দুই বছরের করোনা মহামারির পর এক বছরের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কার প্রভাব বাংলাদেশের পুঁজিবাজারেও পড়েছিল। গত বছরের ডিসেম্বরে সবচেয়ে বেশি তলানিতে নেমে গিয়েছিল লেনদেন। এখন অবশ্য বাড়ছে। অর্থনীতিতেও অস্থিরতা কমতে শুরু করেছে। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়সহ অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় ফিরছে। পুঁজিবাজারেও তার প্রভাব পড়ছে; তলানিতে থেকে উঠে দাঁড়াতে শুরু করেছে। আগামীতে পুঁজিবাজার ভালো হবে বলেই মনে হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার নিজ অফিসে দৈনিক বাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ আশার কথা শুনিয়েছেন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ও ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছায়েদুর রহমান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দৈনিক বাংলার প্রতিবেদক আসাদুজ্জামান নূর।
পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থা এখন কেমন?
পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে যদি বলি, আমরা এখনো সন্তোষজনক জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি। উন্নয়নশীল অবস্থায় আছি, উন্নত মার্কেট হতে পারিনি। পুঁজিবাজারের ইতিহাস দেখলে জানা যায়, দুই থেকে তিনটি বড় পতন হয়েছে। তাতে বিনিয়োগকারীরা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সরকার, নিয়ন্ত্রক সংস্থা এই পরিস্থিতি বিবেচনায় বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে আমাদের অবস্থা আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে। কিন্তু যদি আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মেলাতে যাই, তাহলে আমরা সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি। বিনিয়োগ শিক্ষার ঘাটতি আছে। বাজার জানার ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকারের সেই সদিচ্ছা আছে উন্নত পুঁজিবাজার গড়ার জন্য। সেই প্রত্যাশা আমরা করছি। আমরা যেখানে যারা আছি, সেখান থেকে সহায়ক ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করছি।
এখন বিনিয়োগ করার অনুকূল সময় কি না?
এখন বিনিয়োগ করার সময় কি না, এটা একটা প্রশ্ন। আর ইনস্টিটিউশন বা প্রফেশনালরা কী বলছেন, সেটা আরেক প্রশ্ন। বিনিয়োগের সময় সব সময়। কিন্তু কোথায় বিনিয়োগ করবেন, সেটার ওপর সময়ের ভ্যারিয়েশন আসতে পারে। বাজার যখন খুব খারাপ থাকে, তখনো কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বৃদ্ধি পায়। আবার যখন খুব ভালো বা ঊর্ধ্বমুখী থাকে, সে সময়ও কিছু প্রতিষ্ঠানের দর নিম্নমুখী হয়। তার মানে এটা টাইমিংয়ের জন্য হয়। আপনি কখন বিনিয়োগ করবেন, সেটার ওপরে চয়েস করা হবে কোন জায়গায় বিনিয়োগ করবেন। কোন জায়গায় বিনিয়োগ করতে চান, সেটার জন্য কোন সময়টা প্রযোজ্য তা চিন্তা করতে হবে। সেই অনুযায়ী বিনিয়োগ করতে হবে।
লভ্যাংশের জন্য বিনিয়োগ করতে চাইলে আপকামিং লভ্যাংশ কোথায় আছে, সেগুলো বিবেচনায় নিতে হবে। পার্শ্ববর্তী দেশ বা উন্নত দেশের তুলনায় আমাদের দেশে ডিভিডেন্ড ইল্ড (শেয়ারের দামের সঙ্গে লভ্যাংশের অনুপাত) অনেক বেশি। তার পরও আমরা বাজার নিয়ে হতাশ। কারণ আমরা খুব দ্রুত ক্যাপিটাল গেইন করতে চাই। সবাই যখন ক্যাপিটাল গেইনের জন্য একসঙ্গে বিনিয়োগ করতে যাই, বাজার বেড়ে যায়। আবার যখন লাভটা উঠিয়ে নিতে চাই, বাজার নিম্নমুখী হয়। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিষয় না। সবাই বিনিয়োগকারী। যার যার ফান্ড, কাঠামো বা পলিসি অনুযায়ী বিনিয়োগ করে। কে কখন বিনিয়োগ করবেন, কী মাইন্ড-সেটআপ নিয়ে বিনিয়োগ করবেন, সেটা তার নিজস্ব বিষয়।
প্রত্যেকেই বাজারের ঝুঁকির কথা মাথায় রাখেন। কীভাবে সেই ঝুঁকিটা মিটিগেশন করবেন এবং কোন সেক্টরে কতটুকু বিনিয়োগ করবেন, কখন করবেন, কোন বিনিয়োগটা লভ্যাংশের জন্য করবেন, কোনটা ক্যাপিটাল গেইনের জন্য তা সবই নিজস্ব চিন্তাভাবনার বহিঃপ্রকাশ। যদি কেউ বলে এখন বিনিয়োগের সময় না, সেটার সঙ্গে আমি একমত নই। আবার যদি বলে এক্ষুণি বিনিয়োগ করার সময়, সেটার সঙ্গেও আমি একমত নই। কারণটা হলো, কোথায় বিনিয়োগ করবেন, কত টাকা বিনিয়োগ করবেন, বিনিয়োগের রিটার্ন কখন চাচ্ছেন, এই পলিসিগুলো বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এগুলো অ্যানালাইসিস ছাড়া যদি কেউ ইয়েস বা নো বলে দেয়, তাহলে যৌক্তিক হবে না। এটা ঝুঁকি বাড়তে পারে অথবা আনএক্সপেক্টেড লাভ পেয়ে যেতে পারেন। কাকতালীয়ভাবে কিছু একটা। টাকা ও সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে চিন্তা করতে হবে কোন সেক্টরে বিনিয়োগ করলে প্রত্যাশা অনুযায়ী রিটার্ন পেতে পারেন। সময়মতো টাকা ফেরত পেতে পারেন।
পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট শেয়ারের কস্ট প্রাইসে গণনার দাবি ছিল প্রায় এক যুগের। সেটি বাস্তবায়ন হয়েছে, বাজারে এর প্রভাব কতটা পড়েছে?
