সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
১৪ পৌষ ১৪৩২

কৃষিতে ভর্তুকি দরকার ৪০ হাজার কোটি টাকা

জাহাঙ্গীর আলম
আপডেটেড
২৫ মার্চ, ২০২৩ ০৯:০৯
প্রকাশিত
প্রকাশিত : ২৫ মার্চ, ২০২৩ ০৯:০৭
  • সাক্ষাৎকার

নতুন বাজেটে কৃষি খাতে ভর্তুকি কমপক্ষে ৪০ হাজার কোটি টাকা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি অর্থনীতিবিদ ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেছেন, বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ যাই বলুক না কেন, বর্তমান বিশ্ব পেক্ষাপটে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে এ খাতে ভর্তুকি বাড়াতেই হবে। চলতি বাজেটে কৃষিতে ১৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি আছে। আগামী বাজেটে তা বাড়িয়ে কমপক্ষে ৪০ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে যেতে হবে।

গতকাল শুক্রবার দৈনিক বাংলাকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে সরকারের কাছে এ সুপারিশ করেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন দৈনিক বাংলার বিজনেস এডিটর আবদুর রহিম হারমাছি

সারা দেশে বোরো ধানের চাষাবাদ চলছে পুরোদমে। কেমন খবর পাচ্ছেন, এবার বোরোর ফলন কেমন হবে?
বিশ্বব্যাপী নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে আমাদের জন্য ভালো খবর যে, আমনের মতো বোরোর ফলনও ভালোই হবে। এখন পর্যন্ত সারা দেশ থেকে যে খবর পাচ্ছি, কৃষকরা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে বোরো চাষে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। যদি আবহাওয়া ভালো থাকে, কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না দেখা দেয়, তাহলে এবার বোরো ধান থেকে ২ কোটি ২০ লাখ টন চাল উৎপাদিত হবে, যা হবে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। গত মৌসুমে দুই কোটি টনের কিছু বেশি হয়েছিল। এবার ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। চাষের দিক দিয়েও রেকর্ড; এর আগে কখনোই এত বেশি জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়নি।

বেশি জমিতে বোরো ধানের চাষ হওয়ার কারণ কী বলে আপনি মনে করেন?
কয়েক বছর ধরে কৃষক তার উৎপাদিত ধানের ভালো দাম পাচ্ছেন। সে কারণেই ধান চাষে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন। এ ক্ষেত্রে একটি কথা আমি বলতে চাই। দয়া করে কেউ রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখবেন না। দুই বছরের করোনা মহামারির পর এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের ছোট-বড় সব দেশের অর্থনীতিই সংকটে পড়েছে। খাদ্যের দাম বেড়ে গেছে। অনেক দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে বিশ্ব খাদ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও অর্থনীতিবিদরা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই আশঙ্কা করছিলেন। তখন থেকেই আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখবেন না’ বলে দেশবাসীকে বারবার অনুরোধ করে আসছেন। আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বান কাজে লেগেছে। কৃষকরা তাদের সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগ করে এবার বোরো চাষে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।

বোরোর ফলন ভালো হলে আমাদের খাদ্যনিরাপত্তা-ব্যবস্থা কেমন হবে?
এখানে আমি একটা বিষয় পরিষ্কার করে বলতে চাই, যদি আমরা বোরোর বাম্পার ফলন ফলাতে পারি, তাহলে আগামী এক বছর আমাদের খাদ্য নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না; একদম করতে হবে না। এই তো আর ১৫-২০ দিন পর থেকে বোরো ধান উঠতে শুরু করবে। প্রথমে হাওরাঞ্চলের ধান উঠবে। এরপর দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ধান তুলবেন কৃষক। চলবে মে মাস পর্যন্ত। সরকার যদি কৃষকদের কাছ থেকে ভালোভাবে ধান-চাল সংগ্রহ করে, কৃষক যদি তাদের উৎপাদিত ধানের প্রকৃত দাম পান তাহলে খাদ্যনিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হবে। আগামী মৌসুমগুলোতেও কৃষক ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে ধান চাষ করবেন। কিন্তু এই ক্ষেত্রে আমরা সব সময়ই এক ধরনের অব্যবস্থাপনা দেখতে পাই। মৌসুমের সময় একশ্রেণির ব্যবসায়ী-মজুতদারকারী কৃষকের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে মজুত করে রাখে। পরে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বেশি দামে বিক্রি করে। এর ফলে বাজারে চালের দাম বেড়ে যায়। এই যে, আপনার বাম্পার ফলনের পরও বাজারে চালের দাম কমেনি। এই মজুতদার-ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণেই কিন্তু চালের দাম কমেনি। এখানে আমি সরকারকে কঠোর নজরদারি করতে বলব। সিন্ডিকেট করে, কারসাজি করে, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কেউ যাতে চালের দাম বাড়িয়ে দিতে না পারে- সেদিকে যেমন কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে; তেমনি কৃষক যাতে তার উৎপাদিত ধানের ন্যায্য দাম পান, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যদি সরকারকে ধান-চাল সংগ্রহের দাম কিছুটা বাড়িয়ে দিতে হয়, দিতে হবে।

জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ, সারসহ কৃষি উৎপাদনের অন্যান্য উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে কৃষকদের জন্য কী ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
আপনি ঠিকই বলেছেন, কৃষকের উৎপাদন খরচ আসলেই বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম ৫০ শতাংশের মতো বেড়েছে। বিদ্যুতের দাম কয়েক দফায় বেড়েছে। সারের দাম বেড়েছে। কৃষি মজুরিও আগের থেকে অনেক বেশি লাগে। বোরো ধানের ভালো ফলনের জন্য কিন্তু পুরোপুরি পানি সেচের ওপর নির্ভর করতে হয়। আর এই সেচের জন্য কৃষকদের এবার বেশি খরচ করতে হচ্ছে। তাই আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করব কৃষকের নগদ সহায়তা দিতে। আমার মনে আছে, ২০০৯-১০ অর্থবছরে এই আওয়ামী লীগ সরকারই ক্ষমতায় ছিল। তখন কৃষি উৎপাদন বাড়াতে প্রতি কৃষককে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত নগদ দেয়া হয়েছিল। তাতে ভালো ফল পাওয়া গিয়েছিল। এবারও আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব- এই বোরো ওঠার আগে আগেই প্রতি কৃষককে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা নগদ দেয়া হয়। তাতে তারা আর্থিকভাবে সহায়তা পাবেন। অন্য কারও কাছে বা এনজিওদের কাছ থেকে ঋণ নিতে হবে না। ধান ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কম দামে সেই ধান বিক্রি করে দিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে হবে না। এ বিষয়টিকে আমি সরকারকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে বিনীত অনুরোধ করছি।

