রাজধানীর পুরান ঢাকায় অবস্থিত বাহাদুর শাহ পার্ক শহীদ মিনারে ১৮৫৭ সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিস্মারক হিসেবে ‘১৮৫৭ সালে শহীদদের স্মরণে’ লেখাটি পুনঃস্থাপন করাসহ আরও ৬টি দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দরা। আজ রোববার সকাল ১১টার দিকে ডিএসসিসির প্রশাসকের কার্যালয়ে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
পার্কের সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের নেতরা বলেন, ‘১৮৫৭ সালের ভারতবর্ষের ব্রিটিশবিরোধী প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মৃতি বিজড়িত এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজসহ অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীসহ পুরান ঢাকার মানুষের অবসর বিনোদন, অক্সিজেন গ্রহণ ও প্রাতঃভ্রমণ, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের একমাত্র স্থান। ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্কের অভ্যন্তরে ১৮৫৭ সালের ভারতবর্ষের ব্রিটিশবিরোধী প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনারের শীর্ষে ‘১৮৫৭ সালে শহীদদের স্মরণে’ লেখাটি পুনঃস্থাপন করাসহ ৬দফা দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসককে স্মারকলিপি প্রদান করেছে ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদ।’
স্মারকলিপি প্রদানের পূর্বে নগর ভবনের প্রধান ফটকে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ্ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মীরুজ্জামান খান ও পরিচালনা করেন সদস্য সচিব আক্তারুজ্জামান খান।
বক্তব্য দেন পুরান ঢাকার নাগরিক মো. আল-আমিন সরদার, মো. সেলিম হাওলাদার, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট ঢাকা মহানগর কমিটির অন্যতম সদস্য আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, বাহাদুর শাহ পার্ক শুধু পার্ক নয়। এটি ১৮৫৭ সালের ভারতবর্ষের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের রক্তে রঞ্জিত এক ঐতিহাসিক স্থান। ১৮৫৭ সালের ২২ নভেম্বর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী আহত এবং পালিয়ে যাওয়া দেশপ্রেমিক বীর সিপাহীদের ধরে এনে ১১ জন সেনাকে এই স্থানে বর্বর ইংরেজরা নির্যাতন করে গাছে সঙ্গে ঝুলিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনায় ধারাবাহিকতায় ১৮৫৮ সালে রাণী ভিক্টোরিয়া ভারতবর্ষের শাসনভার গ্রহণ করে এবং এই ময়দানের নামকরণ হয় ভিক্টোরিয়া পার্ক।
পরিষদের সদস্য সচিব আক্তারুজ্জামান খান বলেন, ১৯৫৭ সালে ভারতবর্ষের প্রথম স্বাধীনতার যুদ্ধের ১০০ বছর পূর্তিতে বীর শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার তৈরি করা হয় এবং নামকরণ হয় বাহাদুর শাহ্ পার্ক। সেই ইতিহাস সংরক্ষণের বদলে বর্তমান প্রজন্মের কাছ থেকে সাহসী বীরদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা আড়াল করা হচ্ছে। এই স্থানের মর্যাদা রক্ষা করা প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের একান্ত কর্তব্য। অত্র এলাকার স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রী, প্রাত ও সান্ধ্য ভ্রমণকারী বয়োবৃদ্ধ নাগরিক ও সর্বস্তরের এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্কের ঐতিহাসিক মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখা উদ্দেশ্যে পূর্বের ন্যায় শহীদ মিনারের উপরিভাগ থেকে মুছে ফেলা ১৮৫৭ সালে শহীদদের স্মরণে লেখাটি পুনঃস্থাপন এবং এই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের রং পূর্বের ন্যায় লাল রং দিয়ে সৌন্দর্য বর্ধন করা এখন সময়ের দাবি।
পরিষদের সভাপতি তার সমাপনী ভাষণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও দিক নির্দেশনার মাধ্যমে পুরান ঢাকার একমাত্র পার্কের পরিবেশ এবং স্মারকলিপিতে উল্লিখিত দাবিসমূহের বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করে জনগণের আস্থার প্রতিফলন ঘটাবেন।
৬টি দাবি হলো-
১। শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের উপরিভাগ থেকে মুছে ফেলা ‘১৮৫৭ সালে শহীদদের স্মরণে’ লেখাটি পুনঃস্থাপন করতে হবে এবং এই শহীদ মিনারের রঙ পূর্বের ন্যায় লাল রং দিয়ে সৌন্দর্য বর্ধন করতে হবে।
২। পার্কের জায়গা দখল করে নার্সারি করা হয়েছে। এই জায়গা দখলমুক্ত করে হাঁটার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
