শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫
২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
সাক্ষাৎকার

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুপারশপের প্রসার, পরিধি বাড়াতে হবে: সাব্বির নাসির 

স্বপ্নের সিইও
আপডেটেড
১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৫:৩৫
সুলতান আহমেদ
প্রকাশিত
সুলতান আহমেদ
প্রকাশিত : ১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৫:৩৪

মধ্য কিংবা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার জায়গা এখন নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম বা উচ্চমূল্যস্ফীতি। কেন দফায় দফায় দাম বাড়ছে তা নিয়ে যখন সবাই উদ্বিগ্ন, তখন দেশের বৃহৎ চেইন সুপারশপ ‘স্বপ্ন’র প্রধান নির্বাহী সাব্বির হাসান নাসির দৈনিক বাংলার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, কৃষক, উৎপাদক, আমদানিকারক থেকে শুরু করে খুচরা দোকান পর্যন্ত সর্বত্রই সমন্বিত নীতিমালার অভাব। তিনি আরও বলেন, জবাবদিহি বাড়াতে হলে পুরো প্রক্রিয়াকে উন্নত বিশ্বের আদলে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হবে। এ জন্য দেশের সুপারশপগুলো বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে তিনি মনে করেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দৈনিক বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার সুলতান আহমেদ

বাংলাদেশের মতো কম আয়ের দেশে সুপারশপের ভবিষ্যৎ কী?

সাব্বির হাসান নাসির : বাংলাদেশে সুপারশপের ব্যবসা ‘আগোরা’র হাত দিয়ে শুরু হয়। শুরুতে খুব এলিট ক্লাসের গ্রাহকরা শুধু এখানে কেনাকাটা করতে আসতেন । ঢাকার অভিজাত এলাকায় ছিল তাঁদের আউটলেট । এরপর ‘স্বপ্ন’সহ অন্যান্য কিছু ব্র্যান্ড ‘সুপারশপ ফর অল’ এ ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করে। ২০১২ সালের দিকে এটা বিস্তৃত হতে শুরু করে, তখনো পুরো মার্কেটের শূন্য দশমিক তিন শতাংশ ছিল সুপারশপের দখলে, যা এখন ২ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ পুরো মার্কেটে যত বেচা-বিক্রি হয়, তার মাত্র ২ শতাংশ এখন সুপারশপের হাতে। অন্যান্য দেশের কথা যদি বলি, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এর মার্কেট শেয়ার ৮ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৪৩ শতাংশ, ফাস্ট ওয়ার্ল্ডে ৬০/৭০ শতাংশ, কোথাও কোথাও ৮০/৯০ শতাংশ। উন্নত বিশ্বে এত বেশি হওয়ার পেছনে একটা কারণ মাথাপিছু আয়। মাথাপিছু আয় যত বাড়ে সুপারশপের পরিধি তত বাড়ে। কারণ গ্রাহকের কাছে তখন স্বাস্থ্য সচেতনতা, বাজারের পরিবেশ ও সময়ের দাম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে সরকারের স্বদিচ্ছা। সরকার যদি আসলেই চায় মডার্ন ট্রেড গড়ে তুলতে, যেখানে জবাবদিহি থাকবে, তাহলে সেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে ব্যাংক, প্রাইভেট ইক্যুইটি ও প্রাইভেট সেক্টরের অংশগ্রহণ। অর্থাৎ বড় বিনিয়োগকারীদের এ খাতে এগিয়ে আসা। আমাদের দেশে মাথাপিছু আয় বাড়ছে, এখন প্রশ্ন আসবে সরকার সত্যিকার অর্থেই চায় কি না মডার্ন ট্রেডের বিকাশ হোক। আমরা যদি মাথাপিছু আয় ভারতের সঙ্গে তুলনা করি তাহলে আমাদের বাজারের অন্তত ৫/৬ শতাংশ শেয়ার থাকার কথা ছিল সুপারশপের দখলে। এখানেই প্রশ্ন আসে, সরকার কি সত্যিকার অর্থেই চায় এই সেক্টরের উন্নয়ন করতে? আমার কাছে মনে হয় না তারা সেটা চায় ।

কেন আপনার মনে হচ্ছে সরকার চায় না?

সাব্বির হাসান নাসির: কারণটা খুব পরিষ্কার। যদি তারা সত্যিকার অর্থেই চাইত তাহলে শুধু সুপারশপের ওপর ৫% হারে ভ্যাটের ব্যারিয়ার দিয়ে রাখত না। বাইরে থেকে কিছু কিনলে আপনার কোনো ভ্যাট নেই অথচ সুপারশপ থেকে নিলে ৫ শতাংশ ভ্যাট। আমাদের এই ৫% ভ্যাট অনেক ক্ষেত্রেই ডিসকাউন্ট দিতে হয়, যা প্রফিট মার্জিনকে অনেক নাজুক করে দেয়। যদি সরকার চাইত তাহলে আমাদের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করত, এভাবে বৈষম্য করত না। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, কেন সরকার এটা করছে না? সে প্রশ্নের উত্তরে আমার কাছে যেটা মনে হয়, তা হচ্ছে সরকার একপ্রকার ভয় পায় যে, ইনফরমাল বাজার ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, সুপারশপের প্রসার বাড়লে সেটা না উচ্ছেদ হয়ে যায়। সেখানে যে প্রচুর কর্মসংস্থান হয়েছে, তা বন্ধ হয়ে যায় কি না। আবার সরকার এটাও ভাবতে পারে যে, সুপারশপ তো বড়লোকদের বাজার, এখানে যাঁরা বাজার করেন ৫ শতাংশ ভ্যাট তাদের কাছে কোনো বিষয়ই না। সুপারশপ এখন আর সাধারণের বিলাসিতা নয়। একটা নারীর নিরাপদ বাজার, মধ্যবিত্তের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সম্ভার। আমি মনে করি, সরকারের এখন ভাবা উচিত ১৮ বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রিতে জবাবদিহি আনা গেলে মূল্যস্ফীতি সহজেই কন্ট্রোল করা সম্ভব। এ ছাড়া, ফুড সেফটি নিশ্চিত করতে চাইলে সুপারশপের বিকল্প নেই। খোলাবাজারে আপনি সহজে কাউকে ধরতে পারছেন না, এখানে তো চার-পাঁচজন রিটেইল কোম্পানিকে জবাবদিহিতায় আনতে পারছেন। আবার যদি ভ্যালু চেইনের স্বচ্ছতার প্রশ্ন আসে, তাহলে হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানিকে নিয়ন্ত্রণ করা পুরো বাজার নিয়ন্ত্রণের চেয়ে অনেক বেশি সহজ। পুরো পৃথিবীতে এ কারণেই সুপারশপ ব্যবস্থা এত জনপ্রিয়। শুধু তাই নয়, এটা একধরনের সভ্যতা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকও। তবে আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা সেখানে যেতে পারছি না। বড় কোম্পানিগুলোকে দেখুন তারাও খুব বেশি আসছে না এখানে বিনিয়োগ করতে। তারা ভাবছে এখানে লাভ করা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। আবার ব্যাংকগুলোও অনেক ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখাচ্ছে না এ খাতে ঋণ দিতে।

অনেক গ্রাহকের এমনকি ভোক্তা অধিদপ্তরেরও অভিযোগ রয়েছে সুপারশপে দাম বেশি। আপনি বলছেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে পারে সুপারস্টোর, কীভাবে?

সাব্বির হাসান নাসির: এটা ওনাদের ভুল ধারণা। আমি বলব প্রাইসিং কীভাবে হয়, কীভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়ে তা না জেনেই এমন অভিযোগ করা হয়েছে। মনে করেন, পেঁয়াজ কিংবা আলু যা নিয়ে এখন খুব আলোচনা হচ্ছে। আমরা কখনই পাইনি এসব চাষ করে কৃষক খুব লাভ করেছে। আবার যারা খুচরা ব্যবসা করছে তারাও এটা করে বাড়ি-গাড়ি করছে তাও নয়। তাহলে বাড়তি দাম যাচ্ছে কোথায়? রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি ও টাকার অবমূল্যায়নে প্রভাব ফেলেছে বাংলাদেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতিতে। বাজারে আমাদের শেয়ার মাত্র ২ শতাংশ, তাহলে আমরা কীভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়াতে পারি? সরকারের উচিত ভ্যালু চেইনের সব স্টেকহোল্ডারদের তথ্য নিয়ে, ডেটা নিয়ে কাজ করে সমন্বিত নীতিমালা তৈরি করা।

আপনি বলছিলেন মূল্যস্ফীতি কমানোর কথাও- সেটা কীভাবে?

সাব্বির হাসান নাসির: আপনি দেখবেন আমরা প্রচুর মূল্যছাড় দিই। আমরা যেহেতু একটা বড় অ্যামাউন্ট একসঙ্গে কিনি তাই কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আমরা বার্গেনিং করে কিছুটা কমে কিনতে পারি। আমাদের মডার্ন ট্রেডের শেয়ার এখনো অনেক কম। এই সীমিত শেয়ার নিয়েও আমরা যেসব ছাড় দিচ্ছি, তা অনেক পণ্যের ক্ষেত্রেই বাজার থেকে অনেক অনেক কম। আমাদের শেয়ার আরও বাড়লে বাজার ব্যবস্থার ওপর আমাদের ও সরকারের নিয়ন্ত্রণ সহজ হতো।

গ্রাহকদের অভিযোগ রয়েছে, সুপারশপে ফ্রেশ পণ্য পাওয়া যায় না। সেটা কেন?

সাব্বির হাসান নাসির: আমাদের অধিকাংশ কৃষিপণ্য আমরা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকেই কিনে থাকি। তবে আমরা ফ্রেশ রাখার জন্য কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করি না। এ জন্য বাজারের মতো হয়তো ফ্রেশ মনে হয় না। এ ছাড়া মাংসের মধ্যে দেখবেন আমরা কোনো ওয়াটারিং করি না, যেটা বাজারে পাবেন। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করি ফ্রেশ রাখার জন্য।

আপনি ভ্যাট বৈষম্যের কথা বলছিলেন, এখনো ইসিআর মেশিন সব ব্যবসায়ীকে দেয়া সম্ভব হয়নি। তাহলে ভ্যাটের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা কীভাবে আসবে?

সাব্বির হাসান নাসির: দেখুন ইসিআর মেশিন প্রজেক্ট বহু আগে থেকেই শুরু হয়েছে। এনবিআর চেষ্টা করে যাচ্ছে সব ব্যবসায়ীর কাছে এটা পৌঁছে দিতে। সত্যি বলতে এ কাজটা সহজ নয়, বেশ কঠিন। আমি বহু আগেই বলেছিলাম এত ঝামেলা না করে উৎপাদন পর্যায়ে সরাসরি ৫% ভ্যাট বসিয়ে দিতে। কিন্তু এনবিআর তা করেনি। এটা করতে পারলে ভ্যাট আদায় নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকত না। আদায় কয়েকশ গুণ বেড়ে যেত, স্বচ্ছতাও নিশ্চিত হতো। ইন্ডিয়াতে এ ব্যবস্থা জিএসটিতে রয়েছে।

স্বপ্নের সফলতা আসে আপনার হাত ধরে, গ্রাহকদের উদ্দেশে কী বলবেন?

সাব্বির হাসান নাসির: আমরা স্বপ্ন করেছি মূলত মধ্যবিত্ত গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে। আমরা এটা অনুভব করি মধ্যবিত্ত মানুষ এখন বেশ কষ্টে রয়েছে। তাদের কষ্ট কীভাবে লাঘব করা যায়, সেটা সবসময় আমাদের ভাবনায় থাকে। আমরা গ্রাহকদের সেন্টিমেন্ট বোঝার চেষ্টা করি, তারা কী ধরনের পণ্য কিংবা অফার প্রত্যাশা করেন, তা নিয়ে ভাবি। এ জন্য দেখবেন স্বপ্নের ডিসকাউন্ট অফার সবচেয়ে বেশি। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, আমাদের মতো কম দামে আপনি খোলাবাজারে অনেক পণ্য পাবেন না। শুধু তাই না, আমরা প্রতিটি কাস্টমারের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করি। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, আমরা পণ্যের কোয়ালিটি নিয়ে বিন্দুমাত্র কম্প্রোমাইজ করি না। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনেই পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে স্বপ্ন। তাই বলব, স্বপ্নের সঙ্গে থাকুন। এটা আপনাদের প্রতিষ্ঠান। নিজেদের ভেবে স্বপ্নে কেনাকাটা করুন, পরামর্শ দিয়ে স্টোর ম্যানেজমেন্টকে আরও গ্রাহকমুখী ও নির্ভুল করতে সাহায্য করুন। স্বপ্ন নিয়ে বাঁচুন।


ফিজি ও টোঙ্গার জন্য বিশ্বব্যাংক ও এডিবির যুগান্তকারী প্রকল্প ঘোষণা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্বব্যাংক (ডব্লিউবি) ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রথমবারের মতো প্রশান্ত মহাসাগরীয় দুই দ্বীপরাষ্ট্রে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও অবকাঠামো উন্নয়নে দু’টি বড় প্রকল্প ঘোষণা করেছে।

মোট ২৩ কোটি ৬৫ লাখ মার্কিন ডলারের এই প্রকল্পগুলো ‘ফুল মিউচুয়াল রিলায়েন্স ফ্রেমওয়ার্ক’ নামে উদ্ভাবনী যৌথ অর্থায়ন মডেলের আওতায় বাস্তবায়িত হবে। লক্ষ্য হলো উন্নয়ন কার্যক্রমকে আরও দ্রুত ও ফলপ্রসূ করা।

এডিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা এবং এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতো কান্দা আজ ফিজি ও টোঙ্গার জন্য এসব প্রকল্প ঘোষণা করেন।

ফিজিতে বিশ্বব্যাংক নেতৃত্বাধীন স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন করা হবে। পাশাপাশি একটি অত্যাধুনিক আঞ্চলিক হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। এর ফলে ক্যানসার, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির চিকিৎসা পুরো প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আরও সহজলভ্য হবে।

অন্যদিকে, টোঙ্গায় এডিবি নেতৃত্বাধীন ‘সাসটেইনেবল ইকোনমিক করিডোরস অ্যান্ড আরবান রেজিলিয়েন্স (এসইসিইউআরই)’ প্রকল্পের আওতায় পরিবহন, নগর ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের উন্নয়ন করা হবে।

এ প্রকল্পে ৭২০ মিটার দীর্ঘ ফাঙ্গা’উতা লেগুন সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। বিনিয়োগের ফলে যানজট কমবে, গ্রামীণ মানুষের বাজারে পৌঁছানো সহজ হবে এবং বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর সঙ্গে সংযোগ আরও মজবুত হবে। পাশাপাশি সুনামিসহ বিভিন্ন দুর্যোগকালে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার রুটও নিশ্চিত হবে।

এডিবি প্রেসিডেন্ট মাসাতো কান্দা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য উন্নয়ন অর্থায়নকে আরও সহজ, দ্রুত ও কার্যকর করা।’

বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা বলেন, এই ফ্রেমওয়ার্ক বিশ্বব্যাংক ও এডিবির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। আর যেসব দেশ ও জনগোষ্ঠী বাস্তব উন্নয়ন ফলাফলের জন্য তাদের ওপর নির্ভর করে, তাদের জন্য এর তাৎপর্য আরও বেশি।


পাট খাতের ভুলের পুনরাবৃত্তি বস্ত্র খাতে হবে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জাতীয় বস্ত্র দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য প্রদান করেন। ছবি : পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, পাট শিল্পের অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের দিকে যেতে চাই। পাট খাতের ভুলের পুনরাবৃত্তি বস্ত্র খাতে হবে না।

তিনি বলেন, ‘পাট শিল্পে অতীতে অদক্ষতা, অযোগ্যতা, দুর্বৃত্তায়ন ও অব্যবস্থাপনার কারণে শিল্পটি ধ্বংসের মুখে পড়েছে। রঙিন স্বপ্ন দেখানো হয়েছে, যার সঙ্গে বাস্তবতার কোন মিল নেই। কিছু অর্জন করতে না পেরেই স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল।’

পাট শিল্পে অতীতে যে ভুল হয়েছে, বস্ত্র খাতে সেই ভুল পুনরায় না করার আশ্বাস দিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আবেগের বশবর্তী হয়ে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নেব না। আমাদের সিদ্ধান্ত হবে বাস্তবতার নিরিখে।’

বৃহস্পতিবার ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস-২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারে আয়োজিত ‘রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড রেইনভেনশন: ক্রিয়েটিং স্কিল্ড প্রফেশনালস ফর দ্য টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল সেক্টর অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বস্ত্র ও পাট সচিব বিলকিস জাহান রিমি। এবারের জাতীয় বস্ত্র দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বস্ত্র শিল্পের প্রবৃদ্ধি, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি’।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, দেশের বস্ত্র খাত এখন শুধু একটা শিল্প নয়, বরং অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। এই শিল্প দেশের প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে বিরাট ভূমিকা রাখছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি অর্জন করতে চাই। এই লক্ষ্য পূরণে শিল্প, একাডেমিয়া ও নীতিনির্ধারকদের একত্রে কাজ করতে হবে। সক্ষমতা বৃদ্ধি না করতে পারলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়তে পারে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে দক্ষ জনসম্পদ গড়ে তোলা জরুরি। মধ্যপ্রাচ্যের আছে ক্রুড অয়েল, আর আমাদের আছে ১৮ কোটি মানুষ। এই মানবসম্পদকে দক্ষ করে তুলতে পারলে বস্ত্রশিল্প আরো সমৃদ্ধ হবে এবং অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।

পরিবেশবান্ধব পাটের ব্যাগ নিয়ে তিনি বলেন, সরকার একটি বড় উদ্যোগ নিয়েছে। ১ হাজার ৬০০ এর বেশি উদ্যোক্তাকে নিয়ে জলবায়ু ফান্ডের আওতায় একটি রিভলভিং ফান্ড গঠন করা হয়েছে। এখান থেকে পাটপণ্য কিনে পুনরায় বিক্রি করা হচ্ছে, যা বাজারে সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করছে।

তিনি বলেন, এবারের বাণিজ্য মেলায় ১০ লাখ পাটের ব্যাগ বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশীয় ঐতিহ্যের পাটের ব্যাগকে আবার মূলধারায় ফিরিয়ে আনাই সরকারের লক্ষ্য।


ঢাকায় চামড়া শিল্পের প্রযুক্তি প্রদর্শনী শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চামড়া শিল্প, জুতা তৈরির যন্ত্রপাতি, জুতার বিভিন্ন উপকরণ, রাসায়নিক ও আনুষঙ্গিক পণ্যের সমাহার নিয়ে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ‘লেদারটেক বাংলাদেশ’। রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) এক্সপো ভিলেজে বৃহস্পতিবার এ আয়োজনের ১১তম আসরের উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর। আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশসহ চীন, ভারত ও পাকিস্তানের শিল্প সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ‘বাংলাদেশে চামড়া শিল্প এখনো তার পূর্ণ সম্ভাবনার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে। ‘লেদারটেক’ এর মতো প্রদর্শনী শুধু প্রদর্শনীই নয়, বরং সেই সম্ভাবনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চমৎকার প্রয়াস। চামড়া শিল্প যে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করতে প্রস্তুত, এ ধরনের আয়োজন আমাদের সে বার্তাই দেয়।

সরকারি-বেসরকারি প্রচেষ্টা সমন্বয় করে বাংলাদেশের চামড়া শিল্প আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলে আমি প্রত্যাশা করি’।

লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘চামড়া শিল্পে বাংলাদেশ এখন রপ্তানি-ভিত্তিক উৎপাদন ত্বরান্বিত করার এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। পরবর্তী পর্যায়ে যেতে হলে নীতিগত সহায়তা অত্যন্ত জরুরি। আমাদের দেশ ও প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সঠিক সংযোগ তৈরি করতে পারলে চামড়াশিল্পের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে’।

বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস এবং ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন বলেন, ‘চামড়াজাত পণ্য আমাদের দেশের একটি সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাত। ‘লেদারটেক’ এর মতো আয়োজন আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের অবস্থান আরো শক্তিশালী করতে সহযোগিতা করছে’।

আয়োজক প্রতিষ্ঠান এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশনস প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু সুলতান ভূঁইয়া বলেন, ‘এবারের আসরে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও চীনসহ মোট আটটি দেশ থেকে আসা প্রায় ২০০ টি কোম্পানি তাদের পণ্য প্রদর্শন করবেন। আয়োজনে কাউন্সিল ফর লেদার এক্সপোর্টস ইন্ডিয়া (সিএলই), পাকিস্তান ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (পিটিএ), ইন্ডিয়া ফুটওয়্যার কম্পোনেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (ইফকোমা) সহ চীনের গুয়াংডং সু-মেকিং মেশিনারি অ্যাসোসিয়েশনের (জিএসএমএ) পৃথক পৃথক প্যাভিলিয়ন থাকছে। এছাড়া, প্রদর্শনীর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে দেশের অন্যতম প্রধান শিল্প সংগঠনগুলো। যার মধ্যে প্রদর্শনীর বিবিধ বিষয়ে সহায়তা প্রদান করছে এলএফএমইএবি।’

‘লেদারটেক বাংলাদেশ’-এর যাত্রা শুরু হয় ১১ বছর আগে। শুরুতে এটি ছিল একটি প্রযুক্তি প্রদর্শনী প্ল্যাটফর্ম যার লক্ষ্য ছিলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে জুতা, ভ্রমণ আনুষাঙ্গিক এবং সংশিস্নষ্ট পণ্যের উত্পাদন প্রযুক্তিকে দেশের শিল্প উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। সময়ের সঙ্গে এই আয়োজনটি বাংলাদেশের চামড়া, জুতা এবং সংশিস্নষ্ট খাতের উদ্ভাবন ও বাজার সম্প্রসারণের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। গত এক দশকে ‘লেদারটেক বাংলাদেশ’ চামড়া শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।

তৈরি পোশাকের পরই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত চামড়া ও জুতা শিল্পের অবস্থান। বিশ্ববাজারের চামড়াজাত পণ্যের ৩ শতাংশ এবং বৈশ্বিক চামড়ার মোট চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশ পূরণ করে এই শিল্প। শিল্পনীতি ২০২২ এ রপ্তানি বহুমুখীকরণের অগ্রাধিকার খাত হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায়, খাতটি এখন বৈশ্বিক উেসর একটি শক্তিশালী কেন্দ্র হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অক্টোবর শেষে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে চামড়া ও জুতা শিল্প। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় খাতটিতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। এ সময়ে চামড়া ও জুতা শিল্পের রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৫৯১.৫ মিলিয়ন ডলার, যা ছিল ৫৩৯.৪ মিলিয়ন ডলার। বেশ কয়েক মাসের অস্থিরতা কাটিয়ে এ খাত ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হয়ে উঠছে। এর মাধ্যমে রপ্তানি বহুমুখীকরণের পাশাপাশি টেকসই ও বৈশ্বিক উত্স হিসেবে দৃঢ় অবস্থান তৈরি করছে দেশের চামড়া ও জুতা শিল্প।

প্রদর্শনী চলবে ৪ ডিসেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর, সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। ব্যবসায়িক দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন।


টানা চার মাস রপ্তানি আয়ে পতন, নভেম্বরে কমেছে ৫.৫৪ শতাংশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ কম।

আজ বৃহস্পতিবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এ তথ্য জানিয়েছে। এ নিয়ে টানা চতুর্থ মাস রপ্তানি আয় কমলো।

জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।

জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।

নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।

পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।

তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।

সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?

বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।


জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের সঙ্গে রিহ্যাব নেতাদের সাক্ষাৎ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ফেরদৌসী বেগমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) নেতারা। রিহ্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূঁইয়ার নেতৃত্বে রিহ্যাবের ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন।

এ সময় রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আক্তার বিশ্বাস, ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জি. আব্দুল লতিফ, রিহ্যাব পরিচালক এ.এফ.এম. ওবায়দুল্লাহ, মিঞা সেলিম রাজা পিন্টু, মিরাজ মোক্তাদির এবং শেখ কামাল উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকালে সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী ফ্ল্যাট নির্মাণ এবং পিপিপি পদ্ধতিতে ফ্ল্যাট তৈরি করার জন্য রিহ্যাব সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।

সাক্ষাতে আবাসন খাতের চলমান সংকট নিরসন, সেল পারমিশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন দ্রুততর সময়ের কার্যকর করা এবং রিহ্যাব ফেয়ারসহ আবাসন খাতের বিভিন্ন কাজের সার্বিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়।

রিহ্যাব নেতারা জানান, আবাসন খাত দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তবে ঋণের উচ্চসুদ এবং নীতিগত জটিলতার কারণে খাতটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে সরকারি সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি বলে তারা মত দেন।

জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, সরকার আবাসন খাতকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা অব্যাহত রাখবে। সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী ও মানসম্মত আবাসন নিশ্চিত করতেই সরকার ও বেসরকারি খাতকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সাক্ষাৎ শেষে উভয় পক্ষ ভবিষ্যতে আরো সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।


স্মার্টফোনের আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানির শুল্কহার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের সচিবালয়ের অফিস কক্ষে গত ১ ডিসেম্বর তারিখে বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানির শুল্কহার কমানোর বিষয়ে এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসির মধ্যকার সভায় এ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হলো- প্রবাসীরা দেশে ছুটি কাটানোর সময়ে ৬০ দিন পর্যন্ত স্মার্টফোন রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন, ৬০ দিনের বেশি থাকলেই মোবাইল ফোন রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, প্রবাসীদের মধ্যে যাদের বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড আছে, তারা ফ্রিতে মোট তিনটি ফোন সঙ্গে আনতে পারবেন।

অর্থাৎ যেসব প্রবাসীর বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড আছে, তারা তাদের নিজের ব্যবহারের হ্যান্ডসেটের অতিরিক্ত দুটি নতুন ফোন সঙ্গে নিয়ে আসতে পারবেন ফ্রিতে। চতুর্থ ফোনের ক্ষেত্রে তাদের ট্যাক্স দিতে হবে।

যেসব প্রবাসীর বিএমইটি কার্ড নেই, তারা নিজের ব্যবহারের ফোনের পাশাপাশি অতিরিক্ত একটি ফোন ফ্রিতে আনতে পারবেন।

এ ক্ষেত্রে মোবাইল ক্রয়ের বৈধ কাগজটি নিজের সঙ্গে রাখতে হবে। কেননা মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন বিমানবন্দরে চোরাচালানিরা সাধারণ প্রবাসীদের চাপাচাপি করে স্বর্ণ ও দামি মোবাইল ফোন ইত্যাদির শুল্কহীন পাচারে লিপ্ত রয়েছে।

চোরাচালানিদের এই অপচেষ্টা রোধ করার জন্যই ক্রয়কৃত মোবাইলের কাগজ সাথে রাখতে হবে।

স্মার্টফোনের বৈধ আমদানি শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা হবে। এতে করে বৈধভাবে আমদানি করা মোবাইল ফোনের দাম কমে আসবে।

বর্তমানে বৈধ পথে মোবাইল আমদানির শুল্ক প্রায় ৬১ শতাংশ। এটা উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে সরকার কাজ শুরু করেছে। আর আমদানি শুল্ক কমালেই বাংলাদেশের ১৩-১৪টি ফ্যাক্টরিতে উৎপাদনকৃত মোবাইলের শুল্ক ও ভ্যাট কমাতে হবে, অন্যথায় কোম্পানিগুলোর বিদেশি বিনিয়োগ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আমদানি ও অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের শুল্ক কমানো এবং তা সমন্বয় নিয়ে বিটিআরসি ও এনবিআর যৌথভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাধিকবার বসেছে এবং দ্রুততার সঙ্গে তারা কাজ শুরু করেছে।

এছাড়া কারও অজান্তেই কেউ তার নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করছে কি না, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। অপরাধ ও রেজিস্ট্রেশন ঝামেলা এড়াতে সব সময় নিজের নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করতে হবে।

বাংলাদেশে ক্লোন মোবাইল, চুরি বা ছিনতাই করা ফোন বন্ধ করা হবে। এ ছাড়া রিফারবিসড মোবাইল আমদানি বন্ধ করা হবে।

১৬ ডিসেম্বরের আগে বাজারে অবৈধভাবে আমদানি করা স্টক ফোনগুলোর মধ্যে যেগুলোর বৈধ আইএমইআই নম্বর আছে, সেই আইএমইআর লিস্ট বিটিআরসিতে জমা দিয়ে হ্রাসকৃত শুল্কে সেগুলোকে বৈধ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তবে ক্লোন ফোন ও রিফারবিশড ফোনের ক্ষেত্রে এই সুবিধা দেওয়া হবে না। ১৬ ডিসেম্বরের আগে ব্যবহৃত সচল মোবাইল ফোন কোনোভাবেই বন্ধ হবে না।

এদিন থেকে চালু হচ্ছে এনইআইআর। সুতরাং বৈধ আইএমআইআই নম্বরহীন হ্যান্ডসেট ক্রয় থেকে বিরত থাকতে হবে এবং অবৈধ আমদানিকৃত, চোরাচালানকৃত ও ক্লোন ফোন বাংলাদেশে বন্ধ করা হবে।

দেশের ও বিদেশের পুরোনো ফোনের ডাম্পিং বন্ধ হবে। কেসিং পরিবর্তন করে এসব ইলেকট্রনিক বর্জ্য দেশে ঢুকিয়ে যে রমরমা চোরাকারবারি ব্যবসা শুরু করা হয়েছে, সেটা বন্ধ করা হবে।

এছাড়া বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে ভারত, থাইল্যান্ড, চীন থেকে আসা ফ্লাইটগুলো শনাক্ত করা হচ্ছে এবং দ্রুতই এর বিরুদ্ধে কাস্টমস থেকে অভিযান চালানো হবে।

প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ (সংশোধনী), ২০২৫ এ মোবাইল সিমের ইকেওয়াইসি ও আইএমইআই রেজিস্ট্রেশন-সংক্রান্ত ডেটা সুরক্ষার নিশ্চয়তা তৈরি করা হয়েছে।

নতুন একটি ধারা যোগ করে রেজিস্ট্রেশন-সংক্রান্ত উপাত্ত লঙ্ঘনকারীদের অপরাধের আওতায় আনা হয়েছে।


নতুন ৫০০ টাকার নোট বাজারে আসছে আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) তাদের চলমান ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’ সিরিজের অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার থেকে নতুন নকশার ৫০০ টাকার নোট বাজারে ছাড়া শুরু করছে।

গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের স্বাক্ষরযুক্ত এই নোটটি প্রথমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে ইস্যু করা হবে। পরে অন্যান্য শাখার মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।

নতুন নোটটির আকার ১৫২ মিমি ৬৫ মিমি এবং রং হবে প্রধানত সবুজ। বাঁ-পাশে থাকবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং মাঝের পটভূমিতে ফুটন্ত শাপলা ফুল ও পাতা। বিপরীত পাশে চিত্রায়িত হয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।

নোটটিতে জলছাপ হিসেবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রতিকৃতি, উজ্জ্বল ইলেক্ট্রোটাইপ ‘৫০০’ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম সংযোজিত রয়েছে। নোটটির সত্যতা নিশ্চিত করতে ১০টি স্বতন্ত্র সুরক্ষা বৈশিষ্ট্য যোগ করা হয়েছে।

নোটের ডান দিকের ওপরের কোণে থাকা ‘৫০০’ সংখ্যা অপটিক্যালি ভ্যারিয়েবল কালিতে মুদ্রিত। নোটটি কাত করলে এই রং সবুজ থেকে নীল হয়ে যায় এবং ভেতরে তির্যক ‘৫০০’ দেখা যায়।

৪ মিমি চওড়া একটি টুইস্টেড সিকিউরিটি থ্রেডে লাল এবং উজ্জ্বল সোনালি রঙের সমন্বয় রয়েছে। নোটটি কাত করলে লাল অংশ সবুজে রূপ নেয় (যেখানে দেখা যায় Taka ৫০০), আর সোনালি অংশে চলমান রেইনবো রঙের বার দেখা যায়।

নোটটির নিচের বর্ডারের সবুজ নকশায় লুকানো ‘৫০০’ সংখ্যাটি শুধু অনুভূমিকভাবে ধরলে দেখা যায়। গভর্নরের স্বাক্ষরের পাশে থাকা সি-থ্রু ‘৫০০’ সংখ্যাটি আলোয় ধরলে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের সুবিধার জন্য নোটে ডান নিচের কোণে ৫টি ছোট উঁচু ডট দেওয়া হয়েছে। শহীদ মিনার, ব্যাংকের নাম, ডান পাশে তির্যক লাইন এবং সুপ্রিম কোর্টের ছবিসহ গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো রাফ ইনট্যালিও মুদ্রণে তৈরি করা হয়েছে, যাতে ব্যবহারকারীরা স্পর্শে নোটের বৈশিষ্ট্য বুঝতে পারেন।

নোটের দুই পাশে ইউভি কিউরিং ভার্নিশ ব্যবহার করা হয়েছে, যা নোটকে চকচকে অনুভূতি ও বাড়তি স্থায়িত্ব দেয়। ইউভি ডিটেক্টরে নোট ধরলে শাপলা ফুলের ছবি মেজেন্ডা রঙে জ্বলে ওঠে এবং কাগজে ছড়ানো লাল, নীল ও সবুজ রঙের তন্তুগুলো দৃশ্যমান হয়। নোটের বিভিন্ন স্থানে মাইক্রো প্রিন্টিংয়ে ‌‘BANGLADESH BANK’ লেখা রয়েছে, যা শুধু লেন্সের সাহায্যে দেখা যাবে।

এর আগে একই স্থাপত্য সিরিজে নতুন ১০০০, ১০০, ৫০ এবং ২০ টাকার নোট বাজারে ছাড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক।


লক্ষ্মীপুরে ৫০ কোটি টাকার ডাব বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ কৃষি বিভাগের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

লক্ষ্মীপুর জেলার ডাব ও নারিকেলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই অঞ্চলের সুস্বাদু ডাব এখন লক্ষ্মীপুরের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের নানা প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। ডাবের গুণগত মান, উচ্চফলনশীলতা ও চাহিদা বেশি থাকায় এই এলাকায় নারিকেলের উৎপাদন আরও বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের এই উদ্যোগে সফল হয়েছে চাষিরাও। চলতি বছরে ৫০ কোটি টাকার ডাব বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে নারিকেলের আবাদ হচ্ছে। সরকারি হিসেবে এ জেলায় বছরে প্রায় ২৬ হাজার ৯৬০ মেট্রিক টন নারিকেল উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৮ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন ডাব উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা। বেসরকারি হিসেবে উৎপাদনের পরিমাণ আরও বেশি।

কৃষি বিভাগ জানায়, লক্ষ্মীপুরের ডাবের গুণগত মান ভালো হওয়ায় সারাদেশে রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। এখানকার চাষিরা বহু বছর ধরেই গাছের ডাব বিক্রি করছে পাইকারদের কাছে। প্রতিটি ডাব খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। সেই ডাব ৩ হাত ঘুরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে।

জানা যায়, চাষির কাছ থেকে মাত্র ৬০-৭০ টাকায় কেনা ডাব খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। আকার ভেদে কখনো কখনো একটি ডাবের দাম আরও বেশি বেচাকেনা হচ্ছে। তবে জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, নারিকেলের চেয়ে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা ডাব বিক্রি করে দিচ্ছে। এবার শুধু ডাব বিক্রি করেই ৫০ কোটি টাকা আয় হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

স্থানীয় ডাব ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চাষিদের কাছ থেকে প্রকারভেদে প্রতিটি ডাব ৭০-৮০ টাকা দরে কিনলেও গাছ থেকে সংগ্রহ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মোকাম পর্যন্ত আনতে ঘাটে ঘাটে টাকা খরচ হয়। একজন গাছি (যারা গাছে ওঠে ডাব কেটে নিচে নামায়) প্রতিবার গাছে ওঠার জন্য ১০০ টাকা নেয়। তা ছাড়া ভ্যান কিংবা ট্রাকে করে সেই ডাব দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতেও অনেক খরচ হয়। সব মিলিয়ে খরচ বাদ দিয়ে ২০ কিংবা ৩০ টাকা লাভ ধরে মোকামে বিক্রি করেন তারা। তারা বলেন, লক্ষ্মীপুরের ডাব সুস্বাদু হওয়ায় দেশজুড়েই এর চাহিদা রয়েছে।

সদর উপজেলার দালাল বাজার এলাকার কৃষক তোফায়েল আহমদ বাসসকে বলেন, ডাব চাষের অনুকূল পরিবেশ, পোকার উপদ্রব কম এবং গাছগুলোর প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ করা হলে প্রতি বছরই ডাবের ফলন ভালো হয় এবং ভালো দামে ডাব বিক্রি করা যায়। এ বছর ইতোমধ্যেই তিনি ৫০ হাজার টাকার ডাব বিক্রি করেছেন বলে জানান।’

একই এলাকার কৃষক ইউসুফ হোসেন ও নুরুজ্জামান জানান, কম পুজি ও কম পরিচর্যায় নারিকেল চাষ করা যায় বলে এলাকার কৃষকরা অনেকেই এখন নারিকেল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এ অঞ্চলের নারিকেলের চেয়ে ডাবের চাহিদা বেশি। এই কারণে ডাব অবস্থায়ই বেশিরভাগ বিক্রি করে দেওয়া হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জহির উদ্দিন বলেন, এই জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নারিকেল ও ডাব সরবরাহ করা হয়। এছাড়া দেশের বাইরেও রপ্তানি করা হয়। নারিকেলের চেয়ে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা ডাব বিক্রি করে দিচ্ছে। এবার শুধু ডাব বিক্রি করেই প্রায় ৫০ কোটি টাকা আয় হবে বলে আশা করছে জেলা কৃষি বিভাগ।

তিনি বলেন, ডাবের পানি মানবদেহে নানা প্রয়োজনীয় উপাদান জোগান দিতে সহায়তা করে। তাই দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের সময় চিকিৎসকরা রোগীদের ডাব খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত প্রতিটি ব্যক্তি ডাব খাওয়ার চেষ্টা করেন। এই সুযোগে চাষিরাও ডাবের ভালো দাম পাচ্ছেন। সূত্র: বাসস


গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপোতে ৩ লাখ ডলারের ক্রয়াদেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ৩ দিনের গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপোতে ৩ লাখ ১১ হাজার মার্কিন ডলারের ক্রয়াদেশ পেয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া ৩ লাখ ৭২ হাজার ডলারের ক্রয়াদেশের প্রস্তাব পেয়েছেন রপ্তানিকারকেরা।

এক্সপোতে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সেরা প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আটটি সেক্টরের পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ- প্রাণ আরএফএল গ্রুপ, অ্যাপারেল- শিশু পরিবহন, ফার্নিচার অ্যান্ড হোম ডেকোর- হাতিল, আইটি অ্যান্ড আইটি সার্ভিস- ডিজি ইনফোটেক, পাট ও পাটজাত দ্রব্য- প্ল্যানেট কেয়ার, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য- এলএফএমইএবি, ফার্মাসিউটিক্যালস- রেডিয়্যান্ট এবং প্লাস্টিক ও কিচেন ওয়্যার- বেঙ্গল প্লাস্টিক।

ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিগ ওয়েভ) গাতকাল বুধবার গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপোর সমাপনী অনুষ্ঠান হয়।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ হাসান আরিফ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক বেবী রাণী কর্মকার।

অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য দেন বিকেএমইএর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ফজলে শামীম এহসান, ফার্নিচার মালিক সমিতির চেয়ারম্যান সেলিম এইচ রহমান এবং বিপিজিএমইএর প্রেসিডেন্ট শামীম আহমেদ।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, অতি অল্প সময়ের প্রস্তুতিতে এরকম একটি সোর্সিং এক্সপো আয়োজন করতে হয়েছে। ফলে এ বছর অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল। আগামীতে নিয়মিত এই আন্তর্জাতিক মানের সোর্সিং এক্সপো আয়োজন করা হবে।

তিনি অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান।

গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপোতে এ বছর ১২৫ টি প্রতিষ্ঠান ১৬৫ টি স্টলে অংশগ্রহণ করে। বিশ্বের ১৪টি দেশের শতাধিক আন্তর্জাতিক ক্রেতা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করেন। এছাড়া বিদেশি ক্রেতারা দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল ও কারখানা পরিদর্শন করেন।

৩ দিনব্যাপী এই এক্সপোতে বিভিন্ন বিষয় ও সেক্টরের ওপর ছয়টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। মোট ২৩৮টি বি-টু-বি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়।


ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিশ্ববাজারের সাথে যুক্ত করতে দেশে আসছে পেপ্যাল: গভর্নর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করার জন্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেমের সাথে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের যুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে সরকার। এ জন্য পে-প্যাল সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব অনলাইনে কিনছে, সেই জায়গায় যেতে চায় বাংলাদেশও। সে জন্য বাজার তৈরি পরামর্শ তার।’

বুধবার রাজধানীতে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) আয়োজিত দুই দিনব্যাপী সম্মেলন ও কর্মশালায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘শুধু উদ্যোক্তা বাড়ালেই হবে না। চাহিদা বাড়াতে ও বাজার তৈরি করতে হবে। আমরা এখনো সেখান থেকে পিছিয়ে। এ জন্য আমাদের উদ্যোক্তারা অনেক ঝড়েও যাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক বিসিকের উদ্যোক্তাদের জন্য ২ হাজার কোটি টাকাও ঋণ দিতে পারে; কিন্তু সেই ঋণ পরে আদায় করাটাই সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে।’

আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ‘উৎপাদন বাড়াতে ঋণ কার্যক্রমের বরাদ্দ বাড়াতে হবে। সরকারের উদ্দেশ্য ২৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়া; কিন্তু ব্যাংকগুলো পারছে না। এখানে ঋণ বিতরণে দুর্বলতা আছে। বিসিককে ২ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থপ্রদান করা হলে, সেই অর্থঋণ হিসেবে দিলেও তা আদায় করতে পারবে কি না; সেই সক্ষমতা অর্জন করতে হবে তাদের। যদি ঋণ আদায় না করা যায়, তবে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যর্থ হবে।’

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ‘ক্রেতাদের কাছে সরাসরি পণ্য পৌঁছে দিতে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে এবং সেটিকে নিয়মিত আপডেট রাখতে হবে।’ পাশাপাশি দক্ষ আইটি কর্মীদের মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মটি পরিচালনার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন তিনি।

পেপ্যাল একটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা যা ব্যবহারকারীরা অনলাইনে টাকা পাঠানো ও গ্রহণ করা, বিল পরিশোধ করা এবং আন্তর্জাতিক কেনাকাটা করার জন্য ব্যবহার করা যায় বলেও জানান গভর্নর।

গভর্নর আরও বলেন, ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জন্য পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের ওপর জোর দেন। বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সোলার ব্যবহার এবং পানির সঠিক ব্যবস্থাপনা ছাড়া গ্রিন সার্টিফিকেশন পাওয়া সম্ভব নয়। গ্রিন সার্টিফিকেশন ছাড়া রপ্তানি খাতে বড় ধাক্কা আসবে।’

ঋণ বিতরণ ব্যবস্থায় দুর্বলতার কথাও তুলে ধরে ড. মনসুর আবারও বলেন, ‘ঋণ বণ্টনে দক্ষতা না থাকলে বরাদ্দ ২,০০০ কোটি টাকা নষ্ট হয়ে যাবে। ঋণ রিভলভিং ফান্ড হিসেবে ফেরত আসা জরুরি, না হলে চ্যানেল বন্ধ হয়ে যাবে।

চাহিদা তৈরির গুরুত্বকেও বিশেষভাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাজার তৈরি না করলে সরবরাহ বাড়িয়ে কোনো লাভ হবে না। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রতিটি উদ্যোক্তার আলাদা প্রোফাইল, শপিং কার্ড এবং রিয়েল-টাইম তথ্য থাকা জরুরি। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের জন্য অনলাইন ও পেপ্যালের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা সময়ের দাবি।’

গভর্নর আরও বলেন, ‘চীনের পণ্য আমেরিকা থেকে কেনা যায়, তাহলে বাংলাদেশের জামদানি কেন বিদেশে বসে কেনা যাবে না? ক্ষুদ্রশিল্পের সম্ভাবনা অসীম। সঠিক নীতি প্রয়োগে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারবে।’


যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম কিনবে সরকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকার-টু-সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৮৪২ কোটি ৬ লাখ টাকায় ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

মঙ্গলবার বিকেলে ভার্চুয়ালি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকার-টু-সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে এই গম আনতে ব্যয় হবে ৮৪২ কোটি ০৬ লাখ ৩৩ হাজার ১০০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন গমের দাম পড়বে ৩১২.২৫ মার্কিন ডলার।

সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান হলো ইউ.এস. হুইট অ্যাসোসিয়েটস সক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান এগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেড।

এর আগে গত ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকার-টু-সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে ২.২০ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।

সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান ছিল ইউ.এস. হুইট অ্যাসোসিয়েটস-সক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান এগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি থেকে সেই গম আনতে ব্যয় হতো ৮২৫ কোটি ৩১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়ত ৩০৮ মার্কিন ডলার।


প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য ‘ট্রানজিট গেটওয়েতে’ রূপান্তর হচ্ছে মোংলা বন্দর

আপডেটেড ২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা এখন শুধু জাতীয় অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র নয়, বরং প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও একটি কৌশলগত ট্রানজিট গেটওয়ে হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। রাজশাহী, রংপুর ও বরিশাল বিভাগের সঙ্গে সড়ক, নদী ও রেলপথে উন্নত সংযোগের মাধ্যমে এ বন্দর আঞ্চলিক বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে।

বন্দর অভ্যর্থনা সুবিধা (পিআরএফ) প্রকল্প উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে, যা জাহাজ থেকে তেল সংগ্রহ ও অপসারণের সক্ষমতা বাড়াবে এবং নদী ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সহায়ক হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক জীবনরেখা হিসেবে মোংলা বন্দর খাদ্যশস্য, সিমেন্ট ক্লিংকার, সার, গাড়ি, যন্ত্রপাতি, চাল, গম, কয়লা, জ্বালানি তেল, পাথর, ভুট্টা, তৈলবীজ ও এলপিজি আমদানির পাশাপাশি হিমায়িত মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া, পাট ও পাটজাত পণ্য, টাইলস, রেশম বস্ত্রসহ নানা পণ্য রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের (এমপিএ) সিনিয়র উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. মাকরুজ্জামান জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বন্দরটি সকল প্রধান পরিচালন ও আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। বার্ষিক ৮ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন কার্গোর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১০ দশমিক ৪১২ মিলিয়ন মেট্রিক টন হ্যান্ডলিং হয়েছে, যা ১৭ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। কনটেইনার হ্যান্ডলিং লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার টিইইউ, বাস্তবে হয়েছে ২১ হাজার ৪৫৬ টিইইউ।

রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। ৩৩৩ দশমিক ৮৭ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৪৩ দশমিক ৩০ কোটি টাকা। নিট মুনাফা ২০ কোটি ৪৬ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকায়, যা ২০৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ বৃদ্ধি।

কর্মকর্তারা জানান, আধুনিক সরঞ্জাম সংগ্রহের ফলে প্রতি ঘণ্টায় ২৪টিরও বেশি কনটেইনার পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে। নিয়মিত ড্রেজিংয়ের কারণে নাব্যতা নিশ্চিত হওয়ায় একই সময়ে পাঁচটি জেটিতে পাঁচটি জাহাজ পরিচালনা করা যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে বন্দরটি ৩৫৬টি জাহাজ পেয়েছে, ১৩ হাজার ৮৫৪ টিইইউ কনটেইনার পরিচালনা করেছে, ৪ হাজার ১৩৯টি যানবাহন প্রক্রিয়াজাত করেছে এবং ৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন আমদানি-রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং করেছে।

মাকরুজ্জামান বলেন, মোংলাা বন্দর প্রতিবেশী দেশগুলোর ট্রানজিট পণ্য আমদানি-রপ্তানির জন্য বিরাট সম্ভাবনা তৈরি করেছে। সক্ষমতা সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক ১৫০ মিলিয়ন টন কার্গো এবং ৩৫০-৪০০ লক্ষ টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডলিং সম্ভব হবে। এতে শিপিং এজেন্ট, সিএন্ডএফ এজেন্ট, স্টিভডরিং ও শ্রমিক শ্রেণির কর্মসংস্থান বাড়বে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহীন রহমান জানান, পশুর চ্যানেলে সংরক্ষণ ড্রেজিং প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জেটি পর্যন্ত ৯ দশমিক ৫ থেকে ১০ মিটার ড্রাফটসহ ১০০টিরও বেশি অতিরিক্ত জাহাজ এবং রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত ১৩০টি অতিরিক্ত জাহাজ পরিচালনা সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, মোংলা বন্দরকে বিশ্বমানের আধুনিক বন্দরে রূপান্তরের জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্প চলমান রয়েছে এবং ভবিষ্যতের উন্নয়নের জন্য নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।


টিসিবির জন্য কেনা হচ্ছে দেড় কোটি লিটার ভোজ্যতেল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ১ কোটি ৫০ লাখ লিটার ভোজ্যতেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ২৫০ কোটি ৯২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যার মধ্যে ১ কোটি লিটার রাইস ব্রান তেল ও ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে।

মঙ্গলবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে ভোজ্যতেল কেনার এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কমিটির সভাপতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ১ কোটি লিটার পরিশোধিত রাইস ব্রান তেল কিনতে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৬টি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। তার মধ্যে ৫টি দরপ্রস্তাব আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ বিবেচিত হয়।

দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি (দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি)’র সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান তামিম অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে ৩০ লাখ লিটার এবং মজুমদার ব্রান অয়েল মিলস লিমিটেড থেকে ৭০ লাখ লিটার পরিশোধিত রাইস ব্রান তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রতি লিটার রাইস ব্রান তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৬১ টাকা। এতে ১ কোটি লিটার তেল কিনতে ব্যয় হবে ১৬১ কোটি টাকা। বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই তেল কেনার প্রস্তাব উপস্থান করা হলে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি তা পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।

বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রস্তাবে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাবও দেওয়া হয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এ প্রস্তাবটিও পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।

জানা গেছে, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৪টি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। ৪টি দরপ্রস্তাবই আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ বিবেচিত হয়।

দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সোনারগাঁও সিডস ক্রাশিং মিলস লিমিটেডের কাছ থেকে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ২ লিটার পেট বোতলে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৭৯ টাকা ৮৫ পয়সা। এতে মোট ব্যয় হবে ৮৯ কোটি ৯২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।


banner close