ঢাকার কেরানীগঞ্জের বুড়িগঙ্গা নদী থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড।
গতকাল সোমবার কেরানীগঞ্জের পাংগাও বুড়িগংঙ্গা নদী সংলগ্ন এলাকা থেকে এই অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. সিয়াম-উল-হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ঢাকা জোন অধীনস্থ বিসিজি স্টেশন পাগলা কর্তৃক ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জের পাংগাও বুড়িগংঙ্গা নদী সংলগ্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলার সময় মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী ১ টি স্টিল বডি তল্লাশি করে ১ কোটি ৩০ লক্ষ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়।
পরবর্তীতে মঙ্গলবার জব্দকৃত জাল উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
রাজধানীর পুরান ঢাকার একটি বহুতল ভবনে আগুন লেগেছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে আরমানিটোলার হাজী টাওয়ারে এই আগুনের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৯ ইউনিটের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে বাবুবাজারের আরমানীটোলার হাজী টাওয়ারে ১৪ তলা ভবনের ৬ তালায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে সদরঘাট ফায়ার স্টেশনে দুটি ইউনিট ৬টা ৪৫ মিনিটে পৌঁছায়। পরে সিদ্দিকবাজারের পাঁচটি, সূত্রাপুরের দুটিসহ মোট ৯টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। ৭টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার ইসলামবাগ চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় একটি প্লাস্টিকের গোডাউনে ভয়াবহ আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১১ ইউনিটের চেষ্টায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে কারখানাটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠান উপলক্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ব্যবহৃত সকল প্রকার নির্বাচনি প্রচারণা সামগ্রী অপসারণ করেছে ডিএসসিসি। ২ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে ডিএসসিসি আওতাধীন এলাকায় অনুমতিবিহীন সকল ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার, বিজ্ঞাপন, সাইনবোর্ড ও নির্বাচনি প্রচারপত্র ইত্যাদি স্ব উদ্যোগে অপসারনের জন্য সংশ্লিষ্ট সংগঠন/ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে ৮ ডিসেম্বর হতে সকল ওয়ার্ডের অনুমতিবিহীন সকল বিজ্ঞাপন ও নির্বাচনি প্রচারণা সামগ্রী অপসারণ শুরু হয়।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ রাসেল রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়ন আদেশের ওপর গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল ঘোষণার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সকল প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা সামগ্রী অপসারণের নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসসিসি সফলভাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রায় সকল প্রকার নির্বাচনি প্রচারণা সমাগ্রী অপসারণে সফল হয়। উপর্যুক্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
শহরের পরিবেশ ও সৌন্দর্য রক্ষায় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫ প্রতিপালনে ডিএসসিসি সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানাচ্ছে।
তবে, ডিএসসিসি এলাকায় পুনরায় কেউ অননুমোদিত কোনো নির্বাচনি সামগ্রী স্থাপন করলে অথবা বিদ্যমান নির্বাচনি সামগ্রী সম্পর্কিত তথ্য জানাতে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০২২২৩৩৮৬০১৪ নম্বরে জানানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে।
রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুল এলাকায় একটি ফার্নিচার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে মুন্সিবাড়ি এলাকায় এই আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের প্রায় দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তরের স্টেশন অফিসার শাহজাহান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আগুনের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। মোট ৮টি ইউনিট টানা চেষ্টা চালিয়ে রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
