রাজধানীর কদমতলী থেকে যাত্রীবেশে গাড়ি নিয়ে ছিনতাইকারী চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। গত মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে রাজধানীর কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন— মোহাম্মদ আকতার হোসেন (৪৫), হারুনুর রশিদ (৫০), কামাল হোসেন (৪৫), মোহাম্মদ নুরুদ্দিন (৪৮) ও মোহাম্মদ হানিফ (৫৫)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১১টি মোবাইল ফোন, একটি হাইয়েস গাড়ি ও একটি পাওয়ার ব্যাংকসহ ছিনতাইকারী
বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি জানান, চক্রটি গত এক বছর ধরে রাজধানীতে সক্রিয় রয়েছে। তারা হাইয়েস গাড়ি নিয়ে রাতে বেরিয়ে পড়ে এবং সাধারণ যাত্রীবেশে গাড়িতে বসে থাকে। তারা সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ি, রায়েরবাগ, সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে যাত্রী তুলে পরে সুবিধাজনক জায়গায় নিয়ে যাত্রীকে জিম্মি করে যাত্রীর মালামাল লুটে নেয়। পরবর্তীতে লুট করা অর্থ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন এবং ছিনতাই করা মোবাইলগুলো গুলিস্তানে এসে বিক্রি করে দেন। আরও জানা যায়, তাদের মাধ্যমে কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে কদমতলী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর রোববার জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপের পর লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ।
রোববার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত শাহবাগে জাদুঘরের সামনের সড়কে মহাসমাবেশ করার পর আন্দোলনকারীরা পদযাত্রা করে সচিবালয়ের দিকে রওনা হন। সেখান থেকে পদযাত্রা করে সহস্রাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির জন্য সুপারিশকৃত শিক্ষক হাইকোর্ট মাজারের সামনে যান। সেখানে সচিবালয়মুখী রাস্তায় পুলিশ বাধা দিলে তারা ওই রাস্তায় অবস্থান নেন। পুলিশ প্রথমে জলকামান থেকে পানি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। পরে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করা হয়। এরপর আন্দোলনকারীরা যে যার মতো দৌড়ে ওই এলাকা ত্যাগ করেন।
এদিকে আন্দোলনকারীরা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। ফাতেমা নামে একজন বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় অযথাই পুলিশ বাধা দিয়েছে। জলকামান ব্যবহার ও লাঠিচার্জ করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর একজন আন্দোলনকারী সাংবাদিকদের বলেন, তাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচি ছিল। পুলিশ তাতে বাধা দিয়েছে। লাঠিপেটা ও পরে জলকামান ব্যবহার করেছে। এমন একটা যৌক্তিক আন্দোলনে পুলিশ কেন জবরদস্তি করছে, এটা বুঝতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য এসেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছেড়ে যাব না।’
তিনি বলেন, প্রতিযোগিতা করে, সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরে ১১ দিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করতে হচ্ছে, পুলিশের মার খেতে হচ্ছে। এত অন্যায় হচ্ছে, এটা বলে বোঝাতে পারবেন না।
এ বিষয়ে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, আন্দোলনকারীরা সকাল থেকে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। দুপুরের পর তারা পদযাত্রা করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যাচ্ছিলেন। কিন্তু হাইকোর্ট মাজারের সামনে এসে তারা প্রেসক্লাবের দিকে না গিয়ে সচিবালয়ের দিকে রওনা দেন। তখন তাদের ব্যারিকেড দিয়ে বাঁধা দেওয়া হয়। তারা ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।
আন্দোলনকারীরা বলেন, তাদের যৌক্তিক আন্দোলনে তিন দিন পুলিশ বলপ্রয়োগ করেছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবারও তাদের ওপর জলকামান থেকে পানি নিক্ষেপ করার পাশাপাশি পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশ তাদের ওপর জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করেছিল। ওই দিন পুলিশ আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটাও করে।
তারা বলেন, টানা ১১ দিনের মতো তারা এই অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। চাকরিতে যোগদানের বিষয়ে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না।
