সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
১৪ পৌষ ১৪৩২
সাক্ষাৎকার

এবার রোজায় কঠোর অবস্থানে থাকব

এ এইচ এম সফিকুজ্জামান
আপডেটেড
১৮ মার্চ, ২০২৩ ০৯:৪৩
প্রকাশিত
প্রকাশিত : ১৮ মার্চ, ২০২৩ ০৯:৩১

এমনিতেই বাজারে সব জিনিসের দাম চড়া। কয়েক দিন পরই শুরু হবে রমজান মাস। রোজা এলেই দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা যায়। প্রায় সব পণ্যের দামই বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। এতে মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে যায়। বিশেষ করে কম আয়ের মানুষের কষ্ট বেড়ে যায়। রোজাকে সামনে রেখে পণ্যমূল্য আরেক দফা বাড়বে- এ নিয়ে আতঙ্কে আছেন মানুষ। কিন্তু আশার কথা শুনিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেছেন, ‘এবার রোজায় কঠোর অবস্থানে থাকব আমরা। বাজার স্বাভাবিক রাখতে রমজানজুড়ে অধিদপ্তর কঠোর অবস্থানে থাকবে।’

গতকাল শুক্রবার দৈনিক বাংলাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন দৈনিক বাংলার প্রতিবেদক বীর সাহাবী

কয়েক দিন পরই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। এ মাস উপলক্ষে ভোক্তা অধিদপ্তর বিশেষ কী কার্যক্রম পরিচালনা করবে?
দেখুন, রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের দ্রব্যাদির ওপরে বড় বড় ছাড় দিয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে হয় তার বিপরীত। কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে বাজার অস্থির হয়ে যায়। সরবরাহ সংকটের অজুহাত দেখিয়ে আসন্ন রমজানে যেন পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো না হয় সে বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে থাকব। আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছি। তখন তারা তাদের সমস্যার কথা বলেছেন। আমরা সে বিষয়টিও খেয়াল রাখব। কিন্তু তারা যতটা সমস্যার কথা বলেন, বাজারে তার প্রভাব আরও বেশি ফেলেন। এ জন্যই মূলত দামটা এত বাড়ে।

রমজানে বাজার পরিস্থিতি কেমন থাকবে বলে আপনার মনে হয়?
রমজানের বাজার পরিস্থিতিটা আসলে নির্ভর করে একজনের ক্রয়ক্ষমতার ওপর। এর মধ্যে বাজারের দামের একটা ব্যাপারও রয়েছে। রমজানের আগে আমাদের দেশি পেঁয়াজ উঠবে। এতে করে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কোনো আশঙ্কা নেই। ৫০ টাকার মধ্যেই থাকবে দাম। কিন্তু আদা-রসুনের বাজার অস্থির। রমজান আসার আগেই দাম বাড়তে শুরু করেছে। হঠাৎ করে আদা-রসুনের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত কেজিতে বাড়ছে। কিছু পণ্য হয়তো আমদানিনির্ভর, ডলারের দাম বৃদ্ধি অনুসারে ২৫ শতাংশ দাম বাড়তে পারত। কিন্তু ডলারের বাজারের তুলনায় পণ্যের দাম আরও বেশি বাড়ানো হয়েছে। তাই আমরা রমজানে কঠোর অবস্থানে থাকব। কেউ যেন নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে কোনো পণ্য বিক্রি করতে না পারে। আর রশিদ ছাড়া যেন কেউ মালামাল বিক্রি না করে- সেদিকেও কড়া নজরদানি করা হবে।

গত সপ্তাহে আমাদের টিম আদা-রসুনের বাজার নিয়ে কাজ করেছে। আমরা কারওয়ানবাজারসহ শ্যামবাজার পাইকারি, খুচরা এবং আড়তে একটু খোঁজ নিলাম। আন্তর্জাতিক এলসি খোলার বিষয়টা খোঁজ নিলাম। যেমন- আদা, রসুন, শুকনা মরিচ এবং হলুদ- এগুলো কিন্তু ইমপোর্ট (আমদানি) নির্ভরতা আছে। সম্পূর্ণভাবে দেশি উৎপাদন দিয়ে বাজার চালানো সম্ভব না। সে ক্ষেত্রে এখানে যদি ইমপোর্ট কমে যায়, দেশীয় যে উৎপাদন সেখানে কিন্তু ঘাটতি পড়বে। সামনে রমজানের পরে কিন্তু কোরবানি। তাই এসব পণ্য যদি ইমপোর্ট স্মুথ (সচল) না রাখতে পারি তাহলে স্থানীয় উৎপাদন দিয়ে এই বাজার ধরে রাখা যাবে না।

বিশ্ব ভোক্তা-অধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অধিদপ্তরের আয়োজন কতটা সফল হলো?
ভোক্তা অধিকার বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলাম। এই প্রতিযোগিতায় যারা বিজয়ী হয়েছেন তাদের জন্য শুভ কামনা। আইন করে ভোক্তাদের ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদ দেয়া বাধ্যতামূলক করতে কাজ করছি। মামলা অনুযায়ী আমাদের নিষ্পত্তির হারও ভালো। আমরা কনজুমার কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিসিএমএস) চালু করেছি। বিশ্ব ভোক্তা দিবসে এই অ্যাপের উদ্বোধন করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। এর মাধ্যমে ভোক্তা যেকোনো জায়গা থেকে তার অভিযোগ করতে পারবেন। অভিযোগ নম্বর ও শুনানির তারিখও পেয়ে যাবেন। এ ছাড়া আমরা একটি স্মরণিকা প্রকাশ করেছি। সব মিলিয়ে বলা যায়, ভোক্তা দিবসে আমরা ভোক্তার অধিকার নিশ্চিতে আরও একধাপ সামনে এগিয়েছি। তাদের সেবায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

ভেজাল খাদ্য প্রতিরোধ এবং পণ্য ও সেবার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত অধিদপ্তরের বিদ্যমান সক্ষমতা কতটুকু?
ঢাকায় কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং বিভাগীয় পর্যায়ে আটটি ও প্রত্যেক জেলায় কার্যালয় রয়েছে। জেলা কার্যালয়ে একজন সহকারী পরিচালক (এডি) ও একজন কম্পিউটার অপারেটর আছেন। এই দুজন যখন অভিযানে যান, তখন অনেকে অভিযোগ তোলেন অফিস বন্ধ। কারণ আর তো কেউ তখন অফিসে থাকছেন না। একটি জেলায় ১০-১২টি উপজেলা থাকে, তাহলে বোঝেন কত জনবল দরকার। সত্যিকার অর্থে আমরা যে পরিমাণ কাজ করছি, সেই আলোকে আমাদের জনবল কাঠামো অপ্রতুল। অথচ আমাদের অভিযোগের পরিমাণ বেড়েছে। মানুষের প্রত্যাশাও বেড়েছে। জনবল কাঠামো বৃদ্ধির জন্য ৪৬৫ জন নতুন জনবল চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।