কস্ট প্রাইস আর মার্কেট প্রাইসের মধ্যে যে প্রভাবটা বাজারে পড়ে- এর আগে দেখা গেছে, হঠাৎ করে বাজার একটু ভালো হলে ব্যাংকগুলোর ওপর চাপ পড়ত। যদি কেউ ১০০ টাকা দিয়ে একটা শেয়ার কেনে, তার এক্সপোজার মার্জিনাল। কাল বা ১৫ দিন পরে ১০০ টাকার শেয়ারটা যদি ১১০ টাকা হয়ে যায়, তখন কিন্তু সে ব্রিজ করছে। এই যে একটা আনসার্টেনিটি, সেটা থেকে বের হয়ে আসার জন্য আমাদের প্রস্তাবটা ছিল। আরেকটা ইস্যু হলো- একজন স্ট্রাটেজিক বা দীর্ঘমেয়াদি ইনভেস্টমেন্টে যেতে পারেন। যদি তিনি কোনো পরিকল্পনা করেন বা কোনো কোম্পানির বোর্ডে ঢোকেন, তাহলে তার শেয়ার লকইন হয়ে যাচ্ছে। এই সময়ে শেয়ারের দাম সিগনিফিক্যান্টলি বেড়ে গেল। এখন তিনি কী করবেন? এক্সপোজার ব্রিজ করছে, আবার ডিরেক্টর হিসেবে শেয়ারগুলো বিক্রিও করতে পারবেন না। এসব জটিলতা দূর করার জন্য আমরা চার-পাঁচ বছর ধরে চেষ্টা করেছি। অবশেষে নতুন গভর্নর সাহেব আসার পর বিষয়টা অনুধাবন করেছেন। মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত এসেছে, এক্সপোজার বলতে কস্ট প্রাইসকে বিবেচনা করা যাবে। এটা হওয়ার ফলে কারও আর আনসার্টেনিটি থাকছে না। প্রেসার হচ্ছে না। ইচ্ছেমতো পরিকল্পনা করে বিনিয়োগ করা যাচ্ছে।
আমরা কখনো বলিনি যে কস্ট প্রাইস এলেই শেয়ারের দাম বেড়ে যাবে। বিষয়টা তা নয়। আমাদের ওপর যে অ্যাডিশনাল চাপ ছিল, সেটা থেকে আমরা বের হয়ে আসতে পেরেছি। এখন আমি যদি মনে করি, একটা শেয়ার ১০ বছর হোল্ড করব, সেটা বিক্রির জন্য আমার ওপর চাপ প্রয়োগ হবে না। এটার প্রাইস যেখানেই যাক, বাজারকে প্রভাবিত করবে না। এই ছিল আমাদের মূল উদ্দেশ্য। সেটা পূরণ হয়েছে।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলোর ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন ও বিনিয়োগ পুরোপুরি হয়নি কেন বলে আপনি মনে করেন?
