সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫
২১ আশ্বিন ১৪৩২

সেই চামড়া রপ্তানিতেও ধস

আবদুর রহিম হারমাছি
প্রকাশিত
আবদুর রহিম হারমাছি
প্রকাশিত : ৭ মে, ২০২৩ ০৮:০১

গত মার্চ মাস পর্যন্ত তৈরি পোশাক ও চামড়া রপ্তানি থেকে আয়ই শুধু ইতিবাচক ধারায় ছিল। এপ্রিলে এসে সেই চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতেও ধস নেমেছে, নেতিবাচক (নেগেটিভ) প্রবৃদ্ধিতে চলে গেছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) এই খাতের পণ্য রপ্তানি করে ১০০ কোটি ৬৫ লাখ (১ বিলিয়ন) ডলারের বিদেশি মুদ্রা দেশে এনেছেন এ খাতের রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে দশমিক ৫২ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম ১৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। এই ১০ মাসে ১১৭ কোটি ৪৭ লাখ ডলার আয়ের লক্ষ্য ছিল।

হাজারীবাগ থেকে সাভারে স্থানান্তরিত চামড়াশিল্প নগরীর হাজার সমস্যা থাকলেও চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে সুবাতাস বইতে শুরু করেছিল। এমনকি করোনা মহামারির মধ্যেও এ খাতের রপ্তানি বাড়ছিল। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে ১২৪ কোটি ৫২ লাখ (১.২৪ বিলিয়ন) ডলার আয় হয়েছিল, যা ছিল আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) চেয়ে ৩২ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আয় এসেছিল প্রায় ২১ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরেও সেই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত ছিল। এই অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২১ শতাংশ বেশি ছিল। নির্ধারিত লক্ষ্যের চেয়ে আয় বেশি ছিল ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। অর্থবছরের প্রথমার্ধে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ শতাংশ। (জুলাই-মার্চ) ৯ মাস পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি ছিল ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ; আয় হয়েছিল ৯২ কোটি ডলার। প্রতি মাসে গড়ে ১০ কোটি ২২ লাখ ডলার এসেছিল।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সব শেষ এপ্রিল মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে মাত্র ৮ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের বিদেশি মুদ্রা দেশে এসেছে। আর এই ধাক্কায় ১০ মাসের (জুলাই-এপ্রিল) হিসাবে প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক (নেগেটিভ) হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে সংকটে ছিল এ খাতের রপ্তানি। আশা করা হয়েছিল, সাভার চামড়াশিল্প নগরী চালুর পর চামড়াশিল্পের নতুন পথচলা শুরু হবে; বাড়বে রপ্তানি। তবে শুরুতেই তা হোঁচট খায়। এই শিল্পনগরী রপ্তানি বাড়াতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা এই নগরী এমনকি বন্ধ করে দেয়ারও সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। পরিবেশ অধিদপ্তরও একই অবস্থান নিয়েছে।

তারপরও চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে আগের চেয়ে বেশি বিদেশি মুদ্রা দেশে আসছিল। করোনাভাইরাস মহামারিতে অন্য সব খাতের মতো এ খাতের রপ্তানিতে ধস নেমেছিল। তবে সে কালো মেঘ কাটতে শুরু করেছিল। আবারও সুদিন ফিরে আশার আলো দেখাচ্ছিল এই খাতটি। কিন্তু সে আশায় এখন গুড়েবালি।

রপ্তানির ইতিহাস

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে ১১৩ কোটি ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা বেড়ে ১১৬ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আয় আরও বেড়ে হয় ১২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এরপর থেকে এ খাতের রপ্তানি কমতে থাকে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা ১০৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলারে নেমে আসে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা আরও কমে ১০২ কোটি ডলারে নামে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা নামে ৭৯ কোটি ৭৬ লাখ ডলারে। ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে তা ফের বাড়তে থাকে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ফের ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে এক লাফে ১ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।

যুদ্ধের ধাক্কায় ফের হোঁচট

বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের প্রধান বাজার হচ্ছে ইউরোপের দেশগুলো। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ আরও কয়েকটি দেশে রপ্তানি হয় চামড়া পণ্যটি। মহামারি করোনার কারণে প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করে এই দেশগুলো। ছোট-বড় সব ধরনের শপিং মল খুলে যায়। মানুষজনও পুরোদমে কেনাকাটা করতে থাকে। অর্থনীতিতে আবার গতি ফিরে আসে। অন্যান্য পণ্যের মতো চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের চাহিদাও বাড়তে থাকে। সে কারণে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিও বাড়ছিল।

লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে জুতার মোট বাজারের ৫৫ শতাংশ চীনের দখলে। ভারত ও ভিয়েতনামেরও ভালো অবস্থান আছে। বিশ্বে জুতার বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮তম। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের এ খাতে অবদান মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ। করোনার পর তৈরি পোশাকের মতো চামড়া খাতের রপ্তানিতেও নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। প্রধান রপ্তানিকারক দেশ চীনের কিছু অর্ডার বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছিল। ভিয়েতনাম থেকেও অর্ডার আসছিল। কিন্তু এক বছরের বেশি সময়ে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপের দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় সে সব দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। সে কারণে অন্যান্য পণ্যের মতো চামড়া দিয়ে তৈরি জুতাসহ অন্য পণ্যও কেনা কমিয়ে দিয়েছে। সে কারণেই এ খাতের রপ্তানি এখন কমছে বলে জানিয়েছেন রপ্তানিকারকরা।

