ব্যাংক খাতে পরিচালনা পর্ষদ নানা সময় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। পর্ষদের চাপে পড়ে যাতে নির্দেশিত ঋণ বিতরণ করা না হয় সেদিকে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে সজাগ থাকতে হবে। ব্যাংকের পর্ষদ থেকে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে প্রভাবমুক্ত করা জরুরি বলে মনে করেন ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এমরানুল হক। ব্যাংক খাত নিয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে দৈনিক বাংলাকে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দৈনিক বাংলার প্রতিবেদক এ এস এম সাদ।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর অনেক সময় পরিচালনা পর্ষদের হস্তক্ষেপ থাকে। পর্ষদ থেকেই নির্ধারিত ব্যক্তিকে ঋণ দেয়ার জন্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে চাপ দেয়া হয়। ফলে ব্যাংকাররা কী তাদের কাজটি সঠিকভাবে করতে পারছেন?
আইন অনুযায়ী ব্যাংক পরিচালনায় যেকোনো সিদ্ধান্ত ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।পরিচালনা পর্ষদ শুধু ব্যাংকের নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবে। যদিও দেশের অনেক ব্যাংকে এভাবে আইন অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে না। পরিচালকরা পর্ষদ থেকে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশিত ঋণ দেয়ার চাপ তৈরি করলে সেই ব্যাংকটি মান ধরে রাখতে পারবে না। এতে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা প্রশ্নের মুখে পড়বে। ব্যাংকে বিভিন্ন রকমের সমস্যা তৈরি হয়। মন্দ ঋণের পরিমাণ বেড়ে যায়। এমনকি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের যেমন পদক্ষেপ নেয়া জরুরি, সেটি নেয়ার মতো সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। নিয়ম অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ একই সঙ্গে কাজ করবে। পর্ষদের চাপে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যাতে না পড়ে সেটি নিশ্চিত করা জরুরি। ব্যাংক শুধু উদ্যোক্তাদের নয়। এখানে আমানতকারীদের আমানত জমা রাখা হয়। ফলে তাদের স্বার্থ সবার আগে। তাই একটি ব্যাংক যাতে কোনোভাবে আর্থিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে নজর দেয়া জরুরি। কোনো ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ পরিচালনা পর্ষদের চাপে পড়লে অফিশিয়াল না হলেও আন-অফিশিয়ালি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অবহিত করতে হবে। কারণ একটি ব্যাংক রক্ষা করার জন্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে সাহসী ভূমিকা পালন করতে হবে।
গত দুই বছর ধরে দেশে ডলারসংকট। এটি নিরসনের জন্য নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারপরও কেন সংকট কাটছে না?
মানি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো আশা করছে রেমিট্যান্সে দর আরও বেশি দেয়া হবে। তবে অর্থনীতির ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য এবিবি-বাফেদা প্রতি মাসেই ডলারের দর নির্ধারণ করে দেয়। সেই অনুযায়ী ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্স সংগ্রহ করছে। তবে রেমিট্যান্স হাউসগুলো পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহ করছে না। এতে সমস্যায় পড়ছে ব্যাংকগুলো। রেমিট্যান্স দেশে আসছে। তবে বৈধ বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে আসার পরিবর্তে সেকেন্ডারি চ্যানেলের মাধ্যমে আসছে কি না সে বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের খতিয়ে দেখা দরকার। বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য ব্যাংকগুলোকে কাজ করা দরকার। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করছে। ডলারের দর অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলে পুরো অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়বে। এতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়, এক্সচেঞ্জে রেটে পরিবর্তন আসে এবং রিজার্ভের ওপর চাপ তৈরি হয়। ফলে এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোকে এবিবি-বাফেদার নির্ধারিত দরে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করতে হবে। তবে এটা ঠিক আশানুরূপ প্রবাসী আয় আসছে না। প্রতি মাসে ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা করা হয়। কিন্তু গত দুই মাসে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কম। ঈদের আগে ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স প্রত্যাশা করা হলেও এবার ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ফলে এ বিষয়টি চিন্তার মধ্যে ফেলছে ব্যাংকগুলোকে।
ইন্টার ব্যাংকে ডলার লেনদেন প্রতিদিন ২৫ মিলিয়নের মতো হলেও বর্তমানে তা দেড় মিলিয়ন হচ্ছে। এত কমে যাওয়ার কারণ কী মনে করছেন?