দেশে ৬০টির বেশি ব্যাংক থাকার পরও কিন্তু সবই পুঁজিবাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। খুব সীমিতসংখ্যক ব্যাংক বাজারের সঙ্গে জড়িত। এখন একটা ফ্যাসিলিটিজ দেয়া আছে, সেটা গ্রহণ করবেন কি না, সেটা নিজস্ব বিষয়। সেটা করতে গেলে রিস্ক আছে কি না, অপারেট করার লোক আছে কি না, এ রকম অনেক বিষয় আছে। যাদের ইনফ্রাস্ট্রাকচার আছে, জনবল আছে, তারা এটার সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। যাদের নেই, জড়িত হয়নি। এটা আইনগত বাধ্যবাধকতা নয়। এটা হলো একটা সুযোগ। অনেকেই মনে করছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে কিন্তু করছে না কেন, এটা সঠিক না। কেউ করতে চাইলে সুযোগ আছে। এখন সবাই কি সব সুযোগ কাজে লাগায়, সেটা বড় বিষয়? যদি কেউ মনে করেন, এটা হ্যান্ডেল করতে পারব না। তাহলে সুযোগ থাকলেও সেটা নিয়ে কাজ করবেন না। এটাই স্বাভাবিক বিষয়।
ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে পুঁজিবাজার ও বিদেশি বিনিয়োগের ওপর কী প্রভাব পড়েছে?
ডলারের এই বিষয়টা মানি মার্কেট ও ক্যাপিটল মার্কেট দুই জায়গাতেই অস্থিরতা তৈরি করেছে। এটা অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ওই সময়টা মুভ করেছে। সরাসরি যদি এখানে অস্থিরতা নাও হয়, তার পরও গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে সব তথ্য খুব দ্রুত সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। যার ফলে একটা অস্থিরতা তৈরি হয়। সেটা সব জায়গায় হয়।
কনজ্যুমার গুডের কথা যদি বলি। আগে গণমাধ্যম এত ইজি ছিল না। তখন জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি নিয়ে অত বাড়াবাড়ি আমরা দেখিনি। এখন ঢাকা শহরের কোনো তথ্য মিনিটের মধ্যে বর্ডার এলাকাতেও চলে যাচ্ছে। পাড়া-মহল্লার দোকানেও সেটার প্রভাব তৈরি হয়ে গেছে। সহজ প্রচারমাধ্যম যেমন আমাদের উপকার করছে, তেমনি ঝুঁকির মুখেও ফেলছে। হতাশাও তৈরি হচ্ছে। এই ধরনের প্রচার-প্রচারণা, বিভিন্ন টকশো সাধারণ মানুষের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি করছে। অর্থনীতিতে যতটা না নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, তার চেয়েও বেশি সাইকোলজিক্যালি প্রভাব পড়ছে। এটাই আমাদের বেশি বিচলিত করছে।
শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটছে। সেখানে শেয়ার মার্কেট পজিটিভ হয়ে যাচ্ছে। আর সেই বিপর্যয় নিয়ে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার নেগেটিভ হচ্ছে। একদিন আমাদের বাজারে সর্বোচ্চ পতন হয়েছিল, প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ পয়েন্টের মতো পড়েছিল। ওই দিন শ্রীলঙ্কার বাজারে ২৮৭ পয়েন্ট বেড়েছিল এবং ভারতের বাজারে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪৮৩ পয়েন্ট বেড়েছিল।
কনফিডেন্টলি বলতে পারি, আমাদের দেশে খাদ্যের অভাব হবে না। আমাদের কৃষির অনেক উন্নয়ন হয়েছে। সরকার অনেক সাবসিডাইজ করেছে। উৎপাদন খুব সিগনিফিক্যান্টলি বাড়ছে। মানুষের খেয়েপরে বেঁচে থাকার মতো ধান-চাল আছে। অন্য জায়গায় হয়তো প্রভাব পড়তে পারে। কৃষি উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে। এই জায়গায় আমরা নিরাপদ। তেল, জ্বালানি আমদানি করতে হয়, সেগুলোর ওপর প্রভাব পড়বে অর্থনীতির চালিকাশক্তি শিল্প-কারখানায়। জ্বালানি আমদানি করলে ডলারের কারণে দাম যখন বেড়ে যাচ্ছে, সেটা খুচরা বাজারে এসে বেড়ে যাচ্ছে। কারণ উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
অর্থনীতির কোনো একটা জায়গায় যখন ইফেক্ট আসে, তখন সব উইন্ডোতে প্রোপোরশনিট ইফেক্ট আসে। তেলের দাম বেড়ে গেছে, গাড়ির ভাড়া বেড়ে গেছে। এতে পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে। যে ট্রাক আগে ৩ হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া করা যেত, সেটা এখন ৫ হাজার টাকা। তার মানে একই পরিমাণ মালামাল আনার জন্য ২ হাজার টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। ২ হাজার টাকা যখন বেড়ে যাচ্ছে, তখন বেশি দামেই তরকারি বা গ্রোসারি বিক্রি করতে হবে। তাহলে অর্থনৈতিক প্রভাব এক জায়গায় ন্যারো হয়ে থাকে না। এটার বিস্তারটা অনেক বড়। আগে যখন যোগাযোগ ও গণমাধ্যমে এত সহজ ছিল না। তখন অনেক সময় নিত এগুলো প্রসারিত হতে। এখন তৎক্ষণাৎ শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়।
