বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

পুঁজিবাজারে ব্যাপক দরপতন

প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১৬ আগস্ট, ২০২৩ ২০:০১

ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ওয়েবসাইট হ্যাক হয়েছে এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ায় বুধবার পুঁজিবাজারে ব্যাপক দরপতন হয়েছে। ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গড়পড়তা সব খাতের প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমেছে। এতে বড় পতন হয়েছে সব কটি মূল্যসূচকের। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের গতি। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের তিন কার্যদিবসেই পুঁজিবাজারে দরপতন হলো।

পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার আগেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে হ্যাকাররা একাধিক ব্যাংক হ্যাকিংয়ের চেষ্টা করছে। সেই সঙ্গে গুজব ছড়ায় প্রভাবশালী একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশ নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে। এ ছাড়া সামনে রিজার্ভ কমে যেতে পারে, এমন গুজবও ছড়িয়ে পড়ে। এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়ায় ওই দিন শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার জাতীয় শোক দিবসের ছুটি থাকায় পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়নি।

পরদিন বুধবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার পরই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে যে আইসিবি হ্যাকিংয়ের কবলে পড়েছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দেয়। অনেকে আইসিবির ওয়েবসাইটে প্রবেশের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ফলে আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়। আতঙ্কে লেনদেনের শুরু থেকেই একশ্রেণির বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। ফলে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমে যায়। সেই সঙ্গে বড় পতন হয় মূল্যসূচকের।

শেয়ারবাজারে এমন গুঞ্জন ছড়ালেও আইসিবি হ্যাকিংয়ের কবলে পড়েনি বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল হোসেন। তিনি বলেন, আইসিবির ওয়েবসাইট সম্পূর্ণ সুরক্ষিত আছে। কোনো ধরনের হ্যাকিংয়ের কবলে পড়েনি।

অনেকে আইসিবির ওয়েবসাইটে ঢুকতে পারছেন না- বিষয়টি উল্লেখ করলে তিনি বলেন, এমন অভিযোগ আমরাও পেয়েছি। এটি ইন্টারনেট ধীরগতি হওয়ার কারণে হতে পার। আবার অনেক সময় দেখা যায়, ভাইরাসের আক্রমণ হতে পারে, এমন সতর্কতা দিয়েও কিছু কিছু পিসি থেকে ওয়েবসাইটে ঢোকা যায় না।

এদিকে আইসিবি নিয়ে ছড়িয়ে পড়া গুঞ্জনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই একশ্রেণির বিনিয়োগকারী বিক্রির চাপ বাড়িয়ে দেন। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৫ পয়েন্ট কমে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেয়া এই পতন প্রবণতা লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে।

এতদিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে মাত্র ১৬ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৬টির। আর ১৩৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩৬ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২২০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এর মাধ্যমে দুই দিনেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৬৬ পয়েন্ট কমে গেল।

অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১০৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সব কটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৫১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪১৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৬২ কোটি ২২ লাখ টাকা।

ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৬ কোটি ৯৪ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ২৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং ফুড।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, জেমিনি সি ফুড, আরডি ফুড, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী পেপার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৫৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ১১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৫টির এবং ৭৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১২ কোটি ২৯ লাখ টাকা।


স্মার্টফোনের আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানির শুল্কহার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের সচিবালয়ের অফিস কক্ষে গত ১ ডিসেম্বর তারিখে বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানির শুল্কহার কমানোর বিষয়ে এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসির মধ্যকার সভায় এ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হলো- প্রবাসীরা দেশে ছুটি কাটানোর সময়ে ৬০ দিন পর্যন্ত স্মার্টফোন রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন, ৬০ দিনের বেশি থাকলেই মোবাইল ফোন রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, প্রবাসীদের মধ্যে যাদের বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড আছে, তারা ফ্রিতে মোট তিনটি ফোন সঙ্গে আনতে পারবেন।

অর্থাৎ যেসব প্রবাসীর বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড আছে, তারা তাদের নিজের ব্যবহারের হ্যান্ডসেটের অতিরিক্ত দুটি নতুন ফোন সঙ্গে নিয়ে আসতে পারবেন ফ্রিতে। চতুর্থ ফোনের ক্ষেত্রে তাদের ট্যাক্স দিতে হবে।

যেসব প্রবাসীর বিএমইটি কার্ড নেই, তারা নিজের ব্যবহারের ফোনের পাশাপাশি অতিরিক্ত একটি ফোন ফ্রিতে আনতে পারবেন।

এ ক্ষেত্রে মোবাইল ক্রয়ের বৈধ কাগজটি নিজের সঙ্গে রাখতে হবে। কেননা মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন বিমানবন্দরে চোরাচালানিরা সাধারণ প্রবাসীদের চাপাচাপি করে স্বর্ণ ও দামি মোবাইল ফোন ইত্যাদির শুল্কহীন পাচারে লিপ্ত রয়েছে।

চোরাচালানিদের এই অপচেষ্টা রোধ করার জন্যই ক্রয়কৃত মোবাইলের কাগজ সাথে রাখতে হবে।

স্মার্টফোনের বৈধ আমদানি শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা হবে। এতে করে বৈধভাবে আমদানি করা মোবাইল ফোনের দাম কমে আসবে।

বর্তমানে বৈধ পথে মোবাইল আমদানির শুল্ক প্রায় ৬১ শতাংশ। এটা উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে সরকার কাজ শুরু করেছে। আর আমদানি শুল্ক কমালেই বাংলাদেশের ১৩-১৪টি ফ্যাক্টরিতে উৎপাদনকৃত মোবাইলের শুল্ক ও ভ্যাট কমাতে হবে, অন্যথায় কোম্পানিগুলোর বিদেশি বিনিয়োগ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আমদানি ও অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের শুল্ক কমানো এবং তা সমন্বয় নিয়ে বিটিআরসি ও এনবিআর যৌথভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাধিকবার বসেছে এবং দ্রুততার সঙ্গে তারা কাজ শুরু করেছে।

