রাজধানীর সিপাহীবাগ এলাকা। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জ্যামে বসে আছে মানুষ। এমনিতেই রাস্তা সরু, তার মধ্যে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রাস্তার দুই পাশে পার্ক করে যাত্রী ওঠানামা করছে। রাস্তার মাঝখানে যে জায়গা রয়েছে তা দিয়ে কোনোভাবেই দুই দিকের গাড়ি আসা-যাওয়া করতে পারছে না। ফলে সৃষ্ট হচ্ছে জটলা, জ্যামের। এটা এই এলাকার নিত্যদিনের ঘটনা বলে জানান স্থানীয় মোবারক মিয়া। পেশায় তিনি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর একরাশ অভিযোগ নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন তিনি। বললেন, ‘এটা দেখার কেউ নেই। এখানে এই চিপা রাস্তার মধ্যে ব্যাটারির অটোরিকশাগুলো দুই পাশে পার্কিং করে রাখে। ফলে রাস্তা দিয়ে কোনোভাবেই গাড়ি চলাচল করতে পারে না। অফিস টাইম আর সন্ধ্যা বেলায় ভয়াবহ জ্যাম লাগে এখানে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় এখানে।’
শুধু সিপাহীবাগ বাজার এলাকার চিত্রই নয়। এ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এখন নগরের এক অন্যরকম এক আতঙ্কের নাম। সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর রামপুরা, বনশ্রী, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ি, বাসাবো, বৌদ্ধ মন্দির, মুগদা, সিপাহীবাগ, মানিকনগর, মান্ডা, সায়েদাবাদ, কোনাপাড়া, বসিলাসহ এই এলাকাতেই হাজার হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে। আর তো রয়েছেই শহরের অন্যান্য এলাকার চিত্র। এটার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। নতুন নতুন গাড়ি প্রতিনিয়ত নামানো হচ্ছে রাস্তায়। কোনো নিয়মকানুন নেই।
তবে খবর নিয়ে জানা গেছে, নগরীর নিম্ন এলাকাগুলোয় এই ব্যাটারিচালিত রিকশা নামানোর ব্যাপারে কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করা হয় না। যেমন- গুলশান-বনানী কিংবা বারিধারায় চাইলেই এসব গাড়ি হুট করে নামানো যায় না; কিন্তু যাত্রাবাড়ি, সায়েদাবাদ, মুগদা, মানিকনগর, মান্ডা কিংবা সিপাহীবাগের মতো এলাকাগুলোতে যে কেউ যখন-তখন নামিয়ে ফেলতে পারে এসব রিকশা। ফলে ঘনবসতিপূর্ণ এসব এলাকায় আরও যানজট বাড়ছে, বাড়ছে রাস্তায় বিশৃঙ্খলাও। অথচ, নিয়ম রয়েছে রাস্তার হিসাব করে যেকোনো নামানো বিষয়টি। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যেন রাস্তায় নামানোই এখন সহজ একটি প্রক্রিয়া।
রাজধানীর ঘনবসতিপূর্ণ পুরান ঢাকা, লালবাগ, হাজারীবাগ, আজিমপুরসহ ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মিরপুর এবং উত্তরাতেও ব্যাপক সংখ্যক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা যায়।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, প্রায় প্রতিদিন রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকদের বেপরোয়া চলাচলে প্রধান সড়ক ও অলিগলিতে দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। কিছু কিছু ঘটনা আলোচনায় আসছে। বাকি অনেক ঘটনা জানতেও পারছে না মানুষ।
সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি সূত্রে জানা যায়, রাজধানীতে রিকশার সংখ্যা কত, এর সঠিক কোনো তথ্য কোনো সংস্থার কাছে নেই। ডিএসসিসি এলাকায় অবৈধ প্রায় ৪ লাখ রিকশা রয়েছে। ডিএনসিসি এলাকায়ও অবৈধ রিকশার সংখ্যা ৪ থেকে ৫ লাখ হবে বলে মনে করছেন ডিএনসিসি সংশ্লিষ্টরা। নতুন করে ঢাকায় যেসব রিকশা নামানো হচ্ছে, এর মধ্যে বড় একটি সংখ্যা ব্যাটারিচালিত। শারীরিক কষ্ট লাঘব করতে রিকশাচালকরা ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। এ জন্য রিকশার মালিকরাও রিকশায় ব্যাটারি যুক্ত করছেন।
জানা গেছে, এসব রিকশা থেকে প্রতি মাসে বড় অঙ্কের চাঁদাবাজি হয়ে থাকে। যা স্থানীয় থানাসহ রাজনৈতিক পরিচয়ধারী নেতা-কর্মীরা ভাগ পেয়ে থাকে।
এদিকে একটা সময় ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো নগরীর প্রধান সড়কে ওঠানোর বিষয়ে বিধিনিষেধ ছিল। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এ নিয়মের কোনো বালাই নেই বললেই চলে। সরেজমিনে দেখা গেছে, দেদার ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো নগরীর প্রধান সড়কে চলার পাশাপাশি তা বিভিন্ন ফ্লাইওভারেও উঠে যাচ্ছে যেনোতেনোভাবে এসব রিকশা চলার ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনা।
এদিকে এই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা কিছু ইতিবাচক মন্তব্য দিয়েছেন। তাদের মতে, এসব গাড়ির কারণে মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে এটা ইতিবাচক দিক। তবে এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। কেননা একজন চালককে জানাতে হবে- তার কোন রাস্তায় কীভাবে চলাচল করতে হবে। রাস্তায় চলাচলের একটা নিয়ম-নীতি রয়েছে। তাকে সেই শিক্ষাটা দিতে হবে।