৩। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও দারোয়ান না থাকার কারণে পার্কের পরিবেশ, মাদকসেবীদের আখড়া, ছিনতাইসহ নানা অপকর্ম বেড়ে গেছে যা উচ্ছেদসহ দারোয়ান ও পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগে আপনার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
৪। পার্কের জায়গা বা হাঁটাচলার অংশে দোকান বসিয়ে হাঁটার পরিবেশ নষ্ট করছে। যা উচ্ছেদে আপনার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
৫। ব্যায়ামের সরঞ্জাম পূর্বে পার্কে ছিল। কিন্তু গত সরকারের সময় থেকে তা উঠিয়ে নেওয়ায় ব্যায়াম ও শিশু-কিশোরদের খেলার সরঞ্জাম না থাকায় অত্র এলাকার জনসাধারণ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ পার্কের কোয়ার্টার মাইলের মধ্যে অবস্থিত ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীবৃন্দ ব্যায়াম করা বা বিশ্রাম নেওয়ার পরিবেশ তৈরি ও ব্যায়ামের সরঞ্জাম বসানোর অনুরোধ করছি।
৬। পার্কের বৈদ্যুতিক লাইন নিয়ে ব্যবসাসহ অন্যান্য বেআইনি কাজে ব্যবহার হচ্ছে। যা বাতিলে আপনার নির্দেশনা কামনা করছি।
রাজধানীর মিরপুরে ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়ার সময় দেশীয় অস্ত্রসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ।
মিরপুরের কল্যানপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতিরা হলেন, আজাদ হাওলাদার, মো. হান্নান হাওলাদার, মো. মিলন লাঠিয়াল ও মো. আ. আজিজ হাওলাদার।
এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি ছেনা (চাকু জাতীয় ধারালো অস্ত্র), একটি চাপাতি, একটি লোহার রড ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত চারটি মোবাইল জব্দ করা হয়।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. গিয়াস উদ্দিন মিয়া ঢাকা মহানগর পুলিশকে (ডিএমপি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় কতিপয় লোক মিরপুর মডেল থানার কল্যানপুর ওভার ব্রিজের নিচে দেশীয় অস্ত্রসহ ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে টহল পুলিশের দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় সাধারণ জনগণের সহায়তায় দেশীয় অস্ত্রসহ তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও জানান, মিরপুর মডেল থানায় রুজুকৃত মামলায় গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানে ছুরিকাঘাতে মৃত্যু হয়েছে এক নৈশ প্রহরীর।
উদ্যানের সি-ব্লকের ৩ নম্বর রোডে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে তিনি রক্তাক্ত হন। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে রাত ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, ওই নৈশ প্রহরীর নাম রবিউল ইসলাম (৩৫)। তার বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম গ্রামে। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সি-ব্লকের ২ নম্বর রোডের ২৬ নম্বর বাসায় থাকতেন।
ঢাকা উদ্যানের সুপারভাইজার আব্দুল হান্নান জানান, ‘গত ৩-৪ বছর যাবত রবিউল উদ্যানের নাইট গার্ড হিসেবে চাকরি করছিলেন। গত বুধবার দিনগত রাতে এলাকার সন্ত্রাসী সুজন ওরফে ডিপজল একটি বাড়ি থেকে রড চুরি করছিল। তখন তাকে ধরে ফেলে রবিউল। তবে রড রেখে তাকে ছেড়ে দেন।’
‘এর জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে যখন রবিউল ৩ নাম্বার রোডের একটি গলিতে ডিউটিতে ছিলেন, তখন ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে সুজনসহ ২/৩ জন তার বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।’
তিনি আরও জানান, আহত রবিউলের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি দেখে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার হোসেন আজ শুক্রবার বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আশরাফুল বাদি হয়ে সুজন ওরফে ডিপজলের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৫/৭ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।’
চূড়ান্ত পরীক্ষায় প্রতিটি প্যারামিটারের সিস্টেম সন্তোষজনক হওয়ায় শিগগিরই মিরপুর-১০ নম্বরের মেট্রোরেল স্টেশন চালু হবে।
ঢাকা মেট্রো ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রউফ আজ বৃহস্পতিবার বলেন, আমরা মিরপুর-১০ মেট্রোরেল স্টেশনের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। সবকিছুই সন্তোষজনক। প্রতিটি প্যারামিটারের সিস্টেম ঠিক আছে।
