মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫

নীতি সহায়তার খবরে শেয়ারবাজারে বড় উত্থান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০২

শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘর্মেয়াদি নীতি সহায়তা দিতে যাচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ প্রথমবারের মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) যাচ্ছেন। এমন খবরে গতকাল বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়েছে।

এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ১৪৭ পয়েন্টের বেশি। এর আগে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরের দিন ৬ আগস্ট মঙ্গলবার ডিএসইর সূচক বেড়েছিল ১৯২ পয়েন্ট। এরপর ৭ আগস্ট বুধবার বেড়েছে ১৯৭ পয়েন্ট এবং ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার বেড়েছে ৩০৬ পয়েন্ট এবং ১১ আগস্ট রোববার বেড়েছে ৯১ পয়েন্ট। ওই চার দিনে সূচকের উত্থান হয়েছে ৭৮৬ পয়েন্ট।

এরপর ১২ আগস্ট সোমবার থেকেই শুরু হয় ধারাবাহিক পতন। ১২ আগস্ট থেকে ২৮ অক্টোবর (সোমবার) পর্যন্ত আড়াই মাসে সূচকের পতন হয়েছে ১ হাজার ১৪৭ পয়েন্ট। অর্থাৎ শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগের দিন ডিএসইর সূচক ছিল ৫ হাজার ২২৯ পয়েন্ট। গত ২৮ অক্টোবর সেটি আরও ৩৩১ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৪৯৮ পয়েন্টে নেমে যায়।

অবশেষ গতকাল বুধবার থেকে বাজার বড় আকারে ঘুরে দাঁড়ায়। গতকাল ডিএসইর সূচকে বেড়েছে ১১৮ পয়েন্টের বেশি এবং আজ বেড়েছে ১৪৭ পয়েন্টের বেশি। বুধবার ডিএসইর সূচক দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে। শেখ হাসিনা সরকারের সময়ের সূচক থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সূচক এখনো ৬৫ পয়েন্ট পিছিয়ে আছে।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা শেয়ারবাজারের গুরুত্ব অনুধাবন করে নিজেই বিএসইসিতে যাচ্ছেন। যেখানে এর আগে কোনো মন্ত্রী বা উপদেষ্টা যাননি। শেয়ারবাজারের জন্য এটি একটি ভিন্ন ম্যাসেজ। শেয়ারবাজারের প্রতি অর্থ উপদেষ্টার এমন আগ্রহের কারণে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজার নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।

বুধবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪৭ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে দাঁডিয়েছে। এ ছাড়া ডিএসইর অপর সূচক ডিএসইএস ২২ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে ১১৩৬ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক ৫৭ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট বেড়ে ১৯১৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিন ডিএসইতে ৫১৯ কোটি ৩১ লাখ ২৭ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে ৩৪৬ কোটি ৫৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

ডিএসইতে বুধবার মোট ৩৯৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৭৩টি কোম্পানির, বিপরীতে ১৫ কোম্পানির দর কমেছে। পাশাপাশি ৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৪৬ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের ১২ কোটি ৯৪ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফারইস্ট নিটিং।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস, একমি ল্যাবরেটরিজ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, টেকনো ড্রাগস ও ইসলামী ব্যাংক।

অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩৩০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯টির এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জানান, শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা দিতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এসব সহায়তার আওতাভুক্ত হবেন ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারী, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, উচ্চ সম্পদশালী বিনিয়োগকারী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, অর্থ উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সমন্বিতভাবে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে নীতি সহায়তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। যার মধ্যে কিছু থাকবে স্বল্প মেয়াদে বাস্তবায়নযোগ্য, আর কিছু বিষয় মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।

যেসব নীতি পদক্ষেপের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, বাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তহবিল জোগানে সহায়তা, জরিমানার মাধ্যমে বিএসইসির আদায় করা অর্থ বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, সরকারি-বেসরকারি ভালো ও লাভজনক কোম্পানিগুলোকে দ্রুত বাজারে আনতে আইপিও আইন সংস্কার ও কর প্রণোদনার ব্যবস্থা করা, শেয়ারবাজারে লেনদেন নিষ্পত্তির সময় কমিয়ে এক দিনে নামিয়ে আনা, ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে পরিমাণ অনাদায়ি পুঞ্জীভূত ঋণাত্মক ঋণ (নেগেটিভ ইক্যুইটি) রয়েছে চূড়ান্তভাবে সেগুলোর নিষ্পত্তি করা, উচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তিদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে মূলধনি মুনাফার করহার কমানো, শেয়ার পুনঃক্রয়ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ, বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ভবিষ্যতে আর কখনো ফ্লোর প্রাইস আরোপ না করা, সুশাসন ও আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করা।


মিয়ানমার থেকে এলো ২২ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

জি টু জি ভিত্তিতে মিয়ানমার থেকে থেকে ২২ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল নিয়ে এমভি গোল্ডেন স্টার জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। ছবি: ইউএনবি

জি টু জি ভিত্তিতে মিয়ানমার থেকে থেকে ২২ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল নিয়ে এমভি গোল্ডেন স্টার জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে।

আজ শুক্রবার খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, এটি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত চালের প্রথম চালান। জাহাজে রক্ষিত চালের নমুনা সংগ্রহপূর্বক ভৌত পরীক্ষা শেষে দ্রুত খালাসের কাজ শুরু হবে। এজন্য ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এরআগে পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি করার কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ১৪ জানুয়ারি খাদ্য অধিদপ্তর ও ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তানের (টিসিপি) মধ্যে এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল খালেক ও টিসিপির চেয়ারম্যান সৈয়দ রাফিউ বশির শাহ নিজ নিজ পক্ষে সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকারের ক্রয় কমিটির অনুমোদনের পর চাল আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হবে। ওই চাল আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশে আসতে শুরু করবে।

এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল এবং অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি ও শক্তিশালী করতে এই সমঝোতা স্মারক এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।


শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাবে আমদানিকৃত ফলের দাম বেড়েছে

শুল্ক বৃদ্ধির আমদানিকৃত ফলের দাম বেড়েছে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১১:১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্প্রতি সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে আমদানিকৃত ফলের দামে। ২০২২ সালের মাঝামাঝি নিয়ন্ত্রক শুল্ক আরোপের পর দাম বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যেই অনেকে আমদানিকৃত ফল বাদ দিয়েছিলেন তাদের ক্রয় তালিকা থেকে।

গত ৯ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) শুকনো ও টাটকা ফল আমদানির ওপর সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করেছে।

আপেল, আঙুর ও তরমুজের মতো কিছু টাটকা ফল ও জুসের ওপর শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে।

সরকার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে মূলত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ কর্মসূচির শর্ত পূরণের জন্য রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধির প্রচেষ্টা হিসেবে।

প্রায় দুই বছর ধরে দেশে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে। এমন সময়ে শুল্ক বৃদ্ধির তীব্র সমালোচনা করেছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা।

ক্রেতারা বলছেন, আপেল, কমলা, মালটা, আঙুরের মতো ফল কিনতে গেলে আগের চেয়ে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি চাইছেন বিক্রেতারা। যে কারণে তাদের আগের চেয়ে আরও কম পরিমাণে কিনতে হচ্ছে মাসের খরচ মেলাতে।

কারওয়ান বাজারে আসা এক ক্রেতা নাজনীন আখতার বলেন, ‘আগে যে পরিমাণে ফল কিনতে পারতাম, এখন আর সেটা পারি না। এখন যে অবস্থা হচ্ছে, সামনে হয়তো আর এসব বিদেশি ফল খেতে পারব বলে মনে হয় না।’

তিনি বলেন, ‘১০ দিন আগে মাঝারি আকারের কমলার কিনেছি প্রতি কেজি ২৬০ টাকা করে, যা এখন ২৯০ টাকা। ২৯০ টাকা কেজির আপেলের দামও বেড়ে হয়েছে ৩২০ টাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘২ কেজি কমলা ও ২ কেজি আপেল কিনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দের কেজি করে নিতে হলো।’

ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে শুল্ক কমাতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান নাজনীন। ফল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এর আগে শুল্ক বৃদ্ধির কারণে আমদানি প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গিয়েছিল। সম্প্রতি সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির ফলে পাইকারি বিক্রি আরও ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমেছে।

কারওয়ান বাজারের দোকান মালিক মোহাম্মদ সাগর মিয়া বলেন, ‘খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ফলে ১৫ থেকে ২০ টাকা দাম বেড়েছে। তবে, কিছু ফলের দাম কেজিতে ২৫ টাকারও বেশি বেড়েছে।’

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আগে কালো আঙুর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ৫০০ টাকায় কিনতাম, এখন কিনি ৫৩০ টাকায়। ছোট ডালিম ৪৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৮০ টাকা হয়েছে। ২৭০-২৮০ টাকার নাশপতি পাইকারি বাজারে ২৮৮ টাকা হয়ে গেছে।’

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, তারা এক মাস আগে সরকারের কাছে নিয়ন্ত্রক শুল্ক প্রত্যাহার ও অগ্রিম আয়কর কমানোর জন্য চিঠি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘রমজান শুরুর আগেই এই শুল্ক কমানোর অনুরোধ করা হয়েছিল। কারণ, রোজায় মানুষ ফল খায় বেশি।’

তিনি আরও বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে গত দুই বছর ধরে মানুষ ফল কম কিনছে। এখন আবার শুল্ক বাড়লো। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তরা তো আরও সমস্যায় পড়বে।’

এলসি খোলার তথ্য থেকে জানা যায়, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় জুলাই-নভেম্বরে বাংলাদেশে ফল আমদানি সাড়ে ৮ শতাংশ কমে ১০৭ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে এলসির নিষ্পত্তির পরিমাণও কমেছে।

রমজান মাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত শুল্ক বৃদ্ধি কার্যকর না করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। তারা সতর্ক করেছে, অন্যথায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের পরিবারগুলোর আর্থিক সংকট আরও তীব্র হবে।


টানা চার কার্যদিবস দরপতন, লেনদেন ৪০৬ কোটি টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বুধবার বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে কমেছে মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের চার কার্যদিবসেই মূল্যসূচক কমল। আর চলতি বছরে লেনদেন হওয়া ১১ কার্যদিবসের মধ্যে ৮ কার্যদিবসেই মূল্যসূচক কমেছে।

এমন টানা দরপতন হলেও ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। বাজারটিতে পাঁচ কার্যদিবস পর ৪০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। ডিএসইতে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমলেও অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফলে এ বাজারটিতে মূল্যসূচক কিছুটা বেড়েছে। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবস দরপতনের পর বুধবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টা বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

কিন্তু সকাল ১১টার পর থেকে বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। ফলে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের সঙ্গে মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৪৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮২টির এবং ৬৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৪২ পয়েন্টে নেমে গেছে।

অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪০৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৫১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৫৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে মুন্নু ফেব্রিক্সের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৮১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের ১৪ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, আফতাব অটোমোবাইল, ফু-ওয়াং সিরামিক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, লাভেলো আইসক্রিম এবং ফু-ওয়াং ফুড।

অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮১টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।


পুঁজিবাজার থেকে মুখ ফেরাল ১২ লাখ বিনিয়োগকারী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গেল আট বছরে পুঁজিবাজার থেকে ১২ লাখ বিনিয়োগকারী মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। ২০১৬ সাল থেকে পুঁজিবাজারে অর্থ লগ্নিকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট কমতে কমতে চলতি বছরে এসে অবস্থান করছে সর্বনিম্নে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ঢাকার পুঁজিবাজারে মোট বিও অ্যাকাউন্ট ছিল ২৯ লাখ ২৯ হাজার ১৮৯টি, যা ২০২৪ সালে কমে হয়েছে ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ৯৫২। এতে করে আট বছরে ১২ লাখ ৬৪ হাজার ২৩৭ জন বিনিয়োগকারী হারিয়েছে পুঁজিবাজার।

