রোববার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
৫ পৌষ ১৪৩২

গত অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি ৪৪ হাজার কোটির বেশি

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। ছবি: দৈনিক বাংলা
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১০ জুলাই, ২০২৩ ২১:৩৩

রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংস্থাটির রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩ লাখ ২৫ হাজার ২৭২ কোটি টাকা, লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৪৪ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা কম। গত অর্থবছর কর আদায় বেড়েছে ৮ শতাংশ। ফলে টানা ১১ বছরের মতো রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলো এনবিআর।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, আমদানি-রপ্তানি খাত থেকে ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৯১ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। এ খাতে ঘাটতি ১৯ হাজার ২৮২ কোটি টাকা।

মূল্য সংযোজন খাত (মূসক) বা (ভ্যাট) থেকে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এ খাতে ঘাটতি ১৬ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা।

আর আয়কর খাত থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। ঘাটতি ৯ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা।

আমদানি রপ্তানিতে ২.৫৬ শতাংশ, মূসকে ১১.২৭ শতাংশ আর আয়কর খাতে ৯.৬২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

২০২১-২২ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার কোটি টাকা। ওই বছর ৩ লাখ ৮৫২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। সেই হিসাবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ঘাটতি হলো বাড়তি ১৬ হাজার কোটি টাকা।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ঘাটতি বিষয়ে আমরা যা ধারণা করেছিলাম, তার তুলনায় ঘাটতি আছে। ৩ লাখ ৩০ থেকে ৩ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হবে বলে ধারণা করেছি। সেটাও হয়নি। রাজস্ব আদায় বাড়াতে এনবিআরের সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

বিষয়:

বিএসইসির শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নবগঠিত শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল (এসএসি) প্রথম সভা গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় শরিয়াহ ভিত্তিক পুঁজিবাজার কার্যক্রম আরও সুসংহত, স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডসম্মত করার বিষয়ে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় বিএসইসি ভবনের কমিশন সভা কক্ষে নবগঠিত কাউন্সিলের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাকিব মুহাম্মদ নাসরুল্লাহ। বিএসইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

সভায় কাউন্সিলের সদস্যদের মধ্যে জামিয়া ইসলামীয়া দারুল উলুমের সিনিয়র মুফতি ও মুহাদ্দিস মুফতি মাসুম বিল্লাহ, জামিয়াহ শরিয়াহ মালিবাগ ঢাকার সিনিয়র ডেপুটি মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রুহুল আমিন, সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর সাদাত, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং মালদ্বীপ ইসলামী ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও চেয়ারম্যান কে এ এম মাজেদুর রহমান এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের চিফ ফিন্যান্স অফিসার মোহাম্মদ আব্দুর রহিম উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনজুর-ই-এলাহী এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নিউ অরলিন্সের অধ্যাপক ও ইসলামিক ফিন্যান্স স্পেশালিস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কবির হাসান জুমের মাধ্যমে অনলাইনে সভায় অংশগ্রহণ করেন।


এশিয়ার বাজারে ঊর্ধ্বমুখী চালের দাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

চীনের সঙ্গে থাইল্যান্ডের রপ্তানি চুক্তি ও আঞ্চলিক বাজারে চাহিদা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে গত সপ্তাহে এশিয়ার বাজারে ঊর্ধ্বমুখী ছিল চালের দাম। বিশেষ করে থাইল্যান্ডে চালের দাম সাত মাসেরও বেশি সময়ে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। একই সময় ভারত ও ভিয়েতনামেও চালের রপ্তানিমূল্য বেড়েছে। পাশাপাশি মুদ্রার বিনিময় হারের পরিবর্তন ও নতুন ক্রয়দেশ দরবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। খবর বিজনেস রেকর্ডার।

থাইল্যান্ডে ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম গত সপ্তাহে পৌঁছেছে টনপ্রতি ৪১৫ ডলারে, যা ৮ মের পর সর্বোচ্চ। আগের সপ্তাহে এ দর ছিল ৪০০ ডলার।

ব্যাংককভিত্তিক এক ব্যবসায়ী জানান, নভেম্বরে থাইল্যান্ড থেকে পাঁচ লাখ টন চাল আমদানির ঘোষণা দেয় চীন। এর পরই দাম বাড়তে শুরু করেছে খাদ্যশস্যটির। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে যে দ্বিতীয় মৌসুমের ধান কাটা হবে, তা বন্যার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। ফলে সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে বড় কোনো অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে না।

ভারতেও চালের রপ্তানিমূল্য কিছুটা বেড়েছে। নয়াদিল্লিভিত্তিক এক রপ্তানিকারক বলেন, ‘দাম তুলনামূলক কম থাকায় এশিয়া ও আফ্রিকার কিছু ক্রেতা ছোট পরিসরে চাল আমদানি শুরু করেছেন। এতে ধীরে ধীরে রপ্তানি চাহিদা বাড়ছে।’

চলতি সপ্তাহে ৫ শতাংশ খুদ্যযুক্ত সিদ্ধ চালের দাম পৌঁছেছে টনপ্রতি ৩৪৮-৩৫৬ ডলারে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৩৪৭-৩৫৪ ডলার। একই সময় ৫ শতাংশ খুদ্যযুক্ত আতপ চাল বেচাকেনা হয়েছে টনপ্রতি ৩৪৫-৩৫০ ডলারে। ডলারের বিপরীতে রুপির বিনিময় হার রেকর্ড নিম্নস্তরে নামায় রপ্তানি থেকে রুপির হিসেবে আয় বেড়েছে বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।

