শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নগরবাসীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার কলেবর বৃদ্ধি করতে হবে: ডিএসসিসি মেয়র

ছবি: সংগৃহীত
বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ২৬ জুন, ২০২৪ ১৯:১৩

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ‘নিজস্ব সক্ষমতায় নগরবাসীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি এর কলেবর বৃদ্ধি করতে হবে।’ এজন্য ডিএসসিসি মেয়র স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করে প্রয়োজনীয় জনবল ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের অনুরোধ করেছেন।

আজ বুধবার সকালে হাজারীবাগে ‘শহীদ শামসুন্নেছা আরজু মণি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১০ শয্যা হতে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ’ উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডিএসসিসি মেয়র এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখি, মৌলিক সেবাগুলো এমনকি সন্তানদের খতনা দিতে গিয়েও বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা যেন না হয় এবং জনগণ যেন মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা পায় সেজন্য আমরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্ব দিচ্ছি।’

তাপস বলেন, ‘আপনারা জানেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন অত্যন্ত সুচারুভাবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে চলেছে। আমাদের যে নগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম তা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে একটি প্রকল্পের আওতায় চলমান রয়েছে, যা আগামী বছর শেষ হবে। কিন্তু প্রকল্প শেষ হলেও আমরা এই কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চাই। সেজন্য জনবল থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামসহ স্বয়ংসম্পূর্ণ হবার যে বিষয়গুলো রয়েছে, তাতে আপনাদের (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের) সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা নিজস্ব সক্ষমতায় নগরবাসীর জন্য এই সেবাগুলো নিশ্চিত করতে এবং কলেবর বৃদ্ধি করতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এসডিজি অর্জন করবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে মেয়র বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে কিন্তু মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহারের ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে একটি দেশের উন্নয়নের মাপকাঠি নির্ধারিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কমিউনিটি ক্লিনিকসহ স্বাস্থ্যসেবা খাতে যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তা আজ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে স্বীকৃত। তারই ফলশ্রুতিতে বর্তমানে মা ও শিশু মৃত্যুহার অনেক কমে এসেছে। আমরা মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস অর্জন করতে পেরেছি। আমরা আশাবাদী, তারই নেতৃত্বে আমরা টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টও অর্জন করতে সক্ষম হবো।’

স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আ ন ম আল ফিরোজ প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান,ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়:

ফ্যাসিস্ট শাসনের পুনরাবৃত্তি চাইলে বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে: জোনায়েদ সাকি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যারা বাংলাদেশকে আবার ফ্যাসিস্ট শাসনে নিয়ে যেতে চায় কিংবা তারই পুনরাবৃত্তি চায়, তাদের বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।

আজ শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বেঙ্গলী মিডিয়াম হাই স্কুলে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

২৪'র গণঅভ্যুত্থানে মোহাম্মদপুর-আদাবর অঞ্চলে আহত-নিখোঁজ ও শহীদদের তালিকা প্রকাশ ও এই স্মরণ সভার আয়োজন করে গণসংহতি আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানা।

স্মরণ সভায় জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশকে নতুন করে গড়তে হলে, নতুন রাজনৈতিক শক্তি দরকার। সেই রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে আগামীদিনে বাংলাদেশের যাত্রা হবে।

তিনি বলেন, যখন মানুষ ব্যক্তি স্বার্থ অতিক্রম করে সকলের স্বার্থে, সকলের মর্যাদার জন্য জীবন উৎসর্গ করতে পারে, নিজের জীবন উৎসর্গ করার মতো সাহস দেখাতে পারে এবং জাতির প্রয়োজনে বুক চেতিয়ে দাঁড়িয়ে যায়, এটাই হচ্ছে সর্বোচ্চ মানবিক মুহূর্ত। আমাদের দেশের ছাত্র-তরুণরা, তারা কেউ শিক্ষার্থী, কেউ শ্রমজীবী মানুষ, নানা পেশায় লিপ্ত- তারা জাতির প্রয়োজনে ঐতিহাসিক মানবিক মুহূর্ত তৈরি করেছে। এর চাইতে বড় আত্মত্যাগ এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত প্রেরণার আর কিছু হতে পারে না। সেই কারণেই এই সমস্ত আত্মাহুতি দানকারীদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুতর দায়িত্বের মধ্যে একটি এদের জাতীয় বীরের মর্যাদা দেওয়া। তাদেরকে আগামী প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার জায়গায় হাজির করা।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক বলেন, যারা শহীদ হয়েছেন, এটা কোনো সংখ্যা নয়। প্রত্যেকটি একেকটি সম্ভাবনাময় জীবন। যাদের পরিবারের ছিল, মা-বাবা, ভাই-বোন, সন্তান, স্বামী-স্ত্রী ছিল। কাজেই প্রত্যেকেই একেকটি পরিবার, একেকটি ইতিহাস। তাদের প্রত্যেকের মর্যাদা দরকার। এবং প্রত্যেকটি মৃত্যুর যেন বিচার হয়।

তিনি আরও বলেন, ন্যায় বিচার ছাড়া নতুন বাংলাদেশ হতে পারে না। বাংলাদেশের আগামী যাত্রার প্রথম বিন্দু হবে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। অতীতেও বহু ঘটনা ঘটেছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে এদেশে ন্যায়বিচার একটি অধরা বিষয়ে পরিণত হয়েছিল। যে দেশে ন্যায় বিচার নেই, সেই দেশ জনগণের দেশ হয় না। আজকে আমরা যখন নতুন বাংলাদেশের যাত্রার কথা বলছি, তখন ন্যায়বিচারকে পাটাতন হিসেবে নিতে হবে৷ আর এই কারণেই যারা এই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, নির্দেশ দিয়েছে- শেখ হাসিনাসহ প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

জুনায়েদ সাকি বলেন, আপনাদের অনেক জটিল পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কথিত স্বৈরাচার প্রতি মুহূর্তে ষড়যন্ত্র করছে৷ রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের লোকজন আছে। তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে অকার্যকর করার চেষ্টা করছে। আজকে আশুলিয়া, সাভার, গাজীপুরে বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা দেখছি৷ শ্রমিকদের আন্দোলন ন্যায্য। তাদের দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই।

স্মরণ সভায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় নিহত, আহত ও নিখোঁজদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।


তেজগাঁও রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর তেজগাঁও রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে একদিন বয়সী এক কন্যা নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মরদেহটি পরিত্যক্ত কাপড় দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় ছিল বলে জানা যায়।