এর আগে ১০ ফেব্রুয়ারি পুলিশের জলকামান নিক্ষেপের পর ১১ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীরা বৈঠক করেন।
সরকারের পক্ষ থেকে তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে আদালতে আপিল করা হয়। তাদের কাউকে নিয়োগ থেকে বাদ দেওয়া হবে না জানানো হলেও উচ্চ আদালতের আদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, তিন ধাপে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ হন।
নিয়োগবঞ্চিত কয়েকজন রিট করলে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। পরে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তাদের নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে রায় দেন।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত একুশে টিভির (ইটিভি) ভবনের নিচতলায় থাকা একটি রেস্টুরেন্টে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট। এরই মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
আজ শনিবার রাত ৮টার পর এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। ১১ তলা ভবনের নিচ তলার কফি হাউজে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেল জানায়, আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে নেভানোর কাজ করে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আগুনের সূত্রপাত কোথা থেকে হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
এদিকে ভবনটির ছাদে একুশে টেলিভিশন ও একই ভবনের অন্য প্রতিষ্ঠানের অন্তত ৬০-৭০ জন আটকা পড়েছেন বলে জানা গেছে।
রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জেরে ভাই ও বোন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তারা হলেন- মো. জসিম উদ্দিন (৪৪) ও তার বোন শাহিনুর বেগম (৩২)।
গতকাল শুক্রবার দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে পল্লবীর ই ব্লকে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাদের দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আহত জসিম উদ্দিন জানান, তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকেন। তার ফার্নিচারের ব্যবসা আছে। মিরপুরে তার বোন শাহিনুর বেগম থাকেন। গত এক সপ্তাহ আগে গাজীপুর থেকে বোনের বাসায় আসেন।
তিনি আরও জানান, গত পাঁচদিন আগে সোহাগ নামে এক ছিনতাইকারীকে পুলিশে ধরিয়ে দেন তিনি। তখন থেকে সোহাগের সহযোগীরা তাকে হুমকি দিতে থাকে। তিনি শবেবরাত উপলক্ষে নামাজ পড়ে রাতে বাসার ফিরছিলেন। বাসার সামনে গেলে সোহাগের বিষয় নিয়ে একই এলাকার শরিফ, তুহিন, শহিদুল, সুজন, রিয়াজের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শহিদুল জসীমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে জসিমের ডান এবং বাম পায়ের হাঁটুর ওপরে দুটি গুলি লাগে। এ সময় তার বোন শাহিনুর বেগম তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তারা শাহিনুর বেগমের ডান পায়ের হাঁটুর নিচে একটি গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে তাদের প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে।
পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, পূর্বশত্রুতার জেরে পল্লবী এলাকায় শুক্রবার দিনগত রাতে প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে জসিম উদ্দিন ও শাহিনুর বেগম গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলেও তিনি জানান।
প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা পর রাজধানীর ইসলামবাগে একটি ভবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা যায়। যদিও আগুন নির্বাপণের জন্য কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস।
আজ শনিবার বিকেল ৪টা ২৭ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দোলন।
শনিবার বিকেল ৩টা ১৭ মিনিটে আগুন লাগার সংবাদ আসে তাদের কাছে বলে ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানিয়েছে। খবর পেয়ে তাদের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ৩টা ২৫ মিনিটে। লালবাগ ফায়ার স্টেশনের ২টি, হাজারীবাগ থেকে ২টি, পলাশী থেকে ২টি, সিদ্দিকবাজার থেকে ২টি ইউনিটসহ মোট ৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। যদিও আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ করা যায়নি।