বছর দুয়েক আগে লবণের দাম বেড়েছিল। টিভিতে সংবাদের লাইভে দেখেছিলাম, এক ভদ্রলোক সকালে ১০ কেজির লবণ কেনার পর বিকেলে আবার সাড়ে সাত কেজি লবণ কেনেন। কেন কিনেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাম বেড়ে যাবে।’ সে যে সাড়ে ১৭ কেজি লবণ কিনেছেন, সেটা কয় দিনে খাবেন? এক বছরে খেতে পারবেন? সেটা পারবেন না। চাল, আটার দাম বেড়ে যাবে বলে কি পাঁচ বছরের খাবার একসঙ্গে কিনবেন? তা না করে যদি আগের মতোই স্বাভাবিক থাকেন, তাহলে বাজারে প্রভাব কম পড়বে। আর অস্থির হলে বাজারে প্রভাব বেশি পড়বে। ক্রাইসিস তৈরি হবে।
আগে কিনতেন এক কেজি, এখন কিনতে চাচ্ছেন পাঁচ কেজি, আপনার মতো যখন ১০ জন চলে এসেছেন। দোকানদার হয়তো মাল রাখতেন ৫০ কেজি, কিন্তু এবার চাহিদা হয়ে গেছে ৫০০ কেজি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দাম বেড়ে যাবে। এই ধরনের প্রচারের কারণেই আমরা অর্থনৈতিক সমস্যায় বেশি ভুগি।
সত্যিকার অর্থে আমরা যত বেশি হতাশা, আলোচনা, পর্যালোচনা করি, অতটা অর্থনীতি খারাপ অবস্থায় নেই। আমরা সেই অস্থিরতা থেকে বেরিয়ে এসেছি।
আমাদের রিজার্ভের পরিমাণ, রেমিট্যান্স বাড়ছে। রপ্তানিও বাড়ছে। আইএমএফের ঋণ নিয়ে অনেক আলোচনা ছিল, সেটাও হয়ে গেছে। ফান্ডও ছাড় হয়ে গেছে। আমরা ইতিবাচক দিকে যাচ্ছি। আমাদের উচিত হলো, হতাশা থেকে বের হয়ে ইতিবাচক ও সুস্থির চিন্তা করা। আগামীতে আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও ভালো হবে।
বোরো ধানের মৌসুম আসছে, এখন রোপণ করা হচ্ছে। প্রতিবছরই এপ্রিল-মে মাসে গিয়ে ধানের যে ফলন হয়, সেটা দিয়ে আমাদের সারা বছর চলে যায়। যে রোডেই যাওয়া যাক, দেখা যায় হাইওয়েতে জমা করা হয়েছে প্রচুর সবজি। ট্রাকে করে গ্রাম থেকে শহরে নেয়া হচ্ছে। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। খাদ্য যদি থাকে, তাহলে আমার হতাশাটা কীসের?
জীবনচক্রে কিছু চ্যালেঞ্জ থাকবে, আসবে। ১৯৯১ সালে প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল চট্টগ্রাম-কক্সবাজারকেন্দ্রিক। এর পর থেকে আর কোনো ঘূর্ণিঝড়ে মানুষ ওইভাবে মারা যায়নি, যদিও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ওইটার পর পরই সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়। গত কয়েক বছরে কতগুলো ঘূর্ণিঝড় হয়েছে, তাতে যানমালের ক্ষতি হয়নি। কারণ মানুষ সচেতন হয়েছে সরকারের মাধ্যমে।
সরকারের পক্ষ থেকে এসব পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ পদক্ষেপ আছে। আমাদের হতাশ না হয়ে গঠনমূলক চিন্তা করা দরকার। যত বেশি হতাশ হব, তত বেশি অস্থিরতা বাড়বে। অসুস্থ হলে প্রয়োজন ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া, হতাশা নয়।
ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে মুনাফা কমায় বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে কি?
বিনিয়োগকারীদের প্রফেশনাল অ্যানালিস্ট থাকে, সারা বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তা করে। রিসার্চের আলোকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করে ও প্রত্যাহার করে। হয়তো তারা আগে থেকেই কোভিড নিয়ে খুব বেশি কনসার্ন ছিল। কোভিডের আগে দিয়েই তারা এক্সিট নিয়েছে। কোভিডের পরে নতুন করে ইনভেস্টমেন্ট আসেনি। ডলারের দাম তো তাদের জন্য আরও অস্থিরতা বাড়িয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের বিদেশি বিনিয়োগের ক্যাপিটাল মার্কেটের জায়গাটা হয়তো কিছুটা নেতিবাচক হয়েছে। কিন্তু এফডিআই (ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট) তো বন্ধ হয়নি। ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং ক্যাপিটাল মার্কেটের ছোট্ট একটা পোরশন নেতিবাচকভাবে খুব বেশি হাইলাইট করার যৌক্তিকতা নেই। কারণ, যারা ক্যাপিটাল মার্কেটে ইনভেস্ট করেন তাদের অ্যানালাইসিস এক রকম, আর এফডিআইতে যারা করেন তাদের অন্য রকম। আমাদের মার্কেটে খুবই ইনসিগনিফিক্যান্ট ফরেন ইনভেস্টমেন্টের। ডলারের অস্থিরতা কেটে স্থিতিশীল জায়গায় চলে এসেছে, এখন আবার ফরেন ইনভেস্টমেন্ট আসতে শুরু করবে। ইতিমধ্যে কিছু পার্টিসিপেশন হচ্ছে।
করপোরেট গভর্ন্যান্সের কথা বলা হলেও অনেক কোম্পানি ঠিকমতো আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করাসহ আরও অনেক নন-কমপ্লায়েন্স করে থাকে। করপোরেট গভর্ন্যান্স নিশ্চিত করবে কে?
