মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫
৩ ভাদ্র ১৪৩২

বাজেট পেশ ১ জুন

গত বছরের ৯ জুন জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পিআইডি ফাইল ছবি
আপডেটেড
৯ মে, ২০২৩ ০১:৪৫
বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৯ মে, ২০২৩ ০১:৪৫

আগামী ১ জুন (বৃহস্পতিবার) জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। দুই বছরের করোনা মহামারির ধকল কাটতে না কাটতেই এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা রশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতার মধ্যেই পৌনে আট লাখ কোটি টাকার বিশাল বাজেট দিতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী।

এটি দেশের ৫২তম এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৪তম বাজেট। আকারের দিক থেকে এটিই হবে দেশের বৃহত্তম বাজেট। সর্বশেষ বাজেটের তুলনায় এর আকার হবে ১২ শতাংশ বেশি।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের এই বাজেট নিয়ে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল সংসদে পঞ্চম বাজেট উপস্থাপন করবেন। সর্বশেষ ২০২২ সালের ৯ জুন তিনি আগামী ৩০ জুন শেষ হতে যাওয়া চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট সংসদে উপস্থাপন করেছিলেন।

প্রথা অনুযায়ী জুন মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। ৩০ জুন পাস হয় সেই বাজেট। ১ জুলাই থেকে শুরু হয় নতুন বাজেট বাস্তবায়ন।

এ বছর জুন মাসের প্রথম দিনই বৃহস্পতিবার হওয়ায় রীতি অনুযায়ী সেদিনটিতেই ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের প্রাথমিক সূচি চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাজেট নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভায় এ লক্ষ্য নির্ধারণ করে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করা হয়।

পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বাজেটবিষয়ক এ বৈঠকের বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করা হয়, যেখানে ১ জুন বাজেট উপস্থাপনের জন্য বাজেটের বইসহ অন্যান্য ডকুমেন্টস প্রকাশের দিনক্ষণ নির্ধারণ এবং দায়িত্ব বণ্টনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানানো হয়।

আগামী অর্থবছরে সাত লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। আর সে লক্ষ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য দুই লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। আগামী বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এই এডিপি অনুমোদন দেয়া হবে। নতুন এডিপি হবে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির চেয়ে প্রায় ১৬ শতাংশ বেশি এবং মূল এডিপির তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি।

রাজস্ব আদায় বাড়ানো, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, আইএমএফসহ উন্নয়ন সহযোগীদের দেয়া বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন ও উচ্চ প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা এবারের বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

এগুলো মোকাবিলা ও সমন্বয় করে নির্বাচনের বছরে কীভাবে ব্যয় সমন্বয় করা যাবে, তা নিয়ে কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়।


চলতি অর্থবছর ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ

আপডেটেড ১৯ আগস্ট, ২০২৫ ০০:৪৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ (এমপিএ) চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় এবং এক কোটি ২০ লাখ টনেরও বেশি পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এই সময়ে প্রায় ৯০০টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ বন্দরের জেটিতে নোঙর করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এমপিএ উপপরিচালক (মিডিয়া) মো. মাকরুজ্জামান জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোংলা বন্দর ১ কোটি ৪ লাখ টন পণ্য পরিবহন করে ৩৪৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করে নতুন রেকর্ড গড়েছে। সে সময় বন্দরের মুনাফা দাঁড়ায় ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা নির্ধারিত ২০ কোটি ৫০ লাখ টাকার তুলনায় ২০৩.৪৯ শতাংশ বেশি।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান সামুদ্রিক কেন্দ্র হিসেবে মোংলাকে গড়ে তুলতে বন্দরটিতে ব্যাপক রূপান্তর প্রক্রিয়া চলছে। শক্তিশালী আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ও সম্প্রসারণ উদ্যোগের পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের চিন্তাভাবনার অংশ হিসেবে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪৮ দিনে (১৭ আগস্ট পর্যন্ত) মোংলায় ১০৩টি বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙর করেছে এবং তারা প্রায় ১০ লাখ টন পণ্য হ্যান্ডেল করেছে। এর মধ্যে আটটি জাহাজ ৫ হাজার ৩৩২ টিইইউ কনটেইনার পণ্য বহন করেছে। শুধু জুলাই মাসেই মোংলা বন্দর ৪ হাজার ৪৫৯ টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডেল করেছে, ৫১৮টি পুরান গাড়ি আমদানি হয়েছে এবং ৬.৫ লাখ টন পণ্য প্রক্রিয়াকরণ করেছে।

মোংলা বন্দরের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- চ্যানেল খনন, কনটেইনার টার্মিনাল সম্প্রসারণ এবং শুল্ক ও বন্দর কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন। এসব উদ্যোগ বন্দরটির কার্যক্রম আরও গতিশীল করছে এবং দ্বিপক্ষীয় চুক্তির অধীনে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলো ও ভুটানের জন্য নির্ধারিত পণ্য পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে মোংলার ভূমিকা জোড়ালো হচ্ছে।