প্রতি বছর চামড়া খাত থেকে যে বিদেশি মুদ্রা দেশে আসে, তার প্রায় ১৫ শতাংশ রপ্তানি করে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার। প্রতিষ্ঠানটি জার্মানি, ইতালিসহ ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশে জুতা রপ্তানি করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাতেও জুতা রপ্তানি শুরু করেছে অ্যাপেক্স।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর পরিচালক শাহীন আহমেদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘কোভিডের মধ্যেও চামড়া রপ্তানিতে সুদিন ফিরে এসেছিল। চীন থেকে অনেক অর্ডার বাংলাদেশে আসছিল। সবকিছু মিলিয়ে চামড়া খাতে আমরা আশার আলো দেখছিলাম। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সব তছনছ করে দিয়েছে। আমাদের চামড়া খাতের প্রধান বাজার হচ্ছে ইউরোপ। যুদ্ধের প্রভাব ইউরোপের দেশগুলোতেই বেশি পড়েছে। এ সব দেশের মানুষকে এখন খাদ্যের পেছনেই অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। সে কারণে তারা জুতাসহ অন্যান্য পণ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছে। সে কারণেই রপ্তানি কমছে।’

এই ব্যবসায়ী নেতা জানান, সাভার চামড়াশিল্প নগরীর পরিবেশ নিয়ে মোটেই খুশি নন ক্রেতারা। ওখানকার চামড়া দিয়ে কোনো পণ্য উৎপাদন করলে ক্রেতারা কেনেন না। তাই বাধ্য হয়ে শিল্পনগরীর বাইরে তৃতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাঁচামাল কিনে পণ্য উৎপন্ন করে থাকেন রপ্তানিকারকরা। করোনার পর চামড়া রপ্তানিতে নতুন করে যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, সেটা ধরে রাখতে সাভার শিল্পনগরীর পরিবেশ উন্নয়নে সরকার ও ট্যানারি শিল্পমালিকদের জরুরিভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান এই শিল্পোদ্যোক্তা।

এবারও কী সম্ভাবনা হাতছাড়া হয়ে যাবে

চামড়া খাতকে একসময় সম্ভাবনাময় মনে করা হলেও এটি ধীরে ধীরে খারাপের দিকে যাচ্ছিল। দ্বিতীয় শীর্ষ এই রপ্তানি খাত চতুর্থ-পঞ্চম স্থানে নেমে গিয়েছিল। তবে গত অর্থবছরে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছিল। রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে চামড়াশিল্প নগরী সাভারে স্থানান্তর নিয়ে দীর্ঘ জটিলতার কারণেই এ শিল্পের এই হাল বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে ২০০৩ সালে হাজারীবাগ থেকে চামড়াশিল্প নগরী সাভারে স্থানান্তরে প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। তিন বছরের মধ্যে প্রকল্প শেষের কথা ছিল। তবে দেড় যুগ শেষ হতে চললেও এই শিল্পনগরী এখনো পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠেনি।

প্রকল্প শেষ না হলেও ২০১৭ সালে উচ্চ আদালত হাজারীবাগের চামড়া কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেন। ফলে সব কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে বেশ কিছু চামড়া কারখানার বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ ছিল। এ সনদের সুবাদে তারা জাপান, কোরিয়াসহ ইউরোপ-আমেরিকায় চামড়া রপ্তানি করতে পারত। হাজারীবাগে কারখানা বন্ধ হওয়ায় সেই সনদ ও বায়ার (বিদেশি ক্রেতা) হারায় চামড়াশিল্প কারখানাগুলো।

এত দীর্ঘ সময়েও সাভারের চামড়াশিল্প নগরী পূর্ণাঙ্গভাবে প্রস্তুত না হওয়ায় এখনো এলডব্লিউজির সনদ ফিরে পায়নি কারখানাগুলো। একই সঙ্গে নতুন বাজার সৃষ্টি হয়নি। সনদ না থাকায় জাপান, কোরিয়াসহ ইউরোপ-আমেরিকায় এলডব্লিউজির আওতায় চামড়া রপ্তানি করতে পারছে না কারখানাগুলো। আর এ বিধিনিষেধের কারণে এসব কারখানা থেকে কাঁচামাল নিয়ে পণ্য উৎপন্ন করে সে পণ্য রপ্তানিও করতে পারছে না রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো।

