বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫
২২ কার্তিক ১৪৩২
সাক্ষাৎকার

অস্তিত্বহীন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করবেন না

সৈয়দ গোলাম ওয়াদুদ
আপডেটেড
২৯ এপ্রিল, ২০২৩ ২০:১৯
প্রকাশিত
প্রকাশিত : ২৯ এপ্রিল, ২০২৩ ০৯:১৭

পুঁজিবাজার নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছেন বাজার বিশ্লেষক শার্প সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও বর্তমান পরিচালক মেজর (অব.) সৈয়দ গোলাম ওয়াদুদ। তিনি বলেছেন, ‘দীর্ঘ মন্দার পর পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। মূল্যসূচকের পাশাপাশি লেনদেনও বাড়ছে। আর এতে আস্থা ফিরছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। আমার মনে হয়, বাজার এখন ভালোর দিকেই যাবে।’ দৈনিক বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন দৈনিক বাংলার প্রতিবেদক ফারহান ফেরদৌস

পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থা এখন কেমন? মূল্যসূচকের সঙ্গে লেনদেনও বাড়ছে। এই ইতিবাচক ধারা কতদিন থাকবে বলে আপনি মনে করেন?
সামগ্রিকভাবে বলা যায়, পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে এখনো ভালো বলা যাবে না। আরও কিছুদিন যদি এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে বাস্তব অবস্থা বোঝা যাবে। দীর্ঘ মন্দায় ভালো-মন্দ সব শেয়ারের দাম একেবারে তলানিতে নেমে গিয়েছিল। কিছু প্রতিষ্ঠান মোটামুটি ভালো লভ্যাংশ ঘোষণা করছে। সব মিলিয়ে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। মূল্যসূচকের পাশাপাশি লেনদেনও বাড়ছে। আর এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। দেশের প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ঈদের আগে ও পরে মিলিয়ে টানা ৯ কর্মদিবস সূচক বেড়েছে। লেনদেনও ২০০ কোটি থেকে প্রায় হাজার কোটি টাকা ছুঁয়েছে। এই ৯ কর্মদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭৭ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়েছে। ১১ এপ্রিল এই সূচক ছিল ৬ হাজার ১৯৬ পয়েন্ট। সপ্তাহের শেষ দিন গত বৃহস্পতিবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৭৪ পয়েন্ট। এই সময় ডিএসইতে লেনদেন ৪১১ কোটি থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকায়। এই কয়দিনের বাজার বিশ্লেষণ করে আমার মনে হচ্ছে- বাজার এখন ভালোর দিকেই যাবে।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ কাদের জন্য? এখানে বিনিয়োগ করে কি সংসার চালানো যায়? পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা কি একটি পেশা হতে পারে?
পুঁজিবাজার সবার জন্য উন্মুক্ত। যে যেভাবে এটিকে নেয়ার চেষ্টা করেন। এখানে অনেকে বিনিয়োগ করেন। আবার বিনিয়োগের পাশাপাশি শেয়ার কেনাবেচা করেন। এখানে যেমন বিনিয়োগকারী আছেন। আবার ট্রেডার্স আছেন। যারা প্রায় প্রতিদিন লেনদেন করার চেষ্টা করেন। যারা ট্রেডার তারা পুঁজিবাজারের যে উত্থান-পতন, সেটি থেকে মুনাফা করার চেষ্টা করেন। বাজার যখন ভালো করে, তখন ট্রেডারদের জন্য টাকা বানানো সহজ। বাজার ভালো থাকলে বিনিয়োগকারীরা ভালো করেন। ট্রেডারাও ভালো করেন।

কিন্তু পুঁজিবাজার আসলে একটি বিনিয়োগের জায়গা। এটি আসলে এমন কিছু না যে এখান থেকে আপনি প্রতিনিয়ত আয় করে সংসার চালাতে পারবেন। শেয়ার ব্যবসা বলে কিছু নেই। ব্যবসা হচ্ছে এমন একটি বিষয়, যেটি আমি প্রতিদিন করব। আর সেটি থেকে আমার সংসার চলবে। যেমন কাপড়ের ব্যবসা বা অন্য যেকোনো ব্যবসা। ব্যবসায় প্রতি মাসে একটি আয় থাকে, মানুষ সেটি দিয়ে চলে। কিন্তু দেশের পুঁজিবাজারের একজন বিনিয়োগকারী প্রতি মাসে কি আয় বের করতে পারেন? বাজার যখন খারাপ থাকে, তখন কিন্তু আয় করা যায় না।

তবে সবে দেশে সব বাজারে একশ্রেণির বিনিয়োগকারী পাওয়া যায়। তারা মার্কেটে সব সময় থাকেন। যারা বাজার ভালো বা খারপ যাই হোক, সব সময় লেনদেন করেন। এখান থেকে কিছু বের করার চেষ্টা করেন। তাদের হয়তো অনেক শেয়ারে লোকসান আছে। কিন্তু দেখা যায় যে এই লোকসানের মধ্যেও বাজার ওঠানামার মধ্যে তারা লেনদেন করেন। তারা কিছু মুনাফা বের করার চেষ্টা করেন। এটি তাদের নিজেদের স্টাইল। দেখা যায়, তাদের বিনিয়োগের বড় অংশ লোকসানে আটকে আছে। তার মধ্যে কেনাবেচা করে কিছু টাকা বের কারার চেষ্টা করেন। আর যারা এ ধরনের ব্যবসা করেন, তাদের শেয়ারের লেনদেনের পুরোটা সময় এই শেয়ারের খোঁজখবর রাখতে হয়।

কিন্তু আমাকে যদি জিজ্ঞেস করেন যে শুধু শেয়ার লেনদেনকে জীবিকা হিসেবে নেয়া যায় কি না? বা শুধু এটির ওপর ডিপেন্ড করা যায় কি না? আমি বলব না করাই উচিত। কারণ বিশ্বের সব পুঁজিবাজারেই উত্থান-পতন থাকে। এটিই বাজারের স্বাভাবিক গতি। যদি বাজার অনেক সময়ের জন্য খারাপ থাকে, মানুষ টাকা হারিয়ে ফেলবে। আমি যদি এটির ওপর নির্ভর করে সংসার চালাতে চাই, মাসে মাসে যদি আমার টাকা লাগে- সেটি আমি পাব না। তখন আমার হাতে কিছু পুঁজি রেখে দিতে হবে; খারাপ মার্কেটে যাতে আমি পুঁজিটা ভেঙে ভেঙে চলতে পারি।

কেউ যদি মনে করেন তিনি শেয়ার ব্যবসায় নামবেন, তাহলে কীভাবে শুরু করবেন?
কেউ যদি চিন্তা করেন যে আমি শেয়ার ব্যবসা করব, তাহলে তার প্রথমে দরকার কিছু জ্ঞান। প্রতিটি বিষয়ের জন্য কিছু জ্ঞান দরকার। জ্ঞান ছাড়া আমরা কিছুই করতে পারব না। আমি যদি আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা করি বা কারখানা করি, যাই করি না কেন- সেই বিষয়ে আমাদের জ্ঞান দরকার। পুঁজিবাজার ব্যবসায় কি জ্ঞানের দরকার নেই। এখানে সবচেয়ে বড় ভুল হয়। মানুষ যখন মনে করে যে সে শেয়ার ব্যবসা করবে, তখন কিছু চিন্তা না করে শেয়ার কিনে ফেলে।

