সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কমেছে। আগামী তিন বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে আসবে বলে মনে করেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আফজাল করিম। ব্যাংকটির সার্বিক পরিস্থিতি ও ব্যাংক খাতের নানা দিক নিয়ে দৈনিক বাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দৈনিক বাংলার প্রতিবেদক এ এস এম সাদ।
সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কমানোর অগ্রগতি কতদূর?
ব্যাংক খাতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ খেলাপি ঋণ। অন্যান্য ব্যাংকের মতো সোনালী ব্যাংকেও খেলাপি ঋণের সমস্যা ছিল। আমি ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর খেলাপির সংখ্যা যাতে না বাড়ে, সেদিকে জোর দিয়েছি। কারণ খেলাপি ঋণ ব্যাংক খাতকে দুর্বল করে তোলে। সোনালী ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমেছে। মোট বিতরণ করা ঋণের মধ্যে ১৮ শতাংশ খেলাপি ছিল ২০২১ সালে। সেটি ২০২২ সালে সাড়ে ১৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয় তদারকি করা হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে তবে সেই অনুপাতে খেলাপি ঋণ বাড়েনি। সোনালী ব্যাংকে ২০২১ সালে খেলাপি ঋণ ছিল ১১ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। ২০২২ সালে তা এসে দাঁড়ায় ১২ হাজার ৬ কোটি টাকা। ৪৬ কোটি টাকার মতো খেলাপি ঋণ বেড়েছে।
খেলাপি ঋণ কমাতে কী পদক্ষেপ নিয়েছেন?
প্রত্যেকটি খেলাপি ঋণ নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে টাকা আদায় করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে যেসব ঋণ খেলাপি রয়েছে, সেগুলো নিয়েও কাজ করা হচ্ছে। তিন স্তরের মনিটরিং ব্যবস্থার মাধ্যমে খেলাপি ঋণের কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়েছে। ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক সরাসরি নিজেই ২৫টি খেলাপি ঋণ তদারকি করছেন। এসব কার্যক্রম বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা ও গাইডলাইন অনুযায়ী করা হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে শাখা ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করা হয়েছে। কারণ একজন শাখা ব্যবস্থাপকের নানা ধরনের দায়িত্ব থাকে। খেলাপি ঋণকে কীভাবে ডাউন পেমেন্ট করে তা পুনঃতফসিলের মাধ্যমে আদায় করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়। যখন পুনঃতফসিলের মাধ্যমেও খেলাপি ঋণের টাকা আদায় করা সম্ভব হয় না তখন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে সোনালী ব্যাংক। আমি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর তিন বছরের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে আগামী তিন বছর অর্থাৎ ২০২৬ সাল নাগাদ সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসা হবে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর কোন খাতে সংস্কারে বেশি নজর দিয়েছেন?
২০২২ সালের আগস্টে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে যোগদান করি। প্রথমে ১০০ দিনের একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম। সোনালী ব্যাংকের অ্যাডভান্সড ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) বরাবর কম ছিল। ২০১৯ সালে এটি ছিল ৪৮ শতাংশ। ২০২০ সালে কমে দাঁড়াল ৪৭ শতাংশ। ২০২১ সালে এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ শতাংশ। এরপর ২০২২ সালে এডি রেশিও ৬০ শতাংশে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত এডি রেশিও ৬২ শতাংশ পর্যন্ত উন্নীত হয়েছে। এটি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। আর এসব বিতরণ করা ঋণ সময়মতো আদায় করা সম্ভব হয়েছে। ফলে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সোনালী ব্যাংকে নেট ইন্টারেস্ট মার্জিন ২০২১ সাল পর্যন্ত নেগেটিভ ছিল। সর্বশেষ ডাটা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, নেট ইন্টারেস্ট মার্জিন ৯৮৯ কোটি টাকা নেগেটিভ ছিল। তবে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এসে দাঁড়াল ৩৩২ কোটি টাকা পজিটিভ। এই প্রথম নিট পজিটিভ করল সোনালী ব্যাংক। নিট পজিটিভ হওয়া মানে দুই দিকে সাফল্য রয়েছে। পারফর্মিং লোন বা ঋণ বেড়েছে, অন্যদিকে খেলাপি ঋণ বাড়তে দেয়া হয়নি। লো কস্ট আমানতকে বাড়িয়ে আনা এবং হাই কস্ট আমানতকে কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। ইন্টারেস্ট এক্সপেন্ডিচার বা ঋণের অতিরিক্ত সুদ ব্যয় কমানো হয়েছে। তাতে ইন্টারেস্ট মার্জিন পজিটিভ হয়েছে।
সোনালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির কী অবস্থা?