ঢাকা শহরের মতো দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এখন রাস্তার বিষফোড়া। এলাকার ভেতরের রাস্তায় এসব রিকশা চলাচলের কথা থাকলেও এগুলো সব সময় মহাসড়কে উঠে আসে। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুর্ঘটনা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব নিয়ন্ত্রণ করা যায় না রাজনৈতিক কারণেই। কারণ দিনশেষে এ থেকে বড় অঙ্কের চাঁদাবাজি হয়ে থাকে। যার ভাগ রাস্তার পাতি নেতা থেকে শুরু করে প্রশাসন পর্যন্ত পেয়ে থাকে।
দেশের অনেক সড়কেই নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলে থাকে ধীরগতির ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন, মাহিন্দ্রা গাড়িগুলো। অন্যদিকে, দূরপাল্লার পরিবহনগুলো দ্রুত গতির হয়ে থাকে। এতে বাড়ছে দুর্ঘটনা। সরু রাস্তা ও ধীরগতির অবৈধ যানবাহনের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে দুর্ভোগও।
নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করা এই রিকশার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে এটাই এখন বড় প্রশ্ন? শুধু অভিযান চালিয়ে অবৈধ রিকশার দাপট বন্ধ করা যাবে না বলে মন্তব্য নগর পরিকল্পনাবিদদের। তাই প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ। খবর নিয়ে জানা গেছে, ইজিবাইকগুলো রুট পারমিট ছাড়াই রাস্তায় চলাচল করছে।
চার্জ দিতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ট্রাফিক বিভাগের কাছে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও পুরো দেশজুড়েই চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক। ধারণা করা হয় এ সংখ্যা ৫০ লাখেরও বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকাসহ দেশের জেলা শহরগুলোতে চলাচল করছে। সারা দেশে এই অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার অটোবাইকের ব্যাটারি চার্জ দেওয়া হয়। এতে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বিদ্যুতের খরচ হচ্ছে। সাধারণত একটি ইজিবাইক চালানোর জন্য চার থেকে পাঁচটি ১২ ভোল্টের ব্যাটারি প্রয়োজন। আর প্রতি সেট ব্যাটারি চার্জের জন্য গড়ে ৯০০ থেকে ১১০০ ওয়াট হিসেবে পাঁচ থেকে ছয় ইউনিট (দিনে বা রাতে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা) বিদ্যুৎ খরচ হয়। সে হিসেবে এক লাখ ইজিবাইক বা ব্যাটারিচালিত রিকশা চার্জের জন্য জাতীয় গ্রিড থেকে প্রতিদিন অন্তত ১১০ মেগাওয়াট এবং মাসে ৩৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হওয়ার কথা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ গ্যারেজ চুরি করে ও লুকিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এসব ব্যাটারি রিচার্জ করায় সরকার বিদ্যুতের বড় অঙ্কের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রিকশাগুলোর ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার জন্য গড়ে উঠেছে বেশ কিছু গ্যারেজ। এসব গ্যারেজে ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো চার্জ দেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। গ্যারেজের মালিকরা প্রতিটি রিকশা চার্জ দেওয়ার জন্য দৈনিক ৪০ টাকা নিয়ে থাকেন। নিয়মানুযায়ী গ্যারেজগুলোতে বাণিজ্যিক মিটার থাকার কথা। কিন্তু গ্যারেজের মালিকরা বাড়ির পাশে গ্যারেজ গড়ে তুলে বাড়ির মিটারের সংযোগ থেকেই ব্যাটারি চার্জ দিচ্ছেন। এতে সরকারের ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া অনেক ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিক নিজের বাড়িতে অথবা গরিব কোনো বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর বাড়িতে রাতব্যাপী রিকশার ব্যাটারিগুলো চার্জ দিচ্ছেন। যার অধিকাংশ গ্যারেজেই নিষিদ্ধ এসব অটোবাইকের ব্যাটারি চার্জ করতে ব্যবহার করা হচ্ছে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন। অনেক স্থানে চলছে মিটার টেম্পারিংয়ের মতো ঘটনা। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন করে ইজিবাইক আমদানি বন্ধ ও পুরোনোগুলো পর্যায়ক্রমে তুলে নেওয়ার কথা থাকলেও তা কার্যকর হয়নি গত কয়েক বছরেও।
মহাসড়কের আতঙ্ক থ্রি হুইলার
