বাংলাদেশের পুঁজিবাজার অনেক খারাপ সময় পার করছে। ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারীরই ক্ষতি হয়ে গেছে। অনেক ভালো কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে গেছে। সে বিবেচনায় সামনের দিনগুলোতে বাজার ভালো হবে বলে মনে হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার দৈনিক বাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে শাকিল রিজভী স্টক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী এ আশার কথা শুনিয়েছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন দৈনিক বাংলার প্রতিবেদক ফারহান ফেরদৌস।
কেমন চলছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার?
সত্যি কথা বলতে কী বাংলাদেশের পুঁজিবাজার অনেক খারাপ সময় পার করছে। ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারীরই অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। অনেক ভালো কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে তলানিতে নেমে গেছে। অতীত ইতিহাস বলে, সামনের দিনগুলোতে বাজার ভালো হবে। কেননা, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার যা খারাপ হওয়ার তা হয়েই গেছে। এখন একটু ভালোর দিকে যাবে বলে মনে হচ্ছে। গত সপ্তাহে তার কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া গেছে; পাঁচ দিনের সপ্তাহে চার দিনেই মূল্যসূচক ও লেনদেন বেড়েছে। তবে বিনিয়োগকারীদের মনে রাখতে হবে যে, তিনি যদি খারাপ কোম্পানির শেয়ার কিনে থাকেন, তাহলে কিন্তু দাম বাড়ার চিন্তা বাদ দিয়ে দিতে হবে। আর সেই কোম্পানিটি যদি ভালো হয়, সেই কোম্পানি অবশ্যই ভালো করবে, তার শেয়ারের দাম বাড়ার যৌক্তিকতা আছে। অনেক ভালো কোম্পানির দাম এখন কম আছে। সেই হিসাবে সামনে বাজার ভালো হওয়ার সুযোগ আছে বলে আমি মনে কির।
কেন পুঁজিবাজার এতটা খারাপ হলো? আশার কি কিছু নেই?
একটা বিষয় কিন্তু আমাদের সবার বিবেচনায় রাখতে হবে। দুই-আড়াই বছরের করোনাভাইরাস মহামারির পর এক বছরের বেশি সময়ের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় তছনছ হয়ে গেছে বিশ্ব অর্থনীতি, যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে আমাদের পুঁজিবাজার ভালো যাবে সেটা আমরা প্রত্যাশা করিনি। তবে এটাও ঠিক যে, এত খারাপ অবস্থা হবে, তাও আমরা ভাবিনি।
প্রথম বিশ্বের অর্থনীতি ধাক্কা খেয়েছে করোনাভাইরাসের কারণে। তার পরপরই শুরু হয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এর একটি বিরাট প্রভাব সারা পৃথিবীতে এসেছে, যার প্রভাব আমাদের দেশেও এসেছে; বেশ ভালোভাবেই এসেছে। কোনো কোনো দেশে পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। কোথাও তিন গুণ হয়েছে। বিশ্বের সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আবার নতুন করে সবকিছু গঠন হবে। করোনাভাইরাস তো শেষ। এখন যুদ্ধ যদি শেষ হয়ে যায়, তাহলে সারা পৃথিবী ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে। সবকিছুই নির্ভর করছে আসলে যুদ্ধের ওপর।
মন্দার ভেতরেও কিছু বিষয় কিন্তু মানুষের লাগে। যত মন্দাই হোক, কাপড়, খাদ্য লাগে। বাংলাদেশ কাপড় রপ্তানি করে। যদি আমরা গার্মেন্টস, ডাইং কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুৎ দিয়ে রাখতে পারি, তাহলে কিন্তু এই খাতে খুব একটা সমস্যা হবে না। রপ্তানিটাকে আমাদের শক্তিশালী করতে হবে। অপচয় বন্ধ করতে হবে। বেদরকারি বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে। তাহলে মনে হয় বাংলাদেশ এই চ্যালেঞ্জ পার হয়ে যাবে। বাংলাদেশের শক্তি বেসিক গার্মেন্টস এবং রেমিট্যান্স।
অপ্রয়োজনীয় আমদানি যদি আমরা বন্ধ রাখতে পারি, তাহলে কিন্তু আমাদের ডলারের ঘাটতিটা থাকবে না। যদি বেসিক ডিমান্ড বাংলাদেশ মেটাতে পারে আর বাংলাদেশের কর্মীরা তো বেসিক কাজটাই করে। আমরা যে রপ্তানি করি তার ৯০ শতাংশ কিন্তু বেসিক গার্মেন্টস। ১০ শতাংশ আছে যেটা হাইএন্ডের গার্মেন্টস। সুতরাং চ্যালেঞ্জ তো অবশ্যই আছে, কিন্তু আমি মনে করি আমরা সবাই মিলে যদি সতর্কতার সঙ্গে এই চ্যালেঞ্জটা পার হতে পারি, তাহলে সামনে একটি সুন্দর সময় আছে।
আমরা যদি অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখি, পৃথিবীতে ১৯২০ সালে অনেক রকম সমস্যা গিয়েছে। তারপর প্রতিটি দেশে বিরাট আকারে উত্থান হয়েছে। জাপানে, কোরিয়ায়, ভিয়েতনামে, আমরিকায় দেখা গেছে ১৯২৯ সালে যখন ব্ল্যাক মানডে হয়েছিল, তার পরে অনেক রকম চ্যালেঞ্জ পার করে তারা কিন্তু একটি বিশাল অর্থনীতিতে চলে গেছে। সুতরাং বাংলাদেশের পটেনশিয়াল আছে, আমি আশা করি এই চ্যালেঞ্জটা আমরা মোকাবিলা করতে পারব।
আমরা সবাই মিলে যদি সতর্কতার সঙ্গে এই চ্যালেঞ্জটা পার হতে পারি, তাহলে সামনে একটি সুন্দর সময় আছে। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যে অন্তর্নিহিত শক্তি আছে, সেই শক্তি দিয়ে আমরা যেভাবে মহামারি করোনা মোকাবিলা করেছি, ঠিক একইভাবে যুদ্ধের ধাক্কাও মোকাবিলা করে সুদিন ছিনিয়ে আনব। তখন পুঁজিবাজারও ভালো হবে।
আপনি ভালো কোম্পানির কথা বলছেন। বিনিয়োগকারীরা এই ভালো কোম্পানি চিনবে কীভাবে?
কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করার সময় আমি প্রথমে দেখি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে কে আছে, তার অডিটর কে এবং কোম্পানিটি যে খাতে আছে সে খাতের বর্তমান অবস্থা এবং সামনে কতটুকু প্রবৃদ্ধি হবে। তারপর আমি দেখি বাজারে অন্য শেয়ারের তুলনায় ওই শেয়ারটি কম দামে বা অনেক দিন ধরে একটা দামে বিক্রি হচ্ছে কি না। তার সঙ্গে কেম্পানির ব্যবসা যদি ভালো হয়, ভালো লোক দিয়ে পরিচালিত হয়, তখন সেই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে। কোম্পানির ব্যবসা ভালো বলতে এর তৈরি পণ্যের বিক্রি ও কোম্পানির মুনাফায় প্রবৃদ্ধি এবং উৎপাদন বাড়ানোর নতুন পরিকল্পনা বোঝানো হয়।
ভালো শেয়ার কেনার পরে কী করতে হবে?
ভালো শেয়ার কেনার পরে যদি দাম কমেও যায়, তাহলেও ধরে রাখতে হবে। বড় ব্যাপার হচ্ছে, আমি দেখি আমি যেই কোম্পানির শেয়ার কিনছি, সেই কোম্পানির লোকগুলো আমার চেয়ে ভালো ব্যবস্থাপক কি না, অর্থাৎ আমি যদি কোনো ব্যবসা শুরু করি আমি যে সফলতা পাব, এই কোম্পানির ব্যবস্থাপকরা এর চেয়ে ভালো করতে পারবে কি না? একজন ভালো বিনিয়োগকারীকে প্রথমে ভালো কোম্পানি বাছাই করতে হবে। ভালো কোম্পানি মানে যাদের বিশ্বাসযোগ্যতা আছে, যার আর্থিক বিবরণীর তথ্য-উপাত্তগুলো বিশ্বাস করা যায়। সেগুলো ভালো কোম্পানি, যেগুলোর শেয়ারের দাম ও মুনাফা যুক্তিসঙ্গত এবং শেয়ারের মূল্য আয়ের অনুপাতও (পিই রেশিও) যুক্তিসঙ্গত। বর্তমান প্রবৃদ্ধি ভালো ও ভবিষ্যতে ভালো প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে এমন কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগকারীদের খুঁজে বের করতে হবে।
কোম্পানি বাছাইয়ে ভুল হলে কী করতে হবে?
কোম্পানি বাছাইয়ে ভুল হলে, বুঝার সঙ্গে সঙ্গে ওই শেয়ার বিক্রির করে দিতে হবে। সেটা কিন্তু এমন না যে ১০ টাকা শেয়ারের দাম কমল মানে কোম্পানিটা খারাপ। বিষয়টা হচ্ছে- কেন এমন খবর এল, যাতে বোঝা গেল যে কোম্পানিটির মুনাফা সামনে কমে যাবে। তখই শেয়ার ছেড়ে দিতে হবে।
কীভাবে মুনাফা নিতে হবে?
কম সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি মুনাফা নিয়ে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ। যেমন- আমি ৫০ টাকা করে কোনো কোম্পানির এক হাজার শেয়ার কিনলাম। আমার আশা বছর শেষে ৩০ শতাংশ লাভ করব। কিন্তু এক মাস পরে কোম্পানির শেয়ারের দাম হয়ে গেল ১০০ টাকা। আমি যদি এখন ৫০০ শেয়ার ছেড়ে দিই তাহলে আমার সমস্ত বিনিয়োগ কিন্তু উঠে আসল, বাকিটা পুরাটা লাভ হলো। একজন বিনিয়োগকারীকে এই বিষয়টি সব সময় মনে রেখে মুনাফা তুলে নিতে হবে।
পুঁজিবাজার কি আসলেও লাভজনক?
