মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
২৪ আষাঢ় ১৪৩২

পুঁজিবাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা

বাজারের অস্থিতিশীলতার কারণে আস্থা হারিয়েছেন তারা
ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১১ জানুয়ারি, ২০২৫ ২১:৩৭

দেশের পুঁজিবাজার থেকে গত আট বছরে ১২ লাখ বিনিয়োগকারী মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে মোট বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট ছিল ২৯ লাখ ২৯ হাজার ১৮৯টি, যা ২০২৪ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ৯৫২টিতে। এর মানে, আট বছরে ১২ লাখ ৬৪ হাজার ২৩৭ জন বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়ে চলে গেছেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিও অ্যাকাউন্টধারীর সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ৫৬ হাজার ১০৪ জন। এক বছরে ৯০ হাজারেরও বেশি বিনিয়োগকারী তাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছেন। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, বাজারের অস্থিতিশীলতার কারণে তারা আস্থা হারিয়েছেন।

বিনিয়োগকারী তারেক মাহমুদ বলেন, ‘প্রতিনিয়ত বিনিয়োগকারীরা টাকা হারাচ্ছেন। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মূল উদ্দেশ্য আর্থিক লাভ। কিন্তু লাগাতার লোকসানের কারণে বিনিয়োগকারীরা এখন আর ভরসা পাচ্ছেন না।’

অনেক বিনিয়োগকারী মার্জিন ঋণের ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। আকতার হোসেন নামে আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘শেয়ারের দাম কমায় ঋণের টাকা ফেরত দিতে পারছেন না অনেকে। ফোর্স সেলের কারণে ভালো শেয়ারও বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, ফলে বিনিয়োগকারীরা সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।’

ব্রোকারেজ হাউসগুলোতেও কর্মচাঞ্চল্য কমে গেছে। গ্লোবাল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের শাখা ব্যবস্থাপক আসাদ লিটন জানান, নতুন বিনিয়োগকারী আসছেন না, বরং অনেকেই লোকসান দিয়ে হলেও টাকা তুলে নিচ্ছেন। বাজার স্থিতিশীল না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) টাস্কফোর্স সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, বিনিয়োগকারীরা লেনদেনে আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন না। অনেক অ্যাকাউন্ট বহুদিন ধরে অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, কমিশনের কঠোর পদক্ষেপ বাজারকে আরও অস্থিতিশীল করেছে। ২০২৩ সালের আগস্টে বিএসইসি ১২টি কোম্পানির শেয়ার কারসাজির জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৭২০ কোটি টাকার বেশি জরিমানা করেছে। হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আগের কমিশন কারসাজির ৯৮ শতাংশ বিচার করেনি। বর্তমান কমিশন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছে।’

ডিএসইর লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত এক বছরে প্রধান সূচক ১ হাজার পয়েন্টের বেশি কমেছে এবং বাজার মূলধন হারিয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা।

এদিকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেয়ারবাজার থেকে এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে তথ্য উঠে এসেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে।

এতে বলা হয়েছে, প্রতারণা, কারসাজিসহ প্লেসমেন্ট শেয়ার এবং আইপিও বা প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে জালিয়াতির মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে এই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

তিন মাসের অনুসন্ধান শেষে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। এ কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে বলা হয়, শেয়ারবাজারে প্রভাবশালী উদ্যোক্তা গোষ্ঠী, ইস্যু ম্যানেজার, নিরীক্ষক ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কারসাজির একটি বড় নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে। বাজারের মধ্যস্থতাকারী দেউলিয়া হয়েছে, তাদের ইক্যুইটি ৩০ হাজার কোটি টাকা নেতিবাচক হয়েছে।

যারা ব্যাংক খাতের অপরাধী, তারা শেয়ারবাজারে আস্থা নষ্ট করার পেছনেও ছিল বলে শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) একটি স্বার্থান্বেষী মহলের হস্তক্ষেপের কারণে নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।

গত ২৯ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়।

এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো কাজী ইকবাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম তামিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার তাসনিম আরিফা সিদ্দিকী।


বাংলাদেশে জুন মাসের পিএমআই সম্প্রসারণের হার ৫৩.১ রেকর্ড করা হয়েছে

আপডেটেড ৭ জুলাই, ২০২৫ ১৮:২৩
বাসস

বাংলাদেশে জুন মাসের পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স (পিএমআই) সম্প্রসারণের হার ৫৩.১ রেকর্ড করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ (পিইবি) আজ যৌথভাবে চলতি বছরের জুন মাসের বাংলাদেশ পিএমআই রিপোর্ট প্রকাশ করে।

পিএমআই হলো একটি অগ্রণী উদ্যোগ, যা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সময়োপযোগী ও নির্ভরযোগ্য ধারণা দিতে সহায়তা করে। যাতে ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী এবং নীতিনির্ধারকরা তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

