দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সবগুলো সূচক বিদায়ী সপ্তাহে বেড়েছে। এর ফলে টাকার অঙ্কে লেনদেন বাড়ার পাশাপাশি শেয়ারবাজারে বাজার মূলধন বেড়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সব সূচকের উত্থানেও টাকার অঙ্কে লেনদেন কমেছে।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩২.৬১ পয়েন্ট বা ০.৬৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৬৬.৫৩ পয়েন্টে।
অন্য সূচকগুলোর মধ্যে- ডিএসই-৩০ সূচক ১৮.৭৭ পয়েন্ট বা ০.৯৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯১৩.০৪ পয়েন্টে।
ডিএসই শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১১.২১ পয়েন্ট বা ০.৯৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৬১.৮৫ পয়েন্টে।
এ ছাড়া ডিএসএমইএক্স সূচক ৩০.১৩ পয়েন্ট বা ২.৮৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৪.৩২ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৭টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে।
এর মধ্যে দর বেড়েছে ২০১টি, কমেছে ১৫০টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৬টি প্রতিষ্ঠানের।
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৭১ কোটি ২৩ লাখ ৭০ হাজার শেয়ার ৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৪৬ বার হাতবদল হয়।
টাকার অঙ্কে যার বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৩ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৮৯০ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার টাকার।
অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১৭২ কোটি ৯৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা বা ৯.১৫ শতাংশ।
বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪০ কোটি ৩১ লাখ ১০ হাজার টাকা।
আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৫৮৭ কোটি ৬০ লাখ ২০ হাজার টাকায়।
অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৩ হাজার ৬৪৭ কোটি ২৯ লাখ ১০ হাজার টাকা বা ০.৫৬ শতাংশ।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৯৭.১৪ পয়েন্ট বা ০.৬৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৪৪৯.০৫ পয়েন্টে।
সিএসইর অন্য সূচক সিএসসিএক্স ৬৯.০৫ পয়েন্ট বা ০.৭৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৭৯৭.৩৯ পয়েন্টে।
অন্য দুটি সূচকের মধ্যে সিএসই-৫০ সূচক ১১.২৯ পয়েন্ট বা ১.০৩ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক ৫.০১ পয়েন্ট বা ০.৫৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে- ১ হাজার ১০৭.৬৫ পয়েন্টে এবং ৯৩৯.৬০ পয়েন্টে।
এ ছাড়া সিএসই-৩০ সূচক ১১৮.২০ পয়েন্ট বা ১.০০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৮৭৭.৭১ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩০০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে।
এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৬২টি, কমেছে ১১৩টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টির।
সপ্তাহটিতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৮৮ টাকার।
আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৮৩ কোটি ৭৬ লাখ ৬১ হাজার ৫৪ টাকার।
অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ৬২ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৯৬৫ টাকা বা ৭৪.৩০ শতাংশ।
১৫ খাতে মুনাফায় বিনিয়োগকারীরা
বিদায়ী সপ্তাহে (১৯-২৩ জানুয়ারি’২৫) শেয়ারবাজারের ১৫ খাত থেকে মুনাফা পেয়েছে বিনিয়োগকারীরা। কারণ আলোচ্য সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক রিটার্নে দর বেড়েছে ১৫ খাতে। এর ফলে এই ১৯ খাতের মুনাফা হয়েছে বিনিয়োগকারীদের। একই সময়ে সাপ্তাহিক রিটার্নে দর কমেছে ৫ খাতে। এর ফলে এই ৫ খাতে বিনিয়োগকারীদের লোকসান হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, আলোচ্য সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি মুনাফা হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে। এই খাতে বিদায়ী সপ্তাহে দর বেড়েছে ৫.০০ শতাংশ। ৩.৬০ শতাংশ দর বেড়ে সাপ্তাহিক রিটার্ন তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বস্ত্র খাত। একই সময়ে ৩.৪০ শতাংশ দর বেড়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান সিরামিকস খাত।
সাপ্তাহিক রিটার্নে অন্য ১৪ খাতের মধ্যে- সেবা ও আবাসন খাতে ২.৯০ শতাংশ, কাগজ ও প্রকাশনা খাতে ২.৮০ শতাংশ, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ২.৮০ শতাংশ, সিমেন্ট খাতে ০.৮০ শতাংশ, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ০.৮০ শতাংশ, ট্যানারি খাতে ০.৮০ শতাংশ, প্রকৌশল প্রযুক্তি কাতে ০.৬০ শতাংশ, বিবিধ খাতে ০.৪০ শতাংশ, ব্যাংক খাতে ০.৩০ শতাংশ, জেনারেল ইন্স্যুরেন্স খাতে ০.৩০ শতাংশ, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ০.২০ শতাংশ এবং পাট খাতে ০.১০ শতাংশ দর বেড়েছে।
ডিএসইর পিই রেশিও কমেছে
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর (ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ) পিই রেশিও (সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত) কমেছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশেও কমেছে ০.০১ পয়েন্ট বা ০.১০ শতাংশ। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ৯.৩৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ৯.৩৭ পয়েন্ট।
