শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

এখনো পিছিয়ে বিমা খাত

আপডেটেড
১ মার্চ, ২০২৩ ০৮:২৫
এ এস এম সাদ
প্রকাশিত
এ এস এম সাদ
প্রকাশিত : ১ মার্চ, ২০২৩ ০৮:১২

ব্যাংক, বিমা, পুঁজিবাজার- আর্থিক খাতের এই তিনটির মধ্যে বিমাই সবচেয়ে পিছিয়ে। জিডিপিতে (মোট দেশজ উৎপাদন) এ খাতের অবদান ১ শতাংশেরও কম। বিমা প্রিমিয়ামে মাথাপিছু ব্যয় মাত্র ৯ ডলার, যা সারা বিশ্বের নিম্নতম। যথাযথ নীতি প্রণয়নের অভাবে খাতটি থেকে ভালো কিছু বের করে আনতে পারছে না বাংলাদেশ।

৫২ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক বড় হয়েছে। সবশেষ হিসাবে জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ৩৯ লাখ ৭১ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। জিডিপির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাথাপিছু আয় ৬৮৬ ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৯৩ ডলার। কিন্তু জিডিপিতে বিমা খাতের অবদান ১ শতাংশ ছাড়াতে পারেনি। উল্টো এই খাতে অস্থিরতা বেড়েই চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি বিমা কোম্পানির আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। আর বিমা প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থ ফেরত না দেয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ফলে এ খাত নিয়ে জনমনে রয়েছে আস্থার সংকট।

আর এই হতাশাজনক চিত্র সামনে নিয়ে আজ ১ মার্চ বুধবার দেশব্যাপী পালন করা হচ্ছে বিমা দিবস।

ব্যাংক খাতে গত বছর ২০২২ সালে আমানত বেড়েছে ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা। আর একই সময় বিমায় প্রিমিয়াম আয় হয়েছে মাত্র ১৬ হাজার ৮১২ কোটি টাকা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘গত বছরে বিমা খাতে প্রিমিয়াম আয় অনেক কম হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায় বিমার প্রতি মানুষের আগ্রহ কত কম। আস্থা নেই বলে এ খাতে কেউ বিনিয়োগ করতে চায় না।’

বিমা অধিদপ্তর দিয়ে কাজ চলছিল না। ফলে এটিকে বিলুপ্ত করে ২০১১ সালে গঠন করা হলো বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থা- আইডিআরএ। কিন্তু এই আইডিআরএ দিয়ে এখন না হচ্ছে উন্নয়ন, না হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ।

আইডিআরএর সাবেক চেয়ারম্যান এম মোশাররফ হোসেনের কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। গত বছরের ১৪ জুন তাকে সরিয়ে দেয়া হয়। পরের দিন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব জয়নুল বারীকে আইডিআরএর চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। বর্তমানে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।

২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শেষ দিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে বিমা খাতকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতায় নিয়ে আসা হয়। তাতেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। নামে নিয়ন্ত্রক এই আইডিআরএ ১৪ বছর ধরেই চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।

দেশে ব্যাংক খাত ও পুঁজিবাজারের মতো বিমা খাতের বিকাশ তেমন হয়নি। ব্যাংক ও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করলে নির্দিষ্ট সময় পর মুনাফা পাওয়া যায়। তবে বিমাতে বিনিয়োগ করে মুনাফা পাওয়া গেলেও বিমার মূল উদ্দেশ্য ঝুঁকি মোকাবিলা করা।

সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি বিমা কোম্পানির আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। আর বিমা প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থ ফেরত না দেয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ফলে এ খাত নিয়ে জনমনে রয়েছে আস্থার সংকট।

বিমা খাতের আস্থার সংকট ও বড় রকমের অনিয়মের বিষয়টি আইডিআরএর বর্তমান চেয়ারম্যান জয়নুল বারীও স্বীকার করেছেন। গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘গ্রাহক অর্থ ফেরত পাচ্ছ না এটি সত্য। কয়েকটি কোম্পানিতে বড় রকমের আর্থিক কেলেঙ্কারি সংঘটিত হয়েছে। এ ছাড়া কোম্পানিগুলো সঠিকভাবে বিমার মডেল ঠিক করতে পারছে না।’

বিমা কোম্পানির সংখ্যা ও আয়

স্বাধীনতার ৫২ বছরে দেশে ব্যাংকের চেয়েও বিমা কোম্পানির সংখ্যা বেশি। ব্যাংক আছে ৬১টি, বিমা আছে ৮১টি। বর্তমানে ৩৫টি জীবন বিমা ও ৪৬টি সাধারণ বিমা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। জীবন বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংখ্যা ৩৫টি। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ১টি, বিদেশি ২টি ও দেশের বেসরকারি মালিকানায় ৩২টি। অন্যদিকে সাধারণ বিমা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪৬টি। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ১টি ও ৪৫টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

আইডিআরএ সূত্রে জানা যায়, ৩৫টি জীবন বিমা কোম্পানি ২০২২ সালে ১১ হাজার ৪০১ কোটি টাকার প্রিমিয়াম আয় করেছে। ২০২১ সালে ১০ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। ২০২০ সালে ৯ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা।

আবার সাধারণ বিমা কোম্পানি ২০২২ সালে ৫ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা। ২০২১ সালে ৪ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা এবং ২০২১ সালে ৩ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা আয় করেছে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘এসব বিমা প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতি তিন মাস অন্তর অডিট রিপোর্ট করে তা আইডিআরএকে জমা দিতে হবে। সঠিক খাতে বিনিয়োগ না করার জন্য রিটার্ন ফেরত আসে না বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর।’

আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের অবস্থান

বিশ্বব্যাপী জিডিপিতে বিমা খাতের অবস্থান নির্ধারণ করে সুইস রি- ইনস্টিটিউট। এই সংস্থাটির মতে জিডিপিতে ক্রমাগতভাবে কমছে বিমার অবদান। এই সংস্থার ২০২০ সালের শেষ জরিপ মতে, ভারতের ৪ দশমিক ২, শ্রীলংকার ১ দশমিক ২ শতাংশ, থাইল্যান্ডের ৫ দশমিক ৩ শতাংশ, চীনের ৪ দশমিক ২ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ার ১ দশমিক ৯ শতাংশ অবদান রয়েছে। সেই হিসাবে বাংলাদেশে জিডিপিতে বিমার অবদান শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। ২০০৯ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ। ২০১০ সালে বেড়ে দাঁড়ায় শূন্য দশমিক ৯৪ শতাংশ। এরপর ২০১১ সাল থেকেই জিডিপিতে ক্রমাগতভাবে কমছে বিমার অবদান।

যদিও আইডিআরএ বলছে, ২০২১ সালে এ অবদান শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।

গত ১৪ বছরে দেশের অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি হলেও জিডিপিতে বিমার অবদান ক্রমাগতভাবে কমছে।

সাম্প্রতিক সময়ে বিমা খাতে কেলেঙ্কারি

ফারইস্ট লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি ভয়াবহ রকমের দুর্নীতির কবলে পড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংক খাতে একসময় ভালো ব্যাংক হিসেবে পরিচিতি ছিল বেসিক ব্যাংক, তেমনি বিমা খাতে ছিল ফারইস্ট লাইফ ইনস্যুরেন্স। চেয়ারম্যান হিসেবে পাঁচ বছরের দায়িত্ব পালনকালে শেখ আবদুল হাই যেমন বেসিক ব্যাংককে ধ্বংসের কিনারে নিয়ে গেছেন, ফারইস্ট লাইফে একই পরিস্থিতি করেছেন কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম।

আর্থিক নিরীক্ষক সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোম্পানির অডিট রিপোর্টে উঠে আসে বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে জমি কেনা, বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা ফারইস্টের মুদারাবা টার্ম ডিপোজিট রিসিট (এমটিডিআর) বন্ধক রেখে পরিচালকদের ঋণ নেয়া এবং ক্ষতিকর বিনিয়োগ- মূলত এই তিন উপায়ে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে আসে। প্রায় কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার ও পলিসিহোল্ডাররা তাদের ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা হারিয়েছেন। বিপুলসংখ্যক পলিসি হোল্ডারের বিমা পলিসির মেয়াদ শেষ হলেও কোম্পানিটি এখন দাবি পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে।

পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি তাদের গ্রাহকদের প্রায় ২২ কোটি টাকা পরিশোধ করতে পারছে না। ১২৪ কোটি টাকা চারটি বেসরকারি কোম্পানির কাছ থেকে ঋণ নিলেও গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করতে পারছে না। প্রতিদিন কোম্পানিটির বাংলা মোটর কার্যালয়ে গ্রাহকেরা এসে ক্ষোভ জানাচ্ছেন।

সাধারণ বিমা কোম্পানি প্রগতি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা প্রিমিয়াম-ভ্যাট ফাঁকি দেয়। মাত্র ৯ লাখ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেয় আইডিআরএ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর প্রগতি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের বিরুদ্ধে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফাঁকির অভিযোগ পায়। পরে আইডিআরএকে দুই দফায় (গত বছরের এপ্রিল ও জুনে) চিঠি দিয়ে বিষয়টি তদন্তের অনুরোধ করে ভ্যাট গোয়েন্দা। এই বিপুল পরিমাণে ভ্যাট প্রিমিয়াম ফাঁকি দিলেও কার্যত সরকারকে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেছে।

প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বাস্তবে সম্পদ আছে ৩০০ কোটি টাকার। তবে গ্রাহকের বিমা দাবি প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা, যা শোধ করতে পারছে না কোম্পানিটি। প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির একাধিক উদ্যোক্তা-পরিচালকের বিরুদ্ধে স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিপুল ঋণ দিয়ে তা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ খালেকের বিরুদ্ধে কোম্পানিটি থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। অর্থ আত্মসাৎ-সংক্রান্ত একটি মামলায় এম এ খালেক গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। দুর্নীতির অন্য একটি মামলায় তিনি এখনো কারাগারে আছেন।

দুর্বল নিয়ন্ত্রক সংস্থা

আইডিআরএ বেসরকারি বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়মের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নিতে পারে না। বিমা কোম্পানিগুলো নানা রকমের অনিয়ম সংঘটিত করলেও আইডিআরএর দুর্বলতার কারণে ছাড় পাচ্ছে। এ সংস্থার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এসব বিমা প্রতিষ্ঠানের মালিক নানা সময়ে নানাভাবে আইডিআরএর ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ফলে আইডিআরএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসব বিমা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন না।

বিমা খাতকে গুরুত্ব দিতেই বিমা অধিদপ্তর বিলুপ্ত করে সরকার ২০১১ সালে গঠন করে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (আইডিআরএ)। কিন্তু সংস্থাটিতে নেই পর্যাপ্ত জনবল। ফলে ১১ বছর ধরে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি চলছে অসম্পূর্ণভাবে। সংস্থাটির মধ্যম পর্যায়ে প্রেষণে বিমা খাতের বাইরের লোক নিয়োগ দিয়ে কাজ চালানোর চেষ্টা করে আসছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আইডিআরএর দুর্বলতা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনিয়ম ও লুটপাটের পরও কার্যত কোনো কঠোর পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হয়নি আইডিআরএ।’