এমপিএ চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বাসসকে বলেন, বন্দরের পূর্ণ সক্ষমতা কাজে লাগানো গেলে বছরে দেড় হাজার বিদেশি জাহাজ নোঙর করতে পারবে, এক লাখ টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডেল, দুই কোটি টন সাধারণ পণ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং ২০ হাজার পুরান গাড়ি ক্লিয়ার করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, এই লক্ষ্যগুলো অর্জিত হলে জাতীয় বাণিজ্য সক্ষমতা যেমন বাড়বে, তেমনি খুলনা-বাগেরহাট অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে অবকাঠামো আধুনিকীকরণ, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক লজিস্টিকস হাব হিসেবে মোংলার পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগানো।

কৌশলগত অবস্থান এবং ক্রমবর্ধমান সক্ষমতার কারণে মোংলা বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে, যা দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের জট কমিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ আঞ্চলিক উন্নয়নে সহায়তা করছে।

নির্বিঘ্ন কার্যক্রম নিশ্চিত করা এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বন্দর ব্যবহারকারী শিপিং এজেন্ট, সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট, স্টিভেডরস এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়মিতভাবে বৈঠক করছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

মোংলা বন্দরে জাহাজ নোঙর বাড়ানো ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি অভ্যন্তরীণ ব্যবসা উন্নয়ন স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে ইতোমধ্যে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে।


১৫ দিন পর পুঁজিবাজারে লেনদেন ৯৫০ কোটি টাকা ছাড়াল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ দিনের উত্থান-পতনের মিশ্রধারা শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন ছাড়িয়েছে ৯৫০ কোটি টাকা, বেড়েছে সূচক এবং বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

গতকাল সোমবার সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ডিএসইতে প্রধান সূচক বেড়েছে ১৮ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইসি ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।

লেনদেনে অংশ নেয়া ৪০০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২৪ কোম্পানির, কমেছে ৯৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড— সবকয়টি ক্যাটাগরিতে বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

সর্বোচ্চ লভ্যাংশ দেয়া এ ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ২২১ কোম্পানির মধ্যে ১৩১ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ৬২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

ব্লক মার্কেটে ৪১ কোম্পানির ১৩ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। সর্বোচ্চ ২ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে পূবালি ব্যাংক।

সূচক এবং বেশিরভাগ কোম্পানির দরবৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেন। সারাদিনে ডিএসইতে ৯৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যা ছিল ৮০১ কোটি টাকা।

৯ শতাংশের ওপর দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষে সোনালি পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস এবং ৫ শতাংশের ওপর দর কমে তলানিতে আইসিবি ইমপ্লোয়িস প্রভিডেন্ট মিউচুয়াল ফান্ড।

চট্টগ্রামেও উত্থান

ঢাকার মতোই উত্থান হয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৬১ পয়েন্ট।

সূচকের উত্থানের পাশাপাশি দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেন হওয়া ২০৮ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১২৮, কমেছে ৫৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

সারাদিনে ১৮ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে সিএসইতে, যা গতদিন ছিল ১৩ কোটি টাকা।

১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এবং ৯ শতাংশ দাম কমে তলানিতে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।


চট্টগ্রাম থেকে শুঁটকি রপ্তানিতে ধারাবাহিক বৃদ্ধি

আপডেটেড ১৯ আগস্ট, ২০২৫ ০১:৩৭
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

চট্টগ্রাম থেকে শুঁটকি রপ্তানির পরিমাণ প্রতি বছরই বাড়ছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ জেলা থেকে ৩ হাজার ১২৬ টন শুঁটকি রপ্তানি হয়েছে, যার মূল্য প্রায় ৭০ লাখ ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের তুলনায় এ আয় প্রায় ৫ লাখ ডলার বেশি।

বাংলাদেশ মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রাম থেকেই দেশের সর্বাধিক শুঁটকি বিদেশে যায়। মূল গন্তব্য ভারত, বিশেষ করে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চল ‘সেভেন সিস্টার’ রাজ্যগুলো। এছাড়া হংকং, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও থাইল্যান্ডেও শুঁটকির চাহিদা রয়েছে।

অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফারহানা লাভলী বলেন, ‘চট্টগ্রামের শুঁটকির বৈশ্বিক চাহিদা বাড়ছে। তবে বর্তমান রপ্তানির পরিমাণ যথেষ্ট নয়। সঠিক উদ্যোগ নিলে এ খাত থেকে আরও বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।’

চট্টগ্রামের ১৭টি প্রতিষ্ঠান নিয়মিত শুঁটকি রপ্তানি করে। ব্যবসায়ীরা জানান, দেশীয় বাজারে কাঁচা মাছের দাম বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচও বেড়েছে। ফলে পর্যাপ্ত রপ্তানি করা যাচ্ছে না। তারা সরকারি প্রণোদনার দাবি জানিয়েছেন।

শুঁটকি রপ্তানিকারক শোয়েব ট্রেডের স্বত্বাধিকারী সুজন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের বেশির ভাগ চালান ভারত গেছে। মিঠাপানির পুঁটির শুঁটকির চাহিদা সীমান্তবর্তী এলাকায় বেশি। এছাড়া সামান্য পরিমাণে মালয়েশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যেও রপ্তানি করা হয়।’