এমসিসিআই ও পিইবির যৌথ প্রচেষ্টায় যুক্তরাজ্য সরকারের সহযোগিতা এবং সিঙ্গাপুর ইনস্টিটিউট অব পারচেজিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস ম্যানেজমেন্ট (এসআইপিএমএম)-এর কারিগরি সহায়তায় এ পিএমআই তৈরি করা হয়েছে।

জুন মাসে বাংলাদেশের সামগ্রিক পিএমআই সূচক মে মাসের তুলনায় ৫.৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩.১।

সর্বশেষ পিএমআই রিডিং-এ দেখা যায়, নির্মাণ খাত প্রথমবারের মতো সংকোচনের দিকে গেছে এবং কৃষি, উৎপাদন এবং সেবা খাতগুলোও ধীরগতির সম্প্রসারণ হার দেখিয়েছে।

কৃষি খাত টানা ৯ মাস ধরে সম্প্রসারণে রয়েছে, তবে এই সম্প্রসারণের গতি কমেছে। এই খাতে প্রথমবারের মতো চাকরির সূচকে সংকোচন দেখা গেছে, তবে নতুন ব্যবসা, ব্যবসায়িক কার্যক্রম, ইনপুট খরচ এবং অর্ডার ব্যাকলগের সূচকে দ্রুত সম্প্রসারণ দেখা গেছে। এমসিসিআই’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উৎপাদন খাত টানা ১০ মাস সম্প্রসারণের মধ্যে থাকলেও সম্প্রসারণের গতি হ্রাস পেয়েছে।

এই খাতে ইনপুট ক্রয়, প্রস্তুত পণ্য, আমদানি এবং চাকরির সূচকে সংকোচন দেখা গেছে। নতুন অর্ডার, নতুন রপ্তানি, কারখানা উৎপাদন, ইনপুট মূল্য এবং সরবরাহকারীদের ডেলিভারির সূচকগুলো ধীর সম্প্রসারণ দেখিয়েছে। তবে অর্ডার ব্যাকলগ সূচক টানা ১০ মাসের সংকোচনের পর আবার সম্প্রসারণে ফিরেছে।

নির্মাণ খাত ৬ মাসের সম্প্রসারণের পর আবার সংকোচনে ফিরে গেছে। নতুন ব্যবসা, নির্মাণ কার্যক্রম, কর্মসংস্থান এবং অর্ডার ব্যাকলগ সূচকগুলো সংকোচনের দিক দেখিয়েছে। ইনপুট খরচ সূচকে ধীরগতির সম্প্রসারণ দেখা গেছে।

সেবা খাত টানা ৯ মাস ধরে সম্প্রসারণে আছে, কিন্তু সম্প্রসারণের গতি কমেছে। নতুন ব্যবসা, ব্যবসায়িক কার্যক্রম এবং অর্ডার ব্যাকলগ সূচকগুলোতে সংকোচন দেখা গেছে, তবে কর্মসংস্থান এবং ইনপুট খরচ সূচকগুলোতে দ্রুত সম্প্রসারণ হয়েছে।

ভবিষ্যৎ ব্যবসা সূচক-এর ক্ষেত্রে, উৎপাদন এবং নির্মাণ খাতে ধীর সম্প্রসারণ, কিন্তু কৃষি ও সেবা খাতে দ্রুত সম্প্রসারণ লক্ষ্য করা গেছে।

পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান ও সিইও ড. এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘সর্বশেষ পিএমআই রিডিং দেখাচ্ছে যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি টানা ৯ মাস ধরে সম্প্রসারণে রয়েছে। তবে জুন মাসে সম্প্রসারণের গতি কিছুটা কমে এসেছে এবং নির্মাণ খাত গত ৮ মাসে প্রথমবারের মতো সংকোচনের মধ্যে পড়েছে। দীর্ঘ ঈদ ছুটি, বর্ষা মৌসুমের সূচনা এবং বাজেটে প্রত্যাশিত অথবা বাস্তবায়িত কর পরিবর্তনগুলো জুন মাসে অর্থনৈতিক গতিশীলতায় প্রভাব ফেলেছে।’


ছুটি শেষে বড় উত্থান দিয়ে লেনদেন শুরু পুঁজিবাজারে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।

প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।

এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।

ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।

লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।

প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।


সঞ্চয়পত্রের মুনাফা বাড়ালে ব্যাংকে কেউ টাকা রাখবে না

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামাল হোসেন পান্না, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

সঞ্চয়পত্রের মুনাফা বাড়ালে মানুষ সবাই সঞ্চয়পত্র কিনবে, ব্যাংকে টাকা রাখবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার বাড়িয়ে দিলে মানুষ সবাই সঞ্চয়পত্র কিনবে, ব্যাংকে টাকা রাখবে না। ব্যাংকেও তো তারল্যের ব্যাপার আছে। ব্যালেন্স করে দেখতে হবে। সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে দিলে ব্যাংক কোথায় থেকে টাকা পাবে?’

শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

ব্যাংক পুনর্বাসনের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘খারাপ ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। ইসলামী ব্যাংকের একটি উদাহরণ। এ ব্যাংকে আস্থা ফিরে আসছে। অন্য ব্যাংকগুলোর জন্য ব্যাংক রেজুলেশন অ্যাক্ট করা হয়েছে। এটার প্রথম শর্ত হলো যারা ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছে, তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। কারও টাকা মার যাবে না। একটু সময় লাগতে পারে। কারণ টাকা নিয়ে চলে গেছে অনেকে। পৃথিবীর কোনো দেশে এরকম ঘটনা ঘটেনি।’ এনবিআরে চলমান অস্থিরতা প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সমস্যা সমাধানে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমে যা যা করা লাগবে আমরা করব। পাঁচ সদস্যের একটি শক্তিশালী কমিটিও করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারী আনতে আমরা নিশ্চিত করছি ব্যবসার জন্য ১০-১২ জায়গায় যেতে না হয়। যত ধরনের ছাড়পত্র আছে, সেগুলো আমরা কেন্দ্রীয়করণের চেষ্টা করছি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, যতগুলো টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে দেশের ইতিহাসে তা আর হয়নি। তিনি আরও বলেন বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য সরকার বিভিন্ন দিক দিয়ে চিন্তা ভাবনা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এ সময় উপদেষ্টার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম, নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব চৌধুরী, নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিয়াস বসাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ড. সালাউদ্দিন আহমেদ উপদেষ্টা হওয়ার পর এটাই ছিল তার নিজ জন্ম স্থান নবীনগরে প্রথম সফর।

সেখানে ডাকবাংলাতে আসার পর সালাউদ্দিন আহমেদকে ফুলের শুভেচ্ছা ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক দিদারুল আলমের সভাপতিত্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিব চৌধুরী সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন ।


দুই মাস পর ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন ছাড়াল ৫০০ কোটি টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

টানা উত্থান-পতনের অস্থিরতায় ধস নেমেছিল দেশের পুঁজিবাজারে। বিপর্যয়ের ধকল কাটিয়ে প্রায় টানা দুই মাস পর ঢাকার বাজারে লেনদেন ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকেরও উত্থান হয়েছে, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৯৯ পয়েন্ট।

সবশেষ, ৭ মে ঢাকার বাজারে ৫০০ কোটি টাকার লেনদেন হলেও এ কয়দিনে লেনদেন ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে নেমেছে বহুবার। অবশেষে টানা পাঁচ দিন ৪০০ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়ে শেষ কার্যদিবসে তা বেড়ে ৫০৬ কোটি টাকায় ঠেকেছে।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সারাদিনের লেনদেনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ২৮ পয়েন্ট।

বাকি দুই সূচক শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস নেতিবাচক হলেও বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৮ পয়েন্ট।

সূচক বাড়লেও দাম কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭ কোম্পানির মধ্যে ১৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৮১ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬২ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই দাম কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির। বিশেষ করে লভ্যাংশ দেওয়া ভালো কোম্পানির এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৯৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১০৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ২১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

ডিএসই ব্লক মার্কেটে ৩৩ কোম্পানির ১৬ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। মিডল্যান্ড ব্যাংক সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।

৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষে রূপালি ব্যাংক এবং ৯ শতাংশ দাম কমে তলানিতে ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট।

চট্টগ্রামেও উত্থান

ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের উত্থান হয়েছে, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৯৯ পয়েন্ট।

লেনদেন হওয়া ২০৫ কোম্পানির মধ্যে ১১৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৫৯ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

সিএসইতে মোট ২১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৫ কোটি টাকা।

১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে মালেক স্পিনিং মিলস এবং ৯ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে এএফসি অ্যাগ্রো বায়োটেক।


পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টায় সূচকের উত্থান, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।

লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।

দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।

প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।


২০২৪-২৫ অর্থবছরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ৮.৫৮ শতাংশ

আপডেটেড ২ জুলাই, ২০২৫ ২৩:৩৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৪-২৫ অর্থবছরে (জুলাই-জুন) ৪৮ বিলিয়ন ডলার বা ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছেন দেশের উদ্যোক্তরা। রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে ৪৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।

বুধবার (০২ জুলাই) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৫২ শতাংশ, পোশাক খাতে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ, প্ল্যাস্টিক পণ্যে ১৬ দশমিক ২১ শতাংশ, হোম টেক্সটাইলে ২ দশমিক ৪২ শতাংশ প্রবদ্ধি হয়েছে। অন্যদিকে পাটজাত পণ্যে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ, কাচজাত পণ্যে ৩৮ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