ভিয়েতনামেও চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, গত বৃহস্পতিবার দেশটিতে ৫ শতাংশ খুদ্যযুক্ত চালের দাম দাঁড়িয়েছে টনপ্রতি ৩৭০-৩৭৫ ডলারে। আগের সপ্তাহে এ দর ছিল ৩৬৫-৩৭০ ডলার। ৬ নভেম্বরের পর এটি সর্বোচ্চ।

হো চি মিন সিটিভিত্তিক এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘চীন, ইন্দোনেশিয়া ও আফ্রিকার কয়েকটি বাজার থেকে ভিয়েতনামের চালের চাহিদা বাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। থাইল্যান্ডের তুলনায় ভিয়েতনামের চালের দাম এখনো তুলনামূলক কম।’

বিশ্লেষকদের মতে, বড় আমদানিকারকদের নতুন ক্রয়াদেশ ও মুদ্রাবাজারের পরিবর্তনের প্রভাবে আগামী কয়েক সপ্তাহে এশিয়ার বাজারে ঊর্ধ্বমুখী থাকতে পারে চালের দাম।


সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা মূলধন হারাল ডিএসই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সপ্তাহ ব্যবধানে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ বা ১০ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এই মূলধন ছিল ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা।

এ সপ্তাহে কমেছে ডিএসইর সব কয়টি সূচকও। প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৩২ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ৪৩ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২৮ শতাংশ। আর ডিএসইএস সূচক কমেছে ৩৩ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ।

সূচকের পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫৪৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৮৮ কোটি টাকা। এক সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ৫৩৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

আর প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৩০ কোটি ২২ লাখ টাকা বা ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ। চলতি সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৮৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৪১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৩৮৯টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৩২টি কোম্পানির, কমেছে ৩৩৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।

এদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ও সিএসসিএক্স যথাক্রমে ১ দশমিক ৭৮ শতাংশ ও ১ দশমিক ৭২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৩,৬২৪ দশমিক ৩৬ পয়েন্টে ও ৮,৪০৩ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে।

এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ ও সিএসআই সূচক ২ দশমিক ২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১,০৪৬ দশমিক ৩২ পয়েন্টে ও ৮৫৮ দশমিক ১৮ পয়েন্টে। আর সিএসই-৩০ সূচক কমেছে ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। সূচকটি অবস্থান করছে ১২,০৯০ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে।

চলতি সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা, যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ৬৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সপ্তাহ ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ৪০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।

সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ২৫০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৭১টির, কমেছে ১৫৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির কোম্পানির শেয়ারদর।


সরকারি অনুমোদনের অপেক্ষায় পুণ্ড্র ইকোনমিক জোন

কর্মসংস্থান হবে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে 'প্রাইভেট পুণ্ড্র ইকোনমিক জোন’ নামের একটি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল হতে যাচ্ছে বগুড়ায়। ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) ও এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন লিমিটেড (বিসিএল) গড়ে তুলছে ওই শিল্পাঞ্চলটি ।

সরকারি অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা নামের শিল্পাঞ্চলটি উত্তরাঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে দিতে পারে। এটি সম্পূর্ণভাবে চালু হলে আন্তর্জাতিক মানের গ্লাস, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও ভেষজ তেল উৎপাদন কারখানা, ফিডমিল ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে।

জানা যায়, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে বগুড়ার গোকুল এলাকায় প্রায় ৪০০ বিঘা জমি নিয়ে উত্তরাঞ্চলের প্রথম বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। তবে আরো ১০০ বিঘা ক্রয়ের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সে ক্ষেত্রে শিল্পাঞ্চলটির মোট জমির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০০ বিঘায়।

প্রাইভেট পুণ্ড্র ইকোনমিক জোনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের বড় বড় কোম্পানি ও ব্যবসায়ী গ্রুপগুলো এখানে শিল্প-কারখানা স্থাপনের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রাথমিকভাবে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই পিএলসি (নেসকো) চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। তবে এখানে শিল্পায়ন দ্রুত করতে হলে দরকার গ্যাস। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে আলোচনা চলছে।

জানা গেছে, এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে একটি কারখানা স্থাপন করেছে বিসিএল গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ। গ্যাস সংযোগ পাওয়া মাত্রই কারখানাটি উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে। এ কারখানায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার পুরুত্বের বিভিন্ন ধরনের গ্লাসের পাশাপাশি রঙিন গ্লাসও তৈরি করা হবে, যা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও রফতানি উপযোগী। প্রাথমিকভাবে এখানে অন্তত এক হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।

শিল্পাঞ্চলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এখানে বিভিন্ন শিল্প-কারখানার জন্য গ্যাসের প্রাথমিক চাহিদা দেড় লাখ কিউবিক মিটার ধরা হয়েছে। তবে বিসিএল গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানাটি চালু করতেই প্রয়োজন ৫০ হাজার কিউবিক মিটার গ্যাস।