নন-লাইফ বিমাশিল্প বিকাশে ভাবনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আহমেদ সাইফুদ্দীন চৌধুরী

নন-লাইফ বিমাশিল্পের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করলে কিছু নিয়মনীতি সংশোধন করা একান্ত প্রয়োজন। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বিমা খাত জাতীয় অর্থনীতিতে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হচ্ছে না, যা ভবিষ্যৎ বিমাশিল্পের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

নন-লাইফ বিমাশিল্প বিকাশের জন্য যেসব সমস্যা

 নির্ধারিত এজেন্ট কমিশনের অতিরিক্ত কমিশন প্রদান।

 বিশ্ব বিমাবাজারের সঙ্গে আমাদের বিমার প্রিমিয়াম হার অনেক বেশি।

 নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ক্ষেত্রে এজেন্ট-প্রথা বিলুপ্ত করা প্রয়োজন।

 নন-লাইফ বিমা খাতে পণ্যের স্বল্পতা রয়েছে।

 নন-লাইফ বিমার ক্ষেত্র বা পরিধি বিস্তারের জন্য বিমাকৃত খাতগুলো চিহ্নিত করে তা বাধ্যতামূলক করা একান্ত প্রয়োজন।

 নন-লাইফ বিমা আইনের কিছু ধারা সংশোধনপূর্বক নন-লাইফ বিমাশিল্পের উন্নয়নের জন্য বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

ওপরের সমস্যা সমাধান এবং নন-লাইফ বিমাশিল্প বিকাশের জন্য কিছু ব্যক্তিগত মতামত -

 বেসরকারি খাতের নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স শিল্প বিকাশের জন্য সরকারি সম্পত্তির বিমা শুধু সাধারণ বিমা করপোরেশনের ওপর অর্পিত করা একান্ত প্রয়োজন। এতে বিমাক্ষেত্রে সুষ্ঠু শৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে।

 সরকারি সম্পত্তির বিমার প্রিমিয়াম অর্থাৎ ৫০ শতাংশ সব বেসরকারি নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মধ্যে সমহারে বিতরণ করার যে প্রচলন রয়েছে, তা বিলুপ্ত করা প্রয়োজন।

 নন-লাইফ বিমাশিল্পের সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশে নন-ট্যারিফ মার্কেট বিবেচনা করা সময়োপযোগী হবে। কারণ বাংলাদেশে ট্যারিফ মার্কেটের হার বিশ্ববাজার থেকে অনেক বেশি। যার ফলে অতিরিক্ত কমিশন প্রদানের প্রবণতার সৃষ্টি হয়। তা ছাড়া নন-ট্যারিফ মার্কেটের ফলে আমরা বিশ্বের বিমাসেবার সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক বিমাসেবা প্রদানে সক্ষম হব।

 পুনঃবীমার ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রচলিত আইন অর্থাৎ ৫০ শতাংশ বাধ্যতামূলক সাধারণ বিমা করপোরেশনের সঙ্গে পুনঃবীমা করতে হবে বাকি ৫০ শতাংশ ওভারসিস মার্কেটে করা যায়, তা হ্রাস করে ৩০ শতাংশ সাধারণ বিমা করপোরেশনের সঙ্গে এবং ৭০ শতাংশ ওভারসিস মার্কেটে করার বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে ৭০ শতাংশের ক্ষেত্রে বিকল্প থাকতে পারে যেকোনো কোম্পানি, তা সাধারণ বিমা করপোরেশন অথবা বিদেশি পুনঃবিমাকারীদের সঙ্গে পুনঃবিমা করতে পারবে।

 যেকোনো নন-লাইফ বিমার নতুন পণ্য যে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি উদ্ভাবন করবে তাকে প্রথমে বাজারজাত করার সুযোগ দিতে হবে এবং যদি সফলতা আসে, তবে বিমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ থেকে ওই কোম্পানি নতুন উদ্ভাবিত পণ্যের অনুমোদন নেবে। এতে যেমন নিয়মনীতির বাধ্যবাধকতা হ্রাস পাবে, তেমনই বিভিন্ন কোম্পানি নতুন পণ্য উদ্ভাবনে উৎসাহ পাবে।

মূলত বিমা দাবি যেকোনো নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পারিনর সক্ষমতার পরিমাপের জন্য প্রধান মানদণ্ড। তাই বর্তমানে প্রচলিত বিমা দাবি নিস্পত্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের তথ্যাদি ও নথিপত্র প্রদানের যে প্রক্রিয়া রয়েছে তা সহজীকরণ একান্ত প্রয়োজন এবং তা সম্ভব। নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিমাপত্র প্রসারে প্রিমিয়াম পরিশোধে কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। অর্থাৎ প্রিমিয়াম পরিশোধে পরবর্তী দিনে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকরণের যে আইন আছে, তা কিছুটা শিথিল করে ন্যূনতম এক মাস করা প্রয়োজন এবং এক মাসের পর যদি প্রিমিয়াম পরিশোধ না হয়, তবে প্রতিদিনের জন্য বিবেচনাযোগ্য জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে। এসব বিষয় পর্যালোচনা ও বিবেচনাপূর্বক যদি সুষ্ঠু ও বাস্তবসম্মত বিমা কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য নিয়মনীতি সংশোধনপূর্বক নন-লাইফ বিমাশিল্প পরিচালনায় সক্ষমতা আনতে পারি, তবে দৃঢ় বিশ্বাস নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ওপর গ্রাহকের আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং সেই সঙ্গে নন-লাইফ বিমাশিল্পের অভূতপূর্ব বিকাশ ঘটবে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকার প্রতিফলন ঘটবে।