সবকিছু চাহিদা ও জোগানের ওপর নির্ভর করে। সব ব্যাংকে ডলারের চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে পণ্য আমদানির জন্য এলসি বা ঋণপত্র খুলতে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদা আগের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে। ফলে প্রত্যেক ব্যাংকে ডলারের চাহিদা রয়েছে। এতে দেখা যায় চাহিদা থেকে ডলারের জোগান অনেক কম। এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানিকারকদের রপ্তানির আয় থেকেই ইন্টার ব্যাংক ডলারের সোর্স। প্রত্যেক ব্যাংক নিজেদের খরচ মেটানোর পর যা উদ্বৃত্ত থাকে সেটা ইন্টার ব্যাংকে দেয়া হয়। আপনি বলছেন আগে দিনে ২৫ মিলিয়ন ডলার ট্রান্সেকশন হতো, এখন সেটা দেড় মিলিয়নে নেমে এসেছে। এটার প্রধান কারণ হতে পারে ডলারে সরবরাহ কম। আগের চেয়ে রপ্তানি কমেছে। বিজিএমইএর সভাপতির মতে, ২০ শতাংশ রপ্তানি কমেছে। রপ্তানি কমলে দেশে ডলার আসাও কমে যায়। অন্যদিকে আমদানি করার জন্য ডলারের তো প্রয়োজন আছেই। ফলে ডলারের এক ধরনের সংকটের কারণে ইন্টার ব্যাংক ডলারের ট্রান্সেকশন আগের মতো হচ্ছে না।
আসন্ন মুদ্রানীতিতে ঋণের সুদের হারে পরিবর্তনের একটি নির্দেশনা আসবে। এতে বিনিয়োগে পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন কি?
বিনিয়োগে পরিবর্তন আসবে বলে আমি মনে করি না। কারণ ব্যাংক ঋণের সুদের হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একেবারে উন্মুক্ত না করে সরকারি ট্রেজারি পণ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত রেখে সুদহার নির্ধারণ করা হবে। ব্যাংক ঋণের সুদহার যেন একবারে হঠাৎ বেড়ে না যায় সেদিকেও খেয়াল রাখা হয়েছে। ব্যাংক ঋণের সুদহার নির্ধারণ করা হবে সরকারি বিল বা বন্ডের সঙ্গে মিল রেখে। যেমন ছয় মাস মেয়াদি বন্ডের সুদহারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ১ বা ২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিতে পারবে ব্যাংক। ছয় মাসের ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার ৭ শতাংশ, এর সঙ্গে আরও দুই শতাংশ যোগ করলে ৯-১০ শতাংশ সুদ উঠবে। ফলে এমন একটি সরকারি ট্রেজারি পণ্য নির্ধারণ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যার সুদহার চাহিদা ও জোগানোর সঙ্গে ওঠানামা করে। তবে এমন পণ্য বেছে নেয়া হবে, যাতে ঋণের সুদহারের মাধ্যমে সুদহার নির্ধারণের সিদ্ধান্ত বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হবে। অর্থাৎ, বন্ডের সুদ বাড়লে ঋণের সুদ বাড়বে। ফলে ঋণের সুদের হারে খুব বেশি বাড়বে না। এ ছাড়া এক সময় ব্যাংকগুলো ঋণে সুদের হার ১৫-১৬ শতাংশ দিয়ে ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। ফলে ঋণের সুদের হার এমন পর্যায় যাওয়া উচিত নয় যা ব্যবসা বান্ধব হওয়াতে বাঁধা দেয়। সামগ্রিক অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হলে ব্যবসা কার্যক্রম বাড়াতে হবে। ঋণের সুবিধা দেশের শিল্পকারখানাগুলোতে দেয়া জরুরি। ফলে ব্যবসা কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য দরকার ব্যাংকের ঋণের সুদের হারকে সহনীয় পর্যায় রাখা। তাই আমার মতে, আসন্ন মুদ্রানীতিতে ব্যাংকের ঋণের সুদের হারে যে পরিবর্তন আসছে তা অবশ্যই ব্যবসাবান্ধব হতে হবে। তবে বাজারের পর্যাপ্ত পরিমাণে তারল্য রয়েছে কি না সেটার ওপর সুদের হারে পরিবর্তন আসবে। কারণ বাজারে তারল্যসংকট না থাকলে সুদের হার বাড়বে না, আর সংকট থাকলে সুদের হার বাড়বে। তখন ঋণের সুদের হার ১০ শতাংশের ওপর চলে যাবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ডলার মার্কেটকে স্থিতিশীল করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত বাজারে ডলার বিক্রি না করা। এ বিষয়কে কীভাবে দেখছেন?
