উৎপাদন পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর আরোপ করায় অন্যতম শিক্ষাসামগ্রী কলমের দাম বাড়তে পারে।
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটে বলপয়েন্ট কলমের ওপর উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে উপস্থাপন করেন তিনি।
প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, কারখানা থেকে বাজারে কলম সরবরাহের সময় এই কর আরোপ করা হবে। দেশে এখন ম্যাটাডর, অলিম্পিক, ইকোনো, আরএফএল, মেঘনাসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি কলম উৎপাদন করে। সাম্প্রতিক সময়ে সব ধরনের শিক্ষাসামগ্রীর দাম এমনিতেই বেড়েছে। এর ওপর আবার নতুন আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
মূসক আরোপের ফলে দাম বাড়বে কলমের। অর্থ্যাৎ কলম কিনতে আগের চেয়ে বেশি টাকা খরচ হবে।
দেশের বাজারে সোনার দামের উত্থান-পতন অব্যাহত রয়েছে। চলতি মাসে সাত দফা মূল্যবান ধাতুটির দর বাড়ানো-কমানো হয়েছে। বেড়েছে চারবার, কমেছে তিনবার। দেশের সোনা ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) জানিয়েছে নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করে দেশে সোনার দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে। যে কারণে দামের এত উত্থান-পতন হচ্ছে।
চলতি মাসে ৬, ৮ ও ১৮ এপ্রিল সোনার দাম বাড়িয়েছিল বাজুস। এর মধ্যে ৬ এপ্রিল বেড়েছিল ১৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১৭৫০ টাকা এবং ১৮ এপ্রিল বেড়েছিল দুই হাজার ৬৫ টাকা। পরে ২০ এপ্রিল ৮৪০ টাকা কমানোর একদিন পর ২১ এপ্রিল আবার ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস। দুদিন পর ২৩ এপ্রিল ৩ হাজার ১৩৮ টাকা এবং ২৪ এপ্রিল ভালো সোনার ভরি ২০৯৯ টাকা কমানোরর ঘোষণা দিল বাজুস। গত দুদিনে ভরিতে সোনার দাম কমেছে ৫ হাজার ২৩৮ টাকা।
বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন নতুন পদ্ধতি বা পলিসি অনুসরণ করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করি। আর সেটি হচ্ছে- বিশ্ব স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল পলিসি। এতদিন আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করতাম। সেক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে যখন সোনার দাম কমত, তখন আমরা কমাতাম। আর যখন বাড়ত, তখন বাড়াতাম।’
‘আর এখন আমরা আমাদের সোনার সবচেয়ে বড় বাজার তাঁতীবাজারের বুলিয়ান মার্কেট ফলো করে দর নির্ধারণ করি। এই বাজারে সোনার দাম ঘন্টায় ঘণ্টায় ওঠানামা করে। সেটা অনুসরণ করে আমরা নতুন দর নির্ধারণ করি। সেক্ষেত্রে এমনও হতে পারে- দিনে দুই বারও গোল্ডের দাম বাড়ানো-কমানো হতে পারে।’
কেনো এই পদ্ধতি অনুসরণ করছেন- এ প্রশ্নের উত্তরে মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন বৈধভাবে কোনো গোল্ড আমদানি করি না। বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে গোল্ড আমদানির অনুমতি দিয়েছিল। প্রথম দিকে কিছু প্রতিষ্ঠান আমদানি করলেও এখন কেউ করছে না। কেননা, ডিউটি (শুল্ক) অনেক বেশি। আমদানি করলে প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বাজুসের সভাপতি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের নির্দেশনায় ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের পলিসি অনুসরণ করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করছি। দেশে গোল্ড রিফাইনারি শুরু হলে এবং শুল্ক কমালে বৈধভাবে আমদানি হলে, তখন আমরা আবার আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে গোল্ডোর দাম নির্ধারণ করবা।’
এদিকে বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তার কারণে সোনার বাজারে সুদিন চলছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়, অর্থাৎ ২০২০ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স (৩১ দশমিক ১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৭০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। তখন এই দাম ছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ। তার আগে ২০২০ সালের ১৯ মার্চ সোনার আউন্স ছিল ১ হাজার ৪৭৯ ডলার। গত চার বছরে সোনার দাম করোনার আগের অবস্থায় ফেরেনি।
এদিকে গত বছরের অক্টোবরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর সোনার দাম আবার বাড়তে থাকে। ১ ডিসেম্বরে সোনার দাম প্রতি আউন্স ২ হাজার ৭২ ডলারে পৌঁছায়। তারপর কিছুটা কমলেও চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে দাম আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহার হ্রাস করবে- বাজারে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে সোনার দাম দ্রুত বাড়তে থাকে। চলতি মাসে ইরান ইসরায়েলে হামলা চালানো পর সোনার দাম আরও কিছুটা বাড়ে। গত শুক্রবার প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৩৯০ ডলার, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ। যদিও দাম গতকাল ২ হাজার ৩২০ ডলারে নেমেছে।
কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাতে সমগ্র বিশ্ব যখন টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে পতিত হয়, ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে টেনে তুলতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের দরবারে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়। যদিও একটি শ্রেণি বাজারে নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে বরাবরই সক্রিয় ছিল। তবে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের দূরদর্শী নেতৃত্ব বিনিয়োগকারীদের অর্থের সুরক্ষা দিতে বারবার বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হতে দেয়নি।
সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে অস্বাভাবিক আচরণ করছে পুঁজিবাজার। নিয়ন্ত্রক সংস্থাও এ পরিস্থিতি সামাল দিতে এরই মধ্যে অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে বাজারকে স্থিতিশীল করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এমনকি পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে গতকাল ফ্লোর প্রাইসমুক্ত সব শেয়ারে একদিনের দর কমার নিম্নসীমা (সার্কিট ব্রেকার) ৩ শতাংশে বেঁধে দিয়েছে সংস্থাটি। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএসইসির সময়োপযোগী এমন পদক্ষেপ বাজারকে আবারও টেনে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সন্দেহভাজন বেশকিছু লেনদেন পরিলক্ষিত হয়েছে বাজারে। এতে বিশেষ একটি শ্রেণি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বাজারকে ম্যানিপুলেট করার চেষ্টা করছে। কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও এতে জড়িত রয়েছে। বাজারে অবাঞ্ছিত বিক্রির আদেশ দিয়ে তারা অস্থিরতা তৈরি করছে। তাছাড়া বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে বাজারে একটা শ্রেণী স্বার্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। ফলে বেশ কিছুদিন ধরে বাজার কিছুটা অস্বাভাবিক আচরন করছে।
এ বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, আমাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বেশ কিছু ট্রেডার নিজেদের মধ্যে যোগশাজসের মাধ্যমে প্রথমে কম দরে শেয়ার বিক্রি করতো। পরে তাদের দেখাদেখি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যখন প্যানিক হয়ে শেয়ার বিক্রি করতো তখন তারাও আবার কম দরে শেয়ারগুলো কিনে নিত। এভাবে তারা নিজেদের মধ্যে শেয়ার লেনদেন করে প্যানিক সৃষ্টির মাধ্যমে ভালো শেয়ারগুলোর দাম কমাতো। এই কাজে তাদের বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও সহযোগিতা করত।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শেয়ারের দর কমার কথা না। গুটি কয়েক অসাধু ট্রেডারের কারসাজিতে বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে অনেক বড় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আল-আমিন বলেন, এক শ্রেণির অসাধু বিনিয়োগকারী চাচ্ছেন বর্তমান কমিশন বিদায় হয়ে নতুন কেউ দায়িত্বে আসুক। যাতে তারা নতুন করে আরো সুযোগ নিতে পারে। তারাই বিভিন্ন দুর্বল শেয়ারে কারসাজি করে সুবিধা নিচ্ছে। ফোর্সড সেলের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার তারা কম দরে কিনে নিচ্ছে। কমিশনের উচিত হবে কারসাজিকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা, যাতে তারা বারবার বাজারকে ম্যানিপুলেট করার সাহস না পায়।
এদিকে শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক সময়ের টানা পতন ঠেকাতে আবারও শেয়ারের মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিএসইসি গতকাল বিকালে এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, এখন থেকে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর এক দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না। বর্তমানে দরভেদে কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত দরপতন হতে পারে। দেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সার্কিট ব্রেকারের এ সিদ্ধান্ত আজ থেকে কার্যকর করতে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আজকের এই সার্কিট ব্রেকার আরোপ বাজারে কারসাজি রোধ করবে। সন্দেহভাজন লেনদেন বন্ধ করবে। আর এ সিদ্ধান্তের ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও উচ্চ সম্পদশালী একক বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি সক্রিয় হবে বলে আশা করছি। অনেক ভালো শেয়ার বর্তমানে আন্ডারভ্যালুতে আছে। এখানে তারা বিনিয়োগ করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।
সার্কিট ব্রেকার বাজারের দরপতন ফেরাতে ব্যর্থ হলে আবারো ফ্লোর প্রাইস দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত আছে কি না জানতে চাইলে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আশা করছি আমাদের বাজারে আর কখনো ফ্লোর প্রাইস দিতে হবে না। শিগগিরই বাজার একটা স্থিতিশীল অবস্থানে ফিরবে।
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও কমেছে সোনার দাম। আজ বুধবার বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
