫ এপ্রিল ৬৩০ টাকা, ২৪ এপ্রিল ২ হাজার ৯৯ টাকা এবং ২৩ এপ্রিল ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমানো হয়। এখন আবার দাম কমানোর মাধ্যমে ছয় দফায় ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ৭ হাজার ৯৬৭ টাকা কমল।
আজ বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে নতুন করে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার দাম কমেছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা গতকাল বিকেল ৪টা থেকে কার্যকর হয়।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ১৫৫ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ৪৬১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৯৬ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৯৪৫ টাকা কমিয়ে ৯১ হাজার ২০১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৭৯৩ টাকা কমিয়ে ৭৫ হাজার ৮৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অবশ্য সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের এর চেয়ে বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে সোনার গহনা বিক্রি করা হয়। একই সঙ্গে ভরিপ্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের ১ লাখ ২০ হাজার ৫৩৩ টাকা গুনতে হবে।
এর আগে গত রোববার সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৩১৫ টাকা কমিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১২ হাজার ৩১৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৩০৪ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২৫৬ টাকা কমিয়ে ৯২ হাজার ১৪৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ২১০ টাকা কমিয়ে ৭৬ হাজার ৬৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সোমবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ দামে সোনা বিক্রি হবে।
সোনার দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশজুড়ে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম, কৃষির মতো অনেক খাতে সংকট তৈরি হলেও লবণ খাতে উৎপাদন বেড়েছে। প্রখর রোদ ও উত্তাপের কারণে অল্প সময়ে মাঠ থেকে লবণ আহরণ করা যাচ্ছে। ফলে চলতি মৌসুমে রেকর্ডভাঙা উৎপাদনের সম্ভাবনা কড়া নাড়ছে এ খাতে।
লবণ চাষের মৌসুম শেষ হতে আরও ১৮ দিন বাকি। এর মধ্যে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৮৪ শতাংশ লবণ উৎপাদন হয়েছে। অথচ চলতি মৌসুমের শুরুতেও ঘূর্ণিঝড়সহ বৈরী আবহাওয়া কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম লবণ উৎপাদন হয়েছিল।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের (বিসিক) লবণ সেলের প্রধান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সরোয়ার হোসেন বলেন, শিল্পকারখানা বাড়ায় চলতি মৌসুমে লবণের চাহিদা বেড়েছে। এর ফলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রাও বেড়েছে।
তিনি বলেন, অনুকূল আবহাওয়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পাশাপাশি অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ লবণ উৎপাদনের আশা করছি এবার।
বিসিকের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে মোট ৬৮ হাজার ৩৫৭ একর জমিতে লবণ চাষ করেছেন মোট ৪০ হাজার ৬৯৫ জন কৃষক। চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদনের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন।
গত ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে মোট লবণ উৎপাদন হয়েছে ২১ লাখ ১৮ হাজার মেট্রিক টন। ২০২৩ সালের একই দিন পর্যন্ত উৎপাদন ছিল ১৮ লাখ ৩৯ হাজার টন। অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় উৎপাদন বেড়েছে ৯.৮ শতাংশ।
গত মৌসুমে ৬৬ হাজার ৪২০ একর জমিতে রেকর্ড ২২ লাখ ৩০ হাজার টন লবণ উৎপাদন হয়েছিল। শিল্প-সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, তীব্র দাবদাহের কারণে আবারও সর্বোচ্চ উৎপাদনের রেকর্ড ভাঙতে যাচ্ছে দেশের লবণ খাত।
সাধারণত নভেম্বর থেকে মে পর্যন্ত লবণ উৎপাদন ও আহরণ হয়ে থাকে।
সাধারণত মাঠ থেকে লবণ আহরণের উপযোগী হতে ১৪ দিন সময় লাগে। তবে গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রাভেদে মাত্র ৪ থেকে ৯ দিন পর্যন্ত লাগে।
গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশব্যাপী তাপপ্রবাহ বইছে। চাষের অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় তুলনামূলক কম সময়ে লবণ আহরণের উপযোগী হয়ে উঠেছে। গত কদিন ধরে ২-৩ দিনেই লবণ তোলা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
গত কয়েক দশক ধরে দেশে লবণ চাষের প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলো। সিংহভাগ উৎপাদন হয় কক্সাবাজারে। চলতি মৌসুমে কক্সবাজারে ৫৯ হাজার ৫০০ একরের বেশি জমিতে লবণ চাষ হয়েছে।
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া এলাকার চাষি নূর কাদের চলতি মৌসুমে ছয় একর জমিতে লবণ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, গরম পড়ায় আমরা দুই-তিন দিনে লবণ আহরণ করতে পারছি। ভালো মানের ও বেশি লবণ চাষ করা সম্ভব হয়েছে এবার।
বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির বলেন, লবণ চাষের জন্য রোদ, গরম ও বাতাস প্রয়োজন। এবার আবহাওয়া অনুকূলে আছে। এ জন্য লবণ উৎপাদন অনেক ভালো হচ্ছে।
বিসিকের লবণ শিল্প উন্নয়ন কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক জাফর ইকবাল ভূঁইয়া বলেন, মৌসুমের শুরুতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে লবণ উৎপাদন কম ছিল। আমরাও চিন্তিত ছিলাম। সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কায় চলতি মৌসুমে লবণ আমদানির অনুমতিও দেওয়া হয়েছিল। তবে বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। চাহিদার বেশি উৎপাদন সম্ভব।
দেশে লবণ চাষিরা এক মৌসুমে প্রতি একর জমি থেকে মোট ৩০০ মণ লবণ আহরণ করেন। বিপরীতে জমির ইজারা ও প্লাস্টিকের পলিথিনের ব্যয় ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা। এ ছাড়া প্রতি ৩ একর জমির জন্য এক লাখ টাকা চুক্তিতে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে প্রতি একর জমিতে লবণ চাষের পেছনে মোট ব্যয় হয় ৯০-৯৩ হাজার টাকার মতো।
উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ব্যয় তুলে বেশি লাভের আশায় কিছু কৃষকের মধ্যে অপরিপক্ব ও অপুষ্ট অবস্থায় মাঠ থেকে দ্রুত লবণ তোলার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। ফলে লবণের মান খারাপ হয়। পাশাপাশি পরিশোধনের সময় অপচয়ের হারও বাড়ে।
লবণ পরিশোধনের মিল মালিকরা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ে সাধারণ মিলগুলোতে লবণ পরিশোধনে ঘাটতি থেকে যেত ৫ থেকে ১০ শতাংশ। কিন্তু লবণের দাম বৃদ্ধি এবং বিপরীতে চাষের ব্যয় বৃদ্ধি প্রভাবে বেশি লাভের আশায় অপরিপক্ব ও অপুষ্ট থাকা অবস্থায় মাঠ থেকে লবণ আহরণ করছেন চাষিরা। ফলে মিলে আসা লবণে ঘাটতি থাকছে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত।
বিশেষ করে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে লবণের চাহিদার বিপরীতে যখন উৎপাদন কম থাকে, তখন এ প্রবণতা দেখা যায়। তখন প্রতি মণ কাঁচা লবণ ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হয়।
তবে ভরা মৌসুমে, অর্থাৎ বর্তমানে প্রতি মণ কাঁচা লবণ ৩২০ টাকায় কিনছেন মিল মালিকেরা—গত বছর একই সময়ে যার দর ছিল ৪২০ টাকা।
বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির বলেন, ভালো গরম পড়ার পাশাপাশি বাতাসও আছে। আশা করছি, লবণের মান কিছুটা বাড়বে।
বিসিকের লবণ সেলের প্রধান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সরোয়ার হোসেন লবণ পরিশোধনের সময় কয়েক বছর ধরে প্রসেস লসের হার বেড়েছে বলে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসের পর এই হার কমে আসে। এবার অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এই হার আরও কমবে। আশা করছি, ধীরে ধীরে প্রসেস লসের হার আরও কমবে।’
দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। পুনঃনিয়োগ পেয়েই গুজব রটনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে যাচ্ছে তার নেতৃত্বাধীন কমিশন। এ লক্ষ্যে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে ভুয়া ও অসত্য তথ্য বা গুজব প্রকাশ অথবা প্রচার থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে আজ রোববার সতর্ক বার্তা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। একইসঙ্গে যারা ভুয়া ও অসত্য তথ্য বা গুজব প্রকাশ বা প্রচারে জড়িত রয়েছেন কিংবা আগামীতে জড়িত থাকবেন তাদের সকলের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করতে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন বিষয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কিছু ভিত্তিহীন গুজব ও অসত্য তথ্য ছড়ানো হচ্ছে যার কোনও ভিত্তি নেই। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি দেশের পুঁজিবাজার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় নিয়মিতভাবে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভুয়া ও অসত্য তথ্য বা গুজব প্রকাশ অথবা প্রচারের উপর সতর্ক নজর বজায় রাখছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ইন্টারনেটে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অপ্রকাশিত তথ্য প্রকাশ, শেয়ার দরের পূর্বাভাস কিংবা ভবিষ্যদ্বাণীসহ যে কোনো ধরনের অসত্য তথ্য ও গুজব প্রকাশ বা প্রচার আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অতএব, পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে এ ধরনের ভুয়া ও অসত্য তথ্য বা গুজব প্রকাশ অথবা প্রচার থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে সতর্ক করা হলো।