কৃষকদের জন্য ১০ টাকায় যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, সেই অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকাটা চলে যাবে। এতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজটা করা সম্ভব হবে। কৃষকরা খুশি হবেন। রোজা শুরু হয়ে গেছে। ঈদের আগেই যদি টাকাটা কৃষকরা পেতেন, তাহলে খুবই ভালো হতো। প্রধানমন্ত্রী ‘ঈদ উপহার’ হিসেবেও এই টাকাটা কৃষকদের দিতে পারেন। আমি আবারও এই বিষয়টি বিবেচনা করতে সরকারের নীতিনির্ধারকদের অনুরোধ করছি।

কিন্তু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের যে ঋণ দিচ্ছে তাতে ভর্তুকি কমানোর শর্ত দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকও একই কথা বলছে। সরকারও ভর্তুকি কমানোর কথা বলছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ যুগ যুগ ধরেই এই একই কথা বলে আসছে। তারা শুধু আমাদের মতো দেশের কৃষি খাতে ভর্তুকি কমানোর কথা বলে। অথচ উন্নত দেশগুলো তাদের মূল জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) ১০ শতাংশের বেশি কৃষি খাতে ব্যয় করে। আমরা সেখানে ৫ শতাংশও ব্যয় করি না। একটা কথা আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, এই যে আমরা বছরের পর বছর কৃষি খাতে ভর্তুকি দিচ্ছি, সে জন্যই কিন্তু আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি; খাদ্য নিয়ে আমাদের খুব বেশি চিন্তা করতে হয় না। এই শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন খাদ্যের জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে, আমরা কিন্তু বেশ ভালো আছি। আমি বলব খাদ্যের দিক দিয়ে খুবই ভালো আছি। এদিক দিয়ে আমরা সৌভাগ্যবান।

তাই আমি বলব আমাদের কৃষি খাতে ভর্তুকি দিতেই হবে, অব্যাহত রাখতে হবে। যুগ যুগ ধরে রাখতে হবে। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ যে যাই বলুক না কেন, কারও কথা শোনা যাবে না। বর্তমান বিশ্ব পেক্ষাপটে কৃষিতে ভর্তুকি আরও বাড়াতে হবে। আমি চাই, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের নতুন বাজেটে কৃষি খাতে ভর্তুকি কমপক্ষে ৪০ হাজার কোটি টাকা রাখা হোক। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি খাতে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। এটা বাড়িয়ে নতুন বাজেটে কমপক্ষে ৪০ হাজার কোটি টাকা করতে হবে। অন্যান্য খাতে ভর্তুকি কমানোর চিন্তাভাবনা করা হলেও কৃষিতে কমানো যাবে না। উল্টো বাড়াতে হবে। বর্তমান কঠিন সময়ে বাড়াতেই হবে। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ যাই বলুক না কেন, বর্তমান বিশ্ব পেক্ষাপটে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে এ খাতে ভর্তুকি বাড়াতেই হবে।

আবার বোরো প্রসঙ্গে আসি। বোরো ধানের ভালো ফলন নিয়ে কেন আপনি এতটা আশাবাদী হচ্ছেন?
আমি কৃষি অর্থনীতিবিদ। সব ধরনের কৃষি চাষ নিয়েই আমি খোঁজখবর রাখি। তবে এবার তীক্ষ্ণ নজর রাখছি। ‘অনেক দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে’ এমন সব পূর্বাভাসের কারণে বাংলাদেশ খাদ্য পরিস্থিতি আগামী দিনগুলোতে কেমন হবে- এসব জানার জন্যই এবার আগ্রহ নিয়ে একটু বেশি খেয়াল রাখছি।

জানুয়ারির শুরুতে ঘন কুয়াশার কারণে উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় বোরো ধানের বীজতলায় সমস্যা হয়েছিল। কিন্তু দ্রুত আবহাওয়া পরিবর্তনে খুব একটা সমস্যা হয়নি। কেটে যায় চাষিদের আশঙ্কা। বরং এর চেয়েও বড় সুখবর রয়েছে জাতীয় পর্যায়ে। লক্ষ্যমাত্রার থেকেও এ বছর বোরো ধানের বেশি বীজতলা করেছেন চাষি। অর্থাৎ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি মৌসুমে বোরোর উৎপাদনও বাড়ছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, এবার দেশে ২ লাখ ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর বীজতলা করা হয়েছে। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৪১ হাজার হেক্টর। বোরো ধান চাষের পুরো মৌসুম চলছে এখন। গ্রামের দিকে গেলে সবুজ আর সবুজ দেখতে পাবেন যে কেউ। মনটা ভরে যাবে। এ বছর সারা দেশে ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হচ্ছে। দেশে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৯ লাখ ৫১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ টন। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ২ কোটি ১৫ লাখ টন। সবকিছু ভালোমতো চললে আমার মনে হয় এবার বোরোর উৎপাদন সোয়া দুই কোটি টনে গিয়ে পৌঁছতে পারে।

তাহলে তো এবার বোরো ধান উৎপাদনে রেকর্ড হবে। খুব বেশি চাল আমদানি করতে হবে না। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ কম পড়বে। আপনার কী মনে হয়?
আপনি ঠিক বলেছেন, এখন সারা দেশ থেকে যে খবর পাচ্ছি, তাতে মনে হচ্ছে- এবার বোরো উৎপাদন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি হবে; রেকর্ড হবে। আর এটাই আমাদের স্বস্তি দেবে। আমাদের অর্থনীতিকে স্বস্তি দেবে। খুব বেশি চাল আমদানি করতে হবে না। এতে আমাদের অর্থনীতির সবচেয়ে স্পর্শকাতর সূচক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সাশ্রয় হবে। আশা করা হচ্ছে, চলতি বছর ২ কোটি ২০ থেকে ২৫ লাখ টন বোরো উৎপাদন হবে, যা অন্যান্য বছরের থেকে সর্বোচ্চ। ধানের দাম, উন্নত প্রযুক্তি ও বীজ এবং সরকারের বড় প্রণোদনার কারণে কৃষক বোরোর প্রতি আগ্রহী হয়েছেন। তারা এ বছর দরদ দিয়ে বোরো আবাদ করছেন। তাদের মধ্যে যে অনীহা অন্যান্য বছর তৈরি হতো, সেটা একদমই নেই। আমি মাঠে গিয়েছি। তাদের এ আন্তরিকতা বোরোতে বড় সফলতা আনবে এবার।

