এক সময় কুয়েতে কর্মরত ছিলেন লিটন মিয়া (৩৭)। পরে দেশে ফিরে ভিসা প্রসেসিংয়ের কাজ শুরু করেন। তার ব্যবস্থাপনায় এক ব্যক্তি বিদেশে গিয়ে আর ফিরে আসেনি, আর লিটন মিয়ার পাওনা টাকাও পরিশোধ করেনি ওই ব্যক্তি। আর এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে নিজেই নামেন প্রতারণায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডিসকাউন্টে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিট বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার টোপে ফেলেন।
তিনি সাশ্রয়ী মূল্যে টিকিট বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নিতেন, পরে সরবরাহ করতেন জাল টিকিট। অভিনব এ প্রতারণায় বিশেষ করে প্রবাসীদের ফাঁদে ফেলে লিটনের মাসিক আয় প্রায় তিন লাখ টাকা। ডিসকাউন্টে এমন টিকিট বিক্রির প্রতারণার অভিযোগে লিটন মিয়াসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তার অপর দু’জন হলেন, মো. বেল্লাল হোসেন (৪৭) ও মো. রিয়াজ শেখ (৩৫)।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন, একটি কম্পিউটার ও চেকবইসহ ডেবিট কার্ড জব্দ করা হয়েছে।
ডিবি জানায়, মজনু মিয়া নামে কুয়েত প্রবাসী এক ব্যক্তি গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তার স্বজন হুমায়ুন কবিরকে জানান, তিনি মে মাসে বাংলাদেশে ছুটিতে আসবেন। কুয়েত থেকে বাংলাদেশে আসা যাওয়ার টিকিটের মূল্য বেশি হওয়ায় তিনি হুমায়ুন কবিরকে বাংলাদেশ থেকে টিকেট কিনতে বলেন।
দেশে হুমায়ুন কবিরের কোনো পরিচিত ট্রাভেলস এজেন্সি না থাকায় অনলাইনে সান ফ্লাওয়ার ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনালের খোঁজ পান। যেখানে দেখেন ১৫ শতাংশ ডিসকাউন্টে (কুয়েত-ঢাকা-কুয়েত) টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। পরে তিনি ফেসবুকে দেওয়া ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করলে টিকিট দিতে পারবে বলে তাকে জানানো হয়। পরবর্তীতে হুমায়ুন কবির গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ফোনে যোগাযোগ করে যাত্রাবাড়ীর ধলপুর এলাকায় লিটন মিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। দেখা করার পর হুমায়ুন কবির মজনু মিয়ার সঙ্গে কথা বলে লিটনকে পাঁচ হাজার টাকা ও পাসপোর্টের ফটোকপি দেন। বাকি ৪৭ হাজার টাকা লিটনের দেওয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বরে পরিশোধ করেন।
টাকা পাওয়ার পর চক্রটি মজনু মিয়ার হোয়াটসঅ্যাপে আল জাজিরা বিমানের টিকেটের কপি পাঠায়। পরবর্তীতে যাচাই করে দেখা যায় টিকিটটি জাল। এরপর লিটনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে লিটন মিয়া হোয়াটসঅ্যাপে মজনু মিয়াকে ব্লক করে দেন।
গ্রেপ্তার লিটনের বিষয়ে ডিবি জানায়, চতুর্থ শ্রেণি পাস লিটন মিয়া এক সময় পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০১২ সালে কুয়েতে গিয়ে ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দেশে ফিরে লিটন ভিসা প্রসেসিংয়ের কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে একজন লিটনের টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশ চলে গেলে সে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে প্রতারণার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
লিটন প্রাথমিকভাবে ফেসবুকে ‘সানফ্লাওয়ার ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি পেজ খুলে ১৫ শতাংশ ডিসকাউন্টে টিকেট বিক্রির কথা বলে পোস্ট দেয়। চটকদার বিজ্ঞাপনে বিদেশে কর্মরত শ্রমজীবীরা আকৃষ্ট হয়ে তার সঙ্গে ফেসবুকে দেওয়া ফোন নাম্বারের মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে। তাদের মধ্য থেকে লিটন টার্গেট বাছাই করে ডিসকাউন্ট প্রাইজে টিকেট বিক্রির টোপ ফেলে। লিটন কাস্টমারদের তার অফিস সিটি সেন্টারের লিফটের ১১তে বলে জানায় এবং কাস্টমারের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা দিতে বলে। লিটনের অবর্তমানে কাস্টমারদের সঙ্গে গ্রেপ্তার রিয়াজ কথা বলে।
তাদের দেয়া ব্যাংক একাউন্টটি করা হয় কোন নির্দোষ ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহান করে। তবে ক্রেতাদের টাকা পাওয়ার পর তাদের হোয়াটসঅ্যাপে ব্লক করে দেয়। গত কয়েক মাসে লিটন মিয়া আনুমানিক চার লাখ লোকের সঙ্গে কথা বলে প্রতারণার টোপ ফেলেছে। প্রতিমাসে তার আনুমানিক আয় তিন লাখ টাকা।
এ বিষয়ে ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা প্রবাসীরা সাধারণত দেশে আসার সময় কম দামে টিকিট খুঁজেন। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ১০-১৫ পার্সেন্ট ছাড়ে টিকিট বিক্রির ফাঁদ পাতেন লিটন। এভাবে অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া লিটনের মাসিক আয় ৩-৪ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, অনেক প্রবাসীরা বিমানবন্দরে গিয়ে বর্ডিংয়ের সময় জানতে পারেন টিকিটটি ভুয়া। অনেকে বিদেশ থেকে দেশে এসে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন না। দেখা যায়, ৯৯ ভাগই ঝামেলা মনে করে অভিযোগ করেন না। তাই ডিসকাউন্ট দিলেই যাচাই না করে টিকিট কেনা যাবে না। আর প্রতারিত হলে পুলিশকে অভিযোগ করতে হবে।
ডিবি প্রধান আরও বলেন, আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন প্যাকেজের অফার দেওয়া হচ্ছে। কম দামে ৩-৪ দেশ ঘুরানোর কথা বলা হচ্ছে। দেখা গেলো টিকিট ভুয়া, হোটেল বুকিংয়ের কাগজও ভুয়া দিয়ে দেবে। তাই এমন প্যাকেজ দেখলে যাচাই-বাছাই করে যেন টাকা দেন সবাই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রমজানে লেনদেন একটু বেশি হয়। তাই যারা বড় লেনদেন করবেন তারা যেন পুলিশকে অবহিত করেন। বড় অঙ্কের টাকা রিকশা দিয়ে না নিয়ে গাড়িতে নেওয়াই ভালো।