এছাড়া কারও অজান্তেই কেউ তার নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করছে কি না, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। অপরাধ ও রেজিস্ট্রেশন ঝামেলা এড়াতে সব সময় নিজের নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করতে হবে।

বাংলাদেশে ক্লোন মোবাইল, চুরি বা ছিনতাই করা ফোন বন্ধ করা হবে। এ ছাড়া রিফারবিসড মোবাইল আমদানি বন্ধ করা হবে।

১৬ ডিসেম্বরের আগে বাজারে অবৈধভাবে আমদানি করা স্টক ফোনগুলোর মধ্যে যেগুলোর বৈধ আইএমইআই নম্বর আছে, সেই আইএমইআর লিস্ট বিটিআরসিতে জমা দিয়ে হ্রাসকৃত শুল্কে সেগুলোকে বৈধ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তবে ক্লোন ফোন ও রিফারবিশড ফোনের ক্ষেত্রে এই সুবিধা দেওয়া হবে না। ১৬ ডিসেম্বরের আগে ব্যবহৃত সচল মোবাইল ফোন কোনোভাবেই বন্ধ হবে না।

এদিন থেকে চালু হচ্ছে এনইআইআর। সুতরাং বৈধ আইএমআইআই নম্বরহীন হ্যান্ডসেট ক্রয় থেকে বিরত থাকতে হবে এবং অবৈধ আমদানিকৃত, চোরাচালানকৃত ও ক্লোন ফোন বাংলাদেশে বন্ধ করা হবে।

দেশের ও বিদেশের পুরোনো ফোনের ডাম্পিং বন্ধ হবে। কেসিং পরিবর্তন করে এসব ইলেকট্রনিক বর্জ্য দেশে ঢুকিয়ে যে রমরমা চোরাকারবারি ব্যবসা শুরু করা হয়েছে, সেটা বন্ধ করা হবে।

এছাড়া বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে ভারত, থাইল্যান্ড, চীন থেকে আসা ফ্লাইটগুলো শনাক্ত করা হচ্ছে এবং দ্রুতই এর বিরুদ্ধে কাস্টমস থেকে অভিযান চালানো হবে।

প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ (সংশোধনী), ২০২৫ এ মোবাইল সিমের ইকেওয়াইসি ও আইএমইআই রেজিস্ট্রেশন-সংক্রান্ত ডেটা সুরক্ষার নিশ্চয়তা তৈরি করা হয়েছে।

নতুন একটি ধারা যোগ করে রেজিস্ট্রেশন-সংক্রান্ত উপাত্ত লঙ্ঘনকারীদের অপরাধের আওতায় আনা হয়েছে।


নতুন ৫০০ টাকার নোট বাজারে আসছে আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) তাদের চলমান ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’ সিরিজের অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার থেকে নতুন নকশার ৫০০ টাকার নোট বাজারে ছাড়া শুরু করছে।

গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের স্বাক্ষরযুক্ত এই নোটটি প্রথমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে ইস্যু করা হবে। পরে অন্যান্য শাখার মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।

নতুন নোটটির আকার ১৫২ মিমি ৬৫ মিমি এবং রং হবে প্রধানত সবুজ। বাঁ-পাশে থাকবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং মাঝের পটভূমিতে ফুটন্ত শাপলা ফুল ও পাতা। বিপরীত পাশে চিত্রায়িত হয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।

নোটটিতে জলছাপ হিসেবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রতিকৃতি, উজ্জ্বল ইলেক্ট্রোটাইপ ‘৫০০’ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম সংযোজিত রয়েছে। নোটটির সত্যতা নিশ্চিত করতে ১০টি স্বতন্ত্র সুরক্ষা বৈশিষ্ট্য যোগ করা হয়েছে।

নোটের ডান দিকের ওপরের কোণে থাকা ‘৫০০’ সংখ্যা অপটিক্যালি ভ্যারিয়েবল কালিতে মুদ্রিত। নোটটি কাত করলে এই রং সবুজ থেকে নীল হয়ে যায় এবং ভেতরে তির্যক ‘৫০০’ দেখা যায়।

৪ মিমি চওড়া একটি টুইস্টেড সিকিউরিটি থ্রেডে লাল এবং উজ্জ্বল সোনালি রঙের সমন্বয় রয়েছে। নোটটি কাত করলে লাল অংশ সবুজে রূপ নেয় (যেখানে দেখা যায় Taka ৫০০), আর সোনালি অংশে চলমান রেইনবো রঙের বার দেখা যায়।

নোটটির নিচের বর্ডারের সবুজ নকশায় লুকানো ‘৫০০’ সংখ্যাটি শুধু অনুভূমিকভাবে ধরলে দেখা যায়। গভর্নরের স্বাক্ষরের পাশে থাকা সি-থ্রু ‘৫০০’ সংখ্যাটি আলোয় ধরলে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের সুবিধার জন্য নোটে ডান নিচের কোণে ৫টি ছোট উঁচু ডট দেওয়া হয়েছে। শহীদ মিনার, ব্যাংকের নাম, ডান পাশে তির্যক লাইন এবং সুপ্রিম কোর্টের ছবিসহ গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো রাফ ইনট্যালিও মুদ্রণে তৈরি করা হয়েছে, যাতে ব্যবহারকারীরা স্পর্শে নোটের বৈশিষ্ট্য বুঝতে পারেন।

নোটের দুই পাশে ইউভি কিউরিং ভার্নিশ ব্যবহার করা হয়েছে, যা নোটকে চকচকে অনুভূতি ও বাড়তি স্থায়িত্ব দেয়। ইউভি ডিটেক্টরে নোট ধরলে শাপলা ফুলের ছবি মেজেন্ডা রঙে জ্বলে ওঠে এবং কাগজে ছড়ানো লাল, নীল ও সবুজ রঙের তন্তুগুলো দৃশ্যমান হয়। নোটের বিভিন্ন স্থানে মাইক্রো প্রিন্টিংয়ে ‌‘BANGLADESH BANK’ লেখা রয়েছে, যা শুধু লেন্সের সাহায্যে দেখা যাবে।

