কথায় আছে যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে! সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির উন্নতি, পরিবারের আগ্রহ এবং সরকারি-বেসরকারি নীতির কারণে গত দুই দশকে কর্মক্ষেত্রে বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ। পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছে নারী। ব্যাংক খাতের মতো গভীর মনোযোগী কাজেও দিন দিন বাড়ছে নারীর পদচারণা। তবে সংখ্যানুপাতে ব্যাংকগুলোর বড় পদে এখনো সেভাবে বাড়েনি নারী কর্মীর সংখ্যা।
দেশে বর্তমানে সাড়ে ৩২ হাজার নারী ব্যাংক খাতে চাকরি করছেন। নারীরা শুধু যে ব্যাংকে চাকরিই করছেন তা নয়, বিভিন্ন দায়িত্বশীল পদে বসে নেতৃত্বও দিচ্ছেন। আবার ব্যাংকের নীতিনির্ধারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন অনেক নারী। যদিও এ খাতে উচ্চপদে অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বা উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) পদে নারী এখনো হাতে গোনা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব বলছে, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংক খাতে মোট জনবল ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৩৯ জন। নারী কর্মী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৫৬৭ জন। এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ব্যাংক খাতে যত লোক কাজ করে, তার ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ নারী। ২০২২ সালের জুনের শেষে দেশের ব্যাংক খাতে নারী কর্মীর সংখ্যা ছিল ৩১ হাজার ৫৪৮ জন। শতকরা হিসাবে যা ছিল ১৬ দশমিক ২৮ শতাংশ। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে নারীর কর্মসংস্থান বেড়েছে।
গতকাল সোমবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ব্যাংকে নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তা হিসেবেও নারীদের দেখা যাচ্ছে। যেমন বর্তমানে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন হুমায়রা আজম। তবে বিপরীত চিত্রও আছে। সেটি হলো ক্যারিয়ারের মাঝামাঝি সময়ে পুরুষের তুলনায় নারীদের ব্যাংকের চাকরি ছাড়ার হার বেশি। নারী ব্যাংকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পারিবারিক ও সামাজিক নানা চাপের কারণে তারা ব্যাংক ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত চলতি জানুয়ারি-জুন সময়ের পরিসংখ্যান বলছে, ব্যাংকে যারা ক্যারিয়ার শুরু করছেন, তাদের মধ্যে ১৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ নারী। ব্যবস্থাপনার মধ্যম স্তরে নারীদের অংশগ্রহণ ১৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আর ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে ৯ দশমিক ২৮ শতাংশ নারী। ২০২২ সালের জানুয়ারি-জুন সময়ে ব্যাংকিং ক্যারিয়ার শুরু করছিলেন ১৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ নারী। ব্যবস্থাপনার মধ্যম স্তরে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল ১৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আর ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ে নারীর অবস্থান ছিল ৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ । সেই হিসাবে এক বছরে ব্যাংক খাতে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। কিন্তু নেতৃত্ব পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ কমেছে।
নারীর এ অংশগ্রহণ বেড়েছে বলে মনে হলেও পুরুষের সঙ্গে সমানতালে কর্মক্ষেত্রে নারী এখনো অবস্থান গড়ে তুলতে পারছে না বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, ‘নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে বলে মনে হলেও পুরুষের সঙ্গে সমানতালে কর্মক্ষেত্রে নারী এখনো অবস্থান গড়ে তুলতে পারছেন না। যারা কাজ করছেন, তারাও পিছিয়ে আছেন। উচ্চপদে নারী নেই বললেই চলে। নারীর অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হলেও যথাযথভাবে কাজের সুযোগ তৈরি হয়নি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বেসরকারি সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে কিন্তু নীতিনির্ধারণী পর্যায়, পরিচালক, বড় ধরনের উচ্চপদে নারীর অবস্থান এখনো অনেক কম। কর্মক্ষেত্রে নারীর এ অগ্রগতিকে টেকসই করতে হবে। কর্মপরিবেশ আরও নিরাপদ করতে হবে। এ জন্য বাল্যবিয়ে বন্ধ, উচ্চশিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো জরুরি।’
সোনালী ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার এলিজা খানম বলেন, ব্যাংকিংয়ে নারীদের অংশগ্রহণ আগের চেয়ে ভালো। তবে ব্যাংকে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়লেও ক্যারিয়ারের মাঝামাঝি সময়ে অনেকে সন্তান-সংসার সামলানোর কারণে চাকরি ছাড়ছেন। ফলে ব্যাংকে উচ্চপদে নারী কমছে। এ প্রবণতা কীভাবে কমিয়ে আনা যায়, সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। তা হলে ব্যাংক খাতের উচ্চপদে, মানে নেতৃত্বে আরও নারীকে দেখা যাবে।
২০২২ সালের জুন নাগাদ দেশের ব্যাংক খাতে বোর্ড সদস্য বা পরিচালক হিসেবে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল মাত্র ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে চলতি জুন শেষে সেটা বেড়ে হয়েছে ১৪ দশমিক ০৫ শতাংশ। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও পরিচালক নিয়োগসংক্রান্ত নীতিমালায় বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের এক-তৃতীয়াংশই থাকবেন নারী। এ ছাড়া সরকারের শেয়ার রয়েছে, এমন বেসরকারি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও এ নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে। সরকারি ব্যাংকগুলোয় নীতিনির্ধারণের জন্য পরিচালক নিয়োগ দেয় সরকার। নারী উদ্যোক্তা, সাবেক নারী ব্যাংকার, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের এ পদে নিয়োগ দেয়া হয়। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় মালিকদের স্ত্রী, কন্যা, পুত্রবধূ ও ঘনিষ্ঠজনদের পরিচালক হিসেবে দেখা যায়।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ব্যাংকগুলোতে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন, বিশেষায়িত ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের চেয়ে বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকে সবচেয়ে কমসংখ্যক নারী কর্মকর্তা বা কর্মচারী কাজ করছেন। সবচেয়ে বেশি নারী কর্মীর সংখ্যা বেসরকারি ব্যাংকে। ৯টি বিদেশি ব্যাংকে ৯৭০ জন নারী কর্মকর্তা কাজ করেন। এই সংখ্যা অন্যান্য ব্যাংকের চেয়ে কম হলেও শতাংশ হিসাবে সবচেয়ে বেশি ২৪ দশমিক ১১ শতাংশ। ৪৩টি বেসরকারি ব্যাংকে নারী কর্মী ১৬ দশমিক ২৭ শতাংশ। ছয়টি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকে ১৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। এ ছাড়া তিনটি বিশেষায়িত ব্যাংকে ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ নারী কর্মী রয়েছেন।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, পড়ালেখা শেষ করে ব্যাংকগুলোয় প্রচুর নারী কর্মী যোগ দেন। কিন্তু পরে কাজের চাপ সামলাতে না পারা ও সন্তান লালন-পালনের জন্য ব্যাংকের চাকরি ছাড়েন তারা। নারী ব্যাংকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিশু দিবাযত্নকেন্দ্রের মতো সুবিধা সব শাখায় সমানভাবে নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ব্যাংকের পর্যাপ্ত শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র ও যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকলে নারী ব্যাংকারের সংখ্যা আরও বাড়ত। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদকেও উদ্যোগ নিতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, নারীদের জন্য দেশের ৬১টি তফসিলি ব্যাংকে ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি কার্যকর হচ্ছে। এসব ব্যাংকে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে নীতিমালা আছে। যমুনা ব্যাংক ছাড়া অন্য ৬০টি ব্যাংক নিয়মিতভাবে লিঙ্গসমতা বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে প্রশিক্ষণের আয়োজন করছে। ৩৬টি তফসিলি ব্যাংক তাদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র স্থাপন করেছে। নারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে সব ব্যাংকের আছে নিজস্ব পরিবহন সুবিধা।