পুঁজিবাজারে ঝুঁকি থাকলেও সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করে ব্যাংকের স্থায়ী আমানতের সুদের হারের চেয়ে বেশি লাভ করা যায়। যেমন- অনেক ভালো কোম্পানির দাম এখন কম আছে। এই শেয়ারগুলো কিনলে, একটু বেশি সময় ধরে রেখে দিলে ভালো মুনাফা পাওয়ার সুযোগ আছে। যেকোনো কারণে দাম যদি খুব একটা নাও বাড়ে, তারপরও বছর শেষে কোম্পানিগুলো যে লভ্যাংশ দেবে, তা থেকেও একটা মোটামুটি ভালো লাভ পাওয়া যাবে। আমি মনে করি, সব সময় একজন বিনিয়োগকারীকে এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে।
পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকারের কি কিছু করার আছে বলে আপনি মনে করেন?
অনেক কাজ কিন্তু ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) করে ফেলেছে। বড় দাগে একটি করণীয় আছে ঋণের ব্যাপারে। ধাপে ধাপে বড় ঋণগুলো পুঁজিবাজারমুখী করতে হবে। তাতে ব্যাংক বাঁচবে, পুঁজিবাজারও বাঁচবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিন্তু বার বার বড় বড় প্রকল্পের অর্থ পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহের কথা বলছেন, কিন্তু সে ক্ষেত্রে আমরা ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের মধ্যে খুব বেশি মনোযোগ লক্ষ করছি না। এ বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারক, বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আরও বেশি কাজ করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি।
একটা বিষয় কিন্তু আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে, একটি ভালো দেশের জন্য, ভালো অর্থনীতির জন্য একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার কিন্তু অবশ্যই প্রয়োজন। আমরা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি, আরও এগিয়ে যেতে চাইলে কিন্তু পুঁজিবাজারকে সঙ্গে নিয়েই এগোতে হবে। আমার মনে হয়, সরকারের নীতিনির্ধারকরা এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন।
এক বছরের বেশি সময় ধরে ডলারের বাজার অস্থির। ডলারের দাম পুঁজিবাজারে কী ধরনের প্রভাব ফেলছে?
ডলারের বিপরীতে টাকার মানের বেশ অবমূল্যায়ন হয়েছে। হিসাব করলে দেখা যাবে, এক বছরে প্রায় ২৫ শতাংশের মতো টাকার মান কমেছে। এর ফলে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে ফেলেছে। তারা আগে বিক্রি করে ফেলেছে, যাতে তারা বেশি ডলার পায়। সেই কারণে যদি মুদ্রার মান স্ট্যাবল বা স্থিতিশীল না হয়, তাহলে বিদেশি বিনিয়োগ আসে না। কারণ আজকে যে এক লাখ ডলার আনবে, সেটাতে যদি এক কোটি টাকা পাওয়া যায় আর টাকার মান কমে গেলে ১ কোটি ১০ লাখ পাবে, মানে বেশি পাবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা অপেক্ষা করে যে, কখন বিনিময় হারটা স্থিতিশীল হয়। সে কারণেই বেশ কিছুদিন ধরে কিন্তু আমাদের পুঁজিবাজারে নতুন কোনো বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। আগে যারা বিনিয়োগ করেছিলেন, সেটাও বিক্রি করে দিচ্ছেন, তবে আমি আশা করি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বহুল প্রতীক্ষিত ঋণ পাওয়ায় আমাদের পুঁজিবাজারেও এর প্রভাব পড়বে।
এই ঋণে সরকার স্বস্তি পেয়েছে। এখন বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকাসহ অন্য দাতা সংস্থাগুলোও ঋণ নিয়ে এগিয়ে আসবে। সাহসের সঙ্গে সরকার এখন সংকট মোকাবিলা করতে পারবে। আর তার প্রভাব পুঁজিবাজারেও অবশ্যই পড়বে। আইএমএফের ঋণটা আমাদের জন্য একটা ভালো বার্তা দিয়েছে। এখন বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও দেশের অন্যান্য খাতের পাশাপাশি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে বাংলাদেশে আসবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সব সময় কোনো দেশ সম্পর্কে আইএমএফের মূল্যায়নকে খুব গুরুত্ব দেয়। আইএমএফ বাংলাদেশের প্রতি আস্থা রেখে বাংলাদেশকে ঋণ দিয়েছে, সেই পথ অনুসরণ করে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে আসবে। সে কারণেই আমি বলছি, সামনে আমাদের জন্য সুদিন অপেক্ষা করছে।
সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে গেছে। আমানতের সুদের হারও কম। এর কোনো প্রভাব কি পুঁজিবাজারে পড়বে?
সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমলে পুঁজিবাজারের দিকে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। এখন পুঁজিবাজারের অবস্থা হয়েছে এ রকম যে, সার্বিক অবস্থা যদি পরিবর্তন হয়, তাহলে দেশের পুঁজিবাজার তাড়াতাড়ি ঘুরে দাঁড়াবে। এর কারণ হচ্ছে, কারখানাগুলোর যে মেশিন আনা আছে, সেগুলো কিন্তু অনেক কমে ৭০ টাকা ডলার বা ৮০ টাকা ডলারে কেনা মেশিন। আরও আগের কেনা। সেই সেটআপ যদি এখন করতে যান তাহলে ডাবল খরচ হয়ে যাবে। সচল কারখানা যেগুলো ভালো লভ্যাংশ দিচ্ছে, তাদের দাম কিন্তু কমেনি। শেয়ারের দাম কমতে পারে, কিন্তু ইন রিয়াল সেন্স যদি আপনি কোম্পানিটা কিনতে যান আগের টাকায় কিন্তু আপনি কিনতে পারবেন না। প্রত্যেকটি জিনিস আগে যেই দামে কেনা হয়েছে, এখন কিন্তু তিন গুণ, চার গুণ দাম লাগবে। শেয়ারের দামে সেটা নেই। কেন হয় নাই, সেটার কারণ আছে। টাকার দরকার হলে শেয়ার সবার আগে বিক্রি করা যায়। জমি-ফ্ল্যাট এত তাড়াতাড়ি বিক্রি করা যায় না।
শেয়ারটা এ রকম একটি জিনিস, মনিটরের সামনে বসলে যা শেয়ার আছে পুরোটা বিক্রি করা যাবে। আবার যতটুকু টাকা দরকার, সেটা বিক্রি করতে পারেন। এভাবে কিন্তু কোনো সম্পদ বিক্রি করা যায় না। আপনার যদি ১০ বিঘা জায়গা থাকে, ১০ কাঠা জায়গা কাউকে বিক্রি করতে গেলে খুব কঠিন। একটা অ্যাপার্টমেন্ট আপনি ভেঙে বিক্রি করতে পারবেন না, পুরোটা বিক্রি করতে হবে। এখানে যদি ১ কোটি টাকার শেয়ার থাকে, ১০ লাখ টাকার দরকার হলে ১০ লাখ টাকা বিক্রি করা যাবে।
এসব কারণে শেয়ার মার্কেটের ওপরে বিক্রির চাপ আসে বিশেষ বিশেষ সময়ে। আবার সেই সময়গুলো পার হয়ে গেলেই কিন্তু মানুষের বিক্রির চাপ আর থাকে না। সবাই যখন কিনতে আসে এই দামে পাওয়া যায় না। যাদের টাকা আছে তারা এই সুযোগে কিনে রাখেন। এটা বাইরের দেশগুলোতে দেখা গেছে। ক্রাইসিস মোমেন্টে যারা কিনে রাখছেন শেয়ার, তারা ভালো সময় অনেক দামে শেয়ার বিক্রি করতে পেরেছেন। এভাবেই কিন্তু পুঁজীকরণ হয়। কোনো জায়গায় পুঁজি খোয়া যায়, কোনো জায়গায় পুঁজি হয়।
এখান থেকে বড় বড় শিল্পপতি তৈরি হয়। আবার অনেকের টাকা হারিয়ে যায়। এটা তো পুঁজিবাদী ব্যবস্থা। এখানে সবার কাছে পুঁজি রাখার দরকার নেই। কারও কারও কাছে বড় পুঁজি থাকবে। সেখানে ১০ হাজার লোক চাকরি করবেন। এই চ্যালেঞ্জের ভেতরে হাতবদল কিন্তু হয়ে যাবে। এখানে অনেক বড় লোক অনেক বিপদে পড়ে নিচে চলে যেতে পারেন। আবার অনেকে কষ্ট করে আছেন, তারাও ওপরে চলে যেতে পারেন।
অর্থনীতির পরিবর্তনের সময় এগুলো বিশেষ করে দেখা যায়। ১৯২৯ সালে ১৯৪৯ সালের পর ১৯৬১ সালে এসব দেখা গেছে। আশা করা যায়, এটা এখন সময়ের ব্যাপার। আমি আশা করি বাংলাদেশের যে সার্বিক অবস্থা, তাতে আমরা অবশ্যই আশাবাদী। বিশ্বের বাইরে তো আর বাংলাদেশ না। যদি গ্লোবাল আনরেস্ট থাকে, যত চেষ্টাই করি না কেন, কিছু হাওয়া কিন্তু আমাদের গায়ে লাগবেই।
একজন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ হিসেবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে কিছু বলুন?