শাহীন আহমেদ বলেন, ‘যে সুযোগটি এসেছিল, সেটা যদি হাতছাড়া হয়ে যায়, তাহলে হয়তো আমাদের চামড়াশিল্প আর কোনো দিনই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। তাই সরকারের প্রতি আমার অনুরোধ, সাভার চামড়াশিল্প নগরীকে পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে যা কিছু প্রয়োজন তাই যেন করা হয় এবং তা যেন দ্রুততর সময়ের মধ্যে করা হয়।’

চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। তবে এপ্রিল মাসে এই খাতের রপ্তানি গত বছরের এপ্রিলের চেয়ে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ।


চাহিদা মেটাতে সেপ্টেম্বরে ১০ কার্গো এলএনজি সংগ্রহ করেছে সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা মেটাতে গত সেপ্টেম্বর মাসে সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এলএনজি বোঝাই ১০টি কার্গো বাংলাদেশে পৌঁছেছে। রোববার সরকারি কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার পরিচালক এ. কে. এম. মিজানুর রহমান বাসসকে বলেন, বিদেশি এলএনজি উৎপাদনকারীদের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি চুক্তি এবং অন দ্য স্পট ক্রয় নীতিমালা মেনে গত সেপ্টেম্বরে এলএনজি বোঝাই এসব কার্গো গ্রহণ করা হয়েছে।

এই ১০টি কার্গোর মধ্যে কাতার এনার্জি চারটি কার্গো সরবরাহ করেছে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির ভিত্তিতে। ওমানের ওকিউ ট্রেডিং (ওকিউটি) দুটি কার্গো দিয়েছে—একটি দীর্ঘমেয়াদি এবং একটি স্বল্পমেয়াদি চুক্তির আওতায়।

তিনি আরও জানান, বাকি চারটি এলএনজি কার্গো স্পট মার্কেট থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, যাতে দেশে জ্বালানি সরবরাহে কোনো বিঘ্ন না ঘটে। এর আগে আগস্ট মাসে সরকার ১১টি এলএনজি কার্গো সংগ্রহ করেছিল, যার পরিমাণ ছিল প্রায় ৩.৬৫ কোটি এমএমবিটিইউ।

রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিজিসিএল) মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. শাহ আলম জানান, প্রতিটি কার্গোতে গড়ে ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ এলএনজি থাকে।

সরকারের নিয়মিত প্রক্রিয়া অনুযায়ী, সাপ্তাহিক বৈঠকে তরল গ্যাসের চাহিদা পর্যালোচনা করে এলএনজি সংগ্রহের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়।


২৫ লাখ ডলারের রপ্তানি আদেশ পেল বাংলাদেশ

মিহাস ২০২৫-এ নজিরবিহীন সাফল্য
আপডেটেড ৫ অক্টোবর, ২০২৫ ২৩:৪৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বের বৃহত্তম হালাল পণ্য প্রদর্শনী মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল হালাল শোকেস (মিহাস) ২০২৫-এ অংশ নিয়ে বাংলাদেশের কসমেটিক্স ও স্কিনকেয়ার শিল্প নজিরবিহীন সাফল্য অর্জন করেছে।

রোববার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া দেশি কোম্পানিগুলোর পণ্যের প্রতি ২১টি দেশের ১১৮টিরও বেশি আন্তর্জাতিক ক্রেতা ও রিটেইলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এ আয়োজনে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ২৫ লাখ মার্কিন ডলারের সম্ভাব্য রপ্তানি অর্ডার পেয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে এবারে মোট ১২টি বুথ অংশ নেয়, যার মধ্যে দুটি পরিচালনা করে বাংলাদেশ হাইকমিশন। খাদ্য, কসমেটিক্স, হস্তশিল্প, সিরামিক, পাটজাত এবং পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতের পণ্য প্রদর্শিত হয়। হালাল সার্টিফায়েড কসমেটিক্স, স্কিনকেয়ার ও পার্সোনাল কেয়ার পণ্য মেলায় বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে জায়গা করে নেয়।

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, চীন, অস্ট্রেলিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ক্রেতারা বাংলাদেশে উৎপাদিত হালাল কসমেটিক্সের গুণগত মান, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এবং প্যাকেজিং দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রদর্শনীর সময় একাধিক দেশি কোম্পানি সরাসরি রপ্তানি অর্ডার পায় এবং ভবিষ্যতে প্রাইভেট লেবেল উৎপাদন ও প্যাকেজিং সহযোগিতায় প্রাথমিক সমঝোতা হয়।

মালয়েশিয়ার জাতীয় ঐক্য মন্ত্রণালয়ের সচিব জেনারেল দাতো হাসলিনা বিনতে আবদুল হামিদ বাংলাদেশের পণ্যের মান ও উপস্থাপন দেখে প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে তৈরি হালাল পণ্যের মান আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছেছে এবং এটি বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা রাখে।’

প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মোছাম্মৎ শাহানারা মনিকা এবং বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবির) মহাপরিচালক বেবি রানী কর্মকার। তারা প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর স্টল পরিদর্শন করে পণ্যের মান ও প্যাকেজিংয়ের প্রশংসা করেন।

প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া রিমার্ক ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রাশেদুল ইসলাম জানান, ‘রপ্তানির এই নতুন দিগন্ত শুধু আমাদের জন্য নয়, দেশের জন্যও গর্বের বিষয়।’

