ভরা শীতে বাজার ভরে গেছে মৌসুমি টাটকা শাক-সবজিতে। বছরজুড়ে চড়া দামে বিক্রি হওয়া এসব শাক-সবজি এখন সহনীয় দামে। কোন কোন সবজির দাম আরও কম। ফলে ক্রেতাদের মনে এখন সবজি নিয়ে স্বস্তি। কয়েক মাস ধরে অস্বস্তি ছড়ানো আলুর দামও বেশ কমেছে। চল্লিশ টাকায় নেমেছে নতুন আলুর কেজি। সামনের সপ্তাহে দাম কমতে পারে আরেকটু এমন আভাস দিচ্ছেন বিক্রেতারাই।
তবে চরম উদ্বেগ ও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চাল ও তেল। মাত্রই আমন ধানে কৃষকের গোলা ভরে গেলেও বাজারে এর প্রতিফলন নেই। প্রতিদিন নানা অজুহাতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম। কখনো সে অজুহাত ট্রাকে পণ্য পরিবহনের খরচের, কখনো আবার ঢাকা বা টঙ্গীতে ইজতেমা মাঠে আন্দোলন কিংবা অন্য আন্দোলনের মুখরোচক গল্পের। স্বয়ং বাণিজ্য উপদেষ্টা বলছেন, সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানো ছাড়া আর কোন কারণই নেই এর মধ্যে।
এদিকে, গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে ভোজ্য তেলের দাম বাড়ানোর পর এখন আবার পাঁয়তারা চলছে নতুন সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানোর। এবার ভোজ্য তেল আমদানিকারক ও উৎপাদকদের সিন্ডিকেট দাবি তুরেছে বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত ভোজ্য তেলের সঙ্গে দাম সমন্বয় করে নতুন মূর্য নির্ধারণের। অথচ বিশ্ব বাজারে দাম কমে গেলে তারা বিষয়টি এড়িয়েই যায় বরাবর। খোজ্য তেরের দাম তখন কমে না। এত অস্বস্তির মধ্যে উচ্চদামে স্থিতিশীল রয়েছে সব ধরনের মাংসের দাম; এতে ক্রেতাদের মধ্যে সন্তুষ্টি লক্ষ্য করা যায়নি।
শুক্রবার রাজধানীর মগবাজার, মালিবাগ, মৌচাক, মিরপুর ও কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন সবজির সরবরাহ অনেক বেড়েছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি ও টমেটোর দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকা করে। বাকি সবজিগুলোও বিক্রি হচ্ছে বেশ সহনীয় দামে।
প্রতি কেজি গোল ও লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা দরে। প্রতি কেজি মুলা ১০-২০টাকা, পেঁপে ও শালগম ২০-৩০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ও বাধাকপি ১০-২০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৩০-৫০ টাকা ও কলার হালি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ৬০-৮০ টাকা, শিম ৩০-৫০ টাকা, শসা ও ক্ষিরা ৩০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
করলা, পটল, ঝিঙা ও ধুন্দলের দাম কিছুটা বেশি; প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। এছাড়া চিচিঙ্গা ৫০-৬০ টাকা, গাজর ৪০-৬০ টাকা ও টমেটো ৪০- ৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। সেইসঙ্গে লালশাক, পালং শাক, কলমি শাক ও কুমড়া শাকসহ বিভিন্ন শাকের আঁটি মিলছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। গত সপ্তাহে যে আলু ৫৫-৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। ঝাঁজ কমেছে পেঁয়াজের বাজারেও। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ এখন ৫০-৫৫ টাকা এবং ইন্ডিয়ান নতুন পেঁয়াজ ৫৫-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে, রসুন এবং আদা এখনো কিনতে হচ্ছে চড়া দাম দিয়েই।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর মালিবাগ বাজারে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী খসরু নোমান। তিনি বলেন, বর্তমান বাজারে অন্যান্য জিনিসের তুলনায় সবজি কিনে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ হচ্ছে। কারণ বর্তমানে সবজির দাম কম যাচ্ছে। কিছুদিন আগেও বাজারে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছিল, সেই তুলনায় এখন সবজির দাম কম। আমরা চাই সবজির এমন দামের মতো বাজারে অন্যান্য পণ্য সাধারণ ক্রেতাদের এমন ক্ষমতার মধ্যে আসুক। তবে কয়েক বছর আগে শীতের সময় অর্থাৎ সবজির ফুল মৌসুমে সব ধরনের সবজির দাম আরো অনেক কম থাকতো, সে হিসেব করলে সবজির দাম আর আগের মত নেই। তবে কিছুদিন আগে সবজির চড়া দামের তুলনায় বর্তমানে সবজির বাজার কম যাচ্ছে।
রাজধানীর মগবাজার এলাকার সবজি বিক্রেতা জয়নাল হক বলেন, বাজারে একেবারে কমে গেছে সবজির দাম, ক্রেতারা ব্যাগ ভরে সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছে। তবে দু একটি সবজির বর্তমানে মৌসুম না হয়, সেগুলোর দাম একটু বেশি। বাকি সব সবজির দাম অনেক কমে গেছে বাজারে। এছাড়াও বাজারে টাটকা সবজির সরবরাহও অনেক বেশি, যে কারণে দাম কম যাচ্ছে। পুরো শীতকালীন সময়ে সবজির দাম এমন কম যাবে। সামনে আরো কমতে পারে সবজির দাম।