করপোরেট গভর্ন্যান্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি যে মহল্লায় থাকেন, সেখান মসজিদ আছে, ইমাম সাহেব আছেন, মুসল্লিও আছেন, আবার দুষ্কৃতকারীও আছে। যারা মসজিদে যান, তাদের চিন্তা অন্য রকম, দুষ্কৃতকারীদের আরেক রকম। কোনো সমাজেই একচ্ছত্র প্রভাব নেই। ভালো-খারাপের সংমিশ্রণ থাকে। যারা ভালো প্রতিষ্ঠান, করপোরেট গভর্ন্যান্স মেনে চলেন তাদের নিয়ে সমস্যা নেই। যারা মানেন না, তাদের মানানো জরুরি। এর উদ্দেশ্যে কী? আমরা চাচ্ছি স্বচ্ছতা-জবাবদিহি। একটা কোম্পানি যদি লাভ বা লোকসান করে, সেটা তার বিনিয়োগকারীরা যেন সঠিকভাবে জানতে পারেন। যেন স্পেকিউলেটিভ ক্রিয়েট না হয়। কোনো তথ্য যেন হাইড না হয়। অবাধে শেয়ার না হয়। এই বিষয়গুলোই চাচ্ছি, অনেস্টির জায়গা, সিনসিয়ারিটির জায়গাটা নিশ্চিত করতে চাচ্ছি। ৩৫০ কোম্পানি আছে, তত বোর্ড, ম্যানেজমেন্টের বিষয়। তাহলে কয়েক হাজার লোকের বিষয়। তাদের সবাইকে কি এক শপথ বাক্য পাঠ করাতে পারবেন? এ রকম আশা করেন? করেন না।
আমরা চাই, করপোরেট গভর্ন্যান্সের নিশ্চয়তা। সেটার জন্য আমাদের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন খুবই শক্তভাবে ভূমিকা রাখছে। সম্প্রতি স্টক এক্সচেঞ্জে তথ্যের বিভ্রাট হয়েছে। এ জন্য আজকে (বৃহস্পতিবার) সকালেও চারজন সাসপেন্ড হয়েছেন। বিএসইসি কেয়ারফুলি, স্ট্রংলি হ্যান্ডেল করছে। তারপরও দুই-চারজন অসাধু ব্যক্তি থাকতে পারেন। তারা কিন্তু শাস্তি পাচ্ছেন। অনেক বড় বড় পেনাল্টি, মামলা দিয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে। আমি একবার চকোরিয়া থানায় গিয়েছিলাম, ওসির মাথার ওপরে দেয়ালে লেখা ‘সবাই যদি ভালো হতো, তাহলে পুলিশের প্রয়োজন হতো না। আবার সবাই যদি খারাপ হতো তাহলেও পুলিশের প্রয়োজন হতো না।’ যেহেতু এটা ভালো খারাপের সংমিশ্রিত সমাজব্যবস্থা। ভালো লোকদের স্বার্থে দুষ্ট লোকদের নিবারণ করার জন্য আইনের ব্যবস্থা রয়েছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা রয়েছে। পৃথিবী যতদিন থাকবে, এ রকম থেকে যাবে।
কেউ অন্যায়ভাবে ১০০ কোটি টাকা আয় করে ৫ থেকে ১০ কোটি টাকা জরিমানা দিয়ে পার পেলে সে কি অনিয়ম করা ছেড়ে দেবে?