দুই দিনের ব্যবধানে ফের সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভালো মানের তথা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৭৫০ টাকা কমানো হয়েছে। এর ফলে এ ক্যাটাগরির সোনার নতুন মূল্য হবে ৯৮ হাজার ২১১ টাকা (প্রতি ভরি)। এতদিন যা ছিল ৯৯ হাজার ৯৬০ টাকা।
শনিবার বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে। আজ রোববার থেকে এটি কার্যকর করা হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম হবে ৯৮ হাজার ২১১ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৩ হাজার ৭৭৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৮০ হাজার ৩৬৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ৬৬ হাজার ৯৫১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী বর্তমানে ২২ ক্যারেটের রুপার দাম (ভরি) ১ হাজার ৭১৫ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ১ হাজার ৬৩৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১০৫০ টাকা।
এর আগে, দাম কমিয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সবশেষ সোনার মূল্য নির্ধারণ করেছিল বাজুস। যা বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হয়। যেখানে ভালো মানের তথা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ২৮৪ টাকা কমানো হয়। যার মধ্যদিয়ে লম্বা সময় পর লাখের ঘর থেকে নামে সোনার দাম।
গতকাল পর্যন্ত ওই দাম অনুযায়ী ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা বিক্রি হয় ৯৯ হাজার ৯৬০ টাকায়। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৫ হাজার ৪১২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের সোনা ৮১ হাজার ৭৬৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ৬৮ হাজার ১১৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
তার আগে দাম বাড়িয়ে গত ২৪ আগস্ট সোনার মূল্য নির্ধারণ করেছিল বাজুস। যা ২৫ আগস্ট থেকে কার্যকর হয়। যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। সে সময় ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম নির্ধারণ হয় ১ লাখ ১ হাজার ২৪৪ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৬ হাজার ৬৩৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৮২ হাজার ৮১৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম নির্ধারণ হয় ৬৯ হাজার ৫১ টাকা।
ঢাকা মহানগরীর মিরপুর এলাকায় আলু, পেঁয়াজ ও ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মিরপুর ১ নম্বরের বিভিন্ন মার্কেট ও সুপার শপে এই অভিযান চালানো হয়।
অভিযান চালান অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল এবং প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সোহেল চাকমা।
বিকেলে আব্দুল জব্বার মন্ডল দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘অভিযানকালে দেখা যায়, প্রিন্স বাজারে আলু প্রতি কেজি ৩৬ টাকা দরে এবং ডিম প্রতিটি ১১ দশমিক ৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া, শাহ আলী মার্কেট এলাকায় আলু ৩৬-৩৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। সরকারনির্ধারিত মূল্যের বেশি দরে আলু বিক্রি করার অপরাধে এক আড়তদারকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আরও দুই আড়তদারের বেশ কয়েক বস্তা আলু পাইকারি ৩০ টাকা কেজি দরে উপস্থিত ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়। অভিযুক্ত আড়তদার জানান, তিনি কমিশনে ব্যাপারীর আলু বিক্রি করেন। রহমত উল্লাহ নামে ওই ব্যাপারীকে মোবাইল ফোনে মুন্সিগঞ্জের হিমাগার থেকে ২৬/২৭ টাকা দরে আলু ক্রয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি সাড়া দেননি।’
বর্তমানে বাজারে আলুর পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে এবং ডিম ১৪০-১৪৪ টাকা ডজন হিসেবে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে সুপার শপ, পাইকারি বিক্রেতা ও সংশ্লিষ্ট সবার অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভা হয়। সেখানে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলুর সরকারনির্ধারিত মূল্য ২৭ টাকা দরে কোল্ড স্টোরেজ থেকে সরবরাহের ব্যবস্থা করে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সে প্রেক্ষিতে অধিদপ্তর কর্তৃক দেশের বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজ থেকে সুপার শপসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে সরকারনির্ধারিত মূল্যে আলু সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়।
গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক পতন হয়েছে। এক সপ্তাহেই প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ৮০ ডলার কমে গেছে। বিশ্ববাজারে সোনার দাম কমার মধ্যে দেশের বাজারেও সোনার দাম কমানো হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারে সোনার দাম যে হারে কমেছে, দেশের বাজারে তার তুলনায় খুবই সামান্য পরিমাণ কমেছে।
গেল এক সপ্তাহে বিশ্বাবাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম কমেছে ৭৬ দশমিক ৮০ ডলার। প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরলে বিশ্ববাজারে এক ভরি সোনার দাম কমেছে ৩ হাজার ৪৭৬ টাকা। বিপরীতে দেশের বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম কমেছে ১ হাজার ২৮৪ টাকা।
অর্থাৎ বিশ্ববাজারে যে হারে দরপতন হয়েছে, দেশের বাজারে তার অর্ধেকও কমানো হয়নি। এতে দেশের বাজারে এবং বিশ্ববাজারের মধ্যে সোনার দামে বড় ধরনের পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববাজারের তুলনায় দেশের বাজারে এক ভরি সোনা ১৬ হাজার টাকারও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
দেশের বাজারে সর্বশেষ সোনার দাম পুনর্নির্ধারণ করা হয় গত ২৮ সেপ্টেম্বর। তার আগে ২৭ সেপ্টেম্বর বৈঠক করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি সোনার দাম নতুন করে নির্ধারণ করে।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ১ হাজার ২৮৪ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৯ হাজার ৯৬০ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ২২৪ টাকা কমিয়ে ৯৫ হাজার ৪১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৪৯ টাকা কমিয়ে ৮১ হাজার ৭৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৯৩৩ টাকা কমিয়ে ৬৮ হাজার ১১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে এ দামেই দেশের বাজারে সোনা বিক্রি হচ্ছে।
অবশ্য সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের এরচেয়ে বেশি অর্থ গুনতে হচ্ছে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে সোনার গহনা বিক্রি করা হয়। সেই সঙ্গে ভরিপ্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে নতুন দাম অনুযায়ী ভালো মানের এক ভরি সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের ১ লাখ ৮ হাজার ৪৫৭ টাকা গুনতে হবে।
