বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
৯ পৌষ ১৪৩২

সংকটের মধ্যে নির্বাচন পারের বাজেট

আপডেটেড
১ জুন, ২০২৩ ১০:৫২
আবদুর রহিম হারমাছি
প্রকাশিত
আবদুর রহিম হারমাছি
প্রকাশিত : ১ জুন, ২০২৩ ১০:৫১

সংকটের মধ্যে ও জাতীয় নির্বাচনের বছরে আরেকটি উচ্চাভিলাষী বাজেট নিয়ে আসছে সরকার। দুই বছরের করোনা মহামারির ধকল কাটতে না কাটতেই এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় তছনছ হয়ে হাওয়া বিশ্ব অর্থনীতির বেহালের মধ্যে আসছে এই বাজেট।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় জাতীয় সংসদে ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার এই বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবারের বাজেট হবে দেশের ৫২তম এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৪তম বাজেট।

আকারের দিক থেকে এটিই হবে দেশের বৃহত্তম বাজেট। চলতি অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় এটি হবে ১২ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এই বাজেট নিয়ে অর্থমন্ত্রী সংসদে পঞ্চম বাজেট উপস্থাপন করবেন। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার।

প্রথা অনুযায়ী ৩০ জুন অথবা তার আগের দিন ২৯ জুন প্রস্তাবিত বাজেট পাস হয়। ১ জুলাই থেকে শুরু হয় নতুন বাজেটের বাস্তবায়ন। ২৮ জুন থেকে কোরবানির ঈদের ছুটি শুরু হবে। সে কারণে এবার বাজেট পাস হবে ২৬ জুন।

এবারের বাজেট বক্তৃতার শিরোনাম ‘উন্নয়নের দীর্ঘ অগ্রযাত্রা পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’। এতে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সমাজ করার কথা তুলে ধরা হয়েছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের শিরোনাম ছিল ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’।

শেষ তিনটি বাজেট করোনা মহামারি আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সংকটের মধ্যে দিতে হয়েছে সরকারকে। এবারও সেই সংকটের মধ্যেই আরেকটি বাজেট দিতে হচ্ছে তাকে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ভোট আর আইএমএফের শর্তের চাপ।

বৈশ্বিক সংকট সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারকে। একদিকে স্বস্তি দিতে গিয়ে অন্যদিকে টান পড়ছে। প্রতি মুহূর্তে খেয়াল রাখতে হচ্ছে আইএমএফের শর্ত; যেন কোনো অবস্থাতেই ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের বাকি কিস্তিগুলো আটকে না যায়। অন্যদিকে বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে অর্থনীতির সবচেয়ে স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ সূচক মূল্যস্ফীতির পারদ ফের চড়ছে। এপ্রিলে এই সূচক ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। বাজারে জিনিসপত্রের দাম আরেক দফা বেড়েছে। মে মাসের তথ্য পাওয়া গেলে সেটি দুই অঙ্কের ঘরে (ডাবল ডিজিট) গিয়ে পৌঁছতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। এরই মধ্যে এগিয়ে আসছে জাতীয় নির্বাচন। টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে ইতিমধ্যেই জোর রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

অর্থনীতিতে টানাপোড়েন, আইএমএফের নানা শর্ত আর জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রায় পৌনে ৮ লাখ কোটি টাকার বড় বাজেট দিতে যাচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার।

সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১ জুলাই থেকে শুরু হবে নতুন বাজেট। সে হিসাবে আগামী বাজেটের ছয় মাস (জুলাই-ডিসেম্বর) বাস্তবায়ন করবে বর্তমান সরকার। আর নতুন সরকার বাস্তবায়ন করবে বাকি ছয় মাস, জানুয়ারি থেকে জুন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও বেশ চাপের মধ্যে পড়েছে। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ নেমে এসেছে ৩০ বিলিয়ন ডলারে। বাজারে ডলারের সংকট এখনো কাটেনি।

এমন সংকটকালেই টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট দিতে যাচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। মূলত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নতুন অর্থবছরের বাজেট পরিকল্পনা সাজিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, মূল্যস্ফীতি ও বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা, অপ্রয়োজনীয় ভর্তুকি কমিয়ে আনা, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা- আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এসব শর্ত পূরণের বিষয় বিবেচনায় রাখা হবে নতুন বাজেটে। আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদনের সঙ্গে এসব শর্ত সম্পর্কিত। আইএমএফ প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার দিয়েছে। বাকি অর্থ সমান ছয় কিস্তিতে দেবে। বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে কম সুদের এই ঋণের বাকি কিস্তিগুলো নির্বিঘ্নে পাওয়ার জন্য নতুন বাজেটে আইএমএফের শর্তের বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলে জানান কর্মকর্তারা।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসান কবে হবে তা কেউ বলতে পারছেন না। ফলে আগামী বছরও উচ্চমূল্যস্ফীতির প্রবণতা থাকবে। সে জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫০ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরা হচ্ছে।

সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বাজেট প্রণয়নে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যেহেতু এটা এই সরকারের শেষ বাজেট, তাই আসন্ন বাজেটটি এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে নির্বাচনের প্রতিফলন থাকে। নতুন বাজেটে দেয়া পদক্ষেপগুলো যাতে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করে; খুশি হয়। কর্মকর্তারা সেই নির্দেশনা মাথায় রেখেই বাজেট প্রণয়ন করেছেন বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের মতো আগামী বছরও মূল্যস্ফীতি উদ্বেগের বড় কারণ হয়ে দাঁড়াবে। ফলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করাই হবে নতুন অর্থবছরের প্রধান চ্যালেঞ্জ।’

যোগাযোগ করা হলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এবার যুদ্ধাবস্থার মধ্য দিয়ে নতুন বাজেট করতে হচ্ছে। যুদ্ধ সব দেশকেই কমবেশি প্রভাবিত করেছে। সব দেশেই মূল্যস্ফীতি এক নম্বর সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। কাজেই আমি মনে করি আগামী অর্থবছরের বাজেটের মূল লক্ষ্যই হওয়া উচিত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। জিডিপির প্রবৃদ্ধি যাতে ব্যাহত না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। কারণ প্রবৃদ্ধি কমলে কর্মসংস্থানে বিরূপ প্রভাব পড়বে।’

