রাজস্ব আদায় বাড়তে কর অব্যাহতি সুবিধা কমানোর তাগিদ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির তুলনায় কর আহরণ কম হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং আমদানি শুল্কে ব্যাপক মওকুফ সুবিধা দেয়া। এসব সুবিধা কমাতে বলেছে বহুজাতিক ঋণদানকারী এই সংস্থাটি। তা হলে বাংলাদেশে রাজস্ব আদায় বাড়বে বলে মনে করছে আইএমএফ।
আজ রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অনুষ্ঠিত জাতীয় রাজস্ব বার্ডের (এনবিআর) নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেছে সফররত আইএমএফ প্রতিনিধিদল। বিকেলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন আইএমএফ প্রতিনিধিরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে রাজস্ব আহরণের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাড়তি রাজস্ব আহরণের পরিকল্পনাও জানতে চেয়েছেন তারা। ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন বা ইন্টিগ্রেশনের ওপর জোর দিয়েছে আইএমএফ। ভ্যাট বিভাগ ও কাস্টমসের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা যায় কি না, সে বিষয়ে খতিয়ে দেখতেও বলেছে সংস্থাটি।
নতুন কাস্টমস আইনের খসড়া তৈরি শুরু হয় ২০১২ সালে এবং আয়কর আইন ২০১৭ সালে। এই দুটি আইন এখনো বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার। খসড়া আইনটি কোন অবস্থায় আছে, সে বিষয়েও জানতে চাওয়া হয় বৈঠকে।
বৈঠকে এনবিআরের পক্ষ থেকে রাজস্ব আদায়ের বর্তমান পরিস্থিতি ও সংস্কারবিষয়ক কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। ভ্যাট, কাস্টমস ও আয়কর বিভাগ থেকে তিনটি পৃথক অবস্থানপত্র তুলে ধরা হয়। আয়কর বিষয়ে অবস্থানপত্র উপস্থাপন করেন এনবিআরের সদস্য আয়কর (নীতি) সামছুদ্দিন আহমেদ। ভ্যাট বিভাগের পক্ষে সদস্য (নীতি) জাকিয়া সুলতানা এবং কাস্টমসের সদস্য শুল্ক (নীতি) মাসুদ সাদিক ভ্যাট ও শুল্কবিষয়ক অবস্থানপত্র তুলে ধরেন।
ঋণ নিয়ে আলোচনা করতে ১০ সদস্যের আইএমএফ একটি প্রতিনিধিদল গত বুধবার ঢাকায় এসেছে। সংস্থাটির এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনান্দ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ঢাকায় অবস্থানকালে প্রতিনিধিদল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করবে। এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে তারা। ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবে রোববার এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক করে আইএমএফ।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় দেশের অর্থনীতিতে যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে তা মোকাবিলায় আইএমএফের কাছ থেকে ৪৫০ কোটি (৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন) ডলার ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তিন কিস্তিতে এই ঋণ দেয়ার আভাস মিলেছে। তবে এ ঋণ পেতে বরাবরের মতো এবারও বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে সরকারকে। এর মধ্যে অন্যতম শর্ত হচ্ছে রাজস্ব খাতে সংস্কার। তারই অংশ হিসেবে এনবিআরের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
সূত্র জানায়, এনবিআরের ভ্যাট, আয়কর ও কাস্টমস নীতি বিভাগের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছে আইএমএফ প্রতিনিধিদল। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এ বৈঠক চলে বেলা ২টা পর্যন্ত। এরপর এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সঙ্গে বৈঠক করে তারা।
একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৈঠকে রাজস্ব খাতের নানা বিষয় আলোচনায় উঠে এলেও আইএমএফের মূল বিষয় ছিল কর অব্যাহিত। আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস- তিনটি খাতেই অব্যাহতি কমানোর তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি। কোন কোন খাতে অব্যাহতি দেয়া আছে তার তালিকা সম্পর্কে জানতে চায় তারা। এ বিষয়ে পর্যালোচনা করে ক্রমান্বয়ে এ সুবিধা কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে।
জবাবে এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশের বৃহত্তর অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে বিভিন্ন সময়ে এসব সুবিধা দেয়া হয়েছে। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিকশিত হয়। উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বাড়ে। কাজেই কর অব্যাহতি কমালে বা বাতিল করলে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। তবে প্রতিবছর বাজেটে কিছু কিছু খাতে অব্যাহতি কমানো হচ্ছে বলে আইএমএফের কর্মকর্তাদের জানানো হয়।
জানা যায়, আয়কর নীতি বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে কর নেট বাড়ানোর কথা বলেছে আইএমএফ। নতুন আয়কর আইনের হালনাগাদ অবস্থা জানতে চায় তারা। এ ছাড়া কর আদায় বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও জানতে চায় তারা।
বর্তমানের করদাতা শনাক্তকরণ সংখ্যা ৭৭ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করনেট বাড়াতে বিআরটিএ, বিডা, ডিপিডিসিসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চুক্তি করা হয়েছে। আরও কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ছাড়া চলতি বাজেটে ৩৮ ধরনের সেবা পেতে আয়কর বিবরণী ও প্রাপ্তি স্বীকারপত্র জমা দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আয়কর আহরণের সবচেয়ে বড় খাত উৎসে কর ব্যবস্থাপনায় অটোমেশন করা হয়েছে। ইটিআইএন-প্রক্রিয়া স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হয়েছে। নতুন আয়কর আইনের খসড়া সহজ করা হয়েছে। এসব উদ্যোগের ফলে করনেট আরও বাড়বে।
কাস্টমস বিভাগের সঙ্গে আলোচনায় নতুন আইন দ্রুত বাস্তবায়নের কথা বলেছে আইএমএফ। এনবিআর বলেছে, প্রস্তাবিত আইনটি এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য জাতীয় সংসদে আছে।
বাংলাদেশে আমদানি শুল্কের গড় সংরক্ষণ হার বা এভারেজ প্রোটেকশন রেট ২৮ থেকে ২৯ শতাংশ এবং গড় শুল্কহার ১৪ শতাংশ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এ হার অনেক বেশি বলে মনে করে আইএমএফ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এটি যৌক্তিকীকরণের পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। এনবিআর বলেছে, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা দিতে গড় শুল্কহার বেশি রাখা হয়েছে। তবে প্রতিবছর বাজেটে এটি কমানো হচ্ছে।
নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে ভ্যাটের অব্যাহতি আরও কমিয়ে আদায় বাড়াতে বলেছে তারা। এনবিআর বলেছে, আদায় বাড়াতে আধুনিক প্রযুক্তির ভ্যাট মেশিন বা ইএফডি বসানো হয়েছে। এ কাজ সম্পন্ন হলে ভ্যাট আহরণ বর্তমানের চেয়ে অনেক বাড়বে।
আইএমএফ বরাবরই অভিযোগ করে আসছে, বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ শুল্ককর সুবিধা বেশি ভোগ করছে। বর্তমানে বাংলাদেশে জিডিপির তুলনায় কর আহরণের অনুপাত ১০ শতাংশের নিচে। যা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম। কম রাজস্ব আহরণের অন্যতম কারণ ‘বেশি অব্যাহতি সুবিধা’ বলে মনে করা হয়।
এ জন্য সুবিধা কমানোর তাগিদ দিয়ে আসছে সংস্থাটি। তাদের মতে, বাংলাদেশ কর-জিডিপি অনুপাত হওয়া উচিত কমপক্ষে ১৫ থেকে ১৭ শতাংশ।
এনবিআরের সাবেক সদস্য রেজাউল হাসান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আইএমএফের দাবি ঠিক নয়। ভ্যাট ও কাস্টমসে যেসব অব্যাহতি দেয়া আছে তার যৌক্তিকতা আছে। এই সুবিধা তুলে দিলে গরিবের ওপর চাপ আসবে।’
তিনি বলেন, ‘উৎপাদন, সেবা, আমদানিসহ পাঁচটি স্তরে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দেয়া আছে। এসব সুবিধা চায় না আইএমএফ। তারা মনে করে, এটি আধুনিক ভ্যাট আইনের পরিপন্থী। বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ ছোট ব্যবসায়ী। তারা সিস্টেমে হিসাব সংরক্ষণ করতে পারে না। যে কারণে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আইএমএফ তাতে আপত্তি তুলেছে। ছোট ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দেয়া সরকারের দায়িত্ব বলে আমি মনে করি।’
২০১৮-১৯ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানিতে ভ্যাটে ৭২টি আদেশ আছে অব্যাহতিসংক্রান্ত। আমদানি খাতে ২৩১টি পণ্য ভ্যাটের আওতার বাইরে। ব্যবসায়ী ও উৎপাদন পযায়ে আছে দুই শতাধিক। কৃষিপণ্য ভ্যাটমুক্ত। এ ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে ৩৮ সেবা খাতে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া আছে। এ ছাড়া মেগা প্রকল্পে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ ভ্যাট ও শুল্ক সুবিধা পাচ্ছে।
আয়করের অব্যাহতি তালিকাও বেশ লম্বা। প্রায় ৫৮ খাত করমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে। এর বাইরে অনেক খাত থেকে ‘হ্রাসকৃত’ বা বর্তমানের চেয়ে কম হারে কর আদায় করা হয়। বিদ্যুৎ খাত পুরোপুরি করমুক্ত। বিভিন্ন খাতে কর অব্যাহতির নামে কী পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি হয়, তার কোনো বস্তুনিষ্ঠ তথ্য নেই এনবিআরের কাছে। তবে ধারণা করা হয়, ভ্যাট, আমদানি শুল্ক ও আয়কর খাতে অব্যাহতির নামে বছরে ৬০ থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকা কম রাজস্ব আয় হয়।
কর অব্যাহতির বিষয়ে গত বছর একটি সমীক্ষা চালায় এনবিআর। এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন খাতে অব্যাহতি দেয়ার ফলে প্রতিবছর রাজস্ব ক্ষতি হয় মোট জিডিপির ২ দশমিক ২৮ শতাংশ।
এনবিআরের সাবেক সদস্য আমিনুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এ কথা সত্য যে, আমাদের দেশে কর অব্যাহিত বেশি। অনেক ক্ষেত্রে প্রভাবিত হয়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় এ সুবিধা দেয়া হয়। এটা ঠিক নয়। এ জন্য কর অব্যাহতির তালিকা পর্যালোচনা করার সময় এসেছে। তবে ভেবেচিন্তে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘কর অব্যাহতি তুলে দেয়া ঠিক হবে না। এটা করা হলে ব্যবসার খরচ আরও বাড়বে।’
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে বৈঠক
বিকেলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন আইএমএফের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি। একই সঙ্গে তারা ব্যাংক কোম্পানি আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলেছেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
মালয়েশিয়ার ভ্যাভ প্রোডাকশনস এসডিএন বিডি এবং বাংলাদেশের ব্রেভ হর্স ভেঞ্চারস লিমিটেড একটি গুরুত্বপূর্ণ যৌথ উদ্যোগ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই সহযোগিতার মাধ্যমে অ্যানিমেশন, সৃজনশীল কনটেন্ট প্রযোজনা ও আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণে একসাথে কাজ করবে দুই প্রতিষ্ঠান। গত শুক্রবার দ্য ওয়েস্টিন ঢাকায় স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয় ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাই কমিশনার মোহদ সুহাদা বিন উসমান। দুই দেশের কর্পোরেট, সরকারি ও শিক্ষা খাতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন।
ভ্যাভ প্রোডাকশনস সঙ্গীত, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও প্রতিভা বিকাশে দক্ষ, আর ব্রেভ হর্স ভেঞ্চারস অ্যানিমেশন, এআই ও ফিনটেক সমাধানে বিশেষজ্ঞ। যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে উভয় প্রতিষ্ঠান আঞ্চলিক সংস্কৃতিকে বিশ্ববাজারে তুলে ধরতে এবং নতুন বাজার উন্মোচনে কাজ করবে। ভ্যাভ প্রোডাকশনসের পরিচালক আন্দ্রেয়া লাউ লি লিং বলেন, ‘এই অংশীদারিত্ব শুধু দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নয়, বরং মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের সৃজনশীল শিল্পের মধ্যে একটি সেতু।’
ব্রেভ হর্স ভর্স ভেঞ্চারসের চেয়ারম্যান এমডি জাহাঙ্গীর মিয়া যোগ করেন, ‘আমরা প্রযুক্তি ও সৃজনশীলতাকে একত্রিত করে বিশ্বমানের কনটেন্ট তৈরি করব।’ এই উদ্যোগ মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের সৃজনশীল খাতে নতুন যুগের সূচনা করবে।
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম ৬) পদ্ধতি অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সর্বশেষ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) দেশের শিল্প খাতে বৈচিত্র্য আনতে প্রথমবারের মতো এয়ারপ্লেন অ্যামেনিটি ব্যাগ ও কিট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে স্বাগত জানিয়েছে। চীনা প্রতিষ্ঠান কেএমকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিমিটেড বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৮.৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করবে। এ প্রকল্পে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে ১,২৩১ জন বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান, বিএসপি, এনডিসি, পিএসসি এর উপস্থিতিতে বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) জনাব মোঃ আশরাফুল কবীর এবং কেএমকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান মি. উ ইউজিয়াং গত ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিকভাবে এয়ারপ্লেন অ্যামেনিটি ব্যাগ তৈরি করবে এবং ধীরে ধীরে নিজেদের উদ্যোগে মোজা, তৈরি পোশাক ও এক্সেসরিজ, কসমেটিকস এবং হেডফোন ও ইউএসবি কেবলসহ কিছু ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন করবে। এর মাধ্যমে বেপজার শিল্পখাতে নতুন ও অনন্য পণ্যের সংযোজন ঘটবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বেপজা নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠানটিকে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলকে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং নির্বিঘ্ন ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, “এই প্রকল্প বেপজার রপ্তানিমুখী শিল্প খাতে বৈচিত্র আনার ধারাবাহিক প্রয়াসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আমরা বিনিয়োগকারীদের নিজস্ব উৎপাদন সক্ষমতা গড়ে তোলার পাশাপাশি দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে কাঁচামাল সংগ্রহে উৎসাহিত করি, যা শিল্পোন্নয়ন ও জাতীয় অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে।”
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বেপজার সদস্য (প্রকৌশল) আবদুল্লাহ আল মামুন, সদস্য (অর্থ) আ ন ম ফয়জুল হক, নির্বাহী পরিচালক (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মোঃ তানভীর হোসেন, নির্বাহী পরিচালক (এন্টারপ্রাইজ সার্ভিসেস) মোঃ খুরশিদ আলম, নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন) মোঃ সালাহউদ্দিন, নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) এ.এস.এম. আনোয়ার পারভেজ এবং কেএমকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিমিটেডের প্রতিনিধিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুমোদিত কর প্রতিনিধিগণের (Authorized Representative) মাধ্যমে সম্মানিত করদাতাগণের অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল সহজ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর কর্মকর্তাগণ এবং আইটি প্রোগ্রামারগণ Tax Representative Management System (TRMS) নামক একটি সফটওয়্যার প্রস্তুত করেছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের মাননীয় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ TRMS (https://trms.nbr.gov.bd/) সিস্টেমটি আজ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাল্টিপারপাস হলে উদ্বোধন করেন।
একটি আধুনিক, স্বচ্ছ এবং করদাতা-বান্ধব রাজস্ব প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে TRMS একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। করদাতার প্রতিনিধিত্ব প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজ করার মাধ্যমে TRMS প্ল্যাটফর্মটি কর ব্যবস্থাপনায় অধিকতর দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।
আয়কর আইনে অনুমোদিত কর প্রতিনিধিগণ যেসকল সম্মানিত করদাতাগণের রিটার্ন দাখিল করার জন্য করদাতা কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত (authorized) তাঁদের সকলের আয়কর রিটার্ন TRMS সফটওয়্যারটিতে নিবন্ধনের মাধ্যমে অনলাইনে দাখিল করতে পারবেন। যেকোন করদাতা কর প্রতিনিধি নিয়োগের জন্য তাঁর নিজ নামে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত মোবাইল ফোনে প্রাপ্ত OTP কর প্রতিনিধিকে প্রদানের মাধ্যমে অনলাইনে তাঁর রিটার্ন দাখিলের জন্য ক্ষমতা প্রদান (authorize) করতে পারবেন।
একজন আয়কর প্রতিনিধি যতজন করদাতার আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করবেন তার সবগুলো রিটার্ন সংশ্লিষ্ট কর প্রতিনিধির নামের বিপরিতে TRMS সিস্টেমে সংরক্ষিত থাকবে। কর প্রতিনিধিগন রিটার্নের তথ্যাদি যেকোন সময় সিস্টেম থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।
TRMS এর মূল বৈশিষ্ট্য:
• আয়কর আইন অনুযায়ী অনুমোদিত সকল কর প্রতিনিধিদের (Authorized Representative) ডিজিটাল নিবন্ধন;
• করদাতা কর্তৃক তাঁর কর প্রতিনিধিকে অনলাইন সিস্টেমে ক্ষমতা (authority) অর্পণ;
• প্রত্যেক কর প্রতিনিধি কর্তৃক দাখিলকৃত সকল আয়কর রিটার্নের তথ্য আলাদাভাবে TRMS সিস্টেমে সংরক্ষণ;
• কর প্রতিনিধিগণ কর্তৃক করাদাতাগণের পক্ষে ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ;
• এটি করদাতা এবং কর প্রতিনিধি উভয়ের জন্যই ব্যবহারকারী-বান্ধব সহজ ইন্টারফেস;
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব মো: আবদুর রহমান খান এফসিএমএ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ট্যাক্স লইয়্যারস এসোসিয়েশনের (BTLA) সভাপতি এডভোকেট রমিজ উদ্দিন আহমেদ, ইন্সটিটিউট অব কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (ICMAB) এর প্রেসিডেন্ট জনাব মাহতাব উদ্দিন এফসিএমএ, ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (ICAB) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব মোঃ রোকনুজ্জামান এফসিএ এবং ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ (ICSB) এর প্রেসিডেন্ট জনাব এম নাসিমূল হাই এফসিএস বক্তব্য রাখেন। তাঁরা এরকম জনমূখী উদ্যোগ নেওয়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ধন্যবাদ জানান।
সভাপতির বক্তৃতায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো: আবদুর রহমান খান এফসিএমএ সারাদেশ থেকে আগত কর আইনজীবী নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
TRMS সিস্টেমটি করদাতা এবং তাদের প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি মসৃণ সেতুবন্ধন তৈরি করবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করে।
-জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
রবিবার লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসই শরীয়াহ্ সূচক ৫ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে ১২০১ ও ২১৫৬ পয়েন্টে রয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে লেনদেন হয়েছে ১১১ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
রবিবার এ সময়ে লেনদেন হওয়া কম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২০৩টির, কমেছে ৭৪টির এবং অপরির্বতিত রয়েছে ৯৩টি কম্পানির শেয়ার।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ কম্পানি হলো-খান ব্রাদার্স, শাইনপুকুর সিরামিক, সালাম স্টিল, রবি, ডোমেনেজ, আইপিডিসি, লাভেলো আইসক্রিম, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, রূপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ও ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
এর আগে আজ লেনদেন শুরুর প্রথম ৫ মিনিটে ডিএসইএক্স সূচক বাড়ে ৮ পয়েন্ট।
সকাল ১০টা ১০ মিনিটে সূচক আগের অবস্থান থেকে আরো ১২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়। লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর অর্থাৎ সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৫১ পয়েন্টে অবস্থান করে।
অপরদিকে লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৫ হাজার ৫৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করে।
এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এসময়ের ২০টি কম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ৮টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২টি কম্পানি শেয়ারের দর।
নওগাঁ জেলার মহাদেবপুরের মোমিনপুর বাজারে রয়েছে জেলার সবচেয়ে বড় পাইকারি কাঁচা মরিচের হাট। সেই হাটে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। যা দুই দিন আগে দাম ছিল ১৩০-১৫০ টাকা। হঠাৎ করে দাম কমে যাওয়ায় হতাশায় কৃষকরা। তারা বলছেন, এ রকম দাম থাকলে অনেক লোকসান হবে তাদের। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি হওয়ায় হঠাৎ এ অবস্থা।
গত শুক্রবার মহাদেবপুরের মোমিনপুর কাঁচা মরিচের হাটের দৃশ্য এটি। সপ্তাহের প্রতিদিন বসে এখানে কাঁচা মরিচের হাট। বছরে ৬ থেকে ৭ মাস চলে এ হাট। এখানে প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার কাঁচা মরিচ কেনাবেচা হয়ে থাকে। এখানকার মরিচ ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্রগ্রাম, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
মহাদেবপুরের কুঞ্জবন এলাকা থেকে আসা কৃষক সোলেমান আলী ও গুলবর রহমান বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কাঁচা মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু হাটে দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের উৎপাদন খরচই উঠবে না। মরিচ চাষে খরচ হয়েছে অনেক। এখন পর্যন্ত তারা যে পরিমান বিক্রি করেছেন তা দিয়ে শ্রমিকের মজুরি, কীটনাশক খরচ মিটিয়ে কিছুই থাকবে না। প্রথমে প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হয়েছিল ১৩০-১৫০ টাকায় আর এখন তা ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বগুড়া থেকে আসা কাঁচা মরিচের ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বলেন, এই হাটের মরিচ ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। তবে ভারত থেকে মরিচ আমদানি হওয়ায় হঠাৎ করে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
মোমনিপুর হাট কমিটির সদস্য মামুনুর রশিদ বলেন, জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় কাঁচা মরিচের হাট এটি। বছরে ৬ থেকে ৭ মাস চলে এ হাট। আর প্রতি মাসে কাঁচা মরিচের বেচাকেনা হয় দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা। তবে এখন যেভাবে দাম কমে গেছে কৃষকদের লোকসান হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আবহাওয়া ভালো হওয়ায় কাঁচা মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। প্রথমে বাজার ভালো দাম ছিল কিন্তু এখন কিছুটা কম হলে কৃষকরা বেশ লাভবান হবেন। তাই আমরা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শসহ সকল ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। চলতি বছর নওগাঁ জেলায় ৭৫০ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের চাষ হয়েছে।
নির্মাণাধীন মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের উন্নত অবকাঠামো ও লজিস্টিক সুবিধা দেশের মৎস্য ও সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানি খাতে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। শিল্পসংশ্লিষ্টরা এ তথ্য জানান।
মহেশখালী-মাতারবাড়ি ইন্টিগ্রেটেড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট উদ্যোগের অংশ সমুদ্রবন্দরটি নির্মাণে সহায়তা দিচ্ছে জাপান। এটি চট্টগ্রাম বন্দরের জট কমাতে এবং বড় জাহাজ সরাসরি পরিচলানার সুবিধা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মৎস্য খাতে যা সরাসরি প্রভাব ফেলবে। কারণ কোল্ড চেইন রক্ষা করে দ্রুত পরিবহন এই খাতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মহেশখালীর মাছ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, নতুন বন্দরটি হিমায়িত মাছ ও সামুদ্রিক খাদ্যের মতো দ্রুত পচনশীল পণ্যের পরিবহন সময় ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনবে। ফলে সতেজতার মান বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা বিশ্ব বাজারেও আমাদের পণ্য পৌঁছানো সহজ হবে।
মাতারবাড়ির জেলে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে আমাদের ধরা মাছ খুব কম সময়ের মধ্যে রপ্তানি হবে। এতে আমরা ন্যায্যমূল্য পাব, যা আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করবে।
সামুদ্রিক মাছ ধরা ও এর প্রক্রিয়াজাতকরণ বৈশ্বিক বাজারে বহু বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসা হলেও বাংলাদেশে এখনো তেমনভাবে বিকশিত হয়নি।
মহেশখালী-মাতারবাড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (মিডা) প্রতিষ্ঠার ফলে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর সুযোগ আগের চেয়ে বেড়েছে।
বিশ্বের মোট মাছের প্রায় ৭ শতাংশ আসে বঙ্গোপসাগর থেকে। এছাড়া বিশ্বের প্রায় ৪৫ কোটিরও বেশি মানুষ বঙ্গোপসাগরের ‘ব্লু ইকোনমি’ এর ওপর নির্ভরশীল।
বাংলাদেশ ‘ইন্ডিয়ান ওশান টুনা কমিশন’ (আইওটিসির)’ সদস্য। যে কারণে যা ভারত মহাসাগরের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় মাছ ধরার অনুমতি রয়েছে। ফলে বাংলাদেশ নির্দিষ্ট দুই প্রজাতির টুনা মাছের জন্য কোটা পায়। আর অন্য দুই প্রজাতির টুনা ইচ্ছেমতো ধরতে পারে। তবে প্রতি বছরই কোটা অপূর্ণ থেকে যায়।
এই সমস্যার সমাধান ও গভীর সমুদ্রে মাছ ধরাকে উৎসাহিত করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২৮টি লংলাইনার ফিশিং ভেসেল (গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জাহাজ) তৈরি বা আমদানির অনুমতি দিয়েছে।
মাতারবাড়ি বন্দর চাঁকড়িয়া চিংড়ি শিল্পের মতো বিদ্যমান ও নতুন উদ্যোক্তাদের ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মতো দেশে দ্রুত পণ্য পাঠাতে সহায়তা করবে।
মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর রপ্তানি প্রক্রিয়ার সময় ও ব্যয় কমাবে। ফিলে, স্মোকড মাছ, রেডি-টু-ইট সামুদ্রিক খাদ্য ইত্যাদির মতো মান সংযোজিত পণ্যের রপ্তানির পথ প্রশস্ত করবে।
উদাহরণস্বরূপ, স্ক্যালপ (এক প্রজাতির শামুক) প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানি থেকে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি মিডার শক্তিশালী লজিস্টিক সুবিধা দেশে নতুন বিনিয়োগের ঢেউ আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিদায়ী সপ্তাহে (৭ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর) সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন শেষ হয়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসই ও সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন কমেছে।
গত সপ্তাহে ৫ কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ডিএসইতে ৫ হাজার ৭৪৮ কোটি ৩১ লাখ এবং সিএস্টতে ৯২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। শনিবার ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ডিএসইর বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহ ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫২৩ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৩১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৩৯ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩৩ পয়েন্ট বা ২.৭৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৭৪৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৬ হাজার ৪৯১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৭৪৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১০২টির, দর কমেছে ২৫০টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৫টি কোম্পানির। গত সপ্তাহে লেনদেন হয়নি ১৬টি কোম্পানির।
এদিকে অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৮৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৫১৯ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহের সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯২ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১০০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সুস্বাদু ও বৃহৎ আকৃতির পানের জন্য প্রসিদ্ধ। কিন্তু পানের দাম কম হওয়ায় পানচাষিদের বেহাল দশা পরিলক্ষিত হচ্ছে। দাম অত্যন্ত কম ও খরচ অত্যাধিক বেশি হওয়ায় দিন দিন পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন প্রান্তিক কৃষক। ভেঙে ফেলছেন পানের বরজ।
জানা যায়, ভেড়ামারা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে প্রায় ৬৪৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। যেখানে প্রতি বছরে ৭ হাজার মেট্রিক টন পান উৎপাদন হয়। তা ছাড়াও ব্রিটিশ আমল থেকে এই অঞ্চল পান চাষের জন্য প্রসিদ্ধ।
সরেজমিনে গিয়েও উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন জুনিয়াদহ, ধরমপুর ও বাহাদুরপুরের প্রান্তিক পানচাষিদের দুর্ভোগের চিত্র ফুটে ওঠে। প্রতি বিঘা নতুন পান বরজে খরচ হয় ৩-৪ লাখ টাকা। যেখানে পান বিক্রি করে আসছে ১ লাখেরও কম। পান বরজের সরঞ্জামের দামও পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি। পূর্বে যে শ্রমিকের দাম ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, বর্তমানে তা হয়েছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। সে কারণে অনেকেই পান ররজ মেরামত করছেন না। তা ছাড়া দাম কম হওয়ায় অনেকেই বরজের পান ভাঙছেন না। ঋণের দায়ে জর্জরিত কেউ কেউ বরজ ভেঙে অন্য চাষাবাদের চেষ্টা করছেন। পান বরজের ওপর ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে না পেরে অনেকে হয়েছেন ভিটে ছাড়া।
পান হাট জগশ্বরে দেখা যায়, ৫০-২০০ টাকা বিড়ার পান বিক্রি হচ্ছে ৫-৩০ টাকায়। খুব ভালো মানের পান বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা বিড়া।
পান বিক্রি করতে আসা পান চাষি মো. রফিক জানান, প্রতি বিড়া পান ৭ টাকায় বিক্রি করলাম। যা গত বছর ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি করেছি। যাতে করে পান ভাঙা আর যাতায়াত খরচই উঠল না। এই ব্যবসা আর করা হবে না। পানচাষি তুষার জানান, আমার জীবনে পানের দাম এত কম দেখিনি। আমার ৯০ পিলি পান বরজ ছিল কিন্তু দাম না পেয়ে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বাহাদুরপুরের পানচাষি ৭০ বছর বয়ষি বৃদ্ধা জমেলা খাতুন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘৪০ বছরের পুরোনো পান বরজ আমার। না পারছি ভাঙতে, না পারছি রাখতে। পান বাজারে নিলে খরচের টাকাও ফিরে পাচ্ছি না।’
জগশ্বর পানহাটের সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন জানান, উৎপাদন বেশি ও রপ্তানি না থাকায় এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় পানের দাম অনেক কম। কিন্তু শ্রমিক ও পান বরজের সরঞ্জামের দাম পূর্বের থেকে ২-৩ গুণ বেশি। সরকারি কোনো প্রণোদনা না থাকায় প্রান্তিক পানচাষিদের মধ্যে হাহাকার লক্ষ্য করছি। ঋণের ভারে জর্জরিত চাষিরা এই আবাদ ছেড়ে দিচ্ছেন। অর্থকরী এই খাতটিকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের সাহায্য চাই।
ভেড়ামারা উপজেলার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আশফাকুর রহমান দৈনিক বাংলাকে জানান, দাম কম হওয়ায় পানচাষিদের বেহাল দশার বিষয়টি আমরা শুনেছি।
চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের চা-বাগান ও পাহাড়ি এলাকায় মসলা জাতীয় ফসল গুলমরিচের চাষাবাদের ব্যাপক উপযোগী পরিবেশ। তবে এলাকাবাসীর দাবি এখনো বাণিজ্যিকভাবে চাষের পর্যায়ে পৌঁছায়নি শ্রীমঙ্গল। স্থানীয় চা-বাগান ও কিছু পাহাড়ি জমিতে বিচ্ছিন্নভাবে গুলমরিচের গাছ দেখা গেলেও সেগুলোর ফলন মূলত নিজেদের প্রয়োজন বা সীমিতভাবে বিক্রয়ের জন্যই ব্যবহার হচ্ছে। অথচ এই অল্প চাষেও ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা। সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্যোগ থাকলে শ্রীমঙ্গলে গুলমরিচ হতে পারে লাভজনক একটি মসলা ফসল।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে পান গাছের মতো অন্যান্য বড় গাছকে আকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে গুলমরিচের চাষ। উপজেলার হরিনছড়া চা বাগানের সবচেয়ে বেশি গুলমরিচের গাছ দেখা গেছে। সেখানে চা বাগানের ভিতরে প্রায় ২৫টি গাছের সব কটিতেই ফলন এসেছে। সবুজ পাতার ফাকে ফাকে গুলমরিচগুলো আঙ্গুর ফলের মতো ঝুলে রয়েছে। সেখানে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকরাও একবার হলেও ঘুরে দেখছেন গাছগুলো। উপজেলার রাধানগর ও মহাজেরাবাদ এলাকায় রয়েছে কয়েকটি গাছ। এই গাছগুলোর গুলমরিচ গাছেই থাকে, সখ করে কেউ সংগ্রহ করে, না হয় গাছেই নষ্ট হয়।
স্থানীয় পর্যায়ে সম্ভাবনা থাকলেও গুলমরিচ চাষ এখনো বিনিয়োগ ও পরিকল্পনার অভাবে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক রূপ পায়নি। কৃষি বিভাগ ও উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে উদ্যোগ নিলে শ্রীমঙ্গলের গুলমরিচ হতে পারে একটি নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত।
হরিনছড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক বিকাশ সিংহ জানান, ‘আমাদের চা বাগানের সেকশনের ভেতরে প্রায় ২০ বছর আগে লাগানো বেশ কিছু গুলমরিচ গাছ রয়েছে। শ্রমিকরাই এসব গাছের দেখাশোনা করেন। গাছগুলোতে ফলনও আসে, তবে বাণিজ্যিকভাবে সংগ্রহ করা হয় না। গাছগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে, দেখতেও সুন্দর লাগে।
পাইকারি মসলার দোকান মেসার্স মানিক দেব-এর পরিচালক তাপস দেব জানান, ‘স্থানীয় কিছু চাষি আমাদের কাছে গুলমরিচ বিক্রি করতে আসে, তবে পরিমাণ খুবই কম। আমাদের দোকানে বিক্রি হওয়া গুলমরিচের বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আমদানি করা। দেশে যদি গুলমরিচ চাষ ব্যাপক হতো তাহলে আমরা কম দামে কিনতে পারতাম, বাজারেও দাম কমত।’ বর্তমানে প্রতি কেজি কালো গুলমরিচ ১২০০ টাকা এবং সাদা গুলমরিচ ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উজ্জ্বল সূত্রধর দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘গুলমরিচ চাষের জন্য কাটিং (বাইন) সংগ্রহ করে মাটিতে লাগাতে হয়। প্রায় ৬ মাসের মধ্যে ফলন আসে। গাছের বয়স দুই বছর হলে তা থেকে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তখন এগুলো প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাত করা যায়।’
তিনি আরও জানান, ‘শ্রীমঙ্গলের পাহাড়ি এলাকাগুলোর মাটি গুলমরিচ চাষের জন্য উপযোগী। ইতোমধ্যে প্রায় দুই হেক্টর জমিতে বিচ্ছিন্নভাবে এর চাষ হচ্ছে। আমরা কৃষি অফিস থেকে মহাজেরাবাদসহ দশটি জায়গায় চারা রোপণ করেছি। এখন কেউ চাষ করতে আগ্রহী হলে আমরা পরামর্শ ও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
বিমানে ব্যবহৃত জ্বালানি তেল জেট ফুয়েলের দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বুধবার থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হয়েছে।
বিইআরসি ঘোষিত নতুন দামে দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে জেট ফুয়েলের লিটারপ্রতি দাম ৯৯ টাকা ৬৬ পয়সা থেকে কমিয়ে ৯৬ টাকা ৯ পয়সা করা হয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে জেট ফুয়েলের লিটারপ্রতি মূল্য শূন্য দশমিক ৬৫০২ ডলার থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৬৩৩৩ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত আগস্টে জেট ফুয়েলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে প্রতি লিটার ৯৮ টাকা ২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯৯ টাকা ৬৬ পয়সা এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে শূন্য দশমিক ৬৪০১ ডলার থেকে বাড়িয়ে শূন্য দশমিক ৬৫০২ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ অনুযায়ী, দেশি ও বিদেশি এয়ারলাইনসের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য ডিউটি ফ্রি (শুল্ক ও মূসকমুক্ত) এবং অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য শুল্ক, মূসকসহ জেটএ-১-এর (এভিয়েশন ফুয়েল) মূল্যহার নির্ধারণের ক্ষমতা এখন বিইআরসির হাতে।
এর আগে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এই দাম নির্ধারণ করত। চলতি বছরের শুরু থেকে এ দায়িত্ব চলে যায় বিইআরসির কাছে।
এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিপিসি গত ২০ জানুয়ারি জেট ফুয়েলের মূল্যহার-সংক্রান্ত প্রস্তাব দেয়। পরে পদ্মা অয়েল কম্পানি লিমিটেড (পিওসিএল) গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিপণন চার্জ পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব কমিশনে জমা দেয়।
বিমান সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, বাংলাদেশে জেট ফুয়েলের দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি এবং মানও আন্তর্জাতিক মানসম্মত নয়।
এ কারণে এখানকার বিমানভাড়া তুলনামূলক বেশি নির্ধারণ করতে হয়।
কাতারে ইসরায়েলি হামলা ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়ান তেল ক্রেতাদের ওপর শুল্ক আরোপের আহ্বানের পর বুধবার বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে। তবে দুর্বল চাহিদা ও বাজারের সামগ্রিক মনোভাবের কারণে এই বৃদ্ধির গতি সীমিত ছিল।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এদিন ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬১ সেন্ট বা ০.৯২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭ ডলারে। একই সময়ে মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুড তেলের দাম ৬১ সেন্ট বা ০.৯৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৬৩.২৪ ডলারে।
ওএএনডিএ-এর সিনিয়র বাজার বিশ্লেষক কেলভিন ওং বলেন, কাতারে ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে তেলের সরবরাহ নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যদি ওপেকপ্লাস সদস্যদের তেল স্থাপনাগুলো হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়, তাহলে স্বল্পমেয়াদে তীব্র সরবরাহ সংকট দেখা দিতে পারে।
এই হামলায় ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা হামাস নেতৃত্বকে লক্ষ্য করেছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী এই হামলাকে শান্তি আলোচনার জন্য বড় হুমকি বলে বর্ণনা করেছেন।
হামলার পর বাজারে প্রথমে তেলের দাম প্রায় ২ শতাংশ বেড়ে যায়, তবে পরে যুক্তরাষ্ট্র দোহাকে আশ্বস্ত করে যে এরকম ঘটনা আর ঘটবে না এবং সরবরাহে কোনো তাৎক্ষণিক বিঘ্ন না ঘটায় মূল্যবৃদ্ধি স্থিতিশীল হয়ে পড়ে।
এদিকে ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা চীন ও ভারতের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। ট্রাম্পের লক্ষ্য হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানো।
চীন ও ভারত রাশিয়ার প্রধান তেল ক্রেতা। ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এই দুই দেশ রাশিয়ার অর্থনীতিকে সচল রাখতে সহায়তা করে যাচ্ছে।
এলএসইজি-এর বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন বা ভারতের মতো বড় ক্রেতাদের ওপর যদি শুল্ক আরোপ করা হয়, তবে তা রুশ তেলের রপ্তানি বিঘ্নিত করতে পারে, যা বৈশ্বিক সরবরাহ সংকোচনের মাধ্যমে তেলের দামে ঊর্ধ্বগতি আনতে পারে।
উপর্যুক্ত বিষয়ের প্রতি সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো।
০২। সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কাস্টমস হাউস/স্টেশনে আমদানিকালে দাখিলকৃত পণ্য ঘোষণায় প্রদত্ত পণ্যের বর্ণনা ও HS Code কায়িক পরীক্ষায় পণ্যের নমুনা কিংবা শুল্কায়ন পরবর্তী সময়ে পণ্যের ঘোষিত বর্ণনা পরিবর্তিত হয়, যা ক্ষেত্রবিশেষে প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স অথবা প্রাপ্যতা শীট বা সংশ্লিষ্ট Utilization Declaration (UD) তে অন্তর্ভূক্ত থাকে না। ফলে শুল্কায়নকালে উহা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে যথাসময়ে কাঁচামাল/পণ্য খালাস না হওয়ায় রপ্তানি আদেশ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য জাহাজীকরণে বিঘ্ন ঘটছে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অবগত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ও রপ্তানি বাণিজ্যের বৃহত্তর স্বার্থে জরুরি বিবেচনায় নিম্নরূপ নির্দেশনা প্রদান করা হলো:
(ক) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন HS Code নিরূপণ করলে এবং নিরূপিত HS Code এর প্রথম ৪ ডিজিট বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত HS Code এর প্রথম ৪ ডিজিট এর সাথে মিল থাকলে; আমদানিকারক পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে এই নিরূপিত HS Code বন্ড লাইসেন্সে ও ইউডিতে অন্তর্ভূক্ত করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস এর কমিশনার এর নিকট দাখিল করবেন যার বিপরীতে কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
(খ) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন বর্ণনা নিরূপণ করলে; আমদানিকারক পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্তরূপ নিরূপিত পণ্যের বর্ণনা বন্ড লাইসেন্সে ও ইউডিতে অন্তর্ভূক্ত করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস এর কমিশনার এর নিকট দাখিল করবেন যার বিপরীতে কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
গ) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভিন্ন HS Code নিরূপণ করা হলে এবং বন্ড লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কাস্টমস বন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটের মাধ্যমে তার প্রাপ্যতায় উক্ত HS Code অন্তর্ভুক্ত করলে কাস্টমস হাউস এর কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করবেন এবং পণ্য চালান খালাসের তথ্য সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
০৩। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে; এবং বর্তমানে উক্তরূপ কারণে শুল্কায়ন নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষমান পণ্যচালানসমূহের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।