একসময় দেশের সেরা ব্যাংক ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক। কিন্তু নানা ঝামেলায় সেই সাফল্যে ভাটা পড়েছিল। সুখবর হচ্ছে, ঘুরে দাঁড়িয়েছে জনতা ব্যাংক। আবার দেশের সেরা ব্যাংক হতে চলেছে জনতা ব্যাংক। কীভাবে সেই হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসবে, সেসব বিষয় নিয়ে দৈনিক বাংলায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন দৈনিক বাংলার বিজনেস এডিটর আবদুর রহিম হারমাছি ও প্রতিবেদক এ এস এম সাদ
দৈনিক বাংলা: জনতা ব্যাংকের বর্তমান অবস্থা কী?
আব্দুছ ছালাম আজাদ: আগের সব সংকট অতিক্রম করে জনতা ব্যাংকের সব সূচক এখন ঊর্ধ্বমুখী। আমদানি, রপ্তানি, রেমিট্যান্স, এসএমই প্রকল্প, কৃষিঋণ বিতরণসহ ব্যাংকিং খাতের প্রায় সব মাপকাঠিতে এখন নেতৃত্ব দিচ্ছে জনতা ব্যাংক। ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কমছে। এই বছরের মধ্যে খেলাপি ঋণ ১০ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আশা করি এটা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে। বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের দক্ষ ব্যবস্থাপনায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ব্যাংকটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেয়া নিয়মনীতি অনুসরণ করে এননটেক্স, ক্রিসেন্ট লেদারসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ আদায়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
দৈনিক বাংলা: এননটেক্স গ্রুপের ঋণ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এই গ্রুপের কাছ থেকে ঋণ আদায়ের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে?
আব্দুছ ছালাম আজাদ: এননটেক্স গ্রুপ উৎপাদনমুখী একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। তাই নিয়ম মেনেই এই প্রতিষ্ঠানকে ঋণ বিতরণ করেছে জনতা ব্যাংক। তবে একটা সময় নানা রকমের সমস্যার কারণে এননটেক্স গ্রুপ খেলাপি হয়ে পড়ে। খেলাপির সঙ্গে সুদের পরিমাণও বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে ৩ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা সুদ উঠে যায়। গত বছর সুদ আরোপের ফলে পাওনা দাঁড়ায় ৭ হাজার ১০০ কোটি টাকা। ২০১৫ সাল থেকে কোম্পানিটি রিস্ট্রাকচার শুরু করে। এরপর ডাউন পেমেন্টের মাধ্যমে পুনঃতফসিল প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। পরবর্তী সময়ে এননটেক্স ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতিমালা বিভাগের সার্কুলার অনুসরণ করে সর্বশেষ ২০২২ সালের নভেম্বরে এননটেক্সের কাছ থেকে নগদ ২ শতাংশ বা ১৪২ কোটি টাকা ডাউন পেমেন্ট নিয়ে সুদ মওকুফ করা হয়।
এননটেক্স গ্রুপের ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে বড় পরিমাণের ঋণ দেয়া হয়েছে। খেলাপি হওয়ায় গ্রুপটির মালিক এই দায় থেকে বের হতে চাইছিল। তাই তিনি জনতা ব্যাংককে জানিয়েছেন, প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পদ বিক্রি করে কিংবা হস্তান্তর করে ঋণ পরিশোধ করবেন তিনি। সে জন্য ১৪২ কোটি টাকা নগদ আদায় করে সুদ মওকুফ করা হয়েছে। ফলে জুন পর্যন্ত বাকি টাকা পরিশোধের সময় দেয়া হয়েছে। জনতা ব্যাংকের কস্ট অব ফান্ড ৬ দশমিক ৩৪। ফলে ব্যাংকটির কোনো লোকসান হয়নি।
দৈনিক বাংলা: এননটেক্স গ্রুপের ঋণটি আদায় হলে জনতা ব্যাংকের কী ধরনের সুবিধা হবে?