বাজুস থেকে যখন দেশের বাজারের জন্য সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়, সে সময় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ১ হাজার ৯০৩ ডলার। এখন তা কমে ১ হাজার ৮৪৮ ডলারে নেমে গেছে। অর্থাৎ দেশের বাজারে সোনার দাম কমানোর পর বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম কমেছে ৫৫ ডলার।
বিশ্ববাজারের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসেই সোনার দাম কমেছে। সপ্তাহের শুরুতে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ১ হাজার ৯২৪ দশমিক ৯৯ ডলার। সপ্তাহের ব্যবধানে ৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ বা ৭৬ দশমিক ৮০ ডলার কমে প্রতি আউন্সের দাম ১ হাজার ৮৪৮ দশমিক ১৯ ডলারে নেমে এসেছে।
সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আলাদা তিনটি লটে ৯০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার। এ জন্য সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন চূড়ান্ত হয়েছে। পাশাপাশি দেশীয় কোম্পানি কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড-কাফকো থেকে আলাদা লটে আরও ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া কেনার প্রস্তাবও চূড়ান্ত করা হয়েছে।
বুধবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় কমিটির বৈঠকে এসব অনুমোদন চূড়ান্ত করা হয়। এতে প্রায় ৫৩১ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান। বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে তিনি জানান, সব মিলে ১ লাখ ২০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনতে যাচ্ছে সরকার।
তিনি আরও জানান, রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সৌদি আরবের সাবিক অ্যাগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে দ্বিতীয় লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া কিনতে মোট ব্যয় হবে ১৩২ কোটি ২৭ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। কাতারের মুনতাজাত থেকে তৃতীয় লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া কিনতে ব্যয় হবে ১৩৬ কোটি ৫৬ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে একই পরিমাণ ইউরিয়া সার কিনতে খরচ গুনতে হবে ১৩২ কোটি ২৭ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। অন্যদিকে দেশীয় কোম্পানি কাফকো থেকে একই পরিমাণ ইউরিয়া সার কিনতে খরচ কিছুটা কমে দাঁড়াবে ১২৯ কোটি ৮৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এ ছাড়া ক্রয় কমিটির বৈঠকে পদ্মা বহুমুখী সেতুর তৃতীয় সংশোধিত প্রকল্পের নদী শাসন কাজের প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যেখানে মোট ব্যয় হবে ৮৭৭ কোটি ৫৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা।
একই বৈঠকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সরবরাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যেখানে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪৩ কোটি টাকার কিছুটা বেশি। সরকার আশা করছে, এতে সময় ক্ষেপণ কমিয়ে দেশে দ্রুত এলএনজি আমদানি করা সম্ভব হবে।
অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে এদিন দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকায় ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ট্যারিফ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আগামী ২০ বছর মেয়াদে যেখানে ব্যয় হবে ৭ হাজার ১৬৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্টদের আশা এর ফলে সরকারের অন্যতম বৃহৎ এ প্রকল্পের আধুনিকায় জোরদার হবে।
সব মিলে অনুমোদন পাওয়া ১৪টি প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াবে ১৬ হাজার ৮৩ কোটি ২১ লক্ষ টাকা। যার মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে ১৪ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা। বাকি ১ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ের জন্য দেশীয় ব্যাংক ও বৈদেশিক অর্থায়নের কথা জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বুধবার মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। এক্সচেঞ্জটির প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ও বাছাইকৃত ৩০ কোম্পানির সমন্বয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক বাড়লেও কমেছে ডিএসই শরিয়াহ সূচক। এ দিন এক্সচেঞ্জটির লেনদেন আগের কার্যদিবসের চেয়ে আরও তলানিতে নেমেছে। ডিএসইতে এ লেনদেন ছিল ১৯ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন। মূলত এ দিন বিক্রেতার চাপ বেশি হওয়ায় লেনদেনে অংশ নেয়া অধিকাংশ শেয়ারের দরপতন হয়েছে।
ডিএসইতে এদিন ৪২২ কোটি ৩০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৫০ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৮৪ দশমিক ৬৩ পয়েন্টে। ডিএস-৩০ সূচক দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৪০ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে। এ ছাড়া ডিএসইএস সূচক দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৫৯ দশমিক ৬০ পয়েন্টে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩০২টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৭০টি এবং কমেছে ৭৮টির। শেয়ারদর পরিবর্তন হয়নি ১৫৪টির। এ দিন লেনদেনে শীর্ষে উঠে এসেছে সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর। কোম্পানিটির ৪২ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। এরপর জেমিনি সি ফুডের শেয়ার লেনদেন বেশি ছিল। এতে শীর্ষের দ্বিতীয়তে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এ দিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে এপেক্স ফুডের ১৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা, খান ব্রাদার্সের ১২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ১২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, সি পার্ল বিচের ১২ কোটি ২৬ লাখ টাকা, ফু-ওয়াং ফুডের ১১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের ১১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা, বিডি কমের ১১ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং এপেক্স ফুডের ১১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে এপেক্সে ফুডসের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ। শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে আরামিট সিমেন্টের ৬ দশমিক ১১ শতাংশ, নিটল ইন্স্যুরেন্সের ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ, বিডি অটোকারের ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ, এপেক্স ফুডের ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ, এপেক্স স্পিনিংয়ের ৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং জিকিউ বলপেনের ৩ দশমিক ১৭ শতাংশের শেয়ারদর বেড়েছে।
কমার শীর্ষে উঠে এসেছে মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। কমার শীর্ষ অবস্থানে থাকা এ দিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের ৫ দশমিক ৪২ শতাংশ, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের ৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ, বিডি কমের ৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ, খুলনা পাওয়ারের ৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ, এমারেল্ড অয়েলের ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২ দশমিক ৩১ শতাংশ, ইয়াকিন পলিমারের ২ দশমিক ২৯ শতাংশ, সিমটেক্সের ২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ এবং বার্জার পেইন্টসের ১ দশমিক ৯১ শতাংশের শেয়ারদর বেড়েছে।