তিনি বলেন, মিরপুর-১০ স্টেশন দিয়ে দুটি ট্রেন চলাচলের জন্য নিয়োজিত ছিল, যা সন্তোষজনক দেখা গেছে। প্রথম ট্রেনটি সকাল ৬টা ১০ মিনিটে এবং দ্বিতীয়টি সকাল ৬টা ২০ মিনিটে থামে। ট্রেনগুলো চলাচলের সময় একটি কারিগরি দল উপস্থিত থেকে পরীক্ষা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেছে বলে উল্লেখ করেন।
আব্দুর রউফ বলেন, যাত্রীদের চাহিদা বিবেচনায় মিরপুর-১০ স্টেশনটি দ্রুত মেরামত করা হয়েছে। আমরা সফলভাবে মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশনটি পুনরায় চালু করার জন্য আংশিক ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত যন্ত্রপাতি মেরামত ও প্রতিস্থাপনের চূড়ান্ত পরীক্ষা চালিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, মিরপুর-১০ স্টেশনের যন্ত্রপাতি মেরামত ও প্রতিস্থাপনের খরচ কাজীপাড়া স্টেশনের চেয়ে বেশি হবে, কারণ এটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মেট্রোরেলের বিবরণ অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ডাকা ‘কমপ্লিট সাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা।
২৫ আগস্ট থেকে মেট্রো রেল চলাচল শুরু হলেও ক্ষতিগ্রস্ত ওই দুটি স্টেশন বন্ধ ছিল। পরে কর্তৃপক্ষ কাজীপাড়া স্টেশনটি স্বল্প খরচে মেরামত করে ২০ সেপ্টেম্বর পুনরায় চালু করে।
টানা ভারি বর্ষণে শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা ও যানজট সৃষ্টি হওয়ায় নগরবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১টা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত শনিবার দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকায় গ্রিন রোড, ধানমন্ডি, মালিবাগ, মৌচাক, নিউমার্কেট, মিরপুরসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গলিগুলো ডুবে গেছে। শহরের নীচু এলাকাগুলোও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মানুষের চলাচলে বেশ কষ্ট করতে দেখা গেছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা জানান, আজ সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ঢাকায় দুই মিলিমিটার ও সিলেটে ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও জলাবদ্ধতার কারণে রাজধানীর কিছু এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
শনিবার অনেক বেসরকারি অফিস খোলা থাকায় পরিবহন সংকটনের কারণে গন্তব্যে পৌঁছাতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে অফিসগামীদের।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ হতে পারে।
ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসও হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে পূর্বাভাসে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থানে রয়েছে।
দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে নতুন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। বেপরোয়া গতির এ যানবাহনের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। যেমন খুশি চলাচল, হুটহাট ঘোরানো, উল্টোপথে চলাচলের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
এসব কারণে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে গত এক সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১৯ হাজার ৯৬২ টি ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
আজ সোমবার (৩০সেপ্টেম্বর) ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ অভিযান পরিচালনা করে ১৯ হাজার ৯৬২টি ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অভিযানকালে ৯ হাজার ৩০১টি রিকশার বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ৪ হাজার ১৫৯ টি অটোরিকশার সিট জব্দ করা হয়।
এছাড়া, ৬৬০টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ডাম্পিং করা হয় ও ৩টি রিকশার ব্যাটারি জব্দ করা হয় এবং ৫ হাজার ৮৩৯ টি রিকশার বিরুদ্ধে অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে র্যাব-২ এবং যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, দুটি পিস্তল, ২০ রাউন্ড গুলি ও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী পিচ্চি রাজাসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩৫ জন।
রোববার ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত জেনেভা ক্যাম্পে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন র্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শিহাব করিম।