প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির খবর জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। এ ছাড়া, আগুনে হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
রাজধানীর ইসলামবাগ এলাকায় একটি ভবনে আগুন লেগেছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণে আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শনিবার বিকেল ৩টা ১৭ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের ৮টি ইউনিট পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মিডিয়া সেল পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে হঠাৎ করে ভবনের মধ্যে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। তবে, অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগুনের তীব্রতা অত্যন্ত বেশি হওয়ায় পুরো ভবন ঘিরে ফেলা হয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
তারা আরও জানান, আগুন লাগার পর আশপাশের এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণকে এ সময় নিরাপদ দূরত্বে থাকতে বলা হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসও এখনও কিছু জানতে পারেনি বলে জানান আনোয়ারুল ইসলাম।
একদিনে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৩ হাজার ১৬৪ জন যাত্রী পরিবহন করে নতুন মাইলফলক অর্জন করেছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
শুক্রবার ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে ডিএমটিসিএল এই তথ্য জানায়।
এতে আরও বলা হয়, ঢাকায় মেট্রোরেল সার্ভিস উদ্বোধনের পর বৃহস্পতিবার একদিনে সর্বোচ্চ যাত্রী পরিবহনের রেকর্ড এটি।
এই মাইলফলক অর্জনে সহযোগিতা করার যাত্রী, শুভানুধ্যায়ী এবং অংশীজনদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও ধন্যবাদ জানিয়েছে ডিএমটিসিএল।
গত তিন দিন ধরে ঢাকার বাতাসের মানে উন্নতি হয়ে চলেছে।
আজ শুক্রবার সকালেও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। অবশ্য মানে উন্নতি হলেও তা স্বাস্থ্যকর পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি।
ফাল্গুনের প্রথম দিন সকাল ১০টায় ঢাকার ঢাকার বাতাস ১৪১ একিউআই স্কোর নিয়ে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ হয়েছে।
বায়ুদূষণে ঢাকা যেখানে সবসময় বিশ্বে এক কিংবা দুই নম্বরে থাকে, সেখানে মঙ্গলবার ছিল সপ্তম স্থানে, বুধবার ষষ্ঠ এবং আজ (শুক্রবার) অষ্টম স্থানে।
বুধবার সকালে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ১৭১, বৃহস্পতিবার ১৭৩ ও আজ তা নেমে দাঁড়িয়েছে ১৪১-এ।
আইকিউএয়ারের প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২৩৭ একিউআই স্কোর নিয়ে আজ বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, ১৮৫ একিউআই স্কোর নিয়ে তার পরেই অবস্থান মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন শহরের, আর ১৭৭ নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু।
যখন কণা দূষণের একিউআই মান শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকে, তখন তাকে ‘ভালো’ বলে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। এরপর একিউআই সূচক ৫১ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ এবং ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সূচক ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এছাড়া ৩০১ এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এখানকার বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে বেশি অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণের ফলে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার ও শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনটি ব্লেন্ডার মেশিনের ভেতরে আনা ৩ কেজি ২৮৯ গ্রাম স্বর্ণসহ সৌদি প্রবাসী হাবিবুর রহমান নামে যাত্রীকে আটক করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা। উদ্ধার করা স্বর্ণের মূল্য প্রায় ৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। গত মঙ্গলবার এ স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
