রাজধানীর ডেমরার দেইল্লা বাসস্ট্যান্ডে থামিয়ে রাখা অছিম পরিবহনের বাসে আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত বিএনপির তিন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
তারা হলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম মনির ওরফে মনির মুন্সি (৩৭), নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব মো. সাহেদ আহমেদ (৩৮), বিএনপি কর্মী এবং মনির মুন্সির ব্যক্তিগত গাড়িচালক মাহাবুবুর রহমান সোহাগ (৩৩)।
শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বানচালের উদ্দেশ্যে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টন এলাকায় নারকীয় তাণ্ডব চালায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। প্রধান বিচারপতির বাস ভবনে হামলা, পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করার মত জঘন্য কাজসহ অসংখ্য গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে ডেমরার দেইল্লা বাস স্ট্যান্ডে রাখা অছিম পরিবহনের একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই বাসে ঘুমিয়ে থাকা হেলপার মো. নাইম (২২) ঘটনাস্থলে আগুনে পুড়ে মারা যান এবং অপর হেলপার মো. রবিউল (২৫) অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হন। এ ঘটনায় ২৯ অক্টোবর ডেমরা থানায় একটি মামলা করা হয়। পরে মামলাটি গত ১১ নভেম্বর সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের অ্যান্টি ইলিগাল আর্মস অ্যান্ড ক্যানাইন টিমে হস্তান্তর করা হয়।
তদন্তের প্রথমেই দুইজন ভুক্তভোগীর খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৃত মো. নাইমের (২২) বাড়ি বরিশালের কোতোয়ালি থানা এলাকায়। নাইমের বাবার নাম আলম চৌকিদার এবং মায়ের নাম পারভীন বেগম। তারা ডেমরা এলাকাতেই থাকতেন। অভাবের সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে অল্প বয়সেই কাজে নেমে পড়েন নাইম। অবশেষে দায়িত্ব পলন করতে গিয়ে বাসের ভেতর ঘুমন্ত অবস্থায় তিনি মারা যান। অপর ভুক্তভোগী মো. রবিউল (২৫) একই বাসে নাইমের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিলেন। আগুনের তাপে ঘুম ভেঙে যায় তার। কিন্তু ততক্ষণে তার শরীরেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কোনোমতে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তিনি গাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন। পরে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, তদন্তভার গ্রহণের পর ঘটনাস্থলের চারপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। এসব ফুটেজ বিশ্লেষণ করে একটি হ্যারিয়ার গাড়ি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। ওই গাড়িটি ঘটনার দিন অগ্নিসংযোগে ব্যবহৃত হয়েছিল। এ গাড়ির সূত্র ধরে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মূল অগ্নিসংযোগকারী ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার এবং ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়িটি জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের দেয়া তথ্যের বরাতে আসাদুজ্জামান বলেন, গত ২৮ অক্টোবরের ধারাবাহিকতা এবং নাশকতা অব্যাহত রাখার জন্য মনির মুন্সি তার নেতাদের কাছ থেকে নির্দেশনা পেয়েছিলেন। নির্দেশনার মূল বিষয়বস্তু ছিল নাশকতার মাত্রা আরও বাড়ানো এবং এমন কোনো ঘটনা ঘটানো যাতে জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। তারই অংশ হিসেবে তিনি (মনির মুন্সি) বেশ কয়েকজনকে অগ্নিসংযোগের জন্য নিয়োগ দেন। তিনি নিজে বড় একটি ঘটনা ঘটানোর জন্য তার অপর সহযোগী নারায়ণগঞ্জ যুবদলের সদস্য সচিব এবং তার বন্ধু সাহেদ আহমেদকে ডেকে নেন।