অন্যদিকে, অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল ৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার যেখানে লেনদেন হয়েছিল ১৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার। প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৮০ দশমিক ৫৮ পয়েন্টে। সিএসই৫০ সূচক দশমিক ২৯ পয়েন্ট এবং সিএসই ৩০ সূচক ৭ দশমিক ৭২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩০৬ দশমিক ৪১ পয়েন্টে এবং ১৩ হাজার ৩৫৮ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে।
এ ছাড়া সিএসসিএক্স সূচক ২ দশমিক ২৫ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক দশমিক ৬৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১১ হাজার ১০৮ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৬৭ দশমিক ৭০ পয়েন্টে।
সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৪৭টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৩৩টি এবং কমেছে ৬১টির। শেয়ারদর পরিবর্তন হয়নি ৫৩টির। এ দিন লেনদেনে শীর্ষে উঠে আসা ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর। কোম্পানিটির ৩৯ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। এরপর ব্যাংক এশিয়ার শেয়ার লেনদেন বেশি ছিল। এতে শীর্ষের দ্বিতীয়তে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। কোম্পানিটির ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
অনলাইন জুয়া ও হুন্ডির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২১ হাজার ৭২৫টি মোবাইল হিসাব (মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস-এমএফএস) বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এ সব হিসাবের বেশির ভাগই বিকাশ, নগদ ও রকেটের। ভবিষ্যতে এ ধরনের লেনদেনে জড়িত না হতে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্কও করা হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে।
বিএফআইইউ সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিএফআইইউর পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলতি বছরের ৯ মাসে ৩৭১টি অনলাইন গেমিং ও বেটিং লেনদেন, অনলাইন ফরেক্স ট্রেডিং সম্পর্কিত ৯১টি লেনদেন ও ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কিত ৪১৩টি লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এ সব তথ্য বিশ্লেষণ করে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে পাঠানো হচ্ছে।
এ ছাড়া বিএফআইইউ অবৈধ হুন্ডি, গেমিং, বেটিং ও ক্রিপ্টোসংক্রান্ত ৮১৪টি ওয়েবসাইট, ১৫৯টি অ্যাপ ও ৪৪২টি সোশ্যাল মিডিয়া পেজ ও লিংকের তালিকা আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে পাঠিয়েছে। বিএফআইইউ ২১টি মানি চেঞ্জার এবং তাদের ৩৯টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে পাঠিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মানিলন্ডারিংবিরোধী কমপ্লায়েন্স কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বিএফআইইউ এ সব তথ্য তুলে ধরে। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সভায় বিএফআইইউ-এর প্রধান কর্মকর্তা মো. মাসুদ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সভায় বিএফআইইউ-এর উপপ্রধান কর্মকর্তা এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম, বিএফআইইউ-এর পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম ও মো. আরিফুজ্জামান ও সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান ও উপপ্রধান মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণগ্রহণ করে বা নন-ফান্ডেড সুবিধাকে ফান্ডেড সুবিধায় রূপান্তর ও ফোর্সড লোন সৃষ্টি করে বিদেশে অর্থ পাচারসহ বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচার, অনলাইন ফরেক্স ট্রেডিং, গেমিং, বেটিং, ডিজিটাল হুন্ডি, ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভার্চুয়াল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগসহ বিভিন্ন সমসাময়িক ঝুঁকি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ ছাড়া ওয়েজ আর্নাররা যাতে ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠান সে বিষয়ে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে সচেতনতা বাড়ানোরও তাগিদ দেন।
সভায় বিএফআইইউ-এর প্রধান মাসুদ বিশ্বাস বলেন, দুষ্কৃতকারী ও অর্থ পাচারকারীরা যাতে ব্যাংকিং ব্যবস্থা ব্যবহার করে কোনো অপরাধ সংঘটিত করতে না পারে সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। বিএফআইইউ আর্থিক অপরাধের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যাদের পরিপালন ব্যবস্থায় দুর্বলতা পরিলক্ষিত হবে, তাদের বিষয়েই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ঋণ পরিশোধ করছেন না ব্যাংকের শীর্ষ ঋণখেলাপিরা। বছরের পর বছর এসব খেলাপিদের কাছ থেকে ব্যাংকগুলো টাকা আদায় করতে পারছে না। টাকা আদায় তো দূরে থাক, উল্টো তাদের আবার ঋণ দিতে হচ্ছে। উদ্বেগের খবর হলো, মোট খেলাপি ঋণের ৫১ শতাংশই আটকে রয়েছে শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছে। যার পরিমাণ ৬৬ হাজার ৯৪২ কোটি টাকা। এর মধ্যে তিন মাসে ব্যাংকগুলো আদায় করতে পেরেছে মাত্র ৭৬ কোটি টাকা। তবে এক টাকাও আদায় করতে পারেনি ১২টি বাণিজ্যিক ব্যাংক।
ব্যাংক খাত নিয়ন্ত্রক সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃপক্ষগুলোর অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে ১৪ বাণিজ্যিক ব্যাংকে এসব শীর্ষ খেলাপি সৃষ্টি হয়। ভুক্তভোগী ব্যাংকগুলো এসব খেলাপির কাছ থেকে পুরোনো ঋণ আদায় তো দূরের কথা, উল্টো গত তিন মাসে তাদের অনুকূলে নতুন করে ঋণ দিয়ে আগের খেলাপির মোট অঙ্কটা আরও ১০০ কোটি টাকার বেশি বাড়িয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিন মাসে ব্যাংক খাতে এই শীর্ষ ২০ খেলাপির ঋণের পরিমাণ বেড়েছে মোট ৫ হাজার ৩৭৬ কোটি ১২ লাখ টাকা। যা মোট খেলাপি ঋণের ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এর মধ্যে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতেই আগের প্রান্তিকের তুলনায় মার্চ প্রান্তিকে বেড়েছে ৪ হাজার ৮৭৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বা ১৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ বিষয়ক পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, মার্চ প্রান্তিকে সব সময় খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ে। এই বিবেচনায় আগামী প্রান্তিকে শীর্ষ ২০ খেলাপি গ্রাহকের কাছ থেকে ব্যাংকগুলোর প্রকৃত আদায় পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হবে। সেই সঙ্গে যে ১৪ ব্যাংকের শীর্ষ খেলাপির কাছে ১০০ কোটি টাকার বেশি খেলাপি ঋণ বেড়েছে, তারও কারণ জানতে চাওয়া হবে।