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের শহর ও গ্রামে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, অটো চার্জার ভ্যান, নছিমন, করিমন, ভটভটি, থ্রি হুইলার জাতীয় ইজিবাইক, টেম্পো ও অযান্ত্রিক যানবাহন। নানা পদক্ষেপের পরও বিপজ্জনক এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সড়ক-মহাসড়কে বাধাহীনভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব যানবাহন। অভিযোগ রয়েছে, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশার মালিকরা আইন মানতে নারাজ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের শহর-বন্দর-গ্রামের সড়ক ছেয়ে গেছে এসব ব্যাটারিচালিত ‘থ্রি হুইলার’ রিকশা ও ইজিবাইক।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করেন বুয়েটের অধ্যাপক ও গণপরিবহণ বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল হক। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, রেজিস্ট্রেশনবিহীন যেসব গাড়ি যেমন- ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নছিমন, করিমন সেগুলোর বিষয়ে করণীয় কী এগুলো কেউ ভাবছেন বলে মনে হচ্ছে না। প্রতিদিনই এসব গাড়ির জন্য সড়কে দুর্ঘটনায় ঝরছে প্রাণ। এসব গাড়ির চালকের গাড়ি চালানোর কোনো দক্ষতাই নেই। নেই গাড়ির কোনো নিবন্ধনও। বিআরটিএ এসব গাড়ির বিষয়ে এখনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না কেন বুঝি না। মহাসড়কে ধীরগতির এসব ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন দুর্ঘটনার বড় কারণ। মহাসড়ক সব সময় অবারিত থাকা উচিত। এসব ছোট গাড়ির জন্য আলাদা লেন করতে পারলে সুফল পাওয়া যাবে।
বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক হাদিউজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, সিঙ্গেল সড়কগুলো যখন সরাসরি মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেওয়া হয় আর আইন করা হয় এসব তিন চাকার যান মহাসড়কে ওঠা নিষেধ, তাহলে বিকল্প রাস্তা প্রয়োজনের জন্য। আর বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা না করে আইন করে কখনোই এসব যানবাহন বন্ধ করা সম্ভব নয়। কেননা ২০০৯ সালে যখন চীন থেকে এসব যানবাহন আমদানি হয়েছে তখনই এ বিষয়ে পরিকল্পনা করা দরকার ছিল। গত ১৫ বছরে কয়েক লাখ মানুষের কর্মনির্ভর করে এখানে। তিনি বলেন, সব মহাসড়কের দুই পাশে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সার্ভিস রোড চালু করতে হবে। এতে মহাসড়ক একদিকে ঝুঁকিমুক্ত হবে এবং থ্রি-হুইলারসহ অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল বন্ধ হবে। আনফিট যানবাহন সরিয়ে নিতে হবে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত কয়েক বছরে লাখ লাখ অটোরিকশা আমদানি করা হয়েছে। এর অর্ধেকও লাইসেন্স পায়নি; কিন্তু স্থানীয়ভাবে দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ টাকা চাঁদা দিয়ে চলছে। ইজিবাইক, নছিমন, করিমন, ভটভটি একই প্রক্রিয়ায় চলছে। তিনি বলেন, মহাসড়ক নিরাপদ করতে হলে জাতীয় সড়ক কাউন্সিলের দেওয়া ১১১টি সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে। সিটি সার্ভিসের ৯৮ শতাংশ বাস-মিনিবাস চলাচলের অযোগ্য। আন্তঃজেলা দূরপাল্লার ৪৮ শতাংশ বাস ২০ বছরের বেশি পুরোনো। আনফিট, লক্কর-ঝক্কর যানবাহন সরিয়ে নিতে হবে। তাছাড়া দক্ষ চালকের অভাব রয়েছে। পরিকল্পনা করে মহাসড়কগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন খুবই জরুরি। পুলিশ ও মালিক-শ্রমিকদের চাঁদাবাজি বন্ধ করা জরুরি।
রাজধানীতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৩৪ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সোমবার ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এক ক্ষুদেবার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাজধানীতে ঝটিকা মিছিল পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও অংশগ্রহণকারী কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আরও ৩৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
রাজধানীর মেরুল বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় দুটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। দুটি বাসই ভিক্টর পরিবহনের। কে বা কারা কী উদ্দেশ্যে আগুন দিয়েছে সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে মিরপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের সামনে একটি ও মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডে দুটি ককটের বিস্ফোরণ ঘটেছে। সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
আজ ভোরে দুটি বাসে অগ্নিকাণ্ডের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের মোট ৪টি ইউনিট দুটি বাসের আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, আজ ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে আমাদের কাছে সংবাদ আসে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় ভিক্টর পরিবহনের দুটি বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। পরে আমাদের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে বাসে কিভাবে আগুন লেগেছে তা আমরা জানি না। এখনও আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো সংবাদ বা তথ্য আসেনি। এ ছাড়া কেউ হতাহত হয়েছে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি।