খাতভিত্তিক হিসাবে পিই রেশিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যাংক খাতে ৬.৬ পয়েন্ট, সিমেন্ট খাতে ১৩.৫ পয়েন্ট, সিরামিকস খাতে ৩৩৩.২ পয়েন্ট, প্রকৌশল খাতে ১৯.২ পয়েন্ট, আর্থিক খাতে ২৭.৭ পয়েন্ট, খাদ্য খাতে ১৩.৯ পয়েন্ট, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৫.৭ পয়েন্ট, সাধারণ বিমা খাতে ১২.৯ পয়েন্ট, আইটি খাতে ২০.৭ পয়েন্ট, পাট খাতে ৪৬.২ পয়েন্ট, বিবিধ খাতে ৩৩.১ পয়েন্ট, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ৫.১ পয়েন্ট, কাগজ খাতে ৩৬.৬ পয়েন্ট, ওষুধ খাতে ১১.৬ পয়েন্ট, সেবা-আবাসন খাতে ১০.৩ পয়েন্ট, ট্যানারি খাতে ২৮.৩ পয়েন্ট, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ৬৭.৭ পয়েন্ট, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ১৩.৪ পয়েন্ট ও বস্ত্র খাতে ১৪.৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
আগের সপ্তাহে খাতভিত্তিক পিই রেশিও ছিল- ব্যাংক খাতে ৬.৬ পয়েন্ট, সিমেন্ট খাতে ১৩.৫ পয়েন্ট, সিরামিকস খাতে ৩২৩.৩ পয়েন্ট, প্রকৌশল খাতে ১৯.০ পয়েন্ট, আর্থিক খাতে ২৭.৪ পয়েন্ট, খাদ্য খাতে ১৪.১ পয়েন্ট, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৫.৫ পয়েন্ট, সাধারণ বিমা খাতে ১২.৫ পয়েন্ট, আইটি খাতে ১৯.৬ পয়েন্ট, পাট খাতে ৪৬.৪ পয়েন্ট, বিবিধ খাতে ৩৩ পয়েন্ট, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ৫.২ পয়েন্ট, কাগজ খাতে ৩৫.৫ পয়েন্ট, ওষুধ খাতে ১১.৫ পয়েন্ট, সেবা-আবাসন খাতে ১০.০ পয়েন্ট, ট্যানারি খাতে ২৮.১ পয়েন্ট, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ৬৫.২ পয়েন্ট, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ১৩.২ পয়েন্ট ও বস্ত্র খাতে ১৪.৩ পয়েন্ট।
ব্লক মার্কেটে ১০ কোম্পানির ৯১ কোটি টাকার বেশি লেনদেন
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ১০ কোম্পানির।
কোম্পানিগুলো হলো- এডিএন টেলিকম, এসিআই, কহিনুর কেমিক্যাল, লাভেলো আইস্ক্রিম, মিডল্যান্ড ব্যাংক, বিচ হ্যাচারি, এক্সপ্রেস ইন্স্যরেন্স, স্কয়ার ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক এবং রিলায়েন্স ওয়ান।
আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে ব্লক মার্কেটে এই ১০ কোম্পানির মোট ৯১ কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, কোম্পানিগুলোর মধ্যে ব্লক মার্কেটে এডিএন টেলিকমের সবচেয়ে বেশি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ব্লক মার্কেটে কোম্পানিটির ২৫ কোটি ৩৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা। বিদায়ী সপ্তাহে কোম্পানিটির সর্বশেষ দর ছিল ১০৪ টাকা ৪০ পয়সা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এসিআই লিমিটেডের ১৮ কোটি ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহে কোম্পানিটির সর্বশেষ দর ছিল ১৪৯ টাকা ৪০ পয়সা।
তৃতীয় সর্বোচ্চ কোহিনুর কেমিক্যালের ১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহে কোম্পানিটির সর্বশেষ দর ছিল ৫৬১ টাকা ২০ পয়সা।
সপ্তাহজুড়ে ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া অন্য ৭টি কোম্পানির মধ্যে- লাভেলো আইস্ক্রিমের ৭ কোটি ৫২ লাখ ৩০ হাজার টাকা, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ৬ কোটি ৩৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা, বিচ হ্যাচারির ৪ কোটি ৪৬ লাখ ১০ হাজার টাকা, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের ৪ কোটি ৩১ লাখ ৬০ হাজার টাকা, স্কয়ার ফার্মার ৩ কোটি ৮২ লাখ ২০ হাজার টাকা, ব্র্যাক ব্যাংকের ২ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং রিলায়েন্স ওয়ানের ২ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ১২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী ‘আলু উৎসব-২০২৫।
গতকাল শনিবার ঢাকায় বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএসএ) কার্যালয়ে আয়োজিত ‘আলু উৎসব ২০২৫- মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু এ তথ্য জানান।
মোস্তফা আজাদ বলেন, আলু উৎসব বাংলাদেশের আলুশিল্পকে বিশ্বে তুলে ধরার সুযোগ তৈরি করবে। এতে আধুনিক প্রযুক্তি, প্রসেসিং সক্ষমতা, সংরক্ষণ পদ্ধতি এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ও রপ্তানির নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন হবে। তিনি আলুর বহুমুখী ব্যবহার, রপ্তানি বৃদ্ধির কৌশল, আধুনিক হিমাগার প্রযুক্তি ও প্রক্রিয়াজাত শিল্প সম্প্রসারণের জরুরি প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আলু উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের সপ্তম এবং এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম উৎপাদনকারী দেশ হওয়ার সত্ত্বেও পর্ষাপ্ত আধুনিক সংরক্ষণ সুবিধার ঘাটতি, প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রযুক্তির অভাব এবং রপ্তানিবান্ধব নীতিমালা ও অবকাঠামো না থাকায় এ সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি।
উৎসব উপলক্ষে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে দেশ-বিদেশের শতাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। আলু উৎপাদনের নিমিত্তে বিভিন্ন উপকরণ প্রদর্শন, হিমাগারে আধুনিক পদ্ধতিতে আলু সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, মূল্যসংযোজন, রপ্তানি, কোল্ড-চেইন প্রযুক্তি, কৃষি যন্ত্রপাতি, আলু থেকে বিভিন্ন প্রকার খাদ্য তৈরি ও প্রদর্শন এবং বন্ধন শিল্পসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এতে অংশগ্রহণ করবে।
মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বিসিএসএর সিনিয়র সহসভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ, সহসভাপতি মোহাম্মদ ইউনুছ এবং পোস্ট মাস্টার কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়জুল আলমসহ বিসিএসএর অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ৪ আগস্ট ২০২৫ তারিখে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ কর্তৃক ২০২৫-২৬ কর বছরের জন্য www.etaxnbr.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল কার্যক্রম শুভ উদ্বোধন পর থেকে সম্মানিত করদাতাগণ অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়ে অদ্যাবধি ২০ লক্ষের বেশী ই-রিটার্ন দাখিল করেছেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এক বিশেষ আদেশের মাধ্যমে এ বছর ৬৫ (পঁয়ষট্টি) বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী করদাতা, মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি কর্তৃক রিটার্ন দাখিল এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশী নাগরিকগণ ব্যতীত সকল ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে। ২০২৫-২৬ করবছরে বেশ কয়েক শ্রেণির করদাতাগণকে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাদকতা হতে অব্যাহতি দেয়া হলেও তাঁরা ইচ্ছা পোষণ করলে অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। অন্যদিকে ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে কোন করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলে সমর্থ না হলে ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের নিকট সুনির্দিষ্ট যৌক্তিকতাসহ আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত/যুগ্মকর কমিশনারের অনুমোদনক্রমে তিনি পেপার রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
এবছর করদাতার পক্ষে তাঁর ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধিও অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। এছাড়া, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী করদাতাগণের ক্ষেত্রে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাদকতা না থাকলেও তাঁর পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর, ই-মেইল এড্রেস ইত্যাদি তথ্য [email protected] ই-মেইলে প্রেরণ পূর্বক আবেদন করলে আবেদনকারীর ই-মেইলে OTP এবং Registration Link প্রেরণ করা হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী করদাতাগণও ই-রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করত: সহজেই অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন।
কোনরুপ কাগজপত্র বা দলিলাদি upload আপলোড না করে সম্মানিত করদাতাগণ তাঁদের আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের প্রকৃত তথ্য ই-রিটার্ন সিস্টেমে এন্ট্রি করে সহজে ঝামেলাহীনভাবে ঘরে বসেই ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং অথবা মোবাইল ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিস (বিকাশ, নগদ ইত্যাদি) এর মাধ্যমে অনলাইনে আয়কর পরিশোধ করে ই-রিটার্ন দাখিল করে তাৎক্ষণিকভাবে নিজেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-রিটার্ন দাখিলের acknowledgement slip এবং প্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখপূর্বক স্বয়ংক্রিয়ভাবে আয়কর সনদ প্রিন্ট নিতে পারেন বিধায় দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সকল বাংলাদেশী করদাতার কাছে ই-রিটার্ন দাখিল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া সহজবোধ্য করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত বছরের ন্যায় এ বছরেও সম্মানিত করদাতাগণকে অনলাইন রিটার্ন দাখিলের জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছে। করদাতাগণ ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ বছর করদাতার ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি তথা আয়কর আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যন্টস, কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যন্টস এবং চার্টার্ড সেক্রেটারিজগণকেও ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়ার ওপর প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে।
ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যেকোন সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা প্রদানের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি কল সেন্টার স্থাপন করেছে। উক্ত কল সেন্টারের ০৯৬৪৩ ৭১ ৭১ ৭১ নম্বরে ফোন করে করদাতাগণ e-Return সংক্রান্ত প্রশ্নের তাৎক্ষণিক টেলিফোনিক সমাধান পাচ্ছেন। এছাড়া, www.etaxnbr.gov.bd এর eTax Service অপশন হতে করদাতাগণ e-Return সংক্রান্ত যে কোন সমস্যা লিখিতভাবে জানালে তার সমাধান পাচ্ছেন। অধিকন্তু, সারাদেশের সকল কর অঞ্চলে স্থাপিত ই-রিটার্ন হেল্প-ডেস্ক হতে অফিস চলাকালীন সময়ে ই-রিটার্ন দাখিল বিষয়ক সকল সেবা ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। সম্মানিত করদাতাগণ নিজ নিজ কর অঞ্চলে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে অথবা টেলিফোনের মাধ্যমে ই-রিটার্ন দাখিল সংক্রান্ত যাবতীয় সেবা গ্রহণ করছেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সকল সম্মানিত ব্যক্তি করদাতাকে ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে ২০২৫-২০২৬ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য বিনীত অনুরোধ করছে।
রপ্তানি খাত হিসেবে সিরামিক শিল্পের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরাতে ‘চতুর্থ সিরামিক এক্সপো বাংলাদেশ-২০২৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বৃহস্পতিবার এ আহ্বান জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, শুধু অভিযোগ নয়, বরং যৌক্তিক, গ্রহণযোগ্য ও বাস্তবসম্মত প্রস্তাব নিয়ে আসুন। সরকার আপনাদের সহায়ক। আপনাদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে আমরা বাধ্য। তবে সেটি হতে হবে ন্যায়সঙ্গত ও মানসম্পন্ন শিল্প-আচরণের ভিত্তিতে।
