আসাদুজ্জামান নূর
দেশে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্থিরতার যে সমস্যা নিয়ে বারবার আলোচনা হয়, সেটির বাইরে নয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিও। শেয়ারদর বাড়তে থাকলে বা কমতে থাকলে প্রায়ই তারা নিত্যনতুন সিদ্ধান্ত নিতে থাকে। এর একটি উদাহরণ হতে পারে এসএমই মার্কেট নিয়ে। স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর জন্য চালু করা আলাদা প্ল্যাটফর্মে কারা শেয়ার কিনতে পারবেন, তা নিয়ে এক বছরের মধ্যে তিনবার নতুন নতুন সিদ্ধান্ত জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সংস্থাটি প্রায়ই নীতি পাল্টায়, একেক বার একেক সিদ্ধান্ত নেয়, শেয়ারদর কমতে থাকলেও বাজারে হস্তক্ষেপ করে আবার এও বলে যে, পুঁজিবাজারকে স্বাভাবিকভাবে চলতে দেয়া উচিত। বিভিন্ন সময় হুটহাট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বিএসইসি। নীতিগত সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কিছুদিন পরই আগের অবস্থানে চলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। আবার দেখা গেছে, বিনিয়োগকারীরা কোনো দাবি জানাতে থাকলে মানা হবে না জানিয়েও পরে সূচক পড়তে থাকলে সেটা করা হয়েছে।
বিএসইসির সাবেক একজন চেয়ারম্যান বলেছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার যেটি কাজ নয়, সেটি করতে গিয়ে বারবার বিনিয়োগকারীর আস্থায় বরং চিড় ধরাচ্ছে বিএসইসি। আবার তাদের যে কাজ, সুশাসন নিশ্চিত করা, সেটিতে তারা সফল হচ্ছে না। পুঁজিবাজারের কোম্পানিগুলোর সুশাসন নেই, কথাটি বলেছেন খোদ বিএসইসির একজন কমিশনার। আরেকজন কমিশনার বলেছেন, নিজেদের স্বার্থে কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ক্ষতি করছে পুঁজিবাজারের। কিছু ব্রোকারেজ হাউস বিনিয়োগকারী, ডিএসই এমনকি বিএসইসিকে মিথ্যা তথ্য দেয়। বিএসইসির একজন সাবেক চেয়ারম্যান এসব বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেছেন, সংস্থাটির কাজ এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া।
তদন্তের নির্দেশ এক দিনেই প্রত্যাহার: ২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি বিএসইসি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় ৩০ কর্মদিবসে যেসব কোম্পানির শেয়ারদর ৫০ শতাংশ বেড়েছে, সেগুলো নিয়ে তদন্ত করে তাদের রিপোর্ট দিতে হবে ডিএসইকে। এই নির্দেশনা আসার পর ১৩ জানুয়ারি ৯১ পয়েন্ট সূচকের পতন হয়। সেদিনই তদন্তের নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
স্বল্প মূলধনি কোম্পানি নিয়ে সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন নেই: আবার ২০২১ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর ক্রমাগত বেড়ে চলার পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেসব কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেয়। তবে তদন্তে কী পাওয়া গেল, সেটি নিয়ে আর কিছু জানানো হয়নি। এরপর ডিসেম্বরে সিদ্ধান্ত জানানো হয়, কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা করতে হবে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এই কাজ করতে হবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বহু কোম্পানির মূলধন বাড়ানোর কোনো উদ্যোগই নেই।
প্রি-ওপেনিং সেশন: ২০২০ সালের অক্টোবরে পুঁজিবাজারে প্রি-ওপেনিং সেশন এবং পোস্ট-ওপেনিং সেশন চালু করা হয়। লেনদেন শুরুর ১৫ মিনিট আগে বাই বা সেল অর্ডার বসিয়ে রাখা যেত। বাজার যখন উঠছিল, তখন এ নিয়ে কথা হয়নি। তবে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে যখন সংশোধন শুরু হয় তখন অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি এটি নিয়েও কথা উঠতে থাকে। পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক দরপতনের মধ্যে গত ২২ মে প্রি-ওপেনিং সেশন বন্ধ করে দেয়া হয়। সে সময় এ সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে কারসাজির বিষয়টি ওঠে। তখন বন্ধ করা হয়েছিল, সেটি আবার চালু হয়েছে গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে। যুক্তি হিসেবে বলা হচ্ছে, স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেডিং ইঞ্জিনের চাপ কমানো। এবার প্রি-ওপেনিং সেশনের সময় রাখা হয়েছে ৫ মিনিট। অর্থাৎ সকাল সাড়ে ৯টায় লেনদেন শুরুর ৫ মিনিট আগে থেকেই শেয়ার কেনাবেচার অর্ডার দিয়ে রাখা যাবে ঢাকা ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে। আর পোস্ট ক্লোজিং সেশনের সময় ১টা ৫০ মিনিট থেকে ২টা পর্যন্ত।
এসএমইতে বিনিয়োগসীমা পরিবর্তন: গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর এসএমই বোর্ড চালুর পর বেশ আশাবাদী ছিল বিএসইসি। সেখানে শেয়ার কেনাবেচা করার সুযোগ ছিল সীমিত। প্রথমে সিদ্ধান্ত ছিল, যাদের বিনিয়োগ কমপক্ষে এক কোটি টাকা, তারাই সেখানে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এতে দেখা যায়, বিনিয়োগকারীর সংখ্যা খুবই কম, আর এই বোর্ডের কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর সেভাবে বাড়ছিল না। এরপর যোগ্য বিনিয়োগকারী হওয়ার শর্ত শিথিল করা হয়। প্রথমে জানানো হয়, যাদের বিনিয়োগ ৫০ লাখ টাকা, তারাই সেখানে শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন। এতেও যখন শেয়ারগুলো দর হারাতে থাকে। পরে চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে বিনিয়োগসীমা ৫০ লাখ টাকা থেকে কমিয়ে ২০ লাখ টাকায় বিনিয়োগ নামিয়ে আনে বিএসইসি। এরপর গত ২৮ মার্চ সিদ্ধান্ত হয়, যোগ্য বিনিয়োগকারী হতে কাউকে আবেদন করতে হবে না। যার বিনিয়োগ ২০ লাখ টাকা, তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই এই মার্কেটে শেয়ার কেনাবেচার জন্য যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসেবে নিবন্ধিত করে নেবে স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। বিনিয়োগসীমা কমানোর পর এসএমই বোর্ডের শেয়ার বাড়তে থাকে লাফিয়ে লাফিয়ে, সেই সঙ্গে বাড়ে লেনদেন। তবে মূলবাজারে হয় উল্টো চিত্র। কমে যেতে থাকে লেনদেন ও শেয়ারদর। বিএসইসির নতুন সিদ্ধান্ত হলো এই বোর্ডে শেয়ার কেনাবেচা করতে হলে বিনিয়োগকারীর কমপক্ষে ৩০ লাখ টাকার বিনিয়োগ থাকতে হবে।
