রোববার, ১২ অক্টোবর ২০২৫
২৬ আশ্বিন ১৪৩২

ঢালাও দরপতনে এক সপ্তাহে বাজার মূলধন উধাও ৮ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১১ অক্টোবর, ২০২৫ ২২:২৬

গত সপ্তাহজুড়ে শেয়ারবাজারে ছিল টানা দরপতন। লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যেসব শেয়ারের দাম বেড়েছে, তার চেয়ে প্রায় চারগুণ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। এমন ঢালাও পতনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন এক সপ্তাহে কমেছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। একই সঙ্গে বড় ধরনের পতন হয়েছে মূল্যসূচকেও, যদিও দৈনিক গড় লেনদেন কিছুটা বেড়েছে।

ডিএসইর তথ্যানুযায়ী, গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৯টির, কমেছে ২৯৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির। অর্থাৎ দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার হার ছিল প্রায় চারগুণ বেশি, যা বাজারে নেতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট করে।

সপ্তাহের শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৭ লাখ ১৭ হাজার ১২৬ কোটি টাকায়, যা আগের সপ্তাহের ৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৩ কোটি টাকার চেয়ে ৭ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ০৯ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছিল ১ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা বা ০ দশমিক ২২ শতাংশ।

মূলধনের সঙ্গে কমেছে প্রধান মূল্যসূচকও। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৩২ দশমিক ০৭ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ হ্রাস পায়। আগের সপ্তাহে সূচকটি সামান্য বেড়েছিল ০ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা ০ দশমিক ০১ শতাংশ।

অন্যদিকে ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানিগুলোর সূচক ‘ডিএসই শরিয়াহ’ গত সপ্তাহে কমেছে ৩৭ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ২২ শতাংশ, যেখানে আগের সপ্তাহে এটি বেড়েছিল ০ দশমিক ৫১ পয়েন্ট। ভালো কোম্পানিগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ‘ডিএসই-৩০’ সূচকও সপ্তাহজুড়ে কমেছে ৪৮ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমেছিল ২১ দশমিক ২০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ০১ শতাংশ।

তবে দরপতনের মাঝেও লেনদেনের গতি কিছুটা বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিন গড়ে ৬৫৭ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের গড় ৬২০ কোটি ১০ লাখ টাকার চেয়ে ৩৭ কোটি ২ লাখ টাকা বা ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেশি।

লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষে ছিল সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল। কোম্পানিটির শেয়ারে প্রতিদিন গড়ে ২১ কোটি ৫০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ২৭ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে ছিল সোনালী পেপার, প্রতিদিন গড়ে ১৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে রয়েছে রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যার প্রতিদিনের গড় লেনদেন ১৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ছিল সামিট এলায়েন্স পোর্ট, ওরিয়ন ইনফিউশন, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং, রবি আজিয়াটা এবং খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ।


হিলিবন্দর দিয়ে আমদানি করা কাঁচামরিচ থেকে ১৯.১৩ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হিলি স্থলবন্দরের মাধ্যমে শেষ চার মাসে ৬৬২টি ট্রাকে মোট ৫ হাজার ১৮৫ টন কাাঁচামরিচ বাংলাদেশে আমদানি করা হয়েছে। এই আমদানি থেকে মোট ১৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করা হয়েছে। হিলি স্থলবন্দর কাস্টমস বিভাগের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন বাসসকে শনিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দরের মাধ্যমে ৬৬২টি ট্রাকে ৫ হাজার ১৮৫ মেট্রিক টন কাঁচামরিচ ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে।

নিজাম উদ্দিন আরও বলেন, কাঁচামরিচ একটি পচনশীল পণ্য হওয়ায় আমরা দ্রুত সব কাস্টম কার্যক্রম সম্পন্ন করে সময়মতো পণ্য রিলিজ করছি। প্রতিদিন আমদানি হওয়া মরিচ ট্রাক থেকে হিলি স্থলবন্দরে খালি করার পর ব্যবসায়ীরা তা দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠান।

তিনি আরও বলেন, বন্দর দিয়ে অন্যান্য পণ্যের আমদানি ও রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। হিলি স্থলবন্দর কাস্টমস বিভাগ নির্ধারিত অতিরিক্ত রাজস্ব আহরণ লক্ষ্য বাস্তবায়নে অক্লান্তভাবে কাজ করছে।

দিনাজপুর ল্যান্ড পোর্ট ইমপোর্ট এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়েই এসব কাঁচামরিচ আমদানি করা হচ্ছে।