তিনি বলেন, দেশের পরিবর্তিত রাজনীতি প্রমাণ করেছে- অতীতের মতো ‘সংযোগ-নির্ভর ব্যবসা’ আর চলবে না। সময় এখন দক্ষতা, যোগ্যতা ও প্রযুক্তির।
পোশাক খাত মাত্র ১ যুগে বড় রপ্তানি খাতে পরিণত হলেও সিরামিক খাত কেনো পারছে না এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, সিরামিক কেনো সেই অবস্থায় যেতে পারছে না? কারণ আমাদের এখনও টেকসই খরচ-প্রতিযোগিতা, ডিজাইন নবায়ন, লজিস্টিক দক্ষতা, উৎপাদনশীলতা ও জ্বালানি ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদের এগুলো চিহ্নিত করে বাস্তবসম্মত সমাধানে যেতে হবে।
বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলার আয়োজক বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ)।
বিসিএমইএ সভাপতি মইনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত অ্যান্তেনিও আলেসান্দ্রো, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ এবং মেলা কমিটির চেয়ারম্যান ও বিসিএমইএ সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দীন স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
সিরামিক এক্সপোতে বাংলাদেশসহ ২৫টি দেশ থেকে ১৩৫টি প্রতিষ্ঠান ও ৩০০ ব্র্যান্ড অংশ নিচ্ছে। তাদের পাশাপাশি এ খাতের ৫০০ জন আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি ও ক্রেতা অংশ নিচ্ছে। ‘সিরামিক এক্সপো বাংলাদেশ-২০২৫’ দেশের চতুর্থ ও এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী।
এতে থাকবে তিনটি সেমিনার, জব ফেয়ার বা চাকরি মেলা, বিটুবি ও বিটুসি মিটিং, লাইভ ডেমোনস্ট্রেশন, স্পট অর্ডার, র্যাফেল ড্র ও নতুন পণ্যের উদ্বোধন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মেলা দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
উল্লেখ্য, দেশে ইতোমধ্যে টেবিলওয়্যার, টাইলস ও স্যানিটারি ওয়্যারসহ বিভিন্ন খাতের ৭০টির বেশি কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব পণ্যের স্থানীয় বাজার বছরে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার। গত ১০ বছরে এ শিল্পে উৎপাদন ও বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ১৫০ শতাংশ। বর্তমানে ৫০টির বেশি দেশে বাংলাদেশের সিরামিক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। এর মাধ্যমে বছরে আয় হচ্ছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এ শিল্প খাতে মোট বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৫ লাখ মানুষের।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোঅপারেশন (এসডিসি) এর যৌথ উদ্যোগে বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘নগর সুশাসন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন’ শীর্ষক এ কর্মশালায় বাংলাদেশের নগর সুশাসন ও স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাস্তবমুখী সমাধান ও সম্যক ধারণার ওপরে আলোকপাত করা হয়।
বাংলাদেশে দ্রুত নগরায়ণের প্রেক্ষাপটে নগর সুশাসন শক্তিশালী করা অত্যন্ত জরুরি। ভবিষ্যতের জন্য আরও স্মার্ট, বসবাসযোগ্য এবং সুবিধা ও অবকাঠামো সমৃদ্ধ শহর গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাইকা তাদের ক্যাপাসিটি ফর সিটিজ (সিফোরসি) কর্মসূচি ও এসডিসির ‘প্রবৃদ্ধি : লোকাল ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (এলইডি)’ প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিডি) সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে আসছে।
উভয় প্রকল্পই ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসে তাদের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় কর্মশালাটি অংশগ্রহণকারীদের জন্য অভিজ্ঞতা বিনিময়, সাফল্য পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যৎ দিক-নির্দেশনা অন্বেষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছে। কর্মশালায় সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি খাতের অংশীজন, শিক্ষাবিদ ও বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীরা উপস্থিত ছিলেন। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে অভিজ্ঞতা-বিনিময় সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অংশগ্রহণকারী শহরের প্রতিনিধিদের উপস্থাপনা, বাজেট প্রস্তুতকরণ, রাজস্ব বৃদ্ধি, স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নাগরিক সম্পৃক্ততা, ডিজিটাল রূপান্তর ও কর্মসম্পাদন সূচক নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি, উভয় প্রকল্পের উদ্ভাবন ও অর্জনগুলো প্রদর্শনের জন্য একটি প্রদর্শনী গ্যালারিও স্থাপন করা হয়।
কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সিফোরসি প্রকল্পটি সিটি করপোরেশনগুলোর সুশাসন ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করেছে। এতে আধুনিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ও টুলসের মাধ্যমে কাজ করা হয়েছে, যাতে সহজে সেবা প্রদান ও জবাবদিহিতা প্রক্রিয়ার উন্নয়ন করা যায়। আর এ পুরো বিষয়টি বার্ষিক সিটি গভর্নেন্স অ্যাসেসমেন্টের (সিজিএ) মাধ্যমে পরিমাপ করা হয়।
একইভাবে, ‘প্রবৃদ্ধি’ প্রকল্পটি পৌর এলাকায় স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে নেতৃত্ব দিয়েছে, প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসা পরিবেশ গড়ে তুলেছে এবং স্মার্ট অবকাঠামোর সমন্বয় সাধন করেছে। যার ফলাফল হিসেবে মিউনিসিপ্যাল কম্পিটিটিভনেস ইনডেক্সের (এমসিআই) মতো টুল তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার এবং অংশীদারদের সাথে এ কর্মশালা আয়োজনের মাধ্যমে জাইকা ও এসডিসি জাতীয় অগ্রাধিকার ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), বিশেষত এসডিজি ৯, ১১ ও ১৬ নম্বর লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে দীর্ঘমেয়াদি নগর উন্নয়নে সহায়তার ক্ষেত্রে তাদের সম্মিলিত অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
স্মার্ট, শক্তিশালী ও অধিক স্থিতিশীল নগর গঠনের লক্ষ্যে উদ্ভাবন ও অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে দেশজুড়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জোরালো আহ্বানের মাধ্যমে কর্মশালাটি শেষ হয়।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির (সিএসই) পরিচালক হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী। তিনি লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবেও দায়িত্বরত।
বৃহস্পতিবার সিএসই থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কোম্পানি আইন অনুযায়ী, আগামী ১১ ডিসেম্বর সিএসইর সাধারণ বার্ষিক সভায় (এজিএম) একজন পরিচালকের পদ শূন্য হওয়ার কথা রয়েছে। সে হিসেবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নমিনেশন জমা দেন মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী। তবে নমিনেশন জমা দেওয়ার শেষ দিনেও আর কেউ তা জমা না দেওয়ায়, মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিচালক নির্বাচিত হন।
এ কে এম মোহসেন উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে সিএসইর গঠিত নির্বাচন কমিটি এই ঘোষণা দেন। এই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- মো. শওকত আলি তালুকদার এবং ড. মো. খোরশেদ আলম তালুকদার।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ১ থেকে ৩ ডিসেম্বর ঢাকার পূর্বাচলে অবস্থিত বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হচ্ছে গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো-২০২৫। এই এক্সপোর মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের রপ্তানি সম্ভাবনা বিশ্ববাজারে তুলে ধরা এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করা।
বৃহস্পতিবার ইপিবির সম্মেলন কক্ষে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ হাসান আরিফ এক্সপো সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেন। তিনি জানান, এ বছর অনুষ্ঠানে আফগানিস্তান, চীন, ইরান, জাপান, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ক্রেতা, বিনিয়োগকারী ও সোর্সিং প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে।
এক্সপোয় বাংলাদেশের প্রধান ৮টি রপ্তানিখাত- তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য, প্লাস্টিক ও কিচেনওয়্যার, হোম ডেকর ও ফার্নিচার, ফার্মাসিউটিক্যাল এবং আইসিটি খাতের ১০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক কোম্পানি, পাইকারি ব্যবসায়ী ও সাপ্লাই চেইন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করবেন। এটি দেশের উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের জন্য নতুন বাজার সৃষ্টিতে সহায়ক হবে।
তিনদিনব্যাপী এই আয়োজনে থাকছে ১০টি বিশেষ সেমিনার, অনলাইন ও অফলাইন B2B মিটিং, ১৫০টিরও বেশি স্টল, নেটওয়ার্কিং ডিনার এবং ফ্যাশন শো। গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো-২০২৫ বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় রপ্তানি খাত এবং সম্ভাবনাময় শিল্পকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উপস্থাপনের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।
ইপিবি আশা করছে, এই এক্সপোর মাধ্যমে দেশের রপ্তানিকারীরা নতুন বাজার অনুসন্ধান, দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক চুক্তি এবং আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সুযোগ পাবেন। এছাড়া এটি বাংলাদেশের অবস্থানকে একটি নির্ভরযোগ্য সোর্সিং হাব হিসেবে বিশ্বের সামনে আরও দৃঢ়ভাবে তুলে ধরবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইপিবির মহাপরিচালক বেবী রাণী কর্মকার, মো. আকতার হোসেন আজাদ ও অন্যান্য পরিচালকরা।
বাংলাদেশ ও নেপাল বৃহস্পতিবার দ্বিপক্ষীয় বিদ্যুৎ বাণিজ্য সম্প্রসারণ, নেপালের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ উৎসাহিত করা এবং আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন শক্তিশালীকরণ নিয়ে আলোচনা করেছে।
নেপাল দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ-খাত সহযোগিতা সংক্রান্ত জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটির (জেএসসি) ৭ম সভায় এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ এবং নেপালের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন জ্বালানি, পানিসম্পদ ও সেচ মন্ত্রণালয়ের সচিব চিরঞ্জীবী চাতাউত।
জেএসসি আলোচনার আগে অনুষ্ঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ (জেডবি¬উজি) এর একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে আলোচ্য বিষয়গুলি খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং স্টিয়ারিং কমিটির বিবেচনার জন্য সুপারিশ জমা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার মো. সাইফুদ্দিন বলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ডিজিটাল রূপান্তরের অংশ হিসেবে বুধবার স্মার্ট ডিজিটাল সাবমিশন প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন করা হয়েছে। এ নতুন সিস্টেমের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্ট ও প্রকাশনা দ্রুত, নিরাপদ ও সঠিক সময়ে জমা দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা বাজারে কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও গতি বাড়াবে।
রাজধানীর নিকুঞ্জের ডিএসই টাওয়ারের মাল্টিপারপাস হলে ডিএসইর স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেমে ‘রেগুলেটরি সাবমিশন মডিউল ও সিএসই অনবোর্ডিং’ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম।
সাইফুদ্দিন বলেন, উদ্যোগটি চাইনিজ কনসোর্টিয়ামেরের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে শুরু হয়, যেখানে বিপিএমভিত্তিক কার্যপ্রবাহ অটোমেশন ধারণা গ্রহণ করা হয়। ডিএসইর ২ জন কর্মী ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জে এবং সেই অভিজ্ঞতা দেশে এনে ইন–হাউস টিমের সহায়তায় স্থানীয় সিস্টেম উন্নয়নে কাজ করেন। এর ফলে ডিএসই এখন নিজস্ব সক্ষমতায় তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও বিনিয়োগ–সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জন্য একটি কার্যকর ডিজিটাল সাবমিশন ব্যবস্থা তৈরি করতে পেরেছে, যা বাজারে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আরও শক্তিশালী করবে। প্রকল্পে সমন্বিত সহযোগিতা দিয়েছে সিডিবিএল, বিএসইসিসহ অন্যান্য প্রধান অপারেটিং সংস্থাগুলো।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আর্থিক তথ্য–জমা শুধু পিডিএফে সীমাবদ্ধ থাকবে না; ডিএসই অগ্রসর হবে এআই–পাঠযোগ্য ও মেশিন–রিডেবল ডেটা ফরম্যাট, এক্সবিআরএলভিত্তিক সাবমিশনের দিকে। এটি হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায়–পাঠযোগ্য আর্থিক তথ্য অবকাঠামোর ভিত্তি, যা স্থানীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে বাজার–গবেষণা, বিশ্লেষণ ও ডেটা–ইন্টেলিজেন্স সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে। প্রকল্পটি মূলত তথ্য–স্বচ্ছতা, মানসম্মত হিসাব ও প্রযুক্তিনির্ভর বাজার–সংস্কৃতি নির্মাণের দীর্ঘমেয়াদি প্রয়াস, যা একটি আধুনিক পুঁজিবাজার গঠনের নতুন সূচনা নির্দেশ করে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, আজ পুঁজিবাজারের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে ডিজিটাল সংযোগ আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করতে ডিএসই একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করেছে। আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তিগত অবকাঠামোতে নেতৃত্ব ধরে রাখলেও এতদিন নথি জমা ও রিপোর্টিংয়ের বড় অংশ ম্যানুয়াল ও হার্ড কপিনির্ভর ছিল, যা বিনিয়োগ কার্যচক্রকে ধীর ও জটিল করেছে; অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক আগেই অনলাইন রিপোর্টিং চালু করেছে। এই অভিজ্ঞতার আলোকে, গ্রাহককেন্দ্রিক চাহিদাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ডিএসই উন্নয়ন করেছে স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম। আজ থেকে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য, রেগুলেটরি রিপোর্ট, আর্থিক বিবরণী ও প্রয়োজনীয় নথি সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে এবং হার্ড কপি সাবমিশন পদ্ধতি পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে স্টেকহোল্ডারদের সময়, ব্যয় ও নথি-জট উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে এবং তথ্য ব্যবস্থাপনা হবে নিরাপদ, দ্রুত ও পরিবেশবান্ধব।
বিশ্ববাজারে গত কয়েক মাসে বিটকয়েনসহ বিভিন্ন ক্রিপ্টো মুদ্রার দাম কমেছে। গত ছয় মাসে ক্রিপ্টো মুদ্রার বাজার মূলধন ১ ট্রিলিয়ন ডলার বা ১ লাখ কোটি ডলার কমেছে।
ক্রিপ্টো–জগতের সবচেয়ে পরিচিত নাম হলো বিটকয়েন। জনপ্রিয়তার দিক থেকেও এটি শীর্ষে। কিন্তু অক্টোবর মাসের শুরু থেকে সেই বিটকয়েনের দামও নাটকীয়ভাবে কমছে। অক্টোবর মাসের শুরুতে বিটকয়েনের দাম ছিল রেকর্ড ১ লাখ ২৬ হাজার ডলার। সেই বিটকয়েনের দাম গত শুক্রবার, অর্থাৎ পশ্চিমা পৃথিবীর শেষ কর্মদিবসে ৮১ হাজার ডলারে নেমে আসে। গত সোমবার বাজার খোলার পর দাম কিছুটা বেড়ে ৮৮ হাজারে ডলারে ওঠে।
গোল্ড প্রাইস ডট অর্গের তথ্যানুসারে, গত এক মাসে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৯০ ডলার বেড়েছে। ছয় মাসে বেড়েছে ৭৫৪ ডলার ৪৫ সেন্ট।
দেখা যাচ্ছে, ক্রিপ্টো মুদ্রার ইতিহাসে নভেম্বর সবচেয়ে খারাপ মাস হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এমনকি বাজারের এ দুর্দশার অবসান হয়েছে কি না, তা–ও পরিস্কার নয়। জার্মানির ডয়েচে ব্যাংকের বিশ্লেষকেরা বলছেন, পরের মাসে যে বিটকয়েনের বাজার সংশোধন হবে, তা–ও নিশ্চিত নয়। এতদিন তো ব্যক্তিপর্যায়ের বিনিয়েগাকারীরা এ বাজারে অংশ নিতেন। ফলে তাদের ফটকাবাজির কারণে বাজার পড়ে যেত বা উঠত। কিন্তু বাস্তবতা হলো এখন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিটকয়েন বা ক্রিপ্টো মুদ্রার লেনদেন আরও সহজ হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এখন বাজারে বিনিয়োগ করছেন। বিটকয়েন বা ক্রিপ্টো মুদ্রার জন্য সুবিধাজনক নীতিও নেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও বিটকয়েনের বাজারে এ পতন অব্যাহত আছে।
গত কয়েক বছরের ক্রিপ্টো মুদ্রার বাজার অনেকটা শেয়ারবাজারের মতো আচরণ করেছে ঠিক, কিন্তু বর্তমানে পতনের মূল তার চেয়ে অনেক গভীরে। মূল কারণ হলো ক্রিপ্টোর বাজারে এখন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ আসছে। ফলে আগে ক্রিপ্টোর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যেমন আচরণ করতেন, এখন কিন্তু সে রকম হচ্ছে না।
সাম্প্রতিক সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে বিটকয়েনের পতন হয়েছে ৩০ শতাংশ। সেখানে মার্কিন শেয়ারবাজারের সূচক এসঅ্যান্ডপির ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে সূচকের পতন হয়েছে ৩ শতাংশ। ক্রিপ্টো–জগতের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির হোতা স্যাম ব্যাংকম্যান ২০২২ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, চলতি নভেম্বর ক্রিপ্টোর জগতে এরপর সবচেয়ে খারাপ মাস হতে যাচ্ছে।
স্টক ও ক্রিপ্টো বাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দুটি কারণে উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে। প্রথমত, ফেডারেল রিজার্ভ আবার কবে নীতি সুদহার কমাবে, তা নিয়ে একধরনের উৎকণ্ঠা। দ্বিতীয়ত, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাজারে যে বুদবুদ সৃষ্টি হয়েছে, তা কতদিন স্থায়ী হবে, নাকি সেই বুদবুদ তাদের মুখের ওপর ফেটে যাবে।
স্টকের মতো ডিজিটাল সম্পদের সঙ্গেও ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদহারের সম্পর্ক আছে। সুদহার বেশি থাকলে বিনিয়োগের খরচ বেড়ে যায় এবং তাতে বিনিয়োগকারীদের সক্ষমতা কমে যায়।
গত ১০ অক্টোবর থেকে হঠাৎ বাজার ধসের পর ক্রিপ্টো খাতের বিনিযোগকারীদের সামনে নতুন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারো চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ উসকে দিলে আতঙ্কে ব্যাপক বিক্রি শুরু হয়। এক দিনেই প্রায় ১৯ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের বাজার মূলধন কমে যায়। অনেকেই মনে করেন, ক্রিপ্টো বাজার থেকে পুরোপুরি সরে যাওয়ার এটা যথেষ্ট বড় কারণ। ফলে বিটকয়েনসহ অন্য মুদ্রাগুলো এখন আরও বেশি অস্থির হয়ে পড়েছে।
এ ধসের কারণে অনেক বিনিয়োগকারী দ্রুত সম্পদ বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। এতে একধরনের শৃঙ্খল প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়- বিটকয়েনের দাম যত কমে, বিনিয়োগকারীরা তত সেই চাপ সামলাতে তাদের সম্পদ বিক্রি করতে বাধ্য হন।
এবারের ক্রিপ্টোধসের আরেকটি কারণে আলাদা। সেটি হলো গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদিত স্পট বিটকয়েন তহবিলের মাধ্যমে বাজারে প্রবেশ করা কয়েক বিলিয়ন ডলারের নতুন মূলধন।
বাণিজ্য বাধা দূরীকরণ, পর্যটনশিল্পের বিকাশ, ঢাকা-তাসখন্দ বিমান চলাচল পুনরায় চালু, যৌথ বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বাণিজ্যিক তথ্য বিনিময় ত্বরান্বিত করার বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত উজবেকিস্তানের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত সারদর রুস্তামবায়েভ।
বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে উপদেষ্টার অফিস কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে উভয়পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে বস্ত্র, চামড়া, কৃষি, ফার্মাসিউটিক্যাল ও এগ্রো-প্রসেসিং খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক ঐতিহাসিক। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে আমরা এই সম্পর্ক আরও গভীর করতে চাই।
উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রদূত সারদর রুস্তামবায়েভ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাফল্যের প্রশংসা করেন এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির ব্যাপক সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, রাশিয়ান ফেডারেশন ভেঙে যাওয়ার পর ১৯৯২ সালের ১৫ অক্টোবর বাংলাদেশ-উজবেকিস্তানের মধ্যে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক শুরু হয়। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩৭ দশমিক ২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ৩২ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং উজবেকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আমদানি ছিল ৪ দশমিক ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ধীরে ধীরে বাড়ছে। দুই দেশই একে-অপরের জন্য সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
বৈঠকে বাণিজ্য বাধা দূরীকরণ, পর্যটন শিল্পের বিকাশ, ঢাকা-তাসখন্দ বিমান চলাচল, যৌথ বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বাণিজ্যিক তথ্য বিনিময় ত্বরান্বিত করার বিষয়েও আলোচনা হয়।
বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান ও অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. আব্দুর রহিম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে অডিট নিয়ন্ত্রণ কাঠামো শক্তিশালী করতে যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) সঙ্গে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)-এর প্রতিনিধিদল লন্ডনে এফআরসি কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছে।
বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাজ্যের নিয়ন্ত্রক মডেল সম্পর্কে গভীরতর ধারণা অর্জন এবং বাংলাদেশে অডিট তদারকি ব্যবস্থা আরও উন্নত করার উপায় খুঁজে বের করা। আইসিএবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে।
আইসিএবি প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দেন আইসিএবি সভাপতি নূর-ই খোদা আবদুল মবিন। তার সঙ্গে ছিলেন সহসভাপতি সুরাইয়া জান্নাত ও মোহাম্মদ মেহেদী হাসান, আইসিএবি যুক্তরাজ্য চ্যাপ্টারের চেয়ারম্যান একেএম ফজলুর রহমান এবং আইসিএবির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মাহবুব আহমেদ সিদ্দিক।
এফআরসি যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিচার্ড মোরিয়ার্টি, সুপারভিশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যান্থনি ব্যারেট এবং প্রফেশনাল বডিজ সুপারভিশনের পরিচালক ধ্রুব শাহ।
এফআরসি যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা তাদের নীতিনির্ভর পদ্ধতির ওপর আলোকপাত করেন। এর মধ্যে রয়েছে পাবলিক ইন্টারেস্ট এনটিটি (পিআইই)-এর স্পষ্ট সংজ্ঞা, সুষম মান নির্ধারণ এবং ঝুঁকিভিত্তিক পরিদর্শন ব্যবস্থা। তারা ‘সুপারভিশন অব সুপারভাইজার্স’ মডেলটির ওপরও গুরুত্ব দেন।
আইসিএবি মনে করে, এই অভিজ্ঞতাগুলো এফআরসি বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপ শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অগ্রাধিকারভিত্তিক ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে আরও লক্ষ্যভিত্তিক পিআইই সংজ্ঞা নির্ধারণ, ঝুঁকিভিত্তিক পরিদর্শন পদ্ধতি গ্রহণ, আইনগত স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং এমন একটি সহযোগিতামূলক নিয়ন্ত্রক পরিবেশ গড়ে তোলা যা অডিটের গুণগত মান ও পেশাগত বিকাশ- উভয়কেই সমর্থন করবে।
বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রক কাঠামোকে বৈশ্বিক সর্বোত্তম চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং আর্থিক প্রতিবেদন ও অডিটে জনআস্থা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে আইসিএবির প্রচেষ্টায় এই উদ্যোগটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) তাদের জ্বালানি নীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন অনুমোদন করেছে, যা জ্বালানির প্রাপ্যতা বৃদ্ধি ও জ্বালানি নিরাপত্তা বাড়াতে ব্যাংকের অঙ্গীকার জোরদার করবে।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতো কান্দা বলেছেন, ‘এই পরিবর্তনগুলো এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো তাদের দ্রুত বর্ধনশীল জ্বালানি চাহিদা মেটাতে সহায়তা করার জন্য এডিবির সক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যুতের নির্ভরযোগ্য বিকল্প খুঁজছে এমন দেশগুলোর জন্য পারমাণবিক বিদ্যুৎ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত বিকল্প।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এই পরিবর্তনগুলোর ফলে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগসহ পারমাণবিক শক্তি খাতে এডিবির সহায়তা দেয়ার পথ তৈরি হলো। পারমাণবিক বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে আগ্রহী উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোকে সহায়তা দিতে এডিবি কঠোর মূল্যায়ন ও নিরাপত্তা, সুরক্ষা এবং পরিবেশগত ও সামাজিক সুরক্ষার সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করবে।
পারমাণবিক শক্তির বিষয়ে আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম চর্চা অনুসরণ করতে এবং কঠোর মানদণ্ড মেনে চলতে এডিবি উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোকে সহায়তা করার জন্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।
এ সংশোধনী ব্যাংকটিকে এমন প্রকল্পগুলোতে অর্থায়ন করার সুযোগ দেবে যা মিথেন (যা সবচেয়ে শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাসগুলোর মধ্যে একটি) নিয়ন্ত্রণ করে এবং বিদ্যমান তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রগুলোতে নিয়মিত গ্যাস ফ্লেয়ারিং রোধ করে।
এই পরিবর্তনগুলো ২০২১ সালের অক্টোবরে অনুমোদিত বিদ্যমান বিদ্যুৎ নীতির বাধ্যতামূলক নির্ধারিত পর্যালোচনার অংশ, যা এডিবির অংশীদারদের সঙ্গে বিস্তৃত পরামর্শের ভিত্তিতে করা হয়েছে।
২০২৪ সালে এডিবি প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন ডলার জ্বালানি প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। এছাড়া দ্রুত বাড়তে থাকা আঞ্চলিক জ্বালানি চাহিদা পূরণে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে এডিবি নীতি ও নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করতেও সহায়তা করছে।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বেড়েছে। গত সোমবার বাজারে ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশার ভিত্তিতে এক শতাংশ দাম বেড়েছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে স্পট স্বর্ণের দাম এক দশমিক দুই শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি চার হাজার ১১১ দশমিক ৮৬ ডলারে পৌঁছেছে। এছাড়া ডিসেম্বর মাসের জন্য মার্কিন স্বর্ণের ফিউচার শূন্য দশমিক চার শতাংশ বেড়ে চার হাজার ৯৪ দশমিক ২ শতাংশ প্রতি আউন্সে স্থির হয়েছে।
টিডি সিকিউরিটিজের কমোডিটি স্ট্র্যাটেজি প্রধান বার্ট মেলেক বলেন, বাজারে দিন দিন আরও বিশ্বাস জন্মাচ্ছে যে, ইউএস ফেডারেল রিজার্ভ ডিসেম্বরে সুদের হার কমানোর পথে রয়েছে।
নিউইয়র্ক ফেডের প্রেসিডেন্ট জন উইলিয়ামস শুক্রবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সুদের হার ‘নিকট ভবিষ্যতে’ কমানো যেতে পারে, তবে এতে ফেডের মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ্য বিঘ্নিত হবে না এবং এটি কর্মসংস্থানের বাজারে পতন রোধ করতে সাহায্য করবে।
সোমবার সিএমই ফেডওয়াচ টুল জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ৭৯ শতাংশ দাঁড়িয়েছে।
মেলেক বলেন, আমরা ডেটার জন্য অপেক্ষা করছি এবং প্রত্যাশা করা হচ্ছে যে, এটি কিছুটা কমতে পারে। মুদ্রাস্ফীতি খুব বেশি উচ্চ না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব কিছু স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধির দিকে ইঙ্গিত করছে।
স্টোনএক্সের বিশ্লেষক রোনা অকনেল বলেন, ফেডের সুদের হার কমানোর বিতর্ক এবং বিশেষ করে ইউক্রেন সম্পর্কিত ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশের পরিবর্তন, স্বর্ণের দাম আরও বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। তবে আমাদের দৃষ্টিতে এটি এখনো চার হাজার থেকে ৪ হাজার ১০০ ডলারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
প্রতিবেদনেব বলা হয়েছে, স্পট রুপা প্রতি আউন্সে ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৫০ দশমিক ৮৪ ডলারে পৌঁছেছে। এছাড়া প্লাটিনাম ২ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৫৪৫ দশমিক ৯১ ডলারে দাঁড়িয়েছে।