বিডিসি ফুড লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফারুক জানান, ‘শুঁটকির রপ্তানি প্রতি বছর বাড়ছে। তবে কাঁচা মাছের দাম বেশি থাকায় শুঁটকির দামও বাড়ছে।’

বাংলাদেশ নন-প্যাকার ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহবুব রানা বলেন, ‘বিদেশে বাঙালি সম্প্রদায় যেখানে আছে, সেখানেই দেশীয় শুঁটকির চাহিদা প্রবল। এ জন্য রপ্তানিকারকদের প্রণোদনা দেওয়া জরুরি।’

এদিকে চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জ বাজার থেকেই দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ শুঁটকি রপ্তানি হয়। এখান থেকে আস্ত শুঁটকির পাশাপাশি মাছের বিভিন্ন অংশ- লেজ, পাখনা ও অন্ত্র- বিদেশে পাঠানো হয়।

আসাদগঞ্জ শুঁটকি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওসমান হায়দার বলেন, ‘গুণগত মানের কারণে বাংলাদেশের শুঁটকি বিদেশে জনপ্রিয়। তবে দেশে মাছের দাম বেশি হওয়ায় শুঁটকির দামও বেড়েছে। দাম স্থিতিশীল হলে রপ্তানিও আরও বাড়বে।’


জুলাইয়ে ১২ মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে এক টাকাও খরচ করা যায়নি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি অর্থবছরের শুরুতেই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধাক্কা লেগেছে। সদ্য সমাপ্ত জুলাই মাসে ১২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এক টাকাও খরচ করতে পারেনি তাদের উন্নয়ন প্রকল্পে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য ওঠে এসেছে।

তথ্যানুযায়ী, এ ১২ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আওতায় মোট ১৩০টি প্রকল্পে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু মাসজুড়ে কোনো ব্যয় হয়নি। যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ব্যয়ে পিছিয়ে রয়েছে সেগুলো হলো- পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, পার্বত্যবিষয়ক মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইএমইডি নিজেই, সরকারি কর্মকমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং সংসদবিষয়ক সচিবালয়।

সবচেয়ে বড় বরাদ্দ রয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জন্য। এ মন্ত্রণালয়ের ৫৯টি প্রকল্পে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। কিন্তু জুলাইয়ে ব্যয়ের অগ্রগতি ছিল শূন্য। একইভাবে স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের ১৪টি প্রকল্পে বরাদ্দ ৪ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ছয়টি প্রকল্পে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা- তবু কোথাও ব্যয়ের হিসাব নেই।

আইএমইডি জানিয়েছে, জুলাই মাসে সামগ্রিকভাবে এডিপি বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ০.৬৯ শতাংশে। এটি গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। চলতি অর্থবছরের শুরুতে মোট খরচ হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা কম।

চলতি অর্থবছরে সরকার ২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) হাতে নিয়েছে। এর আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে ১ হাজার ১৯৮টি প্রকল্প।

একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘জুলাইয়ে ১ শতাংশেরও কম এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়। গতবারের মতো এবারও কোনো অজুহাত গ্রহণযোগ্য হবে না।’


আগস্টের প্রথম ১৭ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২৫.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে আগস্টের প্রথম ১৭ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২৫.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজর ৪২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

গত বছরের একই সময়ে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ১ হাজার ১৩৪ মিলিয়ন ডলার।

চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত প্রবাসীরা ৩ হাজার ৯০২ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ৩ হাজার ৪৭ মিলিয়ন ডলার।


সপ্তাহের ব্যবধানে হিলিতে আলুর দাম বেড়েছে কেজিতে ৬ থেকে ৮ টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরবরাহ কমের অজুহাতে সপ্তাহের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে আলুর দাম কেজিতে ৬ থেকে ৮ টাকা করে বেড়েছে। হঠাৎ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম হঠাৎ বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটে করে আলুর দাম বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ তাদের। তবে বিক্রেতারা বলছেন সরবরাহ কমের কারণেই আলুর দাম বাড়ছে।

গতকাল রোববার সরেজমিন হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের প্রতিটি দোকানেই আলুর যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে। এরপরেও আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। একসপ্তাহ পূর্বে কার্ডিনাল জাতের আলু ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ১৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গুটি জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে যা একসপ্তাহ পূর্বে ১২ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।

হিলি বাজারে আলু কিনতে আসা মেহেদুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ কেনো কারণ ছাড়াই আলুর দাম বেড়েছে। বাজারে আলু সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটে করে আলুর দাম বাড়াচ্ছে বলে জানান তিনি।

একই বাজারের আলু বিক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, আলুর মৌসুম শেষের দিকে, অধিকাংশ কৃষকের ঘরে যেসব আলু ছিল তা বিক্রি প্রায় শেষ। বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে যাওয়ায় আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে। কৃষকের আলু শেষ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে সীমিত পরিসরে স্টোর থেকে আলু বাজারে ছাড়তে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা স্টোরেই আলুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমাদেরও বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে। সরবরাহ বাড়লে আলুর দাম কমে আসবে বলেও জানালেন এ ব্যবসায়ী।