বগুড়ার শিল্প-মালিক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, শিল্পাঞ্চলটিতে পর্যাপ্ত শ্রম সুবিধা, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সুবিধা এবং স্বল্পমূল্যে শিল্প অবকাঠামো গড়ে তোলার মতো জায়গা সহজলভ্য হওয়ায় উদ্যোক্তাদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিশেষত সরাসরি সড়ক ও রেল সুবিধা। এছাড়া বিমানবন্দর নির্মাণের কাজও এগিয়ে চলেছে। এসব সুবিধার কারণে এখানে ট্যানারি, রড-সিমেন্ট, মোটরবাইক ও গাড়ি তৈরির কারখানা স্থাপন করতে চান উদ্যোক্তা।

প্রস্তাবিত এ প্রকল্প অনুমোদনের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৭ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দল প্রস্তাবিত এলাকাটি পরিদর্শন করে। টিএমএসএস কর্তৃপক্ষ আশা করছে, কিছুদিনের মধ্যেই সরকারি অনুমোদন পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা (বিসিক) বগুড়ার এক কর্মকর্তা বলেন, জায়গা পেলে বগুড়ায় এখনই দেড় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ সম্ভব। শিল্প-কারখানা স্থাপনের জন্য সহজ শর্তে জমি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে এখানে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। আর কর্মসংস্থান হবে স্থানীয় হাজার হাজার শ্রমিকের।


শিল্পের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ভ্যাট ও কর কাঠামোকে যুক্তিসঙ্গত করার আহ্বান বিসিআইয়ের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

উৎপাদন শিল্পের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ভ্যাট ও কর কাঠামোকে যুক্তিসঙ্গত করাসহ নতুন উদ্যোক্তা, স্টার্ট-আপের মতো সংস্থাগুলোকে সরকারি সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)-এর বোর্ডরুমে ৩৯তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এ কথা জানানো হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিসিআইয়ের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)। সভার শুরুতে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনায় ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পরে বিসিআইয়ের মরহুম সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং সম্প্রতি মৃত্যুবরণকারী প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সৈয়দ মঞ্জুর এলাহি ও সাবেক সভাপতি এটিএম ওয়াজিউল্লাহের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় ও নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়।

এরপর আলোচ্য সূচি অনুযায়ী সভাপতির অনুমতিক্রমে সভার কার্যক্রম পরিচালনা করেন বিসিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল ড. মো. হেলাল উদ্দিন এনডিসি।

বিসিআইয়ের সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, আমি আনন্দিত ব্যবসায়ী নেতাদের কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এসেছে। আপনাদের সবার সহযোগিতা ও সমর্থন নিয়ে বিসিআই তার সদস্যদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।

দেশের একক ও একমাত্র জাতীয় শিল্প চেম্বার হিসেবে বিসিআই দেশের সব প্রকার শিল্পের বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য কাজ করে চলেছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে শিল্পের সমস্যা সমাধানে সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে কাজ করে চলেছে।

তিনি বলেন, ‘আজকের সভায় ট্যাক্স ও ভ্যাটবিষয়ক যে সমস্যাগুলো তুলে ধরা হয়েছে, এগুলো নিয়ে বিসিআই সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করবে।’

কিছু বিষয়ের ওপর আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত জানিয়ে বিসিআই সভাপতি বলেন, ‘উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে বর্তমান শিল্পের প্রতিযোগিতামূলকতা বজায় রাখার জন্য আমাদের সব শিল্প এলাকায় গ্যাস এবং বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করা।’

উৎপাদনের কার্যকর সরবরাহ শৃঙ্খল বজায় রাখার জন্য এবং উৎপাদনের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য আমাদের মসৃণ গণতান্ত্রিক রূপান্তর করা। আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি এবং আয় বৈষম্য কমাতে আমাদের টেকসই এমএসএমই উন্নয়ন পরিবেশের ওপর মনোযোগ দেওয়া।

এ ছাড়া শিল্প খাতে গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য শিক্ষাবিদ, শিল্প এবং সরকারের যৌথ সহযোগিতা। পণ্য টেস্টিং এবং সার্টিফিকেশন উদ্যোক্তাবান্ধব করা। নতুন উদ্যোক্তা এবং স্টার্ট-আপগুলোকে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সহায়তা দেওয়া।

উৎপাদন শিল্পের প্রবৃদ্ধির ওপর দৃষ্টি দিয়ে ভ্যাট এবং কর কাঠামোকে যুক্তি সঙ্গত করা। আলোচনা সভায় অংশ নেন বিসিআইয়ের সদস্য ওবায়দুর রহমান, বিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শাহেদুল ইসলাম, বিসিএমইয়ের সভাপতি মইনুল ইসলাম, উত্তরা মোটর করপোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, বিসিআইয়ের সহসভাপতি মো. ইউনুস, বিসিআই সদস্য নুরুল হাসান মিয়া, শহিদুল হক, মো. জিয়াউদ্দিন প্রমুখ। সভায় বিসিআই সদস্য ও পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষ ভাগে বিসিআইয়ের ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি মিসেস প্রীতি চক্রবর্তী সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ও ভবিষ্যতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।