ইচ্ছা করলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করা বন্ধ করে দিতে পারে না। সার ও জ্বালানির মতো অতি প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি ব্যাংকে ডলার সহায়তা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এলসি খোলার জন্য এসব ব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে বিদেশি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে এক ধরনের সম্পর্ক বজায় রাখতে হয়। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাধ্য হয়ে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে। কারণ আমদানি করতে পেমেন্ট দিতে ব্যর্থ হলে বাইরের ব্যাংকগুলোতে দেশের ব্যাংক সম্পর্কে এক ধরনের অনাস্থা তৈরি হবে।
তারল্য প্রবাহ বাড়ানোর জন্য কী করা জরুরি?
দেশে বর্তমানে উচ্চমূলস্ফীতি তৈরি হয়েছে। এটা সহনীয় পর্যায় নিয়ে আসতে হবে। কারণ মূল্যস্ফীতি বাড়লে সঞ্চয় ভাঙতে হয়। আমানত ভাঙার পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে যত দ্রুত সম্ভব এটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে। এ ছাড়া গত দুই বছর ধরে দেশে ডলারসংকট তৈরি হয়েছে। প্রতিদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করছে। এর বিপরীতে টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চলে গেছে। ফলে বাজারে তারল্য সংকট আছে। ডলার বিক্রি আগের চেয়ে কমিয়ে আনতে হবে। এ ছাড়া টাকার প্রবাহ বাড়াতে হবে। অপ্রয়োজনীয় খাতে কোনো ব্যাংক যাতে ব্যয় না করে সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি ।
ব্যাংক খাতের উন্নয়নে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া জরুরি?
খেলাপি ঋণ কমানোর কোনো বিকল্প নেই। কারণ একটা ব্যাংক তত শক্তিশালী যত খেলপি ঋণ কম। দেশের ব্যাংক খাতে সর্বশেষ খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ হাজার কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ যাতে না বাড়ে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। কোভিডের পর অনেক ব্যাংক রিকভার করতে কম নজরদারি করেছে। বর্তমানে এই ব্যাপারে আরও বেশি নজর দেয়া জরুরি বলে আমি মনে করি। এমনকি ঢাকা ব্যাংক খেলাপি ঋণ নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করছে। অনেক খেলাপি ঋণ আইনের মধ্যে চলে যায়। তখন টাকা আদায় করা সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়ে। ফলে আইনে পরিবর্তন আনার সময় হয়েছে। বিশেষ করে অর্থঋণ আদালতের মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। আবার অনেক জায়গায় অর্থঋণ আদালত নেই। ফলে সব কাজ একটা দীর্ঘসূত্রতার মধ্যে পড়ে যায়। আর এ জায়গায় সুযোগ নেয় খেলাপিরা। ব্যাংক থেকেই খেলাপিদের ওপর চাপ তৈরি করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত ব্যাংক থেকে চাপ তৈরি করা হয় না ততক্ষণ পর্যন্ত খেলাপিদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা সম্ভব হয় না। ফলে আইনকে আরও শক্তিশালী না করার কোনো বিকল্প নেই। সুশাসনের জায়গা সঠিকভাবে পালন করতে হবে। এটি পালন করার জন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও পরিচালনা পর্ষদকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অন্যদিকে মন্দ ঋণ কমাতে হবে। যখন ঋণ দেয়া হয় তখন সঠিক জায়গায় ঋণ দেওয় হচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ জন্য ব্যাংকাররা সব নিয়ম-কানুন মেনে ঋণ প্রদান করবে। নির্দেশিত ঋণ কিংবা নিজেদের কোনো স্বার্থ রয়েছে এমন কোনো ঋণ দেয়া যাবে না। কারণ এসব ঋণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে খেলাপিতে পরিণত হয়। আর যেসব ঋণ মন্দ হয়েছে সেগুলা সঠিকভাবে আদায় করতে হবে। তাহলে ব্যাংক খাত উন্নত হবে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানিতে কী ধরনের প্রভাব পড়েছে?
