মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকায় সব সময় লেগে থাকত যানজট। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বাস, অবৈধ পার্কিং, টার্মিনালের প্রবেশ ও বাইরে যাওয়ার গেটে সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব, টার্মিনালের সামনে অপ্রয়োজনীয় ইউটার্ন- সব মিলিয়ে মহাখালী বাস টার্মিনাল পার হওয়া ছিল নগরবাসীর কাছে এক ভোগান্তির নাম। তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের তৎপরতায় সেই চিরচেনা যানজট এখন আর নেই।
ট্রাফিক-গুলশান দক্ষিণের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এ এস এম হাফিজুর রহমান জানান, মহাখালীকেন্দ্রিক যানজট নিরসনে গত ৬ মে মহাখালী বাস টার্মিনালের পরিবহন ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে ট্রাফিক-গুলশান বিভাগ বৈঠক করে। সেখানে টার্মিনালে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বাস, রাস্তার পাশে অবৈধ পার্কিং, টার্মিনালের প্রবেশ ও বেরিয়ে যাওয়ার গেটে সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব, টার্মিনালের সামনে অপ্রয়োজনীয় ইউটার্ন, সীমিত এলাকায় অতিরিক্ত তেল ও গ্যাসের পাম্প, এক্সপ্রেসওয়ে থেকে মহাখালীতে নামার র্যাম্প স্থাপন, এলাকাগত সীমা নির্ধারণ ও সমন্বয়ের অভাবসহ বেশকিছু সমস্যা চিহ্নিত করা হয় এবং এসব সমস্যা সমাধানে বেশকিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে থাকে।
তিনি জানান, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার থেকে শক্ত অবস্থানে নামে ডিএমপির ট্রাফিক-গুলশান বিভাগ। সঙ্গে রয়েছেন পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের স্বেচ্ছাসেবকও। তারা টার্মিনালের সামনে এসে থামানো বাসগুলো অন্যত্র সরে যেতে সহায়তা করছেন।
আজ বুধবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ওই জায়গায় যেখানে সেখানে বাস দাঁড়ানো ও যাত্রী ওঠানো-নামানো বন্ধ হয়ে গেছে। যান চলাচলে শৃঙ্খলার স্বার্থে মহাখালীর সামনের সড়ক পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাসগুলোকে শৃঙ্খলায় আনতে গুলশান-ট্রাফিক বিভাগের ডিসির নির্দেশে মহাখালীতে নতুন করে ইনকামিং সড়কে একটি বাস বে চালু করা হয়েছে। ‘বাস বে’ ছাড়া দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না কোনো যাত্রীবাহী বাসকে। বিশৃঙ্খলা করলেই বাস থামিয়ে সাবধান করছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। নিয়ম না মানলে দেওয়া হচ্ছে মামলা। এসব কারণে পরিস্থিতি বদলে গেছে। মূল সড়কে কমেছে যানজট, উধাও হয়েছে যত্রতত্র পার্কিং। শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করেছে মহাখালী বাস টার্মিনাল, মহাখালী রেলগেট, আমতলী ও কাকলী এলাকা। ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে যান চলাচলে গতি বেড়েছে। এটি বহাল ও চলমান রাখতে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে চেষ্টার কমতি নেই।
মহাখালী ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার আরিফুর রহমান রনি বলেন, যত্রতত্র পার্কিং ও যাত্রী ওঠা-নামা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হয়েছে। ‘বাস বে’গুলো সক্রিয় করা হয়েছে। ‘বাস বে’ ছাড়া লোকাল যাত্রীবাহী বাস যেমন দাঁড়াবে না, তেমনি দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস নির্দিষ্ট স্টপেজ ছাড়া দাঁড়াবে না। যত্রতত্র বাস দাঁড়ানো ও যাত্রী ওঠা-নামা বন্ধে চালকদের সতর্ক করা হচ্ছে। না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আগামী সপ্তাহ থেকে কোনো সতর্কতা থাকবে না। নির্দিষ্ট স্টপেজে বাসের যাত্রী গণনা করা হবে। পরের স্টপেজে যাত্রী ওঠানোর আগে সংখ্যা বেশি হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহাখালী বাস টার্মিনালের ধারণক্ষমতা আরও বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান। তিনি জানান, মহাখালী বাস টার্মিনালের পেছন দিকে অনেকখানি জায়গা অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। সেটি যদি মহাখালী টার্মিনালের সঙ্গে একীভূত করা যায়, তাহলে অনেকখানি সমাধান হয়ে যাবে। এটা নিয়ে ট্রাফিক পুলিশ, পরিবহন মালিক-শ্রমিক পক্ষ এবং সিটি করপোরেশনের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। আশা করছি সহসা এর সমাধান হবে।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল করা না হলে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সচিবালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম। তাছাড়া, অধ্যাদেশটি বাতিল না হওয়ার পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথাও জানান তিনি।