তিনি বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে র্যাব ২ এ যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, দুটি পিস্তল, ২০ রাউন্ড গুলি ও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া অভিযানে ৩১ জন দুর্বৃত্ত, তিনজন নারী মাদক কারবারি ও শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী পিচ্চি রাজাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসার দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে বহু দিন ধরে। গত জুলাই থেকে দেশের অস্থিরতার মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায় সেখানকার দুটি পক্ষ। সাম্প্রতিক কয়েকটি সংঘাতে বড়সড় অস্ত্র হাতে মহড়া দিতে ও গুলি ছুড়তে দেখা গেছে দুই পক্ষকে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, থানা ও পুলিশের কাছ থেকে লুট করা অস্ত্র জেনেভা ক্যাম্পে ঢুকেছে। এসব অস্ত্র ব্যবহার করে গোলাগুলির সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে সাদ্দাম হোসেন সনু নামে এক অটোরিকশাচালক নিহত হওয়ারও ঘটনা ঘটে।
এসব ঘটনার পর রোববার ক্যাম্পে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের নির্দেশনায় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের সমন্বয়ে এই অভিযান চালানো হয় বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, মাদক ব্যবসায়ী পিচ্চি রাজা ও তার অনুসারীরা দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন স্থানে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)-এর প্রেস বিজ্ঞপ্তির তথ্যমতে জানা যায়, যৌথ অভিযানে জেনেভা ক্যাম্প থেকে দুটি পিস্তল, ২০ রাউন্ড গুলি, ৬টি চায়নিজ কুড়াল, ৩৯টি ছুরি, ১৬টি রামদা, ৮টি চাপাতি, ১২ প্যাকেট স্প্লিন্টার, ৫৩টি পেট্রোল বোমা ও ৫০টি হেলমেট উদ্ধার করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের সেনাবাহিনীর মাধ্যমে মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানায় আইএসপিআর।
রাজধানীর শুক্রাবাদ এলাকায় গ্যাসের চুলা বিস্ফোরণ হয়ে শিশুসহ তিনজন দগ্ধ হয়েছেন। আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভোর ৪টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। পরে দগ্ধদের দ্রুত উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়।
দগ্ধরা হলেন, মোহাম্মদ টোটন (৩৫), তার স্ত্রী মোছা. নিপা আক্তার (৩০) ও তাদের ছেলে মো. বায়জিদ (৩)
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. তরিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পানি গরম করতে গিয়ে গ্যাসের চুলা জ্বালানোর সময় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে তাদের উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, তাদের মধ্যে টোটন ৫০ শতাংশ, নিপা ৩২ শতাংশ ও শিশু বায়জিদ ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হয়। দগ্ধের পরিমাণ বেশি হওয়ায় তাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে দুই জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে গুলশান-২ রোড নাম্বার ১০৮ এর ২১ নম্বর প্লটের একটি চায়ের দোকানের ভেতর থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদ আহমেদ।
তিনি জানান, নিহত রফিকের (৬২) বাড়ি বরিশালের দবদবিয়া গ্রামে এবং সাব্বিরের (১৫) বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর থানার রায়গঞ্জ বাজার বেপারী পাড়া এলাকায়। ধারণা করা হচ্ছে কয়েক দিন আগেই তাদের কুপিয়ে হত্যা করে এখানে ফেলে রেখেছে দুর্বৃত্তরা। দুইজনের গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল।
স্থানীয়দের ধারণা দুইজনকে গত বৃহস্পতিবার কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা হত্যা করেছে। আজকে মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ বেরিয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদ আহমেদ আরও জানান, মরদেহ দুটির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবারে সকাল থেকে ভারি সৃষ্টিপাত। এতে করে রাজধানীবাসীর যাতায়াতে বিড়ম্বনায় ফেলে তাদের কর্মদিনকে বিঘ্নিত করেছে।
সকালে বৃষ্টির সময় সড়কে যানবাহন সংকট ও ধীরগতির যানবাহনের কারণে অফিস ও স্কুলগামীদের দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে। পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপের প্রভাবে সৃষ্ট এ বৃষ্টিপাত বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
বৃষ্টিতে মালিবাগ, মৌচাক ও মালিবাগ চৌধুরী পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পানিতে ডুবে গেছে গলিগুলো।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম এনজমুল হক জানান, বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪ মিলিমিটার এবং বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ছয় ঘণ্টায় ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তবে আগামীকাল শুক্রবার থেকে বৃষ্টিপাত কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কুমারখালীতে দেশের সর্বোচ্চ ১০৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
মৌসুমী বায়ুর অক্ষ ভারতের মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর সঙ্গে সম্পর্কিত একটি খাত উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।
মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
পশ্চিম-মধ্য ও সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি নিষ্ক্রিয় হয়ে মৌসুমি অক্ষের সঙ্গে মিশে গেছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সহযোগী সংগঠন ‘সুজন বন্ধু’ ঢাকা জেলার কমিটি গঠিত হয়েছে। গত শনিবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সুজনের কেন্দ্রীয় সচিবালয়ে এক মতবিনিময়সভায় ২৭ সদস্যবিশিষ্ট ওই কমিটি গঠন করা হয়।
সভায় উপস্থিত সবার মতামতের ভিত্তিতে আবু সাঈদ জয় সভাপতি, কালের কণ্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক শেখ আব্দুল্লাহ আল নোমান সাধারণ সম্পাদক, ফয়সাল হাসান সহসভাপতি এবং সানজিদা পারভিন সহসাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।
‘সুজন বন্ধু’ কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সজলের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব জারিফ অনন্তের পরিচালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুজনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দীলিপ কুমার সরকার। এ ছাড়াও ছিলেন ‘সুজন বন্ধু’ কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অলিউল ইসলামসহ অন্য সদস্যরাও।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুজনের প্রেক্ষাপট ও ‘সুজন বন্ধু’ তৈরির প্রয়োজনীয়তা এবং সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করেন দীলিপ কুমার সরকার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণতন্ত্র ও সুশাসন সুসংহত করার পাশাপাশি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে তরুণদের সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান ড. বদিউল আলম মজুমদার। অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় ড. বদিউল আলম মজুমদারকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে ‘সুজন বন্ধু’।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা পশ্চিম থানা ও সেনাবাহিনীর একটি দল যৌথ অভিযান চালিয়ে রাজধানীর উত্তরা এলাকার একটি বাড়ি থেকে নগদ ১ কোটি ১৬ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা, বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা ও দুটি প্রাইভেটকারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- শাহজাদা খান সাজ্জাদ, মো. তৌজিদুল ইসলাম ও মো. সাইফুল ইসলাম। পুলিশ বলছে, উদ্ধার করা এসব টাকা ও প্রাইভেটকার সাবেক সংসদ মোহাম্মদ হাবিব হাসান ও তার পরিবারের সদস্যদের।
আজ সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ডিসি বলেন, গোপস তথ্যে জানা যায়, উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের ২৩ নম্বর রোডের ৭ নম্বর বাড়িতে পুলিশের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটসহ অস্ত্র-গুলি রয়েছে। এমন তথ্যে গত রোববার সেনাবাহিনী ও উত্তরা পশ্চিম থানার একটি যৌথ টিম ওই বাসায় স্থানীয় সাক্ষীসহ প্রবেশ করে। সেখানে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি জানান, তাদের কাছ থেকে ১ কোটি ১৬ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা, ৬৫টি ১০০ ইউএস ডলারের নোট, ৪টি ২০ ইউএস ডলারের নোট,একটি এক ইউএস ডলার নোট, ৪১টি ১ হাজার থাইবাথের নোট, ২টি ৫০০ থাইবাথের নোট, ২৮ টি ২০ বাথের নোট, তিনটি ৫০ বাথ নোট, বিশটি ৫০০ দিরহামের নোট, একটি ১০০ দিরহামের নোট, একটি ২০ দিরহামের নোট, তিনটি ১০ দিরহামের নোট, দুটি ৫ দিরহামের