সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
১১ কার্তিক ১৪৩২

চার বছরে ভারতে ইলিশ রপ্তানি ৫৫৪১ টন

ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১১ অক্টোবর, ২০২৩ ২০:২৮

চার বছরে ভারতে ৫ হাজার ৫৪১ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করা হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ওই পরিমাণ ইলিশ রপ্তানি হয় বলে জানিয়েছেন মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বুধবার প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৩’ বাস্তবায়ন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘ইলিশ এখন এ দেশের জাতীয় সম্পদই নয়, তা কূটনীতির অংশেও পরিণত হয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে দুর্গাপূজায় সীমিত পরিসরে ইলিশ রপ্তানি হয়ে থাকে, যা প্রতিবেশী দেশের কাছে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে এবং দুই দেশের বাণিজ্যিকসহ কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।’

শ ম রেজাউল করিম বলেন, চার বছরে ৫ হাজার ৫৪১ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে, যা মোট ইলিশ উৎপাদনের মাত্র দশমিক ৫ ভাগেরও কম, যা থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৩৯ হাজার কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির জন্য অনুমোদন দিয়েছে, এর মধ্যে গত ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ৬০৯ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে, যা থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৬২ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৬৮ কোটি ২০ লাখ টাকা)।

শ ম রেজাউল বলেন, সর্বশেষ ২০২২ সালে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের আওতায় ২ হাজার ৬২টি মোবাইল কোর্ট, ১০ হাজার ৮২১টি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ৩১.৪১ মেট্রিক টন ইলিশ, ৯১৯.৮৫ লাখ মিটার নিষিদ্ধ জাল জব্দ এবং ২ হাজার ৯০৮টি মামলা দায়েরের মাধ্যমে ২ হাজার ১০৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও ৪৭.৩২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এ ছাড়া জব্দকৃত মালামাল নিলামে বিক্রয় করে ২২ লাখ ১১ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফলভাবে বাস্তবায়নের হওয়ায় গত বছর ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকরণের ২২ দিনে প্রায় ৫২ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়তে সক্ষম হয়েছে। ফলে গত বছর প্রায় ৪ লাখ ৫ হাজার ৫১৫ কেজি ডিম উৎপাদিত হয়েছে, যা থেকে প্রায় ৪০ হাজার ২৭৬ কোটি জাটকা ইলিশ যুক্ত হয়েছে।

ইলিশ উৎপাদনে কোনো ঘাটতি নেই, তারপরও ইলিশের দাম এত বেশি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইলিশ উৎপাদনে আলাদা কোনো ব্যয় নেই। কিন্তু ইলিশ আহরণ ও সংরক্ষণ করার জন্য ব্যয়ের পরিমাণটা কম না। সরকার কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিচ্ছে, যারা ইলিশ আহরণে আমাদের সহায়তা করেন তাদের ভিজিএফ থেকে সাহায্য করা হচ্ছে। যারা ইলিশ আহরণ করেন তাদের নৌযান ব্যবহার করতে হয়, জাল ব্যবহার করতে হয়, শ্রমিক নিয়োগ করতে হয়। মাছ আহরণের পর তারা যেখানে মজুত করে অবতরণকেন্দ্রে মাছ নিয়ে আসার পর সেখান থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়া করে বরফ দেয়া থেকে শুরু করে কয়েক দফা স্থান পরিবর্তন হওয়ায় যারা মুনাফা লাভ করেন তারা বিভিন্ন স্তরে স্তরে লাভবান হন।

রেজাউল করিম বলেন, ‘আমার মনে হয়, তারা অধিক লাভবান হওয়ার কারণে ইলিশের দাম যে সহনীয় থাকা উচিত, তার চেয়ে বেশি দেখা যায়।’

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে বাজার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যারা জড়িত, প্রতিযোগিতা কমিশন, ভোক্তা অধিকারের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত আছেন আমরা বিভিন্ন সময় তাদের তাগিদও দিয়েছি। ইতোমধ্যে তারা কিছু কাজও করছেন।’

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আরও বেশি তৎপরতার সঙ্গে বাজার ব্যবস্থাপনাকে একেবারে মাছ আহরণের কেন্দ্র থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত আরও কঠোর নজরদারি ও দেখভাল করা হলে আমার বিশ্বাস ইলিশের দামকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভব।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রণালয়ের কাজ যারা মৎস্য আহরণ করে, তারা আহরণ বন্ধ থাকাকালীন তাদের খাবারের ব্যবস্থা আমরা করে দিই। যারা নৌকা নিয়ে মাছ ধরেন অনেক সময় তাদের নৌকা সরবরাহ করা হয়। অনেক সময় তাদের জাল সরবরাহ করছি। অনেক সময় বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য আমরা গরু, ভেড়া, ছাগল, মুরগি, হাঁস দিচ্ছি। যাতে ওই সময় তাদের বিকল্প কর্মসংস্থান হয়। আমরা গবেষণা করে ইলিশের অভয়াশ্রম কীভাবে করা যায় সেটি করছি। বাজার ব্যবস্থাপানাটা কোনোভাবেই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জব ডিস্ক্রিপশনের মধ্যে আসে না। আমরা উৎপাদন ও আহরণের সঙ্গে জড়িতদের সহায়তা করা, ভর্তুকি দেয়ার বিষয়ে কার্পণ্য করি না।’

তিনি বলেন, চলতি বছর বিগত বছরের চেয়ে ইলিশের আকারও বৃদ্ধি পেয়েছে, ইলিশের প্রাচুর্যতায় জেলেদের মুখে হাসি ফুটেছে। জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষার চলমান কার্যক্রমসমূহ এভাবেই বাস্তবায়ন করা হলে সারা বছর ইলিশের প্রাপ্যতা নিশ্চিত হবে। এ কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নে সরকারি প্রচেষ্টার পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং আপামর জনগণ বিশেষ করে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের আন্তরিক সহযোগিতা অপরিহার্য।

বিষয়:

দুদকের রিমান্ডে আরামিট পিএলসির ৩ কর্মকর্তা

আপডেটেড ২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ২২:১২
নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় আরামিট পিএলসির তিন কর্মকর্তা- মো. আব্দুল আজিজ, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও উৎপল পালকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

রোববার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম।

তিনি জানান, ঢাকা-১ এর উপসহকারী পরিচালক মো. সজীব আহমেদের তদন্তাধীন মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গতকাল রোববার কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে রিমান্ড কার্যকরের জন্য দুদক প্রধান কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার দুদক আসামিদের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত তাদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

দুদক জানায়, আসামি মো. আব্দুল আজিজ, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও উৎপল পাল সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার এবং সেখানে সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবস্থাপনায় সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তারা সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে যোগসাজশে নিজেদের নামে নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠান খুলে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসিসহ একাধিক ব্যাংক থেকে ভুয়া ঋণ গ্রহণ করে শত শত কোটি টাকা আত্মসাতে সহায়তা করেন।

দুদক আরও জানায়, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ঋণের নামে আত্মসাতকৃত বিপুল অর্থ বিদেশে পাচারের বিস্তারিত তথ্য এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।


পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও নগর অঞ্চল উন্নয়নে ৩০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের শহর ও নগরের সুযোগ-সুবিধা উন্নয়নের চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ২০২৭ সালে বাংলাদেশে ক্লাস্টার টাউন পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন এবং নগর অঞ্চল উন্নয়নের দুটি পৃথক প্রকল্পে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়নের পরিকল্পনা করেছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) এক কর্মকর্তা বাসসকে জানান, ম্যানিলা-ভিত্তিক এই ঋণদাতা সংস্থাটির ২০২৭ সালে ক্লাস্টার টাউনস ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যানিটেশন প্রকল্পের জন্য ১৫০ মিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন পাইপলাইনে রয়েছে।

উপকূলীয় ২২টি শহরে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই)।

প্রকল্পটির প্রধান লক্ষ্য হলো: পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, স্যানিটেশন এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর নজর দেওয়া। বর্তমানে উপকূলীয় ২২টি শহরের পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন অবকাঠামো নিয়ে একটি সমীক্ষা চলছে।

তিনি আরও বলেন, ‘এই সমীক্ষায় পানির উৎস, পরিশোধন সুবিধা, বিতরণ নেটওয়ার্ক এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থা বিবেচনা করা হচ্ছে।’

এ ছাড়া ২০২৭ সালে ৩য় নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে বাংলাদেশকে আরও ১৫০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে এডিবি।

এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। বহুমাত্রিক বিশ্লেষণ ও অংশীদারদের মতামতের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ সিটি রিজিয়ন (এমসিআর) এবং রাজশাহী সিটি রিজিয়নকে(আরসিআর) ৩য় সিটি রিজিয়ন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের অধীনে অর্থনৈতিক কাউন্টার-ম্যাগনেট হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।

ইআরডি কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পের আওতায় টেকসই আরবান ড্রেনেজ ব্যবস্থা। যার মধ্যে প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান অন্তর্ভুক্ত থাকবে, নাগরিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামো- যেমন: সড়ক, বাস টার্মিনাল, কমিউনিটি মার্কেট ও কাঁচাবাজার উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়নে উদ্ভাবনী অর্থায়ন ব্যবস্থা এবং পৌর প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। এর মাধ্যমে জলবায়ু ও দুর্যোগ সহনশীলতা, অংশগ্রহণমূলক নগর পরিকল্পনা ও টেকসই সেবা প্রদানের সক্ষমতা বাড়ানো হবে।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে এমসিআর ও আরসিআর-এর জন্য সমন্বিত সিটি রিজিয়ন পরিকল্পনা (সিসিআরপি) এবং সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন নির্দেশিকা প্রণয়নেও সহায়তা দেওয়া হবে। এতে আঞ্চলিক সংযোগ, উৎপাদনশীল সংযোগ বাড়ানো, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার মতো অতিরিক্ত থিম্যাটিক স্তর অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

এডিবির অর্থায়নে পটুয়াখালী পৌরসভা ও খুলনার চালনা পৌরসভায় প্রকল্প পরিদর্শনের সময় বাসসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং বলেছেন, সিটি রিজিয়ন ডেভেলপমেন্ট পরিকল্পনা চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এটি প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপ। তবে, আমরা ইতোমধ্যে এলজিইডির সঙ্গে পরবর্তী ধাপের প্রকল্প নিয়ে কাজ করছি। প্রকল্পের ভৌগোলিক এলাকা এবং উপ-প্রকল্পগুলো নিয়ে এখনও সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’

ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বহুপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদার এডিবি গত অর্থবছরে (২০২৪-২৫) ২.৫২ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে এবং ২.০ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন সহযোগী এডিবির বর্তমান প্রকল্প পোর্টফোলিও প্রায় ১১.৮ বিলিয়ন ডলার, যার বিপরীতে ৫১টি প্রকল্প চলমান আছে।

১৯৭৩ সাল থেকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, স্থানীয় সরকার, পরিবহন, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, পানি সম্পদ, প্রশাসনসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশকে মোট ৩৩.৯৫১ বিলিয়ন ডলার ঋণ এবং ৫৭১.২ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে এডিবি।


ইসলামি পুঁজিবাজার শক্তিশালী করতে বিএসইসি’র ৯ সদস্যের শরিয়াহ উপদেষ্টা কাউন্সিল গঠন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দেশে ইসলামি পুঁজিবাজারের বিকাশে সহায়তা করতে নয় সদস্যের একটি শরিয়াহ উপদেষ্টা কাউন্সিল গঠন করেছে।

রোববার বিএসইসি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক সিকিউরিটিজের সঠিক ইস্যু ও এসব সিকিউরিটিজে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষার লক্ষ্যে এ কাউন্সিলের গঠন প্রয়োজনীয় বলে বিবেচিত হয়েছে। সিদ্ধান্তটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।

কাউন্সিলটি পাঁচজন শরিয়াহ আলেম ও চারজন শিল্প বিশেষজ্ঞকে নিয়েগঠিত হয়েছে।

পাঁচজন শরিয়াহ আলেম হলেন— ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুষ্টিয়া) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকিব মুহাম্মদ নসরুল্লাহ; জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনজুর-ই-এলাহী; জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম, মিরপুরের জ্যেষ্ঠ মুফতি ও মুহাদ্দিস মাসুম বিল্লাহ; জামিয়া শরিয়াহ মালিবাগের সিনিয়র ডেপুটি মুফতি আবদুল্লাহ মাসুম; এবং মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন।

চারজন শিল্প বিশেষজ্ঞ হলেন— যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নিউ অরলিন্সের অর্থনীতি ও ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কবির হাসান; বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর সাদাত; বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম মাজেদুর রহমান; এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রহিম।


ঢাকার মানুষের মাথাপিছু আয় ৫ হাজার ১৬৩ ডলার: ডিসিসিআই

*এটি দেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয়ের প্রায় দ্বিগুণ *দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশ ঢাকায়
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঢাকা জেলার মানুষের গড়ে মাথাপিছু আয় বর্তমানে ৫ হাজার ১৬৩ মার্কিন ডলার। এটি দেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয়ের প্রায় দুই গুণের কাছাকাছি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, গত অর্থবছর (২০২৪–২৫) শেষে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৮২০ মার্কিন ডলার।
গতকাল শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ইকোনমিক পজিশন ইনডেক্স (ইপিআই) বা অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক প্রণয়নবিষয়ক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে ঢাকার মানুষের মাথাপিছু আয়ের এমন তথ্য জানানো হয়।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সংস্থা, অর্থনীতিবিদ, গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা চেম্বার জানায়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১১ সালে করা জেলাভিত্তিক জিডিপির তথ্যকে ভিত্তি ধরে এ জেলার বিনিয়োগ, ভোগ, ব্যয়, আমদানি, রপ্তানি, আয়তন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রভৃতি বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা জেলার মাথাপিছু আয়ের এ হিসাব অনুমান করা হয়েছে। যদিও ঢাকার মাথাপিছু আয় ও জিডিপির এসব তথ্যের সীমাবদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি।
সর্বশেষ গত মে মাসে জাতীয় মাথাপিছু আয়ের তথ্য প্রকাশ করে বিবিএস। এতে উঠে আসে, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন (২০২৪–২৫ অর্থবছর) ২ হাজার ৮২০ মার্কিন ডলার। এই মাথাপিছু আয় এযাবতকালের রেকর্ড। এর আগের অর্থবছরের চেয়ে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৮২ ডলার। গত অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৩৮ ডলার। তবে বিবিএস বিভাগ বা জেলাভিত্তিক মাথাপিছু আয়ের হিসাব করে না।
মাথাপিছু আয় ব্যক্তির একক আয় নয়। দেশের অভ্যন্তরীণ আয়ের পাশাপাশি প্রবাসী আয়সহ যত আয় হয়, তা একটি দেশের মোট জাতীয় আয়। সেই জাতীয় আয়কে মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে এই হিসাব করা হয়।
বিবিএসের হিসাবে দেখা গেছে, ২০২১–২২ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৯৩ ডলার। এরপর ২০২২–২৩ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৪৯ ডলারে। গত অর্থবছরে তা আরও কমে ২ হাজার ৭৩৮ ডলার হয়। মূলত ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ায় বিবিএসের হিসাবে মাথাপিছু আয়ের পার্থক্য হয়।

কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশ ঢাকায়
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এ কে এম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী। তিনি জানান, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বড় একটি অংশ সম্পন্ন হয় ঢাকা জেলায়। দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশ আসে এই জেলা থেকে। ঢাকাকে বিবেচনা করা হয় আর্থিক খাতের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সাড়ে ৭০০–এর বেশি কোম্পানির প্রধান কার্যালয় ঢাকা জেলায় অবস্থিত।
আসাদুজ্জামান জানান, দেশের শহুরে জনসংখ্যার ৩২ শতাংশের বাস ঢাকা জেলায়। আর মোট জনসংখ্যার ১১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ ঢাকায় থাকেন। ঢাকা খুবই শিল্পঘন জেলা। দেশের মোট পণ্য রপ্তানির ৪০ শতাংশের বেশি হয় এ জেলা থেকে। সব মিলিয়ে মোট দেশজ আয়ে (জিডিপি) এককভাবে ৪৬ শতাংশ অবদান রাখছে ঢাকা জেলা।

ইপিআই সূচক চালু করবে ঢাকা চেম্বার
দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে ইকোনমিক পজিশন ইনডেক্স (ইপিআই) বা অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা চেম্বার। প্রতি তিন মাস পরপর ইপিআই সূচক প্রকাশ করা হবে। এতে মূলত শিল্প ও সেবা খাতের অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিবর্তন চিহ্নিত করা হবে এবং তার আলোকে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নীতিনির্ধারকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হবে।
ঢাকা চেম্বারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ফোকাস গ্রুপ আলোচনায় ইপিআই সূচক নির্ধারণের প্রক্রিয়া ও কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।
আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেন, দেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ পরিমাপের জন্য বর্তমানে বিভিন্ন সূচক, যেমন বিসিআই, ইজ অব ডুইং বিজনেস ইনডেক্স, জিডিপি প্রভৃতি রয়েছে। তবে এসব সূচক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রকৃত পরিবর্তন ও কারণগুলো যথাযথভাবে প্রতিফলিত করতে পারে না। সরকার অনেক সময় ভূ–অর্থনৈতিক পটভূমি নীতিনির্ধারণ করে, কিন্তু হালনাগাদ তথ্য না থাকায় সেগুলো সব সময় কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না।
এমন বাস্তবতায় ইপিআই সূচক প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তাসকিন আহমেদ।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, স্থানীয় বিভিন্ন সূচকে দেখা যায়, ‘দেশের অর্থনীতি ভালো করছে। কিন্তু বৈশ্বিক সূচকের কিংবা অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখতে পাই, আমরা বিভিন্ন সূচকে সবচেয়ে নিচের দিকে থাকি। তাই এসব সূচকের তথ্যে আত্মতুষ্টির কারণ নেই; বরং এসব সূচককে বৈশ্বিক মানের সঙ্গে তুলনা করে প্রকাশ করলে সেটি বেশি কার্যকর হবে।’
আর ইপিআই সূচকটি প্রতি মাসে প্রকাশ করা ও সূচকের পরিধি বাড়ানোর পরামর্শ দেন ঢাকা চেম্বারের আরেক সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশনের (এনপিও) মহাপরিচালক মো. নূরুল আলম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রকল্পের (এসএসজিপি) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ নেসার আহমেদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক সৈয়দ মুনতাসির মামুন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এ কে এম আতিকুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক (এসএমইএসপিডি) নওশাদ মোস্তফা, পরিচালক মো. সালিম আল মামুন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আইনুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. দীন ইসলাম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইএসএস) গবেষণা পরিচালক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের সিনিয়র প্রাইভেট সেক্টর স্পেশালিস্ট মিয়া রহমত আলী প্রমুখ।


ইএলএফ লুব্রিক্যান্টসের হাইব্রিড গাড়ি সার্ভিস প্রশিক্ষণ পেল ৫০ মেকানিক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফ্রান্সের পারফরম্যান্স লুব্রিক্যান্ট ব্র্যান্ড ইএলএফ লুব্রিক্যান্টস স্থানীয় গাড়ি মেকানিকদের দক্ষতা উন্নয়নে একদিনব্যাপী বিশেষ হাইব্রিড গাড়ি সার্ভিস প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করেছে।

টোটালএনার্জিসের এই ব্র্যান্ডের উদ্যোগে কর্মশালাটি শুক্রবার রাজধানীর কন্টিনেন্টাল ওয়ার্কস লিমিটেডের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়।

দেশের বিভিন্ন সার্ভিস ওয়ার্কশপ থেকে আসা ৫০ জন অভিজ্ঞ মেকানিক প্রশিক্ষণে অংশ নেন।

কর্মশালায় হাইব্রিড গাড়ির ব্যাটারি রক্ষণাবেক্ষণ, ইলেকট্রিক মোটর পরীক্ষা, হাইব্রিড ট্রান্সমিশন সার্ভিসিং, হাই-ভোল্টেজ নিরাপত্তা ও আধুনিক ত্রুটি শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইএলএফ জানিয়েছে, এই উদ্যোগের লক্ষ্য স্থানীয় মেকানিকদের আরও দক্ষ করে তোলা, যাতে তারা গাড়ির কর্মক্ষমতা বাড়াতে, মেরামতের সময় কমাতে ও গাড়ির আয়ুষ্কাল দীর্ঘ করতে পারেন।

এতে চালক ও মালিকরা উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ দূষণও হ্রাস পাবে বলে জানায় ইএলএফ।

প্রশিক্ষণটি স্থানীয় চাহিদা ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সাজানো হয়েছে। দ্রুত পরিবর্তনশীল অটোমোটিভ প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এটি ইএলএফ-এর একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টোটালএনার্জিস বাংলাদেশের বাণিজ্যিক বিক্রয় পরিচালক টেরি হায়াশি। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ওয়ার্কশপ মালিক, সার্টিফায়েড মেকানিক, প্রশিক্ষক, ফ্লিট সার্ভিস ম্যানেজার, মোটরযান সাংবাদিক, ইএলএফ পরিবেশক ও অন্যান্য অংশীদাররা।

ইএলএফ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেওয়ান সাজেদুর রহমান বলেন, ‘গাড়ির প্রযুক্তি দ্রুত বদলাচ্ছে, তাই তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দক্ষতাও বাড়াতে হবে। আজকের প্রশিক্ষণ তাদের জন্য স্বীকৃতি, যারা প্রতিদিন আমাদের সড়ক ব্যবস্থা সচল রাখছেন। পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক পরিবহনের ভবিষ্যৎ গড়তে আমরা বাংলাদেশের মেকানিকদের পাশে থাকতে পেরে গর্বিত।’

ইএলএফ বাংলাদেশের পরিচালক কোসুকে ইয়োশিদা বলেন, টেকনিশিয়ানদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ মানে ভবিষ্যতের পরিবহন খাতকে শক্তিশালী করা। আমরা হাইব্রিড সার্ভিসিং জ্ঞান ও নিরাপদ কার্যাভ্যাস ছড়িয়ে দিয়ে একটি টেকসই সার্ভিস নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছি।

আগামী দিনে নতুন প্রজন্মের গাড়ির জন্য স্থানীয় কারিগরি সক্ষমতা বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইএলএফ, যা গাড়ির সার্ভিসিং মান, নিরাপত্তা ও দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করবে।


যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে এলো গম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো জি টু জি ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি শুরু করছে।

উভয় দেশের সরকারে মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আলোকে এ আমদানি প্রক্রিয়া শুরু হয়।

বাংলাদেশের খাদ্য অধিদপ্তর এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ)-এর মধ্যে চুক্তিটি সই হয়। এর আওতায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করা হবে।

প্রথম চালান হিসেবে ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গম নিয়ে এমভি নোরস স্ট্রিড জাহাজটি শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙরে পৌঁছায়।

জাহাজে রক্ষিত গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। পরীক্ষা শেষে দ্রুত গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানা যায়, ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গমের মধ্যে ৩৪ হাজার ১৭০ মেট্রিক টন চট্টগ্রামে এবং অবশিষ্ট ২২ হাজার ৭৮৯ মেট্রিক টন গম মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ বৃদ্ধিকে স্বাগত জানাল আইএমএফ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে রিজার্ভ বৃদ্ধি প্রশংসনীয়। তবে এই প্রক্রিয়া দেশের ঘোষিত বিনিময় হার ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, তা তারা মূল্যায়ন করবে।

আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের উপপরিচালক থমাস হেলব্লিং বলেন, “রিজার্ভের সঞ্চয়কে আইএমএফ-সমর্থিত কর্মসূচির একটি কেন্দ্রীয় লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়, বিশেষ করে যেহেতু দেশটি এখনো পেমেন্ট ভারসাম্যের চাপের মুখে রয়েছে।”

গত শুক্রবার হংকংয়ে আয়োজিত এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরও বলেন, পেমেন্ট ভারসাম্যের দুর্বলতা হ্রাসে রিজার্ভ বৃদ্ধির লক্ষ্য গুরুত্বপূর্ণ। এ সাফল্যের জন্য তিনি বাংলাদেশ ব্যাংককে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানান।

তিনি জানান, ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির পঞ্চম পর্যালোচনার অংশ হিসেবে আইএমএফের একটি মিশন চলতি মাসেই বাংলাদেশ সফর করবে। মিশনটি মাঠপর্যায়ে কাজ করবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবে। ফলাফল কী হয়, তা এখনো দেখার বিষয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তবে এই পদক্ষেপগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত বিনিময় হার নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, সেটিও আইএমএফ মূল্যায়ন করবে বলে তিনি জানান।

আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ১৬ অক্টোবর বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার, যা এক বছর আগে ছিল ১৯ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। এ বৃদ্ধি ঘটেছে মূলত মুদ্রা প্রবাহ বাড়া, ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম থাকা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বাজার থেকে ডলার কেনার কারণে।

২০২১ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে আমদানি বৃদ্ধির ফলে রিজার্ভে চাপ সৃষ্টি হয়। ওই সময় থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ২৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করে। এক বছরের বেশি সময় ধরে ‘ক্রলিং পেগ’ (নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ওঠানামা) বিনিময় হার ব্যবস্থা বজায় রাখার পর, ২০২৫ সালের মে মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক বিনিময় হার ব্যবস্থায় নমনীয়তা চালু করে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে এ পর্যন্ত টাকার মান ৪৩ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। তবে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহ, বিশেষ করে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার থেকে ২ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার কিনেছে।


শেয়ারবাজারে বড় উত্থান, ডিএসইতে দাম বেড়েছে ২৪৯ কোম্পানির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার লেনদেন ছিল ঊর্ধ্বমুখী ধারা। দিনের শেষে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আশাবাদ তৈরি করেছে।

ডিএসইতে আজ মোট ১ লাখ ৪২ হাজার ৭০৬টি লেনদেন সম্পন্ন হয়। এ সময় ১৫ কোটি ২৬ লাখ ৫২ হাজারের বেশি শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়, যার মোট আর্থিক মূল্য ছিল ৪৬৮ কোটি ৬০ লাখ ৬৩ হাজার ৭৯২ টাকা।

ডিএসইতে আজ ডিএসই ব্রড ইনডেক্স (ডিএসইএক্স) আগের কার্যদিবসের চেয়ে সূচক ৫৫.২০ পয়েন্ট বেড়ে ৫,১৪৯.৮৯ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে। ডিএসইএস সূচক ১০.৭৫ পয়েন্ট বেড়ে ১,০৮৮.৫৪ পয়েন্টে এবং ডিএস-৩০ সূচক ২৩.৯২ পয়েন্ট বেড়ে ১,৯৯৮.১০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসইতে আজ মোট ৩৯৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৪৯টির দর বেড়েছে, ৮০টির দর কমেছে, এবং ৬৪টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

লেনদেন শেষে ডিএসইর মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন দাঁড়ায় ৭ লাখ ৫ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ইক্যুইটি ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৬ কোটি ৯ লাখ ১৯ হাজার ৯৫৯ টাকা, মিউচুয়াল ফান্ড ২ হাজার ৫৭৭ কোটি ৪৯ লাখ ১৪ হাজার ৪৬৫ টাকা এবং ডেবট সিকিউরিটিজ ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮৭ হাজার ৯৩৩ টাকা।

ক্যাটাগরি অনুযায়ী দেখা যায়, ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ২১৯টি কোম্পানির মধ্যে ১৪২টির দর বেড়েছে, ৫১টির কমেছে এবং ২৬টি অপরিবর্তিত ছিল।

‘বি’ ক্যাটাগরিতে ৭৯টি কোম্পানির মধ্যে ৫৭টি বেড়েছে, ১৩টি কমেছে ও ৯টি অপরিবর্তিত ছিল। ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে ৯৫টির মধ্যে ৫০টির দর বেড়েছে, ১৬টির কমেছে ও ২৯টি অপরিবর্তিত রয়েছে। ‘এন’ ক্যাটাগরিতে আজ কোনো কোম্পানির লেনদেন হয়নি।

মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ৩৪টির মধ্যে ১৬টির দর বেড়েছে, ৪টির কমেছে ও ১৪টি অপরিবর্তিত ছিল। করপোরেট বন্ডের (সিবি) ৩টি ইস্যুই দরপতনের মুখে পড়ে। অন্যদিকে, সরকারি সিকিউরিটিজ খাতে একমাত্র লেনদেন হওয়া ইস্যুটির দর বেড়েছে।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৮টির এবং ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ২৮ লাখ টাকা।


এআই বিভাগে ৬০০ কর্মী ছাঁটাই করছে মেটা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেসবুক-এর মালিক প্রতিষ্ঠান মেটা তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিভাগ থেকে ৬০০ কর্মী ছাঁটাই করতে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, অতিরিক্ত নিয়োগের পর, এবার কার্যক্রম সহজ ও সুশৃঙ্খল করতেই এই পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও নিউইয়র্ক টাইমসসহ একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গের প্রতিষ্ঠিত ‘টিবিডি’ ল্যাবের ওপর এই ছাঁটাইয়ের কোন প্রভাব পড়বে না।

ওই ল্যাবে দ্রুত জনবল বাড়াতে ওপেনএআই ও অ্যাপল-এর মতো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ গবেষকদের আকর্ষণীয় বেতন প্যাকেজ দিয়ে নিয়োগও দেওয়া হয়েছিল।

এই ছাঁটাইয়ের প্রভার মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পণ্য ও অবকাঠামো নিয়ে কাজ করা দলগুলোর ওপর পড়বে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মদক্ষতা বাড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এতে কোম্পানির উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলোতে কোনো প্রভাব পড়বে না। এমনকি ছাঁটাই করা অনেক কর্মীকে প্রতিষ্ঠানটির অন্য বিভাগে নিয়োগ করা হতে পারে।

নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে অতিরিক্ত নিয়োগের কারণে প্রতিষ্ঠানে অপ্রয়োজনীয় জনবল বেড়ে গেছে। সেই চাপ কমাতেই ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেটা।

দুই পত্রিকাই মেটার প্রধান এআই কর্মকর্তা আলেক্সান্ডার ওয়াংয়ের এক বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘এখন থেকে সিদ্ধান্ত নিতে কম আলোচনার প্রয়োজন হবে।’

এ বিষয়ে এএফপির প্রশ্নের জবাবে মেটা কোনো মন্তব্য করেনি।


অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এডিপি বাস্তবায়ন ৫.০৯ শতাংশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৫ দশমিক ০৯ শতাংশ;

বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

এতে বলা হয়, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দ রয়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো ব্যয় করতে পেরেছে মাত্র ১২ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। যা মোট এডিপি বরাদ্দের ৫ দশমিক ০৯ শতাংশ।

আইএমইডির ওয়েবসাইটে বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত অর্থবছরের (২০২৪-২৫) একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ১৩ হাজার ২১৫ কোটি টাকা। যা মোট এডিপি বরাদ্দের ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

আর গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল ৭.৫০ শতাংশ। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮.৫৫ শতাংশ ও ২০২১-২২ অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল ৮.২৬ শতাংশ।

এদিকে গত সেপ্টেম্বর মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ২.৭০ শতাংশ বা ৬ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। আর গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল ২.১৮ শতাংশ।


বিনিয়োগ বাড়াতে সিইপিএ চুক্তি চূড়ান্তের পথে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া

দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানের বৈঠক
দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়ো হান-কু-এর সঙ্গে গতকাল সিউলে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। ছবি: বিডা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ) চূড়ান্ত করতে গত বুধবার সিউলে দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়ো হান-কু-এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।
বৈঠকে সিইপিএ চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে দুই দেশই সম্মত হয়েছে। বিডার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে উভয় পক্ষই সিইপিএ চুক্তিকে সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ হিসেবে বর্ণনা করে তারা বলেন, এই চুক্তি বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রাক্কালে নতুন বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সহযোগিতার পথ উন্মুক্ত করবে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা আরও জোরদারে একাধিক বিষয়ে মতৈক্য হয়।
এ সময় বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের আস্থাভাজন উন্নয়ন সহযোগী। আমরা চাই সিইপিএ দ্রুত চূড়ান্ত হোক। এই চুক্তি হলে ইলেকট্রনিক্স, মবিলিটি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, টেক্সটাইল ও অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে কোরিয়ান বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি পাবে।’
তিনি আরও বলেন, আমরা কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেছি। শুল্ক, রেমিট্যান্স ও করসংক্রান্ত যেসব বিষয় তারা উল্লেখ করেছেন- সেগুলো আরও সহজ, দ্রুত ও আধুনিক করার লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। বিডার ৩২ দফা ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট রিফর্ম এজেন্ডা বাস্তবায়নের মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে এগিয়ে যাচ্ছে।
মতবিনিময়কালে দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়ো হান-কু বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। আধুনিক উৎপাদন ও সেবা খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা এই উন্নয়নযাত্রার অংশীদার হতে আগ্রহী।’
বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়ো আরও বলেন, অতীতে বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে একাধিকবার বাংলাদেশ সফর করেছি এবং বাংলাদেশের অগ্রগতি সবসময় কাছ থেকে দেখেছি।
বৈঠকে বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়ো হান-কু-কে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা চাই কোরিয়ান ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসে সরেজমিনে দেখুক কীভাবে অবকাঠামো, ডিজিটাল সেবা ও ব্যবসা সংস্কারে আমরা বাস্তব পরিবর্তন এনেছি।’
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশে ১৫০টিরও বেশি কোরিয়ান কোম্পানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দক্ষিণ কোরিয়া এখন বাংলাদেশের পঞ্চম বৃহত্তম বৈদেশিক বিনিয়োগকারী দেশ।
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার (ইউএনসিটাড) ২০২৫ সালের বিশ্ব বিনিয়োগ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে কোরিয়ার বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা দেশটিকে বিশ্বের শীর্ষ ১০ বিনিয়োগকারী দেশের কাতারে স্থান দিয়েছে।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলটি আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করবে। সফরকালে তারা গত ২১ অক্টোবর সিউলে আয়োজিত ‘গেটওয়ে টু গ্রোথ: ইনভেস্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিনিয়োগ সেমিনারে অংশ নেন। ১৫০ জনেরও বেশি কোরিয়ান বিনিয়োগকারী সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আইএফসি বাংলাদেশের কারিগরি সহায়তায় প্রতিনিধিদলটি কোরিয়ার শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে একাধিক সরকারি-বেসরকারি (জি-টু-বি) বৈঠকও সম্পন্ন করেছে।


এক লাখ টন সিদ্ধ ও আতপ চাল কিনবে সরকার

তিন দেশ থেকে কিনবে এক লাখ টন সার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এক লাখ মেট্রিক টন নন-বাসমতি ও আতপ চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে, যার মূল্য প্রায় ৪৪৬ কোটি ২২ লাখ টাকা।
তা ছাড়া, সার সরবরাহ শৃঙ্খল ও মজুত সুবিধা জোরদার করার লক্ষ্যে তিন দেশ থেকে কিনবে ১.০৫ লাখ মেট্রিক টন সার। একইসঙ্গে অবকাঠামো ও বিদ্যুৎ খাতের আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়েছে।
গতকাল বুধবার ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত কমিটির ৪২তম সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সভাপতিত্ব করেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী চলতি অর্থবছর (২০২৫-২৬)-এর জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল (পারবয়েল্ড রাইস) ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চালগুলো খাদ্য অধিদপ্তর আমদানি করবে, যার মোট ব্যয় হবে ২১৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫৫.৯৯ মার্কিন ডলার।
দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এম/এস ক্রেডেন্টওয়ান এফজেডসিও দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। আরেকটি প্রস্তাবে, কমিটি মিয়ানমার থেকে সরকার-টু-সরকার (জি-টু-জি) চুক্তির আওতায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে।
এ ক্রয়ের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২২৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা, প্রতি মেট্রিক টনের দাম ৩৭৬.৫০ মার্কিন ডলার। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হবে মিয়ানমারের রাজধানী ইয়াঙ্গুনভিত্তিক মিয়ানমার রাইস ফেডারেশন (এমআরএফ)।
সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের বিদ্যমান চুক্তির সপ্তম ধাপের আওতায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানি অনুমোদন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)-এ আমদানি কার্যক্রম সম্পন্ন করবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৬০.০২ কোটি টাকা, যেখানে প্রতি মেট্রিক টনের মূল্য নির্ধারিত হয়েছে ৭৩৫.৩৩ মার্কিন ডলার।
একইভাবে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন আরেকটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে রাশিয়ার জেএসসি ‘ফরেন ইকোনমিক করপোরেশন (প্রোডিনটর্গ)’ থেকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির পঞ্চম ধাপের আওতায় ৩৫ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানি করা হবে।
এই চালানটির মোট মূল্য ১৫২ কোটি ৬২ লাখ টাকা, যেখানে প্রতি মেট্রিক টনের দাম ৩৫৬.২৫ মার্কিন ডলার।
এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী সৌদি আরবের স্যাবিক অ্যাগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের পঞ্চম ধাপের আওতায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার আমদানি অনুমোদন করা হয়েছে। মোট চুক্তিমূল্য ১৫১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, যেখানে প্রতি মেট্রিক টনের মূল্য ৪১৩.৩৩ মার্কিন ডলার নির্ধারিত হয়েছে।
কমিটি ‘বিভিন্ন স্থানে সার সংরক্ষণ ও বিতরণের জন্য ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় আরও একটি নির্মাণ প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে।
প্যাকেজ-৪, লট-৫ (বরগুনা সাইট, ধারণক্ষমতা ১০ হাজার মেট্রিক টন)-এর আওতায় এই নির্মাণকাজ এম/এস এমবিএল-আরইএল (জেভি), ঢাকা দ্বারা বাস্তবায়িত হবে, যার মোট ব্যয় ৫১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
সারাদেশে সার সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখা ও সংরক্ষণ অবকাঠামো শক্তিশালী করার লক্ষ্যেই কমিটি প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেছে।
এছাড়া কমিটি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) একটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।
প্রস্তাবটি চট্টগ্রামের মীরসরাই-২-এ ও ২-বি অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রবেশ সড়ক নির্মাণ-সংক্রান্ত, যার ব্যয় ধরা হয়েছে ২০৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
ঢাকাভিত্তিক মনিকো লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি এই কাজের ঠিকাদার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।
প্রকল্পের প্যাকেজের নাম ডব্লিউডিথ্রি-বিএসএমএসএন, বিইজেডএ- যা চলমান জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ।
সভায় বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক খুলনা বিভাগের পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রকল্পের (বিশেষ সংশোধিত) অধীনে পাঁচটি নতুন ৩৩-১১ কেভি (১১০/১৪ এমভিএ) জিআইএস ধরনের সাবস্টেশন ক্রয় প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনার প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়।
সভায় সংশোধিত পদ্ধতিতে এই ক্রয় প্রক্রিয়া পুনরায় সম্পাদনের জন্য প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়।


সরাইলের গ্রে-হাউন্ড কুকুর বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও বাজারজাত করার উদ্যোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

শক্ত গড়নের পাঁজর আর দীর্ঘদেহী গ্রে-হাউন্ড কুকুর জেলার সরাইল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী একটি প্রাণী। সাহস আর রণকৌশলে অন্যসব কুকুরের চেয়ে আলাদা। দৌড়ের গতিও অন্যসব কুকুরের চেয়ে বেশি। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আর শিকারে পারদর্শিতার কারণে গ্রে-হাউন্ড কুকুর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ডগ স্কোয়াডেও ব্যবহৃত হয়েছে বলে জানা যায়।
ঐতিহ্যবাহী এই গ্রে-হাউন্ড কুকুর এখন অস্তিত্ব সংকটে। পুরো সরাইল জুড়ে হাতেগোনা কয়েকটি বাড়িতে দেখা মেলে এই কুকুরের। ঐতিহ্যবাহী ও দামি বিরল প্রজাতির এই কুকুরকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে গ্রে-হাউন্ড প্রজনন কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা ভাবছে প্রশাসন। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন বাসসের সাথে আলাপকালে একথা জানান।
তিনি বলেন, বাণিজ্যিকভাবে গ্রে-হাউন্ড কুকুর উৎপাদন ও বাজারজাত করার বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রাথমিক আলোচনা ও সম্ভাব্যতা যাচাই করেছি। গ্রে-হাউন্ড কুকুরের জাত টিকিয়ে রাখার জন্য একটি প্রজনন কেন্দ্র করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সম্মলিতভাবে কাজ করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঐতিহ্য ধরে রাখতে একটি পরিবার এখনও বংশ পরম্পরায় গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন করছে। সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চৌরাগুদা গ্রামের দুই ভাই তপন লাল রবিদাস ও যতন লাল রবিদাস বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন করছেন। তবে ব্যয়বহুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন তাদের জন্য কষ্টসাধ্য।
জনশ্রুতি আছে, প্রায় দুইশ বছর আগে সরাইলের জমিদার দেওয়ান মোস্তফা আলী হাতি নিয়ে কলকাতা যাচ্ছিলেন। পথে এক ইংরেজ সাহেবের কাছে একটি সুন্দর কুকুর দেখতে পান। তিনি কুকুরটি কেনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তিনি একটি হাতির বিনিময়ে ইংরেজ সাহেবের কাছ থেকে ঐ স্ত্রী কুকুরটি নিয়ে আসেন।
এলাকার প্রবীণদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একসময় সরাইল উপজেলার প্রতিটি বাড়িতে দেখা মিলত গ্রে-হাউন্ড কুকুরের। মূলত বাড়ির নিরাপত্তা এবং শেয়াল তাড়ানোর জন্য গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালনে উৎসাহী হন সরাইলের বাসিন্দারা। ধীরে ধীরে এই কুকুর বাণিজ্যিকভাবেও লালন-পালন শুরু করেন অনেকে। তবে অন্যসব কুকুরের তুলনায় গ্রে-হাউন্ড পালন কিছুটা ব্যয় সাপেক্ষ। এর ফলে অনেকেই গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন বন্ধ করে দেন। এতেই কমতে থাকে গ্রে-হাউন্ড কুকুরের সংখ্যা। এখন হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার শখের বশে গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন করছে। তবে ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে মাত্র তপন রবিদাস ও যতন রবিদাস গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন করছেন।
কুকুর ছানাগুলো বিক্রি করা হয় স্ট্যাম্প করে। তবে পেশায় মুচি তপন ও যতনের জন্য গ্রে-হাউন্ড পালন করা এখন কষ্টকর হয়ে উঠেছে। স্বল্প আয়ে সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হয় তাদের। এর ফলে অর্থের অভাবে ঠিকভাবে গ্রে-হাউন্ড কুকুরের পরিচর্যা করতে পারছেন না দুই ভাই।
তপন লাল রবিদাস বলেন, বড় প্রত্যেকটি কুকুরের জন্য প্রতিদিন অন্তত ৩০০ টাকার খাবারের প্রয়োজন হয়। ভাত, মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ ছাড়া অন্য কোনো খাবার খায় না গ্রে-হাউন্ড কুকুর। কিন্তু সবসময় আমরা এই খাবার খাওয়াতে পারি না। আর্থিক টানাপোড়নের সংসারে আমাদের নিজেদের চলতেই কষ্ট হয়। এর মধ্যে কুকুরের খাবারের জন্য বাড়তি টাকা খরচ করা আমাদের জন্য কষ্টকর। শুধুমাত্র পূর্ব পুরুষরা কুকুর পালন করতেন বলেই আমরা এখনও পালন করছি।
প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞদের মতে, ঐতিহ্যবাহী এই কুকুরের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। এই কুকুর কেবল সরাইলের ঐতিহ্যই নয়, এটি নিরাপত্তার কাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এর সঠিক প্রজনন, রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজেও এদের ব্যবহার করা সম্ভব।
তাদের মতে, সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতায় ঐতিহ্যবাহী সরাইলের বিরল প্রজাতির মূল্যবান গ্রে-হাউন্ড কুকুরকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা প্রয়োজন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৩ সালে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সরাইল উপজেলা সদরে একটি গ্রে-হাউন্ড কুকুর সংরক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছিল।
তবে উপযুক্ত চিকিৎসা, সুষ্ঠু পরিচালনা ও আর্থিক সংকটের কারণে কয়েক বছর পরই কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। উপজেলা সদরের বড়দেওয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান ঠাকুর ২০০১ সালে সরাইলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কুকুর প্রজননের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তার উদ্যোগটিও টেকেনি।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, সরাইলের ঐতিহ্যের কথা বলতে গেলে বিখ্যাত গ্রে-হাউন্ড কুকুরকে বাদ দেওয়া যাবে না। দেশ বিদেশে এই কুকুর সরাইলের পরিচিতি বহন করে। এছাড়া গ্রে-হাউন্ড কুকুর প্রভুভক্ত। পাশাপাশি গ্রে-হাউন্ড কুকুর বাড়িঘর পাহারা দেয়। গোয়েন্দা তৎপরতার মত গুণও রয়েছে তাদের। সূত্র: বাসস


banner close