সবচেয়ে বড় যে ভুল হয়, যখন মানুষ দেখে আরেকজন টাকা বানাচ্ছে। তারা মনে করে তারাও টাকা বানাতে পারবে। এ জন্য কিছু বুঝে না বুঝে মানুষের কথা শুনে লাফিয়ে পড়ে শেয়ার ব্যবসা করতে। এটি কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা আমাদের পুঁজিবাজারে। আমরা জমি যখন কিনি ৫০ বার জমি দেখি। তারপর বিভিন্ন রকমের খোঁজখবর করি। জমি গিয়ে দেখি। বাউন্ডারি দেখি। কাগজ ঠিক আছে কি না দেখি। পর্চা দেখি। তারপর অনেক দামাদামি করি। আমি গাড়ি কেনার আগে ১০টি শোরুমে যাই। সব গুণাগুণ দেখে কিনি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমি যখন শেয়ার কিনি, বেশির ভাগ লোক যেটি করে- না দেখেশুনেই কিনে ফেলে। বেশির ভাগ সময় এটি হয়। মানুষ দেখে একটি শেয়ার দুই-তিন দিন ধরে বাড়ছে। মনে করে সে কিনলেও সেটি বাড়বে। ঝোঁকের মাথায় মানুষ শেয়ার কিনে ফেলে। তারা এটিও জানে না, তারা কি এই শেয়ারে বিনিয়োগ করবে না। এটি সে কিনে বিক্রি করে দেবে। অর্থাৎ তারা ঠিক করে না যে পুঁজিবাজারে তাদের কৌশল কী হবে। তারা কি বিনিয়োগ করবে, না তারা শেয়ার সব সময় কেনাবেচা করবে। তার শেয়ার কিনে ফেলে তারা জানে না কেন কিনেছে। তাদের মাথায় থাকে তারা কিছু টাকা বানাতে চায়।

শেয়ারে বিনিয়োগ করতে গেলে কিছু বই পড়তে হবে। এখন হাতের নাগালে আছে ইন্টারনেট। মোবাইলের ভেতর সবকিছু আছে। ইউটিউবে গেলে হাজার হাজার তথ্য আছে। বাংলায় আছে; ইংরেজিতে আছে। সেখান থেকে পুঁজিবাজারটি কী সেটি বুঝে নেয়া দরকার। কীভাবে পুঁজিবাজারে টাকা বানানো যায়, সেটি বুঝে নেয়া দরকার।

কী বই পড়তে হবে?
আমি একটি বই পড়েছি, যেটির নাম হাউ টু মেক মানি ইন স্টক। এটি আমার কাজে লেগেছে। তবে এটি মনে হয় প্রথমে যারা শুরু করবে তাদের জন্য না। আমাদের দেশে বাংলায় অনেকে বই লিখেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু আহমেদের একটি বই আছে, যেটির নাম পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ জেতার কৌশল। সেটি পড়া যেতে পারে।

বই পড়ার পর কী করতে হবে?
আমি মনে করি, কেউ যদি ব্যবসায় নামে তাকে আগে বুঝতে হবে ঝুঁকি কতটুকু। ব্যাংকের একটি নিশ্চিত মুনাফা পাওয়া যায়। সঞ্চয়পত্রে মুনাফা পাওয়া যায়। কেন আমরা পুঁজিবাজারে আসব। ইতিহাস থেকে দেখা গেছে, পুঁজিবাজারের মুনাফা ব্যাংক থেকে বেশি। পুঁজিবাজারের মুনাফা সঞ্চয়পত্র থেকে বেশি। আর মুনাফা বেশি বলেই কিন্তু মানুষ এই বাজারে আসতে চায়। সঞ্চয়পত্র ভাঙিয়ে অনেকে শেয়ার কেনে। কারণ তারা তাড়াতাড়ি টাকা বানাতে চায়। কিন্তু এখান থেকে টাকা বানানো এত সহজ না। আমার পরামর্শ হচ্ছে- প্রথমে বুঝতে হবে কীভাবে এটি করা যায়। এরপর একটি পরিকল্পনা করতে হবে। আমি কি আমার সব টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করব? আমার পরামর্শ হচ্ছে না। গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হচ্ছে, আমার যে টাকা আছে তার একটি অংশ যেমন ৩০ শতাংশ এই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করব। এটি আমাকে ঠিক করতে হবে। যাতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ যদি ঝুঁকিতে পড়ে যায়, আমি যাতে নিজে ঝুঁকিতে না পড়ি। আমার কাছে যাতে টাকা থাকে বেঁচে থাকার জন্য। তিন বছর আমার বিনিয়োগটি যদি আটকা থাকে, আমার যাতে সমস্যা না হয়।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে, যারা অনেক বছর ধরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছে। ভালো করছে। তাদের পরামর্শ নিতে পারেন নতুন বিনিয়োগকারীরা। আমি কার কথা শুনব। আমি সে রকম একজন লোকের কথা শুনব যে ভালো করেছে। আমি ব্রোকারদের সঙ্গে কথা বলতে পারি।

শেয়ার কেনার আগে একজন বিনিয়োগকারী কী দেখবেন?
একটি শেয়ার কেনার আগে তার ফান্ডামেন্টাল বিষয়গুলো দেখে নিতে হবে। যারা টাকাপয়সা নিয়ে নাড়াচাড়া করেন, তারা বিষয়গুলো জানেন। কিছু তথ্য আছে যেগুলো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান রেগুলার প্রকাশ করে। ডিএসইর ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। আমি বলব প্রথমে ভালো কোম্পানিগুলো দেখতে। দেখা শুরু করা দরকার ভালো কোম্পানি দিয়ে। আমাদের দেশের পুঁজিবাজারে কিছু কোম্পানি আছে, সেগুলোর দাম বাড়ে-কমে। কিন্তু তাদের আপনি বাজারে খুঁজে পাবেন না। আপনাকে সেই কোম্পানিগুলোকে দেখতে হবে যেগুলো জানাশোনা। যে কোম্পানিগুলোর পণ্য বা সেবা আমরা ব্যবহার করি। যেমন- গ্রামীণফোন। গ্রামীণফোন কিন্তু দেশের পুঁজিবাজারে আছে আর আমরা সেটি সম্পর্কে জানি। এটির একটি অস্তিত্ব আছে। আমি উদাহরণগুলো দিচ্ছি। যেমন স্কয়ার ফার্মা। আমি এগুলোতে বিনিয়োগ করতে বলছি না। এগুলো দিয়ে শুরু করলে আমার কোম্পানিগুলোকে বুঝতে সহজ হবে। বেক্সিমকো ফার্মা। বড় কোম্পানিগুলোর কথা বলছি। লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট। আমি সেই সব কোম্পানি নিয়ে গবেষণা করব। যেগুলোর পণ্য বা সেবা আমি রাস্তাঘাটে দেখতে পাব। আমি মনে করি, নতুন যারা বিনিয়োগ শুরু করে, তাদের জন্য ভালো হবে নতুন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা। অস্তিত্বহীন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করবেন না। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে কিছু কোম্পানি আছে যাদের অস্তিত্ব পাওয়া যাবে না। কিন্তু দাম ৩০ থেকে ৪০ গুণ। এই ধরনের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা উচিত নয়। ভালো কোম্পানিগুলোকে কিনতে বলছি। কারণ তাদের সব তথ্য পাওয়া যাবে। তাদের তথ্যগুলো সঠিক। ভালো কোম্পানির মধ্যে আছে, বিশেষ করে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে আমি প্রথমে চুজ করতে বলব।