অন্যান্য ব্যাংকের মতো সোনালী ব্যাংকেরও মূলধন ঘাটতি ছিল। ২০২১ সালে ৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি ছিল। ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে তা ৫ হাজার ১০০ কোটি টাকায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ এক হাজার ৭০০ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি কমানো সম্ভব হয়েছে। খেলাপি ঋণ বাড়তে না দেয়া, পুনঃতফসিলের মাধ্যমে অর্থ আদায় করা, পরিচালন ব্যয় কমানো, পারফর্মিং ঋণ বাড়ানো, রাইট অব বা অবলোপন ঋণ থেকে টাকা আদায় করা- এসব কার্যক্রমের কারণে মূলধন ঘাটতি কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
ব্যাংকটির আমানত ও ঋণের প্রবৃদ্ধি কেমন হয়েছে?
২০২১ সালে সোনালী ব্যাংকে মোট আমানতের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা। ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে আমানতের স্থিতি দাঁড়ায় ১ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। এক বছরে ব্যাংকটিতে আমানত বেড়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ পরিমাণ বেড়েছে। ২০২১ সাল শেষে আউটস্ট্যান্ডিং বা মোট ঋণের স্থিতি ছিল ৬৯ হাজার কোটি টাকা। আর ২০২২ সাল শেষে দাঁড়িয়েছে ৮৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ফলে আমানত ও ঋণ- দুটিরই প্রবৃদ্ধি রয়েছে। একটি ব্যাংক অ্যাডভান্সড ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) ৮৭ শতাংশ পর্যন্ত যেতে পারে। বাকি ৪ শতাংশ সিআরআর খাতে নগদ অর্থ জমা রাখতে হয় এবং ৯ শতাংশ এসএলআর রাখতে হয়। গত বছরে দায়িত্ব নেয়ার পর কোনো ঋণকে রাইট অব বা অবলোপন করা হয়নি। আগের রাইট অব ঋণ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। সেখান থেকে নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা টাকা আদায় করছি।
ব্যাংকিং কার্যক্রমে নতুন কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে?
দেশের বৃহত্তম এই ব্যাংকটিকে একটি আদর্শ ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০২০ সালে সোনালী ই-সেবা অ্যাপ চালু করা হয়। ছোটখাটো ট্রানজেকশন করতে এবং হিসাব খুলতে গ্রাহকদের আর ব্যাংকে আসতে হয় না। সোনালী ব্যাংকের অ্যাপ ব্যবহার করে প্রবাসী গ্রাহকরা তাদের কস্টার্জিত অর্থ মাত্র ৫ সেকেন্ডের মধ্যে তাদের হিসাবে জমা করতে পারেন। দেশের সবচেয়ে বড় এই ব্যাংকের সব শাখা এখন অনলাইন। আইটি খাতে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিচ্ছেন এ ব্যাংকের কর্মীরা। সোনালী ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে গড়ে প্রতিদিন ৬ হাজারটি ট্রানজেকশন হচ্ছে। বিশ্বে পেপারলেস ব্যাংকিং একটি জনপ্রিয় ধারণা। বাংলাদেশও এতে পিছিয়ে নেই। বর্তমানে সব মানুষই স্মার্টফোন আর ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। কোভিডকালীন সময়ে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের ফলে গ্রাহকরা ঘরে বসেই সব ধরনের সেবা পেয়েছেন। বিশেষ করে বয়োবৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধা, সিনিয়র