বিনিয়োগকারীদের আমি একটা কথা বলব, সত্যিকার অর্থে যদি কেউ বিনিয়োগকারী হন, তাহলে যেসব কোম্পানি ভালো লভ্যাংশ দিচ্ছে সেগুলোর ওপরে নজর রাখুন, সেই সব শেয়ার কিনুন। গুজবে কান দিয়ে, হুট করে লোকসান দিয়ে শেয়ার বিক্রি করে দেবেন না। ধৈর্য ধরুন, সময় দিন, অপেক্ষা করুন। মুনাফা পাবেনই। আর যদি স্পেকুলাটিভ বা গুজবে খেলা খেলেন, তাহলে আপনাদের লাভ হতে পারে, আবার লোকসানও হতে পারে। যারা আসল বিনিয়োগকারী, তারা দীর্ঘদিনের জন্য শেয়ার কেনেন। পুঁজিবাজারে উত্থান-পতন থাকবে। এটাই বাজারের স্বাভাবিক গতি। আজকে খারাপ গেলেও আগামীতে ভালো হবে। আপনি যদি গুজবে লোকসান দিয়ে শেয়ার বিক্রি করে দেন, তাহলে যখন বাজার ভালো হবে, শেয়ারের দাম বাড়বে, তখন কিন্তু আপনাকে আফসোস করতে হবে।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
টানা দুই দিন পতনের পর ঢাকার পুঁজিবাজারে উত্থান হলেও সূচক কমেছে চট্টগ্রামে। তবে দুই বাজারেই বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৮ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়া ভিত্তিক ডিএসইএস ৫ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯০ কোম্পানির দাম বেড়েছে বেশিরভাগের। ২২১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১০৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই বেড়েছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ২১৩ কোম্পানির মধ্যে ১০৬ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ৭০ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ১৩ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩ কোম্পানির।
৩১ কোম্পানির ২৩ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড সর্বোচ্চ ১১ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৯৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৮৮ কোটি টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফুওয়াং ফুড। অন্যদিকে ৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইউসিবি ব্যাংক।
চট্টগ্রামে পতন
ঢাকায় উত্থান হলেও সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৭ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৭৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৬৯, কমেছে ৬৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ১৬ কোটি ১০ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার শমরিতা হাসপাতাল এবং ১০ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
পতন দিয়ে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে। দাম বেড়েছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৯ পয়েন্ট। তবে প্রধান সূচক বাড়লেও বাকি দুই সূচকের সুবিধা করতে পারেনি ঢাকার বাজার।
শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৪ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল ঊর্ধ্বমুখী। ১৮৯ কোম্পানির দর বাড়লেও কমেছে ১৬০টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৪৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই বেড়েছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২১৬ কোম্পানির মধ্যে ১২২ কোম্পানির দর বেড়েছে। দর কমেছে ৮০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারমূল্য।
দাম বেড়েছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দরে পতন হয়েছে ৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩ কোম্পানির।
২১ কোম্পানির ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। বেকন ফার্মা সর্বোচ্চ ২ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচক এবং কোম্পানির শেয়ারের দাম সন্তোষজনক হলেও লেনদেনে সুবিধা করতে পারেনি ডিএসই। সারাদিনে মোট ৩৬৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৬ কোটি টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার নর্দান ইসলামি ইনস্যুরেন্স। অন্যদিকে সাড়ে ৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে বে-লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
চট্টগ্রামেও উত্থান
ঢাকার মতো সূচক বেড়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮২ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৯১, কমেছে ৭১ এবং অপরিবর্তিত আছে ২০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২১ কোটি টাকার ওপরে।
৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফিনিক্স ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এবং ১০ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে রয়েছে গ্রিন ডেলটা ইনস্যুরেন্স পিএলসি।
গত দিনের দেড়শ পয়েন্ট সূচকের পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়েছে উত্থান দিয়ে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ২৫ এবং বাছাইকৃত ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। ৩৬৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৯ কোম্পানির এবং দাম অপরিবর্তিত আছে ১২ কোম্পানির শেয়ারের।
দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৫০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো লেনদেনের ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় আছে চট্টগ্রামের বাজারেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ৬৬ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ১২৭ কোম্পানির মধ্যে ৮০ কোম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ৩১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ১২ কোটি ৯০ লাখ টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেনের শুরুতেই পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রোববার (১৩ এপ্রিল) লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির শেয়ার ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৮ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১০৬ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২০৯ কোম্পানি এবং দর অপরিবর্তিত আছে ৭৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকার বাজারে মোট শেয়ার এবং ইউনিটের লেনদেন ছাড়িয়েছে ২০০ কোটি টাকা।
একইভাবে সূচকের পতন হয়েছে চট্টগ্রামের বাজারেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১২৭ কোম্পানির মধ্যে ৩৮ কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ৬৭ কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত আছে ২২ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে শেয়ার এবং ইউনিটের লেনদেন ৪ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের পর দেশের শেয়ারাবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। ভোটের পর প্রথম সপ্তাহের মতো দ্বিতীয় সপ্তাহেও টানা ঊর্ধ্বমুখী ছিল শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। একই সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। বেড়েছে লেনদেনও।