আব্দুছ ছালাম আজাদ: এননটেক্সকে যে পরিমাণ অর্থঋণ দেয়া হয়েছে তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থ আদায় করা হচ্ছে। এই ঋণের ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকের বাইরে রয়েছে। অর্থের দিক বিবেচনা করলে এটি বড় রকমের ঋণের পাওনা রয়েছে। তাই এই টাকা আদায় করলে জনতা ব্যাংকের তারল্য অনেক বেড়ে যাবে এবং সার্বিক দিক থেকে ব্যাংকটির অবস্থান শক্তিশালী হবে। বিশাল পরিমাণের অর্থ ব্যাংক ও অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে। ৫ হাজার কোটি টাকা ফেরত আসার জন্যই এসব প্রক্রিয়া করা হচ্ছে। বাকি টাকা আদায় করতে পারলে জনতা ব্যাংক এ বছর শেষে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হবে। জনতা ব্যাংকের অবস্থান আরও ইতিবাচকভাবে পরিবর্তন ঘটবে। ফলে জনতা ব্যাংক শ্রেষ্ঠ ব্যাংকে পরিণত হবে। কারণ নিয়ম মেনে পর্যাপ্ত পরিমাণে কস্ট অব ফান্ডে করা সম্ভব হয়েছে। কয়েক বছর ধরে ব্যাংকের নেগেটিভ অ্যাসেটও কমেছে। এ ছাড়া সুদ মওকুফ একটা চিরাচরিত নিয়ম।
দৈনিক বাংলা: দেশের ব্যাংকিং খাতের সার্বিক অবস্থা এখন কেমন?
আব্দুছ ছালাম আজাদ: সত্যি কথা বলতে কী, সার্বিক দিক বিবেচনা করলে বর্তমানে দেশের পুরো ব্যাংকিং খাত খারাপ অবস্থানে রয়েছে। ফলে ব্যাংকের ভিত শক্তিশালী করার জন্য সব ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক ব্যবস্থায় নানা রকমের সংস্কার করতে বলেছে। তাই জনতা ব্যাংক সব দিক বিবেচনায় নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
সবচেয়ে ভালো খবর হচ্ছে, জনতা ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমেছে। এখন আমাদের ব্যাংকে মোট বিতরণ করা ঋণের ১৭ শতাংশ খেলাপি; টাকার অঙ্কে যা ১৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। একটা সময় দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপির শীর্ষে থাকলেও বর্তমানে দ্বিতীয়তে জনতা ব্যাংক। ফলে জনতা ব্যাংকের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
একটা সময় দেশের বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিল। নানা সময়ে সেগুলো খেলাপি হয়ে গেছে। চলতি বছর এই খেলাপি ঋণের অর্ধেক আদায় করা হবে। ফলে ২০২৩ সাল শেষে খেলাপি ঋণ ১০ হাজার কোটি টাকার নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এর মধ্য দিয়েই ব্যাংকটি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।
আরেকটি ভালো খবর হচ্ছে, অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় জনতা ব্যাংকের অবলোপন বা রাইট অব ঋণের পরিমাণ কম। জনতার অবলোপন ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। গত পাঁচ বছরে বড় রকমের কোনো খেলাপি ঋণ অবলোপন করা হয়নি। কিছু ক্ষুদ্র কৃষিঋণ ছাড়া বাকি ঋণ অবলোপন করা হয়নি। ফলে দেশের তিনটি বৃহৎ ব্যাংকের মধ্যে জনতা ব্যাংকের অবলোপন ঋণের পরিমাণ সবচেয়ে কম। ফলে মুনাফা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বড় ঋণগুলো অবলোপন করলে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে যেত।
দৈনিক বাংলা: বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী। এর প্রভাবে ব্যাংকগুলোতে আমানত কমার খবর পাওয়া যাচ্ছে। জনতা ব্যাংকের আমানতের কী অবস্থা?