সিটিজেন, যারা সরকারি এই ব্যাংক থেকে ভাতা নেন, তাদের জন্য এটি একটি নিরাপদ মাধ্যম। প্রবাসীদের অনেক দিনের দাবি ছিল তারা যেন সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে সহজ পন্থায় টাকা পাঠাতে পারেন। সেই কাজটি আমরা করতে সফল হয়েছি। সোনালী ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে বিদেশ থেকে খুব সহজে দেশে অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। এনড্রয়েড ও আইফোন দুই ধরনের মোবাইল দিয়েই অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব। এ ছাড়া ক্যাশলেসের একটি পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যেখানে নগদ টাকার ব্যবহার কমিয়ে আনা হবে। চেক বই ছাড়া কিউআর কোডের মাধ্যমে টাকা তোলা সম্ভব হচ্ছে। ফলে টাকা লেনদেনের বিষয়গুলোকে আরও সহজ করা হয়েছে। কিউআর কোড ব্যবহার করেই ক্যাশ টাকা উঠানো সম্ভব। ফলে গ্রাহককে আগের মতো চেকবই বহন করতে হবে না। মার্চ মাসে সোনালী ব্যাংক কল সেন্টার উদ্বোধন করল। এটি দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথম। কল সেন্টারের নম্বর ১৬৬৩৯। এই নম্বরে কল দিলে সোনালী ব্যাংকের সব তথ্য সরবরাহ করা হবে। অনেকে ডেবিট কার্ড ব্যবহার করেন। কোনো সময় তাদের এই কার্ড হারিয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে কল সেন্টারে জানিয়ে দেয়া যাবে। এতে গ্রাহকের টাকা নিরাপদ থাকবে।
ডলার সংকটকালে আমদানি-রপ্তানিতে সোনালী ব্যাংকের অবস্থান কেমন?
সোনালী ব্যাংকের আমদানিতে যথেষ্ট প্রবৃদ্ধি ছিল। ২০২২ সালে প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি করতে সক্ষম হয়েছে। তবে সেই তুলনায় রপ্তানি কম হয়েছে। ২০২২ সালে রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকার মতো। তবে আমদানির সঙ্গে রপ্তানি বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। অথরাইজড ডিলার (এডি) ব্রাঞ্চে আমরা যোগাযোগ বাড়িয়েছি। কীভাবে রপ্তানি বাড়ানো যায় সেদিকে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ৪৮টি এডি ব্রাঞ্চ রয়েছে। ফলে আশা করা হচ্ছে চলতি বছর রপ্তানি আরও বাড়ানো সম্ভব হবে। যা সার্বিক অর্থনীতিতে এক ধরনের ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
রেমিট্যান্স প্রবাহ কি আশানুরূপ?
২০২২ সালে মোট ২২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। চলতি বছরে ২৩-২৪ বিলিয়ন ডলার আসতে পারে। আমেরিকায় সোনালী ব্যাংকের বুথ রয়েছে। আগে প্রবাসীরা যখন রেমিট্যান্স পাঠাত, সেখানে ১-২ ডলার পর্যন্ত কমিশন নেয়া হতো। কিন্তু রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ানোর জন্য সেই কমিশন ফ্রি করে দেয়া হয়েছে। কর্মদিবস ছাড়াও বাইরের দেশের সরকারি ছুটির দিন সোনালী ব্যাংকের বুথ খোলা রাখা হয়। কারণ কর্মদিবসে প্রবাসী কর্মীরা কাজে ব্যস্ত থাকেন। ফলে ছুটির দিনে যদি তারা নিশ্চিন্তে টাকা পাঠাতে পারেন, সেজন্য এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বাফেদার চেয়ারম্যান হিসেবে ডলার সংকট মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছেন কি?