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ওই দিন রাত ২টার পর বেশ কয়েকবার ডেমরার দেইল্লা বাস স্ট্যান্ড এলাকা গাড়ি নিয়ে রেকি করেন। অবশেষে তারা কাঙ্ক্ষিত টার্গেট ফিক্সড (নির্দিষ্ট) করে বড়ভাঙা মার্কেটে চলে যান। সেখান থেকে তারা ২ লিটারের একটি পানির বোতলে পেট্রোল সংগ্রহ করেন রাত ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ঘটনাস্থলে নিরাপদ দূরত্বে গাড়ি থামিয়ে ড্রাইভার মাহাবুবুর রহমান সোহাগ গাড়িতে অবস্থান করেন এবং মনির মুন্সি ও সাহেদ পেট্রোলের বোতল নিয়ে রাস্তার পাশে পার্ক করা অছিম পরিবহনের গাড়ির কাছে যান। ড্রাইভারের সিটের পাশে থাকা খোলা গ্লাসের অংশ দিয়ে মনির মুন্সি পেট্রোল ঢেলে দেন এবং বোতলটি সেখানে ফেলে দেন। তারপর দিয়াশলাইয়ের কাঠিতে আগুন ধরিয়ে পেট্রোলের উপর ছুড়ে মারেন। আগুন ছড়িয়ে পড়লে তারা দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, হামলাকারীরা সম্ভাব্য বিপদ এড়ানোর জন্য সড়কের রং সাইড দিয়ে ডেমরা এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে সুফিয়া কামাল ব্রিজ দিয়ে ভুলতায় থাকা মনির মুন্সিদের মালিকানাধীন মুন্সি পেট্রোল পাম্পে রাত্রি যাপন করে। পরদিন সকাল ১০টার দিকে তারা পেট্রোল পাম্প থেকে বাসায় চলে যান।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি সম্পূর্ণ ক্লু-লেস ছিল। আমরা বিভিন্ন ফুটেজ সংগ্রহ করে ও তদন্ত করে একটি গাড়ি শনাক্ত করি। পরে সেই গাড়ির সূত্র ধরে একে একে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা আগুন দেওয়ার জন্য দুই লিটারের একটি পানির বোতলে মোটরসাইকেল থেকে পেট্রোল সংগ্রহ করে, সেটিও জব্দ করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি কর্মকর্তা বলেন, মনির মুন্সি নির্দেশদাতাদের কাছ থেকে নির্দেশনা পেয়ে এ কাজ করেন। তিনি আরও বড় ধরনের ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিলেন। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। দলের আরও বড় পোস্ট পাওয়ার আশায় এ কাজ করেন তিনি।
এই ঘটনায় নির্দেশদাতাদের শনাক্ত করা হয়েছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নির্দেশদাতাদের নাম পেয়েছি ৷ তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। আমরা তাদেরও গ্রেপ্তার করব। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের বিষয়ে এখনই কোনো তথ্য আমরা বলব না।
ঢাকায় ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, বিআরটিএ এবং ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের ঘোষণার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ।
আজ সোমবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করেন সংগঠনটির নেতারা। এর আগে কয়েকশ অটোরিকশা চালক মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হন। এতে প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তার একপাশে যান চলাচল সীমিত হয়ে যায়।
সমাবেশে থ্রি-হুইলার ও সমজাতীয় মোটরযান নীতিমালা চূড়ান্ত ও কার্যকর করে ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের দ্রুত নিবন্ধন, লাইসেন্স প্রদান ও রুট পারমিটসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। দাবি আদায় না হলে আগামী ২৭ মে সারা দেশে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
সংগঠনটির নেতারা বলেন, ‘কেন এই সিদ্ধান্ত? কার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত? ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহন ঢাকা মহানগরের প্রধান সড়কে চলাচল করে না। এটা মূলত মহানগরে অলিগলিতে চলে। কারণ সেখানে কোনও গণপরিবহন নেই। এক জরিপে দেখা গেছে, ঢাকা মহানগরের প্রায় ৬০ ভাগ মানুষ এই ধরনের যানবাহনে চলাচল করে। আর মাত্র ৬ ভাগ যাত্রী নিয়ে ঢাকা মহানগরের প্রায় ৮০ ভাগ রাস্তা দখল করে যানজট সৃষ্টি করে প্রাইভেট গাড়ি। তারপরেও কেন এই বাহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা।’
তারা বলেন, ‘এই বাহনের সঙ্গে চালক, মালিক, মহাজন, গ্যারেজ মালিক, চার্জিং ব্যবসায়ী, শ্রমিক, মেস পরিচালনাকারী ও মোটর-রিকশা পার্টস, ব্যাটারিসহ সারা দেশে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ জড়িত। ঢাকা মহানগরে এ সংখ্যা আনুমানিক ৫ লাখের উপরে। বিকল্প ব্যবস্থা না করে রাস্তা থেকে উচ্ছেদ করে এ গণপরিবহন বন্ধ করা হলে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহকারী লাখ লাখ মানুষের ও তাদের পরিবারের দায়দায়িত্ব কে নেবে?’