এডিপিতে ধস: ৫ শতাংশও খরচ হয়নি ৮ মন্ত্রণালয়–বিভাগের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই–নভেম্বর) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি—এডিপি বাস্তবায়নে ভয়াবহ স্থবিরতার চিত্র উঠে এসেছে। এ সময়ে আটটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের বরাদ্দের ৫ শতাংশের বেশি অর্থ ব্যয় করতে পারেনি। এর মধ্যে সংসদবিষয়ক সচিবালয় এক টাকাও খরচ করতে পারেনি।

অন্য সাতটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ হলো—আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি), পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ।

সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) জুলাই-নভেম্বর মাসের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হালনাগাদ চিত্র প্রকাশ করেছে। সেখানে এই চিত্র পাওয়া গেছে।

আইএমইডি সূত্রে জানা গেছে, সংসদবিষয়ক সচিবালয়ের এক প্রকল্পে ২০ লাখ বরাদ্দ থাকলেও এখনো কোনো টাকা খরচ করতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

স্বাস্থ্য খাতেও রয়েছে একই চিত্র। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ১৫টি প্রকল্পে ৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও ব্যয় হয়েছে মাত্র ২৯৩ কোটি টাকা। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ৪ হাজার ৮১০ কোটি টাকার বিপরীতে খরচ হয়েছে মাত্র ৮৬ কোটি টাকা।

আইএমইডি সূত্রে জানা গেছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বরাদ্দের মাত্র ২ দশমিক ৩১ শতাংশ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) ২ দশমিক ১২ শতাংশ, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং জননিরাপত্তা বিভাগ ১ দশমিক ২৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় করেছে।

সার্বিকভাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এই সময়ে মোট ব্যয় হয়েছে ২৮ হাজার ৪৩ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা কম।

উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই এডিপির আওতায় বর্তমানে ১ হাজার ১৯৮টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার বরাদ্দের মাত্র ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরে একই সময়ে এ বাস্তবায়ন হার ছিল ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ। ওই অর্থবছরে বরাদ্দও বেশি ছিল। আগের দুই অর্থবছর ২০২৩-২৪ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথম পাঁচ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হার ছিল যথাক্রমে ১৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ ও ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল বরাদ্দের ১৮ দশমিক ৬১ শতাংশ। অর্থাৎ গত কয়েক বছর ধরে এডিপি বাস্তবায়নের হার কমছেই।

আইএমইডির তথ্য-উপাত্ত বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ২৮ হাজার ৪৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৩৪ হাজার ২১৫ কোটি টাকা। এর আগে ২০২৩-২৪ ও ২০২২-২৩ এই সময়ে এডিপি ব্যয় ছিল যথাক্রমে ৪৬ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা এবং ৪৭ হাজার ১২২ কোটি টাকা।

এ দিকে একক মাসের হিসাবেও গত নভেম্বরে বাস্তবায়নের হার অন্যান্য বছরের একই মাসের চেয়ে কম। মাসটিতে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে বরাদ্দের মাত্র ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই মাসে ছিল ৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত নভেম্বরে ব্যয় হয়েছে ৮ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা। গত বছরের নভেম্বরে এ পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকার বেশি।

আইএমইডির প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় হয়েছে ১৫ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা, যা বরাদ্দের ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ১৯ হাজার ৪১১ কোটি টাকা, যা ছিল বরাদ্দের ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।


চলতি বছর রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছেছে কয়লার বৈশ্বিক চাহিদা

আইইএর প্রাক্কলন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

বিশ্বব্যাপী কয়লার চাহিদা চলতি বছর রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) ‘কোল ২০২৫’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বৈশ্বিক জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কয়লার ব্যবহার কমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখনো এটি সবচেয়ে বড় জ্বালানির উৎস। তাই চলতি বছর জ্বালানি পণ্যটির চাহিদা বেড়ে রেকর্ড ৮৮৫ কোটি টনে পৌঁছেছে বলে প্রাথমিকভাবে হিসাব করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।

অন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কয়লা ব্যবহারে ভিন্নধর্মী প্রবণতা দেখা গেছে। এ সময় ভারতে টানা ভারি মৌসুমি বৃষ্টির কারণে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে। ফলে এ সময় দেশটিতে পাঁচ দশকের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো কয়লা ব্যবহার কমেছে।

বিশ্বে শীর্ষ কয়লা ব্যবহারকারী দেশ চীন। দেশটিতে চলতি বছর জ্বালানি পণ্যটির চাহিদা তুলনামূলক স্থিতিশীল ছিল। আইইএর পূর্বাভাস অনুযায়ী, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটিতে কয়লার ব্যবহার কিছুটা কমতে পারে। তবে চীনে বিদ্যুতের চাহিদা প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত বাড়লে অথবা নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারে ধীরগতি দেখা দিলে কয়লার চাহিদা পূর্বাভাসের তুলনায় বেশি হতে পারে।

আইইএ আরও জানায়, বিশ্বব্যাপী কয়লার চাহিদা চলতি বছর রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছালেও ২০৩০ সালের মধ্যে তা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পরমাণু ও প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি জ্বালানি পণ্যটির চাহিদা কমার পেছনে ভূমিকা রাখবে।