আব্দুছ ছালাম আজাদ: এখানেও আমি ভালো তথ্য দিতে চাই। অন্যান্য ব্যাংকের আমানত বা ডিপোজিট কমলেও জনতা ব্যাংকের আমানত বাড়ছে। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও আমাদের আমানতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ১২ হাজার কোটি টাকা বেসরকারি ঋণপত্র বা এলসি খোলা হয়েছে এবং সরকারি এলসি খোলা হয়েছে ৩৮ হাজার কোটি টাকা। বড় প্রতিষ্ঠানগুলো জনতা ব্যাংকে এলসি খুলেছে। স্কয়ার, নাসা, বেক্সিমকো, ওরিয়নসহ দেশে যত বড় প্রতিষ্ঠান রয়েছে সব কোম্পানির ঋণপত্র বা এলসি খোলে জনতা ব্যাংকে।
গত বছর ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করেছে জনতা ব্যাংক। আবার ২০২১-এর চেয়ে ২০২২ সালের নিট মুনাফা ৪০০ কোটি টাকা বেড়েছে। একই সময়ে নিট ইন্টারেস্ট মার্জিন ৫০৭ কোটি টাকার বেশি। নতুন আটটি শাখা চালু হয়েছে। ২০২১ সালে অ্যাসেট ছিল ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা, ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা।
প্রবাসীদের রেমিট্যান্স আনার ক্ষেত্রেও বড় সাফল্য দেখিয়ে চলেছে জনতা ব্যাংক। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে ৪২ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী ভাইবোনেরা। চলতি মার্চ মাসের আরও বেড়েছে। ২৩ মার্চ পর্যন্ত এসেছে ৬৬ মিলিয়ন ডলার। আশা করছি মাস শেষে এটি ৮০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। ফলে সার্বিকভাবে বলতে চাই, জনতা ব্যাংকের অবস্থা ও অবস্থান ভালোর দিকে যাচ্ছে। দিন যত যাবে, ব্যাংকের তত উন্নতি হবে। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না। একটা কথা আমি বলতে চাই, আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলাম। কর্মজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সেই দেশপ্রেমের প্রতিফলন ঘটিয়েছি। জনতা ব্যাংককে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা আমার একটি চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই কাজ করছি।
দৈনিক বাংলা: এননটেক্স ছাড়াও ক্রিসেন্ট গ্রুপসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছে জনতা ব্যাংকের মোটা অঙ্কের খেলাপি ঋণ রয়েছে। সেগুলোর কী অবস্থা?
আব্দুছ ছালাম আজাদ: ক্রিসেন্টের ৭০০ কোটি টাকার ঋণ পুনঃতফসিলের মাধ্যমে নিয়মিত করতে সক্ষম হয়েছি। ফলে এ গ্রুপের মাধ্যমে পাওনা টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে আদায় করা হবে। আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধিবিধান মেনে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সব ক্ষেত্রেই ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এভাবে অব্যাহত থাকলে জনতা ব্যাংকের অবস্থান ২০১০ সালের আগে যে রকম ছিল সেই অবস্থানে ফিরে যাবে। জনতা ব্যাংক শুধু বাংলাদেশের মধ্যে নয়, সাব-কন্টিনেন্টের মধ্যে একটি শক্তিশালী ব্যাংকে পরিণত হবে।
সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি গভীর শোকের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, ব্যাংকের সম্মানিত স্পনসর পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান জনাব আজিম উদ্দিন আহমেদ ০১ আগস্ট ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুতে সাউথইস্ট ব্যাংক পরিবার গভীরভাবে শোকাহত।
জনাব আজিম উদ্দিন আহমেদ ১৯৪০ সালের ৩০ জুন এক সম্মানিত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের একজন সম্মানিত সদস্য এবং পর্ষদের রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান।
তিনি বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য জগতে একজন খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি মিউচুয়াল গ্রুপ এবং এডি হোল্ডিংস লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, তিনি আর্লা ফুডস বাংলাদেশ লিমিটেড-এর পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর একজন প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্য ছিলেন। তিনি এই বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ফাউন্ডেশনেরও একজন প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্য ছিলেন।
শিক্ষা ও সমাজসেবায়ও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি নিজ জিলা ফেনীতে প্রতিষ্ঠা করেছেন মসজিদ,মাদ্রাসা | এছাড়াও বিভিন্ন সমাজ হিতৈষী কাজে জড়িত ছিলেন তার উদার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে |
সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. পরিবার জনাব আজিম উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছে এবং তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, জুলাই মাসের প্রথম ২৭ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৩৩ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২ হাজার ৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
গত বছরের একই সময়ে, দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ১ হাজার ৫৭২ মিলিয়ন ডলার।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ পরিমাণ।
আগের অর্থবছরে (অর্থবছর ২০২৩-২৪) প্রাপ্ত ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় রেমিট্যান্স ২৬ দশমিক ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে অর্থবছরের শেষ দিন আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের সব ব্যাংকের শাখাগুলোতে ব্যাংকিং লেনদেন চলবে।
সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৩০ জুন সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯২২ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান। তিনি বলেন, গত অর্থবছরের চেয়ে এবার বেশি রাজস্ব আদায় হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড এর ২৯ তম বার্ষিক সাধারন সভা ২৪ জুন ২০২৫ইং তারিখে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ২০২৪ইং সালের নিরীক্ষিত বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়। পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জনাব মোস্তফা কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীর পরিচালক মিসেস বিউটি আক্তার, ব্যারিষ্টার হাসান রাজিব প্রধান, জনাব মনজুর মো: সাইফুল আজম এফসিএমএ, মিসেস তাহমিনা বিনতে মোস্তফা, জনাব তায়েফ বিন ইউসুফ, মিসেস তানজিমা বিনতে মোস্তফা, জনাব ওয়াশিকুর রহমান, জনাব তানভীর আহমেদ মোস্তফা , মিসেস সামিরা রহমান, মিসেস তাসনিম বিনতে মোস্তফা, জনাব মোঃ বেলায়েত হোসেন ভূইয়া, জনাব মোহাম্মদ সাইদ আহমেদ রাজা এবং মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সানা উল্লাহ, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা শেখ বিল্লাল হোসেন এফসিএ, কোম্পানীর অডিটর এ.কে.এম. আমিনুল হক এফসিএ, সিনিয়র পার্টনার মেসার্স এ.হক এন্ড কোং চাটার্ড একাউন্টেন্টস এবং আবদুর রহিম মিয়া, এফসিএ, পার্টনার মেসার্স ইসলাম জাহিদ এন্ড কোং, চাটার্ড একাউন্টেন্টস, মোঃ ফিরোজুল ইসলাম সিনিয়র এক্সিঃ ভাইস প্রেসিডেন্ট (অর্থ ও হিসাব) ও কোম্পানী সচিব মো: মাসুদ রানা এবং কোম্পানীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ারহোল্ডার সভায় সংযুক্ত ছিলেন।
মেঘনা ব্যাংক পিএলসি’র ১২তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ২৩ জুন ২০২৫, সোমবার রাজধানীর মহাথালীতে অবস্থিত ম্যাডোনা টাওয়ারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের সম্মানিত চেয়ারপার্সন মিসেস উজমা চৌধুরী।
বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান জনাব তানভীর আহমেদ, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মো. আলী আক্তার রেজভী, এফসিএ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ মামুনুল হক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক জনাব রজব আলী, জনাব এম. নজরুল ইসলাম এবং জনাব হাবিবুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব কাজী আহ্সান খলিল এবং ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি সচিব জনাব সজিব কুমার সাহা, এফসিএ এবং ব্যাংকের সম্মানিত শেয়ারহোল্ডারবৃন্দ।
সভায় ব্যাংক নিজেদের পরিষেবা বৃদ্ধি, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রচারণা, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
সম্প্রতি সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. বরিশাল জেলায় অবস্থিত বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকদের নিয়ে লিড ব্যাংক হিসেবে ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা এর নির্দেশনায় “স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স-২০২৫” আয়োজন করেছে।
উক্ত কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব ইমতিয়াজ আহমেদ মাসুম, নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), বাংলাদেশ ব্যাংক, বরিশাল এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব আবিদুর রহমান চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি., জনাব মোঃ আলী হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা, জনাব মোঃ হারুনুর রশিদ, জেলা শিক্ষা অফিসার, বরিশাল এবং সম্মানিত অতিথি জনাব মোঃ মাহাবুব-উল আলম, উপপরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা।
উক্ত কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে উক্ত কনফারেন্সে জাহানারা ইসরাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বরিশাল থেকে রাবিয়া কামাল (দশম শ্রেণী) এবং বরিশাল জেলা স্কুল, বরিশাল থেকে মোঃ হাসনাইন বিন কবির (দশম শ্রেণী) বক্তব্য রাখেন।
উক্ত কনফারেন্সে বরিশাল জেলার ৪৫ টি তফসিলী ব্যাংকের ৪৫ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে ১৮০ জন শিক্ষার্থী ও ৪৫ জন শিক্ষক এবং অতিথি সহ সর্বমোট ৩৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। কনফারেন্সে বক্তারা শৈশব থেকেই সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও দায়িত্বশীল অর্থ ব্যবস্থাপনার অভ্যাস গড়ে তোলা ও আধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তির সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচিত করানোর লক্ষ্যে স্কুল ব্যাংকিং এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এছাড়াও স্কুল ব্যাংকিং এর উপর নির্মিত ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী, র্যালী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
পূবালী ব্যাংক পিএলসি’র ৪২তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ১৮ জুন ২০২৫ তারিখে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পূবালী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান মনজুরুর রহমান। বার্ষিক সাধারণ সভায় পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকবৃন্দ- মনির উদ্দিন আহমদ, হাবিবুর রহমান, এম. কবিরুজ্জামান ইয়াকুব এফসিএমএ (ইউকে), সিজিএমএ; আজিজুর রহমান, মোঃ আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল, রানা লায়লা হাফিজ, মুস্তফা আহমদ, আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ নওশাদ আলী চৌধুরী এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়াররহোল্ডারগণ ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। এসময় ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আলী, সিএফও ও মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ লিটন মিয়া এফসিএ এবং কোম্পানী সচিব ও মহাব্যবস্থাপক মোঃ আনিসুর রহমান ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।
৪২তম বার্ষিক সাধারণ সভায় পূবালী ব্যাংক পিএলসি’র সম্মানিত শেয়ার হোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ সালের জন্য ১২.৫০% ক্যাশ ডিভিডেন্ড ও ১২.৫০% স্টক ডিভিডেন্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়।
বার্ষিক সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডারবৃন্দ ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং এই মাইলফলক অর্জনে অক্লান্ত অবদান রাখায় পূবালী ব্যাংকের নিবেদিতপ্রাণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানান। সবশেষে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মহোদয় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
৪ জুন’২৫ রোজ বুধবার ময়মনসিংহ শহরে জনতা ব্যাংক পিএলসি. টাউন হল মোড় শাখা (পূর্ব নাম মহিলা শাখা) নতুন ভবনে স্থানান্তর উপলক্ষে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান। ময়মনসিংহ এরিয়া অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক মোঃ জাহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খালেক ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান খান। এ সময় ব্যাংকের অন্যান্য নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং স্থানীয় গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীগণ উপস্থিত ছিলেন।
জনতা ব্যাংক পিএলসি’র ফরিদপুর বিভাগীয় শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন ৩০ মে’২৫ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান এবং উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আশরাফুল আলম। ফরিদপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের ইনচার্জ মোঃ সহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে ফরিদপুর বিভাগের এরিয়া প্রধানগণ ও অন্যান্য নির্বাহীবৃন্দ এবং শাখা ব্যবস্থাপকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
ইসলামী ধারার ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত হওয়ার যে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এই ধারার ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংকের একীভূত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান শুক্রবার (৩০ মে) দেওয়া এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে ৬টি দুর্বল ব্যাংক একীভূত হয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসছে। ৬টি ব্যাংকের মধ্যে ৫টি ইসলামী ধারার ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি জানান, ‘এনবিএল প্রচলিত ধারার ব্যাংক। ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো সংস্কারের সঙ্গে এনবিএল সম্পৃক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এর আগে, একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আহসান এইচ মনসুর জানান, নানা অনিয়ম ও ঋণ জালিয়াতির কারণে দুর্বল হওয়ায় ছয়টি ব্যাংককে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে একীভূত করতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো একীভূত করে সাময়িক সময়ের জন্য সরকারি মালিকানায় নেওয়া হবে।
পরবর্তীতে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত হবে এই মর্মে নানা সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে- যা সঠিক নয় বলে জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ ছাড়া, একীভূত হওয়ার পর সাময়িক সরকারি মালিকানার সিদ্ধান্ত থেকেও সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সবশেষ ২৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে বিএফআইইউর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে গভর্নর জানান, ‘একীভূতকরণের আগেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর ওপর সরকার মালিকানা প্রতিষ্ঠা করবে। এতে আমানতকারীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ তারা একটি অধিকতর শক্তিশালী ব্যাংকের অংশ হয়ে যাবেন। তবে মোট কতটি ব্যাংক একীভূত হবে এ ব্যাপারে এখনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’
গভর্নর জানান, সব দুর্বল ব্যাংক একবারে একীভূত হবে না। প্রথম দফায় কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হবে। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় বাকি দুর্বল ব্যাংক নিয়ে সিদ্ধান্ত নিবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জনতা ব্যাংক পিএলসি এর মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোঃ মজিবর রহমান গত শনিবার (২৪/০৫/২০২৫) জনতা ব্যাংক স্টাফ কলেজ, ঢাকা কর্তৃক আয়োজিত ০৬ কর্মদিবস ব্যাপী ক্রেডিট ম্যানেজমেন্ট কোর্স (ব্যাচ ০১/২৫) শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধন করেন।