কোভিড ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পুরো বিশ্বের অর্থনীতি সংকটের মধ্যে পড়েছে। সেই প্রভাব থেকে বাংলাদেশও বাদ যায়নি। তবে অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশে অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব কম পড়েছে। দেড় বছর ধরে ডলার বাজার অস্থির। ডলার সংকটের কারণে নানা মহল এই বাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে। বিদেশি মুদ্রা বা ডলার বাজার যাতে অস্থিতিশীল না করা যায়, সে জন্য প্রতি মাসে বাফেদা-এবিবি যৌথ সভার মাধ্যমে ডলারের দর নির্ধারণ করে। এটি গত ছয় মাস ধরে চলছে। কারণ বছরখানেক আগেও দেশের ব্যাংকগুলো এক রকম অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ডলার সংগ্রহ করা শুরু করে। আমদানি ও রপ্তানি বেড়ে যাওয়ায় বাজারে ডলারের চাহিদাও বেড়ে যায়। সেজন্য তখন ব্যাংকগুলো যে যত বেশি দামে ডলার সংগ্রহ করার চেষ্টা করে। ডলারের অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা বাফেদার নজরে আসে। এ ছাড়া খোলা বাজারে ডলারের কারসাজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা। গত বছর সেপ্টেম্বরে এবিবি-বাফেদা সভা করে ডলারের দর নির্ধারণ করে। রেমিট্যান্সের দর সর্বপ্রথম ১০৮ টাকা করা হয়। এর সঙ্গে সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হয়। তখন রপ্তানি বিল ও আমদানি বিলের একটা দর দেয়া হয়েছিল। এভাবে প্রতি মাসে ডলারের একটা দর নির্ধারণ করা হচ্ছে। বাজার ও অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে রেমিট্যান্সে দর নির্ধারণ করা হয়। করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মধ্যে অনেকে আলোচনায় এনেছিল যে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমে যাবে। কিন্তু তা হয়নি। বরং প্রবাহ বিরাজমান রয়েছে। ফলে আমি মনে করি দেশে যে এক ধরনের ডলার সংকট তৈরি হয়েছিল, তা মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।
ব্যাংকগুলো আইএমএফের শর্ত পূরণ করতে পেরেছে?
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের সঙ্গে সভা হয়েছে। আইএমএফ ব্যাংক খাতের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করেছে। বিশেষ করে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ আদায়ের অগ্রগতি, ঋণ-আমানতের সুদের হারের অবস্থা বিবেচনায় নিয়েছে। পজিটিভ প্রবৃদ্ধি রয়েছে কিনা সে বিষয়গুলো আইএমএফের পর্যালোচনায় ছিল। হঠাৎ করে খেলাপি ঋণ কমিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। আইএমএফ সব কিছুর বিবেচনায় একটি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। কারণ আগের চেয়ে ব্যাংক খাতে নানা সূচকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
ব্যাংক খাতের সার্বিক অবস্থা কী?
বর্তমান সরকারের সময় ব্যাংক খাতের প্রভূত পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ করে এ খাতে আমানতের পরিমাণ বেড়েছে। ব্যাংক খাত শক্তিশালী হয় আমানতের পরিমাণ বাড়লে। আর ব্যাংক খাত শক্তিশালী হলে একটি দেশের অর্থনীতির সার্বিক অবস্থানও শক্তিশালী হয়। ব্যাংক খাতে মোট আমানত ১৪ লাখ কোটি টাকার বেশি। আর ঋণও ১৪ লাখ কোটি টাকার বেশি বিতরণ করা হয়েছে। ফলে আমানত ও ঋণ- দুটিরই বড় রকমের প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সেই অনুযায়ী খেলাপি ঋণ বাড়েনি। শতাংশ হিসাব করলে ১১ শতাংশের মধ্যেই আছে। আর ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমতির দিকে। গত বছর গুজব তৈরি হয়েছিল- ব্যাংকে টাকা নেই। এর ফলে আমানতকারীরা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেন। তখন ব্যাংক খাত এক ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে যায়। সেই বিপর্যয় অনেকটা কাটিয়ে উঠছে ব্যাংকগুলো। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা দেয়া হয়েছে এবং নানা রকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
বর্তমানে ব্যাংক খাতের তারল্যসংকট বিদ্যমান আছে?