ইতিবাচক পুঁজিবাজারে বেড়েছে বাজার মূলধন। গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন দেড় হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়েছে। একই সঙ্গে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৩২ শতাংশের বেশি। আর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৩৫ পয়েন্টের বেশি।
গত ৭ জানুয়ারি হয়েছে বহুল আলোচিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিএনপিবিহীন এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। তবে এই ভোটের আগে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। এতে আতঙ্কে অনেক বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকেন। ফলে একদিকে পুঁজিবাজারে লেনদেনের গতি যেমন কমেছে, তেমনি অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরও ধারাবাহিক পতন হয়েছে।
তবে বড় ধরনের কোনো সংঘাত ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা এরই মধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে। স্বাভাবিক পরিবেশে ভোট এবং নতুন সরকার গঠিত হওয়ায় শেয়ারবাজারেও যেন তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ফলে ভোটের পর টানা দুই সপ্তাহ দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৯৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৪টির। আর ২০৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮৭ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা, যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৮৬ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা বা দশমিক ২২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ৫ হাজার ১১০ কোটি টাকা বা দশমিক ৬৬ শতাংশ। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে।
এদিকে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৩৫ দশমিক শূন্য ৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৫৭ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৯২ শতাংশ। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক প্রায় ১০০ পয়েন্ট বেড়েছে।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি বেড়েছে ১১ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২৩ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৩ শতাংশ।
আর ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহে বেড়েছে ১২ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৯০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৩ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৬ শতাংশ।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭২৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৫৪৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ১৭৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বা ৩২ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৬৩৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ১৯৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এ হিসেবে মোট লেনদেন বেড়েছে ১ হাজার ৪৩৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বা ৬৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। মোট লেনদেন বেশি হারে বাড়ার কারণ গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৭৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। ৯৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে, দেশবন্ধু পলিমার, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, বিচ হ্যাচারি, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি।
স্মার্ট অর্থনীতির দেশ বিনির্মাণে মানি মার্কেটের পাশাপাশি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত ক্যাপিটাল মার্কেট। এ বাজারে বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজন যথাযথ জ্ঞান ও শিক্ষার। যদিও আমাদের দেশে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সম্পর্কিত শিক্ষার অভাবের বিষয়টি বারবার সমালোচিত হয়। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ শিক্ষা সম্পর্কিত পাঠ্য ব্যবস্থা চালুর কথা বলা হলেও দীর্ঘ বছরেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তা সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তত্ত্বাবধানে সরকারি অর্থায়নে বিনিয়োগ শিক্ষা সম্পর্কিত বিভিন্ন কর্মশালাসহ সার্টিফিকেট কোর্স পরিচালনা করে আসছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) ও বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটস (বিএএসএম)। সম্প্রতি বিনিয়োগ শিক্ষার বিভিন্ন দিক নিয়ে দৈনিক বাংলার সঙ্গে কথা বলেন বিআইসিএমের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক মেহেদী হাসান সজল।
২০২০ সালের ৩ আগস্ট তিন বছরের জন্য বিআইসিএমের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট পদে যোগদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার। সময় শেষ হওয়ায় সম্প্রতি বিআইসিএমে তার চাকরির মেয়াদ আবার দুই বছরের জন্য নবায়ন করা হয়েছে। তিনি ২০০০ সালে জাপানের সুকুবা ইউনিভার্সিটি থেকে ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর পিএইচডি অর্জন করেন। এর আগে ১৯৯৭ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওই বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং বিভাগ থেকে ১৯৮৭ সালে স্নাতক ও ১৯৮৮ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ শিক্ষার গুরুত্ব কতটা?
: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ শিক্ষার গুরুত্ব এককথায় বোঝানো সম্ভব নয়। কেননা এটি একটি টেকনিক্যাল জায়গা। মূলত সব বিনিয়োগের ক্ষেত্রেই শিক্ষার প্রয়োজন আছে। পুঁজিবাজারের ক্ষেত্রে এর গুরুত্বটা অন্যান্য ক্ষেত্রের তুলনায় একটু বেশি। যদিও আমাদের দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনো বিনিয়োগ শিক্ষা সম্পর্কে কোনো পাঠদান ব্যবস্থা নেই। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় মাধ্যমিক স্তর থেকেই আর্থিক স্বাক্ষরতার বিষয়টি যুক্ত করা প্রয়োজন। পরে নবম-দশম শ্রেণিতে এখানে বিনিয়োগ শিক্ষা সম্পর্কে জ্ঞান বাড়ানোর ব্যবস্থা রাখা দরকার। এ স্তর থেকেই আমাদের ছেলেমেয়েদের সঞ্চয় ও বিনিয়োগ সম্পর্কে সচেতন করা উচিত। পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের বিনিয়োগ শিক্ষা সম্পর্কে যথাযথ ধারণা দিয়ে দিতে হবে।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ অন্যান্য ক্ষেত্রের চেয়ে তুলনামূলক কিছুটা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তবে যত বেশি ঝুঁকি থাকে তত বেশি মুনাফা গেইন করারও সুযোগ থাকে। কম ঝুঁকি নিয়ে বিনিয়োগের সুযোগও এখানে রয়েছে। আবার ঝুঁকিহীন বিনিয়োগেরও ব্যবস্থা আছে। কোন প্রক্রিয়ায়, কীভাবে ঝুঁকি নিয়ে ভালো মুনাফা পাওয়া যাবে, এটা জানতে আমাদের বিনিয়োগ শিক্ষা থাকতে হবে। তাই এককথায় আমরা বলতে পারি, পুঁজিবাজারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বিনিয়োগ শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।
বিনিয়োগ শিক্ষায় বিআইসিএমের অবস্থান সম্পর্কে বলুন?