এর আগে একই স্থাপত্য সিরিজে নতুন ১০০০, ১০০, ৫০ এবং ২০ টাকার নোট বাজারে ছাড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক।


লক্ষ্মীপুরে ৫০ কোটি টাকার ডাব বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ কৃষি বিভাগের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

লক্ষ্মীপুর জেলার ডাব ও নারিকেলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই অঞ্চলের সুস্বাদু ডাব এখন লক্ষ্মীপুরের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের নানা প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। ডাবের গুণগত মান, উচ্চফলনশীলতা ও চাহিদা বেশি থাকায় এই এলাকায় নারিকেলের উৎপাদন আরও বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের এই উদ্যোগে সফল হয়েছে চাষিরাও। চলতি বছরে ৫০ কোটি টাকার ডাব বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে নারিকেলের আবাদ হচ্ছে। সরকারি হিসেবে এ জেলায় বছরে প্রায় ২৬ হাজার ৯৬০ মেট্রিক টন নারিকেল উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৮ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন ডাব উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা। বেসরকারি হিসেবে উৎপাদনের পরিমাণ আরও বেশি।

কৃষি বিভাগ জানায়, লক্ষ্মীপুরের ডাবের গুণগত মান ভালো হওয়ায় সারাদেশে রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। এখানকার চাষিরা বহু বছর ধরেই গাছের ডাব বিক্রি করছে পাইকারদের কাছে। প্রতিটি ডাব খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। সেই ডাব ৩ হাত ঘুরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে।

জানা যায়, চাষির কাছ থেকে মাত্র ৬০-৭০ টাকায় কেনা ডাব খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। আকার ভেদে কখনো কখনো একটি ডাবের দাম আরও বেশি বেচাকেনা হচ্ছে। তবে জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, নারিকেলের চেয়ে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা ডাব বিক্রি করে দিচ্ছে। এবার শুধু ডাব বিক্রি করেই ৫০ কোটি টাকা আয় হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

স্থানীয় ডাব ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চাষিদের কাছ থেকে প্রকারভেদে প্রতিটি ডাব ৭০-৮০ টাকা দরে কিনলেও গাছ থেকে সংগ্রহ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মোকাম পর্যন্ত আনতে ঘাটে ঘাটে টাকা খরচ হয়। একজন গাছি (যারা গাছে ওঠে ডাব কেটে নিচে নামায়) প্রতিবার গাছে ওঠার জন্য ১০০ টাকা নেয়। তা ছাড়া ভ্যান কিংবা ট্রাকে করে সেই ডাব দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতেও অনেক খরচ হয়। সব মিলিয়ে খরচ বাদ দিয়ে ২০ কিংবা ৩০ টাকা লাভ ধরে মোকামে বিক্রি করেন তারা। তারা বলেন, লক্ষ্মীপুরের ডাব সুস্বাদু হওয়ায় দেশজুড়েই এর চাহিদা রয়েছে।

সদর উপজেলার দালাল বাজার এলাকার কৃষক তোফায়েল আহমদ বাসসকে বলেন, ডাব চাষের অনুকূল পরিবেশ, পোকার উপদ্রব কম এবং গাছগুলোর প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ করা হলে প্রতি বছরই ডাবের ফলন ভালো হয় এবং ভালো দামে ডাব বিক্রি করা যায়। এ বছর ইতোমধ্যেই তিনি ৫০ হাজার টাকার ডাব বিক্রি করেছেন বলে জানান।’

একই এলাকার কৃষক ইউসুফ হোসেন ও নুরুজ্জামান জানান, কম পুজি ও কম পরিচর্যায় নারিকেল চাষ করা যায় বলে এলাকার কৃষকরা অনেকেই এখন নারিকেল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এ অঞ্চলের নারিকেলের চেয়ে ডাবের চাহিদা বেশি। এই কারণে ডাব অবস্থায়ই বেশিরভাগ বিক্রি করে দেওয়া হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জহির উদ্দিন বলেন, এই জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নারিকেল ও ডাব সরবরাহ করা হয়। এছাড়া দেশের বাইরেও রপ্তানি করা হয়। নারিকেলের চেয়ে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা ডাব বিক্রি করে দিচ্ছে। এবার শুধু ডাব বিক্রি করেই প্রায় ৫০ কোটি টাকা আয় হবে বলে আশা করছে জেলা কৃষি বিভাগ।

তিনি বলেন, ডাবের পানি মানবদেহে নানা প্রয়োজনীয় উপাদান জোগান দিতে সহায়তা করে। তাই দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের সময় চিকিৎসকরা রোগীদের ডাব খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত প্রতিটি ব্যক্তি ডাব খাওয়ার চেষ্টা করেন। এই সুযোগে চাষিরাও ডাবের ভালো দাম পাচ্ছেন। সূত্র: বাসস


গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপোতে ৩ লাখ ডলারের ক্রয়াদেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ৩ দিনের গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপোতে ৩ লাখ ১১ হাজার মার্কিন ডলারের ক্রয়াদেশ পেয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া ৩ লাখ ৭২ হাজার ডলারের ক্রয়াদেশের প্রস্তাব পেয়েছেন রপ্তানিকারকেরা।

এক্সপোতে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সেরা প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আটটি সেক্টরের পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ- প্রাণ আরএফএল গ্রুপ, অ্যাপারেল- শিশু পরিবহন, ফার্নিচার অ্যান্ড হোম ডেকোর- হাতিল, আইটি অ্যান্ড আইটি সার্ভিস- ডিজি ইনফোটেক, পাট ও পাটজাত দ্রব্য- প্ল্যানেট কেয়ার, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য- এলএফএমইএবি, ফার্মাসিউটিক্যালস- রেডিয়্যান্ট এবং প্লাস্টিক ও কিচেন ওয়্যার- বেঙ্গল প্লাস্টিক।

ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিগ ওয়েভ) গাতকাল বুধবার গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপোর সমাপনী অনুষ্ঠান হয়।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ হাসান আরিফ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক বেবী রাণী কর্মকার।

অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য দেন বিকেএমইএর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ফজলে শামীম এহসান, ফার্নিচার মালিক সমিতির চেয়ারম্যান সেলিম এইচ রহমান এবং বিপিজিএমইএর প্রেসিডেন্ট শামীম আহমেদ।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, অতি অল্প সময়ের প্রস্তুতিতে এরকম একটি সোর্সিং এক্সপো আয়োজন করতে হয়েছে। ফলে এ বছর অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল। আগামীতে নিয়মিত এই আন্তর্জাতিক মানের সোর্সিং এক্সপো আয়োজন করা হবে।

তিনি অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান।

গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপোতে এ বছর ১২৫ টি প্রতিষ্ঠান ১৬৫ টি স্টলে অংশগ্রহণ করে। বিশ্বের ১৪টি দেশের শতাধিক আন্তর্জাতিক ক্রেতা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করেন। এছাড়া বিদেশি ক্রেতারা দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল ও কারখানা পরিদর্শন করেন।

৩ দিনব্যাপী এই এক্সপোতে বিভিন্ন বিষয় ও সেক্টরের ওপর ছয়টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। মোট ২৩৮টি বি-টু-বি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়।


ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিশ্ববাজারের সাথে যুক্ত করতে দেশে আসছে পেপ্যাল: গভর্নর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করার জন্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেমের সাথে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের যুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে সরকার। এ জন্য পে-প্যাল সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব অনলাইনে কিনছে, সেই জায়গায় যেতে চায় বাংলাদেশও। সে জন্য বাজার তৈরি পরামর্শ তার।’

বুধবার রাজধানীতে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) আয়োজিত দুই দিনব্যাপী সম্মেলন ও কর্মশালায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘শুধু উদ্যোক্তা বাড়ালেই হবে না। চাহিদা বাড়াতে ও বাজার তৈরি করতে হবে। আমরা এখনো সেখান থেকে পিছিয়ে। এ জন্য আমাদের উদ্যোক্তারা অনেক ঝড়েও যাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক বিসিকের উদ্যোক্তাদের জন্য ২ হাজার কোটি টাকাও ঋণ দিতে পারে; কিন্তু সেই ঋণ পরে আদায় করাটাই সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে।’

আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ‘উৎপাদন বাড়াতে ঋণ কার্যক্রমের বরাদ্দ বাড়াতে হবে। সরকারের উদ্দেশ্য ২৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়া; কিন্তু ব্যাংকগুলো পারছে না। এখানে ঋণ বিতরণে দুর্বলতা আছে। বিসিককে ২ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থপ্রদান করা হলে, সেই অর্থঋণ হিসেবে দিলেও তা আদায় করতে পারবে কি না; সেই সক্ষমতা অর্জন করতে হবে তাদের। যদি ঋণ আদায় না করা যায়, তবে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যর্থ হবে।’

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ‘ক্রেতাদের কাছে সরাসরি পণ্য পৌঁছে দিতে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে এবং সেটিকে নিয়মিত আপডেট রাখতে হবে।’ পাশাপাশি দক্ষ আইটি কর্মীদের মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মটি পরিচালনার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন তিনি।

পেপ্যাল একটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা যা ব্যবহারকারীরা অনলাইনে টাকা পাঠানো ও গ্রহণ করা, বিল পরিশোধ করা এবং আন্তর্জাতিক কেনাকাটা করার জন্য ব্যবহার করা যায় বলেও জানান গভর্নর।

গভর্নর আরও বলেন, ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জন্য পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের ওপর জোর দেন। বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সোলার ব্যবহার এবং পানির সঠিক ব্যবস্থাপনা ছাড়া গ্রিন সার্টিফিকেশন পাওয়া সম্ভব নয়। গ্রিন সার্টিফিকেশন ছাড়া রপ্তানি খাতে বড় ধাক্কা আসবে।’

ঋণ বিতরণ ব্যবস্থায় দুর্বলতার কথাও তুলে ধরে ড. মনসুর আবারও বলেন, ‘ঋণ বণ্টনে দক্ষতা না থাকলে বরাদ্দ ২,০০০ কোটি টাকা নষ্ট হয়ে যাবে। ঋণ রিভলভিং ফান্ড হিসেবে ফেরত আসা জরুরি, না হলে চ্যানেল বন্ধ হয়ে যাবে।

চাহিদা তৈরির গুরুত্বকেও বিশেষভাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাজার তৈরি না করলে সরবরাহ বাড়িয়ে কোনো লাভ হবে না। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রতিটি উদ্যোক্তার আলাদা প্রোফাইল, শপিং কার্ড এবং রিয়েল-টাইম তথ্য থাকা জরুরি। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের জন্য অনলাইন ও পেপ্যালের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা সময়ের দাবি।’

গভর্নর আরও বলেন, ‘চীনের পণ্য আমেরিকা থেকে কেনা যায়, তাহলে বাংলাদেশের জামদানি কেন বিদেশে বসে কেনা যাবে না? ক্ষুদ্রশিল্পের সম্ভাবনা অসীম। সঠিক নীতি প্রয়োগে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারবে।’


যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম কিনবে সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকার-টু-সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৮৪২ কোটি ৬ লাখ টাকায় ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

মঙ্গলবার বিকেলে ভার্চুয়ালি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকার-টু-সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে এই গম আনতে ব্যয় হবে ৮৪২ কোটি ০৬ লাখ ৩৩ হাজার ১০০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন গমের দাম পড়বে ৩১২.২৫ মার্কিন ডলার।

সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান হলো ইউ.এস. হুইট অ্যাসোসিয়েটস সক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান এগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেড।

এর আগে গত ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকার-টু-সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে ২.২০ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।

সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান ছিল ইউ.এস. হুইট অ্যাসোসিয়েটস-সক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান এগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি থেকে সেই গম আনতে ব্যয় হতো ৮২৫ কোটি ৩১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়ত ৩০৮ মার্কিন ডলার।


প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য ‘ট্রানজিট গেটওয়েতে’ রূপান্তর হচ্ছে মোংলা বন্দর

আপডেটেড ২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা এখন শুধু জাতীয় অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র নয়, বরং প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও একটি কৌশলগত ট্রানজিট গেটওয়ে হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। রাজশাহী, রংপুর ও বরিশাল বিভাগের সঙ্গে সড়ক, নদী ও রেলপথে উন্নত সংযোগের মাধ্যমে এ বন্দর আঞ্চলিক বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে।

বন্দর অভ্যর্থনা সুবিধা (পিআরএফ) প্রকল্প উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে, যা জাহাজ থেকে তেল সংগ্রহ ও অপসারণের সক্ষমতা বাড়াবে এবং নদী ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সহায়ক হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক জীবনরেখা হিসেবে মোংলা বন্দর খাদ্যশস্য, সিমেন্ট ক্লিংকার, সার, গাড়ি, যন্ত্রপাতি, চাল, গম, কয়লা, জ্বালানি তেল, পাথর, ভুট্টা, তৈলবীজ ও এলপিজি আমদানির পাশাপাশি হিমায়িত মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া, পাট ও পাটজাত পণ্য, টাইলস, রেশম বস্ত্রসহ নানা পণ্য রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের (এমপিএ) সিনিয়র উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. মাকরুজ্জামান জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বন্দরটি সকল প্রধান পরিচালন ও আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। বার্ষিক ৮ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন কার্গোর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১০ দশমিক ৪১২ মিলিয়ন মেট্রিক টন হ্যান্ডলিং হয়েছে, যা ১৭ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। কনটেইনার হ্যান্ডলিং লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার টিইইউ, বাস্তবে হয়েছে ২১ হাজার ৪৫৬ টিইইউ।

রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। ৩৩৩ দশমিক ৮৭ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৪৩ দশমিক ৩০ কোটি টাকা। নিট মুনাফা ২০ কোটি ৪৬ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকায়, যা ২০৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ বৃদ্ধি।

কর্মকর্তারা জানান, আধুনিক সরঞ্জাম সংগ্রহের ফলে প্রতি ঘণ্টায় ২৪টিরও বেশি কনটেইনার পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে। নিয়মিত ড্রেজিংয়ের কারণে নাব্যতা নিশ্চিত হওয়ায় একই সময়ে পাঁচটি জেটিতে পাঁচটি জাহাজ পরিচালনা করা যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে বন্দরটি ৩৫৬টি জাহাজ পেয়েছে, ১৩ হাজার ৮৫৪ টিইইউ কনটেইনার পরিচালনা করেছে, ৪ হাজার ১৩৯টি যানবাহন প্রক্রিয়াজাত করেছে এবং ৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন আমদানি-রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং করেছে।

মাকরুজ্জামান বলেন, মোংলাা বন্দর প্রতিবেশী দেশগুলোর ট্রানজিট পণ্য আমদানি-রপ্তানির জন্য বিরাট সম্ভাবনা তৈরি করেছে। সক্ষমতা সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক ১৫০ মিলিয়ন টন কার্গো এবং ৩৫০-৪০০ লক্ষ টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডলিং সম্ভব হবে। এতে শিপিং এজেন্ট, সিএন্ডএফ এজেন্ট, স্টিভডরিং ও শ্রমিক শ্রেণির কর্মসংস্থান বাড়বে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহীন রহমান জানান, পশুর চ্যানেলে সংরক্ষণ ড্রেজিং প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জেটি পর্যন্ত ৯ দশমিক ৫ থেকে ১০ মিটার ড্রাফটসহ ১০০টিরও বেশি অতিরিক্ত জাহাজ এবং রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত ১৩০টি অতিরিক্ত জাহাজ পরিচালনা সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, মোংলা বন্দরকে বিশ্বমানের আধুনিক বন্দরে রূপান্তরের জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্প চলমান রয়েছে এবং ভবিষ্যতের উন্নয়নের জন্য নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।


টিসিবির জন্য কেনা হচ্ছে দেড় কোটি লিটার ভোজ্যতেল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ১ কোটি ৫০ লাখ লিটার ভোজ্যতেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ২৫০ কোটি ৯২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যার মধ্যে ১ কোটি লিটার রাইস ব্রান তেল ও ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে।

মঙ্গলবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে ভোজ্যতেল কেনার এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কমিটির সভাপতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ১ কোটি লিটার পরিশোধিত রাইস ব্রান তেল কিনতে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৬টি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। তার মধ্যে ৫টি দরপ্রস্তাব আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ বিবেচিত হয়।

দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি (দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি)’র সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান তামিম অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে ৩০ লাখ লিটার এবং মজুমদার ব্রান অয়েল মিলস লিমিটেড থেকে ৭০ লাখ লিটার পরিশোধিত রাইস ব্রান তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রতি লিটার রাইস ব্রান তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৬১ টাকা। এতে ১ কোটি লিটার তেল কিনতে ব্যয় হবে ১৬১ কোটি টাকা। বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই তেল কেনার প্রস্তাব উপস্থান করা হলে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি তা পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।

বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রস্তাবে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাবও দেওয়া হয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এ প্রস্তাবটিও পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।

জানা গেছে, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৪টি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। ৪টি দরপ্রস্তাবই আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ বিবেচিত হয়।

দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সোনারগাঁও সিডস ক্রাশিং মিলস লিমিটেডের কাছ থেকে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ২ লিটার পেট বোতলে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৭৯ টাকা ৮৫ পয়সা। এতে মোট ব্যয় হবে ৮৯ কোটি ৯২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।


নভেম্বরে এলো অর্থবছরের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গেল নভেম্বর মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৮৮ কোটি ৯৫ লাখ মার্কিন ডলার। যা চলতি ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের যেকোনো মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়েছে, নভেম্বরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২৮৮ কোটি ৯৫ লাখ ২০ হাজার ডলার। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৮ কোটি ৭৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার।

এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৯ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ২৩ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৭৫ কোটি ৪৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার।

নভেম্বরের ১৬ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত দেশে এসেছে ৬১ কোটি ২২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। ৯ থেকে ১৫ নভেম্বর দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৭৬ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার। ২ থেকে ৮ নভেম্বর দেশে এসেছে ৭১ কোটি ১০ লাখ ৭০ হাজার ডলার। আর নভেম্বরের প্রথম দিন প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৪ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার ডলার।

এর আগে গত অক্টোবর ও সেপ্টেম্বরে দেশে এসেছে যথাক্রমে ২৫৬ কোটি ৩৪ লাখ ৮০ হাজার ও ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর গত আগস্ট ও জুলাইয়ে যথাক্রমে দেশে এসেছিল ২৪২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার ও ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।

এদিকে, গত ২০২৪-২৫ অর্থবছর জুড়ে দেশে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৩২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স, যা দেশের ইতিহাসে কোনো নির্দিষ্ট অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ের রেকর্ড।


সরকার ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় ছাড়া প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয়: অ্যামচ্যাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বিনিয়োগ পরিবেশকে গতিশীল করতে সরকার ও বেসরকারি খাতের ঘনিষ্ঠ সমন্বয়কে প্রবৃদ্ধির পূর্বশর্ত হিসেবে তুলে ধরেছে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচ্যাম)।

গত রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশ: চ্যালেঞ্জ থেকে প্রতিযোগিতার পথ’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের সংলাপের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত ছিল বেটোপিয়া গ্রুপ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মহবুবুর রহমান।

এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নেন। এছাড়া শিল্প, পররাষ্ট্র, অর্থ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার শীর্ষ প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সংলাপে বক্তারা বলেন, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে দেশে দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। লজিস্টিক ব্যবস্থার দক্ষতা বাড়ানো, কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজ ও স্বচ্ছ করা, নীতি ও প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা এবং ব্যবসায়িক সেবার ডিজিটাল সুবিধা সম্প্রসারণকে তারা তাৎক্ষণিক অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করেন।

একইসঙ্গে জ্বালানি নিরাপত্তা, পুনর্ব্যবহার ও রিসাইক্লিং শিল্পে প্রণোদনা, এবং সরকারি সংস্থাগুলোর কার্যকর সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন বক্তারা।

সংলাপে বলা হয়, দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জন করতে হলে সরকার ও বেসরকারি খাতের সহযোগিতা অব্যাহত ও প্রাতিষ্ঠানিক হতে হবে। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং দেশি-বিদেশি উভয় বিনিয়োগই গতি পাবে।

ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বাণিজ্যবিষয়ক কাউন্সেলর পল ফ্রস্ট অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা এগিয়ে নিতে তাদের প্রতিশ্রুতি অব্যাহত থাকবে।

অ্যামচ্যামের নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং স্টি.এন.এ-এর বাংলাদেশ অফিসের প্রধান নির্বাহী মইনুল হক, অগমডেক্স বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদ মুজিব নোমানসহ অ্যামচ্যাম সদস্য ও শিল্প খাতের নেতারা সংলাপে অংশ নেন। সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেটোপিয়া গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মনির হোসেনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সংলাপটি সঞ্চালনা করেন অ্যামচ্যাম বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী কায়সার মোহাম্মদ রিয়াদ।


মোংলা বন্দরের প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলা বন্দরের প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে। সোমবার এই বন্দরের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ দিবসটি উপলক্ষে জেলায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও তারুণ্যের উৎসব পালন উপলক্ষে গত রোববার রাত ১২টা ১ মিনিটে বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি সব জাহাজে এক মিনিট বিরতিহীন হুইসেল বাজানো হয়।

সোমবার দুপুর ১২টায় বন্দরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতিতে বন্দরের সদর দপ্তর থেকে বন্দরের জেটি ফটক পর্যন্ত র‌্যালির আয়োজন করা হয়। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। পরে বন্দরের জেটির অভ্যন্তরে ৭৫তম বন্দর প্লাটিনাম জয়ন্তী দিবস উদযাপন করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বন্দরের সম্মানিত সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর মো. শফিকুল ইসলাম সরকার, সদস্য (অর্থ) ও পরিচালক (প্রশাসন) (অ. দা.) কাজী আবেদ হোসেন (যুগ্ম সচিব), সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) ড. এ. কে. এম. আনিসুর রহমান (যুগ্ম সচিব), পরিচালক (বোর্ড) কালাচাঁদ সিংহ (যুগ্ম সচিব), ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, হারবার মাস্টার, কর্নেল মো. ফিরোজ ওয়াহিদ, বিভাগীয় প্রধানরা, বন্দরের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বন্দর ব্যবহারকারীরা।

অনুষ্ঠানে বন্দরের কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ বন্দরে ১৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী হিসেবে সর্বোচ্চ জাহাজ কয়লা, মাশুল প্রদান, সার, সাধারণ পণ্য, গ্যাস, কনটেইনারবাহী জাহাজ আনয়নকারী, গাড়ির জাহাজ, মালামাল হ্যান্ডলিংসহ ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়া গত বছরের ২ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পিআরএল ভোগরত ৫৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, ১৯৫০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরের গেজেট নোটিফিকেশন বলে ওই বছরের ১ ডিসেম্বর চালনা পোর্ট নামে এ বন্দর প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৮৭ সালের পোর্ট অব চালনা অথরিটি অ্যাক্ট অনুসারে প্রথমে চালনা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পরবর্তীতে মোংলা পোর্ট অথরিটি নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বিগত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৮ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। অর্থবছর শেষে বন্দরে ১ কোটি ৪ লাখ ১২ হাজার মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের মধ্য দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ লাখ ৩২ হাজার মেট্রিক টন এবং ১৭.২৫ শতাংশ বেশি কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছে।

একইভাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার টিইইউজ। অর্থবছর শেষে বন্দরে ২১ হাজার ৪৫৬ টিইইউজ কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের মধ্য দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৪৫৬ বেশি এবং ৭.২৮ শতাংশ বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। অর্থবছর শেষে বন্দরে ৩৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের মধ্য দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং ২.৮৩ শতাংশ বেশি রাজস্ব আয় করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বন্দরের নিট মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বন্দরে ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা নিট মুনাফা অর্জনের মধ্য দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪১ কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। যা ২০৩.৪৯ শতাংশ বেশি।

আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের ফলে প্রতি ঘণ্টায় ২৪টিরও বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে এবং জেটির সম্মুখে নিয়মিত ড্রেজিংয়ের ফলে নাব্যতা বিরাজমান থাকার কারণে ৫টি জোটতে একই সাথে ৫টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে।

বর্তমান অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে জাহাজ এসেছে ৩৫৬টি, কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ১৩ হাজার ৮৫৪ টিইউজ, গাড়ি আমদানি হয়েছে ৪ হাজার ১৩৯টি এবং পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়েছে ৪৪ লাখ টন। এছাড়া আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের ফলে প্রথমবারের মতো প্রতি ঘণ্টায় ২৪টিরও বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে এবং জেটির সম্মুখে নিয়মিত ড্রেজিংয়ের ফলে নাব্যতা বিরাজমান থাকার কারণে ৫টি জেটিতে একই সাথে ৫টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী দেশে ট্রানজিট পণ্য মোংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানির সুদূরপ্রসারী সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। মোংলা বন্দর ব্যবহার করে স্থল, নৌ এবং রেলপথের মাধ্যমে রাজশাহী, রংপুর ও বরিশাল বিভাগের পণ্য পরিবহনকে সহজতর এবং দ্রুত করবে।

মোংলা বন্দরে ইতোমধ্যে স্থাপিত হয়েছে পোর্ট রিসিপশন ফ্যাসিলিটি (পিআরএফ)। এটি এখন উদ্বোধনের জন্য অপেক্ষমাণ। এর ফলে এ অঞ্চলে তেলবাহী কোনো জাহাজ বা ট্যাংকার থেকে দুর্ঘটনাবশত পানিতে তেল নিঃসরণ হলে তেল অপসারণকারী ভেসেলের মাধ্যমে তা সংগ্রহ করে নদী ও সামুদ্রিক পরিবেশকে দূষণ থেকে রক্ষা করার সক্ষমতা অর্জন করবে মোংলা বন্দর।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণপ্রবাহ এ বন্দরটির কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বর্তমানে খাদ্যশস্য, সিমেন্ট ক্লিংকার, সার, মোটর গাড়ি, মেশিনারিজ, চাল, গম, কয়লা, তেল, পাথর, ভুট্টা, তেলবীজ, এলপিজি গ্যাস আমদানি এবং সাদামাছ, চিংড়ি, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, হিমায়িত খাদ্য, কাঁকড়া, ক্লে, টাইলস, রেশমি কাপড় ও জেনারেল কার্গো রপ্তানির মাধ্যমে দেশের চলমান অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে।

মোংলা বন্দরকে আধুনিক ও বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার জন্য বেশ কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে ও কিছু প্রকল্প ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য হাতে নেওয়া হয়েছে।


গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো আয়োজন সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ‘গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো ২০২৫ ঢাকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাণিজ্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব বাণিজ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধিকে টেকসই করতে পণ্য বৈচিত্র্যকরণ, সরবরাহ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন।

সোমবার পূর্বাচলের বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ‘গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো ২০২৫ ঢাকা’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞ, নির্মাতা, নীতিনির্ধারক, বিনিয়োগকারী ও উদ্ভাবকদের জন্য আইডিয়া শেয়ার, অর্থপূর্ণ আলোচনা, সহযোগিতা এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের সুযোগ তৈরি করবে।

উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ শীঘ্রই স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ করতে চলেছে। এই মাইলফলক আমাদের অগ্রগতি তুলে ধরার পাশাপাশি নতুন চ্যালেঞ্জও নিয়ে এসেছে। আমরা বর্তমানে যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা এবং ছাড় সুবিধা ভোগ করছি তা ধীরে ধীরে হারাব।

তিনি আরও বলেন, এই রূপান্তর সফলভাবে মোকাবিলার জন্য, আমাদের পণ্য এবং রপ্তানি বাজার বৈচিত্র্যকরণ, প্রতিযোগিতামূলকতা বৃদ্ধি করা এবং দূরদর্শী বাণিজ্য নীতি গ্রহণে দ্রুত এগিয়ে যেতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে, গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো আয়োজন কেবল সময়োপযোগীই নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যতের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুতফে সিদ্দিকী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ স্বাগত বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, এফবিসিসিআইর প্রশাসক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. আব্দুর রহিম খান এবং বিকেএমইর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি সম্ভাবনা তুলে ধরতে রাজধানীতে প্রথমবারের মতো সরকারি উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে ‘গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো’।

যা আজ থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই প্রদর্শনী আয়োজন করেছে।

এবারের এক্সপোতে বাংলাদেশের আটটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি খাতের পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। খাতগুলো হলো তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষিজাত পণ্য, প্লাস্টিক ও কিচেনওয়্যার, হোম ডেকর ও ফার্নিচার, ওষুধ এবং তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি)। শতাধিক প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক কোম্পানি, পাইকারি ব্যবসায়ী ও সরবরাহ খাতের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নিচ্ছেন।

আফগানিস্তান, চীন, ইরান, জাপান, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের ক্রেতা, বিনিয়োগকারী ও সোর্সিং প্রতিষ্ঠান এই প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে। তারা পণ্য ও সেবা নিয়ে সভা, ক্রয়-বিক্রয় এবং চুক্তি করতে পারবে। তিন দিনের এক্সপোতে থাকবে বিষয়ভিত্তিক ১০টি বিশেষ সেমিনার, অনলাইন ও অফলাইন বিজনেস-টু-বিজনেস (বিটুবি) বৈঠক, দেড় শতাধিক স্টল, নেটওয়ার্কিং সেশন এবং ফ্যাশন শো।