বিমানবন্দরের কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মাসুদ করিম জানান, গোয়েন্দা তথ্যে স্বর্ণ চোরাচালানের হতে পারে এমন তথ্যে মঙ্গলবার সকালে বিমানবন্দরের কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিমানবন্দরের গুরুত্ব পুর্ণ স্থানগুলোতে অবস্থান নেন। পরে সকাল ১১টা ১০ মিনিটে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন এলাকায় সৌদি এয়ারলাইন্সে আসা যাত্রী হাবিবুর রহমানকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়। তিনি গ্রীণ চ্যানেল অতিক্রম করার সময় তার কাছে কোনও স্বর্ণের বার বা কোনও স্বর্ণ আছে কিনা প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি স্বর্ণ থাকার কথা অস্বীকার করলে কাস্টমস গোয়েন্দা দল তার শরীর ও ব্যাগেজ তল্লাশি ও স্ক্যানিং করেন।
তল্লাশি করে তার হ্যান্ডব্যাগে ২৯৯ গ্রাম এবং বুকিং করা ব্যাগেজে থাকা তিনটি ব্লেন্ডারে বিশেষ কায়দায় লুকানো ছয়টি স্বর্ণের খণ্ড পাওয়া যায়। যার মোট ওজন ৩ হাজার ২৮৯ গ্রাম (তিন কেজি ২৮৯ গ্রাম) । পরে তাকে আটক করে মামলা দিয়ে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
গত কয়েকদিন ধরেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে গণপরিবহন সংকট, যা ধারণ করেছে তীব্র আকার। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
আবদুল্লাহপুর, কুড়িল, বসুন্ধরা, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, কাকরাইল এবং পল্টন এলাকার রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন অপেক্ষমান শত শত যাত্রী, অথচ দেখা নেই বাসের। যে দু-চারটি বাস যাচ্ছে তারও গেট লাগানো এবং যাত্রীতে ঠাসা, ওঠার নেই কোনো উপায়।
সরেজমিনে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দেখা যায়, সড়কে বাস না চললেও রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এবং রামপুরা ব্রিজের শেষ প্রান্তে সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে আছে। কেন তারা রাস্তায় নামেনি জানতে চাইলে ভিক্টর বাসের হেলপার সুমন বলেন, নতুন নিয়মানুযায়ী বাস গোলাপি রঙ করতে অনেক বাসই নামেনি রাস্তায়। আর ই-টিকেটিং চালু হলে ড্রাইভার-হেলপার ক্ষতির মুখে পড়বে। তাই বাকিরাও বাস নিয়ে রাস্তায় নামেনি।
গত সপ্তাহে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর হয়ে গাজীপুর রুটে রাজধানীতে চলাচল করা বাস গোলাপি রঙ করে ই-টিকেটিং এর আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
প্রাথমিকভাবে ২১ কোম্পানির ২ হাজার ৬১০ বাস গোলাপি রঙের ই-টিকেটিংয়ের আওতাভুক্ত করা হলেও আগামীতে এ সংখ্যা এবং রুটের পরিধি আরও বাড়বে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
রঙ করার এ কার্যক্রমে দুই দিন ধরে আব্দুল্লাহপুরের এই রুটে রীতিমতো বাস সংকট দেখা দিয়েছে। এর পাশাপাশি ট্রাফিক কার্যক্রম জোরদার করায় অনেকেই মামলার ভয়ে বাস নিয়ে বের হচ্ছেন না। অনেক ড্রাইভার-হেলপার দাবি করছেন ই-টিকেটিং ব্যবস্থায় ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা।
অনাবিল বাসের চালক আলমগীর বলেন, ‘জায়গায় জায়গায় সার্জেন্ট আর চেকপোস্ট। রাস্তায় নামলেই শিওর মামলা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাস নিয়ে নামা যাবে তখন।’
এদিকে বাসের সংখ্যা কম থাকায় রাস্তায় বেড়েছে রিকশা আর বাইকের চলাচল। একদিকে অটোরিকশার দৌরাত্ম্য, অন্যদিকে বেপরোয়া বাইক- সব মিলিয়ে এই রুটে একটু পর পর সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট।
মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যেতে বের হয়েছিলেন আনোয়ার হোসেন। নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, প্রায় আধাঘণ্টার ওপর দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাননি তিনি। রিকশা ভাড়া আকাশচুম্বী। সব মিলিয়ে হঠাৎ করেই রাস্তায় অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে পুরানা পল্টন যাবেন ব্যবসায়ী শফিকুর রহমান। রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত হেঁটে এসে ভিড় ঠেলে কোনো রকমে রমজান বসে উঠেছেন। ভেবেছেন, কাকরাইল নেমে সেখান থেকে আবার হেঁটে পুরানা পল্টন যাবেন। কিন্তু ভয়াবহ যানজটের কারণে বাসটিকে চলতে হচ্ছে ঢিমেতালে। পরে মালিবাগ-মৌচাক নেমে আবার হাঁটা শুরু করেন তিনি।