দরপতনের সীমা বারবার পরিবর্তন ও ফ্লোর প্রাইস: মার্চের শুরুতে ব্যাপক দরপতনের মধ্যে গত ৮ মার্চ বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় স্থিতিশীলতা তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের নির্দেশের পাশাপাশি দর কমার সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করেছিল কমিশন। এই নির্দেশ জারির পরদিন ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। তবে এই উত্থান বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। বিশেষ করে রোজায় এপ্রিলের শুরু থেকে পুঁজিবাজার ক্রমেই নিম্নমুখী হতে থাকে। বহু কোম্পানির শেয়ারগুলো প্রায় প্রতিদিনই ২ শতাংশ করে দর হারাতে থাকে। কিন্তু এই পড়তি দামেও শেয়ার কেনার ক্রেতা পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে বাজারের লেনদেন এক হাজার কোটি টাকা থেকে কমে ধীরে ধীরে নেমে আসে ৪০০ কোটি টাকার কমে। এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের একটি সংগঠন পুঁজিবাজারের আবার ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন দর বেঁধে দেয়ার দাবি ওঠে, যদিও তা নাকচ করে দেয় বিএসইসি। এপ্রিল মাসে রোজার শুরু থেকে পতনের মধ্যে পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক বিভিন্ন ফেসবুক পেজে আবার ফ্লোর প্রাইস দেয়ার দাবি উঠতে থাকে। পরে সেই দাবি নিয়ে ১৮ এপ্রিল বিএসইসিতে যায় পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ। সে সময় বিএসইসি তাদের না করে দেয়। ২০ এপ্রিল এক দিনে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করে বিএসইসি। শেয়ারের দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা আগের মতোই ১০ শতাংশ রাখা হয়। এরপর বাজার পরিস্থিতির অবনতি হলে ২৫ মে আবারও দরপতনের সীমা ২ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। এতে পতন রক্ষা করতে না পেরে সর্বশেষ ২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস আরোপের ঘোষণা দেয় বিএসইসি। জানানো হয় পরের কার্যদিবস রোববার থেকে ফ্লোর প্রাইসের পাশাপাশি এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ থাকবে না।
‘বিএসইসির যেটা কাজ নয়, সেটাতে গুরুত্ব’: বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ‘বিএসসির কাজ হচ্ছে সুষ্ঠুভাবে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ক্যাপিটাল মার্কেট বা স্টক মার্কেট পরিচালনা করা। রেগুলেশনস অনুযায়ী স্বচ্ছভাবে ট্রেড হচ্ছে, সেটা দেখাশোনা করা।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাজারে সুষ্ঠুভাবে লেনদেন হলে ইনডেক্স যেখানে যাবার সেখানে যাবে। যার যে প্রাইসে যাবার সেখানে যাবে। ইনডেক্স নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাজ নয়।’ সুশাসন নিয়ে বিএসইসির একজন কমিশনার যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটি নিয়েও সমালোচনা করেন ফারুক সিদ্দিকী। বলেন, ‘খুব বেশি হলে কয়েকটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে এই গভর্ন্যান্স আছে। আর ব্যাংকের মধ্যে কয়েকটি দেখা যায়। তা ছাড়া বাংলাদেশের কোনো ক্ষেত্রে গভর্ন্যান্স নেই। তবে কোম্পানিতে কর্পোরেট গভর্ন্যান্স নেই, সেটা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কেউ বলতে পারেন না, কারণ তাদের কাজ হচ্ছে এটা এনসিওর করা।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, ‘কোম্পানির পরিচালকরা এবং অডিটররা সঠিক তথ্য তুলে ধরে না। এখানে বেশির ভাগ উদ্যোক্তা আসে শেয়ার বেচার জন্য। সেটা হয়ে গেলে ড্যাম কেয়ার। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবে ডিএসই, বিএসইসি মিলে। কিন্তু তারা বলছে, আমরা তো গাইডলাইন দিয়ে রেখেছি। আমি বিনিয়োগকারীদের বলব, যারা গভর্ন্যান্স মেনে চলে তাদের শেয়ার হোল্ড করতে।’ তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন কোম্পানির তালিকাভুক্তির পরের বছর বা কয়েক বছর পরে জালিয়াতি, মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের ঠকানোর বিষয় উঠে আসছে। তা হলে যারা অনুমতি দিয়েছিল তারা তো দায় এড়াতে পারে না।’
বিনিয়োগকারীরা ক্ষুব্ধ: মাসুম জামান নামের এক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিনিয়োগ শিক্ষা নেই, লং টার্মে বিনিয়োগ করেন না বলে সবাই। বিএসইসি তো বিনিয়োগকারীদের চেয়ে আরও অস্থির।’ সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যখন মার্কেট পড়ল, তখন ফ্লোর প্রাইস দেয়ার দাবি জানানো হলো, বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতারা মিটিং করে চিঠি দিল, কিন্তু তখন ফ্লোর প্রাইস দিল না। পরে আবার ঠিকই দিল, মাঝখান থেকে আমাদের টাকাগুলো গেল। আবার এই যে প্রি-ওপেনিং সেশন চালু করল, চালু করবে তো কয়দিন আগে কারসাজির কথা বলে বন্ধ করল কেন?’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএসইর এক ব্রোকার বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা যেগুলো নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বা বাস্তবায়ন করেছে তা অবশ্যই পুঁজিবাজারের স্বার্থেই করেছে। তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা পাল্টানোর ক্ষেত্রে দ্রুততা বা ধীরগতি দেখা গেছে কিছু ক্ষেত্রে। এসব ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে আরও বেশি পরিণত আচরণ আশা করে সবাই।’