সরকারও এ বছর বোরোর উৎপাদন বাড়াতে বেশ আন্তরিক। বোরো ধানের আবাদ ও উৎপাদন বাড়ানোর জন্য চলতি মৌসুমে প্রায় ১৭০ কোটি টাকার প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। সারা দেশের ২৭ লাখ কৃষক এ প্রণোদনার আওতায় বিনা মূল্যে বীজ ও সার পাচ্ছেন। তিনটি ক্যাটাগরিতে দেয়া হচ্ছে এ প্রণোদনা। হাইব্রিড ধানের উৎপাদন বাড়াতে প্রায় ৮২ কোটি টাকার প্রণোদনার আওতায় ১৫ লাখ কৃষকের প্রত্যেককে দেয়া হচ্ছে বিনা মূল্যে দুই কেজি ধানবীজ। উচ্চফলনশীল জাতের উৎপাদন বাড়াতে প্রায় ৭৩ কোটি টাকার প্রণোদনার আওতায় উপকারভোগী কৃষক ১২ লাখ। এতে একজন কৃষক এক বিঘা জমিতে চাষের জন্য প্রয়োজনীয় ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনা মূল্যে পাবেন।

এ ছাড়া কৃষিযন্ত্র ব্যবহারের সুবিধার্থে একটি মাঠে একই সময়ে ধান লাগানো ও কাটার জন্য ১৫ কোটি টাকার প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। এর আওতায় ৬১টি জেলায় ১১০টি ব্লক বা প্রদর্শনী স্থাপিত হবে। প্রতিটি প্রদর্শনী হবে ৫০ একর জমিতে, খরচ হবে ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এ থেকে বোঝা যায়, কৃষি মন্ত্রণালয় যেকোনো উপায়ে এ বছর বোরোর উৎপাদন বাড়াতে চায়। সে কারণে কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বাজেট কৃষি পুনর্বাসন-সহায়তা খাত থেকে বড় প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে।

এসবের বাইরেও আমি ছোট-বড় সব কৃষককে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা নগদ দিতে সরকারকে অনুরোধ করছি। কেননা আমি নিজ উদ্যোগে দেখেছি, জ্বালানি তেল, সার, বিদ্যুৎসহ অন্য সব উপকরণের দাম বাড়ায় এক বিঘা জমিতে বোরো চাষের খরচ কমপক্ষে ১ হাজার টাকা বেড়েছে। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কৃষকদের নগদ টাকা দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

তাহলে বলা যায় বোরো ধান উঠলে বাজারে চালের দাম কমবে?
চালের দাম আসলে অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। কৃষক তো আর সরাসরি বাজারে চাল বিক্রি করেন না। বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে সেই ধান থেকে চাল করে বাজারে বিক্রি করে। এ ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের ঘটনা ঘটে, কারসাজি করে চালের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়। সরকার বাজার ভালোভাবে মনিটর না করার কারণেই কিন্তু আমনের বাম্পার ফলনের পরও চালের দাম কমছে না। উল্টো কখনো কখনো বাড়তে দেখা গেছে।

ভালো খবর হচ্ছে, সরকারি গুদামগুলোতে এখন ২০ লাখ টন খাদ্য মজুত আছে। এই মজুত অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মজুত বেড়ে ২০ লাখ ৫ হাজার টনে উঠেছিল, এরপর তা কমতে কমতে মে মাসে ১২ লাখ টনে নেমে এসেছিল। অভ্যন্তরীণ ধান-চাল সংগ্রহ এবং চাল আমদানির ওপর ভর করে গড়ে উঠেছে এই মজুত। এরই মধ্যে কিন্তু বোরো উঠতে শুরু করবে। শুরু হবে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান। তখন মজুত আরও বেড়ে যাবে। আপৎকালীন সংকট মোকবিলার জন্য আর কোনো চিন্তা করতে হবে না। আগামী এক বছর খাদ্য নিয়ে আমাদের কোনো চিন্তা করতে হবে না।

বর্তমান মজুত খাদ্যনিরাপত্তা বিষয়ে সরকারকে সুদৃঢ় অবস্থানে নিয়ে এসেছে। তবে স্বস্তিদায়ক মজুত গড়ে উঠলেও বাজারে চালের দাম কিন্তু কমছে না। ৫৫ টাকা কেজির নিচে বাজারে কোনো চাল পাওয়া যায় না। সরু চাল কিনতে লাগে ৮০ টাকা। এতে শুধু গরিব মানুষ নয়, মধ্যবিত্তেরও সংসার চালানো কঠিন হয়ে উঠেছে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাচ্ছে। তিন-চার মাস কমার পর ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশে উঠেছে। রোজার কারণে মার্চ মাসে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে বলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন। শুধু চাল নয়, অন্য সব পণ্যের দামও বেড়েই চলেছে। পরিবহন, চিকিৎসাসহ অন্য সব খরচ বেড়েছে মানুষের।

তাই আমি মনে করি, খাদ্য মজুত বাড়ানোর পাশাপাশি বাজারের আগুন নেভাতেও সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত। আমরা কিন্তু এতদিন এই কাজটি করতে পারিনি। আমরা কোনো সিন্ডিকেট ভাঙতে পারিনি। চালের বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে পারিনি। ভোজ্যতেল-চিনি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি সরকার। কখনো কখনো মনে হয়, শুধু দেশের মানুষ নয়, সরকারও এই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। সরকার চিনির দাম বেঁধে দিচ্ছে; তার চেয়ে বেশি দামে বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে। ধানের বাম্পার ফলন হচ্ছে; কিন্তু চালের দাম কমছে না। উল্টো বাড়ছে। এভাবে আর চলতে পারে না। সরকারকে কঠোর হতে হবে। কারণ ছাড়া পণ্যের দাম কেন বাড়ছে, সেটার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কেউ কারসাজি করে বা সিন্ডিকেট গড়ে তুলে দাম বাড়িয়ে দিয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। উৎপাদন বাড়বে, মজুত বাড়বে। দাম কমবে না- এটা মেনে নেয়া যায় না।


রপ্তানিতে আরও তিন বছর নগদ সহায়তা চান বস্ত্রকল মালিকরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রপ্তানি উৎসাহিত করতে সরকারের দেওয়া নগদ সহায়তা আরও অন্তত তিন বছর অব্যাহত রাখার অনুরোধ জনিয়েছে বস্ত্রকলের মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের কাছে পাঠানো আলাদা চিঠিতে এই অনুরোধ জানান বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল। কেন এই অনুরোধ করা হচ্ছে, তা তুলে ধরা হয়েছে চিঠিতে।