: ১৯৯৬ সালে এবং ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে দুটি বড় মহাধস হয়েছে। মূলত প্রথম মহাধসের পর থেকেই সরকারি বিভিন্ন মহলে বিনিয়োগ শিক্ষার গুরুত্ব দিতে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালে বিআইসিএম প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে এর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে ২০১০ সালের দিকে। পরে সরকারের নির্দেশনা অনুসারে বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন ধরনের ফ্রি প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করে বিআইসিএম। এরপর মার্কেট, মার্কেটের পণ্য, পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট, বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে সার্টিফিকেট কোর্স চালু করে প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৫ সালে পুঁজিবাজারের ওপর স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা চালু করা হয়। পরে ২০২১ সালে বিআইসিএম মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালু করে। এর বাইরে আমরা পুঁজিবাজার নিয়ে বিভিন্ন গবেষণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
বিআইসিএমের কার্যপরিধি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে কি, এখানে কী ধরনের প্রতিবন্ধকতা আছে?
: বিনিয়োগ সচেতনতা বাড়ানোর জন্য এখন আরও বিনিয়োগ দরকার। ঢাকার বাইরে আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধির কর্মসূচি নেয়া দরকার। মূলত এ ক্ষেত্রে বাজেট একটি বড় ভূমিকা পালন করে। আমরা যে ভবনটিতে থাকি সেটি এখনো ভাড়ায় নেয়া। এর পাশাপাশি আমাদের শিক্ষক ও স্টাফদের বেতন বাবদ বড় একটি অংশ ব্যয় হয়। এসবের খরচ মিটিয়ে বিনিয়োগ শিক্ষায় সচেতনতা বাড়ানোর জন্য যে অংশটা আমরা সরকারের কাছ থেকে পাই তা আসলে যথাযথ নয়। আমাদের যদি একটি স্থায়ী ক্যাম্পাস থাকত তাহলে আরও ভালো কাজের সুযোগ তৈরি হতো। আমরা কাজের পরিধি বাড়াতে চাইলেও বাজেট স্বল্পতার জন্য তা হয়ে ওঠে না।
পুঁজিবাজারের বিশ্লেষকরা প্রায়ই বলে থাকেন এখানের বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ শিক্ষা নেই। তারা গুজবকেন্দ্রিক বিনিয়োগে অভ্যস্ত। এ থেকে বিনিয়োগকারীদের ফেরাতে আপনাদের পদক্ষেপ সম্পর্কে বলুন?
: বিআইসিএম বিনিয়োগ শিক্ষা দিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে আসছে; কিন্তু পুঁজিবাজারের পরিধি অনুসারে বিআইসিএমের একার প্রচেষ্টায় গুজব ঠেকানো সম্ভব নয়। এখানে মার্কেটসংশ্লিষ্ট সব মহলের যৌথ প্রচেষ্টা থাকতে হবে। আমরা বিনিয়োগ শিক্ষা নেয়ার জন্য বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানাই; কিন্তু সব মহল থেকে যদি সেই তাগিদ না আসে তাহলে বিনিয়োগকারী কতটা আগ্রহী হবেন? একটা সাসটেইনেবল মার্কেট গঠনের জন্য বাজারসংশ্লষ্ট সবার যৌথ প্রচেষ্টার কোনো বিকল্প নেই। আমাদের এমন একটি ইকো-সিস্টেম তৈরি করতে হবে, যাতে সব বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ শিক্ষা নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
বিআইসিএম বিভিন্ন সময়ে সরকারি-বেসরকারি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে। চুক্তির আওতায় ওইসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি কর্মশালাসহ বিনিয়োগ শিক্ষা কোর্সে ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এখানে কতটা সাড়া মিলছে?
: পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আমরা বিনিয়োগ শিক্ষা সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহী করার ক্ষেত্রে খুব একটা ভূমিকা দেখতে পাই না। এ জন্য আমরা নিজেরাই সম্প্রতি উদ্যোগ নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিনিয়োগ শিক্ষা সম্পর্কে আগ্রহী করতে কাজ করছি। এ ক্ষেত্রে আমরা সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে কোর্স সম্পর্কে তাদের অভিহিত করছি। এ ছাড়া আমরা নারী বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতেও কাজ করছি। আশা করি, সামনের দিনগুলোতে এ প্রচারণার সুফল পাওয়া যাবে।
বিআইসিএমের কোর্স ফি আরও কমানো হলে বিনিয়োগ শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়বে বলে মনে করছেন কি?
: কোর্স ফি আরও কমানো হলে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়বে বলে আমি মনে করছি না। এরই মধ্যে আমরা কোর্স ফি অর্ধেকে নামিয়ে এনেছি। তা সত্ত্বেও কিন্তু আগ্রহ বাড়তে দেখিনি। মার্কেট যদি ভালো হতো তাহলে বিনিয়োগকারীরা হয়তো অনেকটা আগ্রহী হয়ে উঠতেন। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান থেকে বিনিয়োগ শিক্ষা নেয়ার বিষয়ে তাগিদ বাড়াতে হবে। তাহলে বিনিয়োগ শিক্ষায় আগ্রহ বাড়বে। একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও স্থিতিশীল বাজার গঠন করা সম্ভব হবে।
বিআইসিএম সম্প্রতি ‘লাইসেন্সড মিউচুয়াল ফান্ড সেলিং এজেন্ট প্রোগ্রাম’ চালু করেছে। বিনিয়োগ শিক্ষায় নতুনত্ব আনয়নে এ ধরনের আর কোনো উদ্যোগ পাইপলাইনে আছে কি?
