বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
৭ কার্তিক ১৪৩২
নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা

সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে মিলছে না ডিম

ফাইল ছবি
আপডেটেড
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ০২:৫৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ০২:৪৭

রাজধানীর খিলগাঁও কাঁচাবাজার। গতকাল বিকেলবেলা এক ডিম দোকানদারের সঙ্গে বেসরকারি চাকরিজীবী রিফাত রহমানের চলছিল তুমুল বাগবিতণ্ডা। দোকানদার ১ ডজন ডিমের দাম ১৮০ টাকার নিচে দেবে না, কিন্তু তিনি ১৬০ টাকায় নেওয়ার জন্য দামাদামি করছেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে চলছে বাগবিতণ্ডা। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে নিজের মনের কষ্ট ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে রিফাত বললেন, ‘কখনো বন্যা, কখনো বৃষ্টি তো কখনো পণ্যের সংকট- এসব নানা অজুহাতে দিন দিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির হয়ে যাচ্ছে।

প্রতিদিনই বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম। না খেয়ে থাকা গেলে বড় বাঁচা বাঁচতাম। কোনো দিন শুনলাম না জিনিসের দাম কমেছে। আমদানিতে বা পাইকারি বাজারে যদি ৫ টাকা বাড়ে, খুচরা বাজারে সেটা বাড়ে ৩০-৪০ টাকা পর্যন্ত। বাজার ব্যবস্থাপনার যাচ্ছে তাই অবস্থা। এসব দেখার যেন কেউ নেই। আমাদের মতো নিম্ন মধ্যবিত্তের হয়েছে যত জ্বালা।’

এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে চলে গেলেন মধ্যবয়স্ক লোকটি। শুধু রাজধানীর খিলগাঁও বাজারই নয়। নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে জিনিসপত্র কেনার সময় কোনো না কোনো দোকানদারের সঙ্গে ক্রেতার বাকবিতণ্ডতার দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো।

বেশ কয়েক দিন ধরেই ডিমের বাজারে অস্থিরতা লেগে আছে। সবজির বাজারে আগুন লেগেছে বলা যায়। বেশির ভাগ সবজিই ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া আমদানি স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে অস্বাভাবিক হারে।

অন্যদিকে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজার কারসাজি আর কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ডিমের বাজারের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকার কয়েকবার ডিমের দাম নির্ধারণ পুনর্নিধারণ করে দিলেও খুচরা পর্যায়ে ক্রেতারা সেই দামে তা কিনতে পারছেন না। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার সরকার খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম বেঁধে দিয়েছে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। কিন্তু সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর বেশিরভাগ বাজারে এখনও প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা দরে।

কোথাও কোথাও আরেকটু কম। ১৭০ টাকা। অবশ্য, দুয়েকটি জায়গায় ১৬০ টাকা দরে ডিম বিক্রির খবর পাওয়া গেছে। যেখানে ১৬০ টাকা দরে ডিম বিক্রি হচ্ছে সেখানে প্রতি পিস ডিমের দাম পড়ছে ১৩ টাকা ৩৫ পয়সা। কোনো কোনো বাজারে তা ১৭০-১৮০ টাকাও রাখা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, মাত্র এক সপ্তাহে ডিমের দাম বেড়েছে প্রায় ৬ শতাংশ পর্যন্ত।

বড় বড় কোম্পানিগুলোর কারণেই ডিমের বাজারে এ নৈরাজ্য বলে অভিযোগ বিক্রেতাদের। পাইকারদের দাবি, পিস প্রতি প্রায় দেড় টাকা বেশি দরে কেনার কারণে খুচরাতেও দাম পড়ছে বেশি। অন্যদিকে উৎপাদক পর্যায়ে বড় বড় কোম্পানিগুলোর কারণেই ডিমের বাজারে এই নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে বলে দাবি খুচরা ব্যবসায়ীদের।

এদিকে, ক্রেতারা বলছেন শুধু দাম বেঁধে দিলে হবে না। সরকার নির্ধারিত দরে বিক্রি হচ্ছে কি না সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি করতে হবে সরকারকে। এর আগে, গত ২ দিন রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় ডিমের আড়ত বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার রাত থেকে আবার সচল হলে জমে ওঠে তেজগাঁও এর আড়ত। ফলে রাজধানীতে ডিমের জোগান স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।

এদিকে চড়া সবজির বাজারে কোনো স্বস্তি নেই। বেশির ভাগ সবজির দাম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১০০ টাকা কেজি করে। আর গত সোম ও মঙ্গলবার শুধু বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়েই ৪৯৮ টন কাঁচামরিচ আমদানি হলেও এখনো এই নিত্যপণ্যটির দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে আসেনি। তবে ৭০০ টাকা কেজি ছোঁয়া পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে। গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত কাঁচাবাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৩৬০ টাকা কেজি দরে।

তবে গতকাল কারওয়ান বাজারে কাঁচামরিচের দাম পাইকারি বিক্রি হয়েছে ২৪০ টাকা কেজি দরে। যদিও এর আমদানি মূল্য কেজি প্রতি মাত্র ৬০ টাকা, যা স্থলবন্দরে ৩৬ টাকা শুল্ক কর যোগ করে পড়েছে মাত্র ৯৬ টাকা। তবে কাঁচামরিচের ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে বাড়তি দামে মরিচ কেনায় একেবারে দাম কমানো সম্ভব নয় তাদের পক্ষে। আমদানি স্বাভাবিক থাকলে আর দুই তিন দিনের মধ্যে কাঁচামরিচের দাম আরও কমবে। এদিকে, কাঁচামরিচের দাম ওঠানামার ক্ষেত্রে আরেকটি কারণ জানিয়েছেন তারা।

কাঁচামরিচের পাইকারি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, শুক্র ও শনিবার আমদানি বন্ধ থাকায় ওই দুদিন আগের মরিচের ওপর বাজার নির্ভর করে। ফলে চাহিদা বেশি থাকায় সপ্তাহের বৃহস্পতি থেকে রবিবার পর্যন্ত মরিচের দাম বেশি থাকে। সোম থেকে বুধবার তা আবার কমে যায়। দৈনিক বাংলার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে এই প্রক্রিয়াটি চলমান থাকলেও ময়মনসিংহ অঞ্চলে বন্যা দেখা দেওয়ার পর থেকে তা আর কার্যকর থাকেনি। বিশেষ করে গত সপ্তাহে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম।