বিএসইসি কী বলছে: বারবার সিদ্ধান্ত- এ বিষয়ে বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ‘ক্যাপিটাল মার্কেটের রেগুলেটর হিসেবে বিভিন্ন সময়ে পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে, সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে বিভিন্ন ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আপ-ওয়ার্ড মার্কেটে এক রকম, ডাউন-ওয়ার্ড মার্কেটে আরেক রকম সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বাজারের লিক্যুইডিটি, বাজারের সার্বিক অবস্থা, বাজারে ট্রান্সপারেন্সি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, যে ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, সেই সিচুয়েশন চেঞ্জ হলে, সেই সিচুয়েশনে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়। রেগুলেটরের তো এটাই কাজ। পলিসি লেভেলে যুগোপযোগী করে বিভিন্ন সময় বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ জন্য এটা সুপারভাইজ করতে রেগুলেটরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কোনো কিছু যদি পরিবর্তন করা লাগে, তা হলে পাবলিক ইস্যু রুলস কতবার পরিবর্তন হচ্ছে? সেই একবার করে রেখেছিল, সেটাই তো সারা জীবন চলতে পারে না। বিভিন্ন পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, যে কারণে কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তা আইনের মধ্যে থেকেই করেছে। আমরা মনে করছি, তা পারফেক্টলিই নিচ্ছে।’
দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার নভেম্বর মাসে মোট ১১ কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করেছে। এসব কার্গোর মোট পরিমাণ ছিল প্রায় ৩ কোটি ৫২ লাখ এমএমবিটিইউ, যার বিপরীতে সরকারের ব্যয় হয়েছে ৩৬০.৯৯ মিলিয়ন ডলার।
পেট্রোবাংলার পরিচালক একেএম মিজানুর রহমান বাসসকে বলেন, ‘দেশের বাড়তে থাকা জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আমরা দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি চুক্তির পাশাপাশি স্পট মার্কেট থেকেও নিয়মিতভাবে এলএনজি আমদানি করছি।’
তিনি জানান, অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি চুক্তি এবং স্পট মার্কেটের আওতায় মোট প্রায় ২ কোটি ৮৮ লাখ এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয় করেছে।
রহমান আরও বলেন, দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি চুক্তি এবং স্পট মার্কেটের আওতায় সরকার মোট ১০ কার্গোর মাধ্যমে প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ এমএমবিটিইউ এলএনজি সংগ্রহ করেছে। প্রতিটি কার্গোতে গড়ে প্রায় ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ এলএনজি ছিল।
পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতারএনার্জি চার কার্গো এলএনজি সরবরাহ করে ১১৫.৯৭ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে। একই চুক্তির আওতায় ওমানের ওকিউ ট্রেডিং (ওকিউটি) দুই কার্গোর জন্য পেয়েছে ৫৫.২৮ মিলিয়ন ডলার।
এ ছাড়া স্বল্পমেয়াদি চুক্তির আওতায় ওমানভিত্তিক ওকিউটি দুই কার্গোর জন্য পেয়েছে ৭৫.২১ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে স্পট মার্কেট থেকে সরকার তিন কার্গো এলএনজি কিনতে ব্যয় করেছে ১১৪.৫৩ মিলিয়ন ডলার।
তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বরে স্পট মার্কেটের আওতায় পেট্রোচায়না ইন্টারন্যাশনাল এক কার্গোর জন্য পেয়েছে ৩৮.০৮ মিলিয়ন ডলার এবং টোটালএনার্জিজ গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার দুই কার্গোর জন্য পেয়েছে ৭৬.৪৫ মিলিয়ন ডলার।
সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির তথ্য অনুযায়ী, দেশে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে এলএনজি আমদানির জন্য এর আগে একাধিক পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ক্রয় কমিটির এক বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সরকারের ওপর আর্থিক চাপ কমানোর পাশাপাশি এলএনজির সরবরাহ বাড়ানোর দিকেও কমিটির সদস্যরা গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি আরও জানান, সরকার আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তুলনামূলকভাবে যুক্তিসঙ্গত মূল্যে এলএনজি সংগ্রহ করছে।
সূত্র : বাসস
প্রগতি টয়োটা পার্টনারশিপের আওতায় বিশ্বখ্যাত জাপানি টয়োটা হায়েস এখন থেকে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজে পাওয়া যাচ্ছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) অধীনস্থ প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (পিআইএল) চট্টগামের কারখানায় এ পার্টনারশিপ যাত্রার শুভ উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান প্রধান অতিথি এবং টয়োটা বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রেমিথ সিং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএসইসি’র চেয়ারম্যান মু. আনোয়ারুল আলম (অতিরিক্ত সচিব), যুগ্মসচিব ও পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. মঞ্জুরুল হাফিজ বিপিএ, প্রগতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আমন্ত্রিত অতিথি এবং প্রগতির কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, টয়োটা হায়েস ১২ সিটের এ গাড়িতে আছে উচ্চ ক্ষমতার অকটেন চালিত ২৬৯৪সিসি’র ২.৭ লিটার ইঞ্জিন, ৫ স্পিড ম্যানুয়াল, হুইলবেস ২৫৭০, টর্ক-২৪১/৩৮০০, ডাবল উইসবন লিফ স্প্রিং সাসপেনশন, ৫ মি. টার্নিং রেডিয়াস, ২ হুইল ড্রাইভিং সিস্টেম ও ৭০ লিটার ধারণ ক্ষমতার ফুয়েল ট্যাংক। টয়োটা হায়েস কমিউটার গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন বাদে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে পঞ্চাশ লাখ পঁচাত্তর হাজার টাকা।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ ও ভারতের মহদিপুর স্থলবন্দরে যৌথ সভা করেছেন বাংলাদেশ ও ভারতের আমদানি-রপ্তানিকারকরা।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের আয়োজনে পানামা সোনামসজিদ পোর্ট লিংক লিমিটেডের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করা হয়। সেমিনারে দুই দেশের ব্যবসায়ী নেতারা সোনামসজিদ-মহদিপুর স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বাড়ানোর পাশাপাশি যেসব পণ্য আদান-প্রদান বন্ধ রয়েছে তা পুনরায় চালুর দাবি জানান।
ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, এক সময় মসলা জাতীয় পণ্য এবং ফল আমদানি-রপ্তানি বেশি ছিল, যা এখন অনেকটা কমে গেছে। এসব পণ্যের আদান-প্রদান বাড়াতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার ওপর জোর দেন।