২০০৯ সালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন প্রণীত হয়। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এ আইন ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কতটুকু সক্ষম?
২০০৯ সালের প্রেক্ষাপট আর ২০২৩ সালের প্রেক্ষাপট এক নয়। ২০০৭ সালের প্রেক্ষাপটে ২০০৯ সালের আইন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ বছর চলে গেছে। জীবনযাত্রার মান অনুযায়ী এটি যুগোপযোগী করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। সেই সময়ে কিন্তু ই-কমার্স ছিল না। এখন সেটি যুক্ত হয়েছে। ই-কমার্স নিয়ে হাজার হাজার অভিযোগ এসেছে। ২০০৯ সালের আইন অনুযায়ী, কিন্তু সেসব নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না। আইনটি বর্তমান প্রেক্ষাপটের সঙ্গে যুগোপযোগী করার চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। ১৬ বছর আগের দণ্ড তো এখন চলছে না, এখনকার প্রেক্ষাপট অনুযায়ী দণ্ড নির্ধারণ করতে হবে।

দেশের সব শ্রেণির ব্যবসায়ী বেশ প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করা কতটা চ্যালেঞ্জের?
আমরা কিন্তু একটা আইনি কাঠামোর মধ্য দিয়ে চলি। প্রভাবটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। সমাজে সে সব থাকবে। আমরা আইন অনুযায়ী আমাদের কাজ করে থাকি। আমরা খুচরা বিক্রেতা থেকে উৎপাদনকারী কাউকেই ছাড়ছি না। তাদের ব্যত্যয়গুলো তুলে ধরেছি। আমরা সরকারের কাছে জানিয়েছি। আইনে আমাদের যতটুকু ক্ষমতা দেয়া আছে, আমরা সেই পর্যন্তই যেতে পারি। আইনের কাঠামোর বাইরে তো আমরা যেতে পারি না। প্রভাব বলয়ের চাপ আমি পাইনি। ভোক্তা অধিকারের বিষয়ে যেখানে প্রশ্ন উঠছে, আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যম আমাদের অনেক সহযোগিতা করছে। এ ছাড়া গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও আমাদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছে। কারণ আমাদের নিজস্ব কোনো সোর্স নেই। আমি ৯-১০ বছর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছি, সেই হিসেবে ব্যবসায়ীদের পালস আমি বুঝি। সে জন্য তারাও আমাদের সহযোগিতা করে। অভিযানে গেলে কখনো বাধা দেয় না। এখানে কোনো প্রভাব নেই, বরং সহযোগিতাই পাচ্ছি।

সাধারণত যেসব বিষয় মিডিয়ার মাধ্যমে সবার নজরে আসে, সেসব বিষয়েই অধিদপ্তরের তৎপরতা বেশি দেখা যায়। এর বাইরে আর কোন কোন বিষয়ে অধিদপ্তর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অনুসন্ধান করে এবং ব্যবস্থা নেয়?
আমাদের তো কোনো সোর্স নেই। এটা আমাদের সীমাবদ্ধতা। কিন্তু কেউ জানালেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমাদের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে একটি বিরিয়ানির রেস্টুরেন্টকে জরিমানা করা হয়। কসমেটিকস নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়, এটা কিন্তু কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেয়েও যাচ্ছি, নিজেদের মতো করেও যাচ্ছি। আমরা সীমিত লোকবল নিয়েই আমাদের সর্বোচ্চটা করে যাচ্ছি। আমরা সামনে আরও বড় হতে কাজ করছি।

পণ্যের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কথা দীর্ঘদিন ধরে শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত জানতে চাই?
আমাদের এখানে পণ্যের দাম বাড়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে এক্সপেকটেশন, ব্যবসার ক্ষেত্রে যেটাকে বলা হয়ে থাকে অতি মুনাফা বা আশা। আমাদের এখানে প্রফিট এক্সপেকটেশন মনে হয় বেড়ে গেছে। আমাদের অনেক পণ্যের আমদানিকারকের সংখ্যা অনেক সীমিত। এরাই বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের লাভ করার মানসিকতা বেড়েছে।

এ ছাড়া যারা পাইকার বা খুচরা বিক্রেতা তাদের লাভ করার ইচ্ছাও বেড়ে গেছে। আগে তারা ১০০ টাকায় ২ টাকা লাভ করে সন্তুষ্ট থাকতেন। এখন তারা ১০০ টাকায় ৫ টাকা লাভ করার চেষ্টা করছেন। ভোক্তারা সেটা মেনে নিচ্ছেন বলে আমার ধারণা। এর ফলে পণ্যমূল্য যে পরিমাণ বাড়ার কথা তার চেয়ে বেশি বাড়ছে। আমাদের দেশে আরেকটা জিনিস হয়, হঠাৎ করে একটি ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। যেমন- কিছু দিন আগে হঠাৎ করেই এক দিনের ব্যবধানে ফার্মের মুরগির দাম কেজিতে ৬০-৭০ টাকা বেড়ে গেল। এভাবে কখনো চিনি বা তেল বা পেঁয়াজ-রসুন সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। এখানে সরবরাহ বিঘ্নিত করে দাম বাড়ানো হয়। আমাদের ভোক্তা অধিদপ্তরের অনুসন্ধানে তা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এটা কখনো বড় ব্যবসায়ীরা করেন। কখনো মজুতদাররা করেন। আবার পাইকাররা বা খুচরা ব্যবসায়ীরা করেন। এটাও পণ্যমূল্য বাড়ার একটি অন্যতম কারণ। আমাদের দেশে মানুষের মুনাফা করার মানসিকতায় একটি ‘স্ফীতি’ ঘটছে। এটা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। এটা বন্ধ করতেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

পণ্যমূল্য সহনীয় রাখতে সরকারের তৎপরতাকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
সরকার সচেতন। বিশেষ করে আমাদের প্রধানমন্ত্রী খুব সচেতন। তিনি সাধারণ মানুষের কথা ভাবেন। প্রায় প্রতিদিনই তিনি অতি মুনাফা না করতে ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানাচ্ছেন। তার নির্দেশনায় আমরা কাজ করছি। রমজান মাসে পণ্যমূল্য যাতে না বাড়ে সেজন্য তিনি নানা ধরনের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে সারা দেশে কম দামে চালসহ প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া দ্রব্যমূল্য যাতে সহনীয় থাকে, সন্তোষজনক থাকে, সাধারণ মানুষ যাতে কষ্ট না পান, এর জন্য সরবরাহ পরিস্থিতি যাতে ঠিক থাকে, মানুষের আয় যাতে ঠিক থাকে, বাড়ে-সেজন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় অসহায় গরিব মানুষকে সরকারের পক্ষ থেকে নানা ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা পণ্যমূল্য বাড়ার জন্য বিশ্ব পরিস্থিতিকে দায়ী করছেন। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করছেন। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?

বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্ববাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিশ্ববাজারে যা ঘটে তার প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পড়ে। এটা হচ্ছে বিশ্বায়নের কুফল বা সুফল, যাই বলেন না কেন। আমাদের দেশে নানা রকম সংকট আছে। বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম যে বেশি, সেই সংকট তো আছেই। পাশাপাশি বাংলাদেশে আমদানি ব্যয় আমাদের রপ্তানি আয় ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স থেকে বেশি। ফলে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স ঋণাত্বক হচ্ছে। যার কারণে দিন দিন টাকা তার মূল্য হারাচ্ছে। ডলারের দাম বাড়ছে। এক বছর আগে এক ডলার কিনতে ৮৬ টাকা লাগত। এখন এক ডলার কিনতে ১০৭ টাকা লাগে।

দুই বছরের করোনা মহামারির ধাক্কা কাটতে না কাটতেই এক বছরের বেশি সময়ের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো আমাদেরও বিপদে ফেলে দিয়েছে। বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য বেড়ে গেছে। জাহাজ ভাড়া বেড়েছে। ডলারের দাম বেড়েছে; জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়ে সরকার। এসব কারণে আমাদের দেশে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যতটা বাড়ার কথা, ব্যবসায়ীরা ততটা বাড়িয়েছে, নাকি বেশি বাড়িয়েছে। আমরা বিশ্লেষণ বা তুলনা করে দেখেছি, অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের ব্যবসায়ীরা বেশি দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে আন্তর্জাতিক বাজার পর‌্যালোচনা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কয়েকটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, তার চেয়ে বেশি দামে বাজারে পণ্য বিক্রি হয়। যেমন-বর্তমানে সরকারের বেঁধে দেয়া দামে ভোজ্যতেল বিক্রি হলেও চিনি বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ১০৭ টাকা কেজি দরে খোলা চিনি বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে এর চেয়ে বেশি দামে।

ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় আগামী দিনে অধিদপ্তর কী ধরনের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে?
ভোক্তার অধিকার সর্বজনীন বিষয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা এবং তার জ্যেষ্ঠ কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। উন্নয়নের অনেক জায়গায় আমরা সফলতা দেখিয়েছি; কিন্তু ভোক্তার অধিকার যদি সংরক্ষণ না হয়, তাহলে কিন্তু উন্নয়নগুলো অনেক ক্ষেত্রে ম্লান হয়ে যাবে। প্রত্যেক ভোক্তাকে সচেতন করাই আমাদের প্রথম কাজ।


রপ্তানিতে আরও তিন বছর নগদ সহায়তা চান বস্ত্রকল মালিকরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রপ্তানি উৎসাহিত করতে সরকারের দেওয়া নগদ সহায়তা আরও অন্তত তিন বছর অব্যাহত রাখার অনুরোধ জনিয়েছে বস্ত্রকলের মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের কাছে পাঠানো আলাদা চিঠিতে এই অনুরোধ জানান বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল। কেন এই অনুরোধ করা হচ্ছে, তা তুলে ধরা হয়েছে চিঠিতে।

চিঠিতে বিটিএমএর পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার মূল্যমানের পতন, গ্যাসের দাম ২৫০ শতাংশ ও শ্রমিকের মজুরি ৭০ শতাংশ বেড়েছে। এর সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, শ্রমিক অসন্তোষ, প্রয়োজনীয় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাবে মিলগুলো সক্ষমতা অনুযায়ী উৎপাদন করতে পারছে না। এ কারণে বস্ত্রকলগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখে রয়েছে। এসব কারণে রপ্তানিতে নগদ সহায়তা আরও অন্তত তিন বছর বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত, পণ্য রপ্তানিতে প্রণোদনার বর্তমান সময়সীমা আগামী ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বশেষ গত জুলাই মাসে প্রণোদনা কমিয়ে নতুন সার্কুলার জারি করে। এর পর থেকে রপ্তানিমুখী বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা ১ দশমিক ৫০ শতাংশ, ইউরো অঞ্চলে বস্ত্র খাতের রপ্তানিকারকদের জন্য বিদ্যমান দেড় শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা দশমিক ৫০ শতাংশ, রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা ৩ শতাংশ রয়েছে। এ ছাড়া বস্ত্র খাতে নতুন পণ্য বা বাজার সম্প্রসারণে প্রচলিত বাজারের বাইরে অন্য বাজারের জন্য ২ শতাংশ ও তৈরি পোশাক খাতে দশমিক ৩০ শতাংশ বিশেষ নগদ সহায়তা রয়েছে।


লেনদেন কমলেও বাজার মূলধন বাড়লো হাজার কোটি টাকা

গত সপ্তাহের শেয়ারবাজারে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসের মধ্যে দুই কার্যদিবসে ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে, বিপরীতে দুই কার্যদিবসে দরপতন হয়। এরপরও সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যাক প্রতিষ্ঠান। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে মূল্যসূচক। তবে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৪১টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির। আর ১০১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ, লেনদেনে অংশ নেওয়া ৬২ দশমিক ৪৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়েছে।

দাম বাড়ার তালিকা বড় হওয়ায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ, সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৭ কোটি টাকা বা দশমিক ১৫ শতাংশ।

বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে প্রধান মূল্যসূচকও বেড়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৫২ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৭ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৯ শতাংশ। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ২২ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২২ শতাংশ।

এদিকে, গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের গতি কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৫৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৮৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা বা ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সায়হান কটনের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ।

এছাড়া, লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং, লাভেলো আইসক্রিম, রহিমা ফুড, মুন্নু ফেব্রিক্স, ফাইন ফুড এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।