সড়কে দুর্দশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, রাস্তায় নেমে জানতে পারি ভিক্টর পরিবহনসহ কয়েকটি বাস চলছে না। যে কারণে যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। কেউ পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন। কিন্তু গাড়ি উঠেও দেখা যাচ্ছে সেটা চলছে না। এতে উভয়সংকটে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।
এদিকে বাস সংকটের মধ্যেই রাজধানীর শাহবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুনর্বাসন এবং আর্থিক সাহায্যের দাবিতে অবস্থান নিয়েছেন দুবাই ফেরত প্রবাসীরা। এতে করে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, বাংলামোটর, কাকরাইল এবং কাওরানবাজার এলাকাতেও বড় রকমের যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
সড়কে যানজট এবং বাসের সংখ্যা কেন কম সে ব্যাপারে সদুত্তর দিতে পারেনি ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। ট্রাফিক বিভাগের উত্তরা জোনের সহকারী ডেপুটি কমিশনার (এডিসি) ফজলুল করিম বলেন, প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে আমরাও বাসের সংখ্যা কম পেয়েছে। কিন্তু কী কারণে রাস্তায় বাস কম সে ব্যাপারে এখনো পরিষ্কার জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, অনেক বাস গোলাপি রঙের ই-টিকেটিং এর আওতায় আসতে চাওয়ায় রঙ করতে দেয়া হয়েছে। এতে করে স্বাভাবিকের তুলনায় কম বাস নেমেছে রাস্তায়।
বাড্ডা ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার শারমিন আক্তার বলেন, গোলাপি রঙের পাশাপাশি শোনা যাচ্ছে অনেক বাসের হেলপার এবং ড্রাইভার ধর্মঘট করেছে। তাই তারা বাস নিয়ে রাস্তায় নামেনি। এতে করেও গণপরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীতে শুরু কাউন্টার থেকে যাত্রী তোলার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী তোলার দাবিতে রাজধানীর সায়দাবাদ এবং যাত্রাবাড়ি এলাকায় দফায় দফায় সড়ক অবরোধ করেছে বাস ড্রাইভার-হেলপাররা। এতে করে এসব এলাকার যান চলাচল এক রকমের বন্ধ হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, 'আমরা সাফ জানিয়ে দিয়েছে রাজধানীর সড়কে কোনো ভাঙাচূড়া আনফিট গাড়ি চলবে না। ধীরে ধীরে সব গাড়ি ই-টিকেটিং এর আওতায় আনা হবে। এর প্রতিবাদে তুরাগ এবং বলাকা বাসের শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছিল। তাদের বুঝিয়ে শুনিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।'
ই-টিকেটিং এর ডিভাইস সংক্রান্ত কাজের কারণে অনেক বাস সড়কে নামেনি। এছাড়া অনেকে বুঝে না বুঝে এ ব্যবস্থার বিরোধীতা করছে। যারা সড়কে বাস না নামিয়ে উল্টা রাস্তা অবরোধ করছে তাদেরকে কেউ খারাপ উদ্দেশ্য হাসিলে ইন্ধন দিচ্ছে বলে দাবি করেন সাইফুল।
ক্ষোভ জানিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এটা নতুন কিছু না। কোনো সিদ্ধান্ত বাস মালিকদের মন মতো না হলে তারা যাত্রী জিম্মির হাতিয়ার ব্যবহার করে। অন্যদিকে সরকার সিদ্ধান্ত দেয় ঠিকই কিন্তু মনিটরিং করে না। এতে করে সড়কে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। সরকারের উচিত মনিটরিং ব্যবস্থা শক্তিশালী করা।
দ্রুত সমস্যা সমাধান করে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি আনফিট গাড়ি, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা, বাড়তি ভাড়া রাখা বন্ধ করতে সরকারের শক্তিশালী মনিটরিং প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকার বাতাস দূষিত থাকবে এটিই যেন নিয়তি। নিয়মিতই বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকার প্রথম দিকে থাকছে তিলোত্তমা এই শহরটির নাম। আজ সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে ঢাকার বাতাসকে মানব স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে বায়ুমান সূচকের (একিউআই) স্কোর ৩৯২ নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় সবাইকে টপকে গেছে জনবহুল ঢাকা।
গতকালের বাতাসের মান খুবই অস্বাস্থ্যকর ছিল। কিন্তু আজ সেটা ‘বিপজ্জনকে’ রূপ নিয়েছে। ভারতের দিল্লি, পাকিস্তানের লাহোর ও ভিয়েতনামের হ্যানয়ে যথাক্রমে ২৬১, ২৫৮ ও ১৮৭ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান দখল করেছে।
যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এছাড়া ৩০১ এর বেশি হলে‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো-বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন। ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণে কারণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
রাজধানীর সড়কে ছিনতাই প্রতিরোধে ট্রাফিক সার্জেন্টদের স্মল আর্মস (হালকা বা ছোট অস্ত্র) দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
আজ বৃহস্পতিবার উত্তরা আজমপুর কাঁচাবাজার এলাকায় একটি বাস কাউন্টার ও ই-টিকেটিং সিস্টেম উদ্বোধনকালে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সড়কে ছিনতাইয়ের ঘটনা আমাদের নজরে এসেছে। প্রকাশ্যে ছিনতাই বা অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাইয়ের বিষয়টি আমি অবগত আছি। লোকবলের স্বল্পতার কারণে অনেক সময় ট্রাফিক পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারেন না। এ জন্য ট্রাফিক সার্জেন্টদের অস্ত্র দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ছিনতাইয়ের সংখ্যা কমে গেছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ছিনতাই বেড়ে যাওয়ায় কঠোর অভিযান চালানো হচ্ছে। ব্যাপক ধরপাকড়ের ফলে অসংখ্য ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার হয়েছে। যে কারণে গত ১৫ দিনে ছিনতাইয়ের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে।
তিনি বলেন, আমাদের জনবল কম। বিশেষ করে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা আরও অসহায়। তারা একজন ডিউটি করে, তারা নাজুক অবস্থায়। এজন্য ট্রাফিক সার্জেন্টদের স্মল আর্মস দিচ্ছি। স্মল আর্মস দিয়ে সে যেন একাই দুই-তিনজন ছিনতাইকারীকে মোকাবেলা করতে পারেন।
গত বুধবার রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে হামলা ও ভাঙচুর ঠেকাতে কী উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা করেছি। গভীর রাত পর্যন্ত আমি নিজে সেখানে মনিটরিং করেছি।
যাত্রীসেবা ও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাউন্টার সিস্টেম চালুর গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, চালক, মালিক ও যাত্রীদের সচেতন হতে হবে। যে কোনো অনিয়ম হলে ট্রাফিক পুলিশের কাছে অভিযোগ করুন। এছাড়া, চালকদের উপযুক্ত অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দেওয়ার জন্য মালিকপক্ষকে আহ্বান জানান ডিএমপি কমিশনার।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার হয়েছে পুলিশ। হামলায় পুলিশের তিন সহকারী পরিদর্শক (এসআই) ও এক উপসহকারী পরিদর্শকসহ (এএসআই) পুলিশের একজন সোর্স গুরুতর আহত হয়েছেন।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রায়েরবাজার বোর্ড ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন-আফজালুর রশিদ, জসীমউদ্দীন, খোরশেদ আলম ও সোহেল রানা। এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশের সোর্স আল-আমিনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, এ হামলার ঘটনার নেপথ্যে বোর্ড ঘাট এলাকার কিশোর গ্যাং ‘পাটালি গ্রুপ’ জড়িত। কয়েকদিন আগে একাধিক হত্যা মামলার আসামি ও বোর্ড ঘাট এলাকার কিশোর গ্যাং পাটালি গ্রুপের মূলহোতা ফালানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় পাটালি গ্রুপ ও বোর্ড ঘাটের মাদক কারবারিরা পুলিশের হাত থেকে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় ব্যর্থ হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশের অভিযানে গেলে তাদের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা।
হামলার নেতৃত্ব দেন পাটালি গ্রুপের ল্যাংড়া হাসান, ফরহাদ ও চিকু শাকিল। তাদের নেতৃত্বে এই গ্রুপের সদস্য পিচ্চি হাসান, স্বপন, শাহিন, ছোট্ট হাসান, সবিজ মুন্না, দিপু, সম্রাট, রফিক, রাকিব ও রাসেলসহ ৩০-৪০ জন এ হামলা চালায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, রায়েরবাজার এলাকায় মাদকের রমরমা ব্যবসা মূলত কিশোর গ্যাং গ্রুপগুলো টিকিয়ে রেখেছে। কেউ মাদক বন্ধ করতে গেলে কিংবা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গেলেই তাদের ওপর গ্রুপের সদস্যরা হামলা চালায়। এসব মাদক কারবারি ও কিশোর গ্যাংগুলোর পেছনে আগে আওয়ামী লীগের নেতা শাহ আলম জীবন ও তারেকুজ্জামান রাজিব শেল্টার দিলেও বর্তমানে বিএনপি ও যুবদলের কয়েকজন নেতা শেল্টার দিচ্ছেন। এর আগে এই কিশোর গ্যাং গ্রুপটি মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) লোকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটিয়েছিল।