সেমিনারে সোনামসজিদ আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাবুল হাসনাত দুরুলের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আরিফ উদ্দিন ইতি, দপ্তর সম্পাদক এসবি মাসুম বিল্লাহ, সোনামসজিদ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান, সদস্য সচিব রুহুল আমিন, মহদিপুর রপ্তানিকারক গ্রুপের সহসভাপতি জগন্নাথ ঘোষ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হৃদয় ঘোষ, মহদিপুর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তাপস কুণ্ডু ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভূপ্রতি মণ্ডল প্রমুখ। এ সময় দুই দেশের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পেঁয়াজের দামে লাগাম টানতে ভারত থেকে এবার প্রতিদিন ৬ হাজার টন করে আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। আমদানির পরিমাণ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের প্রথম দিনে ২০০ আইপি (ইমপোর্ট পারমিট বা আমদানি অনুমতিপত্র) ইস্যু করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) অনুমোদন পাওয়া এসব আইপির বিপরীতে প্রতিদিন ওই পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন আমদানিকারকরা। তবে আইপি প্রতি ৩০ টনের বেশি পেঁয়াজ আনা যাবে না।
এ নিয়ে আট দিনে সরকার মোট ১৯ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি করার অনুমতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংঘ নিরোধ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক বনি আমিন খান।
এর আগে ৭ ডিসেম্বর ভারত থেকে দৈনিক ৫০টি আইপির বিপরীতে দেড় হাজার টন করে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় সরকার।
তাতেও দেশি পেঁয়াজের দাম সহনীয় না হওয়ায় আমদানি শুরুর আট দিনের মাথায় দৈনিক আমদানির পরিমাণ বাড়িয়েছে সরকার।
বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির বাজার দরের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন বাজারে রোববার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৮০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা কেজি।
২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রতি কেজি দেশি পেয়াঁজ বিক্রি হয় সর্বনিম্ন ৯০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১২৫ টাকা দরে।
গেল ৭ ডিসেম্বর থেকে আমদানির পেঁয়াজ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করলেও আমদানিকৃত পেঁয়াজের বাজার দরের কলামটি রোববারও শূন্য রেখেছে টিসিবি।
‘বাংলাদেশের কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল এর কার্যালয় এবং পোল্যান্ডের সুপ্রিম অডিট ইন্সটিউশন- এর কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ শীর্ষক টুইনিং প্রকল্পের কিক-অফ কনফারেন্স সম্প্রতি ঢাকার শেরাটন হোটেলে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল মো. নূরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মি. মাইকেল মিলার, ভারতে নিযুক্ত পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মি. পিওতর আন্তোনি শিতালস্কি এবং পোল্যান্ডের সুপ্রিম অডিট ইন্সটিটিউশন (NIK)-এর ভাইস-প্রেসিডেন্ট মি. জাসেক কোজলোস্কি।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাবৃন্দ, পোল্যান্ডের সুপ্রিম অডিট ইন্সটিটিউশন (NIK) প্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থার প্রতিনিধি, কূটনৈতিক মিশন, উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা।
প্রধান অতিথি বাংলাদেশের কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল মো. নূরুল ইসলাম বলেন—‘বাংলাদেশের কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল এর কার্যালয় দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা এবং নাগরিক আস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই অংশীদারিত্ব আমাদের নিরীক্ষা ব্যবস্থাপনাকে আরও আধুনিকীকরণ এবং অগ্রাধিকার ক্ষেত্রসমূহে নিরীক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।’
ইইউ রাষ্ট্রদূত মি. মাইকেল মিলার প্রকল্পটির উদ্বোধনকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশের জন-তদারকি ও আর্থিক শাসনব্যবস্থা শক্তিশালী করতে ইইউ-এর অব্যাহত অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, কার্যকর নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।
ভারতে নিযুক্ত পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মি. পিওতর আন্তোনি শিতালস্কি বাংলাদেশ ও পোল্যান্ডের দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার প্রশংসা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশের কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল এর কার্যালয় এবং পোল্যান্ডের সুপ্রিম অডিট ইনস্টিটিউশন -এর এই অংশীদারিত্ব পেশাগত অভিজ্ঞতা বিনিময়, প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে।
পোল্যান্ডের সুপ্রিম অডিট ইনস্টিটিউশন (NIK)-এর ভাইস-প্রেসিডেন্ট মি. জাসেক কোজলোস্কি বাংলাদেশের কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল কার্যালয় এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক সেরা চর্চা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ে NIK-এর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এই প্রকল্প সরকারি নিরীক্ষা শক্তিশালীকরণ এবং জবাবদিহিতা কাঠামো উন্নয়নে একটি অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।
টুইনিং প্রকল্পটি আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ফাইন্যান্সিয়াল অডিট, পারফরমেন্স অডিট এবং ইনফরমেশন সিস্টেম (আইটি) অডিট পরিচালনায় বাংলাদেশের কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল কার্যালয় -এর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে। সহযোগিতার প্রধান ক্ষেত্রসমূহের মধ্যে রয়েছে – ফিন্যান্সিয়াল অডিটের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, পারফরমেন্স অডিট শক্তিশালীকরণ এবং মডেল অডিট ও কৌশলগত উন্নয়নের মাধ্যমে আইটি অডিটের অগ্রগতি নিশ্চিত করা।
এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন জনসম্পদের ব্যবহারে স্বাধীন নিশ্চয়তা প্রদানের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করবে এবং একটি নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করবে।
দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ এবং আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশে অনিয়মের মধ্যেও রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের শেয়ারবাজারে অপ্রত্যাশিত উত্থান ঘটেছে। প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে কোম্পানিটির কারখানা বন্ধ এবং গত চার বছর ধরে কোনো নিরীক্ষিত আর্থিক তথ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রকাশ করা হয়নি। এই চরম অনিশ্চয়তার মধ্যেও গত এক মাসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।
তথ্য অনুযায়ী, গত ১৬ নভেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রিজেন্ট টেক্সটাইলের শেয়ারের দর ছিল মাত্র ১ টাকা ৪০ পয়সা। কিন্তু এরপর থেকেই শেয়ারের দাম ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ টাকা ১০ পয়সায়। এর ফলে আলোচিত সময়ে শেয়ারদর ২.২১ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
উল্লেখ্য, ডিএসইর কর্মকর্তারা ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রিজেন্ট টেক্সটাইলের কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে দেখতে পান যে সেখানে উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ডিএসইর তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে কারখানাটি বন্ধ আছে। সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী কারখানা বন্ধ থাকলে তা বিনিয়োগকারীদের জানাতে কোম্পানিটি বাধ্য থাকলেও রিজেন্ট টেক্সটাইল স্টক এক্সচেঞ্জকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি।
সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরের আর্থিক তথ্যে দেখা যায়, কোম্পানিটির আয় হয়েছিল ১১০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, কিন্তু কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছিল ২০ কোটি ৮০ লাখ টাকার বেশি, যা আগের বছরের লোকসানের চেয়ে অনেক বেশি। ঐ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছিল ১ টাকা ৬২ পয়সা। এছাড়া, এই অর্থবছরের জন্য কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। ৩০ জুন ২০২১ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ২৬ টাকা ৫২ পয়সা।
২০২৬ সালের শেষ ভাগে বিশ্ববাজারে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৯০০ ডলারে উঠে যেতে পারে পূর্বাভাস দিয়েছে গোল্ডম্যান স্যাকস। সোনার দাম যখন আউন্সপ্রতি চার হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেল, তখনই অনেক সংস্থা পূর্বাভাস দেয়, সোনার দাম আরও বাড়তে পারে।
গোল্ডম্যান স্যাকস ছাড়াও গত দুই মাসে বিভিন্ন বৈশ্বিক সংস্থা সোনার দাম নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে। এসব পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছর সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৫০০ ডলার থেকে ৪ হাজার ৯০০ ডলারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
গোল্ড প্রাইস ডট অর্গের তথ্যানুসারে, বিশ্ব বাজারে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৩০০ ডলার।
গোল্ডম্যান স্যাকস বাজার বিশ্লেষণ করেছে। তাদের ভাষ্যমতে, বর্তমানে সোনায় যে পরিমাণ বিনিয়োগ হওয়ার কথা, সে পরিমাণ হচ্ছে না। সে কারণে বিনিয়োগকারীরা সোনায় আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছেন। বিষয়টি হলো, এখন বিনিয়োগকারীদের সোনা ধরে ধরে রাখার প্রবণতা কম বলে ভবিষ্যতে হঠাৎ যদি বিনিয়োগ বেড়ে যায়, তাহলে সোনার দাম হুট করে অনেকটা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
গোল্ডম্যান স্যাকস মনে করছে, পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে গেছে যে সোনার দাম আরও বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যে চাহিদা অনেকটা বাড়তে হবে তা নয়; বরং বিনিয়োগকারীরা স্টকে বিনিয়োগের পাশাপাশি কিছু পরিমাণে সোনা কিনলেই এর দাম অনেকটা বেড়ে যাবে। ফলে বিনিয়োগ যত বেশি বাড়বে, সোনার দাম তার চেয়েও বেশি হারে বাড়বে।
চলতি বছর ইতোমধ্যে সোনার দাম ৬০ শতাংশ বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে গোল্ডম্যান স্যাকস মনে করছে, আগামী বছর সোনার দাম অতটা বাড়বে না। তবে যে দুটি কারণে এ বছর সোনার দাম বেড়েছে, সেই কারণ দূর হবে না, থাকবে।
প্রথমত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনা কেনার ধারা অব্যাহত থাকবে। ২০২২ সালে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ পশ্চিমারা জব্দ করার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুঝে যায়, এখন সোনায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলও মাস খানিক আগে সে কথা বলেছে।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের (ডব্লিউজিসি) সেন্ট্রাল ব্যাংক গোল্ড রিজার্ভ সার্ভে ২০২৫-এ বলা হয়েছে, ৪৩ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোনার ভান্ডার বৃদ্ধি করতে আগ্রহী।
দ্বিতীয়ত, ফেডারেল রিজার্ভ এখন নীতি সুদ কমাচ্ছে। ডিসেম্বর মাসেও নীতি সুদহার কমানো হয়েছে। বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, ২০২৬ সালে আরও ৭৫ ভিত্তি পয়েন্ট হারে নীতি সুদহার কমানো হতে পারে। বিনিয়োগকারীদের সোনার দিকে ঝুঁকে পড়ার যেসব কারণ অতীতে ছিল, সেগুলো এখনো আছে।
ভূরাজনীতিতে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম খুঁজছেন। সেই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে বাণিজ্যকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে, তাতে বিনিয়োগকারীরা ডলারভিত্তিক বন্ডের চেয়ে সোনায় বিনিয়োগ করা নিরাপদ মনে করছেন।