ডিবি প্রধান জানান, ডিবির প্রত্যেকটা টিম সেহরি-ইফতার ও তারাবির পর যখন পথঘাটে জনসাধারণের চলাচল কমে যায় তখন বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান করে। ছিনতাইকারী-ডাকাতদের ধরার জন্য ডিবির টহল ব্যবস্থা জোরদার আছে বলেও জানান তিনি।
গতকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে বন্ধ থাকার পর আজ রোববার থেকে ফের চালু হয়েছে মেট্রোরেল। তবে মেট্রোতে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না।
রোববার সকাল ৮টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা যায়, আজ (রোববার) প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ট্রেন চলছে। আগামীকাল সোমবার থেকে মেট্রোরেল সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে।
গত মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না। মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি গেটে যাত্রীদের যথাযথভাবে তল্লাশি করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো যাত্রীর কাছে কাঁচা বা রান্না করা মাংস পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ আটকে দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের নিরাপত্তা কর্মীদের এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতেও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঈদুল আজহায় এবার টানা ১০দিন ছুটিতে রাজধানী ছেড়ে নিজ বাড়িতে ঈদ কাটাতে গেছেন অনেকে। অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন ঢাকায় মানুষজন অনেক কম। তাছাড়া, যানবাহনও কম। তবে কম মানুষ কিংবা কম যানবাহনের ধোঁয়াও ঢাকার বাতাসের মানে তেমন পরিবর্তন আনতে পারেনি।
আজ রোববার ঈদের দ্বিতীয় দিনে অনেকটা ফাঁকা ঢাকার বাতাস সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১১টা ২৮ মিনিটে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ১৩০, এই স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ৫ম স্থানে অবস্থান করছে ঢাকা। তাই ঢাকায় অবস্থানরত সংবেদনশীলরা রয়েছেন ঝুঁকিতে।
প্রথমত, ঢাকায় মানুষ কম এখন, যান চলাচলও নেই তেমন। আবার মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাতও হয়েছে টানা কয়েকদিন। তা সত্ত্বেও বাতাসের মানের অবনতি নিয়ে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিন ১৬৬ স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে চিলির সান্তিয়াগো, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি ও যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েট। শহর দুটির স্কোর ১৫৩ ও ১৪৫।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে ‘মাঝারি’, আর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
একিউআই সূচক ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
কোরবানিঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে শসা ও কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। শসার দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আর কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা। তবে ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা কমেছে। এছাড়া বেশিরভাগ সবজি ও মুরগির দাম অপরিবর্তত রয়েছে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতারা শসা বিক্রি করছেন ৬০ থেকে ৯০ টাকা প্রতি কেজি। দুদিন আগেও ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে শসা। এছাড়া কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচ আজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। তবে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিমের দাম কমে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা হয়েছে আজ।
‘কোরবানির ঈদের সময় শসার চাহিদা বেশি থাকে, তাই দামও বেড়ে যায়। এবারও তাই হয়েছে। আড়তে গিয়ে তো আমরা শসা খুঁজেই পাচ্ছিলাম না’— শসার দাম বাড়ার কারণ হিসেবে রামপুরার এক ব্যবসায়ী এমন মন্তব্য করেন।
রামপুরার ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দুদিন আগেও আমরা শসার কেজি ৪০ টাকা বিক্রি করেছি। আজ আড়তেই দেশি শসার কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। হাইব্রিড শসার দাম একটু কম আছে। ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি কিনে তো আর ৯০ টাকার নিচে বিক্রি করা যায় না। তাই ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করছি।’
একই বাজারের ব্যবসায়ী মো. মিলন বলেন, ‘কোরবানির ঈদের সময় সব বাড়িতেই মাংস রান্না হয়। মাংসের সঙ্গে সালাদ সবার প্রিয়। তাই কোরবানির ঈদের সময় কাঁচা মরিচ, শসা, লেবু ও টমেটোর চাহিদা বেশি থাকে। চাহিদা বেশি থাকায় এসব পণ্যের দাম বেড়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘বাজারে লেবু ও টমেটোর সরবরাহ ভালো। তাই এ দুটি পণ্যের দাম বাড়েনি। তবে কাঁচা মরিচ ও শসার সরবরাহ কম। তাই দামও বেড়েছে। গতকাল শসার কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি করেছি, আজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা কাঁচা মরিচ আজ ১২০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। কারণ, আমাদেরই কিনতে হয়েছে অনেক বেশি দামে।’
খিলগাঁওয়ে শসা কিনতে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গত মঙ্গলবার শসা কিনেছি ৪০ টাকা কেজি দরে, আজ এক লাফে ৯০ টাকা হয়ে গেছে। হুট করে এভাবে দাম বাড়া ঠিক না। যারা বাজার তদারকির দায়িত্বে আছেন তাদের বিষয়টা দেখা উচিত।’