চিঠিতে বিটিএমএর পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার মূল্যমানের পতন, গ্যাসের দাম ২৫০ শতাংশ ও শ্রমিকের মজুরি ৭০ শতাংশ বেড়েছে। এর সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, শ্রমিক অসন্তোষ, প্রয়োজনীয় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাবে মিলগুলো সক্ষমতা অনুযায়ী উৎপাদন করতে পারছে না। এ কারণে বস্ত্রকলগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখে রয়েছে। এসব কারণে রপ্তানিতে নগদ সহায়তা আরও অন্তত তিন বছর বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত, পণ্য রপ্তানিতে প্রণোদনার বর্তমান সময়সীমা আগামী ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বশেষ গত জুলাই মাসে প্রণোদনা কমিয়ে নতুন সার্কুলার জারি করে। এর পর থেকে রপ্তানিমুখী বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা ১ দশমিক ৫০ শতাংশ, ইউরো অঞ্চলে বস্ত্র খাতের রপ্তানিকারকদের জন্য বিদ্যমান দেড় শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা দশমিক ৫০ শতাংশ, রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা ৩ শতাংশ রয়েছে। এ ছাড়া বস্ত্র খাতে নতুন পণ্য বা বাজার সম্প্রসারণে প্রচলিত বাজারের বাইরে অন্য বাজারের জন্য ২ শতাংশ ও তৈরি পোশাক খাতে দশমিক ৩০ শতাংশ বিশেষ নগদ সহায়তা রয়েছে।


লেনদেন কমলেও বাজার মূলধন বাড়লো হাজার কোটি টাকা

গত সপ্তাহের শেয়ারবাজারে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসের মধ্যে দুই কার্যদিবসে ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে, বিপরীতে দুই কার্যদিবসে দরপতন হয়। এরপরও সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যাক প্রতিষ্ঠান। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে মূল্যসূচক। তবে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৪১টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির। আর ১০১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ, লেনদেনে অংশ নেওয়া ৬২ দশমিক ৪৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়েছে।

দাম বাড়ার তালিকা বড় হওয়ায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ, সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৭ কোটি টাকা বা দশমিক ১৫ শতাংশ।

বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে প্রধান মূল্যসূচকও বেড়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৫২ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৭ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৯ শতাংশ। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ২২ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২২ শতাংশ।

এদিকে, গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের গতি কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৫৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৮৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা বা ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সায়হান কটনের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ।

এছাড়া, লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং, লাভেলো আইসক্রিম, রহিমা ফুড, মুন্নু ফেব্রিক্স, ফাইন ফুড এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।


চলতি বছর বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

বিশ্ববাজারে তেলের দাম আরও কমেছে। পশ্চিমা দেশগুলোর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবার ব্রেন্ট ক্রুড ও ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম উভয়ই কমেছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বৈঠকের আগে তেলের দাম কমল। এই বৈঠকের আগে বাজারের ধারণা, বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়বে।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্সের দাম ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলার ৬৪ সেন্টে নেমে এসেছে। সেই সঙ্গে ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমে ৫৬ ডলার ৭৪ সেন্টে নেমে এসেছে।

চলতি বছর তেলের দাম অনেকটাই কমেছে। বাস্তবতা হলো, গত ১৬ ডিসেম্বর তেলের দাম পাঁচ বছরের মধ্যে প্রায় সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। এরপর বাজারে সরবরাহ–সংকটের আশঙ্কায় দাম কিছুটা বাড়ে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে চলতি বছর ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ১৯ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ২১ শতাংশ কমেছে।

বাস্তবতা হলো, ২০২০ সালের পর চলতি বছরে তেলের দাম সবচেয়ে বেশি কমবে—এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অর্থনীতির ধীরগতির কারণে বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা কমে। সেই সঙ্গে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন বাড়তে থাকায় আগামী বছরে বাজারে অতিরিক্ত সরবরাহের সম্ভাবনা আছে। এই বাস্তবতায় তেলের দাম কমছেই।

রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয় কি না, বিনিয়োগকারীদের নজর এখন সেদিকেই। শান্তিচুক্তি হলে রাশিয়ার তেল খাতে আরোপিত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। ফলে বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়বে।

যুদ্ধ থামানোর আলোচনায় এখন সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে জমি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রোববার ফ্লোরিডায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন। জানা গেছে, ২০ দফা–সংবলিত শান্তিচুক্তির কাঠামো ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা-সংক্রান্ত চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কাছাকাছি।

বৈঠকের ঘোষণা দিয়ে জেলেনস্কি বলেন, নতুন বছরের আগেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব। একই সঙ্গে তিনি জানান, রাশিয়া যদি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, তাহলে প্রস্তাবিত শান্তি কাঠামো নিয়ে গণভোট আয়োজন করতেও তিনি প্রস্তুত।

এদিকে ক্রেমলিন জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব পাওয়ার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বৈশ্বিক তেল মজুত বৃদ্ধি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া শান্তি আলোচনায় সামান্য অগ্রগতি—এ দুটি কারণে তেলের দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।


সব স্থলবন্দরের মাশুল বাড়ছে ৫ শতাংশ

১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারের নতুন সিদ্বান্ত অনুযায়ী দেশের সব স্থলবন্দরের সেবা মাশুলের হার ৫ শতাংশ বাড়ছে। প্রতিটি সেবার বিপরীতে কর, টোল, মাশুলের পরিমাণ আগের চেয়ে এই হারে বেড়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে নতুন এই মাশুল কার্যকর করা হবে।

এ নিয়ে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। অন্য স্থলবন্দরের তুলনায় বেনাপোল স্থলবন্দরে মাশুল কিছুটা বেশি। তাই বেনাপোল বন্দরের জন্য আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

বেনাপোল স্থলবন্দরে ২৭ ধরনের সেবার বিপরীতে মাশুল আদায় করা হয়। যেসব যাত্রী বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহার করবেন, তাদের জন্য ২০২৫ সালে মাশুলের পরিমাণ ৪৯ টাকা ৭৯ পয়সা। ২০২৬ সালের জন্য বাড়িয়ে ৫২ টাকা ২৭ পয়সা করা হয়েছে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি করা বাস, ট্রাক ও লরি প্রবেশ করলে এখন ১৮৪ টাকা ৭০ পয়সা দিতে হবে। আগে এর পরিমাণ ছিল ১৭৫ টাকা ৯০ পয়সা। মোটর কার, জিপ, পিকআপ, থ্রি-হুইলারের জন্য মাশুল ১১০ টাকা ৮২ পয়সা। মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলের জন্য নতুন মাশুল ৩৬ টাকা ৯৫ পয়সা।

বেনাপোল স্থলবন্দরে ওজন মাপার যন্ত্র ব্যবহারের মাশুল ট্রাক, লরিতে দিতে হবে ৮৮ টাকা ৬৫ পয়সা। অন্যদিকে কাগজপত্র প্রক্রিয়াকরণ মাশুল ১৯৫ টাকা ৭ পয়সা। কোনো যানবাহন ইয়ার্ডে সারা রাত থাকলে ১১১ টাকা ৪৯ পয়সা। এ ছাড়া গুদামে পণ্য রাখলে তার মাশুল বেড়েছে পণ্য রাখার সময় অনুযায়ী। এভাবে সব ধরনের মাশুলের পরিমাণই বেড়েছে।