যুক্তিসংগত ভারসাম্য রেখে নতুন বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। আবার ব্যয়ও কমানো যাবে না। এসব বিবেচেনা করে কৌশলপূর্ণ একটি বাজেট দিচ্ছি আমরা।’

রাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বহুমুখী চাপের মধ্যে তৈরি হচ্ছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট। লাগামহীন মূল্যস্ফীতি, ডলারসংকট, রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের ঘাটতি, আইএমএফের শর্তের খড়্গ, ভর্তুকির বোঝা, নির্বাচনী বছরে বাড়তি খরচের চাহিদা, অর্থায়ন সংকট- এসব মিলিয়ে ভারসাম্য বজায় রেখে নতুন বাজেট তৈরিতে হিমশিম খেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

আয়ের পথ সীমিত, তার পরও নির্বাচনে জনতুষ্টির কথা মাথায় রেখে বড় বাজেট আসছে। যেখানে আইএমএফের একগাদা শর্ত মানতে গিয়ে অবাধে করছাড় তুলে দিয়ে বরং করের বোঝা বাড়ানোর মতো অপ্রিয় পথে হাঁটতে হতে পারে সরকারকে। যে কারণে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রাও বাড়ানো হচ্ছে।

নতুন বাজেটে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সারেও ভর্তুকির চাপ থাকবে। চাপ থাকবে এক বছরের ব্যবধানে টাকার বিপরীতে ডলারের দামে যে ২৮ শতাংশ উল্লম্ফন হয়েছে, তা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। যদিও আইএমএফের শর্তের কারণে ভর্তুকি থেকে সরে আসার কথা বলা হয়েছে। তবে ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষির প্রসার আর সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চিন্তা করে সরকার শিগগিরই হয়তো ভর্তুকি তুলে দেয়ার ক্ষেত্রে বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না বলেই মনে হচ্ছে।

আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণচুক্তি করার কারণে সরকারকে বেশ কিছু কঠিন শর্ত পালন করতে হবে। আর এসব শর্তের প্রতিফলন নতুন বাজেটে থাকবে। যেমন- রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে দুই অঙ্কের ঘরে (ডাবল ডিজিট) নিতে হবে। এটি করতে হলে গণহারে যে করছাড় দেয়া আছে, তা তুলে দিতে হবে। বিশেষ করে বিভিন্ন শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে দেয়া কর অবকাশ সুবিধা তুলে দিতে কঠোর হতে হবে। এটি করা হলে দেশীয় শিল্পগুলো কমবেশি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে।

তা ছাড়া বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ব্যবসা-বাণিজ্য যখন নানা ধরনের চাপের মধ্যে, তখন বাড়তি করের বোঝা চাপবে তাদের ওপর। এর সঙ্গে সব স্তরের করের বোঝা বাড়বে। কারণ আইএমএফের শর্ত মানতে গিয়ে আসছে অর্থবছরে অন্তত ৬৫ হাজার কোটি টাকা বেশি আদায় করতে হবে। এটি করতে কমবেশি ব্যক্তিশ্রেণির কর যেমন বাড়বে, তেমনি সব স্তরেই করের চাপ পড়বে। এটি নির্বাচনের আগে অজনপ্রিয় হলেও শেষ পর্যন্ত না করে পারবে না সরকার। এমনিতেই রাজস্ব আয়ে নাজুক অবস্থা চলছে। চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ঘাটতি ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।

একদিকে রাজস্ব আদায় বাড়ছে না, অন্যদিকে বড় অঙ্কের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা দিতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে অর্থনীতির গবেষক গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি যে, বর্তমান এই কঠিন সময়ে জিডিপির প্রবৃদ্ধির দিকে না তাকিয়ে মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখার দিকেই সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের মানুষ সত্যিই কষ্টে আছে। তাদের আগে স্বস্তি দিতে হবে। তারপর জিডিপি প্রবৃদ্ধির দিকে তাকাতে হবে। সেই সঙ্গে রিজার্ভ যাতে আর না কমে সে জন্য রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও কম সুদের বিদেশি ঋণ বাড়াতে বাজেটে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আর সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর দিকে।’

এবারও . শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা

বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) ৭ দশমিক ৫ শতাংশ অর্জিত হবে বলে লক্ষ্য ধরেছিলেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। বিবিএস ছয় মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর) হিসাব কষে বলেছে- এবার ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও এডিবি বলছে ৫ শতাংশের কিছু বেশি হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনো চলছে; কবে শেষ হবে- নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। যুদ্ধের প্রভাব প্রতিনিয়ত পড়ছে অর্থনীতিতে। ডলারের দর বেড়েই চলেছে; ৮৬ টাকার ডলার হাতে গুনে ১০৯ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এক বছরে বেড়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ। ডলারের এই উল্লম্ফনের নেতিবাচক প্রভাব অর্থনীতির সব খাতেই পড়ছে।

এদিকে অস্থির বৈশ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে যোগ হয়েছে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতা। এসব সংকটের মধ্যেও আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটেও জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ অর্জন করতে চান অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। আর সেই লক্ষ্য অনুযায়ী এবার জিডিপির মোট আকার নির্ধারণ করা হচ্ছে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা।

নতুন বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছেন অর্থমন্ত্রী। সেটি কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে।

নতুন বাজেটে অর্থমন্ত্রী সরকারি আয়ের মোট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের প্রস্তাব করবেন ৫ লাখ কোটি টাকা। এ লক্ষ্যমাত্রা জিডিপির ১০ শতাংশের সমান। তবে চলতি অর্থবছরের মূল লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে বাজেটে মোট ঘাটতি নির্ধারণ করেছেন ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ দশমিক ২ শতাংশের সমান।