বুধবার (১৮ জুন) সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের নিচে মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিচে আন্দোলনকালে এসব কথা জানান তিনি।
নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আট বিভাগে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গেছে। আলোচনার নামে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আস্থা ভঙ্গ করেছেন, বিশ্বাস নষ্ট করেছেন। আমরা চাই আমাদের ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হোক। এ ছাড়া যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলা রয়েছেন, তাদের তাড়াতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সরকারি কর্মচারী, আমরা নিয়ম-শৃঙ্খলায় বিশ্বাসী। অধ্যাদেশ বাতিল না হলে রবিবার (২২ জুন) আরও বৃহত্তর আন্দোলন আসবে।’
এর আগে, চাকরি অধ্যাদেশ পুরোপুরি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর।
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের খসড়া বাতিলের দাবিতে গত ২৪ মে আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা।
কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে রাতে এই অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে।
সরকারি কর্মচারীরা অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এটি বাতিল করার জন্য সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল, কর্মবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি ছাড়াও আজ (বুধবার) সমাজকল্যাণ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
ঈদুল আজহায় টানা ছুটির মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকার বাতাস মোটামুটি স্বাস্থ্যকর ছিল। তবে গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিহীন শুষ্ক পরিবেশ আর ক্রমেই রাজধানীর পুরনো ভিড় বাড়তে থাকায় দূষণও বাড়ছে সমান তালে।
রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ফের শীর্ষস্থানগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা। এ সময়ে ১৪২ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহর ছিল বাংলাদেশের রাজধানী, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য যা অস্বাস্থ্যকর।
এ সময় ১৫৩ স্কোর নিয়ে শীর্ষ দূষিত শহর ছিল ইন্দোনেশিয়ার মেদান। এ ছাড়া ১২৬ ও ১২৪ স্কোর নিয়ে ঢাকার পরেই ছিল যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও মিসরের কায়রো।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
রাজধানীর উত্তরায় র্যাব পরিচয়ে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদের’ এক পরিবেশকের এক কোটি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে এই ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানায়, ‘আব্দুল খালেক নয়ন নগদের একজন পরিবেশক। তিনি উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি ফ্লাটে থাকেন। শনিবার সকালে তিনি তার চারজন এমপ্লয়িকে দুইটি মোটরসাইকেলযোগে বাসার পাশেই পরিবেশক অফিসে পাঠাচ্ছিলেন। সাথে এক কোটি টাকার বেশি ছিল।’
‘তাদের বহনকারী মোটরসাইকেল দুটি বারো নম্বর রোড ক্রস করে যখন তেরো নম্বর রোডে ঢুকছিল, তখন ওৎপেতে থাকা একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস তাদের গতি রোধ করে। মাইক্রোবাস থেকে র্যাবের পোশাক পরিহিত তিন থেকে চারজন নেমে এসে টাকার ব্যাগ বহনকারী মোটরসাইকেল আরোহীদের ধাওয়া করে।’
পুলিশ আরও জানায়, এদের মধ্যে একজন আরোহী দৌড়ে পালিয়ে গেলেও তিনজনকে টাকার ব্যাগসহ তারা মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরবর্তীতে তারা উত্তরা সতেরো নম্বর সেক্টরে নগদ মাইক্রোবাস থেকে তাদের ফেলে দিয়ে টাকার ব্যাগ সহ পালিয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে উত্তরা ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার মইদুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, ‘ঘটনার পরপরই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিসিটিভির ফোটেজ সংগ্রহ করেছেন। ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