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব শুধু বাংলাদেশের নয় বরং সারা পৃথিবীর আমদানি রপ্তানিতে পড়েছে। বিশ্বজুড়ে সাপ্লাই চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর আগে ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময়মূল্য বেশ অনেক বছর ৮৪-৮৫ টাকায় স্থির ছিল, কিন্তু এই যুদ্ধের প্রভাবে এক্সচেঞ্জ রেটে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে। আমদানি করা পণ্যের দাম শুধু বেড়েই চলেছে। ফলে মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। একইসঙ্গে উন্নয়ন কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
সিএসআর খাতের অর্থ কী প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সিংহভাগ ব্যবহার করা হচ্ছে?
বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপূর্ণ দেশ। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা কিংবা কোনো জায়গায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) খাত থেকে ব্যয় করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে এসব খাতে ব্যয় করা হয়। এটি একটি ইতিবাচক দিক বলে আমি মনে করি। এ ছাড়া স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত রয়েছে- এ দুটি খাতও তুলনামূলক পিছিয়ে রয়েছে। একজন ব্যাংকার হিসেবে আমি মনে করি, এই দুই খাতে সিএসআর খাতের অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় করতে হবে।
গত দুই বছর ঢাকা ব্যাংকের আমদানি-রপ্তানির চিত্র কেমন ছিল?
ঢাকা ব্যাংকের আমদানি-রপ্তানি তুলনামূলকভাবে ২০২১ সালে ভালো ছিল। সে সময় ডলারের সংকট তীব্র ছিল না। তবে ২০২২ সালের জুন শেষে ডলারের এক ধরনের সংকট তৈরি হয়। ফলে আমদানি-রপ্তানি আগের চেয়ে কমে যায়। এতে ঢাকা ব্যাংকের আমদানি-রপ্তানিও কমেছে। ২০২১ সালে রেমিট্যান্সের প্রবাহ ভালো থাকলেও ২০২২ সালে তা কমেছে। এতে ফরেন এক্সচেঞ্জ মানি মার্কেট অনেকটা চাপের মধ্যে পড়ে।
সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি গভীর শোকের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, ব্যাংকের সম্মানিত স্পনসর পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান জনাব আজিম উদ্দিন আহমেদ ০১ আগস্ট ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুতে সাউথইস্ট ব্যাংক পরিবার গভীরভাবে শোকাহত।
জনাব আজিম উদ্দিন আহমেদ ১৯৪০ সালের ৩০ জুন এক সম্মানিত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের একজন সম্মানিত সদস্য এবং পর্ষদের রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান।
তিনি বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য জগতে একজন খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি মিউচুয়াল গ্রুপ এবং এডি হোল্ডিংস লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, তিনি আর্লা ফুডস বাংলাদেশ লিমিটেড-এর পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর একজন প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্য ছিলেন। তিনি এই বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ফাউন্ডেশনেরও একজন প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্য ছিলেন।
শিক্ষা ও সমাজসেবায়ও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি নিজ জিলা ফেনীতে প্রতিষ্ঠা করেছেন মসজিদ,মাদ্রাসা | এছাড়াও বিভিন্ন সমাজ হিতৈষী কাজে জড়িত ছিলেন তার উদার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে |
সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. পরিবার জনাব আজিম উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছে এবং তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, জুলাই মাসের প্রথম ২৭ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৩৩ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২ হাজার ৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
গত বছরের একই সময়ে, দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ১ হাজার ৫৭২ মিলিয়ন ডলার।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ পরিমাণ।
আগের অর্থবছরে (অর্থবছর ২০২৩-২৪) প্রাপ্ত ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় রেমিট্যান্স ২৬ দশমিক ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে অর্থবছরের শেষ দিন আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের সব ব্যাংকের শাখাগুলোতে ব্যাংকিং লেনদেন চলবে।
সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৩০ জুন সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯২২ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান। তিনি বলেন, গত অর্থবছরের চেয়ে এবার বেশি রাজস্ব আদায় হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড এর ২৯ তম বার্ষিক সাধারন সভা ২৪ জুন ২০২৫ইং তারিখে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ২০২৪ইং সালের নিরীক্ষিত বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়। পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জনাব মোস্তফা কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীর পরিচালক মিসেস বিউটি আক্তার, ব্যারিষ্টার হাসান রাজিব প্রধান, জনাব মনজুর মো: সাইফুল আজম এফসিএমএ, মিসেস তাহমিনা বিনতে মোস্তফা, জনাব তায়েফ বিন ইউসুফ, মিসেস তানজিমা বিনতে মোস্তফা, জনাব ওয়াশিকুর রহমান, জনাব তানভীর আহমেদ মোস্তফা , মিসেস সামিরা রহমান, মিসেস তাসনিম বিনতে মোস্তফা, জনাব মোঃ বেলায়েত হোসেন ভূইয়া, জনাব মোহাম্মদ সাইদ আহমেদ রাজা এবং মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সানা উল্লাহ, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা শেখ বিল্লাল হোসেন এফসিএ, কোম্পানীর অডিটর এ.কে.এম. আমিনুল হক এফসিএ, সিনিয়র পার্টনার মেসার্স এ.হক এন্ড কোং চাটার্ড একাউন্টেন্টস এবং আবদুর রহিম মিয়া, এফসিএ, পার্টনার মেসার্স ইসলাম জাহিদ এন্ড কোং, চাটার্ড একাউন্টেন্টস, মোঃ ফিরোজুল ইসলাম সিনিয়র এক্সিঃ ভাইস প্রেসিডেন্ট (অর্থ ও হিসাব) ও কোম্পানী সচিব মো: মাসুদ রানা এবং কোম্পানীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ারহোল্ডার সভায় সংযুক্ত ছিলেন।
মেঘনা ব্যাংক পিএলসি’র ১২তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ২৩ জুন ২০২৫, সোমবার রাজধানীর মহাথালীতে অবস্থিত ম্যাডোনা টাওয়ারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের সম্মানিত চেয়ারপার্সন মিসেস উজমা চৌধুরী।
বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান জনাব তানভীর আহমেদ, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মো. আলী আক্তার রেজভী, এফসিএ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ মামুনুল হক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক জনাব রজব আলী, জনাব এম. নজরুল ইসলাম এবং জনাব হাবিবুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব কাজী আহ্সান খলিল এবং ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি সচিব জনাব সজিব কুমার সাহা, এফসিএ এবং ব্যাংকের সম্মানিত শেয়ারহোল্ডারবৃন্দ।
সভায় ব্যাংক নিজেদের পরিষেবা বৃদ্ধি, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রচারণা, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
সম্প্রতি সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. বরিশাল জেলায় অবস্থিত বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকদের নিয়ে লিড ব্যাংক হিসেবে ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা এর নির্দেশনায় “স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স-২০২৫” আয়োজন করেছে।
উক্ত কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব ইমতিয়াজ আহমেদ মাসুম, নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), বাংলাদেশ ব্যাংক, বরিশাল এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব আবিদুর রহমান চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি., জনাব মোঃ আলী হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা, জনাব মোঃ হারুনুর রশিদ, জেলা শিক্ষা অফিসার, বরিশাল এবং সম্মানিত অতিথি জনাব মোঃ মাহাবুব-উল আলম, উপপরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা।
উক্ত কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে উক্ত কনফারেন্সে জাহানারা ইসরাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বরিশাল থেকে রাবিয়া কামাল (দশম শ্রেণী) এবং বরিশাল জেলা স্কুল, বরিশাল থেকে মোঃ হাসনাইন বিন কবির (দশম শ্রেণী) বক্তব্য রাখেন।
উক্ত কনফারেন্সে বরিশাল জেলার ৪৫ টি তফসিলী ব্যাংকের ৪৫ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে ১৮০ জন শিক্ষার্থী ও ৪৫ জন শিক্ষক এবং অতিথি সহ সর্বমোট ৩৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। কনফারেন্সে বক্তারা শৈশব থেকেই সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও দায়িত্বশীল অর্থ ব্যবস্থাপনার অভ্যাস গড়ে তোলা ও আধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তির সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচিত করানোর লক্ষ্যে স্কুল ব্যাংকিং এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এছাড়াও স্কুল ব্যাংকিং এর উপর নির্মিত ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী, র্যালী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
পূবালী ব্যাংক পিএলসি’র ৪২তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ১৮ জুন ২০২৫ তারিখে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পূবালী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান মনজুরুর রহমান। বার্ষিক সাধারণ সভায় পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকবৃন্দ- মনির উদ্দিন আহমদ, হাবিবুর রহমান, এম. কবিরুজ্জামান ইয়াকুব এফসিএমএ (ইউকে), সিজিএমএ; আজিজুর রহমান, মোঃ আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল, রানা লায়লা হাফিজ, মুস্তফা আহমদ, আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ নওশাদ আলী চৌধুরী এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়াররহোল্ডারগণ ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। এসময় ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আলী, সিএফও ও মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ লিটন মিয়া এফসিএ এবং কোম্পানী সচিব ও মহাব্যবস্থাপক মোঃ আনিসুর রহমান ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।
