মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
সাক্ষাৎকার

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুপারশপের প্রসার, পরিধি বাড়াতে হবে: সাব্বির নাসির 

স্বপ্নের সিইও
আপডেটেড
১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৫:৩৫
সুলতান আহমেদ
প্রকাশিত
সুলতান আহমেদ
প্রকাশিত : ১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৫:৩৪

মধ্য কিংবা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার জায়গা এখন নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম বা উচ্চমূল্যস্ফীতি। কেন দফায় দফায় দাম বাড়ছে তা নিয়ে যখন সবাই উদ্বিগ্ন, তখন দেশের বৃহৎ চেইন সুপারশপ ‘স্বপ্ন’র প্রধান নির্বাহী সাব্বির হাসান নাসির দৈনিক বাংলার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, কৃষক, উৎপাদক, আমদানিকারক থেকে শুরু করে খুচরা দোকান পর্যন্ত সর্বত্রই সমন্বিত নীতিমালার অভাব। তিনি আরও বলেন, জবাবদিহি বাড়াতে হলে পুরো প্রক্রিয়াকে উন্নত বিশ্বের আদলে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হবে। এ জন্য দেশের সুপারশপগুলো বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে তিনি মনে করেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দৈনিক বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার সুলতান আহমেদ

বাংলাদেশের মতো কম আয়ের দেশে সুপারশপের ভবিষ্যৎ কী?

সাব্বির হাসান নাসির : বাংলাদেশে সুপারশপের ব্যবসা ‘আগোরা’র হাত দিয়ে শুরু হয়। শুরুতে খুব এলিট ক্লাসের গ্রাহকরা শুধু এখানে কেনাকাটা করতে আসতেন । ঢাকার অভিজাত এলাকায় ছিল তাঁদের আউটলেট । এরপর ‘স্বপ্ন’সহ অন্যান্য কিছু ব্র্যান্ড ‘সুপারশপ ফর অল’ এ ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করে। ২০১২ সালের দিকে এটা বিস্তৃত হতে শুরু করে, তখনো পুরো মার্কেটের শূন্য দশমিক তিন শতাংশ ছিল সুপারশপের দখলে, যা এখন ২ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ পুরো মার্কেটে যত বেচা-বিক্রি হয়, তার মাত্র ২ শতাংশ এখন সুপারশপের হাতে। অন্যান্য দেশের কথা যদি বলি, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এর মার্কেট শেয়ার ৮ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৪৩ শতাংশ, ফাস্ট ওয়ার্ল্ডে ৬০/৭০ শতাংশ, কোথাও কোথাও ৮০/৯০ শতাংশ। উন্নত বিশ্বে এত বেশি হওয়ার পেছনে একটা কারণ মাথাপিছু আয়। মাথাপিছু আয় যত বাড়ে সুপারশপের পরিধি তত বাড়ে। কারণ গ্রাহকের কাছে তখন স্বাস্থ্য সচেতনতা, বাজারের পরিবেশ ও সময়ের দাম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে সরকারের স্বদিচ্ছা। সরকার যদি আসলেই চায় মডার্ন ট্রেড গড়ে তুলতে, যেখানে জবাবদিহি থাকবে, তাহলে সেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে ব্যাংক, প্রাইভেট ইক্যুইটি ও প্রাইভেট সেক্টরের অংশগ্রহণ। অর্থাৎ বড় বিনিয়োগকারীদের এ খাতে এগিয়ে আসা। আমাদের দেশে মাথাপিছু আয় বাড়ছে, এখন প্রশ্ন আসবে সরকার সত্যিকার অর্থেই চায় কি না মডার্ন ট্রেডের বিকাশ হোক। আমরা যদি মাথাপিছু আয় ভারতের সঙ্গে তুলনা করি তাহলে আমাদের বাজারের অন্তত ৫/৬ শতাংশ শেয়ার থাকার কথা ছিল সুপারশপের দখলে। এখানেই প্রশ্ন আসে, সরকার কি সত্যিকার অর্থেই চায় এই সেক্টরের উন্নয়ন করতে? আমার কাছে মনে হয় না তারা সেটা চায় ।

কেন আপনার মনে হচ্ছে সরকার চায় না?

সাব্বির হাসান নাসির: কারণটা খুব পরিষ্কার। যদি তারা সত্যিকার অর্থেই চাইত তাহলে শুধু সুপারশপের ওপর ৫% হারে ভ্যাটের ব্যারিয়ার দিয়ে রাখত না। বাইরে থেকে কিছু কিনলে আপনার কোনো ভ্যাট নেই অথচ সুপারশপ থেকে নিলে ৫ শতাংশ ভ্যাট। আমাদের এই ৫% ভ্যাট অনেক ক্ষেত্রেই ডিসকাউন্ট দিতে হয়, যা প্রফিট মার্জিনকে অনেক নাজুক করে দেয়। যদি সরকার চাইত তাহলে আমাদের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করত, এভাবে বৈষম্য করত না। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, কেন সরকার এটা করছে না? সে প্রশ্নের উত্তরে আমার কাছে যেটা মনে হয়, তা হচ্ছে সরকার একপ্রকার ভয় পায় যে, ইনফরমাল বাজার ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, সুপারশপের প্রসার বাড়লে সেটা না উচ্ছেদ হয়ে যায়। সেখানে যে প্রচুর কর্মসংস্থান হয়েছে, তা বন্ধ হয়ে যায় কি না। আবার সরকার এটাও ভাবতে পারে যে, সুপারশপ তো বড়লোকদের বাজার, এখানে যাঁরা বাজার করেন ৫ শতাংশ ভ্যাট তাদের কাছে কোনো বিষয়ই না। সুপারশপ এখন আর সাধারণের বিলাসিতা নয়। একটা নারীর নিরাপদ বাজার, মধ্যবিত্তের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সম্ভার। আমি মনে করি, সরকারের এখন ভাবা উচিত ১৮ বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রিতে জবাবদিহি আনা গেলে মূল্যস্ফীতি সহজেই কন্ট্রোল করা সম্ভব। এ ছাড়া, ফুড সেফটি নিশ্চিত করতে চাইলে সুপারশপের বিকল্প নেই। খোলাবাজারে আপনি সহজে কাউকে ধরতে পারছেন না, এখানে তো চার-পাঁচজন রিটেইল কোম্পানিকে জবাবদিহিতায় আনতে পারছেন। আবার যদি ভ্যালু চেইনের স্বচ্ছতার প্রশ্ন আসে, তাহলে হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানিকে নিয়ন্ত্রণ করা পুরো বাজার নিয়ন্ত্রণের চেয়ে অনেক বেশি সহজ। পুরো পৃথিবীতে এ কারণেই সুপারশপ ব্যবস্থা এত জনপ্রিয়। শুধু তাই নয়, এটা একধরনের সভ্যতা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকও। তবে আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা সেখানে যেতে পারছি না। বড় কোম্পানিগুলোকে দেখুন তারাও খুব বেশি আসছে না এখানে বিনিয়োগ করতে। তারা ভাবছে এখানে লাভ করা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। আবার ব্যাংকগুলোও অনেক ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখাচ্ছে না এ খাতে ঋণ দিতে।

অনেক গ্রাহকের এমনকি ভোক্তা অধিদপ্তরেরও অভিযোগ রয়েছে সুপারশপে দাম বেশি। আপনি বলছেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে পারে সুপারস্টোর, কীভাবে?

সাব্বির হাসান নাসির: এটা ওনাদের ভুল ধারণা। আমি বলব প্রাইসিং কীভাবে হয়, কীভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়ে তা না জেনেই এমন অভিযোগ করা হয়েছে। মনে করেন, পেঁয়াজ কিংবা আলু যা নিয়ে এখন খুব আলোচনা হচ্ছে। আমরা কখনই পাইনি এসব চাষ করে কৃষক খুব লাভ করেছে। আবার যারা খুচরা ব্যবসা করছে তারাও এটা করে বাড়ি-গাড়ি করছে তাও নয়। তাহলে বাড়তি দাম যাচ্ছে কোথায়? রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি ও টাকার অবমূল্যায়নে প্রভাব ফেলেছে বাংলাদেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতিতে। বাজারে আমাদের শেয়ার মাত্র ২ শতাংশ, তাহলে আমরা কীভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়াতে পারি? সরকারের উচিত ভ্যালু চেইনের সব স্টেকহোল্ডারদের তথ্য নিয়ে, ডেটা নিয়ে কাজ করে সমন্বিত নীতিমালা তৈরি করা।

আপনি বলছিলেন মূল্যস্ফীতি কমানোর কথাও- সেটা কীভাবে?

সাব্বির হাসান নাসির: আপনি দেখবেন আমরা প্রচুর মূল্যছাড় দিই। আমরা যেহেতু একটা বড় অ্যামাউন্ট একসঙ্গে কিনি তাই কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আমরা বার্গেনিং করে কিছুটা কমে কিনতে পারি। আমাদের মডার্ন ট্রেডের শেয়ার এখনো অনেক কম। এই সীমিত শেয়ার নিয়েও আমরা যেসব ছাড় দিচ্ছি, তা অনেক পণ্যের ক্ষেত্রেই বাজার থেকে অনেক অনেক কম। আমাদের শেয়ার আরও বাড়লে বাজার ব্যবস্থার ওপর আমাদের ও সরকারের নিয়ন্ত্রণ সহজ হতো।

গ্রাহকদের অভিযোগ রয়েছে, সুপারশপে ফ্রেশ পণ্য পাওয়া যায় না। সেটা কেন?

সাব্বির হাসান নাসির: আমাদের অধিকাংশ কৃষিপণ্য আমরা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকেই কিনে থাকি। তবে আমরা ফ্রেশ রাখার জন্য কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করি না। এ জন্য বাজারের মতো হয়তো ফ্রেশ মনে হয় না। এ ছাড়া মাংসের মধ্যে দেখবেন আমরা কোনো ওয়াটারিং করি না, যেটা বাজারে পাবেন। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করি ফ্রেশ রাখার জন্য।

আপনি ভ্যাট বৈষম্যের কথা বলছিলেন, এখনো ইসিআর মেশিন সব ব্যবসায়ীকে দেয়া সম্ভব হয়নি। তাহলে ভ্যাটের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা কীভাবে আসবে?

সাব্বির হাসান নাসির: দেখুন ইসিআর মেশিন প্রজেক্ট বহু আগে থেকেই শুরু হয়েছে। এনবিআর চেষ্টা করে যাচ্ছে সব ব্যবসায়ীর কাছে এটা পৌঁছে দিতে। সত্যি বলতে এ কাজটা সহজ নয়, বেশ কঠিন। আমি বহু আগেই বলেছিলাম এত ঝামেলা না করে উৎপাদন পর্যায়ে সরাসরি ৫% ভ্যাট বসিয়ে দিতে। কিন্তু এনবিআর তা করেনি। এটা করতে পারলে ভ্যাট আদায় নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকত না। আদায় কয়েকশ গুণ বেড়ে যেত, স্বচ্ছতাও নিশ্চিত হতো। ইন্ডিয়াতে এ ব্যবস্থা জিএসটিতে রয়েছে।

স্বপ্নের সফলতা আসে আপনার হাত ধরে, গ্রাহকদের উদ্দেশে কী বলবেন?

সাব্বির হাসান নাসির: আমরা স্বপ্ন করেছি মূলত মধ্যবিত্ত গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে। আমরা এটা অনুভব করি মধ্যবিত্ত মানুষ এখন বেশ কষ্টে রয়েছে। তাদের কষ্ট কীভাবে লাঘব করা যায়, সেটা সবসময় আমাদের ভাবনায় থাকে। আমরা গ্রাহকদের সেন্টিমেন্ট বোঝার চেষ্টা করি, তারা কী ধরনের পণ্য কিংবা অফার প্রত্যাশা করেন, তা নিয়ে ভাবি। এ জন্য দেখবেন স্বপ্নের ডিসকাউন্ট অফার সবচেয়ে বেশি। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, আমাদের মতো কম দামে আপনি খোলাবাজারে অনেক পণ্য পাবেন না। শুধু তাই না, আমরা প্রতিটি কাস্টমারের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করি। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, আমরা পণ্যের কোয়ালিটি নিয়ে বিন্দুমাত্র কম্প্রোমাইজ করি না। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনেই পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে স্বপ্ন। তাই বলব, স্বপ্নের সঙ্গে থাকুন। এটা আপনাদের প্রতিষ্ঠান। নিজেদের ভেবে স্বপ্নে কেনাকাটা করুন, পরামর্শ দিয়ে স্টোর ম্যানেজমেন্টকে আরও গ্রাহকমুখী ও নির্ভুল করতে সাহায্য করুন। স্বপ্ন নিয়ে বাঁচুন।


দুই লাখ ২০ হাজার টন সার কিনবে সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চীন, সৌদি আরব, মরক্কো ও কাফকো থেকে দুই লাখ ২০ হাজার টন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা।

মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ৭০ হাজার টন ইউরিয়া, ১ লাখ ২০ হাজার টন ডিএপি এবং ৩০ হাজার টন টিএনপি সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৫৭৯ কোটি ৫২ হাজার ২৮০ টাকা।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জন্য সৌদি আরবের সাবিক এগ্রো নিউট্রিয়েন্টস কম্পানি থেকে ৯ম লটের ৪০ হাজার টন বাঙ্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এই সার ক্রয়ে ব্যয় হবে ১৯৪ কোটি ৫৫ লাখ ৮০ হাজার ২৮০ টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৩৯৬.৪১ মার্কিন ডলার।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জন্য কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ থেকে ৯ম লটের ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সার কিনতে ব্যয় হবে ১৪৩ কোটি ৩০ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৩৮৯.০০ মার্কিন ডলার।

বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চীনের ব্যানিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৭ম লটের ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এই সার ক্রয়ে ব্যয় হবে ৩৫০ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৭১৩.৭৫ মার্কিন ডলার।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সৌদি আরবের মা’আদেন এবং বিএডিসির মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ১১তম ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সার কিনতে ব্যয় হবে ৩৫০ কোটি ২২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৭১৩.০০ মার্কিন ডলার।

এ ছাড়া বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অপর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সৌদি আরবের মা’আদেন এবং বিএডিসির মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ১২তম (ঐচ্ছিক-১ম) লটের ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৩৫০ কোটি ২২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। প্রতি টন সারে দাম পড়বে ৭১৩.০০ মার্কিন ডলার।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস এবং বিএডিসির মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ১৩তম লটের ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৯০ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৫১৬.০০ মার্কিন ডলার।

এ ছাড়া সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ (১ম সংশোধিত)-শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্যাকেজ-৫, লট-১ (সাতক্ষীরা (১০০০০ মেট্রিক টন))-এর অধীন ১টি সাইটে গোডাউন নির্মাণকাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৫৫ কোটি ২৫ লাখ ৫৮ হাজার ৮১২ টাকা। সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান হলো মেসার্স এসএস রহমান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড।


‘দেশের চিংড়ি খাত আগামী বছরগুলোতে ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিচালক (উপসচিব) জিনাত আরা আহমেদ বলেছেন, সরকারি সহায়তা ও বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ করা গেলে দেশের চিংড়ি খাত আগামী বছরগুলোতে ৫ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে।

মঙ্গলবার খুলনা শহরের ফিশারিজ ট্রেনিং শ্রিম্প টাওয়ারে আয়োজিত ‘বাগদা ও ভেনামি চিংড়ি থেকে বৈচিত্র্যময় মূল্য সংযোজন পণ্য উৎপাদনবিষয়ক’ প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কর্মশালায় রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি এবং চিংড়ি খাত থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের সম্ভাবনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় দক্ষতা উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

জিনাত আরা আহমেদ জানান, সরকার সম্প্রতি ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমোদন দিয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে বাগদা চিংড়ির প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হার গড়ে ৫০০ কেজি হলেও ভান্নামেই চাষে প্রতি হেক্টরে ১৫,০০০ কেজি পর্যন্ত উৎপাদন সম্ভব।

বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিল (বিপিসি) এবং বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএফএফইএ-এর সহসভাপতি শেখ কামরুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিপিসির সহকারী পরিচালক পলাশ কুমার ঘোষ।

উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি আরও বলেন, চিংড়ি ও মৎস্য খাত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানিমুখী শিল্প এবং জাতীয় অর্থনীতিতে এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আশ্বাস দেন, ইপিবি চিংড়ি খাতের উন্নয়ন ও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

সভাপতির বক্তব্যে বলা হয়, চিংড়ি শিল্পে ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ যুক্ত, যার অধিকাংশই নারী। একসময় চিংড়ি ছিল বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং উচ্চফলনশীল ভেনামি চাষের অনুমোদন দীর্ঘদিন বিলম্বিত হওয়ায় উৎপাদন পিছিয়ে পড়ে- যদিও ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে চাষের সম্ভাবনা অনেক বেশি।

খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট অঞ্চলের হিমায়িত মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানার কর্মকর্তা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, হ্যাচারি কর্মী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন অংশীজন এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন।


মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচনে প্যানেল ঘোষণা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মৌলভীবাজারে চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনকে সামনে রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে প্যানেল ঘোষণা করেছে ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম।

গত সোমবার রাতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরের ভানুগাছ সড়কের স্থানীয় একটি পার্টি সেন্টারে এ প্যানেল ঘোষণা করা হয়।

মৌলভীবাজার এমসিএসের চেয়ারম্যান ও এমসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক হাসান আহমেদ জাবেদের প্যানেলের পরিচিতিসভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আব্দুর রহিম রিপন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকী, জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জ্বল ও সহসভাপতি নিয়ামুল হক তরফদার, শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন প্রমুখ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন নারী উদ্যোক্তা, শহরের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর একে একে প্যানেলের সব সদস্যকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।

পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে জেলার ব্যবসায়ীদের পক্ষে ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরামের পরিচিতি অনুষ্ঠানে প্যানেলের প্রধান হাসান আহমেদ জাবেদ বলেন, দেশের মধ্যে প্রবাসী ও চা শিল্পাঞ্চলখ্যাত মৌলভীবাজার জেলার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বিগত সরকারের আমলে প্রায় এক যুগ নির্বাচন হয়নি। অবশেষে নির্বাচনকে ঘিরে দেখা দিয়েছে উৎসাহ-উদ্দীপনা।

বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের ট্যাক্স, ভ্যাট, ব্যাংকিং, ভোক্তা অধিকারসহ ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করা হবে। তা ছাড়া নতুন উদ্যোক্তা তৈরি ও প্রবাসীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হবে।

আগামী ১১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে দ্য মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দ্বি-বার্ষিক এই নির্বাচন। নির্বাচনে সাধারণ ভোটার ৪৪৩ জন এবং অ্যাসোসিয়েট ভোটার ২২৩ জন।


শিগগিরই ৬ লাখ টন চাল ও গম আমদানি করবে সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্রুত সময়ে ৩ লাখ টন চাল এবং ৩ লাখ টন গম আমদানি করবে সরকার। এজন্য দরপত্র দাখিলের সময়সীমা পত্রিকা বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখ হতে ৪২ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিন নামিয়ে আনার প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিকবিষয়ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালাহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠক এসংক্রান্ত প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে যথাসময়ে ঝুঁকিবিহীনভাবে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৩ লাখ টন চাল আমদানি করা হবে।

এ লক্ষ্যে পিপিআর ২০২৫-এর বিধি ১০২(১) (ক) অনুযায়ী দরপত্র দাখিলের সময়সীমা পত্রিকা বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখ হতে ৪২ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিন নির্ধারণ করার একটি প্রস্তাব নিয়ে আসে খাদ্য মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৩ লাখ টন গম আমদানির কথা বলা হয়। এ ছাড়া বৈঠকে বিশ্বব্যাংক এবং বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন ‘হোস্ট অ্যান্ড এফডিএমএন এনহ্যান্সমেন্ট অব লাইভস থ্রু ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (হেল্প)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় হেল্প/ইউএন-১ প্যাকেজের কাজ ইউএন এজেন্সি আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।

জানা যায়, প্যাকেজের আওতায় কক্সবাজার জেলার দুর্যোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং এফডিএমএন এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রবেশাধিকার এবং নিরাপত্তা উন্নত করা হবে। এতে ব্যয় হবে ৩৬৩ কোটি টাকা।


বাণিজ্য ও বিনিয়োগব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে রাখবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

টেকসই বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য স্থিতিশীল সাপ্লাই চেইন প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন করা হয়েছে। যৌথভাবে এটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।

মঙ্গলবার বিডার জনসংযোগ দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে বাণিজ্য ও বিনিয়োগব্যবস্থা আরও শক্তিশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই করতে এই প্ল্যাটফর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, এলডিসি উত্তরণ বাংলাদেশের জন্য নতুন প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা গড়ে তোলার সুযোগ। দক্ষতা, মূল্যসংযোজন, গুণগত মান ও ন্যায়সংগত প্রবৃদ্ধিকে সামনে রেখে এই প্ল্যাটফর্ম সরকার, বেসরকারি খাত ও উন্নয়ন অংশীদারদের একত্র করবে, যা আমাদের অর্থনীতির নতুন অধ্যায় রচনা করবে।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, এ ক্ষেত্রে আমরা যেন স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করি এবং নিজেদের জবাবদিহির আওতায় রাখি। ২০২৬ সালের শেষে আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি তা পরিষ্কারভাবে যেন সবাই জানতে পারে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, এলডিসি উত্তরণের পথে আমরা এরই মধ্যে বিভিন্ন নীতিগত সংস্কার ও বৈশ্বিক মানের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগনীতির সামঞ্জস্য সাধনে কাজ করছি। এ প্রচেষ্টা দেশীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি ও মর্যাদাপূর্ণ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে বড় ভূমিকা রাখবে।

আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাক্স তুনিয়ন বলেন, সাপ্লাই চেইনের মূলেই থাকে মানুষ, শ্রমিক ও উদ্যোক্তারা। এই প্ল্যাটফর্ম আমাদের যৌথ সমাধান তৈরির সুযোগ দেবে, যা মর্যাদা, সুযোগ ও অন্তর্ভুক্তিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে। এলডিসি উত্তরণের সঙ্গে সঙ্গে যা মানুষের জীবনে বাস্তব পরিবর্তন আনবে।

অনুষ্ঠানে ইউএনডিপি বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ স্টেফান লিলার বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিকে আরও সবুজ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই করতে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এক প্ল্যাটফর্মে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হলো। এই উদ্যোগ জ্ঞানবিনিময়, নীতি-সমন্বয় ও দায়িত্বশীল বিনিয়োগকে আরও এগিয়ে নেবে।

এ সময়ে আইএলও এবং ইউএনডিপি উভয় সংস্থার কর্মকর্তারা বিডা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পারস্পরিক অংশীদারত্বমূলক কাজের প্রশংসা করেন। তারা জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থাসহ আরও অংশীজনকে প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। এ সময়ে তারা টিম ইউরোপ, গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডাসহ উন্নয়ন অংশীদারদের সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এই প্ল্যাটফর্ম নীতি-সংলাপ, সক্ষমতা উন্নয়ন ও জ্ঞানবিনিময়ের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। পাশাপাশি সাপ্লাই চেইন উন্নয়ন, নীতিসম্মত বিনিয়োগ, আন্তর্জাতিক শ্রমমান, টেকসই প্রবৃদ্ধি ও মর্যাদাপূর্ণ কর্মসংস্থান নিশ্চিতের মাধ্যমে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণকে সুসংহত করবে।


প্রথম চার মাসে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি বেড়েছে ১০ শতাংশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

টানা দুই বছর রপ্তানি কমে যাওয়ার পর ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয় প্রায় ২২ শতাংশ। যদিও চার মাস অর্থাৎ অক্টোবর শেষে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। রপ্তানিকারক বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় উচ্চমূল্যস্ফীতির কারণে বিশ্ববাজারে বাগদা চিংড়ির চাহিদা হ্রাস পায়। তখন বিশ্ববাজারে কম দামের ভেনামি চিংড়ির চাহিদা বেশি ছিল। বাংলাদেশে তখনো বাণিজ্যিকভাবে উচ্চফলনশীল জাতের চাষ শুরু হয়নি। ফলে হিমায়িত চিংড়ির রপ্তানি কমে যায়। তবে গত বছর আবার বাগদার চাহিদা ও রপ্তানি বাড়তে শুরু করেছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, করোনার পর ২০২১-২২ অর্থবছরে হিমায়িত চিংড়ির রপ্তানি আয় প্রায় ২৪ শতাংশ বেড়ে ৪১ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। তবে পরের বছরই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পণ্যটির রপ্তানিতে ধস নামে। রপ্তানি দাঁড়ায় ৩০ কোটি ডলারে। তার পরের ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও রপ্তানি কমে হয় প্রায় ২৫ কোটি ডলার। তবে বাড়তি ক্রয়াদেশের কারণে বিদায়ি অর্থবছরে রপ্তানি ১৯ শতাংশ বেড়ে হয় ২৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার।

চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ১২ কোটি ডলারের হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি হয়। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানি হয়েছিল ১১ কোটি ডলারের হিমায়িত চিংড়ি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের হিমায়িত চিংড়ি, কাঁকড়া ও কুঁচিয়া রপ্তানির শীর্ষ পাঁচ গন্তব্য ছিল নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে বিদায়ী অর্থবছরে শীর্ষ গন্তব্য হিসেবে উঠে এসেছে চীন। দেশটিতে রপ্তানি হয়েছে ৫ কোটি ৬৬ লাখ ডলারের পণ্য। এছাড়া নেদারল্যান্ডসে পৌনে ৫ কোটি ডলার, যুক্তরাজ্যে সাড়ে ৪ কোটি ডলার, বেলজিয়ামে ৪ কোটি ডলার, জার্মানিতে ২ কোটি ৯৬ লাখ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রে ২ কোটি ডলারের হিমায়িত চিংড়ি, কাঁকড়া ও কুঁচিয়া রপ্তানি হয়েছে।

হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তার জন্য নতুন নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানি খাতে নগদ সহায়তা পেতে জাহাজীকরণের সময় আচ্ছাদনে পরিমিত বরফসহ হিসাব দেখানো যাবে। গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়, হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানির বিপরীতে সরকারি প্রণোদনার নগদ সহায়তার জন্য বিদেশি রপ্তানির সময় প্রয়োজনীয় বরফ সরকার নির্ধারিত হারে হিসাব করা যাবে। মূলত সরকারি হিসাবে প্রথমে বরফসহ মোট পরিমাণ থেকে চিংড়ি বা মাছের ওজন বাদ দিতে হবে। সেই ফলাফলকে বরফসহ মোট পরিমাণ দিয়ে ভাগ করে সেটাকে ১০০ দ্বারা গুণ করলে সরকারি নির্ধারিত পরিমিত হিসাব পাওয়া যাবে।

জানা গেছে, যে দেশে পণ্য রপ্তানি করা হবে, কেবল সে দেশ থেকেই মূল্য প্রত্যাবাসন হতে হবে। এছাড়া ভিন্ন দেশ থেকে রপ্তানি মূল্য প্রত্যাবাসিত হলে রপ্তানি আদেশ প্রদানকারী থেকে বা রপ্তানি আদেশ প্রদানকারীর সঙ্গে সুনির্দিষ্ট ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে এমন উৎস থেকে (এক্সচেঞ্জ হাউস ব্যতীত) রপ্তানি মূল্য প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে। আর জাহাজীকৃত পণ্যের বিপরীতে নগদ সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে কার্যকর হবে।

পূর্বের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সরকারি সিদ্ধান্তক্রমে হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানি খাতে নগদ সহায়তা প্রাপ্তির জন্য আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য বা গভীর সমুদ্র থেকে জলযানে আহরিত ও প্রক্রিয়াজাত করা হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য প্রতিষ্ঠান হতে হবে। এছাড়া এখন থেকে হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তার জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অথবা বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মৎস্য অধিদপ্তরের যথাযথ লাইসেন্সপ্রাপ্ত মৎস্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হতে হবে।


নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত, বাড়তে পারে মূল্যস্ফীতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলমান অর্থনৈতিক অবস্থা, মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক খাতের সার্বিক বিশ্লেষণ শেষে নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও রমজান মাসে ভোক্তা চাহিদা বাড়তে পারে- এ বিবেচনায় সাময়িকভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ফাটকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সম্প্রতি গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি কমিটির (এমপিসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অংশ নেন এমপিসির সদস্য ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমান, চিফ ইকোনমিস্ট ড. মোহাম্মদ আখতার হোসেন, বিআইডিএস মহাপরিচালক ড. এ কে এনামুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মাসুদা ইয়াসমিন, নির্বাহী পরিচালক ড. মো. এজাজুল ইসলাম এবং সদস্য-সচিব মাহমুদ সালাহউদ্দিন নাসের।

সভায় দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, মূল্যস্ফীতি প্রবণতা, ব্যাংকিং খাতের তারল্য, নীতি সুদহার, বিনিময় হার ও বৈদেশিক খাতের চাপসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পর্যালোচনা করা হয়। কমিটি জানায়, মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমছে- সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ সার্বিক মূল্যস্ফীতি নেমে এসেছে ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশে, যা ইতিবাচক অগ্রগতি। তবে কিছু এলাকায় খাদ্যপণ্যের সরবরাহ ব্যাঘাতের কারণে দাম বাড়ার আশঙ্কাও রয়ে গেছে।

সাম্প্রতিক তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, আন্তঃব্যাংক কলমানি ও রেপো হার সামান্য কমেছে। সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ বাড়ায় সুদের চাপে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। তবে বেসরকারি খাতে ঋণচাহিদা কম, যার পেছনে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে অনিশ্চয়তার প্রভাব রয়েছে।

বৈদেশিক খাতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি মাঝারি থাকলেও আমদানি বেড়েছে। রমজানকে সামনে রেখে জরুরি পণ্যের এলসি মার্জিন শিথিল করায় আমদানি বৃদ্ধি স্বাভাবিক বলে কমিটি মনে করে। একই সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহও শক্তিশালী ছিল। এছাড়া আবহাওয়াজনিত কারণে আমন ধানের ক্ষতি, নির্বাচন, রমজান এবং সম্ভাব্য নতুন বেতন কাঠামোর প্রভাবে মূল্যস্ফীতির ওপর বাড়তি চাপ আসতে পারে বলে সতর্ক করা হয়।

সবকিছু বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি কমিটি (এমপিসি) সিদ্ধান্ত নেয় নীতি সুদহার ১০ শতাংশই থাকবে। এসডিএফ হার ৮ শতাংশ এবং এসএলএফ হার ১১ দশমিক ৫ শতাংশ রাখা হবে। কমিটি জানায়, প্রকৃত নীতিগত সুদহার ৩ শতাংশে পৌঁছানো পর্যন্ত কঠোর মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে, যাতে সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকে এবং মূল্যস্ফীতি আরও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।


চট্টগ্রাম বন্দরে ৬৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ ড্যানিশ কোম্পানির

এপিএম টার্মিনালস এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) মধ্যে রাজধানীর একটি হোটেলে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের বন্দর অবকাঠামো উন্নয়নে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক রচিত হয়েছে। ডেনমার্কভিত্তিক এপিএম টার্মিনালস—এপি মোলার-মেয়ার্স্ক গ্রুপের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল বাস্তবায়নে ৬৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ নিশ্চিত করেছে। এটি দেশের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্প এবং এককভাবে সর্ববৃহৎ ইউরোপীয় বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

সোমবার ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এপিএম টার্মিনালস ও স্থানীয় অংশীদার কিউএনএস কনটেইনার সার্ভিসেস লিমিটেডকে লেটার অব অ্যাওয়ার্ড (এলওএ) হস্তান্তর করে এ প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। পিপিপি কর্তৃপক্ষ, এপিএম টার্মিনালস ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের উচ্চপর্যায়ের অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্বখ্যাত এ.পি. মোলার-মেয়ার্স্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান রবার্ট মেয়ার্স্ক উগলা এবং ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টবিষয়ক স্টেট সেক্রেটারি লিনা গান্ডলোসে হ্যানসেন এ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে আসেন।

৩০ বছরের কনসেশন চুক্তির আওতায় সম্পূর্ণ বেসরকারি বিনিয়োগে নির্মাণ, অর্থায়ন ও পরিচালনার দায়িত্ব নেবে এপিএম টার্মিনালস। এতে সরকারের কোনো ধরনের ঋণের দায় সৃষ্টি হবে না।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লকে রাসমুসেন ভার্চুয়াল বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশ ও মেয়ার্স্কের অংশীদারিত্ব দীর্ঘদিনের। লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালে এ বিনিয়োগ বাংলাদেশের ভবিষ্যতের প্রতি আমাদের আস্থার সুদৃঢ় প্রতীক।

এপিএম টার্মিনালসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কিথ স্বেন্ডসেন বলেন, এই গ্রিনফিল্ড প্রকল্প স্থানীয় উৎপাদক, রপ্তানিকারক এবং আমদানিকারকদের কার্যক্রমে গতি আনবে এবং দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস. এম. মোনিরুজ্জামান বলেন, বন্দরকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে ধারণক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। লালদিয়া টার্মিনাল সেই প্রয়োজন পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ প্রকল্প বড় জাহাজ ভিড়ানো ও রপ্তানি কার্যক্রমকে আরও নির্ভরযোগ্য করবে। অভিজ্ঞ অপারেটর হিসেবে মেয়ার্স্ক বাস্তবসম্মত সমাধান দিতে সক্ষম হবে।

পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, এই প্রকল্প প্রমাণ করে যে দেশের পিপিপি এখন বাস্তবায়নের পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। টার্মিনাল চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা ৪৪ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনসহ সরকারি ও বেসরকারি খাতের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রকল্পের মূল সুবিধা : লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল হবে দেশের প্রথম গ্রিন ও স্মার্ট পোর্ট, যেখানে দ্বিগুণ আকারের জাহাজ ভিড়ানো ও ২৪ ঘণ্টা নাইট ন্যাভিগেশন সুবিধা থাকবে। প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে— বছরে ৮ লক্ষাধিক টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডলিং যোগ হবে (৪৪% বৃদ্ধি), সরকারের রাজস্ব ও সিপিএর আয় বাড়বে, ৫০০-৭০০ জন সরাসরি কর্মসংস্থান এবং কয়েক হাজার পরোক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিশ্বমানের এইএসএসই নীতিমালা প্রয়োগ হবে, পরিবহন ব্যয় হ্রাস পাবে এবং রপ্তানি প্রতিযোগিতা বাড়বে, সবুজ, জলবায়ু-সহনশীল বন্দর অবকাঠামো গড়ে উঠবে পাশাপাশি পিপিপি খাতে আন্তর্জাতিক আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে।


বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৭১ মিলিয়ন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ চুক্তি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে নতুন শিল্প ইউনিট স্থাপনের জন্য দুটি সম্পূর্ণ বিদেশি মালিকানাধীন কোম্পানির সঙ্গে জমি ইজারা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)।

কোম্পানিগুলো হালকা প্রকৌশল এবং গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজ উৎপাদনে ৭০ দশমিক ৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। যার মাধ্যমে ১ হাজার ১০৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং দেশের শিল্প বৈচিত্র্যকরণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।

সোমবার ঢাকাস্থ বেপজা কমপ্লেক্সে বেপজা এবং ডিজে কপার কোম্পানি লিমিটেড ও জিআরএক্স টেকনোলজি (বিডি) কোম্পানি লিমিটেড-এর মধ্যে চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হয়। বেপজার পক্ষে সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবীর এবং জিআরএক্স টেকনোলজি (বিডি) কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজ ঝ্যাং না এবং ডিজে কপার কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ঝ্যাং জুনফেং নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে নির্বাহী চেয়ারম্যান বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিশেষত বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলকে বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়ায় ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, নিরাপদ, ব্যবসাবান্ধব ও কার্যকর বিনিয়োগ পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে বেপজা বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করেছে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক এবং বেপজার ধারাবাহিক সেবার মানের কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা, বিশেষ করে চীনা বিনিয়োগকারীরা বেপজার প্রতি উচ্চ আস্থা রাখছেন। নির্বাহী চেয়ারম্যান প্রতিষ্ঠান দুটিকে বর্তমান শুষ্ক মৌসুমকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত নির্মাণকাজ শুরু করার আহ্বান জানান এবং বেপজার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা ও নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রদানের আশ্বাস দেন।

চুক্তি অনুযায়ী হংকং-চীন মালিকানাধীন ডিজে কপার কোম্পানি লিমিটেড ৫০ দশমিক ৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে কপার তার, কপার শিট, কপার হার্ডওয়্যার, ক্যাবল লাইন, ক্যাবল তার, জিপার দাঁত, ব্রাসের তার, ইলেকট্রনিক অ্যাক্সেসরিজসহ (যেমন সুইচ প্লেট, বোতাম লোগো) বিভিন্ন ধরনের লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কপার পণ্য তৈরি করবে। কোম্পানিটি তাদের অনুকূলে বরাদ্দকৃত ২১ হাজার ৬০০ বর্গমিটার জমিতে নিজস্ব কারখানা ভবন তৈরি করবে এবং ৫৩৫ জন বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ করবে।

অন্যদিকে, হংকং-চীন মালিকানাধীন আরেকটি প্রতিষ্ঠান জিআরএক্স টেকনোলজি (বিডি) কোম্পানি লিমিটেড বিভিন্ন ধরনের গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজ যেমন—জিপার, ওয়াইজি স্লাইডার, জিঙ্ক অ্যালয় স্লাইডার, বোতাম, স্ন্যাপ বোতাম, লোগো, বেল্ট বাকল ইত্যাদি উৎপাদনে ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। তারা ১৪ হাজার ৪০০ বর্গমিটার জমিতে কারখানা নির্মাণ করবে এবং ৫৭০ জন বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বেপজার সদস্য (প্রকৌশল) আবদুল্লাহ আল মামুন, সদস্য (অর্থ) আ. ন. ম. ফয়জুল হক, নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন) সমীর বিশ্বাস, বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ এনামুল হক, নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) এ. এস. এম. আনোয়ার পারভেজ এবং বেপজার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ প্রতিষ্ঠান দুটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।


পানগাঁও পিআইটিসি পরিচালনায় মেডলগের সঙ্গে চুক্তি সই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জের পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল (পিআইটিসি) পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে অভ্যন্তরীণ লজিস্টিকসে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান সুইজারল্যান্ড-ভিত্তিক মেডলগের একটি কনসেশন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

সোমবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ২২ বছর মেয়াদি এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস.এম. মনিরুজ্জামান এবং মেডলগ বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এটিএম. আনিসুল মিল্লাত তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বন্দর ব্যবস্থাপনার ইতিহাসে আজ (সোমবার) একটি স্মরণীয় দিন। ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে ঢাকার কাছে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনালের ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত চুক্তিটি বাংলাদেশের লজিস্টিক ও বাণিজ্য অবকাঠামো উন্নয়নে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছে। এটির মূল সুফলভোগী হবে মূলত আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। যারা একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে। আজকের (সোমবার) এই বিনিয়োগ আমাদের স্বপ্নবান তরুণ প্রজন্মের জন্য। বাংলাদেশের লজিস্টিক খাতের ভবিষ্যৎ বদলে দেবে মেডলগ টার্মিনাল চুক্তি।

উপদেষ্টা আরও বলেন, মেডলগের বিশ্বব্যাপী দক্ষতা কাজে লাগিয়ে এবং আমাদের কৌশলগত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারব এবং অভ্যন্তরীণ লজিস্টিকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে এ অঞ্চলের শীর্ষস্থানে নিয়ে যেতে পারব।

উল্লেখ্য, নতুন চুক্তির আওতায়, মেডলগ এসএ তার স্থানীয় প্রতিষ্ঠান মেডলগ বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনালের কার্যক্রম, সরবরাহ ও অটোমেশন তত্ত্বাবধান করবে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ লজিস্টিক্সকে সর্বোত্তম করার জন্য এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য বৈশ্বিক দক্ষতা ও উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে আসবে এখানে।

এই অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যে সহায়তা দেওয়ার জন্য মেডলগ টার্মিনালের সুবিধাগুলো বাড়াবে এবং এখানকার বার্ষিক হ্যান্ডলিং ক্ষমতা ১ লাখ ৬০ হাজার টিইইউয়ে পর্যন্ত উন্নীত করা হবে।

মাল্টিমোডাল সংযোগ জোরদার করার জন্য পানগাঁওকে অন্যান্য নৌবন্দর ও সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করতে মেডলগ অভ্যন্তরীণ বার্জ ভাড়া করবে।

বার্জগুলো বৃহৎ আকারের পণ্যও পরিবহন করবে এবং অন্যদিকে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও রিফার যানবাহন অঞ্চলজুড়ে অতিরিক্ত সরবরাহ চ্যানেল খুলবে। এতে করে উন্নত আন্তঃমোডাল পরিবহন অভ্যন্তরীণ পণ্য পরিবহনের সঙ্গে সম্পর্কিত অনিশ্চয়তা কমাবে এবং লিড টাইম নিশ্চিত করবে, যা স্থানীয় আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের জন্য বড় সহায়ক হবে বলে বিবেচিত হবে।

এখানে যে সুবিধাগুলো থাকবে তা হলো- পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনালের সরঞ্জাম, দুটি মোবাইল হারবার ক্রেন, রিফার কানেকশন এবং ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহের পাশাপাশি একটি খালি কনটেইনার স্টোরেজ, মেরামত ইয়ার্ড এবং স্টাফিং ও স্ট্রিপিংয়ের জন্য ১০ হাজার বর্গমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত কনটেইনার ফ্রেইট স্টেশন। টার্মিনাল-সংলগ্ন জমিতে তুলা গুদামজাতকরণ এবং ড্রাই স্টোরেজ ডিস্ট্রিবিউশনের উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে, যা আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের জন্য বিশেষ সুবিধা হবে।


আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমেছে জ্বালানি তেলের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

রাশিয়ার নভোরোসিস্ক বন্দরে দুই দিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় তেল রপ্তানি শুরু হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

সোমবার ব্রেন্ট ক্রুড প্রতি ব্যারেল ৫৩ সেন্ট কমে ৬৩ দশমিক ৮৬ ডলারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউটিআই প্রতি ব্যারেল ৫৬ সেন্ট কমে ৫৯ দশমিক ৫৩ ডলারে পৌঁছেছে।

গত সপ্তাহে নভোরোসিস্ক এবং ক্যাসপিয়ান পাইপলাইন কনসোর্টিয়াম টার্মিনালে রপ্তানি বন্ধ থাকায় দাম কিছুটা বেড়েছিল। তবে ইউক্রেনের হামলার কারণে রাশিয়ার জ্বালানি তেল অবকাঠামোর ওপর ঝুঁকি এখনো রয়ে গেছে।

সম্প্রতি রিয়াজান ও নভোকুইবিসেভস্ক জ্বালানি তেল পরিশোধনাগারে হামলার খবর পাওয়া গেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ওপেক প্লাস উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে দাম প্রতি ব্যারেলের মধ্যে ৬০-৬৫ ডলারের সীমায় ওঠানামা করতে পারে। বিনিয়োগকারীরা সরবরাহ ঝুঁকি এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাবও খতিয়ে দেখছেন। যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেল খনন যন্ত্রের সংখ্যা বেড়ে ৪১৭ হয়েছে।

সর্বোপরি, বাজারে জ্বালানি তেলের সরবরাহ যথেষ্ট থাকলেও ইউক্রেন ও ইরানের কর্মকাণ্ড এবং নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ভবিষ্যতের দামকে প্রভাবিত করতে পারে।

বিনিয়োগকারীরা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার সরবরাহ ও বাণিজ্যপ্রবাহে কী প্রভাব ফেলছে, সেটিও নজরে রাখছেন। যুক্তরাষ্ট্র ২১ নভেম্বরের পর রুশ কোম্পানি লুকঅয়েলের সঙ্গে যেকোনো ধরনের চুক্তি নিষিদ্ধ করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তি আলোচনায় মস্কোকে চাপ দিতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।


মোংলা বন্দরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা গম খালাস শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ৬০ হাজার ৮৭৫ মেট্রিক টন গমের খালাস গাতকলা রোববার মোংলা বন্দরে শুরু হয়েছে। পরীক্ষাগারে গুণগত মান যাচাই শেষে খালাস কার্যক্রম শুরু হয় বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

মোংলার সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান সরদার জানান, জাহাজটি গত শুক্রবার বিকেলে মোংলা বন্দরের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় নোঙর করে। চালান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় এবং মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর গম খালাসের অনুমতি দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, মোট আমদানি করা গমের মধ্যে ৩৫ হাজার ৭৫ মেট্রিক টন মোংলা খাদ্য গুদামে সংরক্ষণ করা হবে। বাকি অংশ খুলনা, বরিশাল ও রাজশাহীতে পাঠানো হবে।

তিনি আরও জানান, জাহাজটি আকারে বড় এবং গভীর ড্রাফট থাকায় ফেয়ারওয়ে থেকেই খালাস কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

এই কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের ভিত্তিতে নগদ ক্রয় চুক্তির আওতায় গমের এ চালান এসেছে।

মোংলা বন্দরে এ ধরনের বৃহৎ গমের চালান এই প্রথমবার সরাসরি এসেছে। এর আগে গমের চালান চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে মোংলায় পৌঁছাত বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র জি-টু-জি ব্যবস্থার আওতায় বাংলাদেশ মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করবে। এর মধ্যে ইতোমধ্যে তিনটি চালানে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৬৩৬ মেট্রিক টন গম বাংলাদেশে পৌঁছেছে।


ইসলামী ব্যাংকিং খাত শক্তিশালীভাবে গড়তে ভালো নিরীক্ষা প্রয়োজন: গভর্নর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দেশের ইসলামী ব্যাংকিং খাত শক্তিশালীভাবে গড়ে তুলতে ভালো হিসাবরক্ষণ, সুশাসন ও নিরীক্ষা কার্যক্রম প্রয়োজন।

তিনি বলেন, উচ্চমানের নিরীক্ষা মানদণ্ড অনুসরণ করা প্রচলিত ও ইসলামী-উভয় ধরনের ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের ইসলামী অর্থনীতির জন্য ভালো হিসাবরক্ষণ, সুশাসন এবং নিরীক্ষা প্রয়োজন।

রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ ইসলামিক ফিন্যান্স সামিট-২০২৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি ইসলামী ব্যাংকিং আইন প্রণয়নে কাজ করছে এবং তারা সর্বোত্তম আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করতে চায়।

তিনি বলেন, ‘দেশে ইসলামী ব্যাংকিংকে শক্তিশালী করতে ভালো হিসাবরক্ষণ, সুশাসন ও প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি ইসলামী ব্যাংকিং আইন প্রণয়নে কাজ করছে এবং আমরা সর্বোত্তম আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করতে চাই।’

গভর্নর আরও বলেন, ‘ভালো নিরীক্ষা বাংলাদেশের ইসলামী অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে পারে।’

তিনি স্বীকার করেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী ব্যাংকিং খাত একটি অস্থির সময় পার করেছে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, খাতটি কাঠামোগতভাবে শক্তিশালী এবং এখনো বাজারে অনেক খাতের তুলনায় ভালো করছে।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী ইসলামী অর্থনীতি ভালো করছে। বাংলাদেশে আমরা আরও ভালো অবস্থানে থাকতে পারতাম যদি অস্থির সময় না আসত। তবুও আমরা খাতটির প্রতি আস্থা রাখি এবং আমানতকারীরাও ধীরে ধীরে আস্থা ফিরে পাচ্ছেন।’

আহসান জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক সমস্যাগ্রস্ত ইসলামী ব্যাংকগুলো পুনর্গঠন ও পুনর্বিন্যাসে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং ইতোমধ্যে কিছু ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে।

দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, ব্যাংকটি ভালোভাবে চলছে এবং সবচেয়ে বড় গ্রাহকভিত্তিক রয়েছে, তবে অনিয়ম এখনো বড় উদ্বেগের বিষয়।

তিনি উল্লেখ করেন, একটি একক পরিবারের মাধ্যমে আইবিবিএল থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছিল, যা ব্যাংকটির সম্পদের ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করে।

‘এই উদ্বেগজনক তথ্য পাওয়ার পরও মানুষ আইবিবিএলের ওপর আস্থা রেখেছে’- উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, আইবিবিএল তীব্র তারল্য সংকটের সম্মুখীন হয়েছিল। কিন্তু এখন তা কাটিয়ে উঠেছে। এমনকি এ বছর ইসলামী ব্যাংকিং খাতে সর্বোচ্চ আমানত প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা এই শিল্পের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত।

তিনি আরও বলেন, ‘তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোর জন্য একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য আমাদের এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।’

‘আমরা আশা করি পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা দায়িত্বশীল ও প্রতিনিধিত্বমূলক হবেন।’

খাতটির ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে গভর্নর বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং একটি সুশৃঙ্খল, সুশাসিত ও টেকসই পথে এগিয়ে যাক।


banner close