সংগঠনটি জানায়, বিআরটিএর এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল এই যানবাহন বন্ধের কারণ হিসাবে বলা হয়েছে- মোটর ভিহিকল অ্যাক্ট ২০১৮ অনুযায়ী এটি অনুমোদিত না। কিন্তু ইতোমধ্যে ইলেকট্রিক মোটরযান চলাচল সংক্রান্ত নীতিমালা পাশ হয়েছে ও ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলার মোটরযান নীতিমালা চূড়ান্ত হওয়ার পথে। ব্যাটারিচালিত যানবাহন এই নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত। ফলে মোটর ভিহিকল অ্যাক্ট এখানে প্রযোজ্য নয়। আর নিরাপত্তাজনিত সমস্যার কথা বলা হয়েছে। এটাও একটি মিথ্যা কথা। নিরাপত্তাজনিত কি সমস্যা হয়েছে তার কোন বিশ্বাসযোগ্য তথ্য উপাত্ত হাজির না করে লাখ লাখ মানুষের রুটি রুজিতে হাত দেওয়ার অধিকার বিআরটিএর নেই।
নেতাদের দাবি, এটি পরিবেশ বান্ধব, শব্দ ও বায়ু দূষণ করে না, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী বাহন বলে এটা এখন বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সবচেয়ে জনপ্রিয় বাহন। ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ বাহনের ইঞ্জিনের সক্ষমতা, সাশ্রয়ী, বিদ্যুতে রিটার্ন বেশি ও পরিবেশবান্ধব। তিনি এই বাহনকে বাংলার টেসলা বলে সম্বোধন করছেন। ইতোমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট মহাসড়ক ছাড়া সর্বত্র চলাচলে আদেশ প্রদান করেছেন। সড়ক পরিবহন মন্ত্রী, বিআরটিএ ও দুই মেয়রের এই ঘোষণা কাউকে খুশি করতে বা কোনও মহলকে আশ্বস্ত করতে করা হচ্ছে কিনা তাও অনুসন্ধান জরুরি।
সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা সড়ক পরিবহন মন্ত্রী, বিআরটিএ ও ঢাকা মহানগরের দুই মেয়রের ঘোষণার পর মিরপুর, লালবাগ, গেন্ডারিয়া, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রিকশা আটক, ব্যাটারি খুলে নেওয়া, ডাম্পিং ও চালক-মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের হয়রানির এবং মিরপুর এলাকায় আন্দোলনরত রিকশা শ্রমিকদের ওপর পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি মন্ত্রী, বিআরটিএ ও মেয়রের এই সিদ্ধান্ত বাতিলের জোর দাবি জানান তারা। অন্যথায় কর্মহীন ও বেকার চালকসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ২৭ মে সারা দেশের ৬৪ জেলায় তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।
রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ইজি বাইক সংগ্রাম পরিষদের ঢাকা মহানগর শাখার সহ-সভাপতি জালাল আহমেদের সভাপতিত্বে ও অর্থ সম্পাদক রোখশানা আফরোজ আশার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের আহ্বায়ক ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, অর্থ সম্পাদক জুলফিকার আলী, সংগ্রাম পরিষদ কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ সদস্য আবু নাঈম খান বিপ্লব, রাহাত আহমেদ, এস এম কাদির, ঢাকা মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক দাউদ আলী মামুন, সদস্য সেকান্দার আলী, আবদুস সালাম।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালানোর দাবিতে কালশীর পর আজ সোমবার সকালে রাজধানীর রামপুরায় সড়ক অবরোধ করেছিলেন অটোরিকশাচালকরা। এতে এই পথে যানজট দেখা দেয়। তবে ৪৫ মিনিট পর চালকরা সড়ক ছেড়ে দিলে স্বাভাবিক হয় এখানকার যান চলাচল।
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, আজ সকালে অটোরিকশা চালানোর দাবিতে চালকরা রাস্তায় নামেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চালকরা রাস্তা ছেড়ে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অটোরিকশা চালানোর দাবিতে আজ সকাল থেকে রামপুরা বেটার লাইফ হাসপাতালের সামনে সড়ক অবরোধ করেন তারা। এতে দুই পাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
এর আগে গতকাল রোববার রাজধানীর মিরপুর-১০ ও কালশীতে দিনভর অটোরিকশা চালানোর দাবিতে সড়ক অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ করেন চালকরা।
রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলার অনুমতির দাবিতে এবার রামপুরা এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছেন অটোরিকশাচালকরা।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রামপুরা এলাকায় অবরোধ শুরু করেন তারা।
