উৎপাদন পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর আরোপ করায় অন্যতম শিক্ষাসামগ্রী কলমের দাম বাড়তে পারে।
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটে বলপয়েন্ট কলমের ওপর উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে উপস্থাপন করেন তিনি।
প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, কারখানা থেকে বাজারে কলম সরবরাহের সময় এই কর আরোপ করা হবে। দেশে এখন ম্যাটাডর, অলিম্পিক, ইকোনো, আরএফএল, মেঘনাসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি কলম উৎপাদন করে। সাম্প্রতিক সময়ে সব ধরনের শিক্ষাসামগ্রীর দাম এমনিতেই বেড়েছে। এর ওপর আবার নতুন আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
মূসক আরোপের ফলে দাম বাড়বে কলমের। অর্থ্যাৎ কলম কিনতে আগের চেয়ে বেশি টাকা খরচ হবে।
গেল নভেম্বর মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৮৮ কোটি ৯৫ লাখ মার্কিন ডলার। যা চলতি ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের যেকোনো মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়েছে, নভেম্বরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২৮৮ কোটি ৯৫ লাখ ২০ হাজার ডলার। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৮ কোটি ৭৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার।
এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৯ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ২৩ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৭৫ কোটি ৪৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
নভেম্বরের ১৬ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত দেশে এসেছে ৬১ কোটি ২২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। ৯ থেকে ১৫ নভেম্বর দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৭৬ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার। ২ থেকে ৮ নভেম্বর দেশে এসেছে ৭১ কোটি ১০ লাখ ৭০ হাজার ডলার। আর নভেম্বরের প্রথম দিন প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৪ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার ডলার।
এর আগে গত অক্টোবর ও সেপ্টেম্বরে দেশে এসেছে যথাক্রমে ২৫৬ কোটি ৩৪ লাখ ৮০ হাজার ও ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর গত আগস্ট ও জুলাইয়ে যথাক্রমে দেশে এসেছিল ২৪২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার ও ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
এদিকে, গত ২০২৪-২৫ অর্থবছর জুড়ে দেশে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৩২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স, যা দেশের ইতিহাসে কোনো নির্দিষ্ট অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ের রেকর্ড।
দেশের বিনিয়োগ পরিবেশকে গতিশীল করতে সরকার ও বেসরকারি খাতের ঘনিষ্ঠ সমন্বয়কে প্রবৃদ্ধির পূর্বশর্ত হিসেবে তুলে ধরেছে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচ্যাম)।
গত রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশ: চ্যালেঞ্জ থেকে প্রতিযোগিতার পথ’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের সংলাপের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত ছিল বেটোপিয়া গ্রুপ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মহবুবুর রহমান।
এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নেন। এছাড়া শিল্প, পররাষ্ট্র, অর্থ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার শীর্ষ প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সংলাপে বক্তারা বলেন, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে দেশে দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। লজিস্টিক ব্যবস্থার দক্ষতা বাড়ানো, কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজ ও স্বচ্ছ করা, নীতি ও প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা এবং ব্যবসায়িক সেবার ডিজিটাল সুবিধা সম্প্রসারণকে তারা তাৎক্ষণিক অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করেন।
একইসঙ্গে জ্বালানি নিরাপত্তা, পুনর্ব্যবহার ও রিসাইক্লিং শিল্পে প্রণোদনা, এবং সরকারি সংস্থাগুলোর কার্যকর সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন বক্তারা।
সংলাপে বলা হয়, দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জন করতে হলে সরকার ও বেসরকারি খাতের সহযোগিতা অব্যাহত ও প্রাতিষ্ঠানিক হতে হবে। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং দেশি-বিদেশি উভয় বিনিয়োগই গতি পাবে।
ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বাণিজ্যবিষয়ক কাউন্সেলর পল ফ্রস্ট অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা এগিয়ে নিতে তাদের প্রতিশ্রুতি অব্যাহত থাকবে।
অ্যামচ্যামের নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং স্টি.এন.এ-এর বাংলাদেশ অফিসের প্রধান নির্বাহী মইনুল হক, অগমডেক্স বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদ মুজিব নোমানসহ অ্যামচ্যাম সদস্য ও শিল্প খাতের নেতারা সংলাপে অংশ নেন। সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেটোপিয়া গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মনির হোসেনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সংলাপটি সঞ্চালনা করেন অ্যামচ্যাম বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী কায়সার মোহাম্মদ রিয়াদ।
জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলা বন্দরের প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে। সোমবার এই বন্দরের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ দিবসটি উপলক্ষে জেলায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও তারুণ্যের উৎসব পালন উপলক্ষে গত রোববার রাত ১২টা ১ মিনিটে বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি সব জাহাজে এক মিনিট বিরতিহীন হুইসেল বাজানো হয়।
সোমবার দুপুর ১২টায় বন্দরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতিতে বন্দরের সদর দপ্তর থেকে বন্দরের জেটি ফটক পর্যন্ত র্যালির আয়োজন করা হয়। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। পরে বন্দরের জেটির অভ্যন্তরে ৭৫তম বন্দর প্লাটিনাম জয়ন্তী দিবস উদযাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বন্দরের সম্মানিত সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর মো. শফিকুল ইসলাম সরকার, সদস্য (অর্থ) ও পরিচালক (প্রশাসন) (অ. দা.) কাজী আবেদ হোসেন (যুগ্ম সচিব), সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) ড. এ. কে. এম. আনিসুর রহমান (যুগ্ম সচিব), পরিচালক (বোর্ড) কালাচাঁদ সিংহ (যুগ্ম সচিব), ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, হারবার মাস্টার, কর্নেল মো. ফিরোজ ওয়াহিদ, বিভাগীয় প্রধানরা, বন্দরের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বন্দর ব্যবহারকারীরা।
অনুষ্ঠানে বন্দরের কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ বন্দরে ১৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী হিসেবে সর্বোচ্চ জাহাজ কয়লা, মাশুল প্রদান, সার, সাধারণ পণ্য, গ্যাস, কনটেইনারবাহী জাহাজ আনয়নকারী, গাড়ির জাহাজ, মালামাল হ্যান্ডলিংসহ ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়া গত বছরের ২ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পিআরএল ভোগরত ৫৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৫০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরের গেজেট নোটিফিকেশন বলে ওই বছরের ১ ডিসেম্বর চালনা পোর্ট নামে এ বন্দর প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৮৭ সালের পোর্ট অব চালনা অথরিটি অ্যাক্ট অনুসারে প্রথমে চালনা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পরবর্তীতে মোংলা পোর্ট অথরিটি নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বিগত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৮ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। অর্থবছর শেষে বন্দরে ১ কোটি ৪ লাখ ১২ হাজার মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের মধ্য দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ লাখ ৩২ হাজার মেট্রিক টন এবং ১৭.২৫ শতাংশ বেশি কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছে।
একইভাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার টিইইউজ। অর্থবছর শেষে বন্দরে ২১ হাজার ৪৫৬ টিইইউজ কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের মধ্য দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৪৫৬ বেশি এবং ৭.২৮ শতাংশ বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। অর্থবছর শেষে বন্দরে ৩৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের মধ্য দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং ২.৮৩ শতাংশ বেশি রাজস্ব আয় করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বন্দরের নিট মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বন্দরে ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা নিট মুনাফা অর্জনের মধ্য দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪১ কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। যা ২০৩.৪৯ শতাংশ বেশি।
আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের ফলে প্রতি ঘণ্টায় ২৪টিরও বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে এবং জেটির সম্মুখে নিয়মিত ড্রেজিংয়ের ফলে নাব্যতা বিরাজমান থাকার কারণে ৫টি জোটতে একই সাথে ৫টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে।
বর্তমান অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে জাহাজ এসেছে ৩৫৬টি, কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ১৩ হাজার ৮৫৪ টিইউজ, গাড়ি আমদানি হয়েছে ৪ হাজার ১৩৯টি এবং পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়েছে ৪৪ লাখ টন। এছাড়া আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের ফলে প্রথমবারের মতো প্রতি ঘণ্টায় ২৪টিরও বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে এবং জেটির সম্মুখে নিয়মিত ড্রেজিংয়ের ফলে নাব্যতা বিরাজমান থাকার কারণে ৫টি জেটিতে একই সাথে ৫টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী দেশে ট্রানজিট পণ্য মোংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানির সুদূরপ্রসারী সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। মোংলা বন্দর ব্যবহার করে স্থল, নৌ এবং রেলপথের মাধ্যমে রাজশাহী, রংপুর ও বরিশাল বিভাগের পণ্য পরিবহনকে সহজতর এবং দ্রুত করবে।
মোংলা বন্দরে ইতোমধ্যে স্থাপিত হয়েছে পোর্ট রিসিপশন ফ্যাসিলিটি (পিআরএফ)। এটি এখন উদ্বোধনের জন্য অপেক্ষমাণ। এর ফলে এ অঞ্চলে তেলবাহী কোনো জাহাজ বা ট্যাংকার থেকে দুর্ঘটনাবশত পানিতে তেল নিঃসরণ হলে তেল অপসারণকারী ভেসেলের মাধ্যমে তা সংগ্রহ করে নদী ও সামুদ্রিক পরিবেশকে দূষণ থেকে রক্ষা করার সক্ষমতা অর্জন করবে মোংলা বন্দর।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণপ্রবাহ এ বন্দরটির কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বর্তমানে খাদ্যশস্য, সিমেন্ট ক্লিংকার, সার, মোটর গাড়ি, মেশিনারিজ, চাল, গম, কয়লা, তেল, পাথর, ভুট্টা, তেলবীজ, এলপিজি গ্যাস আমদানি এবং সাদামাছ, চিংড়ি, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, হিমায়িত খাদ্য, কাঁকড়া, ক্লে, টাইলস, রেশমি কাপড় ও জেনারেল কার্গো রপ্তানির মাধ্যমে দেশের চলমান অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে।
মোংলা বন্দরকে আধুনিক ও বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার জন্য বেশ কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে ও কিছু প্রকল্প ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য হাতে নেওয়া হয়েছে।
বাণিজ্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব বাণিজ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধিকে টেকসই করতে পণ্য বৈচিত্র্যকরণ, সরবরাহ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন।
সোমবার পূর্বাচলের বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ‘গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো ২০২৫ ঢাকা’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞ, নির্মাতা, নীতিনির্ধারক, বিনিয়োগকারী ও উদ্ভাবকদের জন্য আইডিয়া শেয়ার, অর্থপূর্ণ আলোচনা, সহযোগিতা এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের সুযোগ তৈরি করবে।
উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ শীঘ্রই স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ করতে চলেছে। এই মাইলফলক আমাদের অগ্রগতি তুলে ধরার পাশাপাশি নতুন চ্যালেঞ্জও নিয়ে এসেছে। আমরা বর্তমানে যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা এবং ছাড় সুবিধা ভোগ করছি তা ধীরে ধীরে হারাব।
তিনি আরও বলেন, এই রূপান্তর সফলভাবে মোকাবিলার জন্য, আমাদের পণ্য এবং রপ্তানি বাজার বৈচিত্র্যকরণ, প্রতিযোগিতামূলকতা বৃদ্ধি করা এবং দূরদর্শী বাণিজ্য নীতি গ্রহণে দ্রুত এগিয়ে যেতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে, গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো আয়োজন কেবল সময়োপযোগীই নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যতের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুতফে সিদ্দিকী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ স্বাগত বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, এফবিসিসিআইর প্রশাসক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. আব্দুর রহিম খান এবং বিকেএমইর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি সম্ভাবনা তুলে ধরতে রাজধানীতে প্রথমবারের মতো সরকারি উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে ‘গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো’।
যা আজ থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই প্রদর্শনী আয়োজন করেছে।
এবারের এক্সপোতে বাংলাদেশের আটটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি খাতের পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। খাতগুলো হলো তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষিজাত পণ্য, প্লাস্টিক ও কিচেনওয়্যার, হোম ডেকর ও ফার্নিচার, ওষুধ এবং তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি)। শতাধিক প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক কোম্পানি, পাইকারি ব্যবসায়ী ও সরবরাহ খাতের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নিচ্ছেন।
আফগানিস্তান, চীন, ইরান, জাপান, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের ক্রেতা, বিনিয়োগকারী ও সোর্সিং প্রতিষ্ঠান এই প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে। তারা পণ্য ও সেবা নিয়ে সভা, ক্রয়-বিক্রয় এবং চুক্তি করতে পারবে। তিন দিনের এক্সপোতে থাকবে বিষয়ভিত্তিক ১০টি বিশেষ সেমিনার, অনলাইন ও অফলাইন বিজনেস-টু-বিজনেস (বিটুবি) বৈঠক, দেড় শতাধিক স্টল, নেটওয়ার্কিং সেশন এবং ফ্যাশন শো।
জার্মানির উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেডের সহায়তায় ‘এসটিআইএলই-দ্বিতীয়’ প্রকল্পের অধীনে পণ্যের ট্রেসেবিলিটি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের নীতিগত আলোচনার আয়োজন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ আলোচনাকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাজারের পরিবর্তনশীল বিধিনিষেধ এবং এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা ধরে রাখার জরুরি পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান।
এতে বলা হয়, উন্নত ট্রেসেবিলিটি ব্যবস্থা রপ্তানির বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে, সার্কুলারিটি প্রচার করতে এবং বৈশ্বিক বাজারে উদীয়মান টেকসই উন্নয়ন ও যথাযথ সতর্কতার শর্তপূরণ নিশ্চিত করতে পারে।
বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) আলোচনার জন্য বিষয়ভিত্তিক ও গবেষণা সহায়তা প্রদান করে। বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম জোর দিয়ে বলেন, পণ্যের ট্রেসেবিলিটি শক্তিশালী করা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় অগ্রাধিকার হয়ে উঠেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বৈশ্বিক বাজারের চাহিদা থেকে এ প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে এটি ইইউ কর্তৃক প্রবর্তিত সার্কুলার ইকোনমি, ডিজিটাল প্রোডাক্ট পাসপোর্টস (ডিপিপি), দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণ এবং টেকসই উন্নয়ন ডিসকোর্সের সাথে সম্পর্কিত।
যেহেতু বাংলাদেশ-ইইউ বাণিজ্যের ৯২ শতাংশ তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতে কেন্দ্রীভূত, তাই বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে ইইউ গ্রিন ডিলের শর্তাবলির সঙ্গে তার নীতিমালা সামঞ্জস্য করতে হবে।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান একটি ‘জাতীয় ট্রেসেবিলিটি কৌশল’ প্রণয়নের কথা জানান। এ কৌশলে খাতভিত্তিক ট্রেসেবিলিটি পাইলট প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নেতৃত্ব দেবে এবং জিআইজেড প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করবে।
মূল প্রবন্ধে বেশ কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক প্রতিপালন ব্যয়, প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়, আন্তঃকার্যক্ষমতা এবং তথ্য যাচাই।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিজ্ঞতার আলোকে বিল্ড উল্লেখ করে, ভিয়েতনাম, চীন, জাপান, কোরিয়া এবং ভারতে শক্তিশালী ট্রেসেবিলিটি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে সরকারি-বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
বিল্ড জাতীয় ট্রেসেবিলিটি কৌশলকে খাতভিত্তিক পদক্ষেপ দিয়ে সমর্থন করার সুপারিশ করে। যেমন- শিল্প বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য সবুজ অর্থায়ন বিকল্প চালু, তথ্য অবকাঠামো সম্প্রসারণ এবং ঝুট খাতের একটি ডিরেক্টরি তৈরি করা।
মাহবুবুর রহমান তথ্য বিনিময়ের জন্য একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি জার্মানিকে এর উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং এ উদ্যোগের জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা চান।
বর্তমানে আরএমজি উদ্যোক্তারা বিভিন্ন ক্রেতা, ব্র্যান্ড এবং কনসালট্যান্টের কাছ থেকে তথ্য চাহিদা পূরণে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, যাদের প্ল্যাটফর্মে বৈশ্বিক বা অভিন্ন মান নেই।
বিজিএমইএ পরিচালক শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ উল্লেখ করেন, একটি অভিন্ন জাতীয় মান বা নির্দেশিকা প্রতিপালন প্রক্রিয়াকে উল্লেখযোগ্যভাবে সহজ করবে এবং ব্যয় কমাবে।
ঢাকায় জার্মান দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি জান্নিস হোসেন দুটি প্রধান চ্যালেঞ্জ তুলে ধওে বলেন, তথ্যের প্রাপ্যতা ও উৎপাদন এবং সরবরাহকারীদের জন্য প্রয়োজনীয় ডিজিটাল অবকাঠামোর উল্লেখযোগ্য ব্যয়।
বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং চামড়া খাতের প্রতিনিধিরা চলমান খাতভিত্তিক পাইলট প্রকল্পের আপডেট শেয়ার করেন। তারা জানান, অগ্রগতি হলেও এসব পাইলট প্রকল্পকে সম্প্রসারণ করতে হবে যাতে আরএমজির সাবকন্ট্রাক্টিং ইউনিটের মতো নিম্ন ও মধ্যম স্তরের প্রতিষ্ঠানগুলো অন্তর্ভুক্ত এবং পূর্ণাঙ্গ ট্রেসেবিলিটি তথ্যের চাহিদা পূরণ হয়।
নীতিগত আলোচনাকে এগিয়ে নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি নতুন বহুপক্ষীয় সংলাপ প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন করেছে। এটি মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি উইংয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে এবং এতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সদস্যরা অংশ নেবেন।
রপ্তানি উইংয়ের প্রধান আব্দুর রহিম খান থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার উদাহরণ টেনে একটি জাতীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন ইউনিট (পিআইইউ) প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন।
পরিকল্পনা উইংয়ের যুগ্ম সচিব মোস্তফা জামাল হায়দারও উল্লেখ করেন, উন্নত ট্রেসেবিলিটি বাংলাদেশকে এলডিসিুউত্তর পরিস্থিতিতে আরও ভালোভাবে সহায়তা করতে পারে।
অনুষ্ঠানে সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী, শিল্প নেতৃবৃন্দ এবং টেক্সটাইল, পোশাক, চামড়া ও মৎস্য খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১৬ হাজার ৩২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ের মোট ১৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ১০১ কোটি ১০ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ ৫ হাজার ৬০৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩৭৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
সোমবার শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুমোদিত ১৮টি প্রকল্পের মধ্যে ১৩টি নতুন এবং ৫টি সংশোধিত প্রকল্প।
সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, সমাজকল্যাণ ও নারী-শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লে. জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প ও গৃহায়ন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ-সড়ক-রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ-বন-পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এবং শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চলের টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প এবং মানসম্পন্ন বীজ আলু উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ জোরদারকরণ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধিত সংস্করণ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় তিনটি অনুসন্ধান কূপ খনন এবং সোনাগাজীতে ২২০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের চারটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প অনুমোদন পায়। এর মধ্যে রয়েছে মিরপুর ৯ নম্বর সেকশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-২০২৪-এ আহত বা কর্মক্ষমতা হারানো জুলাইযোদ্ধা পরিবারের জন্য ১,৫৬০টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ এবং একই আন্দোলনের শহীদ পরিবারের জন্য ‘৩৬ জুলাই’ আবাসিক ফ্ল্যাট প্রকল্প। এছাড়া বাংলাদেশ সচিবালয় ও সংশ্লিষ্ট আবাসিক এলাকাগুলোর জন্য অগ্নিনিরাপত্তা আধুনিকায়ন এবং সচিবালয়ে নতুন ২১ তলা অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্পও অনুমোদিত হয়েছে।
সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকা এমআরটি লাইন-৬-এর তৃতীয় সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প এবং সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ (চান্দাইকোনা) সড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় অনুমোদিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ গ্রিন অ্যান্ড রেজিলিয়েন্ট আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অটিজম ও এনডিডি সেবাদানকেন্দ্র প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের জাপান হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট স্কলারশিপ অনুমোদিত হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম সংশোধনও অনুমোদিত হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় একাডেমিক ও কেন্দ্রীয় গবেষণাগারসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প সম্পন্ন করার অনুমোদন দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প ক্লাইমেট রেসপন্স রিপ্রোডাকটিভ হেলথ অ্যান্ড পপুলেশন সার্ভিস ইম্প্রুভমেন্ট এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের অত্যাবশ্যক কার্যক্রম বাস্তবায়ন প্রকল্প সভায় অনুমোদন পেয়েছে।
এছাড়া সভায় পূর্বে অনুমোদিত মোট ১৫টি প্রকল্প সম্পর্কে একনেককে অবহিত করা হয়।
এসবের মধ্যে ছিল বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রামকেন্দ্র আধুনিকায়ন, বিভিন্ন জেলা স্টেডিয়াম উন্নয়ন, অটিজম একাডেমি (NAAND), বিভিন্ন কলেজ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের অবকাঠামো উন্নয়ন, সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার, পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সবুজায়ন, নদী-খাল পুনঃখনন এবং দিনাজপুর পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়নসহ আরও বেশ কিছু চলমান প্রকল্প।
দেশের বন্ড ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক, স্বচ্ছ ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে গত ০১ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড Customs Bond Management System (CBMS) নামক একটি স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার চালু করেছে। বর্তমানে এনবিআরের অধীনস্থ ০৩ (তিন) টি কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের মাধ্যমে এই সফটয়্যারের ২৪টি মডিউল ব্যবহার করে বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনলাইনে সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারী রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো শুল্কমুক্তভাবে কাঁচামাল আমদানির জন্য শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের অনুমোদিত সহগ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট থেকে Utilization Permission (UP) গ্রহণ করে থাকে। CBMS-এর UP মডিউল চালু হলেও এখনও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে UP নিচ্ছে, মাত্র অল্প কিছু প্রতিষ্ঠান অনলাইনে এই সেবা নিচ্ছে। সফটওয়্যারটির ব্যবহার বাধ্যতামূলক না হওয়ায় গত ১১ মাসেও এর ব্যবহার কাঙ্খিত মাত্রায় পৌঁছায়নি। CBMS সিস্টেমটি ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত মতামতের ভিত্তিতে সিস্টেমটিতে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন ও সংশোধন করে আরও ব্যবহারবান্ধব করা হয়েছে।
বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে দ্রুততা ও স্বচ্ছতার সাথে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আগামী ০১ জানুয়ারি, ২০২৬ তারিখ হতে বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানসমূহের অনুকূলে Utilization Permission (UP) ইস্যুকরণ সংক্রান্ত সকল সেবা গ্রহণ ও প্রদানের ক্ষেত্রে CBMS সফটওয়্যার এর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে উক্ত তারিখ থেকে বন্ডেড প্রতিষ্ঠানসমূহকে UP ইস্যু সংক্রান্ত কোন সেবা CBMS সফটওয়্যার এর মাধ্যম ব্যতিত অন্য কোন মাধ্যমে প্রদান করা হবে না মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি পরিপত্র জারি করেছে।
CBMS বাধ্যতামূলক হওয়ার সুবিধাসমূহ:
এনবিআরের সেবা প্রদান প্রক্রিয়ায় দ্রুততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে;
বন্ডেড প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সেবা প্রাপ্তি হবে আরও সহজ, সময়সাশ্রয়ী ও ব্যয়সাশ্রয়ী হবে;
কাঁচামালের ইন-পুট ও আউট-পুটের তথ্য সফটওয়্যারে এন্ট্রি করায় হিসাব রক্ষণ স্বয়ংক্রিয় ও স্বচ্ছ হবে;
বন্ড কমিশনারেটে ম্যানুয়ালি দলিলপত্র জমা দেওয়ার জটিলতা দূর হবে; এবং
বন্ড সংক্রান্ত বিভিন্ন বিবাদের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে।
বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি ও দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে বন্ডেড ওয়্যারহাউসিং ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত অটোমেটেড CBMS সিস্টেমের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করায় এনবিআরের ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম ধীরে ধীরে পূর্ণ অটোমেশনের আওতায় আনার এনবিআরের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার মধ্য দিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় ও সরকারি মালিকানাধীন ইসলামী ব্যাংক ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’-এর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ বোর্ড সভায় নতুন এ ব্যাংকের অনুমোদন প্রদান করা হয়। সভায় সমস্যাগ্রস্ত পাঁচটি ইসলামী ব্যাংককে একীভূত করে গঠিত ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি’কে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর মাধ্যমে নতুন ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু করতে আর কোন বাধা থাকল না অর্থ মন্ত্রণালয়ের। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৯ নভেম্বর প্রাথমিক অনুমোদন দেয়া হয় সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের। যেখানে আরজিএসসি থেকে কোম্পানি নাম ছাড়পত্র, ব্যাংকের চলতি হিসাব খোলাসহ ব্যাংক কোম্পানি আইনের বিধিবিধান পূরণের দায়িত্ব পড়ে সরকারের ওপর।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই নতুন ব্যাংকটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করবে। একীভূত হওয়া পাঁচটি ব্যাংক হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক।
অনুমোদনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছে। মতিঝিল অফিসে নতুন ব্যাংকের নির্ধারিত হিসাব খোলার কাজ ইতোমধ্যে চলছে। রাজধানীর মতিঝিলের সেনা কল্যাণ ভবনে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, নতুন ব্যাংকটির মোট পেইড-আপ ক্যাপিটাল হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২০ হাজার কোটি টাকা, আর বাকী ১৫ হাজার কোটি টাকা আসছে আমানতকারীদের শেয়ার থেকে। প্রাথমিকভাবে অনুমোদিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, একীভূত এই নতুন ব্যাংক ইসলামি ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে ব্যবহারিক, শিল্পভিত্তিক প্রশিক্ষণ অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর প্রশাসক আবুল খায়ের মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ খান।
সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে এটোভা টেকনোলজি আয়োজিত ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং, ফেয়ারওয়েল অ্যান্ড অ্যাপ্রিসিয়েশন সেরিমনিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনুষ্ঠানে শিল্পভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করা প্রায় ২০০ প্রশিক্ষণার্থীকে সনদ ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
বেসিস প্রশাসক বলেন, আইটি খাত এখন জাতীয় অগ্রগতির অন্যতম প্রধান অংশীদার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাই নিজেদের উন্নয়ন এবং দেশের অগ্রগতির জন্য শিক্ষার্থীদের শুধু আইটি খাতেই নয়, অন্যান্য খাতেও উদ্যোক্তা হিসেবে প্রস্তুত হতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব উদ্দিন খোকন। আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ডিইআইইডি প্রকল্পের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, বেসিস অ্যাসোসিয়েট কমিটির সদস্য ও ফ্লোরা টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল ডিউক, বেসিস অ্যাসোসিয়েট কমিটির সদস্য রওশন কামাল জেমস, তরুণ উদ্যোক্তা ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক সংগঠক রবিউল ইসলাম নয়ন এবং এটোভার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থীরা।
মাহবুব উদ্দিন খোকন তার বক্তব্যে বলেন, ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ তরুণদের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে। মানবসম্পদ উন্নয়নে এ ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
ডিইআইইডি প্রকল্পের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ডিইআইইডি প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো— তরুণদের শিল্প-প্রস্তুত দক্ষতা বৃদ্ধি করা। এটোভার উদ্যোগ এ লক্ষ্যকে আরো শক্তিশালী করবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এটোভা টেকনোলজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম বলেন, আমাদের লক্ষ্য শুধু প্রশিক্ষণ নয়, বরং তরুণদের শিল্প খাতের বাস্তব কাজে সম্পূর্ণ প্রস্তুত করে তোলা। সামনের দিনগুলোতে আরো বিস্তৃত আকারে প্রশিক্ষণ ও ক্যারিয়ার সাপোর্ট কার্যক্রম চালানো হবে।
অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণার্থীরা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার সম্পর্কে দিকনির্দেশনা গ্রহণ করেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
রোববার বাদ মাগরিবের পর উত্তরায় বিজিএমইএ কার্যালয়ে এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দোয়া অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, বর্তমান বোর্ডের সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান, সহসভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, সহসভাপতি (অর্থ) মিজানুর রহমান, সহসভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, পরিচালক মজুমদার আরিফুর রহমান, পরিচালক শেখ হোসেন মোহাম্মদ মোস্তাফিজ, পরিচালক কাজী মিজানুর রহমান, পরিচালক আসেফ কামাল পাশা, পরিচালক ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী, সাবেক পরিচালক আশিকুর রহমান (তুহিন), সাবেক পরিচালক শোভন ইসলাম এবং বিজিএমইএর বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান, কো চেয়ারম্যান ও সাধারণ সদস্যরা এ মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন।
মাহফিলের শুরুতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন, বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান এবং বিজিএমইএর পরিচালক ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী। তারা দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও দীর্ঘ পথচলায় খালেদা জিয়ার অসামান্য ও আপসহীন অবদান গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
মাহফিলে উপস্থিত সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণে খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য ও আশু রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন বিজিএমইএর পরিচালক ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী।
উল্লেখ্য, রোববার বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুবার্ষিকী হওয়ায় একই মোনাজাতে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করেও বিশেষভাবে দোয়া করা হয়।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ গতকাল শনিবার বলেছেন, জ্বালানি নিরাপত্তা শিল্প খাতের টেকসই উন্নয়নে অন্যতম অনুষঙ্গ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যা উৎপাদন, বিনিয়োগ এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। দেশের শিল্প ও অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার সম্প্রসারণ এবং টেকসই জ্বালানি কাঠামো গঠন ও অপচয় রোধের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তাসকীন আহমেদ।
শিল্প খাতে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জ্বালানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা কেবল নীতিগত অগ্রাধিকারই নয়, বরং টেকসই শিল্পায়নের পূর্বশর্ত বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই মিলনায়তনে ডিসিসিআই এবং সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) যৌথভাবে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের শিল্প খাতে জ্বালানি সক্ষমতা নীতিমালা, টেকসই উন্নয়নের পথ-নির্দেশনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)-এর চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, ২০৩০ সালের পর দেশীয় গ্যাসের মজুত হ্রাস পাওয়ার বিষয়টি বলা হলেও অফশোর-অনশোরে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমে তেমন উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়নি, তাই আমরা নিজস্ব উৎপাদিত গ্যাস ব্যবহার করতে পারছি না, আমাদেরকে আমদানি নির্ভর গ্যাসের উপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, জ্বালানি খাতে সরকার ক্রমাগত ভর্তুকি দিচ্ছে, কারণ এর সাঙ্গে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জ্বালানি খাতে বর্তমানে দক্ষতার হার ৩০ শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে, এ দক্ষতা আরো বাড়ানো সম্ভব হলে বিদ্যুৎ ঘাটতি হ্রাস পাবে। এছাড়াও, দেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দিলে এ অবস্থায় দ্রুত পরিবর্তন পরিলক্ষিত হবে বলে তিনি মত দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে মাস্টারপ্ল্যান থাকলেও সহায়ক নীতিমালার অনুপস্থিতির বিষয়টি শিল্পখাতকে বেশ ভুগাচ্ছে।
তিনি জানান, ঢাকা চেম্বার ও সানেম যৌথভাবে পরিচালিত ফোকাস গ্রুপ আলোচনায় তৈরি পোশাক, সিমেন্ট, স্টিল ও বাণিজ্যিক খাতের শিল্প উদ্যোক্তা এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে। যেখানে জ্বালানি দক্ষতা বিষয়ে সচেতনতা, জ্বালানি নিরীক্ষা, জ্বালানি সাশ্রয়, অর্থায়ন ও প্রণোদনা, গ্রিড আধুনিকায়ন, বাস্তবায়ন ও যোগাযোগ প্রভৃতি বিষয়গুলো প্রাধান্য পায়।
অংশগ্রহণকারীরা এনার্জি অডিট, লজিস্টিক সেবা সম্প্রসারণ, গ্যাস ও বিদ্যুতের সরবরাহ বৃদ্ধির বিষয়ে বেশকিছু সুপারিশ প্রদান করেন। এছাড়াও কাঠামোগত স্ট্র্যাটেজি, সরবরাহগত স্ট্র্যাটেজি এবং পলিসি ও রেগুলেটরি স্ট্র্যাটেজি এখাতে অতীব গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার রিসার্চ কাউন্সিল (বিইপিআরসি)-এর সদস্য ড. মো. রফিকুল ইসলাম, পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসির চেয়ারম্যান ড. এম. রেজওয়ান খান, আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ডিসিসিআই’র সাবেক পরিচালক মনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ সিমেন্ট মেনুফ্যাকচারারস অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ)-এর সভাপতি মোহাম্মদ আমিরুল হক, বাংলাদেশ সাস্টেইনেবল অ্যান্ড রিনিউএবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশন (বিএসআরইএ)-এর সভাপতি মোস্তফা আল মাহমুদ, বাংলাদেশ এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন ও কনভার্সন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইঞ্জি. মো. সিরাজুল মাওলা, বিজিএমইএ সহ-সভাপতি বিদিয়া অমৃত খান এবং ইডকলের উপ-প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মনিরুল ইসলাম প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।
বিইপিআরসির সদস্য ড. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দেশের জাতীয় নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তার পরই জ্বালানি নিরাপত্তা বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ, তাই এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসির চেয়ারম্যান ড. এম. রেজওয়ান খান বলেন, বিদ্যমান শুল্ক কাঠামো পরিবর্তন না হলে এখাতের সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। এছাড়াও পিক ও অফ-পিক সময়ে বিদ্যুতের দাম পার্থক্য নির্ধারণ করতে হবে।
বিসিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আমিরুল হক বলেন, এলপিজি শিল্পখাতের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
বাংলাদেশ এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন ও কনভার্সন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইঞ্জি. মো. সিরাজুল মাওলা বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ২ হাজার ৩০০টি এলপিজি অটোগ্যাস ফিলিং স্টেশন রয়েছে। যেখানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের উদ্যোগ নিলে প্রায় ৭০০-৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব, যার জন্য একটি কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নের কোনো বিকল্প নেই।
দেশে ব্যাংক খাতের মোট ঋণের এক-তৃতীয়াংশের বেশি বর্তমানে খেলাপি ঋণ। ব্যাংকিং খাতে দীর্ঘদিন ধরে তৈরি হওয়া এ খেলাপি ঋণের সংকট কাটিয়ে উঠতে অন্তত ৫ থেকে ১০ বছর সময় লাগবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, এটি (খেলাপি ঋণ) ছোটখাটো কোনো সমস্যা নয়। খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি পুরো আর্থিক খাতকে চাপের মুখে ফেলে দিয়েছে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত চতুর্থ ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলন-২০২৫-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্যে গভর্নর এসব কথা বলেন।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, খেলাপি ঋণ কোনো ছোট সমস্যা নয়। দেশের মোট ব্যাংকঋণের এক-তৃতীয়াংশের বেশি এখন খেলাপি। বাকি অংশের ওপর ভর করেই ব্যাংকগুলো টিকে আছে, যা সামগ্রিক আর্থিক খাতকে প্রচণ্ড চাপে ফেলেছে।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, গভীর কাঠামোগত চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের আর্থিক খাত সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, বৈদেশিক খাত ব্যবস্থাপনা এবং শাসনব্যবস্থা সংস্কারে দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জন করছে।
তিনি জানান, নতুন তথ্য ও নতুন শ্রেণিকরণনীতি প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গে প্রতি প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। দুই বছর আগে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের হার ২৫ শতাংশ হতে পারে বলে অনুমান করা হলেও সেই সময়কার সরকারি হিসাব ছিল ৮ শতাংশ। বর্তমানে তা ৩৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
গভর্নর জানান, আমদানি এলসি (ঋণপত্র) খোলার জন্য পর্যাপ্ত ডলার মজুত রয়েছে এবং রমজানকে সামনে রেখে পণ্য আমদানিতে কোনো ঝুঁকি নেই। গত বছরের তুলনায় ২০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি এলসি ইতোমধ্যে খোলা হয়েছে।
গভর্নর বলেন, মূল্যস্ফীতি কমানোর পূর্বশর্ত হিসেবে বিনিময় হার সফলভাবে স্থিতিশীল করা হয়েছে। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার ১২০ থেকে ১২২.৫০ টাকার মধ্যে স্থিতিশীল রয়েছে, যেখানে অনেক আঞ্চলিক মুদ্রার অবমূল্যায়ন আরও বেশি হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে কোনো হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই। চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতেই হার নির্ধারিত হচ্ছে।
ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, পূর্বে বাংলাদেশে বিনিয়োগ কমিয়ে দেওয়া বিদেশি ব্যাংকগুলো স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে এসেছে এবং বৈদেশিক পরিশোধ বকেয়া সম্পূর্ণ নিষ্পত্তি হয়েছে। চলতি হিসাবের ঘাটতি উল্লেখযোগ্যহারে কমেছে এবং আর্থিক হিসাব সামান্য ইতিবাচক অবস্থানে গেছে। আমাদের বৈদেশিক খাত স্থিতিশীল এবং ঝুঁকিপূর্ণ নয়।
তিনি আরও বলেন, কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় মূল্যস্ফীতি না কমায় সুদের হার এখনো উচ্চমাত্রায় রয়েছে। আমানতের হার ইতোমধ্যেই প্রায় ১০ শতাংশে পৌঁছেছে এবং ইতিবাচক প্রকৃত রিটার্ন নিশ্চিত করতে তা আরও বাড়তে পারে।
গভীর কাঠামোগত দুর্বলতার দিক ইঙ্গিত করে গভর্নর বলেন, শক্তিশালী বন্ড মার্কেটের অভাব, দুর্বল শেয়ারবাজার ও দুর্বল বিমা খাতের কারণে বাংলাদেশের আর্থিক খাত অতিমাত্রায় ব্যাংকনির্ভর হয়ে আছে।
দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য কেবল ব্যাংকের ওপর নির্ভর না করে বন্ড বাজারকে কাজে লাগাতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
গভর্নর ১৪টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনসহ ইসলামী ব্যাংকের মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুশাসন জোরদার করতে বড় ধরনের সংস্কারের কথা তুলে ধরেন।
মূল নিয়ন্ত্রক সংস্কারের মধ্যে রয়েছে- কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন, ব্যাংকের বোর্ডে স্বাধীন পরিচালক সংখ্যা ৫০ শতাংশে উন্নীতকরণ, পারিবারিক মালিকানা ১০ শতাংশে সীমাবদ্ধ করা, আমানত বিমা স্কিম শক্তিশালী করা (কাভারেজ বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা), দেউলিয়া আইন আধুনিকায়ন এবং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গঠন।
তিনি বলেন, পাঁচটি দুর্বল ব্যাংককে একীভূত করে ৩৫ হাজার কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনসহ একটি নতুন শক্তিশালী ব্যাংক গঠন করা হবে। পাশাপাশি, নয়টি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
গভর্নর আশা প্রকাশ করেন, পরবর্তী সরকার একটি শক্তিশালী এবং আরও স্থিতিশীল আর্থিক খাত গড়ে তোলার জন্য এই সংস্কারগুলো অব্যাহত রাখবে।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক এ কে এনামুল হক, হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ, বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএমএ) সভাপতি ও জিপিএইচ গ্রুপের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম এবং সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন।
রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ১২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী ‘আলু উৎসব-২০২৫।
গতকাল শনিবার ঢাকায় বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএসএ) কার্যালয়ে আয়োজিত ‘আলু উৎসব ২০২৫- মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু এ তথ্য জানান।
মোস্তফা আজাদ বলেন, আলু উৎসব বাংলাদেশের আলুশিল্পকে বিশ্বে তুলে ধরার সুযোগ তৈরি করবে। এতে আধুনিক প্রযুক্তি, প্রসেসিং সক্ষমতা, সংরক্ষণ পদ্ধতি এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ও রপ্তানির নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন হবে। তিনি আলুর বহুমুখী ব্যবহার, রপ্তানি বৃদ্ধির কৌশল, আধুনিক হিমাগার প্রযুক্তি ও প্রক্রিয়াজাত শিল্প সম্প্রসারণের জরুরি প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আলু উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের সপ্তম এবং এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম উৎপাদনকারী দেশ হওয়ার সত্ত্বেও পর্ষাপ্ত আধুনিক সংরক্ষণ সুবিধার ঘাটতি, প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রযুক্তির অভাব এবং রপ্তানিবান্ধব নীতিমালা ও অবকাঠামো না থাকায় এ সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি।
উৎসব উপলক্ষে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে দেশ-বিদেশের শতাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। আলু উৎপাদনের নিমিত্তে বিভিন্ন উপকরণ প্রদর্শন, হিমাগারে আধুনিক পদ্ধতিতে আলু সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, মূল্যসংযোজন, রপ্তানি, কোল্ড-চেইন প্রযুক্তি, কৃষি যন্ত্রপাতি, আলু থেকে বিভিন্ন প্রকার খাদ্য তৈরি ও প্রদর্শন এবং বন্ধন শিল্পসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এতে অংশগ্রহণ করবে।
মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বিসিএসএর সিনিয়র সহসভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ, সহসভাপতি মোহাম্মদ ইউনুছ এবং পোস্ট মাস্টার কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়জুল আলমসহ বিসিএসএর অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।