আগামী শনিবার (১৪ জুন) থেকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনসহ হাইকোর্ট এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনশৃঙ্খলা রক্ষায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং-III/৭৬) এর ২৯ ধারায় আগামী শনিবার (১৪ জুন) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবন, বিচারপতি ভবন, জাজেস কমপ্লেক্স, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের প্রধান গেট, মাজার গেট, জামে মসজিদ গেট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১ ও ২ এর প্রবেশ গেট, বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট ভবনের সম্মুখে সকল প্রকার সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হলো।
এতে, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায় ও প্রতিবাদ কর্মসূচির নামে যখন-তখন সড়ক অবরোধ করে যান চলাচলে বিঘ্ন না ঘটানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হয়।
এর আগে, গত ২৬ মে সচিবালয় ও যমুনা-সংলগ্ন এলাকায় সভা-সমাবেশে নিষিদ্ধ করেছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ঈদ উপলক্ষে লম্বা ছুটিতে বেশ কিছুদিন ধরে একপ্রকার ফাঁকা হয়ে গেছে শহর ঢাকা। সড়কগুলোতে নেই যানবাহনের চাপ; স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতও বন্ধ; রাস্তায় লোকজনও হাতেগোনা। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন বৃষ্টি কমে গেলেও রাজধানীর বাতাসের মানে খুব বেশি অবনতি হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ১০টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল মাত্র ৬৬। আর দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান আরও অবাক হওয়ার মতো। প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় জায়গা করে নিলেও ঢাকার অবস্থান আজ ৫৫তম।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’। ঢাকার বাতাস আজ মাঝারি হলেও ‘ভালো’ থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
এই সময়ে ৬৭ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষিত শহরের তালিকার ৫২তম স্থানে ছিল স্পেনের বার্সেলোনা, ৫০তম স্থানে সুইজারল্যান্ডের বেয়ার্ন, ৬৮ স্কোর নিয়ে ৪৯তম স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটি, ৭০ ও ৭১ স্কোর নিয়ে ৪৪ ও ৪৩তম স্থানে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসি, ৭৩ স্কোর নিয়ে ৩৮তম স্থানে কানাডার টরেন্টো, ৮০ স্কোর নিয়ে ২৭তম দূষিত শহর শিকাগো, ৯৯ স্কোর নিয়ে ১৫তম স্থানে ইতালির রোম এবং ১২৮ স্কোর নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে মিলান।
তবে ১৬৮ একিউইউ স্কোর নিয়ে এই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল ভারতের দিল্লি। ১৬২, ১৫৬ ও ১৩৭ স্কোর নিয়ে এর পরের তিন দূষিত শহর যথাক্রমে ইরাকের বাগদাদ, পাকিস্তানের লাহোর ও সৌদি আরবের রিয়াদ।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
এডিস মশার বিস্তার রোধে তাৎক্ষণিক ফল পেতে ১৪ জুন থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন(ডিএসসিসি) এলাকায় দ্বিগুণহারে কীটনাশক প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এডিস মশার বিস্তার রোধে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও করোনা প্রতিরোধে ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর ওয়াসা ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রমে (ফগার মেশিন দ্বারা পরিচালিত) বর্তমানে ব্যবহৃত ৩০ লিটার কীটনাশকের পরিবর্তে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থাৎ ৬০ লিটার কীটনাশক প্রতিদিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ছাড়া অঞ্চলভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠন ও জনবল ঘাটতি পূরণে উদ্যোগসহ জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় মশক কর্মীদের সকাল ও বিকেলে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা, সঠিক অনুপাতে কীটনাশক প্রয়োগ যাচাই, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং মশক কর্মী দ্বারা বাড়ির ভিতর, আঙিনা ও ছাদের জমানো পানিসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে অঞ্চল ভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া, ডেঙ্গু ও করোনা বিষয়ে ডিএসসিসি সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফারিয়া ফয়েজকে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসের মধ্যে কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে নগর ভবনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রতিদিনের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের হালনাগাদ তথ্য ডিএসসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। মশক নিধনে জনবল ঘাটতি পূরণে নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখাসহ ডেঙ্গু ও করোনা রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম মেহেদী হাসান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সেলিম (৪৫), রফিক (৪০), সাদ্দাম (৩০), উজ্জ্বল (৩২) ও শামীম (২৫)।
গতকাল সোমবার (৯জুন) মোহাম্মদপুর থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদের মধ্যে রয়েছে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ১জন, মাদক মামলায় ১জন, দূস্যতার মামলায় ১জন এবং অন্যান্য মামলায় ২জন।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীর পল্লবী থানার মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে পুলিশ খবর পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে।
নিহত ওই যুবকের নাম রাকিবুল হাসান সানি (২৯)। ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সকাল সাতটার দিকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছি। পরে মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদক বিক্রির আধিপত্য বিস্তার ও দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে রাতের আঁধারে হত্যাকারীরা কীভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে; তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নিহতের পরিবারের দাবি, সানি একজন অটোরিকশাচালক ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গেল রমজান মাসেও একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র তার ওপর হামলা চালিয়েছিল।
ঘটনার পর থেকে মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং এলাকায় পুলিশ ও সিআইডি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
গতকাল শনিবার ঈদুল আজহার দিন ও আজ ঈদের দ্বিতীয় দিন কোরবানি দিতে গিয়ে ৬৪১ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ২০৭ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে জানা গেছে।
আজ রোববার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (নিটোর) থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
জানা যায়, ঈদের আগের দিন পশু কেনার সময় লাথিতে আহত হয়ে ও ঈদের দিন পশু কোরবানি দিতে গিয়ে আহত হয়ে মোট চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৬৪১ জন। এর মধ্যে জরুরি অপারেশন হয়েছে ১৮১ জনের। এছাড়াও এই দুই দিনে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২০৭ জন এবং হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ৪৩৪ জন।
আরও জানা যায়, ঈদের দিন কোরবানি দিতে গিয়ে লোকজন আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। কিন্তু ঈদের দ্বিতীয় দিনও আহত হয়ে একের পর এক লোকজন এসেছেন। যার সঠিক হিসেব আগামীকাল (সোমবার) দুপুরে পাওয়া যাবে বলে নিটোর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
তবে আনুমানিক হিসেবে অনুযায়ী সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নিটোর এ ৭০ থেকে ৮০ জন চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এদের সবাই কোরবানি দিতে গিয়ে আহত হওয়া রোগী।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিটোরের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কনসাল্টেন্ট ডা. রিপন ঘোষ।
রিপন ঘোষ বলেন, গতকাল কোরবানির দিনে সারাদিনে ভাংচুর ও কাটা ছেড়া রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৩২৫ জন। এদের মধ্যে জরুরি অপারেশন লেগেছে ১০২ জনের। অপারেশনের সবাইকে ভর্তি রাখা হয়েছে। এছাড়াও অপারেশনের রোগীসহ একই দিনে গুরুতর আহত হয়ে আসা মোট ভর্তি রোগীর সংখা ১২২ জন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
এছাড়া ঈদের আগের দিন পশু কিনতে গিয়ে লাথিতে আহত হওয়া রোগী এসেছেন ৩১৬ জন। এদের মধ্যে জরুরি অপারেশন লেগেছে ৭৯ জনের। আর মোট ভর্তি হতে হয়েছে ৮৫ জন।
এ নিয়ে ঈদের আগের দিন গত শুক্রবার ও ঈদের দিন মিলিয়ে মোট আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৬৪১ জন। এর মধ্যে জরুরি অপারেশন লেগেছে ১৮১ জনের। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২০৭ জন এবং হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ৪৩৪ জন।
গতকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে বন্ধ থাকার পর আজ রোববার থেকে ফের চালু হয়েছে মেট্রোরেল। তবে মেট্রোতে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না।
রোববার সকাল ৮টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা যায়, আজ (রোববার) প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ট্রেন চলছে। আগামীকাল সোমবার থেকে মেট্রোরেল সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে।
গত মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না। মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি গেটে যাত্রীদের যথাযথভাবে তল্লাশি করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো যাত্রীর কাছে কাঁচা বা রান্না করা মাংস পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ আটকে দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের নিরাপত্তা কর্মীদের এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতেও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঈদুল আজহায় এবার টানা ১০দিন ছুটিতে রাজধানী ছেড়ে নিজ বাড়িতে ঈদ কাটাতে গেছেন অনেকে। অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন ঢাকায় মানুষজন অনেক কম। তাছাড়া, যানবাহনও কম। তবে কম মানুষ কিংবা কম যানবাহনের ধোঁয়াও ঢাকার বাতাসের মানে তেমন পরিবর্তন আনতে পারেনি।
আজ রোববার ঈদের দ্বিতীয় দিনে অনেকটা ফাঁকা ঢাকার বাতাস সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১১টা ২৮ মিনিটে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ১৩০, এই স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ৫ম স্থানে অবস্থান করছে ঢাকা। তাই ঢাকায় অবস্থানরত সংবেদনশীলরা রয়েছেন ঝুঁকিতে।
প্রথমত, ঢাকায় মানুষ কম এখন, যান চলাচলও নেই তেমন। আবার মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাতও হয়েছে টানা কয়েকদিন। তা সত্ত্বেও বাতাসের মানের অবনতি নিয়ে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিন ১৬৬ স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে চিলির সান্তিয়াগো, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি ও যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েট। শহর দুটির স্কোর ১৫৩ ও ১৪৫।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে ‘মাঝারি’, আর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
একিউআই সূচক ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
কোরবানিঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে শসা ও কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। শসার দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আর কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা। তবে ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা কমেছে। এছাড়া বেশিরভাগ সবজি ও মুরগির দাম অপরিবর্তত রয়েছে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতারা শসা বিক্রি করছেন ৬০ থেকে ৯০ টাকা প্রতি কেজি। দুদিন আগেও ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে শসা। এছাড়া কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচ আজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। তবে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিমের দাম কমে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা হয়েছে আজ।
‘কোরবানির ঈদের সময় শসার চাহিদা বেশি থাকে, তাই দামও বেড়ে যায়। এবারও তাই হয়েছে। আড়তে গিয়ে তো আমরা শসা খুঁজেই পাচ্ছিলাম না’— শসার দাম বাড়ার কারণ হিসেবে রামপুরার এক ব্যবসায়ী এমন মন্তব্য করেন।
রামপুরার ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দুদিন আগেও আমরা শসার কেজি ৪০ টাকা বিক্রি করেছি। আজ আড়তেই দেশি শসার কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। হাইব্রিড শসার দাম একটু কম আছে। ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি কিনে তো আর ৯০ টাকার নিচে বিক্রি করা যায় না। তাই ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করছি।’
একই বাজারের ব্যবসায়ী মো. মিলন বলেন, ‘কোরবানির ঈদের সময় সব বাড়িতেই মাংস রান্না হয়। মাংসের সঙ্গে সালাদ সবার প্রিয়। তাই কোরবানির ঈদের সময় কাঁচা মরিচ, শসা, লেবু ও টমেটোর চাহিদা বেশি থাকে। চাহিদা বেশি থাকায় এসব পণ্যের দাম বেড়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘বাজারে লেবু ও টমেটোর সরবরাহ ভালো। তাই এ দুটি পণ্যের দাম বাড়েনি। তবে কাঁচা মরিচ ও শসার সরবরাহ কম। তাই দামও বেড়েছে। গতকাল শসার কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি করেছি, আজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা কাঁচা মরিচ আজ ১২০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। কারণ, আমাদেরই কিনতে হয়েছে অনেক বেশি দামে।’
খিলগাঁওয়ে শসা কিনতে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গত মঙ্গলবার শসা কিনেছি ৪০ টাকা কেজি দরে, আজ এক লাফে ৯০ টাকা হয়ে গেছে। হুট করে এভাবে দাম বাড়া ঠিক না। যারা বাজার তদারকির দায়িত্বে আছেন তাদের বিষয়টা দেখা উচিত।’
এদিকে দুদিন আগে ১৩০ টাকা ডজন ডিম বিক্রি হলেও আজ ১২০ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও আলু, রসুন, পেঁয়াজ, আদা আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে দুদিনে ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা কমেছে। ডিমের চাহিদা কম থকায় এই দাম কমেছে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ডিমের দাম আরও একটু কমতে পারে। কারণ শনিবার কোরবানি হওয়ার পর সবার ঘরে ঘরেই মাংস থাকবে। দুই-তিনদিন মানুষ মাংস খাবে বেশি। এ সময় অন্য খাবারের চাহিদা কম থাকবে। তবে ঈদের দুই-তিনদিন পর ডিম এবং কাঁচা সবজির দাম বেড়ে যেতে পারে।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ সবজি। পটল, চিচিঙ্গা ও ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। কাঁকরোল, বরবটি, কচুর লতি, করলা, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। এছাড়া পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি।
আজ সকাল থেকেই কুরবানির পশুর সংকট দেখা দিয়েছে গাবতলী হাটে। গরু না পেয়ে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন নতুন বাজার ১০০ ফিট গরুর হাটে।
শুক্রবার সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর সর্ববৃহৎ গরুর হাট গাবতলীতে সকালে গরু কিনতে এসে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন। হাটজুড়ে গরু আছে হাতে গোনা কয়েকটি, দাম তার আকাশচুম্বী।
ঈদের একদিন আগে গাবতলীর হাটে গরু কিনতে এসেছেন সেলিম হোসেন। তিনি বলেসন, ‘কখনো ঈদের আগের দিন সকালে হাটে এমন গরু সংকট দেখিনি। যে কয়টা গরু আছে তা আকারে ছোট এবং দাম চাচ্ছে অনেক।’
আরেক ক্রেতা ইকবাল হাসান বলেন, ‘হাটে গরু কিনতে এসে গরু না পেয়ে বাধ্য হয়ে ছাগল কিনে বাড়ি ফিরছি। শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করা ঠিক হয়নি।’
গাবতলী হাটে গরু বিক্রি করে ট্রাকে করে ঘরে ফিরছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের একজন মনসুর বলেন, ‘১১টি গরু নিয়ে এসেছিলাম। কালকে ভোররাতের মধ্যে সবকটি বিক্রি শেষ। এখন বাড়ি ফিরছি।’
আরেক ব্যবসায়ী মোসাদ্দেক বলেন, ‘গরু সব বিক্রি হয়েছে কিন্তু দাম তেমন পাইনি। প্রতিটি গরুই অনেক কমে বিক্রি করতে হয়েছে। আগেরবার শেষ রাতে দাম পড়ে যাওয়ার পর এবার আর ব্যাপারীরা গরু ধরে রাখেনি।’
এদিকে গাবতলীর হাটে গরু না পেয়ে নতুন বাজার ১০০ ফিটে আসছেন ক্রেতারা। এমনই একজন ক্রেতা মাহতাব শেখ বলেন, ‘গাবতলীতে গরু নেই বললেই চলে। দিয়াবাড়িতেও পছন্দের গরু পেলাম না। শেষমেশ ১০০ ফিটে এসেছি। কিন্তু ব্যাপারীরা দাম চাচ্ছেন বেশি।’
নতুন বাজারের এ হাট ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের মধ্যেই হাটের বেশিরভাগ গরু বিক্রি হয়ে গেছে। অল্প যে সংখ্যক গরু আছে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ব্যবসায়ীরা। লোকসানে ছাড়বেন নাকি লাভের আশায় রাত অবধি অপেক্ষা করবেন—এমন দোলাচলে ভুগছেন তারা।
দিনাজপুর থেকে হাটে গরু নিয়ে এসেছেন মাসুম মিয়া। বলেন, ‘বাকি হাটে গরু কম শুনে দাম একটু বেশি চাচ্ছি। কিন্তু আগেরবারও এমন অনেক হাটে গরু ছিল না সকালের দিকে। পরে বিকালের মধ্যে গরু চলে আসায় আবার দাম পড়ে গেছে।’
আরেক ব্যবসায়ী রিমন মুন্সি বলেন, ‘সবাই বলে গরুর দাম বেশি চাচ্ছি। কিন্তু কেউ এটা বুঝতে চায় না, যে এবার গরুর খাবারের দাম আগের তুলনায় দ্বিগুণ। আমরা ব্যাপারীরা অযথা কোনো দাম চাচ্ছি না। হিসাব করলে দেখা যাবে, গরু প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে।’
নতুন বাজারের এ হাটে শেষ সময়ে এসে দাম বেড়েছে ছাগলের। ক্রেতারা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, ১৫ হাজার টাকার ছাগল ২৫ হাজার টাকা চাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। প্রতি ছাগলে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
এদিকে, বৈরি আবহাওয়ায় পশু বিক্রি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে রাজধানীর হাটগুলোতে। বৃষ্টির কারণে ন্যূনতম লাভ রেখে গরু বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।