মিহাস ২০২৫-এ অংশ নেয় বিশ্বের ৮০টি দেশের ১ হাজার ১৯টি কোম্পানি, যেখানে ছিল ২ হাজার ৩৮০টিরও বেশি স্টল। প্রায় ৪৫ হাজার দর্শনার্থী প্রদর্শনীতে অংশ নেন।

আয়োজনের মধ্যে ছিল ইনভেস্টমেন্ট ও পারচেজিং মিশন, বিজনেস সেমিনার, অ্যাওয়ার্ড শো এবং নলেজ হাব।


জুলাই-সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ ১৫.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহে ১৫.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৫৮৬ মিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬ হাজার ৫৪৩ মিলিয়ন ডলার।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীরা দেশে ২ হাজার ৬৮৫ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২ হাজার ৪০৫ মিলিয়ন ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪৬ কোটি ৬৮ লাখ ১০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে ২৫ কোটি ৮২ লাখ ১০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯৫ কোটি ৪৬ লাখ ১০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬২ লাখ ৪০ হাজার ডলার।

এর আগে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে আসে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। আগস্টে প্রবাসীরা পাঠান ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ২৯ হাজার ৫৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

গত অর্থবছরের (২০২৪-২৫) মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসে, যা ছিল বছরের রেকর্ড। পুরো অর্থবছরে প্রবাসী আয় দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্সপ্রবাহ ছিল যথাক্রমে- জুলাইয়ে ১৯১.৩৭ কোটি ডলার; আগস্টে ২২২.১৩ কোটি ডলার; সেপ্টেম্বরে ২৪০.৪১ কোটি ডলার; অক্টোবরে ২৩৯.৫০ কোটি ডলার; নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার; ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার; জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার; ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার; মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার; এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার; মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলার এবং জুনে ২৮২ কোটি ডলার।

এদিকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩১.৫০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম-৬) পদ্ধতি অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।


ডিএসইতে সূচক বেড়েছে, লেনদেন ছয়শ কোটি টাকার ওপরে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রোববার মোট ৩৯৫টি কোম্পানির ১৯ কোটি ৮৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৩টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে। দিনের শেষে মোট ১ লাখ ৮৮ হাজার ৯০৭টি ট্রেডের মাধ্যমে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১৯ কোটি ২৮ লাখ ৩৭ হাজার ৯৮৯ টাকা।

সূচকের দিক থেকেও দিনটি ইতিবাচক ছিল। সব সূচক বেড়েছে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৩১.৮৫ পয়েন্ট বেড়ে ৫,৪৪৭.৬৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএস৩০ সূচক বেড়েছে ১০.৭২ পয়েন্ট, অবস্থান করছে ২,০৯২.৫৬ পয়েন্টে।

অন্যদিকে ডিএসই শরীয়াহ সূচক (ডিএসইএস) ২.০৫ পয়েন্ট বেড়ে বর্তমানে ১,১৭৪.০৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনকৃত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৮৩টির দর বেড়েছে, ১৪৭টির কমেছে এবং ৬৫টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

মূল্য অনুযায়ী লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো: সিভিও পেট্রোলিয়াম, সোনালি পেপার, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, তৌফিকা ফুডস, ওরিয়ন ইনফিউশন, ডমিনেজ স্টিল, খান ব্রাদার্স পিপি, কে অ্যান্ড কিউ, বিএসসি এবং প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানি:

এক্সিম ব্যাংক, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, এসআইবিএল, এবি ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, সিভিও পেট্রোলিয়াম, রিলায়েন্স ১ম মিউচ্যুয়াল ফান্ড, রহিমা ফুডস এবং ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স।

দরপতনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি:

ট্রাস্ট ব্যাংক ১ম মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ইনটেক লিমিটেড, মিথুন নিটিং, এমএল ডায়িং, আইএসএন লিমিটেড, আনলিমা ইয়ার্ন, সেলভো কেমিক্যাল, এশিয়াটিক ল্যাব, সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং আলহাজ টেক্সটাইল।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দিনের শুরু থেকেই বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ সক্রিয় ছিল। ব্যাংক ও বিমা খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধিতে বাজারে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। মধ্যম মানের লেনদেনের সঙ্গে সূচকের ধারাবাহিক উত্থান বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়িয়েছে।


রপ্তানি কমলো টানা ২ মাস *সেপ্টেম্বরে কমেছে ৪.৬১ শতাংশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাসেই পণ্য রপ্তানিতে কিছুটা হোঁচট আসে। আয় কমে যায় ৩ শতাংশের মত। তৃতীয় মাসও চলে সেই ধারায়। এবার রপ্তানি আরও কিছুটা কমেছে। সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমে গেছে ৫ শতাংশের মতো।