২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ইতিহাসের সর্বোচ্চ মুনাফা – ৯৩৭ কোটি টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৯৩৭ কোটি টাকা অনিরীক্ষিত মুনাফা অর্জনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠার ৫৫ বছরের ইতিহাসে এক অনন্য রেকর্ড গড়েছে। এই সাফল্যের জন্য বিমানের সম্মানিত যাত্রী ও গ্রাহকদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানানো হচ্ছে, যাদের আস্থা ও সমর্থন এই রেকর্ড মুনাফা অর্জনে সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। এই সাফল্য এসেছে দক্ষ সম্পদ ব্যবস্থাপনা, কার্যকর কৌশল গ্রহণ এবং যাত্রীসেবার ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলস্বরূপ। উল্লেখযোগ্য যে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আগে বিমানের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জিত হয় ২০২১-২২ অর্থবছরে, যার পরিমাণ ছিল ৪৪০ কোটি টাকা।

১৯৭২ সালে মাত্র ১.৯০ কোটি টাকা আয় দিয়ে যাত্রা শুরু করা বিমান, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের সীমিত অবকাঠামো ও সম্পদের মধ্যে থেকে ধীরে ধীরে আজকের আধুনিক ও প্রতিযোগিতামুলক এয়ারলাইন্সে পরিণত হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমান ১১,৬৩১.৩৭ কোটি টাকা আয় করেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে, বিমান প্রথমবারের মতো ১০,০০০ কোটির বেশি আয়কারী কোম্পানিতে পরিণত হয়। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ ৫৫ বছরের যাত্রায় বিমান মোট ২৬টি বছরে লাভ করেছে। ২০০৭ সালে করপোরেশন থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের পর গত ১৮ বছরে বিমানের পুঞ্জীভূত মোট মুনাফা হয়েছে ৫৮৯ কোটি টাকা যা এই সংস্থার স্থিতিশীলতা ও দীর্ঘমেয়াদি সফলতার প্রমাণ।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমানের বহরে ২১টি উড়োজাহাজ ছিল, যার মধ্যে বর্তমানে ১৯টি নিজস্ব মালিকানাধীন উড়োজাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক ও জ্বালানি সাশ্রয়ী চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮ এবং দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার। বিমানের আর একটি বড় শক্তি হলো এর নিজস্ব বহর রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতা - লাইন মেইনটেন্যান্স থেকে শুরু করে বড় ধরনের চেক পর্যন্ত সবই দেশেই সম্পন্ন করতে পারে, যা ব্যয় সাশ্রয়, দ্রুত সেবা প্রদান এবং আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমানের কার্যক্রমে যাত্রী পরিবহন হয়েছে ৩.৪ মিলিয়ন, কার্গো পরিবহন ৪৩,৯১৮ টন, এবং কেবিন ফ্যাক্টর ৮২%-এ উন্নীত হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। এছাড়াও ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে বিমানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ টিকিট বিক্রির রেকর্ড অর্জিত হয়েছে, যা বাজারে বিমানের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ও যাত্রীদের আস্থার প্রতিফলন। দ্রুত লাগেজ সরবরাহ, উন্নত ইন-ফ্লাইট সেবা এবং বিমানবন্দর প্রক্রিয়ার আধুনিকায়ন যাত্রী সন্তুষ্টি বাড়িয়েছে। পাশাপাশি, বিমান আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মান কঠোরভাবে অনুসরণ করে ধারাবাহিকভাবে প্রশংসনীয় সেফটি রেকর্ড বজায় রেখেছে। জাতীয় সংবাদমাধ্যম ও এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিমানের বহর আধুনিকায়ন, লাভজনক আন্তর্জাতিক রুট সম্প্রসারণ এবং উন্নত গ্রাহকসেবা প্রদানের প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নতুন ব্যবস্থাপনা দক্ষ অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ, কার্যকর সম্পদ বণ্টন এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে এই বছরের রেকর্ড মুনাফায় বড় ভূমিকা রেখেছে।

বিমানের ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় রয়েছে নতুন জনপ্রিয় গন্তব্যে রুট সম্প্রসারণ, যাত্রীসেবা ও পরিচালনায় ডিজিটাল রূপান্তর, এবং কার্গো সেবা শক্তিশালীকরণ। বিমানের লক্ষ্য হলো জাতীয় গৌরবকে ধারণ করে বিশ্বমানের সেবা, নির্ভরযোগ্যতা এবং সম্মানিত যাত্রীগণের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার একটি শীর্ষস্থানীয় এয়ারলাইন্সে পরিণত হওয়া।


কিছু সূচকে অর্থনৈতিক অগ্রগতি হলেও নানা চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে: জিইডি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অন্তর্বর্তী সরকারের ১ বছরে কিছু সূচকে অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করলেও এখনো নানা চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। আগস্ট মাসের মাসিক অর্থনৈতিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়েছে বিভাগটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুব বেকারত্ব, শহর-গ্রামের বৈষম্য, বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের উচ্চহার এবং জলবায়ু ঝুঁকি দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে রয়েছে। তা ছাড়া, অনেক সংস্কারের সফলতা নির্ভর করছে আগামী নির্বাচিত সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার ওপর। তবে অন্তর্বর্তী সরকার অন্তত একটি নকশা বা রূপরেখা তৈরি করে দিয়েছে, যার ওপর ভবিষ্যতের সরকারগুলো কাজ এগিয়ে নিতে পারবে।

মোবাইল আর্থিক পরিষেবা লেনদেনের উন্নতি:

মোবাইল আর্থিক পরিষেবা লেনদেন উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির গতি প্রদর্শন করেছে, যা বছরের পর বছর উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির প্রতিনিধিত্ব করছে। সকল বিভাগে, বিশেষ করে বণিকদের অর্থপ্রদান, বেতন বিতরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেমের শক্তিশালী সম্প্রসারণ হয়েছে। ২০২৫ সালের মার্চ ছিল ধারাবাহিকভাবে সর্বোচ্চ লেনদেনের মাস। উৎসব ব্যয়ের কারণে জুন মাসের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণ ১৫৩৭৫৭৯.৮ থেকে ১৭৮১২৭৯.২ মিলিয়ন টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। এই টেকসই প্রবৃদ্ধির গতিপথ শক্তিশালী ভোক্তা চাহিদা নির্দেশ করে।

ই-কমার্স লেনদেন বেড়েছে:

বাংলাদেশ ব্যাংকের ই-কমার্স লেনদেনের তথ্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি প্রকাশ করেছে। ২৪ এ লেনদেন তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ছিল। বিপরীতে, আর্থিক বছর ২৫’এ উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে, জুলাই মাসে ১৪৪৮৭.৯ মিলিয়ন থেকে শুরু হয়ে মে মাসে ২৩৬৫৪.২ মিলিয়ন টাকায় পৌঁছেছে- প্রায় ৬৪% বৃদ্ধি।

সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি:

৭ মাস ধরে অব্যাহত মন্দার পর জুলাই মাসে মূল মুদ্রাস্ফীতি আগের মাসের ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ থেকে সামান্য বেড়ে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশে পৌঁছেছে। ২০২৪ সালের আগস্টে, যখন অন্তর্বর্তী সরকার দুই অঙ্কেরও বেশি মূল্যস্ফীতি নিয়ে যাত্রা শুরু করে, তখন প্রায় ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি নিয়ে অর্থবছর শেষ করার জন্য যথেষ্ট আশাবাদী হওয়া কঠিন ছিল। অর্থবছরের প্রথমার্ধে অনেক সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছিল, যা এখন সুষমভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির পর টানা দ্বিতীয় মাসে মুদ্রাস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের নিচে নিবন্ধিত হয়েছে। সরবরাহ পক্ষের সমস্যা এখনো রয়ে গেলেও রাজস্ব এবং আর্থিক উভয় পক্ষ থেকেই সমন্বিত প্রচেষ্টা চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতি বিবৃতি ঘোষণা করেছে, যার লক্ষ্য ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে ৭ শতাংশের নিচে মুদ্রাস্ফীতি কমানো। পরবর্তী পদক্ষেপ হবে দেশীয় বাজার পরিস্থিতি এবং ব্যবস্থাপনার ওপর ধারাবাহিকভাবে নজর রাখা এবং সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় কৃষি ইনপুট সরবরাহ করা।

গত অর্থবছর জুড়ে খাদ্যবহির্ভূত মুদ্রাস্ফীতি স্থিতিশীল ছিল। খাদ্যের বিস্তৃত বিভাগে, শাকসবজি এবং মূল ফসলের অবদান উল্লেখযোগ্যভাবে ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ এবং ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা মুদ্রাস্ফীতি কমাতে সহায়তা করেছে। বিচ্ছিন্ন স্তরে, ইলিশ, বেগুন, টমেটো, সয়াবিন তেল এবং অন্যান্য পণ্য উচ্চ থেকে মাঝারি পরিমাণে অবদান রেখেছে- যেখানে আলু এবং পেঁয়াজ খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে অবদান রেখেছে ১৫ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

চালের দাম এখনো স্থিতিশীল হয়নি:

খাদ্য মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতির জন্য চালের দাম এখনো একটি প্রধান উদ্বেগের বিষয়। খাদ্য মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে চালের অবদান মে মাসে ৪০ শতাংশ থেকে বেড়ে জুলাই মাসে ৫১ দশমিক ৫৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মাঝারি চাল এবং মোটা চাল জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে যথাক্রমে ২৪ শতাংশ এবং ১৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ অবদান রেখেছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে চালের উভয় শ্রেণিই দ্বি-অঙ্কের মুদ্রাস্ফীতি অর্জন করেছে- যেখানে মাঝারি চালের মূল্যস্ফীতি গত ১২ মাসে দুই অঙ্কের রয়ে গেছে। জুলাই মাসে, তিনটি শ্রেণির চালের মূল্যস্ফীতি প্রায় ১৫ শতাংশ। জুন থেকে বোরো ধানের ফলন চালের দামকে দমন করবে বলে আশা করা হয়েছিল।

রপ্তানি বেড়েছে:

গেল এক বছরে রপ্তানি গতিশীল হচ্ছে, যা বাংলাদেশের জন্য শক্তিশালী বাণিজ্য সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানি কর্মক্ষমতা স্পষ্টভাবে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখায়- যা দেশের বহির্বাণিজ্য খাতে নতুন গতিশীলতার ইঙ্গিত দেয়। ২০২৩-২৪ এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় এ বছর ধারাবাহিক উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে।

আমদানি প্রবণতা প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত:

ক্রমবর্ধমান আমদানি এবং স্থিতিশীল মূলধনী পণ্যের প্রবাহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের শক্তিশালীকরণকে প্রতিফলিত করে। ২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের আমদানি প্রবণতা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে একটি মাঝারি কিন্তু অর্থবহ প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দেয়, বিশেষ করে অর্থবছরের শেষার্ধ্বে। সামগ্রিক আমদানি শক্তিশালী রয়েছে, যা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মাসগুলোতে গত বছরের স্তরকে ছাড়িয়ে গেছে।

রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে:

গেল ১২ মাসে রেমিট্যান্স প্রভাবে স্থিতিশীলতা এসেছে এবং পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যা প্রবাসী সম্প্রদায়ের শক্তিশালী সম্পৃক্ততা এবং উন্নত স্থানান্তর চ্যানেলের ইঙ্গিত দেয়। মাসিক রেমিট্যান্স পরিসংখ্যান ধারাবাহিকভাবে পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় বেশি ছিল।


পেঁয়াজে আইপি নীতি পুনর্বিবেচনার দাবি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পেঁয়াজ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা নিয়ে শঙ্কায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারকরা। এ কারণে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে আইপি বা ইমপোর্ট পারমিট নীতি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন তারা।

গতকাল রোববার দুপুরে সোনামসজিদ আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি একরামুল হক সাংবাদিকদের বলেন, সম্প্রতি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সীমিত পরিমাণে আইপি দিচ্ছে। কখনও ৫০ টন, আবার কখনও ৩০ টন। অথচ ভারত থেকে প্রতিটি ট্রাকে সাধারণত ২৫ থেকে ৩০ টন পেঁয়াজ আসে। ফলে ৩০ টনের আইপি দিলে এলসি, শুল্ক, সিএন্ডএফসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে যাবে। এর প্রভাব সরাসরি বাজারে পড়বে এবং দাম অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে।

তিনি আরও বলেন, আগের মতো উন্মুক্তভাবে আইপি দেওয়া হলে আমদানিকারকরা সুবিধা পাবেন। তাদের সময় ও খরচ সাশ্রয় হবে এবং বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে।

আমদানিকারক গ্রুপের নেতাদের দাবি, সীমিত আইপি বরাদ্দ অব্যাহত থাকলে বাজারে সরবরাহ ব্যাহত হবে, ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। তাই ভারত থেকে দেশে পেঁয়াজ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বর্তমান আইপি নীতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সোনামসজিদ আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা, কোষাধ্যক্ষ নাজমুল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মাসুম বিল্লাহসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা।


একনেক সভায় ৯ হাজার ৩৬১ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন

আপডেটেড ১৭ আগস্ট, ২০২৫ ১৯:৪৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আজ ৯ হাজার ৩৬১ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১১ টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে।

অনুমোদিত প্রকল্পে সরকারি অর্থায়ন ৬ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা, প্রকল্প ঋণ ২ হাজার ৪২৮ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৫৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে নতুন প্রকল্প ৫টি, সংশোধিত প্রকল্প ২টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির ৩টি প্রকল্প রয়েছে।

একনেক চেয়ারপার্সন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে গতকাল রোববার শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠকে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সভায় অংশগ্রহণ করেন।

আজকের সভায় অনুমোদিত ১১ প্রকল্পসমূহ হলো: কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন’ প্রকল্প, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘বাপবিবোর বিদ্যমান শিল্পসমৃদ্ধ এলাকার ৩৩/১১ কেভি আউটডোর উপকেন্দ্রের আধুনিকায়ন ও ক্ষমতা বর্ধন’ প্রকল্প, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘বিএমআর অব কেরু অ্যান্ড কোং (বিডি) লি. (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ স্থাপন’ প্রকল্প, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘৫টি নির্ধারিত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিলেট, বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী এবং ফরিদপুর) বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকাস্থ আজিমপুর সরকারি কলোনির ভেতরে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (জোন-সি)’ প্রকল্প, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ২টি বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকা এনভায়রনমেন্টাল সাসটেনেবল ওয়াটার সাপ্লাই (তৃতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্প ও ‘বান্দরবান পৌরসভা এবং বান্দরবান জেলার ৩টি উপজেলা সদরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ‘চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন’ প্রকল্প, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ‘উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়) (প্রস্তাবিত প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প।

সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা কর্তৃক ইতোমধ্যে অনুমোদিত ৯টি প্রকল্প সর্ম্পকে একনেক সদস্যদের অবহিত করা হয়। সেগুলো হলো ১. হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন (২য় সংশোধিত), ২. রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে নেসকোর আওতাধীন এলাকায় স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্বাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, ৩. বরগুনা জেলার ২টি পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, ৪. তিন পার্বত্য জেলায় দুর্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, ৫. লাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী পুণ্যস্নান উৎসবের অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধিত), ৬. তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি (২য় সংশোধিত), ৭. সিলেট বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, ৮. কপোতাক্ষ নদ ও তৎসংলগ্ন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত), ৯. বিদ্যালয় বহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য দক্ষতা কেন্দ্রিক সাক্ষরতা (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।