এদিকে দুদিন আগে ১৩০ টাকা ডজন ডিম বিক্রি হলেও আজ ১২০ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও আলু, রসুন, পেঁয়াজ, আদা আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে দুদিনে ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা কমেছে। ডিমের চাহিদা কম থকায় এই দাম কমেছে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ডিমের দাম আরও একটু কমতে পারে। কারণ শনিবার কোরবানি হওয়ার পর সবার ঘরে ঘরেই মাংস থাকবে। দুই-তিনদিন মানুষ মাংস খাবে বেশি। এ সময় অন্য খাবারের চাহিদা কম থাকবে। তবে ঈদের দুই-তিনদিন পর ডিম এবং কাঁচা সবজির দাম বেড়ে যেতে পারে।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ সবজি। পটল, চিচিঙ্গা ও ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। কাঁকরোল, বরবটি, কচুর লতি, করলা, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। এছাড়া পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি।
আজ সকাল থেকেই কুরবানির পশুর সংকট দেখা দিয়েছে গাবতলী হাটে। গরু না পেয়ে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন নতুন বাজার ১০০ ফিট গরুর হাটে।
শুক্রবার সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর সর্ববৃহৎ গরুর হাট গাবতলীতে সকালে গরু কিনতে এসে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন। হাটজুড়ে গরু আছে হাতে গোনা কয়েকটি, দাম তার আকাশচুম্বী।
ঈদের একদিন আগে গাবতলীর হাটে গরু কিনতে এসেছেন সেলিম হোসেন। তিনি বলেসন, ‘কখনো ঈদের আগের দিন সকালে হাটে এমন গরু সংকট দেখিনি। যে কয়টা গরু আছে তা আকারে ছোট এবং দাম চাচ্ছে অনেক।’
আরেক ক্রেতা ইকবাল হাসান বলেন, ‘হাটে গরু কিনতে এসে গরু না পেয়ে বাধ্য হয়ে ছাগল কিনে বাড়ি ফিরছি। শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করা ঠিক হয়নি।’
গাবতলী হাটে গরু বিক্রি করে ট্রাকে করে ঘরে ফিরছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের একজন মনসুর বলেন, ‘১১টি গরু নিয়ে এসেছিলাম। কালকে ভোররাতের মধ্যে সবকটি বিক্রি শেষ। এখন বাড়ি ফিরছি।’
আরেক ব্যবসায়ী মোসাদ্দেক বলেন, ‘গরু সব বিক্রি হয়েছে কিন্তু দাম তেমন পাইনি। প্রতিটি গরুই অনেক কমে বিক্রি করতে হয়েছে। আগেরবার শেষ রাতে দাম পড়ে যাওয়ার পর এবার আর ব্যাপারীরা গরু ধরে রাখেনি।’
এদিকে গাবতলীর হাটে গরু না পেয়ে নতুন বাজার ১০০ ফিটে আসছেন ক্রেতারা। এমনই একজন ক্রেতা মাহতাব শেখ বলেন, ‘গাবতলীতে গরু নেই বললেই চলে। দিয়াবাড়িতেও পছন্দের গরু পেলাম না। শেষমেশ ১০০ ফিটে এসেছি। কিন্তু ব্যাপারীরা দাম চাচ্ছেন বেশি।’
নতুন বাজারের এ হাট ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের মধ্যেই হাটের বেশিরভাগ গরু বিক্রি হয়ে গেছে। অল্প যে সংখ্যক গরু আছে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ব্যবসায়ীরা। লোকসানে ছাড়বেন নাকি লাভের আশায় রাত অবধি অপেক্ষা করবেন—এমন দোলাচলে ভুগছেন তারা।
দিনাজপুর থেকে হাটে গরু নিয়ে এসেছেন মাসুম মিয়া। বলেন, ‘বাকি হাটে গরু কম শুনে দাম একটু বেশি চাচ্ছি। কিন্তু আগেরবারও এমন অনেক হাটে গরু ছিল না সকালের দিকে। পরে বিকালের মধ্যে গরু চলে আসায় আবার দাম পড়ে গেছে।’
আরেক ব্যবসায়ী রিমন মুন্সি বলেন, ‘সবাই বলে গরুর দাম বেশি চাচ্ছি। কিন্তু কেউ এটা বুঝতে চায় না, যে এবার গরুর খাবারের দাম আগের তুলনায় দ্বিগুণ। আমরা ব্যাপারীরা অযথা কোনো দাম চাচ্ছি না। হিসাব করলে দেখা যাবে, গরু প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে।’
নতুন বাজারের এ হাটে শেষ সময়ে এসে দাম বেড়েছে ছাগলের। ক্রেতারা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, ১৫ হাজার টাকার ছাগল ২৫ হাজার টাকা চাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। প্রতি ছাগলে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
এদিকে, বৈরি আবহাওয়ায় পশু বিক্রি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে রাজধানীর হাটগুলোতে। বৃষ্টির কারণে ন্যূনতম লাভ রেখে গরু বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর তেজগাঁও বিভাগের ছয়টি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পেশাদার ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৬২ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ- কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
গতকাল বুধবার বিশেষ সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তেজগাঁও বিভাগের বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছে নিয়মিত মামলার আসামি, তদন্তাধীন মামলার আসামি, সাজাপ্রাপ্ত আসামি, মাদক কারবারি, পেশাদার সক্রিয় ছিনতাইকারী, চোর, সন্ত্রাসী, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী।
তেজগাঁও বিভাগ সূত্রে জানা যায়, তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ইবনে মিজানের সার্বিক দিক নির্দেশনায় সংশ্লিষ্ট জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার, সহকারী পুলিশ কমিশনার এবং থানার অফিসার ইনচার্জদের তত্ত্বাবধানে তেজগাঁও বিভাগের ছয়টি থানার নিয়মিত টহল ও অভিযান পরিচালনাকারী টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনে স্থায়ী ২টিসহ মোট ২২টি পশুর হাটে শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে। পশুর হাটগুলোতে দামও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে বলে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার থেকে রাজধানীর দুই সিটিতে পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে পশুর হাট বসেছে। পবিত্র ঈদুল আযহার চার দিন আগে থেকে রাজধানীতে পশুর হাট বসে। ঈদের দিনও কোরবানির পশু কেনাবেচা হয়। সব মিলিয়ে পাঁচ দিন হাটগুলো জমজমাট থাকে। মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিক হাট বসলেও মূলত কয়েকদিন আগে থেকেই হাটগুলোতে আসতে শুরু করেছে পশুর পিকআপ ও ট্রাক।
ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত হাট থাকলেও এখন আর ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। হাটে ঘুরে ফিরে দর-দামে মিলে গেলেই নিয়ে নিচ্ছেন পছন্দের পশুটি।
