ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ইটিবিএল সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিজওয়ান রাহমান বলেছেন, দুই বছরের করোনা মহামারির ধাক্কা কাটতে না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপরও বেশ চাপ সৃষ্টি করেছে। বেড়ে গেছে সব ধরনের পণ্যের দাম। সরকারি হিসাবেই মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। দিন যত যাচ্ছে, সংকট তত বাড়ছে। মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। সরকারের একার পক্ষে এই সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব নয়, সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সম্মিলিতভাবে সংকট মোকাবিলা করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
বৃহস্পতিবার দৈনিক বাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিসহ দেশের সব মানুষকে এই অনুরোধ করেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন দৈনিক বাংলার বিজনেস এডিটর আবদুর রহিম হারমাছি।
দুই বছরের বেশি সময়ের করোনাভাইরাস মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় তছনছ হয়ে গেছে বিশ্ব অর্থনীতি। যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে কেমন চলছে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য?
প্রতিদিন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা ভালো অবস্থায় আছে সেটিও বলা যাবে না; আবার খুব খারাপ আছে সেটিও বালা যাবে না। ব্যবসায়ীরা এই মুহূর্তে খুবই কনফিউজড। গতি কোন দিকে যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা বুঝতে পারছেন না। বাংলাদেশে বর্তমানে যে সমস্যাগুলো হচ্ছে, এগুলো কিন্তু শুধু বৈশ্বিক কারণে। এখন এটি কাউকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। এ রকম সমস্যা ১০ বছর আগে হলে বাংলাদেশে এত সমস্যা হতো না। কিন্তু এখন বাংলাদেশ একটি গ্লোবাল প্লেয়ার। আজকে যদি বাংলাদেশে কিছু হয়, তাহলে বিশ্ববাজারে পাটের দাম বেড়ে যাবে। বিশ্ববাজারে চায়ের দাম বেড়ে যাবে। বাংলাদেশের কিছু হলে বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের (আরএমজি) দাম বেড়ে যাবে। ওষুধের দাম বেড়ে যাবে। চামড়ার তৈরি জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে। কারণ আমরা এগুলো বিশ্বের কাছে সরবরাহ করি।
সার্বিকভাবে বাংলাদেশ এখন একটু হিমশিম খাচ্ছে। আমাদের ডলার ক্রাইসিস আছে। এনার্জি ক্রাইসিস আছে, এগুলো মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে। এখন আমাদের ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি, পলিটিক্যাল ডিপ্লোমেসি আরও স্ট্রং হতে হবে। আমাদের এখন শক্ত হতে হবে। আমাদের এনার্জি ক্রাইসিস থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের এলএনজি আমদানি করতে হবে। আমি রাশিয়া থেকে নেব না ব্রুনাই থেকে নেব, না চায়না থেকে নেব সেটি বিষয় নয়। দেশের স্বার্থের জন্য আমাদের এগুলো করতে হবে। এটি ক্রাইসিস মোমেন্ট। সব সিদ্ধান্ত ঠান্ডা মাথায় নিতে হবে।
এই মুহূর্তে সরকারের হাতেও তেমন কোনো কন্ট্রোল নেই। দুটি দেশের যুদ্ধের কারণে এই সমস্যা হয়েছে। সরকারের এখানে কী করার থাকতে পারে। ডলারের দামের অবস্থাটা দেখেন। কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম ১২০ টাকাও উঠে গিয়েছিল; কিছুই করার নেই। এখন কেউ এলসি খুলতে পারছে না। আমাকে একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী বললেন, তিনি ২১ হাজার ডলারের এলসি খুলতে পারছেন না। এখানে তো আমাদের বলার কিছু নেই। জ্বালানি নিয়ে আমাদের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে অনেক ধরনের কথা হয়েছে। গত বুধবারও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে আমিও ছিলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমাদের সবাইকে একসঙ্গে এই সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে। সরকারের একার এখানে কিছু করার নেই। যে সরকারই থাকুক, কিছু করতে পারবে না।
তবে আমরা একটি বিষয়ে সিদ্ধান্তে এসেছি। আমাদের এত রিজার্ভ দিয়ে কী করব। এর থেকে ২ বিলিয়ন ডলার ছেড়ে দেন। কিছু তেল নিয়ে আসেন। আমাদের এনার্জি কিনে আনা দরকার। আবার আপনি বাংলাদেশে সারের ভর্তুকি কমাতে পারবেন না। আমেরিকার মতো দেশ এখনো সারে ভর্তুকি দেয়। আপনি অন্যান্য ব্যবসা থেকে ভর্তুকি কমিয়ে আনেন। আমাদেরও সেটি করতে হবে, না হলে আমরা খাদ্যে নিরাপত্তা দিতে পারব না। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বলেন, আর অর্থনীতি বলেন, কেমন যাচ্ছে সেটি বিষয় না। কতদিন যাবে সেটি হচ্ছে বিষয়। এই যুদ্ধ কতদিনে থামবে, তা কেউ কিছু বলতে পারছেন না। তাই সবকিছুই এখন অনিশ্চিত। এই অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ সামনে রেখেই আমাদের চলতে হচ্ছে। কতদিন চলতে হবে জানি না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় প্রতিদিনই আশঙ্কার কথা বলছেন, অনিশ্চয়তার কথা বলছেন। খরচ কমানোর আহ্বান জানিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করছেন। এতে কি দেশবাসীর মধ্যে ভয়-শঙ্কা আরও বাড়ছে? আপনার কাছে সার্বিক পরিস্থিতি কেমন মনে হচ্ছে? কোন পথে যাচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের ভালোর জন্যই এসব কথা বলছেন। যাতে মানুষ সতর্ক হয়। আমরা একসময় ভালো অবস্থায় ছিলাম। কয়েক বছর আমাদের গ্রোথ (জিডিপি প্রবৃদ্ধি) ছিল ৮ শতাংশের ওপর। তারপর যখন আমরা করোনাভাইরাসের মধ্যে হিমশিম খেয়ে গেলাম। তখনও কিন্তু বাংলাদেশে ৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে; যা ছিল এই অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আমি এ কথাগুলো নির্দলীয় কথা বলছি। সব সময়ই আমি এই ধরনের কথা বলি। সরকার যেখানে ভুল করছে, সেটি বলি। আবার ঠিক করলেও বলি। করোনার সময় সরকার অনেক ভুল করেছে আমরা সেটি বলেছি তো। আবার বাংলাদেশ সরকার করোনাভাইরাসের সময় ভালো দেশ পরিচালনা করেছে। সরকার বাংলাদেশের মতো ১৭ কোটির জনসংখ্যার দেশে অনেক ভালো অর্থনীতি সামলেছে। সবাই তখন ভালো ভূমিকা পালন করেছেন।
তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে কিন্তু প্রচুর সমালোচনা হয়েছে। এখন এই সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ঘরের সামনে চাষ করুন। এটি তো গুলশানের বাসিন্দাদের বলেননি। এটি নিয়ে ভয় পেয়ে লাভ নেই। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সামনে ডলারের দাম ১৩০ টাকা যাবে না- কোনো বাংলাদেশি ব্যবসায়ী কি সেই গ্যারান্টি দিতে পারবেন? বর্তমানে জ্বালানির দাম চার গুণ হয়ে গেছে, এটি যে ৪০ গুণ হবে না সেটি কি কেউ বলতে পারবেন? সে জন্য প্রধানমন্ত্রী বলতেই পারেন আপনাকে সাশ্রয়ী হতে। আপনি এখন যেভাবে চলছেন, সেভাবে যদি চলতে থাকেন তাহলে আপনি আর তিন মাস চলতে পারবেন। আপনি যদি সাশ্রয়ী হয়ে চলতে থাকেন, তাহলে তিন বছর চলতে পারবেন।
আশা করা যায় তিন বছরের মধ্যে যুদ্ধ-টুদ্ধ সবকিছু শেষ হয়ে যাবে। আমি এটিকে এভাবে দেখি। যারা সরকারবিরোধী, তারা হয়তো অন্যভাবে দেখেন। একেকজন একেকভাবে চিন্তা করেন।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো আছে। তবে বাংলাদেশ যে খারাপ অবস্থায় যাবে না সেটির কোনো গ্যারান্টি নেই। তবে শ্রীলঙ্কা হবে সেটিও ঠিক না। বাংলাদেশের বেসরকারি খাত খুব শক্তিশালী। খুব খারাপ সময়ে এই খাত ৬ থেকে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দিয়েছে।
করোনার মধ্যে সব দেশ যখন খুব খারাপ অবস্থায় ছিল, বাংলাদেশ তখন ভালো ছিল। এখন প্রধানমন্ত্রী যদি বলেন তুমি সাবধানে থাকো, সেটিকে নেগেটিভ হিসেবে নেয়া যাবে না।
প্রায় এক বছর ধরে ডলারের বাজার অস্থির। নানা পদক্ষেপ নিয়েও বাগে আসছে না। এক মাসের বেশি সময় ধরে বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তার পরও ডলারের দাম কমছে না। সমস্যা আসলে কোথায়? কীভাবে সমাধান হবে? ডলারের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে কী ধরনের প্রভাব পড়ছে?
ডলারের বাজার বলা যাচ্ছে না কোন দিকে যায়। এটি পুঁজিবাজারের মতো হয়ে গেছে। কোন দিকে যায় বলা যায় না। গত বছর আমি আমার আগামী তিন বছরের ফোরকাস্টিংটা করেছিলাম। তখন আমি ডলারের দাম ৮৪-৮৫ টাকা ধরেছিলাম। এখন আমি দেখছি সেই ডলার ১১০, ১১৫ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। সেটি মানিয়ে নেয়া আমাদের জন্য খুব কঠিন। আমরা কোনো ধারণা করতে পারছি না আগে থেকে। যার কারণে আমাদের সব সময় একটি বাফার ধরে রাখতে হয়। এখন কিন্তু রপ্তানিকারকদের জন্য শুধু আমদানি খোলা। আর সবার জন্য আমদানি বন্ধ। শুধু তৈরি পোশাকের কাঁচামালের জন্য এলসিটা দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। তখন যারা বাধ্যতামূলকভাবে এলসি করবে। ডলারের দাম আরও বেড়ে যাবে।
আমি মনে করি বাংলাদেশ সমস্যা থেকে উতরে যাবে। বাংলাদেশে এখনো ৩৬ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে। তখন তো ডলারের প্রাইজটি সেখানে এফেক্ট করবে। গ্যাস ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে একটি করেছিল। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়। সেটি তো আমরা ব্যবসায়ীরা মিলে বিদ্যুৎ প্রস্তাব দিলাম যে আপনি এই ডেভেলপমেন্ট ব্যবহার করেন এখন। আপনি তো এখন গ্যাস ডেভেলপমেন্ট করছেন না। দরকার হলে আপনি আমাদের বিদ্যুতের দাম বাড়িয় দেন। বিদ্যুতের দাম যদি বাড়াতে হয় আপনাকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে হবে। এটির জন্য যা যা করণীয় আপনি করেন।
আপনি এখন ফার্নিচার কিনবেন নাকি এলএনজি কিনবেন। গ্যাস ডেভেলপমেন্টের বিষয়ে আমরা পরে আসি। কারণ গ্যাস পেতে পেতে তো আমাদের ১০ বছর লাগবে।
