রাজধানীর কালশীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে সুমাত্রা ফিলিং স্টেশনের কাছে দুই ভাইয়ের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে অপর ভাইয়ের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন সিফাতুর রহমান সাফিন ওরফে রাহুল (২১) ও মো. রাফি (১৬)।
এ ছাড়া রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় পিকআপ ভ্যান উল্টে আলফাজ (২৫) নামে আরেক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। একই দিন রাত আনুমনিক সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনটি ঘটে। সবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া। তিনি জানান, মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহত রাহুলের ফুফু আসমা আক্তার জানান, ভাইদ্বয়ের বাসা মিরপুর বাউনিয়া বাঁধ এলাকায়। রাহুলের বাবার নাম জহিরুল ইসলাম পনির আর তা মা থাকেন জর্ডানে। দম্পতিটির শুধু দুটিই ছেলে সন্তান। রাহুল ডেলিভারিম্যানের চাকরি করতেন আর রাফি গাড়ি চালাতনে। দুর্ঘটনার সময় মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিলেন রাহুল।
তিনি আরও জানান, রাতে তারা মোটরসাইকেলের জন্য তেল নিতে কালশী যাচ্ছিলেন। এমন সময় ইসিবি চত্বরের পশ্চিম পাশে একটি ট্রাক তাদের ধাক্কা দিলে দুজন ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পথচারীরা তাদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে তাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মধ্যরাতে রাহুলকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকাল ৯টার দিকে মারা যান রাফি।
ক্যান্টনমেন্ট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. তাজুল ইসলাম জানান, রাতে একটি ট্রাক মোটরসাইকেলটিতে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে সহোদর দুই ভাই নিহত হয়েছেন। তবে ট্রাকটি নিয়ে চালক পালিয়ে গেছেন। পরিবারের আবেদনে মরদেহ দুটি বিনা ময়নাতদন্তে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।
খিলক্ষেতের ঘটনায় নিহত আলফাজ থাকেন মিরপুর ১২ নম্বর সেকশন এলাকায়। গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায়। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করতেন আলফাজ। তার ভাই মাহফুজ হোসেন জানান, রাতে একটি পিকআপ ভ্যানে করে আলফাজ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন। খিলক্ষেত এলাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে ভ্যানটি উল্টে যায়। এতে সে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা রাত ১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আয়োজনে আজ রোববার (৩ জুলাই) ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এদিন দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে এই কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি। সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন নেতাকর্মীরা। গঠন করা হয়েছে প্রায় ৯০টি সাংগঠনিক টিম। দেশের সব জেলা ও মহানগরের নেতাকর্মীদের এতে অংশ নিবে বলে জানা যায়। কর্মসূচি বাস্তবায়নে সাংগঠনিক টিমের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করা হয়েছে। সারাদেশে থেকে নেতাকর্মীদের সমাগম ঘটিয়ে শক্তিমত্তা প্রদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে সংগঠনটির। তবে গতানুগতিক কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে এবারের ছাত্র সমাবেশ কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে করতে চান নেতারা। এজন্য সমাবেশে অংশগ্রহণ নিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে ছাত্রদল।
এ সংক্রান্ত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নেতাকর্মীদের বলা হয়- ছাত্র সমাবেশে কোন ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে আসা যাবে না। সমাবেশের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্র কর্তৃক নির্ধারিত জায়গায় সকল ইউনিটকে বাধ্যতামূলকভাবে অবস্থান করতে হবে। রাজধানীর কাঁটাবন মোড় থেকে আজিজ সুপার মার্কেট ও পিজি হসপিটালের মাঝের গলি দিয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল পর্যন্ত এ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহনের চলাচলে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়। সমাবেশের দিনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কোন ইউনিটের গাড়ি কোন অবস্থাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না এবং ব্যক্তিগত শোডাউন ও মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না বলেও এতে বলা হয়। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের জন্য নির্ধারিত স্থান পরিষ্কার করে সমাবেশস্থল ত্যাগ করার কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এই নির্দেশনা প্রদান করেন।
ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদমর্যাদা) মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি বিএনপির মিডিয়া সেলেও প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে রাজধানীর শাহবাগে ছাত্রদলের সমাবেশকে ঘিরে সৃষ্টি হতে যাওয়া জনদুর্ভোগের জন্য রাজধানীবাসীর প্রতি অগ্রিম দুঃখ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির জানান, গত জুন মাসে আমরা আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণায় শুরুতে ৩ আগস্টে জাতীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করি। কিন্তু পরে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে তাদের সমাবেশ করার বিষয়ে আমাদের নেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে একাধিকবার যোগাযোগ ও অনুরোধ করেন। শহীদ মিনারের সমাবেশের বিষয়ে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস থেকে অনুমতিও গ্রহণ করেছিলাম। এই দিনে শহীদ মিনারে সমাবেশ করার বিষয়ে আমরাই ছিলাম একমাত্র বৈধ দাবিদার। কিন্তু পরে একটি উদার, গণতান্ত্রিক, পরমতসহিঞ্চু, সব মত ও পথের সহাবস্থানে বিশ্বাসী ছাত্রসংগঠন হিসেবে আমরা শহীদ মিনারে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে শাহবাগে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।
তিনি আরও বলেন, ব্যস্ত রাজধানীতে কর্মদিবসে সমাবেশের জনভোগান্তি সম্পর্কে আমরা অবগত। এতদসত্ত্বেও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এই গুরুত্বপূর্ণ স্মরণীয় দিনটিতে আমাদের ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির বৃহৎ ঐক্যের স্বার্থে বৃহত্তম ছাত্রসংগঠন হিসেবে দায়িত্বশীলতা ও উদারতার জায়গা থেকে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করতে হয়েছে।
আমরা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আগামীকালের যেকোনো ধরনের জনদুর্ভোগের জন্য অগ্রিম দুঃখ প্রকাশ করছি। প্রত্যাশা করছি, সম্মানিত নগরবাসী বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করবেন। একটি দায়িত্বশীল ছাত্রসংগঠন হিসেবে ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আমরা আরও অধিকতর সচেতন থাকব।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ৩ হাজার ১৯২টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ২৬৭টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৮৪টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে
অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ৭২৪টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এ অভিযানে ২৬১টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১০৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, রোববার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয় এবং সংশ্লিষ্ট আইন লঙ্ঘনের কারণে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় এই ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
বৃষ্টির কারণে গত কয়েকদিনে ঢাকার বাতাসের মানে বেশ উন্নতি লক্ষ করা গেছে। এমনকি বৃষ্টি না হলেও দূষণের মাত্রা তেমন বাড়েনি। তবে আজ অনেকটা উল্টোচিত্র দেখা গেছে। রাতভর বৃষ্টি হয়েছে, সকালেও ছিল ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। তা সত্ত্বেও ঢাকার বাতাসের মানে অবনতি হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল সেয়া ৯টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৯২। যা গত কয়েকদিনে সর্বোচ্চ। যেখানে এই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
গতকাল একই সময়ে ৫৮ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার ৫১তম স্থানে ছিল ঢাকা। তার আগেরদিন (শনিবার) একই সময়ে ৬৯ একিউআই স্কোর নিয়ে ‘মাঝারি’ শ্রেণিভুক্ত ছিল ঢাকার বাতাস।
বায়ুমান সূচক অনুযায়ী আজও ঢাকার বাতাস ‘মাঝারি’ পর্যায়েই রয়েছে, তবে সেটি ‘সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হয়ে ওঠার খুবই কাছাকাছি চলে গেছে। ৯২ স্কোর নিয়ে আজ তালিকার ১৬তম স্থানে চলে এসেছে ঢাকা।
এদিকে, একই সময়ে ১৭৪ স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে উগান্ডার কাম্পালা। ১৭৩ ও ১৭২ স্কোর নিয়ে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাহরাইনের মানামা এবং কঙ্গোর কিনশাসা। এর পরেই রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, শহরটির একিউআই স্কোর ১৭১। গতকাল ১৭০ স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে ছিল শহরটি।
কণা দূষণের এই সূচক ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। আর স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে এই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ৬৭০টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ২৫৪টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১৩৬টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, শনিবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
শেষ রাতে মুষলধারে বৃষ্টিপাতের পর রাজধানী ঢাকায় আজ সকালেও ঝরেছে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। এতে রাজধানী শহররের বায়ুদুষণের মাত্রা গতকালের তুলনায় আরও অনেকটা কমেছে। এমনকি বাতাসের মান নির্ণয়কারী ওয়েবসাইট আইকিউ এয়ারের সূচক অনুযায়ী, ঢাকার বাতাস আজ ‘ভালো’ হয়ে ওঠার খুবই কাছাকাছি চলে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে ঢাকার বাতাসের মান ‘ভালো’ থেকে মাত্র ৫ দূরে ছিল। এ সময় শহরটির একিউআই স্কোর ছিল ৫৫, যেখানে এই স্কোর শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়।
গত দুদিন ধরেই ঢাকার বাতাসে বাতাসের মানে উন্নতি দেখা গিয়েছে। বৃষ্টি না থাকলেও ঢাকার বাতাস ‘মাঝারি’ পর্যায়ে ছিল। আজও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। ৫৫ স্কোর নিয়ে ‘মাঝারি’ শ্রেণিভুক্ত হলেও দূষণের মাত্রা অনেকটা কমেছে। গতকাল একই সময়ে ৬১ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকার ৪০তম স্থানে ছিল ঢাকা।
ঢাকার বাতাসের এই উন্নতির কারণে যুক্তরাজ্যের লন্ডন ও যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের মতো শহরের থেকেও শহরটির অবস্থান ভালো। দূষিত শহরের তালিকায় এই শহর দুটিরও নিচে ৫৮তম স্থানে রয়েছে ঢাকা, যেখানে ৬০ একিউআই স্কোর নিয়ে ওয়াশিংটনে রয়েছে ৪৭ তম স্থানে এবং ৬৬ স্কোর নিয়ে ৪০তম স্থানে রয়েছে লন্ডন।
এদিকে, আজ তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে উগান্ডার কাম্পালা, একিউআই স্কোর ১৮৫। এরপর ১৮৩ ও ১৭৯ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে কঙ্গোর কিনশাসা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই।
এই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কণা দূষণের এই সূচক ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো— স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বুধবার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ছয় ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। তবে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই, আবহাওয়া থাকবে শুষ্ক। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।
বুধবার সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৩ শতাংশ, যা গরমের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
এর আগের দিন, মঙ্গলবার (২২ জুলাই), ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দিনভর বৃষ্টিপাত হয়েছে ২৫ মিলিমিটার।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, তাপমাত্রা বাড়লেও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম থাকায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হতে পারে। ফলে বাইরে বের হওয়ার সময় গরম থেকে বাঁচতে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
আধুনিক ও নিরাপদ বিমান চালুসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের দুজন উপদেষ্টা কলেজ পরিদর্শনে আসেন। এ সময়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন তারা।
সেখান থেকে বের হয়ে আসার সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ শুরু করেন। এখনও তারা ঘটনাস্থলে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন। এ সময়ে তাদের ‘ভুয়া, ভুয়া’; ‘লাশ চোর, লাশ চোর, প্রশাসন, প্রশাসন’; ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ বলে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম পরে কলেজের ৫ নম্বর ভবনের নিচতলায় কনফারেন্স কক্ষে যান। তাদের সঙ্গে কলেজের শিক্ষকেরাও ছিলেন।
সেখানে পাঁচ থেকে সাতজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধির সঙ্গে তাদের আলোচনা চলছে। এ সময় বাইরে শত শত শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের সঠিক নাম ও পরিচয় প্রকাশ, আহত ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ ও নির্ভুল তালিকা, শিক্ষার্থীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, বিমানবাহিনীর ব্যবহৃত ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো প্রশিক্ষণ বিমান বাতিল করে আধুনিক ও নিরাপদ বিমান চালু করা।
মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষার্থীরা সকাল ৯টায় ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছিল। সকাল সোয়া ৯টার দিকে দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সভা-সমাবেশ, দলবদ্ধ কর্মসূচি কিংবা অবস্থান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
সোমবার দুপুরে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। এতে ২৭ জন নিহত হয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ৭৮ জন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হচ্ছে।
দেশের সবচেয়ে বড় ভ্রমণ ও পর্যটন মেলা ‘১৩তম বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার (বিটিটিএফ) ২০২৫’ আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন (টোয়াব)। এবারের মেলা ৩০ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে (বিসিএফসিসি)।
রবিবার (২০ জুলাই) টোয়াব কার্যালয়ে এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (এটিজেএফবি) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে এক আলোচনা সভায় এ তথ্য জানান টোয়াবের সভাপতি মোহাম্মদ রাফিউজ্জামান।
এ সময় তিনি বাংলাদেশের পর্যটন ব্যবসার নানা বাধাবিপত্তি ও সমস্যার কথা তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের লেখনীর মাধ্যমে এসব সমস্যার চিত্র তুলে ধরলে এই খাত অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনায় টোয়াব সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন খাতে রয়েছে অপার সম্ভাবনা, তবে এর পূর্ণ বাস্তবায়নে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যথাযথ অবকাঠামোর ঘাটতি, দক্ষ জনবলের অভাব, পরিকল্পিত পর্যটন নীতির প্রয়োগে দুর্বলতা, নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা সংক্রান্ত সমস্যা—এসবই আমাদের পর্যটন শিল্পের বিকাশে অন্তরায় হয়ে আছে।
‘এসব সমস্যার টেকসই সমাধানে সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ, আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ও গন্তব্য উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি। টোয়াব ও সাংবাদিকদের সমন্বয়ে এসব সমস্যার ওপর আলোকপাত করে কার্যকর সমাধানের সুযোগ তৈরি করা যেতে পারে, যা এই খাতকে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।’
পর্যটন মেলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০০৭ সাল থেকে প্রতিবছর এই মেলার আয়োজন করে আসছে টোয়াব। দেশের পর্যটন খাতে তারা মূল অংশীদার হিসেবে কাজ করছে। মেলাটি শুধু দেশের পর্যটন শিল্পেই নয়, বরং প্রতিবেশী ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতেও প্রভাব ফেলেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশি-বিদেশি অংশগ্রহণকারীদের আগ্রহ বাড়ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ সময় এটিজেএফবির সভাপতি তানজিম আনোয়ার বলেন, বিটিটিএফ পর্যটন শিল্প বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে। এই মেলার মাধ্যমে দেশি-বিদেশি পর্যটন উদ্যোক্তা ও অংশীজনদের মধ্যে সংযোগ সৃষ্টি হয়, যা পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগ, নীতিগত সহায়তা এবং নতুন গন্তব্য প্রসারে ভূমিকা রাখে। এবারের আয়োজনে আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ বাড়ার যে আভাস পাওয়া যাচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের পর্যটন খাতের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত। এটিজেএফবি সবসময় এই খাতের টেকসই উন্নয়নের পক্ষে এবং আমরা এই আয়োজনের সফলতা কামনা করছি।
এটিজেএফবির সাধারণ সম্পাদক ও এশিয়ান টেলিভিশনের প্রধান প্রতিবেদক বাতেন বিপ্লব বলেন, পর্যটন উন্নয়নের জন্য শুধু মেলা আয়োজনই নয়, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নীতিমালা, প্রচার ও আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছাতে সক্ষম সেবা নিশ্চিত করাও জরুরি। বিটিটিএফের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো বাংলাদেশের পর্যটনকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরার সুযোগ তৈরি করে, তবে এর সুফল পেতে হলে আমাদের সামগ্রিক খাতকে আরও পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে নিতে হবে।
এবারের আয়োজনে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, ফিলিপাইন এবং চীনসহ মোট ২২০টি স্টল থাকবে। থাকবে বিজনেস-টু-বিজনেস (বিটুবি) এক্সচেঞ্জ, রাউন্ড টেবিল আলোচনা, সেমিনার, গন্তব্য উপস্থাপনা, সংবাদ সম্মেলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আয়োজকদের ভাষ্যে, এসব আয়োজন যেকোনো অংশগ্রহণকারীর জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
পাশাপাশি, প্রতিবেশী দেশের বিভিন্ন ন্যাশনাল ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন (এনটিও), বিদেশি ট্যুর অপারেটর ও অংশগ্রহণকারীদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
আলোচনা সভায় এটিজেএফবির সহসভাপতি রাজীব ঘোষ, যুগ্ম সম্পাদক মো. শফিউল্লাহ সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক জুলহাস কবীর ও আদনান রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলতাব হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য মাসুদ রুমি, রাশিদুল হাসান ও গোলাম মর্তুজা অন্তু উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন টোয়াবের ডিরেক্টর (ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, ডিরেক্টর (প্রপার্টি অ্যান্ড অ্যাসেটস) জিয়াউর রহমান জাকির, টোয়াবের সাবেক সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশী প্রমুখ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল ও নাজিরাবাজার মাতৃসদনে ২৪/৭ মিডওয়াইফারি-নেতৃত্বাধীন যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য (এসআরএইচ) সেবার উদ্বোধন করলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া। অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশন হ্রাসের মাধ্যমে নগরীর প্রজনন স্বাস্থ্যসেবায় গুণগত উন্নয়ন এবং ঢাকা শহরের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে মানসম্মত ও সহজপ্রাপ্য মাতৃসেবা প্রদান করার লক্ষ্যে এ প্রকল্প চালু হয়েছে।
জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ), সুইডিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা (সিডা), জাইপাইগো বাংলাদেশ এবং ডিএসসিসির উদ্যোগে গৃহীত এ প্রকল্প পুরান ঢাকার প্রায় ৮ লক্ষাধিক বাসিন্দার সার্বক্ষণিক কাঙ্ক্ষিত মাতৃসেবা নিশ্চিত করবে। ইউএনএফপিএ এবং জাইপাইগোর সহায়তায় প্রশিক্ষিত ধাত্রী ও চিকিৎসকেরা স্বাভাবিক প্রসবকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই সেবার ৯০% প্রদান করবেন। ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মা, নবজাতক এবং কিশোরীদের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাস পাবে, সচেতনতা বাড়বে এবং জনগণের মধ্যে সরকারি স্বাস্থ্যসেবার ওপর আস্থা বৃদ্ধি পাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসসিসি প্রশাসক বলেন, "কেবল মুনাফা অর্জনের জন্য ভয়-ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতে সিজারিয়ান ডেলিভারিকে অনেকটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় সিজারে মা ও নবজাতকের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির মাধ্যমে পুরো জাতি বিরাট স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।" সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব জনস্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সফল হবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে ডিএসসিসির সকল স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মিডওয়েফারি সেবা চালু করা হবে।
ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্যাথরিন ব্রিন কামকং বলেন, “মিডওয়াইফারি-নেতৃত্বাধীন সেবা কেবল চিকিৎসা নয়; এটি নারীর ক্ষমতায়ন এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবায় অবদান রাখে।”
অনুষ্ঠানে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ জহিরুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (অতি. দা.) ডা. নিশাত পারভীন, ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর, সিডা, ইউএনএফপিএ, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, দেশি-বিদেশি এনজিও প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে সড়ক দুর্ঘটনায় মো. শাহাবুল (২৪) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। নিহত শাহাবুল একটি ট্রাকের সহকারী (হেলপার) হিসেবে কাজ করতেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ভোর পৌনে ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে অচেতন অবস্থায় নিয়ে এলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শাহাবুল তিনি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার সোনাইঘাট ননসা গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে।
শাহাবুলের ভাই শামীম জানান, ‘গতরাত সাড়ে ৩টার দিকে আমরা ট্রাকে মাল নিয়ে রংপুর যাচ্ছিলাম। গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট এলাকায় গিয়ে গাড়ি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। শাহাবুল গাড়ি থেকে নেমে পেছনে যাচ্ছিল, সেই সময় পেছন থেকে একটি অজ্ঞাত যানবাহনের ধাক্কায় সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান, সে মারা গেছে।’
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফারুক হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘লাশটি ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়েছে।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের দুই শিক্ষক ও তিন শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখানো হলে শহীদ সাজিদ অ্যাকাডেমিক ভবনের সকল কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত এবং ভবন তালাবদ্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৪ জুলাই) জবির ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিভাগের দুই শিক্ষক ও তিন শিক্ষার্থীকে হামলার ঘটনায় গত ১০ জুলাই থেকেই ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা। অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ মিছিল, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ এবং স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা যায়, গতকাল সোমবার দুপুর ২টার দিকে শহীদ সাজিদ অ্যাকাডেমিক ভবন তালাবদ্ধ করার পূর্বঘোষিত কর্মসূচির ঠিক আগমুহূর্তে শিক্ষক সমিতির আহ্বানে অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। এতে উপস্থিত ছিলেন জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিভাগীয় শিক্ষক ড. কে এ এম রিফাত হাসান ও সহকারী প্রক্টর মো. শফিকুল ইসলাম।
আলোচনায় শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত তিনটি দাবির সঙ্গে আরও দুটি দাবি সংযুক্ত করে মোট ৫ দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো— আগামীকাল ১৫ জুলাই সকাল ১০টার মধ্যে প্রশাসনের উদ্যোগে নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে। হামলায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে দ্রুত বহিষ্কার করতে হবে। যেসব অছাত্র জড়িত, তাদের ক্যাম্পাসে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে। ভবিষ্যতে এমন সহিংসতা প্রতিরোধে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে তা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করতে হবে। রাজনৈতিক ট্যাগ ও অপপ্রচার বন্ধে প্রশাসনিকভাবে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষক সমিতি শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শুনে দুঃখ প্রকাশ করে এবং সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে রাতের মধ্যেই প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের আশ্বাস দেয়। এই আশ্বাসের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা দিনের কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখেন।
তবে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) সকাল ১০টার মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখানো হলে শহীদ সাজিদ অ্যাকাডেমিক ভবনের সকল কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হবে এবং ভবন তালাবদ্ধ করা হবে। তবে ভবনে অবস্থিত বিভিন্ন বিভাগের চলমান ফাইনাল ও মিডটার্ম পরীক্ষা এই কর্মসূচির আওতাভুক্ত নয় বলেও জানান তারা।
এদিকে, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ব্যাচভিত্তিক আলোচনা সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসানকে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ ও সমগ্র ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে শিক্ষার্থীদের ‘রাজনৈতিক ট্যাগ’ দিয়ে মানসিক হয়রানি করেছেন। বিশেষ করে বিভাগের দীর্ঘদিনের শ্রেণি প্রতিনিধি নন্দিনী ঘোষকে ‘শিবির’ ট্যাগ দিয়ে অপপ্রচার চালানোয় শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং এই মিথ্যাচারের দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলকে নিতে হবে বলেও দাবি করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের সঞ্জু বড়াইক নামে এক শিক্ষার্থী হলের ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার (১৪ জুলাই) ভোর সাড়ে ৫টায় তিনি জগন্নাথ হলের ১০ তলা বিশিষ্ট রবীন্দ্র ভবনের ছাদ থেকে নিচে লাফ দেন বলে জানিয়েছেন তার হলের সহপাঠীরা।
নিহত সঞ্জু ঢাবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এবং জগন্নাথ হলের আবাসিক ছাত্র। তার বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায়। তার বাবা-মা চা–শ্রমিক।
জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল বলেন, ‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অনুযায়ী, ভোর ৪টা ১ মিনিটে সঞ্জু হলের পূর্ব পাশের গেট দিয়ে হলে প্রবেশ করেন। তারপর রবীন্দ্র ভবনের লিফটে করে ছাদে যান। এরপর ৫টা ৩৬ মিনিটে তিনি ভবনের পশ্চিম পাশে, পুকুরপাড়ের রাস্তার দিকে লাফ দেন। পরে হলের প্রহরীরা রিকশায় করে তাৎক্ষণিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান এবং চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
প্রাধ্যক্ষ আরও জানান, সঞ্জু গত কয়েক দিন ধরে প্রেমঘটিত কারণে কিছুটা মানসিক কষ্টে ছিলেন এবং গত দুই দিন হলে ছিলেন না। তিনি বকশীবাজার এলাকায় সরল নামের এক বাল্যবন্ধুর কাছে ছিলেন।
দেবাশীষ পাল আরও জানান, সরল জানিয়েছেন গতরাতে তারা একসঙ্গে ঘুমিয়েছিলেন। কিন্তু সকালে সরল কল পেয়ে ঘুম থেকে উঠে দেখেন, সঞ্জু তার পাশে নেই এবং পরে আত্মহত্যার খবর পান।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মুনসুর বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। তিনি জানান, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তার সহপাঠীরা জানান, আত্মহত্যার আগে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সঞ্জু লেখেন—‘আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। আমি দিনের পর দিন কাউকে ডিস্টার্ব করে গেছি। উল্টো মানুষকে দোষারোপ করা আমার একদম ঠিক হয়নি। আমি সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি দিনের পর দিন অন্যায় করেছি। নিজের দোষ ঢেকে অপরজনকে দোষ দেওয়া আমার ঠিক হয়নি। আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমার কারণে কারও কোনো ক্ষতি হয়ে থাকলে, সে দায় একান্তই আমার। আমি ক্ষমা চাচ্ছি।’