সবজির দাম বিষয় কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর পরিমাণে সবজি ঢাকায় আসছে প্রতিদিন। সব সবজি নতুন এবং টাটকা, আগের তুলনায় বাজারে প্রচুর পরিমাণে সবজির সরবরাহ হচ্ছে। যে কারণে বাজারে সবজির দাম কমে গেছে। কমপক্ষে আরো দেড় মাস সবজির দাম এমন কম থাকবে। এরপর থেকে কিছুটা বাড়তে শুরু করবে। রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে সবজির দাম বর্তমানে যা যাচ্ছে, এর চেয়েও আরো অনেক কম দাম কারওয়ানবাজারে। যেকোনো ক্রেতা অন্যান্য বাজারের চেয়ে কারওয়ানবাজার থেকে আরো অনেক কম দামে সবজি কিনতে পারবে।
ভরা মৌসুমে ভেলকি দেখাচ্ছে চালের বাজারও। প্রতি কেজি নাজিরশাইল ৮০-৯০ টাকা, মান ভেদে মিনিকেট ৮৫-৯০ টাকা, বিআর- ২৮ চাল ৬০- ৬৫ টাকায়, মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা) ৫৫- ৫৮ টাকা, পুরোনো আটাশ ৬৫ টাকা, পাইজাম ৬০ টাকা, কাটারিভোগ ৮৫ টাকা, বাসমতি ৯৪- ৯৮ টাকা, পোলাওর চাল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ও আমন ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
চালের দামের এই ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ভোক্তারা। তাদের প্রশ্ন, ৭০ টাকার নিচে ভালো কোনো চাল নেই। প্রতি কেজি নাজিরশাইল ৮০-৯০ টাকা, মান ভেদে মিনিকেট ৮৫-৯০ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৬০-৬৫ টাকায়, মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা) ৫৫-৫৮ টাকা, পুরোনো আটাশ ৬৫ টাকা, পাইজাম ৬০ টাকা, কাটারিভোগ ৮৫ টাকা, বাসমতি ৯৪- ৯৮ টাকা, পোলাওর চাল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ও আমন ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ বি আর ২৮ চালের কেজিও এখন ৬০ টাকার ওপরে। ভরা মৌসুমে চালের এতো দাম হলে, সামনের রোজায় কী হবে? অভিযোগ করে অনেকে বলেন, বাজার মনিটরিং না থাকার কারণেই যাচ্ছেতাইভাবে দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে গণঅভ্যুত্থানে সাবেক সরকারের পতনের পর দুবার বাণিজ্য উপদেষ্টার পদে পরিবর্তন এলেও বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা একেবারে যাচ্ছে তাই। আগস্টের শেষের দিক থেকে সেপ্টেম্বরে ছাত্রদের মনিটরিং কাজে জুড়ে দিয়েও কোন সুফল আসেনি। অন্তর্বর্তী সরকার বাজার ব্যবস্থাপনায় পুরোপুরি ব্যর্থ ক্ষোভের সঙ্গে এমন মন্তব্যও এখন করছেন সাধারণ ক্রেতারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি ও গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা দরে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশি মুরগি ৬৫০-৭০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৫০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৭৮০ টাকা দরে। মাংসের দাম অবশ্য গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের তুলনায় বেশ বাড়তি। তখন সাড়ে ৬শ টাকাতেই মিলত গরুর মাংস। এছাড়া কলিজা, হাড় ছাড়া মাংস আলাদা আলাদা দরে বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস প্রতি কেজি ১০৫০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া মাছের বাজারেও নেই কোনো সুসংবাদ। আকারভেদে প্রতি কেজি পাবদা মাছ ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, ছোট রুই ২৫০-৩০০ টাকা, ৪ থেকে ৫ কেজি ওজনের রুই ৪০০-৪৫০ টাকা, টেংরা ৬৫০ টাকা, চাষের শিং ৪৫০ টাকা ও পাঙাশ আকারভেদে ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে।
সম্প্রতি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সহায়তায় রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত আরামবাগ সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনে (এসটিএস) সফলভাবে উদ্ভাবনী বর্জ্য সংকোচন ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা জে-ড্রাম স্থাপন করেছে জাপান ক্লিন সিস্টেম কো., লিমিটেড (জেসিএস)। নতুন এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে। এ উদ্যোগ দেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দক্ষতা ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এবং প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এবিএম শামসুল আলম। অন্যদিকে, জেসিএস -এর পক্ষ থেকে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মাসাতাকা ইয়ামানো। জাইকা বাংলাদেশ অফিসের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি মিস ইজুমি শোজিও এ সময় উপস্থিত ছিলেন ।