জানা যায়, অটোরিকশা চালানোর দাবিতে রামপুরা বেটার লাইফ হাসপাতালের সামনে সড়ক অবরোধ করে অটোরিকশা চালকরা। এতে দুই পাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, সোমবার সকালে অটোরিকশা চালানোর দাবিতে চালকরা সড়কে নামেন। এখন পর্যন্ত তারা সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে, গতকাল রোববার সকাল থেকে রাজধানীর মিরপুর-১, মিরপুর-১০ ও আগারগাঁও এলাকার সড়কের একাধিক স্থানে অবস্থান নেন চালকরা। পরে দুপুর থেকে রাজধানীর কালশী এলাকায় তাণ্ডব চালায় অটোরিকশা চালকরা।
একপর্যায়ে তারা বিকেলের দিকে কালশী মোড়ে অবরোধ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তারা বিভিন্ন পরিবহনের একাধিক বাসে ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া, সর্বশেষ কালশী মোড়ে অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকরা।
রাজধানীর কালশীতে দিনভর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন ও বিকেলের দিকে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শেষে এখন কালশীর পরিস্থিতি স্বভাবিক রয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর থেকে কালশীতে স্বাভাবিক যান চলাচল শুরু হয়।
ডিএমপির ট্রাফিক মিরপুর বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. জসিম উদ্দীন গণমাধ্যমকে জানান, কালশীর পরিস্থিতি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর স্বাভাবিক হয়েছে। বর্তমানে যান চলাচল শুরু হয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন পুনরায় না ঘটে সেজন্য পুলিশ সদস্যরা রাস্তায় রয়েছেন।
কালশীতে পুলিশ বক্স পোড়ানোর ঘটনায় মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে অবশ্যই মামলা হবে। মিরপুর ট্রাফিক বিভাগ বাদী হয়ে একটি মামলা করবে। এরই মধ্যে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’
রোববার দুপুরের পর থেকে রাজধানীর কালশী এলাকায় প্রচণ্ড তাণ্ডব চালায় অটোরিকশা চালকরা। একপর্যায়ে তারা বিকেলের দিকে কালশীর রাস্তা অবরোধ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তারা বিভিন্ন পরিবহনের একাধিক বাসে ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া, সর্বশেষ কালশী মোড়ে অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকরা।
এর আগে, আজ রোববার সকাল থেকে রাজধানীর মিরপুরের বেশ কিছু এলাকায় লাঠিসোটা নিয়ে সড়ক অবরোধে নামেন ব্যাটারিচালিত অটো রিকশার চালকরা। এ সময় ব্যহত হয় স্বাভাবিক যান চলাচল।
ঢাকা মহানগরে ব্যাটারি অথবা মোটরচালিত রিকশা-ভ্যান এবং রংচটা, জরাজীর্ণ, লক্কড়-ঝক্কড় মোটরযান চলাচল বন্ধ করা বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
আজ রোববার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান বিআরটিএ উপপরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) হেমায়েত উদ্দিন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ব্যাটারি অথবা মোটরচালিত রিকশা বা ভ্যান বা অনুরূপ শ্রেণির থ্রি-হুইলার ঢাকা মহানগরে চলাচলের কারণে সড়কে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ অনুযায়ী ব্যাটারি অথবা মোটরচালিত রিকশা বা ভ্যান বা অনুরূপ শ্রেণির থ্রি-হুইলার এবং ফিটনেসের অনুপযোগী, রংচটা, জরাজীর্ণ ও লক্কড়-ঝক্কড় মোটরযান চালানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ পরিস্থিতিতে ঢাকা মহানগরে ব্যাটারি অথবা মোটরচালিত রিকশা বা ভ্যান বা অনুরূপ শ্রেণির থ্রি- হুইলার এবং ফিটনেসের অনুপযোগ মোটরযান চলাচল বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। অন্যথায়, এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বিআরটিএ।”
গত বুধবার রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে এক সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত কোনো গাড়ি (তিন চাকার) যেন ঢাকা সিটিতে না চলে। আমরা ২২টি মহাসড়কে নিষিদ্ধ করেছি। শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, চালাতে যেন না পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।’ বিআরটিএ ভবনে মন্ত্রীর সঙ্গে ওই সভায় ঢাকার দুই মেয়রও শহরের মধ্যে এসব ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধের বিষয়ে তাদের সম্মতি জানান।
রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাহারের দাবিতে আগামীকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি দিয়েছে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচির কথা জানায় সংগঠনটি।
এ দিকে, আজ রোববার রাজধানীর মিরপুরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধের ঘোষণার প্রতিবাদে সকাল থেকে আন্দোলনে নেমে সড়ক অবরোধ করেন অটোরিকশা চালকেরা। রাজধানীর মিরপুরের কালশীতে দুপুরে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পাশাপাশি বিকেলে কালশী পুলিশ বক্সে আগুন দেন আন্দোলনকারীরা। এই সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশের রাবার বুলেট লেগে আহত হয়েছেন সাগর নামে এক পথচারী।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে চার বছরের দায়িত্বে সফলতার সঙ্গে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেন, ‘গত বছরের জানুয়ারি থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ডিএসসিসি এলাকায় ৯ হাজার ৭৬৪ জন ডেঙ্গু রোগী পেয়েছি। তখন সারা দেশে রোগী ছিল ২ লাখ ৭১ হাজার ১৭৫ জন। সুতরাং বলা যায়, আমরা সফলতার সঙ্গে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।’
আজ রোববার ডিএসসিসির নগর ভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মেয়র হিসেবে শেখ তাপসের দায়িত্বভার গ্রহণের চার বছর অতিক্রম উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ডিএসসিসি।
তাপস বলেন, ‘যদিও গত বছর দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। কেবল ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে যত মৃত্যু হয়েছে, তা আগের ২২ বছরে হয়নি। অর্থাৎ আগের ২২ বছরের চেয়ে গত বছর রোগীর সংখ্যা ছিল বেশি।’
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সফলতা তুলে ধরে মেয়র তাপস বলেন, ‘আমরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে আমূল পরিবর্তন সাধন করেছি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম আধুনিকায়নে অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তরকেন্দ্র অন্যতম একটি অনুষঙ্গ। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিগত চার বছরে নতুন ৪১টি অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তরকেন্দ্র নির্মাণ করেছি। বাকি ওয়ার্ডগুলোতেও নির্মাণকাজ চলমান।’
তিনি জানান, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম আধুনিকায়নে চার বছরে নতুন ২৫টি ডাম্প ট্রাক ক্রয়, প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রাথমিক বর্জ্য সংগ্রহকারী নিবন্ধন, পুরোনো পাঁচটি অঞ্চলে চিকিৎসা-বর্জ্য সংগ্রহকারী নিবন্ধন করেছি। নতুন পাঁচটি অঞ্চলে চিকিৎসা-বর্জ্য সংগ্রহকারী নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান। সর্বোপরি সূচি অনুযায়ী নিয়মিতভাবে বিভিন্ন সড়ক, অলিগলি ঝাড় দেওয়া ও রাতের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তরকেন্দ্র থেকে মাতুয়াইল কেন্দ্রীয় ভাগাড়ে বর্জ্য স্থানান্তর নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন ১৫টি ডাম্প ট্রাক ও ১০টি পে- লোডার কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সামষ্টিকভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে আধুনিকায়ন নিশ্চিত হয়েছে। এতে শহরের সৌন্দর্য যেমন বেড়েছে, তেমনি নগরবাসীকে এখন আর যত্রতত্র উপচেপড়া বর্জ্যের উৎকট গন্ধে পথ চলতে হয় না।
বিগত চার বছরে কোনো খাতে কোনো ধরনের কর বাড়ানো হয়নি জানিয়ে মেয়র বলেন, ঢাকাবাসীর ওপর করের বোঝা না চাপিয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছিলাম। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিগত চার বছরে আমরা কোনো খাতে কর বাড়াইনি। এ সময়ে ২৫টি নতুন খাত সৃষ্টি করা হয়েছে এবং ১৪টি নতুন খাত থেকে আমরা রাজস্ব আদায় শুরু করেছি। করোনাভাইরাস মহামারির মতো বৈশ্বিক সংকটের মাঝেও রাজস্ব আদায়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ইতিহাস সৃষ্টি করে চলেছে, যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
তাপস বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে করপোরেশনের রাজস্ব আদায় ছিল মাত্র ৫১৩ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা, যা ২০২০-২১, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে বেড়ে যথাক্রমে ৭০৩ দশমিক ৩১ কোটি, ৮৭৯ দশমিক ৬৫ কোটি ও এক হাজার ৩১ দশমিক ৯৭ কোটি টাকা হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত যে রাজস্ব আদায় হয়েছে, তা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫৪ কোটি টাকা বেশি।
মিরপুরের কালশীতে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় সাগর (২৩) নামে এক পথচারী বুকে রাবার বুলেট লেগে আহত হয়েছেন। আহত সাগরকে চিকিৎসার জন্য আজ বিকেল ৫টার দিকে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ভর্তি করা হয়।
সাগরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা তার সহকর্মী রাকিবুল মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, তাদের বাসা মিরপুর ১১ নম্বর, বাউনিয়াবাদ এলাকায়। এলাকাতে একটি টেইলার্সে কাজ করেন সাগর। তারা দুজন আজ সকালে একটি কাজে উত্তরায় গিয়েছিলেন। বিকেলে সেখান থেকে মিরপুরের বাসায় ফিরছিলেন। পথে কালশী মোড়ে এসে দেখেন, পুলিশের সঙ্গে অটোরিকশা চালকদের সংঘর্ষ হচ্ছে। তখন সেই সংঘর্ষের মাঝে পড়ে গেলে পুলিশের বেশ কয়েকটি গুলি সাগরের গলায় ও বুকে এসে লাগে।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া জানান, সাগর নামে ওই যুবককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে। বর্তমানে জরুরি বিভাগে তার চিকিৎসা চলছে।
উল্লেখ্য যে, আজ রোববার দুপুর মিরপুরে বেনারসি পল্লীর ৪ নম্বর সড়কে ২টা ৫০ মিনিটের দিকে পুলিশ ও আন্দোলনরত অটো রিকশাচালকেদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আন্দোলনরত রিকশাচালকদের পুলিশ সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরই জেরে কয়েকবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এর আগে আজ সকাল ৯টা থেকেই অটোরিকশা চালাবার অনুমতি চেয়ে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় লাঠিসোটা হাতে নিয়ে আন্দোলনে নামেন অটো রিকশাচালকরা। এ সময় ওই এলাকার সড়কগুলোতে তীব্র যানজট দেখা দেয়। পাশাপাশি ভোগান্তীতে পড়েন জনসাধারণরা।
অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করার প্রতিবাদে রাজধানীর মিরপুরের কালশীতে ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছে আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকরা।
আজ রোববার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে কালশী মোড়ে অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশের বক্সে আগুন দেন তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পল্লবী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘কালশীতে আন্দোলনকারীরা সহিংস আন্দোলন করছে। তারা কালশী মোড়ে অবস্থিত একটি পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছে। এটি ট্রাফিক পুলিশের একটি বক্স। আমরা ঘটনাস্থলে আছি, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
এর আগে অটোরিকশা চালকরা এ সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ছাড়া মিরপুর বেনারসি পল্লীর ৪ নম্বর সড়কে অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেখানে কয়েকট গাড়িও ভাঙচুর করে অটোরিকশা চালকরা। এ সময় বাসে থাকা যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে বাস থেকে নেমে পড়েন।
দুপুর সোয়া ১ দিকে অটোরিকশা চালকরা কালশী সড়ক আটকে দিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দেন। এ সময় অনেকের হাতে লাঠি দেখা যায়। তারা গাড়ি ভাঙচুর করতেও উদ্যত হয়। তারা সড়কের মাঝখানে রশি টানিয়ে দিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়।
এক পর্যায়ে সড়কে তারা গাড়ি আড়াআড়িভাবে রাখতে বাস চালকদের বাধ্য করেন। এতে ওই সড়ক ব্যবহারকারী হাজার হাজার যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েন। গন্তব্যে যেতে মানুষজনকে পায়ে হেঁটে রওনা দিতে দেখা যায়।
রাজধানীর মিরপুরে বেনারসি পল্লীর ৪ নম্বর সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, আন্দোলনরত রিকশাচালকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরই জেরে কয়েকবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এর আগে, আজ সকাল ৯টায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতির দাবিতে আন্দোলনে নামেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকেরা। এতে দুর্ভোগে পড়েন শত শত মানুষ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির জয়েন কমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) আবু সালেহ মো. রায়হান জানান, মিরপুর-১০ থেকে ১১, ২, ১৩ ও শেওড়াপাড়া রোডে যানবাহন চলতে বাধা দেন আন্দোলনকারীরা।
অন্যদিকে, পল্লবী এলাকার পুরবী সিনেমা হলের সামনেও আজ সকালে রিকশাচালকরা রাস্তায় নেমেছিলেন। পরে সেখান থেকে সবাই মিরপুর-১০ এলাকায় এসে জড় হন।
মিরপুর, পল্লবী, আগারগাঁও, তালতলা, কালশি ও মিরপুর ১৩ এলাকায় একযোগ আন্দোলন করেছেন রিকশাচালকরা। সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের প্রতিবাদে মিছিল, মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেন তারা।
ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতির দাবিতে রাজধানীর মিরপুর-১০ ও পল্লবী এলাকায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকেরা।
আজ রবিবার সকাল ৯টা থেকে তারা রাস্তায় আন্দোলনে নামেন। আন্দোলনের কারণে এ সময় সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন শত শত মানুষ। দুপুর ১টার পর থেকেও ওই এলাকার যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি বলে জানা যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির জয়েন কমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) আবু সালেহ মো. রায়হান জানান, মিরপুর-১০ থেকে ১১, ২, ১৩ ও শেওড়াপাড়া রোডে যানবাহন চলতে বাধা দেন আন্দোলনকারীরা।
পল্লবী থানার ডিউটি অফিসার এসআই মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘মিরপুর এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা রাস্তা অবরোধ করেছে। এ সময় সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। এখনও তারা রাস্তা ছাড়েননি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল থেকেই মিরপুর-১০ গোল চত্ত্বরে শত শত ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক অবস্থান নেন। তাদের শান্ত করার জন্য সেখানে থানা পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হন।
অন্যদিকে, পল্লবী এলাকার পুরবী সিনেমা হলের সামনেও আজ সকালে রিকশাচালকরা রাস্তায় নেমেছিলেন। পরে সেখান থেকে সবাই মিরপুর-১০ এলাকায় এসে জড় হন।
মিরপুর, পল্লবী, আগারগাঁও, তালতলা, কালশি ও মিরপুর ১৩ এলাকায় একযোগ আন্দোলন করেছেন রিকশাচালকরা। সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের প্রতিবাদে মিছিল, মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেন তারা।
রাজধানীতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস সম্প্রতি বলেছিলেন, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগী ৪২ হাজার কম ছিল। এই তথ্যকে মনগড়া বলে জানিয়েছেন ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘এগিয়ে ছিল দক্ষিণ ঢাকা, স্মৃতির পাতায় ফিরে দেখা’- শীর্ষক মিট দ্য প্রেসে তিনি এ কথা বলেন। মিট দ্য প্রেসটি আয়োজন করে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসির সাবেক মেয়র বলেন, ‘আমি মেয়র থাকার সময়ে হয়ত আহামরি ট্যাক্স-ভ্যাট আদায় করতে পারিনি। কিন্তু নগরবাসীর ভোগান্তি কমাতে চেষ্টা করেছি। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী জনদুর্ভোগ কমানো ছিল আমার মূল দায়িত্ব। কিন্তু এখন নগর কর্তৃপক্ষ রাজস্ব আদায় বা সিটি টোলের নামে রিকশা, সিএনজি ও সবজি বহনকারি ট্রাক-লরি থেকে চাঁদাবাজি করছে। আমার সময়ে এমনটা ছিল না।’
রাজধানীতে ডেঙ্গু নিয়ে মেয়র তাপস মনগড়া তথ্য দিয়েছেন উল্লেখ করে সাঈদ খোকন বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন। এর মধ্যে ঢাকা শহরে রোগীর সংখ্যা ছিল ৫১ হাজার ৮১০, আর বাইরে ৪৯ হাজার। অন্যদিকে গত বছর (২০২৩) দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। কেবল ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে যত মৃত্যু হয়, তা আগের ২২ বছরে হয়নি।’
‘গত বছর (২০২৩) দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে আক্রান্ত হন ১ লাখ ১০ হাজার ৮ জন। আর বাকি ২ লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন আক্রান্ত হন ঢাকার বাইরে। এ ছাড়া গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকাতেই ৯৮০ জন মারা যান। এই হিসেবে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ৫৮ হাজার ১৯৮ জন রোগী বেশি ছিল। তার (তাপস) এমন তথ্য নাগরিকদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে’- যোগ করে বললেন সাঈদ খোকন।
ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে ইঙ্গিত করে সাঈদ খোকন আরও বলেন, ‘দুঃখজনক বিষয় হলো দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষের এক দায়িত্বশীল ব্যক্তি কয়েকদিন আগে ডেঙ্গু আক্রান্তের বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন। তিনি (মেয়র তাপস) বলেছেন, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ হাজারের কম ছিল। পরে তার বক্তব্য যে ভুল ছিল, তা নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।’
সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, আমি দক্ষিণ সিটির মেয়র থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালে ঢাকা শহরে ব্যাপক হারে এডিস মশার বিস্তার ঘটে। তখন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। এ চেষ্টায় কোনো ত্রুটি রাখিনি। ডেঙ্গু আক্রান্ত নগরবাসীকে রেখে পরিবার নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ করিনি।’
ঢাকার ওয়ারীর বনগ্রামে বালতির পানিতে পড়ে এক বছর বয়সের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুটি সবার অগোচরে বাথরুমে ঢুকে পানিভর্তি বালতিতে উপুড় হয়ে পড়ে যায় বলে জানা গেছে।
আজ সকালে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান।
শিশুটির বাবা তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার স্ত্রী রান্নায় ব্যস্ত ছিলেন। সবার অগোচরে তাদের এক বছরের মেয়ে আমেনা হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে বাথরুমে প্রবেশ করে।’
‘খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তাকে বাথরুমে পানিভর্তি বালতিতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।’
হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম বনগ্রাম রোডের পানির ট্যাংকের পাশে একটি ছয়তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় থাকেন। তার দুই সন্তানের মধ্যে আমেনা ছিল ছোট।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান বুদ্ধ পূর্ণিমাকে ঘিরে কোন ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি বা হুমকি নেই। সুনির্দিষ্ট কোন নিরাপত্তা ঝুঁকি না থাকলেও সবকিছু মাথায় রেখে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে আসন্ন শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘২২ মে শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমাকে ঘিরে সকল ধরণের নিরাপত্তামূলক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ডিএমপি। কেউ যাতে কোন প্রকার নাশকতা করতে না পারে এ জন্য ডিএমপির সকল অফিসার ও ফোর্সদের সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। পাশাপাশি আয়োজকদেরও সতর্ক থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, একাধিক জায়গায় অনুষ্ঠান হবে এবং প্রত্যেক জায়গায় আয়োজক আলাদা। প্রত্যেকটা জায়গায় আয়োজকদের পক্ষ থেকে একজন ফোকাল পয়েন্ট থাকবেন। আমাদের পুলিশের পক্ষ থেকে একজন ফোকাল পয়েন্ট অফিসার থাকবেন। তারা পারস্পরিক সমন্বয়ে কাজ করবেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশে যে সমস্ত ঘটনা ঘটে বা ধর্মীয় সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে এর বেশিরভাগই গুজব ও তুচ্ছ ঘটনা। এগুলো সংগঠিত কিছু নয়, ধর্মীয়ও কিছু নয়। সেগুলোকে যেন শুরুতেই দমন করতে পারি সে জন্য আমাদের সবাইকে তৎপর থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, যে সকল রাস্তায় শোভাযাত্রা যাবে, সেই সব রাস্তায় আগের দিন থেকেই পুলিশের তৎপরতা জোরদার করা হবে। বুদ্ধ পূর্ণিমার অনুষ্ঠান ঘিরে পুলিশের পক্ষ থেকে সিসিটিভি, আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর থাকবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) মহা. আশরাফুজ্জামান. অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, যুগ্ম ও পুলিশ কমিশনারগণ, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, এসবি ও এনএসআইসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।