বিসিসিসিআইর নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিসিআই) নব-নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়েছে। বিসিসিসিআইর প্রশাসক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোসাম্মাত নারগিস মুরশিদার সভাপতিত্বে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গত বৃহস্পতিবার এই দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়। নব-নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অধিকাংশ সদস্য এই সময় উপস্থিত ছিলেন বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ৮ অক্টোবর বিসিসিসিআই নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সাইদ আলী ২৪ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটির ফলাফল ঘোষণা করেন। এতে মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সভাপতি এবং জামিলুর রহমান সাধারণ সম্পাদক (সেক্রেটারি জেনারেল) নির্বাচিত হন। অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল বা প্রার্থী না থাকায় সভাপতি পদসহ ২৪ জন কার্যনির্বাহী সদস্য ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের জন্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। বিসিসিসিআইর দ্বিবার্ষিক নির্বাচনটি পরিচালনা করেন চেম্বারের প্রশাসক মোসাম্মাত নারগিস মুরশিদা।

নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা হলেন- সভাপতি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, সিনিয়র সহ-সভাপতি হলেন যথাক্রমে হান জিংচাও, এ. জেড. এম. আজিজুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জি. এম. কামরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি হলেন মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান খান, চাও চংচং, খন্দকার আতিউর রহমান, মোহাম্মদ মাসুদ আলী খান

এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে জামিলুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নাসিমা জাহান বিজলী (বিন্তি), অর্থপরিচালক পদে ফারহান আহমেদ খান, পরিচালক প্রশাসন পদে তালুকদার মো. জাকারিয়া হোসেন, শিল্প ও বাণিজ্য পরিচালক পদে মোহাম্মদ সাজ্জাদ উন নিউয়াজ, জনসংযোগ পরিচালক পদে মো. জিন্নাতুল ইসলাম নির্বাচিত হন।

অন্যান্য নির্বাচিত পরিচালকরা হলেন, মো. আমানুর রহমান, মো. আবদুল্লাহ যাবের, মো. সেলিমুজ্জামান মোল্লা, সান পিন, এটিএম অলতাফ হোসেন (লোটাস), মো. কামরুজ্জামান, মো. রাকিবুল হক, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আল-আজাদ, আসিফ হক রূপো এবং এস. এম. মুস্তাফা জলাল।

দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিদায়ী প্রশাসক মোসাম্মাত নারগিস মুরশিদা চেম্বারের আয়-ব্যয়ের সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন এবং নবনির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মদ খোরশেদ আলমের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। এ সময় তিনি নবনির্বাচিত সভাপতির প্রতি আস্থা প্রকাশ করে বলেন, কঠিন সময়ে তিনি চেম্বারের পাশে থেকে কাজ করেছেন।

নবনির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করে চেম্বারের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় এবং আগামী দুই বছরের জন্য সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সদস্যদের সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।


বিশ্বব্যাপী পোরশের বিক্রি কমেছে ৬ শতাংশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছর বিশ্বব্যাপী পোরশের গাড়ি বিক্রি ৬ শতাংশ কমেছে। জার্মান গাড়ি নির্মাতা ফক্সওয়াগন গ্রুপ জানিয়েছে, চীন ও ইউরোপের বাজারে কম চাহিদা এই পতনের প্রধান কারণ।

এই সময়ে পোরশে বিশ্বব্যাপী মোট ২ লাখ ১২ হাজার ৫০৯টি গাড়ি সরবরাহ করেছে। শুধু চীনে গত বছরের তুলনায় সরবরাহ কমেছে ২৬ শতাংশ, যা সংখ্যায় ৩২ হাজার ১৯৫ ইউনিট।

পোরশের বিবৃতি অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে উত্তর আমেরিকায় পোরশের বিক্রি ৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ৪৪৬ ইউনিটে। অন্যদিকে, নিজ দেশ জার্মানিতে পোরশের বিক্রি ১৬ শতাংশ কমেছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশ (জার্মানি বাদে) মিলিয়ে বিক্রি ৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ২৮৬ ইউনিট।

জার্মান এই বিলাসবহুল ব্র্যান্ডটি গত মাসে জানিয়েছিল, চীনা বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতা, দুর্বল চাহিদা এবং যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির কারণে তারা চলতি বছরের বিক্রির পূর্বাভাস নিম্নমুখী নামিয়ে এনেছে।

সূত্র- আনাদোলু


চীনের পণ্যে ট্রাম্পের শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণায় কমেছে বিটকয়েনের দাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাজারমূল্যের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম গত শুক্রবার আবারও হ্রাস পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ায় এই পতন ঘটে।

গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তিনি চীনা রপ্তানি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্কারোপ করবেন। পাশাপাশি প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে ‘যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার’ রপ্তানির ওপরও নিয়ন্ত্রণ জারি করা হবে। এর আগে চীন দুর্লভ খনিজ পদার্থের রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছিল। সেই পদক্ষেপের পাল্টা হিসেবেই ট্রাম্পের এই ঘোষণা নতুন করে বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনা ছড়িয়েছে। খবর রয়টার্স।

এই সংঘাতের প্রভাব দ্রুতই বিশ্ববাজারে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শেয়ার সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ দুই শতাংশের বেশি কমে যায়। একই সঙ্গে বিটকয়েনের দাম ৮ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ১ লাখ ৪ হাজার ৭৮২ ডলারে নেমে আসে। দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি ইথেরিয়ামের দামও একই সময়ে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৬৩৭ ডলারে।

বাজারজুড়ে অস্থিরতা তৈরি হয়। বিটকয়েনের দাম কখনো ১ লাখ ১০ হাজার ডলারের কাছাকাছি উঠলেও আবার মুহূর্তেই ১ লাখ ৫ হাজার ডলারের নিচে নেমে আসে। এক দিনে বিটকয়েনের দাম সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। ফলে বিটকয়েনের বাজার মূলধন নেমে আসে ২ দশমিক ২৩ লাখ কোটি ডলারে। একই সময় শেয়ারবাজারেও ব্যাপক বিক্রির চাপ দেখা দেয়, ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ থেকে বিনিয়োগকারীরা দ্রুত সরে আসতে শুরু করেন।

তবে কিছুদিন আগেই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ এবং স্পট বিটকয়েন ইটিএফের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বিটকয়েনের দাম রেকর্ড ১ লাখ ২৫ হাজার ডলারের ওপরে উঠেছিল। কিন্তু নতুন করে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও সম্ভাব্য বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা বিনিয়োগকারীদের ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ থেকে দূরে সরে যেতে বাধ্য করছে। ফলে ইথেরিয়াম ও এক্সআরপির মতো বিকল্প ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলোর দামও ২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে।

দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর চলতি বছরের মার্চে ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে ‘ক্রিপ্টোকারেন্সির কৌশলগত রিজার্ভ’ গঠনের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি ক্রিপ্টোবান্ধব একাধিক ব্যক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেন-যেমন মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে পল অ্যাটকিনস এবং প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ডেভিড স্যাক্সকে হোয়াইট হাউসে দায়িত্ব দেন। খবর ইকোনমিক টাইমস।

২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিপ্টো খাতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যেমন স্টেবলকয়েনের নিয়ম অনুমোদন ও এসইসির বিধি সংস্কার। এসব কারণে বছরজুড়ে বিটকয়েনের দাম ঊর্ধ্বমুখী ছিল। তবে সাম্প্রতিক বাণিজ্য উত্তেজনা ও ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির প্রভাবে গত কয়েক দিন ধরে ক্রিপ্টো বাজারে ধারাবাহিক পতন দেখা যাচ্ছে।


রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলার ছুঁই ছুঁই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখাচ্ছে। চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম আট দিনেই প্রবাসী আয় হিসেবে দেশে এসেছে প্রায় ৮০ কোটি মার্কিন ডলার। পাশাপাশি গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক ১০টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ১০ কোটি ৭০ লাখ ডলার কিনেছে। ফলে ওই দিন শেষে দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩১.৯৪ বিলিয়ন ডলার, যা কার্যত ৩২ বিলিয়ন ছোঁয়ার পথে।

তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী এই রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী ওই সময় রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ বেড়েছে আরও প্রায় অর্ধ বিলিয়ন ডলার।

বর্তমান অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ১৪টি নিলামের মাধ্যমে ২ বিলিয়নের বেশি ডলার কিনেছে। এসব নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে মাল্টিপল প্রাইস পদ্ধতিতে, যেখানে প্রতি ডলারের গড় মূল্য ছিল ১২১ টাকা ৮০ পয়সা।

এদিকে প্রবাসী আয়ও গত এক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সদ্য বিদায়ী সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, যা আগস্ট মাসের চেয়ে প্রায় ১৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার বেশি। উল্লেখযোগ্যভাবে, গত মার্চ মাসে প্রবাসী আয় রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলার ছাড়ায়- যা এক মাসে দেশে আসা সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রবাসী আয়ে এই ইতিবাচক ধারা ও রিজার্ভ বৃদ্ধির পেছনে প্রধান কারণ হলো অর্থপাচার ও হুন্ডি লেনদেনের হার কমে আসা। পাশাপাশি ব্যাংকিং চ্যানেলে স্থিতিশীল বিনিময় হার প্রবাসীদের বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে উৎসাহিত করছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে বছর শেষে রিজার্ভ আরও বাড়বে, যা দেশের আমদানি ব্যয় মেটানো ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।


বাংলাদেশে হালাল শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা আছে: বিশেষজ্ঞ

ডিসিসিআই আয়োজিত ‘বাংলাদেশের হালাল শিল্পের উন্নয়ন: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক ফোকাস গ্রুপ আলোচনা সভায় বক্তারা। ছবি: বাসস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের হালাল শিল্পকে বৈশ্বিক বাজারে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং বিদ্যমান সুযোগগুলোকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলেন, হালাল বাজারের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বাংলাদেশে একটি ঐক্যবদ্ধ, জ্ঞানভিত্তিক ও বৈজ্ঞানিকভাবে সমর্থিত হালাল ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।