এসটিএস -এ বিদ্যমান গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, যেমন: অদক্ষ প্রচলিত উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, কমপ্যাক্টর ট্রাকের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা এবং দুর্গন্ধ ও তরল বর্জ্য নিঃসরণের মতো পরিবেশগত সমস্যা সমাধানে কাজ করে জে-ড্রাম সিস্টেম। এছাড়াও, স্বয়ংক্রিয়ভাবে বর্জ্য বোঝাই এবং খালাস করার মাধ্যমে জে-ড্রাম পরিচালন দক্ষতা বৃদ্ধি করবে, শারিরীক শ্রমের পরিমাণ কমিয়ে আনবে এবং এসটিএস -এ ভূমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করবে।
এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল যে জায়গায় এটি স্থাপন করা হয়, এটি সে স্থানের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করে এবং এর স্বয়ংক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীদের দক্ষতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
অন্যদিকে, এর অত্যাধুনিক এবং স্বাস্থ্যসম্মত সংরক্ষণ ব্যবস্থা দুর্গন্ধ, শব্দ ও পানি ফুটো হয়ে নিঃসরণ হওয়া প্রতিরোধ করে। স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি হওয়ায় এ ব্যবস্থা টেকসই। জাপান ক্লিন সিস্টেম কো., লিমিটেডের বিশ্বব্যাপী ১,৬০০টিরও বেশি ইউনিট স্থাপনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। জাপানে প্রতিষ্ঠানটির বাজার হিস্যা ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ।
এই স্থাপনাটি ‘এসডিজি বিজনেস ভেরিফিকেশন সার্ভে’ -এর আওতাধীন প্রকল্পের অংশ। এর লক্ষ্য হল বাংলাদেশে দক্ষ ও স্বাস্থ্যসম্মত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার প্রসার এবং পাশাপাশি, খরচ কমানো ও সহজলভ্যতা বাড়ানোর জন্য স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের সম্ভাবনা উন্মোচনে ভূমিকা রাখা।
প্রত্যাশা করা হচ্ছে, এই নতুন ব্যবস্থাপনাটি এসটিএস কর্মীদের কাজের পরিবেশে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে। এতে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও এর পরিবহন খরচ কমবে। তাছাড়া, এসটিএস ও ব্যক্তি মালিকানাধীন স্থাপনার আশেপাশের পরিবেশগত স্বাস্থ্যবিধির উন্নতি হবে, যা বাংলাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার এলাকার আলোচিত কিশোর গ্যাং চাঁন-মানিক গ্রুপের প্রধান চাঁন মিয়া ওরফে রাতুলকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে দুটি হত্যাসহ ছিনতাই ও মাদক আইনে মোট ২২টি মামলা রয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রায়েরবাজারের পাবনা হাউস গলির পাভেলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে চাঁন মিয়া ও তার চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত চাপাতি ও ছুরি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার অন্যরা হলো— লিমন, মো. রমিজ, মো. খাইরুল ইসলাম ও মো. বাবু। তারা এই গ্যাংয়ের সদস্য ও পেশাদার ছিনতাইকারী।
মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার ও বুদ্ধিজীবী কবরস্থানকেন্দ্রিক আলোচিত কিশোর গ্যাং চাঁন-মানিক গ্রুপের প্রধান চাঁন মিয়া ওরফে রাতুলকে চার সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে এই গ্রুপের আরেক প্রধান মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বর্তমানে সে কারাগারে রয়েছে। তার বিরুদ্ধেও হত্যা, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে অন্তত ১৫ থেকে ২০টি মামলা রয়েছে।’
এসি মামুন আরও বলেন, ‘এই গ্যাংটিতে উঠতি বয়সের অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য রয়েছে। তারা রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন অলিগলিতে অস্ত্রহাতে ওৎ পেতে থাকে। সুযোগ পেলেই নিরীহ পথচারীদের ওপর হামলা করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। এই গ্যাংটি রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী, মিনা হাউসিং গলি, পাবনা হাউস গলিসহ আশপাশের এলাকায় সক্রিয়।’
অভিযানে অংশ নেওয়া রায়েরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজমুল আলম শেখ বলেন, ‘চাঁন-মানিক গ্রুপের কার্যক্রমে আতঙ্কিত ছিল এলাকার মানুষ। তাদের বিরুদ্ধে কুপিয়ে পথচারীদের মোবাইল ও টাকা-পয়সা ছিনতাইয়ের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আমরা এই চক্রের সব সদস্যকে আইনের আওতায় আনতে কাজ করছিলাম। এরই ধারাবাহিকতায় চাঁনসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।’