গত বছরের একই মাসের চেয়ে মাসটিতে পরিমাণে রপ্তানি কমলো ১৭ কোটি ডলারেরও বেশি। রপ্তানির পরিমাণ নেমে আসে ৩৬৩ কোটি ডলারে, যা আগের সেপ্টেম্বরে ছিল ৩৮০ কোটি ডলারেরও বেশি।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমেছে ৬ শতাংশের মত। মূলত পোশাকের রপ্তানি এ হারে কমে যাবার প্রভাবেই গোটা রপ্তানি আয় নেতিবাচক ধারা চলছে। পোশাকের রপ্তানি কমে দাঁড়ায় ২৮৪ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই মাসে ছিল ৩০১ কোটি ডলার।

একক মাসের হিসেবে রপ্তানি কমলেও অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক অর্থাৎ, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ শতাংশের মত বেশি আছে।

এর কারণ, অর্থবছরের প্রথম মাসে রপ্তানি বেশি হয় ২৫ শতাংশ। দ্বিতীয় মাস রপ্তানি কমে ৩ শতাংশের মতো।

অন্যদিকে আলোচ্য সময়ে প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ। সেই সঙ্গে কার্পেট রপ্তানি ২১ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং হিমায়িত মাছ রপ্তানি ১২ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ বিষয়ে একব্যবসায়ী নেতা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ধাক্কার প্রভাবে গত সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা দেশের সামগ্রিক রপ্তানি আয়েও প্রতিফলিত হয়েছে।

তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে, কারণ বেশির ভাগ ক্রেতাই নতুন করে কোনো ক্রয়াদেশ দিচ্ছেন না। তারা এখন অতিরিক্ত ২০ শতাংশ রেসিপ্রোক‍্যাল শুল্কের একটি অংশ বাংলাদেশি সরবরাহকারীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। রপ্তানিকারকদের পক্ষে এ অতিরিক্ত চাপ বহন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কারণ তারা এরই মধ্যে প্রাথমিক শুল্ক সমন্বয় এবং উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাবসহ বিভিন্ন ধরনের চাপে রয়েছেন।

এছাড়া, বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং অন্যান্য বাজারেও কঠিন প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছে। কারণ চীনা ও ভারতীয় প্রস্তুতকারকরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এসব বাজারে রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টা করছে, যোগ করেন বিকেএমইএ সভাপতি।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেনা, "এ ধীরগতি আগামী দুই থেকে তিন মাস অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা নতুন শুল্ক কাঠামোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারলে, আমাদের রপ্তানি আবারও পুনরুদ্ধার হবে বলে আশা করছি। এ সময়টায় রপ্তানিকারকদের ধৈর্য সহকারে ক্রেতাদের যে কোনো ধরনের চাপ মোকাবিলা করতে হবে।’


‘সৌদি-বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ শুরু হচ্ছে আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য, অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে আজ (সোমবার) রাজধানীতে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী ‘সৌদি আরব-বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’।

সৌদি আরব-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এসএবিসিসিআই) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সামিটের লক্ষ্য হচ্ছে- সৌদি বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের উপস্থিতি বাড়ানো এবং সীমিত সংখ্যক ক্রেতার ওপর নির্ভরতা কমানো।

রোববার গুলশানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসএবিসিসিআই সভাপতি আশরাফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এই যৌথ উদ্যোগটি একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ, যা শক্তিশালী অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ অংশীদারিত্ব গঠনে সহায়ক হবে। সামিটের মূল লক্ষ্য হলো- সৌদি বাজারে বাংলাদেশের উপস্থিতি বাড়ানো, যাতে আন্তর্জাতিক ক্রেতার সীমিত নির্ভরতা কমানো যায়।’

সামিটে দুদেশের ব্যবসায়ী নেতা, অর্থনীতিবিদ, নীতিনির্ধারক এবং খাতভিত্তিক বিশেষজ্ঞরা অংশ নেবেন।

২০ সদস্যের একটি সৌদি ব্যবসায়ী ও প্রতিনিধিদল এই আয়োজনে অংশ নেবে, যা বিভিন্ন খাতে বিশাল বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা উন্মোচনে সহায়ক হবে। সৌদি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন মাজদ আল উমরান গ্রুপের মালিক শেখ ওমর আবদুল হাফিজ আমির বখশ।

আগামীকাল ৭ অক্টোবর রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিতব্য সামিটের মূল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

সামিটের সূচি অনুযায়ী, প্রথম দিন সৌদি প্রতিনিধিদলের ঢাকা আসবে এবং তাদের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন। শেষ দিন, ৮ অক্টোবর, থাকবে বি২বি (ব্যবসায়িক) বৈঠক এবং সৌদি প্রতিনিধিদলের চূড়ান্ত সভা।

সৌদি বাজারে বাংলাদেশি পণ্য বিশেষ করে তৈরি পোশাক, কৃষিপণ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, ডিজিটাল ফিন্যান্স এবং পাটজাত পণ্য রপ্তানির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।

রপ্তানি বৃদ্ধির পাশাপাশি, বাংলাদেশ এখন বিভিন্ন খাতে যৌথ বিনিয়োগে আগ্রহী, যা অতীতের দক্ষ জনশক্তি প্রেরণের প্রচলিত ধারা থেকে একটি অগ্রগতি।