স্বস্তির খবর হলো, এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে বা এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা। তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত জানা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য প্রদপ্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ ঘটনার পর থেকেই ঢাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এ অবস্থায় যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে ঢাকার বিভিন্ন সড়কে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার ও শাহবাগ এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফার্মগেট এলাকায় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার, কারওয়ান বাজারে দৈনিক প্রথম আলো এবং ধানমন্ডি এলাকায় ছায়ানট ভবনে বৃহস্পতিবার রাতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নগরীজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে ধানমন্ডি এলাকায় অবস্থিত ছায়ানট ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান দেখা গেলেও ধানমন্ডি ৩২ নম্বর কিংবা শাহবাগ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ছিলো তুলনামূলক কম।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের প্রস্তুতি রয়েছে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর একদল বিক্ষোভকারী বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এসময় প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেক সংবাদকর্মী অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
হামলাকারীদের থামাতে রাতে ডেইলি স্টার ভবনের সামনে গিয়ে একদল ব্যক্তির হাতে নাজেহাল হন নিউ এইজ সম্পাদক ও সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভাপতি নূরুল কবীর। এসময় তাকে ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ বলে স্লোগান দেওয়া হয়।
একই রাতে ধানমন্ডিতে ছায়ানট ভবনে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর চালায় একদল উত্তেজিত জনতা। হামলা আর ভাঙচুরে লন্ডভন্ড হয়ে যায় বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানটি।
জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত ১২ নভেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন ওসমান হাদি। দেশে চিকিৎসার পর গত সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে খবর আসে, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
মিরপুরের বহুল প্রতীক্ষিত ৬০ ফিট সংযোগ সড়ক নির্মাণের পর সর্বসাধারণের যান চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে এ উপলক্ষে এক উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিএনসিসি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ‘এই শহরের গত ১৫, ২০ কিংবা ৩০ বছরের যে পেন্ডিং কাজগুলো রয়েছে, সেগুলো আমরা একে একে সমাধান করার চেষ্টা করছি। ৬০ ফিট সংযোগ সড়কের কাজটি দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ঝুলে ছিল। সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয় করে মাত্র ২ মাসেই আমরা নগরবাসীর জন্য রাস্তাটা খুলে দিতে পেরেছি।’
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘এই রাস্তাটির একটি প্রতীকী তাৎপর্য রয়েছে। তা হলো- সরকারের সব সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান যদি এক জায়গায় এসে কাজ করে, তাহলে এই নগরকে এখনো বাসযোগ্য করে তোলা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নগরবাসীকে দৈনন্দিন হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে হবে। তাহলেই সবার জন্য একটি ন্যায্য নগর গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
ডিএনসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাজধানীর মিরপুরবাসীর দীর্ঘদিনের যানজট ও জনদুর্ভোগ লাঘবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ৬০ ফিট সড়ককে সরাসরি মিরপুরের প্রধান সড়কের সঙ্গে যুক্ত করার লক্ষ্যে নতুন সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ লক্ষ্যে ডিএনসিসির ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগের নামে সিটি জরিপে রেকর্ড করা ৮০৮০০ ও ৪০৪৫৬ দাগের জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হয় এবং ডাকবিভাগের জমি অধিগ্রহণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ডাক বিভাগের মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীন, ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দীন, অঞ্চল-৪-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দীন প্রমুখ।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গোতে অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি (AVSEC) ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ পণ্য জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বিমানবন্দর গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৪ ডিসেম্বর দুবাই থেকে আগত Solit Air-এর কার্গো বিমানে আমদানিকৃত দুইটি শিপমেন্ট পরীক্ষা করে ২ হাজার ৮৭৮ কেজি নিষিদ্ধ ক্রিম, বিভিন্ন প্রকার গার্মেন্টস পণ্য ও ইলেকট্রনিক্স অ্যাক্সেসরিজ উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ২ কোটি ৮৪ লাখ ৯২ হাজার ২০০ টাকা।