তবে আমি এ ক্ষেত্রে সরকারকে বলব আপনারা সব সময় একটি বিপদে একটি শর্ট টার্ম সলিউশনকে লং টার্ম বানিয়ে ফেলেন। এটি আর করেন না। আপনারা এখন শর্ট টার্ম সলিউশন করেন। একই সঙ্গে লং টার্ম ডিসিশনটি নিয়ে নেন। আওয়ামী লীগ সরকার যে ১৩-১৪ বছর ক্ষমতায় ছিল, এতদিনে তো কয়েকটি গ্যাসফিল্ড খুঁড়ে ফেলতে পারত। কিন্তু সেটি করা হয়নি। আমাদের কমপ্লেইন করে লাভ নেই। এখন করব, এই মুহূর্তে করব। ১০ বছর পরে গিয়ে আমরা পাব। এটি কিন্তু পদ্মা সেতুর মতো একটি মাইলফলক থাকবে। আপনি এক্সপেনসিভ ফুয়েলের ওপর ডিপেন্ডেন্ট থাকতে পারবেন না। যেহেতু আপনি আমদানিনির্ভর দেশ। আপনি রপ্তানি কমাতে পারবেন না। আবার বিশ্ববাজারে যদি তাদের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে আপনার রপ্তানি বাজার তো ধসে পড়বেই। বাংলাদেশের সিঙ্গেল লার্জেস্ট এক্সপোর্ট ডেস্টিনেশন হচ্ছে জার্মানি। বাংলাদেশের টোটাল এক্সপোর্টের ১৫ শতাংশ জার্মানিতে যায়। আমাদের ৮৩-৮৪ শতাংশ রপ্তানি যায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে। সেসব দেশে যদি মূল্যস্ফীতি বাড়তেই থাকে, তাহলে ওই সব দেশের লোক পোশাক কেনা কমিয়ে দেবে- এটিই স্বাভাবিক। তাহলে নিশ্চিতভাবেই আগামী বছর আমার রপ্তানি আয় কমে যাবে।
যুক্তরাজ্যে এখন ১০০ শতাংশের ওপর মূল্যস্ফীতি। সেখানে তো পণ্যের চাহিদা কমে যাবে। লন্ডনে আমার এক্সপোর্ট কমে যাবে। যদি এক্সপোর্ট কমে যায়, তাহলে আমার আয় কমে যাবে। এখানে তো বাংলাদেশের কিছু করার নেই। একসময় বিশ্বে সমস্যা হলে বাংলাদেশের কিছু হতো না। তখন বাংলাদেশ ছিল একটি পুঁটি মাছ। আজকে বাংলাদেশ কিন্তু বোয়াল মাছ। বিশাল ব্যাপার। এ জন্য আমি আবার দৃষ্টি আকর্ষণ করব সরকারের এবং বেসরকারি খাতের। রপ্তানি বাজার এবং পণ্য দুটিকে একসঙ্গে বহুমুখী করা লাগবে। আপনি আমেরিকার ওপর ডিপেন্ডেন্ট থাকবেন সারাক্ষণ। আপনি সারাক্ষণ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ওপর ডিপেন্ডেন্ট থাকবেন। আপনি নিজে যে এত বড় একটি মহাদেশে বাস করেন, সেটি কি ভুলে গেছেন। এশিয়ায় আপনার এক্সপোর্ট মাত্র ১১ শতাংশ কেন ভাই? ৮৪ শতাংশ যাচ্ছে ইউরোপ আর আমেরিকায় এবং ৪ শতাংশ যাচ্ছে আফ্রিকায়। তাই আমি বলছি, রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতেই হবে। আমি বলছি না বাড়াতে; আপনাকে আফ্রিকার মার্কেট এক্সপ্লোর করতে হবে, আপনাকে এশিয়ার মার্কেট এক্সপ্লোর করতে হবে। আপনাকে চায়নায় যেতে হবে। চায়না থেকে আমি শুধু মাল কিনব কেন? আমি চায়নায় মাল বেঁচতে পারি না। এটি তো সম্ভব। আপনাকে পণ্য বহুমুখীকরণ করতে হবে। আপনি গার্মেন্টস করছেন ভালো কথা। সেটি কিন্তু আমরা চামড়াশিল্পের জন্য করতে পারি। আমরা পাটশিল্পের জন্য করতে পারি। সেটি আমরা কৃষি খাতের জন্য করতে পারি। আমরা তথ্যপ্রযুক্তির জন্য করতে পারি। প্রতিটি খাতের জন্য যদি আমরা করতে পারি, তাহলে কিন্তু আমাদের পণ্য ডাইভারসিফাই হবে। এই সবকিছুর মধ্যে আপনি যতক্ষণ না আপনার এক্সপোর্ট বাড়াবেন। আপনি ডলারটিকে কন্ট্রোল করতে পারবেন না। আপনি ডলারের প্রাইজ রিভাইস করতে পারবেন না। বিশ্ববাজার যতদিন ঠিক না হবে, ততদিন এই সমস্যা থাকবেই। যখন দুনিয়ার বড় বড় সাহেব মনে করবে যে অস্ত্রের ব্যবসা বন্ধ করে একটি শান্তির ব্যবসা করতে পারতাম। তাহলে হয়তো এই সমস্যার সমাধান হবে।
আপনি রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণের পাশাপাশি বাজার বাড়ানোর কথা বলছেন। এরই মধ্যে কিন্তু আমরা পাশের দেশ ভারতে আমাদের রপ্তানি বাড়তে দেখছি। গত অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে ভারতে। প্রায় দেড় শ কোটি মানুষের দেশ ভারতের বাজার নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
ভারতের বাজার আসলে ডিপ্লোমেটিক ইস্যু। এ বিষয়গুলো কূটনৈতিক, এখানে বেসরকারি খাতের করার কিছু নেই। এ বছরের জুলাইয়ে আমরা ৪৯ জনের একটি দল ভারত গিয়েছিলাম, প্রায় ৪০০-৫০০ ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বললাম। ব্যবসায়ীরা কিন্তু ব্যবসা করার জন্য অস্থির। কিন্তু আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আর তাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কী কথা হয়, সেটি তো আমরা বলতে পারব না। তাদের মধ্যে কী ধরনের সম্পর্ক আছে, সেটির ওপর দুই দেশের ব্যবসা নির্ভর করে।
আমি তো মনে করি নর্থইস্ট রিজিয়নটিকে দিল্লির সঙ্গে কানেক্ট করার জন্য বাংলাদেশ শুড বি দ্য হাব। ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যান্ড দ্য সেভেন সিস্টারস। এটি তো একটি ডিপ্লোমেটিক ইস্যু। এখানে আমরা কী করতে পারি। আমি নিজে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলাম। তিনি আমাকে বললেন আমরা দেখছি। আমি ওনাকে বললাম আপনি তো দেখছেন আমার জন্মের আগে থেকে। আপনি যখন একটি দেশের থেকে আপনার ৬০ শতাংশের বেশি আমদানি করবেন, সেই দেশের প্রতি আপনি অ্যান্টি-ডাম্পিং ডিউটি ইম্পোজ করতে পারেন। এখন আপনি আমাকে বলেন, গোটা ভারতের ৬০ শতাংশ কি বাংলাদেশ থেকে ইম্পোর্ট হয়? সেটি কোনো দিন সম্ভব না, বাংলাদেশে কোনো পাটই নেই। তার পরও কেন আপনি আমার ওপরে অ্যান্টি-ডাম্পিং ডিউটি দিচ্ছেন। এগুলো হচ্ছে ডিপ্লোমেটিক ইস্যু। এগুলোকে আমাদের পরিবর্তন করতে হবে। এ ছাড়া অনেক ঝামেলা আছে, সেগুলো আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এগুলো এক রাতে ঠিক হবে না। এগুলো চালিয়ে যেতে হবে।
বুধবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেশের নাগরিকের কাছে যথাযথ মূল্যে সরবরাহ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আপনি কি মনে করেন ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফা করছেন, বেশি দামে দেশবাসীর কাছে পণ্য বিক্রি করছেন?
সত্যি কথা বলতে কী বিশ্ববাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্যসহ সব জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদেরও খরচ অনেক বেড়ে গেছে। তারা বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। ডলারের দাম বাড়ার প্রভাবও পড়েছে পণ্যমূল্যে। সবকিছু মিলিয়েই কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। এতে দেশের সাধারণ মানুষ যে খুবই কষ্টে আছে, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। এই কঠিন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের ব্যবসায়ীদের কম লাভে পণ্য বিক্রি করে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে আমি মনে করি।
মনে রাখতে হবে, করোনা মহামারির সময় কিন্তু সরকার আমাদের প্রণোদনা দিয়েছে। এখন যদি আমরা সরকারের পাশে, মানুষের পাশে না দাঁড়াই, তাহলে কিন্তু ঠিক হবে না। এখানে একটি কথা বলা প্রয়োজন, প্রধানমন্ত্রী আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, কিন্তু ওনার নেতৃবৃন্দ উল্টাটি করছেন। প্রধানমন্ত্রী মোবাইলের মাধ্যমে টাকা দিলেন, আর ওনার এক নেতার কাছে ৩০০ জনের সিম পাওয়া গেল। যা-ই হোক, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সবাইকে ইউনাইটেড হওয়ার জন্য। আমরা যদি সবাই একসঙ্গে উঠে দাঁড়াই, তাহলে তো মনে হয় না আমাদের কোনো সমস্যা হবে। মহামারিতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অনেক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু আমরা তো সার্ভাইব করে গেছি। প্রধানমন্ত্রী এখন আমাদের বলছেন, মুনাফা একটু কম করতে। এই মুহূর্তে মুনাফা না করলে ভালোই হয় বলে আমি মনে করি। কিন্তু অনেকে এখন হয়তো চিন্তা করছেন যে আমি তো গত দুই-তিন বছর হিমশিম খেয়ে গেছি। এখন একটু পুষিয়ে নিই।
বর্তমান পরিস্থিতিতে নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য একটি জিনিস চাওয়া যেমন ডিফিকাল্ট, একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্য চাওয়া কিন্তু আরও কঠিন। সে কিন্তু চায় না, তার মধ্যে একটি ইগো কাজ করে। মধ্যবিত্তরা সমস্যায় থাকে, কোন দিকে যাব আমরা। তবে সব ব্যবসায়ী খারাপ না। একজনের জন্য সব ব্যবসায়ীকে খারাপ বলা যাবে না। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশে যারা খারাপ ব্যবসায়ী তারাই ভালো আছে, যারা ভালো ব্যবসায়ী তারাই বিপদে আছে। যা-ই হোক, সেটি ভিন্ন আলোচনা। আমি বলতে চাই, এই মুহূর্তে মুনাফা করা ঠিক না। এর পরে আবার সময় আসবে, তখন মুনাফা করবেন। এভাবেই তো বাংলাদেশ এগিয়েছে। আগে মানুষ বাংলাদেশকে চিনত না। এখন সবাই সমীহ করে।
নির্বাচন কমিশন ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেশে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে অর্থনীতির কী হবে? ব্যবসা-বাণিজ্যেরই বা কী হবে?
এটি তো বাংলাদেশের রাজনীতির বিউটি। প্রতি পাঁচ বছরেই হয়। এটি তো ভালো আমাদের বিরোধী দলরা সমাবেশ করছে। জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং হবে সেটিই স্বাভাবিক। তবে অতীতের মতো সংঘাতের রাজনীতি যেন না হয়, সেটি সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। এটি যেন ব্যবসা-বাণিজ্যে কোনো বাধা সৃষ্টি না করে, সেটিই মনে রাখতে হবে।
রাজনীতি করা সবার অধিকার। আমরা চাই একটি শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু পরিবেশ। সেটি থাকলেই ভালো, সরকারি দল-বিরোধী দল সবাই রাজনীতি করবে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের ওপর, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর একটু চোখ রাখবেন প্লিজ! বাস-টাসগুলো পুড়িয়ে দিয়েন না, আমরা আমাদের ব্যবসা করি, আপনারা আপনাদের রাজনীতি করেন। আসুন, সবাই মিলেমিশে দেশটিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাই।
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম ৬) পদ্ধতি অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সর্বশেষ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) দেশের শিল্প খাতে বৈচিত্র্য আনতে প্রথমবারের মতো এয়ারপ্লেন অ্যামেনিটি ব্যাগ ও কিট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে স্বাগত জানিয়েছে। চীনা প্রতিষ্ঠান কেএমকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিমিটেড বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৮.৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করবে। এ প্রকল্পে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে ১,২৩১ জন বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান, বিএসপি, এনডিসি, পিএসসি এর উপস্থিতিতে বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) জনাব মোঃ আশরাফুল কবীর এবং কেএমকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান মি. উ ইউজিয়াং গত ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিকভাবে এয়ারপ্লেন অ্যামেনিটি ব্যাগ তৈরি করবে এবং ধীরে ধীরে নিজেদের উদ্যোগে মোজা, তৈরি পোশাক ও এক্সেসরিজ, কসমেটিকস এবং হেডফোন ও ইউএসবি কেবলসহ কিছু ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন করবে। এর মাধ্যমে বেপজার শিল্পখাতে নতুন ও অনন্য পণ্যের সংযোজন ঘটবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বেপজা নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠানটিকে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলকে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং নির্বিঘ্ন ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, “এই প্রকল্প বেপজার রপ্তানিমুখী শিল্প খাতে বৈচিত্র আনার ধারাবাহিক প্রয়াসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আমরা বিনিয়োগকারীদের নিজস্ব উৎপাদন সক্ষমতা গড়ে তোলার পাশাপাশি দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে কাঁচামাল সংগ্রহে উৎসাহিত করি, যা শিল্পোন্নয়ন ও জাতীয় অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে।”
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বেপজার সদস্য (প্রকৌশল) আবদুল্লাহ আল মামুন, সদস্য (অর্থ) আ ন ম ফয়জুল হক, নির্বাহী পরিচালক (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মোঃ তানভীর হোসেন, নির্বাহী পরিচালক (এন্টারপ্রাইজ সার্ভিসেস) মোঃ খুরশিদ আলম, নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন) মোঃ সালাহউদ্দিন, নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) এ.এস.এম. আনোয়ার পারভেজ এবং কেএমকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিমিটেডের প্রতিনিধিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুমোদিত কর প্রতিনিধিগণের (Authorized Representative) মাধ্যমে সম্মানিত করদাতাগণের অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল সহজ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর কর্মকর্তাগণ এবং আইটি প্রোগ্রামারগণ Tax Representative Management System (TRMS) নামক একটি সফটওয়্যার প্রস্তুত করেছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের মাননীয় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ TRMS (https://trms.nbr.gov.bd/) সিস্টেমটি আজ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাল্টিপারপাস হলে উদ্বোধন করেন।
একটি আধুনিক, স্বচ্ছ এবং করদাতা-বান্ধব রাজস্ব প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে TRMS একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। করদাতার প্রতিনিধিত্ব প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজ করার মাধ্যমে TRMS প্ল্যাটফর্মটি কর ব্যবস্থাপনায় অধিকতর দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।
আয়কর আইনে অনুমোদিত কর প্রতিনিধিগণ যেসকল সম্মানিত করদাতাগণের রিটার্ন দাখিল করার জন্য করদাতা কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত (authorized) তাঁদের সকলের আয়কর রিটার্ন TRMS সফটওয়্যারটিতে নিবন্ধনের মাধ্যমে অনলাইনে দাখিল করতে পারবেন। যেকোন করদাতা কর প্রতিনিধি নিয়োগের জন্য তাঁর নিজ নামে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত মোবাইল ফোনে প্রাপ্ত OTP কর প্রতিনিধিকে প্রদানের মাধ্যমে অনলাইনে তাঁর রিটার্ন দাখিলের জন্য ক্ষমতা প্রদান (authorize) করতে পারবেন।
একজন আয়কর প্রতিনিধি যতজন করদাতার আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করবেন তার সবগুলো রিটার্ন সংশ্লিষ্ট কর প্রতিনিধির নামের বিপরিতে TRMS সিস্টেমে সংরক্ষিত থাকবে। কর প্রতিনিধিগন রিটার্নের তথ্যাদি যেকোন সময় সিস্টেম থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।
TRMS এর মূল বৈশিষ্ট্য:
• আয়কর আইন অনুযায়ী অনুমোদিত সকল কর প্রতিনিধিদের (Authorized Representative) ডিজিটাল নিবন্ধন;
• করদাতা কর্তৃক তাঁর কর প্রতিনিধিকে অনলাইন সিস্টেমে ক্ষমতা (authority) অর্পণ;
• প্রত্যেক কর প্রতিনিধি কর্তৃক দাখিলকৃত সকল আয়কর রিটার্নের তথ্য আলাদাভাবে TRMS সিস্টেমে সংরক্ষণ;
• কর প্রতিনিধিগণ কর্তৃক করাদাতাগণের পক্ষে ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ;
• এটি করদাতা এবং কর প্রতিনিধি উভয়ের জন্যই ব্যবহারকারী-বান্ধব সহজ ইন্টারফেস;
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব মো: আবদুর রহমান খান এফসিএমএ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ট্যাক্স লইয়্যারস এসোসিয়েশনের (BTLA) সভাপতি এডভোকেট রমিজ উদ্দিন আহমেদ, ইন্সটিটিউট অব কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (ICMAB) এর প্রেসিডেন্ট জনাব মাহতাব উদ্দিন এফসিএমএ, ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (ICAB) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব মোঃ রোকনুজ্জামান এফসিএ এবং ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ (ICSB) এর প্রেসিডেন্ট জনাব এম নাসিমূল হাই এফসিএস বক্তব্য রাখেন। তাঁরা এরকম জনমূখী উদ্যোগ নেওয়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ধন্যবাদ জানান।
সভাপতির বক্তৃতায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো: আবদুর রহমান খান এফসিএমএ সারাদেশ থেকে আগত কর আইনজীবী নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
TRMS সিস্টেমটি করদাতা এবং তাদের প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি মসৃণ সেতুবন্ধন তৈরি করবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করে।
-জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
রবিবার লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসই শরীয়াহ্ সূচক ৫ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে ১২০১ ও ২১৫৬ পয়েন্টে রয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে লেনদেন হয়েছে ১১১ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
রবিবার এ সময়ে লেনদেন হওয়া কম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২০৩টির, কমেছে ৭৪টির এবং অপরির্বতিত রয়েছে ৯৩টি কম্পানির শেয়ার।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ কম্পানি হলো-খান ব্রাদার্স, শাইনপুকুর সিরামিক, সালাম স্টিল, রবি, ডোমেনেজ, আইপিডিসি, লাভেলো আইসক্রিম, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, রূপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ও ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
এর আগে আজ লেনদেন শুরুর প্রথম ৫ মিনিটে ডিএসইএক্স সূচক বাড়ে ৮ পয়েন্ট।
সকাল ১০টা ১০ মিনিটে সূচক আগের অবস্থান থেকে আরো ১২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়। লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর অর্থাৎ সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৫১ পয়েন্টে অবস্থান করে।
অপরদিকে লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৫ হাজার ৫৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করে।
এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এসময়ের ২০টি কম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ৮টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২টি কম্পানি শেয়ারের দর।
নওগাঁ জেলার মহাদেবপুরের মোমিনপুর বাজারে রয়েছে জেলার সবচেয়ে বড় পাইকারি কাঁচা মরিচের হাট। সেই হাটে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। যা দুই দিন আগে দাম ছিল ১৩০-১৫০ টাকা। হঠাৎ করে দাম কমে যাওয়ায় হতাশায় কৃষকরা। তারা বলছেন, এ রকম দাম থাকলে অনেক লোকসান হবে তাদের। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি হওয়ায় হঠাৎ এ অবস্থা।
গত শুক্রবার মহাদেবপুরের মোমিনপুর কাঁচা মরিচের হাটের দৃশ্য এটি। সপ্তাহের প্রতিদিন বসে এখানে কাঁচা মরিচের হাট। বছরে ৬ থেকে ৭ মাস চলে এ হাট। এখানে প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার কাঁচা মরিচ কেনাবেচা হয়ে থাকে। এখানকার মরিচ ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্রগ্রাম, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
মহাদেবপুরের কুঞ্জবন এলাকা থেকে আসা কৃষক সোলেমান আলী ও গুলবর রহমান বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কাঁচা মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু হাটে দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের উৎপাদন খরচই উঠবে না। মরিচ চাষে খরচ হয়েছে অনেক। এখন পর্যন্ত তারা যে পরিমান বিক্রি করেছেন তা দিয়ে শ্রমিকের মজুরি, কীটনাশক খরচ মিটিয়ে কিছুই থাকবে না। প্রথমে প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হয়েছিল ১৩০-১৫০ টাকায় আর এখন তা ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বগুড়া থেকে আসা কাঁচা মরিচের ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বলেন, এই হাটের মরিচ ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। তবে ভারত থেকে মরিচ আমদানি হওয়ায় হঠাৎ করে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
মোমনিপুর হাট কমিটির সদস্য মামুনুর রশিদ বলেন, জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় কাঁচা মরিচের হাট এটি। বছরে ৬ থেকে ৭ মাস চলে এ হাট। আর প্রতি মাসে কাঁচা মরিচের বেচাকেনা হয় দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা। তবে এখন যেভাবে দাম কমে গেছে কৃষকদের লোকসান হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আবহাওয়া ভালো হওয়ায় কাঁচা মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। প্রথমে বাজার ভালো দাম ছিল কিন্তু এখন কিছুটা কম হলে কৃষকরা বেশ লাভবান হবেন। তাই আমরা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শসহ সকল ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। চলতি বছর নওগাঁ জেলায় ৭৫০ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের চাষ হয়েছে।
নির্মাণাধীন মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের উন্নত অবকাঠামো ও লজিস্টিক সুবিধা দেশের মৎস্য ও সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানি খাতে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। শিল্পসংশ্লিষ্টরা এ তথ্য জানান।
মহেশখালী-মাতারবাড়ি ইন্টিগ্রেটেড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট উদ্যোগের অংশ সমুদ্রবন্দরটি নির্মাণে সহায়তা দিচ্ছে জাপান। এটি চট্টগ্রাম বন্দরের জট কমাতে এবং বড় জাহাজ সরাসরি পরিচলানার সুবিধা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মৎস্য খাতে যা সরাসরি প্রভাব ফেলবে। কারণ কোল্ড চেইন রক্ষা করে দ্রুত পরিবহন এই খাতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মহেশখালীর মাছ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, নতুন বন্দরটি হিমায়িত মাছ ও সামুদ্রিক খাদ্যের মতো দ্রুত পচনশীল পণ্যের পরিবহন সময় ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনবে। ফলে সতেজতার মান বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা বিশ্ব বাজারেও আমাদের পণ্য পৌঁছানো সহজ হবে।
মাতারবাড়ির জেলে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে আমাদের ধরা মাছ খুব কম সময়ের মধ্যে রপ্তানি হবে। এতে আমরা ন্যায্যমূল্য পাব, যা আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করবে।
সামুদ্রিক মাছ ধরা ও এর প্রক্রিয়াজাতকরণ বৈশ্বিক বাজারে বহু বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসা হলেও বাংলাদেশে এখনো তেমনভাবে বিকশিত হয়নি।
মহেশখালী-মাতারবাড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (মিডা) প্রতিষ্ঠার ফলে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর সুযোগ আগের চেয়ে বেড়েছে।
বিশ্বের মোট মাছের প্রায় ৭ শতাংশ আসে বঙ্গোপসাগর থেকে। এছাড়া বিশ্বের প্রায় ৪৫ কোটিরও বেশি মানুষ বঙ্গোপসাগরের ‘ব্লু ইকোনমি’ এর ওপর নির্ভরশীল।
বাংলাদেশ ‘ইন্ডিয়ান ওশান টুনা কমিশন’ (আইওটিসির)’ সদস্য। যে কারণে যা ভারত মহাসাগরের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় মাছ ধরার অনুমতি রয়েছে। ফলে বাংলাদেশ নির্দিষ্ট দুই প্রজাতির টুনা মাছের জন্য কোটা পায়। আর অন্য দুই প্রজাতির টুনা ইচ্ছেমতো ধরতে পারে। তবে প্রতি বছরই কোটা অপূর্ণ থেকে যায়।
এই সমস্যার সমাধান ও গভীর সমুদ্রে মাছ ধরাকে উৎসাহিত করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২৮টি লংলাইনার ফিশিং ভেসেল (গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জাহাজ) তৈরি বা আমদানির অনুমতি দিয়েছে।
মাতারবাড়ি বন্দর চাঁকড়িয়া চিংড়ি শিল্পের মতো বিদ্যমান ও নতুন উদ্যোক্তাদের ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মতো দেশে দ্রুত পণ্য পাঠাতে সহায়তা করবে।
মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর রপ্তানি প্রক্রিয়ার সময় ও ব্যয় কমাবে। ফিলে, স্মোকড মাছ, রেডি-টু-ইট সামুদ্রিক খাদ্য ইত্যাদির মতো মান সংযোজিত পণ্যের রপ্তানির পথ প্রশস্ত করবে।
উদাহরণস্বরূপ, স্ক্যালপ (এক প্রজাতির শামুক) প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানি থেকে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি মিডার শক্তিশালী লজিস্টিক সুবিধা দেশে নতুন বিনিয়োগের ঢেউ আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিদায়ী সপ্তাহে (৭ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর) সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন শেষ হয়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসই ও সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন কমেছে।
গত সপ্তাহে ৫ কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ডিএসইতে ৫ হাজার ৭৪৮ কোটি ৩১ লাখ এবং সিএস্টতে ৯২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। শনিবার ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ডিএসইর বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহ ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫২৩ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৩১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৩৯ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩৩ পয়েন্ট বা ২.৭৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৭৪৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৬ হাজার ৪৯১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৭৪৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১০২টির, দর কমেছে ২৫০টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৫টি কোম্পানির। গত সপ্তাহে লেনদেন হয়নি ১৬টি কোম্পানির।
এদিকে অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৮৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৫১৯ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহের সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯২ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১০০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সুস্বাদু ও বৃহৎ আকৃতির পানের জন্য প্রসিদ্ধ। কিন্তু পানের দাম কম হওয়ায় পানচাষিদের বেহাল দশা পরিলক্ষিত হচ্ছে। দাম অত্যন্ত কম ও খরচ অত্যাধিক বেশি হওয়ায় দিন দিন পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন প্রান্তিক কৃষক। ভেঙে ফেলছেন পানের বরজ।
জানা যায়, ভেড়ামারা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে প্রায় ৬৪৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। যেখানে প্রতি বছরে ৭ হাজার মেট্রিক টন পান উৎপাদন হয়। তা ছাড়াও ব্রিটিশ আমল থেকে এই অঞ্চল পান চাষের জন্য প্রসিদ্ধ।
সরেজমিনে গিয়েও উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন জুনিয়াদহ, ধরমপুর ও বাহাদুরপুরের প্রান্তিক পানচাষিদের দুর্ভোগের চিত্র ফুটে ওঠে। প্রতি বিঘা নতুন পান বরজে খরচ হয় ৩-৪ লাখ টাকা। যেখানে পান বিক্রি করে আসছে ১ লাখেরও কম। পান বরজের সরঞ্জামের দামও পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি। পূর্বে যে শ্রমিকের দাম ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, বর্তমানে তা হয়েছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। সে কারণে অনেকেই পান ররজ মেরামত করছেন না। তা ছাড়া দাম কম হওয়ায় অনেকেই বরজের পান ভাঙছেন না। ঋণের দায়ে জর্জরিত কেউ কেউ বরজ ভেঙে অন্য চাষাবাদের চেষ্টা করছেন। পান বরজের ওপর ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে না পেরে অনেকে হয়েছেন ভিটে ছাড়া।
পান হাট জগশ্বরে দেখা যায়, ৫০-২০০ টাকা বিড়ার পান বিক্রি হচ্ছে ৫-৩০ টাকায়। খুব ভালো মানের পান বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা বিড়া।
পান বিক্রি করতে আসা পান চাষি মো. রফিক জানান, প্রতি বিড়া পান ৭ টাকায় বিক্রি করলাম। যা গত বছর ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি করেছি। যাতে করে পান ভাঙা আর যাতায়াত খরচই উঠল না। এই ব্যবসা আর করা হবে না। পানচাষি তুষার জানান, আমার জীবনে পানের দাম এত কম দেখিনি। আমার ৯০ পিলি পান বরজ ছিল কিন্তু দাম না পেয়ে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বাহাদুরপুরের পানচাষি ৭০ বছর বয়ষি বৃদ্ধা জমেলা খাতুন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘৪০ বছরের পুরোনো পান বরজ আমার। না পারছি ভাঙতে, না পারছি রাখতে। পান বাজারে নিলে খরচের টাকাও ফিরে পাচ্ছি না।’
জগশ্বর পানহাটের সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন জানান, উৎপাদন বেশি ও রপ্তানি না থাকায় এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় পানের দাম অনেক কম। কিন্তু শ্রমিক ও পান বরজের সরঞ্জামের দাম পূর্বের থেকে ২-৩ গুণ বেশি। সরকারি কোনো প্রণোদনা না থাকায় প্রান্তিক পানচাষিদের মধ্যে হাহাকার লক্ষ্য করছি। ঋণের ভারে জর্জরিত চাষিরা এই আবাদ ছেড়ে দিচ্ছেন। অর্থকরী এই খাতটিকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের সাহায্য চাই।
ভেড়ামারা উপজেলার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আশফাকুর রহমান দৈনিক বাংলাকে জানান, দাম কম হওয়ায় পানচাষিদের বেহাল দশার বিষয়টি আমরা শুনেছি।
চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের চা-বাগান ও পাহাড়ি এলাকায় মসলা জাতীয় ফসল গুলমরিচের চাষাবাদের ব্যাপক উপযোগী পরিবেশ। তবে এলাকাবাসীর দাবি এখনো বাণিজ্যিকভাবে চাষের পর্যায়ে পৌঁছায়নি শ্রীমঙ্গল। স্থানীয় চা-বাগান ও কিছু পাহাড়ি জমিতে বিচ্ছিন্নভাবে গুলমরিচের গাছ দেখা গেলেও সেগুলোর ফলন মূলত নিজেদের প্রয়োজন বা সীমিতভাবে বিক্রয়ের জন্যই ব্যবহার হচ্ছে। অথচ এই অল্প চাষেও ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা। সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্যোগ থাকলে শ্রীমঙ্গলে গুলমরিচ হতে পারে লাভজনক একটি মসলা ফসল।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে পান গাছের মতো অন্যান্য বড় গাছকে আকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে গুলমরিচের চাষ। উপজেলার হরিনছড়া চা বাগানের সবচেয়ে বেশি গুলমরিচের গাছ দেখা গেছে। সেখানে চা বাগানের ভিতরে প্রায় ২৫টি গাছের সব কটিতেই ফলন এসেছে। সবুজ পাতার ফাকে ফাকে গুলমরিচগুলো আঙ্গুর ফলের মতো ঝুলে রয়েছে। সেখানে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকরাও একবার হলেও ঘুরে দেখছেন গাছগুলো। উপজেলার রাধানগর ও মহাজেরাবাদ এলাকায় রয়েছে কয়েকটি গাছ। এই গাছগুলোর গুলমরিচ গাছেই থাকে, সখ করে কেউ সংগ্রহ করে, না হয় গাছেই নষ্ট হয়।
স্থানীয় পর্যায়ে সম্ভাবনা থাকলেও গুলমরিচ চাষ এখনো বিনিয়োগ ও পরিকল্পনার অভাবে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক রূপ পায়নি। কৃষি বিভাগ ও উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে উদ্যোগ নিলে শ্রীমঙ্গলের গুলমরিচ হতে পারে একটি নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত।
হরিনছড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক বিকাশ সিংহ জানান, ‘আমাদের চা বাগানের সেকশনের ভেতরে প্রায় ২০ বছর আগে লাগানো বেশ কিছু গুলমরিচ গাছ রয়েছে। শ্রমিকরাই এসব গাছের দেখাশোনা করেন। গাছগুলোতে ফলনও আসে, তবে বাণিজ্যিকভাবে সংগ্রহ করা হয় না। গাছগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে, দেখতেও সুন্দর লাগে।
পাইকারি মসলার দোকান মেসার্স মানিক দেব-এর পরিচালক তাপস দেব জানান, ‘স্থানীয় কিছু চাষি আমাদের কাছে গুলমরিচ বিক্রি করতে আসে, তবে পরিমাণ খুবই কম। আমাদের দোকানে বিক্রি হওয়া গুলমরিচের বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আমদানি করা। দেশে যদি গুলমরিচ চাষ ব্যাপক হতো তাহলে আমরা কম দামে কিনতে পারতাম, বাজারেও দাম কমত।’ বর্তমানে প্রতি কেজি কালো গুলমরিচ ১২০০ টাকা এবং সাদা গুলমরিচ ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উজ্জ্বল সূত্রধর দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘গুলমরিচ চাষের জন্য কাটিং (বাইন) সংগ্রহ করে মাটিতে লাগাতে হয়। প্রায় ৬ মাসের মধ্যে ফলন আসে। গাছের বয়স দুই বছর হলে তা থেকে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তখন এগুলো প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাত করা যায়।’
তিনি আরও জানান, ‘শ্রীমঙ্গলের পাহাড়ি এলাকাগুলোর মাটি গুলমরিচ চাষের জন্য উপযোগী। ইতোমধ্যে প্রায় দুই হেক্টর জমিতে বিচ্ছিন্নভাবে এর চাষ হচ্ছে। আমরা কৃষি অফিস থেকে মহাজেরাবাদসহ দশটি জায়গায় চারা রোপণ করেছি। এখন কেউ চাষ করতে আগ্রহী হলে আমরা পরামর্শ ও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
বিমানে ব্যবহৃত জ্বালানি তেল জেট ফুয়েলের দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বুধবার থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হয়েছে।
বিইআরসি ঘোষিত নতুন দামে দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে জেট ফুয়েলের লিটারপ্রতি দাম ৯৯ টাকা ৬৬ পয়সা থেকে কমিয়ে ৯৬ টাকা ৯ পয়সা করা হয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে জেট ফুয়েলের লিটারপ্রতি মূল্য শূন্য দশমিক ৬৫০২ ডলার থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৬৩৩৩ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত আগস্টে জেট ফুয়েলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে প্রতি লিটার ৯৮ টাকা ২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯৯ টাকা ৬৬ পয়সা এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে শূন্য দশমিক ৬৪০১ ডলার থেকে বাড়িয়ে শূন্য দশমিক ৬৫০২ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ অনুযায়ী, দেশি ও বিদেশি এয়ারলাইনসের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য ডিউটি ফ্রি (শুল্ক ও মূসকমুক্ত) এবং অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য শুল্ক, মূসকসহ জেটএ-১-এর (এভিয়েশন ফুয়েল) মূল্যহার নির্ধারণের ক্ষমতা এখন বিইআরসির হাতে।
এর আগে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এই দাম নির্ধারণ করত। চলতি বছরের শুরু থেকে এ দায়িত্ব চলে যায় বিইআরসির কাছে।
এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিপিসি গত ২০ জানুয়ারি জেট ফুয়েলের মূল্যহার-সংক্রান্ত প্রস্তাব দেয়। পরে পদ্মা অয়েল কম্পানি লিমিটেড (পিওসিএল) গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিপণন চার্জ পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব কমিশনে জমা দেয়।
বিমান সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, বাংলাদেশে জেট ফুয়েলের দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি এবং মানও আন্তর্জাতিক মানসম্মত নয়।
এ কারণে এখানকার বিমানভাড়া তুলনামূলক বেশি নির্ধারণ করতে হয়।
কাতারে ইসরায়েলি হামলা ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়ান তেল ক্রেতাদের ওপর শুল্ক আরোপের আহ্বানের পর বুধবার বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে। তবে দুর্বল চাহিদা ও বাজারের সামগ্রিক মনোভাবের কারণে এই বৃদ্ধির গতি সীমিত ছিল।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এদিন ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬১ সেন্ট বা ০.৯২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭ ডলারে। একই সময়ে মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুড তেলের দাম ৬১ সেন্ট বা ০.৯৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৬৩.২৪ ডলারে।
ওএএনডিএ-এর সিনিয়র বাজার বিশ্লেষক কেলভিন ওং বলেন, কাতারে ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে তেলের সরবরাহ নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যদি ওপেকপ্লাস সদস্যদের তেল স্থাপনাগুলো হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়, তাহলে স্বল্পমেয়াদে তীব্র সরবরাহ সংকট দেখা দিতে পারে।
এই হামলায় ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা হামাস নেতৃত্বকে লক্ষ্য করেছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী এই হামলাকে শান্তি আলোচনার জন্য বড় হুমকি বলে বর্ণনা করেছেন।
হামলার পর বাজারে প্রথমে তেলের দাম প্রায় ২ শতাংশ বেড়ে যায়, তবে পরে যুক্তরাষ্ট্র দোহাকে আশ্বস্ত করে যে এরকম ঘটনা আর ঘটবে না এবং সরবরাহে কোনো তাৎক্ষণিক বিঘ্ন না ঘটায় মূল্যবৃদ্ধি স্থিতিশীল হয়ে পড়ে।
এদিকে ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা চীন ও ভারতের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। ট্রাম্পের লক্ষ্য হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানো।
চীন ও ভারত রাশিয়ার প্রধান তেল ক্রেতা। ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এই দুই দেশ রাশিয়ার অর্থনীতিকে সচল রাখতে সহায়তা করে যাচ্ছে।
এলএসইজি-এর বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন বা ভারতের মতো বড় ক্রেতাদের ওপর যদি শুল্ক আরোপ করা হয়, তবে তা রুশ তেলের রপ্তানি বিঘ্নিত করতে পারে, যা বৈশ্বিক সরবরাহ সংকোচনের মাধ্যমে তেলের দামে ঊর্ধ্বগতি আনতে পারে।
উপর্যুক্ত বিষয়ের প্রতি সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো।
০২। সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কাস্টমস হাউস/স্টেশনে আমদানিকালে দাখিলকৃত পণ্য ঘোষণায় প্রদত্ত পণ্যের বর্ণনা ও HS Code কায়িক পরীক্ষায় পণ্যের নমুনা কিংবা শুল্কায়ন পরবর্তী সময়ে পণ্যের ঘোষিত বর্ণনা পরিবর্তিত হয়, যা ক্ষেত্রবিশেষে প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স অথবা প্রাপ্যতা শীট বা সংশ্লিষ্ট Utilization Declaration (UD) তে অন্তর্ভূক্ত থাকে না। ফলে শুল্কায়নকালে উহা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে যথাসময়ে কাঁচামাল/পণ্য খালাস না হওয়ায় রপ্তানি আদেশ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য জাহাজীকরণে বিঘ্ন ঘটছে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অবগত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ও রপ্তানি বাণিজ্যের বৃহত্তর স্বার্থে জরুরি বিবেচনায় নিম্নরূপ নির্দেশনা প্রদান করা হলো:
(ক) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন HS Code নিরূপণ করলে এবং নিরূপিত HS Code এর প্রথম ৪ ডিজিট বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত HS Code এর প্রথম ৪ ডিজিট এর সাথে মিল থাকলে; আমদানিকারক পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে এই নিরূপিত HS Code বন্ড লাইসেন্সে ও ইউডিতে অন্তর্ভূক্ত করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস এর কমিশনার এর নিকট দাখিল করবেন যার বিপরীতে কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
(খ) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন বর্ণনা নিরূপণ করলে; আমদানিকারক পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্তরূপ নিরূপিত পণ্যের বর্ণনা বন্ড লাইসেন্সে ও ইউডিতে অন্তর্ভূক্ত করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস এর কমিশনার এর নিকট দাখিল করবেন যার বিপরীতে কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
গ) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভিন্ন HS Code নিরূপণ করা হলে এবং বন্ড লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কাস্টমস বন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটের মাধ্যমে তার প্রাপ্যতায় উক্ত HS Code অন্তর্ভুক্ত করলে কাস্টমস হাউস এর কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করবেন এবং পণ্য চালান খালাসের তথ্য সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
০৩। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে; এবং বর্তমানে উক্তরূপ কারণে শুল্কায়ন নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষমান পণ্যচালানসমূহের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস গতকাল সোমবার মূল্যসূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় মধ্য দিয়ে সামান্য কমেছে লেনদেন। সেই সাথে কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর।
বেশির ভাগ ভালো কোম্পানির দর কমেছে। সেই সঙ্গে অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ডের দাম হ্রাস পেয়েছে। তবে ‘পচা’ বা ‘জেড’ স্তরের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভালো কোম্পানিগুলোর পতনে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমার তালিকা বড় হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে প্রধান মূল্যসূচক। পাশাপাশি লেনদেন কিছুটা কমলেও তা ছিল ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ওপর। এর মাধ্যমে চলতি বছর দুইবার ১৪শ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। সেই সঙ্গে বেড়েছে মূল্য সূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।
দিন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১২৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২২৩টির। আর ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৬২৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২২৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪০০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৪৪১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৪১ কোটি ৬ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ওপর লেনদেন হলো।
আরেক শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৬৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৭টির দাম বেড়েছে, কমেছে ১১১টির ও ২৬টির অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।