বেনাপোল ছাড়া অন্য স্থলবন্দরগুলোতেও মাশুল বেড়েছে ৫ শতাংশ হারে। যেসব যাত্রী বেনাপোল ছাড়া অন্য স্থলবন্দর ব্যবহার করবেন, তাদের জন্য ২০২৫ সালে মাশুলের পরিমাণ ছিল ৪৯ টাকা ৭৯ পয়সা। নতুন বছরের জন্য তা বাড়িয়ে ৫২ টাকা ২৭ পয়সা করা হয়েছে।

বেনাপোল স্থলবন্দর ছাড়া অন্য বন্দর দিয়ে আমদানি করা বাস, ট্রাক ও লরির জন্য এখন ১৫৯ টাকা ২২ পয়সা দিতে হবে। আগে এর পরিমাণ ছিল ১৫১ টাকা ৬৪ পয়সা। মোটর কার, জিপের জন্য মাশুল ৯৫ টাকা ৫২ পয়সা। মোটরসাইকেল, স্কুটার, বেবি ট্যাক্সি, থ্রি–হুইলারের জন্য নতুন মাশুল ৪৭ টাকা ৮৩ পয়সা।

এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করলেও পণ্য ভেদে মাশুলের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও মাশুল বাড়ানো হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে নতুন মাশুল কার্যকর করা হবে।’


পর্তুগাল-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নতুন কমিটি গঠন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পর্তুগাল-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (পিবিসিসিআই) ৩১ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে প্রেসিডেন্ট আবদুল আহাদ সালমান এবং সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার মো. শফিকুল ইসলাম শফিক। এ ছাড়া কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন রাজীব হোসাইন। এই কমিটির মেয়াদ তিন বছর।

এ উপলক্ষে সম্প্রতি পর্তুগালের লিসবনে অবস্থিত পিবিসিসিআই মিলনায়তনে পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। একই সঙ্গে পিবিসিসিআই পরিচালিত আলফালিস একাডেমির পর্তুগিজ ভাষা শিক্ষা কোর্সের এ-১ ও এ-২ স্তর সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পিবিসিসিআইর জেনারেল অ্যাসেম্বলি প্রেসিডেন্ট জোসে রুই দ্য কস্তা কারভালহো, জেনারেল অ্যাসেম্বলি সেক্রেটারি-১ শফিকুল আলম, সেক্রেটারি-২ মুহাম্মদ উল্লাহ, প্রেসিডেন্ট সুপারভাইজার মুহিব্বুল্লাহ হেলাল, সেক্রেটারি সুপারভাইজার মারিয়া ইনেস সান্তানা দো রোজারিও কারভালহো। ব্যবসায়ীদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাহেদুজ্জামান মোল্লা, মো. জামাল উদ্দিন, নাসির উদ্দীন, জাহাঙ্গীর আলম, সানি রাহমান সুমন, শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।

পিবিসিসিআ’র নবগঠিত কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন, অ্যাসেম্বলিয়া কমিটির প্রেসিডেন্ট-জোসে রুই দ্য কোস্টা কারভালহো, সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, সহসভাপতি শফিকুল আলম, সুফার ভাইজার কমিটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ হেলাল, সহসভাপতি এমডি মাহবুব আলম, সেক্রেটারি মারিয়া ইনেস সান্তানা দো রোজারিও কারভালহো আকোনুয়ালহা। এ ছাড়া আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল ফজল, বাংলাদেশবিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ শফিউল আযম, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. আন্দ্রে সন কোস্তা, প্রচার সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সজল, পর্তুগালবিষয়ক সম্পাদক ড. মারিয়া এডুয়ার্দা মিরান্ডা পানিয়াগ, বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন, মিডিয়া সম্পাদক নজরুল ইসলাম।


৬ ব্রোকারেজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয়ের সময়সীমা বাড়ালো বিএসইসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকারদের নেগেটিভ ইক্যুইটি ও আনরিয়েলাইজড লসের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ ও সমন্বয়ের সময়সীমা বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশনের ৯৮৯তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গত ২৩ ডিসেম্বর কমিশনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

সভায় বোর্ড অনুমোদিত অ্যাকশন প্ল্যান পর্যালোচনা করে এনবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড, ইউনিক্যাপ সিকিউরিটিজ লিমিটেড, লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেড, নিউ ইরা সিকিউরিটিজ লিমিটেড, কবির সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং এনবিএল ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের নেগেটিভ ইক্যুইটি ও আনরিয়েলাইজড লসের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ ও সমন্বয়ের সময়সীমা বাড়ানোর অনুমোদন দেওয়া হয়।

এছাড়া, যেসব স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকার এখনো বোর্ড অনুমোদিত অ্যাকশন প্ল্যান কমিশনে দাখিল করেনি। তাদেরকে অবশ্যই আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যথাযথ ও বোর্ড অনুমোদিত অ্যাকশন প্ল্যান কমিশনে জমা দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অ্যাকশন প্ল্যান দাখিল না করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে পূর্ণ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


বেকারদের কর্মসংস্থানে ১৫০.৭৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বল্প আয়ের তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণে বাংলাদেশকে ১৫০.৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ সহায়তায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে নারী এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত জনগোষ্ঠীর ওপর।

রিকভারি অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অব ইনফরমাল সেক্টর এমপ্লয়মেন্ট (রেইজ) প্রকল্পের আওতায় এই অতিরিক্ত অর্থায়নের মাধ্যমে সারাদেশে আরও প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার যুবকের জন্য কর্মসংস্থান ও আয়বর্ধক সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর আগে এ প্রকল্পের আওতায় ২ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ উপকৃত হয়েছেন।

বিশ্বব্যাংকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রকল্পে অংশগ্রহণকারীরা দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, শিক্ষানবিশ (অ্যাপ্রেন্টিসশিপ), উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্রঋণের সুযোগসহ একটি সমন্বিত সেবা প্যাকেজ পাবেন। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে যুবক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা কর্মসংস্থান ও ব্যবসা সম্প্রসারণের বাধাগুলো অতিক্রম করতে পারবেন।

এ প্রকল্পের আওতায় নারীর ক্ষমতায়নে উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে মানসম্মত শিশুযত্ন (চাইল্ডকেয়ার) সেবার সুযোগ সৃষ্টি। পাশাপাশি জলবায়ু সহনশীল জীবিকাভিত্তিক কার্যক্রম চালু করা হবে, যাতে জনগোষ্ঠী জলবায়ুজনিত ঝুঁকি মোকাবিলা করতে পারে।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় পরিচালক গেইল মার্টিন বলেন, ‘একটি ভালো চাকরি একটি জীবন, একটি পরিবার ও একটি সমাজকে বদলে দিতে পারে। অথচ প্রতি বছর শ্রমবাজারে প্রবেশ করা বহু বাংলাদেশি তরুণ কাজের সুযোগ পায় না। পাশাপাশি দেশে কাজের মান, দক্ষতার ঘাটতি ও পেশাগত অমিলের মতো চ্যালেঞ্জও রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই অতিরিক্ত অর্থায়ন স্বল্পআয়ের পরিবারের আরও বেশি যুবক-যুবতী, বিশেষ করে নারী ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষের জন্য বাজারভিত্তিক দক্ষতা, প্রয়োজনীয় সম্পদ ও প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করবে, যা তাদের ভালো কর্মসংস্থান ও জীবিকার পথ সুগম করবে।’