লেখক: মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড


‘বিমা ভবন’ নির্মাণে জেবিসি ও আইডিআরের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার ৮০ মতিঝিলের জীবন বিমা ভবনের স্থানে ২০ তলা বিমা ভবন নির্মাণে জীবন বিমা করপোরেশন এবং বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

জীবন বিমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুল হক চৌধুরী এবং অপরপক্ষে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জয়নুল বারী নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন জীবন বিমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান আসাদুল ইসলাম।


সাধারণ বিমা করপোরেশনের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সাধারণ বিমা করপোরেশনের সুবর্ণজয়ন্তী স্বল্প পরিসরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গতকাল রোববার উদযাপন করা হয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু করা হয়। এরপর করপোরেশনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন এবং করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন করপোরেশনের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম ও সভার সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সৈয়দ বেলাল হোসেন।

বিষয়:

মেঘনা ব্যাংক ও গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মধ্যে চুক্তি সই

আপডেটেড ৫ মে, ২০২৩ ০৯:১২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স সম্প্রতি মেঘনা ব্যাংকের সঙ্গে গ্রুপ বিমা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

এ চুক্তির অধীন মেঘনা ব্যাংক সব কর্মচারী এবং তাদের ওপর নির্ভরশীলরা গার্ডিয়ান লাইফের বিমা সুরক্ষার ছায়ায় থাকবেন।

গার্ডিয়ান লাইফের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রকিবুল করিম এবং মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হোসাইন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

বিষয়:

প্রিমিয়াম আয়ের প্রকৃত চিত্র দিচ্ছে না বিমা কোম্পানিগুলো

আপডেটেড ২০ এপ্রিল, ২০২৩ ০৮:১৩
এ এস এম সাদ

বিমাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনসংক্রান্ত সব তথ্য দেয় বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে (আইডিআরএ)। এ জন্য ইউনিফাইড মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম (ইউএমপি) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে সংস্থাটি। তবে আইডিআরএ বলছে, জীবন বিমা কোম্পানিগুলো ইউএমপি ব্যবহার করলেও নন-লাইফ বা সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলো ইউএমপিতে প্রিমিয়াম আয়ের সঠিক তথ্য দিচ্ছে না।

ইউএমপি হলো এক ধরনের কেন্দ্রীয় ডাটাবেইস রেকর্ড সিস্টেম। এখানে কোম্পানিগুলোর বিমাসংক্রান্ত সব তথ্য পাওয়া যায়। বার্ষিক প্রিমিয়াম আয়, গ্রাহক সংখ্যা, পলিসির টাকা জমাসহ যাবতীয় তথ্য প্রদান করতে হয়। এই রেকর্ড বেইসড সিস্টেমটি চালু করেছে আইডিআরএ। মূল উদ্দেশ্য কোম্পানিগুলোর পরিচালনসংক্রান্ত সব কার্যক্রমের তথ্য একত্র করা। এতে তথ্য গোপন করতে পারে না কোম্পানিগুলো। গ্রাহক বিমার পলিসির টাকা জমা দিলে সেই তথ্য ইউএমপিতে চলে যায়। ফলে গ্রাহককে মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। কারণ, গ্রাহকের বিমা পলিসির টাকা জমা দেয়ার তথ্য রেকর্ড থাকে ইউএমপিতে। এতে গ্রাহকদের মধ্যেও এক ধরনের আস্থার জায়গা তৈরি হতো। ফলে সার্বিকভাবে বিমা খাতে সচ্ছতা ফিরে আসতে সহায়তা করছে।

খাতসংশ্লিষ্টতা বলছেন, এজেন্ট ও কোম্পানি নানা কায়দায় জাল রসিদ তৈরি করে গ্রাহককে বিপদে ফেলে। এতে গ্রাহক তার অর্থ ফেরত পান না। তবে গ্রাহক তার আইডি ও নিজের পরিচয়পত্র দিয়েই ইউএমপি থেকে রেকর্ড বের করতে পারবেন।

আইডিআরএর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ইউএমপিতে সাধারণ বিমা বা নন-লাইফ কোম্পানিগুলো সঠিক তথ্য দিচ্ছে না। প্রিমিয়াম আয়ের চিত্রের সঙ্গে বাস্তবে প্রিমিয়াম আয়ে গড়মিল রয়েছে। তিনি জানান, সাধারণ বিমা কোম্পানিতে প্রিমিয়াম আয়ের ৩০ শতাংশ কম দেখানো হয়। কারণ, এই কোম্পানিগুলোকে প্রিমিয়াম আয়ের ওপর ভ্যাট প্রদান করতে হয়। বাস্তবে প্রিমিয়াম দিলেও ইউএমপিতে প্রিমিয়ামের তথ্য না দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। কারণ, কোম্পানিগুলো যত প্রিমিয়াম আয় কম দেখাবে, ভ্যাট তত কম দিতে হবে। ফলে নন-লাইফ কোম্পানিগুলো প্রিমিয়াম আয়ের বাস্তব চিত্র ইউএমপিতে দিচ্ছে না। এতে বিপুল পরিমাণে ভ্যাট থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এসব বিমাপ্রতিষ্ঠানের শেয়ারধারীরা।