উল্লেখ্য, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম নিয়ে কারাসাজি এবং গুজব রটনাকারী চক্রের তিনজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলেন - মো. আমির হোসাইন ওরফে নুর নুরানী (৩৭), নুরুল হক হারুন (৫২) এবং আব্দুল কাইয়ুম (৩৯)। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাঁদাবাজিসহ বাজার অস্থিতিশীল করতে নেতিবাচক ভুমিকা পালনের অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গেপ্তারকৃতদের মধ্যে আমির হোসাইনের (ছদ্মবেশী নাম নূর নূরানী) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য দমণ আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১১টি মামলা রয়েছে। নুরুল হক হারুন বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের বিভিন্ন সদস্যদের একত্রিত করে কোম্পানিগুলোতে চাঁদাবাজি করত। ফেসবুক, হোয়াটস্যাপ ও টেলিগ্রামে সব মিলিয়ে ৮-১০ টি গ্রুপ চালায় সে। অন-লাইনে তার অনেক ফলোয়ার। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি তিনি। এ পরিষদের নামে তিনি বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেন। আর আব্দুল কাউয়ুম রয়েল ক্যাপিটাল নামক একটি ব্রোকারেজ হাউজের সাথে যুক্ত রয়েছেন। হোয়াটস্যাপ এবং টেলিগ্রাম গ্রুপে টাকার বিনিময়ে তিনি বিভিন্ন শেয়ার সম্পর্কে তথ্য প্রদান করেন।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। আগামী চার বছর চুক্তিভিত্তিক মেয়াদের জন্য তাকে পুনর্নিয়োগ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. জাহিদ হোসেন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এর আগে গত ৩১ মার্চ শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে আরও এক মেয়াদে পুনর্নিয়োগ দেওয়ার লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। এতে ৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী সম্মতি জানিয়ে স্বাক্ষর করেন। প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ অনুসারে গতকাল এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ধারা-৫(৬) মোতাবেক আগামী ১৭ মে ২০২৪ হতে অথবা যোগদানের তারিখ হতে পরবর্তী চার বছরের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান পদে পুনর্নিয়োগ প্রদান করা হলো। তার বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি সরকারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি দ্বারা নির্ধারিত হবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
২০২০ সালের ১৭ মে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে চার বছরের জন্য বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে প্রথমবারের মতো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। সে হিসেবে চলতি বছরের ১৬ মে তার মেয়াদ শেষ হবে।
তথ্যমতে, বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দেশের পুঁজিবাজারকে বিশ্বমানের পুঁজিবাজারে পরিণত করতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেন। পাশাপাশি পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ টানতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রোড শো ও সভা-সেমিনার করে। করোনা পরিস্থিতি-পরবর্তী ইউক্রেন ও রাশিয়া যুদ্ধসহ নানা বৈশ্বিক সংকটের মধ্যে চার বছর পার করতে যাচ্ছে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এ টালমাটাল পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ কমিশন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের আইনকানুন ও বিধি-বিধান প্রণয়ন, সংশোধন, পরিবর্তন ও পরিমার্জনের মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজারের ভিত্তি শক্তিশালী করেছেন।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের মেয়াদকালে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে দেড় শতাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফলে বিগত চার বছরে দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি ও সূচক বিবেচনায় তা দৃশ্যমান না হলেও ভবিষ্যতে এর সুফল বিনিয়োগকারীরা পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে কর্মদক্ষতা, নিষ্ঠা, দায়িত্বশীলতা ও যোগ্যতার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনসের (আইওএসকো) পরিচালক (বোর্ড ডিরেক্টর) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিনি আইওএসকোর বোর্ড ডিরেক্টর হয়েছেন। একই সঙ্গে আইওএসকোর এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল কমিটির ভাইস চেয়ার হিসেবে পুনর্নিয়োগ পান। ২০২৪-২৬ সাল পর্যন্ত সময়ে উক্ত পদে তিনি দায়িত্ব পালন করবেন।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ১৯৬৮ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকার ধামরাইতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকার গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল থেকে ১৯৮৩ সালে এসএসসি পাস করে ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৮৫ সালে এইচএসসি পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তার বাবা রফিকুল ইসলাম খান অবসর গ্রহণের আগ পর্যন্ত ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। মা দেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী প্রয়াত হাসিনা মমতাজ। তার স্ত্রী শেনিন রুবাইয়াত ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এবং বিটিভির একজন সংবাদ পাঠিকা। এই দম্পতির দুই ছেলে সন্তান রয়েছেন।