এই যে প্রশ্নটা আপনি করলেন, তা অনেক টকশোতে দেখেছি। অনেক পত্রিকার নিউজেও দেখেছি। এটা সম্পর্কে কিন্তু সুস্পষ্ট তথ্য আপনার বা আমার কাছে নাই। আমি মনে করি, বিএসইসি তাদের বেস্ট জাজমেন্ট অ্যাপ্লাই করে। আপনি মনে করছেন যে, ১০০ কোটি টাকা সে লাভ করেছে, তার ৫ বা ১০ কোটি টাকা জরিমানা হচ্ছে। এই তথ্যটা কিন্তু অনুমাননির্ভর, সত্য তথ্য কিন্তু আপনার কাছে নেই। আসলেই কি সে ১০০ কোটি টাকা ব্যবসা করেছে? আপনি যেটা বলছেন তা যৌক্তিক। ১০০ টাকা যদি গেইন করতে পারি। বিপরীতে ৫ বা ১০ টাকা জরিমানা দিতে হয়, তাহলে তো ভালোই। তাহলে অন্যায় করেই যাব। আপনার এই প্রশ্নটা প্রাসঙ্গিক। কিন্তু সঠিক তথ্য ছাড়া এ কথা বলা যাবে না। আমরা যতটুকু জানি বিএসইসি কাউকে কাউকে ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে বের করে দিয়েছে, কাউকে জরিমানা করেছে, কারও বিজনেস অ্যাক্টিভিটিস বন্ধ করে দিয়েছে। কারোর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এখন কে কতটুকু অপরাধ করেছে, আইনের সঙ্গে কতটুকু নন-কমপ্লায়েন্স হয়েছে এটা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বলতে পারবে। আমরা তো বিচারব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। এটুকু বলতে পারি, অপরাধীর বিচারের ব্যবস্থা উনারা করছেন। সাধারণ বিচারব্যবস্থায় কী হয়? যখন কেউ লোয়ার কোর্টের রায় পান, বিপক্ষে গেলে সেটাতে সন্তুষ্ট হন না। আবার হাইকোর্টে চলে যান। যদিও রায়টা প্রোপার হয়েও থাকে তারপরও সংক্ষুব্ধ হয়ে বলেন যে, রায়টা সঠিক হয়নি। বিচারব্যবস্থার মধ্যে এই সমালোচনাটা কিন্তু রয়েই গেছে।
আগামীতে বাজার কেমন যাবে বা কোন খাত ভালো করবে বলে মনে করেন?
আমরা যেসব প্রতিবন্ধকতা দেখেছিলাম বা শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, যেমন- কোভিড, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক বিপর্যয়। এগুলো কাছাকাছি সময়ে ঘটেছে। সেগুলোর প্রভাবে আমাদের মধ্যে অস্থিরতা হয়েছিল। অস্থিরতা ও ভীতি থেকে বের হয়ে এসেছি। ইনফ্লেশন যে জায়গা ওঠার ভয় ছিল সেটা হয়ে গেছে। এখন স্ট্যাবিলিটির দিকে আসছে। ইতিমধ্যে আমরা অর্থনীতির বেশ কিছু ইনডিকেটর (সূচক) পজিটিভ দেখছি, যেমন রিজার্ভ, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বেড়েছে। ব্যাংক, লিজিং ও মাল্টিন্যাশনালের ইয়ার এন্ডিং ডিসেম্বর মাস। তার মানে এই মাসের শেষ দিক থেকে বা আগামী মাসের প্রথম দিক থেকে বিভিন্ন কোম্পানির ডিভিডেন্ডের ঘোষণা আসতে থাকে। পাশাপাশি যাদের জুন এন্ডিং তাদের থার্ড কোয়ার্টার আসতে থাকবে এপ্রিল মাস থেকে। তখন এই জায়গাতে একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশা করি। গত দুই তিন বছরে ব্যাংকের ডিভিডেন্ড ইল্ড এফডিআর রেটের চেয়ে বেশি। এবারও ভালো দেবে আশা করি। অপারেটিং ইনকামের যে তথ্য প্রচার হয়েছে, মনে হচ্ছে- অনেক ব্যাংক ভালো করেছে। ভালো ডিভিডেন্ড হয়তো দেবে। বিনিয়োগের মূল উদ্দেশ্যেই হলো ডিভিডেন্ড। এই বিষয়গুলো বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে।