আশরাফুল হক চৌধুরী আরও বলেন, পেট্রোকেমিক্যাল, স্টিল, কৃষিশিল্প, সবুজ প্রযুক্তি, সাইবার নিরাপত্তা এবং সেমিকন্ডাকটরসহ বিভিন্ন উন্নত ও শিল্প খাতে দুদেশের মধ্যে সহযোগিতার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।


চিটাগং চেম্বারে চূড়ান্ত প্রার্থী ৬৩

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের প্রায় শতবর্ষী ব্যবসায়িক সংগঠন চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই)-এর পরিচালক পদে নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হয়েছে।

ঋণ খেলাপি হওয়ায় ও পুলিশি প্রতিবেদন ঠিক না থাকায় তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ৮ জন। আর চূড়ান্তভাবে প্রার্থিতা পেয়েছেন ৬৩ জন। তবে, পরিচালক পদের জন্য লড়তে হবে ৫৭ জনকে। অন্যদিকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিচালক হচ্ছেন টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপে তিনজন।

রোববার প্রকাশিত বৈধ প্রার্থী তালিকা থেকে এ তথ্য জানা যায়।

নির্বাচন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চূড়ান্ত তালিকায় সাধারণ শ্রেণি থেকে ৪১ জন, সহযোগী শ্রেণি থেকে ১৬ জন এবং ট্রেড ও টাউন অ্যাসোসিয়েশন শ্রেণি থেকে যথাক্রমে ৩ জন করে মিলে মোট ৬৩ জন প্রার্থী অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।

এর আগে মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় মোট ৭১টি আবেদন জমা পড়ে। প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে ৩৫টি মনোনয়ন বাতিল হয়েছিল। নির্বাচনী নিয়ম অনুযায়ী, যাদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছিল তারা ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আপিল করার সুযোগ পান। এরপর ২৮ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুনানি শেষে আজ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

চিটাগং চেম্বারের সহকারী সচিব মো. তারেক বলেন, ‘মনোনয়ন যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এতে সকল শ্রেণি থেকে বৈধ প্রার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নির্বাচনের জন্য এখন প্রস্তুতি শুরু হবে। পাশাপাশি কেউ যদি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে চান, তারা তা ৮ অক্টোবর দুপুর ১টার মধ্যে আবেদন করবেন।’


হিলি বন্দরে কাঁচামরিচের আমদানি বাড়ায় দাম কমেছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটি শেষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচামরিচ আমদানি শুরু হয়েছে। এতে বাজারে কেজিপ্রতি কাঁচামরিচের দাম ১০০ টাকা কমেছে।

রোববার দুপুরে দিনাজপুর স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘গত শনিবার সকাল থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় কাঁচামরিচ বোঝাই ট্রাক আসতে শুরু করেছে।

বন্দরে কাঁচামরিচ আসায় আজ (রোববার) সকাল থেকে কেজিতে ১০০ টাকা দাম কমেছে স্থানীয় বাজারে।’

বন্দরের আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘টানা ৮ দিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কাঁচামরিচের দাম বেড়ে যায়। আমদানি বাড়লে দাম কমে আসবে বলে জানান তারা।’

হিলি স্থলবন্দর কাস্টম বিভাগের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘গত শনিবার বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ভারত থেকে ৪টি ট্রাকে প্রায় ৩০ টন কাঁচামরিচ আমদানি হয়েছে। আজ (রোববার) দুপুর পর্যন্ত আরও ৪টি ট্রাকে ৩০ টন কাঁচামরিচ আমদানি করা হয়েছে। আমদানি করাকাঁচা মরিচের ট্রাক দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। খালাস করা কাঁচামরিচ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকাররা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে কাঁচামরিচের দাম কমে আসবে।’

আমদানিকারকরা বলেন, ‘ভারতে বৃষ্টির কারণে আমদানির গতি কিছুটা কম হচ্ছে। এর পরও আমদানির গতি বৃদ্ধি করতে ব্যবসায়ীরা ভারতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।’

হিলি স্থলবন্দরের কাঁচা মরিচ ব্যবসায়ী নুজরুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্গাপূজায় বন্ধের কারণে কাঁচামরিচের বাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। আমদানি শুরু হওয়ায় দাম এখন কমে আসবে। আজ (রোববার) হিলি স্থলবন্দরে পাইকারিতে মানভেদে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

বন্দরের কাঁচামরিচ ব্যবসায়ী প্লাবন রায় বলেন, ‘পূজার ছুটির পর গত শনিবার থেকে আমদানি শুরু হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে এসব কাঁচামরিচ আমদানি হচ্ছে। ভারতেও বৃষ্টি হচ্ছে, তাই পর্যাপ্ত কাঁচামরিচ আমদানি করতে পারছি না। বৃষ্টি কমলে আমদানি বাড়বে।’