রাজধানীর পুরান ঢাকার একটি বহুতল ভবনে আগুন লেগেছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে আরমানিটোলার হাজী টাওয়ারে এই আগুনের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৯ ইউনিটের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে বাবুবাজারের আরমানীটোলার হাজী টাওয়ারে ১৪ তলা ভবনের ৬ তালায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে সদরঘাট ফায়ার স্টেশনে দুটি ইউনিট ৬টা ৪৫ মিনিটে পৌঁছায়। পরে সিদ্দিকবাজারের পাঁচটি, সূত্রাপুরের দুটিসহ মোট ৯টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। ৭টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার ইসলামবাগ চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় একটি প্লাস্টিকের গোডাউনে ভয়াবহ আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১১ ইউনিটের চেষ্টায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে কারখানাটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠান উপলক্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ব্যবহৃত সকল প্রকার নির্বাচনি প্রচারণা সামগ্রী অপসারণ করেছে ডিএসসিসি। ২ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে ডিএসসিসি আওতাধীন এলাকায় অনুমতিবিহীন সকল ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার, বিজ্ঞাপন, সাইনবোর্ড ও নির্বাচনি প্রচারপত্র ইত্যাদি স্ব উদ্যোগে অপসারনের জন্য সংশ্লিষ্ট সংগঠন/ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে ৮ ডিসেম্বর হতে সকল ওয়ার্ডের অনুমতিবিহীন সকল বিজ্ঞাপন ও নির্বাচনি প্রচারণা সামগ্রী অপসারণ শুরু হয়।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ রাসেল রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়ন আদেশের ওপর গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল ঘোষণার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সকল প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা সামগ্রী অপসারণের নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসসিসি সফলভাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রায় সকল প্রকার নির্বাচনি প্রচারণা সমাগ্রী অপসারণে সফল হয়। উপর্যুক্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
শহরের পরিবেশ ও সৌন্দর্য রক্ষায় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫ প্রতিপালনে ডিএসসিসি সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানাচ্ছে।
তবে, ডিএসসিসি এলাকায় পুনরায় কেউ অননুমোদিত কোনো নির্বাচনি সামগ্রী স্থাপন করলে অথবা বিদ্যমান নির্বাচনি সামগ্রী সম্পর্কিত তথ্য জানাতে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০২২২৩৩৮৬০১৪ নম্বরে জানানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে।
রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুল এলাকায় একটি ফার্নিচার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে মুন্সিবাড়ি এলাকায় এই আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের প্রায় দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তরের স্টেশন অফিসার শাহজাহান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আগুনের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। মোট ৮টি ইউনিট টানা চেষ্টা চালিয়ে রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
স্বস্তির খবর হলো, এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে বা এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা। তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত জানা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য প্রদপ্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ ঘটনার পর থেকেই ঢাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এ অবস্থায় যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে ঢাকার বিভিন্ন সড়কে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার ও শাহবাগ এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফার্মগেট এলাকায় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার, কারওয়ান বাজারে দৈনিক প্রথম আলো এবং ধানমন্ডি এলাকায় ছায়ানট ভবনে বৃহস্পতিবার রাতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নগরীজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে ধানমন্ডি এলাকায় অবস্থিত ছায়ানট ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান দেখা গেলেও ধানমন্ডি ৩২ নম্বর কিংবা শাহবাগ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ছিলো তুলনামূলক কম।