শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
১৫ কার্তিক ১৪৩২

সিএনজি স্টেশন আরও ২ ঘণ্টা বন্ধ রাখতে চায় পেট্রোবাংলা

গ্যাস-সংকটের কারণে সিএনজি স্টেশনগুলোতে রেশনিং করার বিষয় বিবেচনা করছে সরকার। ছবি: সংগৃহীত
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১২ অক্টোবর, ২০২২ ২১:০৯

বর্তমানে ৫ ঘণ্টা বন্ধ থাকলেও সিএনজি স্টেশনগুলোকে ৭ ঘণ্টা বন্ধ রাখতে চায় পেট্রোবাংলা। গ্যাস-সংকটের কারণে সিএনজি স্টেশনগুলোতে এই রেশনিং করার বিষয়টি বিবেচনা করছে সরকার। গত ১ মার্চ থেকে সিএনজি স্টেশনগুলো সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ৫ ঘণ্টা বন্ধ থাকে সিএনজি স্টেশনগুলো। এর আগে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা গ্যাস বিক্রি বন্ধ ছিল।

সিএনজি স্টেশন আরও ২ ঘণ্টা বেশি বন্ধ রাখতে সিএনজি স্টেশন মালিকদের সঙ্গে গত মঙ্গলবার বৈঠক করে পেট্রোবাংলা। তবে সিএনজি স্টেশন মালিকরা পেট্রোবাংলার এই প্রস্তাব মেনে নেননি।

সিএনজি মালিকরা বলেছেন, রেশনিংয়ের কারণে ৫ ঘণ্টা গ্যাস বিক্রি করা যায় না। এর মধ্যে লোডশেডিংয়ের কারণেও গ্যাস বিক্রি বন্ধ থাকে। সব মিলিয়ে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অনেক স্টেশনে সিএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকে। নতুন করে আরও ২ ঘণ্টা সিএনজি স্টেশন বন্ধ থাকলে সব মিলিয়ে গ্রাহক গ্যাস পাবে না ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা। এতে সাধারণ মানুষ হয়রানিতে পড়বেন।

সিএনজি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি ফারহান নূর দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘গত মঙ্গলবার বৈঠকে পেট্রোবাংলা গ্যাস সংকটের কথা জানিয়ে আরও ২ ঘণ্টা সিএনজি স্টেশন বন্ধ রাখার কথা বলেছে। আমরা রাজি হয়নি।’

ফারহান নূর বলেন, বর্তমানে সিএনজি স্টেশনগুলো মোট সরবরাহ করা গ্যাসের মাত্র ৩ শতাংশ ব্যবহার করে সর্বোচ্চ দাম দেয়। এই অল্প গ্যাসে রেশনিং বাড়িয়ে খুব বেশি লাভ হবে না। বরং গাড়িতে তেল ব্যবহারের পরিমাণ বাড়বে যা দেশের পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।

পেট্রোবাংলার একজন কর্মকর্তা দৈনিক বাংলাকে বলেন, সিএনজি স্টেশন মালিকদের ডাকা হয়েছিল বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে সরকারের অবস্থান জানাতে। তিনি বলেন, ‘তাদের বুঝতে হবে সরকার বাধ্য হয়েই রেশনিংয়ে যাচ্ছে। তাতে হয়তো ব্যবসায় তারতম্য হবে, তবে রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত সবার মঙ্গলের জন্য।’

আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট মার্কেটে গ্যাসের দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার পর গ্যাস আমদানি না করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনে। তবে রপ্তানির কথা মাথায় রেখে শিল্পে সরবরাহ বাড়িয়েছে। অন্যদিকে জ্বালানির অভাবে গ্যাসচালিত কেন্দ্রগুলোর অনেকগুলো বসিয়ে রাখতে হচ্ছে। এর প্রভাবে দেশে বিদ্যুতের লোডশেডিং বেড়েছে প্রকটভাবে।

দেশে বর্তমান গ্যাসের চাহিদা ৪২০ কোটি ঘনফুট। পেট্রোবাংলা সরবরাহ করছে ২৬৭ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে এলএনজি থেকে আসছে ৩৮ কোটি ঘনফুট, যার পুরোটাই কাতার থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কেনা হয়।

দেশে সিএনজি স্টেশনের সংখ্যা প্রায় ৫০০। প্রতি ইউনিট বিক্রি করা হয় ৪৩ টাকায়।


৩ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা শুরু

আপডেটেড ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ ২২:৪৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী ১৩তম বিমান বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার (বিটিটিএফ) ২০২৫ শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক দূত লুৎফে সিদ্দিকী। এই মেলা চলবে আগামী শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) আয়োজিত এই তিন দিনব্যাপী বৃহৎ আন্তর্জাতিক মেলার টাইটেল স্পন্সর হিসেবে থাকছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন টোয়াবের ট্যুর অ্যান্ড ফেয়ার বিভাগের পরিচালক মো. তাসলিম আমিন শুভ।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ড. মো. শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাইনুল হাসান, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সিইও নুজহাত ইয়াসমিন এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়মা শাহিন সুলতানা। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন টোয়াবের প্রেসিডেন্ট মো. রাফিউজ্জামান।