এ ঘটনায় তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান জানান, গত বুধবার পুলিশ অভিযানে গেলে কিশোর গ্যাং গ্রুপ ও মাদক কারবারিরা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। তবে, ইনজুরি এত বেশি হয়নি। যেহেতু পুলিশ কিশোর গ্যাং ও মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে একেবারে জিরো টলারেন্স, সেজন্য ওই এলাকার মাদক কারবারি ও কিশোর গ্যাং সদস্যরা পুলিশের সংখ্যা কম থাকায় হামলার ঘটনা ঘটায়। এরপর রাতেই যৌথবাহিনীর অভিযানে ওই এলাকা থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে এক স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রাজধানীর দক্ষিণখানের একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত মেয়েটি। পুলিশ বলছে, তাকে ৫ জনে মিলে গণধর্ষণের পর মারা গেলে বস্তাবন্দী করে লাশ গুমের উদ্দেশে হাতিরঝিলে রাস্তার ঢালে ফেলে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় রবিন হোসেন (৩২) ও রাব্বী মৃধা (২৬) নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৩০ জানুয়ারী গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে আদের গ্রেপ্তার করা হয়।
দক্ষিণখান থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ জানুয়ারি কেনাকাটার কথা বলে বাসা থেকে বের হওয়ার পর ১৩ বছর বয়সী অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এই কিশোরী নিখোঁজ হয়। পরে তাকে অনেক খোঁজা খুঁজি করে না পেয়ে গত ১৯ জানুয়ারি কিশোরীর বাবা এ ঘটনায় দক্ষিণখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরবর্তীতে তিনি স্থানীয়দের সহায়তায় জানতে পারেন, ১৬ জানুয়ারি বিকেলে দক্ষিণখানের জয়নাল মার্কেটের সামনে থেকে কয়েকজন মিলে কিশোরীকে একটি প্রাইভেটকারে উঠিয়ে অপহরণ করা হয়েছে। পরে ২৭ জানুয়ারি দক্ষিণখান থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন তিনি।
জানা যায়, মামলাটি তদন্তকালে কিশোরীর মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় গত ৩০ জানুয়ারি রবিন হোসেন ও রাব্বী মৃধাকে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে দক্ষিণখান থানা পুলিশ। পরে গত ৩১ জানুয়ারি গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় গ্রেপ্তারদের ওই ঘটনার বিষয়ে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যে ভিত্তিতে গত রোববার সকালে হাতিরঝিল এলাকার রাস্তার ঢাল থেকে ওই কিশোরীর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সে বিষয়ে মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ডিএমপির উত্তরা বিভাগের দক্ষিণখান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. নাসিম-এ-গুলশান বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে রবিনের পরিচয় হয়। ফাঁদে ফেলে তাকে মহাখালীর একটা বাসায় নিয়ে ৫ জনে মিলে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের সময় কিশোরীটির হাত-পা বাঁধা এবং মুখে কাপড় গোঁজা ছিল। ধর্ষণের ফলে কিশোরীটি মারা গেলে ঘটনার দিন মধ্যরাতে মহাখালী থেকে রিকশায় করে হাতিরঝিলের রাস্তার ঢালে ফেলে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, মুলত মুঠোফোনের সূত্র ধরে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটিত হয়। গ্রেপ্তার রবিনের মুঠোফোন নম্বরের সিডিআর পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কিশোরীটির সঙ্গে ঘটনার দিনই তার কথা হয়। এর মধ্যে গাজীপুর থেকে রবিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর রাব্বিকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রথমে কিশোরীকে হত্যার বিষয়ে তথ্য দিচ্ছিলেন না তারা। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
এসি মো. নাসিম এ-গুলশান জানান, আসামিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রবিন পেশায় একজন গাড়িচালক। রাব্বি মৃধারও নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। অভিযুক্ত অন্য তিনজনও রবিনের পূর্বপরিচিত। ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।