ইইউ বাজারে পণ্যের প্রবেশাধিকার বৃদ্ধিতে জাতীয় ট্রেসেবিলিটি উন্নয়নবিষয়ক বৈঠক অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জার্মানির উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেডের সহায়তায় ‘এসটিআইএলই-দ্বিতীয়’ প্রকল্পের অধীনে পণ্যের ট্রেসেবিলিটি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের নীতিগত আলোচনার আয়োজন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ আলোচনাকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাজারের পরিবর্তনশীল বিধিনিষেধ এবং এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা ধরে রাখার জরুরি পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান।

এতে বলা হয়, উন্নত ট্রেসেবিলিটি ব্যবস্থা রপ্তানির বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে, সার্কুলারিটি প্রচার করতে এবং বৈশ্বিক বাজারে উদীয়মান টেকসই উন্নয়ন ও যথাযথ সতর্কতার শর্তপূরণ নিশ্চিত করতে পারে।

বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) আলোচনার জন্য বিষয়ভিত্তিক ও গবেষণা সহায়তা প্রদান করে। বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম জোর দিয়ে বলেন, পণ্যের ট্রেসেবিলিটি শক্তিশালী করা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় অগ্রাধিকার হয়ে উঠেছে।

তিনি উল্লেখ করেন, বৈশ্বিক বাজারের চাহিদা থেকে এ প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে এটি ইইউ কর্তৃক প্রবর্তিত সার্কুলার ইকোনমি, ডিজিটাল প্রোডাক্ট পাসপোর্টস (ডিপিপি), দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণ এবং টেকসই উন্নয়ন ডিসকোর্সের সাথে সম্পর্কিত।

যেহেতু বাংলাদেশ-ইইউ বাণিজ্যের ৯২ শতাংশ তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতে কেন্দ্রীভূত, তাই বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে ইইউ গ্রিন ডিলের শর্তাবলির সঙ্গে তার নীতিমালা সামঞ্জস্য করতে হবে।

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান একটি ‘জাতীয় ট্রেসেবিলিটি কৌশল’ প্রণয়নের কথা জানান। এ কৌশলে খাতভিত্তিক ট্রেসেবিলিটি পাইলট প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নেতৃত্ব দেবে এবং জিআইজেড প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করবে।

মূল প্রবন্ধে বেশ কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক প্রতিপালন ব্যয়, প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়, আন্তঃকার্যক্ষমতা এবং তথ্য যাচাই।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিজ্ঞতার আলোকে বিল্ড উল্লেখ করে, ভিয়েতনাম, চীন, জাপান, কোরিয়া এবং ভারতে শক্তিশালী ট্রেসেবিলিটি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে সরকারি-বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

বিল্ড জাতীয় ট্রেসেবিলিটি কৌশলকে খাতভিত্তিক পদক্ষেপ দিয়ে সমর্থন করার সুপারিশ করে। যেমন- শিল্প বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য সবুজ অর্থায়ন বিকল্প চালু, তথ্য অবকাঠামো সম্প্রসারণ এবং ঝুট খাতের একটি ডিরেক্টরি তৈরি করা।

মাহবুবুর রহমান তথ্য বিনিময়ের জন্য একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি জার্মানিকে এর উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং এ উদ্যোগের জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা চান।

বর্তমানে আরএমজি উদ্যোক্তারা বিভিন্ন ক্রেতা, ব্র্যান্ড এবং কনসালট্যান্টের কাছ থেকে তথ্য চাহিদা পূরণে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, যাদের প্ল্যাটফর্মে বৈশ্বিক বা অভিন্ন মান নেই।

বিজিএমইএ পরিচালক শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ উল্লেখ করেন, একটি অভিন্ন জাতীয় মান বা নির্দেশিকা প্রতিপালন প্রক্রিয়াকে উল্লেখযোগ্যভাবে সহজ করবে এবং ব্যয় কমাবে।

ঢাকায় জার্মান দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি জান্নিস হোসেন দুটি প্রধান চ্যালেঞ্জ তুলে ধওে বলেন, তথ্যের প্রাপ্যতা ও উৎপাদন এবং সরবরাহকারীদের জন্য প্রয়োজনীয় ডিজিটাল অবকাঠামোর উল্লেখযোগ্য ব্যয়।

বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং চামড়া খাতের প্রতিনিধিরা চলমান খাতভিত্তিক পাইলট প্রকল্পের আপডেট শেয়ার করেন। তারা জানান, অগ্রগতি হলেও এসব পাইলট প্রকল্পকে সম্প্রসারণ করতে হবে যাতে আরএমজির সাবকন্ট্রাক্টিং ইউনিটের মতো নিম্ন ও মধ্যম স্তরের প্রতিষ্ঠানগুলো অন্তর্ভুক্ত এবং পূর্ণাঙ্গ ট্রেসেবিলিটি তথ্যের চাহিদা পূরণ হয়।

নীতিগত আলোচনাকে এগিয়ে নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি নতুন বহুপক্ষীয় সংলাপ প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন করেছে। এটি মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি উইংয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে এবং এতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সদস্যরা অংশ নেবেন।

রপ্তানি উইংয়ের প্রধান আব্দুর রহিম খান থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার উদাহরণ টেনে একটি জাতীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন ইউনিট (পিআইইউ) প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন।

পরিকল্পনা উইংয়ের যুগ্ম সচিব মোস্তফা জামাল হায়দারও উল্লেখ করেন, উন্নত ট্রেসেবিলিটি বাংলাদেশকে এলডিসিুউত্তর পরিস্থিতিতে আরও ভালোভাবে সহায়তা করতে পারে।

অনুষ্ঠানে সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী, শিল্প নেতৃবৃন্দ এবং টেক্সটাইল, পোশাক, চামড়া ও মৎস্য খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।


banner close