সোনার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর দাম সাধারণত কমে না। গোল্ড প্রাইস ডট অর্গের তথ্যানুসারে, গত ২০ বছরে সোনার দাম বেড়েছে ৭১৮ শতাংশ। গত পাঁচ বছরে বেড়েছে ১৩৪ শতাংশ; এক বছরে ৬১ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থ যেসব জেলার ব্যাংকের শাখাগুলোতে বেশি এসেছে, তাদের চলতি অর্থবছরের (২০২৫-২৬) প্রথম পাঁচ মাসের (জুলাই-নভেম্বর) তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে প্রবাসী আয়ের শীর্ষে রয়েছে ঢাকা জেলা। দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম। পরের অবস্থানে রয়েছে কুমিল্লা, সিলেট এবং নোয়াখালী।
অবশ্য দেশের আটটি বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রামের ছয় জেলাই প্রবাসী আয়ের শীর্ষ দশের তালিকায়। এই বিভাগের মোট ১১টি জেলার মধ্যে চট্টগ্রাম রয়েছে শীর্ষ তালিকার দ্বিতীয়তে। এছাড়া আছে কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর। সবচেয়ে কম প্রবাসী আয় এসেছে রংপুর বিভাগের লালমনিরহাট জেলায়।
চলতি অর্থবছরের (২০২৫-২৬) জুলাই থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত পাঁচ মাস বাংলাদেশ ব্যাংকের জেলাভিত্তিক হালনাগাদ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের তথ্য বলছে এসব কথা। সেখানে দেখা যায়, গত পাঁচ মাসে প্রবাসীরা দেশে ১ হাজার ৩০৩ কোটি ৭৩ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে আলোচিত পাঁচ মাসে প্রবাসী আয় ঢাকা বিভাগে এসেছে ৭০০ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। যা শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। এই বিভাগের মোট ১৩টি জেলার মধ্যে ঢাকা রয়েছে শীর্ষ তালিকার প্রথমে।
আলোচিত পাঁচ মাসে ঢাকা জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার। শীর্ষ দশের তালিকার নবমে রয়েছে টাঙ্গাইল এবং দশমে মুন্সীগঞ্জ। এই দুই জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে যথাক্রমে ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ডলার এবং ২১ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। অন্যান্য বিভাগের মধ্যে পাঁচ মাসে চট্টগ্রাম বিভাগের এসেছে ৩৩৮ কোটি ৭৫ লাখ ডলার, সিলেটের ১০৩ কোটি ২৫ লাখ ডলার, খুলনায় ৫১ কোটি ৮৪ লাখ ডলার, রাজশাহীতে ৪০ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, বরিশালে ৩১ কোটি ২৮ লাখ ডলার, ময়মনসিংহে ২২ কোটি ৬ লাখ ডলার এবং রংপুরে ১৫ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। রংপুর বিভাগের লালমনিরহাট জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ৬৪ লাখ ডলার। যা দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে সর্বনিম্ন এটি। সর্বনিম্ন দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে একই বিভাগের পঞ্চগড়। এই জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ৭৪ লাখ ডলার।
অপরদিক প্রবাসী আয়ের শীর্ষ দশের তালিকায় রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের ছয় জেলা। আলোচিত পাঁচ মাসে এই বিভাগে প্রবাসী আয় এসেছে ৩৩৮ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। এগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ১০৩ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। এছাড়া কুমিল্লা জেলায় ৬৯ কোটি ৬৬ লাখ ডলার, নোয়াখালীতে ৩৯ কোটি ১৬ লাখ ডলার, ফেনীতে ৩৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩২ কোটি ৭৯ লাখ ডলার এবং চাঁদপুরে ২৯ কোটি ১০ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। সে হিসেবে, চট্টগ্রাম বিভাগে কুমিল্লা দ্বিতীয় এবং দেশের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে আছে। এরপর নোয়াখালী পঞ্চম, ফেনী ৬ষ্ঠ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সপ্তম ও অষ্টম অবস্থানে আছে চাঁদপুর। একই বিভাগের রাঙামাটি জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ৭৫ লাখ ডলার। যা দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে সর্বনিম্ন তৃতীয় অবস্থানে এটি। শীর্ষ দশের তালিকায় সিলেট বিভাগে রয়েছে একটি জেলা। এর মধ্যে সিলেট জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ৫৫ কোটি ২৫ লাখ ডলার। যা দেশের মধ্যে শীর্ষ চতুর্থ অবস্থানে আছে।
গত সপ্তাহজুড়ে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে মূল্যসূচক। পাশাপাশি দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৩৩৩টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২২টির। আর ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ লেনদেনে অংশ নেওয়া ৮৫ দশমিক ১৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়েছে।
দাম বাড়ার তালিকা বড় হওয়ায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ২১ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা বা দশমিক ২৩ শতাংশ।
বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে প্রধান মূল্যসূচকও বেড়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৭৭ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহের সূচকটি কমে ১৪১ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৮২ শতাংশ।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৯ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩২ দশমিক শূন্য ৬ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।
আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ১১ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৬২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৪২ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২০ শতাংশ।
এদিকে গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের গতিও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪১১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা বা ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ১ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, ফাইন ফুডস, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, বিডি থাই ফুড, একমি পেস্টিসাইড, মুন্নু ফেব্রিক্স এবং আনোয়ার গ্যালভানাইজিং।