: আমরা এ ধরনের নতুনত্ব আনয়নে সব সময় কাজ করছি। ফিন্যান্সিয়াল মডিউল অ্যান্ড ভেলুয়েশন এক্সপার্ট নামক একটি সার্টিফিকেট কোর্স আছে এক বছরের। এর আগে আমরা ডেটা এনালাইসিসের ওপর একটি কোর্স করিয়েছি। ‘লাইসেন্সড মিউচুয়াল ফান্ড সেলিং এজেন্ট প্রোগ্রাম’-এ কোর্সটি আগামীকাল (৬ নভেম্বর) থেকে চালু হবে। এরই মধ্যে অনেকেই এ প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করে ভর্তি হয়েছেন। এ ধরনের কাজগুলো আমাদের চলমান একটি প্রক্রিয়া।
পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে আপনার পরামর্শ কী?
: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে চোখ-কান খোলা রেখে বিনিয়োগ করতে হবে। কারও থেকে প্রবঞ্চিত হয়ে বিনিয়োগ করার জায়গা পুঁজিবাজার নয়। এখানে বিনিয়োগ করতে হলে অবশ্যই বিনিয়োগ শিক্ষা সম্পর্কে জানতে হবে। কেননা এ বাজার যেমনি ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনি সম্ভাবনাময়ও।
মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
: আপনাকেও ধন্যবাদ
ব্যাক অফিস সফটওয়্যারের মাধ্যমে ব্রোকারেজ হাউসগুলো পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ও অর্থের হিসাব সংরক্ষণ করে থাকে। এখন থেকে সব ব্রোকারেজ হাউসে ‘সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যার’ চালুর নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে এ সফটওয়্যার চালুর নির্দেশ দিয়ে গত সোমবার একটি নির্দেশনা জারি করেছে সংস্থাটি।
বিনিয়োগকারীদের আর্থিক ও সিকিউরিটিজ লেনদেন সংক্রান্ত তথ্যের জন্য যে ব্যাক অফিস সফটওয়্যারে ব্যবহার করে, তাতে ব্যবহারকারীর দেয়া তথ্য পরিবর্তন করা বা মুছে ফেলা যায়। এ ধরনের কার্যকালাপের ফলে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থহানী হয়েছে এবং শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়েছে। তাই পুঁজিবাজারের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে স্টেকহোল্ডার কোম্পানির এসব কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে সমন্বিত সফটওয়্যার চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে বিএসইসির নির্দেশনায়।
চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসংক্রান্ত গাইডলাইন দিয়ে প্যানেলভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (সিএসই) এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সব ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিকে কমিশনের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা এবং যে কোনো এক্সচেঞ্জের এ সংক্রান্ত গাইডলাইন পরিপালন করে ২০২৪ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে প্যানেলভুক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরবরাহ করা সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে যেসব ব্রোকারেজ হাউস এরই মধ্যে নিজস্ব উদ্যোগে ব্যাক অফিস সফটওয়্যার তৈরি করে ফেলেছে, সেসব ব্রোকারেজ হাউসকে স্টক এক্সচেঞ্জের তৈরি করা নীতিমালা মেনে ওই সফটওয়্যারের বিপরীতে ২০২৪ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে সনদ নিতে হবে। এই সনদ না নিলে কোনো এক্সচেঞ্জের প্যানেলভুক্ত সফটওয়্যার ভেন্ডার থেকে সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যার কিনে ও ইনস্টল করে কমিশনের এসংক্রান্ত নির্দেশনা ও যেকোনো এক্সচেঞ্জের এসংক্রান্ত গাইডলাইন পরিপালন করতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ দৈবচয়ন ভিত্তিতে সরেজমিন পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ৩১ মার্চের পর ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিগুলোর সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করছে কি না তা নিশ্চিত করবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ট্রেকহোল্ডার কোম্পানি ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে বিদ্যমান সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ নির্দেশনার পাশাপাশি বিএসইসি থেকে ডিএসই, সিএসই এবং সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে (সিডিবিএল) কয়েকটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনাগুলো হলো- ডিএসই এবং সিএসইর ট্রেকহোল্ডার মার্জিন নীতিমালা অনুযায়ী পাওয়া ফ্রি লিমিট সুবিধা স্থগিত থাকবে। সংশ্লিষ্ট এক্সচেঞ্জের মালিকানা শেয়ারের বিপরীতে প্রাপ্য লভ্যাংশ দেয়া স্থগিত থাকবে। যোগ্য বিনিয়োগকারীর (এলিজেবল ইনভেস্টর/কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর) আইপিও, আরপিও, কিউআইও সুবিধা স্থগিত থাকবে। নতুন শাখা অথবা ডিজিটাল বুথ খোলার সুবিধা স্থগিত থাকবে। এই নির্দেশনার মধ্যদিয়ে বিএসইসি এর আগে ২০১০ সালের ৩১ জানুয়ারি জারি করা এসংক্রান্ত নির্দেশনা রহিত করেছে।