মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩

ব্রয়লার-ডিমের দাম ঊর্ধ্বমুখী, স্বস্তি সবজিতে

এ সপ্তাহে স্বস্তির পর্যায়ে রয়েছে সবজির দাম। ছবিটি শুক্রবার রাজধানীর কাপ্তান বাজার থেকে তোলা। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৪ আগস্ট, ২০২৩ ১৯:০৭

দেশে উৎপাদিত টমেটো গত সপ্তাহে ২২০ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে তা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি। তবে এসব টমেটো আধা পাকা বা কাঁচা। পুরোপরি পরিপক্ব এবং ভালো মানের ভারতীয় টমেটো ঢাকার বাজারে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। পাশাপাশি গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা দামে।

অন্যদিকে এ সপ্তাহে ফের দাম বেড়েছে ব্রয়লার, সোনালি মুরগি ও ডিমের। তবে অপরিবর্তিত আছে গরু-খাসির মাংসের দাম। গত দুই সপ্তাহে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এক সপ্তাহে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়।

শুক্রবার রাজধানীর মহাখালী, বাড্ডা ও তেজগাঁও এলাকার বাজার ঘুরে জিনিসপত্রের এসব দাম উঠে আসে।

এদিকে গত সপ্তাহে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পটোল এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, গেল সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে ৭০-৮০ টাকার ঝিঙে এখন মিলছে ৬০ টাকায়, করলা ও কাঁকরোল বাজারভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কচুরমুখী ৭০ টাকা, ৫০ টাকার লাউ ৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া ঢ্যাঁড়স ও পেঁপে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালকুমড়া ও ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, শিম ২০০ টাকা কেজি, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা থেকে কমে ৬০ টাকা, ধনে পাতা ১৬০ টাকা কেজি, বাঁধাকপি ৬০ টাকা পিস দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা থেকে বেড়ে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গাজর ১৪০ টাকা কেজি, আলু ৪০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫ টাকা কেজি করে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

তবে দাম বেড়েছে টমেটোর। ভারতীয় টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি দরে, যা বিগত সপ্তাহে ৩২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর দেশি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজিতে। দেশি টমেটো ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন বলে জানান মহাখালী কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা আব্দুস সালাম। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘কাঁচা মরিচ পোয়া ৬০ টাকা, ২৪০ টাকা কেজি। কচুরমুখী ২৬০ টাকা কেজি। গাজর চাইনিজ ১৪০ টাকা। আর অন্য জাতেরটা ৯০ টাকা। করলা ৮০ টাকা। পটোল ৬০ টাকা কেজি।’

গত সপ্তাহে ১৩৫ টাকা দরে ডিমের ডজন বিক্রি করেছেন বলে জানান মহাখালীর ডিম বিক্রেতা মো. শাকিল। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এখন দেড় শ টাকা ডজন। মাল আনতে গেলাম আর দাম বেড়ে গেল, তখন আমাদের বাড়তি দামে বিক্রি করতে হয়।’

তবে ঠিক কী কারণে ডজনপ্রতি ১৫ টাকা ডিমের দাম বৃদ্ধি পেল, তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি এই বিক্রেতা। লাল ডিমের হালি ৫০ টাকা। সাদা ডিম ৪৮ টাকা। হাঁসের ডিমের হালি ৭০ টাকা।

বাজারগুলোতে তুলনামূলক মাছের আমদানি কম থাকায় কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় কিছু সবজির দাম খানিকটা কমেছে। গত সপ্তাহে যে সবজি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেগুলো এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। অবশ্য ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি মিলছে না ঢাকার বাজারে। মাছের দাম বাড়ার বিষয়ে বিক্রেতা সোলেমান আলী বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী মাছের আমদানি না থাকায় দাম বেড়েছে।’

এদিকে চলতি সপ্তাহে মাছের আমদানি কম থাকায় কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে সব ধরনের মাছের। এক কেজি ওজনের বড় ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। ৫০০ গ্রামের নিচে ইলিশ ৯০০ টাকা কেজি, ৫০০ গ্রামের ওপরে ১০০০ টাকা। এ ছাড়া পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। টেংরা মাছ ৮০০ টাকা কেজি, শিং ৫৫০, তেলাপিয়া ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা, রুই ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি।

বিষয়:

ফ্রিল্যান্সারদের রেমিট্যান্সে উৎসে কর কাটা যাবে না

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফ্রিল্যান্সারদের বিদেশি আয় বা রেমিট্যান্সের বিপরীতে কোনো ধরনের উৎসে কর না কাটার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ। গত রোববার দেশের বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে নিয়োজিত সব অনুমোদিত ডিলার ব্যাংককে এ বিষয়ে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

এর আগে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগের এক নির্দেশনায় ২০২৩ এর ১২৪ ধারা অনুযায়ী সেবা, রেভিনিউ শেয়ারিং বাবদ পাওয়া রেমিট্যান্সের ওপর উৎসে কর আদায় করতে বলা হয়। বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। অনেকে ধারণা করেন, ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের ওপর ১০ শতাংশ উৎসে কর কাটা হবে। এ নিয়ে চলে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তাই বিষয়টি স্পষ্ট করতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এতে বলা হয়, আয়কর আইন ২০২৩ এর ১২৪ ধারা অনুযায়ী, আইটি ফ্রি ল্যান্সিং খাত থেকে কোনো উৎসে কর কাটা যাবে না।


পোষা প্রাণীর খাবার ও আনুষঙ্গিক পণ্যের ২০০ কোটি টাকার বাজার

সংগৃহীত ছবি
আপডেটেড ৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে এখন বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকার পোষা প্রাণীর খাবার ও লালন-পালন করার বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হয়। এর বাজার প্রতি বছর ২০ শতাংশেরও বেশি হারে বাড়ছে। তবে পোষা প্রাণীর খাবার, ওষুধ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক পণ্য- সবই আমদানি করতে হয়।

গবেষণা সংস্থা স্ট্যাটিসটার মতে, ২০২৮ সালে পোষা প্রাণীর খাবারের বাজার নয় দশমিক ৫২ শতাংশ বেড়ে ৩০৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন বা ৩ কোটি ৮ লাখ ডলারে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যা স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ৪১৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার সমান ১০৯ টাকা ধরে)

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঘরে পোষা প্রাণী রাখা মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া ও পোষা প্রাণীর প্রতি সহানুভূতিশীল ভাবনার কারণে দেশে পোষা প্রাণীর খাবার ও এর আনুষঙ্গিক পণ্যের চাহিদা বাড়ছে।

পোষা প্রাণীর প্রতি পরিবারের সদস্যের মতো আচরণ করা মানুষজন তাদের নিজের মতো পোষা প্রাণীকেও স্বাচ্ছন্দ্য জীবন দেয়ার চেষ্টা করেন। দেশের মানুষের পরিবর্তিত জীবনধারা ও আয় বৃদ্ধির কারণে পোষা প্রাণীর যত্নের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর চাহিদা আগের তুলনায় বেড়েছে।

রাজধানীর গুলশানের বাসিন্দা সাদিয়া ইসলামের কথাই ধরা যাক- তার পোষা প্রাণীর জন্য আছে একটি লিটার বক্স, খাবারের বাটি ও আলাদা একটি ঘর। তিনি বলেন, আমার দুটি বিড়ালের দেখাশোনা ও চিকিৎসার জন্য আমাকে প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকার বেশি খরচ করতে হয়।

এদিকে একটি পোষা কুকুরের মালিক সাকিব খান জানান, প্রতি মাসে তার খরচ হয় ৫ হাজার টাকার মতো।

ঢাকায় একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত প্রসূন চৌধুরীর লালমাটিয়ার বাসায় তার সঙ্গী হিসেবে আছে একটি পোষা কুকুর।

এই ৩ জনের মতো আরও অনেকে আছেন যারা বিড়াল, কুকুর, খরগোশ ও পাখির মতো পোষা প্রাণীগুলোকে তাদের পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের মতো যত্ন নেন।

প্রায় এক দশক আগে প্রাণী অধিকার সংগঠনগুলো পোষা প্রাণী যত্নে সচেতনতা বৃদ্ধি ও রাস্তা থেকে অসুস্থ প্রাণী উদ্ধার কাজ শুরুর পর থেকে রাজধানীজুড়ে পোষা প্রাণী উদ্ধারকর্মী ও প্রাণী দত্তক নেয়া ব্যক্তির সংখ্যা হঠাৎ করে বাড়তে থাকে।

প্রাণীর প্রতি সহানুভূতিশীল মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় অন্যান্য পণ্যের মধ্যে পোষা প্রাণীর খাবার ও আনুষঙ্গিক পণ্য বিক্রির হার আগের তুলনায় বেশ বেড়েছে।

পোষা প্রাণীর খাবার ও আনুষঙ্গিক পণ্য বিক্রির প্রতিষ্ঠান পেট জোন বিডির মালিক জুবায়ের মাহমুদ বলেন, বিশেষ করে করোনা মহামারিতে লকডাউনের সময় পোষা প্রাণীর খাবার, আনুষঙ্গিক পণ্য ও ওষুধের চাহিদা বেড়ে যায়। তিনি জানান, ২০১৯ সালে প্রতি মাসে পোষা প্রাণীর খাবার ও আনুষঙ্গিক পণ্য বিক্রির পরিমাণ ছিল ১০ লাখ টাকা। এ বছর তা বেড়ে হয়েছে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা।

মহামারির আগে এই প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ২ লাখ গ্রাহক ছিল, বর্তমানে সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ লাখে।

মিউ মিউ শপ বিডির প্রধান নির্বাহী সামসুদ্দৌহা রিয়াদ বলেন, ২০১৭ সালে তিনি ও তার এক বন্ধু মিলে ব্যবসা শুরু করেন। যখন তারা দেখলেন যে বাজার বাড়ছে, তখন তারা আরও পেশাদারিত্ব নিয়ে ব্যবসা চালাতে শুরু করেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা যদি বর্তমান মাসিক বিক্রির পরিস্থিতিকে শুরুর সময়ের সঙ্গে তুলনা করি তাহলে দেখা যাবে বিক্রি প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে।

পোষা প্রাণী ডট কমের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রাজ্জাক চৌধুরী বলেন, সবচেয়ে বেশি বিক্রিত পণ্যের তালিকায় বিড়ালের খাবার, খেলনা ও অন্যান্য পণ্য। ২০১৭ সালের তুলনায় এগুলোর বিক্রি ৭০-৮০ শতাংশ বেড়েছে বলেও জানান তিনি।

দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় পোষা প্রাণীর খাবার ও আনুষঙ্গিক পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান থ্রিএস ইমপেক্স ২০০০ সালে ব্যবসা শুরুর সময় মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকার খাবার ও পণ্য বিক্রি করত।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, এখন বিক্রি বেড়ে প্রায় দুই কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, পোষা প্রাণীর প্রতি মানুষের যত্নশীলতা দিন দিন বাড়ছে। এ সব পণ্যের বাজারও বড় হচ্ছে। তবে তা এখনো সংগঠিতভাবে হচ্ছে না।


বিমা খাতের দাপটে পুঁজিবাজারে উত্থান

একটি ব্রোকার হাউজে অপেক্ষারত বিনিয়োগকারীরা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সোমবার প্রধান সূচক উত্থানে লেনদেন হয়েছে। এদিন ডিএসইর লেনদেন আগের কার্যদিবসের (বুধবার) চেয়ে কমেছে। ক্রেতার চাপ বেশি হওয়ায় এদিন লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর পতনের চেয়ে উত্থান বেশি হয়েছে।

এদিন লেনদেনে দাপট দেখিয়েছে বিমা খাতের কোম্পানিগুলো। এই খাতের ৫৭টি কোম্পানির মধ্যে ৪৭টি বা ৮২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। যেখানে সব খাত মিলিয়ে ৮৭টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে।

ডিএসইতে গতকাল সোমবার ৪৬৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস রোববার লেনদেন হয়েছিল ৫৩১ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৭২ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে। ডিএসইএস সূচক দশমিক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৫৭ দশমিক ৬০ পয়েন্টে। এ ছাড়া ডিএস-৩০ সূচক ১ দশমিক শূন্য ৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩৪ দশমিক ৬২ পয়েন্টে।

ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৮২টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৮৭টি এবং কমেছে ৫৮টির। শেয়ারদর পরিবর্তন হয়নি ১৩৭টির।

এদিন লেনদেনে শীর্ষে উঠে এসেছে রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। এরপর ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার লেনদেন বেশি ছিল। এতে শীর্ষের দ্বিতীয়তে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। কোম্পানিটির ১৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের ১৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা, সোনালী পেপারের ১৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা, সি পার্ল বিচের ১৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, খান ব্রাদার্সের ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা, জেমিনি সি ফুডের ১১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ১১ কোটি ১৫ লাখ টাকা, লার্ফাজহোলসিমের ১১ কোটি ২ লাখ টাকা এবং ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের ৮ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ফু-ওয়াং ফুডের ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের ৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ, লিবরা ইনফিউশনের ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ, ন্যাশনাল ফিডের ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং এমবি ফার্মার ৬ দশমিক ১০ শতাংশের শেয়ারদর বেড়েছে।

জুট স্পিনার্স, শ্যামপুর সুগার, জিল বাংলা সুগার, মেঘনা পেট, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, অ্যাপেক্স ফুড, অ্যাপেক্স স্পিনিং, অ্যাপেক্স ট্যানারি, ইমাম বাটন ও নাভানা ফার্মা।

কমার শীর্ষে উঠে এসেছে জুট স্পিনার্সের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ৮ দশমিক ১১ শতাংশ। কমার শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে শ্যামপুর সুগারের ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, জিল বাংলা সুগারের ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ, মেঘনা পেটের ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ, অ্যাপেক্স ফুডের ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ, অ্যাপেক্স স্পিনিংয়ের ৩ দশমিক ২৭ শতাংশ, অ্যাপেক্স ট্যানারির ৩ দশমিক ১৫ শতাংশ, ইমাম বাটনের ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ ও নাভানা ফার্মার ২ দশমিক ৫৩ শতাংশের শেয়ারদর বেড়েছে।

অন্যদিকে, অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল ১১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস রোববার যেখানে লেনদেন হয়েছিল ১২ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার। প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৫ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৬৬ দশমিক ২৮ পয়েন্টে।

সিএসসিএক্স সূচক ৩ দশমিক ১৯ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক দশমিক ৫২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৯৯ দশমিক ৫৬ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৬৬ দশমিক ৮২ পয়েন্টে। এ ছাড়া সিএসই৫০ সূচক দশমিক ৪৮ পয়েন্ট এবং সিএসই ৩০ সূচক দশমিক ৫০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩০৫ দশমিক ৫২ শতাংশ পয়েন্টে এবং ১৩ হাজার ৩৫৫ দশমিক শূন্য ৬ পয়েন্টে।

সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৪৫টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৫২টি এবং কমেছে ৩৪টির। শেয়ারদর পরিবর্তন হয়নি ৫৯টির। এদিন লেনদেনে শীর্ষে উঠে আসা ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ারদর। কোম্পানিটির ৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। এরপর ড্যাফোডিল কম্পিউটাসের শেয়ার লেনদেন বেশি ছিল। এতে শীর্ষের দ্বিতীয়তে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। কোম্পানিটির ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, ফু-ওয়াং ফুডের ৫৯ লাখ টাকা, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের ৩৫ লাখ টাকা, ইবনে সিনার ৩৫ লাখ টাকা, এইচআর টেক্সের ২৩ লাখ টাকা, স্কয়ার ফার্মার ২১ লাখ টাকা, আরডি ফুডের ১৫ লাখ টাকা এবং ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো ১০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।


আবারও বাড়লো এলপিজি সিলিন্ডারের দাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে ভোক্তা পর্যায়ে আবারও বাড়ানো হয়েছে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম। ৭৯ টাকা বাড়িয়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম এক হাজার ৩৬৩ টাকা করা হয়েছে। আজ সোমবার সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হবে নতুন এ দাম।

সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে ভোক্তাপর্যায়ে ১২ কেজি এলপিজির দাম এক হাজার ১৪০ টাকা থেকে ১৪৪ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ২৮৪ টাকা করা হয়েছিল। একই সঙ্গে সাড়ে পাঁচ কেজি থেকে শুরু করে ৪৫ কেজি পর্যন্ত সব সিলিন্ডারের দাম বাড়ানো হয়েছে।

এর মধ্যে ৫.৫ কেজির দাম বাড়িয়ে ৬২৫ টাকা, ১২.৫ কেজি ১৪২০ টাকা, ১৫ কেজি ১৭০৪ টাকা, ১৬ কেজি ১৮১৮ টাকা, ১৮ কেজি ২০৪৫ টাকা, ২০ কেজি ২২৭২ টাকা, ২২ কেজি ২৫০০ টাকা, ২৫ কেজি ২৮৪০ টাকা, ৩০ কেজি ৩৪০৮ টাকা, ৩৩ কেজি ৩৭৪৯ টাকা, ৩৫ কেজি ৩৯৭৬ টাকা এবং ৪৫ কেজির দাম ৫১১৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ঘোষণায় বলা হয়েছে, বেসরকারি এলপিজির রিটেইলার পয়েন্টে ভোক্তাপর্যায়ে মূসকসহ মূল্যপ্রতি কেজি ১১৩ টাকা ৬১ পয়সা সমন্বয় করা হয়েছে। এছাড়া রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে তরল অবস্থায় সরবরাহকৃত বেসরকারি এলপিজির ভোক্তাপর্যায়ে মূসকসহ মূল্যপ্রতি কেজি ১০৯ টাকা ৭৯ পয়সা সমন্বয় করা হয়েছে। এছাড়া ভোক্তাপর্যায়ে অটোগ্যাসের দাম মূসকসহ প্রতি লিটারের মূল্য ৬২ টাকা ৫৪ পয়সা সমন্বয় করা হয়েছে।


সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টরের সাক্ষাৎ

ছবি: ইউএনবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক।

রোববার দুপুরে ঢাকায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ভবনে এ সৌজন্য সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হয়।

সাক্ষাত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন আবদৌলায়ে সেক। একই সঙ্গে বৈশ্বিক কারণে সৃষ্ট রিজার্ভের সাময়িক সমস্যাও বাংলাদেশ কাটিয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের এই কান্ট্রি ডিরেক্টর করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সমস্যার মধ্যেও বাংলাদেশে যে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে তারও ভূয়সী প্রশংসা করেন।

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেককে স্বাগত জানান উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বাংলাদেশে বিগত ১৪ বছরে অর্জিত অর্থনৈতিক অগ্রগতির সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন তিনি। অব্যাহত সহযোগিতার জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন।


৪১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স এল সেপ্টেম্বরে

সংগৃহীত ছবি
আপডেটেড ২ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০১
সুলতান আহমেদ

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে বড় ধস নেমেছে সদ্যসমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ৪১ মাসের মধ্যে এটিই সর্বনিম্ন প্রবাসী আয়। দেশের চলমান ডলার সংকটের মধ্যে রেমিট্যান্সের এই ধসকে অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের দুঃসংবাদ ভাবছেন অর্থনীতিবিদরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সদ্য শেষ হওয়া মাসে দেশের বাইরে থেকে প্রবাসীরা বৈধ পথে মোট রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলার, যা তার ঠিক আগের মাস অর্থাৎ আগস্টে ছিল প্রায় ১৬০ কোটি ডলার। এক মাসের ব্যবধানে প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় ২৫ কোটি ডলার। এ ছাড়াও আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে মোট প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের গত ৪১ মাসের তথ্য বলছে, গত মাসেই সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

করোনা মহামারির একেবারে শুরুর দিকে বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা ও কর্মহীনতার কারণে রেমিট্যান্সে তলানিতে নেমে আসে। ২০২০ সালে এপ্রিলে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ডলার। যদিও ওই মহামারিতে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু বাড়লেও থেমে থাকেনি রেমিট্যান্স প্রবাহ। তবে বর্তমানে যখন নিত্যপণ্যের দাম বাড়াসহ অর্থনৈতিক সংকটের জন্য ডলার সংকটকে দায়ী করা হচ্ছে ঠিক এমন সময়ে রেমিট্যান্স কমে যাওয়াকে আশঙ্কার চোখে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।

গত সোমবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ‘সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন রেমিট্যান্স নিয়ে। তিনি বলেছিলেন, রেমিট্যান্স বাড়াতে পারলে চাপ কমবে রিজার্ভে। পাশাপাশি কেটে যাবে অর্থনৈতিক সংকট। তবে সদ্য শেষ হওয়া সেপ্টেম্বর মাসের প্রবাসী আয় তার মুখে হাসি ফোটাতে পারেনি।

অর্থমন্ত্রী অবশ্য সেদিন আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, যে পরিমাণ কর্মী বিদেশে যাচ্ছে সেই হিসাবে রেমিট্যান্স বাড়ছে না বরং কমছে। এ জন্য তিনি দেশের স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদদের কাছে রেমিট্যান্স বাড়াতে পরামর্শও চেয়েছিলেন। কদিন পরেই তার সেই শঙ্কা আরও বাড়ল।

রেমিট্যান্সের এই ধসের কারণ খুঁজতে দৈনিক বাংলার পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয় বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান-বিআইডিএসের সাবেক রিসার্চ ফেলো ওয়াজিদ হাসান শাহর কাছে। এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলারের দাম বেঁধে দেয়ার ফলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসা কমেছে।

‘আপনি যদি হুন্ডি করে পাঠালে ১২০ টাকা দর পান, তাহলে কেন ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠিয়ে ১০ টাকা কম নেবেন’ প্রশ্ন তোলেন ওয়াজিদ হাসান। এ জন্য তার পরামর্শ- ডলারের দর বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে হবে।

তাতে ডলারের বাজারে অস্থিরতা আরও বাড়বে কি না এমন প্রশ্নে তার উত্তর ‘কয়েকদিন হয়তো কিছুটা বাড়বে, তারপর বাজারই ঠিক করবে ডলারের দাম কত হওয়া উচিত।’

এ ছাড়াও রপ্তানির বিপরীতে ডলার ঠিকমতো দেশে আসছে কি না তা নিয়ে তদারকি বাড়ানোর পরামর্শও দেন এই অর্থনীতিবিদ। তবে রেমিট্যান্সে সরকারের দেয়া আড়াই শতাংশ প্রণোদনাকে সাধুবাদ জানান তিনি।

চলতি অর্থবছরের শুরুর মাস জুলাইয়ে অবশ্য রেমিট্যান্স নিয়ে স্বস্তি ছিল। সে মাসে বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা প্রায় দেড় কোটি প্রবাসী রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ডলার। তবে সে চিত্র পাল্টে যায় পরের মাস থেকেই। আগস্টে রেমিট্যান্স কমে দাঁড়ায় ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলার। পরের মাস সেপ্টেম্বরে যা আরও কমে দাঁড়াল ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলারে।

সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স আনায় শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটির মাধ্যমে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৩৪ কোটি ১৩ লাখ ডলার। এছাড়া ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১০ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১০ কোটি ৪১ লাখ ডলার।

আর রাষ্ট্র মালিকানাধীন ছয়টি ব্যাংকের মাধ্যমে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১১ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১১৮ কোটি ৪৮ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৫১ লাখ ডলার ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫০ লাখ ডলার।

তবে সরকারি-বেসরকারি খাতের মোট সাতটি ব্যাংকের মাধ্যমে এ মাসে কোনো রেমিট্যান্স আসতে দেখা যায়নি।


ডলার কারসাজিতে জড়িত ১০ ব্যাংককে জরিমানা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি মূল্যে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রির অপরাধে বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে জরিমানা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯ (৭) ধারা অনুযায়ী, বেশি মূল্যে ডলার বিক্রির অপরাধে ১০ ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে জরিমানা করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

বেশি দামে ডলার বিক্রি করার অভিযোগে বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সেপ্টেম্বরে মাসে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এসব ব্যাংকের ট্রেজারিপ্রধানকে জরিমানা করার প্রক্রিয়া শুরু করে।

ট্রেজারি বিভাগ ব্যাংকের টাকা ও ডলারের চাহিদা-জোগানের বিষয়টি নিশ্চিত করে থাকে। কোনো কোনো ব্যাংকে ট্রেজারি বিভাগের প্রধান পদে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাও রয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, ডলার বেচাকেনায় কারসাজির সঙ্গে জড়িত ১০ ব্যাংকের মধ্যে প্রচলিত ধারার ৭টি ও ইসলামি ধারার ৩টি ব্যাংক রয়েছে।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেছিলেন, বেশি দামে ডলার বিক্রির জন্য এসব ব্যাংকের ট্রেজারিপ্রধান দায় এড়াতে পারেন না। এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯ (৭) ধারা অনুযায়ী, এ অপরাধে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে। যদি আইনের একই ধারার লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে, তাহলে প্রথম দিনের পর প্রতিদিনের জন্য অতিরিক্ত এক হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা যায়।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত মার্চের পর থেকে দেশে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তাতে সংকট আরও প্রকট হয়। পরে গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেয়া হয় ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) ওপর। এরপর দুই সংগঠনের নেতারা বিভিন্ন লেনদেনে ডলারের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ শুরু করেন। তবে কিছু ব্যাংক ডলারের নির্ধারিত দামের চেয়ে ৫ থেকে ৬ টাকা বেশি দরে ডলার কেনাবেচা করছে বলে অভিযোগ ওঠে। কারসাজির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের জরিমানার কবলে পড়তে হলো।


অক্টোবরে ‘স্মার্ট’ সুদহার ৭.২০%

আপডেটেড ১ অক্টোবর, ২০২৩ ২০:৫৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অক্টোবরে ব্যাংক ঋণের সুদহার আরও বাড়বে। নতুন ঋণের ক্ষেত্রে আগামী অক্টোবর মাসে ‘স্মার্ট’ (সিক্স মান্থস মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল) সুদহার হবে ৭ দশমিক ২০ শতাংশ।

সেপ্টেম্বরে এই সুদ হার ছিল ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। তার আগের দুই মাস জুলাই ও আগস্টে এই হার ছিল একই ৭ দশমিক ১০ শতাংশ।

অক্টোবরে বড় অঙ্কের ঋণের ক্ষেত্রে এই স্মার্ট সুদ হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সুদ যোগ করে ঋণ দিতে পারবে ব্যাংক। অর্থাৎ এ মাসে ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণে সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। আর সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ হারে মার্জিন যোগ করে ঋণের বিপরীতে সুদ নিতে পারবে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই)।

ট্রেজারি বিলের সুদ হারের ছয় মাসের গড় করে বাংলাদেশ ব্যাংক অক্টোবর মাসের এই স্মার্ট রেট হিসাব করেছে, যা শনিবার রাতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে ব্যাংক ঋণে সুদ হারের ৯ শতাংশের সীমা তুলে নিয়ে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে এই ‘স্মার্ট’ সুদহার করিডর চালু করা হয়।

অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই ও আগস্টে এই সুদহার ছিল একই, ৭ দমিক ১০ শতাংশ। তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে ‘স্মার্ট’ সুদহার বেড়ে হয় ৭ দশমিক ১৪। অক্টোবরে তা আরও বেড়ে হবে ৭ দশমিক ২০ শতাংশ।

নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিমাসের ১ তারিখে আগের মাসের ‘স্মার্ট’রেট জানিয়ে দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই হার সে মাসে দেয়া নতুন ঋণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। ওই মাসের গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ছয় মাসের জন্য এই সুদহার কার্যকর থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, সুদহার বাড়ায় মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা কিছুটা সহজ হবে। আর নতুন নিয়ম চালু হওয়ার পর অনেক ব্যাংকেই আমানতের সুদহার বাড়তে শুরু করেছে।

নীতিমালা অনুযায়ী, কৃষি ও পল্লি ঋণের সুদহার সাধারণ ঋণের চেয়ে ১ শতাংশ কম হেবে। সে ক্ষেত্রে ‘স্মার্ট’ রেটের সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ মার্জিন যোগ হবে। তাতে অক্টোবরে নেয়া এ খাতের ঋণের সুদহার আগামী ছয় মাসের জন্য হবে ৯ দশমিক ২০ শতাংশ।

অবশ্য কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাত এবং ব্যক্তিগত ঋণ ও গাড়ি কেনার মতো ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংক আরো এক শতাংশ সুপারভিশন চার্জ যোগ করতে পারবে। তবে তা বছরে একবারের বেশি হবে না। এর মানে এসব ক্ষেত্রে সুদের হার হবে ১১ দশমিক ২০ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১২৮ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের সুদহার প্রকাশ করছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, গত জানুয়ারিতে ‘স্মার্ট’ সুদহার ছিল ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এর পর প্রতি মাসেই একটু একটু করে বেড়ে মে মাসে এই সুদহার বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ। জুন মাসে এই সুদ হার ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ।


যুক্তরাষ্ট্র, হংকং ও পাকিস্তানের চেয়ে কম পতন বাংলাদেশে

একটি ব্রোকার হাউজে অপেক্ষারত বিনিয়োগকারীরা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

কেবল বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বড় বড় অর্থনীতির দেশগুলোর পুঁজিবাজারে সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে মন্দাভাব দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোর সূচক ২ থেকে সাড়ে ৪ শতাংশের বেশি কমেছে। এর মধ্যে হংকং, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তানও রযেছে। তবে স্বস্তির বিষয় হলো- উল্লেখিত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সূচক সবচেয়ে কম পতন হয়েছে। অন্যদিকে এ প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও যুক্তরাজ্য, চীন, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ভারত ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোর পুঁজিবাজারে এসময় সূচক বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসে ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ২ দশমিক ৭২ শতাংশ কমে অবস্থান করছে ৩৩ হাজার ৬১৯ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ৩৪ হাজার ৫৬০ পয়েন্টে। দেশটির এস অ্যান্ড পি ৫০০ সূচক সেপ্টেম্বর শেষে ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৭৪ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে যা ছিল ৪ হাজার ৪৩৩ পয়েন্টে। নাসডাক সূচক আগস্ট শেষে ছিল ১৩ হাজার ৭০৫ পয়েন্টে। সেপ্টেম্বর শেষে যা ৪ দশমিক ২৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭০৫ পয়েন্টে।

দরপতনের বিষয়ে দেশটির বিশ্লেষকরা ব্লুমবার্গকে জানিয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ সুদহার নিয়ে বিনিয়োগকারীরা দুশ্চিতায় রয়েছেন। পাশাপাশি ডলারের বাজারে অস্থিরতাও বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া স্বর্ণের দাম নিম্নমুখী হওয়া ও এক বছরের মধ্যে তেলের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে যাওয়াসহ বেশকিছু কারণে গতমাসে দেশটির ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচকে বড় পতন হয়েছে। আর অন্যান্য প্রধান প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে এস অ্যান্ড পি ৫০০ ও নাসডাক চার মাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে।

হংকংয়ের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক হ্যাং সেং গত সেপ্টেম্বর শেষে ৩ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫৮৭ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে যা ছিল ১৮ হাজার ৪৭১ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে তাইওয়ানের প্রধান সূচক তাইওয়ান ওয়াইড ছিল ১৬ হাজার ৫০৯ পয়েন্টে। সেপ্টেম্বর শেষে যা ১ দশমিক ৪১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ২৭৬ পয়েন্টে। থাইল্যান্ডের প্রধান সূচক সেট সেপ্টেম্বর শেষে ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৯২ পয়েন্টে। আগের মাস শেষে যা ছিল ১ হাজার ৫৬৯ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে দক্ষিণ কোরিয়ার পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক কসপি ছিল ২ হাজার ৫৫২ পয়েন্টে। সেপ্টেম্বর শেষে যা ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৬৫ পয়েন্টে।

এছাড়া ভিয়েতনামের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক ভিএন ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে ৪ দশমিক ৩১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৬১ পয়েন্টে। আগের মাস শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ১ হাজার ২১৫ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে পাকিস্তানের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক করাচি ১০০ এর অবস্থান ছিল ৪৬ হাজার ৬৮৬ পয়েন্টে। সেপ্টেম্বর শেষে সূচকটি ২ দশমিক ৩২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ৩৮০ পয়েন্টে। আর বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সেপ্টেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৮৫ পয়েন্টে। মাসের ব্যবধানে সূচকটি কমেছে শূন্য দশমিক ২২ শতাংশ। আগস্ট শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ৬ হাজার ২৯১ পয়েন্টে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আল-আমিন দৈনিক বাংলাকে বলেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে আসলে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তেমন কোনো যোগসূত্র নেই। বিশ্বের অন্য দেশগুলোর পুঁজিবাজারে উত্থান কিংবা পতন হলে বাংলাদেশও একই ধারায় চলবে বিষয়টা তা নয়। এখানে বিদেশী বিনিয়োগাকারীদের অংশগ্রহণও তুলনামূলক কম। আর বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিও তালিকাভুক্ত কম। তবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক সময়ে ছোট ছোট অনেক বিষয়কে কেন্দ্র করে বড় ধরনের উত্থান-পতন দেখা যাচ্ছে। গত মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কিছুটা উত্থানের ধারাতেই যাচ্ছিল। লেনদেনও বেশ ভালো দেখা গেছে। এর মধ্যেই মার্কিন ভিসানীতি ও জুন ক্লোজিংয়ের কোম্পানিগুলোর খারাপ পারফমেন্সের কারণে গত সপ্তাহ বেশ নেতিবাচক ছিল।

তবে ফ্লোর প্রাইস ও বিমা খাতের সুবাদে এ নেতিবাচক প্রভাব অনেকটা কম ছিল বলে মনে করেন তিনি। এ বিষয়ে বলেন, ফ্লোর প্রাইস থাকার কারণে অনেক কোম্পানি খারাপ পারফমেন্স করলেও শেয়ারদর কমার সুযোগ থাকছে না। অন্যথায় এক দিনে সূচক ২৫০ থেকে ৩০০ পয়েন্ট পর্যন্ত কমে যাওয়ার মতো ঘটনাও হতে পারত। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের আমানতের ওপর সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্তে সম্প্রতি বিমা খাতে বড় একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যা সূচকের পতন কমাতে সাহায্য করেছে।

অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক এফটিএসই ১০০ সেপ্টেম্বর মাসে ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৬৩০ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ৭ হাজার ৪৫২ পয়েন্টে। চীনের সাংহাই সূচক সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাস শেষে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৩৫ পয়েন্টে। সূচকটি মাসের ব্যবধানে শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়েছে। ইন্দোনেশিয়ার প্রধান পুঁজিবাজার আইডিএক্স কম্পোজিট সদ্য সমাপ্ত মাসে শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়েছে। সেপ্টেম্বর মাস শেষে সূচকটির অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৫২ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে ফিলিপাইনের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক পিএসইআই কম্পোজিটের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ২২৫ পয়েন্টে। সেপ্টেম্বর শেষে সূচকটি ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে। ভারতের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক বিএসই সেনসেক্স সেপ্টেম্বর শেষে ১ দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৯৩২ পয়েন্টে। আগের মাস শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ৬৫ হাজার ১০৩ পয়েন্টে। আর গত বছর অর্থনৈতিকভাবে সংকটের মধ্যে পতিত হওয়া শ্রীলঙ্কার পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক সিএসই অল শেয়ার সদ্য সমাপ্ত মাসে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়েছে। সেপ্টেম্বর শেষে সূচকটির অবস্থান দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ২৪৮ পয়েন্টে। আগের মাস শেষে যা ছিল ১১ হাজার ১৭০ পয়েন্টে।


‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার’ পাচ্ছে ১২ শিল্পপ্রতিষ্ঠান

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশের ১২টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২২’ দেয়া হবে। নির্বাচিত ১২ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে তিনটি, মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে দুটি, ক্ষুদ্রশিল্প ক্যাটাগরিতে তিনটি, মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে একটি, কুটিরশিল্প ক্যাটাগরিতে একটি এবং হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে দুটি। এ বছর হস্ত ও কারু শিল্প ক্যাটাগরিতে কোনো প্রতিষ্ঠান মনোনীত হয়নি।

রোববার শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেডে, দ্বিতীয় হয়েছে জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেড এবং তৃতীয় হয়েছে বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেড। মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে নিতা কোম্পানি লিমিটেড, দ্বিতীয় হয়েছে নোমান টেরি টাওয়াল মিলস লিমিটেড। ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে হজরত আমানত শাহ স্পিনিং মিলস লিমিটেড, দ্বিতীয় হয়েছে বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড এবং তৃতীয় হয়েছে টেকনো মিডিয়া লিমিটেড। মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে শুধুমাত্র গ্রিন জেনেসিস ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে শুধুমাত্র একটি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়েছে সামসুন্নাহার টেক্সটাইল মিলস। হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং দ্বিতীয় হয়েছে সুপার স্টার ইলেক্ট্রিক্যাল এক্সেসরিজ লিমিটেড।

আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন ঢাকায় এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের কাছে পুরস্কার তুলে দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মো. মাহবুবুল আলম। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি এবং স্বাগত বক্তব্য রাখবেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে এবং শিল্প উদ্যোক্তা/প্রতিষ্ঠানকে শিল্প খাতের অবদানের স্বীকৃতি প্রদান, প্রণোদনা সৃষ্টি ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। শিল্পসমৃদ্ধ উন্নত দেশ বিনির্মাণের জন্য বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন, রপ্তানি ও আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদন করে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে ভূমিকা রাখাসহ দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বেসরকারি খাতের অবদানকে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ পুরস্কার প্রদানের অন্যতম লক্ষ্য হলো বঙ্গবন্ধুর শিল্প পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশে শিল্পায়নের যে সূচনা হয়েছিল সে অবদানকে স্মরণীয় ও বরণীয় করা এবং বাংলাদেশের শিল্পায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে শিল্পায়নের ক্রমবিকাশকে টেকসই করা। পাশাপাশি বেসরকারি খাতে পরিবেশবান্ধব শিল্প স্থাপন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ উৎসাহিত করাসহ পণ্য বহুমুখীকরণ, আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদন ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিতকরণের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রযুক্তি নির্ভর ও মানসম্মত পণ্য উৎপাদন করে দেশীয় চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি বৃদ্ধি করার জন্য উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নামে এই পুরস্কার প্রবর্তন দেশে শিল্পায়নের অভিযাত্রায় আরও সৃজনশীল উদ্যোক্তা তৈরি ও বিকাশে সহায়ক হবে।

শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বার্ষিক টার্নওভার, আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদন, স্থানীয় কাঁচামাল ব্যবহার, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, সামাজিক দায়িত্ব পালন, নিষ্কণ্টক ভূমি ও ভূমির পরিকল্পিত ও দক্ষ ব্যবহার, পরিবেশ সংরক্ষণ প্রভৃতি ক্ষেত্রের অবদান বিবেচনা করা হয়েছে। পুরস্কারের জন্য শিল্প উদ্যোক্তা/শিল্পপ্রতিষ্ঠান মনোনয়নে কয়েকটি নির্দিষ্ট যোগ্যতা ও শর্ত পূরণ আবশ্যক। এর মধ্যে শিল্প উদ্যোক্তা/শিল্প প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে স্থাপিত হতে হবে। শিল্প ক্ষেত্রে আবেদনকারী শিল্পপতি/উদ্যোক্তার সামগ্রিক অবদান সন্তোষজনক হতে হবে ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণ বা আমদানি বিকল্প বা রপ্তানিমুখী পণ্য উৎপাদন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কার্যকর অবদান রাখতে হবে।

এ ছাড়া, নিয়মিত কর পরিশোধ করতে হবে। কোনো ফৌজদারি অপরাধের জন্য কোনো ট্রাইব্যুনাল বা আদালতে ৬ মাস বা তদধিক সময়ের জন্য কোনো উদ্যোক্তা/শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিককে দণ্ডিত করলে এবং দণ্ডভোগের পর ন্যূনতম ২ বছর সময় অতিক্রান্ত না হলে কিংবা তার বিরুদ্ধে কোনো ট্রাইব্যুনাল বা আদালতে উক্তরূপ কোনো মামলা চলমান থাকলে, সেই শিল্প উদ্যোক্তা/শিল্পপ্রতিষ্ঠান মনোনয়নের জন্য বিবেচনা করা হয়নি। ঋণখেলাপি, সরকারি বিল খেলাপি, কর খেলাপি, অর্থ পাচারকারী, সরকারি জায়গায় অবৈধ দখলদার ও পরিবেশ দূষণকারী শিল্প উদ্যোক্তা/শিল্পপ্রতিষ্ঠানও এই সম্মানজনক পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হয় না। উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কোনো প্রতিষ্ঠান একবার পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হলে, একই ক্যাটাগরিতে পরবর্তী ৩ বছরের জন্য তার আবেদন বিবেচনা করা হয় না।


বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নিয়ে কেউ কথা বলছে না

মোস্তাক আহমেদ সাদেক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সুলতান আহমেদ

বর্তমান সময় পুঁজিবাজারের জন্য হতাশার বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক। তিনি বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন, যা ঘিরে নানা রকমের অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে গতিহীন থাকায় হতাশ পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরাও। এ অবস্থায় সামনের দিনগুলোতে করণীয় কী- এ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের মনে। তাদের নানা প্রশ্ন থাকলেও এর সদুত্তর মিলছে না দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে। তিনি মনে করেন হতাশা দূর করে আস্থা ফেরাতে চাইলে সংশ্লিষ্টদের পুঁজিবাজার নিয়ে কথা বলতে হবে। মোস্তাক আহমেদ সাদেকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দৈনিক বাংলার জেষ্ঠ প্রতিবেদক সুলতান আহমেদ

গত সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক লেনদেন আবারো নেমে এসেছে ৪০০ কোটির ঘরে। সপ্তাহ ব্যবধানে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। এমন হতাশাজনক চিত্র কেন পুঁজিবাজারে?

এটি নতুন কিছু নয়। পুঁজিবাজারে অনেকদিন ধরেই লেনদেনের খরা যাচ্ছে। যে মার্কেটে একসময় ২ থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে তা এখন নেমে এসেছে ৪ থেকে ৫শ কোটির ঘরে। কিছুদিন দেখবেন ভালো লেনদেন হচ্ছে আবার তা হঠাৎ করে নেমে যাচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে বাজারে এখন ইক্যুইটির সংকট। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের হাতে নতুন করে শেয়ার কেনার মতো সামর্থ্য নেই। এমনকি তারা তাদের শেয়ার বিক্রিও করতে পারছে না। এর পেছনে কারণ কী, তা প্রায় সবারই জানা। তবে কোনো প্রতিকার নেই। এটি খুব হতাশার। বাজার থেকে ধীরে ধীরে অনেক বিনিয়োগকারী সরে যাচ্ছেন তা নিয়ে নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা চোখে পড়ে না। এটি নিয়ে অনেক পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে তবে তাতে কারোরই টনক নড়ছে না। বিনিয়োগকারী ধরে রাখতে কোনো উদ্যোগও চোখে পড়ছে না।

এখন কী করা উচিত বলে আপনি মনে করেন?

করণীয় বলতে গেলে তো অনেক কিছুই আছে। সবচেয়ে বড় যে সংকট এখন তা হচ্ছে ভরসা করার কাউকে পাচ্ছে না বিনিয়োগকারীরা। তারা কার কথায় ভরসা করবে? কেউ তো সেভাবে পুঁজিবাজার নিয়ে কথাই বলতে চায় না। আগে একটু পতন হলে এটা নিয়ে প্রচুর আলোচনা হতো, এখন মনে হয় এটা যেনো অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। পতন হবে এটাই যেনো পুঁজিবাজারে এখন নিয়তি। আপনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ বলেন কেউ কিছু বলছে না। দিনের পর দিন পতন হচ্ছে তা নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও কিছু বলছে না। এমনকি বছরেরও বেশি সময় ধরে দেয়া ফ্লোর প্রাইসের সুরাহা কবে তাও জানেন না বিনিয়োগকারীরা। বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা অর্থ মন্ত্রণালয় বলেন পুঁজিবাজার ইস্যুতে কেউ কিছু বলতে চায় না। আমার প্রশ্ন তাহলে বাজারটা কীভাবে ভালো হবে? বাজার ভালো তো আমাদেরই করতে হবে। যেখানে নেতৃত্বে থাকবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে তাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী কিছু পাচ্ছে না বিনিয়োগকারীরা। এতে সবাই হতাশ হয়ে পড়ছেন। বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও ধীরে ধীরে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছে। বিদেশি ফান্ড এখন নেই বললেই চলে। তাদের লেনদেনও তলানিতে নেমেছে। সব মিলিয়ে দেশি-বিদেশি সবার অংশগ্রহণ এখন কমে যাচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে মোট লেনদেনে।

তাহলে যারা ব্রোকার হাউস চালাচ্ছেন তাদের কতটুকু চালেঞ্জ রয়েছে?

তাদের খবর কেউ নেয় না। প্রতিটি ব্রোকার হাউজকে এখন স্ট্রাগল করতে হচ্ছে। কারণ তাদের ব্যবসাটাই হচ্ছে লেনদেন নিয়ে। লেনদেন ভালো হলে তা থেকে প্রাপ্ত কমিশন দিয়েই তাদের চলতে হয়। তবে বর্তমানে লেনদেনের খরায় বহু ব্রোকার হাউজকে লোক ছাটাই করতে হচ্ছে। অনেকেই শুনেছি বেতন দিতে পারছে না তাদের কর্মীদের। যেসব হাউজে ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকা লেনদেন ছিল প্রতিদিন, সেখানে এখন ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা হচ্ছে। তাতে আয়ের অংশ ২০ ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। খরচ তো আগের মতোই আছে।

বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে বললেন, এর পেছনে কী কী কারণ রয়েছে?

দেখুন বিদেশিরা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে একটা সম্ভাবনাময় বাজার ভেবেছিল। তবে এখন সেই ধারণা নেতিবাচক হয়ে গেছে। তারা বিদেশ থেকে ফান্ড নিয়ে আসে ডলারে আবার বিক্রি করে নিয়েও যায় ডলারে। গেল এক বছরে ডলারের দামের যে পরিস্থিতি হয়েছে তাতে তারা এ দেশের বাজারকে স্ট্যাবল ভাবতে পারছে না। পাশাপাশি ফ্লোর প্রাইসে আটকে থেকে তাদের মধ্যে অনেকেই হতাশ। আপনি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের দিকে দেখুন, বিদেশিরা সেটাকে খুব স্টাবল ভাবছে। ওই দেশের বাজারে এখন সুদিন। খুব ভালো লেনদেন হচ্ছে, সূচকও বাড়ছে। আপনি শ্রীলংকাকে দেখুন সংকট কাটিয়ে এখন কত সুন্দর করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তাদের পুঁজিবাজারও এখন ভালো করছে। আশপাশের প্রায় সব দেশ ভালো করছে শুধু আমরা পারছি না, কেন পারছি না তার সদুত্তর কারো কাছেই নেই।

ভালো লেনদেন না হওয়ার পেছনে অনেকে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর দায় দেখেন, আপনি কী মনে করেন?

বিশ্বের প্রায় প্রতিটা পুঁজিবাজারে গতি আনতে মিউচ্যুয়াল ফান্ড বড় ভূমিকা রাখে। আমাদের দেশে সেখানেও আস্থার সংকট রয়েছে। মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো বাজারে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। এমনকি এত বছরেও এ ফান্ডে মানুষের আস্থা তৈরি হয়নি। বেশিরভাগের দর এখন ফেসভ্যালুর নিচে নেমেছে। এ বছর সেগুলো ভালো ডিভেডেন্ড ও দিতে পারেনি। তবে ভারতের বাজারের দিকে তাকান সেখানে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো খুব ভালো করছে। এজন্য তাদের বাজারেও গতি রয়েছে।

এখন অনেক কোম্পানি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করছে, বাজারে তার কোনো প্রতিফলন দেখতে পান কি?

মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে একটি অযুহাত রয়েছে তারা বাজারে লেনদেন করতে পারছে না, তাই খুব বেশি লাভও দিতে পারছে না। তবে অন্যান্য কোম্পানির ক্ষেত্রে এমন অযুহাত গ্রহণযোগ্য নয়। তবে আমরা দেখছি বাস্তবে বেশিরভাগ কোম্পানি এ বছর কাঙ্ক্ষিত ডিভেডেন্ড দিতে পারছে না। এটিও বাজার নেতিবাচক করার পেছনে ভূমিকা রাখছে। অনেকে আছেন যারা ডিভেডেন্ড ভালো পাবেন আশায় বিনিয়োগ করেছেন তারাও এখন হতাশ হয়ে পড়ছেন।


বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচকে ৩ ধাপ পেছাল বাংলাদেশ

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈশ্বিক উদ্ভাবনী সূচক (জিআইআই) ২০২৩-এ তিন ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। ১৩২টি দেশের মধ্যে এবার ১০৫তম অবস্থানে নেমে এসেছে বাংলাদেশ। আগেরবার ১৩২ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১০২তম। উদ্ভাবনী সূচকে বাংলাদেশ এবার ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে আছে।

জাতিসংঘের সংস্থা ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অর্গানাইজেশন (উইপো) গত বুধবার বৈশ্বিক উদ্ভাবনী সূচকের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিশ্বের অর্থনীতিগুলোর উদ্ভাবনী ক্ষমতা অনুসারে এ র‍্যাঙ্কিং তৈরি করে সংস্থাটি।

এতে বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতে ঋণের সম্প্রসারণ এবং দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্প বহুমুখীকরণ সূচকে অন্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান ৩ ধাপ নিচে নামল। বাংলাদেশের অবস্থান ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের পেছনে হলেও দক্ষিণ এশিয়ায় নেপালের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।

২০২০ ও ২০২১ সালে জিআইআই সূচকে বাংলাদেশের ১১৬তম অবস্থানে ছিল। ২০২২ সাল ১৪ ধাপ এগিয়ে এ র‍্যাঙ্কিংয়ে ১০২তম অবস্থানে উঠে আসে।

১০০-এর মধ্যে ৬৭.৬ স্কোর নিয়ে এ বছরও জিআইআই সূচকে বিশ্বের সবচেয়ে উদ্ভাবনী অর্থনীতির দেশের তালিকায় প্রথম স্থান দখল করেছে সুইজারল্যান্ড। এ তালিকায় এরপরই আছে সুইডেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সিঙ্গাপুর।

২০.২ স্কোর নিয়ে চলতি বছর বিশ্বের ৩৭টি নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের মধ্যে ২২তম এবং মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার ১০টি অর্থনীতির মধ্যে ৭ম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় ৪০তম অবস্থান দখল করে এই অঞ্চলে এবং নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করেছে ভারত।

দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরই সবচেয়ে উদ্ভাবনী দেশের স্থান দখল করেছে পাকিস্তান (৮৮তম), শ্রীলঙ্কা (৯০তম), বাংলাদেশ (১০৫তম) ও নেপাল (১০৮তম)।

দেশের গণমাধ্যমে প্রায়ই খবর আসে, দেশের কোনো এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে কেউ বিশেষ কিছু উদ্ভাবন করেছেন। যেমন রাজু নামে ভোলার এক কিশোর তৈরি করেছে জ্বালানিবিহীন মোটরসাইকেল। বগুড়ার যন্ত্রকৌশলী আমির হোসেন উদ্ভাবন করেছেন জ্বালানিবিহীন গাড়ি। বলা হয়েছে, মাত্র ২৫ টাকার কার্বন খরচ করেই এ গাড়ি টানা ৮ ঘণ্টা চলতে পারে, বহন করতে পারে যাত্রী ও মালামাল।

ফরিদপুরের স্বল্পশিক্ষিত দরিদ্র যুবক হাবিবুর রহমান ইমরান এমন একটি গাড়ি উদ্ভাবন করেছেন, যা জলে, স্থলে সমানভাবে চলাচল করতে পারে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ছাড়া বাল্ব জ্বালানো, মোবাইল-নিয়ন্ত্রিত হুইলচেয়ার বানানোসহ নানা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন এ দেশের তরুণ উদ্ভাবকেরা।

বাংলাদেশ উদ্ভাবনে ভালো করছে। কিন্তু দেখা গেছে, উদ্ভাবনকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টায় ঘাটতি আছে। বিশ্লেষকেরা বলেন, এসব উদ্ভাবন বাণিজ্যিক পর্যায়ে নেয়ার উদ্যোগ নেই। সেগুলোর পেটেন্ট বা মেধাস্বত্ব নিয়ে কেউ চিন্তাই করেন না। বাস্তবতা হচ্ছে, উদ্ভাবনকে টেকসই করতে হলে অবশ্যই তাকে বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক করে তুলতে হবে। মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে হবে। তা না হলে নতুন উদ্ভাবনে কেউ উৎসাহিত হবেন না। সে কারণেই বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে।


সিএসআর খাতে ৪৪ কোটি টাকা ব্যয় কমিয়েছে ব্যাংক

আপডেটেড ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ২২:২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

সামাজিক দায়বদ্ধতা (করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি বা সিএসআর) খাতে ব্যয় কমিয়েছে ব্যাংকগুলো। ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত) সিএসআর খাতে ব্যাংকগুলো ব্যয় করেছিল ৬১৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। চলতি বছর একই সময়ে ৫৭১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। সে হিসাবে প্রায় ৪৪ কোটি টাকা ব্যয় কমিয়েছে ব্যাংকগুলো।

এ হিসাবে গত বছরের তুলনায় ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসের ব্যাংকগুলো সিএসআর খাতে ব্যয় কমিয়েছে ৪৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিএসআর সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এ সব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আলোচিত সময়ে ব্যাংকগুলো সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে স্বাস্থ্য খাতে। এরপর ব্যয় করেছে দুর্যোগ ও শিক্ষা খাতে। এ ছাড়া পরিবেশ জলবায়ু ও অবকাঠামো উন্নয়নে শত কোটি টাকার বেশি ব্যয় করেছে ব্যাংকগুলো।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, জানুয়ারি-জুন ২০২৩ ষাণ্মাসিকে দেশে কার্যরত তফসিলি ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ব্যয় করেছে স্বাস্থ্য খাতে। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ২১৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। হিসাব অনুযায়ী এই অঙ্ক মোট সিএসআর ব্যয়ের ৩৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকগুলো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতের আওতায় সিংহভাগ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। এ খাতে ব্যাংকগুলো ব্যয় করেছে ১০৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। হিসাব অনুযায়ী, মোট সিএসআর ব্যয়ের ১৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ এ খাতে ব্যয় করা হয়েছে। এ বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকগুলো তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় করেছে শিক্ষা খাতে ৯০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। যা মোট সিএসআর ব্যয়ের ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। শিক্ষা খাতের ব্যয় পর্যালোচনায় দেখা যায়, ব্যাংকগুলো কর্তৃক বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানকল্পে সিএসআর ব্যয় করা হয়েছে। তা ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ প্রদান এবং শিক্ষা খাতের অবকাঠামো উন্নয়নেও অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট তহবিলেও অনুদান দিয়েছে।

পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রশমন-অভিযোজন খাতে ব্যয়ের পরিমাণ ৪৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। যা মোট সিএসআর ব্যয়ের ৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এ ছাড়া সিএসআর ব্যয়ের একটি উল্লেখযোগ্য খাত হলো ক্রীড়া ও সংস্কৃতি। এ খাতে ব্যয়ের পরিমাণ ৩০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, যা মোট ব্যয়ের ৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

ব্যাংকগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন এবং আয়-উৎসারী কার্যক্রম খাতে সিএসআর ব্যয় যথাক্রমে ৫২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, ৪ কোটি ৯২ লাখ। অন্যান্য খাতে ব্যয় করেছে ২১৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এ অঙ্ক মোট ব্যয়ের ৩৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি ব্যাংকের চেয়ে বেসরকারি ব্যাংকে সিএসআর ব্যয় বেশি হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংক মিলে ৪ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। বেসরকারি সব ব্যাংক ৫৫১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। যা মোট ব্যয়ের ৯৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। বিদেশি সব ব্যাংক ১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা সিএসআর খাতে ব্যয় করেছে।

সিএসআর ব্যয়ে শীর্ষে রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ব্যয় করেছে ৬১ কোটি ৩২ লাখ টাকা, দ্বিতীয় ইসলামী ব্যাংক, ব্যয় করেছে ৪৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা, আল-আরাফাহ ব্যাংক, ব্যয় করেছে ৪২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ৩৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা এবং যমুনা ব্যাংকের সিএসআর ব্যয় ৩৮ কোটি টাকা।

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান সিএসআর খাতে কোনো টাকা ব্যয় করেনি।


banner close