রাজধানীর বাজারে তেলের দাম বেড়েছে। তেলের সঙ্গে বাড়তি রয়েছে পুরনো পেঁয়াজের দামও। তবে বাজারে দাম কমেছে ডিমের। একইসঙ্গে বেশির ভাগ সবজির দাম এখন কমতির দিকে।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) কারওয়ান বাজার, টাউন হল বাজার, উত্তরার চৌরাস্তার কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীত মৌসুমের বিভিন্ন সবজির সরবরাহ বেড়েছে। এ কারণে এসব সবজির দাম কমেছে। চলতি মাসের শেষ দিকে সবজির দাম আরও কমবে বলে জানান বিক্রেতারা।
ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো কয়েক দফা চেষ্টার পরে ৭ ডিসেম্বর বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৬ টাকা বাড়িয়েছে। তাতে সয়াবিন তেলের এক লিটারের বোতলের দাম ১৯৫ টাকায় উঠেছে। ৫ লিটারের বোতলের দাম এখন ৯৫৫ টাকা করা হয়েছে। গতকাল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সব দোকানেই নতুন এই দরেই সয়াবিন বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে পেঁয়াজের দামও এখন বাড়তি। যদিও নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজের কেজি ১০০-১১০ টাকা। পুরানো পেঁয়াজের দাম আরও বেশি, কেজি ১৩০-১৪০ টাকা। বিক্রেতারা জানান, নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে দাম কিছুটা কমতে পারে।
মৌসুমের আরেক নতুন পণ্য আলু। তবে পণ্যটির দাম তুলনামূলক বেশি। বাজারে প্রতি কেজি নতুন সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। আর নতুন লাল আলুর কেজি ৭০ টাকার আশাপাশে। কয়েক দিন আগে নতুন আলুর দাম একশ টাকার ওপরে ছিল। সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম কিছুটা কমেছে। তবে পুরোনো আলুর দাম কম। কেজি ২০-২৫ টাকা।
গত দুই সপ্তাহ ধরে ডিমের দাম কম রয়েছে। ফার্মের মুরগির এক ডজন ডিমের দাম এখন ১২০ টাকা। আগে এটি ১৪০ টাকা ছিল। এ ছাড়া প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ২৭০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরবরাহ বাড়ায় বাজারে সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। প্রতি পিস ফুলকপি ও বাধাকপি ৪০-৫০ টাকা, লাউ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অন্য সবজির মধ্যে প্রতি কেজি বেগুন ৬০-১০০ টাকা, মুলা ৩০-৪০ টাকা, শালগম ৪০-৬০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা ও দেশি টমেটো ১১০-১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
আলুর বাজারে নতুন পণ্য এসেছে। সাদা আলু প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, লাল আলু ৭০ টাকার কাছাকাছি। পুরোনো আলুর দাম কম, কেজি ২০-২৫ টাকা। এছাড়া বেগুন ৬০-১০০ টাকা, মুলা ৩০-৪০ টাকা, শালগম ৪০-৬০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা এবং দেশি টমেটো ১১০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি) ও ব্রিজ ফর বিলিয়নস-এর সহযোগিতায় বাস্তবায়িত ‘রেস্টোরেশন ফ্যাক্টরি বাংলাদেশ ২০২৫’ প্রোগ্রামের জাঁকজমকপূর্ণ সমাপনী অনুষ্ঠান গতকাল সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ব্যবসায়িক উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চারজন প্রতিশ্রুতিশীল উদ্যোক্তাকে পুরস্কৃত করা হয়।
এবারের আয়োজনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৫০ জন প্রারম্ভিক পর্যায়ের সবুজ উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন। তারা নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জলবায়ু-সহনশীল কৃষি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সার্কুলারিটি, পানি ও স্যানিটেশন, প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান, টেকসই বনব্যবস্থা এবং পরিবেশবান্ধব ভোক্তা পণ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর প্রতিনিধিত্ব করেন। দীর্ঘ নয় মাসব্যাপী এই যাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা কাঠামোগত ব্যবসায়িক ইনকিউবেশন, বিশেষজ্ঞ সেশন এবং দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের মেন্টরশিপ সুবিধা পেয়েছেন। মূলত জলবায়ু-স্মার্ট ব্যবসায়িক মডেল শক্তিশালী করা, বিনিয়োগ প্রাপ্তির প্রস্তুতি এবং পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবন প্রসারে দক্ষতা অর্জনে তাদের সহায়তা করা হয়েছে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে নির্বাচিত ১৭ জন উদ্যোক্তা বিশেষজ্ঞ জুরিবোর্ডের সামনে তাদের উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। তাদের প্রস্তাবনায় টেকসই প্রযুক্তি, নিম্ন-কার্বন ব্যবসা মডেল এবং কমিউনিটির সহনশীলতা বৃদ্ধির কার্যকর সমাধানগুলো উঠে আসে। এদের মধ্য থেকে পরিবেশগত প্রভাব, সামাজিক প্রভাব, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি এবং বর্ষসেরা নারী উদ্যোক্তা—এই চারটি ক্যাটাগরিতে চারজন সেরা উদ্যোক্তাকে ২,০০০ মার্কিন ডলার করে অনুদান প্রদান করা হয়।
এছাড়া অনুষ্ঠানে একটি ‘গ্রিন ইনোভেশন শোকেস’-এর আয়োজন করা হয়, যেখানে উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য ও প্রোটোটাইপ প্রদর্শন করেন। এই প্রদর্শনী বিনিয়োগকারী, উন্নয়ন সহযোগী এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করে। অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ইউএনইপি-এর প্রতিনিধি এবং দেশের উদ্যোক্তা ইকোসিস্টেমের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেড এবার নরসিংদীতে অবস্থিত তাদের ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব স্থায়ী (নন-কারেন্ট) সম্পদ বিক্রির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ রুরাল ইলেকট্রিফিকেশন বোর্ডের (বিআরইবি) সঙ্গে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ১৫ বছর মেয়াদি বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এবং বিআরইবি চুক্তি নবায়নে আগ্রহী না হওয়ায় কোম্পানিটি কেন্দ্রটি বন্ধ করে সম্পদ বিক্রির এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও ডরিন পাওয়ার একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল। গত বছর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) চুক্তি নবায়ন না করায় কোম্পানিটি টাঙ্গাইল ও ফেনীতে অবস্থিত তাদের দুটি ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থায়ী সম্পদ বিক্রি করে দিয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় এবার নরসিংদীর কেন্দ্রটির কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত এল।
কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ডরিন পাওয়ারের ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। এ সময়ে শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৮১ পয়সায়, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৪৮ পয়সা। ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫৪ টাকা ২৪ পয়সায়।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রদানের ক্ষেত্রেও কোম্পানিটি ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৪-২৫ হিসাব বছরে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে তারা। এই হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ১৯ পয়সা, যা আগের বছরে ছিল ১ টাকা ৮১ পয়সা। এছাড়া সমাপ্ত ২০২৩-২৪ এবং ২০২২-২৩ হিসাব বছরেও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের যথাক্রমে ১০ ও ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছিল ডরিন পাওয়ার।
ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (সিআরআইএসএল) মূল্যায়ন অনুযায়ী, ডরিন পাওয়ারের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান ‘এ প্লাস’ এবং স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-থ্রি’। ২০০৮ সালে যাত্রা শুরু করা এই কোম্পানিটি ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১৮১ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভে রয়েছে ৬৭২ কোটি ৭১ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৬৬ দশমিক ৬১ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে, ১৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে এবং বাকি ১৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।
বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ)-এর ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) সিস্টেমের মাধ্যমে আহ্বানকৃত দরপত্রের সংখ্যা, দরদাতা ও ক্রয়কারী সংস্থার নিবন্ধন উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশের সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাকে আধুনিক ও সুসংগঠিত করার উদ্দেশ্যে ২০১১ সালে চালু হওয়া ই-জিপি একটি কেন্দ্রীভূত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেস, দ্রুত কার্যকারিতা এবং শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে শুরু থেকেই এটি দ্রুত সম্প্রসারিত হয়েছে। দরদাতা ও ক্রয়কারী এ সিস্টেমের প্রধান ব্যবহারকারী।
ডিজিটাল ক্রয়ের সুবিধা ও কার্যকারিতার কারণে তারা এ পরিবর্তনকে সাদরে গ্রহণ করেছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০১১ থেকে শুরু করে ২০২৫ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ই-জিপি সিস্টেমের মাধ্যমে আহ্বানকৃত দরপত্রের মোট সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, যার মোট মূল্য ১০ লাখ ২৯ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা। ২০১১ থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত আহ্বানকৃত মোট দরপত্রের সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ৭৭ হাজার, যার মোট মূল্য ছিল ৯ লাখ ২২ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা।
২০২৫ সালের নভেম্বরে এক মাসের মধ্যে ই-জিপিতে ২৩ হাজার দরপত্র আহ্বান নতুন মাসিক রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। ই-জিপি চালুর পর থেকে এক মাসে আহ্বানকৃত দরপত্রের সংখ্যাই সর্বোচ্চ।
ই-জিপি পরিচালনার সাথে সংযুক্ত সূত্রগুলো জানা গেছে, আহ্বানকৃত দরপত্রের এ উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ২০২৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর), ২০২৫-এর প্রয়োগের সঙ্গে সম্পর্কিত। নতুন বিধিমালায় সব সরকারি ক্রয়ে ই-জিপির ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা প্ল্যাটফর্মের কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করেছে।
এখন প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০টি নিবন্ধনের আবেদন বিপিপিএ-তে আসছে, যেখানে আগে দৈনিক গড় ছিল মাত্র ৬০ থেকে ৭০।
তুলনামূলক তথ্যে আরও দেখা যায়, ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ই-জিপিতে নিবন্ধিত দরদাতার সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩৭৪ হয়েছে, যা ২০২৪ সালের নভেম্বরে ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৭৭৭।
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ২০১১ সালে সিস্টেম চালুর পর এক বছরে ২৩ হাজার দরদাতার নিবন্ধনের এ ধরনের বৃদ্ধি আগে কখনো দেখা যায়নি।
নিবন্ধিত ক্রয়কারী সংস্থার সংখ্যা ২০২৪ সালের নভেম্বরের ১ হাজার ৪৭৪ থেকে ২০২৫ সালের নভেম্বরে বেড়ে ১ হাজার ৪৯৯ হয়েছে। একইভাবে, ক্রয়কারীর সংখ্যা ১২ হাজার ৬০২ থেকে ১৪ হাজার ৩৭৪ হয়েছে।
বিপিপিএ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) এস এম মঈন উদ্দীন আহম্মেদ পিপিআর, ২০২৫-এর প্রণয়ন ও কার্যকর করা দেশের সরকারি ক্রয় সংস্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি, পিপিআর, ২০২৫ সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়াকে সুসংগঠিত করবে। সরকারি ক্রয়ে প্রতি বছরে প্রায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমমূল্যের অর্থ ব্যয় হয়। পিপিআর, ২০২৫ প্রয়োগের ফলে সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা এবং কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।