পাঁচ দফা দাবি আদায়ে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সচিবালয় অভিমুখী মিছিলে বাধা দিয়েছে পুলিশ।
আজ রোববার দুপুর দেড়টার দিকে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শিক্ষকরা মিছিল নিয়ে পল্টন মোড় ঘুরে এসে সচিবালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ তাদের সচিবালয়ের ৫ নম্বর গেটের সামনে আটকে দেয়।
আটকে দেওয়ার পর শিক্ষকদের ৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদল শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সচিবালয় যান। তারা হলেন বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মো. ইলিয়াস রাজ, মুখ্য সমন্বয়ক গাউসুল আজম শীমু, সাধারণ সম্পাদক মোছা. রিমা খাতুন, সমন্বয়ক এম এ সালাম, মো. আসাদুজ্জামান, অ্যাড. আনোয়ার হোসাইন।
শিক্ষকদের দাবি
১. অনতিবিলম্বে সব বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তি সুনিশ্চিত করতে হবে।
২. সব বিশেষ বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো সুনিশ্চিত করতে হবে।
৩. বিশেষ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপবৃত্তি ৩ হাজার টাকা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. শিক্ষার্থীদের মিডডে মিলসহ উচ্চ উপকরণ, খেলাধুলা সরঞ্জাম প্রদান ও থেরাপি সেন্টার বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. ছাত্র-ছাত্রীদের ভোকেশনাল শিক্ষা কারিকুলামের আওতায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পুনর্বাসন সুনিশ্চিত করতে হবে এবং সব চাকরি ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নির্ধারিত কোটা সুনিশ্চিত করতে হবে।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান কাজী এমদাদুল হক দুলালসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা হলেন— বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী এমদাদুল হক দুলাল (৬০), হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইসমাইল মিয়া (৩৭) এবং পল্লবী থানা ৫ নম্বর ওয়ার্ড ডি-ব্লক ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক যুবলীগ নেতা মো. আব্দুস সালাম খোকন ওরফে নায়রা খোকন (৬০)।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, গতকাল বিকেল আনুমানিক ৩টা ১৫ মিনিটে মতিঝিল বিভাগের একটি দল খিলগাঁও থানার এলাকায় অভিযান চালিয়ে কাজী এমদাদুল হক দুলালকে গ্রেপ্তার করে। একই দিন দুপুর আনুমানিক ১২টা ৪৫ মিনিটে পল্টন থানা এলাকা থেকে মোহাম্মদ ইসমাইল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে ডিবি-মতিঝিল বিভাগ। অন্যদিকে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে মিরপুর বিভাগের একটি দল পল্লবী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. আব্দুস সালাম খোকন ওরফে নায়রা খোকনকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরও জানান, নায়রা খোকন পল্লবীর এমপি ইলিয়াস মোল্লার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ঝটিকা মিছিলের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করতেন।
যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও তিনি জানান।
রাজধানীর বনানী এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে মোনালিসা মুন্নি (২০) নামে এক গৃহবধূ ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি পরিবারের। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে বনানীর নিয়াজুদ্দিন এলাকার একটি টিনশেড বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মোনালিসা লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চর কাশিয়া গ্রামের হারুন অর রশিদের মেয়ে। তিনি স্বামী রানার সঙ্গে বনানীর ওই টিনশেড বাসায় ভাড়া থাকতেন।
মোনালিসার স্বামী রানা বলেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে কথা কাটাকাটি চলছিল। একপর্যায়ে মোনালিসা রাগ করে নিজ ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে দেখি, সে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলছে।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, চিকিৎসকের বরাত দিয়ে নিশ্চিত করা হয়েছে যে মোনালিসা ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেছেন। লাশ মর্গে রাখা হয়েছে এবং বিষয়টি বনানী থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে নভেম্বরে ‘গণভোট’ অনুষ্ঠানের দাবিসহ মোট পাঁচ দফা দাবি আদায়ে মিছিল নিয়ে রাজধানীর পল্টনে জড়ো হয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর হাজারও নেতাকর্মী।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার পর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের একটি মিছিল মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়ে সমাবেশে মিলিত হয়। একইভাবে মহানগর উত্তরের মিছিলটিও নয়াপল্টন হয়ে একই স্থানে আসে। এখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলের শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য শেষে এই মিছিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ‘যমুনার’ অভিমুখে যাত্রা শুরু করবে বলে জানা গেছে।
এই কর্মসূচিতে জামায়াতের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির ব্যানারেও আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা পল্টন মোড়ে আসেন।
জামায়াতের এই পাঁচ দফা দাবির মধ্যে আরো রয়েছে-
‘জুলাই জাতীয় সনদ’ বাস্তবায়নের আদেশ জারি, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে রাজনৈতিক হয়রানি ও গ্রেফতার বন্ধ, নির্বাচনে সব দলের সমান সুযোগ এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমে বাধাহীনতা নিশ্চিত করা। আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি জানিয়ে জামায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারকে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা জানান।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ এই কথা জানান। হামিদুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমরা লিখিতভাবে আমাদের দাবি তুলে ধরবো। এ জন্য এসব দাবি আগের মতোই একেবারে সুস্পষ্ট। অর্থাৎ গণভোট যেন অবশ্যই নির্বাচনের আগে হয় এবং পৃথক দিবসে হয়।’
রাজধানীর প্রগতি সরণিতে ঢাকা ওয়াসার পাইপলাইন স্থাপন কাজের কারণে আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) ওই এলাকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ওয়াসার বাস্তবায়নাধীন “ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পের” প্যাকেজ–৩.১ (ডিস্ট্রিবিউশন রিইনফোর্সমেন্ট পাইপলাইন) এর আওতায় এই কাজ শুরু হচ্ছে।
ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক ওয়াহিদুল ইসলাম মুরাদের স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ বিভিন্ন ব্যাসের (১৬০০ থেকে ৫৬০ মিলিমিটার) ডিআই ও এইচডিপিই পাইপলাইন স্থাপন করা হবে।
আজ থেকে কাজ শুরু হবে সেকশন–ডি (প্রগতি সরণির নতুন বাজার থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত) এবং সেকশন–ই (নতুন বাজার থেকে কাকলী পর্যন্ত) অংশে।
কাজ চলাকালীন সময়ে রামপুরা ব্রিজ থেকে শুরু করে প্রতি ৪০০ মিটার অন্তর সড়কের মিডিয়ান বরাবর উভয় পাশে ৩ মিটার করে দুই লেনে যান চলাচল বন্ধ থাকবে। ফলে ওই পথে যানবাহনের গতি কিছুটা মন্থর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে ওয়াসা জানিয়েছে, সার্বক্ষণিক যান চলাচল অব্যাহত থাকবে, এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)-এর সহায়তায় যথাযথ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাত্রার আগে যথেষ্ট সময় নিয়ে বের হতে এবং প্রয়োজনে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে।
পাশাপাশি, প্রগতি সরণিতে চলাচলরত সব যানবাহনকে নির্দেশিত লেন ও গতিসীমা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ওয়াসার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কাজ চলাকালীন সাময়িক অসুবিধার জন্য সংস্থাটি দুঃখ প্রকাশ করছে এবং নাগরিক সহযোগিতা কামনা করছে।
বাড়ছে রাজধানীর বাতাসে দূষণের মাত্রা। বায়ুদূষণে বিশ্বের ১২৬ শহরের তালিকায় শীর্ষ ১৫ নম্বরে উঠে এসেছে ঢাকা। এরমধ্যে রাজধানীর ৯ এলাকায় বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি। বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল সোয়া ৯টায় সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার সূচক থেকে এ তথ্য জানা যায়।
আইকিউএয়ার বাতাসের মান নিয়ে লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক প্রকাশ করে। যা একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি সতর্ক করে। বুধবার সকাল সোয়া ৯টায় আইকিউএয়ার সূচকে সবার ওপরে আছে প্রতিবেশী ভারতের কলকাতা।
