মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫
২০ কার্তিক ১৪৩২

রাজস্ব আদায় ও সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমছে, বাড়ছে সরকারের ব্যাংক ঋণ

আপডেটেড
২০ অক্টোবর, ২০২২ ০৯:১০
আবদুর রহিম হারমাছি
প্রকাশিত
আবদুর রহিম হারমাছি
প্রকাশিত : ২০ অক্টোবর, ২০২২ ০৯:১০

আবদুর রহিম হারমাছি

ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত অর্থাৎ সাড়ে তিন মাসে (১ জুলাই থেকে ১৬ অক্টোবর) ব্যাংক থেকে সরকার প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। গত বছরের একই সময়ে নিয়েছিল পাঁচ হাজার কোটি টাকার মতো।

অথচ গত ৩০ আগস্ট পর্যন্ত যেখানে ৩ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা কম ছিল। এর মানে সরকারের ঋণ ওই পরিমাণ ঋণাত্মক ছিল। অর্থাৎ আগস্ট পর্যন্ত সরকার ব্যাংক থেকে যে ঋণ নিয়েছিল, তার চেয়ে বেশি শোধ করেছিল।

রাজস্ব আদায়ে ধীরগতি এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি তলানিতে নেমে আসায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে বাধ্য হয়ে সরকারকে ব্যাংকের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা। এ ছাড়া আমদানি এবং সুদ পরিশোধসহ অন্যান্য খাতে সরকারের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ঋণ বেড়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ বলে জানিয়েছেন তারা।

চলতি অর্থবছর সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও প্রথম দুই মাসে পেয়েছে মাত্র ৪০১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে আগস্ট পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১ কোটি টাকা। আর ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণস্থিতি রয়েছে ২ লাখ ৮৬ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা। এ ঋণের বিপরীতে সরকারের প্রচুর সুদ দিতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণের প্রায় সবই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেয়া হয়েছে। গত ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২৪ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে সরকার। একই সময়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে গত অর্থবছরের তুলনায় ঋণ কমেছে ৪ হাজার কোটি টাকার মতো। এ হিসাবেই ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ গ্রহণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা।

গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সরকারের ব্যয় বেড়ে গেছে। এ ছাড়া বিশ্ববাজারে অন্যান্য পণ্যের দর বৃদ্ধির প্রভাবও সরকারি কেনাকাটায় পড়েছে। সেই সঙ্গে ডলারের দাম বাড়ার কারণেও সরকারের ব্যয় বেড়েছে। কিন্তু রাজস্ব আয় সে হারে বাড়ছে না। অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে কিছুটা বাড়লেও, সেপ্টেম্বরে কমেছে। আবার ব্যাংকের বাইরে সঞ্চয়পত্র থেকেও সেভাবে ঋণ পাচ্ছে না সরকার। যে কারণে ব্যয় সংকোচন নীতির মধ্যেও ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ বাড়ছে।’

রাজস্ব আয়ে হঠাৎ ছন্দপতন

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে রাজস্ব আয়ে উল্লম্ফন হলেও সেপ্টেম্বরে তা কমে গেছে। ফলে সামগ্রিকভাবে আলোচ্য অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আহরণে ছন্দপতন ঘটেছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সবশেষ তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্টে রাজস্ব আয় আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। সেপ্টেম্বর শেষে সেই প্রবৃদ্ধি ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে। গত অর্থবছরের এই তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্ব) রাজস্ব আদায় বেড়েছিল প্রায় ১৭ শতাংশ। সে তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আয়ে ভাটার টান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এনবিআরের কর্মকর্তারা বলছেন, জুলাই-আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে আমদানি কমে আসায় রাজস্ব আহরণে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ ছাড়া বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর-ভ্যাট আহরণে তার প্রভাব পড়েছে। ফলে সামগ্রিকভাবে আলোচ্য অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আহরণে ছন্দপতন ঘটেছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাজস্ব আয়ে এবার যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা অর্জন করতে হলে আদায় বাড়াতে হবে কমপক্ষে ৩১ শতাংশ। যদিও এই লক্ষ্যমাত্রা অত্যন্ত ‘উচ্চাভিলাষী’ বলে উল্লেখ করেছেন তারা।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে এনবিআরের মাধ্যমে মোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে আদায় হয়েছে ৬৫ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা।

সঞ্চয়পত্র বিক্রি তলানিতে

সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমছে। সুদের হার হ্রাস ও নানা ধরনের কড়াকড়ি আরোপের কারণে সাধারণ মানুষের সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ সঞ্চয়পত্র বিক্রি তলানিতে নেমে এসেছে। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সবশেষ তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে মাত্র ৮ কোটি টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। গত বছরের আগস্টে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬২৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, এই আগস্টের চেয়ে গত বছরের আগস্টে ৪৪৯ গুণ বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল।

অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৩৯৩ কোটি ১১ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ে বিক্রির অঙ্ক ছিল ২ হাজার ১০৪ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, এই বছরের জুলাইয়ের চেয়ে গত বছরের জুলাইয়ে সঞ্চয়পত্র খাতে সাড়ে পাঁচ গুণ বেশি বিনিয়োগ হয়েছিল।

আর অর্থবছরের দুই মাসের হিসাবে অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ৪০১ কোটি ২০ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে এই বিক্রির পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৭৩২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, এই বছরের জুলাই-আগস্ট সময়ের চেয়ে গত বছরের জুলাই-আগস্টে সঞ্চয়পত্রে ১৪ দশমিক ২৯ গুণ বেশি বিনিয়োগ হয়েছিল।

আহসান মনসুর বলেন, ‘বাজারে সব জিনিসের দামই চড়া। পরিবহন, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ অন্য সব খাতেও খরচ বেড়েছে। এতে মানুষের সঞ্চয় করার ক্ষমতা কমে গেছে। এর প্রভাব পড়ছে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে।’

বিক্রির চাপ কমাতে ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে মুনাফার ওপর উৎসে করের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। একই সঙ্গে এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে টিআইএন (কর শনাক্তকরণ নম্বর) বাধ্যতামূলক করা হয়। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি না করার শর্ত আরোপসহ আরও কিছু কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়। তার পরও বাড়তে থাকে বিক্রি।

সবশেষ সঞ্চয়পত্র খাতে সরকারকে যাতে বেশি সুদ পরিশোধ করতে না হয়, সে জন্য বিক্রি কমাতে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ২ শতাংশের মতো কমিয়ে দেয় সরকার। এর পরও বিক্রি বাড়ছিল। তবে গত কয়েক মাস ধরে বিক্রি বেশ কমেছে। এখন একেবারে তলানিতে নেমে এসেছে।


বদলে যাচ্ছে হাওরাঞ্চলের অর্থনীতি

আপডেটেড ৩ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার ঘোড়াউত্রা নদীর দুই তীরে চোখে পড়ে শত শত হাঁসের খামার। বাঁশের খুঁটি আর জালের বেষ্টনী দিয়ে বর্ষার ভাসান পানিতে গড়ে ওঠা এসব অস্থায়ী খামারে সারাদিন সাঁতার কাটে দেশি প্রজাতির হাঁস। রাতে তারা নদীর ধারে তৈরি খুপরি ঘরে বিশ্রাম নেয়।

খামারিদের ভাষায়, কম পুঁজি, সহজলভ্য প্রাকৃতিক খাদ্য (শামুক, ঝিনুক) ও সামান্য দানাদার খাবারের সহায়তায় এ খাতে এখন লাভজনক আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ফলে বদলে যাচ্ছে হাওরাঞ্চলের অনেক পরিবারের জীবনযাত্রা।

নিকলীর পাশাপাশি ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও তাড়াইলএই হাওর অধ্যুষিত উপজেলা গুলোতেও বর্ষা মৌসুমে নদ-নদী ও হাওরের ভাসান পানিতে হাঁস পালনের প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। এতে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্র ও জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্যে জানা যায়, কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের খামারগুলো থেকে বছরে প্রায় দুই কোটি হাঁসের ডিম উৎপাদিত হয়। জেলার চাহিদা মিটিয়েও দেশের মোট চাহিদার প্রায় ২৫ শতাংশ ডিম আসে এখান থেকে।

এই ডিম ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, সিলেট ও অন্যান্য বড় শহরে সরবরাহ হয়। পাশাপাশি, হাওরের হাঁসের মাংসও দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়।

ডিমকে ঘিরে তাড়াইল উপজেলার দামিহা এলাকায় গড়ে উঠেছে শতাধিক হ্যাচারি। সেখানে তুষ বা ভাপ পদ্ধতিতে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই লাখ হাঁসের বাচ্চা উৎপাদিত হয়। যা স্থানীয় খামার ও দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়।

নিকলীর খামারি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ভাসান পানিতে খামার করলে আলাদা জমি লাগে না। জাল ও বাঁশের ঘের দিয়ে হাঁস ছেড়ে দিই, শামুক আর দানাদার খাবারেই বেশির ভাগ চাহিদা মেটে। খরচ কম, তাই মৌসুমে ভালো লাভ হয়।’

মিঠামইনের রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘আমাদের ডিম পাইকাররা সরাসরি নিয়ে যায় ঢাকা, চট্টগ্রামে। কিন্তু হাঁসের রোগ হলে দ্রুত ডাক্তার পাই না। মোবাইল ভেট টিম থাকলে ক্ষতি অনেক কমে যেত।’

তাড়াইলের দামিহা এলাকার হ্যাচারি উদ্যোক্তা শাহাদত হোসেন বলেন, ‘দামিহায় এখন অনেক হ্যাচারি হয়েছে। আমরা প্রতিদিন হাজার হাজার বাচ্চা তুলতে পারি। যদি বিদ্যুৎ স্থিতিশীল থাকে আর একটা স্থায়ী সংগ্রহ কেন্দ্র হয়, তাহলে কাজটা আরও বড় পরিসরে করা যাবে।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘হাওরের ভাসান পানিতে উৎপাদিত হাঁসের মাংস ও ডিম নির্ভেজাল, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। তাই বাজারে এর চাহিদা সবসময়ই বেশি।’ তিনি জানান, এই সম্ভাবনাময় খাতের উন্নয়নে খামারিদের প্রশিক্ষণ, টিকাদান ও পরামর্শসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’

বর্তমানে কিশোরগঞ্জে প্রায় ২ হাজার হাঁস খামার রয়েছে। এসব খামারে ২৫ লাখের বেশি হাঁস লালনপালন হচ্ছে। খামারি বা উদ্যোক্তার সংখ্যা প্রায় ১৫০০, আর এ খাত থেকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে সুবিধা পাচ্ছে প্রায় ১২ হাজার পরিবার। বছরে মোট উৎপাদন হয় প্রায় দুই কোটি ডিম।

খামারিদের অভিযোগ, হাঁসের রোগ-বালাই দেখা দিলে দ্রুত ভেটেরিনারি সহায়তা পাওয়া যায় না। তারা চান মোবাইল ভেট সার্ভিস, টিকা, ঔষধে সহায়তা, স্বল্পসুদে ঋণ, ফিড ও ডিমের সংগ্রহকেন্দ্র এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চয়তা।

সংশ্লিষ্টদের মতে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও বাজারসংযোগ বাড়ানো গেলে হাওরের হাঁস পালন শুধু স্থানীয় জীবিকার খাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এটি দেশের একটি বড় অর্থনৈতিক খাতে পরিণত হতে পারে।


মোংলা ইপিজেডে দুর্যোগ প্রস্তুতি ও মাল্টি-হ্যাজার্ড ম্যানেজমেন্ট প্রশিক্ষণ শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যেকোনো দুর্যোগে শিল্প-কারখানার উৎপাদন অব্যাহত রাখা এবং ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে মোংলা ইপিজেডে ‘দুর্যোগ প্রস্তুতি, ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতা এবং মাল্টি-হ্যাজার্ড ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন এফবিসিসিআই -এর সেইফটি কাউন্সিল এবং মোংলা ইপিজেডের যৌথ উদ্যোগে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণে মোংলা ইপিজেডের শিল্প-কারখানা থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।
গতকাল সোমবার সকালে প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন মোংলা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক কালাম মো. আবুল বাশার।
তিনি বলেন, দুর্যোগের প্রস্তুতি ও দুর্যোগকালে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে শিল্পকারখানার ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। পাশাপাশি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শিল্পের উৎপাদনশীলতা অব্যাহত রাখা সম্ভব।
এ সময় ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ উন্নয়ন ও ঝুঁকি হ্রাসের লক্ষ্যে এফবিসিসিআইর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান তিনি। এফবিসিসিআইর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে মোংলা ইপিজেডের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসে কারখানা পর্যায়ে সক্ষমতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। এই প্রশিক্ষণ অংশগ্রহণকারীদের ক্ষমতা ও দক্ষতা উভয়ই বৃদ্ধি করবে।
এফবিসিসিআই সেইফটি কাউন্সিলের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মো. মঞ্জুর কাদের খান তার বক্তব্যে প্রকল্পের লক্ষ্য, কার্যক্রম ও এফবিসিসিআইর চলমান উদ্যোগ সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
তিনি জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ প্রিপেয়ার্ডনেস পার্টনারশিপ (বিপিপি) প্রকল্পের আওতায় এফবিসিসিআই দেশের শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার ও বেসরকারি খাতের সম্মিলিত উদ্যোগে দেশে টেকসই ও নিরাপদ ব্যবসায় পরিবেশ গড়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এ সময় তিনি প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য গেটস ফাউন্ডেশন এবং কারিগরি সহায়তার জন্য এশিয়ান ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টারকে (এডিপিসি) ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোংলা ইপিজেডের পরিচালক (প্রশাসন) মো. কাউসার হোসেন, ইপিজেড জোন অফিসের কর্মকর্তারা এবং এফবিসিসিআই সেইফটি কাউন্সিলের কর্মকর্তারা।


বিশ্ববাজারে কমেছে আকরিক লোহার দাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্ববাজারে আকরিক লোহার দাম সামান্য হ্রাস পেয়েছে। বিশেষ করে চীনের চাহিদা কমে যাওয়া ও মজুত বৃদ্ধির কারণে দাম কমেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির আশায় সপ্তাহ ও মাসজুড়ে দাম সামগ্রিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী ছিল। খবরটি জানিয়েছে বিজনেস রেকর্ডার।

চীনের দালিয়ান কমোডিটি এক্সচেঞ্জে জানুয়ারির সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া আকরিক লোহার চুক্তির দাম গত শুক্রবার ০.৯৩ শতাংশ কমে মেট্রিক টনপ্রতি ৭৯৭ ইউয়ান বা ১১১.৮৯ ডলারে নেমে আসে। তবু পুরো সপ্তাহে দাম বেড়েছে ৩.৩ শতাংশ।

অন্যদিকে, সিঙ্গাপুর এক্সচেঞ্জে ডিসেম্বরের মানদণ্ড আকরিক লোহার দাম ০.৬১ শতাংশ কমে টনপ্রতি ১০৫.৮ ডলারে দাঁড়ায়, যা সপ্তাহজুড়ে ২ শতাংশ বৃদ্ধি নির্দেশ করে। উভয় সূচকই মাসের হিসেবে প্রায় ২ শতাংশ বেড়েছে। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প-শি বৈঠকের পর সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির আশায় দামকে সমর্থন মিলেছে।

তবে সামষ্টিক প্রভাব কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা আবার বাজারের মৌলিক অবস্থার দিকে নজর দিচ্ছেন। মাইস্টিলের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সপ্তাহে চীনের গড় দৈনিক গরম ধাতু উৎপাদন আগের সপ্তাহের তুলনায় ১.৫ শতাংশ কমে ২৩.৬ লাখ টনে নেমেছে। একই সময়ে বন্দরভিত্তিক মজুত বেড়েছে ০.৮ শতাংশ।

এছাড়া, টানা সপ্তম মাসের মতো অক্টোবরেও চীনের কারখানা কার্যক্রমে সংকোচন দেখা গেছে, যা বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

ইস্পাত উৎপাদনে ব্যবহৃত অন্যান্য উপকরণ যেমন কোকিং কয়লা ও কোকের দাম যথাক্রমে ১.০৪ শতাংশ ও ০.৫৮ শতাংশ বেড়েছে। শাংহাই ফিউচার্স এক্সচেঞ্জে বেশিরভাগ ইস্পাত পণ্যের দাম কমেছে; রিবার ০.১৯ শতাংশ, হট-রোল্ড কয়েল ০.২১ শতাংশ এবং স্টেইনলেস স্টিল ০.৪৩ শতাংশ কমেছে। তবে ওয়্যার রডের দাম বেড়েছে ০.১২ শতাংশ।


বিডাকে দ্রুত পরিবর্তিত বিনিয়োগ পরিবেশের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে: নির্বাহী চেয়ারম্যান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, বিডা অন্যান্য সাধারণ সরকারি দপ্তরের মতো নয়। এটি বিশেষায়িত সংস্থা, যার মূল দায়িত্ব বিনিয়োগকারীদের চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত সাড়া দেওয়া। বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ পরিবেশ দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। তাই বিডাকেও সেই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মাল্টিপারপাস হলে বিডার পুনর্বিন্যাসকৃত সাংগঠনিক কাঠামো বিষয়ে অবহিতকরণ সভায় চৌধুরী আশিক এসব কথা বলেন।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে চৌধুরী আশিক জানান, এ কাঠামোগত সংস্কার বিডার দেশি ও বিদেশি অংশীজনদের দীর্ঘদিনের পরামর্শের ফলাফল, যা তারা এখন বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন।

নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, বিডা বিনিয়োগ প্রক্রিয়ার ধাপগুলোর সঙ্গে মিল রেখে নিজেদের সাংগঠনিক কাঠামোতে ব্যাপক সংস্কার এনেছে। এ পুনর্গঠনের মাধ্যমে দায়িত্ব ও কর্তব্যে অধিকতর স্পষ্টতা আসবে, বিনিয়োগকারীদের জন্য সেবা হবে আরও দ্রুত ও কার্যকর এবং সেবার মান পরিমাপের জন্য নির্ধারিত সূচক প্রবর্তন করা হয়েছে।

চৌধুরী আশিক বলেন, এ কাঠামোগত সংস্কার সরকারঘোষিত ৩২ দফা বিনিয়োগ পরিবেশ সংস্কার কর্মপরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও প্রতিযোগিতামূলক ও আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে।

তিনি জানান, বিডার নতুন কাঠামো সাজানো হয়েছে বিনিয়োগ চক্রের সঙ্গে মিল রেখে। এ কাঠামো অনুযায়ী বিডায় থাকবে পাঁচটি প্রধান অনুবিভাগ বা উইং। সেগুলো হলো-ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন (বিনিয়োগ আকর্ষণ ও প্রবেশ পর্যায়), রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি (নীতি সহায়তা ও অ্যাডভোকেসি), অপারেশনস (বিনিয়োগ শুরু, সম্প্রসারণ ও ধারাবাহিকতা রক্ষা), ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট (বিনিয়োগ সেবার আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল সংস্কার) এবং অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক সহায়তা)।

চৌধুরী আশিক বলেন, বিডার নতুন কাঠামোগত সংস্কারের উল্লেখযোগ্য দিক হলো- নির্বাহী সদস্য পদে এখন থেকে বিডার নিজস্ব কর্মকর্তা ছাড়াও বেসরকারি খাতের পেশাজীবীরা অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন, যা পূর্বে শুধু প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি এবং ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন শাখাকে পৃথক ইউনিট হিসেবে গঠন করা হয়েছে। প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় বিশেষ ডেস্ক চালু করা হচ্ছে এবং বিনিয়োগ সহায়তায় খাতভিত্তিক বিশেষজ্ঞ ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের জাতীয় কমিটি দেশের সব বিনিয়োগ সংস্থা সমন্বিত করে একটি একীভূত কাঠামো প্রণয়নের রোডম্যাপ প্রস্তুত করছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা খণ্ডিত সেবা ব্যবস্থার পরিবর্তে একক একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রয়োজনীয় সব সেবা নিতে পারবেন।


বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শর্ত দিয়ে পাট রপ্তানিতে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শর্তসাপেক্ষ রপ্তানি দিয়ে মূলত পাট রপ্তানিতে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পাট রপ্তানিকারকরা। তারা বলেন, এতে করে কৃষক, ব্যাপারী, পাট শ্রমিক ও রপ্তানীকারকেরা অনেক ক্ষতির মধ্যে পড়েছে। সেই সঙ্গে বাংকের সুদ বাড়ছে। ফলে অনতিবিলম্বে এই শর্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন পাট রপ্তানিকারকরা। অন্যথায় আন্দোলনে নামবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

রোববার বিজেএর নারায়ণগঞ্জ অফিসের ৪র্থ তলায় আফজাল হোসেন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএ) ৫৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় পাট ব্যবসায়ীরা এসব কথা বলেন। সভায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৫ শতাধিক ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকরা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় দেশসেরা পাট রপ্তানিকারক ইন্টারন্যাশনাল জুট ট্রেডার্সের কর্ণধার গণেষ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শর্তসাপেক্ষ রপ্তানি দিয়ে মূলত অলিখিত পাটের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

ফলে পাট ব্যবসায়ীরা এখনো রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার আগে যে এলসি ছিল, সেই এলসির মালামাল রপ্তানি করতে পারে নাই। ১৯১০ ও ১৯১৫ সালে পাট মন্ত্রণালয় থেকে পাট নিষেধাজ্ঞা হয়েছিল। তখন কাটজুট পাট নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে ছিল। এবার এই কাটজুট আওতামুক্ত রাখে নাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘অনতিবিলম্বে শর্তসাপেক্ষ আদায় প্রত্যাহার করতে হবে। নতুবা পাটের বাজার যেকোনো সময় দুই হাজার টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা পাটের দাম পড়ে যেতে পারে। পাটের উৎপাদন কম হয়েছে, পাটের ঘাটতির কথা বলে বাংলাদেশের জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন দাবি তুলে ৭ থেকে ৮ লাখ বেল পাট রপ্তানি ব্যাহত করছে। অনতিবিলম্বে কৃষকের স্বার্থে পাট ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এবং পাট শ্রমিকদের স্বার্থে এই শর্তসাপেক্ষ প্রত্যাহার করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিজেএ’র সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান মো. আফজাল হোসেন আকন্দ।

তিনি সভা শেষে নতুন কার্যনির্বাহী কমিটিকে অভ্যর্থনা ও দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। সেই সঙ্গে সভায় বিগত অর্থ বছরের চূড়ান্ত নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন ও সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়।

নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান খন্দকার আলমগীর কবির বলেন, ‘বর্তমানে কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ থাকায় কাঁচাপাট ব্যবসায়ী রপ্তানিকারকরা সংকটে রয়েছেন। অনেক কাঁচাপাট ব্যবসায়ী ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন। দুই মাসে আমরা এক বেলও কাঁচাপাট রপ্তানি করতে পারি নাই। শ্রমিকদের বসিয়ে বসিয়ে মজুরি দিতে হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘রপ্তানি বন্ধ থাকায় হাজার হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা শিগগিরই উপদেষ্টা মহোদয় ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলব। আগামী ১০ দিনের মধ্যে রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব। এটার সমাধান না হলে কঠিনতম অবস্থানে যেতে বাধ্য হতে হবে।’

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন নবনির্বাচিত কমিটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এস এম সাইফুল ইসলাম পিয়াস, ভাইস চেয়ারম্যান মো. তারেক আফজাল, কমিটির কার্যকরী সদস্য মো. ফাহাদ আহমেদ আকন্দ, শামীম আহমেদ, এস এম মনিরুজ্জামান (পলাশ), খাইরুজ্জামান, মো. কুতুবউদ্দিন, শেখ ঈমাম হোসেন, এস এম হাফিজুর রহমান, বদরুল আলম (মার্কিন), এইচ এম প্রিন্স মাহমুদ, মো. তোফাজ্জল হোসেন, মো. ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া, মো. নূর ইসলাম, মো. আলমগীর খান, রঞ্জন কুমার দাস ও এসএম সাইফুল ইসলাম।


প্রথম কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার পুঁজিবাজারে সূচকের মিশ্র প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।

এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, রোববার ডিএসই প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১১৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৩ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে যথাক্রমে ১০৭৮ ও ১৯৮২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিন ডিএসইতে ৫৪৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৬৮ কোটি টাকার লেনদেন বেড়েছে। আগের দিন ডিএসইতে ৪৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছিল।

রোববার ডিএসইতে ৩৯৫টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১২৮টি কোম্পানির, কমেছে ২০৭টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর।

এদিন লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ প্রতিষ্ঠানগুলো, মনোস্পুল পেপার, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, খান ব্রাদার্স, ওরিয়ন ইনফিউশন, সামিট পোর্ট অ্যালায়েন্স, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, রূপালী লাইফ, বিচ হ্যাচারি, সিমটেক ইন্ডাস্ট্রি ও সোনালি পেপার।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ২৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৪ হাজার ৩১৩ পয়েন্টে।

এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ১৮৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৯২টির, কমেছে ৬১টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টির কোম্পানির শেয়ার দর।

রোববার সিএসইতে ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার লেনদেন বেড়েছে। আগের দিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছিল।


কার্বন নিঃসরণ কমাতে বাংলাদেশ-ইউএনডিপির নতুন প্রকল্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) যৌথভাবে নতুন একটি প্রকল্প চালু করেছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের প্রধান শহরগুলোতে কম কার্বন নির্ভরতা অর্জনে উৎসাহিত করা। এই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে গ্লোবাল অ্যানভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ)।

রোববার চালু হওয়া এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধি, নবায়নযোগ্য শক্তি (যেমন সৌর, বায়ু, জলবিদ্যুৎ, জৈব শক্তি) এবং বর্জ্য থেকে জ্বালানি উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়িয়ে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমানো।

পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের নাম ‘প্রমোটিং অ্যানার্জি-রিলেটেড লো কার্বন আরবান ডেভেলপমেন্ট বা এলসিইউডি’। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনের (কপ-৩০) আগেই প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হয়। রাজধানীর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে নিজ নিজ সংস্থার পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী, বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নুর আহমেদ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ স্টেফান লিলার।

অনুষ্ঠানে শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘এই প্রকল্পটি আমাদের শহরগুলোতে উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি সমাধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান ও সক্ষমতা তৈরি করবে। আমি ইউএনডিপিকে ধন্যবাদ জানাই এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগে সহযোগিতার জন্য। এখন আমাদের দায়িত্ব ঘাটতিগুলো পূরণ করা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করা এবং এই কার্যক্রমকে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাইরে প্রসারিত করা, যেন সবার জন্য পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর নগর জীবন নিশ্চিত হয়।’

স্টেফান লিলার বলেন, ‘ইউএনডিপি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে নগর উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছে। নতুন এই প্রকল্প আমাদের অংশীদারিত্বকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে, যা টেকসই ও কম কার্বন নির্ভর নগর উন্নয়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমরা এই সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, যাতে এর সুফল বাস্তবেই নাগরিক জীবনে পৌঁছায়।’

বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নুর আহমেদ বলেন, ‘এই প্রকল্পটি কম কার্বন অবকাঠামোয় বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে, যা দেশের অন্যান্য শহরের জন্যও দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে। আমরা প্রকল্পটি সময়মতো ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকব।’

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইআরডির অতিরিক্ত সচিব (জাতিসংঘ উইং প্রধান) একেএম সোহেল, ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সরদার এম. আসাদুজ্জামান, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান মোজাফফর আহমাদ এবং স্রেডার নবায়নযোগ্য শক্তি উন্নয়ন পরিচালক (উপ-সচিব) প্রকৌশলী মো. মুজিবুর রহমান।


এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন অতিরিক্ত সচিব আবদুর রহিম খান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খান।

গত রোববার সকালে তিনি সংগঠনটির প্রশাসক হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা অফিস আদেশ অনুযায়ী, ট্রেড অর্গানাইজেশন অ্যাক্ট, ২০২২-এর ধারা ১৭-এর অধীনে মো. আবদুর রহিম খানকে এফবিসিসিআই-এর প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

আদেশ অনুযায়ী, তিনি ১২০ দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত বোর্ডের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন।


এক বছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে ৭ বিলিয়ন ডলার

অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছে ২.৫৬ বিলিয়ন ডলার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রেমিট্যান্স প্রবাহের ধারাবাহিক ইতিবাচকতায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে। চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ হিসাবপদ্ধতিতে এই রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ বিলিয়ন ডলারের ওপরে।

গত বছরের একই সময়ে দেশের গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরে, আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী ছিল প্রায় ১৯ বিলিয়ন ডলার। সে তুলনায় এক বছরে গ্রস রিজার্ভ বেড়েছে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ হিসেবে বেড়েছে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের সদ্য প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২.১৪ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী ২৭.৫৪ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফকে দেওয়া আলাদা তথ্যে দেখা যায়, দেশের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৫.৪৪ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী ১৯.৮৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, এক বছরে দেশের রিজার্ভে দৃশ্যমান প্রবৃদ্ধি ঘটেছে।

বিশ্বমান অনুযায়ী, একটি দেশের অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ থাকা প্রয়োজন। সে হিসেবে বাংলাদেশ এখন সেই ন্যূনতম সীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রবাসীদের বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বৃদ্ধিই রিজার্ভ বৃদ্ধির মূল কারণ। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি না করে বরং বাজার থেকে ডলার ক্রয় করছে।

২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই থেকে অক্টোবর) রেমিট্যান্স প্রবাহ ধারাবাহিকভাবে ইতিবাচক ছিল। জুলাইয়ে এসেছে ২.৪৭ বিলিয়ন ডলার, আগস্টে ২.৪২ বিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২.৬৮ বিলিয়ন ডলার এবং সদ্য বিদায়ী অক্টোবরে এসেছে ২.৫৬ বিলিয়ন ডলার।

এর আগে ২০২৪–২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল রেকর্ড ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার, যা সেই বছরের একক মাস হিসেবে সর্বোচ্চ ছিল। পুরো অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ দাঁড়ায় ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলার—আগের বছরের তুলনায় ২৬.৮ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৩ সালের জুনে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৫.৩২ বিলিয়ন ডলার। ধাপে ধাপে তা বেড়ে ২০২১ সালের আগস্টে রেকর্ড ৪৮.০৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। তবে ২০২২ সাল থেকে ডলার সংকট দেখা দিলে রিজার্ভে পতন শুরু হয়। ২০২২–২৩ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ৩১ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪–২৫ অর্থবছর শেষে দাঁড়ায় ৩১.৬৮ বিলিয়ন ডলারে।

এদিকে, চলতি বছরের অক্টোবরে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২.৫৬ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স, যা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় প্রায় ৭ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে এই অঙ্ক ছিল ২.৪ বিলিয়ন ডলার।

২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই–অক্টোবর) মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১০.১৪ বিলিয়ন ডলার, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে অঙ্কটি ছিল ৮.৯ বিলিয়ন ডলার।

ব্যাংকারদের মতে, বর্তমানে দেশের ডলারবাজার স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি হুন্ডির প্রভাব কমে যাওয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়ছে। এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা প্রায় খোলা বাজারমূল্যের কাছাকাছি রেট পাচ্ছেন, ফলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে তারা আরও উৎসাহিত হচ্ছেন।

তাদের ভাষায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্সের প্রবাহ আরও বেড়েছে। গত এক বছর ধরে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসছে দেশের বৈধ পথে।


২৬ টাকা কমল ১২ কেজির এলপি গ্যাসের দাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভোক্তা পর্যায়ে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম কমেছে। নভেম্বর মাসের জন্য এই দাম ২৬ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

রোববার এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ জানান, নভেম্বর মাসের জন্য ১২ কেজি এলপিজির দাম ১ হাজার ২৪১ টাকা থেকে ২৬ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে গত ৭ অক্টোবর সবশেষ সমন্বয় করা হয় এলপি গ্যাসের দাম। সে সময় ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

একইসঙ্গে রোববার অটোগ্যাসের দামও কমিয়েছে বিইআরসি। নভেম্বর মাসে ভোক্তা পর্যায়ে ১ টাকা ১৯ পয়সা কমিয়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম প্রতি লিটার ৫৫ টাকা ৫৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।


১০-১৫ ডিসেম্বর ভ্যাট সপ্তাহ পালন করবে এনবিআর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিবছরের মতো এবারও জাতীয় ভ্যাট দিবস ও জাতীয় ভ্যাট সপ্তাহ পালন করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগামী ১০ ডিসেম্বর জাতীয় ভ্যাট দিবস ও আগামী ১০-১৫ ডিসেম্বর জাতীয় ভ্যাট সপ্তাহ পালন করবে সংস্থাটি। ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ, ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করেছে তারা।

এজন্য এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে সভাপতি করে ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাকি সদস্যরা হলেন কাস্টমস: নিরীক্ষা, আধুনিকায়ন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, কাস্টমস: রপ্তানি, বন্ড ও আইটি, কর নীতি, কাস্টমস: নীতি ও আইসিটি, মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসন, মুসক নীতি, মূসক নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা দপ্তরের সদস্য পদমর্যাদার কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে চলতি বছর ভ্যাট সিস্টেমকে সামগ্রিকভাবে অনলাইন করা, জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ পালন উপলক্ষে মাঠ পর্যায়ে করদাতাদের নিবন্ধন, রিটার্ন, ই-পেমেন্ট, ক্রয়-বিক্রয়ের হিসাব সংরক্ষণ ও চালানপত্র ইস্যু ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরাসরি সার্কেল, বিভাগ ও কমিশনারেট থেকে বিশেষ সেবা দেওয়া হবে।

এর আগে, প্রতি বছর ১০ জুলাই জাতীয় ভ্যাট দিবস পালিত হতো। বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে মূসক প্রবর্তিত হওয়ার পর এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ২০১১ সাল থেকে দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। আর ২০১৩ সাল থেকে দিবসের পাশাপাশি ১০-১৫ ডিসেম্বর ভ্যাট সপ্তাহ উদযাপন করা হচ্ছে।


স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৫ হাজার ডলার ছুঁতে পারে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দীর্ঘমেয়াদি ঊর্ধ্বগতি এখনো অটুট রয়েছে। যদিও সম্প্রতি ইতিহাসের অন্যতম বড় সাপ্তাহিক পতন ঘটেছে। মালয়েশিয়ার ইউনাইটেড ওভারসিজ ব্যাংক (ইউওবি) পূর্বাভাস দিয়েছে, নিরাপদ বিনিয়োগ ও বহুমুখীকরণের চাহিদা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৫ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে (এক আউন্স ২ দশমিক ৪৩০৫ ভরি)।

ইউওবি জানায়, সাম্প্রতিক বিক্রয়চাপ কোনো বিপদ নয় বরং এটি ‘সঠিক ও প্রয়োজনীয় সংশোধন’, যা অতিরিক্ত জল্পনামূলক বিনিয়োগ ঠাণ্ডা করবে এবং পরবর্তী স্থিতিশীল ঊর্ধ্বগতির পথ তৈরি করবে।

গত ২০ অক্টোবর স্বর্ণের দাম প্রায় আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৪০০ ডলার থেকে এক সপ্তাহে নেমে আসে ৩ হাজার ৯০০ ডলারের নিচে, যা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাপ্তাহিক পতন। এর আগে আগস্টে দাম ৩ হাজার ৫০০ ডলারের বাধা ভেঙে তিন মাসে প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছিল।

ইউওবি জানায়, এই পতন ‘খুবই প্রয়োজনীয়’ ছিল, কারণ বছরের মাঝামাঝি থেকে অতিরিক্ত ‘লং পজিশন’ তৈরি হয়েছিল, যা বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলেছিল।

ব্যাংকের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রমবর্ধমান স্বর্ণসংগ্রহ এবং বিভিন্ন বিনিয়োগ মাধ্যমে (বুলিয়ন, ফিউচার ও ইটিএফ) টাকার প্রবাহের কারণে স্বর্ণের মৌলিক চাহিদা এখনো শক্তিশালী।

বর্তমানে স্বর্ণের ইটিএফ হোল্ডিং প্রায় ১০ কোটি আউন্স, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। চীনের সাংহাই ফিউচার এক্সচেঞ্জে গত জুলাইয়ে মজুদ ছিল ২০ টন, যা এখন বেড়ে ৯০ টন হয়েছে।

ব্যাংকটির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ‘ডি-ডলারাইজেশন’ ও বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে নিরাপদ সম্পদে বিনিয়োগের চাহিদা আরও বাড়ছে।

ব্যাংক মুয়ামালাত মালয়েশিয়ার প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মোহদ আফজানিজাম আবদুল রশিদ বলেছেন, ‘এই পতন বাজারের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর বিরতি। এটি পরবর্তী স্থিতিশীল উত্থানের সুযোগ তৈরি করছে।’

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমহ্রাসমান ক্রেডিট রেটিং ও ডলারের ওপর আস্থা কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা বিকল্প নিরাপদ সম্পদ খুঁজছেন- আর সেই ক্ষেত্রে স্বর্ণই সেরা বিকল্প।

তার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণসংগ্রহ প্রতিবছর গড়ে ২০ শতাংশ হারে বেড়েছে।

ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্যমতে, ২০২৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে বৈশ্বিক স্বর্ণচাহিদা ১ হাজার ৩১৩ টনে পৌঁছেছে, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো এ সময়ে ২২০ টন স্বর্ণ কিনেছে, যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় ২৮ শতাংশ এবং পাঁচ বছরের গড়ের তুলনায় ৬ শতাংশ বেশি।

ইউওবি সতর্ক করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের নীতিগত অনিশ্চয়তার কারণে স্বল্পমেয়াদে অস্থিরতা থাকতে পারে।

সূত্র: নিউ স্ট্রেইটস টাইমস


বাণিজ্য সহযোগিতা জোরদারে বিএফটিআই এবং আইটিডির সমঝোতা স্মারক সই

বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট (বিএফটিআই) এবং থাইল্যান্ডের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইটিডি)-এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে বাণিজ্য ও উন্নয়ন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে ব্যাংককে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট (বিএফটিআই) এবং থাইল্যান্ডের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইটিডি)-এর মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় বলে আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘ এসকাপে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ফাইয়াজ মুরশিদ কাজী। অন্যদিকে আইটিডির পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক সুপাকিত চারনকুল।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকায় থাই দূতাবাসের ডিপুটি চিফ অব মিশন সুপাওয়াদি, বিএফটিআই-এর ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সাইফ উদ্দিন আহম্মদ (ভার্চুয়ালি), বাংলাদেশ দূতাবাসের ইকনমিক কাউন্সেলর সারোয়ার আহমেদ সালেহীন এবং প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) মো. সামাউন খালিদ।

চুক্তি অনুযায়ী, বিএফটিআই ও আইটিডি শিক্ষা, গবেষণা, প্রশিক্ষণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং নীতি বিশ্লেষণ খাতে যৌথভাবে কাজ করবে। তারা একসঙ্গে গবেষণা, সেমিনার, কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজনের পাশাপাশি একাডেমিক ও নীতিগত জ্ঞান বিনিময় করবে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ফাইয়াজ মুরশিদ কাজী আশা প্রকাশ করেন যে, এই সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের প্রস্তাবিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) বাস্তবায়নের জন্য যৌথ সম্ভাব্যতা যাচাই কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে। তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও অংশীজনদের সম্পৃক্ত করে একটি পর্যালোচনামূলক সেমিনার আয়োজনের প্রস্তাব দেন।

বিএফটিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সাইফ উদ্দিন আহম্মদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র্যকরণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর দেশের বাণিজ্যিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এই সহযোগিতা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। এই এমওইউ উভয় প্রতিষ্ঠানের জন্য জ্ঞান বিনিময়, যৌথ গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ড পরিচালনার নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে, যা শুধু দুই দেশের নয়, গোটা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্যও উপকার বয়ে আনবে।’

আইটিডির নির্বাহী পরিচালক সুপাকিত চারনকুল বলেন, ‘ভবিষ্যতে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, দক্ষতা উন্নয়ন এবং নীতি গবেষণার ক্ষেত্রে আরও নিবিড় সহযোগিতা গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। উভয় প্রতিষ্ঠানই টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য বাণিজ্যকে অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে ধরে রাখতে একসাথে কাজ করবে।’

বিএফটিআই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি গবেষণাভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাংক, যা বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক ও সক্ষম করে তুলতে গবেষণা, প্রশিক্ষণ এবং নীতিগত সহায়তা প্রদান করে আসছে। অন্যদিকে, আইটিডি থাইল্যান্ডের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান, যা জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনসিটিএডি)-এর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত। আইটিডি থাইল্যান্ডসহ এশিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলের উন্নয়নশীল দেশগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।


banner close