ঈদের সময় ব্যাংকগুলোতে টাকার চাহিদা বেড়ে যায়। স্বাভাবিকভাবে এ সময় টাকার সরবরাহ বাড়ে। টাকার চাহিদা বাড়লে কলমানিতে সুদের হার বেড়ে যায়। কিন্তু এবার ঈদের আগের দিন কলমানিতে সুদের হার সাড়ে ৬ শতাংশের নিচে ছিল। প্রতি ঈদে এটি আরও বেড়ে যায়। ফলে কলমানির সুদের হার দিয়ে বোঝা যায় ব্যাংকে তারল্যসংকট নেই। ঈদের আগে ব্যাংকে তারল্য ছিল ২ লাখ ৮৭ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর পরও যদি সিআরআর ও এসআরআর বাদ দিলেও ১ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকার মতো তারল্য ছিল। অন্যদিকে বাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তারল্য সহায়তা ছিল। ফলে এবার ঈদে বাজারে তারল্যসংকট ছিল না।
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে অর্থবছরের শেষ দিন আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের সব ব্যাংকের শাখাগুলোতে ব্যাংকিং লেনদেন চলবে।
সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৩০ জুন সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯২২ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান। তিনি বলেন, গত অর্থবছরের চেয়ে এবার বেশি রাজস্ব আদায় হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড এর ২৯ তম বার্ষিক সাধারন সভা ২৪ জুন ২০২৫ইং তারিখে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ২০২৪ইং সালের নিরীক্ষিত বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়। পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জনাব মোস্তফা কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীর পরিচালক মিসেস বিউটি আক্তার, ব্যারিষ্টার হাসান রাজিব প্রধান, জনাব মনজুর মো: সাইফুল আজম এফসিএমএ, মিসেস তাহমিনা বিনতে মোস্তফা, জনাব তায়েফ বিন ইউসুফ, মিসেস তানজিমা বিনতে মোস্তফা, জনাব ওয়াশিকুর রহমান, জনাব তানভীর আহমেদ মোস্তফা , মিসেস সামিরা রহমান, মিসেস তাসনিম বিনতে মোস্তফা, জনাব মোঃ বেলায়েত হোসেন ভূইয়া, জনাব মোহাম্মদ সাইদ আহমেদ রাজা এবং মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সানা উল্লাহ, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা শেখ বিল্লাল হোসেন এফসিএ, কোম্পানীর অডিটর এ.কে.এম. আমিনুল হক এফসিএ, সিনিয়র পার্টনার মেসার্স এ.হক এন্ড কোং চাটার্ড একাউন্টেন্টস এবং আবদুর রহিম মিয়া, এফসিএ, পার্টনার মেসার্স ইসলাম জাহিদ এন্ড কোং, চাটার্ড একাউন্টেন্টস, মোঃ ফিরোজুল ইসলাম সিনিয়র এক্সিঃ ভাইস প্রেসিডেন্ট (অর্থ ও হিসাব) ও কোম্পানী সচিব মো: মাসুদ রানা এবং কোম্পানীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ারহোল্ডার সভায় সংযুক্ত ছিলেন।
মেঘনা ব্যাংক পিএলসি’র ১২তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ২৩ জুন ২০২৫, সোমবার রাজধানীর মহাথালীতে অবস্থিত ম্যাডোনা টাওয়ারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের সম্মানিত চেয়ারপার্সন মিসেস উজমা চৌধুরী।
বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান জনাব তানভীর আহমেদ, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মো. আলী আক্তার রেজভী, এফসিএ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ মামুনুল হক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক জনাব রজব আলী, জনাব এম. নজরুল ইসলাম এবং জনাব হাবিবুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব কাজী আহ্সান খলিল এবং ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি সচিব জনাব সজিব কুমার সাহা, এফসিএ এবং ব্যাংকের সম্মানিত শেয়ারহোল্ডারবৃন্দ।
সভায় ব্যাংক নিজেদের পরিষেবা বৃদ্ধি, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রচারণা, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
সম্প্রতি সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. বরিশাল জেলায় অবস্থিত বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকদের নিয়ে লিড ব্যাংক হিসেবে ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা এর নির্দেশনায় “স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স-২০২৫” আয়োজন করেছে।
উক্ত কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব ইমতিয়াজ আহমেদ মাসুম, নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), বাংলাদেশ ব্যাংক, বরিশাল এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব আবিদুর রহমান চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি., জনাব মোঃ আলী হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা, জনাব মোঃ হারুনুর রশিদ, জেলা শিক্ষা অফিসার, বরিশাল এবং সম্মানিত অতিথি জনাব মোঃ মাহাবুব-উল আলম, উপপরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা।