শহরটির বাতাসের মানের স্কোর ২৬৭। বাতাসের এই মান নাগরিকদের জন্য ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পাশাপাশি তালিকার শীর্ষ ২ নম্বরে অবস্থান করছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই। শহরটির বাতাসের মানের স্কোর ২০৯। এই মানও নাগরিকদের জন্য ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’।
এদিকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষ ৩ নম্বরে আছে ভারতের দিল্লি। ২০৭ স্কোর নিয়ে শহরটির বাতাসও আজ নাগরিকদের জন্য ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’। অন্যদিকে তালিকার শীর্ষ ১৫ নম্বরে ১২৪ স্কোর নিয়ে আছে রাজধানী ঢাকা।
বাতাসের এই মান সংবেদনশীল গোষ্ঠীর নাগরিকদের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই অবস্থায় জানালা বন্ধ রাখার পাশাপাশি সংবেদনশীল গোষ্ঠীর মানুষদের ঘরের বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে আইকিউএয়ার।
এদিকে বুধবার সকালে রাজধানীর ৯ এলাকায় দূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। এই এলাকাগুলো হলো- মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং, দক্ষিণ পল্লবী, কল্যাণপুর, মাদানী এভিনিউয়ের বে’জ এইজ ওয়াটার, পুরান ঢাকার বেচারাম দেউড়ি, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, তেজগাঁওয়ের শান্তা ফোরাম ও আইসিডিডিআরবি ভবন এলাকা এবং গোড়ান।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ পর্যন্ত ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। পাশাপাশি ৫১ থেকে ১০০ পর্যন্ত স্কোর মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়। আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর।
অন্যদিকে স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে ধরা হয়। পাশাপাশি ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোর ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
রাজধানীর শাহজাহানপুরের ভাড়া বাসা থেকে সুরভী আক্তার মাহফুজা (২১) নামে এক নারীর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি পেশায় একজন পোশাক শ্রমিক ছিলেন। এই ঘটনার পর থেকে তার কথিত স্বামী আজিজুর রহমান পলাতক।
সোমবার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত ৯টার দিকে ৪৩৯/এ শাহজাহানপুরের বকশীবাগের দ্বিতীয়তলা ভবনের নিচতলার ভাড়া বাসার কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মধ্যরাতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মৃত সুরভী আক্তার শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জয়নগর গ্রামের নুরুল হক খানের মেয়ে। বর্তমানে শাহজাহানপুর বকশিবাগের বাসায় ভাড়া থাকতেন।
শাজাহানপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মহসিন তালুকদার বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পরে সেখান থেকে প্লাস্টিকের বস্তাবন্দি অবস্থায় ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করি এবং ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
এসআই আরও জানান, ঘটনাস্থলে আশেপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে আমরা জানতে পেরেছি, চলতি মাসের ১ নভেম্বর স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে তারা বকশিবাগের ওই বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। আশেপাশের লোকজন আমাদেরকে আরো জানায়, তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হতো। হয়ত বা পারিবারিক কলহের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। ঘটনার পর থেকে নিহত নারীর কথিত স্বামী আজিজুর রহমান পলাতক রয়েছেন। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ যারা যাবে। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
রাজধানীর গুলশানে আরও একটি নতুন অভিজাত ক্লাবের যাত্রা শুরু হলো। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানি অ্যান্ড ফার্মস থেকে ‘গুলশান সাউথ ক্লাব’ নামে একটি নতুন ক্লাবের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পাওয়া গেছে।
গতকাল (৩ নভেম্বর ) ক্লাবটির নিবন্ধন অনুমোদনের পর এর কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
গুলশান সাউথ ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ড. সৈয়দ মো. শাহান শাহ শাহীন। উদ্যোক্তা পরিচালক ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন জনাব মোহাম্মদ খুরশিদ আলম।
এছাড়া ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবে রয়েছেন আরও সাতজন— খান মোহাম্মদ ইকবাল, কৃষিবিদ মো. ইউনুস আলী, মো. খালিদুজ্জামান, মোহাম্মদ নূর নবী, আব্দুল আউয়াল বিপ্লব, মো. এনামুল হক এবং জুবাইদা নাজনীন প্রমুখ।
নিবন্ধনের মধ্য দিয়ে গুলশান এলাকার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও নাগরিক কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শেহরীন আমিন ভুইয়া ওরফে মোনামি ছবি বিকৃত করায় সাইবার সুরক্ষা আইনে শাহবাগ থানায় মামলা করেছেন। আজ সকালে এই মামলাটি করেন। ডাকসুর সদস্যরা এসময় ঐ শিক্ষিকার সঙ্গে ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সামাজিক মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন ডাকসুর আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক মো. জাকারিয়া।
জাকারিয়া এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, শেহরীন আমিন ভুইয়া ম্যাম তার ছবি এডিট করে ফেসবুকে পোস্ট করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা করেছেন। আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক হিসেবে আমি সার্বিক সহায়তা করেছি। উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক উম্মে সালমা এবং মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমা।
তিনি লিখেছেন, অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি ডিবির সাইবার ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
যারা পোস্ট করেছেন, অশালীন মন্তব্য করেছেন, পোস্ট শেয়ার করেছেন এবং পরবর্তীতেও যারা এভাবে ছবি বিকৃত করে প্রচার করবে সবাইকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে ইনশাআল্লাহ।
জাকারিয়া জানান, ডিবির সাইবার ইউনিট আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন পরবর্তীতে কোনো শিক্ষক কিংবা শিক্ষার্থী ছবি বা ভিডিও বিকৃত করাসহ যেকোনো সাইবার বুলিং এর স্বীকার হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তারা ব্যবস্থা নিবে।
শত প্রতিকূলতার মধ্যেও রাঝধানীতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ (রোববার) এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে আজ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সংগঠন ও গোষ্ঠী একযোগে কর্মসূচি পালন করছে।
এতে করে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় রাজধানীর কিছু এলাকায় ব্যাপক জনভোগান্তি ও তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
এমপিওভুক্তির দাবিতে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়সমূহের স্বীকৃতি ও এমপিও ভুক্তকরণ, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের এমপিও ভুক্তকরণের দাবিতে প্রেস ক্লাবের সামনে বেশ কয়েকটি সংগঠন অবস্থান করছে।
এছাড়া চাকুরীপ্রত্যাশি প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট ও ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নন-ক্যাডারে নিয়োগ প্রদানের জন্য সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চলছে। ফলে যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না।
অনাকাঙিক্ষত কারণে যানজট বেড়ে জনভোগান্তি তৈরি হওয়ায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
ঢাকার বাতাস আজ ‘সহনীয়’। আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স-একিউআই) এ সময় ৯৬ স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ১৩তম অবস্থানে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। তালিকায় প্রথম ভারতের দিল্লি, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের দুই শহর লাহোর ও করাচি।
সোমবার (২ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান নির্ধারণ সংস্থা আইকিউএয়ার থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
আইকিউএয়ারের দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, দূষিত শহরের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি, স্কোর ৪০৪। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, বায়ুর মানের স্কোর ৩৪৬, তৃতীয় স্থানে রয়েছে করাচি, স্কোর ২০৮।
দূষিত বাতাসে শীর্ষ দশে থাকা অপর শহরগুলোর বাতাসের মানের স্কোর ১২৯ থেকে ১৯০-এর মধ্যে।
আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ‘ভালো’ বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা ‘সহনীয়’ ধরা হয় বায়ুর মান। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠী’র (অসুস্থ বা শিশু-বৃদ্ধ) জন্য অস্বাস্থ্যকর ধরা হয়। আর স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত থাকলে সে বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়।
স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বলে বিবেচনা করা হয় এবং ৩০১ এর বেশি হলে তা ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়।