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের প্রস্তুতি রয়েছে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর একদল বিক্ষোভকারী বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এসময় প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেক সংবাদকর্মী অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
হামলাকারীদের থামাতে রাতে ডেইলি স্টার ভবনের সামনে গিয়ে একদল ব্যক্তির হাতে নাজেহাল হন নিউ এইজ সম্পাদক ও সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভাপতি নূরুল কবীর। এসময় তাকে ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ বলে স্লোগান দেওয়া হয়।
একই রাতে ধানমন্ডিতে ছায়ানট ভবনে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর চালায় একদল উত্তেজিত জনতা। হামলা আর ভাঙচুরে লন্ডভন্ড হয়ে যায় বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানটি।
জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত ১২ নভেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন ওসমান হাদি। দেশে চিকিৎসার পর গত সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে খবর আসে, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
মিরপুরের বহুল প্রতীক্ষিত ৬০ ফিট সংযোগ সড়ক নির্মাণের পর সর্বসাধারণের যান চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে এ উপলক্ষে এক উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিএনসিসি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ‘এই শহরের গত ১৫, ২০ কিংবা ৩০ বছরের যে পেন্ডিং কাজগুলো রয়েছে, সেগুলো আমরা একে একে সমাধান করার চেষ্টা করছি। ৬০ ফিট সংযোগ সড়কের কাজটি দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ঝুলে ছিল। সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয় করে মাত্র ২ মাসেই আমরা নগরবাসীর জন্য রাস্তাটা খুলে দিতে পেরেছি।’
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘এই রাস্তাটির একটি প্রতীকী তাৎপর্য রয়েছে। তা হলো- সরকারের সব সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান যদি এক জায়গায় এসে কাজ করে, তাহলে এই নগরকে এখনো বাসযোগ্য করে তোলা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নগরবাসীকে দৈনন্দিন হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে হবে। তাহলেই সবার জন্য একটি ন্যায্য নগর গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
ডিএনসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাজধানীর মিরপুরবাসীর দীর্ঘদিনের যানজট ও জনদুর্ভোগ লাঘবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ৬০ ফিট সড়ককে সরাসরি মিরপুরের প্রধান সড়কের সঙ্গে যুক্ত করার লক্ষ্যে নতুন সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ লক্ষ্যে ডিএনসিসির ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগের নামে সিটি জরিপে রেকর্ড করা ৮০৮০০ ও ৪০৪৫৬ দাগের জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হয় এবং ডাকবিভাগের জমি অধিগ্রহণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ডাক বিভাগের মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীন, ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দীন, অঞ্চল-৪-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দীন প্রমুখ।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গোতে অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি (AVSEC) ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ পণ্য জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বিমানবন্দর গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৪ ডিসেম্বর দুবাই থেকে আগত Solit Air-এর কার্গো বিমানে আমদানিকৃত দুইটি শিপমেন্ট পরীক্ষা করে ২ হাজার ৮৭৮ কেজি নিষিদ্ধ ক্রিম, বিভিন্ন প্রকার গার্মেন্টস পণ্য ও ইলেকট্রনিক্স অ্যাক্সেসরিজ উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ২ কোটি ৮৪ লাখ ৯২ হাজার ২০০ টাকা।
জব্দকৃত পণ্যের বিরুদ্ধে কাস্টমস কর্তৃক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
মেট্রোরেলের কর্মীদের সর্বাত্মক কর্মবিরতির কারণে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী উত্তরা থেকে বিকাল ৩টা ও মতিঝিল থেকে ৩টা ২০ মিনিটে ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও কোনো ট্রেনই স্টেশন ছাড়েনি। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
এর আগে স্বতন্ত্র চাকরি বিধিমালা প্রণয়নে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের প্রতিবাদে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাতটা থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানটির নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশ। এ কারণে মেট্রোরেলের যাত্রীসেবায় বিঘ্ন ঘটার শঙ্কা দেখা দেয়।
যদিও বৃহষ্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানায়, শুক্রবার মেট্রোরেল নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এ ঘোষণা মানেননি আন্দোলনকারীরা।
ডিএমটিসিএলের জনসংযোগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পর আন্দোলনকারীদের দাবি পূরণ হওয়ার পথে। কিছু প্রক্রিয়াগত বিষয় আছে। এরপরও যাত্রীসেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন সরকার সব কিছু বিবেচনা করে দেখছে।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকালে সপরিবারে অনেকেই ঘুরতে বের হন, কিন্তু মেট্রোরেল বন্ধ থাকার কারণে আজ তাদের ঘুরতে যাওয়া হচ্ছে না। এমনই একজন কাজীপাড়ার ওবায়েদ ইসলাম। তিনি সপরিবারে রমনা পার্কে যাওয়ার জন্য মেট্রো স্টেশনে এসে দেখেন মেট্রোর গেট তালাবদ্ধ। তা দেখেই ফিরে যান তিনি। চারটার দিকে শেওড়াপাড়া স্টেশনে গিয়েও সিঁড়িতে ওঠার কলাপসিবল গেট তালা লাগানো দেখা যায়।
এদিকে স্টেশনে ওঠার অপেক্ষায় অসংখ্য মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কড়াইল বস্তিবাসীর জন্য নিরাপদ পানির চরম সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি জরুরি মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে দুটি বিশুদ্ধ পানির ট্যাংক স্থাপন ও উদ্বোধন করেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিক প্রয়োজন ও জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বিবেচনায় নেওয়া এই উদ্যোগ দুর্যোগ-উত্তর পরিস্থিতিতে স্থানীয়দের জন্য দ্রুত স্বস্তি, নিরাপত্তা ও আশার বার্তা নিয়ে এসেছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় কড়াইল বস্তির অগ্নিকাণ্ডে আক্রান্ত এলাকায় ঢাকা মহানগর আনসার পরিচালক মোঃ আসাদুজ্জামান গণি আনুষ্ঠানিকভাবে ট্যাংক দুটির উদ্বোধন করেন। প্রতিদিন ট্যাংকগুলোতে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে, যা অগ্নিদুর্গত মানুষের খাদ্য, আশ্রয় ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদান করবে।
উল্লেখ্য, অগ্নিকাণ্ডের পর নয় দিনব্যাপী দুই হাজার মানুষকে দু’বার করে রান্না করা খাবার, ৯০০ কম্বল এবং জরুরি সহায়তা হিসেবে ১,২০০ প্যাকেট শিশুখাদ্য (গুঁড়া দুধ) বিতরণ করেছে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন—“দুর্যোগের মুহূর্তে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের অঙ্গীকার। কড়াইলের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ যেন নিরাপদ পানি পায়, সেই নিশ্চয়তা দিতেই মহাপরিচালক মহোদয়ের নির্দেশনায় এই ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী অতীতের মতো ভবিষ্যতেও যেকোনো সংকটে জনগণের পাশে থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।”
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীরা এই মানবিক উদ্যোগকে গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, দুর্ঘটনার পরপরই বিশুদ্ধ পানির সংকট ছিল সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা; নতুন ট্যাংক স্থাপনের ফলে দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনযাত্রা দ্রুত পুনরুদ্ধারে সহায়তা মিলবে। এই জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ কড়াইল এলাকার পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনের চলমান প্রচেষ্টাকে আরও ত্বরান্বিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর আনসারের জোন কমান্ডারগণসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, অঙ্গীভূত আনসার, আনসার ব্যাটালিয়ন এবং টিডিপি সদস্য-সদস্যাগণ।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি বাসায় গৃহিনী মালাইলা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যার পর বাথরুমে গোসল করে গৃহকর্মী আয়েশা (২৩)। এরপর মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসার ড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) শাহজাহান রোডের ৩২/২/এ বাসার সপ্তম তলার ৭/বি ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, মাত্র চার দিন আগে বাসার দারোয়ান মালেকের মাধ্যমে ওই মেয়েকে আনা হয়। পরে গৃহকর্মী হিসেবে নিহত মালাইলা আফরোজের বাসায় কাজ দেওয়া হয়। তখন নিজের নাম আয়েশা বলে পরিচয় দেয়। পরে মা-মেয়েকে হত্যার পর নিহত নাফিসার স্কুল ড্রেস পরে বের হয়ে যায় সেই মেয়ে।