উক্ত কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে উক্ত কনফারেন্সে জাহানারা ইসরাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বরিশাল থেকে রাবিয়া কামাল (দশম শ্রেণী) এবং বরিশাল জেলা স্কুল, বরিশাল থেকে মোঃ হাসনাইন বিন কবির (দশম শ্রেণী) বক্তব্য রাখেন।
উক্ত কনফারেন্সে বরিশাল জেলার ৪৫ টি তফসিলী ব্যাংকের ৪৫ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে ১৮০ জন শিক্ষার্থী ও ৪৫ জন শিক্ষক এবং অতিথি সহ সর্বমোট ৩৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। কনফারেন্সে বক্তারা শৈশব থেকেই সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও দায়িত্বশীল অর্থ ব্যবস্থাপনার অভ্যাস গড়ে তোলা ও আধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তির সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচিত করানোর লক্ষ্যে স্কুল ব্যাংকিং এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এছাড়াও স্কুল ব্যাংকিং এর উপর নির্মিত ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী, র্যালী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
পূবালী ব্যাংক পিএলসি’র ৪২তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ১৮ জুন ২০২৫ তারিখে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পূবালী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান মনজুরুর রহমান। বার্ষিক সাধারণ সভায় পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকবৃন্দ- মনির উদ্দিন আহমদ, হাবিবুর রহমান, এম. কবিরুজ্জামান ইয়াকুব এফসিএমএ (ইউকে), সিজিএমএ; আজিজুর রহমান, মোঃ আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল, রানা লায়লা হাফিজ, মুস্তফা আহমদ, আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ নওশাদ আলী চৌধুরী এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়াররহোল্ডারগণ ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। এসময় ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আলী, সিএফও ও মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ লিটন মিয়া এফসিএ এবং কোম্পানী সচিব ও মহাব্যবস্থাপক মোঃ আনিসুর রহমান ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।
৪২তম বার্ষিক সাধারণ সভায় পূবালী ব্যাংক পিএলসি’র সম্মানিত শেয়ার হোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ সালের জন্য ১২.৫০% ক্যাশ ডিভিডেন্ড ও ১২.৫০% স্টক ডিভিডেন্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়।
বার্ষিক সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডারবৃন্দ ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং এই মাইলফলক অর্জনে অক্লান্ত অবদান রাখায় পূবালী ব্যাংকের নিবেদিতপ্রাণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানান। সবশেষে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মহোদয় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
৪ জুন’২৫ রোজ বুধবার ময়মনসিংহ শহরে জনতা ব্যাংক পিএলসি. টাউন হল মোড় শাখা (পূর্ব নাম মহিলা শাখা) নতুন ভবনে স্থানান্তর উপলক্ষে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান। ময়মনসিংহ এরিয়া অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক মোঃ জাহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খালেক ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান খান। এ সময় ব্যাংকের অন্যান্য নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং স্থানীয় গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীগণ উপস্থিত ছিলেন।
জনতা ব্যাংক পিএলসি’র ফরিদপুর বিভাগীয় শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন ৩০ মে’২৫ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান এবং উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আশরাফুল আলম। ফরিদপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের ইনচার্জ মোঃ সহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে ফরিদপুর বিভাগের এরিয়া প্রধানগণ ও অন্যান্য নির্বাহীবৃন্দ এবং শাখা ব্যবস্থাপকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