আইইএর ডিরেক্টর অব এনার্জি মার্কেটস অ্যান্ড সিকিউরিটি কেইসুকে সাদামোরি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘কয়লার বৈশ্বিক চাহিদা স্থিতিশীল হয়ে আসছে। চলতি দশকের শেষ পর্যন্ত তা খুব ধীরে ও ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করবে।’

আইইএ আরও জানায়, অন্যান্য দেশে কমলেও ২০৩০ সালের মধ্যে অভ্যন্তরীণভাবে কয়লার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি বাড়বে ভারতে। দেশটিতে চাহিদা গড়ে প্রতি বছর ৩ শতাংশ বাড়তে পারে। এ সময় জ্বালানি পণ্যটির মোট ব্যবহার পৌঁছতে পারে ২০ কোটি টনে। অন্যদিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় চাহিদা ৪ শতাংশের বেশি বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রধান উত্তোলনকারী দেশগুলোয় কয়লা উত্তোলন কমতে পারে। তবে এ সময় আমদানি নির্ভরতা কমাতে কয়লা উত্তোলন বাড়াতে পারে ভারত সরকার। এর আগে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছিল, দীর্ঘমেয়াদে ভারতে কয়লার ব্যবহারও উর্ধ্বমুখী থাকবে।

বিশ্বব্যাংকের কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৬ ও ২০২৭ সালে বিশ্বব্যাপী কয়লার ব্যবহার তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকবে। বিদ্যুচ্চালিত যানবাহন (ইভি), শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও ডাটা সেন্টারের বিস্তারের ফলে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লেও নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের কারণে কয়লার ওপর নির্ভরতা কমতে থাকবে।


দশমিনায় গরু-মহিষেই ঘুরছে অর্থনীতির চাকা

চরজুড়ে দুধ ও মাংসের অপার সম্ভাবনা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলায় গরু-মহিষেই ঘুরছে অর্থনীতির চাকা। পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে গবাদিপশু পালন এখন আর শুধু পারিবারিক আয়ের বিকল্প নয়; এটি দারিদ্র্যবিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং স্থানীয় অর্থনীতির চাকা ঘোরানোর অন্যতম প্রধান শক্তিতে পরিণত হয়েছে। কৃষিকাজের পাশাপাশি গরু ও মহিষ লালন-পালনের মাধ্যমে উপজেলার হাজারও ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—এই খাতের সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশ খামারিই কোনো প্রকার ব্যাংক ঋণ ছাড়াই নিজস্ব শ্রম ও সীমিত পুঁজি বিনিয়োগ করে উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, দশমিনা উপজেলায় বর্তমানে ৫ হাজার ৬২০টিরও বেশি গরু ও মহিষ পালন করা হচ্ছে। এর মধ্যে রনগোপালদী ও চর বোরহান ইউনিয়নে প্রায় দুই হাজার ৫০০টি, আলীপুরা ইউনিয়নে এক হাজার ৩০০টি, বেতাগী-সানকিপুর ইউনিয়নে এক হাজার ১০০টি, বহরমপুর ইউনিয়নে এক হাজার ১৫০টি, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নে এক হাজার ৯০০টি এবং সদর ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার ৯৫০টি গবাদি পশু রয়েছে।

প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় মোট গবাদিপশুর প্রায় ৬৫ শতাংশই মহিষ, যা দেশের অন্যান্য উপজেলার তুলনায় ব্যতিক্রমী। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, চরাঞ্চলের পরিবেশ মহিষ পালনের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী হওয়ায় এখানে মহিষের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। একটি মহিষ সাধারণ গৃহপালিত গরুর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ দুধ এবং দেড় গুণ বেশি মাংস উৎপাদনে সক্ষম। হিসাব অনুযায়ী, দশমিনা উপজেলায় বিদ্যমান মহিষ থেকে বছরে প্রায় ১০ লাখ ৫০ হাজার লিটার দুধ এবং প্রায় সাত লাখ ৪০ হাজার কেজি মাংস উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার চর হাদি এলাকার খামারি আবদুস সালামের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আগে শুধু ধান চাষ করতাম, তাতে পরিবার নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতাম। এখন আমার তিনটি গরু ও একটি মহিষ আছে। দুধ বিক্রি করে প্রতিদিন গড়ে ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা আয় হয়। এতে সংসারের অভাব অনেকটাই কমেছে।’

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দশমিনা উপজেলার মোট জমির প্রায় ২৫ শতাংশ চরাঞ্চল। এসব এলাকার প্রায় ১০ শতাংশ জমি অনাবাদি এবং ফসলি জমির প্রায় ৭৫ শতাংশ এক ফসলি। বছরের অন্তত ছয় মাস এসব জমিতে কোনো ফসল উৎপাদন কার্যক্রম থাকে না। ফলে কৃষিনির্ভর আয় সীমিত হয়ে পড়ে। এই শূন্যস্থান পূরণে চরাঞ্চলে গবাদিপশু পালন কার্যক্রম বিকল্প ভূমিকা রেখেছে কৃষকের জীবনে।

তবে সম্ভাবনার পাশাপাশি রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ। চর সামাদ এলাকার খামারি করিম মোল্লা বলেন, ‘পশু অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য মূল ভূখণ্ডে যেতে হয়। এতে সময় ও টাকা দুটোই নষ্ট হয়। অনেক সময় দেরি হওয়ায় পশু মারা ও যায়।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, চরাঞ্চলগুলোকে পরিকল্পিতভাবে চারণভূমি হিসেবে ঘোষণা করে উন্নত ঘাস চাষ, নিয়মিত টিকাদান, স্বল্প সুদে ঋণ, প্রশিক্ষণ ও বাজারজাত ব্যবস্থার উন্নয়ন করা গেলে একদিকে যেমন হাজারও পরিবার স্বাবলম্বী হবে, অন্যদিকে জেলার দুধ ও মাংসের চাহিদা পূরণ করে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করা সম্ভব হবে।

দশমিনা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শুভেন্দু সরকার বাসসকে বলেন, ‘দশমিনার চরাঞ্চলে গরু ও মহিষ পালনের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে মহিষের জন্য প্রাকৃতিক বাথান ও বিস্তীর্ণ চরভূমি আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মহিষ দ্বিচারী প্রাণী হওয়ায় চরাঞ্চলের ঘাস ও জলাভূমি তাদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বিশেষ করে শীতকালে পানির সংস্পর্শে থাকলে মহিষের প্রজনন হার বৃদ্ধি পায়। এই অঞ্চলে হাঁস পালনও অত্যন্ত সম্ভাবনাময়।’

স্থানীয়দের প্রত্যাশা, সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে দশমিনার অবহেলিত চরাঞ্চলগুলো অদূর ভবিষ্যতে গবাদিপশু উৎপাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত হবে। এতে দারিদ্র্য হ্রাসের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জাতীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।

সূত্র: বাসস


বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ডিএসই পর্ষদের পরিচালক হানিফ-সাজেদুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদের দুইটি শূন্যপদে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মো. হানিফ ভুঁইয়া ও মো. সাজেদুল ইসলাম শেয়ারহোল্ডার পরিচালক পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ডিএসইর ৬৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) তারা আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচালনা পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।

ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের দুইটি শূন্যপদে নির্বাচন পরিচালনার জন্য পরিচালনা পর্ষদ ১৪ অক্টোবর ১১০১তম বোর্ড সভায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি (বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন) মো. আব্দুস সামাদকে চেয়ারম্যান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করে৷ নির্বাচন কমিশনের অন্য দুই সদস্য হলেন ডিএসইর শেয়ারহোল্ডার প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইব্রাহিম এবং ড. মো. জহিরুল ইসলাম।

নির্বাচন কমিশন দুজন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নির্বাচনের জন্য ২৮ অক্টোবর নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করেন। নির্বাচনি তফসিল অনুসারে ১৩ নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও জমা দেওয়ার শেষ দিন (অফিস চলাকালীন সময় বিকাল ৫:০০ টা পর্যন্ত)।

নির্ধারিত সময়ে রেপিড সিকিউরিটিজ লিমিটেড এর শেয়ারহোল্ডার প্রতিনিধি মো. হানিফ ভুঁইয়া এবং শ্যামল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এর শেয়ারহোল্ডার প্রতিনিধি মো. সাজেদুল ইসলাম মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ৬৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় দুজন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান এবং মো. শাকিল রিজভী অবসর নেবেন।


ডিএসইতে ‘ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক’ উদ্বোধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (ডিএসই)’র তথ্য সেবা আরও সহজ ও কার্যকর করতে ‘ডিএসই ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক’ উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তথ্য সেবার মান বাড়াতেই এই বিশেষ হেল্প ডেস্কটি বসানো হয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুর রহমান এই ডেস্কের উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসাদুর রহমান বলেন, এই ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালুর ফলে পুঁজিবাজার সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য পাওয়া এখন অনেক সহজ হবে। বিনিয়োগকারী ও স্টেকহোল্ডারদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার দ্রুত ও কার্যকর সমাধান নিশ্চিত করবে এই উদ্যোগ। এর ফলে ডিএসইর সেবার মান আরও স্বচ্ছ ও গ্রাহকবান্ধব হবে।

আসাদুর রহমান আশা প্রকাশ করে বলেন, এই হেল্প ডেস্ক ডিএসইর বাজার অংশগ্রহণকারীদের আস্থা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. আসিফুর রহমান, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মো. ছামিউল ইসলাম এবং প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ প্রতিষ্ঠানটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


স্থলবন্দরগুলোতে ডিজিটাল ট্রাক মনিটরিং সিস্টেম চালু করেছে এনবিআর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারত থেকে আমদানিকৃত প্রতিটি পণ্যবাহী ট্রাকের প্রবেশ এবং খালি ট্রাকের ফেরত সংক্রান্ত তথ্য ইলেকট্রনিকভাবে সংরক্ষণের লক্ষ্যে ‘আসিকুডা ওয়ার্ল্ড’ সিস্টেমে ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ নামক একটি নতুন সাব-মডিউল চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এনবিআরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এনবিআর জানায়, ভারতীয় প্রতিটি পণ্যবাহী ট্রাকের দেশে প্রবেশ এবং খালি ট্রাকের ফেরত সংক্রান্ত তথ্য এখন থেকে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে এই সাব-মডিউলটির পাইলট কার্যক্রম গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। এর আগে এ ধরনের কার্যক্রম ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে পরিচালিত হতো।

নতুন মডিউল চালুর ফলে ভারতীয় ট্রাকের আগমন ও বহির্গমনের প্রকৃত তথ্য নির্ভুলভাবে সংরক্ষণ করা যাবে। পাশাপাশি ট্রাকের অবস্থানকাল নির্ণয়, রিয়েল-টাইম মনিটরিং এবং তাৎক্ষণিক রিপোর্ট প্রণয়ন সহজ হবে। এতে তথ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত হওয়ার পাশাপাশি রাজস্ব হানি রোধেও উল্লেখযোগ্য সহায়তা মিলবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর-এর মতে, এই ডিজিটাল ব্যবস্থার মাধ্যমে কাস্টমস কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে, একইসঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষা জোরদার হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, খুব শিগগিরই দেশের সব স্থল বন্দরে ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ সাব-মডিউলের লাইভ অপারেশন শুরু করা হবে।


স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ব্যাংকিং খাত : গভর্নর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দেশের ব্যাংকিং খাত একটি কঠিন সময় পার করে ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং আস্থা ধরে রাখতে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক দৃঢ়ভাবে কাজ করছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘ব্যাংকিং খাত সংস্কার : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহসান এইচ মনসুর এ কথা বলেন।

গভর্নর বলেন, ব্যাংকিং খাতে জনআস্থা ধরে রাখা, সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এবং খাতটির কাঠামোগত দুর্বলতা দূর করাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অগ্রাধিকার।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে আস্থা পুরোপুরি ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হলেও তা অনেকাংশে ধরে রাখা গেছে। এই কঠিন সময়ে আস্থা ধরে রাখতে পারাটাই একটি বড় অর্জন।

ড. মনসুর বলেন, ‘অনেকে আশঙ্কা করছেন সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অর্থনীতি ভেঙে পড়তে পারে। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই-এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।’

তিনি জানান, বাংলাদেশের ব্যালান্স অব পেমেন্ট অবস্থান শক্তিশালী, বৈদেশিক লেনদেন হিসাবে বড় উদ্বৃত্ত রয়েছে এবং রিজার্ভ গত এক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারভিত্তিক ও স্বচ্ছ পদ্ধতিতে ডলার ক্রয় করছে এবং বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে কোনো চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্য হলো নিজস্ব অর্থনৈতিক সক্ষমতা দিয়ে রিজার্ভ বাড়ানো, ঋণ নিয়ে নয়।

গভর্নর জানান, বছরের শেষ নাগাদ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৪ থেকে ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনে আইএমএফের অর্থ ছাড় হোক বা না হোক, তা বিবেচ্য নয়। তিনি বলেন, ‘ব্যালেন্স অব পেমেন্ট স্থিতিশীল রাখতে আইএমএফের অর্থ অপরিহার্য নয়।’

ব্যাংকিং খাতের সংস্কার প্রসঙ্গে গভর্নর তিনটি স্থায়ী চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন- কিছু ব্যাংকে দুর্বল গভর্ন্যান্স, বেশ কয়েকটি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি এবং উচ্চমাত্রার খেলাপি ঋণ (এনপিএল)। প্রকৃত এনপিএল হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তথ্য গোপন না করে বাস্তব চিত্র প্রকাশ করাই সংস্কারের প্রথম ধাপ।

তিনি জানান, ইতোমধ্যে ১৪টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং দুর্বল ব্যাংকের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর হস্তক্ষেপ করবে। তবে যেসব ব্যাংক নিজেদের কর্মদক্ষতা ও আমানত সংগ্রহে সক্ষমতা দেখাতে পারছে, সেগুলোর ওপর বিধিনিষেধ ধীরে ধীরে শিথিল করা হচ্ছে। পাঁচটি ব্যাংকের একীভূতকরণ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, সব আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং শিগগিরই নতুন কাঠামোতে ব্যাংকগুলো কার্যক্রম শুরু করবে।

আমানতকারীদের সুরক্ষায় ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স স্কিমের আওতায় সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা দ্রুত পরিশোধের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা ফেরাতে লভ্যাংশ ও বোনাস প্রদানে কঠোর শর্ত আরোপ করা হয়েছে এবং বড় অঙ্কের ঋণ তৃতীয় পক্ষ দিয়ে যাচাই করা হবে। অপব্যবহার প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও পরিচালকদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।

ভবিষ্যৎ সংস্কার পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যাংক রেজুলেশন আইন, ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স, ইনসলভেন্সি আইন এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি (এএমসি) গঠনের মাধ্যমে আর্থিক খাতকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতার ওপর জোর দিয়ে ড. মনসুর বলেন, কার্যকর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য আইনি সুরক্ষা ও নেতৃত্বের স্বাধীনতা অত্যন্ত জরুরি। ‘চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে সিদ্ধান্ত নিতে পারলেই প্রকৃত সংস্কার সম্ভব।’

বন্ড মার্কেট উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, কেবল ব্যাংকনির্ভর অর্থায়ন টেকসই নয়। করপোরেট বন্ড মার্কেট সম্প্রসারণের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের বিকল্প পথ তৈরি করতে হবে।