চলতি বছর বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

বিশ্ববাজারে তেলের দাম আরও কমেছে। পশ্চিমা দেশগুলোর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবার ব্রেন্ট ক্রুড ও ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম উভয়ই কমেছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বৈঠকের আগে তেলের দাম কমল। এই বৈঠকের আগে বাজারের ধারণা, বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়বে।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্সের দাম ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলার ৬৪ সেন্টে নেমে এসেছে। সেই সঙ্গে ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমে ৫৬ ডলার ৭৪ সেন্টে নেমে এসেছে।

চলতি বছর তেলের দাম অনেকটাই কমেছে। বাস্তবতা হলো, গত ১৬ ডিসেম্বর তেলের দাম পাঁচ বছরের মধ্যে প্রায় সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। এরপর বাজারে সরবরাহ–সংকটের আশঙ্কায় দাম কিছুটা বাড়ে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে চলতি বছর ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ১৯ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ২১ শতাংশ কমেছে।

বাস্তবতা হলো, ২০২০ সালের পর চলতি বছরে তেলের দাম সবচেয়ে বেশি কমবে—এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অর্থনীতির ধীরগতির কারণে বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা কমে। সেই সঙ্গে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন বাড়তে থাকায় আগামী বছরে বাজারে অতিরিক্ত সরবরাহের সম্ভাবনা আছে। এই বাস্তবতায় তেলের দাম কমছেই।

রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয় কি না, বিনিয়োগকারীদের নজর এখন সেদিকেই। শান্তিচুক্তি হলে রাশিয়ার তেল খাতে আরোপিত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। ফলে বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়বে।

যুদ্ধ থামানোর আলোচনায় এখন সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে জমি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রোববার ফ্লোরিডায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন। জানা গেছে, ২০ দফা–সংবলিত শান্তিচুক্তির কাঠামো ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা-সংক্রান্ত চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কাছাকাছি।

বৈঠকের ঘোষণা দিয়ে জেলেনস্কি বলেন, নতুন বছরের আগেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব। একই সঙ্গে তিনি জানান, রাশিয়া যদি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, তাহলে প্রস্তাবিত শান্তি কাঠামো নিয়ে গণভোট আয়োজন করতেও তিনি প্রস্তুত।

এদিকে ক্রেমলিন জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব পাওয়ার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বৈশ্বিক তেল মজুত বৃদ্ধি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া শান্তি আলোচনায় সামান্য অগ্রগতি—এ দুটি কারণে তেলের দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।


সব স্থলবন্দরের মাশুল বাড়ছে ৫ শতাংশ

১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারের নতুন সিদ্বান্ত অনুযায়ী দেশের সব স্থলবন্দরের সেবা মাশুলের হার ৫ শতাংশ বাড়ছে। প্রতিটি সেবার বিপরীতে কর, টোল, মাশুলের পরিমাণ আগের চেয়ে এই হারে বেড়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে নতুন এই মাশুল কার্যকর করা হবে।

এ নিয়ে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। অন্য স্থলবন্দরের তুলনায় বেনাপোল স্থলবন্দরে মাশুল কিছুটা বেশি। তাই বেনাপোল বন্দরের জন্য আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

বেনাপোল স্থলবন্দরে ২৭ ধরনের সেবার বিপরীতে মাশুল আদায় করা হয়। যেসব যাত্রী বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহার করবেন, তাদের জন্য ২০২৫ সালে মাশুলের পরিমাণ ৪৯ টাকা ৭৯ পয়সা। ২০২৬ সালের জন্য বাড়িয়ে ৫২ টাকা ২৭ পয়সা করা হয়েছে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি করা বাস, ট্রাক ও লরি প্রবেশ করলে এখন ১৮৪ টাকা ৭০ পয়সা দিতে হবে। আগে এর পরিমাণ ছিল ১৭৫ টাকা ৯০ পয়সা। মোটর কার, জিপ, পিকআপ, থ্রি-হুইলারের জন্য মাশুল ১১০ টাকা ৮২ পয়সা। মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলের জন্য নতুন মাশুল ৩৬ টাকা ৯৫ পয়সা।

বেনাপোল স্থলবন্দরে ওজন মাপার যন্ত্র ব্যবহারের মাশুল ট্রাক, লরিতে দিতে হবে ৮৮ টাকা ৬৫ পয়সা। অন্যদিকে কাগজপত্র প্রক্রিয়াকরণ মাশুল ১৯৫ টাকা ৭ পয়সা। কোনো যানবাহন ইয়ার্ডে সারা রাত থাকলে ১১১ টাকা ৪৯ পয়সা। এ ছাড়া গুদামে পণ্য রাখলে তার মাশুল বেড়েছে পণ্য রাখার সময় অনুযায়ী। এভাবে সব ধরনের মাশুলের পরিমাণই বেড়েছে।

বেনাপোল ছাড়া অন্য স্থলবন্দরগুলোতেও মাশুল বেড়েছে ৫ শতাংশ হারে। যেসব যাত্রী বেনাপোল ছাড়া অন্য স্থলবন্দর ব্যবহার করবেন, তাদের জন্য ২০২৫ সালে মাশুলের পরিমাণ ছিল ৪৯ টাকা ৭৯ পয়সা। নতুন বছরের জন্য তা বাড়িয়ে ৫২ টাকা ২৭ পয়সা করা হয়েছে।

বেনাপোল স্থলবন্দর ছাড়া অন্য বন্দর দিয়ে আমদানি করা বাস, ট্রাক ও লরির জন্য এখন ১৫৯ টাকা ২২ পয়সা দিতে হবে। আগে এর পরিমাণ ছিল ১৫১ টাকা ৬৪ পয়সা। মোটর কার, জিপের জন্য মাশুল ৯৫ টাকা ৫২ পয়সা। মোটরসাইকেল, স্কুটার, বেবি ট্যাক্সি, থ্রি–হুইলারের জন্য নতুন মাশুল ৪৭ টাকা ৮৩ পয়সা।

এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করলেও পণ্য ভেদে মাশুলের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও মাশুল বাড়ানো হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে নতুন মাশুল কার্যকর করা হবে।’


পর্তুগাল-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নতুন কমিটি গঠন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পর্তুগাল-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (পিবিসিসিআই) ৩১ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে প্রেসিডেন্ট আবদুল আহাদ সালমান এবং সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার মো. শফিকুল ইসলাম শফিক। এ ছাড়া কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন রাজীব হোসাইন। এই কমিটির মেয়াদ তিন বছর।