বাজারে পণ্য বা সেবা আছে এই ধরনের কোম্পানির ভেতর থেকে কীভাবে আমি আমার বিনিয়োগের জন্য শেয়ার বের করব?
আবার আমি যে এই কথাগুলো বললাম, এগুলো হলেই যে ভালো হবে সে রকম কিন্তু না। যেমন রবি আমি কিনব না। কারণ আমি দেখছি যে এটির লভ্যাংশ ভালো না। আমি যদি মোবাইল খাতে যাই, তাহলে দেখব যে রবির থেকে গ্রামীণফোন গত কয়েক বছরে ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে। যদি ফার্মাসিউটিক্যালসে যাই আমি তো এইটুকু বের করতে পারব যে এই কোম্পানিটি গত কয়েক বছরে কতটুকু লভ্যাংশ দিয়েছে। আমি সেখান থেকে বের করতে পারি। যদি আমি এই শেয়ারটি ২৫০ টাকা দিয়ে কিনি তাহলে আমি কত টাকা পাচ্ছি বছর শেষে। শেষ তিন বছরে কী পরিমাণ লভ্যাংশ দিয়েছে। এটি যে কেউ বের করতে পারবে। আমি এখানে বিনিয়োগ করলে আমার যদি শেয়ারের দাম কমেও যায়। আমার খারাপ সময়ে আমি যেন লভ্যাংশ থেকে কিছু পাই। এটি হতে পারে আমার বিনিয়োগের ১ শতাংশ বা ২ শতাংশ। আমি যাতে ১০ লাখে ১০ হাজার টাকা না পাই; আমি যাতে ২০ হাজার টাকা পাই- সেটি হিসাব করে দেখেশুনে বিনিয়োগ করতে হবে। একটু ঘাঁটলেই, বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাবে যে কারা সব সময় টাকা দিচ্ছে। যারা বহু বছর ধরে টানা নগদ লভ্যাংশ দিয়ে যাচ্ছে তাদের খুঁজে বের করতে হবে। যারা প্রথমে শুরু করবে তাদের জন্য এই ধরনের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা ভালো। এর বাইরে আরও কিছু বিষয় আছে, যেগুলো নতুনদের জন্য একটু সময় লাগবে যেমন ইপিএস কত? পিই রেশিও কত? নিট অ্যাসেট ভ্যালু- এগুলো দেখে আমি ঠিক করব আমি কোন কোম্পানি কিনব।

আপনি মৌলভিত্তিক বা ফান্ডামেন্টাল শেয়ারের কথা বলছেন। কিন্তু এ ধরনের শেয়ার কিনেও অনেকে লোকসান দিচ্ছে। এ ব্যাপারে আপনার পরামর্শ কী?
সবকিছু দেখে আমি ঠিক করলাম যে, আমি পাঁচটি কোম্পানি কিনতে পারি। এখন আমি কি সঙ্গে সঙ্গে এই শেয়ারগুলো কিনে ফেলব? না, শেয়ারগুলো কেনার জন্য একটি সঠিক সময় আছে। শেয়ারের দম যখন অনেক বেড়ে গেছে, তখন যদি আমি কোম্পানিটি কিনি তাহলে তো আমি লোকসান করব। সূচক যখন বেশি থাকে তখন ভালো শেয়ার কিনলেও লোকসান হবে। সূচক যখন ৭ হাজার ছিল তখন ভালো কোম্পানি থাকলেও দাম কমে যাবে। এই ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস করতে হবে। বিনিয়োগকারীরা টেকনিক্যাল চার্ট ব্যবহার করে শেয়ার কখন কিনবে সেটি বুঝতে। আমি বিনিয়োগকারী হিসেবে টেকনিক্যাল চার্ট ফলো করি। এখান থেকে বের করা যায় কখন শেয়ারটি কিনব। আর যারা ট্রেড করবে বিনিয়োগ করে বসে থাকবে না, হাতে অফুরন্ত সময় আছে। চাকরি করে না। তারা কিন্তু ট্রেডিং করতে পারে তাই না। অনেক অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি আছেন, যারা ট্রেডিং করেন। চার্টের কিছু পেরামিটার আছে, সেগুলো তাদের দেখতে হবে। এখান থেকে বের করা যায় যে কখন কেনা যায়, কখন বিক্রি করা যায়। অর্থাৎ আমি বলতে চাই, যারা একদম নতুন বিনিয়োগকারী তারা প্রথমে পড়ালেখা করবেন। কোম্পানির আর্থিক দিকগুলো দেখবেন। অভিজ্ঞদের পরামর্শ নেবেন। তারপর বিনিয়োগ করবেন।

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস জানতে হলে কী জানতে হবে?
টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস বুঝতে হলে চার্ট বুঝতে হবে। এর মধ্যে আছে প্রাইজ ক্যান্ডেল। মুভিং অ্যাভারেজ বুঝতে হবে। আরএসআই বুঝতে হবে। এমএসিডি বুঝতে হবে। সঙ্গে বুঝতে হবে ভলিউম বার। আর বলিঙ্গার ব্যান্ড।

সর্বশেষে সাধারণ বা ছোট বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে কিছু বলুন?
ছোট বা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য একটাই কথা। দেখেশুনে বিনিয়োগ করুন। না বুঝে, গুজবে কান দিয়ে পুঁজিবাজারে কখনোই বিনিয়োগ করবেন না। সব সময় মনে রাখতে হবে যে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি থাকবে। তাই সঞ্চয়ের পুরোটা কখনোই বিনিয়োগ করবেন না। বাজার ভালোভাবে না বুঝলে ঋণ বা ধার করে বিনিয়োগ করার দরকার নেই। আর আরেকটি কথা, ধৈর্য ধরতে হবে। সেটি শেয়ার কেনার পরের দিনই লাভ পাওয়া যাবে এই মানসিকতা থাকলে চলবে না।

বাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু বলবেন?
আমি টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের ভাষায় কথা বলতে চাই। আমি এটুকু বলতে পারি যে ভলিউম (লেনদেন) এখন বাজার পাচ্ছে, এটা যদি থাকে সামনে বাজার আপ ট্রেন্ডে থাকবে।


সমন্বিত ঋণ ব্যবস্থাপনা অফিস প্রতিষ্ঠার সুপারিশ আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনা কাঠামোকে শক্তিশালী করতে এবং রাজস্ব ও পরিচালন ঝুঁকি কমাতে বাংলাদেশে একটি সমন্বিত ঋণ ব্যবস্থাপনা অফিস (ডিএমও) প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাংকের একটি যৌথ কারিগরি সহায়তা মিশন।

‘ঋণ ব্যবস্থাপনা অফিস প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক কর্মশালায় এই প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।

কর্মশালাটি গত সোমবার বাংলাদেশ সচিবালয়ের অর্থ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

অর্থ বিভাগের ‘ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা শাখার সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্প’-এর আওতায় সার্বজনিক আর্থিক ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ ও সেবা প্রদান সক্ষমতা বৃদ্ধি (এসপিএফএমএস) কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

মিশনটি পর্যবেক্ষণ করেছে যে বাংলাদেশের ঋণ ব্যবস্থাপনার কাজগুলো বর্তমানে একাধিক সংস্থার মধ্যে বিভক্ত। ফলে সমন্বয়ের ঘাটতি, অসঙ্গত ঋণের তথ্য এবং একটি বিস্তৃত কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে অসুবিধা দেখা দিচ্ছে।

এছাড়া একটি কেন্দ্রীয় ও নিরীক্ষিত ঋণ ডাটাবেইসের অনুপস্থিতি এবং আনুষ্ঠানিক নগদ প্রবাহ পূর্বাভাস ব্যবস্থার অভাবকেও তারা চিহ্নিত করেছে। এগুলো কার্যকর ও সাশ্রয়ী সরকারি ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন, পরিকল্পনা ও টিডিএম) মো. হাসানুল মতিন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (বাজেট-১) ও এসপিএফএমএস-এর জাতীয় কর্মসূচি পরিচালক ড. জিয়াউল আবেদীন এবং অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (ম্যাক্রোইকনমিকস-১) হাসান খালেদ ফয়সাল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন।

আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক মিশনের নেতৃত্ব দেন সিনিয়র ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর এক্সপার্ট অরিন্দম রায়। তার সঙ্গে ছিলেন ড. জেন্স ক্লাউসেন, ফিলিপ আর. ডি. অ্যান্ডারসন ও পার জনসন।

বিশেষজ্ঞ মতামত উপস্থাপন করেন অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব (ব্যয় ব্যবস্থাপনা) মো. মনজরুল হক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের যুগ্ম সচিব আবু দাইয়ান মোহাম্মদ আহসানউল্লাহ।

প্রেজেন্টেশনে মিশনটি প্রস্তাব করে যে সরকার ও সরকার-গ্যারান্টিযুক্ত সব ঋণ-সম্পর্কিত কার্যক্রম অর্থ বিভাগের অধীনে একীভূত করা হোক। এর প্রথম ধাপ হিসেবে ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা শাখা পুনর্গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়।

প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবিত ডিএমও দেশীয় ঋণ ইস্যু তত্ত্বাবধান করবে, বার্ষিক ঋণগ্রহণ পরিকল্পনা তৈরি করবে, নিলাম ক্যালেন্ডার সমন্বয় করবে, ঋণ পোর্টফোলিও ঝুঁকি মূল্যায়ন করবে এবং বিদ্যমান সিস্টেম ও ডাটাবেইস একত্রিত করে একটি ঐক্যবদ্ধ ঋণ ডাটাবেইস গড়ে তুলবে।

মিশনটি ঋণ গ্রহণের কর্তৃত্ব, জবাবদিহিতা, প্রতিবেদন দায়বদ্ধতা এবং স্বচ্ছতার মান নির্ধারণের জন্য একটি স্পষ্ট আইনি কাঠামোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে।

পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করার জন্য, মিশনটি ডিএমও-তে পুঁজিবাজার, মূল্য নির্ধারণ, নিষ্পত্তি কার্যক্রম এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ কর্মীদের নিয়োগের সুপারিশ করেছে।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই ধরনের দক্ষতা বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে। তবে দক্ষ পেশাদারদের ধরে রাখতে, সরকারকে প্রতিযোগিতামূলক ক্ষতিপূরণ এবং ক্যারিয়ার উন্নয়নের পথ চালু করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, মধ্যমেয়াদে, ডিএমও আরও স্বায়ত্তশাসিত সত্তায় পরিণত হতে পারে যার সম্প্রসারিত কার্যাবলী থাকবে, যার মধ্যে থাকবে আকস্মিক দায়বদ্ধতা তদারকি এবং বিনিয়োগকারী সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা।

কর্মশালায় উপস্থাপিত আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, ১৯৮০-এর দশক থেকে অনেক দেশ কেন্দ্রীভূত ডিএমও পদ্ধতিতে রূপান্তরিত হয়েছে, যা ঋণ গ্রহণের খরচ ও ঝুঁকি হ্রাস, রাজস্ব স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং ঋণ ব্যবস্থাপনা ও মুদ্রানীতির কার্যক্রমের মধ্যে স্পষ্ট পৃথকীকরণে সহায়তা করেছে।

মিশনটি আরও জানায়, সফল ডিএমও সাধারণত তিনটি মূল ইউনিটের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এগুলো হল-ফ্রন্ট অফিস (ঋণ গ্রহণ ও বাজার লেনদেন), মিডল অফিস (ঝুঁকি ও কৌশল) এবং ব্যাক অফিস (নিষ্পত্তি, তথ্য প্রশাসন, হিসাব ও প্রতিবেদন)।

মিশনটি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে একটি ডিএমও প্রতিষ্ঠার জন্য দৃঢ় রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি, পর্যায়ক্রমে পুনর্গঠন, আধুনিক আইটি সিস্টেমে বিনিয়োগ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে টেকসই সমন্বয় প্রয়োজন।

একবার কার্যকর হলে একীভূত ডিএমও বাজারের আস্থা বৃদ্ধি করবে, অর্থায়ন খরচ এবং ঝুঁকি কমাবে এবং বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক স্থিতিশীলতাকে শক্তিশালী করবে বলেও আশা করা হচ্ছে।


এই বছর বাংলাদেশে ১ বিলিয়ন ডলারের কৃষি পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রের: রাষ্ট্রদূত জ্যাকবসন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে কৃষি পণ্য রপ্তানি বাড়াতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৪ সালে এই খাতে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৭৭৯ মিলিয়ন ডলার, যা ২০২৫ সালের মধ্যে এক বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর আশা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন।

মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল (ইউএসএসইসি), কেজিএস গ্রুপ ও মাহবুব গ্রুপের মধ্যে একটি লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) সই অনুষ্ঠানে তিনি এই তথ্য জানান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা এ বছর কৃষি পণ্য রপ্তানিতে বিশেষভাবে মনোযোগ দিয়েছি। আজকের এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি সেই বৃহত্তর লক্ষ্যেরই একটি অংশ।’

তিনি জানান, সয়াবিন মিল রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দ্রুত বাড়ছে। ২০২৩ সালে যেখানে রপ্তানির পরিমাণ ছিল মাত্র ৫ মিলিয়ন ডলার, ২০২৪ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২০ মিলিয়ন ডলার। চলতি বছর বাংলাদেশি অংশীদারদের সহযোগিতায় এই খাতে রপ্তানি ৮৬ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

রাষ্ট্রদূত জ্যাকবসন আরও উল্লেখ করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র উচ্চমানের সয়াবিন মিল উৎপাদন করে, যা বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য খাতের জন্য সুবিধাজনক। এর ফলে স্থানীয় ভোক্তারা উপকৃত হন, একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকরাও লাভবান হন।’

তিনি দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার হওয়ার প্রশংসা করে বলেন, এই সম্পর্ক বছরের পর বছর আরও ভালো হচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত কেজিএস গ্রুপ, মাহবুব গ্রুপ ও যুক্তরাষ্ট্র সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাদের অবদান দুই দেশের কৃষি-বাণিজ্য সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।


ইথিওপিয়ায় প্রথমবারের মতো ‘আফ্রিকা-বাংলাদেশ ট্রেড শো ও বিজনেস সামিট'

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ও আফ্রিকার মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও বিনিয়োগ সহযোগিতা আরও জোরদার করতে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হচ্ছে ‘আফ্রিকা-বাংলাদেশ ট্রেড শো ও বিজনেস সামিট ২০২৫’।

ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় আগামী ১২ থেকে ১৩ নভেম্বর ২০২৫ এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে ডি লিওপল হোটেল, আদ্দিস আবাবা, ইথিওপিয়া।

এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগটি যৌথভাবে আয়োজন করছে আফ্রিকা বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম (এবিবিএফ) এবং ইথিওপিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।

এই সম্মেলন হবে দুই অঞ্চলের ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও নীতিনির্ধারকদের একত্রিত করার এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, যা বাংলাদেশ ও আফ্রিকার মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার নতুন অধ্যায় সূচনা করবে।

ইভেন্টের মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত করা। এছাড়াও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ফার্মাসিউটিক্যালস, কৃষিপণ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, হালকা প্রকৌশল ও চামড়াজাত শিল্পখাত আফ্রিকার বাজারে প্রবেশের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে।

দুই দিনব্যাপী এই সামিটে থাকবে ব্যবসায়িক প্রদর্শনী, বিনিয়োগ বিষয়ক আলোচনা, রপ্তানি চুক্তি স্বাক্ষর ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতা বিষয়ক সেশন। দুই অঞ্চলের সরকারি প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী নেতা, বিনিয়োগকারী ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারা এতে অংশ নেবেন।