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে শীর্ষ ২০ খেলাপি ঋণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এবি ব্যাংকে। গত তিন মাসে যার পরিমাণ বেড়েছে ১ হাজার ৮০৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এ সময় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর শীর্ষ খেলাপির কাছ থেকে আদায় মাত্র ২৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বা শূন্য দশমিক ০৯ শতাংশ। একই সময়ে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে শীর্ষ ২০ খেলাপি ঋণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে অগ্রণী ব্যাংকে। যার পরিমাণ ৫৫৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, ব্যাংকগুলো জাল-জালিয়াতি বন্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মানছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো প্রতি তিন মাস অন্তর শীর্ষ খেলাপির কাছ থেকে আদায়সহ সার্বিক আর্থিক সূচক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠিয়ে থাকে। ব্যাংকগুলো যে আর্থিক অগ্রগতির সূচক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠায়, তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মিল পাওয়া যায় না। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ঋণ নবায়নসহ নানা ঋণ জালিয়াতির তথ্য বেরিয়ে আসে। ঋণ নবায়ন থেকে শুরু করে খেলাপি ঋণের তথ্য প্রদর্শনসহ নানা ধরনের জালিয়াতির আশ্রয় নেয় এসব ব্যাংক। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের প্রতি খেলাপি ঋণ আদায় বাড়ানোর কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। একই সঙ্গে ঋণ কার্যক্রমে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি বড় ঋণ কমিয়ে ছোট ছোট ঋণ অর্থাৎ এসএমই এবং কৃষি ঋণ বেশি হারে বিতরণ করতে বলা হয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সরকারি ব্যাংকগুলোর একটি এমওইউ আছে। প্রতিবছরই তাদের শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির কাছ থেকে ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু কোনো সময়ই এ লক্ষ্যমাত্রা আদায় করা সম্ভব হয় না। কারণ শীর্ষ ঋণখেলাপিদের বেশির ভাগই প্রভাবশালী। তারা নানা কৌশলে বছরের পর বছর ঋণ পরিশোধ না করে পার পেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো শক্ত পদক্ষেপও নেয়া যায় না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতের ৪৯টি ব্যাংকের আদায় ১০ শতাংশের নিচে। এর মধ্যে ১২টি ব্যাংকের আদায় শূন্য। সার্বিকভাবে ৫৮টি ব্যাংকের মোট লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৪ শতাংশ আদায় হয়েছে।
প্রতিবেদনে ১৪টি ব্যাংকের তালিকা করা হয়েছে। যেখানে গত তিন মাসে শীর্ষ ২০ খেলাপি ঋণ ১০০ কোটি টাকার বেশি বেড়েছে। এসব ব্যাংকের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকে বেড়েছে ৫৫৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আর বেসরকারি এবি ব্যাংকে বেড়েছে ১ হাজার ৮০৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ব্র্যাক ব্যাংকে বেড়েছে ১১৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, ঢাকা ব্যাংকে বেড়েছে ৩৬০ কোটি টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকে ১৪১ কোটি, যমুনা ব্যাংকে ২৬৯ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংকে ৬১৯ কোটি, এনআরবিসি ব্যাংকে ১২৮ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংকে ২১৫ কোটি, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকে ১৫৯ কোটি, ট্রাস্ট ব্যাংকে ৪৬৮ কোটি এবং কৃষি ব্যাংকে ২৭০ কোটি টাকা বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণের সময় কোনোরকম যাচাই-বাছাই না করেই ঋণ বিতরণ করে। ফলে অধিকাংশ ঋণই আদায় করতে পারে না। এখানে রাজনৈতিক চাপও রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক একটা রুটিন ওয়ার্কের মতো প্রতিবছরই এসব ব্যাংককে শীর্ষ ২০ খেলাপি থেকে আদায় না হওয়াসহ বিভিন্ন সূচকের অগ্রগতি বিষয়ে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়। কিন্তু শুধু লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেই হবে না, প্রতিনিয়ত মনিটরিং করতে হবে।
ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, একশ্রেণির প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন; কিন্তু তারা তা পরিশোধ করছেন না। এদের অনেকেই দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী এবং সরকার ঘনিষ্ঠ। তবে প্রভাব বিস্তার করে ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তারা বছরের পর বছর ব্যাংকের খাতায় ঋণখেলাপি। এদের অনেকের ঋণ আবার কুঋণের পর্যায়েও চলে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে; কিন্তু আইনের দীর্ঘসূত্রতায় তা নিষ্পত্তি হচ্ছে না। ঋণ আদায় করতে না পেরে তাদের নতুন ঋণ দেয়ার সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এমনকি প্রভাব বিস্তার করার কারণে সরকারি আদেশে তাদের অনেকের মন্দ ঋণের সুদ মওকুফও করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ব্যাংক এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পথ চলা একে অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। উভয় প্রতিষ্ঠানেরই আর্থিক পণ্য পরিষেবার বিচিত্রতা ও চ্যালেঞ্জ দুটোই রয়েছে। লক্ষণীয় যে তাদের পরিষেবার ধরন এক হলেও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান অনেকটাই ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল। আজকের নিবন্ধে আমরা নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাফল্য অর্জনের ক্ষেত্রে আর্থিক পণ্য সেবায় বিদ্যমান ফারাকগুলো পূরণ করার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করব।
দেশের ৬১টি তফসিলি ব্যাংক এবং ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং দেশজ উন্নয়নে উভয় প্রতিষ্ঠানই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে, কিন্তু লক্ষণীয় যে তাদের পণ্য পরিষেবায় বেশ কিছু বৈসাদৃশ্যতা রয়েছে।
আর্থিক পরিষেবায় পণ্যগুলোর একটি বড় অংশই ব্যাংকগুলো দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। যাতে প্রচলিত সঞ্চয় হিসাব থেকে শুরু করে চলতি হিসাব, আমদানি, রপ্তানি, বাণিজ্যিক অর্থায়নসহ অত্যাধুনিক সব সেবাই অন্তর্ভুক্ত। তারা ডিমান্ড ড্রাফট (ডিডি), টেলিগ্রাফিক ট্রান্সফার (টিটি), পে অর্ডার, এলসি, ব্যাংক গ্যারান্টি, ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট এবং আরও অনেক কিছুর মতো আনুষঙ্গিক পরিষেবাগুলো দিয়ে থাকে। উপরন্তু, তাদের জন্যে স্থানীয় এবং বিদেশি রেমিট্যান্স, কল মানি অপারেশন এবং সরকারি ট্রেজারি পরিষেবাগুলোরও সুযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ সীমাবদ্ধতার কারণে নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে খুবই সীমিত বিকল্প রয়েছে যা ব্যবসায় কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন ও সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়। তাদের ব্যবসা প্রাথমিকভাবে মেয়াদি আমানত এবং বিভিন্ন রকম বাণিজ্যিক অর্থায়নের মতো পণ্যে সীমাবদ্ধ, যেখানে ব্যাংকগুলোও একই পণ্য পরিষেবায় প্রতিযোগিতা করে। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সব সময় তীব্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ব্যবসা করতে হয়। একই প্রতিযোগিতায় যেখানে ব্যাংকের কস্ট অব ফান্ড আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কস্ট অফ ফান্ডের মধ্যে বিশাল ফারাক। এমন বিশাল ফারাক এবং অসম প্রতিযোগিতায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বাণিজ্যিক বাস্তবতায় টিকে থাকা সত্যিই কঠিন। উক্ত সীমাবদ্ধতায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নতুন অনেক সম্ভাবনাময় বাণিজ্যের উদ্ভাবন এবং সম্প্রসারণের সুযোগ থাকলেও তা সম্ভব হয়ে উঠে না।
নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ব্যবসায় সমতা আনয়ন ও পণ্য নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। প্রতিটি সেক্টরের জন্যে আর্থিক পণ্য নির্ধারণে ঝুঁকি কমাতে একটি কৌশলগত বাজার ব্যাবস্থাপনা নীতি প্রনয়ণ করতে পারে, যেখানে একটি সেক্টরের ব্যবসার সঙ্গে অন্য সেক্টরের ব্যবসার ওভারল্যাপিং হবে না এবং সুস্থ প্রতিযোগিতাকে উৎসাহিত করবে।
নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যে আইনি কাঠামোর মধ্যে এমন পরামর্শ থাকবে যাতে তারা প্রচলিত বাজারের বাইরেও অপ্রচলিত বাজারের আর্থিক পণ্য উদ্ভাবনে আগ্রহী হয়। বাজারের চাহিদা রয়েছে কিন্তু ব্যাংক সেসব ব্যবসায় আগ্রহী নয় এমন বাজারে তাদের উৎসাহিত করতে হবে, যেমন প্রান্তিক পর্যায়ে সমবায় কেন্দ্রিক ক্ষুদ্র ব্যাবসায় লগ্নি এবং মহাজনি কারবার, এ ধরনের অনেক অনানুষ্ঠানিক ব্যাংকিং রয়েছে যা অপ্রচলিত বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করে। এমন ব্যাবসাগুলো প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনতে পারলে যেমন গ্রাহক পর্যায়ে সুশাসন নিশ্চিত হবে তেমনি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্যেও একটি নতুন দুয়ার উন্মুক্ত হবে। নীতি প্রণয়নে এমন সব দিকনির্দেশনা থাকলে প্রান্তিক লেভেলে ব্যাংকিং ব্যবসায় যেমন শৃঙ্খলা ফিরে আসবে, তেমনি ভবিষ্যতে সেক্টরাল গ্রোথকেও আরও ত্বরান্বিত করবে এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য পৃথক আর্থিক পণ্য নির্ধারণ জরুরি, তাই নীতি সহায়তার মাধ্যমে প্রতিটি সেক্টরের মধ্যে বিশেষীকরণ স্পষ্ট করাসহ তাদের নতুন বাজার উদ্ভাবনে আগ্রহী করতে পারে এমন পরিকল্পনা নেয়া আবশ্যক। যেখানে ব্যাংকগুলো তাদের জন্যে নির্ধারিত পণ্যে মূল ব্যাবসাগুলো পরিচালনা করবে আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের জন্যে নির্ধারিত পণ্যে ব্যবসা পরিচালনা করবে। উভয় প্রতিষ্ঠানের এই দ্বৈত আর্থিক বাজার প্রক্রিয়াকে একটি গতিশীল বিভাজিত বাজার প্রক্রিয়ায় রূপান্তরিত করতে পারলে, ভোক্তা পর্যায়ে যেমন পণ্য পছন্দের ক্ষেত্রে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পণ্য নির্ধারণ সহজ হবে তেমনি উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি হবে।
বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু কিছু ক্ষেত্রে নীতি সহজীকরণের মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যে একটি বিশেষ ফান্ড তৈরি করতে পারে। উক্ত ফান্ড স্বল্প সুদে বা সুদবিহিন আপৎকালীন ফান্ড সহায়তা হিসাবে তাদের সক্ষমতা বিবেচনায় প্রদান করাসহ ব্যাংকের জন্যে প্রচলিত কল মানি মার্কেটের সুবিধা উন্মুক্ত করা যেতে পারে। ফান্ড দেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই রেটিং বিবেচনায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যাতে ফান্ডের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। তা ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রেফারেন্সিয়াল ফান্ডসহ বিভিন্ন ফান্ড থেকে কম সুদে ঋণ সুবিধা পাবার সুযোগ দেয়া যেতে পারে। এমন উদ্যোগ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিকাশে নতুন প্রাণ খুঁজে পাবে বলে আমার বিশ্বাস।
বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অনুমতির জন্য প্রায় ৫০ টিরও বেশি আবেদন ইতোমধ্যে জমা পড়েছে। উদীয়মান এই খাতটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আরেকটি সম্ভাব্য হুমকি হয়ে সামনে আসবে। কারণ তাদের এই ডিজিটাল ব্যাংকগুলোর সঙ্গে ব্যাংকিং ব্যবসার বিভিন্ন পণ্যের গ্রাহক পর্যায়ে একই উৎসে প্রতিযোগিতায় লড়তে হবে যা এই মার্কেটের স্থিতিশীলতাকে আরও প্রভাবিত করবে।
কঠিন তারল্য সংকট আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পথ চলাকে দারুণভাবে ব্যাহত করছে। যেখানে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল ফান্ডিং সোর্স ধরা হয় ব্যাংক এবং ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন ফান্ড, সেখানে তাদের কাছ থেকে এখন ফান্ড পাওয়া দুষ্কর, বরং যাদের ফান্ড ছিল তারাও ফান্ড সরিয়ে নিচ্ছেন। কিছু কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের রেপুটেশন সংকটের কারণে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকেই গ্রাহক পর্যায়ে ফান্ড সরিয়ে নেয়ার চাপ অব্যাহত রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অনেক প্রতিষ্ঠান গ্রাহক পর্যায়ে তাদের আমানত ফেরত দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন এবং তাতে দিন দিন এ খাতের সংকট আরও তীব্র হচ্ছে। এমতাবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নমনীয় নীতি সহায়তার মাধ্যমে তারল্য সরবরাহ না পেলে এ খাতের অস্তিত্ব কঠিন হুমকির সম্মুখীন হবে।
সংকট থেকে উত্তরণের সম্ভাব্য কিছু উপায়
আর্থিক খাতের ওপর গ্রাহক পর্যায়ে বিশ্বাসের যে ঘাটতি তা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং অংশীজনদের স্ব স্ব জায়গা থেকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। উভয় প্রতিষ্ঠান থেকে সমস্যা চিহ্নিতকরণসহ সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনার মাধ্যমে অচিরেই এর সমাধান নিশ্চিতকল্পে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন করার মাধ্যমে গ্রাহকপর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তারল্যসংকট মোকাবিলা ও স্থিতিশীলতার জন্যে সংবিধিবদ্ধ লিকুইডিটি রিজার্ভ (এসএলআর) থেকে আপৎকালীন সহায়তা ও কল মানি বাজার ব্যবস্থার মতো উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বিমা শিল্পগুলোর মধ্যে একটি প্রাতিষ্ঠানিক আন্ত অর্থ বাজার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তারল্য প্রবাহ তৈরি করা। তা ছাড়াও এ খাতের জন্যে বিশেষ ফান্ড তৈরির মাধমে দ্রুত স্বল্প-মেয়াদি তারল্য সহায়তার ব্যবস্থা করা যা স্বল্প-সুদে বা নো-কস্ট সার্টিফিকেট এবং বিলের মাধ্যমে হতে পারে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মূল চালিকাশক্তি রিকভারি, ঠিক সময়ে বিনিয়োগকৃত টাকা রিকভারি না হলে এর সব চাকা বন্ধ হয়ে যায়। কঠিন নীতি প্রণয়ন এবং প্রয়োগের মাধ্যমে ঋণখেলাপিদের কাছে আটকে যাওয়া হাজার হাজার কোটি টাকা পুনরুদ্ধারকল্পে রেগুলেটরি পর্যায়ে আইনি পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনামূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ আবশ্যক।
অংশীজনের সঙ্গে রেগুলেটরি পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে আইনি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে এ খাতে বিদেশি ইনভেস্টমেন্ট সহজীকরণ এবং রেমিট্যান্স সংগ্রহে এ খাতকে অন্তর্ভুক্ত করা। এ খাতের স্থিতিশীলতা এবং প্রসারে অবিলম্বে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক পণ্যগুলো আলাদা করে নির্দিষ্টকরণ এবং যথাযথ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা। দীর্ঘ মেয়াদি তহবিল দীর্ঘ মেয়াদি অর্থায়নের জন্য ব্যবহার করা এবং স্বল্পমেয়াদি তহবিল স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের জন্য ব্যবহার করা।
বাংলাদেশে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নের জন্যে প্রয়োজন সম্মিলিত পদক্ষেপ, উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা এবং দূরদর্শী নেতৃত্ব। বিদ্যমান সমস্যার মধ্যেও এ খাতকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিশ্রুতি ও অনবদ্য সহায়তা অবশ্যই প্রশংসনীয়, যা একটি বৈচিত্র্যময়, স্থিতিস্থাপক এবং গতিশীল আর্থিক খাতকে লালন করে। স্টেকহোল্ডার এবং বাংলাদেশ ব্যাংক যদি একসঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এ খাতের উন্নয়নে আর্থিক পণ্যের বিশেষীকরণ, তারল্য প্রবাহ সহজীকরণ, অপ্রচলিত বাজারের ঘাটতি পূরণে নতুন নতুন সুযোগের উদ্ভাবনসহ আটকে পড়া হাজার হাজার কোটি টাকা পুনরুদ্ধারে একটি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেন এবং ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর মধ্যে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যক্রম পরিচালনার পরিবেশ তৈরি করতে পারেন, তাহলে এ খাতের বিকাশে পথ চলা আরও সহজ হবে এবং ভারসাম্যপূর্ণ একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি হবে যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
লেখক: চেয়ারম্যান ইসলামিক ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (আইএফআইএল) ও ট্রেজারার, বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি
সৌদি আরবের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রথমবারের মতো এক ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। দেশটির ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফেডারেশন অব সৌদি চেম্বারস (এফএসসি) জানিয়েছে, সৌদি আরব ৪ দশমিক ১৫ ট্রিলিয়ন রিয়াল (১ দশমিক ১১ ট্রিলিয়ন ডলার) জিডিপি অর্জন করেছে। এতে দেশটির ২০২৫ সালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। খবর আরব নিউজের।
সৌদি প্রেস এজেন্সি এফএসসি সমীক্ষার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সৌদি আরব ২০২২ সালে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা জি-২০ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২২ সালে সৌদির অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতের অবদান বেড়ে হয়েছে ১ দশমিক ৬৩ ট্রিলিয়ন রিয়াল বা জিডিপির ৪১ শতাংশ, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেলের বাইরে বেসরকারি খাতকে শক্তিশালী করা সৌদি আরবের ভিশন-২০৩০-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা। কারণ দেশটি তাদের অর্থনীতিতে তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে চায়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২২ সালে বেসরকারি বিনিয়োগ হয়েছে ৯০৭.৫ বিলিয়ন রিয়াল, যার প্রবৃদ্ধির হার ৩২ দশমিক ৬ শতাংশ। এ ছাড়া বেসরকারি কর্মীর সংখ্যা ২০২১ সালের ৮ দশমিক ০৮ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ২০২২ সালে ৯ দশমিক ৪২ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে।
বেসরকারি খাতে কর্মরত সৌদি নাগরিকের সংখ্যা ২০২১ সালের ১৯ লাখ ১০ হাজার থেকে বেড়ে ২০২২ সালে ২১ লাখ ৯০ হাজার হয়েছে।
খুঁটিনাটি অনেক ব্যয় হচ্ছে, যার হিসাব অনেকেই রাখেন না। কিন্তু বছর শেষে সেই সব এটা-সেটা হিসাবের পরিমাণও দাঁড়ায় অনেক। আয়করদাতাদের সেই সব খুচরা হিসাবও এবার খুঁজছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর একটি হচ্ছে মুঠোফোনে ব্যয়ের খরচ। প্রতি অর্থবছর (জুলাই থেকে জুন) কত অর্থ একজন গ্রাহক রিচার্জ করে ব্যয় করছেন, এখন থেকে সেই হিসাবও করদাতাকে দিতে হবে আয়কর রিটার্নে। একইভাবে ইন্টারনেট প্যাকেজের পেছনে কত অর্থ খরচ করছেন জানাতে হবে। এ সব তথ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসারে চলতি বছরের আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় উল্লেখ করতে হবে।
এতদিন মুঠোফোনে একজন করদাতা কত টাকা রিচার্জে ব্যয় করতেন, তার কোনো হিসাব থাকত না। সেই হিসাব আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু এনবিআর মনে করছে, মুঠোফোনের সেই ব্যয়ে থাকাটা জরুরি। এ জন্য চলতি অর্থবছরে যুক্ত হয়েছে মুঠোফোনে রিচার্জ ব্যয়ের বিষয়টি। আবার ইন্টারনেট প্যাকেজের পেছনে একজন করদাতা কত অর্থ ব্যয় করছেন, সেই তথ্যও দিতে হবে আয়কর রিটার্নে।
এ ছাড়া দেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্ত অনেক পরিবার দেশে-বিদেশে ঘুরতে যায়। সেখানে অনেক টাকা খরচ করলেও এর হিসাব আগে আয়কর রিটার্নের নথিতে উল্লেখ করার সুযোগ কিংবা প্রয়োজন ছিল না। তবে নতুন ফরমে বিদেশ ভ্রমণের খরচের হিসাবও দিতে হবে আয়করদাতাদের।
নতুন আয়কর আইনানুযায়ী, আয়কর রিটার্ন জমার সময় জীবনযাত্রার ব্যয়ের বিবরণী দাখিলের এ সব তথ্য দিতে হবে। এ ছাড়া গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ বিলের তথ্য দিতে হবে এবার। আইটি ১১গ (২০২৩) ফরমে জীবনযাত্রার ব্যয় সম্পর্কিত বিষয়াবলি দিতে হয়। অবশ্য বার্ষিক পাঁচ লাখ টাকার বেশি আয় এবং ৪০ লাখ টাকার বেশি সম্পদ থাকলেই কেবল সম্পদের বিবরণীসহ জীবনযাত্রার হিসাব জমা দিতে হবে। এই সীমা অতিক্রম না করলেও চাইলে যেকোনো করদাতা তার জীবনযাত্রার বিবরণী জমা দিতে পারেন।
এ বিষয়ে আয়কর আইনজীবী ইমরান গাজী বলেন, মোবাইল রিচার্জের হিসাব রাখাটা জটিল বিষয়। ইন্টারনেট প্যাকেজের বেলায়ও একই অবস্থা। এতে করদাতার হয়রানিতে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে যেহেতু নতুন আইনে এ সব বিষয় যুক্ত করা হয়েছে, তাই করদাতাকে মানতে হবে।
একই বিষয়ে কর আইনজীবী মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, একজন করদাতার পক্ষে সারা বছরের মুঠোফোনে কত টাকা রিচার্জ করলেন, তার হিসাব রাখা কঠিন। সাধারণত একসঙ্গে বেশি অর্থ রিচার্জ করেন না মুঠোফোন ব্যবহারকারীরা। নতুন এই আইনের ফলে অনেক করদাতা ঝামেলায় পড়বে।
জীবনযাত্রার ব্যয়ের বিবরণীর মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দেখতে চায় আপনি টাকা আয় করেন, কত ব্যয় করেন। আপনার আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের মিল রয়েছে কি না। আয়ের থেকে যদি ব্যয় বেশি হয়, তাহলে কোথা থেকে সেই অর্থ জোগাচ্ছেন। সেই অর্থ বৈধ কি না, সেই সব খুঁটিনাটি বিষয় দেখতে চান এনবিআর। এ ছাড়া করদাতাদের সন্তানরা কী ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ছে তাও জানতে চায় এনবিআর।
শিক্ষায় খরচের মাধ্যমে কর কর্মকর্তারা বুঝতে চান, আপনার আয়ের সঙ্গে সন্তানের শিক্ষা খরচের সামঞ্জস্য আছে কি না। একইভাবে গাড়ি, বাড়ি বা ফ্ল্যাটের খবরও জানতে চায় এনবিআর। রাজস্ব কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় এ সব তথ্য জানা গেছে।
নতুন আইনানুযায়ী, জীবনযাত্রার বিবরণীতে ৯ ধরনের তথ্য দিতে হবে। এগুলো হলো- ব্যক্তিগত ও পরিবারের ভরণপোষণ খরচ, আবাসনসংক্রান্ত ব্যয়, ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যয়, ইউটিলিটি সংক্রান্ত ব্যয় (গ্যাস বিদ্যুৎ ও পানির, টেলিফোন, মোবাইল, ইন্টারনেট ইত্যাদি), শিক্ষা ব্যয়, নিজ খরচে দেশ ও বিদেশ ভ্রমণ ও অবকাশসংক্রান্ত তথ্য, উৎসব ও অন্যান্য বিশেষ ব্যয়, উৎসে কর্তিত/সংগৃহীত কর (সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর কর্তিত করসহ) ও বিগত বছরে রিটার্নের ভিত্তিতে প্রদত্ত আয়কর ও সারচার্জ, প্রাতিষ্ঠানিক ও অন্যান্য উৎস থেকে গৃহীত ব্যক্তিগত ঋণের সুদ পরিশোধের তথ্য।
নতুন নিয়মে, নিট সম্পদের পরিমাণ ৪ কোটি টাকা থেকে ১০ কোটি টাকার মধ্যে হলে ব্যক্তি করদাতাকে আয়করের ১০ শতাংশ সারচার্জ দিতে হবে। আবার নিজ নামে একাধিক গাড়ি বা ৮ হাজার বর্গফুটের বেশি আয়তনের গৃহ-সম্পত্তি থাকলে ১০ শতাংশ সারচার্জ দিতে হবে। এ ছাড়া নিট সম্পদের পরিমাণ ১০ কোটি টাকা থেকে ২০ কোটি টাকার মধ্যে হলে প্রদত্ত করের ২০ শতাংশ, সম্পদের পরিমাণ ২০ কোটি টাকা থেকে ৫০ কোটি টাকার মধ্যে করের ৩০ শতাংশ এবং ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদ থাকলে করের ৩৫ শতাংশ সারচার্জ দিতে হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতিতে দেশের পোশাক রপ্তানিতে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন তৈরি পোশাক মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতি বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
একই সঙ্গে আকু পেমেন্টে কয়েকটি ব্যাংকে স্যাংশন দেয়া নিয়ে তিনি বলেন, যেকোনো স্যাংশনই শঙ্কিত হওয়ার। এরপরও ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবেন, আকু পেমেন্ট অন্য কোনোভাবে করা যাবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিজিএমইএ সভাপতি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সিনিয়র সহসভাপতি এস এম মান্নান কচি, সহসভাপতি শহিদুল্লা আজিম, সাবেক সভাপতি সালাম মুর্শেদী, সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনসহ উদ্যোক্তারা।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি যে কারোর ওপর হতে পারে। আবার আমি গত ৩০ বছর ধরে ৫ বছর করে ভিসা পাই। এরপরও আমি যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর আমাকে বলতে পারে তোমার ভিসা বাতিল করা হলো। এভাবেও কারও ভিসা বাতিল করা হয়।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের কারও ভিসা বাতিল হলেও ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবেন। আমরা করোনার সময় কোনো দেশে যেতে পারিনি। এরপরও আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়নি। সে ক্ষেত্রে বলা যায়, ভিসা বাতিল হলেও বিকল্পভাবে ব্যবসা চালিয়ে নেয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
আকু পেমেন্টে কিছু ব্যাংকের ওপর স্যাংশন বিষয়ে তিনি বলেন, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন বা আকু হচ্ছে একটি আন্তঃআঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তিকারী সংস্থা। এর পেমেন্টে কয়েকটি ব্যাংকের ওপর স্যাংশন হয়েছে, তবে সেটা অন্য কোনোভাবে পেমেন্ট করা যাবে। সেভাবেই সরকার কাজ করবে।
চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আহরণ হয়েছে ৪৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের (২০২২-২৩) একই সময়ের (জুলাই-আগস্ট) চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব আহরণ ছিল ৪০ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা।
এনবিআরের প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এনবিআরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বঙ্গবন্ধু টানেল, মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রসহ কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কারণে ভ্যাট আহরণ বেড়েছে। তাছাড়া এলটিইউ কোম্পানিগুলো থেকে ভ্যাট আদায় বেড়েছে।
দুই মাসে স্থানীয়পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) থেকে রাজস্ব আহরণ ১৭ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আহরণ বেড়েছে ১৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
আমদানি-রপ্তানিপর্যায়ে রাজস্ব আহরণ ১৬ হাজার ১৯২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১৬ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে দুই মাসে রাজস্ব আহরণ ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি হয় ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
সুশাসন নিশ্চিত করতে করপোরেট গভর্ন্যান্সের আওতায় আসছে দেশের বিমা খাত। বিমা কোম্পানিগুলোর পরিচালনায় প্রযোজ্য আইন ও প্রবিধানের পরিপালন এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে করপোরেট গভর্ন্যান্স নির্দেশিকা প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে গতকাল সোমবার অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইতোমধ্যে করপোরেট গভর্ন্যান্স নির্দেশিকার খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে, যা গত ১৯ সেপ্টেম্বর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে জনসাধারণ ও বিমা খাতসংশ্লিষ্টদের মতামত চায় আইডিআরএ। মতামত প্রদানের জন্য রোববার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে বেশকিছু বিমা কোম্পানি লিখিত মতামত জানিয়েছে।
এ বিষয়ে আইডিআরএর মুখপাত্র জাহাঙ্গীর আলম দৈনিক বাংলাকে বলেন, খসড়া প্রকাশ করে জনসাধারণ ও অংশীজনের মতামত চাওয়া হয়েছিল। কিছু বিমা কোম্পানি মতামতও দিয়েছে। তাদের মতামত বিবেচনায় নিয়ে আলোচনাসাপেক্ষে নির্দেশিকা চূড়ান্ত করা হবে।
করপোরেট গভর্ন্যান্সের মূল নীতি হলো জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা, দায়িত্ববোধ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা। তবে দেশের বিমা খাত ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার নড়বড়ে অবস্থার পরিবর্তন ছাড়া এ করপোরেট গভর্ন্যান্স নীতিমালা কোনো কাজে আসবে না বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক মাইন উদ্দীন।
তিনি বলেন, করপোরেট গভর্ন্যান্স নীতিমালা বাস্তবায়ন করবে আইডিআরএ। নিয়ন্ত্রক সংস্থা শক্তিশালী বা তাদের অভিপ্রায় ভালো না হলে শুধু নীতিমালা কোনো কাজে আসবে না।
তিনি আরও বলেন, করপোরেট গভর্ন্যান্স নিশ্চিত করা যায় যেসব কোম্পানি ভালো চলছে সেগুলোর ওপর। যেগুলো লোকসান ও অনিয়মের মধ্যে রয়েছে সেগুলোতে সম্ভব নয়। অনেক বেশি স্বাস্থ্যহীন বিমা কোম্পানি রয়েছে দেশে। এগুলোকে একীভূতকরণের মাধ্যমে বিমা কোম্পানির সংখ্যা একটা র্যাশনাল নম্বরে এনে যদি স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা করানোর চেষ্টা করা যায় তাহলে কাজে আসবে করপোরেট গভর্ন্যান্স নীতিমালা।
খসড়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দুই নিরপেক্ষ পরিচালকসহ একটি বিমা কোম্পানির বোর্ডে পরিচালকের সর্বোচ্চ সংখ্যা হবে ২০। এ ছাড়া পরিচালক নিয়োগ ও পুনঃনিয়োগের জন্য একটি সুস্পষ্ট পদ্ধতি থাকবে।
আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত বা বাংলাদেশে বা অন্য কোথাও কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ খেলাপি বলে প্রমাণিত ব্যক্তি বিমা কোম্পানির পরিচালক হতে পারবেন না। এ ছাড়া ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত, জালিয়াতি, আর্থিক অপরাধ বা অন্য কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিও পরিচালক হতে পারবেন না।
পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারপারসন কোম্পানির নন-এক্সিকিউটিভ পরিচালকদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবেন। চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে, অবশিষ্ট সদস্যরা নন-এক্সিকিউটিভ পরিচালকদের মধ্যে একজনকে চেয়ারপারসন হিসেবে নির্বাচন করতে পারেন। নির্দিষ্ট বোর্ড মিটিংয়ে চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতির কারণ অবশ্যই সঠিকভাবে নথিভুক্ত করতে হবে।
প্রত্যেক পরিচালককে তাদের নিয়োগের ১৫ দিনের মধ্যে নিজের ও পরিবারের যে কোনো বিমা কোম্পানিতে থাকা শেয়ারের বিশদ বিবরণ আইডিআরএর কাছে জমা দিতে হবে। তিনি বা পরিবারের কেউ অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে পরিচালক বা সিনিয়র এক্সিকিউটিভ পদে অধিষ্ঠিত হলে বিস্তারিত জানাতে হবে।
দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য অর্জন, কার্যকর ও দক্ষ ব্যবস্থাপনার নির্দেশনা এবং তত্ত্বাবধান করা পরিচালনা পর্ষদের প্রাথমিক দায়িত্ব। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য পরিচালনা পর্ষদ প্রয়োজনীয় নীতিমালা এবং করপোরেট গভর্ন্যান্স ফ্রেমওয়ার্ক বা মেকানিজম তৈরি করবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, পরিচালনা পর্ষদ মনোনয়ন ও পারিশ্রমিক কমিটির সুপারিশক্রমে বোর্ডের চেয়ারম্যান, বোর্ডের সদস্য এবং কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সব কর্মকর্তা বা কর্মচারীর জন্য একটি আচরণবিধি প্রণয়ন করবেন। পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে একটি বিনিয়োগ উপকমিটি থাকবে, যা বিমা গ্রাহক, শেয়ারহোল্ডার এবং স্টেকহোল্ডারদের স্বার্থে কোম্পানির সামগ্রিক বিনিয়োগ তদারকি করবে।
পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে একটি উপকমিটি বোর্ড কর্তৃক প্রণীত কৌশল এবং কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে উদ্ভূত এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।