গভর্নর বলেন, ‘আমরা এখনো পুরোপুরি সংকটমুক্ত নই। তবে সঠিক সংস্কার ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতকে সুস্থ ধারায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।’

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচন একটি সন্ধিক্ষণ। রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ব্যাংকিং খাতকে কীভাবে সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী করা হবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে।’

ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের পরিষ্কার করতে হবে যে তারা কী আগের মতো ক্ষমতাশালী পুঁজিপতিদের হাতে ব্যাংকিং খাতকে ব্যবহার করতে দেবেন, নাকি জনগণের কল্যাণে, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পুঁজি জোগানের জন্য এই খাতকে ব্যবহার করবেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক দখলের মাধ্যমে ব্যাংক খাত ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। এ জন্য এখন খেলাপি ঋণ ৩৬ শতাংশ পৌঁছে গেছে। এখন যে সংস্কার হচ্ছে, তা রাজনৈতিক সরকার কতটা এগিয়ে নেবে-তা গুরুত্বপূর্ণ।’

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালা ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।


ছেঁড়া-ফাটা নোট নিতে না চাইলেই ব্যবস্থা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ছেঁড়া, পোড়া বা বিভিন্ন কারণে নষ্ট হওয়া টাকার বিনিময় মূল্য ফেরত দেওয়ার বিষয়ে নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে এ নীতিমালার আওতায় গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে নষ্ট হওয়া নোটের বিনিময় মূল্য ফেরত পাবেন।

এ বিষয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

নীতিমালা অনুযায়ী কোনো নোটের ৯০ শতাংশের বেশি বিদ্যমান থাকলে ঐ নোটের বিপরীতে গ্রাহক মূল্যমানের পুরো অর্থ ফেরত পাবেন। এই সার্কুলারের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক নোট প্রত্যর্পণ প্রবিধান ২০২৫ বিধিমালা’ কার্যকর হয়েছে। পাশাপাশি ‘বাংলাদেশ ব্যাংক নোট রিফান্ড রেগুলেশনস ২০১২’ বাতিল করা হলো। আগে ছেঁড়া ও পোড়া নোট বদলের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট বিধান ছিল না। এখন তা সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। নোটের কত অংশ থাকলে কত টাকা পাওয়া যাবে, তা এবারের বিধানে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, নানা কারণে প্রচলিত নোট ক্ষতিগ্রস্ত বা নষ্ট হওয়া কিংবা পুড়ে যাওয়া নোট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা অফিসসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে বদল করে নেওয়া যায়। প্রতিটি ব্যাংকের শাখায় ছেঁড়া নোট বদল করা যায়। তবে সব নোটের পুরো মূল্য পাওয়া যায় না। কেবল কোনো ক্ষতিগ্রস্ত, কিন্তু নোটের ৯০ শতাংশের বেশি রয়েছে, এমন নোটের বিনিময় মূল্য পুরোটাই পাওয়া যাবে। এসব ক্ষেত্রে নোট তাৎক্ষণিক ভাবে বদল করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অন্য সব ছেঁড়াফাটা নোটও তাৎক্ষণিকভাবে বদল করে দেওয়া হয়।

সার্কুলারে বলা হয়, কোনো নোট দুই খণ্ডে খণ্ডিত হলে খণ্ড দুইটি সন্দেহাতীত ভাবে একই নোটের অংশ হতে হবে। এক্ষেত্রে, জমা গ্রহণের সময় নোটের বিচ্ছিন্ন খণ্ড দুইটির উলটো পিঠে সরু আকারের হালকা সাদা কাগজ জোড়া লাগাতে হবে, যাতে আসল নোট হিসেবে শনাক্তকরণের জন্য নোটটির পরীক্ষা করতে অসুবিধা না হয়। দুই খণ্ডে বিচ্ছিন্ন হয়নি, কিন্তু পরীক্ষার সময় নাড়াচাড়ায় বিচ্ছিন্ন হতে পারে-এমন জীর্ণ নোটেরও উলটো পিঠে সরু আকারের হালকা সাদা কাগজ লাগাতে হবে, যাতে নোটটি শনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষণে অসুবিধা না হয়।

সার্কুলারে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত নোটের বিনিময় মূল্য ব্যাংকগুলো থেকে সমস্যা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে গ্রাহক আবেদন করতে পারবে। গ্রাহকের আবেদন ব্যাংক নিষ্পত্তি করতে না পারলে এটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠাবে। সেখান থেকেও বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে না পারলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠাবে। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে আবেদনপত্র প্রাপ্তির আট সপ্তাহের মধ্যে নোটটির মূল্য প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে এবং মূল্য প্রদানযোগ্য হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের হিসাবে মূল্য আকলন করা হবে।

অর্থাৎ সুষ্ঠু নগদ লেনদেন অব্যাহত রাখার স্বার্থে ব্যাংকের বিধি মোতাবেক ছেঁড়া-ফাটা/ত্রুটিপূর্ণ ও ময়লাযুক্ত নোটের বিনিময় মূল্য প্রদান ও দাবিযোগ্য নোটসংক্রান্ত সেবা নিয়মিতভাবে প্রদান করতে হবে। এ ধরনের সেবা প্রদানে কোনো ব্যাংক শাখার অনীহা দেখালে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।


banner close