এবারের মেলায় পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটানের জাতীয় পর্যটন সংস্থা ও ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন ছাড়াও নেপাল, মালদ্বীপ, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন, শ্রীলঙ্কা ও তুরস্কের ট্যুর অপারেটর ও ট্রাভেল এজেন্টরা অংশগ্রহণ করছে। এবারের মেলা আগের তুলনায় অনেক বেশি আকর্ষণীয় ও জাঁকজমকপূর্ণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মেলায় ৪টি হলে ২০টি প্যাভিলিয়নসহ মোট ২২০টি স্টল থাকবে।

মেলায় আন্তর্জাতিক ও দেশি এয়ারলাইন্স, ট্যুরিজম বোর্ড, ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর অপারেটর, হোটেল, রিসোর্ট, ক্রুজ লাইনার এবং হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রদর্শক হিসেবে অংশ নেবে। মেলার সাইড লাইন ইভেন্টে বিটুবি সেশন, সেমিনার ও কান্ট্রি প্রেজেন্টেশন ছাড়াও প্রতিদিন সাংস্কৃতিক আয়োজন রয়েছে।


বিজিএমইএ-এনপিও সমঝোতা স্মারক সই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে উৎপাদনশীলতা, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এনপিও কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বিজিএমইএ পরিচালক জোয়ারদার মোহাম্মদ হোসনে কমার আলম এবং এনপিও সভাপতি মো. নুরুল আলম।

সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, পোশাক শিল্পকে ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ যুগের উপযোগী করে তুলতে যৌথভাবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, সেমিনার ও পরামর্শ সেবা পরিচালনা করবে বিজিএমইএ ও এনপিও। পাশাপাশি, উৎপাদনশীলতা ও অপারেশনাল উৎকর্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৫ এস, কাইজেন এবং লিয়েন ম্যানুফ্যাকচারিং -এর মতো আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

চুক্তির অংশ হিসেবে, প্রতি বছর তিনটি তৈরি পোশাক কারখানাকে ‘মডেল এন্টারপ্রাইজ’ হিসেবে বাছাই করা হবে এবং এনপিওর কারিগরি সহায়তায় এসব কারখানায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া, উভয় সংস্থা এশিয়ান প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশনের (এপিও) সহায়তায় গবেষণা ও সক্ষমতা উন্নয়নমূলক উদ্যোগেও একসাথে কাজ করবে।

স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ প্রতিনিধি বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যের পরিবর্তন, প্রযুক্তিগত রূপান্তর এবং সাপ্লাই চেইনের নতুন বাস্তবতায় ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।

শুধু কম খরচের ওপর নির্ভর না করে, এখন প্রয়োজন গুণগত মান, দক্ষতা, গতি ও উদ্ভাবনের সমন্বয়।

বিজিএমইএ পরিচালক জোয়ারদার মোহাম্মদ হোসনে কমার আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং-এর পথে এগিয়ে নিতে আমাদের উৎপাদন ব্যবস্থায় ডিজিটাল প্রযুক্তি, আইওটি ও ইনোভেশন সংযুক্ত করা জরুরি।’

বিজিএমইএ ও এনপিওর এই অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে টেকসই, আধুনিক ও প্রতিযোগিতামূলক শিল্পে রূপান্তরের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


রিজার্ভ পুনরুদ্ধার অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ও আস্থার পুনর্জাগরণের ইঙ্গিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনরুদ্ধার ও রেমিট্যান্স প্রবাহে অভূতপূর্ব বৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ও আস্থার পুনর্জাগরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে। সাম্প্রতিক এই ধারাবাহিক অগ্রগতি বৈদেশিক লেনদেনে ভারসাম্যের ওপর চাপ হ্রাস এবং বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতির কার্যকারিতার প্রতিফলন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ (বুধবার প্রকাশিত) তথ্য অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম৬) পদ্ধতিতে হিসাব করলে এই রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার।

মোট রিজার্ভের ভিত্তিতে এই পরিমাণ প্রায় সাড়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় কভার করতে সক্ষম, আর আইএমএফ পদ্ধতিতে হিসাব করলে তা প্রায় পাঁচ মাসের সমান। যদিও আদর্শ রিজার্ভ হওয়া উচিত অন্তত ছয় মাসের আমদানি ব্যয় কভার করা, তবুও বর্তমান পরিস্থিতি মোটের ওপর স্বস্তিদায়ক বলে বিবেচিত হচ্ছে।

রেমিট্যান্স প্রবাহে রেকর্ড সৃষ্টি

অর্থনৈতিক স্বস্তি এনে দেওয়া এই পরিবর্তনের মূল কারণ হলো রেমিট্যান্স প্রবাহে অভূতপূর্ব বৃদ্ধি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই এই প্রবাহে উল্লম্ফন লক্ষ্য করা যায়। বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মাঝেও এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সহনশীলতার জন্য এক ‘আশার আলো’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

২০২৪–২৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে, যা ২০২০–২১ অর্থবছরের আগের রেকর্ড ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার থেকে অনেক বেশি।

এই ধারা চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরেও অব্যাহত রয়েছে। অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই–সেপ্টেম্বর) রেমিট্যান্স এসেছে ৭ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি।

রেমিট্যান্সে স্থিতিশীলতা আনছে অর্থনীতি

অর্থনীতিবিদ, বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ী মহল মনে করছেন, এই অসাধারণ রেমিট্যান্স প্রবাহ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে। এতে শুধু বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভই শক্তিশালী হয়নি, বরং টাকার বিনিময় হারও স্থিতিশীল হয়েছে, ফলে জাতীয় মুদ্রার ওপর চাপ কমেছে।

আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের উপপরিচালক থমাস হেলব্লিং সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ বৃদ্ধিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “দেশের লেনদেন ভারসাম্যের ওপর চাপ বজায় থাকায় রিজার্ভের সঞ্চয়কে আইএমএফ-সমর্থিত কর্মসূচির একটি কেন্দ্রীয় লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।”

অর্থনীতিবিদদের বিশ্লেষণ

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জায়েদী সাত্তার বলেন, “বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার হয়েছে, যদিও তা সামান্য। লেনদেন ভারসাম্য ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মতো সূচকগুলো এখন তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক অবস্থানে রয়েছে।”

খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেনও একমত পোষণ করে বলেন, “রেমিট্যান্স প্রবাহের বৃদ্ধি রিজার্ভ পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ডলার সংকটের সময় ব্যাংকগুলোর এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল, তা এখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।”

নীতি ও বাজার স্থিতিশীলতার প্রভাব

ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, রেমিট্যান্সের আনুষ্ঠানিক পথে প্রবাহ বৃদ্ধির পেছনে সরকারের প্রণোদনা নীতি এবং বাজারের স্থিতিশীলতা উভয়ই ভূমিকা রেখেছে। প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহারে উৎসাহিত করতে সরকার বর্তমানে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ২ দশমিক ৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দিচ্ছে।

এছাড়া, স্থিতিশীল বিনিময় হার অবৈধ অর্থপ্রেরণ পদ্ধতি (যেমন হুন্ডি) নিরুৎসাহিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে ব্যাংক ও খোলা বাজারের বিনিময় হারের পার্থক্য খুবই সামান্য— ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রতি ডলারে ১২২ টাকা ৫০ পয়সা, আর খোলা বাজারে প্রায় ১২৩ টাকা।

ডাচ-বাংলা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মোহাম্মদ শহিদ উল্লাহ বলেন, “রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর হুন্ডি ও হাওলা চ্যানেলের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর ফলে এসব অবৈধ পদ্ধতির ব্যবহার কমেছে। ফলে আরও বেশি রেমিট্যান্স এখন আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে আসছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “রেমিট্যান্স প্রবাহের ইতিবাচক প্রভাব এখন সারাদেশে দৃশ্যমান, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়, যেখানে প্রবাসী আয়ের ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলো স্বস্তি পাচ্ছে।”

প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসির ডিএমডি আব্দুল কায়উম চৌধুরী বলেন, “২০২৪ সালের আগস্ট থেকে রেমিট্যান্স ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত হ্রাসের পর অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য তাৎক্ষণিক স্বস্তি এনে দিয়েছে। এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে থাকা একটি দেশের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ অর্থনৈতিক স্বস্তি হিসেবে কাজ করছে।”


বাংলাদেশ ব্যাংকের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সঞ্চয়পত্রের টাকা আত্মসাৎ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের এনএসসি সিস্টেম জালিয়াতি করে অর্থ তুলে নিয়েছে একটি চক্র। অন্যের সঞ্চয়পত্র মেয়াদপূর্তির আগেই ভাঙিয়ে ওই চক্র নিজ ব্যাংক হিসাবে টাকা স্থানান্তর করেছে। সব মিলিয়ে ২৫ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। এভাবে আরও প্রায় ৫০ লাখ টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে তা আটকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় থেকে কেনা সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে এই জালিয়াতি ধরা পড়েছে। মতিঝিল কার্যালয়ের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেই এই সঞ্চয়পত্র জালিয়াতি হয় বলে জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, যাদের হিসাবে অর্থ গেছে এবং যারা জালিয়াতিতে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে মামলা করা হবে। সঞ্চয়পত্রের সিস্টেম যারা পরিচালনা করেন, তাদের কারও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে এই জালিয়াতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে। এ নিয়ে মতিঝিল থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো গ্রাহক সঞ্চয়পত্র কেনার সময় যে ব্যাংক হিসাবের তথ্য দেবেন, সেই হিসাবেই সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ও আসল টাকা দেওয়া হয়। এছাড়া যে অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র কেনা হয়, কোনো তথ্য পরিবর্তন, সুদ বা আসল নেওয়ার জন্য অবশ্যই সেই অফিসে আবেদন করতে হয়। আবেদন পাওয়ার পর গ্রাহকের দেওয়া মোবাইল নম্বরে একটি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) যায়। উপস্থিত গ্রাহক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মীকে তৎক্ষণাৎ সেই ওটিপি দেখানোর পর তা ব্যবহার করে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে তথ্য পরিবর্তন করা হয়। তবে সব ক্ষেত্রে সার্ভারে ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট বা প্রমাণ থাকে।

তবে দেড় বছর ধরে অনেক ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে ব্যর্থ হচ্ছেন গ্রাহকরা। এসব ব্যাংকে প্রবাসী আয় বা সঞ্চয়পত্রের টাকা এলেও গ্রাহকরা উত্তোলন করতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক পরিবর্তনের আবেদন করছেন অনেকে। গ্রাহকের সমস্যা বিবেচনায় প্রতিষ্ঠানগুলোর দিক থেকে ব্যাংক পরিবর্তন করে দেওয়া হচ্ছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়েই কেউ জালিয়াতির ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় থেকে গত বৃহস্পতিবার ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কেনেন এক ব্যক্তি। তার ব্যাংক হিসাবটি আছে অগ্রণী ব্যাংকের জাতীয় প্রেসক্লাব শাখায়। চার দিনের মাথায় গত সোমবার এই সঞ্চয়পত্র ভাঙানো হয় এবং টাকা নেওয়া হয় এনআরবিসি ব্যাংকের দিনাজপুর উপশাখার অন্য এক ব্যক্তির হিসাবে। ওই টাকা জমা হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যে ব্যাংকটির রাজধানীর শ্যামলী শাখা থেকে তুলে নেওয়া হয়।