জব্দকৃত পণ্যের বিরুদ্ধে কাস্টমস কর্তৃক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
মেট্রোরেলের কর্মীদের সর্বাত্মক কর্মবিরতির কারণে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী উত্তরা থেকে বিকাল ৩টা ও মতিঝিল থেকে ৩টা ২০ মিনিটে ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও কোনো ট্রেনই স্টেশন ছাড়েনি। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
এর আগে স্বতন্ত্র চাকরি বিধিমালা প্রণয়নে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের প্রতিবাদে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাতটা থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানটির নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশ। এ কারণে মেট্রোরেলের যাত্রীসেবায় বিঘ্ন ঘটার শঙ্কা দেখা দেয়।
যদিও বৃহষ্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানায়, শুক্রবার মেট্রোরেল নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এ ঘোষণা মানেননি আন্দোলনকারীরা।
ডিএমটিসিএলের জনসংযোগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পর আন্দোলনকারীদের দাবি পূরণ হওয়ার পথে। কিছু প্রক্রিয়াগত বিষয় আছে। এরপরও যাত্রীসেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন সরকার সব কিছু বিবেচনা করে দেখছে।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকালে সপরিবারে অনেকেই ঘুরতে বের হন, কিন্তু মেট্রোরেল বন্ধ থাকার কারণে আজ তাদের ঘুরতে যাওয়া হচ্ছে না। এমনই একজন কাজীপাড়ার ওবায়েদ ইসলাম। তিনি সপরিবারে রমনা পার্কে যাওয়ার জন্য মেট্রো স্টেশনে এসে দেখেন মেট্রোর গেট তালাবদ্ধ। তা দেখেই ফিরে যান তিনি। চারটার দিকে শেওড়াপাড়া স্টেশনে গিয়েও সিঁড়িতে ওঠার কলাপসিবল গেট তালা লাগানো দেখা যায়।
এদিকে স্টেশনে ওঠার অপেক্ষায় অসংখ্য মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কড়াইল বস্তিবাসীর জন্য নিরাপদ পানির চরম সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি জরুরি মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে দুটি বিশুদ্ধ পানির ট্যাংক স্থাপন ও উদ্বোধন করেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিক প্রয়োজন ও জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বিবেচনায় নেওয়া এই উদ্যোগ দুর্যোগ-উত্তর পরিস্থিতিতে স্থানীয়দের জন্য দ্রুত স্বস্তি, নিরাপত্তা ও আশার বার্তা নিয়ে এসেছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় কড়াইল বস্তির অগ্নিকাণ্ডে আক্রান্ত এলাকায় ঢাকা মহানগর আনসার পরিচালক মোঃ আসাদুজ্জামান গণি আনুষ্ঠানিকভাবে ট্যাংক দুটির উদ্বোধন করেন। প্রতিদিন ট্যাংকগুলোতে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে, যা অগ্নিদুর্গত মানুষের খাদ্য, আশ্রয় ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদান করবে।
উল্লেখ্য, অগ্নিকাণ্ডের পর নয় দিনব্যাপী দুই হাজার মানুষকে দু’বার করে রান্না করা খাবার, ৯০০ কম্বল এবং জরুরি সহায়তা হিসেবে ১,২০০ প্যাকেট শিশুখাদ্য (গুঁড়া দুধ) বিতরণ করেছে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন—“দুর্যোগের মুহূর্তে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের অঙ্গীকার। কড়াইলের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ যেন নিরাপদ পানি পায়, সেই নিশ্চয়তা দিতেই মহাপরিচালক মহোদয়ের নির্দেশনায় এই ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী অতীতের মতো ভবিষ্যতেও যেকোনো সংকটে জনগণের পাশে থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।”
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীরা এই মানবিক উদ্যোগকে গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, দুর্ঘটনার পরপরই বিশুদ্ধ পানির সংকট ছিল সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা; নতুন ট্যাংক স্থাপনের ফলে দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনযাত্রা দ্রুত পুনরুদ্ধারে সহায়তা মিলবে। এই জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ কড়াইল এলাকার পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনের চলমান প্রচেষ্টাকে আরও ত্বরান্বিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর আনসারের জোন কমান্ডারগণসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, অঙ্গীভূত আনসার, আনসার ব্যাটালিয়ন এবং টিডিপি সদস্য-সদস্যাগণ।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি বাসায় গৃহিনী মালাইলা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যার পর বাথরুমে গোসল করে গৃহকর্মী আয়েশা (২৩)। এরপর মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসার ড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) শাহজাহান রোডের ৩২/২/এ বাসার সপ্তম তলার ৭/বি ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, মাত্র চার দিন আগে বাসার দারোয়ান মালেকের মাধ্যমে ওই মেয়েকে আনা হয়। পরে গৃহকর্মী হিসেবে নিহত মালাইলা আফরোজের বাসায় কাজ দেওয়া হয়। তখন নিজের নাম আয়েশা বলে পরিচয় দেয়। পরে মা-মেয়েকে হত্যার পর নিহত নাফিসার স্কুল ড্রেস পরে বের হয়ে যায় সেই মেয়ে।
ভবনের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিহত মালাইলা আফরোজ (৪৮) গৃহিণী। মেয়ে নাফিসা বিনতে আজিজ মোহাম্মদপুরের প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। নাফিসার বাবা এম জেড আজিজুল ইসলাম পেশায় শিক্ষক। তিনি উত্তরার সানবিমস স্কুলের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক।
ভবনের একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নাফিসার বাবা স্কুলের উদ্দেশে সকাল ৭টার দিকে বের হয়ে যান। সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বোরখা পরে ওই বাসার লিফটে ওঠে সাত তলায় যায় গৃহকর্মী আয়েশা। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে কাঁধে স্কুল ব্যাগ নিয়ে ড্রেস পরে মুখে মাস্ক লাগিয়ে বের হয়ে যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নাফিসার বাবা বাসায় ফিরে স্ত্রী ও মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান।
নিহত নাফিসার বাবা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাসায় একজন কাজের মহিলা দরকার ছিল। সাধারণত গেটে অনেকে কাজের সন্ধানে আসেন। চার দিন আগে একটি মেয়ে আসে। বোরকা পরিহিত মেয়েটি বাসার দারোয়ান খালেকের কাছে কাজের সন্ধান করলে সে আমাদের বাসায় পাঠিয়ে দেয়। এরপর আমার স্ত্রী মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে কাজে রেখে দেয়।
পরে স্ত্রীর মুখে শুনেছি, মেয়েটার নাম আয়েশা। বয়স আনুমানিক ২০ বছর। তার গ্রামের বাড়ি রংপুর। জেনেভা ক্যাম্পে চাচা-চাচির সঙ্গে থাকে। বাবা-মা আগুনে পুড়ে মারা গেছে। তার শরীরেও আগুনে পোড়ার ক্ষত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মেয়েটা কাজ শুরুর পর প্রথম দুদিন সময়মতো এসেছে। গতকাল সে সাড়ে ৯টার দিকে আসে। আজ কী হয়েছে, এটা তো আর বলার অবস্থায় নেই।
এদিকে ঘটনাস্থল ফ্ল্যাটটিতে গিয়ে দেখা যায়, ফ্ল্যাটের প্রবেশমুখ থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে রক্তের দাগ। বাসার আলমারিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তছনছ করা।
পুলিশের আরেকটি সূত্র জানায়, মাকে হত্যার পর ওই মেয়েটি দৌড়ে রক্তাক্ত অবস্থায় হয়তো ইন্টারকমে সিকিউরিটি গার্ডকে ফোন দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে ইন্টারকমের লাইনটি খোলা পাওয়া যায়। মেয়েটি খুব সুন্দরভাবে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করে বাথরুমে গিয়ে গোসল করে শরীরের রক্ত পরিষ্কার করে নাফিসার স্কুলের ড্রেস পরে নির্দ্বিধায় গেট দিয়ে বেরিয়ে যায়।
তল্লাশি করে বাথরুমে একটি সুইচ গিয়ার ও একটি ধারাল অস্ত্র পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ছুরি দুটি দিয়ে মা-মেয়েকে হত্যা করেছে গৃহকর্মী আয়েশা। এ ঘটনায় ওই বাসার দারোয়ান মালেককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান জানান, পুলিশ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খবর পায়। মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানে নেওয়ার পর মারা যায়। পরে লাশ দুটি সুরতহালের পর ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
তিনি বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে কিছু তথ্য পেয়েছি, সেসব যাচাই-বাছাই চলছে।
গৃহকর্মীর প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি, হত্যার আগে-পরে তার উপস্থিতি ও অ্যাকটিভিটিজ বিশ্লেষণ করে পরবর্তী তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাব।
বাসার ভেতরের অবস্থার বিষয়ে পুলিশ বলছে, বাসায় ধস্তাধস্তির আলামত রয়েছে, মেঝেতে এবং দেওয়ালে রক্তের দাগ রয়েছে। আলমারি ও ভ্যানিটি ব্যাগ তছনছ অবস্থায় রয়েছে। যা মনে করছি, প্রাথমিকভাবে কিছু খোয়া যেতে পারে। সিসি ক্যামেরা ফুটেজে আমরা একজনকেই দেখেছি, পরে দেখব আশপাশে আরও কেউ ছিল কি না?
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুটি ধারাল ছুরি উদ্ধার করেছে এবং হত্যাকারী ফ্রেশ হয়েছে বাথরুমে— এমন আলামত পাওয়া গেছে।
রাজধানীর গুলশানের টিএন্ডটি মাঠে কড়াইল অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ আনসার―ভিডিপির মানবিক সহায়তা কেন্দ্র আজ নয় দিনের সফল সেবা কার্যক্রম সমাপ্ত করেছে। এই সময়ে জরুরি খাদ্য, শীতবস্ত্র ও ধারাবাহিক রান্না করা খাবার বিতরণ কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে।
এছাড়া রবিবার (৭ ডিসেম্বর) মানবিক সেবা কেন্দ্রের শেষ দিনে কড়াইল অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ১,২০০ জন শিশুর মাঝে প্যাকেট গুঁড়া দুধ বিতরণ করা হয়।
আনসার―ভিডিপির ৯ দিনের মানবিক সেবা কার্যক্রম সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ।
জরুরি শিশু খাদ্য বিতরণ কার্যক্রমে অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন,“অগ্নিকাণ্ডের মতো বিপর্যয়ের পর মানুষের মানসিক ও বাস্তবিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কষ্ট লাঘবের প্রয়াসে আমরা আন্তরিক ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও যেকোনো মানবিক দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে থাকার অঙ্গীকার করছি।”
গত ২৫ নভেম্বর কড়াইল বস্তির ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সহস্রাধিক মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে চরম দুরবস্থায় পড়ে। বাসস্থানহীনতা, শিশু খাদ্য, শীতবস্ত্র ও খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিলে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ‘মানুষ মানুষের জন্য’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২৮ নভেম্বর বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ-এর নির্দেশনায় মানবিক সহায়তা কেন্দ্র চালু করে।
শীতের তীব্রতা বেড়ে গেলে বাহিনী ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৫০০ কম্বল ও ৪০০ জনকে অতিরিক্ত শীতবস্ত্র প্রদান করে। পাশাপাশি নয় দিন ধরে প্রতিদিন দুপুর ও রাতে ২,০০০ জন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে তারা অন্তত প্রাথমিক খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।
কড়াইলের সংকটাপন্ন জনপদে বাংলাদেশ আনসার-ভিডিপির এই সুসমন্বিত, নিবেদিত ও মানবিক সহায়তা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য এক শক্তিশালী ভরসা হয়ে ওঠে—যা তাদের পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে মনোবল, সাহস ও প্রয়োজনীয় সমর্থন প্রদান করেছে।
এছাড়াও বাহিনীর পক্ষ হতে বস্তিবাসীর ক্ষতিগ্রস্ত সুপেয় পানি সরবরাহ ব্যবস্হার বিকল্প পানি সাপ্লাই পয়েন্ট (Water Supply Point) স্হাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে, যা সাধারন বস্তিবাসীদের চিরস্থায়ী পানি সংরক্ষণ ও সরবরাহ নিশ্চিত করবে।
সমাপনী বক্তব্যে এডিজি মহোদয় ঢাকা মহানগর আনসারের পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান গনী, ঢাকা জোনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, ঢাকা মহানগর অঙ্গীভূত আনসার, নগর প্রতিরক্ষা দল (টিডিপি) এবং আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যদের এ ধরনের সেবামুলক কার্যক্রমে নিবেদিত দায়িত্ব পালনের জন্য সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কসাইবাড়ি থেকে কাঁচকুড়া বাজার পর্যন্ত উন্নয়ন করা সড়কটির নামকরণ করেছে প্রখ্যাত আলেম ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় ইসলামি ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর-এর নামে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) কসাইবাড়ি রেলগেট এলাকায় নব নামকৃত ‘হাফেজ্জী হুজুর সরণি’ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে আলেম-ওলামাদের দীর্ঘদিনের যে ভূমিকা, হাফেজ্জী হুজুর ছিলেন তার অগ্রদূত। একসময় আলেম-ওলামারা শুধু দ্বীনি শিক্ষা প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও তিনি ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলেম সমাজকে যুক্ত করেছেন।
প্রশাসক আরও বলেন, হাফেজ্জী হুজুর কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যক্তি ছিলেন না, দেশের সব আলেম-ওলামার কাছেই তিনি সর্বজন শ্রদ্ধেয়। তার অবদান স্মরণ করেই সড়কটি তার নামে নামকরণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রশাসক জানান, আজমপুর থেকে কলোনি পর্যন্ত উত্তর-দক্ষিণমুখী প্রধান সড়কটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফের নামে নামকরণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
স্ক্রিনারের সচেতনতা, দায়িত্বশীলতা এবং নিখুঁত স্ক্রিনিংয়ের কারণে চোরাচালানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিমানবন্দরের এক যাত্রীর লাগেজ থেকে ৯৩ হাজার ৯০ ইউরো উদ্ধার করেছে এভিয়েশন সিকিউরিটি (এভসেক)। রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকালে এগুলো উদ্ধার করা হয়। এ সাফল্য বিমানবন্দরের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
এভিয়েশন সিকিউরিটি (এভসেক) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা এবং যাত্রীসেবায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ এবং আনসার বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত এভসেক বিভাগ নিরবচ্ছিন্নভাবে সেবা দিয়ে আসছে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মাদ কাউছার মাহমুদ জানান, সকালে ‘ড’ চেক-ইন রো–তে নিরাপত্তা তল্লাশির সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের রোমগামী ফ্লাইট (বিজি–৩৫৫) এর এক বর্হিগামী যাত্রীর লাগেজে লুকানো অবস্থায় ৯৩ হাজার ৯০ ইউরো শনাক্ত করেন কর্তব্যরত এভসেক সদস্যরা। ঘোষণা ছাড়া এতো ইউরো বহন করায় বিষয়টি কাস্টমস বিভাগকে অবগত করে এভসেক। পরে ওই যাত্রীকে আটক করা হয়। উদ্ধার ইউরো বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন ইনভেস্টমেন্টের প্রলোভন দেখিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারকচক্র। পরে অভিযোগ পেয়ে চক্রের সক্রিয় সদস্য নাদিমকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীতে তার নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে গতকাল শুক্রবার বিকালে জানিয়েছে সিআইডি।
সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান বলেন, একটি বেসরকারি ব্যাংকের একজন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসারের হোয়াটসঅ্যাপে অজ্ঞাত নম্বর থেকে একটি বার্তা আসে। বার্তা প্রেরণকারী নিজেকে নাজনীন নামে পরিচয় দিয়ে বলেন, তিনি ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম আপ-ওয়ার্কের প্রতিনিধি। বাসায় বসে পার্ট-টাইম কাজের মাধ্যমে আয় করার প্রলোভন দেখালে ভুক্তভোগী সরল বিশ্বাসে প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন।
প্রথমে ইউটিউব সাবস্ক্রিপশনসহ কয়েকটি ছোট অনলাইন টাস্ক করিয়ে ভুক্তভোগীর মোবাইল আর্থিকসেবার (বিকাশ) মাধ্যমে সামান্য অর্থ ১৫০ টাকা, পরে ২ হাজার ১০০ টাকা প্রদান করে আস্থা তৈরির চেষ্টা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এরপর তাকে @upworkfrontdesk2013 নামে একটি টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত করা হয়, যেখানে ভুয়া সদস্যরা অভিনয় করছিলেন যে, তারা নিয়মিত কাজ করে বড় অঙ্কের অর্থ উপার্জন করছেন।
ভুক্তভোগীর বিশ্বাস আরও বৃদ্ধি পায়। পরবর্তী ধাপে বড় টাস্কের কথা বলে প্রতারকরা ক্রিপট অ্যাকাউন্ট খুলতে ২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে বলে। এরপর জানানো হয়, আরও ৩ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলে তার ব্যালেন্স ৭ হাজার টাকা জমা হবে এবং তিনি অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন। ভুক্তভোগী টাকা পাঠানোর পর তাকে ভিআইপি টাস্ক গ্রুপে যুক্ত করা হয়। গ্রুপে দেখানো হয় যে— সবার ক্রিপট অ্যাকাউন্টে ৭ হাজার টাকা জমা রয়েছে।
জসীম উদ্দিন আরও বলেন, ভুক্তভোগী এই টাকা উত্তোলন করতে চাইলে তাকে জানানো হয়, ক্যাশ আউটের জন্য আরও ১৫ হাজার ৮০০ টাকা দিতে হবে। সরল বিশ্বাসে তিনি এই টাকা দেন। তবে ব্যালেন্সে অসঙ্গতি দেখা দিলে তিনি বিষয়টি জানতে চাইলে নতুন টাস্ক ও নতুন শর্ত আরোপ করা হয়। এভাবে একের পর এক টাস্ক, বড় লাভের লোভ এবং ভুয়া হিসাব দেখিয়ে প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে মোট ১ কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৩০৫ টাকা হাতিয়ে নেয়।
পরে ভুক্তভোগী গত মে মাসে ডিএমপি লালবাগ থানায় একটি মামলা করলে এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। এরপর বৃস্পতিবার নাদিমকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এ সময় তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন, এনআইডিসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করা হয়েছে।