ভবনের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিহত মালাইলা আফরোজ (৪৮) গৃহিণী। মেয়ে নাফিসা বিনতে আজিজ মোহাম্মদপুরের প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। নাফিসার বাবা এম জেড আজিজুল ইসলাম পেশায় শিক্ষক। তিনি উত্তরার সানবিমস স্কুলের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক।
ভবনের একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নাফিসার বাবা স্কুলের উদ্দেশে সকাল ৭টার দিকে বের হয়ে যান। সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বোরখা পরে ওই বাসার লিফটে ওঠে সাত তলায় যায় গৃহকর্মী আয়েশা। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে কাঁধে স্কুল ব্যাগ নিয়ে ড্রেস পরে মুখে মাস্ক লাগিয়ে বের হয়ে যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নাফিসার বাবা বাসায় ফিরে স্ত্রী ও মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান।
নিহত নাফিসার বাবা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাসায় একজন কাজের মহিলা দরকার ছিল। সাধারণত গেটে অনেকে কাজের সন্ধানে আসেন। চার দিন আগে একটি মেয়ে আসে। বোরকা পরিহিত মেয়েটি বাসার দারোয়ান খালেকের কাছে কাজের সন্ধান করলে সে আমাদের বাসায় পাঠিয়ে দেয়। এরপর আমার স্ত্রী মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে কাজে রেখে দেয়।
পরে স্ত্রীর মুখে শুনেছি, মেয়েটার নাম আয়েশা। বয়স আনুমানিক ২০ বছর। তার গ্রামের বাড়ি রংপুর। জেনেভা ক্যাম্পে চাচা-চাচির সঙ্গে থাকে। বাবা-মা আগুনে পুড়ে মারা গেছে। তার শরীরেও আগুনে পোড়ার ক্ষত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মেয়েটা কাজ শুরুর পর প্রথম দুদিন সময়মতো এসেছে। গতকাল সে সাড়ে ৯টার দিকে আসে। আজ কী হয়েছে, এটা তো আর বলার অবস্থায় নেই।
এদিকে ঘটনাস্থল ফ্ল্যাটটিতে গিয়ে দেখা যায়, ফ্ল্যাটের প্রবেশমুখ থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে রক্তের দাগ। বাসার আলমারিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তছনছ করা।
পুলিশের আরেকটি সূত্র জানায়, মাকে হত্যার পর ওই মেয়েটি দৌড়ে রক্তাক্ত অবস্থায় হয়তো ইন্টারকমে সিকিউরিটি গার্ডকে ফোন দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে ইন্টারকমের লাইনটি খোলা পাওয়া যায়। মেয়েটি খুব সুন্দরভাবে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করে বাথরুমে গিয়ে গোসল করে শরীরের রক্ত পরিষ্কার করে নাফিসার স্কুলের ড্রেস পরে নির্দ্বিধায় গেট দিয়ে বেরিয়ে যায়।
তল্লাশি করে বাথরুমে একটি সুইচ গিয়ার ও একটি ধারাল অস্ত্র পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ছুরি দুটি দিয়ে মা-মেয়েকে হত্যা করেছে গৃহকর্মী আয়েশা। এ ঘটনায় ওই বাসার দারোয়ান মালেককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান জানান, পুলিশ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খবর পায়। মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানে নেওয়ার পর মারা যায়। পরে লাশ দুটি সুরতহালের পর ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
তিনি বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে কিছু তথ্য পেয়েছি, সেসব যাচাই-বাছাই চলছে।
গৃহকর্মীর প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি, হত্যার আগে-পরে তার উপস্থিতি ও অ্যাকটিভিটিজ বিশ্লেষণ করে পরবর্তী তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাব।
বাসার ভেতরের অবস্থার বিষয়ে পুলিশ বলছে, বাসায় ধস্তাধস্তির আলামত রয়েছে, মেঝেতে এবং দেওয়ালে রক্তের দাগ রয়েছে। আলমারি ও ভ্যানিটি ব্যাগ তছনছ অবস্থায় রয়েছে। যা মনে করছি, প্রাথমিকভাবে কিছু খোয়া যেতে পারে। সিসি ক্যামেরা ফুটেজে আমরা একজনকেই দেখেছি, পরে দেখব আশপাশে আরও কেউ ছিল কি না?
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুটি ধারাল ছুরি উদ্ধার করেছে এবং হত্যাকারী ফ্রেশ হয়েছে বাথরুমে— এমন আলামত পাওয়া গেছে।
রাজধানীর গুলশানের টিএন্ডটি মাঠে কড়াইল অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ আনসার―ভিডিপির মানবিক সহায়তা কেন্দ্র আজ নয় দিনের সফল সেবা কার্যক্রম সমাপ্ত করেছে। এই সময়ে জরুরি খাদ্য, শীতবস্ত্র ও ধারাবাহিক রান্না করা খাবার বিতরণ কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে।
এছাড়া রবিবার (৭ ডিসেম্বর) মানবিক সেবা কেন্দ্রের শেষ দিনে কড়াইল অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ১,২০০ জন শিশুর মাঝে প্যাকেট গুঁড়া দুধ বিতরণ করা হয়।
আনসার―ভিডিপির ৯ দিনের মানবিক সেবা কার্যক্রম সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ।
জরুরি শিশু খাদ্য বিতরণ কার্যক্রমে অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন,“অগ্নিকাণ্ডের মতো বিপর্যয়ের পর মানুষের মানসিক ও বাস্তবিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কষ্ট লাঘবের প্রয়াসে আমরা আন্তরিক ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও যেকোনো মানবিক দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে থাকার অঙ্গীকার করছি।”
গত ২৫ নভেম্বর কড়াইল বস্তির ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সহস্রাধিক মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে চরম দুরবস্থায় পড়ে। বাসস্থানহীনতা, শিশু খাদ্য, শীতবস্ত্র ও খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিলে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ‘মানুষ মানুষের জন্য’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২৮ নভেম্বর বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ-এর নির্দেশনায় মানবিক সহায়তা কেন্দ্র চালু করে।
শীতের তীব্রতা বেড়ে গেলে বাহিনী ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৫০০ কম্বল ও ৪০০ জনকে অতিরিক্ত শীতবস্ত্র প্রদান করে। পাশাপাশি নয় দিন ধরে প্রতিদিন দুপুর ও রাতে ২,০০০ জন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে তারা অন্তত প্রাথমিক খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।
কড়াইলের সংকটাপন্ন জনপদে বাংলাদেশ আনসার-ভিডিপির এই সুসমন্বিত, নিবেদিত ও মানবিক সহায়তা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য এক শক্তিশালী ভরসা হয়ে ওঠে—যা তাদের পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে মনোবল, সাহস ও প্রয়োজনীয় সমর্থন প্রদান করেছে।
এছাড়াও বাহিনীর পক্ষ হতে বস্তিবাসীর ক্ষতিগ্রস্ত সুপেয় পানি সরবরাহ ব্যবস্হার বিকল্প পানি সাপ্লাই পয়েন্ট (Water Supply Point) স্হাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে, যা সাধারন বস্তিবাসীদের চিরস্থায়ী পানি সংরক্ষণ ও সরবরাহ নিশ্চিত করবে।
সমাপনী বক্তব্যে এডিজি মহোদয় ঢাকা মহানগর আনসারের পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান গনী, ঢাকা জোনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, ঢাকা মহানগর অঙ্গীভূত আনসার, নগর প্রতিরক্ষা দল (টিডিপি) এবং আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যদের এ ধরনের সেবামুলক কার্যক্রমে নিবেদিত দায়িত্ব পালনের জন্য সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কসাইবাড়ি থেকে কাঁচকুড়া বাজার পর্যন্ত উন্নয়ন করা সড়কটির নামকরণ করেছে প্রখ্যাত আলেম ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় ইসলামি ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর-এর নামে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) কসাইবাড়ি রেলগেট এলাকায় নব নামকৃত ‘হাফেজ্জী হুজুর সরণি’ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে আলেম-ওলামাদের দীর্ঘদিনের যে ভূমিকা, হাফেজ্জী হুজুর ছিলেন তার অগ্রদূত। একসময় আলেম-ওলামারা শুধু দ্বীনি শিক্ষা প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও তিনি ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলেম সমাজকে যুক্ত করেছেন।
প্রশাসক আরও বলেন, হাফেজ্জী হুজুর কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যক্তি ছিলেন না, দেশের সব আলেম-ওলামার কাছেই তিনি সর্বজন শ্রদ্ধেয়। তার অবদান স্মরণ করেই সড়কটি তার নামে নামকরণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রশাসক জানান, আজমপুর থেকে কলোনি পর্যন্ত উত্তর-দক্ষিণমুখী প্রধান সড়কটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফের নামে নামকরণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।