এ উপলক্ষে সম্প্রতি পর্তুগালের লিসবনে অবস্থিত পিবিসিসিআই মিলনায়তনে পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। একই সঙ্গে পিবিসিসিআই পরিচালিত আলফালিস একাডেমির পর্তুগিজ ভাষা শিক্ষা কোর্সের এ-১ ও এ-২ স্তর সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পিবিসিসিআইর জেনারেল অ্যাসেম্বলি প্রেসিডেন্ট জোসে রুই দ্য কস্তা কারভালহো, জেনারেল অ্যাসেম্বলি সেক্রেটারি-১ শফিকুল আলম, সেক্রেটারি-২ মুহাম্মদ উল্লাহ, প্রেসিডেন্ট সুপারভাইজার মুহিব্বুল্লাহ হেলাল, সেক্রেটারি সুপারভাইজার মারিয়া ইনেস সান্তানা দো রোজারিও কারভালহো। ব্যবসায়ীদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাহেদুজ্জামান মোল্লা, মো. জামাল উদ্দিন, নাসির উদ্দীন, জাহাঙ্গীর আলম, সানি রাহমান সুমন, শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।

পিবিসিসিআ’র নবগঠিত কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন, অ্যাসেম্বলিয়া কমিটির প্রেসিডেন্ট-জোসে রুই দ্য কোস্টা কারভালহো, সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, সহসভাপতি শফিকুল আলম, সুফার ভাইজার কমিটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ হেলাল, সহসভাপতি এমডি মাহবুব আলম, সেক্রেটারি মারিয়া ইনেস সান্তানা দো রোজারিও কারভালহো আকোনুয়ালহা। এ ছাড়া আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল ফজল, বাংলাদেশবিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ শফিউল আযম, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. আন্দ্রে সন কোস্তা, প্রচার সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সজল, পর্তুগালবিষয়ক সম্পাদক ড. মারিয়া এডুয়ার্দা মিরান্ডা পানিয়াগ, বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন, মিডিয়া সম্পাদক নজরুল ইসলাম।


৬ ব্রোকারেজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয়ের সময়সীমা বাড়ালো বিএসইসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকারদের নেগেটিভ ইক্যুইটি ও আনরিয়েলাইজড লসের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ ও সমন্বয়ের সময়সীমা বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশনের ৯৮৯তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গত ২৩ ডিসেম্বর কমিশনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

সভায় বোর্ড অনুমোদিত অ্যাকশন প্ল্যান পর্যালোচনা করে এনবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড, ইউনিক্যাপ সিকিউরিটিজ লিমিটেড, লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেড, নিউ ইরা সিকিউরিটিজ লিমিটেড, কবির সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং এনবিএল ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের নেগেটিভ ইক্যুইটি ও আনরিয়েলাইজড লসের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ ও সমন্বয়ের সময়সীমা বাড়ানোর অনুমোদন দেওয়া হয়।

এছাড়া, যেসব স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকার এখনো বোর্ড অনুমোদিত অ্যাকশন প্ল্যান কমিশনে দাখিল করেনি। তাদেরকে অবশ্যই আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যথাযথ ও বোর্ড অনুমোদিত অ্যাকশন প্ল্যান কমিশনে জমা দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অ্যাকশন প্ল্যান দাখিল না করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে পূর্ণ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


বেকারদের কর্মসংস্থানে ১৫০.৭৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বল্প আয়ের তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণে বাংলাদেশকে ১৫০.৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ সহায়তায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে নারী এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত জনগোষ্ঠীর ওপর।

রিকভারি অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অব ইনফরমাল সেক্টর এমপ্লয়মেন্ট (রেইজ) প্রকল্পের আওতায় এই অতিরিক্ত অর্থায়নের মাধ্যমে সারাদেশে আরও প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার যুবকের জন্য কর্মসংস্থান ও আয়বর্ধক সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর আগে এ প্রকল্পের আওতায় ২ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ উপকৃত হয়েছেন।

বিশ্বব্যাংকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রকল্পে অংশগ্রহণকারীরা দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, শিক্ষানবিশ (অ্যাপ্রেন্টিসশিপ), উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্রঋণের সুযোগসহ একটি সমন্বিত সেবা প্যাকেজ পাবেন। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে যুবক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা কর্মসংস্থান ও ব্যবসা সম্প্রসারণের বাধাগুলো অতিক্রম করতে পারবেন।

এ প্রকল্পের আওতায় নারীর ক্ষমতায়নে উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে মানসম্মত শিশুযত্ন (চাইল্ডকেয়ার) সেবার সুযোগ সৃষ্টি। পাশাপাশি জলবায়ু সহনশীল জীবিকাভিত্তিক কার্যক্রম চালু করা হবে, যাতে জনগোষ্ঠী জলবায়ুজনিত ঝুঁকি মোকাবিলা করতে পারে।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় পরিচালক গেইল মার্টিন বলেন, ‘একটি ভালো চাকরি একটি জীবন, একটি পরিবার ও একটি সমাজকে বদলে দিতে পারে। অথচ প্রতি বছর শ্রমবাজারে প্রবেশ করা বহু বাংলাদেশি তরুণ কাজের সুযোগ পায় না। পাশাপাশি দেশে কাজের মান, দক্ষতার ঘাটতি ও পেশাগত অমিলের মতো চ্যালেঞ্জও রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই অতিরিক্ত অর্থায়ন স্বল্পআয়ের পরিবারের আরও বেশি যুবক-যুবতী, বিশেষ করে নারী ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষের জন্য বাজারভিত্তিক দক্ষতা, প্রয়োজনীয় সম্পদ ও প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করবে, যা তাদের ভালো কর্মসংস্থান ও জীবিকার পথ সুগম করবে।’

এই অর্থায়নের ফলে প্রকল্পটির কার্যক্রম শহরকেন্দ্রিক সীমা ছাড়িয়ে গ্রামীণ এলাকাতেও সম্প্রসারিত হবে, যাতে সারাদেশের প্রান্তিক যুবক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা পেতে পারেন।