কারখানাগুলোতে ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটি এবং মাসের শেষে এনবিআরের শাটডাউনে দুইদিন বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে জুন মাসে রপ্তানি আয় সাড়ে ৭ শতাংশের বেশি কমেছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন মাসে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই আয় ছিল ৩ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

মে মাসে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছিল ৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই আয় ছিল ৪ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। এপ্রিল মাসে রপ্তানি আয় ছিল ৩ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার।


১২ কেজি এলপিজির দাম কমল ৩৯ টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোক্তা পর্যায়ে বেসরকারি খাতের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম কেজিতে কমল ৩ টাকা ৩০ পয়সা। চলতি জুলাইয়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৩৬৪ টাকা। গত মাসে দাম ছিল ১ হাজার ৪০৩ টাকা। অর্থাৎ জুলাইয়ে ১২ কেজিতে দাম কমেছে ৩৯ টাকা।

বুধবার (০২ জুলাই) বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ সংস্থাটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ নতুন দাম ঘোষণা করেন। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে নতুন দর কার্যকর হয়েছে।

সংস্থাটি প্রতি মাসেই এলপিজির দাম নির্ধারণ করে। তবে বাজারে নির্ধারিত দামে এলপিজি বিক্রি না হওয়ার অভিযোগ আছে। এলপিজির ১২ কেজি সিলিন্ডার সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় গৃহস্থালির কাজে।

বিইআরসির নতুন দর অনুযায়ী, বেসরকারি এলপিজির মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক/ভ্যাট) দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ১১৩ টাকা ৬৪ পয়সা। গত মাসে তা ছিল ১১৬ টাকা ৯৪ পয়সা। অর্থাৎ এ মাসে দাম কেজিতে কমেছে ৩ টাকা ৩০ পয়সা। এই হিসাবে বিভিন্ন আকারের এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারিত হবে।

সরকারি কোম্পানির সরবরাহ করা এলপিজির সাড়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৮২৫ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির (অটোগ্যাস) দাম প্রতি লিটার ৬২ টাকা ৪৬ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত মাসে তা ছিল ৬৪ টাকা ৩০ পয়সা।

২০২১ সালের এপ্রিল থেকে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে আসছে বিইআরসি। এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়।

প্রতি মাসে এলপিজির এই দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। এই সৌদি সিপিকে ভিত্তিমূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি। আমদানিকারক কোম্পানির চালান (ইনভয়েস) মূল্য থেকে গড় করে পুরো মাসের জন্য ডলারের দাম হিসাব করে বিইআরসি।


ছয় মাস নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলবে নিউমুরিং টার্মিনাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আগে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ছয় মাসের জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে। গতকাল মঙ্গলবার অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

বৈঠক শেষে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, চট্টগ্রাম বন্দরই সিদ্ধান্ত নেবে, কারা এটি পরিচালনা করবে। তবে দরপত্র ডাকা হবে না। এটা হবে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে এবং ছয় মাসের জন্য। আজ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

টার্মিনালটি ১৭ বছর ধরে দেশীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে এনসিটি পরিচালনাকারী সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৬ জুলাই।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ৭ জুলাই থেকে নৌবাহিনীকে এই টার্মিনাল পরিচালনার ভার দেওয়া হতে পারে। বন্দরের সহায়তায় নৌবাহিনী আগামী ছয় মাস টার্মিনালটি পরিচালনা করবে।

এই টার্মিনালে জেটি আছে পাঁচটি। এই পাঁচ জেটিতে চারটি সমুদ্রগ্রামী জাহাজ ও অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী একটি জাহাজ ভিড়তে পারে। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল। জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানো, স্থানান্তরসহ নানা কাজ হয় এই টার্মিনালে।

নৌবাহিনীকে পরিচালনার ভার দেওয়ার আগে গত ১৮ জুন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক সভায় টার্মিনালটি বন্দরের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এ জন্য মাসে ৭ কোটি করে ৬ মাসের জন্য ৪২ কোটি টাকা খরচের সরকারি অনুমোদনের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে চিঠিও দিয়েছিল বন্দর। তবে বন্দর এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।

গত শনিবার নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বন্দর কর্মকর্তাদের বৈঠকে বন্দরের সহায়তায় নৌবাহিনীর মাধ্যমে টার্মিনালটি পরিচালনার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। বন্দর ভবনের সম্মেলনকক্ষে সেই বৈঠক হয়েছিল।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী নভেম্বর মাসে চুক্তি হবে।

বিশ্বব্যাংকের সহযোগী ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) এই টার্মিনালে ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার বা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে। সেই চুক্তির আগপর্যন্ত টার্মিনালের পরিচালনার ভার থাকতে পারে নৌবাহিনীর হাতে।


প্রসাধনীর ওপর থেকে অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার চায় ব্যবসায়ীরা

প্রসাধনী সামগ্রীর উপর স্বাভাবিক শুল্কায়ন মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবার (০১ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ কসমেটিকস অ্যান্ড টয়লেট্রিজ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। ছবি: ফোকাস বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

আমদানি করা প্রসাধনী সামগ্রীর ওপর থেকে অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার না করলে আগামী ৭ জুলাই এনবিআর ভবন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কসমেটিকস ও টয়লেট্রিজ আমদানিকারকরা।

মঙ্গলবার (০১ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নতুন বাজেটে প্রসাধনী সামগ্রীর ওপর দেড়শ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত এক মানববন্ধনে ব্যবসায়ীরা এই হুঁশিয়ারি দেন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে লিপ কেয়ার, ফেস ক্রিম, পাউডারসহ বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রীর দাম কম হলেও শুল্ক বৃদ্ধির কারণে দেশের বাজারে বেড়েছে দাম। এতে বাজারে বাড়ছে অবৈধ পথে আসা প্রসাধনীর সরবরাহ। এতে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারানোর শঙ্কাও প্রকাশ করছেন ব্যবসায়ীরা।

বাজেটে প্রসাধনী পণ্যের ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানোর প্রস্তাব বৈধ আমদানিকে নিরুৎসাহিত করবে বলে আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ কসমেটিকস অ্যান্ড টয়লেট্রিজ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিটিআইএ)। তাদের মতে, শুল্ক বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রা পাচার বাড়াবে, বাজারে নকল ও মানহীন পণ্যের দৌরাত্ম্য তৈরি করবে এবং ২৫ লাখের বেশি মানুষ বেকার হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

সংগঠনটির দাবি, এই শুল্ক কাঠামো বাস্তবায়নের ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে এবং দেশের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের উপর সরাসরি অর্থনৈতিক চাপ বাড়াবে।

বাংলাদেশ কসমেটিকস অ্যান্ড টয়লেট্রিজ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জহিরুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘বর্তমানে আমদানিকৃত প্রসাধনী সামগ্রীর ওপর যে ন্যূনতম শুল্কহার বাস্তবায়ন করা হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক বাজারদরের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। এটি দেশের বৈধ আমদানির পথকে পুরোপুরি বন্ধ করে দেবে, যা পরিণামে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাবে। বাজার ভরে যাবে নকল ও নিম্নমানের পণ্যে, যা শুধু ভোক্তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে ফেলবে না, বরং হাজার হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী এবং তাদের কর্মচারীরা জীবিকা হারাবেন।’

সাধারণ সম্পাদক মো. সাহিদ হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টার অন্যতম লক্ষ্য হলো নতুন নতুন ব্যবসা সৃষ্টির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। তবে, চলতি বাজেটে আমদানিকৃত প্রসাধনী পণ্যের উপর ১৫০% পর্যন্ত ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য বৃদ্ধি বাংলাদেশ ২.০-এর লক্ষ্য এবং প্রধান উপদেষ্টার অভিন্ন লক্ষ্যের সম্পূর্ণ বিরোধী।

এরপরও চলতি বাজেটে এসব পণ্যের ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, যা দেশের প্রায় ২৫ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান ঘিরে থাকা এই খাতের ওপর এক সরাসরি আঘাত। এই বৈষম্যমূলক করনীতি কেবল বৈধ ব্যবসার পরিপন্থী নয়, বরং দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের স্বার্থের সঙ্গেও সাংঘর্ষিক—যারা আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।

সাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিপুলসংখ্যক মানুষ কর্মসংস্থান হারাবে। চোরাচালান, ভুল ঘোষণা (misdeclaration) ও রাজস্ব ফাঁকির ঝুঁকি বহুগুণে বাড়বে। বেকারত্ব বাড়ায় সামাজিক অস্থিরতা বাড়বে।’

চোরাচালান বাড়ার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি সিলেটে প্রসাধনীসহ শুল্ক বেড়েছে এমন সাত কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ করেছে বিজিবি। যা আমাদের আশঙ্কাকে সত্য প্রমাণিত করে। মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রসাধনী ব্যবসায়ী, অ্যাসোসিয়েশনের অন্যান্য নেতা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


বিশ্ববাজারে আরও কমেছে তেলের দাম, উৎপাদন বাড়াচ্ছে ওপেক

আপডেটেড ৩০ জুন, ২০২৫ ২২:৩০
বাণিজ্য ডেস্ক

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ঝুঁকি কমে এসেছে। সেই সঙ্গে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক তেল উৎপাদন বৃদ্ধি করবে—মন খবর বাজারে আসায় তেলের বাজারে স্বস্তি ফিরেছে। এ পরিস্থিতিতে আজ সোমবার (৩০ জুন) বিশ্ববাজারে তেলের দাম প্রায় ১ শতাংশ কমেছে।

আগস্ট মাসের জন্য ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৬৬ সেন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৬৭ দশমিক ১১ ডলার। সেপ্টেম্বর মাসের জন্য দাম আরও কমেছে। সে ক্ষেত্রে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮৩ সেন্ট কমে গিয়ে ৬৫ দশমিক ৯৭ ডলার হয়েছে। সেই সঙ্গে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুড বা ডব্লিউটিও ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯৪ সেন্ট বা ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমে ৬৪ দশমিক ৫৮ ডলারে নেমে এসেছে।

গত সপ্তাহে বড় ধরনের দরপতনের মুখে পড়েছিল তেলের বাজার। সাপ্তাহিক দরপতনের দিক থেকে ২০২৩ সালের মার্চ মাসের পর গত সপ্তাহে দাম কমেছে সবচেয়ে বেশি। তবে সামগ্রিকভাবে জুন মাসে তেলের দাম বেড়েছে। আজ সোমবার (৩০ জুন) শেষ দিনের দামের পূর্বাভাসসহ ধারণা করা হচ্ছে, জুন মাসে তেলের দাম ৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের একটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর তেলের দাম বাড়তে থাকে। শেষ পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করলে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার পর তা দ্রুত নেমে আসে ৬৭ ডলারে।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইজি মার্কেটসের বিশ্লেষক টনি সাইকামোর বলেন, বাজারে যে আতঙ্কজনিত বাড়তি মূল্য ছিল, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পর তা অনেকটাই মুছে গেছে।’

এদিকে ওপেক ও সহযোগী জোটের চারজন প্রতিনিধি জানিয়েছেন, তারা আগস্ট মাসে প্রতিদিন ৪ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন বাড়াতে যাচ্ছেন। মে, জুন ও জুলাই মাসেও একই পরিমাণে উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। আগামী ৬ জুলাই ওপেক ও সহযোগী দেশগুলোর বৈঠকে বসার কথা। এপ্রিল মাসে উৎপাদন হ্রাসের ধারার থেকে বের হওয়ার পর এটি হবে পঞ্চম দফায় উৎপাদন বৃদ্ধি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় তেল খনির সংখ্যা আরও ছয়টি কমে দাঁড়িয়েছে ৪৩২-এ, অক্টোবর ২০২১ সালের পর যা সর্বনিম্ন। এ তথ্য দিয়েছে খনিজ খাতের প্রতিষ্ঠান বেকার হিউজ।


প্রবাসী আয়ে রেকর্ড, চলতি অর্থবছরে এলো ৩০ বিলিয়ন ডলার

জুনের প্রথম ২৮ দিনে এলো আড়াই বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি রেমিট্যান্স খাতে এক নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে দেশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষ হতে এখনো দুদিন বাকি থাকলেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ ইতোমধ্যে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে। টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা ধরে)। এটি দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২৪.৭৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল, যা এবার ছাপিয়ে গেছে। ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান গতকাল রোববার এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

চলতি জুন মাসের প্রথম ২৮ দিনেই প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২.৫৪ বিলিয়ন ডলার (২৫৪ কোটি), যা প্রায় ৩১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। মাসের বাকি দিনগুলোতেও একই ধারা বজায় থাকলে জুন শেষে মোট রেমিট্যান্স ২.৭০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বিশেষজ্ঞদের মতে, হুন্ডি প্রতিরোধে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা, বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রণোদনা, প্রবাসীদের জন্য ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবার সম্প্রসারণ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি—এসবই এই রেকর্ড প্রবাহে সহায়ক হয়েছে। চলতি বছর প্রাপ্ত পুরো রেমিট্যান্স এসেছে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে।

মাসভিত্তিক প্রবাহের চিত্র

২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জুলাই মাসে এসেছে ১৯১ কোটি ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি, নভেম্বরে ২২০ কোটি এবং ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স। নতুন বছরের শুরুতে জানুয়ারিতে এসেছে ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২৫২ কোটি, মার্চে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি এবং মে মাসে এসেছে ২৯৭ কোটি ডলার। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, মার্চ মাসে ৩৩০ কোটির বেশি ডলার এসেছে, যা দেশের ইতিহাসে একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স।

চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের রিসার্চ ফেলো ও অর্থনীতিবিদ এম হেলাল আহমেদ বলেন, ‘এটি শুধু সংখ্যাগত সাফল্য নয়, বরং দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার প্রতিফলন। সঠিক নীতিমালা, প্রযুক্তি-সমৃদ্ধ ব্যাংকিং অবকাঠামো এবং আইনগত পদক্ষেপ একত্রে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়িয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও এই অর্থপ্রবাহ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্বস্তি দিয়েছে, ডলারের বাজারে চাপ কমিয়েছে এবং আমদানি ব্যয় মেটাতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। তবে এই ধারা টিকিয়ে রাখতে হলে বহুমুখী শ্রমবাজার, স্বচ্ছ অভিবাসন প্রক্রিয়া ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুসারে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের (জুলাই থেকে ২৮ জুন) মধ্যে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৩০.০৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬.৫ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরে এই পরিমাণ ছিল ২৩.৭৪ বিলিয়ন ডলার।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের রেমিট্যান্সবান্ধব নীতিমালা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের আস্থা ও সহযোগিতাই এই সাফল্যের পেছনে মূল চালিকা শক্তি।

২০২৪-২৫ অর্থবছর বাংলাদেশের রেমিট্যান্স খাতে এক নতুন ইতিহাস রচনা করেছে। এই গতি ধরে রাখতে হলে হুন্ডি প্রতিরোধ কার্যক্রম আরও জোরদার করা, প্রবাসীদের আস্থার জায়গা সুসংহত রাখা এবং বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিবেশ আরও সহজতর করা অপরিহার্য। রেমিট্যান্স এখন শুধু অর্থপ্রবাহ নয়, বরং অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার অন্যতম কৌশলগত হাতিয়ার।


পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার দুই কোটি যানবাহন, আয় আড়াই হাজার কোটি টাকা

আপডেটেড ২৬ জুন, ২০২৫ ১৯:৩৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনকারী অবকাঠামো পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর ৩ বছরপূর্তি ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। ২০২২ সালের ২৬ জুনের এই দিনে বহু প্রতিক্ষিত পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। এরপর এক মুহুর্তের জন্য সেতুতে যান চলাচল বন্ধ হয়নি। আর এই তিন বছরে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭১ হাজার ৬৯২টি যান পারাপারে টোল আদায় হয়েছে ২ হাজার ৫ শ’ ৪ কোটি ৬৭ লাখ ৬২ হাজার ৮শ’ টাকা।

পদ্মা সেতু দক্ষিণের মানুষের বিড়ম্বনা লাঘব করে এগিয়ে যাওয়ার প্রতীক এখন। উত্তাল নদী পারপারের ভোগান্তি থেকে শুধু মুক্তিই দেয়নি এই সেতু পাল্টে দিয়েছে দক্ষিণের আর্থ সামাজিক অবস্থাও। উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত, শিল্প কারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্যেও যুগান্তকারী পরিবর্তন। খুলে গেছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার।

সেতুর উপর তলায় সড়ক পথ ও আর নিচ দিয়ে ছুটছে ট্রেন। রাতদিন দ্রত বেগে পদ্মার উপর দিয়ে চলছে ট্রেন ও সড়ক পথের যাত্রা। পদ্মা সেতুর ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন হলেও পরদিন ২৬ জুন এই দিনে পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়। পরের বছর ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতুর রেলপথ উদ্বোধন হয়। পদ্মা সেতু হয়ে চালু হয় ঢাকা-ভাঙ্গা নতুন রেল নেটওয়ার্ক। আর ২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর রেল লিঙ্ক প্রকল্প পুরোপুরি চালু হয়। এদিন রাজধানী থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে ভাঙ্গা হয়ে নতুন পথে নড়াইল ও যশোর অতিক্রম করে খুলনা পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। রাজধানী থেকে মাত্র সাড়ে ৩ ঘন্টায় খুলনা ও বেনাপোল পৌছানো যাচ্ছে। তাই এখন দক্ষিণের মানুষ সড়ক ও ট্রেন পথের সুফল পাচ্ছে।

এর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পায়রা ও রামপালের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হয় পদ্মা সেতু প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা খুঁটি ব্যবহার করে। সেতু উপর দিয়ে যাওয়া উচ্চ ক্ষমতার ইন্টারনেট লাইন ব্যবহার হচ্ছে। সেতুতে নির্মাণ করে রাখা গ্যাস লাইন ব্যবহারে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে দক্ষিণের জনপদ, এখন অপেক্ষা এখন। তাই খুশি সবাই।

পদ্মা সেতুর দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়াদ বলেন, কোন হেসেল ছাড়াই টানা দিন বছর সেতুতে নিরবিচ্ছিন্নভাবর যান পারাপার করা হয়। এটি একটি বড় মাইলফলক। পদ্মা সেতুর দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) যুগ্ম সচিব আলতাফ হোসেন সেখ বলেন, দেশের এই অবকাঠামো যেমন মানুষের উপকারে লাগছে, আবার রাজস্ব আয়ও হচ্ছে। সেতু ব্যবহারে টোল আদায় আরও সহজ করা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই চলন্ত অবস্থায়ই টোল পরিশোধ করা যাবে।

স্বপ্নের সেতু চালুর তিন বছরে পারাপার হয়েছে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭১ হাজার ৬৯২টি। এর মধ্যে মাওয়া দিয়ে প্রবেশ করে ৯৬ লাখ ৭১ হাজার ১১২টি যান। আর ৯৮ লাখ ৫৮০টি যান জাজিরা প্রান্ত দিয়ে পদ্মা সেতুতে প্রবেশ করে। মাওয়া থেকে ১ লাখ ২৯ হাজার ৪শ’৬৮ বেশি যান জাজিরা প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করে পদ্মা সেতু অতিক্রম করে।

গত ৫ জুন পদ্মা সেতুতে এক দিনে রেকর্ড পরিমান ৫ কোটি ৪৩ লাখ ২৮ হাজার টাকার টোল আদায় হয়েছে। এই ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫২ হাজার ৪৮৭টি যানবাহন পারাপার হয়। পদ্মা সেতুতে একদিনে সর্বোচ্চ টোল আদায় ও যানবাহন পারাপারের নতুন রেকর্ড এটি। এর আগে ২০২২ সালের ২৬ জুন পদ্মা সেতুর যান চলাচলের শুরুর দিনে সর্বোচ্চ ৫১ হাজর ৩১৬টি যানবাহন পারাপারের রেকর্ড ছিল। আর ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল ইদুল ফতরের আগে সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড ছিল ৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার ৭শ' টাকা।

নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়াদ বলেন, সেতু চালুর প্রথম বছর ৫৬ লাখ ৯৪ হাজার ৮৯৯টি যানবাহন পারাপারে টোল আদায় হয়েছে ৭৯৮ কোটি ৬০ লাখ ৯৩ হাজার ৭শ’ টাকা। দ্বিতীয় বছর ৬৮ লাখ ১ হাজার ৩৭৪টি যানের বিপরীতে টোল পাওয়া যায় ৮৫০ কোটি ৪৩ লাখ ৫৬ হাজার ৩শ’ ৫০ টাকা। আর তৃতীয় বছর ২৫ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত ৬৯ লাখ ৯৫ হাজার ২২৯টি যান পারাপারে টোল আদায় হয় ৮৬১ কোটি ২২ লাখ ১৮ হাজার ৮৫৯ টাকা। মূল পদ্মা সেতু ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের দীর্ঘ। তবে অ্যাপ্রোচসহ প্রায় ১০ কিলোমিটার। সেতু নিরাপত্তাসহ ট্রাফিক আইন মেনে পদ্মা সেতুতে যানাবাহানের নির্বিঘ্ন চলাচলে সেতু এবং দুই প্রান্তের সড়ক জুড়ে অত্যাধুনিক ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সেতুতে যানবাহানের গতিও বৃদ্ধি করে দুই পারের এক্সপ্রেসওয়ের মতই ঘন্টায় সর্বোচ্চ গতি করা হয়েছে ৮০ কিলোমিটার।


পুঁজিবাজার: ঢাকা-চট্টগ্রামে সূচকের বড় উত্থান, বেড়েছে লেনদেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পুঁজিবাজারে চতুর্থ কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাজারে সবকটি সূচকের উত্থান হয়েছে, বেড়েছে লেনদেন এবং বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

সারাদিনের লেনদেনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১৫ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৮ পয়েন্ট।

লেনদেনে অংশ নেওয়া ৪০০ কোম্পানির মধ্যে ২৯৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৪৬ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। বিশেষ করে লভ্যাংশ দেওয়া ভালো কোম্পানির এ ক্যাটাগরির ২২০ কোম্পানির মধ্যে ১৫৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

ডিএসই ব্লক মার্কেটে ২৭ কোম্পানির ২৬ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। ব্র্যাক ব্যাংক সর্বোচ্চ ১৫ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।

সারাদিনে ডিএসইতে ৪১৩ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩৭২ কোটি টাকা।

১০ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষে ইন্দো বাংলা ফার্মাসিটিক্যালস এবং ৫ শতাংশ দাম কমে তলানিতে ভ্যানগার্ড এএমএল রুপালি ব্যাংক ব্যালেন্স ফান্ড।

এদিন লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ প্রতিষ্ঠান হলো- লাভেলো আইসক্রিম, স্কয়ার ফার্মা, ব্রাক ব্যাংক, সী পার্ল, বিচ হ্যাচারি, ইন্দো বাংলা ফার্মা, বিএটিবিসি, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ফাইন ফুডস ও মিডল্যান্ড ব্যাংক।

চট্টগ্রামেও উত্থান

ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের উত্থান হয়েছে, সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৫ পয়েন্ট।

লেনদেন হওয়া ২৩৩ কোম্পানির মধ্যে ১২১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৭৯ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

সিএসইতে মোট ৪৩ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৯ কোটি টাকা।

১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রি এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস।


banner close