হিলি বাজারের কাঁচামরিচ ব্যবসায়ী অনিল চন্দ্র বলেন, ‘গত শুক্রবারও দেশি কাঁচামরিচ ২৬০ টাকায় বিক্রি করেছি। গত শনিবার ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি হয়েছে। তাই আজ (রোববার) ১০০ টাকা কমে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আজ (রোববার) বিকেলে ভারতীয় কাঁচামরিচ বাজারে এলে দাম আরও কমে আসবে।

হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ বিভাগের কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী বলেন, ‘দুর্গাপূজার ছুটি শেষে গত শনিবার থেকে আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়েছে। যেহেতু কাঁচামরিচ পচনশীল পণ্য, তাই দ্রুত ছাড়করণে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে আমদানিকারকদের। প্রতি টন কাঁচামরিচ ৫০০ ডলারে শুল্কায়ন করা হচ্ছে। আর প্রতি কেজিতে শুল্ক দিতে হচ্ছে ৩৬ টাকা ৪০ পয়সা। আমদানি বাড়লে কাঁচামরিচের দাম আরও কমবে।


সর্বকালের সর্বোচ্চ দামে বিটকয়েন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

সর্বকালের সবোর্চ্চ দামের রেকর্ড ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল ক্রিপ্টোমুদ্রা বিটকয়েন।

বিশ্বের বাজারমূল্য অনুযায়ী, রোববার নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে বিটকয়েনের দাম এবং জিএমটি সময় অনুসারে সকাল ৫টা ১২ মিনিটে প্রায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে বিটকয়েনের দাম দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ২৪৫.৫৭ ডলারে।

এর আগে, এ বছরের আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে বিটকয়েনের দাম হয়েছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৪৮০ ডলার।

ওই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অনুকূল নিয়মনীতি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শক্তিশালী চাহিদা বিটকয়েনের দাম বেড়ে যাওয়ায় সহায়ক ভূমিকা রেখেছিল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।

গত শুক্রবার টানা অষ্টম দিনের মতো বিটকয়েনের দাম বেড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে সাম্প্রতিক লাভ ও বিটকয়েনভিত্তিক ‘এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড’ বা ইটিএফ বিনিয়োগ প্রবাহ ক্রিপ্টোমুদ্রাটির এই বৃদ্ধিকে আরও ত্বরান্বিত করেছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউনের আশঙ্কা তৈরির ফলে বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এ অনিশ্চয়তার কারণে দেশটির অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় গত শুক্রবার মার্কিন ডলারের দরপতন ঘটে এবং অর্থনীতির দিক নির্ধারণে সাহায্য করে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, যেমন- চাকরি বা বেতনের পরিসংখ্যান প্রকাশ বিলম্বিত হচ্ছে। এ পরিস্থিতির কারণে বিনিয়োগকারীরা একটু দ্বিধায় পড়েছেন।


সোনার দাম আরও বাড়লো, ভরি ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৬ টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বাজারে আবার সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ২ হাজার ১৯২ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৬ টাকা হয়েছে। দেশের বাজারে সোনার এতো দাম আগে কখনো হয়নি।

স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। আজ রোববার থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

শনিবার (৪ অক্টোবর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এরআগে ৩০ সেপ্টেম্বর সোনার দাম বাড়ানো হয়। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয় ১ লাখ ৯৫ হাজার ৩৮৪ টাকা। এতো দিন এটাই ছিলো দেশের বাজারে সোনার সর্বোচ্চ দাম। এখন আবার দাম বাড়ানোর ফলে সেই রেকর্ড ভেঙে গেলো।

এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ২ হাজার ১৯২ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ২ হাজার ৯৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৭৯৬ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৬১ হাজার ৬৫১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৫২৮ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ২৫৩ টাকা।

সোনার দাম বাড়াোন হলেও রূপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬২৮ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ৩ হাজার ৪৫৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ৯৬৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ২২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।


যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২৬.৬২ শতাংশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা ‘অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেল’ (ওটেক্সের) তথ্যানুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাপী পোশাক আমদানির পরিমাণ ৫.৩০ শতাংশ কমেছে। তবে একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক আমদানির পরিমাণ ২৬.৬২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তুলনামূলকভাবে দেখা যায়, বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ চীনের রপ্তানি কমেছে ১৮.৩৬ শতাংশ। বিপরীতে, ভিয়েতনাম ও ভারতের রপ্তানি যথাক্রমে ৩২.৯৬ শতাংশ ও ৩৪.১৩ শতাংশ বেড়েছে। ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি কমেছে ১৯.৮২ শতাংশ এবং কম্বোডিয়ার রপ্তানি বেড়েছে ১০.৭৮ শতাংশ। উল্লেখযোগ্যভাবে, বাংলাদেশের আমদানি ভলিউম ২৬.৬২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইউনিট মূল্যের ক্ষেত্রে, বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি কমেছে ১.৭১ শতাংশ। চীন ও ভারতের ইউনিট মূল্য যথাক্রমে ৩৩.৮০ শতাংশ ও ৪.৫৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার ইউনিট মূল্য যথাক্রমে ৬.৬৪ শতাংশ ও ৭.৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কম্বোডিয়ার ইউনিট মূল্য বেড়েছে ৩৮.৩১ শতাংশ। বাংলাদেশে এই বৃদ্ধি হয়েছে ৭.৩০ শতাংশ।

ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে শিল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে এমন একটি ইউনিট মূল্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক গড় মূল্যের কাছাকাছি।

বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘যখন আমরা আমাদের নিকটতম প্রতিযোগী যেমন ভিয়েতনাম ও ভারতের সঙ্গে তুলনা করি, তখন স্পষ্ট হয় যে বাংলাদেশের ইউনিট মূল্য আরও বাড়ানোর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এই উন্নতি রপ্তানির পরিমাণ না বাড়িয়েও মোট রপ্তানি আয় বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০২৪ সালে চীন ও ভিয়েতনামের রপ্তানি মূল্য প্রায় সমান ছিল, অথচ ভিয়েতনামের রপ্তানি পরিমাণ ছিল চীনের অর্ধেকেরও কম। কারণ, ভিয়েতনাম উচ্চ মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে।’

তিনি বলেন, ‘কম দামি পণ্য থেকে বেশি দামি পণ্যের দিকে আমাদের মনোযোগ বাড়াতে হবে।’


পুঁজিবাজারে দরপতনের মধ্যেও মূলধন বাড়ল দেড় হাজার কোটি টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

গত সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, তার প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের পরও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ। পাশাপাশি প্রধান মূল্যসূচকও বেড়েছে।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৫০টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২১৫টির। আর ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় ১ দশমিক ৪৩ দ্বিগুণ বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

এমন দরপতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা বা দশমিক ২২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমে ১ হাজার ১৮ কোটি টাকা এবং তার আগর দুই সপ্তাহে কেম ১৪৬ কোটি টাকা ও ৩ হাজার ১৮০ কোটি টাকা।

বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে প্রধান মূল্যসূচকও বেড়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩৪ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৪ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে কমে ৭৩ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট এবং ৯০ দশমিক ৫০ পয়েন্ট। অর্থাৎ টানা তিন সপ্তাহে ১৯৮ পয়েন্ট কমার পর ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বাড়লো।

এদিকে গত সপ্তাহর ডিএসইতে লেনদেনের গতি বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬২০ কোটি ১০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৫৮৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৩৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা বা ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ।


নিলামে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনায় কমেছে আন্তঃব্যাংক লেনদেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কেনায় আগস্টে দৈনিক গড় ইন্টারব্যাংক বা আন্তঃব্যাংক লেনদেন কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত ‘এক্সচেঞ্জ রেট ও ফরেইন এক্সচেঞ্জ মার্কেট ডাইনামিকস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে সোয়াপ ও স্পট- দুই ধরনের আন্তঃব্যাংক লেনদেনই হ্রাস পেয়েছে।

তথ্যানুযায়ী, আগস্টে দৈনিক গড় স্পট লেনদেন কমে দাঁড়ায় ৩৩ দশমিক ২৩ মিলিয়ন ডলার, যা জুলাইয়ে ছিল ৪০ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলার। একই সময়ে দৈনিক গড় সোয়াপ লেনদেন নেমে আসে ৭৭ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলারে, যা জুলাইয়ে ছিল ৮৬ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলার। জুনে স্পট লেনদেন ছিল ৬৮ দশমিক ৭০ মিলিয়ন ডলার এবং সোয়াপ ১১৩ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার।

আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার থেকে ৪৫৪ মিলিয়ন ডলার কিনেছে টাকার বিপরীতে ডলারের অতিমূল্যায়ন রোধ করতে। মাস শেষে আন্তঃব্যাংক বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয় প্রতি ডলার ১২১ টাকা ৬৯ পয়সা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘নিলামের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার না কিনলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ইন্টারব্যাংকে বিক্রি করত। এখন সেই অর্থ ইন্টারব্যাংকে না থেকে রিজার্ভে যোগ হচ্ছে।’

চলতি বছরের জুলাই থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কিনছে। রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় ব্যাংকগুলোতে ডলার জমা বেশি হওয়ায় দাম না পড়ে যায়, এ জন্য নিলামে ডলার কিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দাম ১২১ টাকার ওপরে ধরে রেখেছে।

জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত নিলামে ১ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, নিলামের আগে ব্যাংকগুলোতে টাকার টানাটানি ছিল। তবে ডলারের বিপরীতে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা প্রবাহিত হওয়ায় সেই চাপ অনেকটা কমেছে।

তারা বলছেন, ব্যাংকগুলোর টাকার চাহিদা এখন আগের চেয়ে কমেছে। আমদানির এলসির পেমেন্ট কম থাকায় অন্য ব্যাংক থেকেও ডলার নেওয়ার চাপ কমেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক রেপোর মাধ্যমে তারল্য সহায়তা দিচ্ছে বলে ব্যাংকগুলোতে পর্যাপ্ত টাকা রয়েছে। মূলত এসব কারণেই ইন্টারব্যাংকে চাহিদা হ্রাস পেয়েছে।


banner close