আমাদের গার্মেন্ট সেক্টর ভালো করছে, এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টে। বছর শেষে ডিসেম্বরে ইয়ার এন্ডিং তাদের ডিভিডেন্ড আসবে। তবে আমাদের বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ডের প্রতি নিরুৎসাহিত করে একটা বিষয়। যেটা আমাদের পুঁজিবাজারের অস্থিরতারও কারণ। সেটা হলো, ক্যাপিটাল গেইনে কোনো ট্যাক্স নেই, সবাই ক্যাপিটাল গেইনে আগ্রহী। কিন্তু ডিভিডেন্ডের ওপরে সর্বোচ্চ হারে ট্যাক্স দিতে হয়। একবার করপোরেট ট্যাক্স দেয়ার পরেও ব্যক্তিগতভাবে যখন তারা ডিভিডেন্ড নেন, তখন আবার ট্যাক্স দিতে হয়। লভ্যাংশের এই ডুয়েল ট্যাক্সেশন আমাদের পুঁজিবাজারকে টেনে ধরেছে। এই গতিটা বাড়াতে হলে সরকারের বাজেটে লভ্যাংশে দ্বৈত কর প্রত্যাহার করা উচিত। পুঁজিবাজারের গভীরতা ও অর্থনীতিতে অবদান বাড়াতে হলে ভালো কোম্পানি ও গ্রুপ, যারা ভালো ব্যবসা করে তাদের তালিকাভুক্ত করাতে হবে। তাদের অর্থের অভাব নেই। অর্থের জন্য আসবে না। তাদের ইনসেনটিভ দিতে হবে, এনকারেজ করতে হবে। লিস্টেড ও নন-লিস্টেড কোম্পানির ট্যাক্সের পার্থক্য বাড়াতে হবে। ভালো প্রতিষ্ঠান যত বেশি বাড়বে, তত বাজারের গভীরতা বাড়বে। দেশি-বিদেশি ভালো বিনিয়োগকারীর সমন্বয় বেশি হবে। এসব জায়গাতে পলিসি সাপোর্টের সুযোগ রয়েছে।
আমাদের যারা ভালো ব্যবসা করেন তারা খুব সহজেই ব্যাংক লোন পেয়ে যান, ব্যবসা করতে পারেন। সেখানে দেখা যায়, তাদের অপারেটিং কস্ট অনেক কমে যায়। ইন্টারেস্ট রেট ৯ শতাংশের মধ্যে। আর লিস্টেড হলে তাকে ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিতে হতো, তার আগে আবার করপোরেট ট্যাক্স দিতে হবে। পুঁজিবাজারকে ভালো করতে হলে এই জায়গাগুলোতে সাপোর্ট দরকার। আমি মনে করি, টাকার চেয়ে পলিসি সাপোর্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ। লিস্টেড ও নন-লিস্টেড কোম্পানির ট্যাক্স গ্যাপ বাড়াতে হবে, তালিকাভুক্ত কোম্পানির ডিভিডেন্ডের ট্যাক্স প্রত্যাহার করা উচিত। তাহলে নতুন সুযোগ তৈরি করবে। এতে সবাই ডিভিডেন্ড নিতে চাইবে, লং টার্ম ইনভেস্টমেন্টে যাবে এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও বাড়বে।
পুঁজিবাজার ভালো হলে সরকারের লাভ। সরকার প্রতিটা ট্রানজেকশন, প্রত্যেক ইন্টারমিডিয়ারিজ, এমপ্লয়ি, এক্সচেঞ্জ থেকে ট্যাক্স পাচ্ছে। সাইজ যত বড় হবে ট্যাক্স তত বড় হবে। পলিসি সাপোর্ট দিয়ে আকৃতি বড় করা গুরুত্বপূর্ণ। তাতে কর্মসংস্থান হবে। তারপর রাজস্ব অটোমেটিক্যালি পেতে থাকবে সরকার।
নতুন তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো ইস্যুমূল্যের নিচে, এমনটা কেন হচ্ছে?
ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স ও লিজিং কোম্পানি রেগুলেটর কমপ্লায়েন্সের জন্য তালিকাভুক্ত হয়। যখন তাদের লেটার অব ইনটেন্ড দেয়া হয়, তখন বলা হয়, তিন বছর পরে পাবলিক লিস্টেড হতে হবে এবং তা ৫০ শতাংশ। অর্থাৎ যে ক্যাপিটাল থাকে তার সমপরিমাণ বাজার থেকে সংগ্রহণ করতে হবে। এই বাধ্যবাধকতার জন্য তারা বাজারে আসেন।
১৯৯৭ সালের দিকে বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ারই ফেসুভ্যালুর নিচে ছিল। সম্ভবত ২০০৩-০৪ সাল থেকে ব্যাংকের শেয়ার বেড়েছিল। এর পরে ১০০ টাকার শেয়ার কিন্তু ১২ হাজার টাকাও হয়েছে। এটা হিউম্যান সাইকোলজি। আমার ব্যক্তিগত মতামত, ব্যাংকের ক্যাপিটাল অনেক বড়। এগুলো নিয়ে স্পেকুলেশন করা সম্ভব হয় না। যে ব্যাংকের ক্যাপিটাল ২০০৪-৫ সালের দিকে ছিল ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা, সেটা এখন হাজার কোটি টাকা। দ্বিতীয়ত, পত্রপত্রিকা খুললেই নেতিবাচক খবর দেখা যায়। অনেক টকশোতে দেখি ব্যাংকের অবস্থা নিয়ে অনেক নেতিবাচক পর্যালোচনা হয়। এসব নেতিবাচক বিষয় ও সাইজ অব ক্যাপিটাল মিলিয়ে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম। যারা বড় বিনিয়োগকারী তারা সেখানে বিনিয়োগ করে রিটার্ন আসা করে। ক্যাপিটাল গেইন হবে না কিন্তু ডিভিডেন্ড ইল্ড এফডিআরের চেয়ে বেশি।
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে কী বলবেন?
