শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

৩ মাসে পণ্য বাণিজ্যে  ঘাটতি কমেছে ৭.৫৮%

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:১৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:১৯

চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম তিন মাসে বাণিজ্য ঘাটতিতে নিম্মমুখী প্রবণতাই দেখা যাচ্ছে। প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বরে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪.৬৩ বিলিয়ন বা ৪৬৩ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ কম। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এই তিন মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৫.০১ বিলিয়ন বা ৫০১ কোটি ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গত বুধবার প্রকাশিত বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

এতে দেখা যায়, এই বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ১ হাজার ৫১৯ কোটি (১৫.১৯ বিলিয়ন) ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে দশমিক ৯ বেশি। গত বছরের এই দুই মাসে ১৫ দশমিক শূন্য ছয় বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল।

অন্যদিকে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ১০ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার আয় করেছেন রপ্তানিকারকরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। গত বছরের এই তিন মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে ১০ দশমিক শূন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছিল। এ হিসাবেই চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ কমে ৪ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

২২ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষ হয়েছিল। তার আগের অর্থবছরে (২০২২-২৩) এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৭ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার।

লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি

অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক হচ্ছে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্য বা ব্যালান্স অব পেমেন্ট। এই সূচকে ৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলারের বড় ঘাটতি নিয়ে শেষ হয়েছিল ২০২৩-২৪ অর্থবছর।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) এই সূচকে ১৫ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল। কিন্তু সেপ্টেম্বর শেষে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ব্যালান্স অব পেমেন্ট ১২ কোটি ৭০ লাখ ডলারের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে এই সূচকে ১৮২ কোটি ৯০ লাখ (১.৮৩ বিলিয়ন) ডলারের ঘাটতি ছিল।

আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত

২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে আর্থিক হিসাবে (ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট) উদ্বৃত্তের পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার। তবে ঘাটতি নিয়ে শুরু হয় ২০২৪-২৫ অর্থবছর। অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

তবে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এই সূচকে ৫৬ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১২৩ কোটি (১.২৩ বিলিয়ন) ডলার।

সামগ্রিক লেনদেনে ঘাটতি ১.৪৬ বিলিয়ন ডলার

সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে (ওভারঅল ব্যালান্স) ঘাটতি কমেছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এই সূচকে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ২ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার।

রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩৩.৩ শতাংশ

দেশের অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে এ মুহূর্তে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়।

গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল আগের অর্থবছরের (২০২২-২৩) চেয়ে ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি।

সেই ইতিবাচক ধারা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও অব্যাহত রয়েছে। প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৬ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।

ইতোমধ্যে অক্টোবর মাসের রেমিট্যান্সের তথ্যও প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৩৯ কোটি ৫১ লাখ (২.৩৯ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। এই অঙ্ক গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে ২১ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ৮ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি।

এফডিআই কমেছে ১৫ শতাংশ

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ৩০ কোটি ডলারের নিট এফডিআই (সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ) এসেছে দেশে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই অঙ্ক ছিল ৩৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

এ হিসাবে এই তিন মাসে এফডিআই কমেছে ১৫ শতাংশ। লেনদেন ভারসাম্যে উদ্বৃত্ত নিয়ে অর্থবছর শুরু, কমেছে বাণিজ্য ঘাটতি।


ঢাকায় ‘রেস্টোরেশন ফ্যাক্টরি বাংলাদেশ ২০২৫’র সমাপনী: ৪ সবুজ উদ্যোক্তাকে অনুদান ও সম্মাননা

আপডেটেড ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৪:২৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি) ও ব্রিজ ফর বিলিয়নস-এর সহযোগিতায় বাস্তবায়িত ‘রেস্টোরেশন ফ্যাক্টরি বাংলাদেশ ২০২৫’ প্রোগ্রামের জাঁকজমকপূর্ণ সমাপনী অনুষ্ঠান গতকাল সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ব্যবসায়িক উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চারজন প্রতিশ্রুতিশীল উদ্যোক্তাকে পুরস্কৃত করা হয়।

এবারের আয়োজনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৫০ জন প্রারম্ভিক পর্যায়ের সবুজ উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন। তারা নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জলবায়ু-সহনশীল কৃষি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সার্কুলারিটি, পানি ও স্যানিটেশন, প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান, টেকসই বনব্যবস্থা এবং পরিবেশবান্ধব ভোক্তা পণ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর প্রতিনিধিত্ব করেন। দীর্ঘ নয় মাসব্যাপী এই যাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা কাঠামোগত ব্যবসায়িক ইনকিউবেশন, বিশেষজ্ঞ সেশন এবং দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের মেন্টরশিপ সুবিধা পেয়েছেন। মূলত জলবায়ু-স্মার্ট ব্যবসায়িক মডেল শক্তিশালী করা, বিনিয়োগ প্রাপ্তির প্রস্তুতি এবং পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবন প্রসারে দক্ষতা অর্জনে তাদের সহায়তা করা হয়েছে।

সমাপনী অনুষ্ঠানে নির্বাচিত ১৭ জন উদ্যোক্তা বিশেষজ্ঞ জুরিবোর্ডের সামনে তাদের উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। তাদের প্রস্তাবনায় টেকসই প্রযুক্তি, নিম্ন-কার্বন ব্যবসা মডেল এবং কমিউনিটির সহনশীলতা বৃদ্ধির কার্যকর সমাধানগুলো উঠে আসে। এদের মধ্য থেকে পরিবেশগত প্রভাব, সামাজিক প্রভাব, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি এবং বর্ষসেরা নারী উদ্যোক্তা—এই চারটি ক্যাটাগরিতে চারজন সেরা উদ্যোক্তাকে ২,০০০ মার্কিন ডলার করে অনুদান প্রদান করা হয়।

এছাড়া অনুষ্ঠানে একটি ‘গ্রিন ইনোভেশন শোকেস’-এর আয়োজন করা হয়, যেখানে উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য ও প্রোটোটাইপ প্রদর্শন করেন। এই প্রদর্শনী বিনিয়োগকারী, উন্নয়ন সহযোগী এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করে। অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ইউএনইপি-এর প্রতিনিধি এবং দেশের উদ্যোক্তা ইকোসিস্টেমের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।


টাঙ্গাইল ও ফেনীর পর এবার নরসিংদীর বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিক্রির সিদ্ধান্ত ডরিন পাওয়ারের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেড এবার নরসিংদীতে অবস্থিত তাদের ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব স্থায়ী (নন-কারেন্ট) সম্পদ বিক্রির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ রুরাল ইলেকট্রিফিকেশন বোর্ডের (বিআরইবি) সঙ্গে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ১৫ বছর মেয়াদি বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এবং বিআরইবি চুক্তি নবায়নে আগ্রহী না হওয়ায় কোম্পানিটি কেন্দ্রটি বন্ধ করে সম্পদ বিক্রির এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও ডরিন পাওয়ার একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল। গত বছর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) চুক্তি নবায়ন না করায় কোম্পানিটি টাঙ্গাইল ও ফেনীতে অবস্থিত তাদের দুটি ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থায়ী সম্পদ বিক্রি করে দিয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় এবার নরসিংদীর কেন্দ্রটির কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত এল।

কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ডরিন পাওয়ারের ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। এ সময়ে শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৮১ পয়সায়, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৪৮ পয়সা। ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫৪ টাকা ২৪ পয়সায়।

বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রদানের ক্ষেত্রেও কোম্পানিটি ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৪-২৫ হিসাব বছরে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে তারা। এই হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ১৯ পয়সা, যা আগের বছরে ছিল ১ টাকা ৮১ পয়সা। এছাড়া সমাপ্ত ২০২৩-২৪ এবং ২০২২-২৩ হিসাব বছরেও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের যথাক্রমে ১০ ও ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছিল ডরিন পাওয়ার।

ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (সিআরআইএসএল) মূল্যায়ন অনুযায়ী, ডরিন পাওয়ারের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান ‘এ প্লাস’ এবং স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-থ্রি’। ২০০৮ সালে যাত্রা শুরু করা এই কোম্পানিটি ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১৮১ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভে রয়েছে ৬৭২ কোটি ৭১ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৬৬ দশমিক ৬১ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে, ১৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে এবং বাকি ১৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।


ই-জিপি সিস্টেমে দরপত্রের সংখ্যা ছাড়িয়ে ১০ লাখ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ)-এর ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) সিস্টেমের মাধ্যমে আহ্বানকৃত দরপত্রের সংখ্যা, দরদাতা ও ক্রয়কারী সংস্থার নিবন্ধন উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশের সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাকে আধুনিক ও সুসংগঠিত করার উদ্দেশ্যে ২০১১ সালে চালু হওয়া ই-জিপি একটি কেন্দ্রীভূত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেস, দ্রুত কার্যকারিতা এবং শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে শুরু থেকেই এটি দ্রুত সম্প্রসারিত হয়েছে। দরদাতা ও ক্রয়কারী এ সিস্টেমের প্রধান ব্যবহারকারী।

ডিজিটাল ক্রয়ের সুবিধা ও কার্যকারিতার কারণে তারা এ পরিবর্তনকে সাদরে গ্রহণ করেছে।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০১১ থেকে শুরু করে ২০২৫ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ই-জিপি সিস্টেমের মাধ্যমে আহ্বানকৃত দরপত্রের মোট সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, যার মোট মূল্য ১০ লাখ ২৯ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা। ২০১১ থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত আহ্বানকৃত মোট দরপত্রের সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ৭৭ হাজার, যার মোট মূল্য ছিল ৯ লাখ ২২ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা।

২০২৫ সালের নভেম্বরে এক মাসের মধ্যে ই-জিপিতে ২৩ হাজার দরপত্র আহ্বান নতুন মাসিক রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। ই-জিপি চালুর পর থেকে এক মাসে আহ্বানকৃত দরপত্রের সংখ্যাই সর্বোচ্চ।

ই-জিপি পরিচালনার সাথে সংযুক্ত সূত্রগুলো জানা গেছে, আহ্বানকৃত দরপত্রের এ উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ২০২৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর), ২০২৫-এর প্রয়োগের সঙ্গে সম্পর্কিত। নতুন বিধিমালায় সব সরকারি ক্রয়ে ই-জিপির ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা প্ল্যাটফর্মের কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করেছে।

এখন প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০টি নিবন্ধনের আবেদন বিপিপিএ-তে আসছে, যেখানে আগে দৈনিক গড় ছিল মাত্র ৬০ থেকে ৭০।

তুলনামূলক তথ্যে আরও দেখা যায়, ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ই-জিপিতে নিবন্ধিত দরদাতার সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩৭৪ হয়েছে, যা ২০২৪ সালের নভেম্বরে ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৭৭৭।

সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ২০১১ সালে সিস্টেম চালুর পর এক বছরে ২৩ হাজার দরদাতার নিবন্ধনের এ ধরনের বৃদ্ধি আগে কখনো দেখা যায়নি।

নিবন্ধিত ক্রয়কারী সংস্থার সংখ্যা ২০২৪ সালের নভেম্বরের ১ হাজার ৪৭৪ থেকে ২০২৫ সালের নভেম্বরে বেড়ে ১ হাজার ৪৯৯ হয়েছে। একইভাবে, ক্রয়কারীর সংখ্যা ১২ হাজার ৬০২ থেকে ১৪ হাজার ৩৭৪ হয়েছে।

বিপিপিএ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) এস এম মঈন উদ্দীন আহম্মেদ পিপিআর, ২০২৫-এর প্রণয়ন ও কার্যকর করা দেশের সরকারি ক্রয় সংস্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেন।

তিনি বলেন, আমরা আশা করি, পিপিআর, ২০২৫ সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়াকে সুসংগঠিত করবে। সরকারি ক্রয়ে প্রতি বছরে প্রায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমমূল্যের অর্থ ব্যয় হয়। পিপিআর, ২০২৫ প্রয়োগের ফলে সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা এবং কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।


৪টি হাসপাতালের সঙ্গে বিজিএমইএ―র সমঝোতা স্মারক সই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) তার সদস্য, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের জন্য উন্নত স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা নিশ্চিত করতে আরও চারটি হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর উত্তরাস্থ বিজিএমইএ সভাকক্ষে এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। নতুন করে যে চারটি হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে : ঢাকা ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল পিএলসি, ইবনে সিনা ট্রাস্ট, শিপ ইন্টারন্যাশনাল হসপিটাল ও ইয়র্ক হসপিটাল লি.। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে সমঝোতা স্মারকগুলোতে স্বাক্ষর করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম রহমান। প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেন ঢাকা ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল পিএলসির পরিচালক মো. আনিসুর রহমান, ইবনে সিনা ট্রাস্টের এজিএম ও ডেপুটি হেড অব বিজনেস ডেভলপমেন্ট জিএম তারিকুল ইসলাম, শিপ ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালের বোর্ড ডিরেক্টর ফুতোশি কোনো এবং ইয়র্ক হসপিটাল লিমিটেডের পক্ষে পরিচালক (বিজিএমইএ এর সাবেক পরিচালক) নজরুল ইসলাম।

এই চুক্তির ফলে বিজিএমইএ’র সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এখন থেকে এই চারটি হাসপাতালসহ মোট ১৪টি (আগে স্বাক্ষরিত ১০টির সঙ্গে যুক্ত হয়ে) শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিশেষ ছাড়কৃত মূল্যে (ডিসকাউন্ট রেট) উন্নত চিকিৎসা ও ডায়াগনস্টিক পরিষেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বিজিএমইএ তার সদস্যদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে না গিয়ে দেশেই বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে উৎসাহিত করছে।

অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম রহমান পোশাক খাতের উদ্যোক্তা ও কর্মীদের কল্যাণে বিজিএমইএ’র অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, বিজিএমইএ পোশাক শ্রমিকদের জন্য আশুলিয়া অঞ্চলে একটি বৃহৎ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এই হাসপাতাল পরিচালনায় স্বাক্ষরকারী হাসপাতালগুলোর মূল্যবান সহযোগিতা নিশ্চিত করাই হলো এই উদ্যোগের অন্যতম উদ্দেশ্য।

তিনি আরও বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে পোশাক খাতে একটি স্থায়ী ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ পরিচালক মো. হাসিব উদ্দিন, পরিচালক মোহাম্মদ সোহেল, বিজিএমইএ প্রেস, পাবলিকেশন অ্যান্ড পাবলিসিটি কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাসুদ কবির, মিরপুর হেলথ কেয়ার সেন্টারের চেয়ারম্যান খন্দকার মহিদুর রহমান শাহীন, টিবি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেঙ্গু কমিটির চেয়ারম্যান নুরুল তপন এবং ইয়র্ক হসপিটাল লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মল্লিক নাসিম আহসানসহ সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএ পরিচালক মোহাম্মদ সোহেল।

স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশের পোশাকখাতের পাশে দাঁড়াতে পেরে তারা গর্বিত ও আনন্দিত।


সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে একদিনেই ৪১৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি

আপডেটেড ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:৫৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আবারও ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সারাদিনে পর্যায়ক্রমে এই স্থলবন্দর দিয়ে মোট ৪১৯ মেট্রিক টন ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করেছে। এর আগে রবিবার সন্ধ্যায় আমদানির প্রথম চালানটি বন্দরে এসে পৌঁছায়।

বেসরকারি বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মাঈনুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ বিরতির পর সীমিত পরিসরে আমদানির অনুমতি মেলার পরপরই ভারতীয় ট্রাকযোগে পেঁয়াজ আসা শুরু হয়েছে। সোনামসজিদ উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক সমীর চন্দ্র ঘোষ জানান, সোমবার নতুন করে ১০ জন ব্যবসায়ীকে ২৭টি আইপি বা ইমপোর্ট পারমিটের বিপরীতে ২৯৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর আগে রবিবার দুজন আমদানিকারক প্রথম চালানে ৬০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ এনেছিলেন। উল্লেখ্য, এই বন্দর দিয়ে সর্বশেষ গত ৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল।

দেশের বাজারে যখন পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী, তখন সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় ক্রেতা, বিক্রেতা ও সাধারণ ভোক্তারা। সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, এই আমদানি প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বাড়বে এবং দাম দ্রুত কমে আসবে। নতুন দেশীয় পেঁয়াজ পুরোদমে বাজারে না আসা পর্যন্ত আমদানি চালু রাখার দাবিও জানিয়েছেন তারা।


১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ফোনে এনইআইআর বাস্তবায়নের দাবি এমআইওবির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মোবাইল ফোন খাতে নিরাপত্তা ও বৈধতা নিশ্চিত করতে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) বাস্তবায়ন এবং মোবাইল হ্যান্ডসেট খাতের সুষ্ঠু বিকাশে সুষম কর-কাঠামো প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইওবি)।

সংগঠনটির দাবি, এ ব্যবস্থা চালু হলে সরকার প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব পাবে, দেশে বাড়বে বিদেশি বিনিয়োগ ও তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থান।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

স্থানীয় মোবাইলশিল্পের বর্তমান চিত্র ও প্রতিবন্ধকতাগুলো তুলে ধরে এমআইওবির সভাপতি জাকারিয়া শহীদ জানান, বর্তমানে দেশে ১৮টি মোবাইল সংযোজন ও উৎপাদন কারখানা গড়ে উঠেছে, যেখানে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। এই খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারীশ্রমিক। কারখানাগুলো ১৫ লাখ স্মার্টফোন ও ২৫ লাখ ফিচার ফোন প্রতি মাসে উৎপাদন করতে পারে। অবৈধ বা গ্রে মার্কেটের কারণে সরকার বছরে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারাচ্ছে। গ্রে-মার্কেটের আকার প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা, যা স্থানীয় শিল্পের ৩০-৪০ শতাংশ উৎপাদন সক্ষমতাকে অব্যবহৃত রাখছে। এনইআইআর বাস্তবায়িত হলে এই অবৈধ বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে এবং সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবে।

এমআইওবির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এনইআইআর চালু হলে ফোনের দাম বাড়বে- এমন প্রচার একটি বিশেষ মহলের স্বার্থরক্ষার জন্য ছড়ানো হচ্ছে। বরং গ্রে-মার্কেট বন্ধ হলে দেশে হাই-অ্যান্ড ফোন উৎপাদন সম্ভব হবে এবং গ্রাহকরা বর্তমানের চেয়ে কম দামে ভালো মানের ফোন পাবেন।’

মোবাইলশিল্পে সিন্ডিকেট ও নতুন করে কর আরোপের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলেও দাবি করেছে এমআইওবি। তাদের দাবি, ১৮টি প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি প্রমাণ করে এটি একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার, এখানে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের সুযোগ নেই। এছাড়া মোবাইল আমদানিতে ৫৭ শতাংশ শুল্ক ২০১৯ সাল থেকেই চালু রয়েছে, বর্তমান সরকার নতুন কোনো কর আরোপ করেনি।

এমআইওবির মতে, এনইআইআর সিস্টেম চালু হলে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা ও সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এছাড়া বৈধ রিফারবিশ বা পুরোনো ফোন বেচাকেনায় কোনো বাধা থাকবে না। ফলে এনইআইআর দেশের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য একটি জাতীয় ঢাল হিসেবে কাজ করবে।


পুঁজিবাজারে তথ্যের স্বচ্ছতায় এআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে

আপডেটেড ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক

পুঁজিবাজারে তথ্যের স্বচ্ছতা, বিশ্লেষণ এবং নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) কার্যকর ব্যবহার ভবিষ্যতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেটের (বিআইসিএম) নির্বাহী প্রেসিডেন্ট ওয়াজিদ হাসান শাহ।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিআইসিএমের মাল্টিপারপাস হলে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ)-এর সদস্যদের জন্য আয়োজিত ‘এআই এসেন্সিয়াল ফর ক্যাপিটাল মার্কেট’ শীর্ষক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। কর্মশালাটি যৌথভাবে আয়োজন করে সিএমজেএফ ও বিআইসিএম।

বিআইসিএম নির্বাহী প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সম্প্রতি পুঁজিবাজারের পাঁচটি তালিকাভুক্ত ব্যাংক একীভূত হয়েছে এবং আরও নয়টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসান প্রক্রিয়ায় রয়েছে, যার ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য বিশ্লেষণে এআই ব্যবহারের সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু এসব প্রতিষ্ঠান নয়, পুঁজিবাজার সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য বিশ্লেষণে এআই আগামী দিনে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’ তিনি মনে করেন, প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্লেষণ ব্যবস্থা বাজারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াতে সহায়ক হবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবু আলী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিআইসিএমের উপপরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন বিআইসিএমের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) নাজমুছ সালেহীন।

সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়া বলেন, ‘বর্তমান সময়ে এআই একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি, যার ব্যবহার বিশ্বব্যাপী দ্রুত বাড়ছে। শেয়ারবাজারেও এ প্রযুক্তির প্রভাব বিস্তৃত হচ্ছে, ফলে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে দক্ষতা অর্জন সময়ের দাবি বলে’ তিনি মত দেন।

সিএমজেএফ সাধারণ সম্পাদক আবু আলী বলেন, ‘সংগঠনের সদস্যদের পেশাগত মান উন্নয়নে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বিআইসিএমের সহযোগিতায় এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে, যা সাংবাদিকদের জ্ঞানভাণ্ডার সমৃদ্ধ করতে সহায়ক হবে।’

দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি পরিচালনা করেন, বিআইসিএমের প্রভাষক ইমরান মাহমুদ ও গৌরব রায়।


রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বিএসইসির বৈঠক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্তির বিষয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিএসইসি ভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ খসড়া আইপিও রুলসের বিষয়ে কথা বলেন। নতুন রুলসের মাধ্যমে আইপিও সংশ্লিষ্ট রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্কের আধুনিকীকরণ ও শক্তিশালীকরণ করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। নতুন রুলসের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্তিতে আগ্রহী কোম্পানিগুলো ন্যায্য প্রাইসিং ও ভ্যালুয়েশনের নিশ্চয়তা পাবেন বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।

তিনি বলেন, ‘বহুজাতিক কোম্পানিসহ রাষ্ট্র মালিকানাধীন লাভজনক মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্তির জন্য প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্দেশনা মোতাবেক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আসতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা ইতোমধ্যে কোম্পানিগুলোকে জানানো হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এর বাস্তবায়ন নিয়ে কাজ করতে হবে।’

বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখ ও মো. সাইফুদ্দিন, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ, আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাজেদা খাতুন, আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের উপপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ মোহাম্মদ কিবরিয়া, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) মোহাম্মদ শামীম রানা, সিনোভিয়া ফার্মা পিএলসির চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) গোলাম রব্বানী আকন্দ, নেভিয়ান লাইফ সায়েন্স পিএলসি (নোভারটিস বাংলাদেশ লিমিটেড)-এর ভারপ্রাপ্ত চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও), কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মাহমুদা সুলতানা, নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের কোম্পানি সচিব বিমল চন্দ্র রায় ও উপমহাব্যবস্থাপক (অর্থ) আবদুল্লাহ আল মামুন, সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক হাসান মাহমুদ, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-এর এসপিও মকবুল হাসান, আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের এসপিও মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. মাহবুবের রহমান চৌধুরী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।


ভোজ্যতেলের নতুন দাম আজ থেকে কার্যকর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বাজারে আবারও বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) থেকে নতুন এই বর্ধিত মূল্য কার্যকর হচ্ছে। এর ফলে সাধারণ ভোক্তাদের এখন থেকে তেল কিনতে বাড়তি টাকা গুনতে হবে।

রবিবার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক বিজ্ঞপ্তিতে তেলের দাম বাড়ানোর এই ঘোষণা দেয়। নতুন নির্ধারিত মূল্য তালিকা অনুযায়ী, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৬ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ফলে এখন থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে ক্রেতাকে খরচ করতে হবে ১৯৫ টাকা। এছাড়া ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৫৫ টাকা। অন্যদিকে, খোলা সয়াবিন তেলের দাম ঠিক করা হয়েছে প্রতি লিটার ১৭৬ টাকা।

ব্যবসায়ীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই এই নতুন মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।


সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে প্রথম দিনে ৬০ টন পেঁয়াজ এসেছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির নতুন ধাপ রোববার (৭ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে মোট ৬০ টন পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ভারতীয় ট্রাকগুলো বন্দর এলাকায় প্রবেশ করে। আমদানিকৃত পেঁয়াজের মধ্যে মেসার্স গৌড় ইন্টারন্যাশনাল ৩০ টন এবং ওয়েলকাম ট্রেডার্স আরও ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে।

পানামা পোর্টের ম্যানেজার মো. মাইনুল ইসলাম জানান, পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাকগুলো কোনো জটিলতা ছাড়াই বন্দর এলাকায় প্রবেশ করেছে এবং আনলোডিং কার্যক্রম দ্রুতগতিতে চলছে। তিনি বলেন, আমদানিকারকরা নিয়মিত এলসি খুললে প্রতিদিনই পেঁয়াজ আনা সম্ভব হবে।

বন্দরের আমদানিকারক ও শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন পর পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় স্থানীয় বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক করতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এদিকে সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় বন্দরে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, নিয়মিত আমদানি অব্যাহত থাকলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম শিগগিরেই আরও স্থিতিশীল হবে।


বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার ফলে বিচার সংস্কারে গতি সঞ্চার হবে

সেমিনারে বিশেষজ্ঞদের অভিমত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের যৌথ উদ্যোগে গত শনিবার (৬ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আইনজীবী ও ব্যবসায়ী অংশীদারদের সঙ্গে ধারাবাহিক পরামর্শ সভার পর এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি, আইন বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তা, কূটনীতিক এবং উন্নয়ন সহযোগীরা অংশ নেন।

আলোচনায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারিক রোডম্যাপের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার জন্য একটি রোডম্যাপ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

ইউএনডিপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব আদালত দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক বিরোধ ও স্থগিত বাণিজ্যিক মামলার দীর্ঘস্থায়ী জটিলতা দূর করবে এবং এলডিসি থেকে উত্তরণের পথ প্রশস্ত করবে।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার এবং বিলম্বজনিত অর্থনৈতিক ব্যয় কমানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি উল্লেখ করেন, বিশেষ করে চট্টগ্রামের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা বিচার ব্যবস্থায় বিকেন্দ্রীকরণ ঘটাবে এবং বিশ্বকে বার্তা দেবে যে বাংলাদেশ ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত।

তিনি আইনজীবী সমাজ ও বিচার-সম্পর্কিত সব অংশীজনকে সততা, শৃঙ্খলা ও দক্ষতার সঙ্গে বাণিজ্যিক আদালত আইন বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং বলেন, বাংলাদেশে বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা একটি অপরিহার্য ভবিষ্যতমুখী সংস্কার, যা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সব বাংলাদেশির জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে উঠবে। এসব আদালত বিনিয়োগকারীদের আস্থা তৈরি করবে, বাণিজ্যে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে, সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা গভীর করবে এবং এর ফলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, যথাসময়ে স্বচ্ছ বিরোধ নিষ্পত্তি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। বাণিজ্যিক আদালত কার্যকর করা আকাঙ্ক্ষাকে কর্মে রূপান্তরের একটি সাহসী পদক্ষেপ, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা জোরদার করে।

সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস বলেন, ‘মুক্ত, স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য বিরোধ নিষ্পত্তি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে, বাংলাদেশকে একটি বিশ্বস্ত ও প্রতিযোগিতামূলক বাজার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে। প্রতিশ্রুতিকে কর্মে রূপান্তরিত করে, ব্যবসাকে জোরদার করে এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ উন্মুক্ত করে এমন একটি বিচার ব্যবস্থার জন্য সুইডেন এই অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত।

ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বাণিজ্যিক আদালতের রূপান্তরমূলক সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, বাণিজ্যিক আদালত বাংলাদেশকে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করবে।

অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার ক্লিনটন পবকে বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অস্ট্রেলিয়ার একটি প্রধান মূল্যবোধ এবং আমরা বিচার বিভাগ সংস্কারে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে সাধুবাদ জানাই। বাণিজ্যিক আদালত কার্যকর করা একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ, যা বিলম্ব কমায় এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ায়। অস্ট্রেলিয়া গর্বের সঙ্গে এসব সংস্কারকে সমর্থন করছে এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

বিশেষজ্ঞদের প্যানেলে ছিলেন ব্যারিস্টার মারগুব কবির, ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার, উপসচিব, ইউএনডিপি কান্ট্রি ইকোনমিক অ্যাডভাইজর ওয়াইস প্যারে এবং ইউএনডিপি ডিজিটালাইজেশন স্পেশালিস্ট ক্রিস ডেকার।

তারা দীর্ঘদিনের মামলার জট, ভঙ্গুর আইনি কাঠামো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের (এসএমই) জন্য প্রবেশাধিকারের প্রতিবন্ধকতা এবং অবকাঠামোগত চাহিদা নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইউএনডিপির সিনিয়র অ্যাডভাইজর রোমানা শভাইগার।

সেমিনারের সমাপনী বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বিচারপতি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী বিচার বিভাগের জাতীয় অগ্রাধিকারের অংশ হিসেবে বাণিজ্যিক আদালত কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, বাণিজ্যিক আদালত কার্যকর করা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বিচার বিভাগকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।


অর্থনীতি সম্প্রসারণের ধারায় থাকলেও নভেম্বরে পিএমআই মান কমেছে

আপডেটেড ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:১২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশের সামগ্রিক পারচেজিং ম্যানেজার্স’ ইনডেক্স (পিএমআই) নভেম্বর মাসে ৫৪ দশমিক শূন্যতে দাঁড়িয়েছে। যা অক্টোবরের তুলনায় ৭.৮ পয়েন্ট কম। পিএমআই হ্রাস পেলেও এটি এখনো সম্প্রসারণ পর্যায়ে রয়েছে। নভেম্বর মাসের পিএমআই ফলাফলে দেখা গেছে, কৃষি, উৎপাদন, নির্মাণ ও সেবাসহ সব প্রধান অর্থনৈতিক খাতে সম্প্রসারণের গতি ধীর হয়েছে। এই ফলাফল দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্প্রসারণের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলেও গতি কিছুটা মন্থর হয়েছে।

মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ (পিইবি) যৌথভাবে নভেম্বর মাসের এ পিএমআই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পিএমআই উদ্যোগটি দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের তাৎক্ষণিক ও নির্ভুল চিত্র তুলে ধরার একটি অগ্রণী পদক্ষেপ, যা ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও নীতিনির্ধারকদের তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এটি এমসিসিআই ও পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তা এবং সিঙ্গাপুর ইনস্টিটিউট অব পারচেজিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস ম্যানেজমেন্টের (এসআইপিএমএম) কারিগরি সহযোগিতায় তৈরি করা হয়।

নভেম্বরের পিএমআই প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে যে কৃষি খাত টানা তৃতীয় মাসের মতো সম্প্রসারণে থাকলেও এর গতি কিছুটা কমেছে। নতুন ব্যবসা, কর্মসংস্থান এবং ইনপুট ব্যয়ের উপসূচকে ধীরগতির সম্প্রসারণ দেখা গেলেও ব্যবসায়িক কার্যক্রম উপসূচকে দ্রুততর সম্প্রসারণ রেকর্ড হয়েছে। অর্ডার ব্যাকলগ উপসূচকে ধীর সংকোচন দেখা যায়।

উৎপাদন খাত টানা ১৫তম মাসের মতো সম্প্রসারণ বজায় রেখেছে, তবে হার ছিল তুলনামূলক কম। নতুন অর্ডার, রপ্তানি অর্ডার, উৎপাদন, ইনপুট ক্রয়, সমাপ্ত পণ্য, আমদানি, ইনপুট মূল্য, কর্মসংস্থান ও সাপ্লায়ার ডেলিভারি সব উপসূচকই সম্প্রসারণে ছিল। তবে অর্ডার ব্যাকলগ উপসূচকে দ্রুততর সংকোচন রেকর্ড হয়েছে।

নির্মাণ খাত টানা তৃতীয় মাসের মতো সম্প্রসারণ ধরে রাখলেও গতি কমেছে। নির্মাণ কার্যক্রম, কর্মসংস্থান ও ইনপুট খরচ- সব উপসূচকেই সম্প্রসারণ দেখা গেছে। তবে অর্ডার ব্যাকলগ উপসূচকে দ্রুত সংকোচন এবং নতুন ব্যবসা উপসূচক সংকোচন পর্যায়ে ফিরে এসেছে।

সেবা খাত টানা ১৪তম মাসের মতো সম্প্রসারণে থাকলেও প্রবৃদ্ধি ছিল মন্থর। কর্মসংস্থান ও ইনপুট ব্যয়ের উপসূচকে সম্প্রসারণ রেকর্ড হলেও নতুন ব্যবসা, ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও অর্ডার ব্যাকলগ উপসূচকগুলো সংকোচনে ফিরে গেছে।

ভবিষ্যৎ ব্যবসা অনুভূতি সূচকে কৃষি, নির্মাণ ও সেবা খাতে দ্রুততর সম্প্রসারণ প্রত্যাশা দেখা গেলেও উৎপাদন খাতে ধীরগতির সম্প্রসারণ রেকর্ড হয়েছে।

পিএমআই প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, নভেম্বর পিএমআই দেখায় যে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের গতি দুর্বল হয়েছে। বৈশ্বিক চাহিদা হ্রাস, রপ্তানি প্রতিযোগিতা কমে যাওয়া, অভ্যন্তরীণ চাহিদা পতন এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে বিনিয়োগ স্থগিত রাখার প্রবণতার অর্থনীতির উপর চাপ সৃষ্টি করেছে।

যদিও বার্ষিক রপ্তানি কমা সত্ত্বেও মাসওয়ারি প্রবৃদ্ধি এবং কৃষি খাতে ধারাবাহিক ফসল সংগ্রহ সামগ্রিক সম্প্রসারণ বজায় রাখতে সহায়তা করেছে। বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে উৎপাদন খাত ব্যতীত অন্যান্য সব খাতেই ভবিষ্যৎ ব্যবসার দ্রুততর সম্প্রসারণ প্রত্যাশা দেখা গেছে।

সূত্র : বাসস


নির্ধারিত দামে মেলে না এলপিজি

* ১২ কেজির সিলিন্ডারে বেশি দিতে হচ্ছে  ১০০-২৫০ টাকা * ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হয় বিভিন্ন দামে
আপডেটেড ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২০:৫৩
নিজস্ব প্রতিবেদক 

বেসরকারি খাতের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম প্রতি মাসে সমন্বয় করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। তবে ভোক্তা পর্যায়ে সমন্বয় করা দামে এলপিজি পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ আছে। ভোক্তাদের ভাষ্য, ১২ কেজির সিলিন্ডার কিনতে ১০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি দিতে হচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়ও বিভিন্ন দামে বিক্রি হয় এলপিজি।

গত মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ডিসেম্বরের জন্য দাম ঘোষণা করেছে বিইআরসি। এতে ১২ কেজি সিলিন্ডারে এলপিজির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২৫৩ টাকা। গত নভেম্বর মাসে দাম ছিল ১ হাজার ২১৫ টাকা। সংস্থাটি প্রতি মাসেই এলপিজির দাম নির্ধারণ করে।

এলপিজির ১২ কেজি সিলিন্ডার সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় গৃহস্থালির কাজে। ঢাকা থেকে পৌনে তিন শ কিলোমিটার দূরের দ্বীপজেলা ভোলার বোরহানউদ্দিন পৌরসভায় থাকেন কেয়া হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রতি মাসেই ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বাড়তি দিতে হয়। সবশেষ নভেম্বরে ১২ কেজির সিলিন্ডার কিনেছেন ১ হাজার ৩০০ টাকায়। বাসায় পৌঁছাতে বাড়তি খরচ করতে হয় আরও ৫০ টাকা।

বিইআরসি তার আইনি দায়িত্ব পালন করছে না। আইনে যেসব ক্ষমতা দেওয়া আছে, তার প্রয়োগ করে না। ভোক্তাস্বার্থও সংরক্ষিত হচ্ছে না।

ঢাকার কাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল আহমেদও বললেন, অভিন্ন কথা। তাঁর ভাষ্য, নভেম্বরে ১২ কেজির এলপিজি কিনেছেন ১ হাজার ৪৫০ টাকায়। আর বাসায় পৌঁছানোর জন্য দিতে হয়েছে ৫০ টাকা। এ মাসে দাম বাড়ার পর আরও ৫০ টাকা খরচ বাড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।

অবশ্য ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা কামরুন্নেছা রুহী বলেন, গত মাসে ১২ কেজির এলপিজি তিনি কিনেছেন ১ হাজার ৩০০ টাকায়। অর্থাৎ কামরুন্নেছার চেয়ে ফয়সালকে দেড় শ টাকা বেশি দিতে হয়েছে।

২০২১ সালের এপ্রিল থেকে প্রতি মাসে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে আসছে বিইআরসি। টানা দুই বছর দাম নির্ধারণ নিয়ে বিরোধ ছিল পরিবেশক ও এলপিজি কোম্পানির মধ্যে। বিইআরসি পরিবেশক পর্যায়ে দাম নির্ধারণ করে দিলেও সেই দামে কোম্পানির সরবরাহ করত না। এ অভিযোগের ভিত্তিতে দাম নির্ধারণের সূত্রে পরিবর্তন এনে কোম্পানি পর্যায়ে আরও কিছু খরচ যুক্ত করা হয়। এরপর কোম্পানি থেকে বাড়তি দামে সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

সারা দেশে এলপিজি সিলিন্ডার পরিবেশক সমিতির সভাপতি সেলিম খান বলেন, পরিবেশক পর্যন্ত দাম এখন ঠিকই আছে। তাই বাড়তি দামে বিক্রির সুযোগ নেই। তবে খুচরা বিক্রেতারা বেশি নিচ্ছেন। এটি বন্ধে ভোক্তা অধিকারের অভিযান চালানো উচিত।

নির্ধারিত দামে এলপিজি বিক্রির জন্য বাজার নজরদারির সামর্থ্য নেই বিইআরসির। বিভিন্ন সময় তারা জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়ে নজরদারির অনুরোধ করেছে। ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরও মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করে।

লাইসেন্স না থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না উল্লেখ করে বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, জানুয়ারির মধ্যে সব পরিবেশককে বিইআরসির লাইসেন্স নিতে বলা হয়েছে। এরপর খুচরা বিক্রেতাদের লাইসেন্সের আওতায় আনা হবে। এতে জবাবদিহি নিশ্চিত করা যাবে।

বিইআরসির নতুন দর অনুযায়ী, বেসরকারি এলপিজির মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক/ভ্যাট) দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ১০৪ টাকা ৪১ পয়সা। গত মাসে তা ছিল ১০১ টাকা ২৪ পয়সা; অর্থাৎ এ মাসে দাম কেজিতে বেড়েছে ৩ টাকা ১৭ পয়সা।

সরকারি কোম্পানির সরবরাহ করা এলপিজির সাড়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৮২৫ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। অধিকাংশ ভোক্তা অবশ্য এর নাগাল পায় না। বাজারে চাহিদার ৯৯ শতাংশের বেশি এলপিজি সরবরাহ করে বেসরকারি খাত।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, বিইআরসি তার আইনি দায়িত্ব পালন করছে না। আইনে যেসব ক্ষমতা দেওয়া আছে, তার প্রয়োগ করে না। ভোক্তা স্বার্থও সংরক্ষিত হচ্ছে না। এ কারণে রাষ্ট্রপতির কাছে বর্তমান কমিশনের অপসারণ দাবি করেছে ক্যাব।


banner close