একই প্রক্রিয়ায় একই দিনে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৩০ লাখ ও এনআরবি ব্যাংকের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ভাঙিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে এলে তা আটকে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক তিনটি ঘটনায় সঞ্চয়পত্র ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেছে। গ্রাহকেরা জানিয়েছেন, তারা সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর জন্য আবেদন করেননি। ফলে তাদের মোবাইল ফোনে কোনো ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ডও (ওটিপি) যায়নি। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের যে তিন কর্মকর্তার কাছে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পাসওয়ার্ড ছিল, তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নতুন করে অন্য তিনজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেই এই জালিয়াতি করা হয়েছে। ফলে যাদের কাছে পাসওয়ার্ড ছিল, তারা নজরদারিতে আছেন। এছাড়া বাইরের আরও কারও সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গত আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকসহ অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকদের ৩ লাখ ৪০ হাজার ৭১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র আছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকারি-বেসরকারি সব বাণিজ্যিক ব্যাংক, সঞ্চয় অধিদপ্তর ও পোস্ট অফিস মিলে প্রায় ১২ হাজার শাখা থেকে এসব সঞ্চয়পত্র কেনা ও ভাঙানো হয়।

এনআরবিসি ব্যাংকের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তৌহিদুল আলম খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ ঘটনার পর আমরা ডিএমডির নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। সেই কমিটি কাজ শুরু করেছে। এরপরই বিস্তারিত জানা যাবে।’


আমাজনের পার্সেল কমায় ৪৮ হাজার কর্মী ছাঁটাই ইউপিএসের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের শিপিং জায়ান্ট ইউনাইটেড পার্সেল সার্ভিস (ইউপিএস) ঘোষণা করেছে, তারা কমপক্ষে ৪৮ হাজার কর্মী ছাঁটাই করছে। এটি কোম্পানির বড় পুনর্গঠন পরিকল্পনার অংশ এবং আমাজনের পার্সেল ডেলিভারি কমানোর সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্পর্কিত।

ইউপিএসের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ব্রায়ান ডাইকস জানান, কোম্পানির ড্রাইভার কর্মীর সংখ্যা গত এক বছরে প্রায় ৩৪ হাজার কমানো হয়েছে। যার এক-তৃতীয়াংশই গত সেপ্টেম্বরে পদত্যাগ করেন। সেসময় ‘স্বেচ্ছা অবসর কর্মসূচি’র আওতায় এটি করা হয়।

ইউপিএস আরও জানায়, তারা পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে আরও ১৪ হাজার পদ বাতিল করেছে। এর লক্ষ্য ‘আরও কার্যকর অপারেটিং মডেল’ তৈরি, যা বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে দ্রুত খাপ খাওয়াতে পারবে।

২০২৪ সালের শেষে বিশ্বব্যাপী ইউপিএসের মোট কর্মী ছিল ৪ লাখ ৯০ হাজার।

গত জানুয়ারিতে কোম্পানিটি জানায়, তারা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নাগাদ আমাজনের পার্সেল পরিবহন অর্ধেকের বেশি কমিয়ে আনবে।

ইউপিএসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যারল টোমে বলেছেন, এ পদক্ষেপ কোম্পানির অলাভজনক কার্যক্রম ধীরে ধীরে বন্ধ করতে সাহায্য করবে।

তিনি আরও জানান, আমাজনের চুক্তি কমার কারণে ইউপিএস যুক্তরাষ্ট্রে আরও ১৯টি ভবনের কার্যক্রম বন্ধ করেছে। এ নিয়ে এ বছরই মোট ৯৩টি ভবন বন্ধ করা হলো।

তবে, ৩৫টি স্থাপনায় নতুন স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি (অটোমেশন) চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউপিএস কর্মকর্তারা।

কোম্পানিটি চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ১ দশমিক ৩ লাখ বিলিয়ন ডলার লাভ করেছে। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ কম। রাজস্বও ৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমে ২১ দশমিক ৪শ’ কোটি বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

তবে এ ঘোষণা পর ইউপিএসের শেয়ারমূল্য ৮ শতাংশ বেড়েছে।


সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা আধুনিকায়নে ৪,২০০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব

সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে এডিবি প্রতিনিধিদলের প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন
আপডেটেড ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ২২:৪৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের রেলওয়ে খাতে এক যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার আধুনিকায়ন ও উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) একটি প্রতিনিধিদল গত মঙ্গলবার কারখানার বিভিন্ন কার্যক্রম ও অবকাঠামো পরিদর্শন করেন।

প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সরকারের অতিরিক্ত সচিব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)-এর এডিবি উইং চিফ এস এম জাকারিয়া হক এবং এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হুই ইউন জিওং।

কারখানা পরিদর্শনে এসে প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ, কর্মব্যবস্থাপক (ডাব্লিউএম) মমতাজুল হকসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্রতিনিধিদলে আরও উপস্থিত ছিলেন এডিবির প্রিন্সিপাল ফিনান্সিয়াল সেক্টর অফিসার মারুফ হোসাইন, সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার (আরবান) অমিত দত্ত রায়, অ্যাসোসিয়েট ওয়াটার রিসোর্স অফিসার সোহেল রানা, অ্যাসোসিয়েট প্রজেক্ট অফিসার (এনার্জি) মশিউর রহমান, সিনিয়র অপারেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট নাশিয়াত আল সাফওয়ানা চৌধুরী এবং অপারেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট দিপা হেমব্রোম।

পরিদর্শনকালে দলটি কারখানার বগি ও ওয়াগন শপ, ক্যারেজ কনস্ট্রাকশন শপসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঘুরে দেখেন। পরে বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশ নেন তারা।

সভায় ডিএস শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ ও ডাব্লিউএম মমতাজুল হক কারখানার সার্বিক কর্মকাণ্ড, চ্যালেঞ্জ, উন্নয়ন সম্ভাবনা এবং প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন।

ডিএস শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ বলেন, কারখানার দুটি উপকারখানা সম্প্রসারণ, আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন এবং উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। এডিবি প্রতিনিধিদল সেই প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে এসেছে। তারা আমাদের প্রস্তাবনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা ও অবকাঠামোতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। স্থানীয়ভাবে রেল কোচ, বগি ও ওয়াগন উৎপাদনে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন রেলওয়ে ওয়ার্কশপ। বর্তমানে কারখানাটি পুরোনো যন্ত্রপাতি দিয়ে রেল কোচ ও বগির রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। আধুনিকায়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ রেল ইঞ্জিনিয়ারিং হাবে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


সিঙ্গাপুরে সাপ্লাই চেইন ফিন্যান্স সম্মেলনে অংশ নিয়েছে আইসিসিবি প্রতিনিধিদল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ (আইসিসিবি) সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত আইসিসি একাডেমি সাপ্লাই চেইন ফিন্যান্স সামিট ২০২৫-এ অংশগ্রহণের জন্য আটটি ব্যাংকের ২৯ জন ব্যাংকার এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম)-এর দুজন প্রতিনিধিকে পাঠায়। সম্মেলনটি গত ২২ থেকে ২৩ অক্টোবর সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আইসিসি বাংলাদেশ ছিল আইসিসি একাডেমির অংশীদার হিসেবে এই সম্মেলন আয়োজনের সহযোগী। আইসিসি বাংলাদেশের মহাসচিব আতাউর রহমান প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি)-এর মহাসচিব জন ডেন্টন সম্মেলনটির উদ্বোধন করেন। এতে বাণিজ্য, অর্থনীতি, নীতি, প্রযুক্তি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষেত্রের বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৫০ জনেরও বেশি শীর্ষ ব্যক্তিত্ব অংশগ্রহণ করেন।

সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল- ‘আস্থা পুনর্গঠন, উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করা: বিভক্ত বিশ্বে সাপ্লাই চেইন ফিন্যান্সের ভবিষ্যৎ।’

দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, ডিজিটাল পরিবর্তন এবং স্থায়িত্ব ও স্বচ্ছতার বাড়তি চাহিদার প্রেক্ষাপটে করণীয় সম্পর্কে কার্যকর দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।

বিভিন্ন অধিবেশনের আলোচকরা নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন-আস্থা পুনর্গঠন: জটিল সাপ্লাই চেইনে আস্থা ফিরিয়ে আনা ও সুশাসন নিশ্চিত করার উপায়; অস্থির বাজারে তারল্য: কঠোর ঋণনীতির প্রেক্ষাপটে তারল্যের পরিবর্তনশীল চিত্র ও টেকসই অর্থায়নের উপায়; নতুন অর্থায়ন কাঠামো: বৈশ্বিক ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি মূল্যায়নের পরিবর্তন, বিকল্প ঋণদাতাদের ভূমিকা এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দ্রুত ও নমনীয় কর্মমূলধন সরবরাহের সম্ভাবনা; প্রযুক্তিগত রূপান্তর: ব্লকচেইন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও ডিজিটাল ডকুমেন্টেশনসহ উদ্ভাবনগুলো কীভাবে দক্ষতা ও নতুন ঝুঁকি মডেল তৈরি করছে; সবুজ অর্থায়ন ও উদ্ভাবনের সমন্বয়।

সম্মেলনের শেষ অধিবেশনে ভবিষ্যতের বাণিজ্য অর্থায়ন পেশাজীবীদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও ক্যারিয়ার বিকাশের দিক নিয়ে আলোচনা হয়।

এছাড়া ডিসেন্ট্রালাইজড ফিন্যান্স (ডিফাই) প্রচলিত আর্থিক ব্যবস্থার জন্য হুমকি নাকি সুযোগ- সে বিষয়েও বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলন শেষে আইসিসি একাডেমি আধুনিক সাপ্লাই চেইনের জটিলতা মোকাবিলায় বৈশ্বিক মান নির্ধারণ এবং বাণিজ্য পেশাজীবীদের জন্য বিশ্বমানের জ্ঞান ও সম্পদ প্রদানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।


বিএসইসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে আইসিএসবির প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ

আপডেটেড ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ২১:৪০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সঙ্গে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশের (আইসিএসবি) নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হোসেন সাদাত সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনের সভা কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় দেশের পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিতকরণ ও আধুনিক ব্যবস্থাপনা কাঠামো গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়। দেশের পুঁজিবাজারের সুশাসন বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা ও তাদের আস্থা বৃদ্ধির বিষয়টিও সভায় আলোচিত হয়। এ ক্ষেত্রে আইসিএসবির কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার বিষয়টি সভায় গুরুত্বারোপ করা হয়।

সৌজন্য সাক্ষাতে বিএসইসির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখ, নির্বাহী পরিচালক মো. আনোয়ারুল ইসলাম ও পরিচালক মো. মনসুর রহমান।

আইসিএসবির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট হোসেন সাদাত, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. রফিকুল ইসলাম, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শরীফ হাসান এবং সেক্রেটারি ইনচার্জ ও সিনিয়র নির্বাহী পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) মো. শামিবুর রহমান।


দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন, ভরিতে কমলো ১০ হাজারেরও বেশি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশের বাজারে বড় অংকে কমেছে স্বর্ণের দাম। এক লাফে প্রতি ভরিতে ভালো মানের স্বর্ণের (২২ ক্যারেট) দাম কমেছে ১০ হাজার ৪৭৪ টাকা। এখন থেকে দেশের বাজারে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ বিক্রি হবে এক লাখ ৯৩ হাজার ৮০৯ টাকায়।

মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের দাম কমার এ তথ্য জানায়। আগামীকাল বুধবার থেকে সারা দেশে স্বর্ণের নতুন এ দর কার্যকর হবে।

এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী (পিওর গোল্ড) স্বর্ণের মূল্য কমেছে। যে কারণে স্বর্ণের দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাজুস।

নতুন মূল্য অনুযায়ী, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম কমে এক লাখ ৮৫ হাজার ৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৫৮ হাজার ৫৭২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৩১ হাজার ৬২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অপরিবর্তিত আছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের রুপার ভরি ৪ হাজার ২৪৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি ৪ হাজার ৪৭ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি তিন হাজার ৪৭৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৬০১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।


সহজে বহনযোগ্য বিশুদ্ধ মধু – ‘হ্যানি স্যাচেট’ বাজারে আনলো ‘কৃষি’

আপডেটেড ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:০২

বাংলাদেশের উদীয়মান নিরাপদ খাদ্য উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ‘কৃষি’ মধু খাওয়ার চিরাচরিত ধারণায় নতুন মাত্রা যোগ করল। সম্প্রতি একটি আকর্ষণীয় আয়োজনের মাধ্যমে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দিল ‘হ্যানি স্যাচেট’—একটি অভিনব মধু প্যাকেজিং যা মধু উপভোগকে করবে আরও সহজ ও ঝামেলামুক্ত।

অনুষ্ঠানে ‘কৃষি’ তাদের মিশন ও দীর্ঘ যাত্রার গল্প তুলে ধরে। কয়েক বছর ধরে তারা দেশের গ্রামীণ মানুষ, কৃষক ও মাটিকে শহরবাসীর নিকট পৌঁছে দিতে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য উৎপাদন করে আসছে। তাদের লক্ষ্য—শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, একজন মানুষ যেন প্রতিটি মুহূর্তে গ্রামবাংলার নিরাপদ কৃষি পণ্যের স্বাদ উপভোগ করতে পারে। এজন্য তারা গ্রামীণ উপকরণ দিয়ে পুষ্টিকর খাবার তৈরি করছে, যা আধুনিক মানুষের প্রয়োজন ও সুবিধার কথা মাথায় রেখে সাজানো।

এই উদ্ভাবনী যাত্রায় নতুন সংযোজন ‘হ্যানি স্যাচেট’। বোতল বা জটিল প্যাকেজিংয়ের প্রয়োজন নেই—ছোট্ট এই স্যাচেট সহজে ব্যাগে বা টিফিনবক্সে রাখা যায়, যা যে কোনো সময়ে নিরাপদ মধু খাওয়ার সুযোগ করে দেয়। নতুন এই প্রোডাক্টের ফলে মধু হবে দৈনন্দিন খাদ্যের অংশ, সব বয়সের মানুষের জন্য উপকারী ও স্বাস্থ্যকর।

আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইসমাইল, অতীশ দিপংকর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মিহির লাল সাহা, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এমডি. কাইয়ুম হোসেনসহ দেশসেরা কয়েকজন অধ্যাপক, ডাক্তার ও পুষ্টিবিদ। তাঁরা হ্যানি স্যাচেটের সম্ভাবনা ও এর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশের মধু বিশেষজ্ঞ হিসেবে আরোও উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ মোহাম্মদ মইনুল আনোয়ার। তার বক্তব্যে তিনি বলেন আমাদের সকলের নিয়মিত মধু খেতে হবে। কিন্তু সেটা যেন ভেজাল না হয়। তিনি আরোও উল্লেখ করেন ভেজাল মধু পরিক্ষার জন্য সমাজে প্রচলিত আগুন পরীক্ষা, পানি পরীক্ষা কিংবা পিপড়া পরীক্ষা বিজ্ঞানসম্মত নয়, সম্পূর্ণ ভুয়া।

ইভেন্টের সমাপ্তি ঘোষণা করতে গিয়েই কৃষি জানিয়েছে—‘হ্যানি স্যাচেট’ শুধু একটি পণ্য নয়, এটি আমাদের খাওয়ার অভ্যাসে এক নতুন জীবনধারা নিয়ে আসবে। এই নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে কৃষি তার মিশন অব্যাহত রেখেছে—সবার জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য পৌঁছে দেওয়া। প্রোডাক্ট ও মিশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্রেতাদের কৃষি'র ওয়েবসাইটে ভিজিট করার আহ্বান জানানো হয়।


কুটির ও ক্ষুদ্র উদ্যোগ বিকাশে পিকেএসএফ-এর বিশেষ উদ্যোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে কুটির ও ক্ষুদ্র উদ্যোগ বিকাশে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে পিকেএসএফ।
মঙ্গলবার পিকেএসএফ-এর পরিচালনা পর্ষদের ২৬২তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পিকেএসএফএফ-এর চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সংস্থার পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ড. সহিদ আকতার হোসাইন, নূরুন নাহার, ফারজানা চৌধুরী, ড. মো. তৌফিকুল ইসলাম, লীলা রশিদ এবং পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের।
সভায় জানানো হয়, দেশের মোট কর্মসংস্থানের উল্লেখযোগ্য অংশ কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্পে হলেও জাতীয় অর্থনীতিতে এর অবদান কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছেনি। এ পরিপ্রেক্ষিতে, ব্যাপক সম্ভাবনাময় এ খাতের প্রসারে চলতি অর্থবছরে পিকেএসএফ মোট ৪ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এ অর্থের সঙ্গে নিজস্ব তহবিল ও অন্যান্য উৎস থেকে প্রাপ্ত তহবিল যোগ করে সহযোগী সংস্থাগুলো প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।


বৈশ্বিক নতুন অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ আবশ্যক

ডিসিসিআইয়ের গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা
ডিসিসিআই মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে স্মার্ট মানবসম্পদ উন্নয়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, পরিবর্তনশীল তথ্যপ্রযুক্তির বর্তমান সময়ের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ক্রমশ পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে। যা মোকাবিলায় বাংলাদেশকে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে অধিক হারে মনোনিবেশ করা জরুরি।

এছাড়া দেশের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন, কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণ, বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান, সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যকার সমন্বয় সাধনের পাশাপাশি শিক্ষা ও শিল্প খাতের সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর সভায় গুরুত্বারোপ করা হয়।

সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে স্মার্ট মানবসম্পদ উন্নয়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

গোলটেবিল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী।

ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী বলেন, প্রশিক্ষণ প্রদানে নিয়োজিত সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা রয়েছে। সেই সঙ্গে মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নে সকল স্তরের সচেতনতার অভাবের বিষয়টিও পরিলক্ষিত হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এনএসডিএ নিজের আইনগত কাঠামো, ভৌত ও প্রশাসনিক অবকাঠামোর ওপর নজর দিলেও বর্তমানে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে প্রশিক্ষণের ওপর বেশি মনোযোগী হয়েছে।

নির্বাহী চেয়ারম্যান জানান, জাপানে ১ লাখ দক্ষ বাংলাদেশি প্রেরণের লক্ষ্যে সরকারি ও শিক্ষা খাতের সহায়তায় জাপানি ভাষা শেখানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বিশেষ করে নারীদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ প্রদানের ওপর তিনি জোরারোপ করেন। তিনি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নের বিষয়টি সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বয় বাড়ানোর প্রস্তাব করেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব কেবল প্রযুক্তিগত পরিবর্তন নয় বরং উৎপাদন ব্যবস্থা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং শ্রমবাজারে গভীর ও মৌলিক রূপান্তর এনেছে, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আমাদের শিল্প ও সেবা খাতে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।

তিনি জানান, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের তথ্য মতে আগামী পাঁচ বছরে বর্তমান চাকরির বাজার প্রায় এক-চতুর্থাংশ বদলে যাবে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৭ কোটি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হলেও একই সময়ে ৯ কোটি ২০ লাখ মানুষ চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।

ডিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, এলডিসি পরবর্তী সময়ের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে স্মার্ট মানবসম্পদই হবে বাংলাদেশের একমাত্র হাতিয়ার। তবে তাদের প্রযুক্তিনির্ভর নতুন যুগের কর্মসংস্থানে নিজেদের উপযুক্ত করে তুলতে হবে। বিদ্যমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন, কারিগরি শিক্ষার ওপর অধিক হারে গুরুত্বারোপ এবং শিক্ষা ও শিল্প খাতের সমন্বয় বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন ডিসিসিআই সভাপতি।

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে যুক্তরাজ্যের রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ভিজিটিং অধ্যাপক ড. এম নিয়াজ আসাদুল্লাহ বলেন, এটুআই ও ইউএনডিপির ২০১৯ সালের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, খাদ্য ও কৃষি, ফার্নিচার, পর্যটন ও হসপিটালিটি খাতে প্রায় ৫৩ লাখ ৮ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থায় দেশের কর্মরত মানবসম্পদকে প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়নের ওপর অধিক হারে গুরুত্বারোপ করতে হবে।

তিনি সামগ্রিক শিক্ষা কার্যক্রমের যুগোপযোগীকরণের পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। এছাড়া দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিতের ওপর জোরারোপ করেন নিয়াজ আসাদুল্লাহ।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের যুগ্ম সচিব (আইসিটি ডিভিশন) মোহাম্মদ সাইফুল হাসান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামস রহমান, দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবির) সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, ট্রান্সকম গ্রুপের করপোরেট মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান এম সাব্বির আলী, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকোর রিজিওনাল সিনিয়র ম্যানেজার খান মোহাম্মদ শফিকুল আলম, বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাসরুর আলী এবং ব্রেইন স্টেশন ২৩-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাইসুল কবীর অংশগ্রহণ করেন।

হাইটেক পার্কগুলোতে একক ও যৌথ বিনিয়োগের জন্য দেশীয় ও বিদেশি উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান মোহাম্মদ সাইফুল হাসান।

অধ্যাপক ড. শামস রহমান বলেন, শিল্প খাতের চাহিদার নিরিখে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে পারছে না। তাই দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে শিক্ষা-শিল্প খাতের সমন্বিত কার্যক্রম জরুরি।

আইসিএমএবি সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের মাত্র ২০ শতাংশ তাদের দক্ষতা অনুযায়ী চাকরি পেয়ে থাকে এবং প্রায় ২ মিলিয়ন শিক্ষার্থী বেকার রয়েছে। এ অবস্থা মোকাবিলায় কারিগরিশিক্ষার ওপর জোরারোপ ও সমাজের সকল স্তরের মানসিকতা পরিবর্তনের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

তথ্যপ্রযুক্তি ও অটোমেশনের ফলে কী ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে, সে বিষয়ে উদ্যোক্তাদের আরও সচেতনতা বাড়ানো, সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যকার সমন্বয় বৃদ্ধি এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম নজরদারির জন্য একটি আলাদা জাতীয় কাউন্সিল স্থাপনের প্রস্তাব করেন এম সাব্বির আলী।

খান মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেন, দক্ষতা উন্নয়নে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধি এবং শিক্ষা কারিকুলামের যুগোপযোগীকরণে প্রয়োজনীয় সংস্কার জরুরি।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাসরুর আলী বলেন, গ্রাম ও শহরের বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষামানে বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। ফলে আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক স্তর থেকেই বৈষম্যের শিকার হচ্ছে, তাই শিক্ষার সকল স্তরে মান নিশ্চিত করা জরুরি।

রাইসুল কবীর বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুত ও মানসম্মত কাজের চাহিদা বাড়ছে। এর কারণে কর্মসংস্থান সংকুচিত হওয়ার সম্ভাবনা কম, তবে ভবিষ্যতের চাহিদার নিরিক্ষে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ খাতের মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নে মনোযোগী হতে হবে।

মুক্ত আলোচনায় ডিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি এম আবু হোরায়রাহ বিদেশে দক্ষ মানবসম্পদ প্রেরণের ওপর জোরারোপ করেন। যার মাধ্যমে আরও বেশি হারে রেমিট্যান্স আহরণ সম্ভব, সেই সঙ্গে কারিগরিশিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণের ওপর তিনি জোরারোপ করেন।

এছাড়া ডিসিসিআই পরিচালক মোহাম্মদ জমশের আলী, স্ট্যান্ডিং কমিটির আহ্বায়ক মীর শাহরুক ইসলাম প্রমুখ মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।


বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালে অস্থায়ী গুদাম বানাবে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালে ‘রাব হল’ বা অস্থায়ী গুদাম স্থাপনে যৌথ উদ্যোগ নিয়েছে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ।

তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন- বিজিএমইএ সোমবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্যোগের কথা জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের রপ্তানি কার্যক্রম নির্বিঘ্ন ও সচল রাখার স্বার্থে ‘জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা এ গুদাম প্রস্তুত করবে।

বিজিএমইএ বলেছে, গত ১৮ অক্টোবর বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডে আমদানি শেডটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে পোশাক শিল্পের আমদানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যৌথ উদ্যোগের অংশ হিসেবে, তৃতীয় টার্মিনালে (যা বর্তমানে পণ্য সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত নয়) দ্রুত সময়ের মধ্যে অস্থায়ী সমাধান হিসেবে ‘রাব হল’ স্থাপন করা হবে।

ইতোমধ্যে বিজিএমইএ এই ‘রাব হল’ স্থাপনের জন্য একটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দিয়েছে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে এর বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

গত ২০ অক্টোবর বিজিএমইএ ও নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) নেতারা বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।

সেই বৈঠকে কার্গো ভিলেজের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং আমদানি পণ্যের সুরক্ষায় অস্থায়ী গুদাম করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিজিএমইএ বলেছে, এই যৌথ উদ্যোগ আমদানি পণ্যের সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রেখে দেশের সামগ্রিক রপ্তানি বাণিজ্য সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দেবে।

গত ১৮ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে লাগা আগুন ওইদিন রাত ৯টায় নিয়ন্ত্রণে আসার পর বিমান চলাচল শুরু হয়। তবে পুরোপুরি নেভাতে লেগে যায় ২৭ ঘণ্টা।

ওই অগ্নিকাণ্ডে ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোশিয়েশন অব বাংলাদেশ-ইএবি।

আগুনের ঘটনার পর শাহজালালে পণ্য আমদানি প্রক্রিয়া বিঘ্ন ঘটছে এবং পণ্যের খালাসে বেশি সময় লাগছে। সেই জটিলতা নিরসনের জন্যই অস্থায়ী এ গুদামের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।


banner close