ঈদের আর মাত্র মাঝে একদিন বাকী। রাজধানীজুড়ে মানুষ ও কোরবানির পশুতে একাকার। কয়েকদিন লাগাতার বৃষ্টির কারণে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং বেপারীদের জন্য হাটের কাদা কিছুটা অস্বস্তির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে।
ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গায় বসেছে একটি পশুর হাট। এই পশুর হাটে পর্যাপ্ত গরু, ছাগল, ভেড়া। শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে। গতকাল পর্যন্ত পশুর দাম একটু কম থাকলেও আজ দাম কিছুটা চড়া। তবে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মতে দাম এখনো সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।
বুধবার হাটে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হাট ভর্তি বিভিন্ন জাতের দেশীয় ছোট, মাঝারি ও বড় জাতের অসংখ্য গরু উঠেছে, হাটে ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে, পশুর হাটে আসা অধিকাংশ ক্রেতাই স্থানীয়ভাবে খামারে লালন-পালন করা দেশি গরুই পছন্দ করছেন। অনেক ক্রেতা মনে করছেন শেষ দিনে দাম কমে যাবে। তখন কোরবানির পশু তারা সস্তায় কিনবেন। তবে বেশিরভাগ ক্রেতাই আজকের মধ্যেই পশু কিনে নেবেন বলে বাসস’কে জানান।
এই হাটে গরু নিয়ে আসা পাইকার মোস্তফা মাতাব্বর, মো. রাসেল ও রফিক নামে তিনজন গরু ব্যবসায়ী বাসস’কে বলেন, এবছর পশুর হাটে ভারতীয় গরু নেই। হাটে যেসব ক্রেতা আসছেন তারা দেশীয় জাতের এবং স্বাভাবিক খাবার দিয়ে খামারে লালন-পালন করা গরুই বেশি পছন্দ করছেন। হাটে গরুর সরবরাহ বেড়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ হাটে এলেও দর-দাম করেই তাদের পছন্দের গরু কিংবা ছাগলটি ক্রয় করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। সেই সাথে বাজারে বড় গরুরও কমতি নেই। তবে ছোট ও মাঝারি জাতের গরুর চাহিদা বেশি।
আমুলিয়া হাটে পাবনা থেকে গরু নিয়ে আসা সালাম বেপারী বলেছেন, পরিবহনে করে গরুর নিয়ে আসা, হাটে তোলা, খাওয়ানো ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলা- এই পুরো সময়টা জুড়ে তাদের হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়া সব সময় গরুর দড়ি ধরে থাকা, তাকে সামলানো এবং গরুর গোবর তোলাসহ নানা কারণে হাতও পরিচ্ছন্ন রাখা যাচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম উত্তর শাহজাহানপুর রেলগেট সংলগ্ন হাটে এসেছেন গরু কিনতে, তিনি বাসস’কে বলেছেন, আগামী ৭ জুন পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আযহা। তাই চেষ্টা করছি আজকের মধ্যেই পছন্দের গরুটি কিনে নিতে। তিনি জানান, ‘যতটুকু ঘুরে দেখেছি, আমার কাছে মনে হয়েছে- এবার গরুর দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় একটু কমই আছে।’
গরুর পাশাপাশি হাটে প্রচুর ছাগল, ভেড়াও উঠেছে। ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে কোরবানির একটি ছাগল ক্রয় করা সম্ভব।
এই হাটের ক্রেতা মিজানুর রহমান বাসস’কে জানান, রাজধানীর গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাটে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন শুধু ছোট সাইজের গরুগুলো বিক্রি হচ্ছে বেশি। এছাড়া বাজারে প্রচুর পরিমাণ ছাগলও উঠেছে। বেচাকেনাও বেশ জমে উঠেছে। ছোট খাসির দাম ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। মাঝারি খাসি ২০-২৫ হাজার এবং বড় জাতের খাসি ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
রাজধানীর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব সংলগ্ন মাঠেও পর্যাপ্ত পশু এসেছে। হাটের জন্য নির্ধারিত স্থান ছাড়াও অলিগলি পর্যন্ত গরু-ছাগল চলে এসেছে। এই হাটে গরু কিনতে এসেছেন তরিকুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা। তিনি জানান, এবার হাটে প্রচুর কোরবানির পশু এসেছে। ছোট, বড়, মাঝারি সব প্রজাতির গরু, ছাগল এসেছে, দামও অন্যান্য বছরের তুলনায় একটু কম।
আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কোরবানির পশুর হাট ঘুরে দেখে যায়, কোরবানির পশু রাখার জন্য তৈরি করা হচ্ছে প্যান্ডেল। বিশাল মাঠ জুড়ে প্যান্ডেল তৈরিতে বাঁশ, রশি ও ত্রিপল টানানো হয়েছে। মাঠ ঘুরে দেখা যায় গরুর ব্যাপারী ও শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গাবতলী পশুর হাটে ভারতের রাজস্থান থেকে আনা উট তোলা হয়েছে। উট দেখতে ভিড় করছে দর্শনার্থী ও ইউটিউবাররা।
মেরুল বাড্ডা কাঁচা বাজার সংলগ্ন পশুর হাটের ইজারাদার মাহমুদুল হাসান বাসস’কে জানান, হাটে এবার দেশি গরুর প্রাধান্যই বেশি। হাটে গরুতে সয়লাব হয়ে গেছে। প্রচুর পরিমাণ গরু উঠেছে। তবে, পশুর হাটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। আশা করছি, আজ ও শুক্রবার আবহাওয়া ভালো থাকলে বিকেল থেকে হাটে পশুর বেচাকেনা তুলনামূলকভাবে বাড়বে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কোরবানির পশু আসা অব্যাহত রয়েছে। হাটে নিরাপত্তার কোনো অভাব নেই বলে জানান তিনি।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বাসস’কে জানান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় গাবতলীর স্থায়ী হাটসহ ১৩টি হাট এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় সারুলিয়া স্থায়ী পশুর হাটসহ ৯টি হাট বসেছে। তবে এ বছর আদালতের নির্দেশনার কারণে আফতাবনগর ও মেরাদিয়ায় হাট বসেনি।
ঢাকা উত্তরে অস্থায়ী ১২টি হাটের মধ্যে রয়েছে- ভাটারা সুতিভোলা খাল সংলগ্ন খালি জায়গা, উত্তরা দিয়াবাড়ীর ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টরের পাশের বউ বাজার এলাকার খালি জায়গা, মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, মোহাম্মদপুরের বছিলায় ৪০ ফুট সড়কের পাশের খালি জায়গা, ভাটুলিয়া সাহেব আলী মাদ্রাসা থেকে রানাভোলা স্লুইসগেট পর্যন্ত খালি জায়গা, অঞ্চল-৮ এর আওতাধীন ৪৪ নম্বর ওয়ার্ড কাঁচকুড়া বাজার সংলগ্ন রহমাননগর আবাসিক এলাকার খালি জায়গায়, খিলক্ষেত বাজার সংলগ্ন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এর নিচের খালি জায়গা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের খালি জায়গা, মস্তুল চেকপোস্ট এলাকা, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল-৩ এর আওতাধীন ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব হাজি পাড়ার ইকরা মাদ্রাসার পাশের সংলগ্ন খালি জায়গা, ডিএনসিসি আওতাধীন কর্পোরেশনের অঞ্চল-৩ এর আওতাধীন ২১ নম্বর ওয়ার্ডের মেরুল বাড্ডা কাঁচা বাজার সংলগ্ন খালি জায়গা এবং মিরপুর কালশী বালুর মাঠের খালি জায়গা।
ঢাকা দক্ষিণে অস্থায়ী ৮টি হাটের মধ্যে রয়েছে- উত্তর শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘ ক্লাবের খালি জায়গা, পোস্তগোলা শ্মশান ঘাটের পশ্চিম পাশে খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ ও ছনটেক মহিলা মাদ্রাসার খালি জায়গা, সাদেক হোসেন খোকা মাঠের দক্ষিণ পাশের খালি জায়গা ও ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল, রহমতগঞ্জ ক্লাবের খালি জায়গা, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গা, আমুলিয়া আলীগড় মডেল কলেজের পাশের জায়গা এবং ইন্সটিটিউট অব লেদার টেকনোলজি মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা।
'সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫' বাতিলের দাবিতে আজও সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেছেন সরকারি কর্মচারীরা। মঙ্গলবার (৩ জুন) ১১তম দিনের মতো বিক্ষোভ করেন তারা।
তারা সচিবালয় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের পর মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সামনে কিছুক্ষণ অবস্থান করেছেন। পরে অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে অর্থ উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে সচিবালয়ের চার নম্বর ভবনের সামনে থেকে কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিল নিয়ে তারা সচিবালয় চত্বর প্রদক্ষিণ করে ৬ নম্বর ভবনের সামনে বাদাম তলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের ব্যানারে তারা এই আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
বিক্ষোভ সমাবেশে ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম বলেন, 'গতকালের বাজেটে মহার্ঘ ভাতার কোনো ঘোষণা নেই। সেটা না করে উল্টো আমাদের ওপর কালো আইন চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপনারা যদি মনে করেন আন্দোলন থেমে গেছে তবে বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। আমরা এমন কর্মসূচি দেব আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না। অধ্যাদেশ বাতিল বা আমাদের সঙ্গে যদি কোনো আপস রফা না করা হয়, তবে আমরা শুধু কর্মবিরতি না, অবস্থান কর্মসূচিও দিতে পারি। আমরা সারা দেশে এই কর্মসূচি ছড়িয়ে দেবো। আমরা সমস্ত সরকারি সেক্টরকে স্তব্ধ করে দেওয়ার মতো ক্ষমতা রাখি। কিন্তু সরকারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য আমরা এমন কর্মসূচি দিচ্ছি না। কিন্তু আপনারা আমাদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছেন।'
তিনি বলেন, 'আমরা আগামী ১৫ জুনের মধ্যে যদি কোনো ভালো সংবাদ না পাই। আমরা আগামী ১৫ জুন নেতারা বসে কঠোর কর্মসূচি দেব। আমরা বলতে বাধ্য হবো- আপস নয় সংগ্রাম।'
ঐক্য ফোরামের আরেক কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর বলেন, আগামীকালকে (৪ মে) যেহেতু ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস, তাই আমাদের কোনো কর্মসূচি থাকবে না। আগামী ১৬ জুন আপনারা সবাই আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন। ওই দিন বেলা ১১টায় কেউ যাতে কর্মস্থলে না থাকেন। আমরা সবাই একত্রিত হয়ে সমস্বরে বলবো- অবৈধ কালো আইন, মানি না মানবো না।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের মহাসচিব মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, আপনারা মনে কইরেন না কর্মচারীরা বোকা। আপনাদের কাছে আমাদের যে আশা প্রত্যাশা ছিল সেটা আর পূরণ হলো না। আপনারা চাচ্ছেন আপনাদের সঙ্গে সংঘর্ষ। ইনশাআল্লাহ যদি বেঁচে থাকি ঈদের পরে সংঘর্ষ দিয়েও যদি হয় তারপরও কালো আইন বাতিল করব।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষে কর্মচারীরা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সামনে কিছুক্ষণ অবস্থান করেন।
এরপর অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বরাবর স্মারকলিপি দেন।
চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে।
এমন বিধান রেখে গত ২৫ মে 'সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫' জারি করা হয়।
এর আগে গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন হয়। ২৪ মে থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠন সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। তারা এই অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে অবহিত করছেন।
আগামী ৭ জুন (শনিবার) সারা দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। ঈদুল আজহায় প্রতি বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পাঁচটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞিপ্তিতে জাতীয় মসজিদে ঈদ জামাতের সময়সূচিসহ বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