২০২৩ সালে বাজারে বিও অ্যাকাউন্টধারী ছিলেন ১৭ লাখ ৫৬ হাজার ১০৪ জন। সে হিসাবে এক বছরে বিনিয়োগকারী কমেছে ৯০ হাজারেও বেশি।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, পুঁজিবাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় তারা বাজারে বিনিয়োগে আস্থা হারাচ্ছেন। অনেকে মার্জিন ঋণের খপ্পরে ফোর্স সেলের শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে ছেড়েছেন বাজার।

পুঁজিবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারী তারেক মাহমুদ বলেন, প্রতিনিয়ত বিনিয়োগকারীরা টাকা হারাচ্ছেন। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী আসার মূল আগ্রহ আর্থিক লাভের জন্য। কিন্তু লাগাতার লোকসান হওয়ায় এখন আর কেউ ভরসা পাচ্ছেন না।

মার্জিন ঋণ প্রসঙ্গে আরেক বিনিয়োগকারী আলতাফ হোসেন বলেন, বাজারে আগ্রহ ছিল বলেই অনেকে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু দেদারসে শেয়ারের দাম কমতে থাকায় মার্জিন ঋণের খপ্পরে পড়েন তারা। একদিকে মাঝারি বা খারাপ মানের শেয়ারের দাম কমায় টান পড়ছে ঋণের টাকায়, অন্যদিকে ফোর্স সেল হওয়ায় বিক্রি হয়ে যাচ্ছে ভালো শেয়ারও। এতে করে সর্বস্বান্ত হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের।

ব্রোকারেজ হাউসগুলো ঘুরে দেখা যায়, নেই সেই চিরচেনা কর্মচাঞ্চল্য। শাখা পরিচালকরা বলেন, আগে শেয়ার বেচাকেনায় গমগম করতো হাউসগুলো। শুধু হাউসে না, অনেক প্রবাসী বিনিয়োগকারীও মুঠোফোনে যুক্ত থাকতেন, বেচাকেনা করতেন শেয়ারের।

ব্রোকারেজ হাউসের করুণ দশা প্রসঙ্গে গ্লোবাল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের শাখা ব্যবস্থাপক আসাদ লিটন বলেন, নতুন করে আর কেউ বিনিয়োগে আগ্রহ পাচ্ছেন না। সবাই চাচ্ছেন বাজার থেকে টাকা তুলে নিতে। অনেকে লোকসান দিয়ে হলেও বাজার থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন। যারা তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে বাজার ছাড়ছেন, তাদের আর ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ব্যবস্থা না নিলে আগামীতে পুরো বাজার স্থায়ী ধসের মুখে পড়বে বলে শঙ্কা করেন তিনি।

বিনিয়োগকারীদের বাজার বিমুখতা প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার সংস্কারে গঠিত বিএসইসির টাস্কফোর্সের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, মূল সমস্যা বিনিয়োগকারীরা বাজারে লেনদেনে আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন না। অনেক বিও অ্যাকাউন্ট বহুদিন ধরে অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। অনেকে আবার অ্যাকাউন্টের টাকা তুলে বাজার থেকে চলে গেছেন। সব মিলিয়ে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের ভরসা কমে গেছে।

বিনিয়োগকারীদের অনেকের অভিযোগ কমিশন কারসাজিকারীদের গণহারে জরিমানা করায় বাজার আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। গত বছর আগস্টে নতুন কমিশন দায়িত্ব নিয়ে ১২টি কোম্পানির শেয়ার কারসাজির কারণে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৭২০ কোটি টাকার ওপর জরিমানা করেছে। এরমধ্যে শুধু বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার কারসাজিতে চার ব্যক্তি ও পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে ৪২৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করে বিএসইসি।

বাজারে বিএসইসির করা জরিমানার প্রভাব প্রসঙ্গে হেলাল বলেন, 'এখন যা জরিমানা হচ্ছে তার বেশিরভাগই আগের কমিশনের। কারসাজির ৯৮ শতাংশ বিচার তারা করেননি, যা বর্তমান কমিশনকে এসে করতে হচ্ছে। অপরাধীদের সাজা না দিলে বাজারে শৃঙ্খলা ফিরবে না।'

ডিএসইসির লেনদেন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শুধু বিও অ্যাকাউন্ট না গত এক বছরে ডিএসইসির প্রধান সূচক কমেছে ১ হাজার পয়েন্টের বেশি। এর বাইরে ঢাকার বাজার মূলধন হারিয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা।


সূচকের বড় লাফ, লেনদেন বেড়েছে ৫৯ কোটি টাকা

ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক আগের দিনের তুলনায় ৫০ পয়েন্ট বেড়ে ৫,১৯৫ পয়েন্টে উঠেছে * লেনদেন হয়েছে ৪২৬ কোটি টাকা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পতনের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (২০ জানুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ফলে মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে বাজারটিতে। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচক বেড়েছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের দুই কার্যদিবসেই উভয় শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক বাড়ল। তবে সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।

এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। এতে এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে দুই হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। আর প্রধান মূল্যসূচক কমে ৬০ দশমিক ৫১ পয়েন্ট। এমন পতনের পর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেনের শুরুতে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা দিলেও লেনদেনের শেষদিকে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ে। ফলে টানা পাঁচ কার্যদিবস কমার পর মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে।

এ পরিস্থিতিতে সোমবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকাও বড় হতে থাকে। ফলে মূল্যসূচকের মোটামুটি বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৪৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৮১টির এবং ৭১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৯৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে।

অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯২৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৭১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৬৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৫৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মিডল্যান্ড ব্যাংকের ১৪ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, আফতাব অটোমোবাইল, এডিএন টেলিকম, কোহিনূর কেমিক্যাল, ফাইন ফুডস এবং মুন্নু ফেব্রিক্স।

অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৮৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬১টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা।


জুতা রপ্তানিতে বড় চমক

জুলাই-ডিসেম্বরে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৪ শতাংশের বেশি
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১৪:০৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) জুতা রপ্তানি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এ সময় রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৪ শতাংশের বেশি।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যানে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ইপিবি বলছে , চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) মোট ৬২ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের জুতা রপ্তানি হয়েছে। বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ১২২ টাকা) হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ প্রায় আট হাজার কোটি টাকা।

এই আয় গত অর্থ বছরের একই সময়ে চেয়ে ৩৪ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের এই ছয় মাসে ৪৬ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের জুতা রপ্তানি হয়েছিল।

জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে জুতা রপ্তানি থেকে প্রায় ৬৩ কোটি ডলার আয়ের মধ্যে চামড়ার জুতা থেকে এসেছে ৩৫ কোটি ২৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি এসেছে ৩০ দশমিক ৮০ শতাংশ।

অন্যদিকে এই ছয় মাসে চামড়াবিহীন জুতা বা নন-লেদার ফুটওয়্যার রপ্তানি করে আয় হয়েছে ২৭ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি ৩৯ দশমিক ১০ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এই ছয় মাসে ১৯ কোটি ৬৯ লাখ ডলারের নন-লেদার জুতা রপ্তানি হয়েছিল।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় চামড়ার জুতার বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওযায় মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে যায়। তখন বাংলাদেশের জুতা রপ্তানিতেও ভাটা পড়ে। এখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসায় সেসব দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। সে কারণে অন্যান্য পণ্যের মতো জুতার চাহিদাও বেড়েছে বলে মনে করছেন এ খাতের রপ্তানিকারকরা।

অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের সিনিয়র বিপণন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে ইউরোপের দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি কমেছে; মানুষ আগের মতোই কেনোকাটা করছে। সে কারণে জুতা রপ্তানি বাড়ছে। এই অর্থবছরে না হলেও আগামী অর্থবছরে চামড়ার জুতা রপ্তানি থেকে আয় ১ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করবে বলে আশা করছি।

ইপিবির তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে চামড়ার জুতা রপ্তানি থেকে ৫৬ কোটি ৯৯ লাখ ডলার আয় করেছিলেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। ২০২১-২২ অর্থ বছরে সেই রপ্তানি প্রায় ৩৩ শতাংশ বেড়ে ৭৫ কোটি ৬২ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। এই অঙ্ক ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বছরে জুতা রপ্তানি থেকে সর্বাধিক আয়।

তবে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এই খাত থেকে আয় ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ কমে ৬৯ দশমিক ৩২ লাখ ডলারে নেমে আসে। গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ২১ দশমিক ৫২ শতাংশ কমে ৫৪ কোটি ৪০ লাখ ডলারে নেমে আসে।

তবে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের শুরু থেকেই চামড়ার জুতা রপ্তানি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই অর্থ বছরে এ খাত থেকে আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৫৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। অর্থ বছরের প্রথমার্ধে অর্থাৎ অর্ধেক সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর) আয় হয়েছে ৩৫ কোটি ২৭ লাখ ডলার।

গত অর্থ বছরের একই সময়ের চেয়ে এই আয় প্রায় ৩১ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে আয় হয়েছিল ২৬ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।

সবশেষ ডিসেম্বর মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে আরও বেশি, ৭০ দশমিক ২৮ শতাংশ। এই মাসে ৭ কোটি ৮ লাখ ৪০ হাজার ডলারের জুতা রপ্তানি হয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রপ্তানির অঙ্ক ছিল ৪ কোটি ১১ লাখ ২০ হাজার ডলার।

এই অর্থ বছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ২৭ কোটি ৩৯ লাখ ডলারের চামড়াবিহীন জুতা রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি আগের অর্থ বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৯ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধে ১৯ কোটি ৬৯ লাখ ডলারের চামড়াবিহীন জুতা রপ্তানি হয়েছিল।


অবশেষে ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার

ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট বেড়ে ৫,১৪৫ পয়েন্টে উঠেছে * বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৬৮ কোটি টাকা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতনের পর পর রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি বাজারটিতে বেড়েছে মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচক বেড়েছে। তবে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। এতে এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে দুই হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। আর প্রধান মূল্যসূচক কমে ৬০ দশমিক ৫১ পয়েন্ট।

এ পরিস্থিতিতে রোববার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টায় বেশিরভাগ সময় সূচক ঋণাত্মক অবস্থায় থাকে। ফলে আবারও দরপতনের শঙ্কা পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের; কিন্তু দুপুর ১২টার পর লেনদেনের চিত্র বদলে যেতে পারে। দাম কমার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের পর সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিললো। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬০টির এবং ৬৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৪৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে।

অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯০২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৫৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কিছুটা বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৬৮ কোটি টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৬৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে এডিএন টেলিকমের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের ১১ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১০ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম। এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, ওরিয়ন ইনফিউশন, আফতাব অটোমোবাইল, ফাইন ফুডস, সেন্ট্রাল ফার্মা, মিডল্যান্ড ব্যাংক এবং কহিনুর কেমিকেল। অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮১টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা।


ছুটির দিনে জমজমাট বাণিজ্যমেলা

নিম্ন মানের পণ্যের দাম উর্ধ্ব
যত দিন যাচ্ছে, ততই ভিড় বাড়ছে পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ অ্যাক্সিবিশন সেন্টারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায়। শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই মেলা প্রাঙ্গণে আসতে শুরু করেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে এসে পুরোপুরি জমে ওঠেছে। শুরুর দিকে মেলায় লোকজনের আনাগোনা কম থাকলেও এখন প্রচুর ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে বিক্রেতাদের বিক্রির ভালো হচ্ছে বলে জানা গেছে। শনিবার সরকারী ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় বেশ ভিড় হয়েছে। বেচাকিনায় সন্তুষ্ট বিক্রেতারাও।

এদিকে অভিযোগ রয়েছে এবার মেলার ভেতরে নিম্নমানের পণ্য ফুটপাতের মতো করে সাজিয়ে অবাধে বিক্রি হওয়ার।

অনেক ক্রেতা অভিযোগ নিয়ে জানান, চকবাজারের বিভিন্ন মানহীন পণ্যে সয়লাব মেলার বেশির ভাগ স্টল। পণ্য নিম্নমানের হলেও দাম কয়েকগুণ বেশি। সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার মূল উদ্দেশ্য থাকে বিদেশি ক্রেতা-বিক্রেতা অংশ নেবেন এবং পণ্যের গুণগত মান যাচাই করবেন। পছন্দ হলে কিছু পণ্যের ক্রয়াদেশ দেবেন। অন্যদিকে দেশীয় আমদানিকারকরা আমদানির পণ্য খুঁজতে বিদেশ না গিয়ে মেলার মাধ্যমে সেই সুযোগ লুফে নেবেন। তবে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় এ দুটি উদ্দেশ্যের কোনোটির যথাযথ প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না বলে দাবি ব্যবসায়ী ও মেলায় আসা দর্শনার্থীদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মেলায় কোনো বিদেশি দর্শনার্থী বা পর্যটকও চোখে পড়ে না। বিদেশি স্টলেও দেশি পণ্য বিক্রি হতে দেখা গেছে। মেলায় মিলছে চকবাজারের নিম্নমানের আচার, চকোলেট, জেলিসহ শিশুদের নানা খাবার। এসব দোকানে বিদেশি বিভিন্ন চকোলেট বিক্রি হলেও নেই কোনো আমদানিকারকের সিল ও পণ্যের মূল্য।

মেলায় মিরপুর থেকে আসা রহমান আতিক জানান, চকবাজার থেকে আনা নকল প্রসাধনীতে নামিদামি ব্র্যান্ডের স্টিকার লাগিয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। গৃহস্থালি পণ্যগুলোতেও বিভিন্ন নামিনামি ব্র্যান্ডের স্টিকার লাগিয়ে ছাড়ের নামে বিক্রি করা হয়।

এদিকে বিশ্বস্ত একটি সূত্রে জানা যায়, মেলায় পোশাক পণ্যেও রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। শাল, থ্রিপিস ও তাঁতের শাড়িগুলো ভারতীয়, পাকিস্তানি ও কাশ্মীরি বলে বিক্রি করা হয়। প্রকৃতপক্ষে বেশিরভাগ কাপড় নরসিংদীর বাবুরহাট, গাউছিয়া ও ইসলামপুর থেকে কিনে এনে মেলায় উঠানো হয় বলেও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

এদিকে মেলায় দেশীয় পণ্যের স্টলগুলো বিপাকে পড়েছে মানহীন পণ্যে সয়লাবের কারণে। লাখ লাখ টাকা খরচ করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের যেসব প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে, মানহীন পণ্যের কারণে তারা সেভাবে ব্র্যান্ডিং করতে পারছে না বলে অভিযোগ কিছু ব্যবসায়ীর। রূপগঞ্জের রূপসী এলাকা থেকে আকাশ পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, বাণিজ্যমেলায় স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে ঘুরতে এসেছিলাম। কিন্তু মেলায় আন্তর্জাতিক পণ্যের চেয়ে চকবাজারের পণ্য বেশি।

এ ছাড়া মেলার ভেতরে মূল ভবনের পেছনের দিকে নকল হাজির বিরিয়ানিসহ ১২- ১৫টি অস্বাস্থ্যকর খাবারের দোকান বসতে দেখা গেছে। অস্বাস্থ্যকর খাবারের পসরা সাজিয়ে নাকের ডগায় জম্পেশ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ভুঁইফোড় রেস্তোরাঁগুলো। মেলার ভেতরে এসব দোকানের আধিক্যের কারণে জৌলুশ হারাচ্ছে আন্তর্জাতিক এই মেলা। পণ্যের মান ও অস্বাভাবিক মূল্যের অভিযোগ যেন পিছু ছাড়ছে না। এর ফলে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর আসল উদ্দেশ্যই হয়ে গেছে 'নিরুদ্দেশ'।

বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির বলেন, 'বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণ করা ভারত, তুরস্ক, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের পণ্য দেখে আমাদের তরুণ উদ্যোক্তারা যদি নতুন উদ্ভাবন করতে পারেন, তাহলেই আমি বলব মেলার আয়োজন সার্থক। যদি নিম্নমানের পণ্য বিক্রি ও এটিকে বছরের একটি ইভেন্ট হিসেবে ধরা হয়, তাহলে এটি কোনো কাজে আসবে না।'

মেলার পরিচালক ও ইপিবির সচিব বিবেক সরকার বলেন, 'আমরা মেলাকে আন্তর্জাতিক মানের করতে পুরোপুরি চেষ্টা চালাচ্ছি।’


দরপতনের বৃত্তে শেয়ারবাজার

চলতি বছরে লেনদেন হওয়া ৯ কার্যদিবসের মধ্যে ৬ দিনই দরপতন হয়েছে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

টানা পতনের বৃত্তে আটকে গেছে দেশের শেয়ারবাজার। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দরপতন হয়েছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের দুই কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হলো। আর চলতি বছরে লেনদেন হওয়া ৯ কার্যদিবসের মধ্যে ৬ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।

এর আগে ২০২৪ সালজুড়ে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। এতে এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে ১ লাখ ১৮ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। বাজার মূলধন কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ কমেছে। বাজার মূলধনের বড় পতনের পাশাপাশি মূল্যসূচকেরও বড় পতন হয় বছরটিতে। ২০২৪ সালে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমে ১ হাজার ৩০ পয়েন্ট।

এমন দরপতনের পর নতুন বছর ২০২৫ সালে শেয়ারবাজারে সুদিন দেখা যাবে এমন প্রত্যাশায় ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। কারণ অব্যাহত দরপতনের কবলে পড়ে ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই) ৯ দশমিক ৫০ পয়েন্ট নেমে যায়। পিই ১০-এর নিচে নেমে গেলে বিনিয়োগ আকর্ষণীয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু নতুন বছরেও শেয়ারবাজারে সুদিন ফেরেনি। বরং আগের মতোই দরপতনের বৃত্তেই আটকে রয়েছে শেয়ারবাজার। ফলে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা দিন যত যাচ্ছে তত ভারী হচ্ছে।

শেয়ারবাজারের এই পরিস্থিতি সম্পর্কে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, শেয়ারবাজারে মারাত্মক আস্থাসংকট দেখা দিয়েছে। বাজার ভালো করতে হলে সবার আগে এই আস্থাসংকট দূর করতে হবে। কিন্তু বাজারে আস্থা ফেরাতে যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সে ধরনের কোনো পদক্ষেপ সংশ্লিষ্টদের নিতে দেখা যাচ্ছে না। ফলে দিন যত যাচ্ছে শেয়ারবাজার ততো তলানিতে নামছে।

এদিকে সোমবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হওয়ার আগেই সার্ভারে সমস্যা দেখা দেয়। যে কারণে নির্ধারিত সময়ে ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয়নি। নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট পর ডিএসইতে লেনদেন শুরু হতেই বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। ফলে মূল্যসূচকও ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।

তবে অল্প সময়ের ব্যবধানে দাম কমার তালিকা থেকে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। এতে কিছু সময়ের জন্য মূল্যসূচকও ঊর্ধ্বমুখী হয়। কিন্তু বেলা সাড়ে ১১টার পর আবার দাম কমার তালিকায় চলে যায় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে মূল্যসূচকও ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। অবশ্য শেষ দিকে বড় মূলধনের কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় মূল্যসূচকের বড় পতন হয়নি।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৯১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৭টির এবং ৬২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এর পরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় মাত্র ৪ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৫১ পয়েন্টে নেমে গেছে।

অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৯৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯০৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৬১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সবকটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৯৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৭১ কোটি টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ২৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

এই লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে গ্রামীণফোনের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ৩৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের ২১ কোটি ৭১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফাইন ফুডস।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আফতাব অটোমোবাইল, অগ্নি সিস্টেম, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, মিডল্যান্ড ব্যাংক, রবি, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ওরিয়ন ইনফিউশন।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৮টির এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫৪ কোটি ৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।


পুঁজিবাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা

বাজারের অস্থিতিশীলতার কারণে আস্থা হারিয়েছেন তারা
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের পুঁজিবাজার থেকে গত আট বছরে ১২ লাখ বিনিয়োগকারী মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে মোট বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট ছিল ২৯ লাখ ২৯ হাজার ১৮৯টি, যা ২০২৪ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ৯৫২টিতে। এর মানে, আট বছরে ১২ লাখ ৬৪ হাজার ২৩৭ জন বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়ে চলে গেছেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিও অ্যাকাউন্টধারীর সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ৫৬ হাজার ১০৪ জন। এক বছরে ৯০ হাজারেরও বেশি বিনিয়োগকারী তাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছেন। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, বাজারের অস্থিতিশীলতার কারণে তারা আস্থা হারিয়েছেন।

বিনিয়োগকারী তারেক মাহমুদ বলেন, ‘প্রতিনিয়ত বিনিয়োগকারীরা টাকা হারাচ্ছেন। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মূল উদ্দেশ্য আর্থিক লাভ। কিন্তু লাগাতার লোকসানের কারণে বিনিয়োগকারীরা এখন আর ভরসা পাচ্ছেন না।’

অনেক বিনিয়োগকারী মার্জিন ঋণের ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। আকতার হোসেন নামে আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘শেয়ারের দাম কমায় ঋণের টাকা ফেরত দিতে পারছেন না অনেকে। ফোর্স সেলের কারণে ভালো শেয়ারও বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, ফলে বিনিয়োগকারীরা সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।’

ব্রোকারেজ হাউসগুলোতেও কর্মচাঞ্চল্য কমে গেছে। গ্লোবাল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের শাখা ব্যবস্থাপক আসাদ লিটন জানান, নতুন বিনিয়োগকারী আসছেন না, বরং অনেকেই লোকসান দিয়ে হলেও টাকা তুলে নিচ্ছেন। বাজার স্থিতিশীল না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) টাস্কফোর্স সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, বিনিয়োগকারীরা লেনদেনে আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন না। অনেক অ্যাকাউন্ট বহুদিন ধরে অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, কমিশনের কঠোর পদক্ষেপ বাজারকে আরও অস্থিতিশীল করেছে। ২০২৩ সালের আগস্টে বিএসইসি ১২টি কোম্পানির শেয়ার কারসাজির জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৭২০ কোটি টাকার বেশি জরিমানা করেছে। হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আগের কমিশন কারসাজির ৯৮ শতাংশ বিচার করেনি। বর্তমান কমিশন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছে।’

ডিএসইর লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত এক বছরে প্রধান সূচক ১ হাজার পয়েন্টের বেশি কমেছে এবং বাজার মূলধন হারিয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা।

এদিকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেয়ারবাজার থেকে এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে তথ্য উঠে এসেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে।

এতে বলা হয়েছে, প্রতারণা, কারসাজিসহ প্লেসমেন্ট শেয়ার এবং আইপিও বা প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে জালিয়াতির মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে এই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

তিন মাসের অনুসন্ধান শেষে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। এ কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে বলা হয়, শেয়ারবাজারে প্রভাবশালী উদ্যোক্তা গোষ্ঠী, ইস্যু ম্যানেজার, নিরীক্ষক ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কারসাজির একটি বড় নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে। বাজারের মধ্যস্থতাকারী দেউলিয়া হয়েছে, তাদের ইক্যুইটি ৩০ হাজার কোটি টাকা নেতিবাচক হয়েছে।

যারা ব্যাংক খাতের অপরাধী, তারা শেয়ারবাজারে আস্থা নষ্ট করার পেছনেও ছিল বলে শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) একটি স্বার্থান্বেষী মহলের হস্তক্ষেপের কারণে নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।

গত ২৯ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়।

এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো কাজী ইকবাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম তামিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার তাসনিম আরিফা সিদ্দিকী।


ডিএসইতে সূচক কিছুটা বাড়ল

ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে ৫,১৯৪ পয়েন্টে উঠেছে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

টানা দরপতনের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্যসূচক কিছুটা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকার পাশাপাশি কমেছে মূল্যসূচক। সূচকের পতন হলেও এই বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।

এর আগে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ডিএসইতে দরপতন হয়। পরের কার্যদিবস সোমবার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। কিন্তু পরের দুই কার্যদিবস মঙ্গলবার ও বুধবার আবার দরপতন হয়।

এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। অবশ্য লেনদেন চলাকালে শেয়ারবাজারে বেশ অস্থিরতা দেখা যায়। কয়েকবার সূচকের উত্থান-পতনের ঘটনা। তবে শেষ পর্যন্ত ডিএসইতে সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৫৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৬টির এবং ৮৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে উঠে এসেছে।

অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৬১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩২৪ কোটি ৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩০৭ কোটি ১ লাখ টাকা। সেই হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১৭ কোটি ২ লাখ টাকা।

এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে গ্রামীণফোনের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৩ কোটি ২৯ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের ১২ কোটি ৩৮ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফাইন ফুডস।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- অগ্নি সিস্টেম, ওরিয়ন ইনফিউশন, মিডল্যান্ড ব্যাংক, রবি, যমুনা ব্যাংক, আফতাব অটোমোবাইল এবং ফারইস্ট নিটিং।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৯টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪ কোটি ১১ লাখ টাকা।


শেয়ারবাজারকে শক্তিশালী করতে চায় সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

সালেহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ারবাজারে কিছু সংস্কার হচ্ছে। সব সংস্কারেরই কিছু যন্ত্রণা থাকে। তাই শেয়ারবাজারের সংস্কার কার্যক্রমেরও কিছু যন্ত্রণা সাময়িকভাবে সইতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান হচ্ছে শেয়ারবাজারকে শক্তিশালী করা। ব্যাংকের ঋণনির্ভর অর্থনীতি টেকসই কোনো অর্থনীতি নয়। ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে শিল্প গড়লে অনেক সময় টাকা ফেরত না দিলেও চলে। এ কারণে আমাদের দেশে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক ঋণনির্ভরতা বেশি।

শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এ কথাগুলো বলেন। রাজধানীর নিকুঞ্জে ডিএসই ভবনে মঙ্গলবার সকালে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের শেয়ারবাজারের গভীরতা অনেক কম। ভালো ভালো কোম্পানিগুলো এই বাজারে আসতে খুব বেশি আগ্রহী নয়। এসব কোম্পানির মালিকরা ভাবেন, ছেলে হবে পরিচালক, বউ হবে চেয়ারম্যান। ব্যবসায় যা মুনাফা হবে, তা নিজেরা ভোগ করবেন। শেয়ারবাজারে আসা মানেই ভালো ব্যবস্থাপনা, করপোরেট সুশাসন ইত্যাদি উন্নত হওয়া। কিন্তু অনেকে এসব বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে চান না। তাই তারা বাজারে আসতে আগ্রহী নন। কিন্তু সময় এসেছে বাজারের গভীরতা বাড়ানোর। এ জন্য ভালো ভালো কোম্পানি বাজারে আনতে হবে। আর তার জন্য করের সুবিধাসহ সরকারি যেসব নীতি-সহায়তা দরকার, সেসব বিষয় সরকার বিবেচনা করবে। কিছু সরকারি কোম্পানি বাজারে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দেশে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়েরও বড় সমস্যা রয়েছে। সেই সঙ্গে দলগতভাবে দেশের কল্যাণে কাজ করার উদ্যোগেরও ঘাটতি আছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মধ্যে সমন্বয় বা যোগাযোগ আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। শেয়ারবাজারের স্বার্থে এই যোগাযোগ ও সমন্বয় বাড়ানোর পাশাপাশি দলগতভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে বাজার-সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে।’

শেয়ারবাজারে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ডিএসইসহ শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ভারতের শেয়ারবাজারে দেশটির প্রবাসীদের বড় ধরনের বিনিয়োগ রয়েছে। আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও অনেকের বিনিয়োগের সামর্থ্য রয়েছে। তাদের বিনিয়োগের জন্য উৎসাহিত করতে হবে। আর এ জন্য বাজারকে আকর্ষণীয় করতে হবে।’

এ সময় সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘শেয়ারবাজারে সূচক বাড়লেই সবাই খুশি হন। কিন্তু বাজার যখন বেশি ওপরের দিকে যায়, তখন একটু সতর্ক হতে হবে। অনেক সময় নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভুল নীতির কারণেও শেয়ারবাজারে সমস্যা দেখা দেয়। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ব্যাংকগুলো বাজারে বেশি বিনিয়োগ করায় বাজার অনেক ওপরে উঠে গিয়েছিল। এরপর হঠাৎ ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগ কমিয়ে আনার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। এ সময় বিএসইসির কমিশনার, শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ডিএসইর পরিচালক ও ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


নিট পোশাকে ভর করে রপ্তানি আয়ে চমক

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১৩:১৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেও চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) রপ্তানি আয়ে যে উল্লম্ফন হয়েছে তাতে নিট পোশাক তথা কম দামি পোশাকের বড় অবদান ছিল। এ সময় মোট পণ্য রপ্তানি আয়ের ৪৪ শতাংশের বেশি এসেছে নিট পোশাক থেকে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (অর্থাৎ জুলাই-ডিসেম্বর) বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি থেকে মোট ২ হাজার ৪৫৩ কোটি ৩৫ লাখ (২৪.৫৩ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। এ সময় তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ১৯ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১০ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ মোট যে আয় করেছে, তার ৪৪ দশমিক ১৭ শতাংশই এসেছে নিট পোশাক থেকে। অন্যদিকে ওভেন পোশাক থেকে এসেছে ৯ দশমিক শূন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ।

ইপিবির হিসাব বলছে, এই ছয় মাসে তৈরি পোশাক থেকে যে আয় হয়েছে, তার ৫৪ দশমিক ৫০ শতাংশই এসেছে নিট পোশাক থেকে; ওভেনের চেয়ে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার বেশি আয় দেশে এসেছে।

সূত্র জানায়, তৈরি পোশাক শিল্পের দুটি উপখাত হচ্ছে ওভেন ও নিট। পোশাক রপ্তানি শুরু হওয়ার পর থেকেই ওভেন পোশাক রপ্তানি থেকে বেশি বিদেশি মুদ্রা দেশে আসত। বেশ কয়েক বছর রপ্তানি বাণিজ্যে এই দুই খাতের অবদান ছিল কাছাকাছি। কিন্তু করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে ওভেনকে পেছনে ফেলে ওপরে উঠে আসে নিট খাত। এখনো সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। দিন যত যাচ্ছে, রপ্তানি আয়ে ওভেনের চেয়ে কম দামি নিট পোশাকের অবদান ততই বাড়ছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পোশাকই আসলে নিট পোশাক। যেমন টি-শার্ট, পলো শার্ট, সোয়েটার, ট্রাউজার, জগার, শর্টস প্রভৃতি। ঘরোয়া পরিবেশে সাধারণত টি-শার্ট, পলো শার্ট, শ্যান্ডো গেঞ্জি, ট্রাউজার জাতীয় পোশাক বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। আরামদায়ক হওয়ায় সারা বিশ্বেই রয়েছে এ ধরনের পোশাকের জনপ্রিয়তা। অন্যদিকে শার্ট, প্যান্ট, স্যুট-ব্লেজার জাতীয় ফরমাল পোশাক হচ্ছে ওভেন ক্যাটারির পণ্য।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি থেকে মোট ২৭ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে ওভেন পোশাক থেকে এসেছিল ১৪ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার। আর নিট পোশাক থেকে এসেছিল ১৩ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার।

২০২০-২১ অর্থবছরে পাল্টে যায় চিত্র; নিট থেকে আসে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার। আর ওভেন থেকে আসে ১৪ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার।

২০২১-২২ অর্থবছরে ওভেন থেকে আসে ১৯ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার; নিট থেকে আসে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার বেশি ২৩ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার।

২০২২-২৩ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি থেকে আসে মোট ৪৭ বিলিয়ন ডলার। তার মধ্যে নিট থেকে আসে ২৫ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার; ওভেন থেকে আসে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার কম, ২১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার।

গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি থেকে আসে মোট ৩৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। তার মধ্যে নিট থেকে আসে ১৯ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার; ওভেন থেকে আসে ১৬ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার।

সবশেষ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে ৩ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে। যা গত বছরের ডিসেম্বরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। এই মাসে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে ১ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি মুদ্রা দেশে এসেছে; প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের ডিসেম্বরের চেয়ে এই ডিসেম্বরে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে প্রায় ১৭ শতাংশ বেশি আয় দেশে এসেছে। অন্যদিকে ওভেন পোশাক থেকে ডিসেম্বর মাসে আয় হয়েছে ১ দমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার; বেড়েছে ১৮ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ।

নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, গত তিন-চার বছর ধরেই ওভেনের চেয়ে নিট থেকে বেশি রপ্তানি আয় দেশে আসছে। নানা সমস্যার মধ্যেও প্রবৃদ্ধির ধারা ধরে রেখেছি। দুই বছরের করোনা মহামারির মধ্যেও দেশের রপ্তানি আয়ের যে উল্লম্ফন হয়েছিল, তা কিন্তু নিট পোশাকের ওপর ভর করেই হয়েছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা পণ্য রপ্তানি পড়েছিল। কিন্তু নিট পোশাকের রপ্তানি কমেনি; উল্টো বেড়েছে।

মোহাম্মদ হাতেম বলেন, মানুষ যত সমস্যায়ই থাকুক, যত অর্থ সংকটেই থাকুক না কেন, অতি প্রয়োজনীয় কাপড় কিনতেই হয়। সে কারণে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে আয় বাড়ছে। যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে গিয়েছিল। সে কারণে ওই সব দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গিয়েছিল। তারা তখন খাদ্য ও অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া অন্য পণ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছিল।

তার মতে, নিট পোশাক যেহেতু অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য, তাই তারা বাধ্য হয়ে এগুলো কিনেছে। সে কারণে এই খাত থেকে আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত ছিল। সুসংবাদ হচ্ছে, আমাদের পোশাকের প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ অন্য দেশে মূল্যস্ফীতি কমে স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। মানুষ আগের মতোই পোশাকসহ অন্য পণ্য কিনছে। তার প্রভাব পড়েছে নিট পণ্য রপ্তানিতে।


banner close