১৯তম বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো শুরু কাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ডেনিম শিল্পের বিকাশে নিবেদিত বৃহত্তম আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর ১৯তম আসর শুরু হচ্ছে কাল বুধবার। রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) দুই দিনব্যাপী এ আয়োজন শেষ হবে বৃহস্পতিবার।

এ বছর প্রদর্শনীতে ১০টি দেশ থেকে ৪৫টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, পাকিস্তান, তুরস্ক, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনাম, জার্মানি ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। প্রতিষ্ঠানগুলো ডেনিম ও নন-ডেনিম ফ্যাব্রিক, গার্মেন্টস, সুতা, ওয়াশিং ও লন্ড্রি, অ্যাকসেসরিজ, রাসায়নিক, যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি এবং লজিস্টিকস ক্যাটাগরিতে তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করবে।

প্রদর্শনীতে ডেনিম উৎপাদনের সর্বশেষ উদ্ভাবন, টেকসই প্রযুক্তি ও বৈচিত্র্যময় পণ্যের প্রদর্শনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সক্ষমতা ও বৈশ্বিক বাজারে শক্তিশালী অবস্থান তুলে ধরা হবে। বিশ্বজুড়ে ডেনিম শিল্পের শীর্ষ ব্যক্তিত্ব, উদ্ভাবক ও বিশেষজ্ঞরা এ আয়োজনে একত্রিত হবেন, যেখানে ডেনিম উৎপাদন, টেকসইতা ও প্রযুক্তির পরিবর্তনশীল ধারা নিয়ে আলোচনা হবে।

এ আয়োজনে তিনটি প্যানেল আলোচনা ও দুটি সেমিনারের মাধ্যমে বাংলাদেশের ডেনিম শিল্পের সাম্প্রতিক অগ্রগতি ও বৈশ্বিক প্রভাব উপস্থাপন করা হবে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মহাপরিচালক (যুগ্মসচিব) বেবি রানি কর্মকার ‘ডেনিম রাইজিং: বাংলাদেশস জার্নি টু গ্লোবাল লিডারশিপ’ শীর্ষক আলোচনায় প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেবেন।

বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো ও বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজ উদ্দিন জানান, দীর্ঘ পথচলায় বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো তার উদ্ভাবনী ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে প্রস্তুতকারক, ব্র্যান্ড ও সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। এটি এখন শুধু একটি প্রদর্শনী নয়, বরং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ডেনিম প্রস্তুতকারক ও ক্রেতারা সংযুক্ত হন।

মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা এক্সপোকে এমন এক মঞ্চে পরিণত করেছি, যেখানে টেকসইতা, বৈচিত্র্যময় ডিজাইন ও বৈশ্বিক শিল্পের পরিবর্তনশীল রূপ একসঙ্গে প্রতিফলিত হয়। এ বছর এক্সপোতে থাকবে আরও নতুনত্ব, যা দর্শনার্থীদের বৈশ্বিক ডেনিম শিল্পের সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে সহায়তা করবে।’


তুলা রপ্তানিতে জটিলতা নিরসনে সহযোগিতা চায় মার্কিন রপ্তানিকারকরা

বিজিএমইএ ও মার্কিন তুলা রপ্তানিকারকদের বৈঠক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে তুলা রপ্তানির ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ডকুমেন্টেশন প্রস্তুতে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা ও জটিলতা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন তুলা রপ্তানিকারকরা। এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরার বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এই দাবি জানান মার্কিন তুলা রপ্তানিকারকরা। যুক্তরাষ্ট্রের তুলা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান কটন ইউএসএ-এর উদ্যোগে মার্কিন তুলা রপ্তানিকারকদের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

মার্কিন তুলা রপ্তানিকারকদের দাবির প্রেক্ষিতে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান প্রতিনিধিদলকে লিখিত আকারে তাদের প্রস্তাবনা জানানোর আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করেন যে, বিজিএমইএ বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যথাযথভাবে উপস্থাপন করবে, যাতে দ্রুত এই জটিলতাগুলোর নিরসন করা যায়।

বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধিদলে ইকম-এর লি ইন, কারগিল-এর ক্রিস্টা রিকম্যান, এলডিসি-এর ডিয়েগো লোজাদা, ওলাম এগ্রি-এর ওয়েসলি রেন্টজ, ক্যারোলিনা কটন গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর ওয়েন বোসম্যান, স্ট্যাপলকটন কো-অপারেটিভ-এর ক্রিস জোন্স এবং কটন কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনাল-এর উইল বেটেনডর্ফ ও আলী আরসালান উপস্থিত ছিলেন। বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের নেতৃত্বে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশ নেন সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান ও পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা।

বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি, মার্কিন তুলার ব্যবহার সম্প্রসারণ এবং বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে নবঘোষিত শুল্ক সুবিধা কাজে লাগাতে করণীয় ঠিক করা।

আলোচনায় বাংলাদেশের পোশাক খাতে মার্কিন তুলা সরবরাহের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। মূল ফোকাস ছিল সম্প্রতি ঘোষিত মার্কিন নির্বাহী আদেশ, যেখানে পোশাক উৎপাদনে ন্যূনতম ২০% মার্কিন কাঁচামাল ব্যবহার করা হলে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক থেকে আনুপাতিক ছাড় পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘এই নতুন শুল্ক ছাড়ের সুযোগ আমাদের শিল্পখাতের জন্য এক বিশাল সম্ভাবনা এনে দিয়েছে, যা আমাদের পণ্যকে আন্তর্জাতিক বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে।’

তিনি উল্লেখ করেন, এই সুবিধা বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলো কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লাভ করবে, সে বিষয়ে এখনো বিজিএমইএর কাছে সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই। বিজিএমইএ সভাপতি মার্কিন প্রতিনিধিদলকে অনুরোধ জানান, যেন তারা মার্কিন প্রশাসনের কাছ থেকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় স্পষ্টীকরণ এনে বিজিএমইএকে সরবরাহ করেন। এতে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা বিলম্ব না করে শুল্ক সুবিধা গ্রহণের লক্ষ্যে অবিলম্বে প্রস্তুতি নিতে পারবেন।

মাহমুদ হাসান খান আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমদানিকৃত তুলার প্রায় ১০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে, যা দ্বিগুণ বা তিনগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব। তবে এজন্য প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ও সুচিন্তিত কৌশলগত পদক্ষেপ।’ তিনি মনে করেন, ‘মার্কিন তুলার উচ্চ গুণগত মান ও তুলনামূলক সুবিধা নিয়ে বিশদ গবেষণা করে স্পিনার ও কারখানাগুলোকে তথ্য সরবরাহ করা হলে তারা আমদানি বাড়াতে উৎসাহিত হবেন।’

পরে মার্কিন প্রতিনিধিদল বিজিএমইএ সভাপতির এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে এ বিষয়ে যৌথভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। বৈঠকে কটন কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিরা বলেন, বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্প বিশ্ববাজারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে, মার্কিন তুলা তার টেকসই গুণাবলী, নির্ভরযোগ্যতা এবং উচ্চমানের জন্য সুপরিচিত। আমরা বিশ্বাস করি, মার্কিন তুলা ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা তাদের পণ্যের মান আরও উন্নত করতে পারবে এবং মার্কিন বাজারে শুল্ক সুবিধা কাজে লাগিয়ে নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারিত করতে পারবে।