ফাউন্ডেশনের সহকারী জনসংযোগ কর্মকর্তা শায়লা শারমীনের সই করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায় এবং পরবর্তী চারটি জামাত যথাক্রমে সকাল ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং বেলা পৌনে ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতি বছরের মতো এবারও জামাতগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন দেশের খ্যাতনামা আলেমরা।
প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন যাত্রাবাড়ীর তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. খলিলুর রহমান মাদানী এবং মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আব্দুল হাদী।
দ্বিতীয় জামাতে (সকাল ৮টা) ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মাওলানা আবু সালেহ পাটোয়ারী এবং মুকাব্বির থাকবেন জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. নাসির উল্লাহ।
তৃতীয় জামাতে (সকাল ৯টা) ইমামতির দায়িত্বে থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদ ও সংকলন বিভাগের সম্পাদক ড. মুশতাক আহমদ এবং মুকাব্বির থাকবেন জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. বিল্লাল হোসেন।
চতুর্থ জামাতে (সকাল ১০টা) ইমামতির দায়িত্বে থাকবেন ফাউন্ডেশনের মুফতি মো. আব্দুল্লাহ এবং মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররমের খাদেম মো. আমির হোসেন।
সবশেষ জামাতে (সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট) ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন এবং মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররমের খাদেম মো. জহিরুল ইসলাম।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, কোনো ইমাম অনুপস্থিত থাকলে তার পরিবর্তে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী লাইব্রেরিয়ান মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম ইমামতির দায়িত্ব পালন করবেন। আর বিকল্প মুকাব্বির হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন খাদেম মো. রুহুল আমীন।
জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয় সরকার বিভাগের তত্ত্বাবধানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন ও কার্যক্রম চলমান।
গত ২৮ মে ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা থেকে রাজধানী ঢাকায় টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয় সরকার বিভাগের তত্ত্বাবধানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।
জলাবদ্ধতা দ্রুত নিরসন ও নাগরিক জীবনে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান মহোদয়ের পরামর্শক্রমে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাকরাইলস্থ প্রধান কার্যালয়ের ২য় তলায় একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ২৯ মে ২০২৫ তারিখে স্থাপন করা হয়। নিয়ন্ত্রণ কক্ষে এ পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন থেকে ১৯টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন থেকে ৪২টি অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অধিকাংশ অভিযোগের সমাধান সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকি অভিযোগসমূহের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
অদ্য ৩০ মে ২০২৫ বিকাল ৪:০০ ঘটিকায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মানিত সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী সরেজমিনে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ এবং বিভিন্ন এলাকাসমূহ পরিদর্শন করেন। সচিব তাৎক্ষণিক জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। এসময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান এবং উভয় সিটি কর্পোরেশনের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
জলাবদ্ধতা নিরসনের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মিরপুর ১০, কালশি, ভাষানটেক, খিলক্ষেত, নাখালপাড়া, কাজিপাড়া, শেওড়াপাড়া, শাহ আলী, বাউনিয়া, সাতারকুল, ভাটারা, উত্তরখান, উত্তরা (সেক্টর ১, ৬, ১২, ১৩), এয়ারপোর্ট এলাকা এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ধানমন্ডি-২৭, গ্রিন রোড, শুক্রাবাদ, কাঁঠালবাগান, কলাবাগান, নিউ মার্কেট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শান্তিনগর, বেইলি রোড, মগবাজার, আরামবাগ, ফকিরাপুল, মতিঝিল, গুলিস্তান ও সচিবালয় এলাকার জলাবদ্ধতা দূর করা হয়েছে।
নগরবাসী নিম্নোক্ত হটলাইন নম্বরে কল করে জলাবদ্ধতা সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে পারবেন:
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন: ০১৭৩৩৯৮২৪৮৬, ০১৯৬৬৭২৫৯১১, +৮৮০৯৬০২-২২২৩৩৩
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন: ০১৫৩৪৬৬৪৪৪০, ০১৯৪২৮৩১৪৪৯, ০১৭০৯৯০০৪৪৪
জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু থাকবে এবং সার্বক্ষণিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
রাজধানীর মগবাজারের গ্রিনওয়ে গলিতে চাঞ্চল্যকর ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৪ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাকের কাছ থেকে ছিনতাই করা মালামাল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলো- মো. শামিম (২৪), মো. জীবন ওরফে হৃদয় (২৭), সোহেল রানা (৩৬) ও মকবুল হোসেন (২৫) ।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ডিবি তেজগাঁও বিভাগের একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর ও এর আশেপাশের এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া ব্যাগ, নয় হাজার ৬০০ টাকা, একটি মোবাইল ফোন, ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত দুটি চাপাতি, একটি সুইচ গিয়ার ও একটি মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়।
ডিবি সূত্র জানায়, গত ১৯ মে মগবাজারের গ্রিনওয়ে গলিতে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার সিসিটিভি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল (ছড়িয়ে) হয়। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে সাঁড়াশি অভিযানে নামে থানা পুলিশ ও ডিবি। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ঘটনায় জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার ও ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধার করা হয়।
ডিবি সূত্রে আরও জানায়, গ্রেপ্তার সোহেল, হৃদয় ও শামীম সরাসরি ছিনতাইয়ে অংশ নিয়েছিল আর মকবুল ছিনতাইয়ের মালামালের ক্রেতা। তারা সবাই পেশাদার ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। তারা ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ছিনতাই করতো। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
‘সরকারি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। পূর্ব ঘোষণার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করা হয়।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি এবং ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদীউল কবীর ইউএনবিকে জানান, ‘বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে আমাদের কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে।’
বুধবার (২৮ মে) সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতারা বলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সচিবালয়ের কর্মচারীরা প্রতিদিন এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন। একই সঙ্গে তারা মাঠপর্যায়ে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ সব দপ্তরে একই সময়ে এই কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
ঐক্য ফোরামের নেতারা আরও জানান, দাবি পূরণ না হলে ৩১ মে পরবর্তী নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
অধ্যাদেশের প্রেক্ষাপটে শাস্তির বিধান
এদিকে, সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ এর আওতায় চারটি বিষয়কে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে তিনটি শাস্তি দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এসব শাস্তি হলো—বরখাস্ত, অব্যাহতি এবং বেতন ও পদের গ্রেড কমিয়ে দেওয়া।
অধ্যাদেশে যেসব অপরাধের জন্য শাস্তি প্রদান করা হবে সেগুলো হলো: অনানুগত্য দেখানো ও কাজে বাধা দেওয়া, একক বা সমবেতভাবে কাজে অনুপস্থিত থাকা, কাউকে কাজ থেকে বিরত থাকতে উসকানি দেওয়া এবং কাউকে কাজ করতে বাধা দেওয়া।
এছাড়া, সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ড সংক্রান্ত বিশেষ বিধান অনুযায়ী—যদি কোনো সরকারি কর্মচারী এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের শামিল, অন্য কোনো কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে, শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে অথবা কাজে বাধা সৃষ্টি করে, তাহলে সেটি অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে।
এমন অপরাধের জন্য পদ বা বেতন গ্রেড অবনমিতকরণ, চাকরি থেকে অপসারণ এবং এমনকি চাকরি থেকে বরখাস্ত করার ব্যবস্থা রয়েছে।
এছাড়া, যদি কেউ একক বা দলবদ্ধভাবে ছুটি ছাড়া বা যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই কাজে অনুপস্থিত থাকেন, অথবা এ ধরনের কাজ করতে কাউকে উসকানি দেন কিংবা কাউকে কাজ করতে বাধা দেন, তাহলে তার জন্যও একই শাস্তি প্রযোজ্য হবে।
এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আসলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি অভিযোগ গঠন করে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাও নোটিশ দেবেন। নোটিশের জবাব পেলে সেটি বিবেচনা করে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে কিংবা তাকে কেন দণ্ড দেয়া হবে না সেজন্য নোটিশ জারির সাত কার্যদিবসের মধ্যে কর্তৃপক্ষ ওই ব্যক্তির কাছ থেকে কারণ দর্শাও নোটিশ চান।
এরপর, অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি কারণ ব্যাখ্যা করে জবাব দেন, তবে সেটি বিবেচনা করে অথবা জবাব না দিলে অধ্যাদেশে উল্লিখিত যেকোনো শাস্তি দেওয়া যাবে।
কোনো কর্মচারীকে দণ্ড দেয়া হলে তিনি ত্রিশ কার্যদিবসের মধ্যে আপিল করতে পারবেন, তবে রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করা যাবে না। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারবেন এবং রাষ্ট্রপতি যেভাবে মনে করবেন, সেভাবে আদেশ দিতে পারবেন।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) থেকে প্রতিদিন এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে বুধবার (২৮ মে) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের যে ন্যায্য দাবি অবৈধ কালাকানুন বা কালো আইন সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে আমরা মোটামুটি একটি সবুজ সংকেত পেয়েছি। আশা করি, আলাপ-আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে যে ফলাফল আসবে আশা করি এতে তারা (কর্মচারী) সন্তুষ্ট হবেন।’
ইতিমধ্যে অধ্যাদেশ বাতিলের বিষয়ে উত্থাপিত দাবি নিয়ে সরকারের উচ্চ মহলে বিচার-বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকেই বিষয়টির কুফল সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। এই কালো বা নিবর্তনমূলক আইন রাষ্ট্রের সাধারণ জনগণ ও কর্মচারীদের জন্য ফলপ্রসূ নতুন কোন কিছু বয়ে আনবে না।’
‘রাষ্ট্রের স্বার্থ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে কর্মচারীদের মান-মর্যাদা ও কর্মস্থলের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ অনুকূল কর্মপরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে আমরা উপদেষ্টামণ্ডলীর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। সচিব পর্যায়েও আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।’
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি বাদিউল বলেন, ‘গতকালকে সাতজন সচিবের সঙ্গে আমাদের যে বৈঠক হয়েছে, সেটার ধারাবাহিকতায় ওই সচিবরা আজকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয়ের সঙ্গে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা করেছেন। তারা পরিষ্কারভাবে কোনো কিছু না বললেও বিষয়টি আমাদের বুঝতে বাকি নেই, আমরা আশা করছি, তাদের এই আলোচনায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয় ইতিবাচক কোনো কিছু আমাদের জন্য এনে দিতে পারবেন।’
কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলেই কাঙ্ক্ষিত বিষয়টির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে, ইনশাআল্লাহ। কিন্তু আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, রাষ্ট্রের ক্রান্তিকাল অতিক্রম হতে চলছে। আপনারা জানেন সামনেই কোরবানির ঈদ এবং বাজেট ঘোষণার সময়। যেহেতু আমরা সাধারণ মানুষের সেবক। সাধারণ মানুষের দুঃখ লাঘবে আমরা সেবা প্রদান করে থাকি। সরকারি কর্মচারীরা যাতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কারণ না হয় আমরা সেই বিষয়টিও বিবেচনায় এনেছি।’
এই কর্মচারী নেতা বলেন, ‘আমরা সব বিষয় চিন্তা-ভাবনায় রেখে আগামী দিনগুলোতে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে আমরা জরুরি সেবার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সচিবালয়ে শুধু প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি চলতে থাকবে। মাঠ পর্যায়ে সব দপ্তর, পরিদপ্তর, অধিদপ্তর এবং ডিসি অফিস, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত, আমাদের পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।’
কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘এর সঙ্গে সঙ্গে আপনাদেরকে একটি বিষয়ে অবহিত না করলেই নয়; সারাদেশে যে সব জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান আছে, বাজেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং যারা হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন, সেই সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ভাই-বোনদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে- আপনারা আপনাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যত কম সময় কর্মবিরতি পালন করতে পারেন, অভ্যন্তরীণভাবে আপনারা সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
‘তবে আমার প্রস্তাব আধা-ঘণ্টার বেশি নয়। যদি আরও কম সময় আপনারা কর্মবিরতি পালন করে সাধারণ মানুষের সেবাটা নিশ্চিত করতে পারেন, সেই বিষয়টি বিবেচনার জন্য আপনাদের প্রতি অনুরোধ রইলো,’ যোগ করেন তিনি।
‘আমরা এর মধ্যেই উপদেষ্টা মহোদয়দের কাছে এ বিষয়ে যৌক্তিকতা আরও নিবিড়ভাবে বোঝানোর জন্য ব্যক্তিগত যোগাযোগ এবং স্মারকলিপির মাধ্যমে তাদেরকে বিষয়টি অবহিত করব।’
প্রধান উপদেষ্টা আসা পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্যের সঙ্গে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বাদিউল কবীর। অধ্যাদেশ বাতিলের বিষয়ে সবুজ সংকেত কিভাবে পেয়েছেন জানতে চাইলে- তিনি বলেন, ‘সার্ভিসে আমাদের দীর্ঘ মেয়াদি অভিজ্ঞতা আছে। সেই অভিজ্ঞতার সূত্রটি আমরা অ্যাপ্লাই করেছি- কোন কাজের কোন আলোচনার কি ফলাফল আসতে পারে।’
ইনোভেশন প্রদর্শনী আয়োজনের লক্ষ্যে আহসান মঞ্জিল জাদুঘরে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন জাদুঘর ক্যাম্পেইন। ‘পরিচ্ছন্ন জাদুঘর, হোক আমাদের অঙ্গীকার’ এই স্লোগানে জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শো-কেসিং পরিচালনার ক্যাম্পেইনটি ২৬ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
আজ সোমবার জাদুঘরে পরিচ্ছন্নতা ক্যাম্পেইনটির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সচিব মো. সাদেকুল ইসলাম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আহসান মঞ্জিল জাদুঘরের কীপার মো. সুলতান মাহমুদ ও উপকীপার দিবাকর সিকদার।
এদিন বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইটির সূচনা হয়। পরবর্তীতে জাদুঘর প্রাঙ্গণে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছে।
জাতীয় জাদুঘরের সচিব মো. সাদেকুল ইসলাম আহসান মঞ্জিলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন এবং খুব দ্রুতই জনসাধারণের সুবিধার্থে আরও কয়েকটি ওয়াশরুম স্থাপনের নির্দেশনা দেন। এছাড়াও গ্যালারি আরও আধুনিকায়ন, প্রয়োজনীয় স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করার বিষয়েও আস্বস্ত করেছেন।
ক্যাম্পেইনটির বিষয়ে জানতে চাইলে আহসান মঞ্জিল জাদুঘরের কীপার মো. সুলতান মাহমুদ জানান, জনসাধারণকে সচেতন করতেই মূলত আমাদের এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। যারা আহসান মঞ্জিলে আসে তারা যেনো নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলে এবং নোংরা না করে সে লক্ষ্যেই আমরা সকলকে সচেতন করবো।
সার্বিক বিষয়ে আহসান মঞ্জিল জাদুঘরে উপকীপার দিবাকর সিকদার বলেন, আহসান মঞ্জিলে পূর্বে যেসব ডাস্টবিন ছিল সেগুলোর অধিকাংশই নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। আমরা নতুন করে বিভিন্ন স্থানে ডাস্টবিন স্থাপন করেছি। পর্যায়ক্রমে আমরা জাদুঘরের বিভিন্ন স্থানে ২৫টি ডাস্টবিন স্থাপনের পরিকল্পনা করেছি। এছাড়াও সকলে যেনো জাদুঘরের আঙ্গিনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখে সে ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
ক্যাম্পেইনটি পরিচালনা করছে আহসান মঞ্জিলের কর্মকর্তা কর্মচারীসহ বিডি ক্লিনের ভলেন্টিয়াররা। ক্যাম্পেইন চলাকালীন বিডি ক্লিনের সহযোগিতায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অভিযান পরিচালনা করা হবে।