তারা আরও বলেন, কোনো পণ্য শুধু ধর্মীয়ভাবে বৈধ হলেই যথেষ্ট নয়, বরং তা হতে হবে বিশুদ্ধ, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মতও। ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) হালাল সার্টিফিকেশন উদ্যোগ বাংলাদেশের হালাল শিল্প বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এনেছে।

শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের হালাল শিল্পের উন্নয়ন: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক ফোকাস গ্রুপ আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী বলেন, হালাল শিল্প বর্তমানে শুধু একটি ধর্মীয় বিধান নয়, এটি এখন বৈশ্বিক অর্থনীতির দ্রুত-বর্ধনশীল ও সম্ভাবনাময় একটি খাত।

তিনি বলেন, বিশ্বে হালাল পণ্যের বাজার প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের, কিন্তু বাংলাদেশ রপ্তানি করছে মাত্র ৮৫০ মিলিয়ন ডলারের হালাল পণ্য। যার বেশিরভাগই কৃষিভিত্তিক। কার্যকর হালাল ইকোসিস্টেম ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সার্টিফিকেশন বোর্ডের অভাবে দেশের বিশাল সম্ভাবনাময় এই খাতের কাঙ্ক্ষিত বিকাশ হচ্ছে না।

রাজিব এইচ চৌধুরী আরও বলেন, ২০৩৪ সালের মধ্যে বৈশ্বিক হালাল বাজার ৯ দশমিক ৪৫ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। অথচ বাংলাদেশে কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক অব্যবস্থাপনার কারণে আমরা এ খাতে পিছিয়ে আছি। আন্তর্জাতিক মান বজায় না রাখা, সার্টিফিকেট প্রাপ্তির জটিলতা, আধুনিক ল্যাবের অভাব, দক্ষ জনবল সংকট সব মিলিয়ে হালাল ইকোসিস্টেম গড়ে উঠছে না।

তিনি বলেন, ‘হালাল শিল্প খাতকে আমাদের অর্থনীতির নতুন চালিকাশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হলে স্বতন্ত্র হালাল সার্টিফিকেশন বোর্ড গঠন করা এখন সময়ের দাবি।’

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ‘আইইউবিএটির’ মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মমিনুল ইসলাম বলেন, গত ২ আগস্ট ঢাকায় আয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের স্টেকহোল্ডার সংলাপ এবং পরবর্তীতে ১২-১৫ আগস্ট মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত যৌথ কর্মসূচি বাংলাদেশের হালাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথকে আরও সুগম করেছে।

বর্তমানে দেশে ৩০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান হালাল সার্টিফিকেশন পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন সময় এসেছে একটি একীভূত জাতীয় হালাল কর্তৃপক্ষ গঠনের, যেখানে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বিএসটিআই, একাডেমিক প্রতিষ্ঠান ও শিল্প খাতের মধ্যে সমন্বয় থাকবে। পাশাপাশি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে হালাল শিক্ষা অন্তর্ভুক্তকরণও অত্যন্ত প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলো ধর্মীয় বিধান, বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও জাতীয় ব্র্যান্ডিংকে একত্র করে হালাল খাতকে নীতিনির্ধারণের আওতায় এনেছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে বাংলাদেশও একইভাবে এগোলে বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।

দেশে এখনো ‘হালাল কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং’ গড়ে ওঠেনি। এ জন্য বড় আকারের আন্তর্জাতিক হালাল এক্সপো আয়োজন এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) প্রকল্প বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন বক্তারা।

আলোচনার শেষে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, যৌথ উদ্যোগ, নৈতিক প্রতিশ্রুতি এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশ একদিন বৈশ্বিক হালাল বাজারে একটি শক্তিশালী অবস্থান দখল করবে। যা শুধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিই নয়, বরং আত্মিক পরিতৃপ্তিও এনে দেবে।

সভায় আলোচক হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম, বিডার মহাপরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. আরিফুল হক, ইপিবির মহাপরিচালক মিসেস বেবী রাণী কর্মকার, বিএসটিআইর উপপরিচালক (হালাল সার্টিফিকেশন) এস এম আবু সাইদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক ড. মো. আবু সালেহ পাটোয়ারী।

ডিসিসিআই সহসভাপতি মো. সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।


টেকসই ঋণ ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণে সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে: শেখ মইনুদ্দিন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনুদ্দিন বলেছেন, সরকার ব্যয় ব্যবস্থাপনায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতের যেকোনো উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বিদেশি ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে স্থায়িত্ব এবং নমনীয়তার কঠোর মানদণ্ড অনুসরণ করছে।

সরকার কম সুদের হার এবং নমনীয় শর্তে ঋণ সংগ্রহের জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা জোর দিয়ে বলছি যে, যেকোনো নতুন বিদেশি অর্থায়নের ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।’

বাসসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেন, ঋণদাতা দেশ বা সংস্থার আরোপিত শর্তগুলো দীর্ঘদিন ধরে প্রতিযোগিতা সীমিত করেছে, যার ফলে তহবিল প্রদানকারী দেশের কোম্পানিগুলোই বেশিরভাগ সময় প্রকল্পের কাজ পেয়ে যায়। যদিও সরকার ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক ক্রয় নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি অনুসরণ করে।

তিনি জানান, সরকার এখন এমন প্রকল্পের জন্য ঋণ নিতে চায়, যেগুলোর ওপর এ ধরনের সীমাবদ্ধ শর্ত নেই।

দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন কৌশল সম্পর্কে বিশেষ সহকারী বলেন, সরকার নতুন মেট্রোরেল প্রকল্পগুলো এগিয়ে নিতে আগ্রহী।

তিনি আরও জানান, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এসব প্রকল্পে ঋণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যেখানে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি বজায় থাকবে।

মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার ব্যয় হ্রাসকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি কৌশল বিবেচনা করছে, তা হলো- ধারাবাহিকভাবে না করে একই সঙ্গে একটি প্রকল্পের জন্য সমস্ত চুক্তি প্যাকেজ চালু করা। এর ফলে দরদাতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং সরকার বিদ্যমান ঠিকাদারদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে না।

তিনি আরো বলেন, নতুন অবকাঠামো প্রকল্প হাতে নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার সতর্কভাবে এগোচ্ছে, যেন পরবর্তী সরকারের ওপর অপ্রয়োজনীয় আর্থিক চাপ না পড়ে।

মইনুদ্দিন জানান, ঠিকাদার দেউলিয়া হওয়া, অর্থের অভাব, ভূমি অধিগ্রহণে বিলম্ব এবং ইউটিলিটি লাইন স্থানান্তরের মতো সমস্যার কারণে অনেক চলমান উন্নয়ন প্রকল্প স্থবির হয়ে আছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে পরিবহন খাতের সবচেয়ে বড় কাঠামোগত চ্যালেঞ্জ হলো- বিভাগগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি।

এই সমস্যা মোকাবিলায় মইনুদ্দিন বলেন, নৌপথ, সড়ক ও মহাসড়ক, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) এবং বিমান পরিবহনসহ সব পরিবহন-সংশ্লিষ্ট বিভাগকে একটি ঐক্যবদ্ধ কাঠামোর অধীনে পরিচালনা করা উচিত।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বাসসকে বলেন, সরকার ক্রয় প্রক্রিয়ায় প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করছে, যা ব্যয় সাশ্রয়, উদ্ভাবন, ন্যায্যতা ও দায়িত্বশীল পণ্য ও সেবা সংগ্রহে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, একটি সুপরিচালিত প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়া সরবরাহকারীদের সর্বোত্তম মূল্য ও মান প্রস্তাব দিতে উৎসাহিত করে, পাশাপাশি সরকারকে তাদের ক্রয় ক্ষমতার মাধ্যমে স্থায়িত্ব ও সামাজিক দায়িত্বের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে।

ঋণদাতা সংস্থা ও দেশের শর্ত সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি জানান, সীমিত প্রতিযোগিতার কারণে মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পের কিছু প্যাকেজে দরদাতারা অনুমিত খরচের চেয়ে বেশি দর প্রস্তাব করেছিলেন।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হুসাইন বলেন, সরকারকে দাতা সংস্থা বা ঋণদাতা দেশের সঙ্গে আরও আলোচনায় যেতে হবে, যাতে শর্তগুলো কমানো যায় এবং দরপত্র প্রক্রিয়ায় প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা যায়।

তিনি আরও বলেন, যেকোনো প্রকল্পে ব্যয় ও সম্ভাব্য মুনাফার যথাযথ হিসাবের পাশাপাশি সবচেয়ে উপযুক্ত অর্থায়ন উৎস বেছে নেওয়া জরুরি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পই বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত। এই ঋণগুলোর উদ্দেশ্য কতটা গ্রহীতা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সহায়তা করা এবং কতটা ঋণদাতা দেশের ব্যবসা সম্প্রসারণ ও রপ্তানি বৃদ্ধি করা, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, বিশ্বব্যাংক ও এডিবির মতো বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণের ক্ষেত্রে কোনো বাণিজ্য সম্প্রসারণের উদ্দেশ্য থাকে না।

তবে দ্বিপাক্ষিক ঋণের ক্ষেত্রে অনেক সময় ক্রয়, পরামর্শক নিয়োগ ও ঠিকাদারি কাজে নিজ দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্য থাকে।

তিনি বলেন, একটি দেশের উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজি অন্য দেশ থেকে ঋণ নেওয়াতে মৌলিকভাবে কোনো সমস্যা নেই, তবে সেটি উভয়ের জন্য লাভজনক হতে হবে।

কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, ঋণদাতা দেশের প্রতিষ্ঠানই প্রকল্প পরিকল্পনা করছে, সম্ভাব্যতা যাচাই করছে, পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে, আবার ঠিকাদার হিসেবেও প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ফলে প্রকল্পের লাভ-ক্ষতির মূল্যায়ন নিরপেক্ষভাবে করা যায় না, বরং প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়ে যায়। সূত্র: বাসস


এলপিজি সিলিন্ডারের দাম হওয়া উচিত ‘হাজারের নিচে’: জ্বালানি উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদ‍্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, দেশের স্বল্পমেয়াদি জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় এলপিজির দাম নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি। বর্তমানে সিলিন্ডারের বাজার মূল্য ১২০০ টাকার বেশি হওয়ায় শিল্প ও গৃহস্থালি ব্যবহারকারীরা যথাযথ সুবিধা পাচ্ছেন না। অথচ এর দাম ১ হাজার টাকা মধ্যে হওয়া উচিত।

বাজারে বাড়তি দামে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ‍্যাস (এলপিজি) বিক্রি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে অভিযান চালানো হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশে এলপিজি: অর্থনীতি, পরিবেশ ও নিরাপত্তাশীর্ষক পলিসি কনক্লেভে এসব কথা বলেন জ্বালানি উপদেষ্টা।

টেকসই এলপিজি অর্থনীতি গড়ে তোলা, পরিবেশগত প্রভাব মোকাবিলা এবং নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্য নিয়ে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এক শ্রেণির রাজনীতিবিদ ও তাদের সহযোগী ব‍্যবসায়ীরা জ্বালানির সংকট তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেন উপদেষ্টা ফাওজুল।

তিনি বলেন, ১২০০ টাকার এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রি হয় ১৪০০ টাকায়। এটার দায় নিতে হবে ব‍্যবসায়ীদের। দায়-দায়িত্বহীন ব‍্যবসা তো চলতে পারে না। জ্বালানি সংকটে এলপিজি একটা বড় সমাধান হতে পারে। বড় সমস্যা হলো- এলপিজির দামটা বেশি। এটা মূলত বেসরকারি খাতে সরবরাহ হয়। এলপিজির দামটা একটা চ‍্যালেঞ্জ। তবে ব‍্যবসায়ীদের দায়িত্বশীল হতে হবে। অতিরিক্ত মুনাফা করে সম্পদের পাহাড় গড়ে বিদেশে টাকা পাচার করার মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। জ্বালানি নিশ্চিত না করেই চাহিদার অতিরিক্ত বিদ‍্যুৎকেন্দ্র করা হয়েছে। গ‍্যাস খাতে অসংখ্য অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এসব অপকর্ম করেছেন রাজনীতিবিদরা।

দেশে জ্বালানি অনুসন্ধান কাজ বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) জন‍্য নতুন রিগ কেনা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত উন্নতি সন্তোষজনক নয়। এসব কারণে বাধ‍্য হয়ে চড়া দামের এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এলএনজি রূপান্তরের সক্ষমতা বাড়াতে নতুন এফএসআরইউ চেষ্টা করা হচ্ছে। এগুলো দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ অন‍্য খাতে কীভাবে এলপিজি ব‍্যবহার করা যায়, সেটা বের করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, রাজনীতিবিদ ও ব‍্যবসায়ীদের দোষারোপ করে গেছেন জ্বালানি উপদেষ্টা। বিষয়টা আসলে এমন নয়, সবাইকে দোষারোপের কিছু নেই। বাংলাদেশের গ‍্যাস ফুরিয়ে যাচ্ছে। এ ঘাটতি কীভাবে পূরণ করা হবে, তার পরিকল্পনা এখন থেকেই করতে হবে। জ্বালানি সরবরাহ বাড়িয়ে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়াই মূল লক্ষ‍্য। একটি দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি হলো জ্বালানি। মানুষ যত উন্নতির দিকে যাবে, জ্বালানি চাহিদা তত বাড়বে। জ্বালানি ব‍্যতিরেকে আজকের দুনিয়া চলতে পারে না।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, উন্নত দেশের পর্যায়ে যেতে হলে মাথাপিছু জ্বালানি ব‍্যবহার বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে এলপিজি ভূমিকা রাখতে পারে। ডলারের দর ও সৌদি আরামকোর বিক্রয় মূল‍্য ধরে প্রতি মাসে এলপিজির দাম সমন্বয় করা হচ্ছে। মূল কথা হলো- ভোক্তা যাতে কম দামে এলপিজি পায়। আর ব‍্যবসায়ীদের লাইসেন্স নিতে ভোগান্তি কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য ম. তামিম। এতে বলা হয়, দেশে প্রাকৃতিক গ‍্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে এখন দিনে ১৬০ কোটি ঘনফুট গ‍্যাসের ঘাটতি আছে। আর বছরে এলপিজি মজুত করার সক্ষমতা আছে ১৬ লাখ টন। দিনে ৪০ কোটি ঘনফুট গ‍্যাস সরবরাহের সক্ষমতা আছে এলপিজি খাতে। শিল্পে গ‍্যাস সংকট কাটাতে এলপিজি ব‍্যবহার করা যেতে পারে। ডিজেল চালিত বয়লার রূপান্তর করে এলপিজি দিয়ে চালালে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ খরচ কমানো সম্ভব। কয়লা, ডিজেল, ফার্নেস অয়েলের চেয়ে এলপিজির কার্বন নিঃসরণ কম।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক‍্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, জ্বালানি খাতে তামাশা চলছে। পাইপলাইনের গ‍্যাস বন্ধ করে এলপিজির বাজার তৈরি করা হয়েছে। তিনি স্বচ্ছভাবে ব‍্যবসা করে, সেবা দিয়ে এলপিজির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বিপিসি চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহেদ কামাল, ইস্ট কোস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী, এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি মোহাম্মদ আমিরুল হক, ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার, ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী হারুন গুরতাচ, পেট্রোম্যাক্স এলপিজি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী মার্কো অ্যান্টোনিও রড্রিগেজ ডি অলিভেইরা এবং আকিজ বশির গ্রুপের চিফ অপারেটিং অফিসার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম।

অনুষ্ঠানে দেশের জ্বালানি খাতের নীতিনির্ধারক, গবেষক, উদ্যোক্তা, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও উন্নয়ন সহযোগীরা অংশ নেন। কনক্লেভে এলপিজি খাতের ভবিষ্যৎ নীতিমালা প্রণয়ন, নিরাপত্তা মানদণ্ড, বাজার কাঠামো, পরিবেশগত টেকসই যোগ্যতা ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সঞ্চালনা করেন একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক ও প্রকাশক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।


বাংলাদেশকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে যুক্তরাজ্য

বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য বিষয়ক দূতের বৈঠক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য পুরোপুরি শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। যুক্তরাজ্যের উন্নয়নশীল দেশগুলোর ট্রেডিং স্কিম (ডিসিটিএস) কর্মসূচির আওতায় এই সুবিধা অব্যাহত থাকবে।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠকে এ ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশবিষয়ক বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন।

বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক, এলডিসি গ্রাজুয়েশন ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালু করার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে ২০২৬ সালের নভেম্বরে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে চলেছে বাংলাদেশ। এটি আমাদের অর্থনৈতিক যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে এবং এ পরিবর্তন বিপুল পরিমাণ সুযোগ তৈরির পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে। সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, দ্রুততম সময়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর বিষয়ে সরকার আন্তরিক। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এটি নিয়ে কাজ করছে। টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কার্জক্রম পরিচালনার জন্য অপারেটর নিয়োগ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত বলেন, বাণিজ্য সুবিধা কর্মসূচির আওতায় ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পণ্য যুক্তরাজ্যের বাজারে সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে, যা এলডিসি থেকে উত্তরণের সময় দেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে সহায়তা করবে।

তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিমুখী বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করা তার সফরের লক্ষ্য। নতুন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা খুঁজে বের করতে এবং পারস্পরিক সমৃদ্ধির সুযোগ বাড়াতে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রপ্তানি মো. আব্দুর রহিম খান উপস্থিত ছিলেন।


গ্রামীণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ১০ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের গ্রামীণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ১০ কোটি ডলার (প্রায় এক হাজার কোটি টাকা) ঋণ সহায়তা দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাইরে অবস্থিত গ্রামীণ ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে এই ঋণ দেবে সংস্থাটি, যা একটি প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা হবে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও এডিবির মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ইআরডি কার্যালয়ে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। এডিবির বাংলাদেশ অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সেকেন্ড স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম-সাইজড এন্টারপ্রাইজেস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ফেজ-২)’ নামের এ প্রকল্পের আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে কমপক্ষে ১৫ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এডিবির এই প্রকল্প ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অন্তর্ভুক্ত করতে সহায়তা করবে এবং পরিবেশবান্ধব পণ্য উৎপাদনে উৎসাহ দেবে, যার মাধ্যমে নতুন বাজার সৃষ্টি ও রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে।

এতে আরও বলা হয়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাইরে অবস্থিত উদ্যোক্তারা ব্যাংকিং সুবিধা থেকে বঞ্চিত—এই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এর মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় টেকসই ও বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সংখ্যা ও আকার বৃদ্ধি পাবে।

প্রকল্পের আওতায় ৯ লাখ ৫০ হাজার ডলারের কারিগরি সহায়তাও দেওয়া হবে, যাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অংশগ্রহণকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়। এ ছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ ও আর্থিক সেবায় প্রবেশাধিকার বাড়াতে প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি, ওয়ার্কশপ আয়োজন, সবুজ অর্থায়ন এবং ভ্যালুচেইন-ভিত্তিক অর্থায়ন পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং বলেন, বাংলাদেশ অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় ও টেকসই রূপান্তরে কাজ করছে। এই প্রক্রিয়ায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা খাতের বিকাশই হবে দারিদ্র্য হ্রাস, আঞ্চলিক বৈষম্য কমানো এবং প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার মূল চাবিকাঠি।

তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিশেষ করে নারীদের মালিকানাধীন গ্রামীণ উদ্যোক্তারা দীর্ঘমেয়াদি মূলধনের সহজলভ্যতা পাবেন। পাশাপাশি তাদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কারিগরি সক্ষমতাও বাড়ানো হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বর্তমানে ৬৯টি দেশের মালিকানাধীন। প্রতিষ্ঠানটি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিশীল ও টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন খাতে সহায়তা দিচ্ছে।


ঢাকায় শুরু হচ্ছে ৫ দিনের ফার্নিচার মেলা, শুরু ১৪ অক্টোবর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে পাঁচ দিনব্যাপী শুরু হতে যাচ্ছে ২০তম জাতীয় ফার্নিচার মেলা-২০২৫। ‘আমার দেশ, আমার আশা দেশীয় ফার্নিচারে সাজাবো বাসা’ স্লোগানে বসছে দেশের ফার্নিচার শিল্পের সবচেয়ে বড় আয়োজন। আগামী মঙ্গলবার থেকে মেলা চলবে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার ভার্চ্যুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি (বিএফএসএমএস)। এসময় ২০তম জাতীয় ফার্নিচার মেলার বিস্তারিত তুলে ধরেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও বিএফএসএমএস’র ভাইস চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল আউয়াল।

তিনি বলেন, দেশীয় ফার্নিচার শিল্প দেশের শতভাগ চাহিদা পূরণ করছে এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এবারের মেলার মূল লক্ষ্য হলো দেশীয় ফার্নিচার শিল্পের বিকাশ ঘটানোর পাশাপাশি রপ্তানি বাজার আরও সম্প্রসারণ করা।

এবারের মেলায় মোট ৪৮টি শীর্ষস্থানীয় ফার্নিচার কোম্পানি অংশ নিচ্ছে জানিয়ে শেখ আব্দুল আউয়াল বলেন, অংশগ্রহণকারীরা সর্বাধুনিক নকশা ও পণ্যের প্রদর্শনী করবে ২৭৮টি স্টলে।

অংশগ্রহণকারী উল্লেখযোগ্য ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে আখতার, হাতিল, ব্রাদার্স, নাদিয়া, আয়ত, ওমেগা, জেএমজি, নাভানা, অ্যাথেনাস, পারটেক্স, রিগাল ও লেগাসি।

১৪ তারিখ সকালে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার রাজদর্শন হলে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। আইসিসিবির গুলনকশা (হল–১), পুষ্পগুচ্ছ (হল–২) এবং রাজদর্শন (হল–৩) হলে অনুষ্ঠিত হবে এবারের এই বর্ণাঢ্য আয়োজন।


জুলাই-সেপ্টেম্বরে আরএমজি রপ্তানি বেড়েছে ৪.৭৯ শতাংশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়কালে তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। এ সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ৯.৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৭৯ শতাংশ বেশি।

সম্প্রতি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত বাংলাদেশের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের দেশভিত্তিক রপ্তানি তথ্য অনুযায়ী, মোট আরএমজি রপ্তানির ৪৭.৬০ শতাংশ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি বাজার হিসেবে শীর্ষে রয়েছে। যার পরিমাণ ৪.৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ২.০১ বিলিয়ন ডলার (২০.১৮ শতাংশ), কানাডায় ৩৩৬.৭০ মিলিয়ন ডলার (৩.৩৮ শতাংশ) এবং যুক্তরাজ্যে ১.২২ বিলিয়ন ডলার (১২.২৩ শতাংশ)।

বছরভিত্তিক তুলনায় ইইউতে রপ্তানি বেড়েছে ৩.৬৪ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৮.৬০ শতাংশ, কানাডায় ১৩.৬৩ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যে ৬.৭৪ শতাংশ।

বাংলাদেশের আরএমজি রপ্তানি অপ্রচলিত বাজারে বৃদ্ধি পেয়েছে ০.৭৭ শতাংশ। নিটওয়্যার খাতে রপ্তানি বেড়েছে ৪.৩১ শতাংশ এবং ওভেন খাতে বেড়েছে ৫.৪১ শতাংশ।

অপরদিকে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে দেশের রপ্তানি আয় ৫.৬৪ শতাংশ বেড়ে ১২.৩১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

সম্প্রতি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রপ্তানি আয় ছিল ১১.৬৬ বিলিয়ন ডলার।

তবে সামগ্রিক ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি ৪.৬১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় দাঁড়ায় ৩.৬৩ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ছিল ৩.৮০ বিলিয়ন ডলার।

রপ্তানি আয়ে তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত যথারীতি শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে এ খাত থেকে আয় হয়েছে ৯.৯৭ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৭৯ শতাংশ বেশি।


banner close