ইসলামী ধারার ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত হওয়ার যে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এই ধারার ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংকের একীভূত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান শুক্রবার (৩০ মে) দেওয়া এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে ৬টি দুর্বল ব্যাংক একীভূত হয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসছে। ৬টি ব্যাংকের মধ্যে ৫টি ইসলামী ধারার ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি জানান, ‘এনবিএল প্রচলিত ধারার ব্যাংক। ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো সংস্কারের সঙ্গে এনবিএল সম্পৃক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এর আগে, একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আহসান এইচ মনসুর জানান, নানা অনিয়ম ও ঋণ জালিয়াতির কারণে দুর্বল হওয়ায় ছয়টি ব্যাংককে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে একীভূত করতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো একীভূত করে সাময়িক সময়ের জন্য সরকারি মালিকানায় নেওয়া হবে।
পরবর্তীতে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত হবে এই মর্মে নানা সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে- যা সঠিক নয় বলে জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ ছাড়া, একীভূত হওয়ার পর সাময়িক সরকারি মালিকানার সিদ্ধান্ত থেকেও সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সবশেষ ২৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে বিএফআইইউর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে গভর্নর জানান, ‘একীভূতকরণের আগেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর ওপর সরকার মালিকানা প্রতিষ্ঠা করবে। এতে আমানতকারীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ তারা একটি অধিকতর শক্তিশালী ব্যাংকের অংশ হয়ে যাবেন। তবে মোট কতটি ব্যাংক একীভূত হবে এ ব্যাপারে এখনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’
গভর্নর জানান, সব দুর্বল ব্যাংক একবারে একীভূত হবে না। প্রথম দফায় কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হবে। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় বাকি দুর্বল ব্যাংক নিয়ে সিদ্ধান্ত নিবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জনতা ব্যাংক পিএলসি এর মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোঃ মজিবর রহমান গত শনিবার (২৪/০৫/২০২৫) জনতা ব্যাংক স্টাফ কলেজ, ঢাকা কর্তৃক আয়োজিত ০৬ কর্মদিবস ব্যাপী ক্রেডিট ম্যানেজমেন্ট কোর্স (ব্যাচ ০১/২৫) শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধন করেন।
উক্ত প্রশিক্ষণ কোর্সে জনতা ব্যাংকের অফিসার থেকে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার পর্যায়ের ২৫ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনতা ব্যাংক স্টাফ কলেজের ডিজিএম-স্টাফ কলেজ ইনচার্জসহ অন্যান্য নির্বাহী ও অনুষদ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (IBRPD) এর উদ্যোগে ২৫ মে, ২০২৫ তারিখ রবিবার প্রধান কার্যালয়ের মূল ভবনের কনফারেন্স রুমে Governance Framework on Islamic Banking Division in Bangladesh Bank এবং Islamic Banking Financial Systems in Bangladesh: The Need for Education শীর্ষক দু’টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন প্রথিতযশা ইসলামিক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ কবির হাসান।
আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন ডেপুটি গভর্নর ড. মোঃ কবির আহাম্মদ এবং স্বাগত বক্তব্য দেন নির্বাহী পরিচালক মোঃ মেজবাউল হক। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নিউ অরলিনস্ এর ইকোনমিকস্ এন্ড ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ও প্রখ্যাত ইসলামিক অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ কবির হাসান তার বক্তব্যে ইসলামিক ফাইন্যান্সের অগ্রগতির জন্য গবেষণার কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় ইসলামিক ফাইন্যান্সে ঈর্ষণীয় অগ্রগতি লাভ করেছে মূলত গবেষণার ওপর জোর দেয়ায়। বাংলাদেশেও এ বিষয়ে একাডেমিক জ্ঞান অর্জনে মনোযোগ দিতে হবে এবং আন্তর্জাতিক ইসলামিক ফাইন্যান্স সংস্থাগুলোর নীতিমালা ও আইনকানুন অনুসরণ করতে হবে। তিনি তার বক্তব্যে একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ফাইন্যান্স আইন প্রণয়ন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ড স্থাপন, ইসলামি ব্যাংকিং পরিচালনায় একজন ডেডিকেটেড ডেপুটি গভর্নর নিয়োগ এবং দক্ষ জনবল ক্সতরি করা জরুরি বলে উল্লেখ করেন।