নতুন দাম অনুযায়ী, ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ২ হাজার ১০০ টাকা কমানো হয়েছে। এখন ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম কমে হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকা। এর আগে দাম ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল বাজুস। সে দিন ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম কমে হয় ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। এর আগে দাম ছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৮ টাকা।
বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ ২৪ এপ্রিল বিকেল থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে।
এদিকে সোনার দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী বর্তমানে ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম দুই হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।
চলতি ২০২৩-২৪ করবর্ষের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর, স্থানীয় পর্যায়ের মূল্য সংযোজন কর (মূসক) এবং আমদানি-রপ্তানি শুল্ক মিলে মোট রাজস্ব আয় হয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা, যা বিগত করবর্ষের একই সময়ের তুলনায় ১৫ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি। গত করবর্ষের ৯ মাসে রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ২৫ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, খাতভিত্তিক রাজস্ব আয়ের হিসাব হলো- ৯ মাসে আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক খাত থেকে আয় হয়েছে ৭৪ হাজার ২৬২ কোটি ৭২ লাখ টাকা, স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) থেকে ১ লাখ ৭০২ কোটি ৩৯ লাখ এবং আয়কর ও ভ্রমণ কর খাতে ৮৪ হাজার ৯০১ কোটি টাকা আয় হয়েছে। তবে এ সময়ে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আয় কিছুটা পিছিয়ে আছে। ৯ মাসে যে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তার ৯২ দশমিক ২৩ শতাংশ অর্জিত হয়েছে।
এনবিআরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২২-২৩ করবর্ষের ৯ মাসে আমদানি-রপ্তানি শুল্ক থেকে রাজস্ব আহরণ ছিল ৬৭ হাজার ৩৮০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। চলতি করবর্ষের একই সময়ে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ২৬২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ২১ শতাংশ।
আলোচ্য সময়ে আয়কর আহরণ বেড়েছে ১৯ দশমিক ২০ শতাংশ। গত করবর্ষের ৯ মাসের ৭১ হাজার ২২৭ কোটি ২২ লাখ টাকার আয়কর রাজস্ব আয় এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। আমদানি-রপ্তানি শুল্ক ও আয়করের মত মূসক আহরণের ক্ষেত্রেও উল্লেখ করার মতো প্রবৃদ্ধি এসেছে। প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ। গত করবর্ষের ৯ মাসে মূসক রাজস্ব আয় ছিল ৮৬ হাজার ৯০৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, চলতি করবর্ষে এনবিআরের রাজস্ব আয়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা।
সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়ে।
সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম হবে ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা।
বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৩ এপ্রিল বিকেল থেকেই নতুন দাম কার্যকর হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী বর্তমানে ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম দুই হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।
এর আগে চলতি এপ্রিল মাসের ৬, ৮ ও ১৮ তারিখ সোনার দাম বাড়িয়েছিল বাজুস। এর মধ্যে ৬ এপ্রিল বাড়ানো হয়েছিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা এবং ১৮ এপ্রিল দুই হাজার ৬৫ টাকা। পরে ২০ এপ্রিল ৮৪০ টাকা কমানোর এক দিন পর ২১ এপ্রিল আবার ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস। এরপর ৪৮ ঘণ্টা পার না হতেই ভালো মানের সোনার ভরি ৩ হাজার ১৩৮ কমানোর ঘোষণা দিলো বাজুস।
দেশব্যাপী চলছে প্রচণ্ড দাবদাহ। গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। চলমান দাবদাহে তৃষ্ণা নিবারণের জন্য চাহিদা বেড়েছে ডাবের। সে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে গেছে দামও। রাজধানীতে ৩০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে ছোট আকারের ডাব বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা পর্যন্ত। আর মাঝারি ও বড় আকারের ডাব প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। এটি এ বছরের রেকর্ডমূল্য।
মতিঝিল এলাকায় ভ্যানে করে ডাব বিক্রি করেন জুসিনুর। তিনি বলেন, ঈদের ছুটির পর পাইকাররা ডাবের দাম ৩০ থেকে ৬০ টাকা বাড়িয়েছে। তিনি আরও বলেন, পাঁচ বছরে ব্যবসায় এত বেশি দাম কখনো দেখেননি। এমনকি কোভিড-১৯ মহামারির সময়ও নয়।
সদরঘাটের বাদামতলীতে ডাব ও ফলের পাইকারি বিক্রেতা ইব্রাহিম সরদার জানান, সবসময় ঈদের পরপর চাহিদা কম থাকত কিন্তু এবার তীব্র দাবদাহের কারণে চাহিদা বেড়ে গেছে।
উৎপাদকদের কাছ থেকে সরবরাহকারীরা বেশি দামে ডাব কিনেছেন আর সেই কারণে পাইকারি বাজারে ডাবের দাম বাড়ছে বলে জানান এই বিক্রেতা। সে কারণেই তাকেও সরবরাহকারীদের কাছ থেকে বেশি দামেই ডাব কিনতে হয়েছে।