আইডিআরএর তথ্যে জানা যায়, ২০২২ সালের শেষে গ্রস প্রিমিয়ামের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৮১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। যার মধ্যে লাইফ বিমার গ্রস প্রিমিয়াম ১১ হাজার ৩৯৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আর নন-লাইফের পরিমাণ ৫ হাজার ৪১৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা, যা সংকটকালে দেশের ব্যাংকিং খাতে বড় তারল্যের জোগান দিয়েছে। লাইফ ও নন-লাইফ বিমা কোম্পানির অর্জিত প্রিমিয়ামের ওপর একই বছরে সরকার ১ হাজার ৩০৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকার ভ্যাট ও ট্যাক্স পেয়েছে। গত বছরে বিমা কোম্পানিগুলোতে লাইফ ৩০ লাখ ২৮ হাজার ৯৩০টি এবং নন-লাইফ ৩৩ হাজার ৫৩৮টি বিমা দাবি করা হয়। এর মধ্যে লাইফ ১৮ লাখ ৯২ হাজার ৯৯২টি এবং নন-লাইফ ১৯ হাজার ৮৭৭টি বিমা কোম্পানি দাবি নিষ্পত্তি করেছে।

ইউএমপি ব্যবহারের আরও কঠোর হওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের সাবেক মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ইউএমপিতে সব কোম্পানির তথ্য সংরক্ষণ করা অত্যন্ত ইতিবাচক একটা দিক। তবে আইডিআরএ সব বিমা কোম্পানির জন্য এটি ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে এর ব্যবহার করছে কি না, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রয়োজনে বিমার বাস্তব চিত্র যদি ইউএমপিতে যথাযথভাবে দেয়া হয়, সেটির জন্য আইডিআরএকে আরও কঠোর হতে হবে।

আর্থিক খাতের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল বিমা খাত কেন, সস্প্রতি সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইডিআরএর চেয়ারম্যান জয়নুল বারী বলেন, ‘এর কারণ কোম্পানি ও আইডিআরএর দোষ। আইডিআরএ প্রতিষ্ঠা হয়েছে ২০১১ সালে। নতুন একটা প্রতিষ্ঠান দেশে হলে তার জনবল, আইন তৈরি করা হয়। এ জন্য সময় লাগে। আমাদের আগে সক্ষমতা ছিল না। এখন আমরা নতুন লোকবল নিয়োগ দিয়েছি। তারা ট্রেনিং করছেন। সেখান থেকে আমরা ভালো অফিসার পাব। নতুন প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই যে দুর্বলতা ছিল তা স্বাভাবিক। সময় বেশি লেগেছে, এই দায় অবশ্যই আমাদের।’

জানা যায়, গত বছর বিভিন্ন কোম্পানিতে উপস্থাপিত ৩০ লাখ ৬২ হাজার ৪৬৮টি বিমা দাবির মধ্যে নিষ্পত্তি করা হয়েছে ১৯ লাখ ১২ হাজার ৮৬৯টির। বাকি ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৯৯টির নিষ্পত্তি করা হয়নি। নিষ্পত্তি করার হার ৬২.৪৬ শতাংশ। আর নিষ্পত্তি না করার হার ৩৭.৫৪ শতাংশ।


ফুডপ্যান্ডার কর্মীরা পাবেন মেটলাইফের বিমা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কর্মীদের বিমা সুবিধা প্রদানে মেটলাইফকে বেছে নিয়েছে অনলাইন ফুড ও গ্রোসারি ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম ফুডপ্যান্ডা। এ লক্ষে সম্প্রতি ফুডপ্যান্ডা ও মেটলাইফ বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেটলাইফের চিফ করপোরেট বিজনেস অফিসার নাফিস আখতার আহমেদ, ডিরেক্টর মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, ফুডপ্যান্ডার হেড অব হিউম্যান রিসোর্সেস এইচ এম সাইফ, ডিরেক্টর অব ফাইন্যান্স জামাল ইউসুফ জুবেরি প্রমুখ।


ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবসা উন্নয়ন সম্মেলন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ‘ব্যবসা উন্নয়ন সম্মেলন-২০২৩’ রাজধানীর তোপখানা রোডে ফারইস্ট টাওয়ারে গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন।

বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিচালনা পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান ড. ইব্রাহীম হোসেন খান এবং পরিচালক জহুরুল ইসলাম চৌধুরী। কোম্পানির ব্যবস্থপনা পরিচালক আপেল মাহমুদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন।


বায়রা লাইফের বারোটা

আপডেটেড ১২ এপ্রিল, ২০২৩ ১৩:২৬
এ এস এম সাদ

সুজয় দাস একজন ব্যবসায়ী। ২০১০ সালে তিনি বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে একটি বিমা করেছিলেন। প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে এভাবে প্রায় দশ বছর দিয়েছেন। কিন্তু বিমার প্রিমিয়ামের মেয়াদ দুই বছর আগে পূর্ণ হলেও তিনি টাকা ফেরত পাননি। দুই বছর ধরে বায়রা লাইফ আশ্বাস দিয়ে গেলেও টাকা ফেরত দেয়নি।

সুজয় দাস দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘দুই বছর ধরে আমাকে টাকা দেয়া হবে বলে জানাচ্ছে। তবে এখনো টাকা পাইনি আমি। কবে টাকা দেবে সে বিষয়েও কিছু জানায়নি।’

এই রকম আরও কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৩-৪ বছর আগে বিমা পলিসির মেয়াদ পূর্ণ হয়ে গেলেও গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দিচ্ছেনা বায়রা।

সৌদি প্রবাসী আব্দুল করিম বায়রা লাইফে বিমা করেছিলেন। সাত মাস আগে তিনি মারা গেছেন। তার পরিবারকে বিমা দাবির অর্থ ফেরত দিচ্ছেনা বায়রা লাইফ।

বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ৬০ কোটি টাকা বিমা দাবি অপরিশোধিত রয়েছে। এ ছাড়া আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্সকে নতুন করে গ্রাহকদের ৫৮ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। তবে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কোম্পানিটির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। ফলে গ্রাহকের টাকা পরিশোধে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

সম্প্রতি বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সঙ্গে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ বিষয়গুলো উঠে আসে। তাতে দেখা যায়, গত দশ বছরে কোম্পানিটির নিট প্রিমিয়াম আয় ক্রমাগতভাবে কমেছে। ফলে দুর্বল হয়েছে কোম্পানিটির সার্বিক আর্থিক পরিস্থিতি। ২০১৩ সালে কোম্পানির নিট প্রিমিয়াম আয় ছিল ২৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। দশ বছর পর ২০২২ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। কোম্পানিটির দশ বছরের প্রিমিয়াম আয় পর্যালোচনা করলে দেখা যায় অস্বাভাবিকভাবে কমেছে কোম্পানির নিট প্রিমিয়াম আয়। গ্রাহক প্রিমিয়াম যা জমা দিচ্ছেন, তার সঙ্গে কোম্পানির মূল হিসাবের মিল নেই। ফলে গ্রাহককেও বিমা দাবি পরিশোধ করতে পারছে না কোম্পানিটি। আইডিআরএ বলছে গ্রাহক কোম্পানিতে প্রিমিয়াম জমা দিলেও তারা সেই টাকা পাচ্ছেন না। ফলে দুর্নীতির কারণে গ্রাহকের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে গ্রাহকদের ৫৮ কোটি টাকা বিমা দাবি পরিশোধ করতে হবে।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ টাকা পরিশোধ করতে সক্ষম হবে না বিমা প্রতিষ্ঠানটি। কারণ গ্রাহকের প্রিমিয়ামের অর্থ নিয়ে নয়ছয় করা হয়েছে। কোম্পানিটির প্রিমিয়াম কমেছে। আর প্রিমিয়াম আয় না হলে কোম্পানিটি এ বিশাল বিমা দাবি পরিশোধ করতেও সক্ষম হবে না।

লাইফ ফান্ড ও বিনিয়োগে অসামঞ্জস্য

আইডিআরএর সূত্র জানায়, কোম্পানির মোট সম্পদের পরিমাণ ১০৫ কোটি টাকা। লাইফ ফান্ডের পরিমাণ ৫২ কোটি টাকা এবং বিনিয়োগের পরিমাণ ১৭.২৬ কোটি টাকা। কোম্পানির সম্পদের অর্ধেক লাইফ ফান্ড, আবার লাইফ ফান্ডের তিন ভাগের ১ ভাগ বিনিয়োগ করা আছে। সুতরাং লাইফ ফান্ড ও বিনিয়োগের মধ্যে অনেক অসামঞ্জস্য পেয়েছে আইডিআরএ। বিমা আইন ২০১০ অনুযায়ী কোম্পানিতে প্রতি বছর বার্ষিক হিসাব প্রতিবেদন প্রস্তুত করার বিধান রয়েছে। তবে কোম্পানিটি ২০১৮ সালে সর্বশেষ হিসাব প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছিল। পরবর্তীকালে আর কোনো হিসাব প্রতিবেদন প্রস্তুত করেনি। বিমা আইন ২০১০-এর ৩০ ধারা অনুযায়ী কোম্পানিতে প্রতি বছর দায় মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পাদন করে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করার বিধান রয়েছে। কিন্তু কোম্পানি ২০১৮ সালে সর্বশেষ দায়মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পাদন করেছিল এবং এর পরবর্তীতে এ-সংক্রান্ত হিসাব প্রতিবেদন প্রস্তুত করেনি। এ ছাড়া ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় জমি কিনলেও নানা রকমের জটিলতা তৈরি হয়েছে। বাজার দরের চেয়ে কাগজপত্রে অতিরিক্ত দাম দেখিয়ে কেনা হয়েছিল এসব জমি।

অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়

গত দশ বছরের পরিচালনা ব্যয় পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত খরচ করেছে। ফলে গ্রাহকের অর্থ আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে। আইডিআরএর একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এই অতিরিক্ত ব্যয় কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থাকে আরও বেশি দুর্বল করে ফেলেছে। ব্যবস্থাপনা ব্যয়ে নানা জায়গায় অতিরিক্ত খরচ করেছে কোম্পানিটি। আইডিআরএ আইনের কারণে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ কর‌তে সক্ষম হয় না। তবে এই কোম্পানির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। তাই আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কোম্পানিটির জমি বিক্রি করে গ্রাহকের অর্থ জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে আইডিআরএ।

নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ১৬ বছর পার হলেও কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি। প্রতিবছর অ্যাকচ্যুয়ারিয়াল মূল্যায়ন করার নিয়ম থাকলেও কোম্পানিটি তা করছে না এবং তা না করার দায়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা যে জরিমানা আরোপ করেছে, সেটিও পরিশোধ করছে না ২০০০ সালে লাইসেন্স পাওয়া বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।

যা বলছে কোম্পানিটি

অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হাসান খান বলেন, ‘জমিজমা বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে সেখান থেকে অর্থ ফেরত পাচ্ছি। আবার বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ রয়েছে। সেখান থেকেও অর্থ ফেরত পাচ্ছি। আশা করি ব্যবসা ভালো থাকলে গ্রাহকের সব টাকা ফেরত দেয়া সম্ভব হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে মার্চ পর্যন্ত ২ কোটি টাকা বিমা দাবি পরিশোধ করতে সক্ষম হয়েছি। ফলে আশা করছি সব অর্থ পরিশোধ করব।’

যা বলছে আইডিআরএ

এ বিষয়ে আইডিআরএর চেয়ারম্যান জয়নাল বারীকে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ধরেননি। তবে মুখপাত্র ও পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বায়রার পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে আইডিআরএর এক সভা হয়েছে। সেই সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে বায়রা লাইফ সম্পদ বিক্রি করে বিমা দাবি পরিশোধ করবে।’


গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও জেন হেলথ৩৬০-এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং জেন হেলথ৩৬০-এর মধ্যে সম্প্রতি স্ট্র্যাটিজিক পার্টনারশিপ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিইও শেখ রকিবুল করিম এবং জেন হেলথ৩৬০-এর চেয়ারম্যান এস এম আলতাফ হোসেন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফসিহুল মোস্তফা, অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট আরিফুল হক, জেন হেলথ৩৬০-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ নাজমুস সাকিব প্রমুখ।


সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ও আদর্শ প্রাণীসেবার মধ্যে চুক্তি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গত ৯ এপ্রিল সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ও আদর্শ প্রাণীসেবার মধ্যে গবাদিপশু পালনে ঝুঁকি নিরসন ও খামারিদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শফিক শামীম এবং আদর্শ প্রাণীসেবার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিদা হক নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে উভয় কোম্পানির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।


স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জেবিসির শ্রদ্ধা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জীবন বিমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান আসাদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।


‘রাতারাতি বিমা খাতের সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়’

বুধবার ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) নিজস্ব কার্যালয়ে ‘সিএমজেএফ টক’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৫ মার্চ, ২০২৩ ১৬:০৩
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেছেন, কোনো কাজ যেমন হুটহাট করা সম্ভব নয়, ঠিক তেমনি রাতারাতি বিমা খাতের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। আপনারা দেখবেন আমরা দুর্নীতি করছি কিনা। আমরা সমস্যা সমাধানে কাজ করছি কিনা। সবকিছু দেখে আলোচনা-সমালোচনা করবেন। তবে যৌক্তিক আলোচনা বা সমালোচনাকে পছন্দ করি। আমরা যেমন বিমা খাতের উন্নয়নে কাজ করছি, আপনারাও সে কাজে সহযোগিতা করবেন বলে আশা করছি।

বুধবার ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) নিজস্ব কার্যালয়ে ‘সিএমজেএফ টক’ অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলেন তিনি।

জয়নুল বারী বলেন, ‘সেল কমিটির কাছে প্রচুর অভিযোগ আসে। সরাসরি কিংবা মেইল বা অন্য মাধ্যমে। এই অভিযোগগুলো নিয়ে আমরা কাজ শুরু করছি। প্রয়োজনে কোম্পানির সম্পত্তি বিক্রি করে হলেও এসব বিমা দাবি পরিশোধের জন্য কাজ করছি। এতদিন আমরা কমপ্লায়েন্স না মানলে শুধু কোম্পানিকে জরিমানা করেছি। এখন ব্যক্তিকেও অর্থাৎ অভিযুক্ত কর্মকর্তাকেও জরিমানা করা হবে। এসব সমস্যা সমাধানে আমাদের বেশ কিছু আইন প্রণয়ন করেছি, আরও কিছু আইন প্রণয়নে কাজ করছি।

তিনি বলেন, কিছু কোম্পানি অতিরিক্ত টাকা খরচ করেছে। কেউ ম্যানেজমেন্ট খরচ বেশি করেছে। কেউ জমি কিনেছে বেশি দামে, এসব জমি বিক্রি করতে গেলে দেখা যায়, কেনা দামের কমে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ জন্য চাইলেও বিক্রি করা যাচ্ছে না। তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যৌক্তিক দামে বিক্রি করতে, তাহলে গ্রাহকের টাকাগুলো পরিশোধে বড় ভূমিকা রাখবে।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, আমরা ইতিমধ্যে সাতটি কোম্পানির বোর্ডকে ডেকেছি এবং তাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। তাদের প্রিমিয়াম কেমন এবং কী ধরনের সম্পদ আছে, তা দেখেছি।

তিনি আরও বলেন, বিমা কোম্পানিগুলো যে পরিমাণ প্রিমিয়াম পায়, সেটা কোথায় খরচ করে এবং কোথায় বিনিয়োগ করে এসব তথ্যগুলো আমরা দেখি। প্রতি মাসে আমরা এসব প্রতিবেদনগুলোকে পর্যবেক্ষণ করি। এর ধারাবাহিকতায় তাদের সঠিক গাইডলাইন দিয়ে থাকি। কোম্পানিগুলো সবচেয়ে বেশি অনিয়ম করে জমি ক্রয়ের সময়। এ জন্য আমরা এখন জমি ক্রয়ের অনুমতি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দিই না।