এক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। সেমিনারে দেশের ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থার অগ্রগতি তুলে ধরে বিশিষ্ট ব্যাংকার এবং ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বর্তমান ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, সঠিকভাবে এগোলে পুরো ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় ইসলামী ব্যাংকিং ৫০ শতাংশে উন্নীত হতো। এজন্য এখাতে কর্মরত ২৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৪ কোটি গ্রাহককে ইসলামি ব্যাংক সম্পর্কিত একাডেমিক জ্ঞানে শিক্ষিত করা জরুরি। এ লক্ষ্যে একটি আলাদা ইনস্টিটিউটের যে দাবি উঠেছে তা অত্যন্ত যৌক্তিক বলেও মত দেন তিনি।নির্বাহী পরিচালক মোঃ মেজবাউল বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্সের প্রসারে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় আইনগত কাঠামো ও স্বতন্ত্র নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করছে বলে জানান। সেমিনারে বিশেষ অতিথির দিকনির্দেশনা ও মতামত ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রমে জড়িত কর্মকর্তাদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করবে জানিয়ে এমন অনুষ্ঠান নিয়মিত করার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন। সেমিনারে বক্তারা বাংলাদেশ ব্যাংক ও দেশের ইসলামিক ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি ডেডিকেটেড ইন্সটিটিউশন প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনার দু’টিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ, খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ব্যাংকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং, আরবি ও ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যানগণ এবং নীতি নির্ধারকগণ অংশগ্রহণ করেন।
জনতা ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের যৌথ অংশগ্রহণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে প্রবাসীদের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৫ মে বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর প্রধান অতিথি এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। জনতা ব্যাংক সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান, ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশিদ ওহাব, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান এবং ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর অনুষ্ঠানে বলেন, দেশের দুর্বল ব্যাংকগুলোয় সরকারি হস্তক্ষেপের কথা ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিদেশে অর্থ পাচারে জড়িতদের ধরতে প্রয়োজন বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা নেওয়াসহ অর্থ পাচারকারীদের সম্পদ জব্দের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ সাম্প্রতিক সময়ে বিপুল পরিমান রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের সাধুবাদ জানান।
জনতা ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন শহরে ১৩ টি বুথ স্থাপনের ঘোষণা দেন। এ সময় জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ফের পিছিয়ে আগামী ২ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত। রবিবার (১৮ মে) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল।
তবে মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন এ দিন ধার্য করেন।
২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করা হয়।
পরে ওই টাকা ফিলিপাইনে পাঠানো হয়। দেশের অভ্যন্তরের কোনো একটি চক্রের সহায়তায় হ্যাকার গ্রুপ রিজার্ভের অর্থপাচার করে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ওই ঘটনায় একই বছরের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে অজ্ঞাতানামাদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন।
মামলাটি বর্তমানে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে।
এগ্রিগেট নেটওয়ার্ক লিমিটেডের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড। সাম্প্রতিক এ চুক্তির অধীনে, এগ্রিগেট নেটওয়ার্কের গ্রাহকরা গার্ডিয়ান এর বিমা সুবিধা উপভোগ করবেন।
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন গার্ডিয়ান এর অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শেখ রকিবুল করিম, এফসিএ ও এগ্রিগেট নেটওয়ার্কের ডিরেক্টর সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। গার্ডিয়ান এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও হেড অব রিটেইল বিজনেস মাহমুদুর রহমান খান, চিফ অপারেটিং অফিসার মোঃ সাউদ ইমরান, চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার সজিব হোসেন এবং প্রতিষ্ঠানটির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব মাইক্রোইনস্যুরেন্স ডিপার্টমেন্ট আব্দুল হালিম এবং এগ্রিগেট নেটওয়ার্ক লিমিটেডের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার ড. হাফিজুর রহমান; সিনিয়র ম্যানেজার শেফাত-উল-ইসলাম ও সিনিয়র ম্যানেজার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।