নওগাঁয় মার্সেলো তরমুজ চাষে সফল চাষিরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

মাচার ওপরে সবুজ পাতা। নিচে ঝুলে আছে কালো রঙের তরমুজ। গাছ থেকে ছিঁড়ে না পড়ে সেজন্য প্রতিটি তরমুজে দেওয়া হয়েছে জালি। এমন দৃশ্য নওগাঁর পত্নীতলা, মহাদেবপুর, রাণীনগর ও সদর উপজেলার মাঠে মাঠে। এসব জমিতে আগে পটল ও করলা চাষ করলেও এখন বর্ষা মৌসুমে 'মার্সেলো’ জাতের তরমুজ চাষ করেছেন চাষিরা।

মাচায় ও মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড মার্সেলো জাতের তরমুজ চাষে সফলতা পেয়েছেন নওগাঁর চাষিরা। এই পদ্ধতিতে চাষ করা তরমুজের অধিক ফলনে তারা খুশি।

জানা গেছে, এসব তরমুজ অত্যন্ত সুস্বাদু ও সুমিষ্ট হওয়ায় বাজারে চাহিদা বেশি। সঙ্গে লাভও বেশি। লম্বাটে ডিম্বাকৃতির এই তরমুজের ভেতরের অংশ গাঢ় লাল রঙের। মার্সেলো জাতের প্রতিটি তরমুজের ওজন হয়ে থাকে ৩-৫ কেজি। আর প্রতি বিঘায় দেড় থেকে দুই হাজারটি তরমুজ পাওয়া যায়।

এছাড়া মার্সেলো জাতের এই তরমুজ উচ্চমাত্রায় ভাইরাস সহনশীল। প্রতিদিনই আগ্রহী চাষিরা বর্ষাকালীন তরমুজের ক্ষেত দেখতে ভিড় করছেন জমিতে। গত জুন মাসে তরমুজের চারা রোপণ করা হয়েছে। গাছ লাগানোর ৬৫-৭০ দিনের মধ্যে ফল উঠানো যায়।

রাণীনগরের মার্সেলো তরমুজ চাষি নিরাঞ্জন চন্দ্র প্রামানিক জানান, তিনি প্রতিবছর উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে নতুন নতুন ফসল চাষ করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় ২৫ শতক জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই বিষমুক্ত মার্সেলো তরমুজ চাষ করেছেন। বাজারে প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। কম পরিশ্রমে ভালো দাম পেয়ে খুশি তিনি।

তিনি বলেন, আমরা জানি তরমুজ চাষ হয়ে থাকে গ্রীষ্মকালে। কিন্তু আমাদের এ বরেন্দ্র জেলায় বর্ষাকালে তরমুজের চাষ করা দেখে প্রতিদিন তার তরমুজের ক্ষেত দেখতে ও পরামর্শ নিতে আসছেন নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তারা। তাদের পরামর্শসহ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।

তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা কামাল মাহমুদ শিপন বলেন, নিরাঞ্জন দাদার তরমুজের ক্ষেত দেখে খুবই ভালো লাগছে। তার সঙ্গে অনেক কথা হলো এই তরমুজের বিষয়ে। খেয়ে দেখলাম খুব সুস্বাদু ও মিষ্টি। আগামী বছর দুই বিঘা জমিতে এই তরমুজ চাষ করবো আশা করি।

উপজেলার কাশিমপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের দম্পতি আলেক বেগ ও কুলসুম বানু বলেন, আগে আমরা বাজার থেকে তরমুজ কিনে আনতাম। এখন দেখি গ্রীষ্মকালের তরমুজ বর্ষাকালে ধরেছে থোকায় থোকায়। অবাক করা বিষয়। খুব সুন্দর লাগছে দেখে। দুটি তরমুজ কিনলাম ৫০ টাকা কেজি দরে। দুটি তরমুজের ওজন ৮ কেজি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষমুক্ত তরমুজ চাষ করতে মাচায় ও মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল মার্সেলো জাতের তরমুজ চাষ করা হয়েছে জেলার ৪টি উপজেলায়। ভেতরে গাঢ় লাল রঙের এ তরমুজের স্বাদ খুব ভালো। কম খরচের পাশাপাশি বর্ষাকালে এই তরমুজ চাষ হওয়ায় কৃষকরা বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাই কৃষকরা বর্ষাকালীন তরমুজ চাষের দিকে ঝুঁকছেন। তাদের আরও উৎসাহ দিতে আমরা কাজ করছি। তাদের সার্বিক সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ। সূত্র: বাসস


সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ৪২ ধরনের আয় করমুক্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৫-২৬ অর্থবছরের আয়কর নির্দেশিকায় সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ৪২টি ভাতা বা আয়ের উৎস করমুক্ত ঘোষণা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাস করযোগ্য আয়ের আওতায় থাকবে।
এনবিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক হলেও, নির্দিষ্ট কিছু আয়ের ওপর তাদের কর দিতে হবে না। এসব করমুক্ত আয় মূলত কর্ম-সম্পর্কিত বিভিন্ন ভাতা ও ভ্রমণ সুবিধা।
করমুক্ত ঘোষিত ৪২টি আয়ের ধরন হলো- চিকিৎসা ভাতা, নববর্ষ ভাতা, বাড়িভাড়া ভাতা, শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা, শিক্ষাসহায়ক ভাতা, কার্যভার ভাতা, পাহাড়ি ভাতা, ভ্রমণ ভাতা, যাতায়াত ভাতা, টিফিন ভাতা, পোশাক ভাতা, আপ্যায়ন ভাতা, ধোলাই ভাতা, বিশেষ ভাতা, প্রেষণ ভাতা, প্রশিক্ষণ প্রেষণ ভাতা, জুডিশিয়াল ভাতা, চৌকি ভাতা, ডোমেস্টিক এইড অ্যালাউয়েন্স, ঝুঁকি ভাতা, অ্যাকটিং অ্যালাউয়েন্স, মোটরসাইকেল ভাতা, আর্মরার অ্যালাউয়েন্স, নিঃশর্ত যাতায়াত ভাতা, টেলিকম অ্যালাউয়েন্স, ক্লিনার ও ড্রাইভার অ্যালাউয়েন্স, মাউন্টেড পুলিশ, পিবিএক্স, সশস্ত্র শাখা, বিউগলার ও নার্সিং ভাতা, দৈনিক/খোরাকি ভাতা, ট্রাফিক অ্যালাউয়েন্স, রেশন মানি, সীমান্ত ভাতা, ব্যাটম্যান ভাতা, ইন্সট্রাকশনাল অ্যালাউয়েন্স, নিযুক্তি ও আউটফিট ভাতা এবং গার্ড পুলিশ ভাতা।
করযোগ্য আয়, মূল বেতন, উৎসব ভাতা, বোনাস এসব আয়ের ওপর আয়কর আইন অনুযায়ী নির্ধারিত হারে কর দিতে হবে।


আরো পাঁচটি পোশাক কারখানা পেল পরিবেশবান্ধব লিড সনদ

আপডেটেড ১৩ আগস্ট, ২০২৫ ১৭:৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত সবুজ শিল্পায়নের পথে আরেকটি গৌরবোজ্জ্বল মাইলফলক স্পর্শ করেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইউএসজিবিসি থেকে লিড সনদ পেয়েছে দেশের আরও পাঁচটি কারখানা।

এ নিয়ে দেশে মোট লিড সার্টিফায়েড কারখানার সংখ্যা দাঁড়াল ২৫৮টি, যার মধ্যে ১০৯টি প্লাটিনাম ও ১৩৩টি গোল্ড সনদপ্রাপ্ত কারখানা। এ অর্জনের ফলে বাংলাদেশ বিশ্বে পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার সংখ্যায় শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে।

নতুন যে পাঁচটি কারখানা লিড সনদ পেয়েছে, সেগুলো হলো- ১. ঢাকার আশুলিয়ায় অবস্থিত সাউথ অ্যান্ড সুয়েটার কোং লিমিটেড, যা ৮৫ পয়েন্ট পেয়ে প্লাটিনাম সনদ অর্জন করেছে, ২. সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে অবস্থিত পুরবাণী ফ্যাশন লিমিটেড, যা ৮৩ পয়েন্ট পেয়ে প্লাটিনাম সনদ অর্জন করেছে, ৩. চট্টগ্রামের কেডিএস ফ্যাশন লিমিটেড, যা ৮৪ পয়েন্ট পেয়ে প্লাটিনাম সনদ অর্জন করেছে, ৪. ময়মনসিংহের ভালুকায় অবস্থিত রাইদা কালেকশন, যা সবচেয়ে বেশি ৯০ পয়েন্ট পেয়ে প্লাটিনাম সনদ অর্জন করেছে, ৫. গাজীপুরে অবস্থিত টেক্সইউরোপ বিডি লিমিটেড, যা ৭০ পয়েন্ট পেয়ে গোল্ড সনদ অর্জন করেছে।

উল্লেখ্য, বিশ্বের সর্বোচ্চ রেটিংপ্রাপ্ত শীর্ষ ১০০টি লিড সার্টিফায়েড ভবনের মধ্যে ৬৮টিই এখন বাংলাদেশে, যা বৈশ্বিক অঙ্গনে দেশের অসাধারণ সবুজ পারফরম্যান্সের প্রতিফলন।

এই অর্জন প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, শিল্পের এই অর্জন এমন সময়ে এসেছে, যখন আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের চাপ এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যবসার ধারাবাহিকতাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। তবুও উদ্যোক্তারা টেকসই অবকাঠামো ও পরিবেশবান্ধব উৎপাদন পদ্ধতিতে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছেন, যা তাদের দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি ও স্থিতিশীলতার প্রমাণ।

তিনি বলেন, প্রতিটি লিড-সনদপ্রাপ্ত কারখানা কেবল একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নয়, বরং এটি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যতের প্রতি অঙ্গীকারের প্রতিচ্ছবি। এমন নেতৃত্ব ও অগ্রযাত্রা আমাদের শুধু আশাবাদীই করে না, বরং বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে টেকসই শিল্পের রোল মডেল হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করে।


banner close