এই ঘাটতি পূরণে অর্থমন্ত্রী অর্থ সংগ্রহের দুটি উৎস চিহ্নিত করেছেন। একই সঙ্গে কোন উৎস থেকে কত টাকা তিনি ঋণ করবেন, সেটিও স্পষ্ট করেছেন। বাজেটের সারসংক্ষেপ থেকে জানা গেছে, ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে অর্থমন্ত্রী মোট ১ লাখ ৫১ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছেন। এটি মোট ঘাটতি অর্থায়নের ৫৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এ পরিমাণ অভ্যন্তরীণ ঋণের মধ্যে ব্যাংকিংব্যবস্থা থেকে তিনি ঋণ নিতে চান ১ লাখ ২৮ হাজার কোটি, আর সঞ্চয়পত্র থেকে নেবেন ১৮ হাজার কোটি টাকা। বাকি ১ লাখ ১০ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা নেবেন বিদেশি ঋণ।

এদিকে প্রায় পৌনে ৮ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের বাজেট থেকে অর্থমন্ত্রী খরচের দুটি খাত নির্ধারণ করেছেন। এর একটি হলো সরকারের আবর্তক ব্যয় বা পরিচালন ব্যয়। এর আকার ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৮৪ হাজার ২০৩ কোটি টাকা, যা মোট সরকারি ব্যয়ের ৬৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং জিডিপির ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ। অন্যটি হলো উন্নয়ন ব্যয়, যার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় মোট ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী আগামী অর্থবছর উন্নয়ন ব্যয়ের মোট আকারকেও দুভাবে নির্ধারণ করেছেন। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। বাকি ব্যয়ের লক্ষ্য দেয়া হয়েছে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর অভ্যন্তরীণ এডিপির জন্য।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি খাতে সরকার ব্যয় করবে মোট ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এই ভর্তুকির বড় অংশ ব্যয় করা হবে বিদ্যুতে, যার পরিমাণ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া কৃষিতে যাবে ১৭ হাজার কোটি, রপ্তানি ভর্তুকিতে যাবে ৭ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা এবং প্রণোদনায় ব্যয় হবে ৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য খাতের ভর্তুকিতে ব্যয় হবে আরও ২৫ হাজার কোটি টাকা।

অন্যান্য বছরের ধারাবাহিকতায় আগামী অর্থবছরও সরকারের ব্যয়ের বড় অংশ যাবে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির খাতগুলোর ব্যয়ে। আগামী অর্থবছর সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হচ্ছে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। এটি মোট বাজেট ব্যয়ের ১৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

বিষয়:

খেজুর আমদানিতে বড় শুল্ক ছাড় দিল সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষের জন্য খেজুরের দাম নাগালের মধ্যে রাখতে বড় ধরনের শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে যে, খেজুর আমদানিতে বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ৪০ শতাংশ কমানো হয়েছে। মূলত রমজানে এই অতিপ্রয়োজনীয় ফলের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা এবং বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখাই এই পদক্ষেপের প্রধান লক্ষ্য।

এনবিআর-এর নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, খেজুর আমদানিতে কাস্টমস ডিউটি বা আমদানি শুল্ক আগের ২৫ শতাংশের পরিবর্তে এখন থেকে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই বিশেষ সুবিধা আগামী ৩১ মার্চ ২০২৬ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। জনগণের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে ২৩ ডিসেম্বর এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়।

শুল্ক হ্রাসের পাশাপাশি আমদানিকারকদের জন্য করের ক্ষেত্রেও বিশেষ ছাড় বহাল রাখা হয়েছে। বিগত বাজেটে খেজুরসহ সব ধরনের ফল আমদানির ওপর অগ্রিম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছিল, যা চলতি বছরেও কার্যকর থাকছে। এর ফলে খেজুর আমদানিতে অগ্রিম আয়করের ওপর ৫০ শতাংশ ছাড় পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মনে করছে, আমদানি শুল্ক এবং অগ্রিম আয়করে এই উল্লেখযোগ্য ছাড়ের ইতিবাচক প্রভাব খুব দ্রুতই বাজারে পরিলক্ষিত হবে। শুল্ক কমানোর ফলে আসন্ন রমজানে বাজারে খেজুরের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ ভোক্তারা অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে খেজুর কিনতে পারবেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই সরকার এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহায়ক পরিস্থিতি নিশ্চিতের আহ্বান ডিসিসিআই―র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বেসরকারি খাতের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক নীতিমালার সংষ্কার, রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসন ও অটোমেশন প্রবর্তন, লজিস্টিক খাতের উন্নয়ন, উদ্যোক্তাদের স্বল্পসুদে ঋণ প্রাপ্তির পাশাপাশি প্রক্রিয়া সহজীকরণ, শিল্প খাতে নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ, সর্বোপরি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীলের মাধ্যমে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা ও ঐকমত্যের আহ্ববান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সংগঠনের ৬৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভায় ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, প্রাক্তন সভাপতিবৃন্দ, প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতিবৃন্দ, প্রাক্তন সহ-সভাপতিবৃন্দ, প্রাক্তন পরিচালকবৃন্দ, সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা যোগদান করেন।

৬৪তম সাধারণ সভার ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংকট, শুল্ক হার বৃদ্ধি, সহায়ক রাজস্ব ব্যবস্থাপনার অনুপস্থিতি, সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি, স্থবির বিনিয়োগ, দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতি, আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবেশের অস্থিতিশীলতা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং চলমান জ্বালানি সংকটের কারণে অর্থনীতি বেশকিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।

তিনি বলেন, বেসরকারিখাতের স্থিতিশীলতা আনয়ন এবং নীতি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে চলতি বছর জুড়ে ৩১টি খাতভিত্তিক সেমিনার, নীতি সংলাপ, কর্মশালা ও ফোকাস গ্রুপ আলোচনার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে ৩৫টি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করেছে ঢাকা চেম্বার।

তিনি আরও বলেন, নীতিনির্ধারক, গবেষক ও শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তার লক্ষ্যে প্রথমবারের মত ‘অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক (ইপিআই)’-এর প্রবর্তন করেছে ডিসিসিআই, যা উৎপাদন ও সেবা খাতে ত্রৈমাসিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিবর্তন পরিমাপ করবে।

ডিসিসিআই’র এ সাধারণ সভার মুক্ত আলোচনা পর্বে ঢাকা চেম্বার প্রাক্তন সভাপতি আফতাব উল ইসলাম, এফসিএ, প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, প্রাক্তন পরিচালক ও আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন, প্রাক্তন পরিচালক এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান ও আলহাজ্ব মোহাম্মদ সারফুদ্দিন এবং মেসার্স ব্রান্ড বাংলা’র সত্ত্বাধিকারী রাজু আহমেদ মামুন প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন। সাধারণ সভাটি সঞ্চালনা করেন ডিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ড. এ কে এম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী।


ফায়ার সার্ভিস ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সমঝোতা স্মারক সই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষরিত হয়।

এই সমঝোতার আওতায় দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেপিআই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক ও এর আশপাশ এলাকার অগ্নিদুর্ঘটনায় দ্রুত সাড়া প্রদান করার লক্ষ্যে এখন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অভ্যন্তরে একটি স্যাটেলাইট ফায়ার স্টেশনের ন্যায় সার্বক্ষণিক জনবল ও গাড়ি-পাম্প মোতায়েন থাকবে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বিভিন্ন পদের ১৩ জন সদস্য গাড়ি-পাম্প ও সাজ-সরঞ্জামসহ এখানে অবস্থান করবেন।

ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে যুগ্ম পরিচালক মো. রিয়াদ ফারজান্দ (এইচআরডি-১) সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. নিয়ামুল কবির, সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. ফারুক হাওলাদার, মো. জবদুল ইসলামসহ ব্যাংকের বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তা এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, উপপরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মো. মামুনুর রশিদ, সহকারী পরিচালক কাজী নজমুজ্জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।


গাজীপুরে গার্মেন্টসের পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা ঘিরে গড়ে উঠেছে শতকোটির বাজার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজীপুরে তৈরি পোশাক কারখানার পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা ঘিরে গড়ে উঠেছে শতকোটি টাকার বাজার। দেশে ও বিদেশে নানা শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে এসব পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গাজীপুর মহানগর ও জেলাতে এক হাজারের বেশি গার্মেন্টস কারখানা থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টন পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা উৎপাদিত হচ্ছে। এসব ঝুট ও তুলা ক্রয়-বিক্রয় ও প্রক্রিয়া কাজে জড়িত রয়েছে শত শত ব্যবসায়ী ও হাজার হাজার শ্রমিক।

গাজীপুরের টঙ্গীর মিলবাজার, মাঝুখান, কালিয়াকৈরের পূর্ব চান্দরা, আমবাগ, ও শ্রীপুরের মাওনা এলাকায় পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা প্রক্রিয়া এবং ক্রয়-বিক্রয়ের সবচেয়ে বড় বাজার গড়ে উঠেছে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঝুট ও তুলার বাজার রয়েছে। স্থানীয়ভাবে এসব বাজার ঝুট পল্লী নামে পরিচিত।

টঙ্গীর মিলগেট ঝুট ও তুলার বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আবু সাকের বাসসকে জানান, প্রতিদিন আনুমানিক ২ থেকে ৩ হাজার টন ঝুট ও তুলা টঙ্গীর মিল বাজারেই ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। পরিত্যাক্ত এসব ঝুট ও তুলা স্থানীয় স্পিনিং মিল ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়। এছাড়া ভারত, চীন, তুরস্ক, হংকং ও যুক্তরাষ্ট্রেও পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা রপ্তানি হচ্ছে।

ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভার এলাকায় পরিত্যক্ত ঝুট থেকে রিসাইক্লিং (পুণব্যবহারযোগ্য) তুলা ও সুতা দিয়ে ম্যাট্রেস, গাড়ির সিট, তোশক, বালিশ, কুশন, পুতুল, মপ, ডাস্টার, কার্পেট ব্যাকিং, শপিং ব্যাগ ও ফ্লোর ম্যাটসহ নানাবিধ নিত্যব্যবহার্য পণ্য তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে।

নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ এলাকায় রিসাইক্লিং তুলা ও সুতা দিয়ে তৈরি হচ্ছে তুলনামূলক কম মূল্যের বিছানার চাদর, গামছা ও লুঙ্গি। নোয়াখালী ও চট্টগ্রামে গড়ে উঠেছে শিপইয়ার্ড ও শিল্প কারখানায় ওয়াইপিং র‌্যাগ তৈরি ও রপ্তানিযোগ্য ঝুট প্রসেসিং কারখানা।

এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো (ইপিবি) এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে পরিত্যাক্ত গার্মেন্টস ঝুট ও তুলার রপ্তানি গত কয়েক বছর ধরে বাড়ছে এবং এর প্রধান গন্তব্য দেশ হচ্ছে ভারত, চীন, তুরস্ক, হংকং, যুক্তরাষ্ট্রে ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমুহে।

ইপিবি প্রদত্ত তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে পরিত্যাক্ত গার্মেন্টস ঝুট ও তুলা থেকে রপ্তানি আয় আসে প্রায় ৪১১.১২ মিলিয়ন টাকা।

ঝুট ব্যবসায়ী সমিতির নেতা আবু সাকের বলেন, গাজীপুর হচ্ছে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের বৃহত্তম কেন্দ্রগুলোর একটি। তাই এখানে তৈরি পোশাকের উৎপাদন ও সংশ্লিষ্ট ঝুট ও তুলার বর্জ্য খুব বেশি পরিমাণে উৎপন্ন হয়।

তিনি বলেন, যদি স্থানীয়ভাবে আধুনিক রিসাইক্লিং ব্যবস্থা বাড়ানো হয় তাহলে এই খাতে ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন বা তারও বেশি রপ্তানি আয় করা সম্ভব।

তৈরি পোশাক শিল্প ও এই শিল্পের পরিত্যাক্ত ঝুট ও তুলা ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক সূত্রের মতে, অপরিকল্পিত গুদামজাত প্রক্রিয়ার ফলে মাঝেমধ্যেই ঝুট ও তুলার গুদামে অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনাগুলো এই খাতের জন্য বড় ধরণের হুমকি। এছাড়া প্রভাবশালী একটি গোষ্ঠীর এই খাতে অনৈতিক হস্তক্ষেপের ফলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যদি উল্লেখিত সমস্যাগুলো দূরীকরণে এই খাতে সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা যায় তাহলে দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বিকাশে পরিত্যক্ত ঝুট ও তুলার বাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।

সূত্র : বাসস


বিপিআইএ’র সভাপতি মোশারফ, মহাসচিব সাফির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিআইএ) ২০২৫-২৭ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে পোলট্রি পেশাজীবী পরিষদ নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। নির্বাচনে ৫৩৫ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আস্থা ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসাইন চৌধুরী। আর মহাসচিব পদে ৫০৭ ভোট পেয়ে কোয়ালিটি ব্রিডার্স লিমিটেডের পরিচালক মো. সাফির রহমান নির্বাচিত হয়েছেন।

সহ-সভাপতি হিসেবে ডায়মন্ড অ্যাড লিমিটেডের সিইও মো. আসাদুজ্জামান এবং খান এগ্রো ফিড প্রডাক্টের প্রোপ্রাইটর মো. সৈয়দুল হক খান নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া এ নির্বাচনে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে এনার্জি টেকনোলোজির প্রোপাইটর মোস্তফা জাহান, যুগ্ম মহাসচিব পদে মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ও অঞ্জন মজুমদার, প্রচার সম্পাদক পদে শফিকুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে গাজী নূর আহাম্মাদ নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাহী সদস্য হিসেবে এ নির্বাচানে জয়ী হয়েছেন শাহ ফাহাদ হাবিব, মিজানুর রহমান মিন্টু, রাশিদ আহামাদ, মোহাম্মদ জহির উদ্দিন, খায়রুল বাসার সাগর, ফয়েজ রাজা চৌধুরী, মো. সালাউদ্দিন মুন্সী, মো. সোলেমান কবীর, মো, ইমরান হোসাইন ও নাবিল আহামেদ।

গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) মতিঝিল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কাম-কমিউনিটি সেন্টারে এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে মোট ৫৭৪ জন ভোট দেন।

নবনির্বাচিত সভাপতি মোশারফ হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘খামারিদের যে আকাঙ্ক্ষা রয়েছে সেই আকাঙ্ক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা কাজ করে যেতে চাই। পোলট্রি খাতকে আরও কীভাবে সমৃদ্ধ করতে পারি সে লক্ষ্যেও আমরা কাজ করে যাব। পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে কীভাবে পোলট্রিশিল্পকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া যায় সেটিও আমাদের অন্যতম লক্ষ্য থাকবে।

তিনি জানান, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন দেশের পোলট্রি খাতের উন্নয়ন, সুরক্ষা ও টেকসই বিকাশে নিবেদিত একটি শীর্ষস্থানীয় সংগঠন। যেখানে খামারি, উদ্যোক্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং আধুনিক প্রযুক্তি, সুষ্ঠু নীতিমালা ও মানসম্মত উৎপাদনের মাধ্যমে শিল্পের অগ্রগতিতে কাজ করে যাচ্ছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব নির্ধারিত হয়েছে, যা আগামী দুই বছর পোলট্রি খাতের দিকনির্দেশনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।


একনেকে ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার ( ২৩ ডিসেম্বর) পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মঙ্গলবার ( ২৩ ডিসেম্বর) ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২২টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ৩০ হাজার ৪৮২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ১ হাজার ৬৮৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৪ হাজার ২৪৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

একনেক চেয়ারপারসন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে নতুন প্রকল্প ১৪টি, সংশোধিত প্রকল্প ৫টি এবং মেয়াদ বৃদ্ধি প্রকল্প ৩টি। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, খাদ্য এবং ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, পানিসম্পদ এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এবং ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা সভায় অংশগ্রহণ করেন।

সভায় অনুমোদিত ২২টি প্রকল্প হলো: সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ৩টি প্রকল্প। ১. ‘কর্ণফুলী টানেল (আনোয়ারা) থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার জাতীয় মহাসড়কের গাছবাড়িয়া পর্যন্ত সংযোগ সড়ক (জেড-১০৪০) উন্নয়ন’ প্রকল্প, ২. ‘দিনাজপুর সড়ক বিভাগাধীন হিলি (স্থলবন্দর)-ডুগডুগি ঘোড়াঘাট জাতীয় মহাসড়ক (এন-৫২১) যথাযথ মানে উন্নীতকরণসহ ৩টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বিদ্যমান সরু/জরাজীর্ণ কালভার্টগুলো পুনর্নির্মাণ এবং বাজার অংশে রিজিডপেভমেন্ট ও ড্রেন নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, ৩. ‘ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তর প্রকল্প: সাপোর্ট টু ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘নারায়ণগঞ্জস্থ আলীগঞ্জে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৮টি ১৫ তলা ভবনে ৬৭২টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ৫টি প্রকল্প-১. ‘ঢাকা ওয়াসা প্রশিক্ষণ এবং গবেষণা একাডেমি স্থাপন’ প্রকল্প, ২. ‘সিলেট সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও অবকাঠামো নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প, ৩. ‘জলবায়ু সহনশীল জীবনমান উন্নয়ন (সিআরএএলইপি)’ প্রকল্প, ৪. ‘পটুয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প, ৫. ‘সিলেট বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্প।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প: ১. ‘মোংলা কমান্ডার ফ্লোটিলা ওয়েস্ট (কমফ্লোট ওয়েস্ট)-এর অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, ২. ‘সাভারে আর্মি ইনস্টিটিউট অব ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ প্রকল্প।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্প, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘দুস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র পুনর্নির্মাণ কোনাবাড়ি, গাজীপুর (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘অ্যাডুকেশন অ্যান্ড রিচার্জ ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্স নার্সিং অ্যাডুকেশন অ্যান্ড রিচার্জ (এনআইএএনইআর)’ প্রকল্প।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প: ১. ‘হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন’ প্রকল্প, ২. ‘বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের উন্নয়ন (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৪টি প্রকল্প: ১. ‘রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কর্ণফুলী এবং সংযুক্ত নদীগুলোর (কাচালং, রাইখিয়ং ও শলকনদী) টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্প, ২. ‘গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনর্বাসন’ প্রকল্প, ৩. ‘সুরমা-কুশিয়ারা নদী অববাহিকার উন্নয়ন এবং বন্যা ও সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (১ম পর্যায়)’ প্রকল্প, ৪. ‘ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইনহ্যান্সমেন্ট’ প্রকল্প।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘বগুড়া কৃষি অঞ্চলের টেকসই কৃষি উন্নয়ন’ প্রকল্প, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ‘দারুল আরকাম ইসলামী শিক্ষা পরিচালনা ও সুসংহতকরণ (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।

সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা কর্তৃক ইতোমধ্যে অনুমোদিত ৫০ কোটি টাকার কম ব্যয় সংবলিত ১০টি প্রকল্প সম্পর্কে একনেক সভায় অবহিত করা হয়।

সূত্র : বাসস


ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল আমদানির ঘোষণা অর্থ উপদেষ্টার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বাজারে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি উল্লেখ করেন, বাজারে বর্তমানে আতপ চালের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই চাল আমদানির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববাজারে চীনের ব্যাপক কেনাকাটার ফলে চালের দাম কিছুটা বাড়লেও এবারের আমদানিতে গতবারের তুলনায় কিছুটা কম দাম পাওয়া গেছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য স্বস্তির বিষয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

রমজান মাস সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদন করেছে কমিটি। পাশাপাশি তুষ থেকে উৎপাদিত প্রচুর পরিমাণ রাইস ব্র্যান অয়েল বাজারে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কৃষিখাতকে শক্তিশালী করতে এবং সারের পর্যাপ্ত মজুত নিশ্চিত করতে মরক্কো থেকে ৯০ হাজার টন টিএসপি সার আমদানির পাশাপাশি আরও ৪০ হাজার মেট্রিক টন সার আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা জানান, সারের বর্তমান বাজারদর সরকারের অনুকূলে রয়েছে।

শিক্ষা ও অবকাঠামো উন্নয়নেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যয় অনুমোদন করা হয়েছে এই সভায়। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) নতুন ভবনের জন্য ১০৫ কোটি টাকা এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে চারটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে ময়মনসিংহে ১৯টি সাবস্টেশন বিতরণের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরাতে বাংলাদেশ দূতাবাসের নিজস্ব ভবন নির্মাণের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। উপদেষ্টা জানান, অস্ট্রেলীয় সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে কাজ শুরু না করলে অনুমতি বাতিলের ঝুঁকি থাকায় দ্রুত এই নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও অবকাঠামোগত স্থিতিশীলতা বজায় রাখাই এই ক্রয়ের মূল লক্ষ্য।


স্বচ্ছতা বাড়াতে ই-রিটার্নে যুক্ত হচ্ছে ব্যাংকিং তথ্য: এনবিআর চেয়ারম্যান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান জানিয়েছেন, আগামী বছর থেকে আয়কর ই-রিটার্ন ব্যবস্থায় করদাতাদের যাবতীয় ব্যাংকিং তথ্য সরাসরি সংযুক্ত করা হবে। এর মাধ্যমে আয়কর ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার পাশাপাশি কর ফাঁকি রোধ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে এনবিআর। গতকাল রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘আয়কর রিটার্ন দাখিল সাপোর্টিং বুথ’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, কর ব্যবস্থাকে আরও সহজ ও জনবান্ধব করতে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী বছর রিটার্ন দাখিলের জন্য একটি বিশেষ মোবাইল অ্যাপস চালু করা হবে। এই অ্যাপের মাধ্যমেই করদাতারা তাদের ব্যাংকিং লেনদেনের তথ্যের ভিত্তিতে সহজেই রিটার্ন পূরণ ও জমা দিতে পারবেন। তিনি উল্লেখ করেন, রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে তথ্যের কারচুপি একটি বড় বাধা। ই-রিটার্ন ব্যবস্থায় ব্যাংকিং তথ্য যুক্ত হলে তথ্য গোপন করার সুযোগ থাকবে না, যা শেষ পর্যন্ত সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

ডিআরইউ-এর এই অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান করদাতাদের অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি মনে করেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া যতো বেশি জনপ্রিয় হবে, ততোই সাধারণ মানুষের হয়রানি কমবে এবং পুরো প্রক্রিয়াটি আরও গতিশীল হবে। উল্লেখ্য, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর কাঠামোর আমূল সংস্কার ও অটোমেশনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে, যার অংশ হিসেবেই এনবিআর এই নতুন উদ্যোগগুলো গ্রহণ করেছে।


হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাড়ছে রপ্তানি বাণিজ্য

৪ মাসে রপ্তানি হয়েছে ১০,৭৬২ টন পণ্য
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আমদানিপ্রধান দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাড়ছে রপ্তানি বাণিজ্য। চলতি বছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে ৪২৯টি ট্রাকে ১০ হাজার ৭৬২ মেট্রিক টন পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়েছে। দেশি কোম্পানির বিস্কুট, আসবাব, প্লাস্টিকের পাইপসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বন্দরসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তবে বিগত বছরের তুলনায় বেড়েছে আমদানিও।

রপ্তানি-আমদানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় কর্মচাঞ্চল্য এসেছে শ্রমিকদের মধ্যে। হিলি কাস্টমস সূত্র জানায়, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে ৪২৯টি ট্রাকে ১০ হাজার ৭৬২ মেট্রিক টন দেশি পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়েছে। একই সময় আমদানি হয়েছে ৯ হাজার ৩৮৪টি ট্রাকে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪৯৩ মেট্রিক টন পণ্য। এ থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২২৩ কোটি ৭ লাখ টাকা।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই বন্দরে ভারত থেকে ৮ হাজার ৪৮৭টি ট্রাকে ২ লাখ ২৫ হাজার ৮৭৪ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়। এতে সরকার রাজস্ব পেয়েছিল ২৬৫ কোটি টাকা।

হিলি স্থলবন্দর সূত্র জানায়, গত অর্থবছরে হিলি বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি শূন্যের কোঠায় ছিল। চলতি অর্থ বছরে অনেক দেশি পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়েছে।

পাশাপাশি গত অর্থবছরের চেয়ে চলতি অর্থবছরে ভারত থেকে এই বন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পণ্য আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কর্ম ব্যস্ততা বেড়েছে বন্দর কেন্দ্রীক সব শ্রমিকদের।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক নূর ইসলাম বলেন, ‘এই বন্দর দিয়ে ভারতে পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি আমদানিও বেড়েছে। গত বছর প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করত। চলতি বছর গত ১২ আগস্ট থেকে আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে। এ বছর একই সময় সর্বোচ্চ ১৫০ থেকে ১৬০টি পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করেছে। আমরা সবাই বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক থাকলে বন্দরের সব পেশাজীবী মানুষ উপকৃত হয়।’

হিলি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘হিলি বন্দর দিয়ে বিভিন্ন দেশি পণ্য ভারতে রপ্তানি হচ্ছে। এতে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। এর আগে এই বন্দর দিয়ে তেমন কোনো পণ্য রপ্তানি হতো না। বর্তমান আমরা রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টা করছি। আশা করছি, আগামীতে ভারতে আরও বেশি দেশি পণ্য রপ্তানি হবে।’

হিলি পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক অতিশ কুমার শ্যানাল বলেন, ‘এই বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে। ভারতে রপ্তানি হওয়া পণ্যবাহী ট্রাকপ্রতি ওজন ফি ১৪৬ টাকা এবং এন্ট্রি ফি ১৬৮ টাকা নেওয়া হয়।’

হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। অন্য অর্থবছরের চেয়ে চলতি অর্থবছর এই বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে। পাশাপাশি ভারতীয় পণ্যের আমদানিও গত অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে। ভারত থেকে কাঁচা পণ্য যেমন আদা, রসুন, কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ ও মটরশুঁটি আমদানি হয়ে থাকে। যেহেতু এসব পণ্য পচনশীল, তাই আমরা কাস্টমসের সব কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করে থাকি।’


আমদানি-রপ্তানি সহজ করতে সব বন্দরে চালু হবে আরটিজিএস: গভর্নর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘আমদানি-রপ্তানি সহজ করার লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক লেনদেনের জন্য দেশের সব বন্দর ও বিমানবন্দরে দ্রুত রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) চালু করা হবে।

তিনি বলেন, দেশের প্রথম জেলা হিসেবে কক্সবাজারকে ক্যাশলেস জেলা হিসেবে পরিণত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে প্রত্যেক নাগরিকের হাতে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে স্মার্টফোন থাকা জরুরি। প্রান্তিক এলাকায় নারী এজেন্ট নিয়োগের মাধ্যমে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম বাড়াতে হবে।

গত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর একটি হোটেলে ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও আঞ্চলিক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন বণিক সমিতি, চেম্বার প্রতিনিধি, বন্দর, কাস্টমস, শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও তপশিলি ব্যাংকের আঞ্চলিক প্রধানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে অংশ নেন।

গভর্নর চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য সিঙ্গাপুর, দুবাই ও হংকংয়ের মতো আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক কানেক্টিভিটি বাড়ানোর ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম অঞ্চল বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর, রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল, ভারী শিল্প, জ্বালানি অবকাঠামো এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সিংহভাগ এ অঞ্চলের ওপর নির্ভরশীল। তবে এ সম্ভাবনাকে পূর্ণ রূপ দিতে আর্থিক খাতের সুদৃঢ় ভূমিকা অপরিহার্য। কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে উৎপাদনমুখী খাতে পর্যাপ্ত ও স্বল্পমূল্যের ঋণপ্রবাহ নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের অব্যবহৃত ফান্ড এ অঞ্চলের উপর্যুক্ত গ্রাহকের মধ্যে বিতরণ করতে হবে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অংশ হিসেবে প্রত্যেক ব্যাংককে অন্তত একটি বিদ্যালয়ে আর্থিক সাক্ষরতা-বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিতে হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম অফিসের নির্বাহী পরিচালক মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে এতে গেস্ট অব অনার ছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া ও বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক মো. খসরু পারভেজ। সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল আমিন চট্টগ্রাম অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও আঞ্চলিক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করণীয় বিষয়ক ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন।


ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স ছাড়াতে পারে তিন বিলিয়ন ডলার

*ঝলক দেখাচ্ছে প্রবাসী আয় *২০ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২১৭ কোটি ডলার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর বৃদ্ধির ধারা বিজয়ের মাসেও অব্যাহত রয়েছে। চলতি (ডিসেম্বর) মাসের প্রথম ২০ দিনে দেশে এসেছে প্রায় ২১৭ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয়। দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে ২৬ হাজার ৪৯৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

এই ধারা অব্যাহত থাকলে এই মাসে তিন বিলিয়ন ছাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলছে, ডিসেম্বরের প্রথম ২০ দিনে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৯ কোটি ডলার বেশি এসেছে। গত বছরের ওই সময়ে এসেছিল ১৯৮ কোটি ৩০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।

চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৫২১ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২০৯ কোটি ডলার বেশি। তখন এসেছিল ১ হাজার ৩১২ কোটি ১০ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধির হার ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ।

গত বছর শুধু রমজানের ঈদ কেন্দ্র করেই এক মাসে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছিল। রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে প্রেরণে বিভিন্ন প্রণোদনা, বৈধ পথে টাকা পাঠানোর ওপর উৎসাহ বাড়ানো এবং এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর সক্রিয় ভূমিকা উল্লেখ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের মাসভিত্তিক প্রবাসী আয় ছিল- জুলাইয়ে ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, আগস্টে ২৪২ কোটি ১৯ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, অক্টোবরে ২৫৬ কোটি ৩৫ লাখ ডলার ও নভেম্বরে ২৮৮ কোটি ৯৫ লাখ ২০ হাজার ডলার।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল, যা ছিল ওই অর্থবছরের সর্বোচ্চ রেকর্ড। পুরো অর্থবছরে প্রবাসী আয় দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।


আগামী বছর থেকে অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন বাধ্যতামূলক হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান জানিয়েছেন আগামী বছর থেকে সরকার ব্যবসায়ীদের জন্য মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটের রিটার্ন অনলাইন জমা বাধ্যতামূলক করবে। তিনি জানান, বর্তমানে ক্ষেত্রবিশেষে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব তথ্য জানান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগামী বছর থেকে আমরা ভ্যাটের অনলাইন রিটার্নও বাধ্যকতামূলক করে দেব। আজও আমি একটা মিটিং করেছিলাম আমাদের বোর্ডে এবং সেখানে আমি নির্দেশনা দিয়েছি যে আমরা পারতপক্ষে পেপার রিটার্নটা নেব না। কারণ এর মধ্যে অনেক ঝামেলা হয়।

কর বা ভ্যাটের রিটার্ন জমা নেওয়ার মাধ্যমে ডলার সাশ্রয় সম্ভব হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভ্যাটের রিটার্নটা খুব সহজ, বেশি জটিল কিছু না।’

তিনি বলেন, ‘দৌড়াদৌড়ি করে কিংবা যানবাহন ব্যবহার করে ম্যানুয়াল পদ্ধতি রিটার্ন জমা দিতে গেলে তেল পোড়ে। এই তেল কিনতে হয় রেমিট্যান্স থেকে আসা অর্থ দিয়ে।’

অনলাইন ফিটার্ন জমায় ভয়ের কিছু নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা অত্যন্ত স্বচ্ছ এবং এটা মানে খুবই পরিচ্ছন্ন একটা পদ্ধতি। আমরা আগামী বছর এটাকে অ্যাপ তৈরি করে আপনাদের মোবাইলেও দিয়ে দেব। আপনারা চাইলে গাড়িতে বসে, অবসর সময়ে, বিছানায় শুয়ে মোবাইলেও করে ফেলতে পারবেন। শুধু আপনাদের তথ্যগুলো লাগবে। আরেকটা বড় সুবিধা এখানে কোনো ডকুমেন্ট আপলোড করতে হয় না। আপনার কিছু দেওয়া লাগবে না। আপনি শুধু ইনফরমেশনগুলো দেবেন, আমরা ওটাকেই ১০০ শতাংশ বিশ্বাস করে নিয়ে নিলাম। কিন্তু পরে যদি আপনি কোনো মিথ্যা ঘোষণা দেন, সেই দায় আপনার।’

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আয়করের জটিল আইন-কানুন, বিধি-বিধান কোনো কিছুই আপনাদের জানার দরকার নেই। আপনি শুধু আপনার ই-রিটার্ন পোর্টালে রেজিস্ট্রেশন করে যে তথ্যগুলো সেখানে আপনার কাছে চায়, সেই তথ্যগুলো ঠিকভাবে অ্যান্ট্রি করবেন।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু একটা ফর্মুলা করে, প্রোগ্রামিং করে প্রতি বছর যে আইনটা হয়, সে অনুযায়ী আমরা সিস্টেমকে কমান্ড দিয়েছি। সুতরাং সিস্টেম নির্ভুলভাবে ক্যালকুলেশন করবে। ট্যাক্স অথরিটিও আপনাকে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না যে আপনার ক্যালকুলেশনে ভুল আছে, আপনি বেশি রিবেট নিয়ে গেছেন, আপনি কম কর দিয়েছেন- এই কথাগুলো বলার কোনো সুযোগ থাকবে না। আপনাকে যেটা বলতে পারবে, যদি আপনার কোনো তথ্য যদি ভুল হয় অথবা যদি কোনো তথ্য যদি ইচ্ছাকৃতভাবে আপনি না দেখান, সেটার দায়-দায়িত্ব আপনার।’

এ সময় তিনি ডিআরইউ সদস্যদের জন্য ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল সাপোর্টিং বুথের উদ্বোধন করেন। ডিআরইউ সভাপতি সালেহ আকন, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।


বিজিবিএ―এর বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২১:১৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউজ এসোসিয়েশনের (বিজিবিএ) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) গত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর উত্তরা ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত এজিএমএ বিজিবিএর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন বিজিবিএর প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট কাইয়ুম রেজা চৌধুরী, বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব শাহরিয়ার হাসান, এবং ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংক পিএলসির এএমডি আদনান মাসুদ।

সভার শুরুতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অকাল মৃত্যুতে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন শেষে তার আত্মার মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন বিজিবিএর ট্রেজারার ফজলুল হক সাঈদ।

সভায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন এ এইচ এম সালেহ উজ্জামান। সভায় উপস্থিত বিজিবিএর প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট কাইয়ুম রেজা চৌধুরী প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন। সেক্রেটারি জেনারেল মো. জাকির হোসেন শুভেচ্ছা বক্তব্যসহ বিগত বছরে গৃহিত ও বাস্তবায়িত কার্যক্রম উপস্থাপন করেন। ট্রেজারার ফজলুল হক সাঈদ বিজিবিএর অফিসের ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের আয়-ব্যয় ও অডিট রিপোর্ট উপস্থাপন করেন।

সবার বক্তব্য ও অডিট রিপোর্ট উপস্থাপনের পর প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হয়। এতে অনেকেই বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন এবং বিজিবিএর সার্বিক উন্নয়নে সুপারিশমালা উপস্থাপন করেন।


banner close