৪২তম বার্ষিক সাধারণ সভায় পূবালী ব্যাংক পিএলসি’র সম্মানিত শেয়ার হোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ সালের জন্য ১২.৫০% ক্যাশ ডিভিডেন্ড ও ১২.৫০% স্টক ডিভিডেন্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়।
বার্ষিক সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডারবৃন্দ ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং এই মাইলফলক অর্জনে অক্লান্ত অবদান রাখায় পূবালী ব্যাংকের নিবেদিতপ্রাণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানান। সবশেষে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মহোদয় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
৪ জুন’২৫ রোজ বুধবার ময়মনসিংহ শহরে জনতা ব্যাংক পিএলসি. টাউন হল মোড় শাখা (পূর্ব নাম মহিলা শাখা) নতুন ভবনে স্থানান্তর উপলক্ষে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান। ময়মনসিংহ এরিয়া অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক মোঃ জাহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খালেক ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান খান। এ সময় ব্যাংকের অন্যান্য নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং স্থানীয় গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীগণ উপস্থিত ছিলেন।
জনতা ব্যাংক পিএলসি’র ফরিদপুর বিভাগীয় শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন ৩০ মে’২৫ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান এবং উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আশরাফুল আলম। ফরিদপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের ইনচার্জ মোঃ সহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে ফরিদপুর বিভাগের এরিয়া প্রধানগণ ও অন্যান্য নির্বাহীবৃন্দ এবং শাখা ব্যবস্থাপকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
ইসলামী ধারার ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত হওয়ার যে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এই ধারার ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংকের একীভূত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান শুক্রবার (৩০ মে) দেওয়া এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে ৬টি দুর্বল ব্যাংক একীভূত হয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসছে। ৬টি ব্যাংকের মধ্যে ৫টি ইসলামী ধারার ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি জানান, ‘এনবিএল প্রচলিত ধারার ব্যাংক। ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো সংস্কারের সঙ্গে এনবিএল সম্পৃক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এর আগে, একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আহসান এইচ মনসুর জানান, নানা অনিয়ম ও ঋণ জালিয়াতির কারণে দুর্বল হওয়ায় ছয়টি ব্যাংককে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে একীভূত করতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো একীভূত করে সাময়িক সময়ের জন্য সরকারি মালিকানায় নেওয়া হবে।
পরবর্তীতে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত হবে এই মর্মে নানা সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে- যা সঠিক নয় বলে জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ ছাড়া, একীভূত হওয়ার পর সাময়িক সরকারি মালিকানার সিদ্ধান্ত থেকেও সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সবশেষ ২৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে বিএফআইইউর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে গভর্নর জানান, ‘একীভূতকরণের আগেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর ওপর সরকার মালিকানা প্রতিষ্ঠা করবে। এতে আমানতকারীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ তারা একটি অধিকতর শক্তিশালী ব্যাংকের অংশ হয়ে যাবেন। তবে মোট কতটি ব্যাংক একীভূত হবে এ ব্যাপারে এখনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’
গভর্নর জানান, সব দুর্বল ব্যাংক একবারে একীভূত হবে না। প্রথম দফায় কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হবে। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় বাকি দুর্বল ব্যাংক নিয়ে সিদ্ধান্ত নিবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জনতা ব্যাংক পিএলসি এর মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোঃ মজিবর রহমান গত শনিবার (২৪/০৫/২০২৫) জনতা ব্যাংক স্টাফ কলেজ, ঢাকা কর্তৃক আয়োজিত ০৬ কর্মদিবস ব্যাপী ক্রেডিট ম্যানেজমেন্ট কোর্স (ব্যাচ ০১/২৫) শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধন করেন।