আজ শুক্রবার দুপুরের দিকে নবজাতকের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে ঢাকা রেলওয়ে থানা পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা রেলওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই ) রফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে গতকাল রাতের দিকে ঘটনাস্থল থেকে একদিনের কন্যার নবজাতকের মরদেহটি উদ্ধার করি। আশেপাশের লোকদের জিজ্ঞেস করে জানতে পারি, কে বা কারা একটি পরিত্যক্ত কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে রেললাইনের পাশে ওই কন্যা নবজাতকের মরদেহ ফেলে রেখে যায়।

তিনি আরও বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

বিষয়:

নগর পরিবহন রুটে বিশৃঙ্খলা হলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএসসিসি প্রশাসক

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতাধীন নগর পরিবহনের রুটে যদি কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা হয়, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছিন বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির পদাধিকার বলে সভাপতি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ড. মুহ. শের আলী। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নগরভবনে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২৮তম সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।

আজকের সভায় গত ২৭তম সভার সিদ্ধান্তের অগ্রগতি পর্যালোচনা, বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রমের বাস্তবায়ন অগ্রগতি, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনয়নে করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণসহ অন্য বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

প্রশাসক ড. মুহ. শের আলী বলেন, ‘বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতাধীন নগর পরিবহনের রুটে যদি কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় তবে তার বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ রোডগুলো বিশেষ কারও জন্য বা বিশেষ কোনো পরিবহনের জন্য আমরা বরাদ্দ রাখতে চাই না। আমরা চাই যেকোনো উপায়ে এই রুটগুলোতে শৃঙ্খলিতভাবে গণপরিবহনগুলো চলাচল করুক। আর এর জন্য যে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার, আমরা সব পদক্ষেপ নেব।’

‘জনসংখ্যা অনুযায়ী কোনো রুটে কতক্ষণ পর পর কয়টি বাস চলাচল করবে সেসব বিষয়ে আমরা আরও বিস্তর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। পাশাপাশি নগর পরিবহন সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য আরও কতটা আধুনিক এবং যাত্রীবান্ধব করা যায় সেসব বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। এ ছাড়া আগের যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে তাহলে সেগুলোর সমাধানের মাধ্যমে আমরা ওভারকাম করতে পারব’- বললেন প্রশাসক ড. মুহ. শের আলী।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রশাসক ড. মুহ. শের আলী বলেন, ‘ভাড়া সমন্বয়ের বিষয়ে আজকে আমাদের কোনো আলোচনা হয়নি। এ বিষয়টি যদি কারও কোনো অভিযোগ থাকে, অথবা পরামর্শ থাকে সেক্ষেত্রে পরবর্তী সভায় আমরা সে বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিএসসিসি প্রশাসক ড. মুহ. শের আলী। এ ছাড়া বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সদস্য-সচিব এবং ডিটিসিএ এর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতারসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সব শেষ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২৭ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল ঢাকা নগর পরিবহনের বহরে ১০০টি ইলেকট্রিক বাস সংযোজন করা হবে। এ ছাড়া নগর পরিবহনে যাত্রী সেবার মান অক্ষুণ্ন রাখা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বিষয়:

প্রীতম হত্যায় ‘ডেঞ্জার দারুস’ গ্রুপের লিডার গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম এলাকায় জাররাফ আহমেদ প্রীতম (৩১) নামে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় মো. রাসেল (২৮) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। র‌্যাব বলেছে, গ্রেপ্তার রাসেল দারুস সালাম থানার ‘ডেঞ্জার দারুস’ ছিনতাইকারী গ্রুপের দলনেতা।

আজ বুধবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে রাজধানীর শাহ আলী থানার গুদারাঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাব-২ এর জ্যেষ্ঠ সহকারি পরিচালক সিনিয়র এএসপি শিহাব করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, প্রীতম তার নিজ এলাকা নজিপুর থেকে গত ২৬ আগস্ট রাতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। ২৭ আগস্ট ভোরে রাজধানীর দারুস সালাম থানার দারুস সালাম রোড মিরপুর টাওয়ারের দক্ষিণ পাশে টয় পার্ক দোকানের সামনে তিনি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। সেখানে তার জিনিসপত্র ছিনতাইকারিরা নিতে চাইলে তিনি বাধা দেন। এ সময় প্রীতমকে ছুরিকাঘাত করে তার মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, টাকা ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারিরা।

ওই ঘটনায় প্রীতমের চাচাতো বোন গত ২৮ আগস্ট দারুস সালাম থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। গ্রেপ্তার আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষন করে অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান এ র‌্যাব কর্মকর্তা।


হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তনের দাবি

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করার দাবিতে উত্তরায় মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী।

আজ সোমবার সকালে বিমানবন্দর এলাকায় মানববন্ধন করে এ দাবি জানায় এলাকাবাসী। মানববন্ধনে জানানো হয়, আওয়ামী লীগ সরকার জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করেছিল কোনো কারণ ছাড়াই।

বক্তারা আরও বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও রয়ে গেছে তাদের অনেক অন্যায্য কর্মকাণ্ড। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করে আগের নাম ফিরিয়ে দেওয়ার।

এ সময় বিমানবন্দর এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ মানববন্ধনে অংশ নেয়। এ ছাড়া ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহতদের মাগফিরাত কামনা ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান বক্তারা। প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয় বিগত সরকারের মন্ত্রিসভা।


রাজধানীতে বেপরোয়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা

নিয়মকানুন মানার বালাই নেই, সড়কে বাড়ছে বিশৃঙ্খলা   
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সৈয়দ ইকবাল 

রাজধানীর সিপাহীবাগ এলাকা। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জ্যামে বসে আছে মানুষ। এমনিতেই রাস্তা সরু, তার মধ্যে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রাস্তার দুই পাশে পার্ক করে যাত্রী ওঠানামা করছে। রাস্তার মাঝখানে যে জায়গা রয়েছে তা দিয়ে কোনোভাবেই দুই দিকের গাড়ি আসা-যাওয়া করতে পারছে না। ফলে সৃষ্ট হচ্ছে জটলা, জ্যামের। এটা এই এলাকার নিত্যদিনের ঘটনা বলে জানান স্থানীয় মোবারক মিয়া। পেশায় তিনি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর একরাশ অভিযোগ নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন তিনি। বললেন, ‘এটা দেখার কেউ নেই। এখানে এই চিপা রাস্তার মধ্যে ব্যাটারির অটোরিকশাগুলো দুই পাশে পার্কিং করে রাখে। ফলে রাস্তা দিয়ে কোনোভাবেই গাড়ি চলাচল করতে পারে না। অফিস টাইম আর সন্ধ্যা বেলায় ভয়াবহ জ্যাম লাগে এখানে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় এখানে।’

শুধু সিপাহীবাগ বাজার এলাকার চিত্রই নয়। এ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এখন নগরের এক অন্যরকম এক আতঙ্কের নাম। সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর রামপুরা, বনশ্রী, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ি, বাসাবো, বৌদ্ধ মন্দির, মুগদা, সিপাহীবাগ, মানিকনগর, মান্ডা, সায়েদাবাদ, কোনাপাড়া, বসিলাসহ এই এলাকাতেই হাজার হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে। আর তো রয়েছেই শহরের অন্যান্য এলাকার চিত্র। এটার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। নতুন নতুন গাড়ি প্রতিনিয়ত নামানো হচ্ছে রাস্তায়। কোনো নিয়মকানুন নেই।

তবে খবর নিয়ে জানা গেছে, নগরীর নিম্ন এলাকাগুলোয় এই ব্যাটারিচালিত রিকশা নামানোর ব্যাপারে কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করা হয় না। যেমন- গুলশান-বনানী কিংবা বারিধারায় চাইলেই এসব গাড়ি হুট করে নামানো যায় না; কিন্তু যাত্রাবাড়ি, সায়েদাবাদ, মুগদা, মানিকনগর, মান্ডা কিংবা সিপাহীবাগের মতো এলাকাগুলোতে যে কেউ যখন-তখন নামিয়ে ফেলতে পারে এসব রিকশা। ফলে ঘনবসতিপূর্ণ এসব এলাকায় আরও যানজট বাড়ছে, বাড়ছে রাস্তায় বিশৃঙ্খলাও। অথচ, নিয়ম রয়েছে রাস্তার হিসাব করে যেকোনো নামানো বিষয়টি। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যেন রাস্তায় নামানোই এখন সহজ একটি প্রক্রিয়া।

রাজধানীর ঘনবসতিপূর্ণ পুরান ঢাকা, লালবাগ, হাজারীবাগ, আজিমপুরসহ ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মিরপুর এবং উত্তরাতেও ব্যাপক সংখ্যক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা যায়।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, প্রায় প্রতিদিন রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকদের বেপরোয়া চলাচলে প্রধান সড়ক ও অলিগলিতে দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। কিছু কিছু ঘটনা আলোচনায় আসছে। বাকি অনেক ঘটনা জানতেও পারছে না মানুষ।

সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি সূত্রে জানা যায়, রাজধানীতে রিকশার সংখ্যা কত, এর সঠিক কোনো তথ্য কোনো সংস্থার কাছে নেই। ডিএসসিসি এলাকায় অবৈধ প্রায় ৪ লাখ রিকশা রয়েছে। ডিএনসিসি এলাকায়ও অবৈধ রিকশার সংখ্যা ৪ থেকে ৫ লাখ হবে বলে মনে করছেন ডিএনসিসি সংশ্লিষ্টরা। নতুন করে ঢাকায় যেসব রিকশা নামানো হচ্ছে, এর মধ্যে বড় একটি সংখ্যা ব্যাটারিচালিত। শারীরিক কষ্ট লাঘব করতে রিকশাচালকরা ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। এ জন্য রিকশার মালিকরাও রিকশায় ব্যাটারি যুক্ত করছেন।

জানা গেছে, এসব রিকশা থেকে প্রতি মাসে বড় অঙ্কের চাঁদাবাজি হয়ে থাকে। যা স্থানীয় থানাসহ রাজনৈতিক পরিচয়ধারী নেতা-কর্মীরা ভাগ পেয়ে থাকে।

এদিকে একটা সময় ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো নগরীর প্রধান সড়কে ওঠানোর বিষয়ে বিধিনিষেধ ছিল। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এ নিয়মের কোনো বালাই নেই বললেই চলে। সরেজমিনে দেখা গেছে, দেদার ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো নগরীর প্রধান সড়কে চলার পাশাপাশি তা বিভিন্ন ফ্লাইওভারেও উঠে যাচ্ছে যেনোতেনোভাবে এসব রিকশা চলার ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনা।

এদিকে এই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা কিছু ইতিবাচক মন্তব্য দিয়েছেন। তাদের মতে, এসব গাড়ির কারণে মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে এটা ইতিবাচক দিক। তবে এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। কেননা একজন চালককে জানাতে হবে- তার কোন রাস্তায় কীভাবে চলাচল করতে হবে। রাস্তায় চলাচলের একটা নিয়ম-নীতি রয়েছে। তাকে সেই শিক্ষাটা দিতে হবে।

ঢাকা শহরের মতো দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এখন রাস্তার বিষফোড়া। এলাকার ভেতরের রাস্তায় এসব রিকশা চলাচলের কথা থাকলেও এগুলো সব সময় মহাসড়কে উঠে আসে। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুর্ঘটনা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব নিয়ন্ত্রণ করা যায় না রাজনৈতিক কারণেই। কারণ দিনশেষে এ থেকে বড় অঙ্কের চাঁদাবাজি হয়ে থাকে। যার ভাগ রাস্তার পাতি নেতা থেকে শুরু করে প্রশাসন পর্যন্ত পেয়ে থাকে।

দেশের অনেক সড়কেই নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলে থাকে ধীরগতির ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন, মাহিন্দ্রা গাড়িগুলো। অন্যদিকে, দূরপাল্লার পরিবহনগুলো দ্রুত গতির হয়ে থাকে। এতে বাড়ছে দুর্ঘটনা। সরু রাস্তা ও ধীরগতির অবৈধ যানবাহনের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে দুর্ভোগও।

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করা এই রিকশার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে এটাই এখন বড় প্রশ্ন? শুধু অভিযান চালিয়ে অবৈধ রিকশার দাপট বন্ধ করা যাবে না বলে মন্তব্য নগর পরিকল্পনাবিদদের। তাই প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ। খবর নিয়ে জানা গেছে, ইজিবাইকগুলো রুট পারমিট ছাড়াই রাস্তায় চলাচল করছে।

চার্জ দিতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ট্রাফিক বিভাগের কাছে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও পুরো দেশজুড়েই চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক। ধারণা করা হয় এ সংখ্যা ৫০ লাখেরও বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকাসহ দেশের জেলা শহরগুলোতে চলাচল করছে। সারা দেশে এই অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার অটোবাইকের ব্যাটারি চার্জ দেওয়া হয়। এতে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বিদ্যুতের খরচ হচ্ছে। সাধারণত একটি ইজিবাইক চালানোর জন্য চার থেকে পাঁচটি ১২ ভোল্টের ব্যাটারি প্রয়োজন। আর প্রতি সেট ব্যাটারি চার্জের জন্য গড়ে ৯০০ থেকে ১১০০ ওয়াট হিসেবে পাঁচ থেকে ছয় ইউনিট (দিনে বা রাতে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা) বিদ্যুৎ খরচ হয়। সে হিসেবে এক লাখ ইজিবাইক বা ব্যাটারিচালিত রিকশা চার্জের জন্য জাতীয় গ্রিড থেকে প্রতিদিন অন্তত ১১০ মেগাওয়াট এবং মাসে ৩৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হওয়ার কথা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ গ্যারেজ চুরি করে ও লুকিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এসব ব্যাটারি রিচার্জ করায় সরকার বিদ্যুতের বড় অঙ্কের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রিকশাগুলোর ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার জন্য গড়ে উঠেছে বেশ কিছু গ্যারেজ। এসব গ্যারেজে ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো চার্জ দেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। গ্যারেজের মালিকরা প্রতিটি রিকশা চার্জ দেওয়ার জন্য দৈনিক ৪০ টাকা নিয়ে থাকেন। নিয়মানুযায়ী গ্যারেজগুলোতে বাণিজ্যিক মিটার থাকার কথা। কিন্তু গ্যারেজের মালিকরা বাড়ির পাশে গ্যারেজ গড়ে তুলে বাড়ির মিটারের সংযোগ থেকেই ব্যাটারি চার্জ দিচ্ছেন। এতে সরকারের ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া অনেক ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিক নিজের বাড়িতে অথবা গরিব কোনো বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর বাড়িতে রাতব্যাপী রিকশার ব্যাটারিগুলো চার্জ দিচ্ছেন। যার অধিকাংশ গ্যারেজেই নিষিদ্ধ এসব অটোবাইকের ব্যাটারি চার্জ করতে ব্যবহার করা হচ্ছে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন। অনেক স্থানে চলছে মিটার টেম্পারিংয়ের মতো ঘটনা। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন করে ইজিবাইক আমদানি বন্ধ ও পুরোনোগুলো পর্যায়ক্রমে তুলে নেওয়ার কথা থাকলেও তা কার্যকর হয়নি গত কয়েক বছরেও।

মহাসড়কের আতঙ্ক থ্রি হুইলার

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের শহর ও গ্রামে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, অটো চার্জার ভ্যান, নছিমন, করিমন, ভটভটি, থ্রি হুইলার জাতীয় ইজিবাইক, টেম্পো ও অযান্ত্রিক যানবাহন। নানা পদক্ষেপের পরও বিপজ্জনক এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সড়ক-মহাসড়কে বাধাহীনভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব যানবাহন। অভিযোগ রয়েছে, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশার মালিকরা আইন মানতে নারাজ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের শহর-বন্দর-গ্রামের সড়ক ছেয়ে গেছে এসব ব্যাটারিচালিত ‘থ্রি হুইলার’ রিকশা ও ইজিবাইক।

বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করেন বুয়েটের অধ্যাপক ও গণপরিবহণ বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল হক। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, রেজিস্ট্রেশনবিহীন যেসব গাড়ি যেমন- ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নছিমন, করিমন সেগুলোর বিষয়ে করণীয় কী এগুলো কেউ ভাবছেন বলে মনে হচ্ছে না। প্রতিদিনই এসব গাড়ির জন্য সড়কে দুর্ঘটনায় ঝরছে প্রাণ। এসব গাড়ির চালকের গাড়ি চালানোর কোনো দক্ষতাই নেই। নেই গাড়ির কোনো নিবন্ধনও। বিআরটিএ এসব গাড়ির বিষয়ে এখনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না কেন বুঝি না। মহাসড়কে ধীরগতির এসব ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন দুর্ঘটনার বড় কারণ। মহাসড়ক সব সময় অবারিত থাকা উচিত। এসব ছোট গাড়ির জন্য আলাদা লেন করতে পারলে সুফল পাওয়া যাবে।

বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক হাদিউজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, সিঙ্গেল সড়কগুলো যখন সরাসরি মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেওয়া হয় আর আইন করা হয় এসব তিন চাকার যান মহাসড়কে ওঠা নিষেধ, তাহলে বিকল্প রাস্তা প্রয়োজনের জন্য। আর বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা না করে আইন করে কখনোই এসব যানবাহন বন্ধ করা সম্ভব নয়। কেননা ২০০৯ সালে যখন চীন থেকে এসব যানবাহন আমদানি হয়েছে তখনই এ বিষয়ে পরিকল্পনা করা দরকার ছিল। গত ১৫ বছরে কয়েক লাখ মানুষের কর্মনির্ভর করে এখানে। তিনি বলেন, সব মহাসড়কের দুই পাশে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সার্ভিস রোড চালু করতে হবে। এতে মহাসড়ক একদিকে ঝুঁকিমুক্ত হবে এবং থ্রি-হুইলারসহ অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল বন্ধ হবে। আনফিট যানবাহন সরিয়ে নিতে হবে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত কয়েক বছরে লাখ লাখ অটোরিকশা আমদানি করা হয়েছে। এর অর্ধেকও লাইসেন্স পায়নি; কিন্তু স্থানীয়ভাবে দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ টাকা চাঁদা দিয়ে চলছে। ইজিবাইক, নছিমন, করিমন, ভটভটি একই প্রক্রিয়ায় চলছে। তিনি বলেন, মহাসড়ক নিরাপদ করতে হলে জাতীয় সড়ক কাউন্সিলের দেওয়া ১১১টি সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে। সিটি সার্ভিসের ৯৮ শতাংশ বাস-মিনিবাস চলাচলের অযোগ্য। আন্তঃজেলা দূরপাল্লার ৪৮ শতাংশ বাস ২০ বছরের বেশি পুরোনো। আনফিট, লক্কর-ঝক্কর যানবাহন সরিয়ে নিতে হবে। তাছাড়া দক্ষ চালকের অভাব রয়েছে। পরিকল্পনা করে মহাসড়কগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন খুবই জরুরি। পুলিশ ও মালিক-শ্রমিকদের চাঁদাবাজি বন্ধ করা জরুরি।


মধ্যরাতে গুলশান এক্সিম ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা, গ্রেপ্তার ১০

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর অভিজাত ও কূটনৈতিকপাড়া গুলশান-২ এর এক্সিম ব্যাংকের মহিলা শাখায় গভীর রাতে ডাকাতির চেষ্টাকালে ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুলশান থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ভবনটির নিরাপত্তারক্ষীরা জানায়, ডাকাতরা সংখ্যায় ছিল প্রায় ১৪০-১৫০ জন। তারা মাস্ক পরিহিত ছিল। তারা দলে দলে ভাগ হয়ে কয়েকদিক থেকে ওই ভবনের সামনে একত্র হয়ে হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ে। তারা দোতলায় এক্সিম ব্যাংকের মহিলা শাখায় গিয়ে কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ফেলে এবং গ্রিলের গেটটি কেটে ফেলে। এরপর তারা এটিএম বুথে ঢুকে ভাঙচুর করে এবং এটিএম বুথের মেশিন ভাঙার চেষ্টা করে কিন্তু সফল হয়নি। ফলে বুথ থেকে টাকা নিতে পারেনি বলে জানা গেছে। তবে নিরাপত্তারক্ষীদের মোবাইল ফোন, টাকা ও ভবন ব্যবস্থাপনা কক্ষে থাকা দুটি ল্যাপটপ এবং ৫০-৬০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে।

মো. ইউনুস নামে এক নিরাপত্তারক্ষী ঘটনার বর্ণনা দিয়ে দৈনিক বাংলাকে বলেন, রাত ১টার দিকে ১০০-১৫০ লোক ভবনের সামনের প্রধান ফটক (মেইন গেট) ও সীমানা দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা বিল্ডিংয়ে ঢোকার আগে বাইরে থাকা ৭-৮টি সিসি ক্যামেরা ভেঙে নষ্ট করে দেয়। তাদের হাতে শটগানসহ বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র ছিল। এ ছাড়া তারা স্কচটেপ, তালা ভাঙা ও গ্রিল কাটার যন্ত্র নিয়ে এসেছিল। ভেতরে প্রবেশ করে প্রথমেই তারা নিরাপত্তারক্ষীদের মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেয় এবং হাত বেঁধে মারধর শুরু করে। পরে তারা ভবনটির নিরাপত্তারক্ষীদের সুপাভাইজারকে খুঁজতে থাকে। এরমধ্যে কয়েকজন বন্ধ থাকা লিফটের চাবির কথা বারবার জিজ্ঞেস করতে থাকে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কারও কাছে চাবি না পেয়ে ডাকাতরা নিরাপত্তারক্ষীদের এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। ডাকাতরা আমাদের সবার মোবাইল ফোন ও সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা সব নিয়ে নেয়। তাদের মারধরে আমাদের নিরাপত্তারক্ষীদের তিনজনের হাতে গুরুতর আঘাত পান এবং একজনের চোখে গুরুতর আঘাত লাগে। এরমধ্যে একদল সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় এক্সিম ব্যাংকের গেটে পৌঁছে যায়। ওখানে কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা ব্যাংকের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করতে থাকে। একই সঙ্গে কয়েকজন ব্যাংকের এটিএম বুথের গ্রিল কেটে ভেতরে ঢুকে বুথের মেশিন ভাঙার চেষ্টা করে। তবে তারা মেশিন ভাঙতে না পেরে বুথে থাকা টাকা নিতে পারেনি।

এদিকে, ভবনটির উপ-ব্যবস্থাপক মো. মাইনুদ্দিন বলেন, ডাকাতরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে কয়েকদিক থেকে এসে বিল্ডিংয়ের সামনে একত্রিত হয়। ডাকাতরা ভেতরে প্রবেশ করে নিরাপত্তারক্ষীদের একত্র করে মারধর করতে থাকে। এ সময় নিরাপত্তারক্ষীদের সুপারভাইজার সিরাজ সুযোগ বুঝে বাইরে চলে আসেন। তিনি সাদা পোশাকে ছিলেন বলে ডাকাত দলের সদস্যরা তাকে চিনতে পারেনি। তখন রাত সোয়া ১টা, ভবন থেকে বের হয়েই সিরাজ আমাকে ফোন করে বলেন, স্যার প্রায় দেড়-দুইশ দুর্বৃত্ত বিল্ডিংয়ে ঢুকে পড়েছে। তারা সবাইকে বেদম মারধর করছে। কারও কারও হাত ভেঙে গেছে। এসব শুনে আমি তাকে কাছেই থাকা আর্মি ক্যাম্পে গিয়ে খবর দিতে বলি।

তিনি আরও বলেন, সিরাজকে আর্মি ক্যাম্পে যাওয়ার কথা বলেই আমি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে বিস্তারিত জানাই। এরপর আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানাই এবং অফিসে আসার জন্য রওনা হই। ডাকাতরা প্রায় ১৫-২০ মিনিট ভেতরে তাণ্ডব চালায়। আমি আসার আগেই ক্যাম্প থেকে আর্মি ও গুলশান থানা থেকে পুলিশ সদস্যরা চলে আসে। আর্মি ও পুলিশ সদস্যদের আসতে দেখে ডাকাতরা পালানো শুরু করে। এরমধ্যে নিরাপত্তারক্ষীরা ডাকাত দলের ৭ জনকে আটক করে ফেলে এবং দৌড়ে পালানোর সময় ৩ ডাকাতকে আর্মি ও পুলিশ ধরে ফেলে।

মাইনুদ্দিন জানান, ডাকাতরা ২টি মাইক্রোবাস, ১টি পিকআপ গাড়িসহ ১০-১৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছিল। তারা পালিয়ে যাওয়ার সময় ৫টি মোটরসাইকেল ফেলে যায়। পরে পুলিশ মোটরসাইকেলগুলো জব্দ করে থানায় নিয়ে গেছে।

ক্ষতির বিষয়ে তিনি বলেন, মারধর করে নিরাপত্তারক্ষীদের সবার মোবাইল ফোন ও বেশ কয়েক হাজার টাকা নিয়ে গেছে। এ ছাড়া তারা সিঁড়ি দিয়ে ৪ তলা পর্যন্ত ওঠে। তারা বিভিন্ন অফিসের গেট ভাঙার চেষ্টা করে। অন্যদিকে নিচতলার বেজম্যান্টে থাকা বিল্ডিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (বিএমএস) রুম ও রিসেপশন রুমে ভাঙচুর করেছে। বিএমএস রুমে থাকা দুটি ল্যাপটপ ও ৫০-৬০ হাজার পেটি ক্যাশের টাকা নিয়ে গেছে।

নিরাপত্তারক্ষীদের প্রায় সবাই আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মোস্তফা ও বেলাল নামের দুজনের হাত প্রায় ভেঙে গেছে। নয়ন নামের একজনের হাতের তিনটি আঙুলে গুরুতরভাবে আঘাত লেগেছে। তাদের সবার চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আমিরুল নামে এক রক্ষী চোখে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। তাকে চক্ষু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে হাতে প্লাস্টার ও ব্যান্ডেজ করা তিন নিরাপত্তারক্ষীকে এই প্রতিবেদকের সামনে নিয়ে আসেন।

গুলশান মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌহিদ আহম্মেদ বলেন, রাতে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। ওখান থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।


বয়স ৩৫ করার দাবি: চাকরিপ্রার্থীদের রাজপথে থাকার ঘোষণা

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ বছর করার দাবিতে শাহবাগে সমাবেশ করেছে ৩৫ জন প্রত্যাশী সমন্বয় পরিষদ। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঢাবি প্রতিনিধি

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ বছর করার দাবিতে শাহবাগে সমাবেশ করেছে ৩৫ জন প্রত্যাশী সমন্বয় পরিষদ। তারা বলছেন, অনেক দেশে চাকরির বয়সসীমা ৩৫ বছর বা এরও বেশি। সুতরাং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী আমাদের দেশেও চাকরির ন্যূনতম বয়সসীমা নির্ধারণ করা হোক।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, শনিবার বেলা ১১টা থেকে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে চাকরিপ্রত্যাশীদের এই সমাবেশ শুরু হয়।

সমাবেশ থেকে বলা হয়, আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে। আজকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা শাহবাগ ছাড়ছি না।

চাকরিপ্রত্যাশীদের এই সমাবেশে এসে সংহতি প্রকাশ করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, চাকরিতে প্রবেশের কোনো বয়সসীমা থাকা উচিত নয়। কেউ যাতে বয়সের কারণে বৈষ্যমের শিকার না হয়, সেটি নিয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম চালু করতে সরকারের কাছে আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় আন্দোলনকারীরা এক দুই তিন চার, পয়ত্রিশ আমার অধিকার; পদ্মা মেঘনা যমুনা, পয়ত্রিশ আমার ঠিকানা; ত্রিশ না পয়ত্রিশ, পয়ত্রিশ পয়ত্রিশ; বয়স না মেধা, মেধা মেধা; বয়স না যোগ্যতা, যোগ্যতা যোগ্যতা ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সমাবেশে নোমান নামের এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘আমরা আজকে ভালো নেই। রাষ্ট্রের কর্তারা আমাদের ভালো থাকতে দেয়নি। আমরা যেহেতু ফ্যাসিবাদ দূর করতে পেরেছি, ইনশাল্লাহ আমরা এই দাবিও পূরণ করে ছাড়ব। আমরা চাই, অনতিবিলম্বে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হোক। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আজকে আমরা ঘরে ফিরব না।’

তিনি বলেন, ‘ঘরে গিয়ে আমরা কী করব? ঘরেই তো আমরা বোঝা হয়ে আছি।’ দেশে অনেক ভারতীয় চাকরি করছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘হয় এই ভারতীয়দের চাকরিচ্যুত করুন, নয় আমাদের ক্রসফায়ার দিন। আমরা আর বাঁচতে চাই না।’

নোমান বলেন, ‘আমরা ছেলে মানুষ আমাদের মেরুদণ্ড আছে কিন্তু এই সমাজ আমাদের মূল্য দেয় না। আগের সরকার আমাদের মূল্যায়ন করেনি। আমরা চাই নতুন সরকার আমাদের দাবি মেনে নেবে।’

আলী নামের আরেকজন চাকরিপ্রত্যাশী বলেন, ‘২০১২ সাল থেকে চাকরির ন্যূনতম বয়স ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলন চলছে। সরকার আমাদের বারবার আশ্বাস দিয়ে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এই বছরের শুরুতেও যখন আমরা আন্দোলন করি তখন আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে মামলাও কিন্তু আমরা দমে যাইনি। আজকেও আমরা দমে যাব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। আমরা আশা করব, আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে।’


মোহাম্মদপুর থেকে পরিত্যক্ত অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে তিনটি পরিত্যক্ত শটগান, ৯৮ রাউন্ড কার্তুজ ও একটি পুলিশ বেল্ট উদ্ধার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-২)।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-২ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে পরিত্যক্ত এই অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে। এদিন রাজধানীর বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদের অংশ এগুলো। দেশজুড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযানকালে এগুলো উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-২ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া) শিহাব করিম জানান, উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদগুলো মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও অবৈধ অস্ত্র দখলে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে র‌্যাবের চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই অভিযান চালানো হচ্ছে।

বিষয়:

মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের পাশে গুলিতে যুবক নিহত

মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্প। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের পাশে মাদক ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির তার নাম সনু (৩২)। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এঘটনা ঘটে। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, নিহত সানু অটোরিকশা চালক ছিলেন এবং মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে থাকতেন। তার বাবার নাম বাবুল হোসেন। সকালে জেনেভা ক্যাম্পের পাশে তর্কাতর্কির জেরে একপর্যায়ে সনুকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় প্রতিপক্ষ। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় সকাল সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন প্রতিবেশী শামীম হোসেন ও সাজিদ আহমেদ। সাজিদ জানান, সানু জেনেভা ক্যাম্পের ৫ নম্বর সেক্টরে থাকেন। আজ সকালে জেনেভা ক্যাম্পের মাদক কারবারি বুনিয়া সোহেলকে সনু বলেন, ‘তুমি মাদক বিক্রি করছ, এতে এখানকার ছেলেরা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’ পরে বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে সোহেলসহ কয়েকজন গুলি চালালে সনুর বুকে-পেটে গুলি লাগে।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার হাসান বলেন, অনৈতিক কারবার ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষ সনুকে গুলি করে হত্যা করে। এ নিয়ে জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা চলছিল।

জেনেভা ক্যাম্পের স্থানীয়রা জানান, মাসখানেক ধরে ক্যাম্পে প্রায়ই এমন সংঘর্ষ চলছিল। মাদক ব্যবসায় বাধা এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এসব সংঘর্ষ হচ্ছিল। বুধবার সকালে বুনিয়া সোহেল, রানা, টুনটুন, বাবু, নওশাদ, ইরফান, আরিফ, সাজ্জাদসহ কয়েকজন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালায়। তারা মাদক ব্যবসায়ী এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসী।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক বলেন, সনুর পেটে অন্তত ১৫টি গুলি লেগেছে। তিার মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে।

বিষয়:

শুক্রবারেও চলবে মেট্রোরেল

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৭:০৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারেও মেট্রোরেল চালানোর কথা ভাবেছে কর্তৃপক্ষ। এজন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) এমডি এম এ এন সিদ্দিক।

আজ সোমবার তিনি গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। খবর ইউএনবির।

এম এ এন সিদ্দিক বলেন, ‘মেট্রোরেল শুক্রবারও চালুর জন্য সফটওয়ার পরিবর্তন করতে হবে। তাই আজকে সোমবার থেকে এই প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করলাম। এটি একেবারেই প্রাথমিক প্রস্তুতি। প্রস্তুতি নেওয়ার পর উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে ফাইনাল করা হবে কবে চালু করা যায়।’

তিনি বলেন, যেহেতু সমীক্ষা চলছে, তাই খুব দ্রুত তারিখ ঘোষণা করা হবে। মেট্রোরেল শুক্রবার বাদে সপ্তাহে ৬ দিন যাত্রী পরিবহন করে। তবে যাত্রী চাহিদা বাড়ায় শুক্রবারও মেট্রোরেল চালুর জন্য কাজ চলছে।

বিষয়:

গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সব কালাকানুন বাতিল দাবি

সাংবাদিক নেতাদের নামে মিথ্যাচারের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাংবাদিক নেতারা সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সব কালাকানুন বাতিল, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ সাংবাদিক হত্যার বিচার, সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং সাংবাদিক নেতাদের নামে বানোয়াট নিউজ পরিবেশনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সমাবেশে সাংবাদিক নেতাদের নামে মিথ্যাচারের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের উদ্যোগে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সব কালাকানুন বাতিল, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ সাংবাদিক হত্যার বিচার, সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং সাংবাদিক নেতাদের নামে বানোয়াট নিউজ পরিবেশনের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সমাবেশে নেতারা এ সব দাবি জানান।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএফইউজে সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবি আবদুল হাই শিকদার, দ্য নিউনেশনের সাবেক এডিটর মোস্তফা কামাল মজুমদার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক আমার দেশের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মোরসালিন নোমানী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক, মুন্সীগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী বিপ্লব হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রুবেল, বিএফইউজের সহসভাপতি খায়রুল বাশার, সাবেক সহসভাপতি জাহিদুল করিম কচি, সাংবাদিক নেতা বাছির জামাল, এরফানুল হক নাহিদ, শাহীন হাসনাত, খন্দকার আলমগীর, সাঈদ খান বক্তব্য দেন। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম।

সমাবেশে রুহুল আমিন গাজী বলেন, ফ্যাসিবাদ পতনের পর কোনো দাবি-দাওয়ার জন্য রাজপথে নামতে হবে এটা আমাদের প্রত্যাশিত ছিল না। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে- সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইতে আমাদের রাজপথে নামতে হচ্ছে। সাগর-রুনির হত্যার বিচার চাইতে হবে কেন? এটা নিয়ে এত তালবাহানা কেন। কেন আপনারা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করলেন না। কেন কোনো পুলিশের ইনকোয়ারি করেননি- তা আমার কাছে বোধগম্য নয়। অবিলম্বে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।

সমাবেশে সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বিএফইউজের সভাপতি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র করে গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে পারবেন না। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশ গঠিত হয়েছে, সে বাংলাদেশকে কলুষিত করার ক্ষমতা আপনার নেই। সুতরাং, সব ষড়যন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসুন। সোজা পথে চলেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে নিয়ে চলতে চাই। যদি সোজা পথে না চলেন, তাহলে দায়-দায়িত্ব আপনাদের বহন করতে হবে, আমরা করব না।’

তিনি সাংবাদিক নেতাদের চরিত্র হনন করে ভুয়া-বানোয়াট সংবাদ পরিবেশনের নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘এ কেমন সাংবাদিকতা? অপসাংবাদিকতা সাংবাদিক সমাজ সহ্য করবে না। মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করার জন্য, সাংবাদিকদের চরিত্র হনন গণমাধ্যমের কাজ নয়। তিনি বলেন, একটি পত্রিকার সম্পাদক আমাকে বললেন গণভবনে আমি দাওয়াত পেলাম না কেন? আমি এখন থেকে পত্রিকায় আপনার বিরুদ্ধে লিখব। এদের কিছুতেই ছাড় দেওয়া যাবে না।’

সমাবেশে বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেন, ‘সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার ১২ বছর হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা কোনো বিচার পাইনি। যেহেতু ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে, তাই বর্তমান সরকারকে বলতে চাই- অবিলম্বে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। আমরা যেমন সাংবাদিক সুরক্ষা আইন চাই, ঠিক একইভাবে আর কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে গিয়ে যেন কোনো সাংবাদিক আহত না হয় সেটাও চাই।’

সভাপতির বক্তব্যে মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছেন সে সব সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অত্যন্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কিছু মিডিয়া মিথ্যাচার করছে। তাদের চরিত্র হনন করছে। এটা সহ্য করা হবে না। যারা এসব অপকর্মে জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংবাদপত্রকে ব্যবহার করে যাচ্ছেতাই করবেন এটা হতে পারে না।

সমাবেশে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) প্রধান প্রতিবেদক মোরসালিন নোমানি বলেন, “আমি তিনটি বিষয়ে কথা বলতে চাই। প্রথমটি হচ্ছে, সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ড। এ হত্যাকাণ্ডের ১২ বছরের বেশি সময় পার হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সময় বলা হয়েছিল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের ধরা হবে। কিন্তু এতদিনেও তা ধরা হয়নি। আমার দাবি হচ্ছে, সাগর-রুনির হত্যার সময় তৎকালীন যিনি পুলিশ প্রধান ছিলেন তাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, স্বৈরাচার সরকারের পতনের সময় যে চারজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। আর তৃতীয়টি হচ্ছে, ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় থাকার সময়ে যে সব সাংবাদিক ‘তেল’ দেওয়ার কাজ করেছিল, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। যাতে করে আর তারা কোনো সংবাদ সম্মেলন না করতে পারে।”

এ সময় সাংবাদিক নেতাদের বিরুদ্ধে বানোয়াট সংবাদ পরিবেশনের নিন্দা জানান তিনি। অবিলম্বে নোংরামি থেকে সংশ্লিষ্টদের সরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের নেতাদের চরিত্র হনন করবেন এসব সহ্য করা হবে না।’


বাহাদুর শাহ পার্কের ঐতিহ্য রক্ষায় ডিএসসিসিকে স্মারকলিপি প্রদান

রাজধানীর পুরান ঢাকায় অবস্থিত বাহদুর শাহ পার্ক শহীদ মিনার। পুরোনা ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জবি প্রতিনিধি

রাজধানীর পুরান ঢাকায় অবস্থিত বাহাদুর শাহ পার্ক শহীদ মিনারে ১৮৫৭ সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিস্মারক হিসেবে ‘১৮৫৭ সালে শহীদদের স্মরণে’ লেখাটি পুনঃস্থাপন করাসহ আরও ৬টি দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দরা। আজ রোববার সকাল ১১টার দিকে ডিএসসিসির প্রশাসকের কার্যালয়ে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

পার্কের সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের নেতরা বলেন, ‘১৮৫৭ সালের ভারতবর্ষের ব্রিটিশবিরোধী প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মৃতি বিজড়িত এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজসহ অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীসহ পুরান ঢাকার মানুষের অবসর বিনোদন, অক্সিজেন গ্রহণ ও প্রাতঃভ্রমণ, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের একমাত্র স্থান। ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্কের অভ্যন্তরে ১৮৫৭ সালের ভারতবর্ষের ব্রিটিশবিরোধী প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনারের শীর্ষে ‘১৮৫৭ সালে শহীদদের স্মরণে’ লেখাটি পুনঃস্থাপন করাসহ ৬দফা দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসককে স্মারকলিপি প্রদান করেছে ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদ।’

স্মারকলিপি প্রদানের পূর্বে নগর ভবনের প্রধান ফটকে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ্ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মীরুজ্জামান খান ও পরিচালনা করেন সদস্য সচিব আক্তারুজ্জামান খান।

বক্তব্য দেন পুরান ঢাকার নাগরিক মো. আল-আমিন সরদার, মো. সেলিম হাওলাদার, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট ঢাকা মহানগর কমিটির অন্যতম সদস্য আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার প্রমুখ।

এসময় বক্তারা বলেন, বাহাদুর শাহ পার্ক শুধু পার্ক নয়। এটি ১৮৫৭ সালের ভারতবর্ষের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের রক্তে রঞ্জিত এক ঐতিহাসিক স্থান। ১৮৫৭ সালের ২২ নভেম্বর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী আহত এবং পালিয়ে যাওয়া দেশপ্রেমিক বীর সিপাহীদের ধরে এনে ১১ জন সেনাকে এই স্থানে বর্বর ইংরেজরা নির্যাতন করে গাছে সঙ্গে ঝুলিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনায় ধারাবাহিকতায় ১৮৫৮ সালে রাণী ভিক্টোরিয়া ভারতবর্ষের শাসনভার গ্রহণ করে এবং এই ময়দানের নামকরণ হয় ভিক্টোরিয়া পার্ক।

পরিষদের সদস্য সচিব আক্তারুজ্জামান খান বলেন, ১৯৫৭ সালে ভারতবর্ষের প্রথম স্বাধীনতার যুদ্ধের ১০০ বছর পূর্তিতে বীর শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার তৈরি করা হয় এবং নামকরণ হয় বাহাদুর শাহ্ পার্ক। সেই ইতিহাস সংরক্ষণের বদলে বর্তমান প্রজন্মের কাছ থেকে সাহসী বীরদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা আড়াল করা হচ্ছে। এই স্থানের মর্যাদা রক্ষা করা প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের একান্ত কর্তব্য। অত্র এলাকার স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রী, প্রাত ও সান্ধ্য ভ্রমণকারী বয়োবৃদ্ধ নাগরিক ও সর্বস্তরের এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্কের ঐতিহাসিক মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখা উদ্দেশ্যে পূর্বের ন্যায় শহীদ মিনারের উপরিভাগ থেকে মুছে ফেলা ১৮৫৭ সালে শহীদদের স্মরণে লেখাটি পুনঃস্থাপন এবং এই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের রং পূর্বের ন্যায় লাল রং দিয়ে সৌন্দর্য বর্ধন করা এখন সময়ের দাবি।

পরিষদের সভাপতি তার সমাপনী ভাষণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও দিক নির্দেশনার মাধ্যমে পুরান ঢাকার একমাত্র পার্কের পরিবেশ এবং স্মারকলিপিতে উল্লিখিত দাবিসমূহের বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করে জনগণের আস্থার প্রতিফলন ঘটাবেন।

৬টি দাবি হলো-

১। শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের উপরিভাগ থেকে মুছে ফেলা ‘১৮৫৭ সালে শহীদদের স্মরণে’ লেখাটি পুনঃস্থাপন করতে হবে এবং এই শহীদ মিনারের রঙ পূর্বের ন্যায় লাল রং দিয়ে সৌন্দর্য বর্ধন করতে হবে।

২। পার্কের জায়গা দখল করে নার্সারি করা হয়েছে। এই জায়গা দখলমুক্ত করে হাঁটার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

৩। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও দারোয়ান না থাকার কারণে পার্কের পরিবেশ, মাদকসেবীদের আখড়া, ছিনতাইসহ নানা অপকর্ম বেড়ে গেছে যা উচ্ছেদসহ দারোয়ান ও পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগে আপনার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

৪। পার্কের জায়গা বা হাঁটাচলার অংশে দোকান বসিয়ে হাঁটার পরিবেশ নষ্ট করছে। যা উচ্ছেদে আপনার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

৫। ব্যায়ামের সরঞ্জাম পূর্বে পার্কে ছিল। কিন্তু গত সরকারের সময় থেকে তা উঠিয়ে নেওয়ায় ব্যায়াম ও শিশু-কিশোরদের খেলার সরঞ্জাম না থাকায় অত্র এলাকার জনসাধারণ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ পার্কের কোয়ার্টার মাইলের মধ্যে অবস্থিত ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীবৃন্দ ব্যায়াম করা বা বিশ্রাম নেওয়ার পরিবেশ তৈরি ও ব্যায়ামের সরঞ্জাম বসানোর অনুরোধ করছি।

৬। পার্কের বৈদ্যুতিক লাইন নিয়ে ব্যবসাসহ অন্যান্য বেআইনি কাজে ব্যবহার হচ্ছে। যা বাতিলে আপনার নির্দেশনা কামনা করছি।

বিষয়:

banner close