এ ছাড়া নারীদের জন্য মানসম্মত ও সাশ্রয়ী ঘরভিত্তিক শিশুযত্ন সেবার একটি পাইলট কার্যক্রম চালু করা হবে। এ লক্ষ্যে নারীদের প্রশিক্ষণ ও প্রারম্ভিক অনুদান দেওয়া হবে। শিশুযত্ন সেবার চাহিদা ও সরবরাহ—উভয় দিক বিবেচনায় নিয়ে এসব উদ্যোগ নারী শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ বাড়াবে এবং পরিচর্যা খাতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। একই সঙ্গে শিশুদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য ও বিকাশও উন্নত হবে।

নারীদের আত্মবিশ্বাস ও ক্ষমতায়ন বাড়াতে জীবনদক্ষতা প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। অতিরিক্ত অর্থায়নের আওতায় চাকরির মধ্যস্থতা কার্যক্রম জোরদার করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে চাকরি মেলা আয়োজন, সম্ভাব্য নিয়োগদাতাদের সঙ্গে প্রার্থীদের সংযুক্ত করা এবং বিপণন ও চুক্তি আলোচনায় সহায়তা প্রদান।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র সামাজিক সুরক্ষা অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্পের টিম লিডার আনিকা রহমান বলেন, ‘রেইজ প্রকল্প প্রমাণ করেছে যে লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জীবনে বাস্তব পরিবর্তন আনতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই নতুন অর্থায়নের মাধ্যমে আমরা কার্যকর উদ্যোগগুলো আরও সম্প্রসারণ, ক্ষুদ্রঋণের সুযোগ বাড়ানো এবং মানসম্মত শিশুযত্নের মতো উদ্ভাবনী সমাধান চালু করতে পারব—যার ফলে আরও বেশি যুবক ও নারী তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারবে।’

প্রকল্পটি ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা শিক্ষানবিশদের ৮০ শতাংশের বেশি তিন মাসের মধ্যেই কর্মসংস্থান পেয়েছেন। পাশাপাশি তরুণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আয় বৃদ্ধি ও উন্নত ব্যবসায়িক সাফল্যের কথা জানিয়েছেন।

২০২১ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে রেইজ প্রকল্প কোভিড-১৯-এ ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে পুনরুদ্ধার ঋণ ও প্রশিক্ষণ সহায়তা দিয়েছে, ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি প্রত্যাবর্তনকারী প্রবাসীকে পুনঃএকত্রীকরণ সহায়তার জন্য নিবন্ধন করেছে এবং ১ লাখ ২২ হাজারের বেশি উপকারভোগীকে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবা প্রদান করেছে। যাদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ নারী।

এই অতিরিক্ত অর্থায়নের ফলে রেইজ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের মোট সহায়তার পরিমাণ দাঁড়াল ৩৫০.৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।


খেজুর আমদানিতে বড় শুল্ক ছাড় দিল সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষের জন্য খেজুরের দাম নাগালের মধ্যে রাখতে বড় ধরনের শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে যে, খেজুর আমদানিতে বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ৪০ শতাংশ কমানো হয়েছে। মূলত রমজানে এই অতিপ্রয়োজনীয় ফলের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা এবং বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখাই এই পদক্ষেপের প্রধান লক্ষ্য।

এনবিআর-এর নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, খেজুর আমদানিতে কাস্টমস ডিউটি বা আমদানি শুল্ক আগের ২৫ শতাংশের পরিবর্তে এখন থেকে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই বিশেষ সুবিধা আগামী ৩১ মার্চ ২০২৬ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। জনগণের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে ২৩ ডিসেম্বর এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়।

শুল্ক হ্রাসের পাশাপাশি আমদানিকারকদের জন্য করের ক্ষেত্রেও বিশেষ ছাড় বহাল রাখা হয়েছে। বিগত বাজেটে খেজুরসহ সব ধরনের ফল আমদানির ওপর অগ্রিম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছিল, যা চলতি বছরেও কার্যকর থাকছে। এর ফলে খেজুর আমদানিতে অগ্রিম আয়করের ওপর ৫০ শতাংশ ছাড় পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মনে করছে, আমদানি শুল্ক এবং অগ্রিম আয়করে এই উল্লেখযোগ্য ছাড়ের ইতিবাচক প্রভাব খুব দ্রুতই বাজারে পরিলক্ষিত হবে। শুল্ক কমানোর ফলে আসন্ন রমজানে বাজারে খেজুরের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ ভোক্তারা অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে খেজুর কিনতে পারবেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই সরকার এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহায়ক পরিস্থিতি নিশ্চিতের আহ্বান ডিসিসিআই―র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বেসরকারি খাতের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক নীতিমালার সংষ্কার, রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসন ও অটোমেশন প্রবর্তন, লজিস্টিক খাতের উন্নয়ন, উদ্যোক্তাদের স্বল্পসুদে ঋণ প্রাপ্তির পাশাপাশি প্রক্রিয়া সহজীকরণ, শিল্প খাতে নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ, সর্বোপরি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীলের মাধ্যমে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা ও ঐকমত্যের আহ্ববান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সংগঠনের ৬৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভায় ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, প্রাক্তন সভাপতিবৃন্দ, প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতিবৃন্দ, প্রাক্তন সহ-সভাপতিবৃন্দ, প্রাক্তন পরিচালকবৃন্দ, সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা যোগদান করেন।

৬৪তম সাধারণ সভার ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংকট, শুল্ক হার বৃদ্ধি, সহায়ক রাজস্ব ব্যবস্থাপনার অনুপস্থিতি, সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি, স্থবির বিনিয়োগ, দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতি, আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবেশের অস্থিতিশীলতা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং চলমান জ্বালানি সংকটের কারণে অর্থনীতি বেশকিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।

তিনি বলেন, বেসরকারিখাতের স্থিতিশীলতা আনয়ন এবং নীতি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে চলতি বছর জুড়ে ৩১টি খাতভিত্তিক সেমিনার, নীতি সংলাপ, কর্মশালা ও ফোকাস গ্রুপ আলোচনার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে ৩৫টি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করেছে ঢাকা চেম্বার।

তিনি আরও বলেন, নীতিনির্ধারক, গবেষক ও শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তার লক্ষ্যে প্রথমবারের মত ‘অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক (ইপিআই)’-এর প্রবর্তন করেছে ডিসিসিআই, যা উৎপাদন ও সেবা খাতে ত্রৈমাসিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিবর্তন পরিমাপ করবে।