বৈঠকে বাংলাদেশের বাজারে মার্কিন তুলা সরবরাহ আরও সহজ ও দ্রুত করতে লজিস্টিক ও অবকাঠামো উন্নয়নের উপায় নিয়েও আলোচনা হয়। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে একটি ওয়্যারহাউজ স্থাপনের সম্ভাবনা নিয়েও মতবিনিময় করা হয়, যা বাস্তবায়িত হলে শিল্পের লিড টাইম কমবে। উভয় পক্ষ নতুন শুল্কনীতি এবং মার্কিন কাঁচামাল ব্যবহারের পরিমাপ পদ্ধতি সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও ট্রেসেবিলিটি নিশ্চিত করতে যৌথভাবে কাজ করতে সম্মত হয়।

বিজিএমইএর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও পোশাক কারখানাগুলোর দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের জন্য মার্কিন তুলা রপ্তানিকারকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে, বিজিএমইএ ইনোভেশন সেন্টারে মিলগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধি ও অপচয় হ্রাসে গবেষণা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতা ও জ্ঞান প্রদানের আহ্বান জানানো হয়।

উভয়পক্ষই ভবিষ্যতে দুই দেশের অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব ও পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।


বদলে যাচ্ছে হাওরাঞ্চলের অর্থনীতি

আপডেটেড ৩ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার ঘোড়াউত্রা নদীর দুই তীরে চোখে পড়ে শত শত হাঁসের খামার। বাঁশের খুঁটি আর জালের বেষ্টনী দিয়ে বর্ষার ভাসান পানিতে গড়ে ওঠা এসব অস্থায়ী খামারে সারাদিন সাঁতার কাটে দেশি প্রজাতির হাঁস। রাতে তারা নদীর ধারে তৈরি খুপরি ঘরে বিশ্রাম নেয়।

খামারিদের ভাষায়, কম পুঁজি, সহজলভ্য প্রাকৃতিক খাদ্য (শামুক, ঝিনুক) ও সামান্য দানাদার খাবারের সহায়তায় এ খাতে এখন লাভজনক আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ফলে বদলে যাচ্ছে হাওরাঞ্চলের অনেক পরিবারের জীবনযাত্রা।

নিকলীর পাশাপাশি ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও তাড়াইলএই হাওর অধ্যুষিত উপজেলা গুলোতেও বর্ষা মৌসুমে নদ-নদী ও হাওরের ভাসান পানিতে হাঁস পালনের প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। এতে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্র ও জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্যে জানা যায়, কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের খামারগুলো থেকে বছরে প্রায় দুই কোটি হাঁসের ডিম উৎপাদিত হয়। জেলার চাহিদা মিটিয়েও দেশের মোট চাহিদার প্রায় ২৫ শতাংশ ডিম আসে এখান থেকে।

এই ডিম ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, সিলেট ও অন্যান্য বড় শহরে সরবরাহ হয়। পাশাপাশি, হাওরের হাঁসের মাংসও দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়।

ডিমকে ঘিরে তাড়াইল উপজেলার দামিহা এলাকায় গড়ে উঠেছে শতাধিক হ্যাচারি। সেখানে তুষ বা ভাপ পদ্ধতিতে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই লাখ হাঁসের বাচ্চা উৎপাদিত হয়। যা স্থানীয় খামার ও দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়।

নিকলীর খামারি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ভাসান পানিতে খামার করলে আলাদা জমি লাগে না। জাল ও বাঁশের ঘের দিয়ে হাঁস ছেড়ে দিই, শামুক আর দানাদার খাবারেই বেশির ভাগ চাহিদা মেটে। খরচ কম, তাই মৌসুমে ভালো লাভ হয়।’

মিঠামইনের রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘আমাদের ডিম পাইকাররা সরাসরি নিয়ে যায় ঢাকা, চট্টগ্রামে। কিন্তু হাঁসের রোগ হলে দ্রুত ডাক্তার পাই না। মোবাইল ভেট টিম থাকলে ক্ষতি অনেক কমে যেত।’

তাড়াইলের দামিহা এলাকার হ্যাচারি উদ্যোক্তা শাহাদত হোসেন বলেন, ‘দামিহায় এখন অনেক হ্যাচারি হয়েছে। আমরা প্রতিদিন হাজার হাজার বাচ্চা তুলতে পারি। যদি বিদ্যুৎ স্থিতিশীল থাকে আর একটা স্থায়ী সংগ্রহ কেন্দ্র হয়, তাহলে কাজটা আরও বড় পরিসরে করা যাবে।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘হাওরের ভাসান পানিতে উৎপাদিত হাঁসের মাংস ও ডিম নির্ভেজাল, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। তাই বাজারে এর চাহিদা সবসময়ই বেশি।’ তিনি জানান, এই সম্ভাবনাময় খাতের উন্নয়নে খামারিদের প্রশিক্ষণ, টিকাদান ও পরামর্শসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’

বর্তমানে কিশোরগঞ্জে প্রায় ২ হাজার হাঁস খামার রয়েছে। এসব খামারে ২৫ লাখের বেশি হাঁস লালনপালন হচ্ছে। খামারি বা উদ্যোক্তার সংখ্যা প্রায় ১৫০০, আর এ খাত থেকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে সুবিধা পাচ্ছে প্রায় ১২ হাজার পরিবার। বছরে মোট উৎপাদন হয় প্রায় দুই কোটি ডিম।

খামারিদের অভিযোগ, হাঁসের রোগ-বালাই দেখা দিলে দ্রুত ভেটেরিনারি সহায়তা পাওয়া যায় না। তারা চান মোবাইল ভেট সার্ভিস, টিকা, ঔষধে সহায়তা, স্বল্পসুদে ঋণ, ফিড ও ডিমের সংগ্রহকেন্দ্র এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চয়তা।

সংশ্লিষ্টদের মতে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও বাজারসংযোগ বাড়ানো গেলে হাওরের হাঁস পালন শুধু স্থানীয় জীবিকার খাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এটি দেশের একটি বড় অর্থনৈতিক খাতে পরিণত হতে পারে।


মোংলা ইপিজেডে দুর্যোগ প্রস্তুতি ও মাল্টি-হ্যাজার্ড ম্যানেজমেন্ট প্রশিক্ষণ শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যেকোনো দুর্যোগে শিল্প-কারখানার উৎপাদন অব্যাহত রাখা এবং ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে মোংলা ইপিজেডে ‘দুর্যোগ প্রস্তুতি, ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতা এবং মাল্টি-হ্যাজার্ড ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন এফবিসিসিআই -এর সেইফটি কাউন্সিল এবং মোংলা ইপিজেডের যৌথ উদ্যোগে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণে মোংলা ইপিজেডের শিল্প-কারখানা থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।
গতকাল সোমবার সকালে প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন মোংলা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক কালাম মো. আবুল বাশার।
তিনি বলেন, দুর্যোগের প্রস্তুতি ও দুর্যোগকালে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে শিল্পকারখানার ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। পাশাপাশি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শিল্পের উৎপাদনশীলতা অব্যাহত রাখা সম্ভব।
এ সময় ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ উন্নয়ন ও ঝুঁকি হ্রাসের লক্ষ্যে এফবিসিসিআইর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান তিনি। এফবিসিসিআইর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে মোংলা ইপিজেডের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসে কারখানা পর্যায়ে সক্ষমতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। এই প্রশিক্ষণ অংশগ্রহণকারীদের ক্ষমতা ও দক্ষতা উভয়ই বৃদ্ধি করবে।
এফবিসিসিআই সেইফটি কাউন্সিলের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মো. মঞ্জুর কাদের খান তার বক্তব্যে প্রকল্পের লক্ষ্য, কার্যক্রম ও এফবিসিসিআইর চলমান উদ্যোগ সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
তিনি জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ প্রিপেয়ার্ডনেস পার্টনারশিপ (বিপিপি) প্রকল্পের আওতায় এফবিসিসিআই দেশের শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার ও বেসরকারি খাতের সম্মিলিত উদ্যোগে দেশে টেকসই ও নিরাপদ ব্যবসায় পরিবেশ গড়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এ সময় তিনি প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য গেটস ফাউন্ডেশন এবং কারিগরি সহায়তার জন্য এশিয়ান ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টারকে (এডিপিসি) ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোংলা ইপিজেডের পরিচালক (প্রশাসন) মো. কাউসার হোসেন, ইপিজেড জোন অফিসের কর্মকর্তারা এবং এফবিসিসিআই সেইফটি কাউন্সিলের কর্মকর্তারা।


বিশ্ববাজারে কমেছে আকরিক লোহার দাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্ববাজারে আকরিক লোহার দাম সামান্য হ্রাস পেয়েছে। বিশেষ করে চীনের চাহিদা কমে যাওয়া ও মজুত বৃদ্ধির কারণে দাম কমেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির আশায় সপ্তাহ ও মাসজুড়ে দাম সামগ্রিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী ছিল। খবরটি জানিয়েছে বিজনেস রেকর্ডার।

চীনের দালিয়ান কমোডিটি এক্সচেঞ্জে জানুয়ারির সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া আকরিক লোহার চুক্তির দাম গত শুক্রবার ০.৯৩ শতাংশ কমে মেট্রিক টনপ্রতি ৭৯৭ ইউয়ান বা ১১১.৮৯ ডলারে নেমে আসে। তবু পুরো সপ্তাহে দাম বেড়েছে ৩.৩ শতাংশ।

অন্যদিকে, সিঙ্গাপুর এক্সচেঞ্জে ডিসেম্বরের মানদণ্ড আকরিক লোহার দাম ০.৬১ শতাংশ কমে টনপ্রতি ১০৫.৮ ডলারে দাঁড়ায়, যা সপ্তাহজুড়ে ২ শতাংশ বৃদ্ধি নির্দেশ করে। উভয় সূচকই মাসের হিসেবে প্রায় ২ শতাংশ বেড়েছে। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প-শি বৈঠকের পর সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির আশায় দামকে সমর্থন মিলেছে।

তবে সামষ্টিক প্রভাব কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা আবার বাজারের মৌলিক অবস্থার দিকে নজর দিচ্ছেন। মাইস্টিলের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সপ্তাহে চীনের গড় দৈনিক গরম ধাতু উৎপাদন আগের সপ্তাহের তুলনায় ১.৫ শতাংশ কমে ২৩.৬ লাখ টনে নেমেছে। একই সময়ে বন্দরভিত্তিক মজুত বেড়েছে ০.৮ শতাংশ।

এছাড়া, টানা সপ্তম মাসের মতো অক্টোবরেও চীনের কারখানা কার্যক্রমে সংকোচন দেখা গেছে, যা বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

ইস্পাত উৎপাদনে ব্যবহৃত অন্যান্য উপকরণ যেমন কোকিং কয়লা ও কোকের দাম যথাক্রমে ১.০৪ শতাংশ ও ০.৫৮ শতাংশ বেড়েছে। শাংহাই ফিউচার্স এক্সচেঞ্জে বেশিরভাগ ইস্পাত পণ্যের দাম কমেছে; রিবার ০.১৯ শতাংশ, হট-রোল্ড কয়েল ০.২১ শতাংশ এবং স্টেইনলেস স্টিল ০.৪৩ শতাংশ কমেছে। তবে ওয়্যার রডের দাম বেড়েছে ০.১২ শতাংশ।


বিডাকে দ্রুত পরিবর্তিত বিনিয়োগ পরিবেশের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে: নির্বাহী চেয়ারম্যান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, বিডা অন্যান্য সাধারণ সরকারি দপ্তরের মতো নয়। এটি বিশেষায়িত সংস্থা, যার মূল দায়িত্ব বিনিয়োগকারীদের চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত সাড়া দেওয়া। বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ পরিবেশ দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। তাই বিডাকেও সেই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মাল্টিপারপাস হলে বিডার পুনর্বিন্যাসকৃত সাংগঠনিক কাঠামো বিষয়ে অবহিতকরণ সভায় চৌধুরী আশিক এসব কথা বলেন।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে চৌধুরী আশিক জানান, এ কাঠামোগত সংস্কার বিডার দেশি ও বিদেশি অংশীজনদের দীর্ঘদিনের পরামর্শের ফলাফল, যা তারা এখন বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন।

নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, বিডা বিনিয়োগ প্রক্রিয়ার ধাপগুলোর সঙ্গে মিল রেখে নিজেদের সাংগঠনিক কাঠামোতে ব্যাপক সংস্কার এনেছে। এ পুনর্গঠনের মাধ্যমে দায়িত্ব ও কর্তব্যে অধিকতর স্পষ্টতা আসবে, বিনিয়োগকারীদের জন্য সেবা হবে আরও দ্রুত ও কার্যকর এবং সেবার মান পরিমাপের জন্য নির্ধারিত সূচক প্রবর্তন করা হয়েছে।

চৌধুরী আশিক বলেন, এ কাঠামোগত সংস্কার সরকারঘোষিত ৩২ দফা বিনিয়োগ পরিবেশ সংস্কার কর্মপরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও প্রতিযোগিতামূলক ও আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে।

তিনি জানান, বিডার নতুন কাঠামো সাজানো হয়েছে বিনিয়োগ চক্রের সঙ্গে মিল রেখে। এ কাঠামো অনুযায়ী বিডায় থাকবে পাঁচটি প্রধান অনুবিভাগ বা উইং। সেগুলো হলো-ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন (বিনিয়োগ আকর্ষণ ও প্রবেশ পর্যায়), রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি (নীতি সহায়তা ও অ্যাডভোকেসি), অপারেশনস (বিনিয়োগ শুরু, সম্প্রসারণ ও ধারাবাহিকতা রক্ষা), ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট (বিনিয়োগ সেবার আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল সংস্কার) এবং অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক সহায়তা)।

চৌধুরী আশিক বলেন, বিডার নতুন কাঠামোগত সংস্কারের উল্লেখযোগ্য দিক হলো- নির্বাহী সদস্য পদে এখন থেকে বিডার নিজস্ব কর্মকর্তা ছাড়াও বেসরকারি খাতের পেশাজীবীরা অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন, যা পূর্বে শুধু প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি এবং ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন শাখাকে পৃথক ইউনিট হিসেবে গঠন করা হয়েছে। প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় বিশেষ ডেস্ক চালু করা হচ্ছে এবং বিনিয়োগ সহায়তায় খাতভিত্তিক বিশেষজ্ঞ ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের জাতীয় কমিটি দেশের সব বিনিয়োগ সংস্থা সমন্বিত করে একটি একীভূত কাঠামো প্রণয়নের রোডম্যাপ প্রস্তুত করছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা খণ্ডিত সেবা ব্যবস্থার পরিবর্তে একক একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রয়োজনীয় সব সেবা নিতে পারবেন।


বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শর্ত দিয়ে পাট রপ্তানিতে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শর্তসাপেক্ষ রপ্তানি দিয়ে মূলত পাট রপ্তানিতে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পাট রপ্তানিকারকরা। তারা বলেন, এতে করে কৃষক, ব্যাপারী, পাট শ্রমিক ও রপ্তানীকারকেরা অনেক ক্ষতির মধ্যে পড়েছে। সেই সঙ্গে বাংকের সুদ বাড়ছে। ফলে অনতিবিলম্বে এই শর্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন পাট রপ্তানিকারকরা। অন্যথায় আন্দোলনে নামবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

রোববার বিজেএর নারায়ণগঞ্জ অফিসের ৪র্থ তলায় আফজাল হোসেন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএ) ৫৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় পাট ব্যবসায়ীরা এসব কথা বলেন। সভায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৫ শতাধিক ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকরা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় দেশসেরা পাট রপ্তানিকারক ইন্টারন্যাশনাল জুট ট্রেডার্সের কর্ণধার গণেষ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শর্তসাপেক্ষ রপ্তানি দিয়ে মূলত অলিখিত পাটের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

ফলে পাট ব্যবসায়ীরা এখনো রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার আগে যে এলসি ছিল, সেই এলসির মালামাল রপ্তানি করতে পারে নাই। ১৯১০ ও ১৯১৫ সালে পাট মন্ত্রণালয় থেকে পাট নিষেধাজ্ঞা হয়েছিল। তখন কাটজুট পাট নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে ছিল। এবার এই কাটজুট আওতামুক্ত রাখে নাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘অনতিবিলম্বে শর্তসাপেক্ষ আদায় প্রত্যাহার করতে হবে। নতুবা পাটের বাজার যেকোনো সময় দুই হাজার টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা পাটের দাম পড়ে যেতে পারে। পাটের উৎপাদন কম হয়েছে, পাটের ঘাটতির কথা বলে বাংলাদেশের জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন দাবি তুলে ৭ থেকে ৮ লাখ বেল পাট রপ্তানি ব্যাহত করছে। অনতিবিলম্বে কৃষকের স্বার্থে পাট ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এবং পাট শ্রমিকদের স্বার্থে এই শর্তসাপেক্ষ প্রত্যাহার করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিজেএ’র সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান মো. আফজাল হোসেন আকন্দ।

তিনি সভা শেষে নতুন কার্যনির্বাহী কমিটিকে অভ্যর্থনা ও দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। সেই সঙ্গে সভায় বিগত অর্থ বছরের চূড়ান্ত নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন ও সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়।

নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান খন্দকার আলমগীর কবির বলেন, ‘বর্তমানে কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ থাকায় কাঁচাপাট ব্যবসায়ী রপ্তানিকারকরা সংকটে রয়েছেন। অনেক কাঁচাপাট ব্যবসায়ী ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন। দুই মাসে আমরা এক বেলও কাঁচাপাট রপ্তানি করতে পারি নাই। শ্রমিকদের বসিয়ে বসিয়ে মজুরি দিতে হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘রপ্তানি বন্ধ থাকায় হাজার হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা শিগগিরই উপদেষ্টা মহোদয় ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলব। আগামী ১০ দিনের মধ্যে রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব। এটার সমাধান না হলে কঠিনতম অবস্থানে যেতে বাধ্য হতে হবে।’

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন নবনির্বাচিত কমিটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এস এম সাইফুল ইসলাম পিয়াস, ভাইস চেয়ারম্যান মো. তারেক আফজাল, কমিটির কার্যকরী সদস্য মো. ফাহাদ আহমেদ আকন্দ, শামীম আহমেদ, এস এম মনিরুজ্জামান (পলাশ), খাইরুজ্জামান, মো. কুতুবউদ্দিন, শেখ ঈমাম হোসেন, এস এম হাফিজুর রহমান, বদরুল আলম (মার্কিন), এইচ এম প্রিন্স মাহমুদ, মো. তোফাজ্জল হোসেন, মো. ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া, মো. নূর ইসলাম, মো. আলমগীর খান, রঞ্জন কুমার দাস ও এসএম সাইফুল ইসলাম।


প্রথম কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার পুঁজিবাজারে সূচকের মিশ্র প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।

এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, রোববার ডিএসই প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১১৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৩ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে যথাক্রমে ১০৭৮ ও ১৯৮২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিন ডিএসইতে ৫৪৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৬৮ কোটি টাকার লেনদেন বেড়েছে। আগের দিন ডিএসইতে ৪৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছিল।

রোববার ডিএসইতে ৩৯৫টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১২৮টি কোম্পানির, কমেছে ২০৭টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর।

এদিন লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ প্রতিষ্ঠানগুলো, মনোস্পুল পেপার, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, খান ব্রাদার্স, ওরিয়ন ইনফিউশন, সামিট পোর্ট অ্যালায়েন্স, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, রূপালী লাইফ, বিচ হ্যাচারি, সিমটেক ইন্ডাস্ট্রি ও সোনালি পেপার।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ২৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৪ হাজার ৩১৩ পয়েন্টে।

এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ১৮৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৯২টির, কমেছে ৬১টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টির কোম্পানির শেয়ার দর।

রোববার সিএসইতে ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার লেনদেন বেড়েছে। আগের দিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছিল।


কার্বন নিঃসরণ কমাতে বাংলাদেশ-ইউএনডিপির নতুন প্রকল্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) যৌথভাবে নতুন একটি প্রকল্প চালু করেছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের প্রধান শহরগুলোতে কম কার্বন নির্ভরতা অর্জনে উৎসাহিত করা। এই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে গ্লোবাল অ্যানভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ)।

রোববার চালু হওয়া এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধি, নবায়নযোগ্য শক্তি (যেমন সৌর, বায়ু, জলবিদ্যুৎ, জৈব শক্তি) এবং বর্জ্য থেকে জ্বালানি উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়িয়ে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমানো।

পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের নাম ‘প্রমোটিং অ্যানার্জি-রিলেটেড লো কার্বন আরবান ডেভেলপমেন্ট বা এলসিইউডি’। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনের (কপ-৩০) আগেই প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হয়। রাজধানীর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে নিজ নিজ সংস্থার পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী, বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নুর আহমেদ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ স্টেফান লিলার।

অনুষ্ঠানে শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘এই প্রকল্পটি আমাদের শহরগুলোতে উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি সমাধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান ও সক্ষমতা তৈরি করবে। আমি ইউএনডিপিকে ধন্যবাদ জানাই এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগে সহযোগিতার জন্য। এখন আমাদের দায়িত্ব ঘাটতিগুলো পূরণ করা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করা এবং এই কার্যক্রমকে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাইরে প্রসারিত করা, যেন সবার জন্য পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর নগর জীবন নিশ্চিত হয়।’

স্টেফান লিলার বলেন, ‘ইউএনডিপি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে নগর উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছে। নতুন এই প্রকল্প আমাদের অংশীদারিত্বকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে, যা টেকসই ও কম কার্বন নির্ভর নগর উন্নয়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমরা এই সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, যাতে এর সুফল বাস্তবেই নাগরিক জীবনে পৌঁছায়।’

বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নুর আহমেদ বলেন, ‘এই প্রকল্পটি কম কার্বন অবকাঠামোয় বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে, যা দেশের অন্যান্য শহরের জন্যও দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে। আমরা প্রকল্পটি সময়মতো ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকব।’

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইআরডির অতিরিক্ত সচিব (জাতিসংঘ উইং প্রধান) একেএম সোহেল, ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সরদার এম. আসাদুজ্জামান, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান মোজাফফর আহমাদ এবং স্রেডার নবায়নযোগ্য শক্তি উন্নয়ন পরিচালক (উপ-সচিব) প্রকৌশলী মো. মুজিবুর রহমান।


এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন অতিরিক্ত সচিব আবদুর রহিম খান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খান।

গত রোববার সকালে তিনি সংগঠনটির প্রশাসক হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা অফিস আদেশ অনুযায়ী, ট্রেড অর্গানাইজেশন অ্যাক্ট, ২০২২-এর ধারা ১৭-এর অধীনে মো. আবদুর রহিম খানকে এফবিসিসিআই-এর প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

আদেশ অনুযায়ী, তিনি ১২০ দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত বোর্ডের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন।


banner close