কাঁচামরিচ ব্যবসায়ীরা জানান, দেশে উৎপাদন হওয়া কাঁচামরিচের বড় জোগান আসে কুড়িগ্রাম ও শেরপুর-জামালপুর জেলার মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদীর দুই পারের চরাঞ্চলগুলো থেকে। ময়মনসিংহ এবং আশেপাশের জেলাগুলোতেও কাঁচামরিচ উৎপাদন হয়। রাজধানীতে বেশির ভাগ সময় এসব জেলা থেকেই নিত্যপণ্যটি আসে। তবে ওই অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেওয়ায় মরিচের ক্ষেতগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়ার পরই বাজারে নিত্যপণ্যটির দাম বেড়ে যায়। অন্য সবজিগুলোর দাম বাড়ার পেছনেও এটি অন্যতম কারণ। যদিও বেশিরভাগ ক্রেতার কাছে এটি সিন্ডিকেটের কারসাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।

দৈনিক বাংলার বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধির দেওয়া তথ্যমতে, আমদানি স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোলসহ স্থানীয় সব খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচের দামবৃদ্ধি পেয়েছে কেজিতে ১৫০-২০০ টাকা। কারণ হিসেবে দুর্গাপূঁজার জন্য টানা ৫ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। তবে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে এমন দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।

অবশ্য দৈনিক বাংলার বিভিন্ন জেলা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ময়মনসিংহ অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পর সব এলাকাতেই হঠাৎ করেই ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে সবজির দাম। দেশের উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় সবজির আড়ত বগুড়ার মহাস্থানগড়ের কাঁচা সবজির হাটগুলো। সেই হাটগুলোতেই গত সপ্তাহে পটল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ফলে বন্যা ও নদীর পানি বাড়ায় উত্তরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হওয়ার সমস্যা তো আছেই, নিয়মিত মনিটরিং না থাকায় সিন্ডিকেটের কারসাজি এখন ছড়িয়ে গেছে মফস্বলের বাজার-হাটগুলোতেও। এর প্রভাব পড়ছে রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর বাজারগুলোতে।

সবজির দাম বাড়ার আরেকটি কারণ, প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবরজুড়ে বাজারে সবজির দাম তুলনামূলক বেশি থাকে মূলত গ্রীষ্ম-বর্ষাকালের উৎপাদিত সবজির শেষ হওয়া ও শীতের মৌসুমের সবজি উঠতে দেরি হওয়ার কারণে। এই সময়টা মূলত শীতের সবজি বপনের মৌসুম। তাই শীতের আগাম সবজি এ মৌসুমে যা ওঠে সেগুলোর থাকে চড়া দাম। যেমন সীম এ সময়কালে ২০০ টাকার নিচে পাওয়া যায় না। তবে অতীতের এই খরাতেও পেঁপে, কাঁচাকলা জাতীয় সবজিগুলো ২০-৩০ টাকার মধ্যে পাওয়া গেলেও এবার তার দাম দ্বিগুণেরও বেশি।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সবজির দাম বাড়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে হাতবদল। ট্রাক থেকে সবজি নামানোর সময় যা দাম, মোকামে তার চেয়ে বেশি। আবার মোকাম থেকে কিনে পাইকারি বাজারে যত দামে পণ্যটি বিক্রি হয় খুচরা বিক্রেতারা সেখান থেকে কিনে নিজের দোকানে নিয়ে আসার পর এর আনয়ন খরচের সঙ্গে কেজি প্রতি ৮ থাকা থেকে ২০ টাকা লাভ কষে দাম নির্ধারণ করেন। এ কারণে বাজারে সব সবজির দাম বেড়েছে।

টিসিবির তথ্যমতে, এক মাসের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ৮২ থেকে ১৫০ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া বেগুন মানভেদে কেজিতে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, টমেটো কেজিতে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, পটল ও ঢেঁড়স যথাক্রমে ৯০ থেকে ১২০ এবং ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ঝিঙে, ধুন্দুল, চিচিঙ্গা, পটোল ও ঢেঁড়শের কেজি ছিল ৭০-৮০ টাকার মধ্যে। গত বৃহস্পতিবার থেকেই এই সবজিগুলো কিনতে ক্রেতাদের ব্যয় করতে হয়েছে ১০০-১২০ টাকা প্রতিকেজি। শুক্রবারও এই দাম ছিল বাজারে।

এ ছাড়া কাঁকরোল ১০০-১২০ টাকা; বরবটি ১৩০-১৪০ টাকা, কচুর লতি ১৭০ টাকা, বেগুন ১০০-১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি। বারোমাসি টমেটো ২৬০-২৮০ টাকা কেজি। গাজর ১৮০ টাকা, শসার কেজি ৮০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির মধ্যে ৫০ টাকার নিচে দাম রয়েছে পেঁপের, কেজি ৪০-৪৫ টাকা। কচুরমুখি পাওয়া যাচ্ছে ৭০ টাকা কেজি। লাউ প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, চাল কুমড়া ৮০ টাকা। এক ফাঁলি মিষ্টি কুমড়া দাম পড়ছে ৫০-৬০ টাকা। কাঁচকলার হালি ৮০ টাকা। একেবারে ছোট আকৃতির ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা পিস, বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা পিস।

শাকের আঁটি মিলছে না ৩০ টাকার নিচে। বাজারে লাল শাক ৩০-৪০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৫০-৬০ টাকা, মুলা শাক ২৫ টাকা, কলমি শাক ২০ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা এবং ডাঁটাশাকের আঁটি ৩০ টাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে। ধনে পাতার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। কাঁচামরিচের দাম বেড়ে ৪০০ টাকা হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগেও বাজারে কাঁচামরিচের দাম ছিল ২০০-২৪০ টাকা কেজি।

এদিকে, তেল, চিনির আমদানি শুল্ক কমালেও তার কোনো প্রভাব নেই বাজারে। বরং গত সপ্তাহে দাম বেড়েছে দুটো নিত্যপণ্যেরই। সব ধরনের তেল লিটারে ৪ থেকে ৮টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলেছে জানিয়েছে টিসিবি। চিনির দামও বেড়েছে খানিকটা। সব মিলিয়ে বাজার করতে এসে ভোগান্তিতে ভোক্তারা।

রাজধানীর কারওয়ানবাজারসহ কয়েকটি বাজারের ক্রেতারা বলেছেন, বন্যার কারণে বাজারে সবজি আসতে পারছে না। আর ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে অনেককে।

এক সপ্তাহে বেড়েছে ১২ পণ্যের দাম

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গেল এক সপ্তাহের (৭-১৪ অক্টোবর) মধ্যে ১২টি নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে, যার মাঝে রয়েছে সয়াবিন তেল, পাম অয়েল, রাইস ব্র্যান অয়েল, আলু, ছোলা, পেঁয়াজ, রসুন, জিরা, দারুচিনি, ধনে, গরুর মাংস ও ডিম।

অন্যদিকে এক সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১ টাকা বেড়েছে। এ নিয়ে এক মাসে বাড়ল ৪ টাকা। আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা, পেঁয়াজ ৫ টাকা এবং গরুর মাংসের দাম কেজিপ্রতি ৫০ টাকা বেড়েছে। টিসিবির তালিকায় শাকসবজির দাম উল্লেখ থাকে না। যদিও এখন বাজারে সবচেয়ে চড়া দাম শাকসবজির। বেশির ভাগ সবজির কেজি ৮০ টাকা থেকে শুরু। কোনো কোনো সবজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি।

টিসিবি বলছে, কিছু জিনিসের দাম বাড়লেও এক সপ্তাহে দাম কমেছে সাতটি নিত্যপণ্যের। এর মধ্যে রয়েছে মসুর ডাল, মুগ ডাল, আদা, এলাচি, খাসির মাংস, দেশি মুরগি ও চিনি। এসব পণ্যের দাম আগেই অনেক চড়া ছিল। ফলে সামান্য কমলেও তাতে স্বস্তি ফেরেনি।

ডিমের বাজারের চলমান অস্থিরতা কাটাতে আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু হচ্ছে সরকারি দামে ডিম বিক্রির বিশেষ কার্যক্রম। এরই অংশ হিসেবে রাজধানীতে ডিমের প্রধান দুটি পাইকারি বাজার তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজারে প্রতিদিন ২০ লাখ ডিম সরবরাহ করবে শীর্ষস্থানীয় ডিম উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো। গতকাল বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)।

এতে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে ঢাকায় এ কার্যক্রম শুরু করা হলেও সারা দেশেই এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায় ‘জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলীম আখতার খান কাপ্তান বাজারে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তেজগাঁও বাজারে এ কার্যক্রম আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হবে বলে জানা গেছে।


দেড়শ প্রজাতির ভেষজে সমৃদ্ধ নাটোরের ১৫ ‘ঔষুধি গ্রাম’

উৎপাদন হয় শত কোটির ভেষজ
আপডেটেড ২১ অক্টোবর, ২০২৫ ২১:৩৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের একমাত্র ঔষধি পল্লী এখন নাটোরের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। প্রায় দিনই দর্শনার্থীরা আসছেন এই পল্লীতে এবং মুগ্ধতা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এই পল্লীতে বছরে শুধু অ্যালোভেরাই উৎপাদন হচ্ছে ১৫ হাজার টন। এছাড়া শিমুল মূল, অশ্বগন্ধাসহ উৎপাদন হচ্ছে ১৪০ ধরনের ভেষজ। উৎপাদিত এসব ভেষজের বাজার মূল্য অন্তত শত কোটি টাকা।

নাটোর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর-খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম জুড়ে এই ভেষজ পল্লীর অবস্থান। ইউনিয়নের প্রধান সড়কের প্রায় একই সমতলে থাকা ভেষজ পল্লী ছবির মতো সুন্দর।

জানা যায়, ১৯৯৫ সালের দিকে খোলাবাড়িয়া এলাকার আফাজ পাগলা তার কবিরাজি কাজে ব্যবহারের জন্য স্বউদ্যোগে ভেষজ উদ্ভিদের চাষাবাদ শুরু করেন। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো গ্রামে। শেষে সারা ইউনিয়ন জুড়ে। শুধু আবাদি জমিই নয়, গ্রামের প্রতিটি বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তার ধারে, নদীর পাড়ে চোখে পড়ে ভেষজ উদ্ভিদের রকমারি গাছ। তবে সব সৌন্দর্য ছাড়িয়ে অ্যালোভেরা গাছ সবচেয়ে দৃষ্টি নন্দন।

নাটোর সদর উপজেলা কৃষি অফিসের হিসাবে, লক্ষ্মীপুর-খোলাবাড়িয়াতে ১৪০ প্রকার ভেষজ উদ্ভিদ জন্মে। এর মধ্যে অ্যালোভেরা ছাড়াও শিমুল মূল, অশ্বগন্ধা, মিশ্রি দানা, বিটরুট, রোজেলা ও শতমূল প্রসিদ্ধ। ভেষজ উদ্ভিদের মোট ১৫৫ হেক্টর আবাদি জমির মধ্যে ৭০ হেক্টরে ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা চাষ হচ্ছে।

৫০ হেক্টর আবাদি জমি থেকে পাওয়া যাচ্ছে এক হাজার ২০০ টন শিমুল মূল। ১২ হেক্টরে বিটরুট এবং পাঁচ হেক্টর মিশ্রি দানার আবাদি জমি থেকে পাওয়া যাচ্ছে ৫০ টন করে ভেষজ। ১০ হেক্টর থেকে পাওয়া যাচ্ছে ১২ টন অশ্বগন্ধা। ইউনিয়নের দুই হাজার কৃষক ভেষজ উদ্ভিদ চাষের সঙ্গে জড়িত।

মূলত বর্ষার শেষে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে এক বিঘা জমিতে অ্যালোভেরার ১০ হাজার চারা রোপণ করা হয়। এই আবাদি জমি থেকে পরবর্তী দুই বছর অনায়াসে অ্যালোভেরার পাতা সংগ্রহ করা যায়।

সেচের ব্যবস্থা রেখে সারিবদ্ধ এসব গাছ থেকে রোপণের ৩ মাস পর থেকে পাতা সংগ্রহ শুরু হয়। চাষাবাদ, পরিচর্যা ও সেচের কাজে সারা বছর জমিতে ১০০ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। জৈব সার ছাড়াও পরিমাণ মতো ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, জিপসাম, দস্তা ও বোরিক এসিড প্রয়োজন হয়। পাতার কালো দাগ পড়া রোধে ব্যবহার হয় চুন।

পাতা ছিদ্রকারী মশাসহ অন্যান্য কীটপতঙ্গ দমনে সম্প্রতি ছত্রাক নাশক টাইকোডার্মা ও সেক্স ফেরোমেন ব্যবহারে সম্প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা। বিঘাপ্রতি অ্যালোভেরার গড় উৎপাদন প্রায় ৩০ টন।

উৎপাদিত ভেষজ উদ্ভিদ শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছে নানা রকম ভেষজ ওষুধ। এর বিপণন কাজ চলছে এলাকার ৪টি স্থানে গড়ে ওঠা প্রায় একশটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।

ভেষজ উৎপাদনকারী কৃষক, সমবায় নেতা ও কবিরাজ মো. জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘অ্যালোভেরা সংরক্ষণে একটি হিমাগার নির্মাণ ও সাবান-শ্যাম্পুসহ প্রসাধনী তৈরির কারখানা নির্মাণে উদ্যোক্তা খুঁজে বের করা হলে আমরা উপকৃত হব।

খোলাবাড়িয়া হাজীগঞ্জ বাজার ভেষজ উৎপাদন ও বিপণন সমবায় সমিতির সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীনে গ্রামে একটি ঔষধি উদ্ভিদ গবেষণা সেন্টার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এর ফলে আমাদের উৎপাদিত ভেষজ পণ্যের গুণাগুণ ও মান নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। পাশাপাশি প্রসাধন ও ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের আগমন ঘটবে। ফলে ভেষজ পল্লী আরও সমৃদ্ধ হবে।

নাটোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নীলিমা জাহান বলেন, ভেষজ পল্লীর প্রায় ১০ হাজার মানুষ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণন কিংবা কৃষি শ্রমের সঙ্গে জড়িত। ভেষজ পল্লীর পরিধি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নাটোর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. হাবিবুল ইসলাম খান বাসসকে বলেন, ভেষজ পল্লীতে হিমাগার, প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র, গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা সম্ভব হলে- কৃষকরা লাভবান হবেন। সমৃদ্ধ হবে দেশের একমাত্র এই ঔষধি পল্লী।


১ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন

প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেক-এর চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক-এর সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১ হাজার ৯৮৮ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন এক হাজার ৮৮৫ কোটি সাত লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ৫৩ কোটি দুই লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৫০ কোটি টাকা।

মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেক-এর চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক-এর সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়।

এর মধ্যে নতুন প্রকল্প ৩টি, সংশোধিত প্রকল্প ৭টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির ৩টি প্রকল্প রয়েছে।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ; আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল; স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী; শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া; স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ একনেক সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।

আজকের সভায় অনুমোদিত ১৩টি প্রকল্পসমূহ হলো: কৃষি মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রকল্প, ‘PRO-ACT Bangladesh-Resilience Strengthening through Agri-Food Szstems Transformation in Cox's Bazar’ প্রকল্প। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রকল্প ‘গ্রামীণ মাটির রাস্তাসমূহ টেকসইকরণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ (২য় পর্যায়) (প্রস্তাবিত ৩য় সংশোধন)’ প্রকল্প। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ৩টি প্রকল্প, (১) ‘খুলনা বিভাগ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (৩য় সংশোধন)’ (২) জামালপুর শহরের ‘নগর স্থাপত্যের পুনঃসংস্কার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উন্নয়ন প্রকল্প (৩য় সংশোধিন)’ এবং (৩) ‘গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ১ থেকে ৫ নম্বর জোনের অভ্যন্তরীণ রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ (৩য় সংশোধিত) প্রকল্প। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রকল্প ‘উত্তরা লেক উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রকল্প, ‘অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বাংলাদেশ চ্যান্সারি ভবন নির্মাণ)’ প্রকল্প। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রকল্প, ‘কিশোরগঞ্জ (বিন্নাটি)-পাকুন্দিয়া-মির্জাপুর টোক জেলা মহাসড়ককে যথাযথ মানে উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প। শিল্প মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রকল্প, ‘বিএসটিআই’র পদার্থ (ফিজিক্যাল) ও রসায়ন (কেমিক্যাল) পরীক্ষণ ল্যাবরেটরির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন) প্রকল্প। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১টি ‘ঘোড়াশাল ৩য় ইউনিট রি-পাওয়ারিং প্রকল্প’ (২য় সংশোধিত) প্রকল্প। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রকল্প ‘মানসিক হাসপাতাল, পাবনা-কে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে রূপান্তর’ প্রকল্প।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প (১) ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেইটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (৪র্থ সংশোধিত) প্রকল্প (২) বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল লেভেল ক্রসিং গেটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (৫ম সংশোধিত) প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে।

সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা কর্তৃক ইতোমধ্যে অনুমোদিত ১২টি প্রকল্প সম্পর্কে একনেক সদস্যদের অবহিত করা হয়। সেগুলো হলো: ১. লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরের উন্নয়ন ও ই-ওয়েস্ট প্রক্রিয়াকরণের সুবিধাদি সৃষ্টি (২য় সংশোধিত) প্রকল্প ২. BGD e-Gov CIRT এর সক্ষমতা বৃদ্ধি (২য় সংশোধিত) প্রকল্প ৩. আশার আলো স্কুল ঢাকা (বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য) স্থাপন প্রকল্প ৪. টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, পিরোজপুর স্থাপন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প ৫ বাংলাদেশ টেলিভিশনের দেশব্যাপী ডিজিটাল টেরিস্ট্রিয়াল সম্প্রচার প্রবর্তন (১ম পর্যায়) (২য় সংশোধিত) প্রকল্প ৬. ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার জলাবদ্ধতা দ্রুত নিরসনের মাধ্যমে সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ ৭. গভীর সমুদ্রে টুনা ও সমজাতীয় পেলাজিক মাছ আহরণে পাইলট প্রকল্প (২য় সংশোধিত) ৮. মিঠাপানির মাছের মড়ক প্রতিরোধে ভ্যাকসিন উদ্ভাবন প্রকল্প ৯. ফেনী জেলার সদর উপজেলাধীন কাটামোবারকঘোনা চরকালিদাস সড়কে ফেনী নদীর উপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প ১০. সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ১১. শেখ হাসিনা নকশিপল্লী জামালপুর পর্যায় (১ম সংশোধিত) প্রকল্প। ১২. তাঁতিদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে চলতি মূলধন সরবরাহ ও তাঁতের আধুনিকায়ন (২য় সংশোধিত)।


শত বছরের লেনদেন শেষে বন্ধ হচ্ছে কলকাতা স্টক এক্সচেঞ্জ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতের প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর অন্যতম ‘কলকাতা স্টক এক্সচেঞ্জ’ (CSE) এক শতকেরও বেশি সময় পর আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের কার্যক্রম বন্ধের পথে। এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা আইনি জটিলতা শেষে সোমবার সিএসই শেষ দীপাবলি ও কালীপূজা উদযাপনের করেছে।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি (SEBI) সিএসই-র বিরুদ্ধে নিয়ম না মানার অভিযোগে শেয়ার লেনদেন স্থগিত করে। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সিএসই বোর্ড আদালত থেকে মামলা প্রত্যাহার করে স্বেচ্ছা প্রস্থান প্রক্রিয়া শুরু করে। চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল শেয়ারহোল্ডারদের জরুরি সাধারণ সভায় প্রস্থান অনুমোদিত হয়।

চেয়ারম্যান দীপঙ্কর বোস জানান, ‘আমরা সেবির কাছে প্রস্থান অনুমোদনের জন্য আবেদন জমা দিয়েছি। বর্তমানে সম্পদের মূল্যায়ন চলছে।’

সেবি রাজবংশী অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস নামের একটি সংস্থাকে সম্পদের মূল্যায়নের দায়িত্ব দিয়েছে। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সিএসই হোল্ডিং কোম্পানি হিসেবে কাজ চালাবে, এবং এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিএসই ক্যাপিটাল মার্কেটস প্রাইভেট লিমিটেড (CCMPL) বিএসই ও এনএসইতে ব্রোকারেজ কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।

১৯০৮ সালে যাত্রা শুরু করা সিএসই এক সময় বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। বিশেষত ছোট ও মাঝারি শিল্পের শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে এটি ছিল অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু ১২০ কোটি টাকার কেতন পারেখ কেলেঙ্কারির পর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ভেঙে পড়ে এবং এক্সচেঞ্জের অবনতি শুরু হয়।

স্টকব্রোকার সিদ্ধার্থ থিরানি স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে মা লক্ষ্মীর পূজা দিয়ে আমরা ট্রেডিং শুরু করতাম। ২০১৩ সালে সেবি লেনদেন স্থগিত করলে সব থেমে যায়। এবারের দীপাবলি যেন সেই ঐতিহ্যের শেষ প্রহর।’

সিএসই কর্তৃপক্ষ কর্মীদের জন্য স্বেচ্ছা অবসর ঘোষণা করে, যেখানে ২০ দশমিক ৯৫ কোটি রুপি এককালীন প্রদানের ব্যবস্থা করা হয় এবং বছরে প্রায় ১০ কোটি রুপি সাশ্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সমস্ত কর্মী এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিলেও কিছুজনকে নিয়ন্ত্রক কার্যক্রমের জন্য চুক্তিভিত্তিক রাখা হয়েছে।

২০২৪–২৫ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে চেয়ারম্যান বোস বলেন, ‘এসই ভারতের মূলধন বাজারে এক সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’ বর্তমানে এখানে ১ হাজার ৭৪৯টি তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও ৬৫০ জন নিবন্ধিত সদস্য রয়েছে।

সিএসইর তিন একর জমি সৃজন গ্রুপের কাছে ২৫৩ কোটি টাকায় বিক্রি করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে, যা সেবির অনুমোদনের পর কার্যকর হবে।

এই বছরের দীপাবলি সিএসইর জন্য শুধুই আলোর উৎসব নয়, বরং একটি যুগের অবসান ছিল। ৯০ দশকের জমজমাট ট্রেডিং ফ্লোরের স্মৃতিকে বিদায় জানাতে এবার প্রস্তুতি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। আগামী সপ্তাহে এক্সচেঞ্জ চত্বরে আয়োজন করা হবে প্রতীকী পূজা ও বিদায় অনুষ্ঠান।


নির্মাণ-আবাসন শিল্পের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী শুরু ১৩ নভেম্বর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্মাণ, আবাসন, পানি ও বিদ্যুৎ খাতকে কেন্দ্র করে ঢাকায় শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। এই প্রদর্শনী আগামী ১৩ থেকে ১৫ নভেম্বর রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আয়োজন করা হয়েছে। এটি দেশের সবচেয়ে বৃহৎ শিল্প-বাণিজ্যিক প্রদর্শনী।

এবারের আয়োজনে থাকছে, ‘৩০তম বিল্ড সিরিজ অব এক্সিবিশন্স’, ‘২৭তম পাওয়ার সিরিজ অব এক্সিবিশন্স’ এবং ‘৭ম ওয়াটার বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী’-২০২৫।

কনফারেন্স অ্যান্ড এক্সিবিশন ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস (সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ)-এর আয়োজনে টানা ২৯ বছরের ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠেয় এই প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

সোমবার রাজধানীর সেমস বাংলাদেশের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট ও গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন. ইসলাম, গ্রুপ সিইও এস. এস. সারওয়ার, নির্বাহী পরিচালক তানভীর কামরুল ইসলাম এবং পরিচালক অভিষেক দাস।

আন্তর্জাতিক এই প্রদর্শনীতে ২০টিরও বেশি দেশের ২০০টিরও বেশি কোম্পানি অংশ নেবে। ৫০০ এরও বেশি বুথ ও আন্তর্জাতিক প্যাভিলিয়নসহ আয়োজিত এই মেলায় ৩৫ হাজারের বেশি ব্যবসায়ী ও দর্শনার্থীর উপস্থিতি প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন, এসিআই, রহিম আফরোজ, ওমেরা ও এসএসজি তাদের সর্বশেষ প্রযুক্তি, পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করবে।

এছাড়া একই সময়ে অনুষ্ঠেয় ২২তম সোলার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো-২০২৫এর নলেজ পার্টনার হিসেবে থাকছে জার্মান উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জিআইজেড বাংলাদেশ। সেমস-গ্লোবাল ও জিআইজেড বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে ১৫ নভেম্বর আইসিসিবির ৫ নম্বর পুষ্পাঞ্জলি হলে হবে দিনব্যাপী সম্মেলন ‘শেপিং টুমরো’স এনার্জি ওয়ার্কফোর্স।

প্রদর্শনীর ভ্রমণ, কুরিয়ার ও কার্গো পার্টনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে বেঙ্গল এয়ারলিফট লিমিটেড।

এছাড়া প্রদর্শনীর পাশাপাশি চারটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা নির্মাণ, আবাসন, জ্বালানি ও পানি খাতের বৈশ্বিক প্রবণতা, উদ্ভাবন ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করবেন।

এই আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের নির্মাণ, জ্বালানি ও পানি খাতের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সংযোগ আরও জোরদার হবে বলে আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেছেন।


জাতীয় আর্থিক সাক্ষরতা অভিযান জোরদার করছে বিএসইসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা ও পুঁজিবাজার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ ও কার্যক্রম জোরদার করছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সোমবার বিএসইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমিশন বিনিয়োগ শিক্ষা ও পুঁজিবাজার সচেতনতা সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের শিক্ষিত এবং সচেতন করতে ধারাবাহিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে।

দেশব্যাপী এই সচেতনতামূলক কর্মসূচিগুলোকে ত্বরান্বিত করার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে পুঁজিবাজার সচেতনতা এবং বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নের জন্য সকল জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিশ্চিত করতে অনুরোধ করেছে।

এই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় শাখা ৮ অক্টোবর একটি নির্দেশনা জারি করে সকল জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়।

চিঠিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিবকে সকল জেলা তথ্য কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং এর অনুলিপি সারাদেশের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছেও পাঠানো হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সকল জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে শিক্ষামূলক রিসোর্স, ইভেন্ট সমন্বয়, এজেন্ডা অন্তর্ভুক্তি, প্রচারমূলক উদ্যোগ এবং তথ্য কেন্দ্রবিন্দু সংযুক্ত করতে সহযোগিতা প্রদান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছে।

বিএসইসি বিশ্বাস করে, এই পদক্ষেপগুলো দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা এবং পুঁজিবাজার সচেতনতা সৃষ্টি কার্যক্রমকে আরও ত্বরান্বিত করবে।

কমিশন আশা করছে, সকল অংশীদারের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ এবং বিনিয়োগকারীরা শিক্ষিত ও সচেতন হয়ে দেশের পুঁজিবাজার ও অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

উল্লেখ্য, বিএসইসির আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে সম্প্রতি কমিশন তার বিনিয়োগ শিক্ষা ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলের লিঙ্ক জাতীয় তথ্য পোর্টালে সংযুক্ত করেছে।


বিনিয়োগ আকর্ষণে কোরিয়া গেল বিডা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধিদল পাঁচ দিনের কৌশলগত সফরে সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছেছে।

চলমান এই সফরের লক্ষ্য হলো আগামী ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে কোরিয়ান বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা জোরদার করা।

প্রতিনিধিদলে বিডার পাশাপাশি রয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। সফরটি বাস্তবায়িত হচ্ছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) কারিগরি সহযোগিতায়।

সফরের অংশ হিসেবে আগামী ২১ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে একাধিক সরকারি-বেসরকারি (জিটুবি) বৈঠক, এতে অংশ নেবে দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীগুলো। বৈঠকে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স, জাহাজ নির্মাণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন, টেক্সটাইল, কেমিক্যাল ও ভারী নির্মাণ খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা তুলে ধরা হবে।

এছাড়া প্রতিনিধিদল দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য, শিল্প ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের (এমওটিআইই) উপমন্ত্রীর সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করবেন এবং একাধিক গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট (জিটুজি) আলোচনায় অংশ নেবেন। এসব বৈঠকে দুই দেশের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব জোরদার, প্রস্তাবিত কোরিয়া-বাংলাদেশ সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সিইপিএ) এবং সাম্প্রতিক বাণিজ্য নীতিনির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

সফরের অন্যতম প্রধান আয়োজন হলো- ‘গেটওয়ে টু গ্রোথ: ইনভেস্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিনিয়োগ সেমিনার, যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২১ অক্টোবর সিউলে। ফেডারেশন অব কোরিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ (এফকেআইর) সহযোগিতায় বিডা ও সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাস যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করছে।

সেমিনারে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ, সুযোগ ও প্রস্তুতি তুলে ধরা হবে। এছাড়া ইয়ংওয়ান করপোরেশনের মতো সফল কোরিয়ান বিনিয়োগকারীরা তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের অভিজ্ঞতা ও সাফল্যের গল্প শেয়ার করবেন, যা দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বের দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে।

সফর সম্পর্কে বিডার ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া আমাদের অন্যতম মূল্যবান অর্থনৈতিক অংশীদার। আমরা এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশকে কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের পরবর্তী কৌশলগত উৎপাদন ও রপ্তানি কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরতে চাই। আমাদের লক্ষ্য- একদিকে নতুন উচ্চপ্রযুক্তি শিল্পে বিনিয়োগ আকর্ষণ, অন্যদিকে এমওটিআইইর সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের নীতিগত সংলাপের মাধ্যমে বাজারে প্রবেশাধিকার ও অর্থনৈতিক সংযুক্তি বাড়ানো।’


পরিসংখ্যান তৈরিতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখতে হবে: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বিশ্বাসযোগ্য পরিসংখ্যান তৈরি করা এক ধরনের বিনিয়োগ। তাই পরিসংখ্যান তৈরিতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখতে হবে।

তিনি বলেন, ‘তথ্যের সুরক্ষা ও নৈতিকতার বিষয়েও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করতে হবে।’

সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় ও বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) উদ্যোগে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহযোগিতায় এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস ২০২৫-এর এবারের প্রতিপাদ্য ‘সবার জন্য মানসম্মত পরিসংখ্যান’। এ বিষয়ের মাধ্যমে মূলত মানসম্মত ও যথাযথ পরিসংখ্যান প্রস্তুত ও প্রকাশের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি সোনালী দায়ারাত্নে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘সরকারি পরিসংখ্যানের বিশ্বাসযোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও মান বজায় রাখা অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম ভিত্তি। বর্তমানে বিবিএস আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশ করছে। তবে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণে আরও স্বচ্ছতা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুন নীতিমালা অনুযায়ী কোনো উচ্চপর্যায়ের অনুমোদন ছাড়াই বিবিএস এখন থেকে নিজস্ব উদ্যোগে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি ও অন্যান্য সূচক প্রকাশ করতে পারবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডাটা শুধু সরকারের জন্য নয়- বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা, গবেষক, গণমাধ্যমকর্মী এবং সাধারণ জনগণের জন্যও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই ‘ডাটা ফর এভরিওয়ান’ প্রতিপাদ্যের মাধ্যমে সবাইকে পরিসংখ্যান সচেতন হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকারি পরিসংখ্যান দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় বেশি নির্ভরযোগ্য। বিবিএস এখন আগের চেয়ে প্রযুক্তিনির্ভর ও সক্ষম প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছে।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচলক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিবিএসের পরিচালক কবির উদ্দিন আহাম্মদ।

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক, অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান সমিতির (বিএসএ) সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাহাদৎ হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. জাফর আহমেদ খান।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১০ সাল থেকে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর বিশ্বব্যাপী দিবসটি উদযাপন হয়ে আসছে। বাংলাদেশেও দিবসটি যথাযোগ্যভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে উদযাপন করা হচ্ছে।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় র‌্যালির আয়োজন করা হয়েছে। র‌্যালিটি পরিসংখ্যান ভবন থেকে শুরু হয়ে কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় পরিসংখ্যান ভবনে এসে শেষ হয়।

এছাড়া দিবসটি পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জাতীয় পর্যায়ে সেমিনার আয়োজন, ক্রোড়পত্র ও স্মরণিকা প্রকাশ এবং র‌্যালি আয়োজন, আলোচনা সভাসহ নানা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস ও বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস একীভূত করে সোমবার দিবসটি উদযাপিত হয়েছে।


সেপা চু‌ক্তি হলে বাংলাদেশ-কোরিয়ার সম্পর্ক আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে

দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ও দ‌ক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সেপা) হলে দুদে‌শের বিদ্যমান ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে আরও এক ধাপ এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ বাড়বে বলে মনে করছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশ‌টির পার্ক ইয়ং সিক।

রোববার রাজধানীর এক‌টি হোটেল এক সেমিনারে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা ব‌লেন রাষ্ট্রদূত।

‘কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের সিএসআর কার্যক্রম এবং একসঙ্গে ভবিষ্যৎ’- শীর্ষক এ সেমিনারে আয়োজন করে ঢাকার কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের দূতাবাস।

কো‌রিয়ান রাষ্ট্রদূত ব‌লেন, একটি দ্বি-পাক্ষিক সেপা কোরিয়ার বাজারে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করতে প্রেরণা জোগাতে পারে, বিশেষ করে তৈরি পোশাক পণ্যের ক্ষেত্রে। সেপা চু‌ক্তি হলে দুই দে‌শের বিদ্যমান ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে আরও এক ধাপ এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ বাড়বে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, উভয় দেশ কীভাবে দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে আরও এগিয়ে নিতে পারে, সে বিষয়ে আমি বলতে চাই দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি, কৌশলগত অবস্থান এবং প্রচুর শ্রমশক্তির কারণে বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আশাব্যঞ্জক গন্তব্যস্থল হিসেবে অব্যাহত রয়েছে।

তি‌নি ব‌লেন, বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি বাস্তবায়নের জন্য সময়মত ভিসা প্রদান এবং নবায়ন, নিরবচ্ছিন্ন শুল্ক ছাড়, কাঁচামাল এবং মধ্যবর্তী পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক হ্রাস, প্রকল্প সমাপ্তির পরে ডলারে অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের সমস্যা সমাধান এবং নিজ দেশে মুনাফা পাঠানোর সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করতে হবে।

কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, কোরিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি প্রতি বছর ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে সীমিত পরিসরে রপ্তানির কারণে এর পরিমাণ সন্তোষজনক নয়। পাদুকা, আইসিটি পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, হালকা শিল্প পণ্য এবং ওষুধের মতো পণ্য কোরিয়ায় আরও রপ্তানি করা যেতে পারে।

রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক কল্যাণ এবং দায়িত্বশীল বিনিয়োগের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে সিএসআরের ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে অবদান রাখার জন্য সহযোগিতামূলক সিএসআর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার জন্য কোরিয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

সেমিনারে বাংলাদেশে কর্মরত শীর্ষস্থানীয় কোরিয়ান কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা সিএসআর কার্যক্রম উপস্থাপনা করেন। এসব কোম্পানির মধ্যে রয়েছে এলজি ইলেকট্রনিক্স, স্যামসাং আরএন্ডডি ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, উরি ব্যাংক, দোহওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইয়ংওয়ান। তারা শিক্ষা, কমিউনিটি স্বাস্থ্য, পরিবেশ এবং দক্ষতা উন্নয়নে তাদের বিভিন্ন সিএসআর উদ্যোগ তুলে ধরেন।

সেমিনারে প্রধান কোরিয়ান এনজিও সেভ দ্য চিলড্রেন কোরিয়া, অক্সফাম কোরিয়া, হ্যাবিট্যাট কোরিয়া, গুড নেইবারস, এডিআরএ কোরিয়া এবং গ্লোবাল কেয়ারের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। প্রতিনিধিরা বাংলাদেশজুড়ে স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীবিকা উন্নত করতে এবং সামাজিক কল্যাণ বৃদ্ধির জন্য তাদের চলমান প্রকল্পগুলো তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে সিএসআর সেন্টারের চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান ‘গঠনমূলক ব্যবসায়িক সম্পর্ক তৈরিতে সিএসআরের গুরুত্ব’ বিষয়ে বক্তৃতা দেন, যেখানে তিনি দুই দেশের মধ্যে দায়িত্বশীল করপোরেট সম্পৃক্ততা কীভাবে আস্থা, সহযোগিতা এবং দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বকে উৎসাহিত করে তা তুলে ধরেন।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন কোরিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (কেবিসিসিআই) সভাপতি শাহাব উদ্দিন খান ও কোইকার কান্ট্রি ডিরেক্টর জিহুন কিম।


বিজিবিএ কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিবিএ) কার্যনির্বাহী কমিটির দ্বিবার্ষিক নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এটি আগামী বছরের ১০ অথবা ১৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে পারে।

গত শনিবার উত্তরার বিজিবিএ কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনের এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় উপস্থিত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে কমিশন জানায়, ভোটগ্রহণ ঢাকা বোট ক্লাব বা উত্তরা ক্লাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে।

সভায় নির্বাচনি তথ্য, আচরণবিধি ও ভোট আয়োজনের প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। নির্বাচনের তফশিল দু-একদিনের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন নির্বাচনি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন বোর্ডের সদস্য আনিসুর রহমান ও সদরুজ্জামান রাসেল, আপিল বোর্ডের সদস্য আনোয়ারুল বশির খান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বিজিবিএ’র বর্তমান কমিটির প্রেসিডেন্ট মোফাজ্জল হোসেন পাভেল, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ পিন্টুসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, আগামী ২০২৬-২৮ মেয়াদের বিজিবিএ কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনের জন্য গত ১২ অক্টোবর মো. নজরুল ইসলাম, মো. সদরুজ্জামান রাসেল ও মো. আনিসুর রহমানের সমন্বয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচনী বোর্ড এবং তিন সদস্যবিশিষ্ট আপিল বোর্ড গঠন করা হয়।


পাঁচটি শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিপিআইর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

জ্বালানি খাতে গবেষণায় উদ্যোগ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের জ্বালানি ও খনিজসম্পদ খাতে গবেষণা, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নে সহযোগিতার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট (বিপিআই) পাঁচটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে।

গত শনিবার বিপিআই সদর দপ্তরে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। খাতটির উন্নয়নে এ চুক্তি একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বহুমাত্রিক সহযোগিতার ভিত্তিতে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান। বিপিআইর মহাপরিচালক খেনচান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান, বুয়েটের পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মিনারেল রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং (পিএমআরই) বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এবং পেট্রোবাংলার সচিব ও সিনিয়র জি এম মো. আমজাদ হোসেন তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন।

স্বাক্ষরকারীরা আশা প্রকাশ করেন, এই যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ খাতে গবেষণা ও প্রশিক্ষণের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গবেষণা সংস্থা ও শিল্প সংস্থার এই মেলবন্ধন দেশের হাই-ড্রোকার্বন ও খনিজসম্পদের আবিষ্কার, উত্তোলন এবং দক্ষ জনবল তৈরিতে দীর্ঘমেয়াদি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

উল্লেখ্য, বিপিআই জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের অধীন একটি জাতীয় প্রশিক্ষণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান।


ডিএসইতে ৪ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম লেনদেন, সূচক কমেছে ৭৫ পয়েন্ট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ঢালাও দরপতনের সঙ্গে লেনদেন হ্রাস পেয়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে সবকটি মূল্য সূচকের বড় পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রায় চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম লেনদেন হয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মোট ৩৯৬টি কোম্পানির ১৪ কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার ৭৯৯টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে। দিনের শেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৪২ কোটি ৪০ লাখ ৪৪ হাজার ৭৮৫ টাকা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই ব্রড ইনডেক্স (ডিএসইএক্স) আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৭৫.০৮ পয়েন্ট কমে ৫০৪৪.৩৪ পয়েন্টে নেমে আসে। ডিএসই-৩০ সূচক ২৯.৭৪ পয়েন্ট কমে ১৯৩৮.১৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই শরিয়াহ সূচক (ডিএসইএস) ২৩.৯৬ পয়েন্ট কমে ১০৬২.৩৩ পয়েন্টে অবস্থান নেয়।

লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৪টির, কমেছে ৩১৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টি কোম্পানির শেয়ারদর।

টাকার ভিত্তিতে লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো: সামিট এলায়েন্স পোর্ট, ওরিয়ন ইনফিউশন, বিএসআরএম স্টিল, ডমিনজ স্টিল, এপেক্স ফুটওয়্যার, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রবি আজিয়াটা, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, সিভিও পেট্রোলিয়াম ও সোনালি পেপার।

দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো: ন্যাশনাল হাউসিং, বিএসআরএম স্টিল, একমি ফার্মা, বিএসআরএম লিমিটেড, ডরিন পাওয়ার, ড্যাফোডিল কম্পিউটার, সিম টেক্স, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড, এক্সিম ব্যাংক প্রথম মিউচুয়াল ফান্ড ও মিডল্যান্ড ব্যাংক।

দরপতনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো: মুন্নু অ্যাগ্রো, খান ব্রাদার্স পিপি, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, এইচআর টেক্স, নিউ লাইন, জেমিনি সী ফুডস, সামিট এলায়েন্স পোর্ট, ন্যাশনাল ফিডস, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স ও সোনা ইন্স্যুরেন্স পিএলসি। দিন শেষে ডিএসইর মোট বাজারমূলধন দাঁড়িয়েছে ৬৮৬ কোটি ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার ৩৯২ টাকা।


চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যবাহী গাড়ি প্রবেশে বর্ধিত মাশুল স্থগিত

অচলাবস্থার অবসান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশের ক্ষেত্রে যানবাহনের বর্ধিত গেটপাস ফি (বাড়তি মাশুল) স্থগিত করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে বন্দরে সৃষ্ট অচলাবস্থার সাময়িক অবসান হয়েছে।

পণ্যবাহী গাড়ির ক্ষেত্রে বর্ধিত ফি স্থগিত থাকবে বলে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান আশ্বাস দিয়েছেন। তবে দুদিনের কর্মবিরতির কারণে ছয়টি জাহাজ রপ্তানি পণ্য ছাড়াই বন্দর ত্যাগ করেছে।

রোববার বিকেলে পরিবহন শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান, বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক।

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরি, ট্রেইলার গত শনিবার থেকে বন্ধ রয়েছে। ফলে আমদানি পণ্যের ডেলিভারি বন্ধ ছিল। বিষয়টি দেশের আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। তাই বন্দর চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে শ্রমিক ও মালিকদের সঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে আলোচনা হয়েছে। সরকারি অনুমোদনক্রমে জারি করা গেজেট তাৎক্ষণিকভাবে সংশোধন বা স্থগিত করা সম্ভব নয়। তবে পরিবহন শ্রমিকদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শুধু পরিবহনের ক্ষেত্রে বর্ধিত গেটপাস ফি পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।’

বন্দর সচিব আরও বলেন, ‘আমরা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুপারিশসহ প্রস্তাব বোর্ডে পাঠাব এবং পরে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। প্রস্তাব অনুমোদিত হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে। আপাতত ফি স্থগিত থাকবে।

শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিরা আশ্বস্ত করেছেন, তারা কাজে ফিরে যাবেন। বর্তমানে বাইরে প্রায় ছয় হাজার ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে, যা এখন ডেলিভারি ও রপ্তানি কাজে নিয়োজিত হবে।’

বিভাগীয় পণ্য পরিবহন ফেডারেশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক মো. শামসুজ্জামান সুমন বলেন, বন্দর চেয়ারম্যান আমাদের সঙ্গে বৈঠকে পণ্যবাহী গাড়ির ক্ষেত্রে নতুন ট্যারিফ শিডিউলের বর্ধিত ফি স্থগিত করেন। চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, আপাতত ট্রাক, কাভার্ডভ্যান বন্দরে প্রবেশের ক্ষেত্রে আমাদের ২৩০ টাকা দিতে হবে না। আগের মতো ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা ফিতে পাস নিতে পারব আমরা। যদি আমরা ৫৭ টাকা ৫০ পয়সায় পণ্যবাহী গাড়ির পাস পাই তাহলে আমাদের গাড়ি বন্দরের পণ্য পরিবহন করবে। প্রতিদিন আমাদের ৮-৯ হাজার গাড়ি বন্দরে পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ডভ্যান চলাচল করে।

চট্টগ্রাম জেলা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন ফারুক বলেন, দীর্ঘ সময় আলোচনার পর বন্দর চেয়ারম্যান পণ্যবাহী গাড়ির গেট পাসের বর্ধিত ফি স্থগিতের কথা জানিয়েছেন। স্থগিত করার লিখিত কাগজ পেলে আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করব। যেহেতু এটা কার্যকরের বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন, তাই স্থগিতের বিষয়টিও লিখিতভাবে জানালে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

এদিকে কর্মবিরতির কারণে গত শনিবার ও রোববার এক হাজার একক কনটেইনার রপ্তানি পণ্য ছাড়াই ছয়টি জাহাজ বন্দর ত্যাগ করেছে। কনটেইনারবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকায় বন্দরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। দাবি আদায়ে পোর্ট ইউজার্স ফোরাম সরকারকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে।

এর আগে গত ১৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরে ভারী যানবাহনের প্রবেশ ফি ৫৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩০ টাকা করা হয়। এর প্রতিবাদে মালিক-শ্রমিকরা গত শনিবার থেকে ট্রেইলার, ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ রাখেন।


কাঁচা পাট রপ্তানিতে সরকারি বাধ্যবাধকতা শিথিল চায় নেপাল

বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে সচিবালয়ে তার দপ্তরে গতকাল বৈঠক করে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী।

বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার দপ্তরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী বলেন, নেপালে ১১টি জুট মিল রয়েছে। নেপালের জুট মিলগুলো তাদের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট আমদানির ওপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ করায় মিলগুলো কিছুটা সমস্যায় পড়েছে। এ সময় তিনি বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট রপ্তানির অনুমতি শিথিল করার আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানান।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে বাংলাদেশের পাটপণ্য ও কাঁচাপাটের চাহিদা রয়েছে। কাঁচাপাট রপ্তানি না করে বাংলাদেশ সেমি-ফিনিশড (আধা-প্রক্রিয়াজাত) পাটপণ্য রপ্তানি করতে চায়।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ উচ্চমানের ও পরিবেশবান্ধব সেমি-ফিনিশড পাটপণ্য উৎপাদন করছে। নেপাল এই পণ্যগুলো আমদানি করলে দুই দেশের বাণিজ্য ভলিউম বাড়বে এবং উভয় দেশই লাভবান হবে।


banner close