ডিসিসিআই’র এ সাধারণ সভার মুক্ত আলোচনা পর্বে ঢাকা চেম্বার প্রাক্তন সভাপতি আফতাব উল ইসলাম, এফসিএ, প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, প্রাক্তন পরিচালক ও আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন, প্রাক্তন পরিচালক এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান ও আলহাজ্ব মোহাম্মদ সারফুদ্দিন এবং মেসার্স ব্রান্ড বাংলা’র সত্ত্বাধিকারী রাজু আহমেদ মামুন প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন। সাধারণ সভাটি সঞ্চালনা করেন ডিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ড. এ কে এম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী।


ফায়ার সার্ভিস ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সমঝোতা স্মারক সই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষরিত হয়।

এই সমঝোতার আওতায় দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেপিআই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক ও এর আশপাশ এলাকার অগ্নিদুর্ঘটনায় দ্রুত সাড়া প্রদান করার লক্ষ্যে এখন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অভ্যন্তরে একটি স্যাটেলাইট ফায়ার স্টেশনের ন্যায় সার্বক্ষণিক জনবল ও গাড়ি-পাম্প মোতায়েন থাকবে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বিভিন্ন পদের ১৩ জন সদস্য গাড়ি-পাম্প ও সাজ-সরঞ্জামসহ এখানে অবস্থান করবেন।

ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে যুগ্ম পরিচালক মো. রিয়াদ ফারজান্দ (এইচআরডি-১) সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. নিয়ামুল কবির, সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. ফারুক হাওলাদার, মো. জবদুল ইসলামসহ ব্যাংকের বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তা এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, উপপরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মো. মামুনুর রশিদ, সহকারী পরিচালক কাজী নজমুজ্জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।


গাজীপুরে গার্মেন্টসের পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা ঘিরে গড়ে উঠেছে শতকোটির বাজার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজীপুরে তৈরি পোশাক কারখানার পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা ঘিরে গড়ে উঠেছে শতকোটি টাকার বাজার। দেশে ও বিদেশে নানা শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে এসব পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গাজীপুর মহানগর ও জেলাতে এক হাজারের বেশি গার্মেন্টস কারখানা থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টন পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা উৎপাদিত হচ্ছে। এসব ঝুট ও তুলা ক্রয়-বিক্রয় ও প্রক্রিয়া কাজে জড়িত রয়েছে শত শত ব্যবসায়ী ও হাজার হাজার শ্রমিক।

গাজীপুরের টঙ্গীর মিলবাজার, মাঝুখান, কালিয়াকৈরের পূর্ব চান্দরা, আমবাগ, ও শ্রীপুরের মাওনা এলাকায় পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা প্রক্রিয়া এবং ক্রয়-বিক্রয়ের সবচেয়ে বড় বাজার গড়ে উঠেছে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঝুট ও তুলার বাজার রয়েছে। স্থানীয়ভাবে এসব বাজার ঝুট পল্লী নামে পরিচিত।

টঙ্গীর মিলগেট ঝুট ও তুলার বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আবু সাকের বাসসকে জানান, প্রতিদিন আনুমানিক ২ থেকে ৩ হাজার টন ঝুট ও তুলা টঙ্গীর মিল বাজারেই ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। পরিত্যাক্ত এসব ঝুট ও তুলা স্থানীয় স্পিনিং মিল ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়। এছাড়া ভারত, চীন, তুরস্ক, হংকং ও যুক্তরাষ্ট্রেও পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা রপ্তানি হচ্ছে।

ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভার এলাকায় পরিত্যক্ত ঝুট থেকে রিসাইক্লিং (পুণব্যবহারযোগ্য) তুলা ও সুতা দিয়ে ম্যাট্রেস, গাড়ির সিট, তোশক, বালিশ, কুশন, পুতুল, মপ, ডাস্টার, কার্পেট ব্যাকিং, শপিং ব্যাগ ও ফ্লোর ম্যাটসহ নানাবিধ নিত্যব্যবহার্য পণ্য তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে।

নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ এলাকায় রিসাইক্লিং তুলা ও সুতা দিয়ে তৈরি হচ্ছে তুলনামূলক কম মূল্যের বিছানার চাদর, গামছা ও লুঙ্গি। নোয়াখালী ও চট্টগ্রামে গড়ে উঠেছে শিপইয়ার্ড ও শিল্প কারখানায় ওয়াইপিং র‌্যাগ তৈরি ও রপ্তানিযোগ্য ঝুট প্রসেসিং কারখানা।

এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো (ইপিবি) এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে পরিত্যাক্ত গার্মেন্টস ঝুট ও তুলার রপ্তানি গত কয়েক বছর ধরে বাড়ছে এবং এর প্রধান গন্তব্য দেশ হচ্ছে ভারত, চীন, তুরস্ক, হংকং, যুক্তরাষ্ট্রে ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমুহে।

ইপিবি প্রদত্ত তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে পরিত্যাক্ত গার্মেন্টস ঝুট ও তুলা থেকে রপ্তানি আয় আসে প্রায় ৪১১.১২ মিলিয়ন টাকা।

ঝুট ব্যবসায়ী সমিতির নেতা আবু সাকের বলেন, গাজীপুর হচ্ছে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের বৃহত্তম কেন্দ্রগুলোর একটি। তাই এখানে তৈরি পোশাকের উৎপাদন ও সংশ্লিষ্ট ঝুট ও তুলার বর্জ্য খুব বেশি পরিমাণে উৎপন্ন হয়।

তিনি বলেন, যদি স্থানীয়ভাবে আধুনিক রিসাইক্লিং ব্যবস্থা বাড়ানো হয় তাহলে এই খাতে ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন বা তারও বেশি রপ্তানি আয় করা সম্ভব।

তৈরি পোশাক শিল্প ও এই শিল্পের পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক সূত্রের মতে, অপরিকল্পিত গুদামজাত প্রক্রিয়ার ফলে মাঝেমধ্যেই ঝুট ও তুলার গুদামে অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনাগুলো এই খাতের জন্য বড় ধরণের হুমকি। এছাড়া প্রভাবশালী একটি গোষ্ঠীর এই খাতে অনৈতিক হস্তক্ষেপের ফলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যদি উল্লেখিত সমস্যাগুলো দূরীকরণে এই খাতে সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা যায় তাহলে দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বিকাশে পরিত্যক্ত ঝুট ও তুলার বাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।

সূত্র : বাসস


বিপিআইএ’র সভাপতি মোশারফ, মহাসচিব সাফির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিআইএ) ২০২৫-২৭ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে পোলট্রি পেশাজীবী পরিষদ নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। নির্বাচনে ৫৩৫ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আস্থা ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসাইন চৌধুরী। আর মহাসচিব পদে ৫০৭ ভোট পেয়ে কোয়ালিটি ব্রিডার্স লিমিটেডের পরিচালক মো. সাফির রহমান নির্বাচিত হয়েছেন।