উক্ত প্রশিক্ষণ কোর্সে জনতা ব্যাংকের অফিসার থেকে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার পর্যায়ের ২৫ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনতা ব্যাংক স্টাফ কলেজের ডিজিএম-স্টাফ কলেজ ইনচার্জসহ অন্যান্য নির্বাহী ও অনুষদ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (IBRPD) এর উদ্যোগে ২৫ মে, ২০২৫ তারিখ রবিবার প্রধান কার্যালয়ের মূল ভবনের কনফারেন্স রুমে Governance Framework on Islamic Banking Division in Bangladesh Bank এবং Islamic Banking Financial Systems in Bangladesh: The Need for Education শীর্ষক দু’টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন প্রথিতযশা ইসলামিক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ কবির হাসান।
আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন ডেপুটি গভর্নর ড. মোঃ কবির আহাম্মদ এবং স্বাগত বক্তব্য দেন নির্বাহী পরিচালক মোঃ মেজবাউল হক। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নিউ অরলিনস্ এর ইকোনমিকস্ এন্ড ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ও প্রখ্যাত ইসলামিক অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ কবির হাসান তার বক্তব্যে ইসলামিক ফাইন্যান্সের অগ্রগতির জন্য গবেষণার কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় ইসলামিক ফাইন্যান্সে ঈর্ষণীয় অগ্রগতি লাভ করেছে মূলত গবেষণার ওপর জোর দেয়ায়। বাংলাদেশেও এ বিষয়ে একাডেমিক জ্ঞান অর্জনে মনোযোগ দিতে হবে এবং আন্তর্জাতিক ইসলামিক ফাইন্যান্স সংস্থাগুলোর নীতিমালা ও আইনকানুন অনুসরণ করতে হবে। তিনি তার বক্তব্যে একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ফাইন্যান্স আইন প্রণয়ন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ড স্থাপন, ইসলামি ব্যাংকিং পরিচালনায় একজন ডেডিকেটেড ডেপুটি গভর্নর নিয়োগ এবং দক্ষ জনবল ক্সতরি করা জরুরি বলে উল্লেখ করেন।
এক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। সেমিনারে দেশের ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থার অগ্রগতি তুলে ধরে বিশিষ্ট ব্যাংকার এবং ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বর্তমান ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, সঠিকভাবে এগোলে পুরো ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় ইসলামী ব্যাংকিং ৫০ শতাংশে উন্নীত হতো। এজন্য এখাতে কর্মরত ২৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৪ কোটি গ্রাহককে ইসলামি ব্যাংক সম্পর্কিত একাডেমিক জ্ঞানে শিক্ষিত করা জরুরি। এ লক্ষ্যে একটি আলাদা ইনস্টিটিউটের যে দাবি উঠেছে তা অত্যন্ত যৌক্তিক বলেও মত দেন তিনি।নির্বাহী পরিচালক মোঃ মেজবাউল বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্সের প্রসারে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় আইনগত কাঠামো ও স্বতন্ত্র নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করছে বলে জানান। সেমিনারে বিশেষ অতিথির দিকনির্দেশনা ও মতামত ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রমে জড়িত কর্মকর্তাদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করবে জানিয়ে এমন অনুষ্ঠান নিয়মিত করার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন। সেমিনারে বক্তারা বাংলাদেশ ব্যাংক ও দেশের ইসলামিক ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি ডেডিকেটেড ইন্সটিটিউশন প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনার দু’টিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ, খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ব্যাংকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং, আরবি ও ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যানগণ এবং নীতি নির্ধারকগণ অংশগ্রহণ করেন।
জনতা ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের যৌথ অংশগ্রহণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে প্রবাসীদের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৫ মে বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর প্রধান অতিথি এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। জনতা ব্যাংক সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান, ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশিদ ওহাব, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান এবং ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর অনুষ্ঠানে বলেন, দেশের দুর্বল ব্যাংকগুলোয় সরকারি হস্তক্ষেপের কথা ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিদেশে অর্থ পাচারে জড়িতদের ধরতে প্রয়োজন বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা নেওয়াসহ অর্থ পাচারকারীদের সম্পদ জব্দের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ সাম্প্রতিক সময়ে বিপুল পরিমান রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের সাধুবাদ জানান।
জনতা ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন শহরে ১৩ টি বুথ স্থাপনের ঘোষণা দেন। এ সময় জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানান।