সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৩১ ভাদ্র ১৪৩২

ডলারসংকটে আমদানিতে অস্বস্তি

আপডেটেড
৬ আগস্ট, ২০২৩ ১৪:২৫
মৌসুমী ইসলাম
প্রকাশিত
মৌসুমী ইসলাম
প্রকাশিত : ৬ আগস্ট, ২০২৩ ১৪:২৫

দেশব্যাপী বাড়ছে ডেঙ্গুর বিস্তার। জ্বর হলেই পরীক্ষার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক। কিন্তু সহজেই কি মিলছে ডেঙ্গু পরীক্ষার কীট! না মিলছে না। আমদানির ক্ষেত্রে বাধা হয়ে সামনে এসেছে ডলারসংকট। ঋণপত্র খোলা এবং সরবরাহে ঘটছে বিপত্তি।

শুধু ডেঙ্গু পরীক্ষার কীটই নয়, সব ধরনের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সংকট তৈরি হয়েছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা সংকটের এখনো সুরাহা হয়নি। ডলার নিয়ে অস্বস্তি এখনো বিদ্যমান। ব্যাংকের কাছে পর্যাপ্ত ডলার নেই। ব্যবসায়ীরা আমদানির ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত হয়ে হাত গুটিয়ে বসে আছেন। ডলারের স্বল্পতা এবং উচ্চমূল্যই আমদানির ক্ষেত্রে অন্তরায়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই সংকটের সুরাহা কবে হবে তার কোনো ঠিকঠিকানা নেই। অনিশ্চয়তা তীব্র হয়েছে। ব্যাংকাররা বলছেন, চাহিদামতো ডলারের জোগান দেয়া যাচ্ছে না। বিশ্লেষকদের মত, ডলারের সংকট কাটাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।

অর্থনীতিবিদ ও বেসরকারিও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক দীর্ঘদিন ডলারের বিনিময় হার কৃত্রিমভাবে ধরে রেখেছিল। এখন তার খেসারত দিতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মহাসচিব ও মৃধা বিজনেস লিমিটেডের পরিচালক আল মামুন মৃধা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমদানিতে বিভিন্ন কড়াকড়ির ফলে গেল বছরের তুলনায় ডলারসংকট কিছুটা কমেছে। কিন্তু সংকট এখনো কাটেনি।’

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, ‘রপ্তানিকারকদের ডলারসংকটে তেমন সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু অভ্যন্তরীণ আমদানির ক্ষেত্রে এখনো সমস্যা প্রকট হচ্ছে। লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে সংকট তীব্র হয়েছে।’

আমদানিতে সংকট
ডেঙ্গু কীট, খাদ্যপণ্য, গুঁড়ো দুধ, চিনি, তেলসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য আমদানিতে পর্যাপ্ত ঋণপত্র বা এলসি খুলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। দেশে হঠাৎ করেই ডেঙ্গু ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ফলে বেড়েছে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কীটের চাহিদা। কিন্তু কীট আমদানিতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ডলারসংকট। ব্যবসায়ীরা চাহিদা অনুযায়ী এলসি খুলতে পারছেন না।

ডেঙ্গু কীট আমদানি করে হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। মূল চালান আসে ভারত ও চীন থেকে। ডেঙ্গু কীট আমদানি করা এফএস সার্জিক্যালের স্বত্বাধিকারি শাহ আলম জানান, চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমদানিতে খরচও বেড়েছে। যে পণ্য আমদানিতে আগে এক টাকা খরচ হতো, এখন সেখানে এক টাকা ২০ পয়সা গুণতে হচ্ছে। সারা দেশে যে হারে প্রয়োজন সে হারেও আমদানি করাও যাচ্ছে না। চাহিদার অর্ধেকও আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না।

কীট আমদানিকারক একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাভাবিক অবস্থায় এ সময়ে আগে চাহিদা ১০ হাজার থাকলেও এ বছর সেটা বেড়ে ১ লাখে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংকগুলো যদি জরুরিভাবে এসব পণ্যের এলসি খুলতে সহায়তা করে তাহলে সুবিধা হতো। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমদানিতে শতভাগ মার্জিন ছাড়া ঋণপত্র খুলতে পারছেন না তারা। এসব সুবিধা শিথিল করা উচিত।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় সারা বিশ্বে ডলারসংকট তৈরি হয়। বাংলাদেশেও যার প্রভাব পড়ে সব ধরনের আমদানির ওপর। তখন আমদানি নিরুৎসাহিত করতে এলসি খোলার ওপর কড়াকড়ি আসে। তবে ওষুধ ও চিকিৎসার মতো জীবন রক্ষার উপকরণে এই কড়াকড়ি না থাকার কথা বাংলাদেশ ব্যাংকের গত বছরের ৪ জুলাইয়ের সার্কুলারে স্পষ্ট করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর স্বীকৃত জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও সরঞ্জামসহ চিকিৎসা-সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত দ্রব্য আমদানিতে এলসি মার্জিনসীমা বেঁধে দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই অনুযায়ী আমদানিকারকদের প্রয়োজন অনুযায়ী এলসি খুলতে বাধা থাকার কথা না থাকলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আমদানিকারক বলেন, ‘গুঁড়ো দুধ, চিনি, তেল আমদানির জন্য ব্যাংকে গেলে ফিরিয়ে দিচ্ছে। এলসিই তো খোলা যাচ্ছেই না। যদি ৩ লাখ ডলারের এলসি করতে যাই, তারা বলে এত ডলার নেই, ৫০ হাজার বা ৭০ হাজার করেন। আবার ডলারের দাম বাড়ায় খরচও বেড়ে গেছে। তিন মাস আগে যে পণ্যটি ৯৫ ডলার হিসাব করে কিনেছিলাম, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন তা কিনতে ১১৫ পড়ছে। অন্যান্য খরচও বেড়েছে ডলারের দামের অনুপাতে।’

গম ও সার আমদানিকারক ফাইজুর রহমান বকুল বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে এখন গম আমদানির বিকল্প বাজার খোঁজা হচ্ছে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ডলারসংকট বড় প্রতিবন্ধকতা।

ডলারের বাজার কত
অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে আন্তব্যাংক লেনদেনে ডলারের দর সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকের এক ডলার কিনতে লেগেছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকায়।

গত সোমবার এবিবি ও বাফেদার বৈঠকে রপ্তানি আয়ে ডলারের দর এক টাকা বাড়ানো হয়েছে; রেমিট্যান্স বাড়ানো হয়েছে ৫০ পয়সা। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার থেকে রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দর ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা। আর রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে ১০৯ টাকা। আর আমদানি নিষ্পত্তিতেও ডলারের দাম ৫০ পয়সা বাড়িয়ে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে। পরের দিন বুধবার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির দর বাড়িয়ে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তবে, এবিবি ও বাফেদার সিদ্ধান্ত অনেক ক্ষেত্রেই মানেনি ব্যাংকগুলো। অনেক ব্যাংক এই দুই সংগঠনের বেঁধে দেয়া দামের চেয়েও বেশি দামে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করেছে। এ জন্য কয়েক দফায় কয়েকটি ব্যাংককে সতর্ক করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করেই চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চাহিদার কারণে গত অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় নতুন অর্থবছরেও রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি অব্যাহত রাখা হয়েছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সব মিলিয়ে ১১৪ কোটি ৭০ লাখ (প্রায় ১.১৫ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব মিলিয়ে রিজার্ভ থেকে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছিল। তার আগের অর্থবছরে (২০২১-২২) বিক্রি করা হয়েছিল ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।

কবে থেকে সংকট শুরু

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত বছরের মার্চ থেকে দেশে ডলারসংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া অন্য পণ্য আমদানিতে একের পর এক কঠোরতা আরোপ করতে থাকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। বিভিন্ন কড়াকড়ির ফলে আমদানি কমলেও ডলারসংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করে। ব্যাংকগুলো ইচ্ছেমতো দরে ডলার বিক্রি করে। এরপর ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এতে সংকট আরও বেড়ে যায়।

পরে গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেয়া হয় ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) ওপর। এরপর থেকে এই দুই সংগঠন মিলে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স এবং আমদানি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে।

সরকারের পদক্ষেপ
বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ এত দিন ডলারেই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য করে আসছে। তবে ডলারের ওপর চাপ কমাতে চলতি বছরের ১১ জুলাই ভারতের সঙ্গে মার্কিন ডলারে লেনদেনের বিদ্যমান ব্যবস্থার পাশাপাশি রুপিতে লেনদেন শুরু হয়েছে। তবে রুপিতে যে পরিমাণ রপ্তানি আয় হবে, শুধু সমপরিমাণ আমদানি দায় মেটাতে ভারতীয় এ মুদ্রা খরচ করা যাবে।

কোনো ব্যাংক বা ব্যবসায়ী ডলার কিংবা অন্য কোনো বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে রুপি কিনে আমদানি দায় নিষ্পত্তি করতে পারবে না। প্রথমে ভারতীয় মুদ্রায় লেনদেন শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে এ সুবিধা মিলবে টাকাতেও। এতে বৈদেশিক মুদ্রায় চাপ কমবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া চীনা মুদ্রা ইউয়ানে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারেন।

কবে আসবে স্বস্তি
অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দর বাজারভিত্তিক করার দিকে যাচ্ছে। রপ্তানি, রেমিট্যান্স, আমদানিতে দর বেঁধে দিচ্ছে। এটা করলে একটা সমাধান হতে পারে। খোলাবাজারের সঙ্গে ব্যাংকের ডলারের দামের পার্থক্য সর্বোচ্চ ২ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। এ জন্য বৈধ পথে আয় এবং রপ্তানি বাড়াতে হবে। তাহলে সংকটও কমবে।

বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মহাসচিব আল মামুন মৃধা বলেন, ‘করোনার শুরুতে এটা আমরা বলেছি আমদানিতে শুধু ডলারনির্ভরতা ভবিষ্যতে আমাদের বড় সংকটে ফেলবে। ডলার বাজার যখন ৮৫ টাকা থেকে একটু একটু করে বাড়তে শুরু করেছে তখন বিকল্প ব্যবস্থায় আমদানির কথা আমরা বারবার বলেছি। ইতোমধ্যে ভারতের সঙ্গে রুপিতে লেনদেন চালু হয়েছে। চায়না কারেন্সি ইউয়ানেও চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ উদ্যোগগুলো ২০২০ থেকে নেয়া হলে ডলারের এত সংকট হতো না।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে চায়না মুদ্রায় এলসি খোলার জন্য ২০১৮ ও ২০২১ সালে সার্কুলার করা হলেও ব্যাংকগুলো তেমন সাড়া দেয়নি। তারা বলছে, তাদের কাছে পর্যাপ্ত ইউয়ান মজুত নেই। এখন চায়না কারেন্সিতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা যাচ্ছে। কিন্তু এসব প্রক্রিয়া এখনো সেভাবে চালু হয়নি। চায়না কারেন্সি মজুত বাড়ানোর কোনো উদ্যোগও নেয়া হয়নি। চায়নার ৮০টি দেশের সঙ্গে বিভিন্ন কারেন্সিতে তাদের মূল বাণিজ্য করে। তারা কীভাবে কারেন্সি সমস্যার সমাধান করছে, কোন প্রক্রিয়ায় লেনদেন হচ্ছে এসব বিষয়ে জেনে পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে।’

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, ‘লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, কটেজ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ব্যবসায়ীদের এলসি খুলতে সমস্যা হচ্ছে। কারণ, ব্যাংকে তারা ডলার সেভাবে পাচ্ছেন না। খোলা বাজার থেকে চড়া দামে ডলার কেনার ফলে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এভাবে মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দিচ্ছে। কারণ ব্যাংক ও কাব মার্কেটে ডলার দরের ব্যবধান কমানো না গেলে সমস্যা থেকেই যাবে।’

ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান টিপু বলেন, ‘ডলারের কারণে ইলেকট্রনিক্স পণ্য আমদানিতে সমস্যা হচ্ছে। পর্যাপ্ত ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। বলেন, কম্পিউটার সামগ্রী আমদানির ক্ষেত্রেও স্বস্তি নেই।’

বিষয়:

ভেড়ামারায় পানচাষিদের বেহাল দশা

আপডেটেড ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৮:৫৫
ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সুস্বাদু ও বৃহৎ আকৃতির পানের জন্য প্রসিদ্ধ। কিন্তু পানের দাম কম হওয়ায় পানচাষিদের বেহাল দশা পরিলক্ষিত হচ্ছে। দাম অত্যন্ত কম ও খরচ অত্যাধিক বেশি হওয়ায় দিন দিন পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন প্রান্তিক কৃষক। ভেঙে ফেলছেন পানের বরজ।

জানা যায়, ভেড়ামারা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে প্রায় ৬৪৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। যেখানে প্রতি বছরে ৭ হাজার মেট্রিক টন পান উৎপাদন হয়। তা ছাড়াও ব্রিটিশ আমল থেকে এই অঞ্চল পান চাষের জন্য প্রসিদ্ধ।

সরেজমিনে গিয়েও উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন জুনিয়াদহ, ধরমপুর ও বাহাদুরপুরের প্রান্তিক পানচাষিদের দুর্ভোগের চিত্র ফুটে ওঠে। প্রতি বিঘা নতুন পান বরজে খরচ হয় ৩-৪ লাখ টাকা। যেখানে পান বিক্রি করে আসছে ১ লাখেরও কম। পান বরজের সরঞ্জামের দামও পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি। পূর্বে যে শ্রমিকের দাম ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, বর্তমানে তা হয়েছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। সে কারণে অনেকেই পান ররজ মেরামত করছেন না। তা ছাড়া দাম কম হওয়ায় অনেকেই বরজের পান ভাঙছেন না। ঋণের দায়ে জর্জরিত কেউ কেউ বরজ ভেঙে অন্য চাষাবাদের চেষ্টা করছেন। পান বরজের ওপর ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে না পেরে অনেকে হয়েছেন ভিটে ছাড়া।

পান হাট জগশ্বরে দেখা যায়, ৫০-২০০ টাকা বিড়ার পান বিক্রি হচ্ছে ৫-৩০ টাকায়। খুব ভালো মানের পান বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা বিড়া।

পান বিক্রি করতে আসা পান চাষি মো. রফিক জানান, প্রতি বিড়া পান ৭ টাকায় বিক্রি করলাম। যা গত বছর ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি করেছি। যাতে করে পান ভাঙা আর যাতায়াত খরচই উঠল না। এই ব্যবসা আর করা হবে না। পানচাষি তুষার জানান, আমার জীবনে পানের দাম এত কম দেখিনি। আমার ৯০ পিলি পান বরজ ছিল কিন্তু দাম না পেয়ে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বাহাদুরপুরের পানচাষি ৭০ বছর বয়ষি বৃদ্ধা জমেলা খাতুন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘৪০ বছরের পুরোনো পান বরজ আমার। না পারছি ভাঙতে, না পারছি রাখতে। পান বাজারে নিলে খরচের টাকাও ফিরে পাচ্ছি না।’

জগশ্বর পানহাটের সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন জানান, উৎপাদন বেশি ও রপ্তানি না থাকায় এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় পানের দাম অনেক কম। কিন্তু শ্রমিক ও পান বরজের সরঞ্জামের দাম পূর্বের থেকে ২-৩ গুণ বেশি। সরকারি কোনো প্রণোদনা না থাকায় প্রান্তিক পানচাষিদের মধ্যে হাহাকার লক্ষ্য করছি। ঋণের ভারে জর্জরিত চাষিরা এই আবাদ ছেড়ে দিচ্ছেন। অর্থকরী এই খাতটিকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের সাহায্য চাই।

ভেড়ামারা উপজেলার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আশফাকুর রহমান দৈনিক বাংলাকে জানান, দাম কম হওয়ায় পানচাষিদের বেহাল দশার বিষয়টি আমরা শুনেছি।


শ্রীমঙ্গলে সম্ভাবনাময় গুলমরিচের চাষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা

চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের চা-বাগান ও পাহাড়ি এলাকায় মসলা জাতীয় ফসল গুলমরিচের চাষাবাদের ব্যাপক উপযোগী পরিবেশ। তবে এলাকাবাসীর দাবি এখনো বাণিজ্যিকভাবে চাষের পর্যায়ে পৌঁছায়নি শ্রীমঙ্গল। স্থানীয় চা-বাগান ও কিছু পাহাড়ি জমিতে বিচ্ছিন্নভাবে গুলমরিচের গাছ দেখা গেলেও সেগুলোর ফলন মূলত নিজেদের প্রয়োজন বা সীমিতভাবে বিক্রয়ের জন্যই ব্যবহার হচ্ছে। অথচ এই অল্প চাষেও ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা। সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্যোগ থাকলে শ্রীমঙ্গলে গুলমরিচ হতে পারে লাভজনক একটি মসলা ফসল।

শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে পান গাছের মতো অন্যান্য বড় গাছকে আকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে গুলমরিচের চাষ। উপজেলার হরিনছড়া চা বাগানের সবচেয়ে বেশি গুলমরিচের গাছ দেখা গেছে। সেখানে চা বাগানের ভিতরে প্রায় ২৫টি গাছের সব কটিতেই ফলন এসেছে। সবুজ পাতার ফাকে ফাকে গুলমরিচগুলো আঙ্গুর ফলের মতো ঝুলে রয়েছে। সেখানে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকরাও একবার হলেও ঘুরে দেখছেন গাছগুলো। উপজেলার রাধানগর ও মহাজেরাবাদ এলাকায় রয়েছে কয়েকটি গাছ। এই গাছগুলোর গুলমরিচ গাছেই থাকে, সখ করে কেউ সংগ্রহ করে, না হয় গাছেই নষ্ট হয়।

স্থানীয় পর্যায়ে সম্ভাবনা থাকলেও গুলমরিচ চাষ এখনো বিনিয়োগ ও পরিকল্পনার অভাবে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক রূপ পায়নি। কৃষি বিভাগ ও উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে উদ্যোগ নিলে শ্রীমঙ্গলের গুলমরিচ হতে পারে একটি নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত।

হরিনছড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক বিকাশ সিংহ জানান, ‘আমাদের চা বাগানের সেকশনের ভেতরে প্রায় ২০ বছর আগে লাগানো বেশ কিছু গুলমরিচ গাছ রয়েছে। শ্রমিকরাই এসব গাছের দেখাশোনা করেন। গাছগুলোতে ফলনও আসে, তবে বাণিজ্যিকভাবে সংগ্রহ করা হয় না। গাছগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে, দেখতেও সুন্দর লাগে।

পাইকারি মসলার দোকান মেসার্স মানিক দেব-এর পরিচালক তাপস দেব জানান, ‘স্থানীয় কিছু চাষি আমাদের কাছে গুলমরিচ বিক্রি করতে আসে, তবে পরিমাণ খুবই কম। আমাদের দোকানে বিক্রি হওয়া গুলমরিচের বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আমদানি করা। দেশে যদি গুলমরিচ চাষ ব্যাপক হতো তাহলে আমরা কম দামে কিনতে পারতাম, বাজারেও দাম কমত।’ বর্তমানে প্রতি কেজি কালো গুলমরিচ ১২০০ টাকা এবং সাদা গুলমরিচ ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উজ্জ্বল সূত্রধর দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘গুলমরিচ চাষের জন্য কাটিং (বাইন) সংগ্রহ করে মাটিতে লাগাতে হয়। প্রায় ৬ মাসের মধ্যে ফলন আসে। গাছের বয়স দুই বছর হলে তা থেকে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তখন এগুলো প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাত করা যায়।’

তিনি আরও জানান, ‘শ্রীমঙ্গলের পাহাড়ি এলাকাগুলোর মাটি গুলমরিচ চাষের জন্য উপযোগী। ইতোমধ্যে প্রায় দুই হেক্টর জমিতে বিচ্ছিন্নভাবে এর চাষ হচ্ছে। আমরা কৃষি অফিস থেকে মহাজেরাবাদসহ দশটি জায়গায় চারা রোপণ করেছি। এখন কেউ চাষ করতে আগ্রহী হলে আমরা পরামর্শ ও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।


দাম কমল জেট ফুয়েলের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিমানে ব্যবহৃত জ্বালানি তেল জেট ফুয়েলের দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বুধবার থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হয়েছে।

বিইআরসি ঘোষিত নতুন দামে দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে জেট ফুয়েলের লিটারপ্রতি দাম ৯৯ টাকা ৬৬ পয়সা থেকে কমিয়ে ৯৬ টাকা ৯ পয়সা করা হয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে জেট ফুয়েলের লিটারপ্রতি মূল্য শূন্য দশমিক ৬৫০২ ডলার থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৬৩৩৩ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে গত আগস্টে জেট ফুয়েলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে প্রতি লিটার ৯৮ টাকা ২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯৯ টাকা ৬৬ পয়সা এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে শূন্য দশমিক ৬৪০১ ডলার থেকে বাড়িয়ে শূন্য দশমিক ৬৫০২ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছিল।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ অনুযায়ী, দেশি ও বিদেশি এয়ারলাইনসের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য ডিউটি ফ্রি (শুল্ক ও মূসকমুক্ত) এবং অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য শুল্ক, মূসকসহ জেটএ-১-এর (এভিয়েশন ফুয়েল) মূল্যহার নির্ধারণের ক্ষমতা এখন বিইআরসির হাতে।

এর আগে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এই দাম নির্ধারণ করত। চলতি বছরের শুরু থেকে এ দায়িত্ব চলে যায় বিইআরসির কাছে।

এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিপিসি গত ২০ জানুয়ারি জেট ফুয়েলের মূল্যহার-সংক্রান্ত প্রস্তাব দেয়। পরে পদ্মা অয়েল কম্পানি লিমিটেড (পিওসিএল) গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিপণন চার্জ পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব কমিশনে জমা দেয়।

বিমান সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, বাংলাদেশে জেট ফুয়েলের দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি এবং মানও আন্তর্জাতিক মানসম্মত নয়।

এ কারণে এখানকার বিমানভাড়া তুলনামূলক বেশি নির্ধারণ করতে হয়।


কাতারে হামলার পর বিশ্ববাজারে বাড়ল তেলের দাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

কাতারে ইসরায়েলি হামলা ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়ান তেল ক্রেতাদের ওপর শুল্ক আরোপের আহ্বানের পর বুধবার বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে। তবে দুর্বল চাহিদা ও বাজারের সামগ্রিক মনোভাবের কারণে এই বৃদ্ধির গতি সীমিত ছিল।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এদিন ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬১ সেন্ট বা ০.৯২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭ ডলারে। একই সময়ে মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুড তেলের দাম ৬১ সেন্ট বা ০.৯৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৬৩.২৪ ডলারে।

ওএএনডিএ-এর সিনিয়র বাজার বিশ্লেষক কেলভিন ওং বলেন, কাতারে ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে তেলের সরবরাহ নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যদি ওপেকপ্লাস সদস্যদের তেল স্থাপনাগুলো হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়, তাহলে স্বল্পমেয়াদে তীব্র সরবরাহ সংকট দেখা দিতে পারে।

এই হামলায় ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা হামাস নেতৃত্বকে লক্ষ্য করেছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী এই হামলাকে শান্তি আলোচনার জন্য বড় হুমকি বলে বর্ণনা করেছেন।

হামলার পর বাজারে প্রথমে তেলের দাম প্রায় ২ শতাংশ বেড়ে যায়, তবে পরে যুক্তরাষ্ট্র দোহাকে আশ্বস্ত করে যে এরকম ঘটনা আর ঘটবে না এবং সরবরাহে কোনো তাৎক্ষণিক বিঘ্ন না ঘটায় মূল্যবৃদ্ধি স্থিতিশীল হয়ে পড়ে।

এদিকে ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা চীন ও ভারতের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। ট্রাম্পের লক্ষ্য হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানো।

চীন ও ভারত রাশিয়ার প্রধান তেল ক্রেতা। ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এই দুই দেশ রাশিয়ার অর্থনীতিকে সচল রাখতে সহায়তা করে যাচ্ছে।

এলএসইজি-এর বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন বা ভারতের মতো বড় ক্রেতাদের ওপর যদি শুল্ক আরোপ করা হয়, তবে তা রুশ তেলের রপ্তানি বিঘ্নিত করতে পারে, যা বৈশ্বিক সরবরাহ সংকোচনের মাধ্যমে তেলের দামে ঊর্ধ্বগতি আনতে পারে।


বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আমদানিকৃত পণ্যচালান শুল্কায়নের বিষয়ে দিক-নির্দেশনা প্রদান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

উপর্যুক্ত বিষয়ের প্রতি সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো।

০২। সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কাস্টমস হাউস/স্টেশনে আমদানিকালে দাখিলকৃত পণ্য ঘোষণায় প্রদত্ত পণ্যের বর্ণনা ও HS Code কায়িক পরীক্ষায় পণ্যের নমুনা কিংবা শুল্কায়ন পরবর্তী সময়ে পণ্যের ঘোষিত বর্ণনা পরিবর্তিত হয়, যা ক্ষেত্রবিশেষে প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স অথবা প্রাপ্যতা শীট বা সংশ্লিষ্ট Utilization Declaration (UD) তে অন্তর্ভূক্ত থাকে না। ফলে শুল্কায়নকালে উহা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে যথাসময়ে কাঁচামাল/পণ্য খালাস না হওয়ায় রপ্তানি আদেশ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য জাহাজীকরণে বিঘ্ন ঘটছে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অবগত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ও রপ্তানি বাণিজ্যের বৃহত্তর স্বার্থে জরুরি বিবেচনায় নিম্নরূপ নির্দেশনা প্রদান করা হলো:

(ক) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন HS Code নিরূপণ করলে এবং নিরূপিত HS Code এর প্রথম ৪ ডিজিট বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত HS Code এর প্রথম ৪ ডিজিট এর সাথে মিল থাকলে; আমদানিকারক পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে এই নিরূপিত HS Code বন্ড লাইসেন্সে ও ইউডিতে অন্তর্ভূক্ত করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস এর কমিশনার এর নিকট দাখিল করবেন যার বিপরীতে কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।

(খ) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন বর্ণনা নিরূপণ করলে; আমদানিকারক পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্তরূপ নিরূপিত পণ্যের বর্ণনা বন্ড লাইসেন্সে ও ইউডিতে অন্তর্ভূক্ত করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস এর কমিশনার এর নিকট দাখিল করবেন যার বিপরীতে কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।

গ) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভিন্ন HS Code নিরূপণ করা হলে এবং বন্ড লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কাস্টমস বন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটের মাধ্যমে তার প্রাপ্যতায় উক্ত HS Code অন্তর্ভুক্ত করলে কাস্টমস হাউস এর কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করবেন এবং পণ্য চালান খালাসের তথ্য সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।

০৩। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে; এবং বর্তমানে উক্তরূপ কারণে শুল্কায়ন নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষমান পণ্যচালানসমূহের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।


সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় লেনদেন ১৪০০ কোটি টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস গতকাল সোমবার মূল্যসূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় মধ্য দিয়ে সামান্য কমেছে লেনদেন। সেই সাথে কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর।

বেশির ভাগ ভালো কোম্পানির দর কমেছে। সেই সঙ্গে অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ডের দাম হ্রাস পেয়েছে। তবে ‘পচা’ বা ‘জেড’ স্তরের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভালো কোম্পানিগুলোর পতনে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমার তালিকা বড় হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে প্রধান মূল্যসূচক। পাশাপাশি লেনদেন কিছুটা কমলেও তা ছিল ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ওপর। এর মাধ্যমে চলতি বছর দুইবার ১৪শ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। সেই সঙ্গে বেড়েছে মূল্য সূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।

দিন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১২৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২২৩টির। আর ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৬২৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২২৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪০০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৪৪১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৪১ কোটি ৬ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ওপর লেনদেন হলো।

আরেক শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৬৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৭টির দাম বেড়েছে, কমেছে ১১১টির ও ২৬টির অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।


বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ইতিহাস, ছুঁলো ৩৬০০ ডলারের মাইলফলক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে স্বর্ণের দাম। এতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছাড়িয়েছে ৩ হাজার ৬০০ ডলারে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬১২ দশমিক ২০ ডলারে, যা দিনের শুরুতে পৌঁছেছিল রেকর্ড ৩ হাজার ৬১৬ দশমিক ৬৪ ডলারে।

আর ডিসেম্বরে সরবরাহের জন্য মার্কিন স্বর্ণ ফিউচার অপরিবর্তিত থেকে দাঁড়িয়েছে আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৬৫৩ দশমিক ১০ ডলারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চাকরির প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় এবং বেকারত্ব বেড়ে গেছে। এতে বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, ফেডারেল রিজার্ভ শিগগিরই সুদের হার কমাবে। সেই প্রত্যাশার ফলেই মূল্যবান এই ধাতুর বাজারে দেখা দিয়েছে বড় উত্থান।

সুইসকোটের বিশ্লেষক কার্লো আলবার্তো ডি কাসা বলেন, 'সুদের হার কমার জোরালো প্রত্যাশাই স্বর্ণের চাহিদা বাড়াচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। তাছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর অব্যাহত স্বর্ণ কেনাও বড় ভূমিকা রাখছে।’

ইউবিএসেরর বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো বলেন, ‘আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে আউন্সপ্রতি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৭০০ ডলারে উঠতে পারে।’

অন্যদিকে, বিশ্ববাজারে রূপার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে আউন্সপ্রতি ৪১ দশমিক ০৮ ডলারে। প্লাটিনামের দাম ১ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৩৯৪ দশমিক ৯০ ডলার এবং প্যালাডিয়ামের দাম ১ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১২৪ দশমিক ২৪ ডলারে।


বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়াতে চীনের সহযোগিতার আহ্বান ডিসিসিআইয়ের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের দক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চীনের সহযোগিতা কামনা করেছেন। সোমবার ঢাকায় চীনা দূতাবাসে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনায় তিনি এ আহ্বান জানান।

ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে মোট দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৭.৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যেখানে বাংলাদেশের আমদানির-রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১৬.৬৪ বিলিয়ন ও ৭১৫.৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের টেকসই সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখা এবং এলডিসি উত্তরণের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে দু’দেশের দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য চীন সর্ববৃহৎ আমদানিকারক দেশ এবং দেশটির সঙ্গে বিশেষকরে অবকাঠামো, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, শিক্ষা এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে বহুমাত্রিক সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। এছাড়াও কৃষি ও খাদ্য পণ্য খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, তথ্যপ্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অটোমোবাইল, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, পাদুকা, লজিস্টিকস, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও স্বাস্থ্যসেবা, এপিআই, সেমিকন্ডাক্টর এবং জাহাজ নির্মাণ প্রভৃতি খাতে চীনের সার্বিক সহযোগিতার আহ্বান জানান তাসকীন আহমেদ।

সেই সঙ্গে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সহায়তায় চীনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ডিসিসিআই সভাপতি।

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত তৈরি পোশাক, টেক্সটাইল খাতের ২০টিরও বেশি নতুন চীনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে। যা বাস্তবায়িত হলে এ খাতে বাংলাদেশের রপ্তানি আরো বৃদ্ধি পাবে।

তিনি আরও বলেন, চীনা উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিশেষকরে বিদ্যুৎ চালিত যানবাহন (ইলেকট্রনিক ভেহিকেল) খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ রয়েছে, তবে এখাতে বিদ্যমান উচ্চ শুল্ক এবং সহায়ক নীতিমালার অনুপস্থিতি সংশ্লিষ্ট খাতের বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করছে।

রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট নীতিমালার যুগোপযোগীকরণে উদ্যোগী হবে এবং ঢাকা চেম্বারকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

তিনি জানান, বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে, যা দীর্ঘমেয়াদে টেকসই নয়। এমতাবস্থায় তিনি বাংলাদেশের রপ্তানির সম্ভাবনাময় অন্যান্য খাতকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ ও সক্ষমতা বাড়ানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

এছাড়াও বাংলাদেশের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তা গ্রহণের আহ্বান জানান চীনের রাষ্ট্রদূত।


দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ১২০০ টন ইলিশ রপ্তানি করবে সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্গাপূজা উপলক্ষে এক হাজার দুইশ টন ইলিশ শর্তসাপেক্ষে ভারতে রপ্তানির জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি-২ শাখার উপসচিব এস এইচ এম মাগফুরুল হাসান আব্বাসীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ইলিশ মাছ রপ্তানির বিষয়ে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতি বছরের ন্যায় চলতি ২০২৫ সালে দুর্গাপূজা উপলক্ষে ১,২০০ (এক হাজার দুইশত) ইলিশ ভারতে শর্তসাপেক্ষে রপ্তানির জন্য সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সে আলোকে আগ্রহী রপ্তানিকারকদের নিকট হতে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে হার্ড কপিতে আবেদন আহ্বান করা হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, ইআরসি, আয়কর সার্টিফিকেট, ভ্যাট সার্টিফিকেট, বিক্রয় চুক্তিপত্র, মৎস্য অধিদপ্তরের লাইসেন্সসহ সংশ্লিষ্ট দলিলাদি দাখিল করতে হবে।

সরকার প্রতি কেজি ইলিশের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ১২ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে।

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগেই যারা আবেদন করেছেন, তাদেরকেও নতুনভাবে আবেদন দাখিল করতে হবে বলে জানানো হয়েছে।

অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি ইলিশ রপ্তানি না করা, অনুমতি কোনোভাবেই হস্তান্তর না করা এবং অনুমোদিত রপ্তানিকারক ছাড়া ঠিকায় (সাব-কন্ট্রাক্ট) রপ্তানি না করার শর্তও থাকছে। বলা হয়েছে, সরকার যেকোনো সময় রপ্তানি বন্ধ করতে পারবে। সব সময়ই এসব শর্ত থাকে।

গত বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথমে ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে শেষ পর্যন্ত ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল। এবার এর অর্ধেক ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলো। গতবার সব মিলিয়ে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে।


ফের বেড়েছে স্বর্ণের দাম, আজ থেকে কার্যকর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশের বাজারে আবারও বেড়েছে স্বর্ণের দাম। নতুন করে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণে ২ হাজার ৭১৮ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে এখন ২২ ক্যারেট স্বর্ণের নতুন দাম দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮১ হাজার ৫৫০ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বাজুসের ‘স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং’ কমিটি বৈঠকে বসে দাম বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত নেয়।

পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।

এর আগে গত ৪ ও ২ সেপ্টেম্বর এবং ৩১ ও ২৭ আগস্ট স্বর্ণের দাম চার দফায় বাড়ানো হয়। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে আবারও দাম বাড়ানোর বিষয়ে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) জানিয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।


আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমে ৮.২৯ শতাংশ, তিন বছরে সর্বনিম্ন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট মাসে দেশের মূল্যস্ফীতি কমে বিগত তিন বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ মাসে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ৮.২৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়েছে। আগস্ট মাসে খাদ্যখাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ, যা জুলাই মাসে ছিল ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

রোববার এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

বিবিএস জানায়, ২০২২ সালের আগস্টে ৯ দশমিক ৫২, ২০২৩ সালের আগস্টে ৯ দশমিক ৯২ ও ২০২৪ সালের আগস্টে সাধারণ বা সার্বিক খাতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

বিবিএসের তথ্যানুসারে, গত জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ। সেই হিসাবে জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমেছে ০ দশমিক ২৬ শতাংশ। গত বছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

অন্যদিকে আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৬০ শতাংশে। জুলাই মাসে এ হার ছিল ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর ২০২৪ সালের আগস্টে খাদ্যমূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

আগস্ট মাসে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি কমে ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ হয়েছে, জুলাই মাসে যা ছিল ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ২০২৪ সালের আগস্টে এ হার ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

এদিকে, স্বল্প আয়ের দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির হার সামান্য কমে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে টানা ৪৩ মাস ধরেই মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে পিছিয়ে রইল, যা নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটকে আরও তীব্র করে তুলেছে। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে মজুরি না বাড়লে ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন নিম্নবিত্তরা।


তেলের দাম কমছে, তড়িঘড়ি বৈঠকে ওপেক প্লাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

সৌদি আরব, রাশিয়া ও ওপেক প্লাস জোটের আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য দেশ রোববার বৈঠকে বসেছে। অপরিশোধিত তেল উৎপাদন বাড়ানো হবে নাকি আগের মাত্রা বজায় থাকবে—বৈঠকে এ নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে তা ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ভলান্টারি এইট (ভি৮) নামে পরিচিত আটটি তেল উৎপাদনকারী দেশের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বর্তমানে অতিরিক্ত সরবরাহের আশঙ্কায় তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬৫-৭০ ডলারে নেমে এসেছে। এ বছর দাম ইতোমধ্যে ১২ শতাংশ কমেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওপেক ও তার মিত্ররা প্রতিদিন প্রায় ৬০ লাখ ব্যারেল উৎপাদন কমিয়েছে। তবে সৌদি আরব, রাশিয়া, ইরাক, ইউএই, কুয়েত, কাজাখস্তান, আলজেরিয়া ও ওমান মিলে গঠিত ভি৮ এপ্রিল থেকে বাজারের অংশীদারত্ব পুনরুদ্ধারের জন্য উৎপাদন বাড়ানো শুরু করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বছরের শেষ প্রান্তিকে সাধারণত চাহিদা কম থাকে। ফলে উৎপাদন না বাড়ালেও উদ্বৃত্ত সরবরাহ দামের ওপর চাপ তৈরি করবে। বাজারে গুঞ্জন উঠেছে, অক্টোবরের জন্য নতুন করে কোটা সমন্বয় হতে পারে।

এদিকে ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিও প্রভাব ফেলছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থায় আছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইউরোপীয় দেশগুলোকে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে বলেছেন। অন্যদিকে রাশিয়ার তেল আমদানির কারণে ভারতের ওপর শুল্ক বাড়িয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাশিয়ার রপ্তানি সীমিত হলে ওপেক প্লাসের জন্য বাজারে সুযোগ বাড়বে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যেতে রাশিয়ার উচ্চ তেলের দাম বজায় রাখা প্রয়োজন হওয়ায় তাদের পক্ষে বাড়তি কোটার সুযোগ কাজে লাগানো কঠিন হবে।


বাণিজ্যের দর–কষাকষিতে সক্ষমতা বাড়াতে হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সফল ট্রেড নেগোসিয়েশনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

তিনি বলেন বাণিজ্যবিষয়ক দর–কষাকষির ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে জটিলতা আছে। রপ্তানিতেও বৈচিত্র্য নেই। দেশে তৈরি বেশির ভাগ পণ্যের কাঁচামাল দেশে উৎপাদিত হয় না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি করা হয়। তারপর মূল্য সংযোজন করে তা রপ্তানি করা হয়।

এ বাস্তবতায় অন্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যবিষয়ক দর–কষাকষিতে আমাদের হাতে তেমন কৌশলগত সুবিধা নেই। ফলে বাণিজ্য আলোচনায় আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘বাণিজ্যবিষয়ক দর–কষাকষিতে জাতীয় সক্ষমতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব মন্তব্য করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও ইউকে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমাদের রপ্তাণিপণ্য খুবই সীমিত। পণ্যের বহুমুখীকরণ না হওয়ায় আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। এটা আমাদের কমিয়ে আনতে হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রেসিপ্রোকল ট্রেড নেগোসিয়েশনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যাতে কম শুল্ক আরোপ করে তা নিশ্চিত করতে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে চেষ্টা করেছি। আমরা বিশ্বাস করি সেটা করতে পেরেছি।

ট্রেড নেগোশিয়েটরস পুলের সদস্যরা তাদের অর্জিত জ্ঞান দেশের জন্য কাজে লাগাতে পারবে উল্লেখ করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, মন্ত্রণালয়, ইউএনডিপি, এফসিডিও এবং অন্যান্য অংশীদারদের মধ্যে টেকসই সহযোগিতার মাধ্যমে চলমান প্রশিক্ষণ উদীয়মান বাণিজ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।

এদিকে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘বাণিজ্যবিষয়ক দর–কষাকষিতে অন্য দেশের সঙ্গে আমাদের আলোচনায় ঘাটতি নেই; বরং নিজেদের মধ্যে আলোচনায় ঘাটতি আছে। তাই অনেক বিষয়ে আমাদের আলোচনা শুরু হলেও শেষ হয়নি। সরকারের বেশির ভাগ কর্মকর্তার মধ্যে এখনো তথ্যভিত্তিক আলোচনার সংস্কৃতি নেই। শিল্প মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) কোনো বিষয়ে জানতে চেয়ে চিঠি পাঠালে উত্তর আসতে মাসের পর মাস সময় লাগে। তারপর ছয় মাস পর যখন উত্তর পাঠায়, তখন দেখা যায়, অপর পক্ষ সব ভুলে গেছে। একবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রী আমাকে বলেছিলেন, বাংলাদেশকে দেওয়া এক চিঠির উত্তর আসার অপেক্ষায় তারা ভারতের সঙ্গে আলোচনা শুরু ও শেষ করে ফেলেছে।’

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক ছিলেন ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনমিক অ্যাডভাইজর ওয়াইস প্যারি, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র‍্যাপিড) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) ও ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহিম খান।

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বৃটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।

পরে বাণিজ্য উপদেষ্টা ট্রেড নেগোশিয়েটরস পুলের সদস্যদের জন্য আয়োজিত কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের হাতে সনদ তুলে দেন।


banner close