বিমা খাতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কোনটা বলে মনে করেন- এমন প্রশ্নে জয়নুল বারী বলেন, নন-কমপ্লায়েন্স বড় চ্যালেঞ্জ। কোম্পানির অনিয়ম বন্ধ হলেই অনেক কিছু সমাধান হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, ডেল্টা লাইফের অবস্থা পেয়েছি খুবই খারাপ। আইন অনুযায়ী দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে হয়তো বোর্ড ভেঙে দেয়া। অথবা কোম্পানি বন্ধ করে দেয়া যায়। কিন্তু আমরা ভেবে দেখলাম কোম্পানিটি ভালো ছিল, তাই চেষ্টা করেছি কীভাবে পুনরায় দাঁড় করানো যায়। সেই কাজ শুরু করলাম। এরপর আদালত থেকে একটা রায় এল। সব মিলে তাদের স্টোকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা কিছু শর্ত দিয়ে আদালতে পাঠালাম। আদালতের রায়ের পর তাদের কার্যক্রমের বিষয়ে অনুমোদন করেছি।

বিমা খাতের প্রচারণার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কিন্তু কত টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে পারবে সেটা বলা নেই। ব্যয়ের পরিমাণ কত হতে পারে এ বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, জানতে চাইলে জয়নুল বারী বলেন, বিমা খাত ছড়িয়ে দেয়ার জন্য নতুন নতুন জায়গায় যেতে হবে। আমরা ইতিমধ্যে নন-লাইফ বিমা কোম্পানির সঙ্গে একটা বৈঠক করেছি এবং তাদের কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছি। প্রচারণায় গুরুত্ব রেখে বিমা খাতের ব্যাপ্তি বাড়াতে। এসব কাজে যেন অতিরিক্ত খরচ না হয় সেটি আমরা দেখব।

সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি জিয়াউর রহমান।

বিষয়:

সবার জন্য বিমা নিশ্চিতে কাজ করছে গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স

শেখ রকিবুল করিম
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রকিবুল করিম বলেছেন, ‘এক দশক ধরে বাংলাদেশ বিভিন্ন খাতে অভূতপূর্ব পরিবর্তন দেখেছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিবেচনায় এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের গড় প্রবৃদ্ধি বেশ প্রশংসনীয়। কিন্তু এ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির তুলনায় দেশের বিমা খাতের উন্নয়ন আশানুপাত হয়নি। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় বাংলাদেশের বিমা খাতের সমৃদ্ধি প্রত্যাশিত হারের অনেক কম।

বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের মতে, ২০২১ সালে বাংলাদেশের বিমা খাতের বিস্তৃতি দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ০.৫ শতাংশ ছিল, যা এশিয়ার অন্যান্য উদীয়মান দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে বিগত কয়েক বছরে বিমা নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ও আধুনিক মনোভাবের বেশকিছু বেসরকারি বিমা প্রতিষ্ঠান একত্র হয়ে কাজ করছে দেশের বিমা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে।’

শেখ রকিবুল করিম বলেন, ‘বর্তমানে আমরা বিমা খাতের যা-ই ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করছি, তার নেপথ্যে যারা কাজ করে যাচ্ছে তাদের মধ্যে গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড অন্যতম। সবার জন্য বিমা নিশ্চিতের লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি শুরু থেকেই এবং এখন পর্যন্ত ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে আমাদের বিমা সেবার আওতায় নিয়ে এসেছি। ইন্স্যুরেন্স সেবাকে আমরা এতটাই নতুনত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করছি, যা এক দশক আগেও কেউ কল্পনা করেনি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের বিমা খাতে যাত্রা শুরু করা এ কোম্পানির অন্যতম তিনটি দর্শন হলো ‘সবার জন্য বিমা’, ‘সুরক্ষা ও নির্ভরতার অঙ্গীকার’ এবং ‘পরিচালনা নিয়ন্ত্রণ ও গ্রাহকসেবা।’

তিনি বলেন, ‘বিমা ব্যবসা প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার রক্ষার ব্যবসা। এর উদ্দেশ্যই হলো সবার দুয়ারে সেবা পৌঁছে দেয়া। আর এ জন্যই গার্ডিয়ান লাইফের স্লোগান ‘সবার জন্য বিমা।’ এই ভিশন বাস্তবায়নে আমরা পণ্যের উদ্ভাবন, প্রক্রিয়াকরণ, পরিষেবা ও ব্যবসার মডেল নিয়ে কাজ করছি। কোম্পানিটির চার শতাধিক করপোরেট গ্রাহক রয়েছে।

গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘বর্তমানে বিমা খাতে যে পরিবর্তন ও পরিমার্জন হয়েছে তার নেতৃত্ব দিচ্ছে গার্ডিয়ান লাইফ। পাঁচ বছরে কোম্পানিটির যৌগিক বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার বা সিএজিআর ব্যাপক বেড়েছে। লাইফ ফান্ড বেড়েছে ২৫ শতাংশ, সম্পদ ৩৩ শতাংশ এবং বিনিয়োগ বেড়েছে ৩৬ শতাংশ।

তিনি বলেন, পেশাদারি মনোভাব বজায় রেখে আমরা আমাদের দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলো ধারাবাহিকভাবে পূরণ করে আসছি। আমরা মাত্র ৯ বছরে ১৩০০ কোটি টাকার অধিক বিমা দাবি পরিশোধ করেছি, যা নির্ভরযোগ্যতা এবং বিশ্বস্ততার এক অনন্য নিদর্শন। আমাদের বিমা দাবি পরিশোধের হার ৯৮ শতাংশ, যা বাংলাদেশের ইন্স্যুরেন্স ইন্ডাস্ট্রিতে সব থেকে বেশি। আমাদের সব বিমা দাবি পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হয় এবং ৯০ শতাংশ বিমা দাবি মাত্র তিন কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হয়।


banner close