এই অর্থায়নের ফলে প্রকল্পটির কার্যক্রম শহরকেন্দ্রিক সীমা ছাড়িয়ে গ্রামীণ এলাকাতেও সম্প্রসারিত হবে, যাতে সারাদেশের প্রান্তিক যুবক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা পেতে পারেন।

এ ছাড়া নারীদের জন্য মানসম্মত ও সাশ্রয়ী ঘরভিত্তিক শিশুযত্ন সেবার একটি পাইলট কার্যক্রম চালু করা হবে। এ লক্ষ্যে নারীদের প্রশিক্ষণ ও প্রারম্ভিক অনুদান দেওয়া হবে। শিশুযত্ন সেবার চাহিদা ও সরবরাহ—উভয় দিক বিবেচনায় নিয়ে এসব উদ্যোগ নারী শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ বাড়াবে এবং পরিচর্যা খাতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। একই সঙ্গে শিশুদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য ও বিকাশও উন্নত হবে।

নারীদের আত্মবিশ্বাস ও ক্ষমতায়ন বাড়াতে জীবনদক্ষতা প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। অতিরিক্ত অর্থায়নের আওতায় চাকরির মধ্যস্থতা কার্যক্রম জোরদার করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে চাকরি মেলা আয়োজন, সম্ভাব্য নিয়োগদাতাদের সঙ্গে প্রার্থীদের সংযুক্ত করা এবং বিপণন ও চুক্তি আলোচনায় সহায়তা প্রদান।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র সামাজিক সুরক্ষা অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্পের টিম লিডার আনিকা রহমান বলেন, ‘রেইজ প্রকল্প প্রমাণ করেছে যে লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জীবনে বাস্তব পরিবর্তন আনতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই নতুন অর্থায়নের মাধ্যমে আমরা কার্যকর উদ্যোগগুলো আরও সম্প্রসারণ, ক্ষুদ্রঋণের সুযোগ বাড়ানো এবং মানসম্মত শিশুযত্নের মতো উদ্ভাবনী সমাধান চালু করতে পারব—যার ফলে আরও বেশি যুবক ও নারী তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারবে।’

প্রকল্পটি ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা শিক্ষানবিশদের ৮০ শতাংশের বেশি তিন মাসের মধ্যেই কর্মসংস্থান পেয়েছেন। পাশাপাশি তরুণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আয় বৃদ্ধি ও উন্নত ব্যবসায়িক সাফল্যের কথা জানিয়েছেন।

২০২১ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে রেইজ প্রকল্প কোভিড-১৯-এ ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে পুনরুদ্ধার ঋণ ও প্রশিক্ষণ সহায়তা দিয়েছে, ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি প্রত্যাবর্তনকারী প্রবাসীকে পুনঃএকত্রীকরণ সহায়তার জন্য নিবন্ধন করেছে এবং ১ লাখ ২২ হাজারের বেশি উপকারভোগীকে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবা প্রদান করেছে। যাদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ নারী।

এই অতিরিক্ত অর্থায়নের ফলে রেইজ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের মোট সহায়তার পরিমাণ দাঁড়াল ৩৫০.৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।


খেজুর আমদানিতে বড় শুল্ক ছাড় দিল সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষের জন্য খেজুরের দাম নাগালের মধ্যে রাখতে বড় ধরনের শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে যে, খেজুর আমদানিতে বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ৪০ শতাংশ কমানো হয়েছে। মূলত রমজানে এই অতিপ্রয়োজনীয় ফলের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা এবং বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখাই এই পদক্ষেপের প্রধান লক্ষ্য।

এনবিআর-এর নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, খেজুর আমদানিতে কাস্টমস ডিউটি বা আমদানি শুল্ক আগের ২৫ শতাংশের পরিবর্তে এখন থেকে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই বিশেষ সুবিধা আগামী ৩১ মার্চ ২০২৬ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। জনগণের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে ২৩ ডিসেম্বর এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়।

শুল্ক হ্রাসের পাশাপাশি আমদানিকারকদের জন্য করের ক্ষেত্রেও বিশেষ ছাড় বহাল রাখা হয়েছে। বিগত বাজেটে খেজুরসহ সব ধরনের ফল আমদানির ওপর অগ্রিম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছিল, যা চলতি বছরেও কার্যকর থাকছে। এর ফলে খেজুর আমদানিতে অগ্রিম আয়করের ওপর ৫০ শতাংশ ছাড় পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মনে করছে, আমদানি শুল্ক এবং অগ্রিম আয়করে এই উল্লেখযোগ্য ছাড়ের ইতিবাচক প্রভাব খুব দ্রুতই বাজারে পরিলক্ষিত হবে। শুল্ক কমানোর ফলে আসন্ন রমজানে বাজারে খেজুরের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ ভোক্তারা অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে খেজুর কিনতে পারবেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই সরকার এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহায়ক পরিস্থিতি নিশ্চিতের আহ্বান ডিসিসিআই―র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বেসরকারি খাতের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক নীতিমালার সংষ্কার, রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসন ও অটোমেশন প্রবর্তন, লজিস্টিক খাতের উন্নয়ন, উদ্যোক্তাদের স্বল্পসুদে ঋণ প্রাপ্তির পাশাপাশি প্রক্রিয়া সহজীকরণ, শিল্প খাতে নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ, সর্বোপরি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীলের মাধ্যমে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা ও ঐকমত্যের আহ্ববান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সংগঠনের ৬৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভায় ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, প্রাক্তন সভাপতিবৃন্দ, প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতিবৃন্দ, প্রাক্তন সহ-সভাপতিবৃন্দ, প্রাক্তন পরিচালকবৃন্দ, সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা যোগদান করেন।

৬৪তম সাধারণ সভার ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংকট, শুল্ক হার বৃদ্ধি, সহায়ক রাজস্ব ব্যবস্থাপনার অনুপস্থিতি, সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি, স্থবির বিনিয়োগ, দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতি, আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবেশের অস্থিতিশীলতা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং চলমান জ্বালানি সংকটের কারণে অর্থনীতি বেশকিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।

তিনি বলেন, বেসরকারিখাতের স্থিতিশীলতা আনয়ন এবং নীতি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে চলতি বছর জুড়ে ৩১টি খাতভিত্তিক সেমিনার, নীতি সংলাপ, কর্মশালা ও ফোকাস গ্রুপ আলোচনার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে ৩৫টি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করেছে ঢাকা চেম্বার।