উক্ত প্রশিক্ষণ কোর্সে জনতা ব্যাংকের অফিসার থেকে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার পর্যায়ের ২৫ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনতা ব্যাংক স্টাফ কলেজের ডিজিএম-স্টাফ কলেজ ইনচার্জসহ অন্যান্য নির্বাহী ও অনুষদ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (IBRPD) এর উদ্যোগে ২৫ মে, ২০২৫ তারিখ রবিবার প্রধান কার্যালয়ের মূল ভবনের কনফারেন্স রুমে Governance Framework on Islamic Banking Division in Bangladesh Bank এবং Islamic Banking Financial Systems in Bangladesh: The Need for Education শীর্ষক দু’টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন প্রথিতযশা ইসলামিক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ কবির হাসান।
আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন ডেপুটি গভর্নর ড. মোঃ কবির আহাম্মদ এবং স্বাগত বক্তব্য দেন নির্বাহী পরিচালক মোঃ মেজবাউল হক। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নিউ অরলিনস্ এর ইকোনমিকস্ এন্ড ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ও প্রখ্যাত ইসলামিক অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ কবির হাসান তার বক্তব্যে ইসলামিক ফাইন্যান্সের অগ্রগতির জন্য গবেষণার কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় ইসলামিক ফাইন্যান্সে ঈর্ষণীয় অগ্রগতি লাভ করেছে মূলত গবেষণার ওপর জোর দেয়ায়। বাংলাদেশেও এ বিষয়ে একাডেমিক জ্ঞান অর্জনে মনোযোগ দিতে হবে এবং আন্তর্জাতিক ইসলামিক ফাইন্যান্স সংস্থাগুলোর নীতিমালা ও আইনকানুন অনুসরণ করতে হবে। তিনি তার বক্তব্যে একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ফাইন্যান্স আইন প্রণয়ন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ড স্থাপন, ইসলামি ব্যাংকিং পরিচালনায় একজন ডেডিকেটেড ডেপুটি গভর্নর নিয়োগ এবং দক্ষ জনবল ক্সতরি করা জরুরি বলে উল্লেখ করেন।
এক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। সেমিনারে দেশের ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থার অগ্রগতি তুলে ধরে বিশিষ্ট ব্যাংকার এবং ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বর্তমান ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, সঠিকভাবে এগোলে পুরো ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় ইসলামী ব্যাংকিং ৫০ শতাংশে উন্নীত হতো। এজন্য এখাতে কর্মরত ২৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৪ কোটি গ্রাহককে ইসলামি ব্যাংক সম্পর্কিত একাডেমিক জ্ঞানে শিক্ষিত করা জরুরি। এ লক্ষ্যে একটি আলাদা ইনস্টিটিউটের যে দাবি উঠেছে তা অত্যন্ত যৌক্তিক বলেও মত দেন তিনি।নির্বাহী পরিচালক মোঃ মেজবাউল বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্সের প্রসারে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় আইনগত কাঠামো ও স্বতন্ত্র নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করছে বলে জানান। সেমিনারে বিশেষ অতিথির দিকনির্দেশনা ও মতামত ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রমে জড়িত কর্মকর্তাদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করবে জানিয়ে এমন অনুষ্ঠান নিয়মিত করার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন। সেমিনারে বক্তারা বাংলাদেশ ব্যাংক ও দেশের ইসলামিক ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি ডেডিকেটেড ইন্সটিটিউশন প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনার দু’টিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ, খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ব্যাংকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং, আরবি ও ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যানগণ এবং নীতি নির্ধারকগণ অংশগ্রহণ করেন।
জনতা ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের যৌথ অংশগ্রহণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে প্রবাসীদের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৫ মে বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর প্রধান অতিথি এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। জনতা ব্যাংক সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান, ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশিদ ওহাব, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান এবং ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর অনুষ্ঠানে বলেন, দেশের দুর্বল ব্যাংকগুলোয় সরকারি হস্তক্ষেপের কথা ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিদেশে অর্থ পাচারে জড়িতদের ধরতে প্রয়োজন বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা নেওয়াসহ অর্থ পাচারকারীদের সম্পদ জব্দের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ সাম্প্রতিক সময়ে বিপুল পরিমান রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের সাধুবাদ জানান।
জনতা ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন শহরে ১৩ টি বুথ স্থাপনের ঘোষণা দেন। এ সময় জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানান।