২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশে, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ২২ শতাংশ। পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে স্থির মূল্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২ দশমিক ১৪ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ১ দশমিক ৯৬, ৪ দশমিক ৪৮ ও ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৮৭, ৪ দশমিক ৪৭ ও ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। চার প্রান্তিকের গড় হিসেবে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশে।
চলতি মূল্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকে জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৪০১ বিলিয়ন টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৩ হাজার ১৭৭ বিলিয়ন টাকা।
খাতভিত্তিক প্রবৃদ্ধি
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে কৃষি খাতের পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে স্থির মূল্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ০১ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪ দশমিক ১১ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ০ দশমিক ৭৬, ১ দশমিক ২৫ ও ২ দশমিক ৪২ শতাংশ।
অন্যদিকে শিল্প খাত তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ১ দশমিক ০৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ২ দশমিক ৪৪, ৭ দশমিক ১০ ও ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ।
সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি কিছুটা মন্থর হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ, যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ২ দশমিক ৪১, ৩ দশমিক ৭৮ ও ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, সামগ্রিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, পুরো ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় বেশ কম।
তিনি বলেন, ‘বার্ষিক প্রবৃদ্ধির প্রাথমিক অনুমান ছিল ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ, কিন্তু সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সেটিতে পৌঁছানো এখন আর সম্ভব নয় বলে মনে হচ্ছে।’
ড. জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘এটি হবে কোভিড-পরবর্তী সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি, যদিও ২০২০ সালের মহামারির সময়কার প্রবৃদ্ধির তুলনায় কিছুটা ভালো।’ তিনি অর্থবছর ২০২৪–২৫-কে অর্থনীতির জন্য ‘বিপর্যয়কর বছর’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
২০২৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য পুরোপুরি শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। যুক্তরাজ্যের উন্নয়নশীল দেশগুলোর ট্রেডিং স্কিম (ডিসিটিএস) কর্মসূচির আওতায় এই সুবিধা অব্যাহত থাকবে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠকে এ ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশবিষয়ক বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক, এলডিসি গ্রাজুয়েশন ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালু করার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে ২০২৬ সালের নভেম্বরে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে চলেছে বাংলাদেশ। এটি আমাদের অর্থনৈতিক যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে এবং এ পরিবর্তন বিপুল পরিমাণ সুযোগ তৈরির পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে। সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, দ্রুততম সময়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর বিষয়ে সরকার আন্তরিক। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এটি নিয়ে কাজ করছে। টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কার্জক্রম পরিচালনার জন্য অপারেটর নিয়োগ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত বলেন, বাণিজ্য সুবিধা কর্মসূচির আওতায় ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পণ্য যুক্তরাজ্যের বাজারে সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে, যা এলডিসি থেকে উত্তরণের সময় দেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিমুখী বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করা তার সফরের লক্ষ্য। নতুন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা খুঁজে বের করতে এবং পারস্পরিক সমৃদ্ধির সুযোগ বাড়াতে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রপ্তানি মো. আব্দুর রহিম খান উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের গ্রামীণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ১০ কোটি ডলার (প্রায় এক হাজার কোটি টাকা) ঋণ সহায়তা দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাইরে অবস্থিত গ্রামীণ ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে এই ঋণ দেবে সংস্থাটি, যা একটি প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা হবে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও এডিবির মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ইআরডি কার্যালয়ে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। এডিবির বাংলাদেশ অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সেকেন্ড স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম-সাইজড এন্টারপ্রাইজেস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ফেজ-২)’ নামের এ প্রকল্পের আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে কমপক্ষে ১৫ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এডিবির এই প্রকল্প ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অন্তর্ভুক্ত করতে সহায়তা করবে এবং পরিবেশবান্ধব পণ্য উৎপাদনে উৎসাহ দেবে, যার মাধ্যমে নতুন বাজার সৃষ্টি ও রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে।
এতে আরও বলা হয়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাইরে অবস্থিত উদ্যোক্তারা ব্যাংকিং সুবিধা থেকে বঞ্চিত—এই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এর মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় টেকসই ও বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সংখ্যা ও আকার বৃদ্ধি পাবে।
প্রকল্পের আওতায় ৯ লাখ ৫০ হাজার ডলারের কারিগরি সহায়তাও দেওয়া হবে, যাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অংশগ্রহণকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়। এ ছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ ও আর্থিক সেবায় প্রবেশাধিকার বাড়াতে প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি, ওয়ার্কশপ আয়োজন, সবুজ অর্থায়ন এবং ভ্যালুচেইন-ভিত্তিক অর্থায়ন পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং বলেন, বাংলাদেশ অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় ও টেকসই রূপান্তরে কাজ করছে। এই প্রক্রিয়ায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা খাতের বিকাশই হবে দারিদ্র্য হ্রাস, আঞ্চলিক বৈষম্য কমানো এবং প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার মূল চাবিকাঠি।
তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিশেষ করে নারীদের মালিকানাধীন গ্রামীণ উদ্যোক্তারা দীর্ঘমেয়াদি মূলধনের সহজলভ্যতা পাবেন। পাশাপাশি তাদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কারিগরি সক্ষমতাও বাড়ানো হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বর্তমানে ৬৯টি দেশের মালিকানাধীন। প্রতিষ্ঠানটি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিশীল ও টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন খাতে সহায়তা দিচ্ছে।
রাজধানীতে পাঁচ দিনব্যাপী শুরু হতে যাচ্ছে ২০তম জাতীয় ফার্নিচার মেলা-২০২৫। ‘আমার দেশ, আমার আশা দেশীয় ফার্নিচারে সাজাবো বাসা’ স্লোগানে বসছে দেশের ফার্নিচার শিল্পের সবচেয়ে বড় আয়োজন। আগামী মঙ্গলবার থেকে মেলা চলবে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার ভার্চ্যুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি (বিএফএসএমএস)। এসময় ২০তম জাতীয় ফার্নিচার মেলার বিস্তারিত তুলে ধরেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও বিএফএসএমএস’র ভাইস চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল আউয়াল।
তিনি বলেন, দেশীয় ফার্নিচার শিল্প দেশের শতভাগ চাহিদা পূরণ করছে এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এবারের মেলার মূল লক্ষ্য হলো দেশীয় ফার্নিচার শিল্পের বিকাশ ঘটানোর পাশাপাশি রপ্তানি বাজার আরও সম্প্রসারণ করা।
এবারের মেলায় মোট ৪৮টি শীর্ষস্থানীয় ফার্নিচার কোম্পানি অংশ নিচ্ছে জানিয়ে শেখ আব্দুল আউয়াল বলেন, অংশগ্রহণকারীরা সর্বাধুনিক নকশা ও পণ্যের প্রদর্শনী করবে ২৭৮টি স্টলে।
অংশগ্রহণকারী উল্লেখযোগ্য ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে আখতার, হাতিল, ব্রাদার্স, নাদিয়া, আয়ত, ওমেগা, জেএমজি, নাভানা, অ্যাথেনাস, পারটেক্স, রিগাল ও লেগাসি।
১৪ তারিখ সকালে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার রাজদর্শন হলে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। আইসিসিবির গুলনকশা (হল–১), পুষ্পগুচ্ছ (হল–২) এবং রাজদর্শন (হল–৩) হলে অনুষ্ঠিত হবে এবারের এই বর্ণাঢ্য আয়োজন।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়কালে তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। এ সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ৯.৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৭৯ শতাংশ বেশি।
সম্প্রতি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত বাংলাদেশের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের দেশভিত্তিক রপ্তানি তথ্য অনুযায়ী, মোট আরএমজি রপ্তানির ৪৭.৬০ শতাংশ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি বাজার হিসেবে শীর্ষে রয়েছে। যার পরিমাণ ৪.৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ২.০১ বিলিয়ন ডলার (২০.১৮ শতাংশ), কানাডায় ৩৩৬.৭০ মিলিয়ন ডলার (৩.৩৮ শতাংশ) এবং যুক্তরাজ্যে ১.২২ বিলিয়ন ডলার (১২.২৩ শতাংশ)।
বছরভিত্তিক তুলনায় ইইউতে রপ্তানি বেড়েছে ৩.৬৪ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৮.৬০ শতাংশ, কানাডায় ১৩.৬৩ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যে ৬.৭৪ শতাংশ।
বাংলাদেশের আরএমজি রপ্তানি অপ্রচলিত বাজারে বৃদ্ধি পেয়েছে ০.৭৭ শতাংশ। নিটওয়্যার খাতে রপ্তানি বেড়েছে ৪.৩১ শতাংশ এবং ওভেন খাতে বেড়েছে ৫.৪১ শতাংশ।
অপরদিকে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে দেশের রপ্তানি আয় ৫.৬৪ শতাংশ বেড়ে ১২.৩১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রপ্তানি আয় ছিল ১১.৬৬ বিলিয়ন ডলার।
তবে সামগ্রিক ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি ৪.৬১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় দাঁড়ায় ৩.৬৩ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ছিল ৩.৮০ বিলিয়ন ডলার।
রপ্তানি আয়ে তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত যথারীতি শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে এ খাত থেকে আয় হয়েছে ৯.৯৭ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৭৯ শতাংশ বেশি।
সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণসংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা করছে সরকার। কিন্তু আসন্ন বোরো মৌসুমে এ নীতিমালার বাস্তবায়নে সরকারের সিদ্ধান্ত ডিলারদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে, যার কারণে দেশে সারের সংকট আরও প্রকট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে এ নীতিমালার বাস্তবায়ন পেছানোর দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএ)।
একইসঙ্গে সার ডিলারদের কমিশন বাড়িয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে সার ডিলার ও আমদানিকারকদের এই সংগঠন।
বুধবার ধানমণ্ডির সীমা ব্লোসম টাওয়ারের একটি কনফারেন্স রুমে এক মতবিনিময় সভা ও সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। এতে সারাদেশের ডিলারদের উপস্থিতিতে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন আহমেদ।
কফিল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সারের ডিলার নিয়োগের নতুন নীতিমালা করে ইউনিয়ন ভিত্তিক নতুন ডিলার নিয়োগ করা হবে, যা এই সময়ের জন্য বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নয়। কারণ, বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী একজন ডিলারকে একটি গুদাম ও একটি বিক্রয়কেন্দ্র পরিচালনা করতে হয়। কিন্তু নতুন নীতিমালা অনুযায়ী একজন ডিলারকে ৩টি বিক্রয়কেন্দ্র এবং একটি গুদাম পরিচালনা করতে হবে। এতে করে ডিলারদের পরিচালনা ব্যয় তিন গুণ বেড়ে যাবে। কিন্তু কমিশন আগের মতো প্রতি কেজিতে ২ টাকা থাকবে। এতে করে সার সরবরাহে সংকট তৈরি হতে পারে।
তিনি বলেন, এখন হুট করে এ নীতিমালা হলে সারের সরকারি দামে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, পরিবহন খরচ এবং নিরাপত্তাজনিত সমস্যার কারণে কোনোভাবেই ডিলারশিপ ব্যবসাটি আর কার্যকর থাকবে না। আর এখন নতুন করে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঠিক সময় নয়। কারণ, বর্তমানে মিনি পিকসিজন এবং সামনে বোরোর ভরা মৌসুম আসন্ন। এই মৌসুমে নতুন নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে গেলে মাঠে এক ধরনের অরাজকতা তৈরি হতে পারে।
জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে ডিলারশীপ প্রথা চালু হওয়ার পর থেকে প্রতিটি উপজেলায় এবং পরবর্তীতে ২০০৯ সালে জারিকৃত ডিলার নিয়োগ ও নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিটি ইউনিয়নের ডিলাররা সারাদেশে সুষ্ঠুভাবে সার সরবরাহ করে আসছে। সারাদেশে সব মিলিয়ে ১০ হাজার ৮০০ জন ডিলার এবং প্রায় ৪৫ হাজার খুচরা বিক্রেতা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নাম ও লোগো ব্যবহার করে ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে ঋণ দেওয়ার ভুয়া প্রলোভন দেখাচ্ছে একটি প্রতারক চক্র। এ বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত মঙ্গলবার (এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এই সতর্কতা জারি করে)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ ও ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল’-এর নাম ও লোগো ব্যবহার করে https://dbbloan.com, https://bblloan.com ও https://www.bdloan71.com নামের কিছু ভুয়া ওয়েবসাইট ও অ্যাপ চালানো হচ্ছে। এসব প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক বা আইএমএফ–এর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
এই সব অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশনের সময় ব্যবহারকারীর নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর, ই-মেইল, ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরসহ নানা সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে করে সাধারণ মানুষ আর্থিক প্রতারণার শিকার হতে পারেন বা আইনি ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া জনসাধারণের কাছ থেকে ঋণ নেওয়া বা দেওয়ার উদ্দেশে অনলাইন বা অফলাইন যেকোনো প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করা আইনত দণ্ডনীয়।
পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন, ২০২৪-এর ১৫(২) ধারা অনুযায়ী, এই ধরনের প্রতারণার জন্য কোনো ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড অথবা ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
সাধারণ জনগণকে এ ধরনের ভুয়া ওয়েবসাইট ও অ্যাপে কোনো ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান বা আর্থিক লেনদেন না করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশের বাজারে আবারও বেড়েছে স্বর্ণের দাম। এবার ভরিতে ৬ হাজার ৯০৬ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ৯ হাজার ১০১ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। যা দেশের ইতিহাসে মূল্যবান এই ধাতুর সর্বোচ্চ দাম।
বুধবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। আজ বৃহস্পতিবার থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ৯ হাজার ১০১ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতিভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫ টাকা ও ৯৪ ক্যারেটের প্রতিভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৭১ হাজার ৮৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪২ হাজার ৩০১ টাকা।
এদিকে, বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
এদিকে, বুধবার বিশ্ববাজারে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো স্বর্ণের দাম আউন্স প্রতি ৪ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। বছরের শুরু থেকে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ এবং ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগকারীরা ধারাবাহিকভাবে স্বর্ণে বিনিয়োগ বাড়িয়ে চলেছেন। ফলে এর দাম এই পর্যন্ত ৫০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।
এদিকে ফ্রান্সে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বাজারে অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে পদত্যাগ করে আগাম নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
অনিশ্চিত সময়ে ঐতিহ্যগতভাবে ‘নিরাপদ আশ্রয়’ হিসেবে বিবেচিত স্বর্ণ বুধবার আউন্স প্রতি ৪,০০৬.৬৮ ডলারে পৌঁছায়। যদিও সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ডলার অন্যান্য মুদ্রার বিপরীতে শক্ত অবস্থান বজায় রেখেছে। রূপার দামও নিজস্ব রেকর্ডের কাছাকাছি অবস্থান করছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু অংশের বন্ধ হয়ে যাওয়া বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ আরো বাড়িয়েছে। কারণ, এরফলে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য-বিশেষ করে কর্মসংস্থান সংক্রান্ত-প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে, যা ফেডারেল রিজার্ভের নীতিনির্ধারণে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে।
অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ব্যাংকের বিশ্লেষক টেলর নাগেন্ট লিখেছেন, ‘স্বর্ণের দামের দ্রুত উত্থানকে সমর্থন করছে এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) এ বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রয়, বিশেষ করে চীনের শক্তিশালী চাহিদা। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মুদ্রাস্ফীতি অনিশ্চয়তা স্বর্ণের প্রতি আগ্রহ আরো বাড়িয়েছে।’
অন্যদিকে, স্বর্ণবাজারে ব্যস্ততার মধ্যেও এশিয়ার শেয়ার বাজারগুলো তুলনামূলকভাবে নিস্তেজ ছিল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) খাতে অতিরিক্ত বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যদিও এআই-নির্ভর প্রবৃদ্ধি অনেক সূচক ও কোম্পানিকে রেকর্ড উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
সরকার দেশের কর ব্যবস্থাকে আরো স্বচ্ছ, প্রযুক্তিনির্ভর ও ব্যবসাবান্ধব করতে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান। তিনি বলেন, রাজস্ব প্রশাসনে শৃঙ্খলা ও দক্ষতা আনার লক্ষ্যে ডিজিটালাইজেশন এবং কর আইন সংস্কার শীর্ষ অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বুধবার আগারগাঁওয়ে এনবিআর কার্যালয়ে ফরেন ইনভেস্টর্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ফিকি) এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে মিট দ্যা বিজনেস শীর্ষক অংশীজন সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, আয়কর আইন ২০২৩-এর ইংরেজি সংস্করণ মুদ্রণের জন্য সরকারি প্রেসে পাঠানো হয়েছে, কাস্টমস আইন প্রযুক্তিগত পর্যালোচনায় রয়েছে এবং ভ্যাট আইনও চূড়ান্ত পর্যায়ে। ‘খুব শিগগিরই তিনটি প্রধান কর আইন- আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট- ইংরেজিতে অফিসিয়ালভাবে প্রকাশিত হবে,’ তিনি বলেন।
রহমান বলেন, কর ফেরত প্রদানের প্রক্রিয়া সহজ করতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ‘গত বছর আমরা করদাতাদের নগদ ফেরত দিতে পারিনি, এবার তা বাস্তবায়নের পথে আছি,’ তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, আগামী বছর থেকে করপোরেট ট্যাক্স রিটার্ন সম্পূর্ণ অনলাইনে জমা দিতে হবে, যা স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে। ‘তথ্য বিকৃতি বা পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে না- এতে দেশে একটি স্বচ্ছ কর সংস্কৃতি গড়ে উঠবে,’ এনবিআর চেয়ারম্যান মন্তব্য করেন।
রহমান জানান, চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে রাজস্ব আদায় ২০ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে গত বছর প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ৩ শতাংশ।
এনবিআর শিগগিরই ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো (NSW) সিস্টেমে দ্বৈত কর চুক্তি (DTA) সম্পর্কিত সার্টিফিকেট ইস্যু প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ডিজিটাল করবে বলে তিনি জানান। ‘এখন পর্যন্ত সিঙ্গেল উইন্ডোর মাধ্যমে ৬ লাখ ২৫ হাজারের বেশি সার্টিফিকেট ও পারমিট ইস্যু হয়েছে, যার ৮০ শতাংশ জমার এক ঘণ্টার মধ্যে দেওয়া হয়,’ তিনি যোগ করেন।
অনিয়মের বিষয়ে সতর্ক করে রহমান বলেন, ‘অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি করদাতাদের হয়রানির বিরুদ্ধেও শূন্য সহনশীলতার (জিরো টলারেন্স) অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
ন্যায্য শুল্ক মূল্যায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি অবশ্যই লেনদেনের প্রকৃত মূল্যের ভিত্তিতে হতে হবে। স্ফীত লক্ষ্যমাত্রা বা অতিরিক্ত আদায়ের কোনো প্রয়োজন নেই।’
তিনি উপসংহারে বলেন, ‘একটি আধুনিক, ন্যায্য ও প্রযুক্তিনির্ভর কর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা সরকারের আস্থা, ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা ও করদাতাদের সন্তুষ্টি একসঙ্গে নিশ্চিত করতে চাই।’
আকাশযানে ব্যবহৃত জ্বালানি জেট ফুয়েলের দাম বাড়িয়েছে সরকার। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে বাংলাদেশি ক্রেতার ক্ষেত্রে প্রতি লিটার ৯৬ দশমিক ৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৯ দশমিক ২৯ টাকা করা হয়েছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে দেশি ও বিদেশি ক্রেতার থেকে প্রতি লিটার শূন্য দশমিক ৬৩৩৩ ডলার থেকে বাড়িয়ে শূন্য দশমিক ৬৫৪৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ভাড়া কিছুটা বেড়ে যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
নতুন এই দর বুধবার রাত ১২টা থেকে কার্যকর হয়েছে।
এর আগে বুধবার নতুন এই দাম ঘোষণা করেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। দাম বাড়ানোর আগে বিইআরসির কার্যালয়ে একটি গণশুনানি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, বিপিসি প্রতিব ছর প্রায় ৬ লাখ মেট্রিক টন জেট ফুয়েল আমদানি করে থাকে, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলোর চাহিদা পূরণে ব্যবহৃত হয়।
এছাড়া দেশীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কনডেনসেট পরিশোধনের মাধ্যমে সীমিত পরিমাণে জেট ফুয়েল উৎপাদন করে বিপিসিকে সরবরাহ করেন।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বুধবার সূচক ও লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। মোট ৩৯৯টি কোম্পানির ১৮ কোটি ২৯ লাখ ৩৫ হাজার ৪৮৪টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট হাতবদল হয়েছে। যার আর্থিক পরিমাণ দাঁড়ায় ৬১১ কোটি ৮৭ লাখ ৪৬ হাজার ১৫০ টাকা।
ডিএসইতে মোট বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২০ হাজার ১,২৭ কোটি ৪৯ লাখ ৭৭ হাজার ৯১৩ টাকা। যা গত মঙ্গলবারের চেয়ে এক হাজার ৯৫৫ কোটি ৪৮ লাখ ৩২ হাজার ৩০৫ টাকা কম। গত মঙ্গলবার বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ২২ হাজার ৮২ কোটি ৯৮ লাখ ১০ হাজার ২১৮ টাকা।
ডিএসই ব্রড ইনডেক্স (ডিএসইএক্স) আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৩৯.১৪ পয়েন্ট কমে ৫,৩৩৭.৮৬ পয়েন্টে দাঁড়ায়। ডিএস-৩০ সূচক ১৩.৪২ পয়েন্ট কমে ২,০৫১.৫৪ পয়েন্টে এবং শরিয়াহ সূচক (ডিএসইএস) ১২.৩৭ পয়েন্ট কমে ১,১৪৯.১৮ পয়েন্টে নেমে আসে।
লেনদেনকৃত কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১০৫টির, কমেছে ২২১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৭৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের পরিমাণে শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো- সিভিও পেট্রোলিয়াম, রূপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ওরিয়ন ইনফিউশন, সোনালি পেপার, কে অ্যান্ড কিউ, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স এবং সিম টেক্স।
দরবৃদ্ধির শীর্ষে রয়েছে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, গ্রীণ ডেল্টা, সিম টেক্স, নিটল ইন্স্যুরেন্স, সিভিও পেট্রোলিয়াম, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ইন্ট্র্যাকো রি-ফুয়েলিং এবং তাক্কাফুল ইন্স্যুরেন্স।
দরপতনের শীর্ষে রয়েছে ইউনিয়ন ব্যাংক, এসআইবিএল, এক্সিম ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, এনবিএল, পিপলস লিজিং, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফারইস্ট ফিন্যান্স, কে অ্যান্ড কিউ এবং প্রিমিয়ার লিজিং।
রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে দুই দিনব্যাপী ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল এক্সপো-২০২৫’ শুরু হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্পের সর্বশেষ উদ্ভাবনগুলো প্রদর্শনের লক্ষ্যে ইকো এক্সপো এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এই প্রদর্শনীটি এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন বাংলাদেশের পোশাকশিল্প স্থিতিশীল ও শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে।
এই এক্সপোর মাধ্যমে শিল্প বিশেষজ্ঞ, উদ্ভাবক এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার এক অনন্য সুযোগ তৈরি হবে।
এক্সপোতে চীন ছাড়াও অন্যান্য দেশ থেকে শীর্ষস্থানীয় প্রস্তুতকারকরা তাদের উদ্ভাবনী পণ্য প্রদর্শন করবেন। এতে অত্যাধুনিক ফাইবার, সুতা, টেকসই ফেব্রিক, ট্রিমস, অ্যাকসেসরিজ, ডাইস্টাফ এবং পোশাকসহ বিভিন্ন ধরনের টেক্সটাইল ও পোশাকের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রদর্শিত হবে।
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করার অব্যাহত প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ২০২৬ সালে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের বিপরীতে প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ডলারের তহবিল প্রদানের সম্ভাবনা রয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আগামী বছর অন্তত ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য এডিবি বাংলাদেশকে প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ডলার প্রদান করতে পারে।
ম্যানিলাভিত্তিক বহুপাক্ষিক উন্নয়ন অর্থায়নকারী এ প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি ২০২৬ সালের জন্য তাদের কান্ট্রি প্রোগ্রামিং মিশন (সিপিএম) এ অর্থায়ন পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত করেছে। এছাড়া যেকোনো জরুরি অবস্থা বা অগ্রাধিকার প্রকল্পে বাংলাদেশের জন্য অতিরিক্ত তহবিল হিসেবে ‘স্ট্যান্ডবাই ফান্ড’ রাখা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাসসকে বলেন, এডিবি সিপিএম গত সপ্তাহে তাদের মিশন সম্পন্ন করেছে। তারা ইআরডির সঙ্গে একটি বৈঠকে বসেছিল। তারা ২০২৬ সালে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশকে অন্তত প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের তহবিল প্রদানের আশ্বাস দিয়েছে।
এডিবির সিপিএম একটি বার্ষিক প্রতিবেদন, যা বাংলাদেশে এক বা একাধিক বছরের জন্য পরিকল্পিত ঋণ এবং অনুদানগুলোর বিস্তারিত উপস্থাপন করে। যেমন- ২০২৩-২৫ সালের ঋণ পাইপলাইন।
ম্যানিলাভিত্তিক ঋণদাতা এ প্রতিষ্ঠান পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ খাতকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। খাতগুলো হলো- জলবায়ু সহনশীল উন্নয়ন, জ্বালানি দক্ষতা, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি), সামাজিক সুরক্ষা এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য কাঠামোগত সংস্কার ।
ইআরডি কর্মকর্তা বলেন, দেশের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশে এডিবি চলমান প্রকল্পে আঞ্চলিক সংযোগ এবং করিডোর উন্নয়নের পাশাপাশি অবকাঠামো, জ্বালানি, পানিসম্পদ, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও জলবায়ু সংক্রান্ত বিষয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
তিনি জানান, এই বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি এডিবি বাংলাদেশের সঙ্গে তার ভবিষ্যতের কার্যক্রমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্যবিমোচন, আঞ্চলিক সংযোগ, স্বাস্থ্য খাতের ডিজিটালাইজেশন, দক্ষতা উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং নদী পুনরুদ্ধারের ওপরও জোর দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি বিবেচনা করে এডিবি দেশের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতেও সহায়তা প্রদান করবে, যাতে সুষ্ঠুভাবে উত্তরণ নিশ্চিত করা যায়।
ইআরডি কর্মকর্তা বলেন, সিপিএম ছাড়াও সম্প্রতি একটি ত্রিপক্ষীয় পোর্টফোলিও পর্যালোচনা সভা (টিপিআরএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশে এডিবি-অর্থায়নে চলমান ১৫টি প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে।
টিপিআরএম-এ জানানো হয়, দরপত্র প্রক্রিয়ায় সময়সীমা কমেছে এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য আর্থিক চুক্তি স্বাক্ষরের আগে আরও ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, আমরা প্রকল্প প্রস্তুতিতে আরও বেশি মনোযোগ দিচ্ছি। যেসব ক্ষেত্রগুলোতে বেশি সময় লাগে, সেগুলো চিহ্নিত করছি এবং এর ফলে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রকল্প পরিচালকদের দক্ষতা উন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে এবং প্রকল্প পরিচালনা কমিটি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিগুলোকেও আরও সুবিন্যস্ত করা হচ্ছে।
ইআরডি কর্মকর্তা জানান, সরকারের অনুরোধে এডিবি টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া করিডোর নিয়ে একটি গবেষণা করছে, যাতে এই করিডোরের পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কেন্দ্রগুলোর উন্নয়ন বিবেচনা করে বিদ্যমান অবকাঠামোগত সুবিধা প্রদান করা যায়।
তিনি বলেন, ঋণদানকারী সংস্থাটি সরকারকে টাকা মূল্যের বন্ড চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মতামত জানতে চাচ্ছি।
চলতি বছর সরকার এ পর্যন্ত এডিবির সঙ্গে ১.৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ৮টি প্রকল্প চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্যে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা হিসেবে এসেছে।
ইআরডি কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে, তাই এডিবি বাংলাদেশের জন্য ট্রানজিশন সহায়তার ওপর জোর দিচ্ছে।
এডিবির তহবিল আঞ্চলিক সংযোগ, রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ, দক্ষ জনশক্তি উন্নয়নের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন খাতে সুবিধা দেবে।
২০২৬ সালের ১০টি প্রকল্পের প্রস্তাবিত তহবিল পরিকল্পনা অনুসারে, দক্ষিণ এশীয় উপআঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (সাসেকের) উদ্যোগের আওতায় চলমান ঢাকা-সিলেট ৪-লেন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য এডিবি ৩০ কোটি ডলার, নারায়ণগঞ্জ সবুজ ও স্থিতিশীল নগর উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ১১৫.৮ মিলিয়ন ডলার এবং চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে টেকসই জ্বালানি উন্নয়ন এবং সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়নে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এডিবির এক কর্মকর্তা সর্বশেষ টিপিআরএমকে জানান, বাংলাদেশের জন্য ২০২৬ সালের প্রস্তাবিত পোর্টফোলিও একটি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থাপনা হিসেবে রাখা হয়েছে। কারণ বর্তমানে দেশে পঞ্চবার্ষিকী উন্নয়ন পরিকল্পনার মতো কোনো মধ্যমেয়াদি বা দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা নেই। যেমন পাঁচ বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনা।
এডিবি সাধারণত তার সিপিএসের আওতায় বাংলাদেশকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। বর্তমান সিপিএস (২০২১-২৫) চলতি বছর শেষ হতে চলেছে। পরবর্তী সিপিএস প্রণয়ন সম্পর্কে জানতে চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, পরবর্তী সিপিএসে অগ্রাধিকার নির্ধারণের জন্য তারা এডিবির সাথে আলোচনা করবেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের কারণে আগামী বছরগুলোতে বেসরকারি খাতের সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে।
ইআরডির তথ্যানুসারে, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বহুপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদার এডিবি গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২.৫২ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে এবং ২ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এডিবি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বহুপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদার। বাংলাদেশে এডিবির বর্তমান পোর্টফোলিও প্রায় ১১.৮ বিলিয়ন ডলার, যেখানে ৫১টি চলমান প্রকল্প রয়েছে।
১৯৭৩ সাল থেকে এডিবি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, স্থানীয় সরকার, পরিবহন, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, পানিসম্পদ, সুশাসন ইত্যাদি খাতে সহায়তা প্রদান করেছে যা। এতে মোট ৩৩.৯৫১ বিলিয়ন ডলার ঋণ এবং ৫৭১.২ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেওয়া হয়েছে। সূত্র: বাসস