মার্কেট ইন্টারমিডিয়েটরি হিসেবে আমরা সব সময়ই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করতে চাই। তাদের স্বার্থ এককভাবে রক্ষা করতে পারব না। তাদের সচেতন হতে হবে। জেনে-বুঝে বিনিয়োগ করতে হবে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে করা যাবে না। অনুমাননির্ভর, ফেসবুকনির্ভর তথ্য দিয়ে বিনিয়োগ করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিনিয়োগকারীর স্বার্থরক্ষা না হলে বাজারের ক্ষতি। অর্থনীতির ক্ষতি। বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমরা কাদের নিয়ে ব্যবসা করব? বিনিয়োগকারীর প্রাণ আমি মনে করি লভ্যাংশ। তাহলে সেই জায়গাতে সিক্যুয়েন্স ও কমিউনিকেশন ঠিক থাকে, তাহলে সঠিক সিদ্ধান্ত হবে। সে ঝুঁকিমুক্ত থাকবে। তাই আমরা সব সময়ই বিনিয়োগকারীদের বলি জেনে বুঝে বিনিয়োগ করুন।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
টানা দুই দিন পতনের পর ঢাকার পুঁজিবাজারে উত্থান হলেও সূচক কমেছে চট্টগ্রামে। তবে দুই বাজারেই বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৮ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়া ভিত্তিক ডিএসইএস ৫ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯০ কোম্পানির দাম বেড়েছে বেশিরভাগের। ২২১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১০৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই বেড়েছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ২১৩ কোম্পানির মধ্যে ১০৬ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ৭০ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ১৩ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩ কোম্পানির।
৩১ কোম্পানির ২৩ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড সর্বোচ্চ ১১ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৯৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৮৮ কোটি টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফুওয়াং ফুড। অন্যদিকে ৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইউসিবি ব্যাংক।
চট্টগ্রামে পতন
ঢাকায় উত্থান হলেও সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৭ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৭৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৬৯, কমেছে ৬৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ১৬ কোটি ১০ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার শমরিতা হাসপাতাল এবং ১০ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
পতন দিয়ে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে। দাম বেড়েছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৯ পয়েন্ট। তবে প্রধান সূচক বাড়লেও বাকি দুই সূচকের সুবিধা করতে পারেনি ঢাকার বাজার।
শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৪ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল ঊর্ধ্বমুখী। ১৮৯ কোম্পানির দর বাড়লেও কমেছে ১৬০টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৪৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই বেড়েছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২১৬ কোম্পানির মধ্যে ১২২ কোম্পানির দর বেড়েছে। দর কমেছে ৮০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারমূল্য।
দাম বেড়েছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দরে পতন হয়েছে ৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩ কোম্পানির।
২১ কোম্পানির ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। বেকন ফার্মা সর্বোচ্চ ২ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচক এবং কোম্পানির শেয়ারের দাম সন্তোষজনক হলেও লেনদেনে সুবিধা করতে পারেনি ডিএসই। সারাদিনে মোট ৩৬৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৬ কোটি টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার নর্দান ইসলামি ইনস্যুরেন্স। অন্যদিকে সাড়ে ৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে বে-লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
চট্টগ্রামেও উত্থান
ঢাকার মতো সূচক বেড়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮২ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৯১, কমেছে ৭১ এবং অপরিবর্তিত আছে ২০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২১ কোটি টাকার ওপরে।
৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফিনিক্স ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এবং ১০ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে রয়েছে গ্রিন ডেলটা ইনস্যুরেন্স পিএলসি।
গত দিনের দেড়শ পয়েন্ট সূচকের পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়েছে উত্থান দিয়ে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ২৫ এবং বাছাইকৃত ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। ৩৬৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৯ কোম্পানির এবং দাম অপরিবর্তিত আছে ১২ কোম্পানির শেয়ারের।
দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৫০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো লেনদেনের ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় আছে চট্টগ্রামের বাজারেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ৬৬ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ১২৭ কোম্পানির মধ্যে ৮০ কোম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ৩১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ১২ কোটি ৯০ লাখ টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেনের শুরুতেই পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রোববার (১৩ এপ্রিল) লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির শেয়ার ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৮ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১০৬ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২০৯ কোম্পানি এবং দর অপরিবর্তিত আছে ৭৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকার বাজারে মোট শেয়ার এবং ইউনিটের লেনদেন ছাড়িয়েছে ২০০ কোটি টাকা।
একইভাবে সূচকের পতন হয়েছে চট্টগ্রামের বাজারেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১২৭ কোম্পানির মধ্যে ৩৮ কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ৬৭ কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত আছে ২২ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে শেয়ার এবং ইউনিটের লেনদেন ৪ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।