নোট, পাঁচটি ১০০ কানাডিয়ান ডলারের নোট, দুটি ১০ সিঙ্গাপুর ডলারের নোট, একটি ২ সিঙ্গাপুর ডলারের নোট, একটি ১০০ রিয়ালের নোট, দুটি ৫০ রিয়ালের নোট, দুটি ১০ রিয়ালের নোট, তিনটি ৫ রিয়ালের নোট, একটি ১ রিয়ালের নোট, একটি ২ হাজার রুপির নোট, ৬০টি ৫০০ রুপির নোট, একটি ২০০ রুপির নোট, পাঁচটি ১০০ রুপির নোট, পাঁচটি ৫০ রুপির নোট, চারটি ২০ রুপির নোট, ছয়টি ১০ রুপির নোট এছাড়াও তিনটি নেভি ব্লু রঙের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট যার সামনে ও পেছনে ইংরেজিতে পুলিশ লেখা এবং দুটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটগুলো ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য পলাতক মোহাম্মদ হাবিব হাসান ও তার ছেলে আবির হাসান তামিমসহ (পলাতক) গ্রেপ্তাররা গত ৫ আগস্টের আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন সময় ব্যবহার করতো। যে বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয় সেটি সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসানের ছেলে আবিরের শ্বশুর বাড়ি বলে জানা গেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানিয়েছে, জব্দ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা ও গাড়ি দুটি সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসান ও তার পরিবারের সদস্যদের।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সারা দেশে গত ৪ সেপ্টেম্বর শুরু হয় যৌথবাহিনীর অভিযান। এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর কলাবাগান থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল যৌথ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মো. শুভ, মো. শাকিল হোসেন ও শরীফ মো. আবদুল্লাহ।
গোয়েন্দা তথ্যে গতকাল শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কলাবাগান থানার লাল ফকিরের মাজারের পাশের একটি বাসায় এ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিএমপি জানায়, গোপন সংবাদে জানা যায়, কয়েকজন লোক কলাবাগান থানার লাল ফকিরের মাজারের পাশে বিপুল পরিমাণ দেশি ও বিদেশি অস্ত্রসহ অবস্থান করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে ওই স্থানে কলাবাগান থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে।
অভিযানে তাদের কাছ থেকে দুইটি ম্যাগাজিন ও ১৩ রাউন্ড তাজা গুলিসহ দুইটি পিস্তল, ১২ বোর কার্তুজসহ একটি দেশীয় পাইপগান, একটি এয়ারগান, একটি ইলেকট্রিক শক (টিজার), দুইটি চাপাতি, তিনটি ছুরি, একটি চায়নিজ কুড়াল, একটি দেশীয় দা, তিনটি মুঠোফোন ও একটি ওয়েব ক্যামেরা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তাররা একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে। তারা দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে কলাবাগান থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর এক বিশেষে পরিস্থিতিতে আমি ডিএমপি কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করি। তখন সড়ক ও গণপরিবহনে এক ধরনের অব্যবস্থাপনা ছিল। অল্প সময়ের মধ্যে সে পরিস্থিতি থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছি। আমরা এ অবস্থা ধরে রাখতে চেষ্টা করছি।
আজ শনিবার সকালে ডিএমপি সদর দপ্তরে গণপরিবহনে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও শৃঙ্খলা কার্যকর করতে বাস মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।
মতবিনিময়ের সময় রাস্তায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় বাস মালিকদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানো, রাস্তার মাঝখানে ও যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো এবং এলোমেলোভাবে রাস্তায় গাড়ি রাখা বন্ধ করতে হবে।
বাস মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ড্রাইভার ও বাস শ্রমিকদের এ বিষয়ে আরও সচেতনতা ও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তাদের আরও বেশি মনিটরিং করা ও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করলে মহানগরীর যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সক্ষম হব। যেকোনো প্রয়োজনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সব সময় আপনাদের পাশে থাকবে।
সভায় বাস মালিকদের পক্ষ থেকে আরও সহযোগিতা ও বাস শ্রমিকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সচেতনতামূলক সভা করার আহ্বান জানানো হয়।