তিনি আরও বলেন, নীতিনির্ধারক, গবেষক ও শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তার লক্ষ্যে প্রথমবারের মত ‘অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক (ইপিআই)’-এর প্রবর্তন করেছে ডিসিসিআই, যা উৎপাদন ও সেবা খাতে ত্রৈমাসিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিবর্তন পরিমাপ করবে।

ডিসিসিআই’র এ সাধারণ সভার মুক্ত আলোচনা পর্বে ঢাকা চেম্বার প্রাক্তন সভাপতি আফতাব উল ইসলাম, এফসিএ, প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, প্রাক্তন পরিচালক ও আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন, প্রাক্তন পরিচালক এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান ও আলহাজ্ব মোহাম্মদ সারফুদ্দিন এবং মেসার্স ব্রান্ড বাংলা’র সত্ত্বাধিকারী রাজু আহমেদ মামুন প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন। সাধারণ সভাটি সঞ্চালনা করেন ডিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ড. এ কে এম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী।


ফায়ার সার্ভিস ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সমঝোতা স্মারক সই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষরিত হয়।

এই সমঝোতার আওতায় দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেপিআই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক ও এর আশপাশ এলাকার অগ্নিদুর্ঘটনায় দ্রুত সাড়া প্রদান করার লক্ষ্যে এখন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অভ্যন্তরে একটি স্যাটেলাইট ফায়ার স্টেশনের ন্যায় সার্বক্ষণিক জনবল ও গাড়ি-পাম্প মোতায়েন থাকবে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বিভিন্ন পদের ১৩ জন সদস্য গাড়ি-পাম্প ও সাজ-সরঞ্জামসহ এখানে অবস্থান করবেন।

ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে যুগ্ম পরিচালক মো. রিয়াদ ফারজান্দ (এইচআরডি-১) সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. নিয়ামুল কবির, সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. ফারুক হাওলাদার, মো. জবদুল ইসলামসহ ব্যাংকের বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তা এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, উপপরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মো. মামুনুর রশিদ, সহকারী পরিচালক কাজী নজমুজ্জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।


গাজীপুরে গার্মেন্টসের পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা ঘিরে গড়ে উঠেছে শতকোটির বাজার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজীপুরে তৈরি পোশাক কারখানার পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা ঘিরে গড়ে উঠেছে শতকোটি টাকার বাজার। দেশে ও বিদেশে নানা শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে এসব পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গাজীপুর মহানগর ও জেলাতে এক হাজারের বেশি গার্মেন্টস কারখানা থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টন পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা উৎপাদিত হচ্ছে। এসব ঝুট ও তুলা ক্রয়-বিক্রয় ও প্রক্রিয়া কাজে জড়িত রয়েছে শত শত ব্যবসায়ী ও হাজার হাজার শ্রমিক।

গাজীপুরের টঙ্গীর মিলবাজার, মাঝুখান, কালিয়াকৈরের পূর্ব চান্দরা, আমবাগ, ও শ্রীপুরের মাওনা এলাকায় পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা প্রক্রিয়া এবং ক্রয়-বিক্রয়ের সবচেয়ে বড় বাজার গড়ে উঠেছে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঝুট ও তুলার বাজার রয়েছে। স্থানীয়ভাবে এসব বাজার ঝুট পল্লী নামে পরিচিত।

টঙ্গীর মিলগেট ঝুট ও তুলার বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আবু সাকের বাসসকে জানান, প্রতিদিন আনুমানিক ২ থেকে ৩ হাজার টন ঝুট ও তুলা টঙ্গীর মিল বাজারেই ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। পরিত্যাক্ত এসব ঝুট ও তুলা স্থানীয় স্পিনিং মিল ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়। এছাড়া ভারত, চীন, তুরস্ক, হংকং ও যুক্তরাষ্ট্রেও পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা রপ্তানি হচ্ছে।

ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভার এলাকায় পরিত্যক্ত ঝুট থেকে রিসাইক্লিং (পুণব্যবহারযোগ্য) তুলা ও সুতা দিয়ে ম্যাট্রেস, গাড়ির সিট, তোশক, বালিশ, কুশন, পুতুল, মপ, ডাস্টার, কার্পেট ব্যাকিং, শপিং ব্যাগ ও ফ্লোর ম্যাটসহ নানাবিধ নিত্যব্যবহার্য পণ্য তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে।

নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ এলাকায় রিসাইক্লিং তুলা ও সুতা দিয়ে তৈরি হচ্ছে তুলনামূলক কম মূল্যের বিছানার চাদর, গামছা ও লুঙ্গি। নোয়াখালী ও চট্টগ্রামে গড়ে উঠেছে শিপইয়ার্ড ও শিল্প কারখানায় ওয়াইপিং র‌্যাগ তৈরি ও রপ্তানিযোগ্য ঝুট প্রসেসিং কারখানা।

এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো (ইপিবি) এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে পরিত্যাক্ত গার্মেন্টস ঝুট ও তুলার রপ্তানি গত কয়েক বছর ধরে বাড়ছে এবং এর প্রধান গন্তব্য দেশ হচ্ছে ভারত, চীন, তুরস্ক, হংকং, যুক্তরাষ্ট্রে ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমুহে।

ইপিবি প্রদত্ত তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে পরিত্যাক্ত গার্মেন্টস ঝুট ও তুলা থেকে রপ্তানি আয় আসে প্রায় ৪১১.১২ মিলিয়ন টাকা।

ঝুট ব্যবসায়ী সমিতির নেতা আবু সাকের বলেন, গাজীপুর হচ্ছে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের বৃহত্তম কেন্দ্রগুলোর একটি। তাই এখানে তৈরি পোশাকের উৎপাদন ও সংশ্লিষ্ট ঝুট ও তুলার বর্জ্য খুব বেশি পরিমাণে উৎপন্ন হয়।

তিনি বলেন, যদি স্থানীয়ভাবে আধুনিক রিসাইক্লিং ব্যবস্থা বাড়ানো হয় তাহলে এই খাতে ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন বা তারও বেশি রপ্তানি আয় করা সম্ভব।

তৈরি পোশাক শিল্প ও এই শিল্পের পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক সূত্রের মতে, অপরিকল্পিত গুদামজাত প্রক্রিয়ার ফলে মাঝেমধ্যেই ঝুট ও তুলার গুদামে অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনাগুলো এই খাতের জন্য বড় ধরণের হুমকি। এছাড়া প্রভাবশালী একটি গোষ্ঠীর এই খাতে অনৈতিক হস্তক্ষেপের ফলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যদি উল্লেখিত সমস্যাগুলো দূরীকরণে এই খাতে সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা যায় তাহলে দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বিকাশে পরিত্যক্ত ঝুট ও তুলার বাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।