সহ-সভাপতি হিসেবে ডায়মন্ড অ্যাড লিমিটেডের সিইও মো. আসাদুজ্জামান এবং খান এগ্রো ফিড প্রডাক্টের প্রোপ্রাইটর মো. সৈয়দুল হক খান নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া এ নির্বাচনে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে এনার্জি টেকনোলোজির প্রোপাইটর মোস্তফা জাহান, যুগ্ম মহাসচিব পদে মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ও অঞ্জন মজুমদার, প্রচার সম্পাদক পদে শফিকুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে গাজী নূর আহাম্মাদ নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাহী সদস্য হিসেবে এ নির্বাচানে জয়ী হয়েছেন শাহ ফাহাদ হাবিব, মিজানুর রহমান মিন্টু, রাশিদ আহামাদ, মোহাম্মদ জহির উদ্দিন, খায়রুল বাসার সাগর, ফয়েজ রাজা চৌধুরী, মো. সালাউদ্দিন মুন্সী, মো. সোলেমান কবীর, মো, ইমরান হোসাইন ও নাবিল আহামেদ।

গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) মতিঝিল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কাম-কমিউনিটি সেন্টারে এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে মোট ৫৭৪ জন ভোট দেন।

নবনির্বাচিত সভাপতি মোশারফ হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘খামারিদের যে আকাঙ্ক্ষা রয়েছে সেই আকাঙ্ক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা কাজ করে যেতে চাই। পোলট্রি খাতকে আরও কীভাবে সমৃদ্ধ করতে পারি সে লক্ষ্যেও আমরা কাজ করে যাব। পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে কীভাবে পোলট্রিশিল্পকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া যায় সেটিও আমাদের অন্যতম লক্ষ্য থাকবে।

তিনি জানান, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন দেশের পোলট্রি খাতের উন্নয়ন, সুরক্ষা ও টেকসই বিকাশে নিবেদিত একটি শীর্ষস্থানীয় সংগঠন। যেখানে খামারি, উদ্যোক্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং আধুনিক প্রযুক্তি, সুষ্ঠু নীতিমালা ও মানসম্মত উৎপাদনের মাধ্যমে শিল্পের অগ্রগতিতে কাজ করে যাচ্ছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব নির্ধারিত হয়েছে, যা আগামী দুই বছর পোলট্রি খাতের দিকনির্দেশনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।


একনেকে ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার ( ২৩ ডিসেম্বর) পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মঙ্গলবার ( ২৩ ডিসেম্বর) ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২২টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ৩০ হাজার ৪৮২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ১ হাজার ৬৮৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৪ হাজার ২৪৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

একনেক চেয়ারপারসন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে নতুন প্রকল্প ১৪টি, সংশোধিত প্রকল্প ৫টি এবং মেয়াদ বৃদ্ধি প্রকল্প ৩টি। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, খাদ্য এবং ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, পানিসম্পদ এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এবং ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা সভায় অংশগ্রহণ করেন।

সভায় অনুমোদিত ২২টি প্রকল্প হলো: সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ৩টি প্রকল্প। ১. ‘কর্ণফুলী টানেল (আনোয়ারা) থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার জাতীয় মহাসড়কের গাছবাড়িয়া পর্যন্ত সংযোগ সড়ক (জেড-১০৪০) উন্নয়ন’ প্রকল্প, ২. ‘দিনাজপুর সড়ক বিভাগাধীন হিলি (স্থলবন্দর)-ডুগডুগি ঘোড়াঘাট জাতীয় মহাসড়ক (এন-৫২১) যথাযথ মানে উন্নীতকরণসহ ৩টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বিদ্যমান সরু/জরাজীর্ণ কালভার্টগুলো পুনর্নির্মাণ এবং বাজার অংশে রিজিডপেভমেন্ট ও ড্রেন নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, ৩. ‘ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তর প্রকল্প: সাপোর্ট টু ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘নারায়ণগঞ্জস্থ আলীগঞ্জে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৮টি ১৫ তলা ভবনে ৬৭২টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ৫টি প্রকল্প-১. ‘ঢাকা ওয়াসা প্রশিক্ষণ এবং গবেষণা একাডেমি স্থাপন’ প্রকল্প, ২. ‘সিলেট সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও অবকাঠামো নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প, ৩. ‘জলবায়ু সহনশীল জীবনমান উন্নয়ন (সিআরএএলইপি)’ প্রকল্প, ৪. ‘পটুয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প, ৫. ‘সিলেট বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্প।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প: ১. ‘মোংলা কমান্ডার ফ্লোটিলা ওয়েস্ট (কমফ্লোট ওয়েস্ট)-এর অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, ২. ‘সাভারে আর্মি ইনস্টিটিউট অব ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ প্রকল্প।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্প, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘দুস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র পুনর্নির্মাণ কোনাবাড়ি, গাজীপুর (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘অ্যাডুকেশন অ্যান্ড রিচার্জ ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্স নার্সিং অ্যাডুকেশন অ্যান্ড রিচার্জ (এনআইএএনইআর)’ প্রকল্প।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প: ১. ‘হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন’ প্রকল্প, ২. ‘বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের উন্নয়ন (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৪টি প্রকল্প: ১. ‘রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কর্ণফুলী এবং সংযুক্ত নদীগুলোর (কাচালং, রাইখিয়ং ও শলকনদী) টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্প, ২. ‘গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনর্বাসন’ প্রকল্প, ৩. ‘সুরমা-কুশিয়ারা নদী অববাহিকার উন্নয়ন এবং বন্যা ও সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (১ম পর্যায়)’ প্রকল্প, ৪. ‘ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইনহ্যান্সমেন্ট’ প্রকল্প।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘বগুড়া কৃষি অঞ্চলের টেকসই কৃষি উন্নয়ন’ প্রকল্প, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ‘দারুল আরকাম ইসলামী শিক্ষা পরিচালনা ও সুসংহতকরণ (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।

সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা কর্তৃক ইতোমধ্যে অনুমোদিত ৫০ কোটি টাকার কম ব্যয় সংবলিত ১০টি প্রকল্প সম্পর্কে একনেক সভায় অবহিত করা হয়।

সূত্র : বাসস


banner close