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। এই সময়ে তিনি দেশে-বিদেশে ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং এবং বিমা সম্পর্কিত অনেক ব্যবসায়, চেম্বার এবং গবেষণায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি টারশিয়ারি পর্যায়ের জন্যে ‘ই-কমার্স ও ই-ব্যাংকিং’ এবং মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্যে জাতীয় বোর্ড প্রকাশিত ‘ফাইন্যান্স ও ব্যাংকিং’ বইয়ের লেখক।
দেশের বাজারে সোনার দাম আরও কিছুটা কমানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ৬৩০ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয়েছে এক লাখ ১২ হাজার ৯৩১ টাকা।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম কমানো হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট থেকে এই দাম কার্যকর করা হয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল, ২৪ এপ্রিল এবং ২৩ এপ্রিল তিন দফা সোনার দাম কমানো হয়। ২৫ এপ্রিল ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম ৬৩০ টাকা, ২৪ এপ্রিল দুই হাজার ৯৯ টাকা এবং ২৩ এপ্রিল তিন হাজার ১৩৮ টাকা কমানো হয়। এখন আবার দাম কমানোর মাধ্যমে চার দফায় ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ছয় হাজার ৪৯৭ টাকা কমল।
শনিবার বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে নতুন করে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম কমেছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ৪০ মিনিট থেকে কার্যকর হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৬৩০ টাকা কমিয়ে এক লাখ ১২ হাজার ৯৩১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৬০৬ টাকা কমিয়ে এক লাখ ৭ হাজার ৭৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৫১৩ টাকা কমিয়ে ৯২ হাজার ৪০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম দুই হাজার ৪১ টাকা বাড়িয়ে ৭৬ হাজার ৮৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে ২৫ এপ্রিল সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৬৩০ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৫৯৫ টাকা কমিয়ে এক লাখ আট হাজার ৪০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৫১৪ টাকা কমিয়ে ৯২ হাজার ৯১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৪০৮ টাকা কমিয়ে ৭৪ হাজার ৮০১ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
গত ২৪ এপ্রিল সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম দুই হাজার ৯৯ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ১৪ হাজার ১৯১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৯৯৫ টাকা কমিয়ে এক লাখ নয় হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৭১৪ টাকা কমিয়ে ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৩৭৭ টাকা কমিয়ে ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত এ দামেই সোনা বিক্রি হয়েছে।
সোনার দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম দুই হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম দুই হাজার ছয় টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম এক হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম এক হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশের শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই দরপতন হয়েছে। সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার ওপরে কমেছে।
বাজার মূলধন কমার সঙ্গে সূচকেরও বড় পতন হয়েছে। তবে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ। দাম কমেছে ৮৫ শতাংশের বেশি প্রতিষ্ঠানের। আর দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে সাড়ে ১৫ শতাংশের বেশি।
গত সপ্তাহের লেনদেন শুরু হওয়ার আগে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৬ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। ধারাবাহিকভাবে কমে সপ্তাহ শেষে ওই বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। অর্থাৎ দরপতনের মধ্যে পড়ে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৬ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া মাত্র ৫৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩২৭টির। আর ১০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স কমেছে ১৬৮ দশমিক ২১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১৭৭ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। অর্থাৎ ঈদের পর লেনদেন হওয়া দুই সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ৩৪৫ দশমিক ৬১ পয়েন্ট।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ১০ দশমিক শূন্য ৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৫১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৪৭ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ২৯ দশমিক ২৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩৫ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
সবকটি মূল্যসূচক কমলেও লেনদেনের গতি কিছুটা বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৫২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৭৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৭৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বা ১৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের শেয়ার। দৈনিক গড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ২৭ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার দৈনিক গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা। ২৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম।
এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- গোল্ডেন সন, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, বেস্ট হোল্ডিং, মালেক স্পিনিং, স্যালভো কেমিক্যালস, কহিনুর কেমিক্যালস এবং বিচ হ্যাচারি।
ব্যাংক খাতে ডলারের তারল্য পরিস্থিতি উন্নত হওয়ায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির চেয়ে মার্চে ইম্পোর্ট লেটার অব ক্রেডিট বা আমদানি এলসি খোলা এবং সেটেলমেন্ট বা নিষ্পত্তি– উভয়ই বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তারা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসে ব্যাংকগুলো ৬.১৩ বিলিয়ন ডলারের আমদানি এলসি খুলেছে, যা ফেব্রুয়ারির তুলনায় ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি। গত ফেব্রুয়ারিতে খোলা হয়েছিল ৫.২৮ বিলিয়ন ডলারের আমদানি এলসি।
এদিকে ২০২৩ সালের মার্চে আমদানি এলসি খোলা হয়েছিল ৬ বিলিয়ন ডলারের কম। গত এক বছরের মধ্যে মাত্র ৩ বার আমদানি এলসি খোলা হয়েছে ৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ডলারের সংকট এখনো কাটেনি। তবে গত কয়েকমাস ধরে প্রতিমাসে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি হচ্ছে। রেমিট্যান্স ইনফ্লোও ভালো। এসব কারণে ব্যাংকগুলোর হাতে ডলারের তারল্য ভালো। ফলে আগে যেসব পণ্যের আমদানি এলসি আমরা খুলতাম না, এখন সেগুলোও খোলার চেষ্টা করছি।
হাতে ডলার থাকায় সাইট এলসি খোলা আগের তুলনায় বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গত ২/৩ মাস আগেও আমাদের খোলা এলসির ২৫ শতাংশ ছিল সাইট, বাকিটা ছিল ডেফার্ড। মার্চ মাসে যেসব এলসি খোলা হয়েছে, তার ৫০ শতাংশের বেশি সাইট এলসি।
এপ্রিলে এলসি খোলার পরিমাণ কমবে মন্তব্য করে এই ব্যাংকার আরও বলেন, ঈদের কারণে বেশ অনেকদিন ফ্যাক্টরি ও ব্যাংক বন্ধ ছিল। ফলে এপ্রিলে এলসি খোলা ও নিষ্পত্তি– দুটোই কমবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ভোগ্যপণ্যের আমদানি এলসি খোলা কমেছে প্রায় ১৮ শতাংশ। এ ছাড়া ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানি এলসি খোলা কমেছে ১৯ শতাংশ, মধ্যবর্তী পণ্য কমেছে ১৭ শতাংশ এবং শিল্পের কাঁচামাল কমেছে ৪ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত মার্চ মাসে আমদানি এলসি নিষ্পত্তি করা হয়েছে ৫.৪৫ বিলিয়ন ডলার। ফেব্রুয়ারির তুলনায় এটি ১৪.৫ শতাংশ বেশি। ফেব্রুয়ারি মাসে নিষ্পত্তি হয়েছিল ৪.৭৬ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে নিষ্পত্তি কমেছে প্রায় ১৪ শতাংশ।
ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে পারছে জানালেও ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা পর্যাপ্ত এলসি খুলতে পারছেন না। এ ছাড়া এলসি নিষ্পত্তিতে ডলারের দাম বেশি দিতে হচ্ছে। এদিকে ব্যাংকগুলো জানিয়েছে, এলসি নিষ্পত্তিতে ডলারের দাম রাখা হচ্ছে ১১৪ থেকে ১১৫ টাকা।
দেশের ভোগ্যপণ্যের বড় আমদানিকারক সিটি গ্রুপ। এই গ্রুপের করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, আমরা এখনও চাহিদামতো এলসি খুলতে পারছি না। এ ছাড়া এলসি খোলার জন্য আমাদের মার্জিন রাখতে হচ্ছে। এতে আমাদের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে। এর উপর এলসি নিষ্পত্তিতে ব্যাংকগুলো আমাদের কাছে ১১১৮ থেকে ১১৯ করে রাখছে।
এ সময় তিনি ব্যবসায়ীদের জন্য ‘সিঙ্গেল পার্টি বোরোয়ার লিমিট’ বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।
বেশ কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্যাংকগুলো এখন কী পরিমাণ পেমেন্ট ভবিষ্যতে করতে হবে– সেটি আগে থেকেই হিসাব করে রাখছে। সে অনুযায়ী, নতুন এলসি খুলছে। ফলে ব্যাংকগুলোতে এখন ডেফার্ড এলসি পেমেন্টের চাপ কম।