গতকাল সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ, গুলিস্তান, পল্টন ও শাহবাগ এলাকায় ডাবের দাম বেশ বাড়তি দেখা গেছে। ঢাকার অন্যতম পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজারেও দেখা গেছে ডাবের দাম বেশি। ব্যবসায়ীদের দাবি, বরিশাল, ভোলা, বাগেরহাট, নোয়াখালী, ফরিদপুর, যশোর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের সরবরাহ পয়েন্টেও বেড়েছে ডাবের দাম।
গত ১০ দিনের ব্যবধানে সরবরাহ পর্যায়ে ডাবের দাম প্রতিটিতে ৩০ টাকা বেড়েছে। পাইকারি বিক্রেতা সূর্য আলী জানান, ১০০টি ডাবের দাম এখন দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। এত চড়া দাম আগে দেখা যায়নি। গত রমজান মাসেও ডাবের দাম ২ থেকে ৩ হাজার টাকার কম ছিল বলে জানান তিনি।
এই দামে ক্রেতারা কিছুটা অসন্তুষ্ট হলেও গরমে পানির চাহিদা মেটাতে ডাব কিনছেন তারা। মৌচাক মোড়ে ডাব খেতে খেতে মো. মিলন নামের এক পথচারী বলেন, ঈদের আগে রমজানের মধ্যে ৬০ টাকা দিয়ে যে আকারের ডাব কিনেছিলাম; আজ সেই একই আকারের ডাম ১২০ টাকা দিয়ে খেলাম। গরমে আর কিছু তো সেভাবে খাওয়া যাচ্ছে না। সে জন্য দাম দিয়ে হলেও ডাব খেলাম।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে ঢাকায় একটি ডাবের দাম ছিল গড়ে ২২ টাকা। ২০২০ সালে প্রতিটির দাম উঠেছিল ৭৪ টাকা।
ক্যাবের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, বর্তমানে প্রতিটি ডাবের গড় দাম ১০০ টাকার নিচে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪৬ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমিতে নারিকেলের উৎপাদন ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৬৯১ টন থেকে কমে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৮ হাজার ২২১ হেক্টর জমিতে ৫ লাখ ১০ হাজার ৩৬০ টনে নেমে এসেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের পর থেকে নারকেলের উৎপাদন কমতে শুরু করে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬ লাখ ৬৩ হাজার ৮৫১ টন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৬ লাখ ৫০ হাজার ৯৩২ টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৫২০ টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫ লাখ ১৯ হাজার ৪৫৮ টন এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫ লাখ ১০ হাজার ৩৬০ টন নারিকেল উৎপাদন হয়েছে। ভোলা জেলায় ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৮৮ হাজার টন নারিকেল উৎপাদিত হয় এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জেলায় উৎপাদন হয় ১ লাখ ২৩ হাজার ৯৫০ টন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন বছরব্যাপী ফল উৎপাদন ও পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মেহেদী মাসুদ বলেন, দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নারিকেলের চাষ বাড়ছে না। দেশে চাহিদা বাড়ায় ডাব ও নারিকেলের উভয়ের দামই বেড়েছে বলে জানান তিনি।
কমানোর পরের দিনই বাড়ল সোনার দাম। ভালো মান বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বেড়েছে ৬২৯ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৭ টাকা।
আজ রোববার বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, রোববার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৫১৩ টাকা বাড়িয়ে ৯৭ হাজার ৭০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৪২০ টাকা বাড়িয়ে ৭৮ হাজার ৬৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল দেশের বাজারে রেকর্ড সোনার দাম বাড়ায় বাজুস। ওই সময় ভরিতে ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়। তাতে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮টাকা। এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিল। পরে গতকাল শনিবার ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম কমে ৮৪০ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা।
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জনাব মোহাম্মদ ইমরান।
তিনি একই সাথে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করতে প্রবাসে দেশের অসাধারণ সাফল্য গাঁথা তুলে ধরার জন্য তাদের প্রতি অনুরোধ জানান।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে সোনালী এক্সচেঞ্জের ‘গ্রাহক সমাবেশ ও এসইসিআই (SECI) অ্যাপ ক্যাম্পেইন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত এ আহ্বান জানান।
বৈধ পথে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং সোনালী ব্যাংক পিএলসি’র সহযোগী প্রতিষ্ঠান সোনালী এক্সচেঞ্জ যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এতে সোনালী ব্যাংক পিএলসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোঃ আফজাল করিম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন সোনালী এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ইনকরপোরেশন, ইউএসএ-এর সিইও দেবশ্রী মিত্র।
রাষ্ট্রদূত ইমরান উল্লেখ করেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত দেড় দশকে সকল ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে।
তিনি বলেন এই সময়কালে দেশে অনেক ইতিবাচক অর্জন ও পরিবর্তন ঘটেছে এবং যদি আমরা এই সাফল্যের গল্প সবাইকে জানাতে পারি ও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে পারি, তাহলে দেশ একটি অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে।
রাষ্ট্রদূত ইমরান বলেন, বাংলাদেশ একটি বিজয়ী জাতি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই জাতি বহুল আকাঙ্খিত স্বাধীনতা অর্জন করেছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই লক্ষ্য অর্জন থেকে দেশ এখন আর বেশি দূরে নয়।
রাষ্ট্রদূত বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের এসইসিআই অ্যাপ প্রবর্তনের প্রশংসা করেন এবং প্রবাসী বাংলাদেশিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অ্যাপটির সুবিধাগুলো সবাইকে জানানোর জন্য অনুরোধ করেন।
তিনি ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক বর্তমানে প্রদত্ত বিভিন্ন কনস্যুলার সেবার কথাও সংক্ষেপে তুলে ধরেন।
সোনালী ব্যাংকের সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আফজাল করিম তার বক্তব্যে দেশের সর্ববৃহৎ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সেবা জনগণের দোরগোঁড়ায় পৌঁছে দিতে এর বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এসইসিআই অ্যাপের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই অ্যাপটি চালু করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন এই অ্যাপটি ব্যবহার করে প্রবাসীরা তাৎক্ষণিকভাবে এবং সহজে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবে। এই অ্যাপের মাধ্যমে ও বৈধ পথে অর্থ পাঠালে দেশ অত্যন্ত উপকৃত হবে।
ওয়াশিংটন ডিসি এবং এর পার্শ্ববর্তী অঙ্গরাজ্যগুলিতে বসবাসরত বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কাউন্সেলর ও দুতালয় প্রধান শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনে বৈধপথে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১২৮ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
আজ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
তথ্যমতে, এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনে বৈধপথে ১২৮ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১১ কোটি ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১০৮ কোটি ৮১ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৯ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার।
এর আগে মার্চ মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে এসেছে ২১০ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
দেশের শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই নিম্নমুখী প্রবণতা ছিল। সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্য সূচক কমেছে। এরপরও সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়েছে। এর আগে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগে দুই মাসের বেশি সময় ধরে নিম্নমুখী ছিল শেয়ারবাজার। এতে ডিএসইর বাজার মূলধন এক লাখ কোটি টাকার ওপরে কমে যায়। তবে ঈদের আগে শেষ চার কার্যদিবস কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকে বাজার। অবশ্য তাতে খুব একটা উপকার হয়নি বিনিয়োগকারীদের। ঈদে বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে থেকেই যান বিনিয়োগকারীরা। আর ঈদের পর আবার শেয়ারবাজারে টানা দরপতন দেখা যাচ্ছে।
ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগে শেয়ারবাজার এই পতনের ধারা থেকে বেরিয়ে আসার আভাস দেয়। কিন্তু ঈদের ছুটি শেষে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার আগেই ইসরায়েলের ওপর নজিরবিহীন রকেট হামলা করে ইরান। এতে বৈঠকে অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শেয়ারবাজারেও। ফলে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই পতন দেখতে হয় বিনিয়োগকারীদের।
গত ১৭ জানুয়ারি ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। ধারাবাহিকভাবে কমে ঈদের আগে শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে সেই বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ অব্যাহত পতনের মধ্যে পড়ে ডিএসইর বাজার মূলধন হারায় ১ লাখ ৩ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা। আর ঈদের পর শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হলেও গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২১ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। গত সপ্তাহের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। অবশ্য এরপরও ১৭ জানুয়ারির সঙ্গে তুলনা করলে ডিএসইর বাজার মূলধন এখনো ৮২ হাজার ১২৪ কোটি টাকার ওপরে কম রয়েছে।
গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৮৯টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৮৫টির। আর ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৭৭ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ৪৭ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ৩৫ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ। সবকটি মূল্য সূচক কমলেও লেনদেনের গতি কিছুটা বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৭৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৩৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৪৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বা ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের শেয়ার। দৈনিক গড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার দৈনিক গড়ে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৭ লাখ টাকা। ১৬ কোটি ৮ লাখ টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ। এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বেস্ট হোল্ডিং, ফু-ওয়াং ফুড, ফু-ওয়াং সিরামিক, গোল্ডেন সন, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, শাহিনপুকুর সিরামিক এবং বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস।
চলতি মাসে তিন বার সোনার দাম বাড়ানোর পর এবার কিছুটা কমানোর ঘোষণা এসেছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) পক্ষ থেকে। শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে এই নতুন দাম কার্যকর করা হয়।
আজ শনিবার বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
সোনার দাম তিন দফায় ৪ হাজার ৫৬০ টাকা বাড়িয়ে এখন প্রতি ভরিতে কমানো হয়েছে মাত্র ৮৪০ টাকা। কমানোর পর ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা। আজ দুপুর পর্যন্ত যার দাম ছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা।
বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম কিছুটা কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, আইএমএফের ঋণের দশটি শর্তের নয়টি পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। তাই ঋণের পরবর্তী কিস্তি পেতে কোনো অসুবিধা হবে না।
তৃতীয় কিস্তির ঋণ ছাড়ের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহেই বাংলাদেশ সফরে আইএমএফ প্রতিনিধি দল আসবে বলেও জানান আব্দুর রউফ তালুকদার।
উল্লেখ্য, গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের দূরদর্শী নেতৃত্বে অর্থনীতির সবগুলো সূচকে বাংলাদেশ সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখে চলেছে।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে দিনভর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফ ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের স্প্রিং মিটিং-২০২৪-এর উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল এখন ওয়াশিংটনে অবস্থান করছে। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
গভর্নর বলেন, মরিশাসের সঙ্গে অফশোর ব্যাংকিং চুক্তি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে মরিশাসের ব্যাংকের লেনদেন সহজ হবে।
তিনি বলেন, মরিশাসের গভর্নরের সঙ্গে এ বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন। এর ফলে মরিশাসে অবস্থানরত ৪০ হাজার বাংলাদেশি খুব সহজেই বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবেন। এখন দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা সরাসরি রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেন না।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন।
আজ শুক্রবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে অর্থমন্ত্রী এ তিনি কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং বিশ্বব্যাংক গ্রুপের স্প্রিংমিটিং-এ বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিতে অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলী এখন ওয়াশিংটনে অবস্থান করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এবং মাহমুদ আলীর বর্ণাঢ্য কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক কর্মজীবন সংক্ষেপে তুলে ধরেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন এবং তার নেতৃত্বে দেশ সামনের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব নিয়েছেন এবং তিনি জাতিকে এর অভীষ্ঠ লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু দেশে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির অস্তিত্ব এখনো বিদ্যমান এবং তারা দেশের চলমান উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার জন্য ধ্বংসাত্বক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।’
আবুল হাসান মাহমুদ আলী ১৯৭১ সালে নিউইয়র্কে তার কূটনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণা করেন। তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত প্রথম কূটনীতিক যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
এর আগে অর্থমন্ত্রী দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্নারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
দূতাবাসে পৌঁছালে অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলীকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান এবং দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারা।