শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪

১২ দিনে দেশে এল সাড়ে ৯ হাজার কো‌টি টাকার প্রবাসী আয়

প্রতীকী ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১০:৩৯

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে মাত্র ১২ দিনে (চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১২ দিন) দেশে প্রায় ৮৮ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় (প্র‌তি ডলার ১১০ টাকা ধ‌রে) যার পরিমাণ সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবছর ঈদের আগে রমজান মাসে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় বেড়ে যায়। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। এপ্রিল মাসের প্রথম ১২ দিনে বৈধ বা ব্যাংকিং চ্যানেলে ৮৭ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৯ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ঈদের সময় রমজানের শেষদিকে দৈনিক রেমিট্যান্স এসেছে ৮০০ কোটি টাকার বেশি পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা।

আলোচিত সময় অর্থাৎ এপ্রিলের প্রথম ১২ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৭ কোটি ২০ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৪ কোটি ৮৪ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭৫ কোটি ৩৯ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৬ লাখ ৭১ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

এর আগে মার্চ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে এসেছে ২১০ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়া‌রি‌তে আসে ২১৬ কো‌টি ৬০ লাখ ডলার।

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৭ লাখ মার্কিন ডলার। আগের ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। যা সর্বোচ্চ পরিমাণ রেমিট্যান্স।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দেশে পালিত হয় মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদ উপলক্ষ্যে ১০, ১১ ও ১২ এপ্রিল (বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ) নির্ধারিত সরকারি সাধারণ ছুটি ছিল। ঈদের পর ১৩ এপ্রিল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি ও ১৪ এপ্রিল রোববার নববর্ষের ছুটি। ফলে ১০ তারিখ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত ছুটি কাটান ব্যাংক-বিমা আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি চাকরিজীবীরা। ঈদে টানা পাঁচ দিন ছুটির পর সোমবার খুলছে ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান।


বাণিজ্য মেলার স্টল বরাদ্দ এবার অনলাইনে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ নভেম্বর, ২০২৪ ০০:০৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে মাসব্যাপী অনুষ্ঠেয় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ) বিভিন্ন ধরনের স্টল, প্যাভিলিয়ন ও রেস্তোরাঁ বরাদ্দ এবার অনলাইনে হবে। মেলা আয়োজক সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এ বিষয়ে নতুন সফটওয়্যার তৈরি করেছে।

সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণে আগ্রহী স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্পেস বরাদ্দের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবে। গত বুধবার ইপিবি এক বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানিয়েছে।

আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে মেলার স্পেস বরাদ্দ গ্রহণের জন্য উদ্ধৃত দর, মূল্য, মাশুল ইত্যাদি সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে অনলাইনে জমা করতে হবে।

এ উপলক্ষে ইপিবি ও সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের মধ্যে বুধবার চুক্তি হয়েছে। ইপিবির পক্ষে চুক্তিতে সই করেন সংস্থাটির সচিব বিবেক সরকার, যিনি ডিআইটিএফেরও পরিচালক। সোনালী ব্যাংকের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন মহাব্যবস্থাপক মো. মনিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে ইপিবির ভাইস-চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন, সোনালী ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভাষ চন্দ্র দাশ উপস্থিত ছিলেন।

ইপিবি বলেছে, সফটওয়্যারটি চালু হওয়ার ফলে মেলায় অংশগ্রহণপ্রত্যাশী প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তারা ঘরে বসেই আবেদন করতে পারবেন। সফটওয়্যারটি ওয়েব লিংক : ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার অসুবিধা দেখা দিলে হেল্পলাইনে (০১৯৬৬২৪৯২২৫, ০১৬৮৬১৭৭২৮২, ০১৭১১৩৭৮১৮১) ফোন করে সাহায্য নেওয়া যাবে।

পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে শুরু হতে যাচ্ছে মাসব্যাপী ২৯তম ডিআইটিএফ। দেশি-বিদেশি উৎপাদক-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৩৫০টি বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন ও স্টল বরাদ্দ দেওয়া হবে। দেশীয় পণ্যের প্রচার–প্রসার, বিপণন ও উৎপাদনে সহায়তা দেওয়াসহ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ১৯৯৫ সাল থেকে ডিআইটিএফ আয়োজন করে আসছে ইপিবি।


রিজার্ভ বাড়ছে, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ নভেম্বর, ২০২৪ ০০:০৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশীয় শিল্পের বিকাশে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের কনফিডেন্স বাড়ছে। পাশাপাশি আমাদের রিজার্ভ বাড়ছে এবং দেশের অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) এক বিশেষ পর্যালোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ৩ মাসের মধ্যে সবকিছু করা সম্ভব না। তবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আজ হোক, কাল হোক, রাষ্ট্রক্ষমতায় রাজনৈতিক সরকার আসবে। আমরা যতটুকু সময় আছি দেশের জন্য কাজ করে যাব। তিনি বলেন, খাদ্য, জ্বালানি, সার ও কীটনাশক খাতকে সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এসব খাতের প্রাইভেট সেক্টরের জন্য সরকারের সহযোগিতা থাকবে। আমরা প্রাইভেট সেক্টরকে ডেভেলপ করার চেষ্টা করছি। ব্যবসায়ী নেতারা সরকারের দেশীয় শিল্পের বিকাশে গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তারা প্রাইভেট সেক্টরের সার্বিক উন্নয়নে ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার চালু, ওষুধ, চামড়া, গার্মেন্ট ও অন্যান্য শিল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত পণ্য আমদানিতে ডিউটি ট্যাক্স কমানোসহ নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম উদ্দিন, স্কয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালের চেয়ারম্যান আব্দুল মোক্তাদির, এপেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর ও প্রাণ গ্রুপের পরিচালক উজমা চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।


নীতি সহায়তার খবরে শেয়ারবাজারে বড় উত্থান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘর্মেয়াদি নীতি সহায়তা দিতে যাচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ প্রথমবারের মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) যাচ্ছেন। এমন খবরে গতকাল বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়েছে।

এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ১৪৭ পয়েন্টের বেশি। এর আগে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরের দিন ৬ আগস্ট মঙ্গলবার ডিএসইর সূচক বেড়েছিল ১৯২ পয়েন্ট। এরপর ৭ আগস্ট বুধবার বেড়েছে ১৯৭ পয়েন্ট এবং ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার বেড়েছে ৩০৬ পয়েন্ট এবং ১১ আগস্ট রোববার বেড়েছে ৯১ পয়েন্ট। ওই চার দিনে সূচকের উত্থান হয়েছে ৭৮৬ পয়েন্ট।

এরপর ১২ আগস্ট সোমবার থেকেই শুরু হয় ধারাবাহিক পতন। ১২ আগস্ট থেকে ২৮ অক্টোবর (সোমবার) পর্যন্ত আড়াই মাসে সূচকের পতন হয়েছে ১ হাজার ১৪৭ পয়েন্ট। অর্থাৎ শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগের দিন ডিএসইর সূচক ছিল ৫ হাজার ২২৯ পয়েন্ট। গত ২৮ অক্টোবর সেটি আরও ৩৩১ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৪৯৮ পয়েন্টে নেমে যায়।

অবশেষ গতকাল বুধবার থেকে বাজার বড় আকারে ঘুরে দাঁড়ায়। গতকাল ডিএসইর সূচকে বেড়েছে ১১৮ পয়েন্টের বেশি এবং আজ বেড়েছে ১৪৭ পয়েন্টের বেশি। বুধবার ডিএসইর সূচক দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে। শেখ হাসিনা সরকারের সময়ের সূচক থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সূচক এখনো ৬৫ পয়েন্ট পিছিয়ে আছে।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা শেয়ারবাজারের গুরুত্ব অনুধাবন করে নিজেই বিএসইসিতে যাচ্ছেন। যেখানে এর আগে কোনো মন্ত্রী বা উপদেষ্টা যাননি। শেয়ারবাজারের জন্য এটি একটি ভিন্ন ম্যাসেজ। শেয়ারবাজারের প্রতি অর্থ উপদেষ্টার এমন আগ্রহের কারণে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজার নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।

বুধবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪৭ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে দাঁডিয়েছে। এ ছাড়া ডিএসইর অপর সূচক ডিএসইএস ২২ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে ১১৩৬ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক ৫৭ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট বেড়ে ১৯১৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিন ডিএসইতে ৫১৯ কোটি ৩১ লাখ ২৭ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে ৩৪৬ কোটি ৫৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

ডিএসইতে বুধবার মোট ৩৯৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৭৩টি কোম্পানির, বিপরীতে ১৫ কোম্পানির দর কমেছে। পাশাপাশি ৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৪৬ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের ১২ কোটি ৯৪ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফারইস্ট নিটিং।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস, একমি ল্যাবরেটরিজ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, টেকনো ড্রাগস ও ইসলামী ব্যাংক।

অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩৩০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯টির এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জানান, শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা দিতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এসব সহায়তার আওতাভুক্ত হবেন ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারী, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, উচ্চ সম্পদশালী বিনিয়োগকারী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, অর্থ উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সমন্বিতভাবে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে নীতি সহায়তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। যার মধ্যে কিছু থাকবে স্বল্প মেয়াদে বাস্তবায়নযোগ্য, আর কিছু বিষয় মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।

যেসব নীতি পদক্ষেপের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, বাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তহবিল জোগানে সহায়তা, জরিমানার মাধ্যমে বিএসইসির আদায় করা অর্থ বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, সরকারি-বেসরকারি ভালো ও লাভজনক কোম্পানিগুলোকে দ্রুত বাজারে আনতে আইপিও আইন সংস্কার ও কর প্রণোদনার ব্যবস্থা করা, শেয়ারবাজারে লেনদেন নিষ্পত্তির সময় কমিয়ে এক দিনে নামিয়ে আনা, ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে পরিমাণ অনাদায়ি পুঞ্জীভূত ঋণাত্মক ঋণ (নেগেটিভ ইক্যুইটি) রয়েছে চূড়ান্তভাবে সেগুলোর নিষ্পত্তি করা, উচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তিদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে মূলধনি মুনাফার করহার কমানো, শেয়ার পুনঃক্রয়ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ, বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ভবিষ্যতে আর কখনো ফ্লোর প্রাইস আরোপ না করা, সুশাসন ও আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করা।


২০২৩-২৪ অর্থবছর: দেশে এফডিআই কমেছে ৮.৮%

এক বছরের ব্যবধানে দেশের নেট ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ১৪২ মিলিয়ন ডলার কমেছে
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০১
নিজস্ব প্রতিবেদক

আয় ফেরত আনার ভোগান্তি, অস্থিতিশীল বৈদেশিক মুদ্রা পরিস্থিতি এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের নেট ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই) বা বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগ আগের বছরের তুলনায় ৮.৮ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গত মঙ্গলবার প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্যানুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১.৬১ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নেট এফডিআই প্রবাহ ১.৪৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে এফডিআই প্রবাহ ১৪২ মিলিয়ন ডলার কমেছে।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী নাসের এজাজ বিজয় এফডিআই কমার জন্য তিনটি প্রধান কারণকে দায়ী করেছেন।

এজাজ বলেন, প্রথমত, নির্বাচনী বছরের প্রভাব। নির্বাচনী বছরগুলোতে সাধারণত এফডিআই প্রবাহে ধীরগতি দেখা দেয়। ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে এ প্রবণতা বাড়তে পারে।

তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা। ডলার সংকট কিছুটা কমলেও মুদ্রার অবমূল্যায়নসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা ‘অপেক্ষা করে দেখি’ কৌশল অনুসরণ করছেন।

তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ, দেশের ক্রেডিট রেটিং কমে আসা। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ক্রেডিট রেটিংয়ে অবনতি বাংলাদেশের বিনিয়োগ আকাঙ্ক্ষাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে। কারণ এর ফলে বিনিয়োগের ঝুঁকি আছে, এমন মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমে গেছে।

অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, সাম্প্রতিক ক্রেডিট রেটিং কমে আসার ফলে বাংলাদেশের এফডিআই আরও কমতে পারে। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের রেটিং স্থিতিশীল থেকে নেতিবাচক পর্যায়ে নামিয়ে আনে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের দুর্বল তারল্য এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংশ্লিষ্ট নীতিগত ঝুঁকি।

মুডিস ইনভেস্টরস সার্ভিস-ও এই বছরের মে মাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের রেটিং ‘বিএ৩’ থেকে ‘বি১1’-এ নামিয়ে এনেছে। তবে এটি দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি ধরে রেখেছে, যা অর্থনীতির ঋণ সক্ষমতায় কোনো তাৎক্ষণিক ঝুঁকি নেই বলে ইঙ্গিত করে।

এফডিআই প্রবাহে এই ধীরগতি ডলার বিনিময় হারেও প্রভাব ফেলেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাইয মাসে ডলারের বিনিময় হার ছিল ১০৮.৪০ টাকা। এটি ২০২৪ সালের জুন মাসে বেড়ে ১২১ টাকায় পৌঁছেছে, অর্থাৎ ১০.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থার রেটিং কমে এলে সেটি বিনিয়োগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তাফা কে মুজেরি জানান, বিনিয়োগকারীরা এসব রেটিংকে গুরুত্বের সেঙ্গে বিবেচনা করেন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এসব রেটিংয়ের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এ ধরনের রেটিং অর্থনীতির আপেক্ষিক শক্তিমত্তাকে প্রতিফলিত করে এবং নিম্নমানের রেটিং বিনিয়োগের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মোট নেট এফডিআই-এর মধ্যে ৬১৫ মিলিয়ন ডলার ছিল পুনঃবিনিয়োগিত মুনাফা। আরও জানা যায়, অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের নেট এফডিআই-এর ৪২ শতাংশ পুনঃবিনিয়োগিত মুনাফা থেকে এসেছে। অর্থাৎ দেশের এফডিআই প্রবাহের একটি বড় অংশ বিদ্যমান বিদেশি বিনিয়োগের মুনাফা পুনঃবিনিয়োগের মাধ্যমে এসেছে।

কেন পুনঃবিনিয়োগিত মুনাফা এফডিআই-এর একটি বড় অংশ- এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের ওপর রিটার্ন বা লাভ খুবই আকর্ষণীয়। এটি অনেক বিনিয়োগকারীকে তাদের মুনাফা পুনঃবিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করে।

তিনি বলেন, তবে ডলার সংকটসহ আয় ফেরত আনতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা অনেক সময় তাদের আয় না তুলে পুনঃবিনিয়োগে বাধ্য হন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সর্বাধিক ৪৩৬ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে টেক্সটাইল ও পোশাক খাতে। তারপর, ব্যাংকিং খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে।

অন্যান্য খাতের মধ্যে ওষুধ ও রাসায়নিক, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম এবং খাদ্য খাতেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগ দেখা গেছে।


পুঁজি হারানোর কান্না আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে

ডিএসইএক্স কমল আরও দেড় শতাংশ # একদিনেই বাজার মূলধন কমল সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা # বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন অব্যাহত
প্রতীকী ছবিটি সংগৃহীত
আপডেটেড ২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১০:৫১
নিজস্ব প্রতিবেদক

অনাস্থার পুঁজিবাজারে দরপতনের মিছিল আরও লম্বা হচ্ছে। কিছুতেই বিনিয়োগকারীদের আস্থা মিলছে না। নেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে কোনো বার্তাও। আগের দিন ৩ শতাংশ পতনের পর গতকাল প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স কমেছে আরও দেড় শতাংশের কাছাকাছি। একদিনেই এক্সচেঞ্জটির বাজার মূলধন কমেছে আরও সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার মতো। লেনদেন সামান্য বাড়লেও দিনভর বিক্রয়চাপে যতগুলো সিকিউরিটিজের দর বেড়েছে, তার দ্বিগুণ দর হারিয়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাওয়ার কারণেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বাজারের পতনে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, কিন্তু শেয়ার কেনার ক্রেতা একদমই কম। অনেক বিনিয়োগকারী তাদের বিও হিসাব বন্ধ করে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। অনেকেই আবার সাইডলাইনে থেকে মূলধন হাতে নিয়ে বাজার পর্যাবেক্ষণ করছে। তাছাড়া ফোর্সড সেলের মধ্যে পড়তে হচ্ছে অনেককে। এতে প্রতিনিয়ত বিক্রয় চাপে দরপতনের সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে মিডওয়ে সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশেকুর রহমান বলেন, ‘অবশ্যই অর্থনৈতিক, রাজনৈতিকসহ আগের সমস্যাগুলো আছে। তবে এখন প্যানিক সেল এবং যারা ঋণ নিয়ে শেয়ার ক্রয় করেছিলেন, তাদেরকে ফোর্সড সেলের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। বাজারে ট্রাস্ট (আস্থা) বড় ইস্যু। গত কয়েক দিন ধরে ভালো শেয়ারের দাম পড়ে গেছে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা আস্থা থেকে অনেকখানি দূরে চলে গেছেন। এখন তারা সব শেয়ার বিক্রি করে পুঁজি যতটুকু সম্ভব রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।’

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স গতকাল একদিনেই আরও ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ বা ৬৭ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮৯৯ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। আগের দিন সূচকটি ১৪৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৯২ শতাংশ কমে ৪ হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে নেমেছিল। সূচকটির গতকালের অবস্থান ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বরের পর সর্বনিম্ন। ওইদিন ডিএসইএক্স সূচক ৪ হাজার ৮৬৭ পয়েন্টে নেমেছিল। এক্সচেঞ্জটির অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের দিন লেনদেন শেষে যা ১ হাজার ‍১০৮ পয়েন্টে নেমেছিল। আর বাছাইকৃত ৩০ কোম্পানির সূচক ডিএস৩০ দিনের ব্যবধানে ২৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮০৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের দিন যা ছিল ১ হাজার ৮৩০ পয়েন্টে।

ঢাকার এ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৯৭ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে গতকাল সবগুলোর লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১০৫টির দর বেড়েছে। বিপরীতে ২৪৬টিই দর হারিয়েছে। আর ৪৬টির দর এদিন অপরিবর্তিত ছিল। এক্সচেঞ্জটির লেনদেনের পরিমান এদিন সামান্য বেড়ে ৩৫৭ কোটি ২৫ লাখ হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার। আগের দিন ডিএসইর বাজার মূলধন একদিনেই পৌনে ১০ হাজার কোটি টাকা কমার পর গতকাল আরও ৩ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা কমেছে।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সবগুলো সূচক কমেছে। এর মধ্যে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৮৫ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৮২১ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। এক্সচেঞ্জটিতে এদিন ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া ১৯২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৫২টির, কমেছে ১২৬টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৪টির।

এদিকে ধারাবাহিক দরপতনে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া বিনিয়োগকারীরা আগের দিনের ধারাবাহিকতায় গতকালও মতিঝিলে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মতিঝিলে ডিএসইর পুরাতন ভবনের সামনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগ দাবিতে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে জড়ো হন একদল বিনিয়োগকারী। আর দুপুর ২টার দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে মানববন্ধন করেন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আরেকটি গ্রুপ। উভয় মানববন্ধন থেকেই বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করা হয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের অর্থ সম্পাদক মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘পুঁজিবাজারের ধারাবাহিক দরপতন অভ্যাহত রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এখন বিনিয়োগকারীদের একটাই দাবি, বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যানের পদত্যাগ।’


অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এডিপি বাস্তবায়ন ৪.৭৫ শতাংশ

আপডেটেড ২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:১৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। যা টাকার অঙ্কে ১৩ হাজার ২১৫ কোটি টাকা। তবে শুধু সেপ্টেম্বর মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ২ দশমিক ১৮ শতাংশ বা ৬ হাজার ৭২ কোটি টাকা।

গতকাল সোমবার (২৮ অক্টোবর) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এ তথ্য জানায়।

এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই একই সময়ে এডিপি বাস্তাবায়নের হার ছিল ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। তার আগের অর্থবছরে ছিল ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এ ছাড়া গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুধু সেপ্টেম্বরে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে সরকারের এডিপি বরাদ্দ ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

আইএমইডি কর্মকর্তারা জানান, অর্থবছরের শুরুতে সাধারণত প্রস্তুতিমূলক কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ কারণে অর্থবছরের শুরুতে এডিপি বাস্তবায়ন হার কম থাকে। এ ছাড়া জুলাই মাস জুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাংলা ব্লকেড ও অসহযোগ আন্দোলনের প্রভাবও এডিপি বাস্তবায়নের ওপর পড়েছে।


বিশ্ববাজারে চালের দাম কমলেও দেশে বাড়ছে

রাজধানীতে ৫০ কেজির বস্তায় চালের দাম ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১০:৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্ববাজারে চালের দাম কমছে। শীর্ষ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত রপ্তানিতে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করায় আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপণ্যটির দাম কমছে; কিন্তু দেশের বাজারে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। দুই সপ্তাহ ধরে দেশে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বাড়ছে। রাজধানীর কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোটা, মাঝারি ও সরু- প্রায় সব ধরনের চালের দাম খুচরা পর্যায়ে কেজিতে ৪ থেকে ৬ টাকা বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, ৫০ কেজির বস্তায় চালের দাম ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

দেশে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে

রাজধানীর কাঁচাবাজারে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। বাজারে প্রতিকেজি মোট দানার চাল খুচরা পর্যায়ে পড়েছে ৬৪-৬৫ টাকা। মাঝারি ব্রি-২৮ এর দাম ছিল ৬৬-৬৮ টাকা কেজি এবং সরু দানার (মিনিকেট ও নজিরশাইল) চাল পড়ে ৮৪-৮৫ টাকা। ব্যবসায়ীরা প্রতি বস্তা মিনিকেট চাল তিন হাজার ২৫০ থেকে তিন হাজার ৭৫০ টাকায় এবং নাজিরশাইল তিন হাজার ৩০০ থেকে তিন হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।

ব্যবসায়ীদের দাবি, ধানের দাম বৃদ্ধি ও রাইস মিল থেকে সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণেই চালের দাম বেড়েছে। দাম বৃদ্ধির জন্য খুচরা বিক্রেতারা দায়ী করছেন পাইকারদের; আর পাইকাররা দাবি করছেন, মিল পর্যায়ে দাম বেড়েছে।

রাজধানীর রামপুরা বাজারে শনিবার মেসার্স রহিম এন্টারপ্রাইজের কর্মী কামাল হোসেন বলেন, বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ জাতের চালের দাম গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এই চালগুলোর দাম প্রতি ৫০ কেজির বস্তায় প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। তিনি বলেন, আমরা বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ জাতের ৫০ কেজির বস্তা তিন হাজার থেকে তিন হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি করছি। এক সপ্তাহ আগেও এই চাল বিক্রি করেছি দুই হাজার ৮৫০ থেকে দুই হাজার ৯৫০ টাকায়।

গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে চালের দাম প্রতি কেজিতে এক থেকে তিন টাকা বেড়ে যাওয়ায় চাপ বাড়ছে ভোক্তাদের ওপর। রাজধানীর বাড্ডা এলাকার শ্রমিক আবুল হোসেন জানান, তিনি সাধারণত পাইজাম চাল কেনেন। আগে এ ধরনের চালের দাম ছিল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা কেজি। এখন কিনতে হচ্ছে ৬৫ টাকায়। জানা গেছে, বিভিন্ন এলাকায় বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে চালের সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছ, পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। ঢাকায় যেসব আড়ৎদারদের চাল শেষ হয়েছে বা কমে আসছে, তারা ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকা পর্যন্ত কেজিতে চালের দাম বাড়াতে শুরু করেছে।

পাইকাররা জানান, মিল মালিকরা দাবি করছেন, তাদের কাছে পর্যাপ্ত মজুদ নেই। কিন্তু আসলে আছে। তারা সংকটের অজুহাত দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে বেশি দাম নিচ্ছে।

রামপুরা উলন বাজারে কেনাকাটা করতে আসা ফাতেমা বেগম বলেন, এক সপ্তাহ আগেও বিআর-২৮ চাল কিনেছি ৬২ টাকা কেজিতে। আর আজ দোকান মালিক এই চালের দাম চাইছেন ৬৫ টাকা। এ বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম বলেন, কেজিতে আমরা পাঁচ থেকে ছয় টাকা লাভ করি। পাইকাররা আমাদের কাছ থেকে বেশি দাম নিচ্ছে বলে দাম বাড়ানো ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই।

বিশ্ববাজারে দাম নিম্নমুখী

ভারত সম্প্রতি আধাসেদ্ধ চাল রপ্তানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করে নেওয়ায় বিশ্ববাজারে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকায় চালের দাম কমছে। থাইল্যান্ডের চাল রপ্তানির গড় মূল্য গত সপ্তাহে টনপ্রতি ৫২৯ ডলারে নেমে এসেছে। এই দাম আগের মাসের চেয়ে ৮ শতাংশ কম। এ ছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে থাই চালের রপ্তানিমূল্য ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছিল। সেই তুলনায় এখন দাম কমেছে ২১ শতাংশ। সে সঙ্গে ভারতেও ৫ শতাংশ খুদযুক্ত সেদ্ধ চালের দাম গত সপ্তাহে ছিল টনপ্রতি ৪৫০ থেকে ৪৮৪ ডলার, গত বছরের আগস্টের পর যা সর্বনিম্ন। ভারতের ৫ শতাংশ খুদযুক্ত সাদা চালের দাম আগের সপ্তাহে ছিল টনপ্রতি ৪৬০ থেকে ৪৯০ ডলার।

ভিয়েতনাম ফুড অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যানুযায়ী, গত সপ্তাহে দেশটিতে চালের দাম গত বছরের জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। ভিয়েতনামে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চাল টনপ্রতি ৫৩২ ডলারে বেচাকেনা হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৫৩৭ ডলার। ২০২২ সালে সারা বিশ্বে যত চাল রপ্তানি হয়েছিল, তার ৪০ শতাংশই করেছে ভারত। সেই হিসাবে ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চাল রপ্তানিকারক দেশ। ওই বছর বিশ্ব রপ্তানি বাজারে ৫ কোটি ৫৪ লাখ টন চাল বেচাকেনা হয়েছিল। এর মধ্যে শুধু ভারতের চালই ছিল ২ কোটি ২২ লাখ টন।

চালের আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের পরের চারটি অবস্থানে রয়েছে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালে এ চার দেশ সম্মিলিতভাবে যত চাল রপ্তানি করে, ভারত একাই তার চেয়ে বেশি করে। ভারত সব মিলিয়ে ১৪০টি দেশে চাল রপ্তানি করে। সে জন্য ভারতের চাল রপ্তানির সিদ্ধান্ত বিশ্ববাজারে চালের দামে প্রভাব ফেলে। ২০২৩ সালে ভারত চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করলে বিশ্ববাজারে চালের দাম বেড়ে যায়। ভারত চাল রপ্তানিতে নানা রকম বিধিনিষেধ দেওয়ার কারণে এশিয়া ও আফ্রিকার ক্রেতারা এই শস্য কিনতে ছোটেন থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও মিয়ানমারে। চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণে এসব দেশে চালের রপ্তানির মূল্য গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যায়।

রপ্তানিকারক দেশের প্রতিযোগিতামূলক দামের কারণে ভিয়েতনামে চালের দাম কমেছে। এ ছাড়া গত সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার বুলোগ চাল ক্রয়ের টেন্ডার বাতিল করেছে। চালের দামে তার প্রভাবও পড়েছে। এদিকে থাইল্যান্ডে গত সপ্তাহে ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম ছিল টনপ্রতি ৫১০ ডলার, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৫২৫ ডলার। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ শিথিল করছে। ফলে গত মাসের শেষ দিক থেকেই বিশ্ববাজারে চালের দাম কমছে। সেই ধারা এখনো অব্যাহত আছে।


এক সপ্তাহে বাজার মূলধন কমল ১২,২৯৮ কোটি টাকা

প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ১৪৩ পয়েন্ট পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পতনের ধারায় রয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। চলতি সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিনদিনই দরপতন হয়েছে। এতে মূল্যসূচকের বড় পতনের পাশাপাশি কমেছে বাজার মূলধন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে ১২ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা। এছাড়া প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ১৪৩ পয়েন্ট। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

চলতি সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬৩টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০৬টির। এ ছাড়া ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৬৯ হাজার ১৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ১২ হাজার ২৯৮ কোটি।

দাম কমার তালিকায় সিংহভাগ প্রতিষ্ঠান থাকায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স চলতি সপ্তাহে কমেছে ১৪৩ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১৬৪ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট। তার আগের আট সপ্তাহে সূচকটি কমে ৫০২ পয়েন্ট। আন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ১১ সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক সব মিলিয়ে কমেছে ৭৯৯ পয়েন্ট।

প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি চলতি সপ্তাহে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। চলতি সপ্তাহে সূচকটি কমেছে ৫১ দশমিক ২২ পয়েন্ট। গত সপ্তাহে সূচকটি কমেছে ৫৪ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট। তার আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৫ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশ।

এ ছাড়া ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচকটি চলতি সপ্তাহে কমেছে ৩০ দশমিক ১৩ পয়েন্ট। গত সপ্তাহে কমেছে ৩১ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট। তার আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১৫ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা এক দশমিক ২৬ শতাংশ।

সবকয়টি মূল্যসূচক কমলেও চলতি সপ্তাহে লেনদেনের গতিও কিছুটা বেড়েছে। চলতি সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৩৮ কোটি টাকা। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩১৮ কোটি টাকা। তার আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৬৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অগ্নি সিস্টেমের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৬২ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ। প্রতিদিন গড়ে ১০ কোটি ৬১ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এনআরবি ব্যাংক।

এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্রামীণফোন, ব্র্যাক ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনা এবং ফার ইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডায়িং ইন্ডাস্ট্রিজ ।

বৃহস্পতিবারের লেনদেনের চিত্র

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) মূল্যসূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ৫৫ দশমিক ১৯ পয়েন্ট কমে সূচকটি ৫ হাজার ১১৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইর অপর সূচক ‘ডিএসইএস’ ১৮ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট কমে ১১৪৪ পয়েন্ট এবং ‘ডিএস-৩০’ সূচক ১৩ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট কমে ১৮৭৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

ডিএসইতে বৃহস্পতিবার ৩০৬ কোটি ০১ লাখ ৩১ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে ৩২১ কোটি ৯৯ লাখ ৩৬ হজার টাকা। এদিন ডিএসইতে মোট ৩৯৫টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৮৩টি কোম্পানির, বিপরীতে ২৭২ কোম্পানির দর কমেছে। পাশাপাশি ৪০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।


বড় দরপতনে ধুঁকছে শেয়ারবাজার

ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৭১ পয়েন্ট কমে ৫১৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের শেয়ারবাজারে বুধবার ফের বড় দরপতন হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ার কারণে শেয়ারবাজারে এ দরপতন দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, নানা কারণে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন চলছে। একদিকে ব্যাংকের সুদের হার বেড়েছে, অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুবিধা নেওয়া ব্যবসায়ীরা বাজারে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। ফলে বাজারে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। যে কারণে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হচ্ছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা আরও মনে করেন, টানা দরপতনের পর বাজার যখন ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিল, ঠিক সে সময় রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে নতুন বিতর্ক ও অস্থিরতা শুরু হয়েছে। ফলে শেয়ারবাজারে আবারও দরপতনের ধারা দেখা দিয়েছে। তবে যে হারে বাজারে দরপতন হয়েছে, তাতে যে কোনো মুহূর্তে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে এটাই স্বাভাবিক।

গত সপ্তাহের চার কার্যদিবস এবং চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসসহ টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতনের পর সোমবার ও মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। গতকাল মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়।

শেয়ারবাজারে লেনদেন শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন একদল আন্দোলনকারী। একপর্যায়ে তারা বঙ্গভবনের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দেন। এতে উত্তেজনা আরও বাড়ে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছোড়া সাউন্ড গ্রেনেড ও শটগানের গুলিতে তিনজন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে বুধবার (২৩ অক্টোবর) শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে দাম কমার তালিকা। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের পাশাপাশি সব কটি মূল্যসূচকের বড় পতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মাত্র ৫২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০৬টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সব কটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩২১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৫৮ কোটি ২২ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৩৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

লেনদেন খরার বাজারে গতকাল টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৭ কোটি ৯৬ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অগ্নি সিস্টেমের ১৩ কোটি ৬৪ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১২ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এনআরবি ব্যাংক, গ্রামীণফোন, টেকনো ড্রাগস, ব্র্যাক ব্যাংক, ফারইস্ট নিটিং, মিডল্যান্ড ব্যাংক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১২১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩১টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।


মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার আবারও বাড়ছে

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নীতি সুদহার ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে নতুন এই নীতি সুদহার কার্যকর হবে বলে গতকাল মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা এক সার্কুলারে জানানো হয়েছে। এর ফলে ওভারনাইট রেপো সুদহার ১০ শতাংশে উন্নীত হবে এবং ঋণসহ সব ধরনের ব্যাংকিং পণ্যের সুদের হার বেড়ে যাবে।

সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে গতকাল মঙ্গলবার পাঠানো এক চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, মুদ্রানীতিতে সংকোচনমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়েছে বলে জানানো হয়।

এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর নীতি সুদহার সর্বশেষ বার বাড়ানো হয়েছিল। তখনো ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়িয়ে নীতি সুদহার ৯ দশমিক ৫০ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়। পরের দিন থেকেই তা কার্যকর হয়। এ নিয়ে চলতি বছরে বাংলাদেশ ব্যাংক পঞ্চমবারের মতো এই সুদহার বাড়াল।

২০২২ সালের মে মাস নীতি সুদহার ছিল ৫ শতাংশ। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১০ বার বাড়ানো হয়েছে নীতি সুদহার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, নীতি সুদহার বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর তারল্য ব্যবস্থাপনা আরও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করার লক্ষ্যে নীতি সুদহার করিডরের ঊর্ধ্বসীমা স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটির (এসএলএফ) ক্ষেত্রে বিদ্যমান সুদহার ১১ শতাংশ থেকে ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়িয়ে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশে এবং নিচের সীমা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) ৭ থেকে ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত মুদ্রানীতি কমিটির পঞ্চম সভায় মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত সংকোচনমূলক নীতি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোন সময়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কোন পর্যায়ে নামিয়ে আনতে চায়, সে সম্পর্কে চিঠিতে কিছু বলা হয়নি।

নীতি সুদহার বাড়ানোর মূল লক্ষ্য হলো বাজারে অর্থের সরবরাহ কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি মনে করে বাজারে অর্থের সরবরাহ বেশি এবং সে কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, তাহলে অর্থপ্রবাহ কমাতে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করা হয়। নীতি সুদহার বৃদ্ধির অর্থ হলো, ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত সুদ দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ করতে হবে। ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের যে ঋণ দেয়, তার সুদহারও বাড়ে। নীতি সুদহার বেশি হলে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার করতে নিরুৎসাহিত হয়।

বাংলাদেশ পরিসংখান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, সেপ্টেম্বর মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি কমেছে। এ মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে থাকলেও তা আগের মাসের তুলনায় কমার কথা জানায় বিবিএস। সেপ্টেম্বরে এই হার ছিল ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে টানা দুই মাস মূল্যস্ফীতি কমার তথ্য দিয়েছিল সরকারি এই সংস্থা।

তবে চলতি মাসে বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়ে। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে সরকার কিছু পণ্যে আমদানি শুল্ক কমানোসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। তাতে ডিমের মতো পণ্যের দাম কিছুটা কমে। তবে বাজারে নতুন করে মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও পেঁয়াজের। পণ্যগুলোর দাম কমাতে সরকার শুল্ক-করে ছাড় দিলেও এর সুফল এখনো বাজারে পড়েনি। চারটি পণ্যের দাম আরও বাড়ল এমন সময়ে, যখন বাজারে কোনো স্বস্তি নেই।

গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছিলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দুই দফায় নীতি সুদহার বাড়ানো হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের ওই বক্তব্যের পরের দিন ২৪ সেপ্টেম্বর নীতি সুদহার বাড়ানো হয়।


কোরিয়ান ইপিজেডে হাতির সুরক্ষায় বিশেষজ্ঞ কমিটি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের উদ্যোগে চট্টগ্রামস্থ কোরিয়ান ইপিজেড এলাকায় হাতির সুরক্ষায় বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি ইপিজেডের কর্মীদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং মানুষ-হাতির দ্বন্দ্ব নিরসনে করণীয় বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ-সংবলিত প্রতিবেদন আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে দাখিল করবে।

সচিবালয়ে গতকাল মন্ত্রণালয়ের মিনি সভাকক্ষে পরিবেশ উপদেষ্টার সঙ্গে কোরিয়ান ইপিজেডের প্রেসিডেন্ট, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক করে গঠিত এ বিশেষজ্ঞ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মনিরুল এইচ খান; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম, আইইউসিএন এর প্রতিনিধি, কোরিয়ান ইপিজেড এর দুইজন প্রতিনিধি; বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন অভয়ারণ্যের রুবাইয়া আহমেদ এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা। চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। বিজ্ঞপ্তি


তিন কোম্পানির ‘জেড’ থেকে উন্নতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বর্তমান কমিশনের নির্দেশনায় গত এক মাসে অন্তত ৩১টি কোম্পানিকে লেনদেনের জন্য ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এসব কোম্পানির মধ্যে তিনটির লেনদেন ক্যাটাগরি গতকাল উন্নতি হয়েছে। কোম্পানি তিনটি ২০২২ ও ২০২৩ হিসাব বছরের জন্য অনুমোদিত লভ্যাংশ বিতরণ করায় ‘জেড’ থেকে উন্নতি হয়েছে। এর মধ্যে ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স ‘জেড’ থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে এবং শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ও এডভেন্ট ফার্মার ক্যাটাগরি ‘জেড’ থেকে ‘বি’ শ্রেনীতে উন্নতি হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গতকাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ডিএসই জানিয়েছে, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়ে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে উন্নিত হয়েছে। আর শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ও এডভেন্ট ফার্মা ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরের জন্য যথাক্রমে ৫ শতাংশ ও ২ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ দিয়ে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ফিরেছে। তবে এই কোম্পানি তিনিটি শতভাগ লভ্যাংশ বন্টন করেছে নাকি বিএসইসির নতুন নির্দেশনা অনুসারে ৮০ ভাগ বণ্টন সম্পন্নের ভিত্তিতে ক্যাটাগরি উন্নিত করেছে সে বিষয়ে কিছু জানায়নি ডিএসই।

এক দিন আগে রোববার দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে ‘জেড’ থেকে শর্ত সাপেক্ষে কোম্পানিগুলোকে ক্যাটাগরি উন্নতি করার সুযোগ দিয়ে নির্দেশনা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যেসব কোম্পানি তাদের বিগত বছরের জন্য অনুমোদিত লভ্যাংশের ন্যূনতম ৮০ শতাংশ বন্টন করতে সক্ষম হয়েছে সেগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরি থেকে উন্নিত করার নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। স্টক এক্সচেঞ্জসমূহকে এ বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিএসইসির বর্তমান কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে গত এক মাসে অন্তত ৩১টি কোম্পানিকে নির্ধারিত সময়ে লভ্যাংশ বণ্টন করতে সক্ষম না হওয়ায় ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে পাঠায় ডিএসই ও সিএসই। কোম্পানিগুলো হলো- ন্যাশনাল ব্যাংক, বিডি থাই, সেন্ট্রাল ফার্মা, ফিনিক্স ফাইন্যান্স, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, ন্যাশনাল টিউবস, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, জিএসপি ফাইন্যান্স, আনলিমা ইয়ার্ন, এটলাস বাংলাদেশ, বে লিজিং, লিবরা ইনফিউশন, লুব-রেফ বিডি, এসকে ট্রিমস, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, ভিএফএস থ্রেডস ডাইং, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন, ফরচুন সুজ, প্যাসিফিক ড্যানিমস, খুলনা প্রিন্টিং, এডভেন্ট ফার্মা, দেশ গার্মেন্টস, বিচ হ্যাচারি, ইন্দোবাংলা ফার্মা, ফার কেমিক্যাল, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স,অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স, একমি পেস্টিসাইডস, রানার অটোমোবাইলস এবং পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স। এসব কোম্পানির মধ্যে ইতোমধ্যে এনার্জিপ্যাক ‘জেড’ থেকে ‘বি’ শ্রেনীতে উন্নিত হয়েছে। নতুন করে গতকাল আরো ৩ কোম্পানির ক্যাটাগরি উন্নিত হলো।


মূলধনি মুনাফায় কর অব্যাহতি চায় ডিএসই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়াারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেছেন, বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স বা মূলধনি মুনাফার ওপর করারোপ অব্যাহতির ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সুষ্ঠু সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, লভ্যাংশের ওপর উৎসে কর কর্তনকে চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনা করা এবং ক্যাপিটাল লসের সমন্বয়ের বিষয়েও সুষ্ঠু সমাধানের পদক্ষেপ নেয়া হবে।

গতকাল সোমবার ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে শীর্ষ ৩০ ব্রোকারেজ হাউজের প্রতিনিধির সঙ্গে শেয়ারবাজার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসই পরিচালক অধ্যাপক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, সৈয়দ হাম্মদুল করীম, মোহাম্মদ ইশহাক মিয়া, শাহনাজ সুলতানা, মো. শাকিল রিজভী, রিচার্ড ডি রোজারিও, ডিবিএর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম এবং ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সাত্বিক আহমেদ শাহ।

ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, একটি গতিশীল শেয়ারবাজার গড়ে তুলতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি ব্রোকারেজ হাউজগুলোর দায়িত্ব অনেক বেশি। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের শেয়ারবাজার একটি অস্বাভাবিক সময় অতিক্রম করছে। এ অবস্থা থেকে বাজারকে কীভাবে উত্তরণ করা যায় সে বিষয়ে আপনাদের সবার সহযোগিতা ও পরামর্শ জরুরি।

শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউসের প্রতিনিধিবৃন্দ, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ এবং ভবিষ্যতে বাজারকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনা, তারল্য সংকট, ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স, মার্কেট মেকার, ক্যাটাগরি, পলিসি সাপোর্ট, নগদ উত্তোলনের সুবিধা দেওয়া, ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং সিস্টেম, ফ্লোর প্রাইস প্রয়োগ না করা, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, আইপিও পদ্ধতির সংস্কার, মার্জিন লোন সংস্কার, সিসি একাউন্টের ইন্টারেস্ট, সিসিবিএল, মন্দ আইপিও না আনা, লোন রেশিও, ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিম পর্যালোচনা এবং ক্যাপিটাল মার্কেট স্টাবিলাইজেশন ফান্ড সম্পর্কে আলোচনা করেন।

মমিনুল ইসলাম বলেন, অতীতের অনেক ভুল সিদ্ধান্ত, অনিয়ম ও অদক্ষতার ফলাফল স্বরূপ পুঁজিবাজার আজ একটি দুর্বল ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য বাজার সংশ্লিষ্ট সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এটি আমাদের জন্য একটি দুর্লভ সুযোগ পুঁজিবাজারকে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও অর্থনীতির জন্য কল্যাণকর লক্ষ্যে গড়ে তোলার। এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত পরিবর্তন, অনিয়ম-দূর্নীতির তদন্ত ও বিচারের সঙ্গে সঙ্গে বিনিয়োগকারী এবং মধ্যস্থতাকারীদের আস্থা অর্জনে কাজ করতে হবে।

অংশগ্রহণকারী ডিবিএ এবং প্রধান ব্রোকারেজ হাউসগুলোর প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্সের ওপর কর অব্যাহতি সুবিধা পূর্ণ প্রতিষ্ঠা, লভ্যাংশের ওপর উৎসে কর কর্তনকে চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনা করা এবং ক্যাপিটাল লসের সমন্বয়ের বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ডিএসই আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, সিসি একাউন্টের ইন্টারেস্ট এবং নগদ প্রদানের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ডিএসই ইতোমধ্যে আলোচনা করেছে এবং বিষয় দুইটি দ্রুত সমাধান হবে বলে আশা করা যায়। একই সঙ্গে ডিএসইকে তার পূর্ণ সক্ষমতার সঙ্গে কাজ করার উপযোগী করে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান। ডিএসই মার্কেট সংশ্লিষ্ট সবার একটি সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে নেতৃত্বে প্রদান করবে, যাতে বিদ্যামান আইন অথবা প্রবিধান মোতাবেক মার্কেট- সংশ্লিষ্টরা নিজেদের সমস্যাগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজেরাই সমাধান করতে পারে অথবা সমন্বিতভাবে রেগুলেটর কিংবা সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে পারে।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে পুঁজিবাজারে অতিদ্রুত বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে। এজন্য তিনি বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হয়ে ধৈর্য ধারণের অনুরোধ করেন। সামষ্টিক অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করেছে। সুতরাং পুঁজিবাজারেও তার ইতিবাচক প্রভাব শীঘ্রই দেখা যাবে বলে আশা করা যায়।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট সাইফুর ইসলাম বলেন, বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বর্তমান বাজারে আস্থার অভাব রয়েছে। পুঁজিবাজার উন্নয়নে আস্থা বৃদ্ধি করতে হবে। এছাড়াও তিনি অগ্রিম আয়কর গ্রহণযোগ্য পর্যায় নিয়ে আসা এবং ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স ব্যক্তি পর্যায় রোহিত করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্দ্যোগ গ্রহণের আহবান জানান। সিসিবিএল ২০১৮ সালে গঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। এবিষয়ে আপনাদের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আর সিএমএসএফ প্রতিষ্ঠানটি বিএসইসি গঠন করেছে। তাই এই প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিতে হলে কমিশনকেই নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ডিমিউচুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট ও স্কিম রিভিউ করতে হবে। এখানে সময়োপযোগী সংশোধন করতে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদকে ভূমিকা রাখতে হবে। পুঁজিবাজারে ব্রোকারেজ হাউজ থেকে যে অগ্রিম আয়কর আদায় করা হয়। এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে ব্রোকারেজ হাউসগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সে বিষয়েও কাজ করতে হবে।


banner close