সূত্র : বাসস


বিপিআইএ’র সভাপতি মোশারফ, মহাসচিব সাফির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিআইএ) ২০২৫-২৭ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে পোলট্রি পেশাজীবী পরিষদ নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। নির্বাচনে ৫৩৫ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আস্থা ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসাইন চৌধুরী। আর মহাসচিব পদে ৫০৭ ভোট পেয়ে কোয়ালিটি ব্রিডার্স লিমিটেডের পরিচালক মো. সাফির রহমান নির্বাচিত হয়েছেন।

সহ-সভাপতি হিসেবে ডায়মন্ড অ্যাড লিমিটেডের সিইও মো. আসাদুজ্জামান এবং খান এগ্রো ফিড প্রডাক্টের প্রোপ্রাইটর মো. সৈয়দুল হক খান নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া এ নির্বাচনে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে এনার্জি টেকনোলোজির প্রোপাইটর মোস্তফা জাহান, যুগ্ম মহাসচিব পদে মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ও অঞ্জন মজুমদার, প্রচার সম্পাদক পদে শফিকুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে গাজী নূর আহাম্মাদ নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাহী সদস্য হিসেবে এ নির্বাচানে জয়ী হয়েছেন শাহ ফাহাদ হাবিব, মিজানুর রহমান মিন্টু, রাশিদ আহামাদ, মোহাম্মদ জহির উদ্দিন, খায়রুল বাসার সাগর, ফয়েজ রাজা চৌধুরী, মো. সালাউদ্দিন মুন্সী, মো. সোলেমান কবীর, মো, ইমরান হোসাইন ও নাবিল আহামেদ।

গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) মতিঝিল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কাম-কমিউনিটি সেন্টারে এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে মোট ৫৭৪ জন ভোট দেন।

নবনির্বাচিত সভাপতি মোশারফ হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘খামারিদের যে আকাঙ্ক্ষা রয়েছে সেই আকাঙ্ক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা কাজ করে যেতে চাই। পোলট্রি খাতকে আরও কীভাবে সমৃদ্ধ করতে পারি সে লক্ষ্যেও আমরা কাজ করে যাব। পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে কীভাবে পোলট্রিশিল্পকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া যায় সেটিও আমাদের অন্যতম লক্ষ্য থাকবে।

তিনি জানান, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন দেশের পোলট্রি খাতের উন্নয়ন, সুরক্ষা ও টেকসই বিকাশে নিবেদিত একটি শীর্ষস্থানীয় সংগঠন। যেখানে খামারি, উদ্যোক্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং আধুনিক প্রযুক্তি, সুষ্ঠু নীতিমালা ও মানসম্মত উৎপাদনের মাধ্যমে শিল্পের অগ্রগতিতে কাজ করে যাচ্ছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব নির্ধারিত হয়েছে, যা আগামী দুই বছর পোলট্রি খাতের দিকনির্দেশনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।


একনেকে ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার ( ২৩ ডিসেম্বর) পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মঙ্গলবার ( ২৩ ডিসেম্বর) ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২২টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ৩০ হাজার ৪৮২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ১ হাজার ৬৮৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৪ হাজার ২৪৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

একনেক চেয়ারপারসন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে নতুন প্রকল্প ১৪টি, সংশোধিত প্রকল্প ৫টি এবং মেয়াদ বৃদ্ধি প্রকল্প ৩টি। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, খাদ্য এবং ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, পানিসম্পদ এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এবং ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা সভায় অংশগ্রহণ করেন।

সভায় অনুমোদিত ২২টি প্রকল্প হলো: সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ৩টি প্রকল্প। ১. ‘কর্ণফুলী টানেল (আনোয়ারা) থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার জাতীয় মহাসড়কের গাছবাড়িয়া পর্যন্ত সংযোগ সড়ক (জেড-১০৪০) উন্নয়ন’ প্রকল্প, ২. ‘দিনাজপুর সড়ক বিভাগাধীন হিলি (স্থলবন্দর)-ডুগডুগি ঘোড়াঘাট জাতীয় মহাসড়ক (এন-৫২১) যথাযথ মানে উন্নীতকরণসহ ৩টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বিদ্যমান সরু/জরাজীর্ণ কালভার্টগুলো পুনর্নির্মাণ এবং বাজার অংশে রিজিডপেভমেন্ট ও ড্রেন নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, ৩. ‘ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তর প্রকল্প: সাপোর্ট টু ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘নারায়ণগঞ্জস্থ আলীগঞ্জে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৮টি ১৫ তলা ভবনে ৬৭২টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ৫টি প্রকল্প-১. ‘ঢাকা ওয়াসা প্রশিক্ষণ এবং গবেষণা একাডেমি স্থাপন’ প্রকল্প, ২. ‘সিলেট সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও অবকাঠামো নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প, ৩. ‘জলবায়ু সহনশীল জীবনমান উন্নয়ন (সিআরএএলইপি)’ প্রকল্প, ৪. ‘পটুয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প, ৫. ‘সিলেট বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্প।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প: ১. ‘মোংলা কমান্ডার ফ্লোটিলা ওয়েস্ট (কমফ্লোট ওয়েস্ট)-এর অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, ২. ‘সাভারে আর্মি ইনস্টিটিউট অব ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ প্রকল্প।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্প, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘দুস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র পুনর্নির্মাণ কোনাবাড়ি, গাজীপুর (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘অ্যাডুকেশন অ্যান্ড রিচার্জ ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্স নার্সিং অ্যাডুকেশন অ্যান্ড রিচার্জ (এনআইএএনইআর)’ প্রকল্প।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প: ১. ‘হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন’ প্রকল্প, ২. ‘বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের উন্নয়ন (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৪টি প্রকল্প: ১. ‘রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কর্ণফুলী এবং সংযুক্ত নদীগুলোর (কাচালং, রাইখিয়ং ও শলকনদী) টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্প, ২. ‘গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনর্বাসন’ প্রকল্প, ৩. ‘সুরমা-কুশিয়ারা নদী অববাহিকার উন্নয়ন এবং বন্যা ও সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (১ম পর্যায়)’ প্রকল্প, ৪. ‘ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইনহ্যান্সমেন্ট’ প্রকল্প।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘বগুড়া কৃষি অঞ্চলের টেকসই কৃষি উন্নয়ন’ প্রকল্প, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ‘দারুল আরকাম ইসলামী শিক্ষা পরিচালনা ও সুসংহতকরণ (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।

সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা কর্তৃক ইতোমধ্যে অনুমোদিত ৫০ কোটি টাকার কম ব্যয় সংবলিত ১০টি প্রকল্প সম্পর্কে একনেক সভায় অবহিত করা হয়।

সূত্র : বাসস


banner close